Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 3.17 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller । রক্ত গোলাপ। by chakraabhijit
#21
সূর্য যথেষ্ট অভিজ্ঞ এই ধরনের কথার মানে কি বোঝার মত, এটাও বুঝলো যে আজকে ওকে নিয়ে ইঁদুর বিড়াল খেলবে তাও বললো "তুই থাম কাজের কথায় আয়."
কাজের কথায় তো বলছি. স্বামীর প্রয়োজনে স্ত্রীরাই তো এগিয়ে আসে, সিমরন আসেনা?
সূর্য চুপ করে রইলো. ভুতো আস্তে আস্তে ওর রুপ ধারণ করছে
কিরে চুপ যে.”
না তুই বল.”
রাগ করছিস? তোর ব্যাপার, ভেবে দেখ. সিমরন এগিয়ে এলে কি কি হতে পারে. স্বামীর উন্নতিতে স্ত্রীর হাত, সরি দেহ থাকবে কথা নতুন কি, পৌরানিক যুগ থেকে রিতি চলে আসছে, এর মধ্যে নতুন কি? তার বদলে ভেবে দেখ তুই কি পাবি, অথচ তোর কোনো খরচা নেই বা হ্যাপা নেই. বিধানসভায় এন্ট্রি. তরুণ তুর্কি কাপিয়ে দিবিনা শালা ওই বুড়োহাবরা MLA গুলোকে, তারপর ধীরে ধীরে লোকসভা তারপর সেন্ট্রাল মিনিস্টার, শালা কোটিতে নারে, আরবে খেলবি রে আরবে, % কাট হিসেব ধর শুধু. আরে বাবা বউ খাটিয়ে লোকে কত কি করছে আর তুই তো জনগনের সেবা করতে চাচ্ছিস.”
না রে তুই আমার বন্ধু, এতটা আমি ভাবিনি.”
কি ভাবিস নি?” ভুতো খাড়া হয়ে বসলো. আর বললো " শোন এক দুলাখ কি এক কোটি হলে আমি তোর কাছে কোনো প্রজেক্টের এপ্রোভালের জন্যে আসতাম. ফিগার টা দশ কোটি, একের পরে কটা শুন্য বলতো? আরে শালা দশ কোটিতে তোর বৌএর সৌন্দর্য দেখতে চাইছি, তাও একবারের জন্যে, ভেবে দেখ, এই টাকায় ফিল্মের নায়িকারা খুসি খুসি সব খুলে দিতো, সাথে ফাউ হিসেবে ওদের মা বোন থাকলে তাদেরও নিয়ে আসতো তোর বৌএর জন্যেই এত দাম দিচ্ছি আমি, শুধু তোর বউ বলেই দশ কোটির জন্যে রাজি হলাম, তুই আমার পুরনো বন্ধু বলে অন্য কেউ হলে মুখে মুতে দিতাম. দশ কোটি নিবি আর তোর কিছু বন্ধক দিবিনা এটা কেমন ব্যাবসা হলো "
সূর্য চুপ করে রইলো.
কি ভাবছিস?”
ভাবছি? ভাবছি নাতো কিছু.”
ভুতো উঠে এসে সূর্যর পিঠে হাত রাখলো, " আরে তুই ওকে এইটুকু কনভিন্স করতে পারবিনা? কেন স্বামির প্রয়োজনে স্ত্রী এইটুকু ত্যাগ করতে পারবেনা? তুই বন্ধু তোকে সত্যি কথা বলছি যেদিন ওকে দেখেছি প্রথম আমার মনের মধ্যে ঘুরছে, তুই জানিস আমি মুখে এক আর মনে আরেক এই রকম না, তাই তোকে মন খুলে আমার মনের কথা বললাম, আর পাঞ্জাবি মেয়ে লাগানোর বহুত সখ আমার, সুনেছি মালগুলো দারুন পোঁদে নেয়, আহঃ সিমরন" বলে প্যান্টের ওপর দিয়েই নিজের স্ফিত লিঙ্গে হাত বোলাতে শুরু করলো

সূর্য রাগত ভাবে ওর দিকে তাকালো.
রেগে গেছিস তাই না, সেই একই রকম রয়ে গেছিস রাগ করিস না, এটা কলেজ লাইফ না, যে তুই যা বলবি যা ভাববি সেই মত সবাই চলবেঘরের মধ্যে পায়চারি কোরতে কোরতে ভুতো উকিলের মত সূর্যকে বলে চলেছেনা তুই এখন কলেজ GS, না তুই হস্টেল মনিটর আর না আমি হস্টেলের মেস ম্যানেজার রাগ করিসনা এটা রাগ করার সময় না তুই আমার থেকে ভালো করে জানিস যে বিপদের সময় মাথা ঠান্ডা রাখাটা আমাদের মত লোকের কতটা দরকার সেটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়. আচ্ছা তুইই বল, মায়ার বাধনে জীবনে কে কি পেয়েছে? আমি যদি শালা আজ গ্রামের বাড়িতে বাপ মার জন্যে গেটে বাতের ওষুধ আনতে কবিরাজের দোকানে লাইন দিতাম, তাহলে কি আজ এই পাঁচতারা হোটেলে বসে থাকতাম আর দশ কোটির গল্প করতাম. সম্পর্ক দিয়ে কি মানুষ ধুয়ে জল খাবে যদি সেটা বিপদের সময় কাজে না লাগে? আজ আমি এই পজিশানে বলে আমার বাপ মা কলকাতায় বোস এস্টেটে পা দুলিয়ে শেষ জীবন কাটাচ্ছে,চাকর বাকর হালুইকর কি নেই? "
কিসের বিপদের কথা বলছিস তুই?”
হা হা হা হা ..... হাসালি তুই, তুই কি ভাবছিস তুই এই ডিলটা কেন করতে এসেছিস আমি খোজ নিইনি?
আরে শালা সিমরন তোরই থাকবে, ওকে শেখা ভালো করে কি ভাবে এই ক্লাসে মেলামেশা করতে হয়. স্ত্রী শক্তিই স্বামির আসল শক্তি স্ত্রির ত্যাগেই স্বামির পুন্য হয় আরে শালা তুই যদি কোনদিন প্রাইম মিনিস্টার হোস তো ফার্স্ট লেডি কে হবে. এত সহজে কি ফার্স্ট লেডি হওয়া যায়? সাইয়াঁ সাইয়াঁ করে পা ধুইয়ে দিলাম আর স্বামীর পুজো করলাম, কি হবে তাতে? ওর কি কারো সাথে শুলে জাত চলে যাবে নাকি? আরে চামড়ায় চামড়ায় যুদ্ধ ধুয়ে নিলে সব সুদ্ধ শুনেছিস নিশ্চয়, আমাদের কলেজ লাইফ এর কথা, এখন রুপ যৌবন আছে তাই দাম পাচ্ছে, আজ থেকে দশ বছর পর হলে তুই কি করতি? এই অপশনটাও তো তোর হাতে থাকতো না হা হা হা হা ......।। এখন ওকে আব তো হেয় তুমপে হর খুসি আপনি গাইতে শেখা হা হা হা হা ...... চয়েস ইস ইউর্স , এক দিকে দশ কোটি, একদিকে জেলের ঘানি হা হা হা হা ........”

 
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#22
ভুতোর অট্টহাসি এখনো কানে বাজছে আর যত রাগ গিয়ে পরছে গাড়ির ওপড় দুরন্ত গতিতে ছুটে চলেছে বিদেশি সেডান টা সূর্য মিলিয়ে মিলিয়ে দেখে যে ওর জীবনের সাথে বৃষ্টির এক অদ্ভুত সম্পর্ক. জীবনের জটিল মুহূর্ত গুলোতে বৃষ্টিই যেন ওর একমাত্র সঙ্গী হয়. আজও বৃষ্টি পড়ছে. কতটা সেটা গাড়ির ভেতর থেকে বুঝতে পারছেনা. কিন্তু ফিকে স্ট্রিট লাইট গুলোতে বৃষ্টির ধারা দেখে মনে হচ্ছে যে খুব খারাপ হচ্ছেনা.
ধীরে ধীরে ধারাপাত বাড়তে থাকলো. আর জোরে গাড়ি চালাতে পারছেনা পুরো রাস্তা ঝাপসা হয়ে গেছে, গাড়ির ওয়্পারও ঠিক কোনো কাজে লাগছে না. হালকা আলোতে দেখতে পারছে যে বড় বড় বৃষ্টির ফোটা গাড়ির বনেটে পরে এক দেড় ফুট করে ছিটকে যাচ্ছে.
মাথা ঠান্ডা করে গাড়িটা একটা ফাকা জায়গা দেখে দাড় করিয়ে দিল সূর্য.
গাড়ির সিটে মাথা হেলিয়ে দিয়ে চিন্তা করতে থাকলো কি করবে. ভুতোর সেই হাসি এখনো কানে বাজছে কানে নয় মাথায় বাজছে. রেগে যাচ্ছে কেন? সিমরনের ভালবাসা না ভুতোর প্রপোজাল? কোনটা? সিমরনকে কি সত্যি ভালবাসে? নিজের রাজনৈতিক জমি শক্ত পোক্ত করতে গ্রামের মেয়েটাকে বিয়ে করে এনেছিলো. শরীরের প্রয়োজনে সিমরনকে কে সব সময়ই পেয়েছে. কিন্তু কথাও কি একটু আধটু মায়া জমেনি ওর ওপর. নিরপেক্ষ ভাবে সূর্য চিন্তা করে দেখলো, না সিমরনকে অতটা গুরুত্ব না দিলেও কোথাও যেন একটু আধটু দুর্বলতা তৈরী হয়েছে ওর ওপর. আর রাজ গুটি গুটি পায়ে পাপা পাপা বলে যখন এগিয়ে আসে. বাচ্চাটাকে একটুও সময় দেয়না . আত্মপক্ষ সমর্থনের মত নিজেই ভাবলো সময় আর কোথায় যে দেব? দেশের কাজ করতে করতে যদি পরিবারকেও সমান সময় দিতে পারত কেউ তাহলে এত মন্ত্রী সান্ত্রীর পদই থাকত না.
কি করবে সূর্য সিমরনের মত নিষ্পাপ একটা মেয়েকে ওই নারী মাংস লোভি পশুটার হাতে তুলে দেবে? আজ সেই লোকটা সূর্যর অনেক দুর্বলতা ধরে ফেলেছে, তাই এর সুযোগ সম্পূর্ণ ভাবে নিতে চাইছে. সূর্যর মনে পরে কলেজ দিন গুলো. মেস বিরাট কেলেঙ্কারী ধরা পড়ল, একমাত্র ভূতই এতে জড়িত. ভূত ওকে সরানো টাকার ভাগ দেওয়ার অফার দিয়েছিলো, কিন্তু তত্কালীন সৎ এক হোস্টেল মনিটরের পক্ষে সেটা গ্রহণ করা সম্ভব ছিলো না. সবার সামনে অপদস্থ হওয়াটা ভালো ভাবে নেইনি পরবর্তীকালে বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ পায়. আজ যেন এই কুপ্রস্তাব দিয়ে ভালো রকম শোধ নিতে চলেছে.
মানুষের শরীর, তাই ক্রমাগত অনিদ্রা আর চিন্তার চাপে আসতে আসতে সূর্য ঘুমের দিকে ঢলে পরলো. দুর্যোগের এক রাতে প্রচন্ড ঝড় জলকে বিদেশী গাড়ির বাইরে বেধে রেখে, এক রাস্তার ধারে গাড়ির নরম গদিতে নিজেকে এলিয়ে দিলো.
প্রচন্ড আওয়াজ আর ঝাকুনিতে সূর্যর ঘুম ভেঙ্গে গেল, বাইরে এত আলো যে চোখ ধান্দিয়ে যাচ্ছে, আর সাথে তের পেল যে বৃষ্টি আরো জোরে পড়ছে, মাথার কাছটা খুব যন্ত্রণা হচ্ছে, হাত দিয়ে কপালের ওপর থেকে জলের মত কি একটা মুছতে গিয়ে টের পেল রক্ত বেরোচ্ছে. ভালো করে খেয়াল করে দেখল একটা ট্রাক ওর গাড়িতে ধাক্কা মেরে অর্ধেক ঢুকে গেছে বিদেশী গাড়িটা চুরমার হয়ে গেছে আর দানবের মত একটা টায়ার ওর গায়ের ওপর অর্ধেক উঠে গেছে. অনেক চেষ্টা করেও নড়তে চড়তে পারছেনা. গাড়ির লুকিং গ্লাসটাতে একবার নিজের মুখ দেখতে পেল. পরিপাটি করা চুলের দুটো গোছা কপালের দুধার থেকে অর্ধচন্দ্রের মতো ওর রক্তাক্ত কপালটা ঢেকে রেখেছে. ভীষণ ঘুম পাচ্ছে ওর ভিষণ. আসতে আসতে ঘুমের কলে ঢলে পড়তে পড়তে দেখতে পেল নীলিমা ভবনের বিশাল বাগানে একটা পরী আর একটা দেবশিশু আপন মনে বিহার করছে.

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#23
নীলিমা ভবন.

 
মিডিয়া, রাজনৈতিক নেতা, সমাজের বিশিষ্ট লোকজন আর সাধারণ মানুষের ভিড় থৈ থৈ করছে নীলিমা ভবনে. একটু পরেই তরুণ নেতা সুর্যসেখর চৌধুরীর শেষ যাত্রা শুরু হবে. স্বল্প দৈর্ঘের রাজনৈতিক জীবন হলেও, কিছু বিতর্ক থাকলেও, আজ সাধারণ মানুষ উপচে পড়েছে তাদের কাছের মানুষ কাজের মানুষ সূর্যবাবুকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে.

খবরের কাগজে ফলাও করে ছেপেছে তার পথ দুর্ঘটনার কথা. সাথে এই দুর্ঘটনার তদন্তও দাবি করছে বিভিন্ন মহল থেকে বিশেষ করে সূর্যর নিজের দল এতে বিরোধী শক্তির হাত দেখতে পাচ্ছে. কারণ হিসেবে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে যে ট্রাকটি সূর্যর গাড়ির ওপর চেপে বসেছিল সেটা দিল্লি থেকে ছেড়েছিল আর অন্য লেন দিয়ে যাচ্ছিলো, সে কি করে ঘুরে এদিকে এলো? অনেক প্রশ্ন আর অনুচ্চ্চারিত সন্দেহ ইতি উতি ঘুরে বেড়াচ্ছে. কিন্তু পাথর হয়ে যাওয়া সিমরনকে সে সব ছুতেও পারছেনা. সাদা পোশাকে পাথরের মত বসে আছে সূর্যর থেঁতলে যাওয়া দেহের সামনে. আজকে তো ওকে ঠিক করে দেখতেও পারছেনা, দুর্ঘটনায় সারা দেহ এমন ভাবে জখম হয়েছে সাথে মুখটাও. শেষ দেখাটাও সিমরন দেখতে পারছেনা.

রাজকে সামলানোর দায়িত্ব এখন বাহাদুরের. চোখের জল চেপে রেখে হাসি মুখে বাগানে ওই শিশুটির সাথে খেলে চলেছে. এতদিনের এই বাড়ির সাথে সম্পর্ক ওর. নুনের দাম চুকাতে চুকাতে নিজের যৌবন পেরিয়ে বার্ধক্যের দোর গোড়ায় সে. এই বাড়ির সন্মান রক্ষা করতে মানুষ খুন করতেও পিছপা হয়নি সে. আজ যেন তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পড়েছে তার সহনশীলতা. সিমরন ওর মেয়েরই বয়েসী আর রাজ প্রায় ওর নাতির মত. কি করে সে সামলাবে চোখের জল. তাই মাঝে মাঝে রাজ কে একা একা ফুপিয়ে উঠছে.

রাজ বুঝতে পারছেনা আজকে এত লোক কেন এখানে. বাহাদুর দাদুর সাথে খেলতে খেলতে বার বার ওর চোখ বাড়ির ভেতর আর বাইরের ভিড়ের দিকে চলে যাচ্ছে. কিন্তু ওকে বাহাদুর দাদু ওদিকে যেতে দিচ্ছেনা. বলছে পাপা নাকি ঘুমোচ্ছে. এখন ঘুমোবে কেন পাপা? পাপাটাও না কেমন, আমাকে একটুও আদর করেনা সেই কবে একবার কাধে তুলে এই বাগানে খেলেছিলো. সেদিন কত লোক এসেছিল সেদিনও মিঠাই খাওয়া হয়েছিলো, পাপাকে কাধে তুলে সবার কি নাচ সেদিন. খুব মজা হয়েছিলো. এবার স্কুল খুলুক পাপাকে নিয়ে যাবে স্কুলে কেউ মোটা মোটা বলে ডাকলে পাপাকে বলে পানিশমেন্ট দেবে. পাপাকে খুব ভয় পায় টিচাররা. আজকে তো দেখল যে সব টিচার রা এসেছে. পাপা নিশ্চয় বলেছে ওদের "এই আমার বেটাকে সবাই মোটা বলে আপনারা কিছু বলেননা কেন". খুব মজা হবে আজকে টিচার দের যখন পানিশমেন্ট দেবে পাপা.

[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
#24
সেই রাত সিমরণের জীবনের এক কঠিন রাত. মানুষটা নেই মন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা. বাঙালি মতে স্থানীয় স্বামীহারা বাঙালি মহিলারা এসে ওর আর সূর্যর বিয়ের সমস্ত চিহ্ন মুছে দিয়েছিলো. সাদা পোশাক পরে পাথর হয়ে বসেছিলো. নিথর দেহটাকে মেলানোর চেষ্টা করছিলো ওর চেনা সূর্যর সাথে. কিছুতেই মেলাতে পারছিলো না . ওই শরীর তা তো ওর খুব চেনা. ছোট্ট ছেলেটা বুকের মধ্যে মুখ গুজে কেঁদে চলেছে পাপা পাপা বলে সারাসকাল লুকিয়ে রাখা গেলেও মুখে আগুন করার সময় ওকে সামনে আনতে হলো নিজের চোখে দেখলো যে ঘুমন্ত পাপার দেহটা দাও দাও করে জলে উঠলো চন্দন কাঠের সাজান চিতায় কি করে এই শিশুমনকে সিমরন সান্তনা দেবে যেখানে নিজেই নিজেকে সামলাতে পারছেনা

জীবনের আরেকটা ভোর শুরু হলো. সারা রাত ঘুম আসেনি, সদ্য বিধবা কোনো যুবতী নারী তার স্বামীকে ভুলতে পারে সারা মন জুড়ে সূর্য আর সূর্য করে উথাল পাথাল হয়েছে. সে জানে তার এই অবোধ সন্তানের জন্যে তাকে শক্ত হতে হবে. তাই চোখের জল ফেলে নিজেকে দুর্বল করে দেয়নি সিমরন. সযত্নে বাঁচিয়ে রেখেছে জীবনের আরো ঘাতপ্রতিঘাত সামলানোর জন্যে.
কাল সকালের পরে আজ এই প্রথম আয়না দেখলো সিমরন. ফোলা ফোলা চোখ আর হালকা হয়ে যাওয়া সিঁদুরের চিহ্ন যেন মনে করিয়ে দিচ্ছে লোকটা নেই আর কোনদিন সীমি বলে ডাকবেনা. জলের ঝাপটায় কি চোখের জলও ধুয়ে গেলো.
দরজায় একটা আওয়াজ শুনে সীমির ঘোড় কাটলো. বাহাদুর চাচা নক করছে বিটিয়া বিটিয়া বলে.
দরজা খুলে বাহদুর চাচা ওর মুখের দিকে শুন্য দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো, কযেক মুহুর্তের মধ্যে আর নিজেকে সামলাতে পারলো না. এই প্রথম পরিবারের লোকেরা একাকী একে অন্যকে ফেস করছে. হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো সেই গোর্খা বৃদ্ধ, যেন তার নিজের সন্তানই দুনিয়ে ছেড়ে চলে গেছে.
কাঁদতে কাঁদতে কোনরকমে সে বলতে পারলো " আয়সা কিয়ু কিয়া উসনে" বলে ভগবানের দিকে আঙ্গুল তুলে দেখালো.
কাঁদতে কাঁদতে শ্বেত পাথরের থামটা ধরে নিজের আবেগপ্রবণ শরীরটাকে সামলাতে সামলাতে বসে পরলো. কে কাকে স্বান্তনা দেবে.
নিচের একজন কাজের মহিলা এসে বললো "কুছ লোগ আয়া হ্যায় আপসে মিলনে কে লিয়ে, নিচে বৈঠা কে রাকখা"
সিমরন নিজেকে সামলে নিয়ে একবার রাজকে দেখে নিয়ে নিচে নেমে গেলো. বসার ঘরে গিয়ে দেখলো সূর্যর পার্টির কিছু লোক এসেছে কযেক জন চেনা কযেক জন অচেনা.
সিমরন মাথায় সাদা ওরনা টা টেনে দিয়ে ওদের নমস্কার করে বললো " কহিয়ে"
ওরা সবাই ওকে দেখে উঠে দাড়ালো সবার মুখে চোখেই শোকের ছায়া.
একজন যাকে সিমরন চেনে আর জানে যে সূর্যর ডানহাত যার নাম যতদুর মনে পড়ছে জিতেন্দর সিংহ, সে নমস্কার করে বললো " ভাবি পরনাম" সিমরন আবার প্রতি নমস্কার জানালো. জিতেন্দর ওরফে জিতু বললো "ভাবি ইয়ে লোগ দিল্লি সে আয়ে হ্যায় আপসে কুছ বাতে করনা চাহতে হ্যায়"
সিমরন ঘুরে ওদের দিকে তাকিয়ে বললো " জি বলিয়ে"
দিল্লি থেকে আসা একজন যার নাম সতিশ শর্মা সে বললো " ভাবি হামলোগো কো পাতা হ্যায় কে অপ্পে ক্যা বিত রাহে হ্যায় ফিরভি দেশ কি কাম মে মজবুর হু কি ইসি বক্ত আপকো এয়সি বাতে বতানা পরেগা"
"জি বলিয়ে মুঝে কুছ ফরক নেহি পরতা হ্যায় অভি, জিসকী জিন্দগী উজার গাই উসকি অর ক্যা সুননে কে লিয়ে বাকি বাচা হ্যায়." সিমরন ওদের দিকে তাকিয়ে বললো
"এইসা মত বলিয়ে জিন্দেগী কভি ভি খতম হতে নেহি হোতা হ্যায় লেহেরেইন আতি জাতি হ্যায় বাস"
কাশ ম্যা ভি আপ লোগোকে তরাহ শোচ সাকতা উসনে তো মেরে সোচনে কি তাকত ভি লে লিয়াসিমরন উপর দিকে আঙ্গুল তুলে দেখালো
তুম মেরি বেটি য্যায়সি হো, জিন্দেগি রুকতি নেহি হ্যায়, আগে বারনা হ্যায় সবকো লেকে ইন্সান ওয়াক্ত আনে পে সব ভুল যাতে হ্যায়, সিরফ ওয়াক্ত কে সাথ চলতে রাহো বাকি সব উনকে উপর ছোড় দো, ওয়াক্ত হি হাম সবকা দোস্ত হ্যায় ইয়ে তুমহে ধিরে ধিরে পাতা চল যায়েগা বেটি দুখ বাটো তো ঘটেগা, হাম ইয়ে তজুরবা সে বোলা কাভী ভী জিন্দেগি মে ওয়াক্ত মিলেগা তো মিলা লেনা মেরা বাত
শ্রদ্ধায় অবনত সিমরন ওড়না দিয়ে মুখ চেপে বললোজি বলিয়ে আপ কুছ বলনা চাহতে থে
বেটি বুরি মত মানো হাম আজ এক ভিখ মাঙ্গেগে তুমসে কি তুম হামারে পার্টি কে লিয়ে ইয়ে চুনাও লড়ো, বাহার খাড়ে হুয়ে হাজারো আদমি কা ইয়েহি খ্বাইস হ্যায়, লোগ ইয়ে চাহতে হ্যায় কে সুরজ কা আত্মা সুরজ কে যোশ লোগ তুমমে দিখাই দে, ইয়ে মেরা নেহি হামারা নেহি দেশ কি পুকার হো সুরজ কো হাম এইসেহি মিট নেহি জানে দেঙ্গে আউর ফির শোচো কে তুম আগার একবার খাড়ে হো গায়ি তো হাম লোগ ইয়ে সিট আসানি সে জিত জায়েঙ্গে ফির সুরজ কা মউত কা বদলা লে পায়েঙ্গে, সাহি ঢঙ্গসে কার্বাহি পায়েগা নেহিতো তুমকো তো মালুম হি হ্যায় কে ইয়ে রাজনিতি কিতনা বুরি চিজ হ্যায়, তুম আগার দুসরে কো নেহি মারতে হো তো তুমে মার ডালেগা বাহার যাকে একবার কে লিয়ে দেখ লো কি লোগ কিতনা বেচ্যায়ন হ্যায় ইয়াহা ক্যা হো রাহা হ্যায় জাননে কে লিয়ে

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#25
বাইরে দাড়ানো জনতার সামনে যখন সিমরন এসে দাড়ালো তখন একটা গর্জন উঠলো চারপাসে.
আর নিজের চোখের জল আটকে রাখতে পারলো না. আজ সিমরন বুঝলো যে সূর্য মানুষের কত ভালবাসার জিনিস ছিলো. হাত নাড়িয়ে জনতাকে বললো "আপ লোগ হামে শক্তি দিজিয়ে, কে সুরজ বাবুকা জাগা হ্যাম লে সকে"
চারিদিকে সমুদ্রের মতন গর্জন আছড়ে পরলো সুধু বুঝতে পারা গেলো যে জনতা তারস্বরে জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ বলছে. সিমরনের পাশে দাড়ানো সবাইকে বেশ আস্বস্ত মনে হলো.
ধীরে ধীরে সিমরনকে রাজীনীতির শিখতে হলো. রাজকে এখন সিংহ ভাগ সময় বাহাদুর চাচা দেখে.
সিমরন আসতে আসতে নিজেকে ব্যস্ত করে তুললো. রাজনীতির আঙ্গিনায় কোনো সুন্দরীর আবির্ভাব রাজনীতিকে অলংকৃত করে তাই ভিড় উপচে পড়তে শুরু করলো তার সভায়, প্রথম প্রথম সূর্যর সন্মন্ধে বললেও কিছুদিন পর থেকে সে দেশ, রাজ্য আন্তর্জাতিক রাজনীতিকে নিজের বক্তব্যের সাথে জড়িয়ে ফেলতে শুরু করলো. আসতে আসতে তার রক্তে রাজনীতির নেশা ঢুকে পরলো. কিন্তু শত হলেও সিমরন এক মা তাই রাজ কে কোনদিন অবজ্ঞা করতো না. প্রাণপনে ভালোবেসে ওকে আসতে আসতে পাপার দু: ভুলিয়ে তুলতে লাগলো. রাজও যেন অনেক পরিনত এখন. এখন আর সব সময় মার কাছে তার আবদার নেই. বাহাদুর দাদ্দুর সাথে চুপ করে স্কুলে চলে যায়. স্কুলে ওকে সবাই খুব ভালবাসে ওর ফ্রেন্ডরাও ওকে আর মোটা মোটা বলেনা.আসতে আসতে রাজও স্বাভাবিক হতে শুরু করলো.
বিধানসভা নির্বাচনের আর মাত্র দু মাস. সিমরনের ওপর অনেক চাপ. দলের হয়ে অন্য এলাকাতেও তাকে বক্তব্য রাখতে যেতে হয় এখন. সবার কাছে এখন ভাবী মা মাঝে মাঝে সূর্যর ফটোর দিকে তাকিয়ে চোখের জল ফেলে আর বলেযদি তুমি দেখতে আমাকে এই সাজে, আশিরবাদ কর আমাকে যাতে আমি তোমার স্বপ্ন সার্থক করতে পারি
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#26
কিন্তু সেই রামায়ন আর মহাভারত থেকে আমরা দেখে আসছি রাবন আর দুর্জধনদের. কলিযুগেও তারা বহাল তবিয়তে বর্তমান. এখন দিল্লির সেই হোটেলে গোল টেবিল বসেছে. যেখানে সূর্য তার জীবনের শেষ দিন টা কাটিয়েছিলো. একই রুম .
উপস্থিত:- সূর্যর দলের সদ্য প্রাক্তন প্রাথী প্রতাপ সিংহ তার ধ্বজাধারী ধর্মীয় গুরু ইস্রাফুল রফিক যে কিনা দশ কোটিতে ফিক্সড হয়েছিল সূর্যর দলে নাম লেখাতে আর ভূপতি বসু.
প্রতাপ: শালী নিচু জাত এখন ভাবি রানী হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে. পুরো সব কিছুতে জল ঢেলে দিলো.
রফিক; আরে ভাই তোমার মেয়েদের ওপর এত রাগ কেন? হে হে হে হে

প্রতাপ: হেসোনা হেসোনা, মাথার ঠিক নেই কি থেকে কি হয়ে যাবে.
রফিক: আরে বাবা তোমার এত সেবা করলাম আর তুমি আমাকে কাটবে এখন?
প্রতাপ: আমিও কি কম করেছি নাকি তোমার জন্যে.
ভূপতি বসু চোখ বুজে রয়েছে সাদা পাউডার কাজ করে চলেছে ওর মস্তিষ্কে এখন.
প্রতাপ: কি করলেন এত লম্ফো ঝম্ফো করলেন বললেন দশ কোটি পাইয়ে দেবেন? কি হলো?
ভূপতি: এত কথা বললে চিন্তা করব কি করে?
সব কিছুখন চুপ

প্রতাপ: সালা এত টাকা ঢাললাম সব জলে.
রফিক: আরে বলোনা পার্টি তোমার ওপর ভরসা করেনি.
প্রতাপ: সব শালা দালাল. মাগী দেখেছে আর ধলে পড়েছে. শালী কেমন গাঢ় দুলিয়ে দুলিয়ে স্টেজ কাপাচ্ছে এখন.
রফিক: কেন দেখতে তো ভালো লাগে, তোমার লাগেনা? হে হে হে হে. তোমার তো আবার ওসব চলেনা হে হে হে হে ......
প্রতাপ: শালা চুপ চুপ হারামি শালা এই জন্যে তোদের জাত কে বিশ্বাস করতে নেই তুই কি ধোয়া তুলসীপাতা নাকি.
ভূপতি: এই চুপ একদম চুপ একটা আওয়াজ যেন না বেরয় কারো গলা থেকে. আমি কি জানিনা তোমাদের হাড়ির খবর. প্রতাপের দিকে তাকিয়ে "শালা একজনের হোমোর দোষ" তারপর রফিকের দিকে তাকিয়ে এক নিশ্বাসে বললো " আরেকজন যা পায় তাই খায়"
প্রতাপ: আপনিও তো বড় রসিক লোক ওই মাগির গুদে তো দশ কোটি ঢালতে গেছিলেন.
ভূপতি: সেটা তোমার মতো লোক বুঝলে এই ভাবে লাথ খেতে না. ভূপতি বোস, দশ দিচ্ছে মানে একশ আদায় করবে তায়.

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#27
একটানা এতটা বলার পরে, একটু ব্রেক নিতে আবার একটা করে সিগারেট ধরলাম আমি আর অরূপ. বাইরে তখনও অঝর ঝরে বৃষ্টি পরে চলেছে.
অরূপকে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছে. "তুই তো যা বললি তাতে এটা একটা বেশ বড়সর রহস্য গল্প মনে হচ্ছে".
আমি ওর দিকে তাকিয়ে হেসে বললাম 'গোয়েন্দার সামনে তো রহস্য গল্পই হবে নয়তো কি পানুর গল্প বলবো?'
'
না একটা চিন্তা মাথার মধ্যে ঘুর ঘুর করছে সূর্যর মৃত্যু কি স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক? তুই কি জানিস?'
'
আরে ধৈর্য ধরনা ঠিক জানতে পারবি'
'
এই জন্যে শালা তদের মত আতেলদের আমি হেট্ করি শালা এখন নিজের গল্প বলার গুনও দেখাবি নাকি'
'
পরেছিস আতেলের সাথে খানা খেতে হবে একসাথে'
'
থাক থাক আর কাব্যিক হোসনা, আমার কাছে পূর্নিমা চাদ যেন ঝলসানো রুটি'
'
থাকিস তো চোর ছ্যাচড় নিয়ে আর কি ভালো আশা করব তোর কাছে'
'
একটা জিনিস সুধু বল ১৯৮০র ঘটনার সাথে গতকালের খুনটার কি সম্পর্ক?'
'
আছে আছে ভাই ধৈর্য ধর না একটু'
'
মেয়েটার সাথে সূর্য শেখর বা এখনো সোনা চরিত্র গুলোর কি সম্পর্ক, মেয়েটাকেই বা তুই কি করে চিনিস?'
'
আরে বাপরে চল শেষ হলো তোর ফোঁকা?'
'
হ্যা চল'
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
#28
২০০৩ কলকাতা দুর্গাপুজো.


উত্সবের আনন্দে মজে উঠেছে কলকাতা, আনন্দের ফোয়ারা বয়ে চলেছে বাঙালির মনে, আলোকসজ্জার মত চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে খুশি. দীর্ঘ লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখা, রাস্তার দোকান থেকে, আলুকাবলি, ফুচকা, অস্থায়ী রোল কাউন্টার সাথে কোল্ড ড্রিংকসের বোতলের টুং টাং আওয়াজ, কলকাতা কে তিলোত্তমা করে তুলেছে. সারা বছরের নানা সুখ দু: ভুলে মানুষের ঢল নেমেছে রাস্তায়. মন্ডপে মন্ডপে প্রতিযোগিতা আর টিভিতে লাইভ টেলিকাস্ট. সব মিলিয়ে এক মহাযজ্ঞ চলছে. সাথে নিয়ম সৃঙ্খলাও বড় দায়. কলকাতা পুলিশ এই কদিন সত্যি পুলিশ পুলিশ কাজ করে. নানারকম সেচ্ছা সেবকরা এগিয়ে আসে এই মহাযজ্ঞকে সুসম্পন্ন করতে.
আমিও দলবল নিয়ে আজ প্রতিজ্ঞা করেছি যে যত রাতই হোক আজ সাউথ থেকে নর্থে ঢু মারবই মারবো. আশা অনেক কম দেখতে পাচ্ছি বাড়ির কাছে যোধপুর পার্ক তাই রাত দশটা বাজে এখনো লাইন মাঝ পথে. এখনো একডালিয়া, সিংহী পার্ক, মুদিয়ালি, কত কি রয়েছে সাউথ কলকাতায়.
সুন্দরী নারীদের প্রতি আমি বরাবরই একটু দুর্বল. অন্য কিছু না দেখতে ভালো লাগে শুধু. গলদঘর্ম ভিড়ে তাই আমার সন্ধানী চোখগুলো খুঁজে বেড়াচ্ছে সুন্দরী মেয়ে যাকে দেখে একটু সময় কাটতে পারে যে কিনা একটা বরফ পাতের মতন সিহরন তৈরী করতে পারে আমার মনে যাতে করে এই ভিশন গরমের হাত থেকে কিছুক্ষণ মুক্তি পাওয়া যায়.
একেতে পুজো তার ওপর সাউথ, একদমই অপেক্ষা করতে হোলোনা. সুন্দরী সুবেশা এবং একা একটি অষ্টাদশী সেলিমপুরের দিক থেকে হন্তদন্ত হয়ে আসছে. রাস্তা ক্রস করতে চাইলো, পুলিশের সেচ্ছাসেবকরা ওর পথ আটকালো. কিছুক্ষণ থমকে থেকে মেয়েটা পুলিশ টেনে ধরা দড়ির তোলা দিয়ে এক দৌড় অন্য ফুটে. পুলিশগুলো হা হা করে উঠলো, এই ভাবে রাস্তা পার করার জন্যে. মেয়েটা কোমরে হাত দিয়ে দাড়িয়ে বললো " মরলে আমি মরবো আপনাদের কি? বরঞ্চ দেখুন যাতে ভিড়ে কারো দম বন্ধ না হয়ে যায়. অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে? এই ভিড়ে কারো কিছু হলে হাসপাতাল নিয়ে যেতে পারবেন? বড় বড় হাবভাব দেখালেই হলো না?"
'
বাপরে সেলিমপুরেও বাঘ, সরি বাঘিনী পাওয়া যায় নাকি?' নিজের মুখ থেকে অজান্তে বেরিয়ে এলো কথাটা. শুনে অনেকে হেসে উঠলো.
আমি যতদুর সম্ভব মেয়েটাকে দেখতে থাকলাম. দেখলাম মেয়েটা একটা ছেলের সামনে গিয়ে কিসব বলছে উত্তেজিত হয়ে, ছেলেটাও উত্তেজিত মনে হলো এরপর ছেলেটা হনহন করে একাই হাটতে শুরু করে দিলো. মেয়েটা প্রায় দৌড়ে দৌড়ে ওকে ফলো করছিলো. ওরা যোধপুর পার্ক বাজারের দিকে মিলিয়ে গেল. ওদিকে এতটা ভিড় ছিল না.
আমার কি ভাগ্য আবার মেয়েটার দেখা পেলাম যোধপুরপার্ক পুজো মন্ডপে এত তারাতারি ঢুকলো কি করে? আহা ছেলেটাও তো রয়েছে. ওহো ছেলেটা যোধপুরেরই মেম্বার তাই দুজনে ঘুর পথে তারাতারি ঢুকে পড়েছে. কিন্তু মেয়েটার মুখটা এরকম বিসাদ্গ্রস্থ কেন? আমি ওদের ফলো করে চললাম. মেয়েটা ছেলেটাকে কি একটা বললো ছেলেতা বাজে ভাবে রিয়াক্ট করলো. আমার মনে হচ্ছিল যে গিয়ে এক ঠাটিয়ে চোর কষায় ছেলেটাকে এত সুন্দরী একটা মেয়ে তোর পিছে পিছে ঘুরছে আর তুই শালা ভাও নিচ্ছিস?
মেয়েটা আর ওখানে না দাড়িয়ে ঘুরে চলে গেল ছেলেটা ঘুরেও দেখল না, মনে হচ্ছে যে মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল. ইস এমন পুজোর দিনে কেউ কাউকে কাঁদায়? আমি তো ভাবতেও পারিনা.
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
#29
সুযোগ থাকলে গিয়ে মেয়েটার সাথে আলাপ করে ওর দু: ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতাম. কিন্তু এখন এই কেস এখান থেকে বেরোনো মানে বন্ধুরা বিরাট বাওয়াল দেবে. তাই বিরত রইলাম.
আমার কি ভাগ্য রাত আড়াইটে দমদম পার্কে গিয়ে আবার তার সাথে দেখা. এবার একদঙ্গল মেয়ের সাথে সে বেরিয়েছে. বুঝতে পারলাম যে মেসএ থাকে এবং কলকাতার মেয়ে না আমার একহাত দুরে মেয়েটা ওর বন্ধুদের সাথে লাইন দিয়ে দাড়িয়ে আছে. মুখটা দেখতে না পেলেও যে বেশ অন্যমনস্ক হয়ে আছে বেশ বোঝা যাচ্ছে. আহারে আজকে বোধ হয় ওর বয়ফ্রেন্ডএর সাথে কাট আপ হয়ে গেল. কি এমন দোষ করলো মেয়েটা বুঝলাম না. যোধপুর পার্কের মেম্বার মানে বড়লোকের বেটা, হয়ত অন্য গার্লফ্রেন্ড আছেটাছে.
এই আমার এক বদ অভ্যেস একবার যে জিনিস মাথায় ঢোকে সেটা একদম কিলবিল করতে থাকে.
এরপরেও বেশ কিছু বার আমি মেয়েটিকে দেখেছি ওই এলাকাতেই বুঝতেই পারছিলাম যে বেশি কসরত করতে হবেনা আলাপ করতে. আহহা ভুল ভাববেন না, সুধু আলাপ. তখন আমার বর্তমান বউয়ের সাথে আমার সম্পর্ক একদম জমে ক্ষির, পারলে রুমাকে নিয়ে কবিতা লিখি.
একটা জিনিস আমি মনে মনে মানি যে কোনো কিছু যদি মন থেকে চাওয়া হয় তাহলে সেটা আপনি পাবেনই. হ্যা এটা ঠিক যে চাইবার জোর থাকতে হবে আর আপনার সঙ্গতির সাথে মিলতে হবে. এখন আপনি যদি মন থেকে চাইতে শুরু করেন যে প্রিয়াঙ্কা চোপরাকে আপনি .......বেন তাহলে আপনিই জানেন কি ভাবে আপনার শরীর ক্ষয় হতে পারে.
আমি মেয়েটার কথা দিন রাত চিন্তা করতাম. আসলে আমি খুব নরম সরম ছেলে, তাই মেয়েটার ব্রেক আপটা আমার খুব খারাপ লাগছিলো

টেলিপ্যাথির জোর বলুন আর যাই বলুন না কেন, একদিন সেই সুজগ এসে গেল
দুর্গাপুর থেকে ফিরছিলাম, রানিগঞ্জে ঝড় জলের জন্য ওভারহেড তার ছিরে সব ট্রেন আটকে ছিলো বহুখন প্রায় রাত আড়াইটেতে এসে হাওড়া ঢুকলো শতাব্দি ট্যাক্সির জন্যে মারামারি পরে গেল একটা শোনা শোনা গলা পেলাম ঘার ঘুড়িয়ে উৎসটা খুজতে গিয়ে দেখি সেই মেয়েটা তুমুল লেগে গেছে ট্যাক্সিওয়ালার সাথে কেন যাদবপুর যেতে ৩০০ টাকা চাইবে বাবা কার সাথে লেগেছে ওরা যদি জানতো
আমি ওর দিকে নজর রাখতে রাখতেই নিজের ট্যাক্সি খুজতে শুরু করলাম গুটি কয়েক ট্যাক্সি আর পঞ্চাশ জন যাত্রি বুঝতেই পারছেন যে কি হতে পারে আস্তে আস্তে ট্যাক্সির রেট বারতে শুরু করলো মেয়েটাও দেখলাম একটা মধ্যস্তথায় আসতে চাইছে একা মেয়ে টেনশন তো হবেই
আমার সাথে মাঝে মাঝে চোখাচুখি হচ্ছ কিন্তু বুঝতে দিচ্ছেনা না যে বিপাকে পরেছে
প্রায় ৪৫ মিনিট কেটে গেলো এই ভাবে কিন্তু ততখনে ট্যাক্সি কমেছে আর দড় বেরেছে ওরা যা বলছে তাতেই রাজি হয়ে সবাই তারাতারি বারি ফিরতে চাইছে
আমি এই মহেন্দ্রখনের অপেক্ষা করছিলাম
মেয়েটার দিকে এগিয়ে গেলাম বললাম “ excuse me, if I am not mistaking you are going towards south kolkata.”
মেয়েটা আমার দিকে একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো, ‘হ্যা কিন্তু...’
আসলে আপনি ট্যাক্সি খুজছেন আর আমিও সেই থেকে দারিয়ে দেখছি যে কি চলছে আমিও ঢাকুরিয়া যাবো যদি আপনি চান তো শেয়ার করে যেতে পারি

মেয়েটা আপাদমস্তক আমাকে দেখলো. তারপর হেসে বলল এখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভোর হার অপেখ্যা না করে শেয়ার করে ট্যাক্সিতে যাওয়াই ভালো.
এই প্রথম, মুহুর্তের জন্যে হলেও মেয়েটাকে ভালো করে দেখলাম. সত্যি খুব সুন্দরী. যাকে বলে ফ্ল লেস বিউটি. নাকে একটা নাকচাবি, আর কানে দুটো ছোট দুল, ঘর পর্যন্ত স্টেপ করা চুল দারুন মানিয়েছে মেয়েটার মুখশ্রীর সাথে. সাদা একটা টি শার্ট পরে আছে যেটা ঠেলে সু উন্নত বক্ষযুগল পিনের মতো ছুচলো হয়ে আছে. -" ইঞ্চি হবে হাইট. সাথে টাইট জিন্সটা অর পায়ের সাথে সেটে বসে আছে, মনে হচ্ছে সামন্য একটা ব্লেডের খোচাতে পুরো জিন্সটা ফেটে যাবে.
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
#30
নিজেকে বিরত রাখলাম ওর শরীরের বর্ণনা সংগ্রহ করার থেকে. আবার দুশ্চরিত্র না ভেবে বসে.
যাই হোক একজন দয়ালু ট্যাক্সি ড্রাইভার শেষ পর্যন্ত আড়াই টাকায় নিয়ে যেতে রাজি হলো আমাদের.
আমি মন থেকে না চাইলেও সামনের সিটে উঠে বসতে যাচ্ছিলাম. মেয়েটাই আমাকে বললো, "একি সামনে কেন বসছেন? পিছনে এত জায়গা রয়েছে." নিজেকে খুব ভদ্র প্রমান করার চেষ্টা করছিলাম ওর কাছে. আসলে আমি কুড়িয়ে পাওয়া ষোলো আনা ছাড়তে চাইছিলাম না. আসলে আমার উদ্দেশ্য ওকে ইমপ্রেস করা.
ট্যাক্সিতে আসতে আসতে টুকটাক কথা বার্তা বলে জানতে পারলাম যে মেয়েটা যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে পাস আউট, ঝিল রোড একটা মেসে থাকে. বাড়ি দুর্গাপুর এখানে ফিল্ম আর মডেলিং লাইন ব্রেক পাওয়ার চেষ্টা করছে. আমিও যাদবপুর পাস আউট জেনে বেশ ইন্টারেস্ট দেখালো. আসতে আসতে আমার লক্ষের দিকে এগুতে থাকলাম.
আমি বললাম "আপনি কিছু মনে না করলে আমি আপনাকে তুই বলে ডাকতে পারি আফটারঅল আপনি আমার কলেজ জুনিয়র."
"
হ্যা হ্যা" মেয়েটা উত্সাহের সাথে বললো.
আমি এবার বললাম "এতক্ষণ কথা হলো আমি কিন্তু তোর নামটা জানতে পারলাম না.'
'
অনুসূয়া মিত্র' সে হেসে আমাকে জানালো.
'
আমি কিন্তু অনেকদিন আগেই তোকে দেখেছি' আমি বললাম.
'
কোথায়' অনুসূয়া অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো.
'
যাদবপুর আর ঢাকুরিয়া কত আর দূর, চলার পথেই কোথাও দেখেছি' আমি বললাম. এই মুহুর্তে আমি ওকে পুজোর কথা মনে করিয়ে দিতে চাইলাম না.
একটু চিন্তিত দেখালো ওকে.
'
কি চিন্তা করছিস?' আমি জিজ্ঞেস করলাম.
"
না মানে ভাবছি কোথাও খাবার দোকান খোলা পাওয়া যাবে?" বেশ উদ্বিগ্ন ভাবে বললো .
আমি বুঝে গেলাম কি কেস বললাম "হ্যা হ্যা এটা কলকাতা শহর কিছু না কিছু পাওয়া যাবে.' আসলে মেসে ঢুকে এখন কোন খাবার পাবেনা সেই আশংকায় করছিলো

আমি ট্যাক্সিওয়ালা কে বললাম ' ভাই বালিগঞ্জ ফাড়ি দিয়ে নিন না তাহলে আজাদ হিন্দ ধাবা খোলা পাওয়া যাবে'
'
ইতনা রাত হো গায়া তো হাম কো ঘর ভি জানা হ্যায় না' ট্যাক্সি ড্রাইভার চিরাচরিত ঢঙে বললো.
'
আরে ইয়ার তুম ভি থোড়া খালো হাম লোগোকে সাথ নেহিতো ঘর কে লিয়ে লে যাও পায়সা হ্যাম দেঙ্গে' আমি ট্যাক্সি ওয়ালা কে বললাম.

আজান হিন্দ ধাবায় তখন বেশ কিছু গাড়ি দাড়িয়ে, আমরা চট জলদি হবে বলে রুটি আর মটন কষা নিলাম সাথে লস্যি. অনুসূয়া দেখলাম খাওয়া দাওয়া শেষ করে তারাতারি মুখ ধুয়ে নিলো.
আমি বিল মিটিয়ে আবার ট্যাক্সিতে গিয়ে উঠলাম.
অনুসূয়া বাকি রাস্তা চুপ করে রইলো.
আমি ঢাকুরিয়াতে নেমে ট্যাক্সি বিল পুরো মিটিয়ে দিয়ে অনুসূয়া কে যাদবপুর নামিয়ে দিতে বললাম. পুরো দিচ্ছি বলে বাধা দিলেও আমি শুনলাম না.
ট্যাক্সি ছেড়ে যেতেই খেয়াল হলো আরে আমি তো ওর কোনো কন্টাক্টই রাখলাম না.
[+] 5 users Like ddey333's post
Like Reply
#31
Update please
Like Reply
#32
(30-09-2021, 01:10 PM)fuckerboy 1992 Wrote: Update please

সব মিলিয়ে প্রায় ২৮টা আপডেট দেওয়ার পরেও কারো কোনো সাড়াশব্দ পাইনি এখানে ... তাই ওয়েব আর্কাইভ থেকে ডাউনলোড করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম ...


দেখবো যদি ভবিষ্যতে কখনো সময় পাই এবং ইচ্ছে হয় !!! Sad
Like Reply
#33
দাদা আপডেট দিন
Like Reply
#34
কাহিনী একদম জমে গেছে। অপেক্ষায় রইলাম
Like Reply
#35
Wonderful story. Waiting for next update.
Like Reply
#36
দাদাহ গল্পটা খুব সুন্দর ছিলো, যদি কন্টিনিউ করতেন।
Like Reply
#37
Jas sala sob valo valo golpo guloi osomapto  Dodgy
Like Reply
#38
রুমা ডুকরে কেঁদে উঠলো, এতটা শুনেমানুষ এরকম করতে পারে?’
অরুপও চুপ করে রইলো।
আমি রুমাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম মানুষ বলেই তো এতবড় নৃশংসতার পট তৈরি করতে পারলো সেদিনের দিল্লির সেই গোল টেবিল বৈঠকে পাঁচ কোটি দিয়ে ওরা সতিশ শর্মা কে কিনলো. তারপর স্থানীয় থানাকে দশ লক্ষ এই করে পয়সা ছড়িয়ে ছড়িয়ে ওরা সবিকে কিনে নিলো এক রাতের মধ্যে. তার তিন চারদিনের মধ্যেই তাদের ছক কষে এই আক্রমন. মানুষ বলেই তো এত প্ল্যান প্রোগ্র্যাম এত সংগঠিত অপরাধ.'
অরুপের মুখ দিয়ে সুধু সেম সেম কথাটা বেরোলো.
রাজের কি হলো? রুমা জিগ্যেস করলো দেওয়ালে লাইভ সাইজ রিতমের ফটোর দিকে তাকিয়ে চোখের জল মুছতে মুছতে.
রাজ এখন ছুটে চলেছে ওর জীবন রহস্য উদ্ঘাটন করতে। আমি একটা সিগেরেট জালাতে জালাতে উত্তর দিলাম।
অরূপ টান টান হয়ে বসলো 'মানে রাজ এখনো বেচে আছে?'
'
হ্যা সেদিন ওই শয়তানগুলো বেরিয়ে যাওয়ার সময় জোসেফের লোকেদের নির্দেশ দিয়ে গেল যে লাশ দুটো গুম করে দিতে. কথা মত ওরা ঘটনাস্থলে পৌছে দেখলো না সিমরন সেখানে আছে না রাজ' এদিক ওদিক খুঁজে কোথাও না পেয়ে যখন নেমে আসছে তখন কেউ বা করা ওদের ওপর হামলা করে যাতে ওদের একজনও বেচে ফিরতে পারেনি যে মালিকদের খবর দেবে.'
অরূপ অবাক হয়ে বলল 'বাবা এটা আবার কি কেস? এতই যখন শুভাকাঙ্খী কেউ ছিল তো ওদের কে বাচালো না কেন?'
'
হমমম সেই জায়গাটাতে আমারও খটকা. কে বা কারা ছিলো সেই দলে? পরের দিন নিউস পেপারে ফলাউ করে বেরোলো পরবর্তী হত্যাকান্ডের ঘটনা যাতে সিমরনকে দায়ী করে গ্রেফতারের দাবি তোলে প্রতাপ সিংহ এবং সে নিজে বিবৃতি দেয় যে এই পরিবার আগেও গণহত্যার সাথে জড়িত ছিলো আজও এরাই এত নিরীহ মানুষের হত্যা করে গা ঢাকা দিয়েছে' আমি এতটা বলে সিগারেটে দম দিলাম.
'
রাজের ব্যাপারে তুই কি করে জানলি?' অরূপ আবার জিজ্ঞেস করলো.


ইডেন গারডেন ১৯৯৯। ভারত বনাম পাকিস্তান টেস্ট ম্যাচ।

প্রায় এক লাখ দর্শকের সামনে ভারত এখন চালকের আসনে. দর্শকদের ফুর্তি আর গর্জনের দৌলতে নিজেরাই নিজেদের কথা শুনতে পারছিনা. ইডেন গার্ডেনের দর্শক প্রিথিভি বিখ্যাত তার মুডের দৌলতে. এখানেই সুনীল গাভাস্কার টেস্ট ম্যাচ না খেলতে চাওয়ায় ইডেন নানা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করেছে তাকে. দলীপ ভেন্গ্সরকারের মত টেস্ট প্লেয়ার কে এখানে হাত জোর করে ক্ষমা চাইতে হয়েছে. এক কোথায় বিশ্ববন্দিত জনতা আমাদের ইডেনের. যে কোনো ক্রিকেটার চাইবে যে একবারের জন্যে ইডেনে খেলতে. কারণ এই জনতা.
আমিও দলবল নিয়ে হাজির ফেব্রুয়ারী মাসের এই উত্তাপ নিতে নিজের শহরে. এই বিশেষ ম্যাচের জন্যে ভারত সরকার অনেক পাকিস্তানি দর্শককে ভিসা দিয়েছে সম্প্রীতির হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্যে.
আমার সামনেই কিছু পাকিস্তানি যুবক বসেছিল ওদের আলাদা জায়গা থাকা সত্বেও.. খুব মাথা গরম করিয়ে দিচ্ছিল ওরা. কথায় কথায় গালাগালি দিচ্ছিলো মেয়ে দেখলেই ওদের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছিলো, টোন টিটকিরি না করলেও এমন হাবভাব করছিলো যে রক্ত মাথায় উঠে যাচ্ছিলো. ওদের মধ্যে একজন আরেকজনকে বলতে শুনলাম যে সোনাগাছি গিয়ে * মেয়ে লাগালে নাকি ওর দৈন্যদশা কেটে যাবে আর * মেয়েরা মুখিয়ে থাকে ওদের জন্যে. সেই ছেলেটি আবার উত্তর দিল স্টেডিয়াম থেকেই কাউকে পাওয়া যায় নাকি দেখতে এদের পয়সা দিলে ঠিক শুয়ে পরবে. বলুন মাথা কি করে ঠিক থাকে। তাও খেলা দেখার মুড নষ্ট করবোনা বলে চুপ করে রইলাম।
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#39
এরপর সেই বহুবিতর্কিত রান আউট, সচিন তেন্ডুলকার রান আউট সৌজন্যে তৃতীয় আম্পায়ার. শোয়েব আখতারের সাথে ধাক্কায় সে তৃতীয় রান শেষ করতে পারেনি. গ্যালারি প্রচন্ড উত্তপ্ত হয়ে উঠলো. আমাদের সামনে বসা পাকিস্তানি ছেলে গুলোর মধ্যে একটা ছেলে বলে উঠলো ইয়ে মাদারচোদ লোগ হামেশা সব করতে হ্যায়. বাকি ছেলেগুলো সেটা শুনে হ্যা হ্যা করে হেসে উঠলো.
আমার খুব মাথা গরম হয়ে গেলো সোজা ছেলেটার সামনে গিয়ে বললাম 'আভি কিসকো মাদারচোদ বোলা তুমনে?'
ছেলেটা একটুও না ঘাবড়ে গিয়ে বললো ' শের কে সাথ টাকরাকে বান্দর জমিন পর হি গিরতে হ্যায় উসে মান লেনা চাহিয়ে, জিন জিন লোগো কা ইয়ে সাচ কবুল করনে কা হিম্মত নেহি হ্যায় উওলোগ মাদারচোদ হ্যায়.'
আমি সোজা ছেলেটার কুর্তার ঘরের কাছ টা চেপে ধরলাম, সাথে সাথে ওদের একজন আমার মাথার পিছনে সজোরে ঘুষি চালিয়ে দিলো.
কিছু বোঝার আগেই দেখলাম কেউ একজন ঝড়ের মত ওদের এলোপাথারি পিটতে শুরু করলো আর ওদের ধুলতে ধুলতে বলতে থাকলো 'শালা তে লোগো কে লিয়ে আমন নেহি, তে লোগোকো তো পাগলায়া কুত্তে কে তারা বেমৌত মার ডালনা চাহিয়ে. হামারা দেশ মে একে হাম্হী লোগোকো গালি ডালতা হ্যায়, ইতনা হিম্মত হ্যায় তো এক হাত মুঝসে লাড়কে দিখা'
আমার দলবল এসে গেলেও, আসের পাসের দর্শকরা ওদের কেলানোর পুরো বন্দোবস্ত করে নিলেও ওই ছেলেটার একা অতজনকে ধোলাই করার দৃশ্য সবাই হা করে দেখছিলাম. বাপরে বাপ কি মারটাই না মারলো, একেক হিটে চার পাঁচ হাত করে ছিটকে পড়ছিল ওদের একেকজন . ছেলেগুলো কে মার খেতে দেখে আমারই মায়া লাগছিল. এক প্রকার ধুনে দিয়ে ছেলেটা থামলো.
wow what a look. মেয়ে হলে এখুনি হাটু মুড়িয়ে ওকে বলতাম আমার হাত ধরে মরে নিয়ে চলো সখা মনে মনে নিজেই বলে উঠলাম।
ফুট প্লাস উচ্চতা, লম্বা লম্বা ঝাকরা চুল কাধ অবধি. বাদামী চোখের মনি, নিষ্পাপ, সরল, বড় বড়, সে দুটো চোখ. হালকা দাড়ি সযত্নে লালনপালন করা, আর ডিম্বাকৃতি মুখমন্ডলের চারপাশে ঝাকরা ঝাকরা চুল চারিদিক থেকে এসে পড়েছে. পেটানো চেহারা সাদা টি শার্ট ভেদ করে মাসলগুলো উকি ঝুকি দিচ্ছে সরু কোমরের তলায় একটা টাইট ডেনিম, পেশীবহুল পা গুলোর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে. দেখে মনে হচ্ছে হলিউডের কোনো ম্যাচো হিরো দাড়িয়ে আছে. ঠিক যেন কাসানোভা, না না কাউবয় টাইপ রাফ এন্ড টাফ, না না গ্রিক কোনো দেবতা, থুড়ি যিশু খ্রিষ্ট, ধুর শালা কি বলে যে ওকে এক কথায় প্রকাশ করব বুঝতে পারছি না.
আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার কাঁধে হাত রাখলো, শুদ্ধ বাংলায় বললো. এগুলো খুব হারামি, তখন থেকে মাথা গরম করিয়ে যাচ্ছিলো, ভালো হয়েছে তুমি এগিয়ে গেলে.
আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম. কিছু বলতে পারলাম না.
আমাকে ক্রস করে দু এক ধাপ উঠতেই এক বিদেশিনী এসে ওর হাত ধরলো.
what were you doing, are you a roudy or local taught what are you? You could have got hurt, they were more in number than you
oh come on dear dont be so panicked, its India and moreover kolkata nothing will happen to those who are taking the right decision here and all of us are friend here’ বিদেশি আক্সেণ্টে গরগর করে বলে গেল।
Like Reply
#40
আসতে আসতে হট্টগোলে ওদের আওয়াজ আর শুনতে পারলামনা.
একটু পরে পুলিশ স্টেডিয়াম থেকে সবাইকে বের করে দিলো খালি স্টেডিয়াম এই খেলা চালাবে বলে ঠিক হলো.
আমি আমার বন্ধুদের বললাম তরা বাড়ি ফিরে যা আমার একটু পার্ক স্ট্রিটএ কাজ আছে আমি কাজ করে একাই ফিরে যাব.
আমি একাই হাটতে হাটতে পার্ক স্ট্রিট একটা দোকানে কিছু আর্ট কালেকশন দেখতে চলে গেলাম. বন্ধুদের সাথে আনলে ওরা বোর হোত, তাই এড়িয়ে গেলাম.
সেখান থেকে বেরিয়ে কিছুতেই ট্যাক্সি বা বাস পাচ্ছিলাম না. অনেকক্ষণ দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাটতে শুরু করলাম.
হটাত ঝড়ের গতিতে একটা বাইক এসে সামনে ক্যাঁচকোঁচ করে দাড়ালো. সেই ছেলেটা স্টেডিয়াম কাপানো সেই ছেলেটা. আমি অবাক হয়ে গেলাম, ওর সামনে নিজে কেমন যেন
ভেতো ভেতো মনে হচ্ছিলো. আমাকে বাইকের পিছনে উঠতে ইশারা করলো.
আমি ভাবছি দেখে বললো ' আরে ওঠো ওঠো, কথায় যাবে তুমি আমি তোমাকে গড়িয়া পর্যন্ত ছাড়তে পারি আর যদি না চাও তাহলে তাহলে সরকারী রাস্তা তোমারও সমান অধিকার আছে হাটার দেদার হাট কেউ ট্যাক্স চাইবেনা' বলে মুক্তর মত দাঁত বের করে কি সরল সেই হাসি. আমি যেন আগুনে ধরা আইসক্রিমের মত গলে গেলাম. হেসে বললাম 'ভালই হলো আমি ঐদিকেই যাবো. ঢাকুরিয়া'
'
আরে বাবা চলো ওঠো ওঠো' পিছনের সিটটা দেখিয়ে.
কিছুটা চালিয়ে হটাত একসাইড মোরের দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে বললো 'তারা নেই তো কোনো?'
আমি ওর রথের যাত্রী কি করে সারথিকে বলি যে এদিকে কেন ঘুরলে তাই বললাম 'না না'
'
চলো তাহলে এলগিন রোডের পাঞ্জাবির দোকান থেকে চা খেয়ে তারপর যাই' ঝড়ের গতিতে এদিকওদিক কাটিয়ে বাইক চালাতে চালাতে বললো.
মিনিট খানেকের মধ্যে আমরা সেই পাঞ্জাবি দোকানে এসে দাড়ালাম. অনেকে গাড়ি দাড়িয়ে, অনেক বাইক দাড়িয়ে, অনেকে ওকে চেনেও দেখলাম আর যে রেগুলার খদ্দের সেটা বুঝতে অসুবিধে হোলোনা.
সঙ্গে সঙ্গে দুটো বড় ভাড়ে চা এসে গেল.
চায়ের ভাড়ে চুমুক দিয়ে বাইকের গায়ে হেলান দিয়ে দাড়ালো, আমি ওকে দেখে যাওয়ার লোভ ছাড়তে পারছিলাম না. পুরো যেন মডেল এরকম মডেল আজ পর্যন্ত ভারতবর্ষে আসেনি.
'
কি কর তুমি?' আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করলাম.
'
অনেক কিছু' হেসে বললো
'
মানে?'
'
মানে- এই কয়েকদিন গাইডের কাজ করছি কানাডা থেকে কিছু ফরেইনার কলকাতা দেখবে বলে এসেছে তাই'
'
ওহ তাই নাকি?'
'
হ্যা'
'
আর এই কাজ না থাকলে?'
'
নানা রকম কাজ করি চাকরি বাকরি করার ইচ্ছে নেই সেরকম'
'
না মানে ক্যারিয়ার নিয়ে কিছু ভাবছ না'
'
চেষ্টা করছি মডেল বা ফিল্ম সেরকম কিছুর. তুমি কি করছ?'
'
আমি ফাইন আর্টস লাইন আছি কিন্তু ঘষে যাচ্ছি, তুমি ফিল্মে নাম অ্যাকশন হিরো হিসেবে দারুন মানাবে তোমাকে ভালই তো অ্যাকশন করো'
'
কেন এক্টিং টা ভালো করিনা?'
'
এক্টিং আর কোথায় দেখলাম?'
'
কেন সেই যে ডায়ালগগুলো দিচ্ছিলাম?'
'
মানে?'
'
আরে ধুর তুমি কি আমাকে দেশপ্রেমী টেমি ভেবে বসলে নাকি? আসলে ওদের বান্দরামী দেখে রাগ উঠে যাচ্ছিল আর যখন দেখলাম তুমি এগিয়ে গেছ আর ওরা তর্ক করে যাচ্ছে আর তোমার দিকে ঘুষি মারলো আর মাথা ঠিক রাখতে পারলাম না. এমনি শালাদের দেখলে আমার মাথা গরম হয়ে যায় তার ওপর এরকম হারামি গিরি করলে তো মার খাবেই. কিন্তু ডায়ালগ গুলো কেমন দিচ্ছিলাম বলো' বলে হো হো করে হেসে উঠলো.
আমিও হেসে উঠলাম.
হাসি থামিয়ে আমাকে বললো ' আমাকে একটা হেল্প করবে?'
'
কি?'
তোমাদের ওদিকে একটা রুম রেন্ট যদি পাওয়া যায় আমি একাই থাকব এই ধরো হাজার তিনেকএর মধ্যে যদি কোনো ফ্ল্যাট ভাড়া পাওয়া যায়.'
'
ঠিক আছে অবশ্যই চেষ্টা করব তুমি তোমার মোবাইল . দাও'
নম্বরটা বলার পরে আমি আমার নাম আর নম্বর বললাম আমি অর দিকে তাকিয়ে বললাম 'স্যার নামটা বলুন সেভ করতে হবে তো'
'
ওহো এত কথা হয়ে গেল আর নাম জানা হয়নি লেখো রাজ... রাজশেখর চৌধুরী.'

 

Like Reply




Users browsing this thread: 16 Guest(s)