09-07-2021, 02:44 PM
(This post was last modified: 09-07-2021, 02:45 PM by Bichitro. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
Indian Private Cams | Porn Videos: Recently Featured XXXX | Most Popular Videos | Latest Videos | Indian porn sites Sex Stories: english sex stories | tamil sex stories | malayalam sex stories | telugu sex stories | hindi sex stories | punjabi sex stories | bengali sex stories
Romance মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) সমাপ্ত :---
|
09-07-2021, 02:47 PM
09-07-2021, 02:51 PM
09-07-2021, 03:10 PM
09-07-2021, 03:23 PM
10-07-2021, 08:00 AM
(This post was last modified: 09-08-2021, 10:00 AM by Bichitro. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
দ্বিতীয় পর্ব --- আসা যাওয়ার মাঝে Update 1 আকাশ জন্মানোর আগে পর্যন্ত সুচির একটাই বন্ধু ছিল। সেই বন্ধু হলো তার দিদি সুমি। সুমি যখন সকালে কলেজে যেত তখন সুচি তার পুতুলের সাথে খেলতো। এখন সে আর একটা পুতুল পেয়েছে খেলার জন্য । পুতুলটা জিবন্ত । আর সেই পুতুলের নাম আকাশ। সুমি কলেজে গেলেই সুচি তার পুতুল গুলো নিয়ে আকাশের কাছে চলে আসে খেলতে। আর এই পুরো সকালটা সুচি খাটে বসে আকাশের সাথে পুতুল খেলে। খেলাটা অবশ্য শুধু সুচি নিজেই খেলে আর আকাশ হাত পা ছুঁড়ে ফোকলা দাঁতে হাঁসতে হাঁসতে সুচির খেলা দেখে। বলা বাহুল্য আকাশ সুচির সঙ্গ খুব উপভোগ করে। এই সুযোগে আকাশকে সুচির কাছে রেখে দিয়ে স্নেহা দেবী বাড়ির কাজ করেন। শুভাশীষ বাবু স্নান করে খেয়ে দেয়ে আটটা নটার দিকে অফিসে চলে যান। অফিসের তিনি একাই মালিক। তাই কোন তাড়াহুড়ো করেন না। কিন্তু দেবাশীষ বাবু তার ছেলেকে শিখিয়েছিলেন --- প্রথমে কর্ম তারপর সংসার। ফলস্বরূপ আকাশ নিজের মায়ের পর যার মুখ সবথেকে বেশি দেখতে লাগলো সে হলো আমাদের তিন বছরের সুচিত্রার । প্রতিদিন সকালে সুচি তার চার পাঁচটা পুতুল নিয়ে আকাশের কাছে চলে আসে । এই সুযোগে তার মা একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। সুচির পুতুলের মধ্যে তিনটে বিভিন্ন ধরনের মেয়ে পুতুল আছে যাদের সে রাজকুমারী বলে । আর আছে তিনটে ছেলে পুতুল মানে রাজকুমারের পুতুল। তাদের সে স্নান করায়, নতুন নতুন ড্রেস পড়ায়, খাওয়ায়, ঘুম পাড়ায় এবং কয়েকবার বিয়ে দিয়ে দেয়। সুচির মা পুতুল গুলোর জন্য ছোট ছোট কাপড় রেখে দেন। আকাশ জন্মানোর দুই তিন দিনের মাথায় স্নেহা দেবীর মা বাবা এলেন । স্নেহা দেবীর বাবার নাম সুধাংশু আর মায়ের নাম বীণাপাণি দেবী। দুজনেই ষাটোর্ধ্ব গুরুজন। দুজনেরই মাথায় কাঁচা পাকা চুল । স্নেহা দেবীরা তিন ভাই বোন। বড়ো এক দাদা ছিল । স্নেহা দেবীর যখন পাঁচ ছয় বছর বয়স তখন তার দাদা মারা গেছিল। সুধাংশু বাবু আর বীণাপাণি দেবী রাতে এসছিলেন। সকালে বীণাপাণি দেবী দেখলেন একটা ছোট মিষ্টি মেয়ে তার পুতুলের বাক্স নিয়ে আকাশের সাথে খেলতে এসছে। বীণাপাণি দেবী মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলেন “ মেয়েটা কে রে ? খুব মিষ্টি দেখতে তো ! „ “ এ আমাদের পাশের ফ্লাটের সুচেতাদির ছোট মেয়ে । „ বললেন স্নেহা দেবী। বীণাপাণি দেবী সুচির দিকে তাকিয়ে নিজের মনেই আর একবার বললেন ---ভারী মিষ্টি দেখতে তো। তারপর তারা আরও দুই দিন থেকে আকাশ এবং সুচিকে অনেক ভালোবাসা এবং আদর দিয়ে নিজের বাড়ি চলে গেলেন। আকাশের সাথে খেলতে খেলতেই কয়েক মাস কেটে গেল সাথে সুচির জন্মদিন চলে এলো। সুমি উচ্চতায় না বাড়লেও আকাশ বেড়েছে । গালের লালচে রঙটা আর নেই। বড়ো বড়ো গোল দুটো চোখ, গোল মুখ আর ফোকলা দাঁত ( এখনও একটাও দাঁত ওঠেনি ) নিয়ে সারাদিন হাঁসতে থাকে আর ক্ষিদে পেলেই কাঁন্না শুরু। এখন আকাশ খাটের এদিক ওদিক গড়াগড়ি খায়। খাট থেকে যাতে পড়ে না যায় তার জন্য স্নেহা দেবী আকাশের চারিদিকে বড়ো বড়ো বালিশের দূর্গ বানিয়ে দেন। দোলনায় আকাশ থাকতে চায় না। দোলনায় শোয়ালেই কাঁদতে শুরু করে তখন আবার খাটে রাখতে হয়। স্নেহা দেবী এর কারন বুঝতে পারেন নি। সুচির জন্মদিনে সুমি কলেজ গেল না । সাতটার দিকে সুচেতা দেবী সুচিকে স্নান করিয়ে একটা নতুন লাল টুকটুকে ছোট ছোট কালো রঙের টেডি বিয়ার আঁকা ফ্রগ পরিয়ে দিলেন । তারপর সুচির বাবা সুচির কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে মাথায় ধান আর দুব্বো ঘাস দিয়ে “ বড়ো হও মা । „ বলে আশীর্বাদ করলেন। আজ অফিস ডে তার উপর সরকারি অফিসের কেরানি। তাই তিনি আশির্বাদ করেই অফিস চলে গেলেন। তারপর সুচেতা দেবী আর স্নেহা দেবীও আশীর্বাদ করলেন সাথে সুমিও । স্নেহা দেবী সুচিকে উপহার দিলেন একটা সোনার গলার চেন। তারপর নিজের ঘরে চলে গেলেন । ষাটোর্ধ্ব রহমত চাচা তার দিনের কাজ শুরু হওয়ার আগে সুচিকে একটা পুতুল উপহার দিয়ে আশীর্বাদ করে গেলেন। বলা বাহুল্য পুতুল পেয়ে সুচি খুব খুশি হলো। সুচেতা দেবী পায়েস বানালেন । সেই পায়েস সবাই খেল । সুচি তিন চার মিনিট নিজের মনে মনে হিসাব করলো --- বাবা খেয়েছে, মা খেয়েছে , দিদি খেয়েছে , কাকি খেয়েছে , দাদু খেয়েছে ( রহমত চাচা ) । তারপর কিছুক্ষণ পর মনে পড়লো আকাশ খাইনি ! কথাটা মনে পড়তেই পায়েসের বাটি হাতে নিয়ে আকাশের ফ্ল্যাটের উদ্দেশ্যে খোলা দরজার দিকে ছোট ছোট পায় হাঁটতে শুরু করলো সুচি । সুচিকে পায়েসের বাটি হাতে ঘরের বাইরে যেতে দেখে সুচেতা দেবী জিজ্ঞাসা করলেন “ এই মেয়ে ! কোথায় চললি ? „ “ আকাস তো পায়েস খাইনি ! „ মায়ের দিকে ঘুরে বললো সুচি । সুচেতা দেবী দৌড়ে এসে সুচির হাত থেকে পায়েসের বাটি নিয়ে নিলেন “ বোকা মেয়ে ! আকাশের এখন এইসব খেতে নেই । „ সুচি তখন সবে ঠোঁট ফোলাতে শুরু করেছে । এইভাবে হঠাৎ হাত থেকে পায়েসের বাটি কেড়ে নেওয়ার জন্য বেশ দুঃখ পেল সুচি। সুচির ঠোঁট ওল্টানো দেখে মেয়েকে শান্ত করার জন্য সুচেতা দেবী বললেন “ আকাশের এখনও খাওয়ার বয়স হয়নি যে ! „ সুচি মায়ের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। তার মা বলে চলে “ আর কয়েক মাস পর আকাশের অন্নপ্রাশন হবে। তারপর ও সবকিছু খেতে পারবে। „ সেইদিন থেকে সুচি অপেক্ষা করতে লাগলো কবে আকাশের অন্নপ্রাশন হবে। কিন্তু দুই তিন দিন যেতে না যেতেই সে সবকিছু ভুলে গেল। দেখতে দেখতে আকাশের বয়স সাত মাস হয়ে গেল। আকাশ এখন বসতে পারে আর গড়াগড়ি খেতে পারে । অন্নপ্রাশনের জন্য ঘর পরিষ্কার করতে শুরু করলেন স্নেহা দেবী। সমস্ত টেবিল আলমারি খাটের তলা পরিষ্কার করলেন। কোনায় কোনায় লেগে থাকা মাকড়সার বোনা জাল পরিষ্কার করলেন। মেঝে মুছলেন । একদম চকচকে করে তুললেন নিজেদের ফ্ল্যাটটাকে। খাটের তলা পরিষ্কার করার সময় পিছনের অন্ধকার কোনায় একটা বাক্স পেলেন। টিনের মাঝারি আকারের বাক্স । তাতে মরচে পড়ে গেছে। তাতে তালা দেওয়া ছিল না । সেটা খুলে তিনি অনেক কিছু পেলেন। সবই তার স্বামীর ছোটবেলার জিনিস ও খেলনা। কিন্তু যেটা তাকে সবথেকে বেশি অবাক করলো সেটা হলো একটা দাবার বোর্ড। অবাক হওয়ার কারনটা হলো বিয়ে করে তিনি এসছেন দেড় দুই বছর হতে চললো কিন্তু তিনি স্বামীকে কখনোই দাবা খেলতে দেখেননি। খেলা তো দূরে থাক দাবার নাম করতেও কখনো শোনেননি স্নেহা দেবী। তাই তিনি রাতে শুভাশীষ বাবু বাড়ি ফিরলে স্বামীকে জিজ্ঞাসা করলেন “ তুমি দাবা খেলো ? „ “ খেলি না । খেলতাম এককালে। কেন বলোতো ? „ অফিস ফেরত কোর্ট খুলতে খুলতে বললেন আকাশের বাবা। “ খাটের নীচে পরিষ্কার করতে গিয়ে একটা বাক্স পেলাম তাতে এই দাবার বোর্ড ছিল । „ বলে ড্রেসিং টেবিলে রাখা দাবার বোর্ডটা হাতে তুলে দেখালেন স্নেহা দেবী । আকাশের বাবা দাবার বোর্ড টা দেখতেই তার ছোটবেলার কতো স্মৃতি মনে পড়ে গেল। কি সুন্দর ছিল দিনগুলো । কোথায় গেল সেইসব দিন ? কে ছিনিয়ে নিল সেই স্মৃতি মধুর ছোটবেলাটা ? স্ত্রীয়ের হাতে ধরা বোর্ডের দিকে তাকিয়ে একটা গভির নিশ্বাস ছাড়লেন। তারপর বললেন “ খেলতাম এককালে । এখন খেলার সময় আর খেলার লোক দুটোই আমার কাছে নেই। রেখে দাও ওটা। ছোটবেলার স্মৃতি। „ বলে তিনি হাত মুখ ধুতে চলে গেলেন। অন্নপ্রাশনের কিছু দিন আগে শুভাশীষ বাবু একটা canon এর ক্যামেরা কিনে আনলেন। অন্নপ্রাশনের আগের দিন এলেন স্নেহা দেবীর মা বাবা । সাথে আরো একজন এলেন । নাম স্নেহাংশু। সম্পর্কে ইনি স্নেহা দেবীর ছোট ভাই হন । স্নেহাংশু বাবুর বয়স পচিঁশ। মাঝারি উচ্চতার। দেখতে সুন্দর , কালো ঘন চুল , পুরুষালী চেহারা কিন্তু একটু কালো । দিদির মতোই গায়ের রং ছিল একসময়। কিন্তু একটা প্রাইভেট কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার হওয়ার জন্য মাসের আঠাশ দিন তাকে রাজ্যের বাইরে থাকতে হয়। এই এদিক ওদিক ঘোরাঘুরির জন্যেই তার গায়ের রং একটু চেপে গেছে। স্নেহা দেবীর বাবা এটা একদম পছন্দ করেন না। তিনি তাই চাইছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একমাত্র ছেলের বিয়ে দিয়ে দিতে। আকাশ জন্মানোর পর এই অন্নপ্রাশনের সময় ভাই এসছে বলে স্নেহা দেবী প্রথম খুব অভিমান করলেন তারপর রাগ করে বেশ তিন চারটে কথা শুনিয়ে দিলেন ভাইকে । স্নেহাংশু বাবু চুপচাপ মাথা নিচু করে দিদির সব কথা শুনলেন বা হজম করলেন । ছোটবেলা থেকেই বড়ো দিদিকে একটু ভয় পান স্নেহাংশু বাবু। পশু প্রেমী স্নেহাংশু বাবু এসেই আকাশের কাছে উপহার দিলেন একটা Golden ratriver এর ছোট বাচ্চা। আকাশ সেটা পেয়ে খুব খুশি হলো। স্নেহা দেবী এই কুকুরের নাম রাখলেন বাদশা। বাদশাও আকাশকে পেয়ে খুব খুশি হলো। দেখে বলা যাবে না বাদশা বেশি খুশি নাকি আকাশ ! দিনটা রবিবার। পরিষ্কার আকাশ। ছুটির দিন তাই কেউ অফিস গেলেন না। কেউ কলেজেও গেল না। ভোরে পাখির কিচিরমিচির শুনতেই মা মেয়ে স্নেহা দেবী আর বীণাপাণি দেবী মিলে রান্না শুরু করলেন। কিছুক্ষণ পর সুচেতা দেবীও এলেন সাহায্য করতে । রান্না করার ফাঁকে তিনজন মিলে খুব গল্প করলেন মাঝে বীণাপাণি দেবী সুচেতা দেবীকে জিজ্ঞেস করলেন “ তোমরা কয় ভাইবোন ? „ “ মাসিমা , আমরা চার ভাইবোন । „ বয়সে বীণাপাণি দেবী সুচেতা দেবীর মায়ের থেকে কিছুটা বড়ো। তাই মাসিমা ডাকাই সমীচীন মনে করলেন সুচির মা। “ তারা থাকেন কোথায় ? „ “ আমার বাপের বাড়ির হাওড়াতে । আমি একমাত্র বোন। বাকি দাদাদের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ হয়ে গেছে। বাবা মা বড়দার কাছেই থাকেন। „ বললেন সুচেতা দেবী। স্নেহা দেবী এইসব তত্ত্ব আগে থেকেই জানেন তাই তিনি আগ্রহ প্রকাশ করলেন না। বড়ো দেওয়াল ঘড়িতে ডং ডং করে দশটা বাজতেই একজন পুরোহিত ঠাকুর এলেন। নাম রাধানাথ ব্যানার্জী। মাঝারি উচ্চতার একটু বেশিই শ্যাম বর্ণ। পড়নে আছে একটা সাদা ধুতি আর লাল রঙের হরি নামাঙ্কিত গেরুয়া পাঞ্জাবি। মাথায় বেশি চুল নেই । চল্লিশ পয়ঁতাল্লিশ বয়স হলেও মুখের চামড়া এখনও গুটিয়ে যাইনি। সব জায়গায় হেঁটেই যাতায়াত করেন তাই পেট বাইরে বার হতে পারেনি। তিনিই সমস্ত আয়োজন করলেন। পুরুষরা নতুন পাঞ্জাবি পাজামা আর মহিলারা নতুন শাড়ি পড়ে তৈরি হয়ে নিলেন। বেশ বেলার দিকে আকাশকে স্নান করিয়ে একটা হলুদ রঙের ছোট পাঞ্জাবি পড়িয়ে দেওয়া হলো। আকাশকে মনে হচ্ছিল ছোট্ট গোপাল শুধু মাথায় ময়ূরের পালক আর হাতে বাঁশিটা অনুপস্থিত। বাচ্চা বাদশা কে আগেই অন্য ঘরে বন্ধ করে দেওয়া হলো তারপর লিভিং রুমের সোফা গুলো দেওয়ালের দিকে সরিয়ে মেঝে পরিষ্কার করে সাজানো হলো রাজভোগ। ভাত, ডাল, চিকেন আর মটন দুই ধরনের কষা মাংস , তিন চার রকমের মাছ , আর একটা বড়ো চিতল মাছের মাথা , পালং শাক , লাল শাক , ঢেকি শাক , সাথে আছে সন্দেশ , রসগোল্লা আরো হরেকরকম মিষ্টি কাঁচাগোল্লা , রসমালাই , চমচম , কালোজাম , রাজভোগ , পায়েস । সাথে কলা , লেবু , আপেল , আতা, পেয়ারা , বেদানা , নাশপাতি আরো কতকি ধরনের ফল। অন্নপ্রাশনের খাওয়া বাবা মায়ের দেখতে নেই তাই আকাশের মা বাবা অন্য ঘরে চলে গেলে প্রথমে রাধানাথ ঠাকুর আকাশকে কোলে বসিয়ে মন্ত্র পড়ে কিছু সেদ্ধ ভাত আকাশের মুখে দিলেন। আকাশ তার থেকে দু তিনটে ভাত খেল । আর পাশে বসে থাকা স্নেহাংশু বাবু আকাশের বাবার কেনা canon এর ক্যামেরা দিয়ে ফটো তুলতে লাগলেন। আর সুচি , সুমি , স্নেহা দেবীর মা বাবা , সুচেতা দেবী , সমরেশ বাবু সবাই দেখতে লাগলেন। কিছুক্ষণ পর সুচি একটা লেবুর টুকরো তুলে আকাশের মুখের সামনে ধরে বললো “ এতা খা । „ সুচির দুষ্টুমি বুঝতে পেরে বিণাপানী দেবী আর সুধাংশু বাবু আর ঘরের বাকি সবাই মিচকি হাঁসতে লাগলেন । আকাশ লেবুর টুকরোতে জিভ ঠেকিয়ে চাটলো । তারপর জীবনে প্রথম টক খাওয়ার জন্য তার চোখ মুখ বন্ধ হয়ে মুখ কুঁচকে গেল। আকাশের অবস্থা দেখে সুচি খিলখিলিয়ে হেঁসে উঠলো , সাথে গালে দুটো টোল পড়লো । আকাশ চোখ খুলে সুচিকে হাসতে দেখে সেও ফোকলা দাঁতে হেঁসে ফেললো। আকাশ আর সুচির হাঁসি দেখে সবার মন প্রফুল্ল হয়ে উঠলো। আর এইসব সুবর্ণ মুহূর্ত হাঁসতে হাঁসতে ক্যামেরা বন্দী করলেন আকাশের মামা। তারপর সবাই উপহার এর ডালি খুলে বসলেন। রহমত চাচা কিছুক্ষনের জন্য গেট ছেড়ে এসে আকাশকে আশীর্বাদ করে একটা জামা দিয়ে গেলেন। সুচির বাবা একটা রুপোর পদক উপহার দিয়ে আশীর্বাদ করলেন। আকাশের মা বাবা ততক্ষণে ঘর থেকে চলে এসেছেন। একজন বৃদ্ধ '.কে অন্নপ্রাশনে এসে উপহার দিতে দেখে স্নেহা দেবীর মা বাবা খুব অবাক হলেন কিন্তু আকাশের প্রতি রহমত চাচার ভালবাসা দেখে দুজনেরই মনটা খুশিতে ভরে উঠলো । অন্নপ্রাশন শেষ হলে পুরোহিত ঠাকুর স্নেহা দেবীর কাছ থেকে আকাশের জন্মের তারিখ , সময় জেনে নিয়ে ঝোলা থেকে একটা পঞ্জিকা বার করে সোফায় বসে কুষ্টি বিচার করতে লাগলেন । পুরোহিত ঠাকুর কে কুষ্টি বিচার করতে দেখে সুধাংশু বাবু মেয়ে জামাইকে উদ্দেশ্যে করে বললেন “ এটা ঠিক করেছো তোমরা। কুষ্টি বিচার করা দরকার। „ কথাটা শুনে বীণাপাণি দেবী হ্যাঁ সুচক মাথা দোলালেন। প্রায় ত্রিশ চল্লিশ মিনিট ধরে নিজের মনে কড় গুনে একটা কাগজে আঁকিবুকি কেটে নিখুঁত হিসাব করলেন । ততক্ষণ ঘরের সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন আর সাথে আকাশকে অল্প অল্প করে সবকিছুই মুখে তুলে দিচ্ছেলেন। ঠাকুরমশাই কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হলে সেগুলো আকাশের মা আর বাবা এবং ঘরের বাকি সবাই কে বললেন --- এই ছেলে দীর্ঘায়ু সম্পন্ন। এর প্রেম বিয়ের যোগ আছে। তবে এর বিয়ে তেইশ বছর বয়সে দিতে হবে। যদি তেইশ বছরে এর বিবাহ না করান তাহলে এই ছেলে জীবনেও সুখী হবে না। “ তেইশ বছরে বিয়ে ! এতো কাঁচা বয়স । „ ঘরের সবার মুখে এক কথা। সবাই কথাটা শুনে বেশ অবাক হয়েছেন বোঝা যাচ্ছে। “দেখো মা , সবই ভবিতব্য। কিছু জিনিস বিধাতার হাতে থাকে । সেগুলো খন্ডাবে কে ? তুমি চাইলে তেইশের পরেও বিয়ে দিতে পারো তবে এ ছেলে সুখী হবে না । „ বেশ শান্ত নরম কন্ঠে স্নেহা দেবীর উদ্দেশ্যে কথা গুলো বললেন ঠাকুরমশাই রাধানাথ ব্যানার্জী। জীবনে কখনো সুখী হবে না কথাটা শুনেই বুকটা ছ্যাৎ করে উঠলো স্নেহা দেবীর , ভয়ে তার মুখ শুকিয়ে গেল । কোন মা চায় না তার ছেলে জীবনে সুখী হোক ? “ তাই দেবো ঠাকুরমশাই। আকাশের বিয়ে তেইশেই দেবো । „ “ What rubbish ! তেইশে বিয়ে ! হয় নাকি ? „ আকাশ কে কোলে নিয়ে মুখে চরমভাবে বিরক্তি ফুটিয়ে তুলে বললেন স্নেহাংশু বাবু । “ তুই চুপ করে। ছেলে আমার। আমি সিদ্ধান্ত নেবো কখন আমি আমার ছেলেকে বিয়ে দেবো । ত্রিশ বত্রিশে বিয়ে দিয়ে কি লাভ যদি ছেলে কখনো সুখি না হতে পারে ? „ বেশ দৃঢ় কন্ঠে ভাইকে কথা গুলো বললেন আকাশের মা স্নেহা দেবী। মেয়ের এই কথা শুনে সুধাংশু বাবু আর বীণাপাণি দেবী মুখটা এমন করলেন যেন তারা মেয়ের কথায় সন্তুষ্ট। স্বামীকে জিজ্ঞাসা না করেই স্নেহা দেবী এতো বড়ো একটা সিদ্ধান্ত নিলেন এতে আকাশের বাবা তেমন অবাক হলেন না , কারন তার সাথে এটা ছোটবেলা থেকেই হয়ে আসছে। স্ত্রীর এরকম দৃঢ়কন্ঠে ছেলের বিয়ের তারিখ ঘোষনা করার পর আর সেই তারিখ শোনার পর নিজের শশুর শাশুড়ির মুখের অভিব্যক্তি দেখে শুভাশীষ বাবু বেশ গম্ভীর মুখ করে আকাশের দিকে তাকালেন। আকাশ তখন মামার কোলে বসে একটা রসগোল্লা খাচ্ছে আর সুচির সাথে হাঁসছে।
10-07-2021, 09:09 AM
উপভোগ্য আপডেট .. top to bottom প্রতিটি পয়েন্ট ধরে ধরে খুব সুন্দর করে বর্ণনা করা হয়েছে।
পুরোহিত মশাইয়ের বচন illogical হলেও ভবিষ্যতের জন্য কথাগুলো লেখা এখানে যুক্তিযুক্ত ছিল। তবে পুতুলটা জীবিত না লিখে পুতুলটা জীবন্ত লিখলে আরো ভালো লাগতো বিষয়টি। বরাবরের মতোই লাইক এবং রেপু
10-07-2021, 09:13 AM
(This post was last modified: 10-07-2021, 09:15 AM by Bichitro. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
(10-07-2021, 09:09 AM)Bumba_1 Wrote: উপভোগ্য আপডেট .. top to bottom প্রতিটি পয়েন্ট ধরে ধরে খুব সুন্দর করে বর্ণনা করা হয়েছে। ঠিক ধরেছেন। ভবিষ্যতে র কথা ভেবেই কুষ্টির সাহায্য নিতে হলো। জীবন্ত করে দিয়েছি।
10-07-2021, 11:24 AM
আকাশ আর সুচিত্রার খুনসুটি রোমান্টিক এডভেঞ্চার দেখার অপেক্ষায় রইলাম
10-07-2021, 11:34 AM
(10-07-2021, 08:01 AM)satyakam Wrote: কার কার ব্যাপারটা illogical লাগলো ? কমেন্টে জানান পুরোহিতের কথার সেখানেই লজিক, ২৩ বছরে বিয়ে। নিশ্চই ২৩ বছরের আকাশ সামনে ২৬ বছরের সুচিত্রা সেনকে নিজের চোখের তারা করার জন্যে উঠে পড়ে লাগবে ভবিষ্যতে (কি নাম নিলাম!! সুচিত্রা সেন? হায় হায়! কি করবো দাদা বলুন, বাঙালির মন থেকে ওই চেহারা মুছে যাওয়া সম্ভব নয় কখনোই)
10-07-2021, 11:47 AM
10-07-2021, 11:50 AM
(10-07-2021, 11:34 AM)a-man Wrote: পুরোহিতের কথার সেখানেই লজিক, ২৩ বছরে বিয়ে। নিশ্চই ২৩ বছরের আকাশ সামনে ২৬ বছরের সুচিত্রা সেনকে নিজের চোখের তারা করার জন্যে উঠে পড়ে লাগবে ভবিষ্যতে ঠিক ধরেছেন। তবে হিসাব টা একটু ভুল হলো। আকাশের বয়স 23 হলে সুচিত্রার হবে 27 . আর সুচিত্রা সেন কে বাঙালি ভুলে গেলেই সর্বনাশ। তবে ভুলতে পারবেনা এতো সহজে। সৌন্দর্যের প্রতীক বলা যায়।
10-07-2021, 11:58 AM
বাহ্.... খুব খুব সুন্দর ❤
দুটো মিষ্টি নিষ্পাপ পুচকের একে ওপরের প্রতি পবিত্র বন্ধুত্ব একটু একটু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে. বীণাপানি দেবীর ও সূচিকে খুব পছন্দ হয়েছে বোঝা গেলো. আবার বাদশার আগমন..... মানে রাজা রানী বাদশা. আর শেষে ভাইকে যেভাবে আকাশের মা ধমক দিয়ে দৃঢ় কণ্ঠে ছেলের বিয়ের কথা বললেন আমার তো শিভগামী দেবীর কথা মনে পড়ে গেলো - mera vachan hi hai shasaan!! তবে এবারে কিন্তু আকাশের বাবার চরিত্রটা শেষের ওই একটা লাইন থেকেই একটু পরিষ্কার হলো.
10-07-2021, 12:05 PM
(This post was last modified: 10-07-2021, 12:07 PM by Bichitro. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(10-07-2021, 11:58 AM)Baban Wrote: বাহ্.... খুব খুব সুন্দর ❤ I am speechless. আর কিছু বলবো না। আপনি বুদ্ধিমান বিচক্ষণ পাঠক । আপনি বুঝে নিন  ভাবা যায়! বাবান দা আমার পাঠক! সত্যি ভাবা যায় না
10-07-2021, 01:37 PM
10-07-2021, 01:54 PM
10-07-2021, 03:39 PM
এভাবেই গল্প স্বচ্ছন্দ গতিতে এগিয়ে চলুক।
রেপু দিলাম। |
« Next Oldest | Next Newest »
|
Users browsing this thread: 199 Guest(s)