Thread Rating:
  • 106 Vote(s) - 2.8 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) সমাপ্ত :---
আপডেট ভালো লাগলো ।
রেপু দিলাম ।
ফন্ট সাইজ এক পয়েন্ট বাড়ালে ভালো হয় ।
[+] 1 user Likes buddy12's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(19-07-2021, 10:24 PM)buddy12 Wrote: আপডেট ভালো লাগলো ।
রেপু দিলাম ।
ফন্ট সাইজ এক পয়েন্ট বাড়ালে ভালো হয় ।

করে দিলাম। 4 ছিল 5 করে দিলাম ❤❤❤

এবার থেকে 5 করেই দেবো ❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
এতো বাবু কেন? বাবু বাদ দিলে পড়তে সুবিধা হয় আর মনে হয় শুনতেও ভালো লাগবে। আপডেট একটু ঘন ঘন দিন। শুভেচ্ছা
[+] 1 user Likes dimpuch's post
Like Reply
কিছু কিছু বাদ দিলে ভালো হয়। সম্পর্কের এতো দিতেলস না দিলেও চলে। গল্পটিকে ভালো লাগতে দিন। মন রেখে কথা বললাম না তার মানে এই নয় গল্প ভালো লাগছে না। মিষ্টি সম্পর্ক গুলো নিয়ে বেশি লিখুন
[+] 1 user Likes dimpuch's post
Like Reply
(20-07-2021, 12:07 AM)dimpuch Wrote: এতো বাবু কেন? বাবু বাদ দিলে পড়তে সুবিধা  হয় আর মনে হয় শুনতেও  ভালো লাগবে। আপডেট  একটু ঘন ঘন দিন। শুভেচ্ছা
বাবু্র বিকল্প কি ব্যবহার করবো সেটাই বুঝতে পারছি না। আপডেট ঘন ঘন দিতে চাইলেও দেওয়ার উপায় নেই। লেখার সময় খুব কম পাই। ❤❤❤
(20-07-2021, 12:36 AM)dimpuch Wrote: কিছু কিছু  বাদ দিলে ভালো হয়। সম্পর্কের  এতো দিতেলস না দিলেও চলে। গল্পটিকে ভালো লাগতে দিন। মন রেখে কথা বললাম না  তার মানে এই নয় গল্প ভালো লাগছে না। মিষ্টি সম্পর্ক গুলো নিয়ে বেশি লিখুন

সম্পর্ক গুলোই আমার কাছে আসল। সবকটা সম্পর্ক। গল্প এখনও অনেক বাকি। কয়েকটা অপেডেটের পর বাকি সবাই চাপা পড়বে আর সুচিত্রা আকাশ মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করবে। তখন মিষ্টি সম্পর্ক আরো পাবেন ❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
আপডেট কবে?
Like Reply
(20-07-2021, 09:54 PM)babu03 Wrote: আপডেট কবে?

আপনি আমার লেখা পড়লেন ? 

ভালো লাগলো ? 

আপডেট লিখছি। সবে এক লাইন হয়েছে। এখনও দশ পৃষ্ঠা বাকি  Lotpot Lotpot  Big Grin Big Grin Tongue Tongue
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(20-07-2021, 10:00 PM)satyakam Wrote: আপনি আমার লেখা পড়লেন ? 

ভালো লাগলো ? 

আপডেট লিখছি। সবে এক লাইন হয়েছে। এখনও দশ পৃষ্ঠা বাকি  Lotpot Lotpot  Big Grin Big Grin Tongue Tongue

Eagerly waiting.....khub bhalo egoche golpo
[+] 1 user Likes raja05's post
Like Reply
(21-07-2021, 12:01 AM)raja05 Wrote: Eagerly waiting.....khub bhalo egoche golpo

                              আপডেট লেখা চলছে। 
                      আশাকরি শুক্র-শনিবার 
                        নিয়ে আসতে পারবো 
                ❤  সুচি আকাশের খুনসুটি ❤
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 2 users Like Bichitro's post
Like Reply
(21-07-2021, 09:24 AM)satyakam Wrote:                               আপডেট লেখা চলছে। 
                      আশাকরি শুক্র-শনিবার 
                        নিয়ে আসতে পারবো 
                ❤  সুচি আকাশের খুনসুটি ❤

বেশ ভালো মতো , হাতাহাতি , খামচা খামচি যেন হয় দুটোর মধ্যে ....
Smile Smile
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(21-07-2021, 09:29 AM)ddey333 Wrote: বেশ ভালো মতো , হাতাহাতি , খামচা খামচি যেন হয় দুটোর মধ্যে ....
Smile Smile

আমার মাথায় খচড়ামি বুদ্ধি ভর্তি। এখন একটু হাতাহাতি করাবো। বাচ্চা তো দুজনেই। কিছুটা বড়ো হোক। তখন wwe ম্যাচ খেলিয়ে দেবো। কথা দিলাম ।  devil2 devil2

পরের আপডেট থেকেই পাবেন সবকিছু। তবে পরিমাণ অল্প হবে। ধিরে ধিরে বাড়বে  Tongue 

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
(21-07-2021, 10:08 AM)satyakam Wrote: আমার মাথায় খচড়ামি বুদ্ধি ভর্তি। এখন একটু হাতাহাতি করাবো। বাচ্চা তো দুজনেই। কিছুটা বড়ো হোক। তখন wwe ম্যাচ খেলিয়ে দেবো। কথা দিলাম ।  devil2 devil2

পরের আপডেট থেকেই পাবেন সবকিছু। তবে পরিমাণ অল্প হবে। ধিরে ধিরে বাড়বে  Tongue 

❤❤❤

Gr8......apni aro eagerness barite dilen......bhalo ekta misti lekha pawa jabe anek din por
Like Reply
(21-07-2021, 10:08 AM)satyakam Wrote: আমার মাথায় খচড়ামি বুদ্ধি ভর্তি। এখন একটু হাতাহাতি করাবো। বাচ্চা তো দুজনেই। কিছুটা বড়ো হোক। তখন wwe ম্যাচ খেলিয়ে দেবো। কথা দিলাম ।  devil2 devil2

পরের আপডেট থেকেই পাবেন সবকিছু। তবে পরিমাণ অল্প হবে। ধিরে ধিরে বাড়বে  Tongue 

❤❤❤

banana fight horseride
Like Reply
(21-07-2021, 09:24 AM)satyakam Wrote:                               আপডেট লেখা চলছে। 
                      আশাকরি শুক্র-শনিবার 
                        নিয়ে আসতে পারবো 
                ❤  সুচি আকাশের খুনসুটি ❤

দেখি কেমন খুনসুটি করে আকাশ আর তার চোখের তারা সূচি
Like Reply
(21-07-2021, 11:39 AM)raja05 Wrote: Gr8......apni aro eagerness barite dilen......bhalo ekta misti lekha pawa jabe anek din por
গল্পের নাম মিষ্টি মুহুর্ত। তাই মিষ্টি লেখার চেষ্টা করবো। এবার কার কতোটা মিষ্টি লাগছে সেটা ব্যাক্তি বিশেষের উপর 
❤❤❤
(21-07-2021, 12:01 PM)ddey333 Wrote: banana fight horseride
❤❤❤
(21-07-2021, 01:03 PM)a-man Wrote: দেখি কেমন খুনসুটি করে আকাশ আর তার চোখের তারা সূচি

দেখে বলবেন কিন্তু কেমন খুনসুটি করছে ওরা 

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply
আপডেটের জন্য তাগাদা দিচ্ছি না কিন্তু 
অগ্রিম রেপু দিলাম। 
[+] 1 user Likes buddy12's post
Like Reply
(22-07-2021, 03:39 PM)buddy12 Wrote: আপডেটের জন্য তাগাদা দিচ্ছি না কিন্তু 
অগ্রিম রেপু দিলাম। 

                  কি আর করা যাবে 

             তাগাদা না দেওয়ার জন্য 
             কালেকে সকালে আসছে 
                    আরও একটা 
                       না না না 
                   একটা না তিনটে 
           ❤মিষ্টি মুহুর্তে আসছে ❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
(22-07-2021, 03:50 PM)satyakam Wrote:
                  কি আর করা যাবে 

             তাগাদা না দেওয়ার জন্য 
             কালেকে সকালে আসছে 
                    আরও একটা 
                       না না না 
                   একটা না তিনটে 
           ❤মিষ্টি মুহুর্তে আসছে ❤

তিনটা একসাথে? তাহলে বিষয়টা বেশ মিষ্টিই হবে  Shy
Like Reply
(22-07-2021, 08:27 PM)a-man Wrote: তিনটা একসাথে? তাহলে বিষয়টা বেশ মিষ্টিই হবে  Shy

ওই যে বললাম --- কতোটা মিষ্টি লাগবে সেটা ব্যাক্তি বিশেষের উপর 

❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
[Image: 113415.jpg]

Update 4

সুচিত্রার দুরন্তপনার জন্য মা বাবার কাছে বকা খাওয়া একটা স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এখন সেই স্বাভাবিক ঘটনা আর তেমন ঘটেনা । কারন সুচিকে বকলেই বীণাপাণি দেবী তাকে আড়াল করেন বা তার পক্ষ্য  নেন।

এইতো এইবারের বর্ষার ঘটনা । সকাল সকাল বাদশা , সুচি আর আকাশ মিলে লুকোচুরি খেলছে । দুটো ফ্ল্যাট হয়েছে এদের লুকানোর জায়গা। সবাই লুকিয়েছে আর সুচি হয়েছে চোর। ঠিক সকাল আটটা বেজে চোদ্দো মিনিট নাগাদ আকাশ কালো করে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হলো । জানলা দিয়ে বৃষ্টি দেখেই সুচির চোখ খুশীতে জ্বলজ্বল করে উঠলো। আকাশ নিজেদের ঘরের দরজার পর্দার পিছনে লুকিয়ে ছিল। সেখান থেকে সুচি আকাশকে খুঁজে আস্তে আস্তে  বললো “ বৃষ্টিতে খেলবি ? „ তার চোখে মুখে উত্তেজনার ছাপ স্পষ্ট ।

আকাশ কখনো বৃষ্টিতে ভেজেনি। তাই সে “ হ্যাঁ „ বলে দিল। দিম্মা আর আকাশের মায়ের চোখের অলক্ষ্যে সে চুপিচুপি বাদশা আর আকাশকে নিয়ে বিল্ডিং এর নিচে নেমে গেল । তারপর ক্রিকেট খেলার জন্য বাচ্চাদের পার্কের পাশে যে ছোট মাঠটা আছে সেখানে জল কাদায় তিনজন মিলে লাফালাফি শুরু করলো । বেশ কিছুদিন ধরেই বৃষ্টি হওয়ার জন্য মাঠে কাদা তখনও শুকিয়ে যাই নি। আকাশ এই প্রথম বৃষ্টিতে ভিজছে তাই চোখে মুখে বাচ্চা সুলভ খুশীর উচ্ছাস স্পষ্ট । বাদশা ঘেউ ঘেউ করতে করতে জল কাদায় গড়াগড়ি খেয়ে সারা শরীরে কাদা মাখতে লাগলে। তিনজনের শরীর জলে ভিজে , জামায় কাদা লেগে ভুতের মতো অবস্থা। ঠিক সেই সময় বৃষ্টির ফোটা আরো বড়ো আর ঘন হয়ে গেল । এদের এই উচ্ছাস দেখে যেন ইন্দ্রদেব জোর বর্ষার আদেশ দিয়েছে।

বৃষ্টি হচ্ছিল বলে রহমত চাচা গেট ছেড়ে নিজের ঘরে গেছিলেন ছাতা আনতে । ছাতা এনে দেখলেন তিনজন কাদায় হুটোপুটি শুরু করেছে । আকাশের লাফানোর জন্য জল কাদা সুচির গায়ে ছিটকে পড়ছে আর সুচির লাফানোর জন্য আকাশের গায়ে কাদায় মাখামাখি হয়ে যাচ্ছে। আর বাদশা তো নিজেই নিজের গায়ে কাদা মাখছে ঘেউ ঘেউ করে। তার সোনালী লোম এখন কাদায় কালো। রহমত চাচা তার বড়ো কালো ছাতা মাথায় দিয়ে এগিয়ে এসে বললেন “ তোরা ভিজিস না , ঠান্ডা লেগে সর্দি করবে ! „

“ দাদু , তুমিও খেলো ।  „ কে শোনে কার কথা । সুচি রহমত চাচাকেও নিজেদের দলে টানতে চাইলো।

সুচেতা দেবী আর স্নেহা দেবী দুজনেই রান্নাঘর থেকে সুচি আকাশের বৃষ্টির মধ্যে লাফালাফি দেখতে পেলেন । আসলে বিল্ডিং টা এমন ভাবে দাঁড়িয়ে  আছে যে প্রত্যেকটা ফ্ল্যাটের রান্নাঘর থেকে খেলার মাঠ দেখা যায়।

দেখা মাত্রই সুচির মা রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে উঠলেন। একটা ছাতা নিয়ে প্রায় দৌড়েই সিঁড়ি ভেঙে নিচে নামলেন। নিচে নেমে তিনি দেখলেন তার মেয়ের জাম কাপড়ে কাদা ভর্তি। কিন্তু সুচির মুখে খুশী তিনি দেখলেন না। দেখলে হয়তো তার নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যেত। তিনিও তো বৃষ্টিতে কতো ভিজেছেন। তার ছোট মেয়ে যে তারই সব গুন পেয়েছে । সুচেতা দেবী বৃষ্টির মধ্যে সুচির কান ধরে তার গালে একটা চড় বসিয়ে দিলেন “ বদমাস মেয়ে , হতচ্ছাড়া , ছন্নছাড়া মেয়ে কোথা থেকে এসে জুটেছে আমার কপালে , হাড়মাস জ্বালিয়ে দিল ! সুমি তো এরকম ছিল না ! „

জ্যেঠিমার সুচিকে বকতে দেখে বৃষ্টির মধ্যেই আকাশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো  আর বাদশা লেজ গুটিয়ে কাচুমাচু মুখ করে চুপ করে বসে রইলো। সুচি রাগি মুখ করে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো। রাগের কারন অবশ্য বকা খাওয়া নয়। দিদির সাথে তুলনা করার জন্য। সবসময় তাকে শুনতে হয় --- দিদি কতো শান্ত । কতো ভালো।

সুচেতা দেবী আরো কিছু কথা শোনাতেন কিন্তু ততক্ষণে দিম্মা আর আকাশের মাও নিচে নেমে এসছেন  “ বৌমা , মেরো না ।  বাচ্চা মেয়ে ! „

“ এই বাচ্চা মেয়ে আমাকে শান্তিতে থাকতে দিলে হয় ! এখন কে এই কাদা মাখা জামা পরিষ্কার করবে ? „ বীণাপাণি দেবীর সামনে আর নিজের মেয়ে কে মারতে পারলেন না সুচেতা দেবী। রাগে কিছুক্ষণ বকলেন। তারপর টানতে টানতে নিয়ে গেলেন স্নান ঘরে।

স্নেহা দেবী আকাশকে মারতে বকতে পারলেন না। সেখানেও সুচির দিম্মা বাঁধা দিল। শুধু “ মা তোমার জন্য আমার ছেলেটা বাঁদর তৈরি হচ্ছে „ বলা ছাড়া আকাশের মা কিছুই বলতে পারলেন না। আরা আকাশের দিদিমা মেয়ের কথা শুনে বললেন “ এমন ভাবে বলছিস যেন তুই ছোটবেলায় খুব শান্ত ছিলি ! „

মায়ের এই কথায় স্নেহা দেবী আর কিছু বলতে পারলেন না । তারপর বীণাপাণি দেবী আকাশ আর বাদশাকে নিয়ে স্নানঘরে নিয়ে গিয়ে ভালো করে স্নান করিয়ে দিলেন।

মায়ের হাজার বকুনি সত্ত্বেও সুচির খেলাধুলা বন্ধ হয় না। সে কারোর কথা শুনে চলার মেয়ে তো নয়। সে তো my life my rules এর নিয়মে চলার মেয়ে। তো এইভাবেই দিম্মার আদরে সুচিত্রা আর আকাশ দিন দিন লেজহীন বাঁদর হয়ে উঠতে লাগলো ।

এদের খেলাধুলার মধ্যে দিয়েই সুচির কলেজে ভর্তি হওয়ার দিন চলে এলো । নতুন বই , খাতা , পেন সব কেনা হলো  আর নতুন কলেজ ড্রেস একটাই কেনা হলো কারন সুমির আগের একটা ভালো কলেজ ড্রেস এখনও আছে ।

কিন্তু সুচি মোটেও খুশি নয় আর এই অখুশির কারনটাও সবার অজানা নয়। সুচি ভেবেছিল দিদির সাথে একসাথে কলেজে যাবে , কতো মজা হবে । কিন্তু সেই বছরেই সুমি বড়োদের কলেজে ভর্তি হয়ে গেল। সে এখন পড়ে ক্লাস ফাইভে । ক্লাস ফোরে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে সে। তাই কলেজ থেকে একটা মেডেল পেয়েছে সে। সাথে বাবা মার কাছ থেকে একটা +0.01 পাওয়ার এর চশামাও।

কলেজে যাওয়ার প্রথম দিনে নতুন জামা পড়ে সুচি তৈরি। গলায় একটা লাল টাই ,সাদা জামা আর লাল স্কার্ট সাথে আছে সাদা মোজা আর কালো সু। মাথায় লাল ফিতে দিয়ে একটা বিনুনি বানানো । যখন সুচি তার বাবার হাত ধরে ঘরের বাইরে এলো তখন দিম্মা সুচির কপালে একটা চুমু খেয়ে বাঁ কপালে একটা কাজলের টিপ পড়িয়ে দিলেন “ বড়ো হও । খুব পড়াশোনা করো । মানুষের মত মানুষ হও।  „

সুচিকে কলেজে যেতে দেখে আকাশেরও কলেজে যাওয়ার ইচ্ছা জাগলো। সেটা বীণাপাণি দেবী বুঝতে পেরে বললেন “ কি রে দাদুভাই ! তুই কলেজে যাবি ? „

আকাশ উপর নীচ মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিল। সেটা দেখে দাদুভাইকে কোলে তুলে নিয়ে দিদিমা বললেন “ আরো একটু বড়ো হও । তখন দুজনে একসাথে কলেজে যাবে। „

এখানে আসার কিছুদিনের মধ্যেই বীণাপাণি দেবী লক্ষ্য করেছিলেন যে সুমি আর সুচি দুই বোনেরই কান , নাক ফোঁড়ানো নেই। কিন্তু তখন কিছু বলে উঠতে পারেন নি। সম্পর্ক নতুন ।  হয়তো খারাপ ভেবে বসবে । তাই আর বীণাপাণি দেবী সাহস দেখাতে পারেন নি। কিন্তু এখন পরিস্থিতি আলাদা। সুচির মা বীণাপাণি দেবীকে মাসিমা বলে ডাকে এবং খুব স্নেহ করেন। এই স্নেহ আর ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপন হওয়ার পরেই একদিন বীণাপাণি দেবী সুচিদের ঘরে গিয়ে সুচির মায়ের সাথে কথা বলতে বলতে কথাটা পাড়লেন “ বৌমা তোমার মেয়েদের তো কান নাক কিছুই ফোঁড়ানো নেই !  „

“ আসলে মাসিমা , আমার যখন ফোঁড়ানো হয়েছিল তখন খুব ব্যাথা করেছিল তাই আর মেয়েদের জোড় করিনি । „ সুচির মা নিজের কানে যে জায়গাটায় দুল আছে সেখানে আঙুল বুলিয়ে বললেন। মুখের অভিব্যক্তি এমন যে তিনি সেই ছোটবেলার ব্যাথা এখনও অনুভব করতে পারছেন।

“ কিন্তু করাতে তো হবেই মা। বয়স বাড়লে যে আরো কষ্ট পাবে। একসাথে দুজনেরই করিয়ে দাও । „

“ কিন্তু এখানে কে করায় ? সেটাই তো জানি না ! „

“ আমি আছি তো। আমি বারাসাতে কতো করিয়েছি। „ বীণাপাণি দেবী অভয় দিলেন।

“ তাহলে তুমিই করিয়ে দাও । „ সুচেতা দেবী জানতেন একদিন না একদিন করাতেই হবে। তাই মাসিমার অভয়বাণী শুনে একটু আশ্বস্ত হলেন।

সেই কথা মতো একদিন সুমি বিকালে কলেজ থেকে ফিরলে সুচেতা দেবী দুই মেয়েকে নিয়ে হাজির । বীণাপাণি দেবী সুমি কে নিয়ে লাল গদিমোড়া সোফায় বসে তার কানে কানে বললেন “ তুই বড়ো । তোর প্রথমে করছি। চুপচাপ থাকবি । „

“ কি করাবে দিম্মা ? „ সুমির কন্ঠে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট ।

“ তোর কান আর নাক ফুঁটো করবো । „

“ লাগবে তো। „ সুমি বেশ ভয়েস সাথেই বললো কথাটা। তার কারন , ক্লাসে যখন তার বন্ধুরা নাক কান ফুঁটো করে আসতো তখন সুমি তাদের জিজ্ঞাসা করায় তারা বলেছিল--- খুব ব্যাথা হয় !

“ একদম লাগবে না। চুপচাপ বসে থাকবি। আর তুই কাঁদলে কিন্তু তোর বোনও কাঁদবে। তখন তোকে সবাই ভিতু বলবে । „ বীণাপাণি দেবী জানেন বাচ্চাদের মন কিভাবে বুঝতে হয় আর শক্ত করতে হয়।

ভিতু হতে একদম রাজি নয় সুমি। সুমির বয়স এগারো। বুদ্ধিমান মেয়ে । সে বুঝলো যে --- আমি যদি কান্নাকাটি করি তাহলে  সুচিও কাঁদবে । তাই সুচির দিম্মা যখন একটা মোটা সূচ দিয়ে দুটো কান আর নাকে ফুঁটো করে সুতো পড়িয়ে দিচ্ছিলেন তখন প্রচন্ড ব্যাথা যন্ত্রনায় মুখটা কুঁকড়ে গেলেও এক ফোঁটা চোখের জল বার করলো না সুমি।

আর সুচি সামনে দাঁড়িয়ে সব দেখলো। এবং বুঝলো যে এবার তার পালা । সেইভাবে সেও প্রস্তুতি নিল। সে মনে মনে বলছে --- দিদি কাঁদে নি। আমি যদি কাঁদি তাহলে আমায় সবাই কাঁদুনে বলবে। কিন্তু বুকটা তার ধুকপুক করছে অনেকক্ষণ থেকেই। ওই মোটা সুচ ফুটলে লাগবেই লাগবে। এটাই বারবার মনে হচ্ছে তার।

সুমিকে করে দেওয়ার পর বীণাপাণি দেবী বললেন “ কানে , নাকে হাত দিবি না। এইভাবেই থাক। „ তারপর সুচির দিকে ফিরে বললেন “ তুই আয় এবার। „

সুচি একটা ঢোক গিলে দিম্মার পাশে গিয়ে বসলো  দিম্মা তার কানের লতিতে সূচ দিয়ে ফুটো করা শুরু করলেন তখন কান্না না করলেও মুখটা ব্যাথায় কুঁচকে গেল। ডান কান ফুটো করার পর যখন সুচি চোখ খুললো তখন দেখলো সামনে তিন বছরের আকাশ সব দাঁত বার করে শয়তানি হাঁসি হাঁসছে । এটা দেখে সুচি রেগে গিয়ে ওকে মারতে যাচ্ছিল কিন্তু বীণাপাণি দেবী তাকে ধরে আবার বসিয়ে দিলেন “ একদম নড়বি না ।  নড়লে কিন্তু লাগবে। „

“ দিম্মা ও হাঁসছে । „ আকাশের দিকে আঙুল দিয়ে বললো সুচি।

“ দাদুভাই হাঁসতে নেই , তুমি যাও এখান থেকে। „ নিজের দাদুভাইকে আকাশ করলেন দিদিমা।

আকাশ দিদিমার কথা শুনে চলে যেতে যেতে মনে মনে বলছিল --- বেশ হয়েছে। সব সময় দাদাগিলি। উত্তেজনার বশে নিজের মনে মনে কথা বলার সময়েও আকাশ তোতলালো।

আসলে হয়েছে কি , সোসাইটির সব গৃহিণী দিনের কাজ শেষ করে বিকালের দিকে নিজের বাচ্চাকাচ্ছা নিয়ে গল্পো করতে বসেন। পার্কের ভিতর বাচ্চারা খেলা করে আর সেখানের সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো বড়ো বড়ো বেঞ্চে মায়েরা বসে গল্পো করেন। রাস্তার ফুটপাতে যখন আলো জ্বলতে শুরু করে তার কিছুক্ষণ পর এই গল্পের আসর ভেঙে যে যার বাড়ি চলে যায়। সবার আলাদা আলাদা গ্রুপ আছে। যার সাথে যার বেশি ভাব তার সাথেই গল্পো গুজব হয়। এরকমই একটা গ্রুপ হলো সুচি আর আকাশের মায়ের গ্রুপ। এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা পাঁচ । সুচির মা, আকাশের মা, আকাশের দিদিমা, বিপ্লবের মা দেবযানী ঘোষাল আর জয়শ্রীর মা শুভশ্রী কুন্ডু। জয়শ্রী হলো সুচির সমবয়সী আর বিপ্লব হলো আকাশের সমবয়সী।

তো কান ফোঁড়ানোর দুইদিন আগে বিকালে সব মায়েরা মিলে গল্প করছে আর বাচ্চারা খেলছে। তখন বিপ্লব আকাশকে ডেকে এনে বললো “ দোকানে যাবি ? „

আকাশ বিপ্লবের থেকে আড়াই মাসের ছোট। সে হ্যাঁ বলে দিল। তারপর তারা দুজন মিলে চুপিচুপি পার্ক থেকে বেরিয়ে সোসাইটির বড়ো গেটের দিকে যেতে  লাগলো। কিছুদূর যাওয়ার পর আকাশ নিজের জামার কলারে একটা টান অনুভব করলো। ভয় পেয়ে পিছন ফিরে দেখলো সুচি তার জামার কলার ধরে টেনে ভুরু কুঁচকে তারই দিকে তাকিয়ে আছে ।

“ কোথায় যাচ্ছিস ? „ আকাশ পিছন ঘুরতেই সুচি প্রশ্ন করলো।

“ দোকানে । লজেন্স কিনতে। „ বলে দিল আকাশ।

“ যেতে হবে না। এক্সিডেন্ট হতে পারে । আর বড়দের কাউকে কিছু না বলে কখনো কোথাও যাবি না। বুঝলি ? „ বলে আকাশকে একটা ধমক দিয়ে তার হাত ধরে টেনে আনতে আনলো সুচি। ভাবটা এমন যেন ও কতো বড়ো।

এই ভাবটাই আকাশের পছন্দ হয়নি। সেদিন বিপ্লবের সামনে তিন বছরের আকাশের মান-সম্মান বলে আর কিছু থাকলো না । কিন্তু সুচিকেও কিছু বলতে পারলো না কারন মা জানলে বকবে ।

কান নাক ফোড়ানো হওয়ার সময় সুচি আকাশের হাঁসি ভুলে গেল। প্রচন্ড জ্বালায় তার ফর্সা মুখ লাল হয়ে রইলো। মুখে তার জ্বালার ছাপ স্পষ্ট। সেটা দেখে দিম্মা তার কপালে একটা চুমু খেয়ে বললেন “ কতো বড়ো হয়ে গেছিস তুই। ব্যাথা লাগেনি তো ? „

হ্যাঁ সুচি বড়ো হয়ে গেছে। তাই সে মাথা দুই দিকে ঘুরিয়ে না বলে দিল।


এর কিছুদিন পর একদিন সকালে সুচেতা দেবী দেখলেন যে রান্নার নুন নেই। তাই তিনি কিছু টাকা নিয়ে সুমিকে কলেজে দিয়ে আসতে গেলেন। ফেরার সময় একটা নুনের প্যাকেট কিনবেন। সুমিকে কলেজে দিয়ে যখন সুচি কে নিয়ে ফিরছিলেন তখন সুচি রাস্তায় একটা ভ্যানের মতো গাড়িতে আচার বিক্রি হতে দেখলো। সেটা দেখেই সুচি বায়না ধরলো “ মা , আচার খাবো । „

আচার সুচেতা দেবীরও খুব প্রিয় । তাই তিনি তার মেয়েকে ভ্যানরিক্সার সামনে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন “ কি নিবি ? „

বড়ো বড়ো ডিসের মতো পাত্রে বিভিন্নধরনের আচার রাখা ছিল। কুলের আচার, চালতার আচার, আমের আচার , কাঠালের আচার, কামরাঙার আচার, তেঁতুলের আচার , আমলকীর আচার। আর সেগুলো বিক্রি করছিল এক মধ্যবয়সী রোগা পাতলা লোক । এতকিছু দেখে শুধু সুচির না ! সাথে সুচির মায়েরও জিভে জল চলে এলো

সুচি চালতার আচার দেখিয়ে বললো “ কাকু , এটা দাও। „ চালতার আচার সুচেতা দেবীরও খুব প্রিয় । তাই তিনি দুজনের জন্যেই কিনলেন। আচার কাকু দুটো ছোট প্লাস্টিক এর ঠোঙাতে বড়ো হাতার একটা হাতা করে দিয়ে দিলেন। তারপর সেটা তারা ব্যাগে ভর্তি করে নিলেন। এদিকে সুচির মা ভুলে গেলেন নুন কেনার কথা।

আকাশের মা রান্নার জন্য কিছু মশলা কিনতে নিচে গিয়েছিলেন আর দিদিমা সোফায় বসে একটা খবরের কাগজ পড়ছিলেন। তিনি মাঝে মাঝেই পড়েন খবরের কাগজ। আর আকাশ বাদশার সাথে একটা প্লাস্টিক এর গাড়ি নিয়ে খেলছিল। ঠিক তখনই আকাশ সিড়িতে সুচির কলেজের জুতোর আওয়াজ শুনতে পেল । দরজা খোলাই ছিল। তাই আকাশ মাথা তুলে দরজার দিকে তাকিয়ে রইলো। কিছুক্ষণ পর সুচি এসে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে তার কলেজ ব্যাগ থেকে তার ভাগের আচার বার করে আকাশের দিকে দিয়ে বললো “ তুই খা আমি আসছি। „

সুচেতা দেবী তখন ঘরের তালা খুলতে ব্যাস্ত। তাই তিনি মেয়ের দিকে বিশেষ খেয়াল দিতে পারলেন না।

আকাশ প্লাস্টিক এর ঠোঙাটা নিল। আর সুচি চলে গেল কলেজ ড্রেস বদলাতে। সুচি যখন তার সবথেকে পছন্দের লাল ফ্রগটা পড়ে ফিরলো তখন দেখলো আকাশ সব আচার খেয়ে নিয়েছে । সেটা দেখে রাগে দুঃখে সুচির চোখে জল চলে এলো। হঠাৎ তার সেদিনের কান ফোঁড়ানোর সময়ে আকাশের হাসি মনে পড়ে গেল। সেটা মনে পড়তেই চোখের জল নিমেষে উধাও হয়ে গেল আর রাগে চোখ বড়ো বড়ো করে ভুরু কপালে তুলে ফেললো আকাশের চুলের মুঠি ধরে ঘোরাতে ঘোরাতে বললো “ তোকে সব খেতে কে বলেছিল ? „

আকাশ ও ছাড়ার পাত্র নয়। সে সুচির দাদাগিলি আর সহ্য করবে না। অনেক হয়েছে এর দাদাগিলি। সেও সুচির চুল আর জামা ধরে টানতে লাগলো “ তুই তো দিলি আমায় ! „

বীণাপাণি দেবী সোফা থেকে উঠে এগিয়ে এসে দুজনকেই থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে করতে বললেন “ থাম তোরা , আমি বানিয়ে দেবো তোদের  আচার। তখন যতো পারিস খাস । „ কিন্তু থামাতে পারলেন না। তিনি বৃদ্ধা মানুষ। একা দুইজনকে সামলানোর ক্ষমতা তাঁর আর নেই।

এটা শুনে সুচি বললো “ না দিম্মা , আমার এখনই চাই। „ তখনও কিন্তু তারা একে অপরের গায়ে উঠে চুল , জামা টানছে আর পা দিয়ে একে অপরের পেটে লাথি মেরে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু সুচি আকারে বয়সে বড়ো তাই আকাশ বিশেষ সুবিধা করতে পারছে না।

ঠিক সেই সময় সুচির মায়ের রান্নাঘরে মনে পড়লো তিনি নুন কিনে আনেন নি। মনে মনে ভাবলেন --- এখন কে যাবে নুন আনতে। তার চেয়ে স্নেহার কাছ থেকে নিয়ে আসি। তাই তিনি একটা বাটি নিয়ে আকাশদের ফ্ল্যাটে এলেন। এসে দেখলেন তার ছোট মেয়ে আর আকাশ মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। দুজনেই দুজনের চুল আর জামা ধরে টানছে। আর মাসিমা তাদের ছাড়াতে ব্যাস্ত। মেয়েকে মারপিট করতে দেখে তিনি রেখে গেলেন। দৌড়ে এসে মেয়েকে ছাড়িয়ে দাঁড় করিয়ে দিলেন । তারপর ধমক দিলেন “ মারপিট করছিস কেন ? „

হয়তো মেয়েকে তিনি মারতেন । কিন্তু মাসিমার সামনে মারা যায় না। তাই তিনি শুধু ধমকেই কাজ সারলেন।

“ ও আমার সব আচার খেয়ে নিয়েছে। „ রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বললো সুচি। ফর্সা গাল তখন লাল টকটকে রং ধারন করেছে ধস্তাধস্তির জন্য। শুধু সুচি না সাথে আকাশের নাক ফুলে গেছে রাগে। গাল লাল হয়ে গেছে। বড়ো বড়ো নিশ্বাস ছাড়ছে “ তুই তো দিলি আমায় এটা খা বলে ! „

“ তোর ব্যাগে তো আমার আচার আছে। ওটা নিয়ে নে যা । আর কখনো মারপিট করবি না বলে দিলাম। „ শেষের কথাটা তিনি ধমকই দিলেন বলা যায়।

সুচির মনে পড়লো হ্যাঁ সত্যি তো মা দু প্যাকেট আচার কিনেছিল। সেটা মনে পড়তেই সুচি সেটা খাওয়ার জন্য চলে গেলো। যাওয়ার আগে অবশ্য আকাশের দিকে ভষ্ম করে দেওয়ার একটা দৃষ্টি হানলো। সেই দৃষ্টি দেখে বীণাপাণি দেবী একটু হেঁসে  মনে মনে বললেন --- কি মেয়েরে বাবা !

তিনি তার জীবনে অনেক মেয়ে দেখেছেন। কিন্তু বিশেষ একজনের সামনেই কোন মেয়েকে এইধরনের আচরণ করতে কখনো দেখেননি। তাই তিনি বুঝলেনও না যে এই ঘটনা তো সবে শুরু। আসল কুরুক্ষেত্র এখনও বাকি।
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply




Users browsing this thread: 176 Guest(s)