21-07-2021, 06:30 PM
সমুদ্র যাত্রা, জ্যান্ত নদী, নস্টালজিয়া - তিনটেই একেবারে অন্যরকম. একাকিত্ব এবং পুরানো স্মৃতির পাতায় লুকিয়ে থাকা মুহূর্তগুলো খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আর সাথে সঙ্গ আর চাহিদা ❤
Misc. Erotica অনঙ্গর অণু পানু (a collection of micro-stories) _ অনঙ্গদেব রসতীর্থ
|
21-07-2021, 06:30 PM
সমুদ্র যাত্রা, জ্যান্ত নদী, নস্টালজিয়া - তিনটেই একেবারে অন্যরকম. একাকিত্ব এবং পুরানো স্মৃতির পাতায় লুকিয়ে থাকা মুহূর্তগুলো খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে আর সাথে সঙ্গ আর চাহিদা ❤
21-07-2021, 06:59 PM
আপনি ছিলেন কোথায় দাদা এতদিন ?
স্মৃতি আর ভবিষ্যতের একাকিত্ব এই দুটোর ভিতরেই যে চাহিদা লুকিয়ে থাকতে পারে সেটা আপনি খুব ভালো ভাবে দেখিয়েছেন ❤❤❤ তবে এখানেও পরকীয়া। পরকীয়া জিন্দাবাদ ❤❤❤
21-07-2021, 11:01 PM
প্রতিটা গল্পই অনবদ্য। এই ফোরামে এক ঝলক টাটকা বাতাস।
22-07-2021, 10:03 AM
(21-07-2021, 05:14 PM)anangadevrasatirtha Wrote: যতো দূর মনে পড়ছে, 'জীবন বিজ্ঞান' গল্পটা পড়ে, আপনি আমাকে ভূগোল নিয়ে চিপকুর একটা কেরামতি লিখতে বলেছিলেন। জীবন বিজ্ঞান হলো , ভূগোল হলো ... এবারে জ্যামিতি নিয়ে চিপকু কি জট পাকায় সেটা দেখতে হবে !!!!
22-07-2021, 05:12 PM
তরাই
১. চারদিক কুশায়ার চাদরে মোড়া। তার ভীতর দিয়ে উঁকি মারছে ঢেউ খেলানো ঘন সবুজ।
এমনই সুন্দর সকালে চা বাগানের অপরিসর অলিগলি ভেদ করে, আমি যাচ্ছিলাম উৎরাইয়ের দিকে, কাঁধে বন্দুকটাকে ফেলে।
ইচ্ছে ছিল, দূরের ওই পাইন বনে পৌঁছে, কয়েকটা বুনো তিতির শিকার করব।
২.
হঠাৎ পরিত্রাহি চিৎকারটা শুনতে পেয়ে, চমকে, দাঁড়িয়ে পড়লাম।
একটা মেয়ের গলায় তীব্র আর্তনাদ।
আপনা থেকেই বন্দুকটা আমার হাতে হাত উঠে এল।
কিন্তু আমি বন্দুকের এইম স্থির করবার আগেই, হলুদ শরীরটা তীরের বেগে পালিয়ে গেল আওতার অনেক বাইরে।
আমি তখন দৌড়ে গেলাম পিছনে। দেখলাম, চা গাছের ঝোপের মাঝে, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে, পাহাড়ি বস্তির মেয়ে, পঞ্ছি।
৩.
নাক চ্যাপ্টা মেয়েটির মুখটা ভারি সরল। ওর চোখের মণি বাদামি, আর সারা গালে মেচেতার কালো-কালো অসংখ্য স্পট।
ও রোজ বাগান থেকে চায়ের পাতা তুলতে-তুলতে, আমাকে দেখে হাসত। ভারি সরল আর মিষ্টি হাসি ওর। এমন পড়ে পাওয়া খাঁটি সৌজন্য, রোজ-রোজ পাওয়া, সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।
আমি এখন আমার ছোট্ট কাঠের ঘরে, একটামাত্র সিঙ্গল খাটটায় এনে শুইয়ে দিয়েছি পঞ্ছিকে।
লেপার্ডটা ঘন চায়ের ঝোপে ঘাপটি মেরে, লুকিয়ে ছিল। বুড়ো লেপার্ড; দাঁতে বিশেষ জোর ছিল না বলে, পঞ্ছির পায়ের মাংস একেবারে ছিঁড়ে নিতে পারেনি। ওর চিৎকার-চেঁচামেচিতে ভয় পেয়ে, পালিয়েছিল।
৪.
আমি পঞ্ছির রক্ত মাখা ঘাগড়ার মতো কাপড়টাকে বেশ অনেকখানি তুলে দিয়ে, ওর ফর্সা পা-টাকে সযত্নে আমার কোলের উপর তুলে নিলাম। তারপর তুলোয় ডেটল ঢেলে, আস্তে-আস্তে লাগিয়ে দিতে লাগলাম ওর ক্ষতস্থানে।
ও প্রথমটায় একটু সিঁটিয়ে গেল। তারপর ওষুধের জ্বলনে, মুখটাকে কুঁচকে নিল।
শেষকালে কান্না ভুলে, আবারও ওর সকাল আলো করা হাসিটাকে সারা মুখে ছড়িয়ে দিয়ে, আমার দিকে ফিরে তাকাল।
আমি হেসে বললাম: "একটা টেডভ্যাক নিতে হবে কিন্তু। দরকার হলে একটা রেবিসের ইঞ্জেকশনও। পয়সা আছে তোর কাছে? না আমি কিছু দিয়ে দেব?"
৫.
পঞ্ছি আমার কথা শুনে, নীরবে শুধু হাসল।
তারপর হঠাৎ জিজ্ঞেস করল: "তু ইখানে রোজ-রোজ কী করতে আসিস রে, বাবুজি?"
আমি হঠাতে কী উত্তর করব, ভেবে পেলাম না। তারপর হেসে বললাম: "তোদের এই কুয়াশা মাখা তরাইয়ের ঘন জঙ্গলের বড়ো প্রেমে পড়ে গেছি রে। তাই তো বার-বার তোদের এই নির্জন উপত্যকায় ছুটে-ছুটে আসি।"
পঞ্ছি আবারও হাসল। সেই শব্দহীন, অথচ ঊজ্জ্বল আলো ছড়ানো হাসিটা।
তারপর নিজের পরণের কাপড়টাকে, আচমকা আরও বেশ খানিকটা উপরে টেনে তুলে দিয়ে, আমার অবাক চোখের সামনে, নিজের অন্তর্বাসহীন, গোপণতম ঢালু ও অরণ্যাকীর্ণ উপত্যকাটাকে, হঠাৎ প্রকটিত করে তুলে, বলে উঠল: "তু যদি হামাদের জঙ্গলকে ইতনা ভালোবাসিস, তো ইসকা স্বোয়াদ ভি আজ জ়ারা চাখকে দেখ লে রে, বাবুজি!"
এরপর আমি ঘন জঙ্গলের মধ্যে মাথা ডুবিয়ে, নিজের অজান্তেই, কোথায় যেন হারিয়ে গেলাম!
৬.
আমি ইদানিং চা খাওয়া পুরোপুরি ছেড়ে দিয়েছি।
আমার আরণ্যক জীবনে এখন বন্য মধু ছাড়া, আর অন্য কিছুতেই তৃষ্ণা মেটে না!
22-07-2021, 05:14 PM
জংলি নদী
১. হঠাৎ করেই সংসারের পিছুটান থেকে মুক্ত হয়ে গেলাম।
আমার কাছের মানুষগুলো একদিন এক মেঘলা সকালে, গড়িয়ে পড়ে গেল তিরিশ ফুট গভীর খাদে, খাড়া পাহাড়ের গা বেয়ে; বাস অ্যাক্সিডেন্টে।
শুধু আমিই বেঁচে গেলাম ভাগ্যের জোরে।
তারপর আমার আর আপন বলতে কেউ কোথাও রইল না।
আমি বিবাগি হয়ে গেলাম।
ঘর ছেড়ে দিলাম, শহর ছেড়ে দিলাম, রোজগারের থেকেও মুখ ফিরিয়ে, অকালে সন্ন্যাসী হয়ে, পথে-পথে বেড়িয়ে পড়লাম।
তারপর একদিন উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরতে-ঘুরতে, চলে এলাম এই জঙ্গলের কিনারায়, এই সরু, নাম না জানা নদীটার কোলে।
২.
জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া তিরতরে, পাতলা একটা নদী। গ্রীষ্মে থাকে ক্ষীণতনু, বর্ষায় হয়ে ওঠে বেগবতী।
এ নদীতে আশপাশের কেউ মাছ ধরতে আসে না, সালতি বাইতেও আসে না কখনও। আশপাশের গ্রাম থেকে সবাই যায় সড়ক পেড়িয়ে ওপারে, বড়ো নদীর কাছে।
দুঃখী নদীটা, আমার মতোই, চুপচাপ, একা-একা বয়ে যায় সারাদিন।
এখানে পাখির ডাক ছাড়া অন্য কোনও শব্দ নেই। আমি তাই সারাদিন এই নাম না জানা ছোট্ট জংলি নদীটার কূলে এসে, চুপচাপ বসে থাকি।
মানুষের সংস্পর্শ আমার আর ভালো লাগে না।
নদীর সংস্পর্শে আমি যেন মনে-মনে কোন সুদূরে ভেসে যাই…
৩.
প্রতিদিনের মতো আজও বসেছিলাম। নদীর পাশে, গাছের নীচে, একটা চ্যাটালো পাথরের উপর, চুপ করে।
জংলি দুপুর তার নিঝ্ঝুম নীরবতার নেশা, ক্রমশ চাড়িয়ে দিচ্ছিল আমার অনুভূতিতে।
হঠাৎ একটা পরিত্রাহি চিৎকারে আমার ঘোর কেটে গেল।
একটা মেয়ের গলা; ডোকার ছেড়ে কাঁদছে।
সঙ্গে-সঙ্গে দৌড় লাগালাম। কয়েকটা ঝোপঝাড় টপকে গিয়ে দেখি, গভীর জঙ্গলের মধ্যে একটা আপাত ভাবে পরিষ্কার যায়গায়, লুটিয়ে পড়ে রয়েছে মেয়েটি।
কোমড়ের নীচ থেকে ভেসে যাচ্ছে রক্তে। আমার আমার পায়ের শব্দ পেয়ে, বুড়ো ভাল্লুকটা পালিয়ে গিয়েছে আরও গভীরতর জঙ্গলে।
৪.
ওকে কোলে তুলে, আমার ঝোপড়াতে নিয়ে এলাম। ওর হাঁটবার মতো ক্ষমতা ছিল না।
ভাল্লুকটা বুড়ো। তাই নোখের আঁচড়ে একেবারে পায়ের মাংস খাবলে, ছাড়িয়ে নিতে পারেনি।
তবে আঁচড়ের দাগ বেশ গভীর। আমি তাই ওর পরণের কাপড়টাকে আস্তে করে থাই অবধি তুলে দিলাম।
৫.
ওকে আমি চিনি। ওর নাম লোরি। বেশি বয়স নয়; কুড়ির ঘরেই।
স্বামীর ঘর ছেড়ে পালিয়ে এসেছে। ওর স্বামী ওকে দু'বেলা পিটত।
এখন বন থেকে কাঠ কুড়িয়ে, ওর কোনও মতে চলে যায়।
আমি ওর পরণের কাপড়টা তুলতেই, ও কেমন যেন লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে গেল।
আমি আলতো করে, তুলোয় ডেটল ঢেলে, ওর ক্ষতর উপর বোলাতে লাগলাম।
ওষুধের ঝাঁঝে, ও দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে, যন্ত্রণা সহ্য করতে লাগল।
৬.
লোরি কালো। যেন এই জঙ্গলের রুক্ষতায় পুড়ে যাওয়া, চকচকে একটা কষ্ঠীপাথরের প্রাচীনা দেবী মুর্তি!
ও যখন প্রতিদিন নদীর পাশ দিয়ে চলে যেত গভীর জঙ্গলের দিকে, তখন ওর গা থেকে একটা বনজ খুশবু, আমার নাকে এসে ঝাপটা মারত।
আজ ও কখন আমাকে পাশ কাটিয়ে গিয়েছিল, খেয়াল করিনি।
এখন ওর কালো, চকচকে, নির্লোম পা-টা আমার কোলের উপর শায়িত।
ওর বড়ো-বড়ো ডাগর চোখ দুটো কৃতজ্ঞতা ও কৌতুহলে টুপটুপে হয়ে, নীরবে ঘুরে বেড়াচ্ছে আমার মুখের উপর।
আমি বললাম: "জখম এমন কিছু নয়, আস্তে-আস্তে ঘা শুকিয়ে যাবে। তবে পারলে একটা টেডভ্যাক ইঞ্জেকশন নিয়ে নিস। অথবা একটা রেবিসের টিকা।"
ও বড়ো-বড়ো চোখ মেলে শুধু তাকিয়েই রইল আমার দিকে। মুখে কিছু বলল না।
৭.
আমি তখন আবার বললাম: "কী রে, টাকা আছে তোর কাছে? নাকি আমি কিছু দিয়ে দেব?"
ও হঠাৎ ওর পায়ের পাতাটাকে একেবারে আমার বুকের লোমের সঙ্গে মিশিয়ে, আলতো করে ঘষে দিয়ে বলে উঠল: "তুই ইখানে ইকা-ইকা, লদীর পাড়ে বসে, কী এতো ভাবনা-চিন্তা করিস রে, বাবু?"
আমি হঠাতে এ প্রশ্নের কী উত্তর দেব, ভেবে পেলাম না। তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম: "আমার কী মনে হয় জানিস, একদিন তোদের ওই ছোট্ট নদীটা দিয়ে নৌকো বেয়ে, আমি বোধ হয় কোনও অজানার দেশে পাড়ি জমাব…"
আমার কথা শুনে, লোরি ওর বড়ো-বড়ো, আর টানা-টানা চোখ দুটো মেলে, আরও বেশ কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।
তারপর হঠাৎ নিজের পরণের অন্তর্বাসহীন কাপড়টাকে, এক টানে কোমড়ের আরও উপর পর্যন্ত টেনে তুলে ধরে বলল: "ভেসে পড় না কেনে, বাবু! আজই তোর লৌকোটাকে ভাসিয়ে দে না রে! ভরা লদীরও যে, একখান শক্তপোক্ত লৌকো ছাড়া, দিন কিচ্ছুতে কাটতেই চায় না, বটেক!"
এরপর আমি আর স্থির হয়ে থাকতে পারলাম না।
সেই আদিম জঙ্গলের ছোট্ট, তিরতিরে, কালো জলের নদীটাতে ভেসে পড়লাম, নিজের বাউন্ডুলে নৌকোটাকে, অনেকদিন পর বিনা বাঁধায় ভাসিয়ে দিয়ে।…
22-07-2021, 05:24 PM
একই মুহুর্তকে কতরকম ভাবে ফুটিয়ে তোলা যায় সেটা প্রমান করলেন আপনি. শুনেছি পৃথিবীতে ৭টি মাত্র কাহিনী আছে আর তাকে ঘিরেই এতো এতো ফিল্ম. অথচ বিষয় সেই ৭টা কেন্দ্র করেই..... এখানেও যেন তার একটা অনু ঝলক দেখলাম ❤
22-07-2021, 06:55 PM
একই ঘটনা কিন্তু দুইবার আলাদা ভাবে উপস্থাপন করা। খুব ভালো লাগলো দুটোই পড়তে। বটেক তো বীরভূম এর ভাষা।
❤❤❤
28-07-2021, 04:54 PM
বিষাক্ত নীল
বহুদিন পরে বাড়ি ফিরলাম। মার্চেন্ট নেভির চাকরিটাতে জয়েন করবার পর, এই প্রথমবার। কতোদিন যে বাড়ির বিছানাটায় শুতে পারিনি, তাই স্নান-খাওয়া সেরে বিছানাতে এসেই, ধপাস্ করে গড়িয়ে পড়লাম। কখন যে গাঢ় ঘুমে তলিয়ে গিয়েছিলাম, নিজেরই খেয়ালে ছিল না।
খুব সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছিলাম।
আমার নগ্ন তলপেটটা হয়ে উঠেছে, উথালপাথাল, সীমাহীন কোনও সমুদ্র। আর সেই নীলের মধ্যে থেকে একটা সুউচ্চ বাতিঘরের মতো আকাশের দিকে খাড়া উঠে গেছে, আমার সুদৃঢ় লিঙ্গটা।
তারপর সেই খাড়া বাতিঘরটার মাথায় এসে জমা হচ্ছে ঘন মেঘ; ক্রমশ তার বাষ্প-স্রোত চেপে-চেপে ধরছে, বাতিঘরের চূড়াটাকে। তারপর ঝমঝম করে বৃষ্টি…
আমার স্বপ্নটা ভেঙে গেল।
আমি ধড়মড় করে জেগে উঠে দেখলাম, আমার পরণ থেকে শর্টসটা বিতাড়িত হয়েছে।
আর বহুদিন পরে বউদি আমার তলপেটে উপুড় হয়ে পড়ে, আমার পৌরুষটাকে চুষে দিচ্ছে আশ্লেষে।
আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। আমার ঘন তেজ-রস, বউদির মুখের মধ্যেই ঢেলে দিলাম গলগল করে।
তারপরও আমার আগুন কিন্তু নিভল না। বহুদিনের উপবাসী আমি!
তাই বউদির নরম শরীরটাকে উল্টে, বিছানায় ফেলে, আমি চড়াও হলাম বউদির উপরে।
কিন্তু পলক ফেলা মাত্রই, কেবল আমার শরীরটাই বীর্য মাখামাখি বিছানার চাদরের উপর আছাড় খেয়ে পড়ল।
আর কেউ কোথাও নেই!
আমি তখন রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম। এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখলাম, জানলার বাইরে কখন যেন সন্ধে নেমে গেছে।
সেই প্রথম সন্ধ্যার অন্ধকারে, এক ঝলক দমকা হাওয়া, কোত্থেকে উড়ে এল আমার কানের কাছে।
সেই অশরীরী হাওয়া হঠাৎ ফিসফিসিয়ে বলে উঠল: "তুমি চলে গেলে, আর তারপরই তোমার দাদা, আমাদের কথা সব জানতে পেরে গেল!
তারপর সে ঘেন্নায়, আমার সংস্পর্শ ত্যাগ করল। কথা বন্ধ করে দিল, এমনকি আলাদা ঘরে শুতে পর্যন্ত লাগল।
আমি এই জন্য কয়েকদিন খুব কেঁদে ভাসালাম। কিন্তু তাতে আমার মনের ভার কিছু হালকা হল না।
তখন আমি একদিন দুপুরে, তোমার এই ঘরে চলে এসে, সিলিং থেকে ওড়নাটাকে শক্ত করে বেঁধে…"
আমি এখনও অন্ধকারে, নগ্ন হয়েই বসে রয়েছি। এলোমেলো বিছানাটায়।
মনে হচ্ছে, যেন জাহাজডুবির পর, আমিই একমাত্র জীবিত কোনও হতভাগা, মাঝ-সমুদ্রে খড়কুটো ধরে কোনও মতে অকারণে ভেসে রয়েছি।
এর চেয়ে মরে গেলেই হয় তো আমিও আখেরে বেঁচেই যেতাম!
28-07-2021, 04:56 PM
সলিল সমাধি
বহুদিন পরে বাড়ি ফিরলাম। খুবই নিঃশব্দে। ফেরবার যে খুব একটা ইচ্ছে ছিল, তা নয়; কিন্তু ঘরে ফেরবার টান, বড়ো অমোঘ টান! তাই না ফিরেও থাকতে পারলাম না।
মার্চেন্ট নেভিতে চাকরি করতে গিয়ে, বেশ কিছুকাল বাড়ি-ছাড়া হয়ে, সমুদ্রে-সমুদ্রেই কাটিয়েছি।
আজ যখন ফিরে এলাম, তখন আর কাউকে বিশেষ ডাকলাম না। চুপচাপ নিজের ঘরে ঢুকে, বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লাম।
নিজের ঘরের বিছানার আমেজটাই আলাদা; তার সঙ্গে স্বর্গ-সুখেরও তুলনা চলে না।
তাই স্নান-খাওয়া ব্যাতি রেখেই, দু'চোখ আরামে বুজিয়ে ফেললাম।
ঘুমটা ভেঙে গেল মুহূর্মুহু চুমুর আদরে।
চোখ খুলে দেখি, বউদি আমার শায়িত শরীরের উপর, ক্ষুধার্ত বাঘিনীর মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে। নিজের গায়ের পোশাকের ঠিক নেই, আমাকেও ঘুমন্ত অবস্থাতেই, পোশাকহীন করে ছেড়েছে।
বউদি ঠিক টের পেয়ে গেছে যে, আমি ফিরে এসেছি। এ বাড়িতে একমাত্র বউদিই আমার ব্যাপারে সব কিছু আগে-আগে টের পায় চিরকাল; কবে আমি বড়ো হয়ে উঠলাম, কখন আমার সারা শরীরে আগুন জ্বলে উঠল, কোন-কোন অসহ্য রাতে, আমার কিছুতেই ঘুম আসত না, সব কিছুই…
বউদি এখন আমার তলপেটে পাগলের মতো মুখ ঘষছে। আমার হালকা লোমশ বুকে, নিজের সরু-সরু মেয়েলি আঙুলগুলো দিয়ে, আঁকড়ে ধরছে, আমার ছাতির গুল্মগুলোকে। আমার খোলা শরীরের খাঁজে-ভাঁজে, সর্ব শক্তি দিয়ে নামিয়ে আনছে, নিজের নরম শরীরের ঢালু উচ্চতা দুটোকে।
বহুদিন পরে আমাকে কাছে পেয়ে, আত্মহারা হয়ে গেল বউদি। নিজেকে আর সামলাতে পারল না। গা থেকে কাপড়ের শেষ আড়ালটুকু এক টানে মেঝেতে ফেলে দিয়ে, আমার কোমড়ের উপর চড়ে বসল। নিজের কোমড়ের নীচের অনন্ত, গভীর, সেই আদিমতম সমুদ্রটাকে দিয়ে, গিলে নিতে চাইল, আমার দক্ষিণান্তের একমাত্র উদ্ধত বাতিঘরটাকে!
কিন্তু বউদি ঠিক মতো লিপ্ত হওয়ার আগেই, আমি ক্রমশ বিছানা থেকে মিলিয়ে যেতে লাগলাম ধোঁয়া হয়ে।
তারপর এক সময় শূন্য বিছানায় কেবল বউদির নগ্ন দেহটাই, নিষ্ফল হতাশায় উপুড় হয়ে পড়ে রইল। আমি হাওয়ায় মিলিয়ে গেলাম!
আতঙ্কিত, অপমানিত ও অতৃপ্ত বউদি তখন চোখ তুলে, জানলার দিকে তাকাল। দেখল, বিকেল গড়িয়ে কখন যেন সন্ধে নেমে গেছে।
সেই ধূপছায়ারঙা সন্ধের বুক থেকে একটা দমকা হাওয়া উঠে এসে, বউদির গাল-ঠোঁট ছুঁয়ে গেল হঠাৎ। বউদির এলোমেলো হয়ে যাওয়া চুলগুলোকে উড়িয়ে দিয়ে, সেই অশরীরী হাওয়া ফিসফিসিয়ে বলে উঠল: "আমি আর নেই, বউদি। আমাদের জাহজটা প্রশান্ত মহাসাগরে ডুবে গিয়েছে। তোমরা বোধ হয় এখনও খবরটা পাওনি…"
হাওয়াটা ফিরে গেল নগ্ন ঘরটার মধ্যে, ব্যর্থ ঘুরপাক খেয়ে। তারপর অন্ধকার আরও গাঢ় হল।
বউদির মুখটা কেবল যন্ত্রণায়, পাথর হয়ে রইল।
বউদি কিন্তু এক ফোঁটাও কাঁদল না।
আগুনের মতো একটা দৃষ্টি তুলে, শুধু একবার মাত্র তাকাল, মেঝেতে পড়ে থাকা, নিজের গায়ের ওড়নাটার দিকে ও আমার ঘরের উপরে, সিলিংয়ের আঙটাটার দিকে।
ব্যাপারটা দেখে, আমার অশরীরী মনটাও যেন ছ্যাঁৎ করে উঠল।
আমার সূক্ষ্ম অনুভূতি দিয়ে আমি যেন স্পষ্ট শুনতে পেলাম, বউদির ওই অব্যক্ত, কঠিন ঠোঁট দুটো বলে উঠল: "কোথায় পালাবে তুমি? আমিও আসছি তোমার কাছে; তুমি একটু অপেক্ষা করো…"
28-07-2021, 05:04 PM
দুটোই পড়লাম। লাইক দিলাম। রেপু error দেখাচ্ছে বলে কাউকেই দিতে পারছি না। error উঠলেই দিয়ে দেবো।
আপনার গল্প গুলো খুব ভালো হয়। তবে আমি আর পড়ছি না । সব জায়গায় কি এই গলায় দড়ি দিতেই হবে ?? ❤❤❤
28-07-2021, 06:30 PM
স্যালুট আপনাকে ❤❤ আর কিছুই বলবোনা.... ভাষা হারিয়ে ফেলছি দাদা. একি বিষয় আবারো দুরকম ভাবে.. উফফফফ ❤
অথচ দুটোই কত বাস্তব.. এই একাকিত্ব একসময় যতোটা আপন.... একসময় ততটাই....... যাইহোক তবে এবারে একটা চিপকু কে নিয়ে হলে ভালো হতো... মানে সিরিয়াস থেকে বেরিয়ে ওই অলীক সুখের খোঁজে আরকি....
28-07-2021, 09:13 PM
(This post was last modified: 28-07-2021, 09:18 PM by anangadevrasatirtha. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(28-07-2021, 06:30 PM)Baban Wrote: স্যালুট আপনাকে ❤❤ আর কিছুই বলবোনা.... ভাষা হারিয়ে ফেলছি দাদা. একি বিষয় আবারো দুরকম ভাবে.. উফফফফ ❤ আপনি একটা commentএ সেদিন বলেছিলেন যে, আসলে পৃৃথিবীর সব গল্পই ঘুরেফিরে মাত্র সাতটা প্লটেই তৈরি হয়। এ কথাটা আমার মনে ধরেছে। তাই 'সমুদ্র যাত্রা' গল্পটার continuityতে আবার এই দুটো গল্প লিখে ফেললাম। ধন্যবাদ আপনাকে, এমন একটা নতুন দৃষ্টিকোণ share করবার জন্য। চিপকু শীঘ্রই আসবে। তার জ্যামিতির ক্লাস নেওয়ার কথা আছে (অনুরোধ আছে!)। তাই নিয়েই আসছে এ বার সে।
28-07-2021, 09:16 PM
(28-07-2021, 05:04 PM)satyakam Wrote: দুটোই পড়লাম। লাইক দিলাম। রেপু error দেখাচ্ছে বলে কাউকেই দিতে পারছি না। error উঠলেই দিয়ে দেবো। পড়ে মন্তব্য করা বন্ধ করবেন না। এই formটায় এই গলায় দড়ির আবহটা ফিরে-ফিরে এসেছে। হয় তো সামনের কাহিনিগুলোয় তেমন আর আসবে না। একটা দীর্ঘ উপন্যাস শেষের পর্যায়ে রয়েছে। সেটা আপনাদের কেমন লাগে, সেটাও তো জানতে হবে!
28-07-2021, 09:25 PM
(This post was last modified: 28-07-2021, 09:30 PM by Baban. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(28-07-2021, 09:13 PM)anangadevrasatirtha Wrote: আপনি একটা commentএ সেদিন বলেছিলেন যে, আসলে পৃৃথিবীর সব গল্পই ঘুরেফিরে মাত্র সাতটা প্লটেই তৈরি হয়। অনঙ্গদা আপনার প্রতিটা সৃষ্টি অসাধারণ ❤ আর আমার এই ৭টা প্লটের কথাটি যে আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম. আপনি আমার আদর এবং নিশির ডাক পড়েছিলেন তার জন্য ধন্যবাদ. আমি কিন্তু শুধুই ইরোটিক লিখিনা.... তার বাইরে গিয়ে ননইরোটিকও লিখি ঠিক যেমন আপনি যৌনতার মধ্যেও তার অধিক বাস্তব ফুটিয়ে তোলেন.. তেমনি. তাই বলছি পারলে আমার নন ইরোটিক ছোট গল্প গুলো পড়ে দেখতে পারেন. আশা করি ভালো লাগবে. আর আপনার মতামত আবারো পেলে তো সোনায় সোহাগা ❤ শুরু করতে পারেন দূরত্ব দিয়ে তারপর অচেনা অতিথি, বন্ধু, আমার একলা আকাশ তো আছেই.... বেশিক্ষনের নয় তাই বেশি সময় নষ্ট হবেনা ❤ চিপকুর জ্যামিতি ক্লাসের অপেক্ষায় রইলাম আর সাথে আপনার নতুন উপন্যাস এর জন্য তো অবশ্যই অপেক্ষায় রইলাম. কারণ আপনার লেখনী উফফফ ❤
28-07-2021, 09:31 PM
(28-07-2021, 09:16 PM)anangadevrasatirtha Wrote: পড়ে মন্তব্য করা বন্ধ করবেন না। এই না না, আমি ওই ধরনের কথা বলে থাকি। বাবান দা কে বলেছিলাম , বুম্বাদা কেও বলেছিলাম। কিন্তু তারপরেও ওনাদের গল্প পড়ি। কমেন্ট করি। ❤❤❤ তাহলে অনু পানু ছেড়ে এবার উপন্যাস ধরলেন। তাও আবার শেষ পর্যায়ে আছে। অসাধারন। অবশ্যই পড়বো। কমেন্ট ও করবো। তবে ওই একজন বাইশ বছরের বাচ্চার কমেন্ট অতোটা গুরুত্বপূর্ণ হবে না ❤❤❤
29-07-2021, 09:57 AM
(28-07-2021, 09:13 PM)anangadevrasatirtha Wrote: আপনি একটা commentএ সেদিন বলেছিলেন যে, আসলে পৃৃথিবীর সব গল্পই ঘুরেফিরে মাত্র সাতটা প্লটেই তৈরি হয়। জ্যামিতির পরে চিপকু বীজগণিত পড়বে... কোথায় সে তার বীজ বোপন করে সেটাই খুব চিন্তার বিষয় .... |
« Next Oldest | Next Newest »
|