Thread Rating:
  • 85 Vote(s) - 3.38 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Erotic Thriller চক্রব্যূহে শ্রীতমা (সমাপ্ত)
Congrats
[+] 1 user Likes raja05's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(14-07-2021, 01:21 PM)sudipto-ray Wrote: প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন, গল্পটির ২ লক্ষ ভিউ অতিক্রম করার জন্য। এই গল্পের শুরু থেকেই আপনার পাশে ছিলাম, শেষ পর্যন্ত থাকব। আর কোন কথা নয়, এবার শেষটা দেখার অপেক্ষায়। গল্পের সমাপ্তির ব্যাপারে বলব, আমি যেভাবে কল্পনা করেছি সেভাবে হয় কিনা সেটাই দেখব। দেখি আমার সাথে আপনার কতটা মিল।


নতুন কোন ধরনের গল্প লিখবেন, সে বিষয়ে কিছু ভেবেছেন কি?? তবে তাড়াহুড়োর কিছু নেই দাদা।কিছুদিন সময় নিন। আপডেটের জন্য লাইক ও রেপুটেশন দুটোই।

আপনাদের মতো বেশ কয়েকজনকে শুরু থেকেই পাশে পেয়েছিলাম বলেই তো আমার এই কাহিনীর যাত্রাপথ কিছুটা হলেও মসৃন হয়েছে। তাই মাত্র একটি গল্পের জন্য like, repu , views .. এর এই বিপুল পরিমাণে সাফল্যের কৃতিত্ব আমার নয়, পুরোটাই আপনাদের মতো পাঠক বন্ধুদের।

বেশকিছু গল্পের প্লট মাথায় আছে, তবে আগামী কয়েকদিন অতিরিক্ত ব্যস্ততার কারণে নতুন কাহিনী শুরু করা সম্ভবপর হবে না। কয়েকদিন বিরতিতে যেতেই হবে। 

সুস্থ থাকবেন .. ভালো থাকবেন  ❤❤

(14-07-2021, 01:21 PM)raja05 Wrote: Congrats

thank you  thanks

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 3 users Like Bumba_1's post
Like Reply
one of the best story, congratulations
[+] 1 user Likes janeman's post
Like Reply
(14-07-2021, 06:04 PM)janeman Wrote: one of the best story, congratulations

thank you  thanks

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


Like Reply
[Image: FB-IMG-1626266593776-1.jpg]

আগামীকাল রাতে .. অন্তিম পর্ব

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 8 users Like Bumba_1's post
Like Reply
Wow....... Can't wait for tomorrow!!
দুটো ডায়লগ মাথায় আসছে এই মুহূর্তে-

English - we are in the endgame now
Hindi- shuru unhone kiya tha.... Khatam main karunga!!
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(14-07-2021, 06:41 PM)Baban Wrote: Wow....... Can't wait for tomorrow!!
দুটো ডায়লগ মাথায় আসছে এই মুহূর্তে-

English - we are in the endgame now
Hindi- shuru unhone kiya tha.... Khatam main karunga!!

উপরোক্ত দুটি dialogue এর মধ্যে এই কাহিনীর ক্ষেত্রে একটি আংশিক ভাবে ঠিক। 

তবে কোনটা .. I'm not going to tell you now  Tongue

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 1 user Likes Bumba_1's post
Like Reply
কালকেই শেষ হবে তাহলে Sad Sad একটা সুন্দর সমাপ্তি আশা করছি banana

শ্রীতমার ফটোটা কিন্তু দুর্দান্ত Big Grin । পরের গল্পের অপেক্ষায় থাকবো। happy
[Image: 20220401-214720.png]
Like Reply
Guru r kichu bolbo na jast fatiye diyo kal
Like Reply
(14-07-2021, 06:36 PM)Bumba_1 Wrote:
[Image: FB-IMG-1626266593776-1.jpg]

আগামীকাল রাতে .. অন্তিম পর্ব

Vhappy
Like Reply
(14-07-2021, 06:54 PM)satyakam Wrote: কালকেই শেষ হবে তাহলে Sad Sad একটা সুন্দর সমাপ্তি আশা করছি banana

শ্রীতমার ফটোটা কিন্তু দুর্দান্ত Big Grin । পরের গল্পের অপেক্ষায় থাকবো। happy

সুস্থ এবং সামাজিক পরিসমাপ্তি ঘটাতে সক্ষম হবো .. আশা রাখি 

(14-07-2021, 06:58 PM)Susi321 Wrote: Guru r kichu bolbo na jast fatiye diyo kal

ফাটিয়ে দিতে পারবো কিনা জানি না .. তবে একটি সুন্দর পরিসমাপ্তি উপহার দেওয়ার চেষ্টা করবো

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 2 users Like Bumba_1's post
Like Reply
দাদা আপনার কাছে একটা অনুরোধ একটা পারিবারিক কাহিনী.....
Like Reply
(15-07-2021, 12:34 AM)Rinkp219 Wrote: দাদা আপনার কাছে একটা অনুরোধ একটা পারিবারিক কাহিনী.....

এই নিয়ে প্রায় ডজনখানেক বার এই একই অনুরোধ করলেন আমাকে .. আমার উত্তর প্রতিবারের মতোই এবারও সেই একই ..

ভালো থাকবেন .. 

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 2 users Like Bumba_1's post
Like Reply
[Image: FB-IMG-1626266262584-1.jpg]

পুলিশের ডাক্তার এসে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পেলেন না দীনেশ আগারওয়াল আর হিরেন ঘোষের মৃতদেহের। কোনো কিছু দেখে বা শুনে প্রচন্ড ভয় পেয়ে গিয়ে হার্ট অ্যাটাক  হতে পারে এইরকম একটা ধারনা করে মৃতদেহ দুটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হলো। 

"সে কখন, কি কাজে বেরিয়েছিল .. সেই সময় ওরা দু'জন ছাড়া বাড়িতে আর কেউ ছিল কিনা .. সে কখন ফিরে এলো .." চাকরানীটিকে এইরূপ কয়েকটা রুটিনমাফিক প্রশ্ন করে ওখানকার কাজ মিটিয়ে নিজের বাংলোতে ফিরে এলো দেবাংশু।

এই দুটি যে স্বাভাবিক মৃত্যু নয় এটা তার কাছে বেশ পরিস্কার, কিন্তু মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি। এই ঘটনা কে ঘটিয়ে থাকতে পারে সে ব্যাপারেও হয়তো তার মতো একজন অভিজ্ঞ পুলিশ অফিসারের একটা সম্যক ধারণা হয়েছে, কিন্তু সেই ব্যক্তিটির অ্যালিবাই ভাঙ্গা যথেষ্ট কঠিন এটা তার থেকে ভালো কেউ জানে না। এই সবকিছু সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে সারারাত ঘুম এলো না দেবাংশুর।

পরের দিন খুব সকালেই দেবাংশু চলে গেলো পুলিশ স্টেশনে এবং অপেক্ষা করতে লাগলো পোস্টমর্টেম রিপোর্টের জন্য। বেলা দশ'টা নাগাদ ডাক্তার চিন্ময় সোম রিপোর্ট নিয়ে এলেন।

"বলুন ডক্টর সোম .. I'm waiting for you .." দেবাংশু উৎসুক হয়ে জানতে চাইলো রিপোর্ট সম্পর্কে।

মুখে স্মোকিং-পাইপ নিয়ে তাতে অগ্নিসংযোগ করে ধীরগতিতে বলতে শুরু করলেন ডক্টর সোম "খুবই জটিল ব্যাপার, মন দিয়ে শুনুন মিস্টার সান্যাল .. মৃত্যুর আনুমানিক সময়কাল সন্ধ্যে সাত'টা থেকে সাড়ে সাতটা'র ভেতর। আপনাদের বক্তব্য অনুযায়ী সেই সময় ওই বাড়ির চাকরানীটি বাইরে গিয়েছিল। অর্থাৎ আততায়ী বাড়ির আশেপাশেই কোথাও লুকিয়ে বসেছিল। যাইহোক, এবার মৃত্যুর কারণের কথা বলি .. এই রকম কেস আমার ২৫ বছরের কর্মজীবনে আর একটাও দেখিনি মশাই। তার আগে বলুন আপনার সন্দেহভাজনের মধ্যে মিলিটারি-ম্যান কেউ আছে নাকি?"

"এখনই কিছু বলতে পারছি না ডাক্তারবাবু .. please continue.." ব্যাকুলভাবে বললো দেবাংশু।

আবার বলতে শুরু করলেন ডক্টর সোম "মৃতদেহ দুটির গায়ে বাইরে থেকে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা না গেলেও .. খুবই অদ্ভুত এবং আশ্চর্য উপায় হত্যা করা হয়েছে ওদেরকে .. দুটি ডেড বডির গলার তরুণাস্থি .. যাকে thyroid cartilage বলে .. সেগুলি একেবারে চূর্ণ হয়ে গিয়েছে। মিলিটারি অফিসারদের অস্ত্রহীন যুদ্ধের কিছু কৌশল শেখানো হয়। মনে করুন আপনি নিরস্ত্র অবস্থায় একজন সশস্ত্র শত্রুর হাতে ধরা পড়লেন। পালাবার পথ নেই .. পালাবার চেষ্টা করলে সে আপনাকে গুলি করে মারবে .. এই অবস্থায় আত্মরক্ষার একটাই উপায় .. আপনি কৌশলে শত্রুর এক পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন .. তারপর হঠাৎ করেই তার দিকে ঘুরে ডান হাতের তালু দিয়ে সজোরে মারলেন তার গলায় .. thyroid cartilage ভেঙে গেলো, তৎক্ষণাৎ মৃত্যু হলো তার।"

"সত্যিই তো ভারী অদ্ভুত ব্যাপার .. তাহলে এই ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে আপনার কোনো সন্দেহ নেই তো ডক্টর সোম?" চিন্তিত মুখে পুনরায় জানতে চাইলো দেবাংশু।

"কোনো সন্দেহ নেই .. আমি ১০০% নিশ্চিত এই ব্যাপারে .. আচ্ছা তাহলে এখন উঠি।" এই বলে বিদায় নিলেন ডক্টর চিন্ময় সোম।

মুখে একটা অদ্ভুত রকমের হাসি ফুটে উঠলো দেবাংশুর .. "তুমি ঠিকই বলেছিলে ভাই বুম্বা.. দ্বিতীয়ার্ধে একের অধিক গোল করে ম্যাচটা বোধহয় আমিই জিততে চলেছি .. তবে ট্রফি হাতে তুলবো কিনা এখনি বলতে পারি না .." অস্ফুটে কথাগুলি বলে নিজের চেম্বার থেকে বেরিয়ে অফিসার ইনচার্জ ঘোষাল বাবুকে নির্দেশ দিলো এই এলাকার একমাত্র নিষিদ্ধপল্লি থেকে পুলিশের লোক পাঠিয়ে বিশেষ একজনকে তুলে নিয়ে আসার জন্য এবং তার হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে পুলিশ ফোর্স পাঠাতে বললো বিকাশ চতুর্বেদীর বাড়িতে। তারপর নিজে পুলিশের গাড়িতে উঠে ড্রাইভারকে নির্দেশ দিলো জি.এম. সাহেব সুধীর যাদবের কোয়ার্টারে যাওয়ার জন্য।

[Image: FB-IMG-1626266404747.jpg]

মিস্টার যাদবের বিলাসবহুল কোয়ার্টারের সামনে গাড়ি থেকে নেমে দোতলায় উঠে গিয়ে কলিংবেল বাজালো দেবাংশু। বুড়ো চাকর দেবীপ্রসাদ দরজা খুলে জরাজীর্ণ কন্ঠে বললো "কেয়া আপ দেবাংশু সাহাব হো? আগার হো তো আপকে লিয়ে আন্দার মালিক ইন্তেজার কর রাহা হ্যায়।"

কথাটা শুনে প্রথমে কিছুটা অবাক হয়ে গেলেও তারপর ভেতরে ঢুকে বৈঠকখানার ঘরে গিয়ে দেখলো সোফার উপর বিরাজমান সাদা পোশাক পরিহিত মিস্টার যাদব মিটিমিটি হাসছেন।

"আসুন মিস্টার সান্যাল .. আমি জানতাম আপনি ঠিক জায়গাতেই আসবেন .. অপেক্ষা করছিলাম আপনার জন্য .. তৈরি হয়ে এসেছেন তো?" হাসিমুখেই জিজ্ঞাসা করলেন সুধীর যাদব।

"তৈরি হয়ে আসা বলতে আপনি কি বোঝাতে চাইছেন জানিনা, তবে আমি একাই এসেছি এবং সঙ্গে আমার সার্ভিস রিভলবারটিও আনিনি। আমার ব্যক্তিগত ধারণা এবং অবশ্যই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে শুধুমাত্র কয়েকটি কথা বলতে এসেছি .. ভুল হলে শুধরে দেবেন .. এবং শুনতে এসেছি আপনার মুখ থেকে কিছু অজানা কথা। Can I have a glass of water?" কথাগুলি বলে দেবীপ্রসাদের এনে দেওয়া গ্লাসের জল এক নিশ্বাসে শেষ করে আবার বলতে শুরু করলো দেবাংশু ..

"বেশি ভনিতা না করে শুরুতেই আসল কথায় আসি .. অগ্নিকাণ্ডের রাতে ফ্যাক্টরিতে গিয়ে তদন্ত করে যে দু'টি জিনিস আবিষ্কার করি সেগুলি হলো .. প্রথমতঃ ডিসপেন্সারির বাইরের দিকের কাঠের দরজার কপাট দুটি সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়ে ফ্রেম থেকে খুলে বেরিয়ে এলেও বাইরে থেকে কিন্তু ছিটকিনিটা আটকানো ছিলো, অর্থাৎ এই কাজটি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটিয়েছিল যাতে আগুন লাগার পর ঘর থেকে ওরা দু'জন বের হতে না পারে। দ্বিতীয়তঃ ডিসপেন্সারি সংলগ্ন মিটার রুমে অর্ধেকের বেশি পুড়ে যাওয়া একটা ছোট চামড়ার ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে আমার সন্দেহ হয় .. যার মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল কাজের কিছু জিনিসপত্র ছিলো। ফ্যাক্টরির সিকিউরিটি গার্ডকে জিজ্ঞেস করাতে বললো এটা নাকি আপনাদের ফ্যাক্টরির ইলেকট্রিশিয়ান মিহির নামের একটি ছেলের ব্যাগ হলেও হতে পারে। কথাটা শোনার পরে আমি সবার সামনে খুব একটা উৎসাহ না দেখালেও, আজ সকালে মিহিরকে থানায় তুলে নিয়ে এসে নিজেদের হেফাজতে রেখে ইন্টারোগেশন করার পর জানতে পারি একজনের নির্দেশে ইচ্ছাকৃতভাবে মিটার রুমে শর্ট-সার্কিট করানো হয় এবং অগ্নিসংযোগের পরে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি টেনে দেওয়া হয় .. বলাই বাহুল্য এই কাজগুলো সে নিজেই করেছিলো এবং অত্যধিক ভয়ের কারণে ভুলবশত তার ব্যাগটি ওখানে ফেলে এসেছিলো। কিন্তু একটা কথা আপনাকে জানিয়ে রাখি সেই ব্যক্তির নামটা unofficially জেনে গেলেও, আমি এখনো মিহিরের official statement রেকর্ড করিনি। এবার পরের পর্বে আসি .. আপনার চেম্বারে গিয়ে আপনার সঙ্গে আলাপচারিতায় জানতে পারি সেদিন স্যালারি দেওয়ার দিন ছিলো বলে আপনি অত রাত পর্যন্ত ফ্যাক্টরিতে ছিলেন। কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জেনেছি সন্ধ্যে সাতটার ভেতর ওয়ার্কারদের বেতন দেওয়া শেষ হয়ে গিয়েছিল। যাইহোক, এবার অন্য প্রসঙ্গে আসি .. সোমা নামের মহিলাটিকে ছেড়ে দিলেও ওর উপর পুলিশের নজর বরাবরই ছিলো। তাই মৌ অর্থাৎ শ্রীতমা যখন সোমাকে সঙ্গে করে নিয়ে আপনার বাড়িতে আসতো তখন পুরো ব্যাপারটাই আমাদের নজরে ছিল। তারপর তো রোজই শ্রীতমা একা একাই এসেছে আপনার কোয়ার্টারে। in fact গতকাল রাতেও এসেছে .. যাক সে কথা, আমি একজন পুলিশ অফিসার .. in fact লোকজন বলে কাজের ব্যাপারে আমি নাকি খুবই efficient .. তাই নিজের কার্যসিদ্ধির জন্য বিভিন্ন source থেকে খবর বের করতে আমি সিদ্ধহস্ত। ওই দুর্বৃত্তদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার সম্বন্ধেও বেশ কিছু কথা জেনেছি এই ক'দিনে। আপনি বিপত্নীক এবং নিঃসন্তান .. বাচ্চা যাদব আপনার মায়ের পেটের ভাই নয় .. ও আপনার সৎ ভাই ছিলো। আপনার বাঁদিকের চোখটা তো পাথরের .. am I right? আপনি একজন আর্মি-ম্যান ছিলেন। বর্ডারের একটি যুদ্ধে আপনার বাঁ চোখে গুলি লাগে। নিজের বাঁ চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে একপ্রকার বাধ্য হয়েই মাত্র ছত্রিশ বছর বয়সে ওখান থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে এই ফ্যাক্টরিতে production manager পোস্টে জয়েন করেন। আপনার বাবা তখন এই ফ্যাক্টরির একজন শেয়ারহোল্ডার ছিলেন। কিছুক্ষণ আগে ওদের মৃত্যুর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এসেছে। দুজনেরই গলার তরুণাস্থি অর্থাৎ থাইরয়েড কার্টিলেজ ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাওয়ার ফলে মৃত্যু ঘটেছে। আপনি বুদ্ধিমান ব্যক্তি এরপরের বক্তব্য আমার কি হতে চলেছে আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন। আমার সংগৃহীত তথ্যের মধ্যে যদি কিছু ভুল থাকে তাহলে শুধরে দেবেন।"

"আপনার তথ্য নির্ভুল .. শুধরে দেওয়ার কিছুই নেই .. শুধু একটি সংযোজন .. আমার বাবা উত্তর প্রদেশের লোক হলেও আমার মা বাঙালি ছিলেন .. তাহলে আর বেশি দেরি করে লাভ কি .. আপনি যেটা করতে এসেছেন করে ফেলুন .." কিছুটা হতাশ অথচ শান্ত গলায় কথাগুলি বললেন সুধীর যাদব।

"তখন থেকে আপনি একই কথা বলে যাচ্ছেন .. আমি তৈরী হয়ে এসেছি কিনা .. যা করতে এসেছি আমি যেনো করে ফেলি .. আরে বাবা আমি তো কথা বলতে এসেছি আপনার সঙ্গে .. আমার জানা যাবতীয় কথা বললাম .. এবার আপনার মুখ থেকে কিছু অজানা কথা শুনতে চাই .. প্রথমতঃ গতকাল রাতের এবং তার আগের দিনের ঘটনার সর্ম্পকে যদি একটু আলোকপাত করেন এবং দ্বিতীয়তঃ আপনার মোটিভ সম্পর্কে আমি এখনও কোনো নির্দিষ্ট ধারণা করতে পারিনি .." মৃদু হেসে উক্তি করলো দেবাংশু।

"আপনার প্রথম প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি আইনত বাধ্য .. তাই অবশ্যই দেবো‌ .. ফ্যাক্টরির অগ্নিসংযোগের ঘটনার সম্পর্কে আপনি যে কথাগুলো বললেন সেগুলো সর্বৈব সত্য .. আমার নির্দেশ মতোই সমস্ত ঘটনা ঘটানো হয়েছিলো .. তবে আমার একটাই অনুরোধ দয়া করে মিহিরকে আপনি ছেড়ে দিন .. ছেলেটা খুব ভালো, অর্থের লোভ দেখিয়ে ওকে দিয়ে যা করানোর আমি করিয়েছি .. আর গতকাল সকালে থানা থেকে ওদের ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়াটা যে আমাদের একটা প্ল্যান ছিলো সেটা নিশ্চয়ই আপনি বুঝতে পেরেছেন .. জেল থেকে বেরিয়ে ওরা নতুন কোনো ফন্দি-ফিকির করার আগে আমি চেয়েছিলাম as early as possible কাজটা মিটিয়ে ফেলতে .. তাই গতকাল সন্ধ্যা থেকেই আগারওয়ালের বাগানবাড়ির আশেপাশে লুকিয়ে ছিলাম আমি .. আমার একটা বিশেষ সুবিধা হয়ে গিয়েছিল কাল ওদের সিকিউরিটি গার্ডটি পাহারায় ছিলো না মেন গেটে .. তারপর সাতটার কিছু আগে যখন দেখলাম কাজের মেয়েটি বাড়ি থেকে কোনো কাজে বের হলো .. তখন ভাবলাম এই সুযোগটা কাজে লাগাতেই হবে আমাকে .. বাড়ির পেছনদিকে চলে গেলাম .. হঠাৎ চোখে পড়ল পেছনের যে বেডরুমে আলো জ্বলছে তার কাচের জানালার কপাটের নিচের দিকের কিছুটা অংশ ভাঙ্গা .. দেখে মনে হলো জায়গাটি ছুরি দিয়ে কেউ কেটেছে .. আমি সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ওখান দিয়ে হাত ঢুকিয়ে ছিটকিনি খুলে শিকবিহীন জানলার মধ্যে দিয়ে ঘরে প্রবেশ করি .. সেই সময় ঘরে কেউ ছিলো না, বাথরুম থেকে জলের আওয়াজ আসছিলো .. আমি সন্তর্পনে বাথরুমের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম .. মিনিট তিনেক পরে দরজা খুলে বের হলো স্কাউন্ড্রেল হিরেন ঘোষ .. দরজা খুলেই আমাকে হঠাৎ দেখে কি করবে ভেবে উঠতে না পেরে কয়েক মুহুর্ত স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো সে .. আমার জন্য ওই কয়েকটা সেকেন্ডই তো দরকার ছিলো .. স্পেশাল মিলিটারি ট্রেনিংয়ে কৌশলটা আগেই শেখা ছিলো .. ক্ষিপ্রগতিতে আমার ডান হাত দিয়ে সজোরে আঘাত করলাম স্কাউন্ড্রেলটার গলায় .. মুহূর্তের মধ্যে সব শেষ .. ওকে ওই অবস্থায় বিছানায় শুইয়ে দিয়ে খুব সাবধানে বিনা শব্দে বেডরুমের দরজা খুলে দেখলাম আরেকটা স্কাউন্ড্রেল আগারওয়াল সোফায় বসে টিভি দেখছে আর মদ্যপান করছে .. সন্তর্পনে পা টিপে টিপে ড্রইং রুমে পৌঁছে সোফার ঠিক পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম .. তারপর আগারওয়ালের কাঁধে দুটো টোকা দিতেই পিছন ঘুরে আমার দিকে তাকিয়ে চমকে উঠে ঠিক আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে ইঙ্গিতে জানতে চাইলো আমি এখানে কি করে! ব্যাস এইটুকু সময়েরই দরকার ছিল আমার .. দেখলাম এতদিন আগে পাওয়া শিক্ষা আজো ভুলিনি আমি .. দ্বিতীয় বারের জন্য অবলীলায় নিজের কার্যসিদ্ধি করে ওকে সোফায় ঠিক আগের মতো বসিয়ে দিয়ে পুনরায় বেডরুমে এসে মিস্টার ঘোষকে পাঁজাকোলা করে বৈঠকখানায় নিয়ে গিয়ে ঠিক ওর পাশের সোফাতে বসিয়ে দিলাম .. এইসব কাজ সম্পন্ন হয়েছিল মাত্র পনেরো থেকে কুড়ি মিনিটের মধ্যে .. তখনো কাজের মেয়েটি এসে পৌঁছয়নি .. এলে অবশ্য কি হতো বলতে পারি না .. তারপর সামনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে বাড়ির বাইরে এসে কিছু দুরে দাঁড় করানো আমার গাড়িতে উঠে নিজেই ড্রাইভিং করে কোয়ার্টারে ফিরে এলাম .. শুধু একটাই আফসোস থেকে গেলো, আরেকজন অপরাধীকে শাস্তি দিতে পারলাম না .." কথাগুলো বলার পর মিস্টার যাদব অনুভব করলেন উত্তেজনায় তার সারা শরীর কাঁপছে।

"বুঝলাম .. এই রকমই কিছু একটা ঘটতে পারে সেটা আন্দাজ করেছিলাম ‌.. আর পেছনের জানলার ভাঙ্গা কাঁচের কৃতিত্ব পুরোটাই আমার .. যাক সে কথা, কিন্তু আমার দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর .. আপনার মোটিভ টা কি? বাকি তিন জনের কথা ছেড়ে দিলাম, যে কারণের জন্য আপনি আপনার নিজের ভাইকে হত্যা করলেন তার পিছনের আসল রহস্যটা কি? ওরা চারজন বলা ভালো পাঁচজন যে প্রকৃতপক্ষে নরকের কীট সেটা তো আপনি অনেক বছর আগে থেকেই জানতেন .. কেননা এই রকম কাণ্ড ওরা এর আগেও ঘটিয়েছে .. তাহলে এবার হঠাৎ কেনো সেটা  যদি আমাকে খুলে বলেন .." পুনরায় প্রশ্ন করলো দেবাংশু।

"ক্ষমা করবেন মিস্টার সান্যাল .. আমার যেটুকু বলার আমি বলেছি .. এর বেশি আর কিছু জানতে চাইবেন না .. আমাকে অ্যারেস্ট করবেন তো .. নিয়ে চলুন.." চাপা অথচ গম্ভীর গলায় বললেন মিস্টার যাদব।

দেবাংশু হঠাৎ অনুভব করল তার পা জড়িয়ে ধরেছে বুড়ো চাকর দেবীপ্রসাদ .. "মালিক কো অ্যারেস্ট মত কিজিয়ে সাহাব জি .. ম্যায় আপকো বাতাউঙ্গা আসলি কারণ" এই বলে তার সামনে একটি সাদাকালো ছবি রাখলো দেবীপ্রসাদ।

"প্রসাদ .. তুম এ্যয়েসা নেহি কার সাকতে হো.."

"আপ কো বাচানে কে লিয়ে ম্যায় কুছ ভি কর সাকতা হুঁ .. মালিক.."

মনিব এবং তার পুরাতন ভৃত্যের কথোপকথন শুনতে শুনতে সাদাকালো ছবিটির দিকে চোখ পড়তেই শিরদাঁড়ার ভেতর দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেলো দেবাংশুর। বিস্ফোরিত নেত্রে ছবিটার দিকে তাকিয়ে দেখলো বিয়ের সাজে নববধূ এবং তার স্বামী। ভদ্রলোকের ছবি দেখলে সহজেই অনুমেয় মানুষটি মিস্টার সুধীর যাদব .. শুধু বর্তমানের তেল চকচকে টাক মাথার বদলে সেই সময় তার মাথায় বেশ ঘন কালো চুল ছিলো। কিন্তু নববধূটি!! সে তো শ্রীতমা .. হ্যাঁ অবিকল মৌয়ের মতো .. শুধু কিঞ্চিৎ পৃথুলা ..

অবাক হয়ে মিস্টার যাদবের দিকে তাকাতেই তিনি হাউ হাউ করে কেঁদে উচ্চস্বরে বলে উঠলেন "আমার জীবনের এই লজ্জার কথাগুলো আমি পৃথিবীর সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে চেয়েছিলাম .. কিন্তু আজ আর তা সম্ভব হলো না.. ছবির মেয়েটি প্রমীলা .. আমার স্ত্রী .. আমরা নিঃসন্তান হলেও খুব সুখের সংসার ছিল আমাদের .. মাকে তো ছোটবেলায় হারিয়েছি .. বন্ধু বলতে আমার কেউ ছিল না .. প্রমীলার মতো একজন সঙ্গিনী পেয়ে জীবনের বাঁচার মানেটা খুঁজে পেয়েছিলাম .. বাবা চলে যাওয়ার পর পদোন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কাজের দায়িত্ব আরো বাড়লো .. তখন হয়তো ঠিকমতো সময় দিতে পারতাম না আমার স্ত্রীকে .. সন্তানও দিতে পারিনি সেও আমারই দোষ .. তাই হয়তো কিছুটা একাকিত্বে ভুগতো আমার স্ত্রী .. সেই সময় প্রমীলার উপর নজর পড়লো আমার ভাই এবং তার ওই দুর্বৃত্ত বন্ধুদের .. বিশ্বাস করুন প্রথমদিকে আমি কিচ্ছু বুঝতে পারিনি .. তারপর যখন আস্তে আস্তে বুঝতে পারলাম .. তখন সবকিছু হাতের বাইরে চলে গিয়েছে .. ধীরে ধীরে পাল্টে যেতে লাগলো আমার স্ত্রী .. আমার চোখের আড়ালে আমার স্ত্রীকে নিয়ে ওরা বেলেল্লাপনা করতো .. সে কথা টের পেলেও উপযুক্ত প্রমাণ পাইনি কোনোদিন .. তবে খুব তাড়াতাড়ি প্রমীলা তার ভুল বুঝতে পেরেছিলো .. কিন্তু ততদিনে ওদের সঙ্গে ক্রমাগত যৌন মিলনের ফলে আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরেছে .. সে ঠিক করলো জীবিত মুখ আমাকে আর দেখাবে না .. আমার এখনো পরিষ্কার মনে আছে সেদিন রাতে লেট নাইট শিফ্ট করে বাড়ি ফিরেছি .. দরজা খুলে দিয়ে দেবীপ্রসাদ ডুকরে কেঁদে উঠে আমাদের শোবার ঘরের দিকে ইঙ্গিত করে জানালো সে কিছু সময়ের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল তার মধ্যে ঘটে গিয়েছে সেই মর্মান্তিক ঘটনা .. আমি ছুটে গিয়ে বেডরুমের দরজা খুলে দেখলাম সিলিং থেকে গলায় কাপড় বেঁধে ঝুলছে আমার স্ত্রী .. ও মাগো, আজও সেই দৃশ্য ভুলতে পারি না আমি .. আমি জানতাম এই ঘটনার পেছনে কারা আছে কিন্তু প্রকৃত প্রমাণের অভাবে কিচ্ছু করতে পারি নি এতদিন .. দাঁতে দাঁত চিপে ঘেন্নায় বাধ্য হয়ে কাজ করে গেছি ওদের সঙ্গে ..  যেদিন অরুণের স্ত্রী শ্রীতমাকে দেখলাম আপনার মতই আমার অভিব্যক্তি এবং মনের অবস্থা হয়েছিল মিস্টার সান্যাল .. দু'জন মানুষের মধ্যে যে এই রকম অদ্ভুত মিল থাকতে পারে তা আমার কল্পনার অতীত .. তারপর প্রথম যেদিন আমার কাছে এসে আমাকে ওর জীবনে ঘটে যাওয়া এই ক'দিনের ঘটনাগুলি খুলে বললো, যদিও আমি জানি না ও আমাকে কেনো কথাগুলি বলেছিল .. কথাগুলো শোনার পর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম একটা প্রমীলাকে হারিয়ে যেতে দিয়েছি আর একটা শ্রীতমাকে হারাতে দেবো না .. তারপরের ঘটনাগুলি আপনার সব জানা .. শুধু একটাই অনুরোধ আপনি শ্রীতমার কোনো ক্ষতি করবেন না .. এই ঘটনাগুলির পূর্বাভাস হয়তো ওর কাছে আগে থেকেই ছিলো .. কিন্তু বিশ্বাস করুন প্রত্যেকটি প্ল্যান এক্সিডেন্ট করেছি আমি নিজে ..এতে ওর কোনো হাত নেই .. আর একটা অনুরোধ প্রমীলার কথা কিন্তু শ্রীতমা জানেনা .. আমি চাই এই কথাগুলি যেনো ও জীবনেও জানতে না পারে .. বলুন, রাখবেন তো আমার কথা?"

দেবাংশুর বিস্ময়ের ঘোর তখনও কাটেনি। নিজেকে সামলে নিয়ে ধীরে অথচ দৃঢ় কণ্ঠে বললো "আমার কথাগুলো এবার মন দিয়ে শুনুন মিস্টার যাদব .. আমি অবশ্যই একজন সিআইডি অফিসার কিন্তু তার আগে আমি একজন মানুষ ..  পরশুদিনের কেসটা দুর্ঘটনা বলেই চালানো হবে .. কালকের দুটি মার্ডারের প্রাইম সাসপেক্ট হিসেবে বিকাশ চতুর্বেদীকে এতক্ষণে বাড়ি থেকে পুলিশ ফোর্স তুলে থানায় নিয়ে চলে এসেছে .. কালকের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে সাক্ষী দেবে রেডলাইট এরিয়ার বিন্দু .. বাকিটা আমার তৈরি করা রিপোর্ট .. অন্যকে সর্বদা মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো বিকাশবাবু বোধহয় এই যাত্রায় আর রেহাই পাচ্ছেন না এই সাজানো মামলা থেকে .. বাকি জীবনটা জেলের অন্ধকার কুঠুরিতে বসে কাটাতে হবে তাকে .. মৃত্যুর থেকেও যা ভয়ঙ্কর .. আপনার এই বৃদ্ধ ভৃত্যটি আপনাকে খুব ভালোবাসে .. ভাল থাকবেন আপনারা দু'জন .. যাই হোক আমি এখন উঠি .. ওদিকে আমার অনেক কাজ বাকি .."

এবার মিস্টার যাদবের অবাক হওয়ার পালা "মানে .. আপনি আমাকে মুক্তি দিয়ে দিলেন!!'' অস্ফুটে এইটুকুই বেরিয়ে এলো তার মুখ দিয়ে।

শ্রীতমার বাল্যখিল্যতা, বারবার সামনে আসা .. মানসিকভাবে ক্রমশ দুর্বল করে দিচ্ছিল সুধীর যাদবকে। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন অরুণবাবুকে কলকাতার হেড অফিসে পার্মানেন্টলি বদলি করে দেবেন .. তাহলে আর শ্রীতমার মুখ দেখতে হবে না তাকে। সর্বোপরি সুন্দরনগরের মতো একটি বিষাক্ত জায়গা থেকে মুক্তি পাবে তারা।

[Image: FB-IMG-1626266306154.jpg]

এদিকে শ্রীতমা মনে মনে এক প্রকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে হাজার চেষ্টা করেও অরুণের সঙ্গে ভবিষ্যতে মানসিকভাবে হয়তো এডজাস্ট করে উঠতে পারবে না
.. তাই দু'জনে একসঙ্গে না থাকাটাই উচিত বলে মনে হয়েছে তার .. এই ব্যাপারে তার মা দেবযানী দেবীর সঙ্গেও কথা হয়েছে .. নিজের সিদ্ধান্তের কথা অরুণকে জানিয়েছে সে।  

অরুণ রায় প্রকৃতপক্ষে একজন খুব সাধারন মানের ভীতু প্রকৃতির মানুষ, তার মধ্যে সর্বদা পুরুষ ইগো বিদ্যমান থাকলেও নিজের স্ত্রীকে তিনি অন্তর থেকে ভালবাসেন .. এ কথা একশো ভাগ সত্য। তাই শ্রীতমার সিদ্ধান্ত শোনার পর তার মন বেশ ভারাক্রান্ত।

মাঝে দুই দিন অতিবাহিত হয়েছে। যে কাজের জন্য সরকার থেকে দেবাংশু সান্যালকে পাঠানো হয়েছিল তা একপ্রকার সমাপ্ত। তাই সে আগামীকাল সকালেই কলকাতা ফিরে যাচ্ছে। আজ দুপুরে সস্ত্রীক অরুণবাবুর নিমন্ত্রণ দেবাংশুর বাংলোতে।

লাল পাড়ের কালো রঙের পিওরসিল্ক শাড়ি এবং তার সঙ্গে কালো স্লিভলেস ব্লাউজ পড়ে এসেছিল শ্রীতমা। হাওয়ার তালে তালে আঁচল সরে গেলেই গভীর স্তন বিভাজিকা, ততোধিক গভীর নগ্ন নাভি এবং কোমরের খাঁজ .. শুধু দেবাংশু কেনো, যেকোনো সুস্থ সবল পুরুষের হৃদয় উদ্বেলিত করতে সক্ষম হবে।

লাঞ্চের পর স্বামীর কোলে বুকানকে দিয়ে "আমার একটু কথা আছে" এই বলে দেবাংশুকে টানতে টানতে নিয়ে এসে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানানোর জন্য বেডরুমে ঢুকে দরজা আটকালো শ্রীতমা। তবে দরজা বন্ধ করার আগে অরণের করুন  দুটো চোখ দেখতে পেলো দেবাংশু।

শ্রীতমা কিছু বলার আগেই তাকে থামিয়ে দিয়ে দেবাংশু বললো "তুই সাংঘাতিক কোনো সিদ্ধান্ত জানানোর আগেই আমি কয়েকটা কথা বলি .. তোকে আমি আমার নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি .. আমাকে যদি ঈশ্বর এখনি এসে জিজ্ঞেস করে আমি কি চাই তাহলে আমি বলবো আমাকে এক্ষুনি মেরে ফেলে আমার বাকি জীবনের আয়ু যেনো তোকে দিয়ে দেয় .. কিন্তু একটা কথা মনে রাখিস আমাদের দু'জনের সামাজিক অবস্থান এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন .. আমরা দু'জন রেল লাইনের মতো পাশাপাশি চলতে পারি চিরজীবন কিন্তু মিলতে পারি না কোনোদিন .. আকাশ থেকে বৃষ্টির জল মাটিতে পড়লে সোঁদা গন্ধ বের হয় ঠিকই .. কিন্তু আকাশ আর মাটির মিলন হয় না কোনোদিন .. শুধুমাত্র একজন শ্রীতমার জন্য বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া আমার হবে না রে .. আমাদের এই সমাজে হাজার-হাজার শ্রীতমা প্রতিনিয়ত এরকম লোভ-লালসা আর কামের চক্রব্যূহের পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে .. তাদেরকে উদ্ধার করার জন্য না হয় এই দেবাংশু রইলো .."

"এতাই কি তোমার শেষ কথা? আমাকে প্রত্যাখ্যান করার মতো এতটা সাহস তুমি পেলে কোথা থেকে!!" কান্না ভেজা গলায় শুধু এটুকুই বেরোলো শ্রীতমার মুখ দিয়ে।

সেই মুহূর্তে পাশের ঘর থেকে একটি গান ভেসে এলো 

আমার প্রাণের পরে চলে গেল কে,
বসন্তের বাতাসটুকুর মতো ..

"বাহ্ ভারী সুন্দর গলা তো .. কে গাইছে তোমার সেই বন্ধু'তি? আমরা এতক্ষন এসেছি কই একবারও তো আমাদের সঙ্গে এসে দেখা করলো না!" জিজ্ঞাসা করলো শ্রীতমা।

"হ্যাঁ, আমার বন্ধু অরুণাভ .. খুব সুন্দর গায় ..কিন্তু ওর সামনে আমি কখনো স্বীকার করি না একথা .. একটু আগে জিজ্ঞেস করছিলিস না তোর মতো একজন সর্বাঙ্গ সুন্দরী, মোহময়ী নারীকে আমি প্রত্যাখ্যান করার সাহস কি করে পেলাম! আসলে এটা সাহস নয় এটা হল ত্যাগের ক্ষমতা .. আর ত্যাগের মধ্যেই প্রকৃত ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে .. আজ অরুণাভের স্ত্রীর মৃত্যুদিন .. ফুটফুটে, প্রাণোচ্ছল, অসম্ভব সুন্দরী  ছিলো ওর স্ত্রী ঠিক তোরই মতো .. কোনোদিন ফিরে আসবে না এটা জেনেও যখন কারোর জন্য সারা জীবন অপেক্ষা করা হয় সেটাই হলো প্রকৃত ভালোবাসা .. এটা আমি আমার বন্ধুর কাছ থেকেই শিখেছি .. সুখে থাকিস মৌ শান্তিতে থাকিস .. সংসারের চক্রব্যূহের মধ্যে থেকে আবার একটু একটু করে ভালবাসতে চেষ্টা করিস তোর স্বামীকে .. বুকানকে মানুষের মতো মানুষ করিস .. এই কেসের একজন অপরাধী হিসেবে এটাই তোর জন্য শাস্তি ঘোষণা করলাম আমি .." কথাগুলো বলতে গিয়ে গলা ধরে আসছিল দেবাংশুর।

দরজা খুলে ধীরপায়ে বেরিয়ে গেলো শ্রীতমা। স্বামীর কাছ থেকে বুকানকে কোলে নেওয়ার সময় আমাদের বুকানবাবু তার স্বভাব সিদ্ধ ভঙ্গিতে বলে উঠলো "আ-বা-বু-তু" .. অরুণ বাবুর কৃতজ্ঞতায় ভরা অশ্রুসিক্ত দৃষ্টি এড়ালোনা দেবাংশুর।

হতভাগ্য দেবাংশুকে বিদায় জানিয়ে সদর দরজা দিয়ে ওরা তিনজন বেরিয়ে গেলো। দেবাংশুর ঝাপসা চোখে ক্রমশ ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে থাকলো ওরা।

পাশের ঘর থেকে তখন অরুণাভর কন্ঠে ভেসে আসছে 

সে যেতে যেতে চেয়ে গেলো,
কী যেন গেয়ে গেলো ..
তাই আপন মনে বসে আছি কুসুম-বনেতে ।

[Image: 20200725-163454.png]

|| পাঠক বন্ধুদের উদ্দেশ্যে ||  

এতদিন তোমরা আমার গল্পের পাশে থেকেছো
হয়তো কেউ কেউ আমাকে ভালোবেসেছো
আবার হয়তো কেউ কেউ ঘৃণা করেছো
শুধু একটাই অনুরোধ ভুলে যেওনা কখনো

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


Like Reply
মন জয় করা একটা অসাধারণ থ্রিলার.... এটা লেখার পরও মনে হয় কেউ ভুলবে তোমায়? যেভাবে ইতি টানলে..... আমিও অনেকটা এরকম ভাবছিলাম. আর আসল faceoff টা দুর্দান্ত ছিল. আর reason টাও. এই লোভে পাপ.... আর পাপে মৃত্যু... না মোটেও নিজের self advertising করছিনা.... এই গল্পের একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভাগ এটি... শুধু এই গল্পের কেন? এই জীবনের একটা শিক্ষা এটি. তাও মজার ব্যাপার হলো সব জেনেও আমরা ভুলে যাই এসব কারণ কিছু ভুলের পরিবর্তে আসে অবৈধ পৈশাচিক আনন্দ. এই গল্পের নারী চরিত্র গুলিও কি সম্পূর্ণ পবিত্র? তাই কি? তারাও কি অবৈধ খেলায় ওই মুহূর্তে সুখ, মজা পায়নি? হ্যা পেয়েছে... কারণ আমরা সাধারণ মানুষ.... কাম লোভ এসব যে আমাদের উর্ধে... এদের এড়ানো কি অতই সহজ?

আবারো বলছি...অসাধারণ একটা থ্রিলার এই সাইটের ❤❤❤

Like repu added ❤❤
[Image: 20240716-212831.jpg]
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
Thanks many many Thanks
[+] 1 user Likes joyjkt's post
Like Reply
Like and reps added
খেলা হবে। খেলা হবে।
[+] 1 user Likes Sdas5(sdas)'s post
Like Reply
(15-07-2021, 10:27 PM)Baban Wrote: মন জয় করা একটা অসাধারণ থ্রিলার.... এটা লেখার পরও মনে হয় কেউ ভুলবে তোমায়? যেভাবে ইতি টানলে..... আমিও অনেকটা এরকম ভাবছিলাম. আর আসল faceoff টা দুর্দান্ত ছিল. আর reason টাও. এই লোভে পাপ.... আর পাপে মৃত্যু... না মোটেও নিজের self advertising করছিনা.... এই গল্পের একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভাগ এটি... শুধু এই গল্পের কেন? এই জীবনের একটা শিক্ষা এটি. তাও মজার ব্যাপার হলো সব জেনেও আমরা ভুলে যাই এসব কারণ কিছু ভুলের পরিবর্তে আসে অবৈধ পৈশাচিক আনন্দ. এই গল্পের নারী চরিত্র গুলিও কি সম্পূর্ণ পবিত্র? তাই কি? তারাও কি অবৈধ খেলায় ওই মুহূর্তে সুখ, মজা পায়নি? হ্যা পেয়েছে... কারণ আমরা সাধারণ মানুষ.... কাম লোভ এসব যে আমাদের উর্ধে... এদের এড়ানো কি অতই সহজ?

আবারো বলছি...অসাধারণ একটা থ্রিলার এই সাইটের ❤❤❤

Like repu added ❤❤

মানুষ বলেই তো লোভ-কাম-লালসা সবকিছু আছে .. মানুষ বলেই তো ত্যাগ স্বীকারের ক্ষমতা আছে .. আবার মানুষ বলেই তো কষ্ট আছে .. ভালো থেকো ❤ 

(15-07-2021, 10:39 PM)joyjkt Wrote: Thanks many many Thanks

 You are most welcome  welcome

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


Like Reply
(15-07-2021, 10:43 PM)Sdas5(sdas) Wrote: Like and reps added

Thank you very much  thanks

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


Like Reply
ওই যে বলে না অন্যের জীবনের ক্রীয়াকলাপের প্রভাব তোমার জীবনে পড়বে। সেটা ভালোও হতে পারে খারাপও হতে পারে।

মোটিভ টা দুর্দান্ত ছিল সুধীর যাদবের। clps

আমি জানি না শেষে কার সাথে মিলন হলে খুশি হতাম। হয়তো দুজনের যেকোন একজন হলেই খুশি হতাম তাই হয়েছিও। Smile

অরুনাভ মিশ্রর স্ত্রীর মৃত্যু দিন। Sad Sad Sad

প্রেম ভালোবাসা ত্যাগ প্রাপ্তি সবকিছুই কি একই সাথে হাওয়া দরকার? যেকোনো একটা হলেই মানুষ বেশি খুশি হতো মনে  হয়। এই গল্পের শেষ রেপু দিয়ে দিলাম। জ্বলজ্বল করবে সেই রেপু যতদিন এই ফোরাম থাকবে ❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤❤
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 1 user Likes Bichitro's post
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)