Thread Rating:
  • 15 Vote(s) - 3.07 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller রক্তমুখী নীলা (সমাপ্ত)
#21
মৌলিক গল্প দেখে ভাল লাগছে।আশা করি কন্টিনিউ করবেন।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#22
এ যে শুধুই গল্প নয় তা বেশ বুঝতে পারছি!
আর দীর্ঘ বিরতির পর পূনরায় শুরু হওয়ায়
বেশ ভালো লাগছে!
Like Reply
#23
অসমাপ্ত গল্প গুলো অসাধারণ হয় নাকি অসাধারণ গল্প গুলোই অসমাপ্ত রয়ে যায়?
Please need a quick update!! Namaskar Namaskar
[+] 4 users Like Jholokbd1999's post
Like Reply
#24
কতক্ষন যে ওভাবে ছিলাম জানি না। মাথার ভিতরটা ভোঁ ভোঁ করছে সব কেমন জট পাকিয়ে গেছে। আর কিছু ভাবতে ভালো লাগছেনা। শুধু চিন্তা হচ্ছে ম্যাডাম আর দিদার জন্য। দিদার অবস্থা সত্যি খুব খারাপ ছিলো হারামীগুলো যেভাবে আঘাত করেছিলো তাতে....  বেঁচে আছেন তো? কোথায় আছে ওরা,আমার মত কি ওদেরো নিয়ে এসেছে ? কিন্তু ওই লোকটার কথা শুনে ত তা মনে হলো না। আমার সাথে শত্রুতা হয়তো আমাকেই শুধু নিয়ে এসেছে। কিন্তু আছি কোথায়?এই ঘর দেখে ত কিছুই অনুমান করা যাচ্ছেনা।
বাবা মার কথা মনে পড়লো কি করছে ওনারা এখন,নিশ্চয়ই চিন্তা করছে। খোঁজাখুঁজিও করছে হয়তো। মায়ের মুখটা মনে পড়লো। বুকের ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো। বাবা মাকে আমি সত্যি খুব ভালোবাসি এর আগে এতটা টান আমি অনুভব করিনি কোনদিন। আসলে বাবা মা আমায় জীবনে কোনদিন কোন সমস্যায় পরতে দেয়নি। কিন্তু আজ ? আজ কি পাবো উদ্ধার এই শয়তানের কাছ থেকে। মেরে ফেলবে আমায় ওই লোকটা আর কোনদিন দেখতে পাবো না বাবা মাকে সবকিছুই হারিয়ে গেলো জীবন থেকে। এবার কি তবে শুধু মৃত্যুর প্রহর গোণার পালা।

সম্ভবত একটু তন্দ্রা মত এসে গেছিলো দরজা খোলার শব্দে এক ঝটকায় সেটা চলে গেলো। একজন ভিতরে ঢুকে সোজা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো হাতে একটা থালা। থালাটা মেঝে রেখে পিছন থেকে আমার হাতটা খুলে দিলো। হাতটা টনটন করছে এতক্ষন ওভাবে বাঁধা ছিলো সামনে এনে কবজি গুলো ঘুরিয়ে একটু ইজি করে নিলাম। খাবার আর কোন ইচ্ছা নেই আমার। মাথার মধ্যে হঠাৎ একটা বুদ্ধি খেলে গেলো। পালাতে হবে আমায়। যেমন করে হোক পালাতে হবে। আমি কাপুরুষ নই ভীতু কাপুরুষদের মত বসে বসে মৃত্যুর প্রহর গোণা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। মুখটা আবার নীচু করে নিলাম। খেলাতে হবে লোকটাকে।
-- এই খেয়ে নে। 
কিছুই বললাম না
-- কিরে শুনতে পাচ্ছিস না খেয়ে নে। এবার একটু জোরে বলে উঠলো লোকটা।
আমার কোন হেলদোল দেখালাম না। সজোরে একটা চাপড় আমার গালে এসে পড়লো। চুল ধরে টেনে মাথাটাকে তুলে বলে উঠলো শালা হারামী কথা কানে যাচ্ছেনা। চোখ মেরে দিলো লোকটা।
আমি অবাক হয়ে গেলাম। লোকটা চোখ মারলো আমি ঠিক দেখলাম ত?
লোকটা চোখের ইশারায় থালার দিকে দেখতে বলছে। 
থালার দিকে তাকালাম কিছু খাবার রয়েছে তাতে। দুটো রুটি একটু সবজি আর একটা কাগজ। চমকে লোকটার দিকে তাকালাম।ঠিক লোক বলা যায়না কেননা ওকে অনেকটা আমার বয়সী লাগছে। ছেলেটা চোখের ইশারায় ওর পিছন দিকে তাকাতে বললো। দেখলাম দরজার ওপর ব্যালকনিতে একজন লোক দাঁড়িয়ে আছে। আবার মুখটা ছেলেটার দিকে ফেরালাম।
ছেলেটা আমায় মুখটা কুঁচকে একটা ভঙ্গী করলো যেটা কারোর কাছে ক্ষমা চাইবার মত তারপর সজোরে একটা ঘুসি মারলো আমার মুখে।
ওপর থেকে এবার কথা ভেসে এলো ছেলেটার উদ্দেশ্যে -- খানকির ছেলের রস হয়েছে ছেড়ে দে, বোকাচোদাকে রবীনদা এলে বুঝে নেবে। বেরিয়ে আয় তুই। 
লোকটা আর দাঁড়ালো না পিছনের দরজা দিয়ে ভিতরে চলে গেলো। খট করে দরজা বন্ধ হয়ে গেলো।
এবার কাগজটা তুলে পড়লাম। 

" বিনা বাক্যব্যায়ে সামনের ছেলেটার সাথে বেরিয়ে আসো "

বুকের ভিতর হাতুড়ি পেটা শুরু হয়ে গেলো। তবে কি সত্যি মুক্তি পাবো? কে এই ছেলেটি,কোথা থেকে এসেছে সেসব তখন মাথায় নেই। এখান থেকে বেরোতে হবে যে কোন প্রকারে। কৃমিকীটের মত নির্জীব হয়ে থেকে আমি মরতে পারবো না। লড়াই করে বাঁচার আশাটা আমার কাছে অনেক ভালো। 
চমকে তাকালাম ছেলেটির দিকে। মিটিমিটি হাসছে। হাতের ইশারায় শান্ত থাকতে নির্দেশ দিলো তারপর ঠৌঁটে আঙুল ঠেকিয়ে চুপ করতে বললো। শান্ত আমি এমনিতেই আছি। বিপদের সময় রুখে দাঁড়ানোর জন্য নিজেকে শান্ত রাখার মত আর কোন ভালো হাতিয়ার হয় না। আমার ক্ষেত্রে সেটা অনেক দ্রুত কাজ করে।
হাতের দড়িটা আগেই খুলে দিয়েছিলো এখন দ্রুত পায়ের দড়িটা খুলে দিলো। সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়ালাম। ছেলেটা দরজার দিকে এগিয়ে গেলো হাতের ইশারায় থামতে বললো থেমে গেলাম দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে একবার আশপাশটা দেখে নিলো হাতের ইশারায় বেরিয়ে আসতে বললো। দরজা দিয়ে বেরিয়েই সোজা একটা করিডোর দিয়ে এগিয়ে চললাম অত্যন্ত নিশ্চুপে কিন্তু যত দ্রুত সম্ভব। বেশ লম্বা করিডোর পার হয়ে এসে বাঁদিকে বাঁক নিলাম সামনে সিড়ি ওপর থেকে দুজন লোক কথা বলতে বলতে নেমে আসছে সিড়ি দিয়ে। আমি দ্রুত আড়ালে চলে এলাম। ছেলেটি মুখ ঘুরিয়ে দেখে একবার হাঁসলো সম্ভবত নির্দেশ দেওয়ার আগেই কাজ করলে যেমন হয়। সে এগিয়ে গেলো সামনে। লোকদুটো নীচে নেমে ছেলেটির সাথে কথা বলতে লাগলো। একবার দ্রুত উঁকি মেরে দেখে নিলাম আমার দিকেই পিঠ করে দাঁড়িয়ে আছে দুজন। ওদের সামনে সিড়ির গোড়ায় ছেলেটি দাঁড়িয়ে আছে। বেরিয়ে এলাম আড়াল থেকে, পা টিপে টিপে ওদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। যে একটু আমার সামনে তাকেই আগে সাবাড় করবো, নিমেষের মধ্যে বাঁ হাতটা এগিয়ে নিয়ে গিয়ে লোকটার মুখ চেপে ধরলাম সাথে সাথে ডান পা দিয়ে হাঁটুর পিছনে লাথি মারলাম একটু নীচের দিকে ঝুঁকতেই প্রচন্ড জোরে ঘারে একটা ঘুসি মারলাম। নির্জীব শরীরটা ফেলে দিয়েই অন্য লোকটির দিকে তাকালাম লোকটিকে ছেলেটি কাবু করে এনেছে হাত দিয়ে পুরো গলা পেঁচিয়ে ধরেছে। হাত দিয়ে প্রাণপন ছাড়াবার চেষ্টা করছে লোকটি। আমি এগিয়ে গিয়ে সজোরে নাকে একটা ঘুষি মারলাম লোকটার। হাতের বাঁধন খুলে দিলো ছেলেটি তারপর সিড়ি ধরে এগিয়ে চললো। সিড়ি দিয়ে উঠেই লক্ষ করলাম এটাও একটা বেশ লম্বা করিডোর যেটার শেষ প্রান্ত ডানদিকে বাঁক নিয়েছে, এগিয়ে চললাম সেই করিডোর দিয়ে। ডানদিকে বাঁক ঘুরতেই আবার সিড়ি দুজনে চুপিসাড়ে উঠতে লাগলাম সেই সিড়ি দিয়ে। ওপর থেকে গানের শব্দ ভেসে আসছে। সিঁড়ির মাথার কাছে এসে ছেলেটি হাতের ইশারায় আমায় দাঁড়াতে বললো। উঁকি মেরে দেখলাম বেশ বড়ো একটা ঘরে এসে দাঁড়িয়েছি। পাঁচজন লোক ঘরের মধ্যে উপস্থিত। একটু ভাবনায় পড়লাম এদের এড়িয়ে সামনে এগোব কি করে ?
[+] 5 users Like HASIR RAJA 19's post
Like Reply
#25
সকলকে ধন্যবাদ চেষ্টা করছি নিয়মিত আপডেট দেওয়ার
Like Reply
#26
রাজ নামটা শুনলেই ওই "নাম তো সুনা হোগা" তার পর ম্যা ম্যা ম্যা ম্যা ছাগল এর ডাক কানে ভেসে আসে । ভাই আপনি একটু চেষ্টা করেন তো আমাকে এই ঝামেলা থেকে বাচাতে । সিনেমার রাজের চেয়ে আপনার রাজ জেনো আমার কাছে বেশি প্রিয় হয়ে ওঠে । আশা করি আপনি পারবেন ।
Like Reply
#27
আর কতো ভাববেন রাজা মসাই?
এবার তো সামনে এগোন!
Like Reply
#28
ওপাশের দরজা দিয়ে আরো কয়েকজন মানুষ প্রবেশ করলো। দেখলাম তার মধ্যে রবীন বলে লোকটিও আছে। ছেলেটি দ্রুত আমার হাত ধরে নীচে নামিয়ে আনলো সিঁড়ির মুখেই আমায় ইশারায় ওপরে তাকাতে বললো দেখলাম ছাদের কাছে একটা গোল ফোকর। চটপট ছেলেটি হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো আমি ওর কাঁধে পা রেখে ফোকরে কাছে এসে হাতের চাপে ফোকরের দরজা খুলে ওর মধ্য সেধিয়ে গেলাম। নীচের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম কিন্তু অবাক হলাম ছেলেটি হাত দিয়ে আমায় চলে যেতে বলছে। মানলাম না হাত দেখিয়ে জোর করলাম আমার সাথে আসার জন্য কিন্তু তাতে অনেক দেরী হয়ে গেছে সিড়ির মাথায় কয়েকজন এসে দাঁড়িয়েছে দ্রুত পিছনের দিকে সরে গেলাম। নীচ থেকে ওদের কথা ভেসে আসলো।
-- কিরে ও খেয়েছে। রবীন বলে উঠলো।
-- না সাহেব ও খাচ্ছে না গোঁজ হয়ে বসে আছে। আমি থালা দিয়ে চলে এসেছি।
-- ঠিক আছে তুই যা আমি দেখছি।

আমি দ্রুত পিছনের দিকে তাকালাম এখান থেকে সোজা একটা সিঁড়ি উপরের দিকে উঠে গেছে। উপরে উঠে লক্ষ করলাম আবার সেই গোলাকার দরজা সন্তর্পনে দরজাটা খুলে বাইরে উঁকি মারলাম লম্বা একটা করিডরের শেষ প্রান্তে দুটি লোক দাঁড়িয়ে আছে। বেরোব কি করে। এখান থেকে নামতে গেলে যদি কোনরকম শব্দ করি তাহলে এখানেই শেষ। কিন্তু এভাবে থাকাও সম্ভব নয় যত দ্রুত আমি এখান থেকে বেরোতে পারলে বাঁচি। আস্তে করে দুটো পা ঝুলিয়ে ঝপ করে লাফিয়ে পড়লাম। শব্দ হলোনা ঠিকই কিন্তু লাফাবার আগেই একজন এদিকে তাকাতেই আমায় দেখতে পেয়ে গেলো। দৌড়ে আমার কাছে এসে কোমর থেকে পিস্তল বের করে মাথায় ঠেকালো। আবার কি তবে ধরা পড়ে গেলাম। 
চল ওঠ। আমাদের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যাওয়া এত সোজা নয় চাঁদু।ঠিক তখনই লোকগুলোর পিছনদিক থেকে ঝুপ করে একটা শব্দ হলো একটি লোক সোজা মাটিতে কুপোকাত অন্যজন হতভম্ভ হয়ে গেছে, দ্রুত লোকটার হাত ধরে একটা হেঁচকা টান মারলাম। টান সামলাতে না পেরে পরে গেলো লোকটা। হাতে ধরা বন্দুক থেকে প্রচন্ড শব্দ করে একটা গুলি বেরিয়ে বন্দুকটা লোকটার হাত থেকে ছিটকে চলে গেলো। ছেলেটি দ্রুত গিয়ে বন্দুকটা তুলে নিলো আমার হাত ধরে তুলে বললো আর দেরী করলে চলবে না এক্ষুনি সবাই জেনে যাবে পালাতে হবে চলো দৌড়াও। এক ছুটে লম্বা করিডোর পার করতেই শুনতে পেলাম জলের শব্দ। আর তার সাথেই পিছন থেকে অনেক লোকের চিৎকার। চিৎকারটা আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছে। ছেলেটি আমার হাত ধরে চলো বলেই ছুট লাগালো সামনে একটা দরজা সেটা খুলতেই গোধুলী আলো আমায় স্নান করিয়ে দিলো, প্রকৃতির শীতল ঠান্ডা হাওয়া আমার শরীরে এসে পড়েছে প্রাণ জুরিয়ে গেলো কিন্তু এখন এসবের সময় নয় দ্রুত এখান থেকে সরে পরতে হবে না হলে সব শেষ। দরজা দিয়ে বেরোতেই ছেলেটি জিজ্ঞেস করলো সাঁতার কাটতে পারো ত? প্রথমটায় কথাটার মানে বুঝতে পারিনি হঠাৎ খেয়াল করলাম আমাদের পাশেই নদী। আর এতক্ষনে বুঝলাম যে আমি একটা জাহাজে রয়েছি। চারপাশটা একবার দ্রুত চোখ বুলিয়ে নিলাম। চারদিকেই জল, দূরে নদীর পারে জনবসতি দেখা যাচ্ছে তার মানে....আরে ওটা কি? এত আমাদের দ্বিতীয় হুগলী সেতু তবে কি... আর ওই যে দূরে হাওড়া ব্রিজ আমি ত তাহলে কলকাতাতেই আছি অবাক বিস্ময়ে একবার ছেলেটির দিকে তাকালাম। পিছনের চিৎকার অনেকটাই এগিয়ে এসেছে আর কিছু না ভেবে সোজা জলে ঝাঁপ দিলাম।
[+] 5 users Like HASIR RAJA 19's post
Like Reply
#29
সন্ধ্যা হয়ে আসছে তবু যতটুকু আলো আসছে তাতে জলের ওপর আমাদের দেখে ফেলাটা কিছুই আশ্চর্যের নয়। যত দ্রুত সম্ভব কতকটা ডুব সাঁতার দিয়েই চলতে লাগলাম। খিদিরপুর ডককে পিছনে ফেলে বেশ কিছুটা এগিয়ে ছেলেটাকে অনুসরণ করে তীরে উঠলাম। দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নেওয়ার এতটুকু অবকাশ নেই যতদূর শীঘ্র সম্ভব এখান থেকে সরে পরতে হবে। একপ্রকার দৌড়েই বনবাদাড় পেরিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়ালাম। সামনেই একটা গাড়ী,আমরা কাছে যেতেই দরজা খুলে গেলো কোন দ্বিধা না করে ছেলেটির পিছন পিছন গাড়িতে গিয়ে উঠলাম। গাড়ী চলতে শুরু করেছে ততক্ষনে। খিদিরপুরের মোরে গাড়ী আসতেই লক্ষ করলাম পিছন থেকে তীরবেগে একটা গাড়ি আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে।
-- আহঃ এরা কি কিছুতেই পিছু ছারবে না। রঞ্জুদা আরো জোরে চালাও। ছেলেটা উত্তেজিত কন্ঠে বলে উঠলো। 
কিন্তু তার আগেই পিছনের গাড়ীটা আমাদের কাছে এগিয়ে এসে প্রচন্ড জোরে একটা ধাক্কা মারলো আমাদের গাড়ীর পিছনে। দক্ষহাতে স্টিয়ারিং হুইল ধরে সেই আঘাত সামলালো রঞ্জু নামের লোকটা। রাস্তায় গাড়ীর কমতি নেই হুসহাস করে গাড়ী চলছে এর মধ্যেই পিছনের গাড়ীটা এসে আমাদের পাশ থেকে আমাদের ওপর সজোরে আঘাত করতে লাগলো। দুটো গাড়ীরই স্পিড নেহাত কম নয়। দুর্ঘটনা ঘটলে বেলচা মারা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। সামনেই হেস্টিংসের চারমাথা মোড়। 
ছেলেটি তীব্র চিৎকার করে উঠলো রঞ্জুদা গাড়ী থামাবে না স্পিড বাড়াও। 
হতভম্ব হয়ে গেলাম সিগন্যাল বোর্ডে লাল সিগন্যাল জ্বল জ্বল করছে। কোনদিকে যাবে এ গাড়ী? রাস্তায় ত গাড়ীর মেলা বসেছে বাঁদিক থেকে ডানদিকে গাড়ীগুলো হুসহাস করে বেরিয়ে যাচ্ছে। 
না গাড়ী থামলো না। সবার শ্বাস রুদ্ধ করে দিয়ে নিয়ম ভেঙে এক্সলেটর ভীষন চাপ বসিয়ে দিলো রঞ্জু নামের লোকটা। ধন্যি ড্রাইভারি বিদ্যা, তীরবেগে গাড়ী এগিয়ে এসে সামনের গাড়ীটাকে কোনরকমে বাঁচিয়ে স্টিয়ারিং টাকে এপাশ ওপাশ করে চারমাথা ক্রশিং পার হয়ে গেলাম আর সাথে প্রচন্ড জোরে একটা শব্দে প্রায় সকলেই চমকে পিছনে তাকালাম। ধাওয়া করে আসা গাড়ীটা নিয়ন্ত্রন হারিয়ে একটা টেঙ্কারের পেটের ভিতর ঢুকে গেছে। গাড়ীর সামনের অংশটা ভেঙে গুঁড়িয়ে গেছে আশা করি আর কেউ প্রাণে বেঁচে নেই। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম কিন্তু থামলে চলবে না, গাড়ী এগিয়ে চললো দ্বিতীয় হুগলি সেতুর দিকে। পিছন ফিরে একবার দেখে নিলাম। না আর কেউ নেই। 
ব্রিজ পেরিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর আমাদের গাড়ীর গতি কমিয়ে দিলো, সামনে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। ছেলেটির মুখের দিকে একবার তাকালাম আমার মুখের ভাষা বুঝতে পেরে একটু হেঁসে বললো ভয় নেই, এখন তুমি নিরাপদ। রঞ্জুদা কলকাতায় থাকে আমাদের এখানে নামিয়ে ও চলে যাবে। আমাদের ওই গাড়ীতে যেতে হবে চলো নামো।
-- আচ্ছা আমরা যাচ্ছি কোথায়। আর কে তুমি। নামতে নামতে জিজ্ঞেস করলাম।
-- বলছি আগে ওঠো। 
গাড়ীতে উঠে বসলাম। গাড়ী চলতে শুরু করলো।
-- আমি মুক্ত। বলে উঠলো ছেলেটি।
-- তবে কি তুমিও বন্দি ছিলে ওই জাহাজে।
-- আরে না না আমার নাম মুক্ত। মুক্তধারা সিং। 
-- কিন্তু তুমি আমায় চিনলে কি করে আর এভাবে আমায় উদ্ধার করলেই বা কেন? 
-- কি কেন কখন কিভাবে এসবের জবাব একজনই দিতে পারবে আমার বাবা। 
-- কিন্তু আমাকে জানতে হবে এখন, এসব কি হচ্ছে আমার সাথে। আর আমি যাচ্ছি বা কোথায়।
-- দুর্গাপুর। আমরা দুর্গাপুর যাচ্ছি।

গাড়ি থামাও গাড়ি থামাও। চিৎকার করে উঠলাম আমি
-- এই কেন কি হয়েছে।
-- আমার বাবা মা কোলকাতায় ওদিকে ম্যাডাম আর দিদা কেমন আছে কে জানে আর তোমরা আমায় দুর্গাপুর নিয়ে যাচ্ছো। আমাকে এক্ষুনি কলকাতা ফিরতে হবে আমায় না পেয়ে নিশ্চয়ই ওই হারামীগুলো আমার বাবা মার ওপর অত্যাচার করবে ওরা জানোয়ার। মায়াদয়া নেই ওদের শরীরে দিদাকে কিভাবে মেরেছিলো ওরা।
-- হ্যাঁ ঠিক। ওরা জানোয়ার। তুমি কি মনে করেছো তুমি গেলে তোমার বাবা মাকে তুমি বাঁচাতে পারবে। পারবে না। বিরাতে যাদের মেরেছিলে তারা সবাই তুচ্ছ এরা ভয়ঙ্কর তুমি কলকাতায় ফিরলে তোমায় আর বেঁচে ফিরতে হবে না।
--  কিন্তু এভাবে পালিয়ে যাবো? বাবা মার বিপদ জেনেও।
-- হ্যাঁ এটাই এখন একমাত্র রাস্তা আর তুমি চিন্তা করোনা তোমার বাবা মা নিরাপদেই আছে।
চমকে তাকালাম মুক্তর দিকে। তুমি এতটা নিশ্চিত হচ্ছো কি করে?
-- সব উত্তর পেয়ে যাবে এখন শুধু একটু ধৈর্য ধরে থাকো।

গাড়ি এগিয় চলেছে বালি হয়ে দিল্লীরোডের উপর দিয়ে। শক্তিগড়ে পৌছে গাড়ি একটা ধাবায় থামলো। শক্তিগড় একটা জংশন জায়গার মতো এখানে সব রকমের দোকান আছে একটা পেট্রোল পাম্প আছে। বহু দূর পাল্লার গাড়ি এখানে দাঁড়ায়। এখানকার সেই বিখ্যাত ল্যাংচার কথা সবাই জানে।

আমার মোবাইল, মানিব্যাগের কোন হদিশ নেই সম্ভবত দিদার বাড়িতেই পড়ে আছে। পরণের বারমুন্ডা প্যানটা যে কি করে এলো সেটা ভগবান যানেন। ওসব নিয়ে মাথাও ঘামালাম না। গাড়ি থামতেই মুক্তকে বললাম আমি একটা ফোন করবো।
[+] 4 users Like HASIR RAJA 19's post
Like Reply
#30
(15-05-2021, 07:33 AM)Isiift Wrote: মৌলিক গল্প দেখে ভাল লাগছে।আশা করি কন্টিনিউ করবেন।

সেই চেষ্টাতেই আছি।  Smile
Like Reply
#31
আমার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো মুক্ত -- তুমি চিন্তা করোনা যাদের ফোন করবে তারা নিরাপদেই আছে। এখানে বেশিক্ষন থাকা যাবেনা কিছু খাবার নিয়েই বেরিয়ে পরবো তুমি গাড়ির কাছে থাকো। আমি আসছি। 

শক্তিগড় থেকে বেরিয়ে আধঘন্টা গাড়ি চালিয়ে পানাগড় যখন পৌছলাম তখন গাড়ির ড্যাশবোর্ডে রাখা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাতটা বাজে। এখনো বেশ কিছুটা যেতে হবে। পেটের মধ্যে যে আগুন জ্বলছিল মুক্তর আনা খাবারে তা কিছুটা উপশম হয়েছে। 
প্রায় ঘন্টা খানেক পর মুচিপাড়া এলো এখান থেকে বাঁদিকে ঘুরে পোলের নীচ দিয়ে আমরা বিধাননগর কমিউনিটি সেন্টারের দিকে এগিয়ে চললাম। বিধান নগর কলোনীকে বাঁদিকে রেখে ডানদিকে রাস্তায় গাড়ি আসতেই হঠাৎ মনে পড়লো এই রাস্তাটা আমার চেনা অবচেতন মন আমায় এই রাস্তাটাকে চিনিয়ে দিচ্ছে। সাথে কিছু ছবি ভেসে উঠছে। মাথার ভিতরটা যেন ফেটে যাবে। প্রচন্ড যন্ত্রনায় দুহাতে মাথার দুপাশ চেপে ধরলাম। ছবির পর ছবি ভেসে উঠছে মাথার মধ্যে কিন্তু সবগুলোই আবছা, যেন পুরোপুরি আসবে আসবে করেও আসতে পারছেনা। 
কিছুক্ষন পর যন্ত্রনাটা কমে গেলো একটা স্তব্ধ ভাব চলে এসেছে মাথার মধ্যে। চোখটা বন্ধ করে নিলাম।

একটা হাতের স্পর্শে স্তব্ধ ভাবটা এক লহমায় কেটে গেলো। মা, মা বলে জড়িয়ে ধরলাম মাকে। বুকের ভিতরটা যেন ছিঁড়ে যাচ্ছে যন্ত্রনায়। মনে হচ্ছে একযুগ পর মাকে দেখছি। বুক থেকে মুখ তুলে মায়ের মুখের দিকে তাকালাম সেই মাতৃময়ী রুপ। কিন্তু মনের মধ্যে আরো একটি ছবি যে ভাসছে মন বলছে সেও আমার অতি আপন। 
গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম। মা হাত ধরে সামনে এগিয়ে নিয়ে চললো। সামনে বাবা দাঁড়িয়ে কাছে যেতেই বুকে জড়িয়ে ধরলো। চোখে জল না থাকলেও বুকটা যে ভেঙে গুঁড়িয়ে যাচ্ছে সেটা লাবুডুবু শব্দ শুনে বেশ বুঝতে পারছি। 
কিছু একটা বলতে চাইছিলাম তার আগেই আমায় থামিয়ে বাবা বলে উঠলো -- জানি তোর মনে অনেক প্রশ্ন, অনেক ধাঁধা লুকিয়ে আছে। সব উত্তর পাবি শুধু আর একটা রাত সময় দে আমায়। 
মুখ নীচু করে নিলাম। বাবার কথার ওপর কথা আমি বলতে পারবোনা। আমায় নিয়ে পিছনদিকে তাকালো বাবা। অনেকেই দাঁড়িয়ে রয়েছে সেখানে,সবার মুখেই বিস্ময়। সবাই আমার অপরিচিত, এক এক করে দেখতে দেখতে একজনের ওপর চোখ পরতেই চমকে উঠলাম। মনের সেই ছবির সাথে অদ্ভুত এক মিল রয়েছে এর। কিন্তু... 


রাতের অন্ধকারে বোঝা না গেলেও এই জায়গাটা যে যথেষ্ট নিরিবিলি তা এর স্তব্ধতা শুনেই বেশ বোঝা যাচ্ছে। আশেপাশে বাড়িঘর তেমন নেই বললেই চলে। 
বাবা মার কাছ থেকে জেনেছি আমি দুরাত ওদের ডেরায় কাটিয়েছি। তারমধ্যে কোন খাবারই পেটে পরেনি তাই বিনা বাক্যব্যায়ে খেতে বসে গেলাম। সাধারন মাটির মেঝেতে খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। আমার পাশে মা, মুখোমুখি একটা আসন ফাঁক রেখে বাবা বসেছে। আর কেউ বসলোনা দেখে বেশ অবাক লাগলো। মাকে বলতে মুচকি হেসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। বেশি কথা না বাড়িয়ে প্রাণভরে খাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করলাম। হঠাৎ মাথা তুলতেই চমকে উঠলাম। বাবার পাশে সেই ফাঁকা আসনটায় মনের ছবির সাদৃশ্য রমনী বসে আছে। খাওয়ার আর মুখে উঠলোনা। মা আমার দিকে তাকিয়ে বললো কিরে বাবু কি হয়েছে? ওর দিকে ওভাবে কি দেখছিস?
-- এ্যাঁ.... না। না কিছু না।
-- ওর নাম সংঘমিত্রা খুব ভালো মেয়ে নে এবার খেয়ে নে।
[+] 3 users Like HASIR RAJA 19's post
Like Reply
#32
অনেক দিন পর ব্যতিক্রমধর্মী একটা গল্প পড়লাম, আশা করি নিয়মিত আপডেট দিবেন, ধন্যবাদ।
Like Reply
#33
খাওয়া শেষ হয়ে গেছে কিন্তু খাওয়ার সময় ওর চোখ দুটো আমাকে পাগল করে তুলেছে। মন বলছে খুব ভালোবাসি ওই চোখ দুটোকে। দুজন দুজনকেই নীরবে দেখে গেছি শুধু।
মনের মধ্যে সব চিন্তা কপূরের মত উবে গেছে এখন একটাই প্রশ্ন এই মেয়েটি। কে এই মেয়েটি? মনের মধ্যে যে আবছা ছবি ফুটে উঠেছে। তাতে মুখের অবয়ব অস্পষ্ট হলেও ওই চোখ আমার মনে গেঁথে গেছে।

বেশ রাত হয়েছে, পুরো জায়গাটাই নিশ্চুপ থমথম করছে। সবাই ঘুমের রাজ্যে চলে গেছে। আমার চোখে ঘুম নেই। চিন্তার মহাসমুদ্রে ভাসছি আমি, কোন তল খুঁজে পাচ্ছি না। নানান চিন্তা মাথার মধ্যে কিলবিল করছে। 
উঠে পড়লাম বিছানা থেকে আমার পাশে মুক্ত শুয়ে আছে। অঘোরে ঘুমোচ্ছে। আস্তে করে দরজাটা খুলে বাইরে বেরিয়ে এলাম। ঝিরঝিরে বাতাস গায়ে লাগতেই মনটা জুড়িয়ে গেল। আহঃ চাঁদের জ্যোৎস্না আলো সারা পৃথিবীকে যেন স্নান করিয়ে দিচ্ছে। কতরাত কতভাবে এরকম একা চাঁদ দেখেছি কিন্তু আজ, আজ যেন একটু বেশি ভালো লাগছে। 
-- কি ঘুমোন নি এখনো ?
চমকে পিছনে তাকালাম। সেই রহস্যময়ী মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে। মুখে একটা সরল মিষ্টি হাসি। কি যেন নামটা.... মিত্রা...সংঘমিত্রা।
-- কি হলো কি দেখছেন ওভাবে?
আহঃ গলার স্বরটা ভারী মিষ্টি। 
-- না মানে ঘুম আসছিলো না। আমতা আমতা করে জবাব দিলাম।
-- তাই বুঝি? তা কি এত চিন্তা করছেন? 
হেসে ফেললাম। এই মেয়েটা বলে কি, গত দুদিন ধরে যেসব ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে চিন্তার খোরাকের ত অভাব নেই আমার, আর সর্বপরি এই মেয়েটি ত এখন আমার বড় চিন্তার। ওই যে চোখ, ওই কাজল কালো টানা টানা চোখটাই ত এখন আমার বড় চিন্তার। ওই চোখটা ত আমার বড় আপন বলে মনে হয়। 
-- এই, কি দেখছেন
হাতটা আমার মুখের সামনে নাড়িয়ে দিলো মেয়েটি। 
-- আপনাকে। দেখুন এক্ষুনি বললেন না যে আমি কি চিন্তা করছি তাতে আমি বলবো এখন যা আমার পরিস্থিতি তাতে আমার মনে হয় কেউ যেন আমরা মাথার মধ্যে চিন্তার একটা বড় মাটির হাড়ি ফাটিয়ে দিয়েছে আর সেই চিন্তাগুলো সাপের মত কিলবিল করছে মাথার মধ্যে। আর সবথেকে বড়ো সাপটা কি করছেন জানেন?
-- কি....অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো।
একটু থেমে জবাব দিলাম .... আপনার রহস্যের উদঘাটন।

একদৃষ্টে চেয়ে রইলাম দুজন দুজনের দিকে। এ যেন ঠিক লুকোচুরি খেলা মন থেকে নিঃশব্দে কথা চুরির খেলা। 
একটু এগিয়ে গেলাম সামনে। ঝিরিঝিরি বাতাসে মেয়েটির মুখে কিছু চুল এসে পড়েছে। ডান হাত তুলে আলতো করে চুল গুলো এক আঙুলে ধরে কানের পিছনে চালান করে দিলাম। আঙুলের স্পর্শে চোখ বন্ধ করে নিল মিত্রা। অপূর্ব মায়াময়ী সৌন্দর্যতায় আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। রাতের চন্দ্রালোকে আমার স্বপ্নের রাণী আমার একদম কাছে। হ্যাঁ স্বপ্নেরই রাণী, মনের মধ্যে ভেসে ওঠা ছবির সাথে এর কোন অমিল থাকতে পারে না।
ঠোঁটটা মিত্রার মুখের কাছে নিয়ে গেলাম থিরথির করে কাঁপছে ঠোঁটটা। আমার উষ্ণ নিঃশ্বাসের স্পর্শে চোখ খুললো সে আমার চোখের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে ঠোঁট ঈষৎ খুলে মুখটা সামনে এগিয়ে দিলো। আর অপেক্ষা করলাম না ঠোঁটটা এগিয়ে দিয়ে মিত্রার ঠোঁটে চেপে ধরলাম। দুই ওষ্ঠ মিলেমিশে একাকার সাথে দুই মনও। 
একটু পরে ঠোঁট ছেড়ে দিলাম। দুহাত দিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরলো মিত্রা। মুখটা তুলে আবার ঠোঁট এগিয়ে দিলো। এ ভালোবাসার টানকে উপেক্ষা করা আমার সাধ্যি নেই। বাঁ হাতে মিত্রার মাথা ধরে ডান হাতে আরো শরীরের সাথে চেপে ধরে তীব্র ভাবে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলাম। উপর্যপরি চুষতে লাগলাম। একটু ফাঁক পেতেই জিভটা ঢুকিয়ে দিলাম মিত্রার মুখে। দুজনের জিভ খেলায় মেতে উঠলো।
বেশ কিছুক্ষন পরে ঠোঁট ছেড়ে সারা মুখে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিলাম। কানের কাছে মুখ নিয়ে কানের নরম লতি মুখে নিয়ে  চুষতে লাগলাম। আবার ঠোঁটে ফিরে এলাম তীব্র ভাবে চুষতে শুরু করলাম। 
কতক্ষন যে এভাবে ছিলাম জানিনা। আস্তে আস্তে শরীরের সমস্ত পোষাক খুলে গেছে। ভালোবাসার সুখ সাগড়ে ভেসে চলেছি আমরা। শরীরের সর্বজায়গায় জিভের স্পর্শে দুজনের শরীরে আগুন জ্বলে উঠেছে। কখন যে নিজের পৌরষত্বকে উসকে দিয়ে মিত্রার কোমল শরীরকে ধরে আস্তে করে শুইয়ে দিয়েছি খেয়াল নেই। কপালে একটা মৃদু চুমু খেয়ে বুকের কাছে নেমে এসেছি। ভালোবাসার প্রতিদান স্বরুপ যে শরীর মিত্রা আমার হাতে তুলে দিয়েছে তার কোন অমর্যাদা আমি করিনি। বুক থেকে আরো, আরো নীচে নেমে এসেছি। মূল্যবান সে খনির খোঁজ পেতে দেরী হয়নি আমার। রসে টইটুম্বুর সে জায়গায় জিভ দিয়ে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিতে দ্বিধা করিনি। 
--- রাজজজজ আমি যে পাগল হয়ে যাচ্ছি। এভাবে কষ্ট দিয়োনা সোনা। আসো আমার ভিতরে আসোওওওওওওওও।
প্রেয়সীর ডাক উপেক্ষা করার সাহস আমার নেই। মধুভান্ডার থেকে মুখ তুলে নিলাম। পায়ের কাছে বসে হাত দিয়ে নিজের পৌরুষকে একবার রগড়ে নিলাম। এগিয়ে গিয়ে গোপন স্থানে প্রবেশ করালাম। নিজের সতীত্ব বিসর্জন দিয়ে চারহাতে পায়ে শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরলো। একবিন্দু জল চোখের কোন থেকে গড়িয়ে পড়েছে মিত্রার। জিভ দিয়ে চেটে নিলাম সেই অশ্রু, কপালে একটা চুমু খেলাম। আবেশে ঠোটে ঠোট চেপে ধরলো মিত্রা। আস্তে আস্তে কোমড় আগুপিছু করতে লাগলাম। পিঠে নোখের আঁচড় দিয়ে মিত্রা নিজের সুখের জানান দিতে লাগলো। 
আস্তে আস্তে কোমড় নাড়ানো দ্রুত থেকে দ্রুততড় হতে লাগলো সেইসাথে পৌরুষ রসের দাপাদাপি। আর বেশি বাকি নেই বিস্ফোরণ ঘটতে। মিত্রা চারহাত পায়ে প্রচন্ড জোরে আমায় জড়িয়ে আমার শরীরের নীচে কেঁপে উঠলো। আর থাকতে পারলাম না। প্রচন্ড জোরে একটা চাপ দিয়ে গোড়া পর্যন্ত ঠেসে ধরে নেতিয়ে পড়লাম মিত্রার শরীরে। 

বেশ কিছুক্ষন এভাবে আছি। আস্তে করে মুখ তুলে মিত্রার মুখে আলতো করে একটা চুমু খেলাম। চোখ মেললো মিত্রা। ভালোবাসায় পরিপূর্ণ সেই চোখ। মুগ্ধ নয়নে চেয়ে থেকে ছোট একটা প্রশ্ন করলাম -- কে তুমি?
জবাব পেলাম না। মৃদু একটু হাসির সাথে একফোটা আনন্দঅশ্রু গড়িয়ে পড়লো শুধু চোখ দিয়ে ।
[+] 3 users Like HASIR RAJA 19's post
Like Reply
#34
Simply outstanding. Waiting for the next update.
yourock     clps
Like Reply
#35
(25-05-2021, 09:35 PM)HASIR RAJA 19 Wrote: খাওয়া শেষ হয়ে গেছে কিন্তু খাওয়ার সময় ওর চোখ দুটো আমাকে পাগল করে তুলেছে। মন বলছে খুব ভালোবাসি ওই চোখ দুটোকে। দুজন দুজনকেই নীরবে দেখে গেছি শুধু।
মনের মধ্যে সব চিন্তা কপূরের মত উবে গেছে এখন একটাই প্রশ্ন এই মেয়েটি। কে এই মেয়েটি? মনের মধ্যে যে আবছা ছবি ফুটে উঠেছে। তাতে মুখের অবয়ব অস্পষ্ট হলেও ওই চোখ আমার মনে গেঁথে গেছে।

বেশ রাত হয়েছে, পুরো জায়গাটাই নিশ্চুপ থমথম করছে। সবাই ঘুমের রাজ্যে চলে গেছে। আমার চোখে ঘুম নেই। চিন্তার মহাসমুদ্রে ভাসছি আমি, কোন তল খুঁজে পাচ্ছি না। নানান চিন্তা মাথার মধ্যে কিলবিল করছে। 
উঠে পড়লাম বিছানা থেকে আমার পাশে মুক্ত শুয়ে আছে। অঘোরে ঘুমোচ্ছে। আস্তে করে দরজাটা খুলে বাইরে বেরিয়ে এলাম। ঝিরঝিরে বাতাস গায়ে লাগতেই মনটা জুড়িয়ে গেল। আহঃ চাঁদের জ্যোৎস্না আলো সারা পৃথিবীকে যেন স্নান করিয়ে দিচ্ছে। কতরাত কতভাবে এরকম একা চাঁদ দেখেছি কিন্তু আজ, আজ যেন একটু বেশি ভালো লাগছে। 
-- কি ঘুমোন নি এখনো ?
চমকে পিছনে তাকালাম। সেই রহস্যময়ী মেয়েটি দাঁড়িয়ে আছে। মুখে একটা সরল মিষ্টি হাসি। কি যেন নামটা.... মিত্রা...সংঘমিত্রা।
-- কি হলো কি দেখছেন ওভাবে?
আহঃ গলার স্বরটা ভারী মিষ্টি। 
-- না মানে ঘুম আসছিলো না। আমতা আমতা করে জবাব দিলাম।
-- তাই বুঝি? তা কি এত চিন্তা করছেন? 
হেসে ফেললাম। এই মেয়েটা বলে কি, গত দুদিন ধরে যেসব ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে চিন্তার খোরাকের ত অভাব নেই আমার, আর সর্বপরি এই মেয়েটি ত এখন আমার বড় চিন্তার। ওই যে চোখ, ওই কাজল কালো টানা টানা চোখটাই ত এখন আমার বড় চিন্তার। ওই চোখটা ত আমার বড় আপন বলে মনে হয়। 
-- এই, কি দেখছেন
হাতটা আমার মুখের সামনে নাড়িয়ে দিলো মেয়েটি। 
-- আপনাকে। দেখুন এক্ষুনি বললেন না যে আমি কি চিন্তা করছি তাতে আমি বলবো এখন যা আমার পরিস্থিতি তাতে আমার মনে হয় কেউ যেন আমরা মাথার মধ্যে চিন্তার একটা বড় মাটির হাড়ি ফাটিয়ে দিয়েছে আর সেই চিন্তাগুলো সাপের মত কিলবিল করছে মাথার মধ্যে। আর সবথেকে বড়ো সাপটা কি করছেন জানেন?
-- কি....অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো।
একটু থেমে জবাব দিলাম .... আপনার রহস্যের উদঘাটন।

একদৃষ্টে চেয়ে রইলাম দুজন দুজনের দিকে। এ যেন ঠিক লুকোচুরি খেলা মন থেকে নিঃশব্দে কথা চুরির খেলা। 
একটু এগিয়ে গেলাম সামনে। ঝিরিঝিরি বাতাসে মেয়েটির মুখে কিছু চুল এসে পড়েছে। ডান হাত তুলে আলতো করে চুল গুলো এক আঙুলে ধরে কানের পিছনে চালান করে দিলাম। আঙুলের স্পর্শে চোখ বন্ধ করে নিল মিত্রা। অপূর্ব মায়াময়ী সৌন্দর্যতায় আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। রাতের চন্দ্রালোকে আমার স্বপ্নের রাণী আমার একদম কাছে। হ্যাঁ স্বপ্নেরই রাণী, মনের মধ্যে ভেসে ওঠা ছবির সাথে এর কোন অমিল থাকতে পারে না।
ঠোঁটটা মিত্রার মুখের কাছে নিয়ে গেলাম থিরথির করে কাঁপছে ঠোঁটটা। আমার উষ্ণ নিঃশ্বাসের স্পর্শে চোখ খুললো সে আমার চোখের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে ঠোঁট ঈষৎ খুলে মুখটা সামনে এগিয়ে দিলো। আর অপেক্ষা করলাম না ঠোঁটটা এগিয়ে দিয়ে মিত্রার ঠোঁটে চেপে ধরলাম। দুই ওষ্ঠ মিলেমিশে একাকার সাথে দুই মনও। 
একটু পরে ঠোঁট ছেড়ে দিলাম। দুহাত দিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরলো মিত্রা। মুখটা তুলে আবার ঠোঁট এগিয়ে দিলো। এ ভালোবাসার টানকে উপেক্ষা করা আমার সাধ্যি নেই। বাঁ হাতে মিত্রার মাথা ধরে ডান হাতে আরো শরীরের সাথে চেপে ধরে তীব্র ভাবে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলাম। উপর্যপরি চুষতে লাগলাম। একটু ফাঁক পেতেই জিভটা ঢুকিয়ে দিলাম মিত্রার মুখে। দুজনের জিভ খেলায় মেতে উঠলো।
বেশ কিছুক্ষন পরে ঠোঁট ছেড়ে সারা মুখে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিলাম। কানের কাছে মুখ নিয়ে কানের নরম লতি মুখে নিয়ে  চুষতে লাগলাম। আবার ঠোঁটে ফিরে এলাম তীব্র ভাবে চুষতে শুরু করলাম। 
কতক্ষন যে এভাবে ছিলাম জানিনা। আস্তে আস্তে শরীরের সমস্ত পোষাক খুলে গেছে। ভালোবাসার সুখ সাগড়ে ভেসে চলেছি আমরা। শরীরের সর্বজায়গায় জিভের স্পর্শে দুজনের শরীরে আগুন জ্বলে উঠেছে। কখন যে নিজের পৌরষত্বকে উসকে দিয়ে মিত্রার কোমল শরীরকে ধরে আস্তে করে শুইয়ে দিয়েছি খেয়াল নেই। কপালে একটা মৃদু চুমু খেয়ে বুকের কাছে নেমে এসেছি। ভালোবাসার প্রতিদান স্বরুপ যে শরীর মিত্রা আমার হাতে তুলে দিয়েছে তার কোন অমর্যাদা আমি করিনি। বুক থেকে আরো, আরো নীচে নেমে এসেছি। মূল্যবান সে খনির খোঁজ পেতে দেরী হয়নি আমার। রসে টইটুম্বুর সে জায়গায় জিভ দিয়ে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিতে দ্বিধা করিনি। 
--- রাজজজজ আমি যে পাগল হয়ে যাচ্ছি। এভাবে কষ্ট দিয়োনা সোনা। আসো আমার ভিতরে আসোওওওওওওওও।
প্রেয়সীর ডাক উপেক্ষা করার সাহস আমার নেই। মধুভান্ডার থেকে মুখ তুলে নিলাম। পায়ের কাছে বসে হাত দিয়ে নিজের পৌরুষকে একবার রগড়ে নিলাম। এগিয়ে গিয়ে গোপন স্থানে প্রবেশ করালাম। নিজের সতীত্ব বিসর্জন দিয়ে চারহাতে পায়ে শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরলো। একবিন্দু জল চোখের কোন থেকে গড়িয়ে পড়েছে মিত্রার। জিভ দিয়ে চেটে নিলাম সেই অশ্রু, কপালে একটা চুমু খেলাম। আবেশে ঠোটে ঠোট চেপে ধরলো মিত্রা। আস্তে আস্তে কোমড় আগুপিছু করতে লাগলাম। পিঠে নোখের আঁচড় দিয়ে মিত্রা নিজের সুখের জানান দিতে লাগলো। 
আস্তে আস্তে কোমড় নাড়ানো দ্রুত থেকে দ্রুততড় হতে লাগলো সেইসাথে পৌরুষ রসের দাপাদাপি। আর বেশি বাকি নেই বিস্ফোরণ ঘটতে। মিত্রা চারহাত পায়ে প্রচন্ড জোরে আমায় জড়িয়ে আমার শরীরের নীচে কেঁপে উঠলো। আর থাকতে পারলাম না। প্রচন্ড জোরে একটা চাপ দিয়ে গোড়া পর্যন্ত ঠেসে ধরে নেতিয়ে পড়লাম মিত্রার শরীরে। 

বেশ কিছুক্ষন এভাবে আছি। আস্তে করে মুখ তুলে মিত্রার মুখে আলতো করে একটা চুমু খেলাম। চোখ মেললো মিত্রা। ভালোবাসায় পরিপূর্ণ সেই চোখ। মুগ্ধ নয়নে চেয়ে থেকে ছোট একটা প্রশ্ন করলাম -- কে তুমি?
জবাব পেলাম না। মৃদু একটু হাসির সাথে একফোটা আনন্দঅশ্রু গড়িয়ে পড়লো শুধু চোখ দিয়ে ।
darun
Like Reply
#36
Unique plot. Waiting for new update.
yourock     clps
Like Reply
#37
আমাদেরও জিজ্ঞাসা কে তুমি?
Like Reply
#38
রাতের আঁধার কেটে ভোর হলো সাথে শুরু হলো আমার জীবনের নতুন অধ্যায় । মিত্রা ...........

সকালে একটা গাড়ীর শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো। উঠে বাইরে বেরিয়ে এলাম। কাল রাতে জায়গাটা ঠিকমত দেখা হয়নি। আজ খেয়াল করলাম। দোতলা বাড়ীর পুরোটাই মাটির, ওপরে টালির ছাউনি। অসম্ভব পরিষ্কার পরিছন্ন কোথাও এতটুকু নোংরার স্থান নেই। সামনে টানা বারান্দায় বসার জায়গা সেখানে বেরিয়ে এসে দেখলাম এক বৃদ্ধ মানুষ গাড়ী থেকে নামছেন। বৃদ্ধ হলেও এখনো বেশ ডাঁটো। হাত নেড়ে কয়েকজনকে কি নির্দেশ দিচ্ছে। পিছন ফিরে আমায় দেখতে পেয়েই ছুটে এসে আমায় জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলো। আমার বাপ...আমার বাপ আয় তোকে বুকে নিয়ে আমার কলিজাটা একটু ঠান্ডা করি। তোকে ওরা গায়ে হাত দিয়েছে জীবনেও ওরা শান্তি পাবেনারে। নরকেও ঠাঁই হবেনা। আমার বাপ...
প্রথমটায় ভারি অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু নিজেকে সামলে নিলাম। পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি বাড়ির সবাই পিছনে ভীড় করেছে। সবার চোখে জল ছলছল করছে। 
বাবা আমার পাশে এগিয়ে এলেন আমার কাঁধে হাত দিয়ে বললেন অনেক প্রশ্নের উত্তর আজ তোকে দিতে হবে। তার আগে বলি এই মানুষটির কথা। এর নাম মোক্তার সিং তুই হলি ওর কলিজার টুকরো। তোকে অনেক কিছু আমাদের বাধ্য হয়ে লুকাতে হয়েছে। 
-- কিন্তু এর সাথে আমার পরিচয় কি? বলে উঠলাম আমি।
-- বলছি বাপজান আমি বলছি এ ঘটনা আমি ছাড়া আর কেউ বলতে পারবেনা।


"বিশ্ব" পুরো নাম নয়, শুধু এই ছোট্ট নামটাই যথেষ্ট যার নামে পুরো পূর্ব ভারত কাঁপত। যেমন তার তেজ তেমনি তার অসীম সাহস। ইংরেজরা পর্যন্ত একে ঘাঁটাতে সাহস পেত না। বহুজন বহুবার বহুভাবে  একে টলাবার বন্দোবস্ত করেছিলো কিন্তু কেউ একে টলাতে পারেনি। ডাকাতি যার রক্তে মিশে ছিল। ধনী দুষ্টুদের কাছে সে যেমন ত্রাস গরীবদের কাছে তেমনি ভগবান। যেমন সে দুহাতে পয়সা লুঠেছে তেমনি দুহাতে গরীরদের পয়সা বিলিয়েছে। আমি ছিলাম অনাথ, রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে যা জুটতো তাই দিয়ে পেট চালাতাম। কি করে যে একদিন ছদ্মবেশী স্বয়ং বিশ্বর কৃপাদৃষ্টিতে পড়লাম জানিনা। একদিন ভোর রাতে এসে আমায় তুলে নিয়ে গেলো। সেইথেকে আমি ওর ছায়া। বহু বিপদ আপদে আমরা পড়েছি তবু কোনদিন আমি ওই ছায়া থেকে স্থানচ্যুত হইনি। মুখে প্রকাশ না করলেও সে যে আমায় ভীষন ভালোবাসতেন তা বুঝতাম। নিজের মুখের খাবার আমার মুখে তুলে দিত। শরীর খারাপে নিজে সেবা শ্রুশুষা করতো নিজের টান না থাকলে কজন করবে। দলে আমাদের সবশুদ্ধু বাইশ জন। এখানকার এক গভীর জঙ্গলের একটি বিশেষ স্থানে তার আসল ডেরা ছিল। কিন্তু এখানে খুব কমই আসা হত আমাদের। তখন এসব জায়গা জঙ্গলে আবৃত। 

রাজার যুগ চলে গেলেও জমিদারী প্রথা পুরোদস্তুর তখন ছিলো। কোন কোন জমিদার যে বেশ শাঁসালো তা মানতেই হবে। ব্রহ্মদেশ মানে এখন যা তোমরা মায়ানমার বলে জানো সেখানকার এক জমিদারের বেশ নামডাক তখন। নামটা সুনামের থেকে কুনামটাই বেশি। প্রজাদের ওপর অকথ্য অত্যাচারে তার জুরি মেলাভার। নির্যাতনের চরম পর্যায়ে এসে সে রাজত্ব চালাতো। পাশের বিভিন্ন রাজ্যের জমিদাররা এর নামে ভয়ে কাঁপতো। রাজ্যের প্রত্যেকটা নারীকেই সে ছিঁড়ে খুড়ে খেয়েছে। নারীর ওপর তার এতই লোভ যে পাশের জমিদাররা তাদের ক্ষমতা ও প্রাণ হারাবার ভয়ে নিজেদের মা বোনকে দিতে বাধ্য হতো। এ হেন ক্রুর পর্যায়ে তুমি ভাবছো যে সব অবহেলিত রাজ্য এক হয়ে তার ওপর হামলা চালায় না কেন। কিন্তু বাস্তবে সেটা খুবই কঠিন ছিলো। প্রথমত ইংরেজদের সঙ্গ, দ্বিতীয়ত পরলৌকিক শক্তি। কোন এক অজ্ঞাত বিশেষ কারনে সে ছিল অপরাজেয়। তবে এমনিতেও তার যোদ্ধার অভাব ছিলোনা একশোজন লাঠিয়াল তার কথায় উঠতো বসতো তারা এতটাই ভয়ঙ্কর যে কাউকেই তোয়াক্কা করতোনা। মনে কোন দয়া মায়া ছিলোনা। মনে হত সাক্ষাত নররুপে শয়তান।


পৌষ মাসের মাঝামাঝি ঘোর অমাবস্যার দিন, জমিদার বাড়ী থেকে অনেক দূরে এক গভীর বনে আমরা আস্তানা গেড়েছি। সকাল থেকে ঠাকুর মদ্যপান করে চলেছেন কিন্তু জ্ঞান আছে ষোলআনা এক পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ট্যের ওপর ওই অবস্থায় স্থির দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা রাখে।  কয়েকদিন ধরে এখানে থেকে চরের মাধ্যমে বেশ কিছু খবর সংগ্রহ হয়ে গেছে। আজও সকাল থেকে চরের আনাগোনা চলছে যত খবর শুনছে তত ঠাকুরের মুখ থমথম করছে। সন্ধ্যা হতেই আদেশ এলো সবাই একজায়গায় হও। আজি ওই শয়তান জমিদারের মুন্ডু কেটে মাকালীকে নিবেদন করবো। বাইশজন খুশিতে রে রে করে হুঙ্কার দিয়ে উঠলো। তোড়জোড় শুরু হয়ে গেলো। 
অমাবস্যার নিকষ কালো অন্ধকারে এগিয়ে চলেছি বেশ ঠান্ডা পড়েছে তবে তার তোয়াক্কা কেউ করছিনা। জমিদার বাড়ির কাছে এসে একটু থেমে ঠাকুর চারিদিক নিজে একবার পরীক্ষা করে নিলো। কি করবো তা আগে থেকেই স্থির করা আছে সেইমতো বাইশজন দুদলে ভাগ হয়ে দুদিকে চলে গেলো। আমি ঠাকুরের পিছু পিছু জমিদার বাড়ির পিছনদিকে এসে দাঁড়ালাম। তিনমানুষ উঁচু পাঁচিল দিয়ে পুরো চত্ত্বরটা ঘেরা ভিতরে রাজবাড়ীর মত প্রাসাদপ্রমোদ অট্টালিকা। পাঁচিলের মাঝামাঝি অংশটায় দুটো বিম খাড়া ভাবে উঠে গেছে হয়তো আগে এখানে দরজা ছিলো তারপর সেটাকে হয়তো বুঁজিয়ে ফেলেছে ফলে সেখানে একটা খাঁজের সৃষ্টি হয়েছে। সেই খাঁজের মধ্যে দুদিকের দেওয়ালে হাত ও পায়ের ভর দিয়ে ঠাকুর ও আমি ওপরের দিকে উঠে গেলাম। 
নিঃশব্দে পাঁচিল টপকে দুজনে চত্ত্বরে প্রবেশ করলাম। একটু থমকে দাঁড়িয়ে চারিদিকের পরিস্থিতিটা একটু বুঝে নিলো ঠাকুর। ছাদের কিণার দিয়ে এক প্রহরী এগিয়ে চলেছে একবার এদিকে মুখ ফেরালেই আমরা ধরা পরবো। ঠাকুর বিদ্যুৎ গতিতে তীর নিয়ে ছাদের কোণে দাঁড়িয়ে থাকা সেই প্রহরীর গলা এফোঁড় ওফোঁড় করে দিলো। অব্যার্থ লক্ষ একটু টু শব্দ করারো সুযোগ পেলোনা গলায় হাত দিয়ে বসে পড়লো ।
তিন মহলার অট্টালিকায় প্রচুর ঘর সব থেকে ওপরের মহলে জমিদার থাকে। আমাদের গন্তব্যস্থল সেখানেই।
তখনকার দিনে বিদ্যুত আলোর এত প্রচলন ছিলোনা। বাড়ির চতুর্পাশ মশাল জালিয়ে রাখা হতো তাতে অন্ধকার একটু কাটলেও পুরো আলোজ্জ্বল সম্ভব ছিলো না। সেই অন্ধকারে বাড়ির খাঁজ বেয়ে আমরা ছাদের ওপর উঠতে শুরু করলাম। কেউ দেখতে পেলে যে ততক্ষনাৎ প্রাণ যাবে তা আর বলে দিতে হয়না কিন্তু ভয় কাকে বলে বিশ্ব ঠাকুর জানতো না। ছাদের কিনারে এসে আর একবার সন্তর্পণে সব দিকটা দেখে নিলেন ঠাকুর। আমাকে আগে থেকেই নির্দেশ দেওয়া ছিল কি করতে হবে। আমি দ্রুত বাড়ির সামনের দিকে চলে এলাম। সঙ্গে করে আনা ছোট মশালে আগুন ধরিয়ে ছাদের কিনারে দাঁড়িয়ে তিনবার নাড়ালাম, তারপর নিভিয়ে দিলাম। 
বাড়ির সামনের চত্তরে প্রাচীরের ভিতর খড়ের চাল দেওয়া ঘেরাটোপ জায়গায় জমিদারের একশোজন লাঠিয়াল বাস করতো। ঠাকুরের বাইশজন অনুচর চুপিসারে সেইখানে গিয়ে আগুন লাগিয়ে দিলো। 
লেলিহান আগুনের সাথে সাথে প্রচুর মানুষের গগনভেদী আর্তচিৎকারে জমিদার বাড়ী জেগে উঠলো। দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে এলাম, চাপা দরজা লাগানোর আর সময় পায়নি প্রহরীরা তার আগেই ঠাকুর তাদের ভবলীলা সাঙ্গ করে ভিতরে  ঢুকে গেছে। প্রহরীদের মরা শরীরের ওপর দিয়ে ভিতরের মহলে ঢুকেই স্তম্ভিত হয়ে গেলাম।
[+] 3 users Like HASIR RAJA 19's post
Like Reply
#39
এক অপরুপ সুন্দরী মাজননী, ঠাকুরের পিছনে লুকিয়ে আছে। কিছুদূরে ক্রুর জমিদার আগুন ঝরা চোখে তাকিয়ে আছে ঠাকুরের দিকে। 
হিংস্র ভাবে হেসে জমিদার বললো -- কিহে কাপুরুষ, নিরস্ত্র মানুষকে মারবি এই তোর বাহাদুরীর নমুনা। সাহস থাকে ত আয় আমার সাথে মল্লযুদ্ধ কর।
হোমে যেন ঘৃতাহুতি পড়লো। সশব্দে হাতের তলোয়ারখানা ফেলে দিয়ে বাজের মত গর্জন করে ঠাকুর বলে উঠলো -- তবে আয়, দেখি কে কাপুরুষ। 
শুরু হলো যুদ্ধ। কিন্তু প্রথমে অত তেজ দেখালেও জমিদারের তেজ ঠাকুরের কাছে থিতু হতে লাগলো। নানান প্যাঁচে পেঁচিয়ে জমিদারের নাভিশ্বাস বার করে দিলো। পারলো না আর জমিদার, মেঝেতে পড়ে গেলো সে। মুখ তুলতে খেয়াল করলাম ভীষন অবাক হওয়ার লক্ষন তার সারা মুখে ফুটে উঠেছে। নিজের ভবিতব্যকে হয়তো এখনো ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না। 
-- কি রে শয়তান বল কে কাপুরুষ। ঠাকুর গর্জন করে উঠলো।
জমিদারের মুখ নীচু, একদৃষ্টে ডান হাতের একটা আঙুলে পড়া আঙটির দিকে চেয়ে রয়েছে। অস্ফুটে বলে চলেছে -- এ অসম্ভব, এ কিছুতেই হতে পারে না। এ, এ কিছুতেই হতে পারে না।
আস্তে আস্তে মুখ তুলে চাইলো সে, ঠাকুরের দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। তারপর সেই হাতের আঙটিটা খুলে ঠাকুরের দিকে বাড়িয়ে দিলো। প্রথমটা ঠাকুর বুঝতে পারেনি। 
-- দেখতে পাচ্ছো এর দ্যুতি অদৃশ্য হয়ে গেছে। এ আমার আর নেই, এ এখন আমার যম। একে নিয়ে যাও আমার সামনে থেকে, নিয়ে যাও। এ এখন তোমার। এ তোমার কথা শুনবে। নিয়ে যাওওওওওওও। 

হাত বাড়িয়ে আঙটিটা নিলো ঠাকুর, চোখের সামনে এনে দেখতে পেলো একটা পাথরের আঙটি। ঠাকুরের মনোভাব তখন না বুঝলেও আমার নিজের কেমন ধাঁধার মত মনে হলো। এ কি আঙটি, যে জমিদারের দশা এমনটা হয়েছে। 
আঙটিটা না পড়ে ট্যাঁকে রেখে আমার দিকে ঠাকুর ঘুরতেই এক অভাবনীয় ঘটনা ঘটে গেলো। জমিদার তার পাশে পরে থাকা তলোয়ার তুলে ঝড়ের বেগে ঠাকুরের দিকে ছুটে এলো। আমি সঙ্গে সঙ্গে নিজের তলোয়ারখানা ঠাকুরের দিকে ছুড়ে দিলাম কিন্তু তাও অনেক দেরী হয়ে গেছে। ঠাকুরকে আড়াল করতে গিয়ে মা জননীর শরীরে তলোয়ারের ফলা প্রবেশ করলো। ঠাকুর সঙ্গে সঙ্গে বাঁহাতে জমিদারের টুটি টিপে ডান হাতে ধরা তলোয়ারখানা সোজা জমিদারের পেটে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিলো। 
দৌড়ে ছুটে গেলাম মা জননীর কাছে। যন্ত্রনায় ছটপট করছে। দুহাতে আজলা ভরে তুলে নিলেন ঠাকুর। কোনদিকে না তাকিয়ে ঝড়ের মতো বেরিয়ে গেলেন। আমি পিছনে ছুটলাম। ঠাকুরের তখন পাগলপ্রায় অবস্থা, সবার জন্যই মন কাঁদে তবে এই ঘটনা সবার থেকে আলাদা। আমি বুঝতে পেরেছিলাম সেদিন যদি মাজননী ওভাবে এগিয়ে না আসতেন তাহলে ঠাকুরকে আমরা হারাতাম। 
-- মোক্তার, কোবরেজকে তুলে আন। ঠাকুরের বজ্রকঠিন কন্ঠ শোনা গেলো।

এ ঘটনার প্রায় দুদিন পর মা জননী একটু সুস্থ হলেন ওনার মুখে সবটা শুনে সমস্ত ঘটনাই পরিষ্কার হলো। জমিদার যে কত নীচ তার প্রমান মিললো। নইলে নিজের বোনের দিকেও কেউ কুনজর দিতে পারে। হ্যাঁ, মা জননী জমিদারের নিজের মায়ের পেটের বোন। সেদিন যদি আমরা সময়মতো না যেতাম তাহলে যে কতবড়ো সর্বনাশ হয়ে যেতো তা ভাবলেই শিউড়ে উঠি। 

-- ওই আঙটিটা, ওই আঙটিটা কি আপনি এনেছেন? ঠাকুরের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন মা জননী।
-- হ্যাঁ। 
-- ওই আঙটিটা সাধারণ নয় অনেক রহস্য লুকিয়ে রয়েছে ওর মধ্যে। আপনারা জানেন না, কি অপরিসীম শক্তি লুকিয়ে রয়েছে ওর মধ্যে। এখান থেকে চল্লিশ ক্রোশ দূরে যে গভীর জঙ্গল রয়েছে সেখানের এক ভাঙা মন্দির থেকে ছেলেবেলায় এই আঙটি দাদা খুঁজে পায়। তারপর এক সাধুর কাছ থেকে এর আসল রহস্য জানতে পারে দাদা। তবে নিজেও ততদিনে অনুভব করেছিল। আঙটির পাথরটা যে সে পাথর নয় ও হলো নীলা। 

বাপজান এখানে তোমার জানার জন্য বলে রাখি নীলা জিনিসটা অত্যন্ত শক্তিশালী। আসলে কিন্তু এটা হীরে তবে নীল হীরে। সাধারন হীরে যেমন কেবল ওজনের ওপর দাম নির্ভর হয় এর দাম নির্ভর হয় দৈবশক্তির ওপর। শনিগ্রহের পাথর বলে বিবেচিত এই নীলার তেজ বিভিন্ন জনের ওপর বিভিন্ন রকমের হতে পারে। কারোর কাছে সে যেমন মহাশুভ কারোর কাছে আবার সেই একই নীলা ঘোর অশুভ। বিভিন্ন রকমের নীলা হয় কিন্তু তার মধ্যে একটি অত্যন্ত শক্তিশালী "রক্তমুখী নীলা"। নীল রঙের ভিতর থেকে লাল বিচ্যুতি বেরোয় এই নীলায়। জমিদার এই রক্তমুখী নীলাই পেয়েছিলো।
 
মা জননী বলে চললেন -- তবে এ নীলা সাধারণ চারপাঁচটা রক্তমুখী নীলার থেকে ঢের গুণ বেশি শক্তিশালী। এর কয়েকটা গুণের কথা শুনলে অবাক হতে হয়, সাধু বলেছিলেন এ নীলা নিজে মালিক নির্ণয় করবে। যার আঙুলে ও থাকবে সে হবে সব থেকে শক্তিশালি। মালিক পরিবর্তনের সময় আসলে নিজে থেকেই এর শক্তি চলে যাবে। তারপর পুনরায় নিজের পছন্দের মালিকের কাছে গিয়ে এর শক্তি আবার ফিরে আসবে। পছন্দের মালিক যদি বর্তমান মালিকের রক্তের সম্পর্ক হয় তাহলে সে জন্মানোমাত্র এর শক্তি শেষ হবে আর তা না হলে দুজনই এক জায়গায় উপস্থিত থাকাকালীন এর শক্তি চলে যাবে। তবে একটা কথা, মালিক ছাড়া অন্য কোন লোক এটা পড়লে তার সর্বনাশ অনিবার্য।

ঠাকুর এতক্ষন একমনে শুনছিলো এবার একটা প্রশ্ন করলো -- মারা যাওয়ার আগে তোমার দাদা কয়েকটা কথা বলেছিলো তখন অবাক হয়েছিলাম ঠিকই তবে আমল করিনি, এখন বুঝতে পারছি। এই বলে ট্যাঁকে রাখা আঙটিটা বের করে আনলো -- কিন্তু লক্ষ করো, এ নীলা রক্তমুখী নীলা হওয়া সত্ত্বেও এর মধ্যে কোন লাল রঙের বিচ্যুতি দেখা যাচ্ছে না?
এ আঙটি নিজে মালিক নির্বাচন করে। শেষের কথাগুলো আস্তে আস্তে বলেই আঙটিটা পড়ে ফেললেন ঠাকুর। সঙ্গে সঙ্গে খেয়াল করলাম নীল রঙের মধ্যে লালের আভা ফুটে উঠেছে। বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেলাম।
[+] 3 users Like HASIR RAJA 19's post
Like Reply
#40
গল্পের নামটা পরিবর্তন করলাম। সকলকে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। নতুন পর্বটি কেমন লাগলো জানাবেন।
Like Reply




Users browsing this thread: 3 Guest(s)