Thread Rating:
  • 106 Vote(s) - 2.8 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) সমাপ্ত :---
[Image: The-boy-swearing-and-grimacing-for-the-c...ated-o.jpg]

মিষ্টি মুহুর্ত --- পর্ব 3 ( স্মৃতির পাতায় নামলিখন ) 

Update 1

বাবার বলা কথাগুলো যতদ্রুত সুচির মাথায় ঢুকেছিল তার থেকেও বেশি দ্রুত কথা গুলো সুচির মাথা থেকে বার হয়ে গেল । বিকালে যখন আকাশ তাকে ক্ষ্যাপা ক্ষ্যাপা বলে ক্ষ্যাপাতে লাগলো তখন বাবার বলা কথা গুলো পুরোপুরি ভুলে গেল।

সকালে কলেজে বিনা কারণে হাত কামড়ানোর জন্য আকাশ খুব রেগেছিল। রাগের বশে সুচিকে মারতে ইচ্ছা হচ্ছিল। কিন্তু দিদিমা বলেছে “ মেয়েদের গায়ে হাত তুলতে নেই দাদু ভাই। „ এই কথার জন্য সুচিকে মারার প্ল্যান বাতিল করতে হলো।

কিন্তু যখন বিকালে পার্কের মধ্যে সুচি বাদশাকে নিয়ে খেলা করতে শুরু করলো তখন আর নিজেকে সামলাতে পারলো না। দূর থেকেই আকাশ সুচিকে উদ্দেশ্যে করে ছড়া কাটতে লাগলো---
ক্ষ্যাপা ক্ষ্যাপেছে
হাত কামড়েছে
ক্ষ্যাপা ক্ষ্যাপেছে
হাত কামড়েছে

আকাশের ছড়া শুনে সুচির কান লাল হয়ে উঠলো। রেগে পুরো বোম হয়ে উঠলো । কিন্তু আকাশকে মারতে পারলো না। কারন আকাশ ছড়া কেটেই হাতের নাগালের বাইরে চলে যেতে লাগলো। আকাশের ছড়া শুনে দিদিমা বললেন “ না দাদুভাই। ওইভাবে বলতে নেই। „ দিদিমার কথা শুনে আকাশ চুপ করলো। কিন্তু সুচির ধারেকাছে এলো না।

শুধু ক্ষ্যাপিয়েই শান্ত হলো না আকাশ। বড়ো কিছু একটা করার চিন্তা ভাবনা মাঝে মাঝেই করতে লাগলো সে। সেই বড়ো কিছু একটা করার সুযোগ কিছুদিন পর দুর্গা পূজার সময় সে পেয়ে গেল।

এই বছরের শুরুতে অঙ্কিতা সুচিকে বলেছিল “ এবছর পুজার সময় যে প্রতিযোগিতা হবে তাতে তুই নাচবি । „

কথাটা শোনার পর সুচির আনন্দ দেখে কে ? সুচির এই আনন্দ টাকে আরও বাড়ানোর জন্য সুচির মা তার জন্য একটা নতুন নিল সবুজ শাড়ি কিনে দিলেন। অষ্টমীর দিন সকাল থেকেই সুচি মাকে বারবার বলতে লাগলো “ মা শাড়িটা বার করো না। একটু দেখবো। „

“ এখন না। সন্ধ্যা হোক। তখন বার করে দেবো । „ এখন বার করে দিলে নির্ঘাত নোংরা করবে তাই সুচির মা রাজি হলেন না।

কিন্তু সুচির আবদারের কাছে সুচেতা দেবী পরাস্ত হলেন । আলমারি থেকে নতুন শাড়িটা বার করে সুচির হাতে দিয়ে বললেন “ নোংরা করিস না যেন আবার। „

সুচি শাড়িটা নিয়ে নিজের গায়ে চাপিয়ে আলমারির দরজায় লাগানো আয়নায় একবার নিজেকে দেখে নিল। এই শাড়িটা পড়েই আজ সে নাঁচবে। কথাটা মাথাতে আসতেই পুরো মুখে হাঁসি ছড়িয়ে পড়লো সুচির । হাঁসির সাথে চোখে সহস্র হিরের উজ্জ্বলতা , যেন মিস ইউনিভার্স । সুচির হাঁসি দেখে সুচেতা দেবীও একটু হাঁসলেন। আয়নায় নিজেকে দেখে নিয়ে যে ঘরে সে আর দিদি ঘুমায় সেই ঘরের পড়ার টেবিলের উপর শাড়িটা প্লাস্টিকে মুড়ে রেখে দিল।

তারপর মাঝে মাঝেই হাতের বিভিন্ন মুদ্রার ভঙ্গি করে সে নেচে নিতে লাগলো । সবকিছুই ঠিকভাবে চলছিল কিন্তু বিপত্তিটা বাঁধলো বিকালে। সন্ধ্যায় প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাবে তাই সুচি তাড়াতাড়ি নাঁচের শাড়ি পড়ার জন্য মাকে তাড়া দিতে শুরু করলো। মেয়ের উৎসাহ সামলাতে সুচেতা দেবী বললেন “ যা শাড়িটা আন । „

সুচি দৌড়ে নিজেদের ঘরে গেল । গিয়ে টেবিলের উপর চোখ ফেলতেই দেখলো শাড়িটা যেখানে সে রেখেছিল সেখানে এখন শাড়িটা নেই। টেবিলের উপর শাড়ি নেই দেখে মুহুর্তে সব উৎসাহ উবে গেল। বুক ভরা দুঃশ্চিন্তা নিয়ে সুচি টেবিলের নিচে , খাটের তলায় , পুরো ঘরে খোঁজা শুরু করলো কিন্তু পেলো না। এদিকে সুচির বিলম্ব দেখে সুচির মা সুচির ঘরে এসে দেখলেন তার মেয়ে সারা ঘরে হন্যে হয়ে কিছু একটা খুঁজছে । সেটা দেখে সুচেতা দেবী বললেন “ কি খুঁজছিস এই সময় ? শাড়িটা আন ! পড়িয়ে দিই । „

“ শাড়িটাই তো খুঁজছি ।  পাচ্ছি না তো ! „

“ কোথায় রেখেছিলি ? „

“ টেবিলের উপর । „

তারপর মা মেয়ে মিলে শাড়িটা খুঁজতে লাগলো কিন্তু পেলো না। কিছুক্ষণ পরেই সুচি দুঃখে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। চোখে কয়েক ফটো জল ও দেখা দিল। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে সারা ঘর লন্ডভন্ড করে আবার খোঁজা শুরু হলো । সুচির মা মেয়ের কান্না থামানোর জন্য বললেন “ এখানেই কোথাও আছে দেখ। শাড়ির তো আর ডানা গজায়নি যে উড়ে অন্য কোথাও চলে যাবে । „

কিন্তু সুচির কান্না থামে না। শাড়ি না পেলে সে নাচবে কি করে ? এতদিন ধরে মঞ্চে নাঁচার জন্য অপেক্ষা করেছে সে । আর আজ শাড়িটাই উধাও হয়ে গেল। শাড়ি খোঁজার জন্য যখন পুরো ঘরটাই একটা আস্তাকুড়ে পরিনত হয়েছে তখন আকাশ বাদশাকে নিয়ে সুচির ঘরের দরজায় এসে ঠোঁট দুটো পুরো গালে ছড়িয়ে দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো “ কি হয়েছে ? কি খুঁজছিস ? „  

“ আমার শাড়িটা খুঁজছি। এখানেই রেখেছিলাম কিন্তু এখন পাচ্ছি না । „  কথাটা বলার পরেই সুচি খেয়াল করলো আকাশ হাঁসছে ।

আকাশের হাঁসি দেখে সুচির বুঝতে বাকি রইলো না যে এই ছেলেটাই শাড়িটা সরিয়েছে। হ্যাঁ মনে পড়েছে ! আকাশ কিছুক্ষণ আগে ওদের ঘরে এসছিল। আকাশের হাঁসি আর ঘরে কিছুক্ষণ আগে তার প্রবেশ , দুটোই আকাশের দিকেই ইঙ্গিত করছে । সন্দেহটা মাথায় ধাক্কা দিতেই , আকাশের দিকে ডান হাতের তর্জনী তুলে সুচি রেগে দাঁতে দাঁত পিষে বললো “ তুই লুকিয়ে রেখেছিস । „

সুচির মা কিছু বলার আগেই আকাশ বাদশাকে নিয়ে ঘরের বাইরে দৌড় দিয়েছে আর সুচি তাকে ধাওয়া করেছে। দুজনের দৌড় দেখে সুচির মার মনে হলো যেন দুটো ঝড়  ঘর থেকে বেরিয়ে গেল ।

আকাশ দৌড়ে সুচির ফ্ল্যাট থেকে বার হয়ে নিজের ফ্ল্যাটে গিয়ে , নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না। সুচি গিয়ে দরজা আর চৌকাঠের মধ্যে পা দিয়ে দিল। তারপর ধাক্কা দিতে শুরু করলো “ তুই আমার শাড়ি ফিরিয়ে দে । „

আকাশের মা নিচে আজকের অনুষ্ঠানের তদারকি করছেন। এই বছর স্নেহা দেবীকে মহিলা সদস্যদের প্রধান বানানো হয়েছে। আর দিদিমা তখন আলমারি থেকে কয়েকটা শাড়ি বার করে দেখছিলেন কোনটা পড়া যায়। সব নতুন পুরানো মেশানো সুন্দর দেখতে। মেয়ে জামাইয়ের সাথে কেনা কাটা করতে গিয়ে মেয়ে এতগুলো শাড়ি কিনে দিয়েছে। সেই শাড়ি গুলোর মধ্যে একটা বেছে নিচ্ছিলেন তিনি। আর মনে মনে ভাবছিলেন --- “ বুড়ো বয়সে প্রতিদিন নতুন শাড়ি পড়বো ! পুরানো পড়লে আবার মেয়ে রাগ করবে। „ এই সব চিন্তা ভাবনার সময়েই আকাশ দৌড়ে এসে ঘরের দরজা বন্ধ করতে গেল। আকাশের এই কর্মকান্ডের মানে বোঝার আগেই বাইরে থেকে সুচির হুমকি শুনতে পেলেন “ একবার ঘরে ঢুকি আমি , তারপর তোর কি অবস্থা করি দেখ ! „

সুচির হুমকি শুনে দিদিমা বুঝলেন আকাশ সুচির শাড়ি লুকিয়ে রেখেছে তাই আকাশের উদ্দেশ্যে তিনি বললেন “ দাদুভাই , সুচির শাড়ি ওকে ফিরিয়ে দাও। „

দিদিমার কথা শুনে আকাশ দরজা থেকে সরে এলো। আকাশ দরজা থেকে সরে আসার জন্য আর সুচির ধাক্কার জন্য দরজাটা দড়াম শব্দ করে দেওয়ালে গিয়ে লাগলো। তারপর সুচি ঘরে ঢুকেই আকাশকে মারতে গেল কিন্তু তার আগেই আকাশ শাড়িটা বালিশের তলা থেকে বার করে সুচির হাতে দিয়ে দিল। শাড়ি হাতে পেয়ে সুচি কিছুটা শান্ত হলো। কিন্তু আকাশের উপর থেকে রাগ এখনো গেল না। তাই যে বালিশের তলায় শাড়ি লুকিয়ে রাখা হয়েছিল সেই বালিশ দিয়েই আকাশকে এলোপাতাড়ি  মারতে শুরু করলো। আর বাদশা তার বিশাল শরীর নিয়ে লাফাতে লাফাতে ঘেউ ঘেউ করে ডাকতে লাগলো । তার বুদ্ধিতে এটা একটা খেলা চলছে ।

আকাশ সুচির হাত থেকে বাঁচার জন্য খাটে উঠে গেল তবুও শেষ রক্ষা হলো না , সুচি খাটে উঠে মারতে শুরু করলো। এবার আকাশ সুচির হাত থেকে হ্যাঁচকা টান মেরে বালিশ কেড়ে নিয়ে সুচিকে মারতে শুরু করলো কিন্তু সুচি হার মানার পাত্রী না , সে আর একটা বালিশ নিয়ে মারতে শুরু করলো। সুচির হাত থেকে কেড়ে নেওয়া বালিশ এখন আকাশ ঢাল হিসাবে ব্যবহার করতে শুরু করলো।

দিদিমা আলমারি থেকে শাড়ি গুলো বার করে খাটের উপরেই রেখে ছিলেন তিনি সেগুলো বাঁচানোর জন্য বললেন “ এই তোরা বাইরে যা । এখানে খাটের উপর লাফালাফি করিস না। „

সুচি কিংবা আকাশকে থামানোর ব্যার্থ প্রয়াস দিদিমা করলেন না। কারন তিনি জানেন এদের থামাতে গেলে তার বুড়ো শরীরে কষ্ট হবে। ঠিক সেই সময়ে ঘরে ঢুকলেন সুচির মা । তিনি মুখে বিরক্তি নিয়ে বললেন “ এখন তোর শাড়ি পড়তে ইচ্ছা হচ্ছে না। „ তিনিও সুচি আর আকাশের মারপিট থামানোর ব্যার্থ প্রয়াস করলেন না। কারন তার কাছে এটা এখন খাওয়া আর ঘুমানোর মতোই নিত্যদিনের ব্যাপার।

মায়ের কথাতে সুচি খাট থেকে নেমে , শাড়িটা হাতে নিয়ে আকাশের দিকে ভষ্ম করে দেওয়ার দৃষ্টি হানতে হানতে ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু আকাশ সেই রাগি দৃষ্টিকে আর ভয় পায় না। সে সুচির ওই রাগি দৃষ্টির উত্তরে জিভ বার করে ভেঙচি কটলো ।

তারপর সুচির মা সুচিকে শাড়ি পড়িয়ে দিলেন । সুচি নিচে নেমে যখন অঙ্কিতার কাছে গেল তখন অঙ্কিতা আর একবার ভালো করে শাড়ি পড়িয়ে দিল। কারন সুচির মা যেভাবে শাড়ি পড়িয়েছিলেন সেই ভাবে আর যাইহোক ক্ল্যাসিক্যাল গানে নাঁচা যাবে না। তারপর পায়ে ঘুঙুর , চুলে ফুল , হাতে বালা পড়িল দিল ।  তারপর সুচির কপালে একটা চুমু খেয়ে বললো “ একদম ঘাবড়াবি না। তুই পারবি। শুধু মাথা ঠান্ডা রেখে গানের ছন্দের তালে তালে নেঁচে যাবি। „

কথাটা বলে অঙ্কিতা খেয়াল করলো সুচির চোখ জ্বলছে। চোখ দুটোতে যেন কহিনুর বসানো। সেখান থেকেই আলো ঠিকরে বার হচ্ছে। সুচির আত্মবিশ্বাস দেখে সে নিজের সাজ সাজতে চলে গেল। এটাই হয়তো তার এই সোসাইটিতে শেষ বছর। পরের বছর বিয়ে হয়ে যেতে পারে অঙ্কিতার ।

অঙ্কিতার কাছে সুচির সাজ শেষ হলে সুচিকে মনে হচ্ছিল ছোট্ট একটা রাজকন্যা । তারপর স্টেজের বাইরে তার আগের সব প্রতিযোগিতা দের নাচ দেখতে লাগলো। কেউই তেমন ভালো নাচতে পারে না। কয়েকজনের নাঁচের পর সুচির নাঁচ শুরু হলো । স্টেজে উঠে সবাইকে নমস্কার করে পরপর দুটো গানে সে নাঁচতে শুরু করলো।

প্রথম গান ----

বাজলো তোমার আলোর বেণু,
মাতলো রে ভুবন।
বাজলো তোমার আলোর বেণু
আজ প্রভাতে
সে সুর শুনে, খুলে দিনু মন ।
বাজলো, বাজলো,
বাজলো তোমার আলোর বেণু

দ্বিতীয় গান ---

শিশিরে শিশিরে শারদ
আকাশে ভোরের আগমনী শিউলি ঝরানো দিন
আনে সে শিউলি ঝরানো দিন
আনে সে চিরদিনের বাণী, ভোরের আগমনী...

নাঁচের মাঝে সুচি একবার নিচে বসে থাকা দর্শকদের দিকে তাকিয়েছিল। তাকানোর পরমুহুর্তেই আবার নিজের নাঁচের দিকে মন দিতে বাধ্য হলো। কারন পুরো প্রথম সারির একেবারে মাঝখানে বসে আকাশ বিভিন্ন মুখভঙ্গি করে চোখ , ভুরু , মুখ বেকিয়ে তাকে ভেঙচি কাটছে। আকাশের ভেঙচি কাটা দেখে মনে মনে বললো --- একবার নাঁচ শেষ হোক। তারপর এই ছেলেটার পিঠের চামড়া সে গুটিয়ে নেবে।

নিচে দর্শকদের মধ্যে আর একটু খেয়াল করলে সে দেখতে পেত আকাশের পাশে বসে তার মা কাঁদছে।

সুচির নাঁচ শেষ হতেই মঞ্চ হাততালিতে ফেটে পড়লো। সুচি মঞ্চ থেকে নামতেই তার মা তাকে জড়িয়ে ধরে তার মুখে অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দিলেন। মায়ের এই ভালোবাসায় সুচি আকাশকে মারার কথা ভুলে গেল। প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার পর প্রথম স্থান দখল করলো অঙ্কিতা আর সুচি দ্বিতীয় স্থান দখল করলো।

এখানে দ্বিতীয় স্থান দখল করলেও কলেজের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নৃত্য প্রতিযোগিতায় সে প্রথম স্থান দখল করলো। পরের বছর অঙ্কিতার বিয়ে যাওয়ার জন্য সোসাইটির প্রতিযোগিতায়ও সে প্রথম স্থান দখল করলো।

সেই বছরেই সুমি মাধ্যমিকে পুরো রাজ্যে দ্বাদশ স্থান দখল করলো। খবরটা পাওয়ার পর পুরো পরিবারের চোখে জল চলে এলো। দিদিমা, আকাশের মা মন ভরে আশীর্বাদ করলেন সুমি কে। সুচির বাবার কাছে এমন এমন আত্মীয়ের ফোন আসতে লাগলো যাদের নামটাই আর মনে নেই। শুধু পরিবার নয় , পুরো সোসাইটি আনন্দ করতে লাগলো। কারন অঙ্কিতার পর এই সুমি দ্বিতীয় ব্যাক্তি যে টিভিতে এসছে।

টিভিতে যখন খবরটা দেখানো হচ্ছিল তখন হলুদ রঙের রাজনৈতিক পার্টি অফিসে আরামদায়ক গদি মোড়াচেয়ারে বসে খবরটা দেখলো জনদরদী নেতা পঙ্কজ সহায়। খবরটা দেখার পর তার কুট মাথায় আইডিয়াটা খেলে গেল। মনে মনে ভাবলো “ এটাকেই কাজে লাগিয়ে খবরে আসতে হবে। „

হলুদ পার্টি থেকে এখনও বিধায়কের টিকিট পায়নি পঙ্কজ সহায়। খুবই বিচক্ষণ এবং ধুরন্ধর পঙ্কজ সহায় তাই খবরের শিরোনামে আসার কোন সুযোগই হাত ছাড়া করে না। সুমির এই ভালো রেজাল্ট করার সুযোগটাও হাতছাড়া করলো না । পরিকল্পনা মতো কাজ শুরু করে দিল। একটা বড়ো ফুলের তোড়া , দামী একটা ফোন আর কয়েকজন রিপোর্টার কে ফোন করে পঙ্কজ সহায় সুচির বাড়িতে উপস্থিত হলো। তারপর সুমির সাথে বেশ খানিকক্ষণ কথা বললো। সুমির ভবিষ্যতের পরিকল্পনা কি ? আরও পড়তে চায় কি না এইসব। খবরের কাগজের জন্য বেশ ভালো কয়েকটা ফটো তুললো। তারপর চলে গেল।

ভালো রেজাল্ট করলেও সুমি খুশি হতে পারে নি। তার আকাঙ্ক্ষা ছিল দশের মধ্যে স্থান দখল করবে কিন্তু সেই স্থান দখল করতে পারে নি। তাই এই আকাঙ্ক্ষা কে সফল করতে উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান শাখা নিয়ে অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে , রাত দিন এক করে , কঠোর পরিশ্রম করে , খুব ভালো ভাবে পড়াশোনা করে সে পরিক্ষা দিল। সাধারণত মাধ্যমিকে যারা ভালো ফল করে তাদের উচ্চমাধ্যমিকে আর দেখা যায় না। কিন্তু সুমির ক্ষেত্রে উল্টো হলো। উচ্চমাধ্যমিকে সুমি ষষ্ঠ স্থান দখল করলো। সুমির মা বাবা যারপরনাই খুব খুশি হলেন।

মাধ্যমিকে খুব ছোট করে কাজ সারলেও সুমি যখন উচ্চমাধ্যমিকে পুরো রাজ্যের মধ্যে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করলো তখন সুমির জন্য রিতিমত বড়ো করে একটা অভ্যর্থনা সভার আয়োজন করলো পঙ্কজ সহায়। সুমিকে সম্মান দেওয়ার সময় একটা গোলাপি রঙের Honda activa scooty উপহার দিল। লোকাল চ্যানেলে পুরোটাই কভারেজ করা হলো। বলা বাহুল্য পঙ্কজ সহায় এই কাজের জন্য আমজনতার মধ্যে খুব বিখ্যাত হয়ে উঠলো। লোকে বলাবলি শুরু করলো --- মানুষটা মানুষের জন্য কিছু করছে।

সুমির কলেজে ওঠার সাথে সাথেই আকাশ পঞ্চম শ্রেণীতে উঠে গেল। আকাশের উচ্চতা এখনই 4'7 । আকাশের উচ্চতা দেখে তার বাবা বলেছিলেন “ আমার মতোই লম্বা হবে। „ এটা বলার আর একটা কারন আছে। কারনটা হলো আকাশের মুখ তার বাবার মতোই চওড়া হতে শুরু করেছে। সুচি পড়ে অষ্টম শ্রেণীতে । এখন সুচির শরীরে নবযৌবনের ছাপ ফুটে উঠতে শুরু করেছে । উচ্চতা 5'6 আর স্লিম ফিগারের অধিকারিণী। সুচির মা বাবার সাথে সুচিরও ধারনা সে আর উচ্চতায় বাড়বে না।

আকাশ দিনের বেলা কলেজ যাওয়া শুরু করতেই বায়না ধরলো “ মা আমি এবার থেকে একা কলেজে যাবো। „

স্নেহা দেবী ছেলের জেদের কথা জানেন। যদি না বলেন তাহলে খাওয়া দাওয়া মাথায় তুলবে। তাই সুচিকে আকাশের মা দায়িত্ব দিলেন আকাশকে কলেজে নিয়ে যাওয়ার “ তোর ভরসায় ওকে আমি ছাড়ছি । চোখে চোখে রাখবি আর সাবধানে নিয়ে আসবি ওকে । „

বলা বাহুল্য সুচি সেই দায়িত্ব খুব ভালো ভাবে পূরন করে। আকাশের হাত ধরে কলেজে যায় আবার হাত ধরেই কলেজ থেকে আসে। আকাশের মোটেও ভালো লাগে না। সে এখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। বড়ো হয়ে গেছে সে। এইভাবে বাচ্চাদের মতো হাত ধরে যাওয়া আসা করতে একদম ভালো লাগে না।  একদিন গলায় বিরক্তি ঝরিয়ে আকাশ জিজ্ঞাসা করলো “ আমার হাত ধরেছিস কেন ? আমি আর বাচ্চা নই । আমি একা একা বাড়ি যেতে পারবো। „

সুচি মুখ ভেংচিয়ে জবাব দিল “ আমি আর বাচ্চা নই। চুপচাপ চল। কাকি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে তোকে সাবধানে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার। বেশি বাড়াবাড়ি করলে কিন্তু কাকি কে বলে দেব। „

অগত্যা সুচির হুমকি শুনে আকাশ চুপ করে। সুচিকে বলেও কিছু হবেনা । তাই মান-সম্মানের মাথা খেয়ে বাচ্চাদের মতো সুচির হাত ধরেই কলেজে যাতায়াত করতে শুরু করলো ।

একদিন দুজন একসাথে কলেজ থেকে ফেরার সময় দেখলো ফুটপাতের উপর  একটা দোকানে বিভিন্ন ধরনের সিনেমার সিডি আছে। সুচি দাঁড়িয়ে সেগুলো দেখতে লাগলো। সিডির থেকেও সুচিকে যে জিনিসটা বেশি টানলো সেটা হলো  দোকানের ভিতরে  বসে থাকা বৃদ্ধ । বৃদ্ধকে দেখে সুচির মন হু হু করে উঠলো। কারন বৃদ্ধকে অবিকল তার দাদুর মতো দেখতে। তার দাদুরও এতো বড়ো দাড়ি ছিল। দোকানের ভিতর বসে থাকা বৃদ্ধের উদ্দেশ্যে সুচি বললো “ তোমার কাছে কি কি সিডি আছে ? „

খুব বিষন্ন মনে সেই বৃদ্ধ উত্তর দিল “ আমার কাছে সব ধরনের সিনেমার সিডি আছে। বাংলা , হিন্দি , ইংরেজি। ভুতের , মারপিটের , প্রেমের, গোয়েন্দার । নতুন পুরানো সবকিছুর। „

“ কতো করে বিক্রি করো তুমি ? „

“ কিনলে ত্রিশ টাকা আর ভাড়া নিলে পাঁচ টাকা। „

“ আচ্ছা । কালকে এসে একটা পছন্দ করে নিয়ে যাবো । „

বাড়ি ফেরার সময় সুচি আকাশকে জিজ্ঞাসা করলো “ তোর বাড়িতে ডিভিডি প্লেয়ার আছে না ? „

পুরো দিনের মধ্যে সবথেকে বাজে সময় এইটা। বাজে না বলে এটাকে লজ্জাজনক বলা ভালো। কলেজে যাওয়ার সময় তবুও ঠিক আছে কারন তখন ক্লাসের বন্ধুরা দেখে না। কিন্তু ফেরার সময় সবার সামনে সুচি তার হাত ধরে নিয়ে যায়। মা তো ওকে নিয়ে আসা যাওয়ার দায়িত্ব দিয়েছে। হাত ধরে নিয়ে আসা যাওয়ার কথা তো বলেনি রে বাবা। তবুও হাত ছাড়া যাবে না। একবার যদি সুচি মাকে বলে দেয় তাহলে একটাও মার বাইরে পড়বে না। তাই সুচির প্রশ্নের উত্তরে মাথা নিচু করে শুধু “ হু „ বললো ।

বৃদ্ধ জানতেন সুচি এই কথাই বলবে। সবাই এসে দরদাম করে নেড়েচেড়ে দেখে চলে যায়। কেউ কেনে না। কিন্তু পরের দিন আবার যখন সুচি আকাশের হাত ধরে দোকানের সামনে হাজির হলো তখন তিনি ভাবলেন হয়তো কিছু কিনবে। তাই বেশ উৎসাহের সাথে ভালো ভালো কয়েকটা সিডি দেখাতে শুরু করলেন । সুচি তার মধ্যে থেকে একটা হিন্দি ভাষায় Dubbed করা ইংরেজি ভুতের সিনেমা  সিডি পাঁচ টাকা দিয়ে ভাড়া করলো।

সন্ধ্যায় পড়াশোনার বাদ দিয়ে দিদিমাকে নিয়ে সুচি আর আকাশ বসলো ভুতের সিনেমা দেখতে। কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হয়ে গেছে। তাই হাল্কা ঠান্ডা আছে। ঠান্ডার জন্য সুচি আর আকাশ একটা চাদর মুড়ি দিয়ে সোফায় বসে ডিভিডি প্লেয়ারে সিডি দিয়ে সিনেমা চালু করলো। সিনেমা চালু হতেই আকাশের বাবা জিজ্ঞাসা করলেন “ কিসের সিনেমা ? „

আকাশ বড়ো বড়ো চোখ করে বাবাকেই যেন ভয় পাইয়ে দেবে এমন ভাবে বললো “ ভূতের । „

“ না , একদম না ।  তোমরা এখন অনেক ছোট ।  ছোটদের এইধরনের সিনেমা দেখা উচিত নয় । „ গম্ভীর গলায় বললেন আকাশের বাবা।

আকাশের বাবার কথা শুনে সুচি আর আকাশ দিদিমার দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকালো। নাতির আর সুচির এইরকম মায়া ভরা দৃষ্টি দেখে দিদিমা তার জামাইকে বললেন “ দেখুক না। খুব শখ করে এনেছে দুজনে একসাথে দেখবে বলে। „

শাশুড়ির কথা শুনে আকাশের বাবা রাজি হলেন। তারপর সিনেমা শুরু হওয়ার সময় আকাশের বাবা কিছুক্ষণ সিনেমাটা দেখলেনন এটা দেখার জন্য যে সিনেমাটাতে কোন বড়োদের জিনিস কিংবা বেশি ভয়ের জিনিস দেখাচ্ছে কি না। যখন তিনি বুঝলেন যে সিনেমাটা বাচ্চারা দেখতে পারবে আর বেশি ভয়ের ভৌতিক দৃশ্য নেই তখন তিনি খাওয়ার জন্য উঠে পড়লেন।

সিনেমায় এমন দৃশ্য দেখাচ্ছিল যার জন্য বাদশা আগেই সোফার পিছনে লুকিয়ে পড়েছিল। দিদিমা দেখছিলেন কিভাবে সুচি আর আকাশ একটাই চাদরের ভিতরে বসে বড়ো বড়ো চোখ বার করে সিনেমা দেখছে। দেখার থেকে গিলছে বলা ভালো। চোখের পাতা যেন পড়ছেই না দুজনের ।

আকাশের বাবা ডাইনিং টেবিলে বসে খাওয়া শুরু করেছেন। রাতে তিনি রুটিই খান। একটা রুটি ছিঁড়ে সেই টুকরোটা তরকারিতে মিশিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে মুখের ভিতর পুরেদিলেন। আকাশের দিকে তাকিয়ে খাওয়ার জন্য অসাবধনে বাম হাতের কনুই লেগে জলের গ্লাসটা মেঝেতে পরে ঠং আওয়াজ করলো।

সিনেমায় সেই সময় শেষের দৃশ্য চলছে। ভুত সবে বার হয়ে চার হাত পায়ে ভর করে নায়িকার দিকে এগিয়ে আসছে । ঠিক তখনই আকাশের বাবার হাতে লেগে জলের গ্লাসটা পরে গেল। এরকম কাকতালীয় ঘটনায় সুচি আর আকাশ ভয় পেয়ে তারস্বরে পাড়া কাঁপিয়ে আআআআআআআআআ বলে চিল্লিয়ে উঠলো।

আকাশের বাবা তখন গ্লাস তোলার জন্য নিচে ঝুঁকতে যাচ্ছিলেন। সুচি আর আকাশের চিৎকারে তিনি বকবেন নাকি হাঁসবেন ভেবে পেলেন না। কিছু ভেবে না পাওয়ার জন্য তার ঠোঁটের কোনায় একটা হাঁসির রেখা দিল।

স্নেহা দেবী তার স্বামীকে খুব কম হাঁসতে দেখেছেন। আজ এইভাবে আকাশের বাবার মুখে হাঁসি ফুটে উঠতে দেখে তিনিও আঁচল চেপে হাঁসলেন। সিনেমা শেষ হলে যে যার ঘরে চলে গেল। আকাশ দিদিমার সাথে ঘুমাতে চলে গেল আর আকাশের বাবা মা আর একটা ঘরে। রাত দুটোর দিকে কর্কশ আওয়াজ করে ফোনটা বেজে উঠে আকাশের বাবার ঘুমটা নষ্ট করে দিল।
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 10 users Like Bichitro's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
পুরো লেখাটাই খুব মন দিয়ে পড়লাম।

আকাশ আর সুচিত্রার খুনসুটি মিষ্টি-মধুর খুনসুটি অব্যাহত। সুচিত্রার নামে আকাশের ছড়া কাটা, সুচিত্রার নাচের শাড়ি লুকিয়ে রাখা, তারপর দুজনের মধ্যে বালিশ দিয়ে মারামারি, সবশেষে সুচিত্রার নাচ .. পুরো ব্যাপারগুলোই দারুণ উপভোগ্য।

দুজনে মিলে ভূতের সিনেমা দেখে অতিরিক্ত ভয় পেয়ে যাওয়া, তারপর উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যের মধ্যে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে সুমির Honda Activa scooty উপহার পাওয়া .. এগুলোও বেশ ভালো লাগলো।

তবে রাত দুটোর সময় কার ফোন এলো কে জানে .. হয়তো কোনো বিপদের পূর্বাভাস।

ক্লাস এইটে সুচির উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি !! oh my God
বেশ কিছু জায়গায় চন্দ্রবিন্দু (৺) অধিক মাত্রায় ব্যবহৃত হয়েছে।

যাই হোক, সব মিলিয়ে ভালোই এগিয়ে চলেছে গল্পটি। শুভকামনা রইলো আর তার সঙ্গে লাইক এবং রেপু।

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 4 users Like Bumba_1's post
Like Reply
আহা এই পর্ব পড়তে পড়তে পুরোনো দিন গুলো মনে পড়ে যেতে লাগলো.... আমি বা আমরাও তো ফেরার পথে এরকম সিডি কিনে ফিরতাম.. নতুন পুরোনো... আসলে সিডির দোকানে দাঁড়িয়ে চোখের সামনে এতগুলো ফিল্ম, গান এসবের সিডি দেখলেই কেমন যেন করতো... কোনটা নেবো কোনটা নেবো. সত্যিই কি সাধারণ কিন্তু মূল্যবান সময় ছিল. Smile

যাইহোক এরা তাও ইংরেজি ভুতের ফিল্ম নিয়েছিল..... হিন্দি হলে তো ভুতের বদলে অন্যকিছু দেখতো বেশি Tongue তবে ওই ভয়ের চিৎকারে যেন কোথাও একটা লাভ হলো. একজনের মুখে হাসি ফুটে উঠলো. আর হলুদ পার্টি..... উফফফফ নাজুক নাজুক Big Grin

যদিও হাইট নিয়ে কিছু বলা উচিত হবেনা... কারণ কার হাইট কখন কিভাবে বাড়বে বোঝা যায়না.. তাও একটা মানে ক্লাস এইটে সাড়ে পাঁচ ফিট.. আবার বলছে আর বাড়বেনা..... কিন্তু তাহলে তো আরও বৃদ্ধি পাবার কথা কারণ ঐটাই তো বারার সময় cool2 . যাই হোক এটা নিয়ে বেশি কিছু বলা ঠিক হবেনা.

খুবই মাথা খাটিয়ে লিখে যাচ্চো প্রতিটা পর্ব. খুব ভালো..... রাজ বাবুর মতো আমিও বলছি - চালিয়ে যাও
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
Meyeder modhye 5'6" khub bhalo height......meyera choto theke dance regular korle height ektu joldi bare r body khub bhalo shape e chole ase.....sari na pele halat kharap hoie jeto......mere keteo j duto eksathe thakte chai eta besh enjoyable......badshah to full grown up......next plot mone hoche kichu intersting hote jache.....let's wait for next
[+] 1 user Likes raja05's post
Like Reply
চমৎকার আপডেট .... Smile clps
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
কাঙ্খিত আপডেট, আকাশ সুচিত্রার খুনসুটি মান অভিমান মনে করিয়ে দেয় অনেকটাই নিজেদের বাল্যকালকে। তবে বিশেষ করে আকাশ সুচিত্রার ভুতের ছবি দেখাটা মনে করিয়ে দিলো আমার নিজের ছোটবেলায় যখন ভিসিআরে হিন্দি ভুতের সিনেমা Tahkhana প্রথমবার দেখেছিলাম এবং তারপর বেশ কিছুদিন যাবৎ আমার নিজেরই একা একা থাকাটা দুস্কর হয়ে উঠেছিল ভয়ে! ছবিটা একবারই দেখেছিলাম যা কিনা ভুতের ছবি দেখার সাধ মিটিয়ে দিয়েছিলো পরে। কিন্তু ছবির কেন্দ্রীয় অভিনেতা হেমন্ত বিরজে এবং কামরান রিজভীর অভিনয়টা অসাধারণ লেগেছিলো।
এবারে অপেক্ষা আকাশ আর সুচিত্রার যৌবনে পদার্পন দেখার।
[+] 2 users Like a-man's post
Like Reply
(23-08-2021, 11:54 AM)Baban Wrote:
আহা এই পর্ব পড়তে পড়তে পুরোনো দিন গুলো মনে পড়ে যেতে লাগলো.... আমি বা আমরাও তো ফেরার পথে এরকম সিডি কিনে ফিরতাম.. নতুন পুরোনো... আসলে সিডির দোকানে দাঁড়িয়ে চোখের সামনে এতগুলো ফিল্ম, গান এসবের সিডি দেখলেই কেমন যেন করতো... কোনটা নেবো কোনটা নেবো. সত্যিই কি সাধারণ কিন্তু মূল্যবান সময় ছিল. Smile

যাইহোক এরা তাও ইংরেজি ভুতের ফিল্ম নিয়েছিল..... হিন্দি হলে তো ভুতের বদলে অন্যকিছু দেখতো বেশি Tongue তবে ওই ভয়ের চিৎকারে যেন কোথাও একটা লাভ হলো. একজনের মুখে হাসি ফুটে উঠলো. আর হলুদ পার্টি..... উফফফফ নাজুক নাজুক Big Grin

যদিও হাইট নিয়ে কিছু বলা উচিত হবেনা... কারণ কার হাইট কখন কিভাবে বাড়বে বোঝা যায়না.. তাও একটা মানে ক্লাস এইটে সাড়ে পাঁচ ফিট.. আবার বলছে আর বাড়বেনা..... কিন্তু তাহলে তো আরও বৃদ্ধি পাবার কথা কারণ ঐটাই তো বারার সময় cool2 . যাই হোক এটা নিয়ে বেশি কিছু বলা ঠিক হবেনা.

খুবই মাথা খাটিয়ে লিখে যাচ্চো প্রতিটা পর্ব. খুব ভালো..... রাজ বাবুর মতো আমিও বলছি - চালিয়ে যাও

ছোটবেলার কথা দাদা, ক্যাসেটের দোকানে গিয়েই মনে হতো আহারে কতকিছুই না আছে দেখার আর আমি কিনা এখনো কিছুই দেখে উঠতে পারলাম না। মনে হতো যেন সবকিছু একেবারেই নিয়ে যাই। আজ সারা দুনিয়াই থাকে পকেটে (স্মার্টফোন ইন্টারনেট)! কিন্তু কেন যেন দাদা ছোটবেলার সেই ভিসিআর দেখার আনন্দটা আর পাইনা  Sad
[+] 1 user Likes a-man's post
Like Reply
(23-08-2021, 12:17 PM)a-man Wrote: ছোটবেলার কথা দাদা, ক্যাসেটের দোকানে গিয়েই মনে হতো আহারে কতকিছুই না আছে দেখার আর আমি কিনা এখনো কিছুই দেখে উঠতে পারলাম না। মনে হতো যেন সবকিছু একেবারেই নিয়ে যাই। আজ সারা দুনিয়াই থাকে পকেটে (স্মার্টফোন ইন্টারনেট)! কিন্তু কেন যেন দাদা ছোটবেলার সেই ভিসিআর দেখার আনন্দটা আর পাইনা  Sad

সেটাই তো দাদা.... Woh din bhi kya din the... আসলে যখন কোনো কিছু খুব সহজলোভ্য হয়ে যায় না... আমরা তার মর্ম আর বুঝতে পারিনা..... যতদিন চাহিদা থাকে ততোদিন আকর্ষণ থাকে... এটা মনুষ্য জাতির একটা অদ্ভুত মেন্টালিটি. যাইহোক... আপনি বললেন Tehekhana দেখে ভয় পেয়েছিলেন.... তা এবারে তো বড়ো হয়েছেন.... Veerana টা দেখে ফেলুন    ওই হেমন্তই আছে... উফফফ ব্যাপক ফিল্ম
Like Reply
বুম্বা এবং বাকিরা আপডেটটির সম্বন্ধে সবকিছুই বলে দিয়েছে, তাই নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে আমি একটা অন্য কথা বলতে চাই।

এই গল্পের পরিসমাপ্তি যখন অনেকেরই জানা (যারা তোমার ওই short story টা পড়েছিল) অর্থাৎ এই গল্পের শেষে কি হতে চলেছে সেই নিয়ে কারোর  মাথাব্যাথা থাকার কথা নয়। এক্ষেত্রে তোমার অর্থাৎ লেখকের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ বর্তমান ঘটনাগুলিকে আরো আকর্ষক করে পাঠকদের কাছে পরিবেশন করা, যাতে তারা গল্পটি পড়তে আকৃষ্ট হয় এবং এই কাজটা তুমি ভালোই করছো।

লাইক এবং রেপু added

[Image: Shocked-Open-Asianpiedstarling-size-restricted.gif]

[+] 1 user Likes Sanjay Sen's post
Like Reply
(23-08-2021, 12:25 PM)Sanjay Sen Wrote: বুম্বা এবং বাকিরা আপডেটটির সম্বন্ধে সবকিছুই বলে দিয়েছে, তাই নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে আমি একটা অন্য কথা বলতে চাই।

এই গল্পের পরিসমাপ্তি যখন অনেকেরই জানা (যারা তোমার ওই short story টা পড়েছিল) অর্থাৎ এই গল্পের শেষে কি হতে চলেছে সেই নিয়ে কারোর  মাথাব্যাথা থাকার কথা নয়। এক্ষেত্রে তোমার অর্থাৎ লেখকের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ বর্তমান ঘটনাগুলিকে আরো আকর্ষক করে পাঠকদের কাছে পরিবেশন করা, যাতে তারা গল্পটি পড়তে আকৃষ্ট হয় এবং এই কাজটা তুমি ভালোই করছো।

লাইক এবং রেপু added

একদম ঠিক কথাই বলেছো সেন-দা। 
তোমার কথার সঙ্গে আমি কিছু জায়গায় একমত আবার এক জায়গায় দ্বিমত পোষণ করছি। 

এ কথা সত্যি, কাহিনীর শেষটা কি হবে এ কথা যখন জানা থাকে তখন সেই গল্পের বর্তমানকে পাঠকদের কাছে খুব ভালোভাবে পরিবেশন করতে হয়, otherwise some may not be interested in reading that story .. আর এক্ষেত্রে লেখক খুব ভালোভাবে এই কাজটা করছে তাই জন্যই এই কাহিনীটিতে এত সাড়া পাচ্ছে।

কিন্তু আবার অন্য দিক থেকে দেখতে গেলে গল্পের শেষ জানা থাকলে সেই গল্প এগিয়ে নিয়ে যেতে লেখকের সুবিধাই হয়। যেমন আমি কোনো গল্প শুরু করার আগেই ঠিক করে ফেলি গল্পের শেষটা কিভাবে করবো। তাই মাঝখানের এপিসোড গুলোতে কোনো কোনো বুদ্ধিমান পাঠকের suggestions নিলেও, গল্পের শেষের ব্যাপারে কারো কথায় কর্ণপাত করি না।
[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
প্রথমেই সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আপনাদের কমেন্টের রিপ্লাই দেরিতে দেওয়ার জন্য। আসলে আপডেট দেওয়ার পরেই একটা কাজে মহকুমা যেতে হয়েছিল।

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(23-08-2021, 09:31 AM)Bumba_1 Wrote: পুরো লেখাটাই খুব মন দিয়ে পড়লাম।

আকাশ আর সুচিত্রার খুনসুটি মিষ্টি-মধুর খুনসুটি অব্যাহত। সুচিত্রার নামে আকাশের ছড়া কাটা, সুচিত্রার নাচের শাড়ি লুকিয়ে রাখা, তারপর দুজনের মধ্যে বালিশ দিয়ে মারামারি, সবশেষে সুচিত্রার নাচ .. পুরো ব্যাপারগুলোই দারুণ উপভোগ্য।

দুজনে মিলে ভূতের সিনেমা দেখে অতিরিক্ত ভয় পেয়ে যাওয়া, তারপর উচ্চমাধ্যমিকে রাজ্যের মধ্যে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে সুমির Honda Activa scooty উপহার পাওয়া .. এগুলোও বেশ ভালো লাগলো।

তবে রাত দুটোর সময় কার ফোন এলো কে জানে .. হয়তো কোনো বিপদের পূর্বাভাস।

ক্লাস এইটে সুচির উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি !! oh my God
বেশ কিছু জায়গায় চন্দ্রবিন্দু (৺) অধিক মাত্রায় ব্যবহৃত হয়েছে।

যাই হোক, সব মিলিয়ে ভালোই এগিয়ে চলেছে গল্পটি। শুভকামনা রইলো আর তার সঙ্গে লাইক এবং রেপু।

আহহহহ। দিল গার্ডেন গার্ডেন হো গেয়া আপনার কমেন্ট পড়ে।
উচ্চতা নিয়ে যেটা বললেন তার জন্য বলবো --- কিছু কিছু ভুল থাকুক। কয়েকটা অপছন্দের জায়গা থাকুক।  Big Grin

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(23-08-2021, 11:54 AM)Baban Wrote:
আহা এই পর্ব পড়তে পড়তে পুরোনো দিন গুলো মনে পড়ে যেতে লাগলো.... আমি বা আমরাও তো ফেরার পথে এরকম সিডি কিনে ফিরতাম.. নতুন পুরোনো... আসলে সিডির দোকানে দাঁড়িয়ে চোখের সামনে এতগুলো ফিল্ম, গান এসবের সিডি দেখলেই কেমন যেন করতো... কোনটা নেবো কোনটা নেবো. সত্যিই কি সাধারণ কিন্তু মূল্যবান সময় ছিল. Smile

যাইহোক এরা তাও ইংরেজি ভুতের ফিল্ম নিয়েছিল..... হিন্দি হলে তো ভুতের বদলে অন্যকিছু দেখতো বেশি Tongue তবে ওই ভয়ের চিৎকারে যেন কোথাও একটা লাভ হলো. একজনের মুখে হাসি ফুটে উঠলো. আর হলুদ পার্টি..... উফফফফ নাজুক নাজুক Big Grin

যদিও হাইট নিয়ে কিছু বলা উচিত হবেনা... কারণ কার হাইট কখন কিভাবে বাড়বে বোঝা যায়না.. তাও একটা মানে ক্লাস এইটে সাড়ে পাঁচ ফিট.. আবার বলছে আর বাড়বেনা..... কিন্তু তাহলে তো আরও বৃদ্ধি পাবার কথা কারণ ঐটাই তো বারার সময় cool2 . যাই হোক এটা নিয়ে বেশি কিছু বলা ঠিক হবেনা.

খুবই মাথা খাটিয়ে লিখে যাচ্চো প্রতিটা পর্ব. খুব ভালো..... রাজ বাবুর মতো আমিও বলছি - চালিয়ে যাও

আরে আমিও তো ছোটবেলায় ক্যাসেডে সিনেমা দেখতাম। আপনার কমেন্ট পড়ে আমার আত্মবিশ্বাস বাড়ে। এটা খুব দরকার ছিল। প্রতিশোধ এর শেষ আপডেটের কমেন্ট করার পর থেকে আপনার কমেন্ট আমার আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে।

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(23-08-2021, 12:06 PM)raja05 Wrote: Meyeder modhye 5'6" khub bhalo height......meyera choto theke dance regular korle height ektu joldi bare r body khub bhalo shape e chole ase.....sari na pele halat kharap hoie jeto......mere keteo j duto eksathe thakte chai eta besh enjoyable......badshah to full grown up......next plot mone hoche kichu intersting hote jache.....let's wait for next

বাদশার বয়স 10 । বুড়ো হয়ে গেছে সে।

আপনারা বুঝতে পারলেন কি করে যে পরের আপডেট interesting হবে ?

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
(23-08-2021, 12:08 PM)ddey333 Wrote: চমৎকার আপডেট .... Smile clps

সবাই কি সুন্দর পাতা ভর্তি করে কমেন্ট করলো। আর আপনি শুধু দুটো শব্দ লিখলেন। it's hurts  Sad

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(23-08-2021, 02:22 PM)Bichitravirya Wrote: বাদশার বয়স 10 । বুড়ো হয়ে গেছে সে।

আপনারা বুঝতে পারলেন কি করে যে পরের আপডেট interesting হবে ?
Boring hole update r jonyo wait kortam na......let's wait for next week
[+] 1 user Likes raja05's post
Like Reply
(23-08-2021, 12:13 PM)a-man Wrote: কাঙ্খিত আপডেট, আকাশ সুচিত্রার খুনসুটি মান অভিমান মনে করিয়ে দেয় অনেকটাই নিজেদের বাল্যকালকে। তবে বিশেষ করে আকাশ সুচিত্রার ভুতের ছবি দেখাটা মনে করিয়ে দিলো আমার নিজের ছোটবেলায় যখন ভিসিআরে হিন্দি ভুতের সিনেমা Tahkhana প্রথমবার দেখেছিলাম এবং তারপর বেশ কিছুদিন যাবৎ আমার নিজেরই একা একা থাকাটা দুস্কর হয়ে উঠেছিল ভয়ে! ছবিটা একবারই দেখেছিলাম যা কিনা ভুতের ছবি দেখার সাধ মিটিয়ে দিয়েছিলো পরে। কিন্তু ছবির কেন্দ্রীয় অভিনেতা হেমন্ত বিরজে এবং কামরান রিজভীর অভিনয়টা অসাধারণ লেগেছিলো।
এবারে অপেক্ষা আকাশ আর সুচিত্রার যৌবনে পদার্পন দেখার।

সুচি আকাশের যৌবনের অনেক কিছুই থাকবে। তবে সেটার সময় এখনও আসেনি। আপনি বাবান দার কথা মতো veerana দেখুন। ওতে একজন নায়িকা আছে। জেসমিন নাম। উফফফ কি বলবো। ক্রাস আমার। এখনও সুড়সুড়ি দেয়  Tongue Tongue Tongue

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
(23-08-2021, 12:25 PM)Sanjay Sen Wrote: বুম্বা এবং বাকিরা আপডেটটির সম্বন্ধে সবকিছুই বলে দিয়েছে, তাই নতুন করে কিছু বলার নেই। তবে আমি একটা অন্য কথা বলতে চাই।

এই গল্পের পরিসমাপ্তি যখন অনেকেরই জানা (যারা তোমার ওই short story টা পড়েছিল) অর্থাৎ এই গল্পের শেষে কি হতে চলেছে সেই নিয়ে কারোর  মাথাব্যাথা থাকার কথা নয়। এক্ষেত্রে তোমার অর্থাৎ লেখকের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ বর্তমান ঘটনাগুলিকে আরো আকর্ষক করে পাঠকদের কাছে পরিবেশন করা, যাতে তারা গল্পটি পড়তে আকৃষ্ট হয় এবং এই কাজটা তুমি ভালোই করছো।

লাইক এবং রেপু added

একটা সময় ছিল। সময় টা এই কয়েক মাস আগের। তখন প্রসংশা শুনলে পা কাঁপতো। প্রসংশা শুনে তো বড়ো হয়নি। তাই কেমন একটা লাগতো। তারপর বাবান দা, বুম্বাদার কমেন্ট পড়ে আত্মবিশ্বাস বাড়লো। এখনও বাড়ছে। আপনারটাও সেই ধরনের কমেন্ট। এখন প্রসংশা শুনতে খুব ইচ্ছা হয়

লেখার ব্যাপারে বলবো --- সবসময়ই একটা চ্যালেঞ্জ থাকে আমাদের যে অন্য কারোর সাথে মিলছে না তো? নতুনত্ব বজায় আছে তো! এইসব আর কি  Tongue

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(23-08-2021, 02:47 PM)raja05 Wrote: Boring hole update r jonyo wait kortam na......let's wait for next week

WoooW. এটাকেও প্রসংশা মূলক কমেন্ট ধরলাম। মানে আমরা লেখা interesting ।

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
clps clps
Like Reply




Users browsing this thread: 334 Guest(s)