Posts: 3,689
Threads: 14
Likes Received: 2,572 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
(14-09-2021, 08:05 PM)Bumba_1 Wrote: অনেকেই PM করে জানতে চেয়েছেন হঠাৎ কি হলো নাগপাশ - the trap নামক আমার বর্তমান থ্রেডটি আর এই সাইটে দেখতে পাচ্ছে না কেনো !!
সবাইকে তো আলাদা করে reply দেওয়া সম্ভব নয়। তাই এখানে জানিয়ে দিলাম..
আমি মানুষ হিসাবে যেমনই হই না কেনো, আমার কাজের ক্ষেত্রে সব সময় সৎ থাকার চেষ্টা করি। দিনের পর দিন এই সাইটে থ্রেডটি'কে ফেলে রেখে পাঠকদের মনে মিথ্যে আশার সঞ্চার করতে চাই না এবং অযথা views বাড়াতে চাই না। তাই sarit11 কে বলে আপাতত কিছু দিনের জন্য hide করে দিয়েছি। কারণ, ভেবেছিলাম তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারবো। কিন্তু বর্তমানে আমার শরীরের অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে। কার্যত এই রকম শারীরিক এবং মানসিক পরিস্থিতিতে ওই ধরনের আদিরসাত্মক গল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
তবে আপনারা যদি চান মাঝেমধ্যে এই থ্রেড অর্থাৎ গল্পগুচ্ছ তে কিছু লিখতে পারি।
ধন্যবাদ .. ভালো থাকবেন সবাই। 
এই মানুষটাকে যতো দেখছি ততো আশ্চর্য হচ্ছি। একদিকে বলছে শরীরের অবস্থা ক্রমাগত অবনতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর একদিকে বলছে আমরা চাইলে গল্পগুচ্ছ লেখার চেষ্টা করবে.....
এরপর এই লোকটাকে আর কি বলা যায় সেটাই ভাবছি....
❤❤❤
Posts: 1,255
Threads: 2
Likes Received: 2,307 in 1,023 posts
Likes Given: 1,629
Joined: Jul 2021
Reputation:
666
আবারো নিজের কর্তব্য জ্ঞানের এক অদ্ভুত পরিচয় রাখলে। বর্তমানে আর লিখতে পারছো না, তাই শুধুমাত্র views বাড়াতে চাও না বলে thread টাই তুলে নিলে! তোমাকে বোঝা অন্তত আমার পক্ষে সম্ভব নয় বুম্বা।
তোমার non errotic গল্প পড়ে আমি বরাবর সমৃদ্ধ হই। তাই এখানে লিখলে তো ভালোই লাগবে। তবে আমি তো জানি আসলে তোমার কি হয়েছে, তাই হৃদয় চাইলেও মন থেকে চাই তুমি লিখো না। গান গাওয়াটাও বেশ কিছুদিন বন্ধ রাখো। তার সঙ্গে অফিস যাওয়াটাও স্থগিত রাখো বেশ কয়েকদিন।
Posts: 4,432
Threads: 6
Likes Received: 9,366 in 2,850 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(14-09-2021, 08:25 PM)Baban Wrote: আমি বেশি কিছু বলবোনা... শুধু এইটুকুই বলবো শরীর, মন ভালো না থাকলে লেখা চাইলেও ঠিক মতো যথার্থ রূপে ফুটিয়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়ে. আমারও এই লেখার যাত্রায় এরকম হয়েছে.... অসুস্থতার মধ্যে যথা সময় আপডেট দিতে হয়ে. আমি বুঝতে দিইনি কি অবস্থায় আপডেট দিচ্ছি. ভাগ্গিস আগের থেকেই এগিয়ে রাখতাম আপডেট গুলি.
কিন্তু আমার সামান্য অসুস্থতা আর তোমার অসুবিধার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ. তাই বলছি ওসব গল্প এখন ভুলে যাও দেখি...... আগে নিজের শরীর তারপর ওসব. আমরা তোমার পাঠক বন্ধুরা পাশে আছি. তোমার সুস্থতা কামনা করি দ্রুত ❤ আগে পুরো ঠিক হয়ে যাও তারপরে ভবেশ নন্দিনী বিট্টু আর সবাইকে আবার ফিরিরে আনো. আবারো ছন্দ মিলের যাত্রা শুরু হবে. কয়েক লাইন তোমার, কয়েক লাইন আমার আবার পোকাদারও.
এই থ্রেডে কিছু লিখতে হলে যদি শরীর দেয় ও মনে খুব ইচ্ছা জাগে তবেই লিখো. নইলে জোর করার কোনো দরকার নেই. আবারো বলি -
এ বাবু.... তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যা দেকিনি... তুর লেখার অপেক্ষায় থাকবু মোরা
আসলে কি জানো তো ওই ধরনের আদিরসাত্মক গল্পের আপডেট লেখার মুহূর্তে নিজের মনকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও কামোত্তেজক করে তুলতে হয়। না হলে লেখার মধ্যে প্রাণ আসবে না কিছুতেই (এ কথা নিশ্চয়ই তুমি ভালো করেই জানো)। কিন্তু আমার শারীরিক এবং মানসিক এই অবস্থাতে নিজের মনকে আর যাই হোক উত্তেজিত করা অসম্ভব।
জলদি ফিরবোক বাবু .. চিন্তা করিস না বটে
(14-09-2021, 08:52 PM)Bichitravirya Wrote: এই মানুষটাকে যতো দেখছি ততো আশ্চর্য হচ্ছি। একদিকে বলছে শরীরের অবস্থা ক্রমাগত অবনতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আর একদিকে বলছে আমরা চাইলে গল্পগুচ্ছ লেখার চেষ্টা করবে.....
এরপর এই লোকটাকে আর কি বলা যায় সেটাই ভাবছি....
❤❤❤
কি আর বলবে .. কয়েকটা মনপসন্দ কাঁচা খিস্তি দিতে পারো।
(14-09-2021, 08:57 PM)Sanjay Sen Wrote: আবারো নিজের কর্তব্য জ্ঞানের এক অদ্ভুত পরিচয় রাখলে। বর্তমানে আর লিখতে পারছো না, তাই শুধুমাত্র views বাড়াতে চাও না বলে thread টাই তুলে নিলে! তোমাকে বোঝা অন্তত আমার পক্ষে সম্ভব নয় বুম্বা।
তোমার non errotic গল্প পড়ে আমি বরাবর সমৃদ্ধ হই। তাই এখানে লিখলে তো ভালোই লাগবে। তবে আমি তো জানি আসলে তোমার কি হয়েছে, তাই হৃদয় চাইলেও মন থেকে চাই তুমি লিখো না। গান গাওয়াটাও বেশ কিছুদিন বন্ধ রাখো। তার সঙ্গে অফিস যাওয়াটাও স্থগিত রাখো বেশ কয়েকদিন।
বুম্বাচরিত্র বেজায় জটিল .. jisse pakadna mushkil hi nahi namumkin hai ..
তবে থ্রেড তুলে নেওয়ার কাজ যে এই প্রথম করলাম তা তো নয়। এর আগেও এই কর্ম করিয়াছি। চক্রব্যূহে শ্রীতমা লেখার সময় একজন খুব কাছের বন্ধুকে হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। তারপর sarit11 কে বলে থ্রেডটি কয়েকদিনের জন্য hide করে দিতে বলি। কিন্তু সেই সময় এতটাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম কথাগুলো আমার পাঠক বন্ধুদের জানাতে পারিনি বা তাদের মেসেজের রিপ্লাই দিতেও পারিনি।
তারপর আমার থ্রেডটি'কে খুঁজে না পেয়ে চক্রব্যূহে শ্রীতমা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এই রকম কিছু একটি নামের থ্রেড কোনো একজন খোলে এবং সেখানে প্রবল জনরোষের সামনে পড়ে আমাদের বেঙ্গলি মডারেটর বাধ্য হয়ে আমার অনুমতি ছাড়াই থ্রেডটি'কে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসে। দিন দশেক পর এই সাইটে ফিরে পুরো ব্যাপারটা জানতে পারি। তাই পুনরায় যাতে এরকম কিছু না হয় তাই আগে থেকেই সবাইকে জানিয়ে দিলাম। গান হয়তো কয়েকদিন গাইছি না, তবে মাঝেমধ্যে অফিস যেতেই হচ্ছে। ওখানে গিয়ে তো শুধুমাত্র বসে থাকা ছাড়া কোনো কাজ করতে হয় না আমাকে .. তাই অসুবিধা নেই।
Posts: 4,432
Threads: 6
Likes Received: 9,366 in 2,850 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
15-09-2021, 03:26 PM
(This post was last modified: 15-09-2021, 03:26 PM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
আগামীকাল ঠিক এই সময় আসছে বুম্বার হনুমান পোষা
Posts: 6,161
Threads: 42
Likes Received: 12,437 in 4,169 posts
Likes Given: 5,340
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,799
(15-09-2021, 03:26 PM)Bumba_1 Wrote:
আগামীকাল ঠিক এই সময় আসছে বুম্বার হনুমান পোষা
হুপ... হুপ.. খি খি... খিখি.... হুপ.
মনুষ্য জাতির সুবিধার জন্য উপরুক্ত লেখার বঙ্গানুবাদ হইল- অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম.
Posts: 3,689
Threads: 14
Likes Received: 2,572 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
(15-09-2021, 03:26 PM)Bumba_1 Wrote:
আগামীকাল ঠিক এই সময় আসছে বুম্বার হনুমান পোষা
আমার এমন কেন মনে হচ্ছে যে এটা আপনার আগে লেখা....
তবুও অপেক্ষায় আছি.... আপনি হনুমান পুষেছিলেন ..... সেটা তো জানতেই হচ্ছে.....
❤❤❤
Posts: 4,432
Threads: 6
Likes Received: 9,366 in 2,850 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
15-09-2021, 05:41 PM
(This post was last modified: 15-09-2021, 05:47 PM by Bumba_1. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
(15-09-2021, 03:47 PM)Baban Wrote: হুপ... হুপ.. খি খি... খিখি.... হুপ.
মনুষ্য জাতির সুবিধার জন্য উপরুক্ত লেখার বঙ্গানুবাদ হইল- অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম. 
হুপ হুপ হুপ ... হুপ হুপ হুপ .. উত্তর দিলাম
(15-09-2021, 04:05 PM)Bichitravirya Wrote: আমার এমন কেন মনে হচ্ছে যে এটা আপনার আগে লেখা....
তবুও অপেক্ষায় আছি.... আপনি হনুমান পুষেছিলেন ..... সেটা তো জানতেই হচ্ছে.....
❤❤❤
ছবিটা দেখে বলছো তো .. বুঝেছি .. ছবিটা পুরনো হলেও, লেখাটা পুরোনো নয় একেবারেই নতুন .. এখনো লেখাই শেষ হয়নি।
•
Posts: 3,689
Threads: 14
Likes Received: 2,572 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
(15-09-2021, 05:41 PM)Bumba_1 Wrote: হুপ হুপ হুপ ... হুপ হুপ হুপ .. উত্তর দিলাম
ছবিটা দেখে বলছো তো .. বুঝেছি .. ছবিটা পুরনো হলেও, লেখাটা পুরোনো নয় একেবারেই নতুন .. এখনো লেখাই শেষ হয়নি।
হ্যাঁ ছবি দেখেই মনে হয়েছিল....
এতো পুরো আমার কেস.... আমিও লেখা দেবো বলে দি কিন্তু আদেও লেখা শেষ হয় না
❤❤❤
Posts: 1,255
Threads: 2
Likes Received: 2,307 in 1,023 posts
Likes Given: 1,629
Joined: Jul 2021
Reputation:
666
(15-09-2021, 03:26 PM)Bumba_1 Wrote:
আগামীকাল ঠিক এই সময় আসছে বুম্বার হনুমান পোষা
অপেক্ষায় থাকবো
Posts: 1,247
Threads: 0
Likes Received: 977 in 707 posts
Likes Given: 1,681
Joined: Jul 2020
Reputation:
66
Posts: 4,432
Threads: 6
Likes Received: 9,366 in 2,850 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
16-09-2021, 04:36 PM
(This post was last modified: 23-12-2021, 02:55 PM by Bumba_1. Edited 9 times in total. Edited 9 times in total.)
বুম্বার হনুমান পোষা
লেখা এবং প্রচ্ছদ :- বুম্বা
বুম্বাদের বাড়িটা বেশ বড়ো .. আগেকার জমিদার বাড়ি। পুকুর, বাগান সব আছে। আছে পেয়ারা, পেঁপে, জামরুল, ডালিম, কুল, আতা .. মাঝারি মাপের সব গাছ।
দাদু তো সর্বক্ষণই বাগান দ্যাখেন আর তাছাড়া বাগানে বারোমাস কাজ করে বদন দা। নানা রকমের ফল হয় .. পাড়াশুদ্ধ বিলি করে, নিজেরা খেয়েও ফুরায় না। আত্মীয়-স্বজন বেড়াতে এলেই বুম্বাদের বাগানটা ঘুরে ঘুরে দেখে আর প্রশংসা করে।
কিন্তু এই বাগানের হাল বে'হাল হয়ে ওঠে মাঝে মাঝে। এক একদিন দল বেঁধে আসে হনুমান। আসতেই থাকে দশ .. কুড়ি .. ত্রিশ - আসার আর বিরাম নেই। গোটা পাড়াটাকে যেন কাঁপিয়ে দেয়। এ গাছ থেকে ও গাছ, এর বাগান থেকে ওর বাগান, এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি .. একেবারে তুর্কি নাচ শুরু করে দেয়। গাছের ডাল ভেঙে, কচি কচি পাতাগুলো ছিঁড়ে, ফলগুলোকে চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলে সারা বাগান ছড়ায়। ঘরে-দোরে ঢুকে পড়ে, বড়গুলো "হুপ হুপ" করে আর ছোটগুলো "চিঁ চিঁ" করে পাড়া মাথায় তোলে।
বদন দা লাঠি নিয়ে আসে ঠিকই, কিন্তু হনুমানগুলো দাঁত খিঁচিয়ে তেড়ে আসার আগেই পালায়।
বুম্বা তো ভয় নিচে নামেই না। রান্নাঘরের জানলা দিয়ে দেখে হনুমানের অঙ্গভঙ্গি। মাঝে মাঝে এটা-ওটা ছুঁড়ে মারে। মা বলেন "ও সব করিস না, ওরা কিন্তু লাফিয়ে এসে থাপ্পর মেরে দেবে।"
সারাদিন অত্যাচার করে ওরা একসময় সবাই চলেও যায়। কিন্তু সবথেকে বেশি বিপদ হয়ে যেদিন বীর হনুমান আসে।
বীর হনুমানগুলো যেমন বড়ো, তেমনি সাহসী। যেদিন আসে পাড়াশুদ্ধ লোকের হৃৎকম্পন ওঠে। আসলে ওরা আসেই মারমুখো হয়ে .. কাউকে মারার উদ্দেশ্য নিয়েই আসে। বুম্বা একদিন দেখেছিলো ক্লাবঘরের পিছনের বাগানে একটা বড় হনুমান একটা বাচ্চা হনুমানের পেট চিরে দিচ্ছে।
বুম্বা চিৎকার করে উঠেছিল "মা .. মা .. ইস্ .. দ্যাখো দ্যাখো।"
মা বললেন "তাড়াতাড়ি সরে আয়. কি ভয়ঙ্কর জীব রে বাবা .. একদম এসব দেখবি না।"
মেজজেঠু একদিন বলছিলেন "বীর হনুমানরা অন্য বীর হনুমানকে ছোটো অবস্থাতেই মেরে ফেলে মায়ের বুক থেকে টেনে নিয়ে।"
ছোটকাকা বলে "আমিও দেখেছি .. তবে একবার বাগে পাই .. এমন জব্দ করবো ব্যাটাদের।"
"কেমন করে জব্দ করবে ছোটকা? ওদের তো খুব শক্তি।" বড় বড় চোখ করে জানতে চায় বুম্বা।
ছোটকাকা উত্তর দেয় "দ্যাখ না কি করি .. ঘরে একটা ডান্ডা দেখেছিস তো!"
সেদিন ছিলো রিম্পার জন্মদিন। রিম্পা হলো বুম্বার মেজজেঠুর মেয়ে। বেশকিছু আত্মীয়-স্বজন এসেছে বাড়িতে। হঠাৎ "বাবাগো মাগো" বলে পড়িমরি করতে করতে ধুপ ধাপ করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলো সবাই। নিচ থেকে ঠাকুমা চেঁচিয়ে বললেন "কি হলো রে .. পড়ে যাবি তো .. আস্তে নাম।"
রণি'দা বলে ওঠে "ওরে বাপরে কি বড়ো একটা হনুমান আর একটা হনুমানকে তাড়া করেছে .. বুবুদের বাড়ি থেকে এক লাফে আমাদের ছাদের চিলেকোঠার মাথায় এসে বসেছে।"
ছোটকাকা তক্ষুণি ডান্ডাটা নিয়ে ছাদে উঠতে যাচ্ছিলো। রণি'দা বলে "উঠো না ছোটমামা .. আমাদের ছাদে বসে আছে।"
"থাকুক" এইটুকু বলেই ছোটকাকা ডান্ডাটা সাঁই সাঁই করে ঘোরাতে ঘোরাতে ছাদে গেলো।
হনুমান ততক্ষণে বুম্বাদের ছাদ থেকে এক লাফে বুবুদের বারান্দায় গিয়ে বসেছে। লম্বা ল্যাজখানা ঝুলিয়ে এদিক-ওদিক দেখছে। আবার দেওয়াল বেয়ে তিন লাফে ছাদে উঠে গেলো .. কি যেন খুঁজছে। ওর বিশাল ল্যাজটা ঝুলে নেমে এসেছে বুবুদের ঘরের জানলা পর্যন্ত। বুবু জানালায় দাঁড়িয়ে ছোটকাকাকে দেখতে পেয়েই চেঁচিয়ে বললো "ও ছোটকা .. তোমাদের চিলেকোঠার ঘরে একটা মা হনুমান বাচ্চা নিয়ে ঢুকে পড়েছে।"
"অ্যাঁ .. সেকি রে" বলেই ছোটকাকা পিছন ফিরে দ্যাখে একটা লম্বা ল্যাজ চৌকাঠ পেরিয়ে বাইরে বেরিয়ে আছে। ছোটকাকা কোনো কথা না বলে সিঁড়ির দেয়ালের গা ঘেঁষে গিয়ে প্রথমে খুব ধীরে দরজার ডানদিকের পাল্লাটা বন্ধ করে তারপর "জয় মা কালী" বলে বাঁদিকের পাল্লা টেনে দিয়ে ছিটকানি আটকে দিলো। ততক্ষণে হনুমানটা আস্তে আস্তে ল্যাজটা টেনে নিয়েছে ভেতরে। চিলেকোঠার ঘরে ছাদের দিকটা কোনো বড়ো জানলা নেই। ভিতরের দিকে একটা কুলুঙ্গি ছিলো, সেটা জানলা করা হয়েছে .. খুব ছোটো এবং উঁচুতে .. বাচ্চাদের নাগালের বাইরে। ছোটকাকা সেখান থেকে দেখতে পেলো - মা-হনুমানটা বাচ্চাটাকে বুকের ভেতর জাপ্টে ধরে আছে। ওদিকে বুবুদের ছাদে তখনও বীরহনুমানটা বসেই আছে। ছোটকাকা চুপচাপ নেমে এলো.. কাউকে কিছুই বললো না।
কিন্তু এসব খবর কি গোপন থাকে! দুপুরে বুবু নিমন্ত্রণ খেতে এসেই কথাটা জানিয়ে দিলো সকলকে। সঙ্গে সঙ্গে বুম্বা, রণি, রিম্পা, টুকু সকলে লাফিয়ে উঠলো "আমরা একটু দেখবো .. চলো ছাদে যাই।"
ছোটকাকা ধমক দিয়ে বললো "কিচ্ছু দেখবার নেই ওরা ঠিক আছে।"
সন্ধের আগেই এক এক করে সকলে চলে গেলো। ছোটকাকা বেশিরভাগ সময় চিলেকোঠার ঘরে থাকতো .. পড়াশোনা, আঁকাজোখা করতো। আজকে নিচে ঠাকুরমার ঘরে আছে। ঠাকুমা টিভি দেখছিলেন .. বন্ধ করে দিয়ে বললেন "কি রে হনুমানগুলো ছেড়ে দিসনি?"
"তুমি খেপেছো .. ছেড়ে দেবো! বীর হনুমানটা এখনো বুবুদের ছাদেই আছে। ছারলেই বাচ্চাটাকে পেট চিরে মেরে মেরে দেবে।" বলেই ছোটকাকা পড়ায় মন দেয়।
"এ আবার কি ফ্যাসাদ রে বাবা .. হনুমান কেউ ঘরে আটকে রাখে!" ঠাকুমা চলে যান অন্য ঘরে।
বুম্বার তো কিছুতেই মনে শান্তি নেই .. পড়াতেও মন নেই। দাদুর কাছে গিয়ে বসে, তারপর আস্তে আস্তে জিজ্ঞাসা করে "আচ্ছা দাদু, কেনো বলতো বীর হনুমান বাচ্চা হনুমানগুলোকে মেরে ফেলে?"
দাদু একটা গল্পের বই পড়ছিলেন। বুম্বাকে কোলের কাছে টেনে নিয়ে বলেন "কেনো মারে শুনবি? প্রথমে একটা কথা জানতে হবে যে ওরা কিন্তু সব বাচ্চাকে মারে না। যে বাচ্চাগুলো বড় হলে বীর হনুমান হবে অর্থাৎ সেগুলোকেই শুধু মেরে ফ্যালে।"
বুম্বা কেঁদে ফেলার মতো করে বলে "কেনো গো .. মেরে ফ্যালে?"
দাদু বলেন "ওরা একদমই চায়না যে, আর কোনো বীর হনুমান ওর প্রতিপক্ষ হোক।"
বুম্বা সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠে "প্রতিপক্ষ মানে কি গো দাদু?"
দাদু বলেন "প্রতিপক্ষ মানে বিরুদ্ধপক্ষ .. তোকে তো বোঝানো মুশকিল। আসলে হনুমানরা তো দল বেঁধে থাকে। সব দলেই একটা করে বীর হনুমান থাকে, ওদের দারুন শক্তি। রামায়ণের গল্পে পরিসনি .. বালী আর সুগ্রীব দুজনেই ভীষণ বীর ছিলো। একজন মরলো, তবে আরেকজন রাজা হলো।"
বুম্বা বললো "ওহো, তাই .. বুঝতে পেরেছি .. বাচ্চা হনুমানটাকে রাজা হতে দেবে না, এই তো!"
দাদু বলেন "দ্যাখ .. তোর ছোটকা কি করে।"
সারা দিনের ক্লান্তিতে সন্ধ্যেবেলা বুম্বা ঘুমিয়ে পড়েছিলো। রাত্রে মা ডেকে খাবার টেবিলে নিয়ে বসালেন। বুম্বা মা'কে চুপি চুপি বলে "মা, জানো তো.. ছোটকা হনুমান পুষছে।"
মা বলেন "সেকি রে বিলু .. হনুমান গুলোকে ছাড়িসনি? অবলা জীবকে এভাবে আটকে রেখেছিস কেনো?"
ঠাকুমা বললেন "শুধু কি তাই.. কিছু খেতে দেয়নি দুটোকে.. কোনো সাড়াশব্দ নেই।"
মেজোজেঠি বলেন "মরে যায়েনি তো?"
"হনুমান বা বাঁদর ধরে মেরে ফেললে কিন্তু কেস হবে" খেতে খেতে বললেন বাবা।
ঠাকুমা তৎক্ষণাৎ রেগে গিয়ে বললেন "জানিনা বাপু, এসব উদ্ভট শখ কেনো! ওদিকে ঘরটার কি অবস্থা হচ্ছে কে জানে। - হনুমান মেরে বাড়িসুদ্ধ লোকের হাতে হাতকড়া পরাবে বলে মনে হচ্ছে।"
ছোটকাকা এতক্ষণ চুপচাপ খাচ্ছিলো। এবার বললো "আচ্ছা মা .. তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে! একদিন না খেলে কেউ মরে? তারপরে আবার হনুমান .. মানুষের পূর্বপুরুষ। মানুষই কতদিন না খেয়ে বেঁচে থাকে .. তাছাড়া আমি একটা এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য সাইকোলজিকাল ট্রিটমেন্ট করছি .."
সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দিয়ে মেজজেঠু বললেন "এখানেও তোর সাইকোলজিকাল ট্রিটমেন্ট!! তুই না হয় হিউম্যান সাইকোলজি বুঝিস। কিন্তু এ্যানিমাল সাইকোলজি কি তোর জানা আছে?"
"দ্যাখো মেজদা, সবই এক .. শুধু বুঝে নিতে হয়।" বলে ছোটকাকা খেতে থাকে। আর কেউ কিচ্ছু বলে না।
রাতে সকলেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। হঠাৎ মাঝ রাতে চিলেকোঠার ঘর থেকে ভেসে এলো প্রচন্ড জোরে আওয়াজ। "হুপ হুপ" আর তার সঙ্গে নানারকম শব্দ। তার মানে বড় হনুমানটা ক্ষেপে গিয়েছে। খিদে তৃষ্ণায় সে অস্থির হচ্ছে .. একবার চৌকিতে উঠছে, আবার নিচে নামছে। হয়তো জানলার কাছে যাচ্ছে, আবার লাফ দিচ্ছে। আর ঘন ঘন ডাক ছাড়ছে।
বুম্বা ঠাকুমার কাছে শুয়েছে। আজ বাড়িতে লোক আছে তাই ছোটকাও শুয়েছে এই ঘরে। কেউ শুনুক বা না শুনুক, বুম্বার কিন্তু ঘুম ভেঙে গেছে এবং সে সব শুনতে পেয়েছে। ওর ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় সজাগ - অনুভব করছে ছোটকা বিছানায় উঠে বসেছে, মশারি তুললো, বাইরে পা বাড়াচ্ছে।
বুম্বা তৎক্ষণাৎ বিছানায় উঠে বসে। "ছাদে যাচ্ছো ছোটকা?" গলা নামিয়ে জিজ্ঞাসা করে।
অবাক হয়ে ছোটকাকা ফিস্ ফিস্ করে বলে "সেকি রে, তুই জেগে আছিস? চুপচাপ শুয়ে থাক।"
বুম্বা ততক্ষণে বিছানা থেকে নেমে পড়েছে .. অন্ধকার ঘর। "আমাকেও নিয়ে চলো ছোটকা, তোমার দুটি পায়ে পড়ি।"
ঘরে কি ঘটছে ঠাকুরমা বুঝতে পারছেন কিন্তু ঘুমের ওষুধের ঘোরে ব্যাপারটা কি হচ্ছে ধরতে পারছেন না। "বাথরুমে যাবি বুম্বা?" ঘুমচোখে জিজ্ঞাসা করলেন ঠাকুমা।
"ছোটকার সঙ্গে যাচ্ছি।" তৎক্ষণাৎ উত্তর দিলো বুম্বা।
হনুমানটার দাপাদাপি বেড়েই চলেছে। ঘরে একটা জিরো পাওয়ারের আলো জ্বললেও টর্চ জ্বেলে ছোটকাকা দেখলো রাত সাড়ে তিনটে। "আচ্ছা চল .."
বুম্বা ছোটকাকার সঙ্গে সঙ্গে ছাদে ওঠে। ছোটকার হাতে লাঠি, অন্ধকার চারিদিক। নিঃশব্দে ওরা ছাদে উঠলো। খুব সাবধানে ছোটকা চিলেকোঠার দরজার ছিটকানিটা টেনে ডানদিকের পাল্লাটা খুলে দিলো, তারপর নিজেরা দুজনেই দরজার আড়ালে লুকিয়ে গেলো।
বড় হনুমানটা তখন পাগলের মতো "হিসহিস .. হুপ হুপ" শব্দ করে চৌকিতে উঠছে আর নামছে। যেই না দরজা খোলা দেখেছে - এক লাফে সে এসে বসলো ছাদের মাঝখানে। সেখানে এক মুহূর্ত থেকেই লাফ দিলো বুবুদের ছাদে .. বসলো গিয়ে জল ট্যাঙ্কের উপরে। তারপর ছাদের কার্নিশ দিয়ে হেঁটে হেঁটে একেবারে ক্লাবের পিছনের বাগানে অন্তর্হিত হলো।
ছোটকাকা বললো "ভয় নেই, ভোরের আগে অন্ধকার একটু গাঢ় হয়, একটু পরেই সকাল হয়ে যাবে। চল শুবি চল .. কাল থেকে শুরু আমাদের হনুমান পোষা। তারপর আস্তে করে দরজাটা টেনে দিয়ে ছিটকিনি বন্ধ করে দেয় ছোটকা।
"ওর মা আর আসবে না?" ব্যাকুল কন্ঠে প্রশ্ন করে বুম্বা।
"ও আর যেচে বন্দী হতে আসবে কি? এখন তো বাঁচুক .. চল।" ছোটকাকা বুম্বাকে নিয়ে নিচে নেমে আসে।
বুম্বার ঘুম ভাঙলো বেশ দেরিতে, মায়ের ডাকে। চোখ কচলে উঠেই দৌড়ে ছাদে গেলো। গিয়ে দ্যাখে .. চিলেকোঠার দরজার ফাঁক দিয়ে ছোটকা বাচ্চা হনুমানটাকে ডাকছে - "আয় আয় .. চুক চুক।"
কিন্তু বাচ্চাটা ভয় চৌকির তলায় ওই যে গিয়ে ঢুকেছে আর বেরোবার নাম নেই। ডাকাডাকির ফলে আরো ভয় একেবারে ঘরের কোণে ঢুকে যাচ্ছে ও। ঘরটা তখনও বেশ অন্ধকার। ছোট কাকা পা টিপে টিপে কোনরকমে চৌকিতে গিয়ে উঠলো। দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের জানলাটা খুলে দিয়েই এক লাফে বেরিয়ে এসে দরজা বন্ধ করে দিলো। তারপর বুম্বাকে বললো "থাক খাবারগুলো .. ও ক্ষিদে পেলেই খাবে, ওর ভয় কাটতে দেরি আছে .. চল .." ওরা নিচে নেমে গেলো।
বেশ কয়েক দিন কেটে গেছে। বুম্বা রিম্পি কলেজে যাচ্ছে .. খেলছে বন্ধুদের সঙ্গে .. খাচ্ছে-দাচ্ছে ঘুমোচ্ছে সবই ঠিক আছে - কিন্তু তাদের মনে খুবই দুঃখ নিজেদের পোষাক হনুমানটাকে একটিবার চোখের দেখাও দেখতে পাচ্ছে না। একে তো কুলুঙ্গির জানালাটা বেশ উঁচু, তার উপর বাচ্চা হনুমানটা চৌকির নিচে থেকে বাইরে আসতেই চায় না। কখন যে খেয়ে যায়, তাও কেউ জানতে পারে না।
দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের জানলাটা একদম সোজাসুজি পিঙ্কিদের বাড়ির দিকে। মাঝখানে চওড়া রাস্তা, এই যা তফাৎ। একদিন পিঙ্কি বললো "বুম্বা, তোদের পোষা হনুমানটা একটু বড় হয়েছে রে .. জানলার কাছে এসে বসেছে দেখলাম।
বুম্বা খবরটা ছোটকা কে জানায়। ছোটকা বলে "বড় তো হবেই, দেখতে দেখতে দেড় মাস হয়ে গেলো .. এখন আর দরজা খোলা যাবে না .. জানলা দিয়ে খাবার নেবার অভ্যাস করাতে হবে।"
প্রথম প্রথম বাচ্চাটা যখন খুব ছোটো ছিলো .. গায়ের চামড়া ছিলো তুলতুলে পাতলা, কোঁচকানো, লাল-গোলাপী মেশানো রঙের। চোখ দুটো ছিলো লোমে ঢাকা পিটপিটে চাউনি। বদন দা তখন এক ফাঁকে ঘর পরিষ্কার করে দিতো। চিলেকোঠার ঘরের জিনিসপত্র বদন দাই এক এক করে নামিয়ে এনেছিলো।
কিন্তু এখন বদন দা বলে "বাবা রে .. আর ও ঘরে যাতি পারবো নি .. কেমন ডাগর ডাঁসা চেহারা .. কামড় মারে যদি.."
তবুও অতিকষ্টে ঝাড়ু দিয়ে ঘর পরিষ্কার রাখে বদন দা। এখন কুলুঙ্গির জানলার উপরে কলা, পেঁপে, রুটি, বিস্কুট, গাছপাতা .. যাই রাখা যাক না কেনো .. হনুমানটা ঠিক নামিয়ে নেয়। সেদিন ছোটকার হাত থেকেও একটা কলা নিয়েছিলো .. আসলে ছোটকা কে ও চিনে গেছে তো।
ওদিকে পিঙ্কিদের ছাদে প্রায়ই দেখা যায় বাচ্চাদের ভিড় -
"এই হনুমান কলা খাবি / জয় জগন্নাথ দেখতে যাবি" .. হনুমান থোড়াই দ্যাখে! ও কেবল চৌকি থেকে ওঠে আর নামে। মাঝে মাঝে চিলেকোঠার ঘরের ছাদের দেওয়ালটা ধরার জন্য লাফ দেয়।
বুম্বা সেদিন ছোটকাকা কে বললো "ছোটকা ওর কোনো নাম রাখবে না?"
ছোটকা বলে "দেখি .. আর ক'দিন যাক।"
বুম্বা আবার বলে "আচ্ছা ছোটকা, ওকে একটু একটু করে খেলা শেখালে হয় না? ও তো পোষ মেনে গিয়েছে।
ছোটকা বলে "দাঁড়া আর ক'দিন যাক।"
বুম্বা অধৈর্য হয়ে বলে "আর ক'দিন যাবে?"
ছোটকাকা তেমন ভাবলেশহীন ভাবেই বলে "দ্যাখ না আর ক'দিন যায়.."
সেদিন শেষ রাতে .. হয়তো ভোরের দিকেই হবে .. হঠাৎ বাড়ি কাঁপিয়ে ভীষণ রকম শব্দ উঠলো "হুপ হুপ"। বুম্বার ঘুম ভেঙে গেলো .. আবার শব্দ "হুপ হুপ"। বুম্বা উঠে বসেছে বিছানায় "ছোটকা ছোটকা .. বাচ্চা হনুমানটা ডাকছে .. ওই শোনো।"
ছোট কাকা ততক্ষণে উঠে পড়েছে "শুনেছি শুনেছি.." টর্চ জ্বালিয়ে দ্যাখে চার'টে বাজে .. ভোর হয়ে এসেছে। বুম্বা সেদিনের পর থেকে ঠাকুমার কাছেই শুচ্ছে .. আর মায়ের কাছে শোয় নি এই ক'মাস।
চিলেকোঠার দরজায় আঁচড়ানোর শব্দ .. হনুমানটা দরজাটা আঁচড়াচ্ছে।
ঠাকুমা জেগে গেছেন, দাদুও জেগে গেছে। কাল রাতে পিসি আর রণিদা এসেছে .. ওরাও জেগে গেছে। ছোট কাকা বললো "মা, দেখবে তো এসো .. হনুমানটাকে ছেড়ে দিচ্ছি.."
কাঁদো কাঁদো স্বরে বুম্বা জিজ্ঞাসা করলো "ছেড়ে দেবে?"
ছোটকাকা বলে "হ্যাঁ .. দেবোই তো।"
বুম্বার বিস্ময়ের সীমা রইলো না "ছেড়েই যদি দেবে তাহলে পুষতে গেলে কেনো?"
সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে ছোটকা বললো "আরে বোকা .. ছেড়ে দেবো বলেই তো পুষলাম ওকে .. ওহো .. দাঁড়া .. ক্যামেরাটা নিয়ে আসি, কয়েকটা ছবি তুলে রাখবো।"
ওদিকে হনুমানের দাপাদাপি চরমে উঠেছে, দরজাটা যেনো ভেঙে ফেলবে। তার সঙ্গে "হুপ হুপ" করে অনবরত ডাকছে।
আজকে আর ভয় ভয় নয় .. ছোটকাকা সোজা গিয়ে দরজাটা খুলে দিলো। আর সঙ্গে সঙ্গে বীরদর্পে এক পা এক পা ফেলে ঘর থেকে বের হলো বিশাল এক হনুমান। গিয়ে বসলো ছাদের মাঝখানটায়। একটু এদিক-ওদিক তাকিয়েই দিলো এক লাফ। গিয়ে বসলো বুবুদের চিলেকোঠার ছাদে। বিশাল লম্বা ল্যাজ ঝুলে আছে জানলার কাছ বরাবর। সেই মুহূর্তে ছোটকাকা ফটাফট কয়েকটা ছবি তুলে নিলো।
হনুমানটা ছাদের কার্নিশ দিয়ে হেঁটে হেঁটে ক্লাবের পিছনের বাগানের দিকের দেওয়াল বরাবর নেমে গেলো .. তারপর হঠাৎ করেই কোথায় যেনো অদৃশ্য হয়ে গেলো।
অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বুম্বা বলে উঠলো "যাঃ .. চলে গেলো!"
রণি বললো "কিরে বুম্বা কাঁদছিস নাকি? তোর চোখে জল.."
বুম্বা আর থাকতে পারলো না, এবার শব্দ করেই কেঁদে ফেললো। ছোটকা এসে জড়িয়ে ধরে বললো "দেখলি তো বলেছিলাম না ব্যাটাদের জব্দ করবো .. কেমন বীর করে পাঠিয়ে দিলাম হনুমানটাকে।
বুম্বা প্রশ্ন করে ওঠে "ও এবার ঠিক রাজা হবে .. বলো?"
ছোটকা বলে "হতে পারে .. আবার নাও হতে পারে.. হয়তো এখানেই ফিরে আসতে পারে.. কিছুই বলা যায় না।"
"সত্যি!!" বুম্বার চোখ-মুখ আনন্দে উজ্জ্বল হয়ে উঠলো।
ঠাকুমা বললেন "হয়েছে .. এবার সব নিচে নাম। বদন কে দিয়ে ঘরের হাল ফেরাই। তিন মাস ধরে জ্বালিয়ে খেলে।"
সবাই আস্তে আস্তে নিচে নেমে গেলো।
Posts: 6,161
Threads: 42
Likes Received: 12,437 in 4,169 posts
Likes Given: 5,340
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,799
16-09-2021, 04:54 PM
(This post was last modified: 16-09-2021, 04:56 PM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
বাহ্... খুব সুন্দর লাগলো গল্পটি. ছোট্ট বুম্বা কিন্তু অজান্তেই ওই বয়সে জীবনের কঠোর একটা সত্যের সম্মুখীন হয়েছিল. লড়াই, অস্তিত্ব রক্ষা ও বিক্রম এই তিনের যোগসূত্র সামান্য হলেও বুঝেছিলো. হনুমানের মতন বিড়ালের মধ্যেও এই ব্যাপারটা লক্ষণীয় আবার সিংহের মধ্যেও. যাইহোক.... ছোট্ট বুম্বার ছোটকা একটা জীবন বাঁচিয়ে তাকে যোগ্য করে তুলে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তায় ছেড়ে দিল. এবারে তার নিজস্ব যাত্রা শুরু.
অনেক বড়োদের ভাষায় বললাম... এবারে ছোটদের মতন করে বলি - কি মজা.. কি মজা এবার বয়স্ক বীর হনুমান বুঝবে মজা... ❤❤❤
Posts: 4,432
Threads: 6
Likes Received: 9,366 in 2,850 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
16-09-2021, 05:02 PM
(This post was last modified: 16-09-2021, 05:06 PM by Bumba_1. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(16-09-2021, 04:54 PM)Baban Wrote: বাহ্... খুব সুন্দর লাগলো গল্পটি. ছোট্ট বুম্বা কিন্তু অজান্তেই ওই বয়সে জীবনের কঠোর একটা সত্যের সম্মুখীন হয়েছিল. লড়াই, অস্তিত্ব রক্ষা ও বিক্রম এই তিনের যোগসূত্র সামান্য হলেও বুঝেছিলো. হনুমানের মতন বিড়ালের মধ্যেও এই ব্যাপারটা লক্ষণীয় আবার সিংহের মধ্যেও. যাইহোক.... ছোট্ট বুম্বার ছোটকা একটা জীবন বাঁচিয়ে তাকে যোগ্য করে তুলে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তায় ছেড়ে দিল. এবারে তার নিজস্ব যাত্রা শুরু.
অনেক বড়োদের ভাষায় বললাম... এবারে ছোটদের মতন করে বলি - কি মজা.. কি মজা এবার বয়স্ক বীর হনুমান বুঝবে মজা... ❤❤❤
Survival of the fittest - চিরন্তন সত্য ❤
•
Posts: 3,689
Threads: 14
Likes Received: 2,572 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
সাপদের মধ্যে এটা হয় শুনেছি। কিন্তু হনুমান দের মধ্যে এটা হয় সেটা জানতাম না....
আমি ভেবেছিলাম বুম্বা মানে আপনি.....
খুব সুন্দর একটা গল্প... মন ভালো করে দেওয়ার মত... প্রকৃতির কয়েকটা নিষ্ঠুর নিয়মের মধ্যে এটা একটা... এটা রামায়ণে আছে... শিশু হনুমান কে মারার জন্য বালী চেষ্টা করবে কয়েকবার কিন্তু অসফল হবে... মর্কট নামটা তো বালীর ই দেওয়া... যখন রামায়ণে এর উল্লেখ আছে তখন আর আশ্চর্যের কি...
সবই সিংহাসন বাচিয়ে রাখার চেষ্টা...
❤❤❤
Posts: 4,432
Threads: 6
Likes Received: 9,366 in 2,850 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(16-09-2021, 05:36 PM)Bichitravirya Wrote: সাপদের মধ্যে এটা হয় শুনেছি। কিন্তু হনুমান দের মধ্যে এটা হয় সেটা জানতাম না....
আমি ভেবেছিলাম বুম্বা মানে আপনি.....
খুব সুন্দর একটা গল্প... মন ভালো করে দেওয়ার মত... প্রকৃতির কয়েকটা নিষ্ঠুর নিয়মের মধ্যে এটা একটা... এটা রামায়ণে আছে... শিশু হনুমান কে মারার জন্য বালী চেষ্টা করবে কয়েকবার কিন্তু অসফল হবে... মর্কট নামটা তো বালীর ই দেওয়া... যখন রামায়ণে এর উল্লেখ আছে তখন আর আশ্চর্যের কি...
সবই সিংহাসন বাচিয়ে রাখার চেষ্টা...
❤❤❤
যোগ্যতমের উদ্বর্তন - universal truth ❤
•
Posts: 3,689
Threads: 14
Likes Received: 2,572 in 1,404 posts
Likes Given: 2,044
Joined: Apr 2021
Reputation:
530
(16-09-2021, 06:08 PM)Bumba_1 Wrote: যোগ্যতমের উদ্বর্তন - universal truth ❤
শরীর কেমন ?
❤❤❤
•
Posts: 4,432
Threads: 6
Likes Received: 9,366 in 2,850 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(16-09-2021, 06:25 PM)Bichitravirya Wrote: শরীর কেমন ?
❤❤❤
ভালো নয় গো খুব একটা
•
Posts: 1,255
Threads: 2
Likes Received: 2,307 in 1,023 posts
Likes Given: 1,629
Joined: Jul 2021
Reputation:
666
16-09-2021, 08:24 PM
(This post was last modified: 16-09-2021, 08:26 PM by Sanjay Sen. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
আমার খুব পছন্দের একটা গল্প হয়ে থাকবে এটা। তুমি এবং বাবান এই দুজনেরই ক্ষমতা আছে একাধারে কঠোরভাবে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য এবং ছোটদের জন্য গল্প লেখার।
কিন্তু ভাবতে অবাক লাগে তোমার এই ধরনের গল্পের পাঠক সংখ্যা এই সাইটে খুবই কম।
take care and get well soon bro
Posts: 4,432
Threads: 6
Likes Received: 9,366 in 2,850 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,226
(16-09-2021, 08:24 PM)Sanjay Sen Wrote: আমার খুব পছন্দের একটা গল্প হয়ে থাকবে এটা। তুমি এবং বাবান এই দুজনেরই ক্ষমতা আছে একাধারে কঠোরভাবে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য এবং ছোটদের জন্য গল্প লেখার।
কিন্তু ভাবতে অবাক লাগে তোমার এই ধরনের গল্পের পাঠক সংখ্যা এই সাইটে খুবই কম।
take care and get well soon bro
অবাক যে আমারও লাগে না তা নয়। আমার মতে এর পেছনে দুটো কারণ থাকতে পারে।
১) লোকজন মনে করে এই রকম একটা উত্তপ্ত এডাল্ট সাইটে আমার লেখা এই ধরনের নিরুত্তাপ গল্প তারা কেনো পড়বে .. তাই হয়তো পড়ে না।
২) এখানে শতকরা ৯৫% লোকজন হয়তো sex maniac .. তাই হয়তো এই ধরনের শিশুসুলভ গল্প পড়ার ইচ্ছা জাগে না মনে।
চুপচাপ পড়ে চলে যায় অনেকেই, সেটা বুঝি। তবে তোমরা যে দুই-তিনজন পড়ছো তাতেই আমি খুশি। কারন আমার বাকি থ্রেডগুলি এই সাইটে এখনো পর্যন্ত কল্পনাতীত সাফল্য পেলেও গল্পগুচ্ছ থ্রেডটি আমি আমার নিজের মনের পুষ্টির জন্য খুলেছি।
Posts: 6,161
Threads: 42
Likes Received: 12,437 in 4,169 posts
Likes Given: 5,340
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,799
(16-09-2021, 08:24 PM)Sanjay Sen Wrote: আমার খুব পছন্দের একটা গল্প হয়ে থাকবে এটা। তুমি এবং বাবান এই দুজনেরই ক্ষমতা আছে একাধারে কঠোরভাবে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য এবং ছোটদের জন্য গল্প লেখার।
কিন্তু ভাবতে অবাক লাগে তোমার এই ধরনের গল্পের পাঠক সংখ্যা এই সাইটে খুবই কম।
take care and get well soon bro
ধন্যবাদ আপনাকে ❤
(16-09-2021, 10:08 PM)Bumba_1 Wrote: অবাক যে আমারও লাগে না তা নয়। আমার মতে এর পেছনে দুটো কারণ থাকতে পারে।
১) লোকজন মনে করে এই রকম একটা উত্তপ্ত এডাল্ট সাইটে আমার লেখা এই ধরনের নিরুত্তাপ গল্প তারা কেনো পড়বে .. তাই হয়তো পড়ে না।
২) এখানে শতকরা ৯৫% লোকজন হয়তো sex maniac .. তাই হয়তো এই ধরনের শিশুসুলভ গল্প পড়ার ইচ্ছা জাগে না মনে।
চুপচাপ পড়ে চলে যায় অনেকেই, সেটা বুঝি। তবে তোমরা যে দুই-তিনজন পড়ছো তাতেই আমি খুশি। কারন আমার বাকি থ্রেডগুলি এই সাইটে এখনো পর্যন্ত কল্পনাতীত সাফল্য পেলেও গল্পগুচ্ছ থ্রেডটি আমি আমার নিজের মনের পুষ্টির জন্য খুলেছি। .
একদমই একমত তোমার সাথে. প্রশ্ন উঠতেই পারে যখন ওতো ভিউ পাইনা তখন ঘোরার ডিম সময় খরচা করে, মাথা খাটিয়ে ঐসব বন্ধু, অচ্ছেনা অতিথি, এলোমেলো, একলা আকাশ বা ভূমি - র মতো গল্প লিখি কেন যখন জানিই যে লেখার দাম কয়েকজন ছাড়া দেবেনা? যখন ফোরামের নামই পাল্টে bengali sex stories হয়ে গেছে তাতে এসব গল্প কেন? এটাও জানি যে এইমুহূর্তে একটা জম্পেশ কামুক গল্প শুরু করলে যে পরিমান সাড়া পাবো তার 20 ভাগও ঐসব ছোটদের বা রোমান্টিক গল্পে পাবনা... তাহলে কেন লিখি?
উত্তর ঐযে বুম্বাদা বললো.... নিজের খুশির জন্য, নিজের মনের পুষ্টির জন্য. আমি ঐসব গল্প নিজের জন্য আগে লিখেছি তারপরে সবার মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছি... আর অ্যাডাল্ট ক্ষেত্রে ব্যাপারটা উল্টো. পাঠকদের রসালো গল্প দিতে বিষয় বেছে নিয়ে এগিয়েছি. হ্যা.... আমার যাত্রা শুরু কামুক গল্প দিয়েই, বুম্বাদারও তাই... কিন্তু আমি... বা আমরা শুধুই তাতে আটকে থাকতে চাইনি. থাকতে চাইনি বদ্ধ ঘরে... মনের জানালা খুলে জগৎটা দেখতে চেয়েছি . তাতে আমরা সফল. এই ছোট্ট ছোট্ট গল্প গুলো লিখে যে সুখ পেয়েছি তা বলার মতো নয়. তাই এগুলোর মূল্য অন্যদের কাছে থাক আর নাই থাক... আমাদের কাছে মূল্যবান হয়ে থাকবে এগুলি. ❤ আর যারা এই গল্পের পাশে ছিল ও থাকবে তাদের মন থেকে ধন্যবাদ ❤.
|