Poll: How is the story
You do not have permission to vote in this poll.
Good
100.00%
16 100.00%
Bad
0%
0 0%
Total 16 vote(s) 100%
* You voted for this item. [Show Results]

Thread Rating:
  • 118 Vote(s) - 3.43 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica চন্দ্রকান্তা - এক রাজকন্যার যৌনাত্মক জীবনশৈলী
আপডেট দাও
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(26-02-2021, 07:55 PM)dada_of_india Wrote: কুয়াশা কোথায়? তাহলে কি চক্ষে চালশে হোল?
সবই দেখি ধোঁয়াশা ! তবে কি প্রেম পালিয়ে গেলো?
মাখো মাখো ভালোবাসা এখন "মরন মিনসে" ! 
রঙ্গিন স্বপ্ন দেখব তাতেও যে তার হিংসে ! 
কবে শেষ মিলেছিলাম তারিখ পাইনা খুঁজে ! 
এখন কথাও বলতে হয় তোমার মেজাজ বুঝে ! 
কেন বোঝোনা লিঙ্গ আমার করে বড়ই উৎপীড়ন !
তোমার শরীরে হিমের পরশ ! আমার মনে হিরণ !

তোমার নাকি করোনা , টাইফয়েড আর ডায়ারিয়া সব একসঙ্গে চলছে ....
Sad


এই অবস্থায় এরকম কবিতা লেখা , সত্যি ভাবা যায় না !!!
Namaskar Big Grin Namaskar
Like Reply
বিঃ দ্রঃ – পরবর্তি কিছু আপডেটে আমি ছবি দেওয়ার চেষ্টা করেছি, যাতে আমার গল্পের স্থানএর একটা সুষ্পষ্ট অনুমেয়তা ধরা পড়ে… ছবিগুলী চন্দ্রকান্তার থেকেই পাওয়া… আশা করি পাঠক/পাঠিকাদের ছবি সমেত এই আপডেট ভালো লাগবে…
 
ধন্যবাদান্তে…

[Image: Title-Chp-8.png] 

কাউন্টেস্‌ অফ ব্র্যাডফিল্ডস্‌
 
বিশাল লোহার গেটের সামনে গাড়িটা এসে থামে … গাড়িটা অলিভীয়ারই… কিন্তু আজকে তার আবদার রাখতে সূর্যকেই চালিয়ে আসতে হয়েছে এখানে… প্রথমে একটু ইতঃস্থত করছিল সূর্য… কিন্তু অলিভীয়া গুনগুনিয়ে উঠেছিল… ও নাকি এত খুশিতে গাড়ি চালাতে পারবে না বলে… সূর্যের গলা জড়িয়ে আদুরে স্বরে তাকেই চালাতে অনুরোধ করেছিল সে… প্রিয়ার সে অনুরোধ ফেলতে পারেনি সূর্য… তথাস্তু বলে সেই স্টিয়ারিংএ বসেছিল আজ… লন্ডন থেকে অক্সশট… বেশি না… মেরে কেটে সতেরো থেকে আঠারো মাইল… অলিভীয়ার ফোর্ড গাড়িতে খুব বেশি হলে ঘন্টা খানেকের পথ… খুশি মনেই তাই মেনে নিয়েছিল সূর্য, অলিভীয়ার সে আবদার… কারণ আজ বড়ই খুশি তার প্রণয়নী… বাড়ি এসেছে সে… তার মনের মানুষকে সাথে নিয়ে… বাবা মায়ের সাথে আলাপ করিয়ে দিতে…

 
সূর্য এই ক’দিনে অলিভীয়ার কাছ থেকে শুনেছে যে তাদের বাড়ি নাকি বেশ বড়… কিন্তু তাকে লন্ডনে ঐ এক কামরার ফ্ল্যাটে থাকতে দেখে প্রায় কিছুই আন্দাজ সে যে করতে পারে নি, সেটা বোঝে অলিভীয়ার বাড়ির গেটের সামনে পৌছে… যতটা না সে অবাক হয় বাড়িটা দেখে, তার থেকে বেশি অবাক লাগে তার অলিভীয়ার ওই ভাবে একেবারে সাধারণ ভাবে লন্ডনে জীবন যাপন করা দেখে… এই এত বড় পরিবারের মেয়ে হয়ে ওই ভাবে কেউ কাটাতে পারে? সেও খুব একটা সাধারণ বাড়ির ছেলে নয় মোটেই… তারও একটা বংশ ঐতিহ্য আছে বটে… এখন ক্ষয়িষ্ণু হলেও, সেও রাজবংশেরই ছেলে… কিন্তু তাদের সে বৈভব যে ম্লান হয়ে যায় এ হেন বিত্তের সামনে… মনে মনে একটা গর্ব ছিল সূর্যের, অস্বীকার করে লাভ নেই, যে সে দর্পনারায়ণের বংশধর বলে… তাদের কুলমর্যাদা অপরিসিম… কিন্তু এখানে এসে যদি না দেখতো সে, তাহলে বুঝতেই পারতো না হয়তো একটা এত বড় বংশের মেয়ে হয়েও কি অমায়িক এই অলিভীয়া… কখন, কোন দিন, কোন ভাবেই সেটা তাকে সে বুঝতে দেয় নি প্রকারান্তারে… তার সাথে সহজ সাবলিলতায় মিশেছে… ঘুরেছে… আনন্দ করেছে একেবারে এক সাধারণ মেয়ের মতই…
 
গাড়ির উন্ডস্ক্রিনের মধ্যে থেকে গেটের ফাঁক দিয়ে বাড়িটির দিকে তাকিয়ে মুখ ফেরায় পাশে বসা অলিভীয়ার দিকে… সেই মুহুর্তে অলিভীয়ার মুখের ওপরে যেন হাজারটা ঝাড়বাতির আলো চকচক করছে… মনের অফুরাণ আনন্দে…
 
সূর্যকে তার দিকে তাকাতে দেখে ভ্রূ তোলে অলিভীয়া… “হোয়াট? আর ইয়ু নট এক্সাইটেড?” বাচ্চা মেয়ের মত হাত জড়ো করে প্রায় খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে সে… “আমি তো ভি-ই-ষ-ন এস্কাইটেড… জানো? আজকে তোমার সাথে মম্‌ আর ড্যাড এর আলাপ করিয়ে দেবো… বলবো… দেখো… কাকে সাথে করে এনেছি আমি… আমার মনের মানুষকে… যার হাত ধরে আমি সারাটা জীবন চলার প্রতিজ্ঞা করেছি… স্বপ্ন দেখেছি আমি তার স্ত্রী হিসাবে প্রথম দর্শনেই…”
 
“কিন্তু… কিন্তু তোমার মম্‌ ড্যাড যদি না মানে আমাদের সম্পর্ক?” অলিভীয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে সূর্য… হটাৎ করেই কেন জানে না সে, কেমন একটা ভয় ভয় করছে তার মনের মধ্যে… কিরকম নিজেকে বেমানান লাগতে শুরু করেছে অলিভীয়ার পাশে… মনের মধ্যে যেন একটা কু-ডাক শুনতে পাচ্ছে সে… কেন? তা সে বলতে পারে না… কিন্তু ডাক সে শোনে…
 
“ওহ! ও… তুমি না… আগেই যত সব বাজে বাজে চিন্তা করে বোসো… ইয়ু ডোণ্ট নো মাই ফ্যামিলি… ওরা এত ভালো… এতো ভালো যে কি বলবো… আর আমায়?” বলতে বলতে আবার চকচক করে ওঠে অলিভীয়ার গভীর নীল চোখ… “আমায় যে কি ভালোবাসে ওরা… আমি ছোট্ট বেলা থেকে… জানো!... জাস্ট… একবার মুখ ফুটে বলেছি… ব্যস… সাথে সাথে আমার সামনে হাজির করে দিয়েছে… কি মম্‌ কি ড্যাড…” একটু থেমে ফের কলকলিয়ে ওঠে সূর্যের প্রাণভোমরা… “আমার দাদারা… ওরাও একেবারে একই রকম… বোন বলতে একেবারে অজ্ঞান… আর হবে নাই বা কেন বলো… আমি… এই আমি…” নিজের বুকের দিকে আঙুল তুলে বলে ওঠে… “একটা মাত্র বোন ওদের… বুঝতেই পারছ… কি পরিমানটাই না আমায় আস্কারা দিয়ে মাথায় তুলেছে… হি হি…”
 
অলিভীয়া যে বাড়ির খুবই আদুরি মেয়ে, সেটা এই মুহুর্তে তার বাড়ির গেটে গাড়িতে বসে বুঝতে অসুবিধা হয় না সূর্যর… বুঝতে অসুবিধা হয় না তার কি বিশাল বৈভবের মধ্যে দিয়ে সে বড় হয়েছে… আর সেটা বুঝেই যেন কিছুটা হীনমন্যতা এসে যায় তার মনের মধ্যে… মনে পড়ে যায় তাদের প্রথম সাক্ষাৎকারের সময়ে অনিন্দীতার প্রাথমিক অভিব্যক্তি… তাকে ভারতীয় ভেবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার… তখন হয়তো সে অলিভীয়ার সেই তাচ্ছিল্যকে গুরুত্ব দেয় নি… বরং তার সৌন্দর্যের প্রতি, তার দেহসৌষ্ঠবের প্রতি কিছুটা আকৃষ্ট হয়েছিল… তার স্বভাব বশে… যেটা পরবর্তী কালে প্রণয়ে রূপান্তরীত হয়ে গিয়েছে… অলিভীয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে… এখন হয়তো অলিভীয়া তাকে প্রাণের চেয়েও ভালোবাসে, হয়তো বাই কেন… বাসে… সেটা সূর্য জানেও… অন্তত ওর ব্যবহার, তার প্রতি আকর্ষণ সেটা বারংবার প্রমানিত করে এসেছে এই ক’মাসে… কিন্তু… তাও একটা সুক্ষ্ম কিন্তু থেকেই যায় মনের মধ্যে… অলিভীয়া তাকে ভালোবাসে মানেই এই নয় যে তার পরিবারও একজন ভারতীয়কে তাদের ঘরের লোক বলে মেনে নেবে… এটা তার বাড়ি হলেও হতো না… সে জানে তারও পরিবার কি ভিষন রকম গোঁড়া এই সব বিশয়ে… নিজেদের সমাজিকতা, বংশ মর্যাদা নিয়ে কি ভিষন উন্নাসিক রুদ্রনারায়ণ… কিন্তু তার কথা আলাদা… সে পুরুষ… তার পরিবার যদি অলিভীয়াকে নিজের না করতে পারে, তাতে তার কিছু যায় আসে না… এমনিতেও সে পরিবার থেকে একটু হলেও আলাদা মানসিকতার… তার সে অহংবোধ বাকিদের মত অতটা উগ্র নয়… আর নয় বলেই অলিভীয়ার প্রেমের ডাকে সাড়া দিতে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয় নি কখনও… কিন্তু সে ভাবে নি বলেই যে অলিভীয়ার পরিবারও ভাববে না, এমনটা তো হতে পারে না… বিশেষতঃ তারা যখন এতটাই বিত্তশালী পরিবারের মানুষ… তার উপরে এদের শরীরে প্রকৃত ব্রিটিশ রক্ত বইছে… যারা কিনা এখনও ভারতীয়দের নিজেদের দাসুনাদাস ভাবতে ভোলে না… এখনও তারা ভাবে যে ভারতীয়রা তৃতীয় বিশ্বের প্রাণী… তাদের সমকক্ষ্য নয়… তাদের সে ধারণা হয়তো সর্বাজ্ঞে ভ্রান্ত… কিন্তু সে ভ্রান্তি দূর করার দায় তো সূর্যের নেই… আর নেই বলেই যেন মনের মধ্যের খচখচনিটা যায় না কিছুতেই…
 
“হেই… হোয়াট? কি ভাবছো? লেটস্‌ গো ইন্সাইড…” অলিভীয়ার সুরেলা গলার স্বরে সম্বিত ফেরে সূর্যের… ঘাড় ফিরিয়ে অলিভীয়ার দিকে তাকায় সে…
 
বড় সুন্দর করে সেজেছে আজ যেন অলিভীয়া… দীঘল চোখ… পাতলা ঠোঁটে রক্তিম লিপস্টিকের সুচারু টান… একটা লম্বা পা অবধি ঢাকা গাঢ় সবুজ গাউনএর মত ড্রেস পড়েছে… যার কাঁধটা অনাবৃত… পোষাকটি শুরু হয়েছে অলিভীয়ার বর্তুল ভরাট স্তন দুটিকে চাপা দিয়ে… বুকের উপরে কাপড়ের কুঁচি দিয়ে তৈরী করা ফুলের আকৃতিতে… আজকে মাথার রেশমী চুলটাও তুলে সুন্দর করে টেনে ফ্রেঞ্চ নট করে বেঁধে নিয়েছে… কানে ছোট্ট দুটো পান্না বসানো দুল… গলা জড়িয়ে রয়েছে অগুন্তি ছোট ছোট হিরে বসানো একটা চওড়া নেকলেস… আর সেই নেকলেস থেকে একটা বেশ বড় চৌকোনা পান্নার পেন্ডেট ঝুলে রয়েছে… যেটি ঠিক দুই বক্ষের বিভাজিকার মাঝে এসে থমকে দাঁড়িয়েছে যেন… যার উপস্থিতিতে পোষাকের কাপড়ের উপর থেকে প্রায় উথলিয়ে বেরিয়ে আসা স্তনের অল্প কিছু উপরি অংশের ত্বকের ঔজ্জল্য আরো বর্ধিত করে তুলেছে…
 
“হ্যালো! হোয়ার আর ইয়ু? কি দেখছ এ ভাবে?” গাঢ় চোখে তাকিয়ে প্রশ্ন করে অলিভীয়া… সূর্য যে তারই রূপসুধা পানে ব্যস্ত সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না তার… আর সেটা বুঝে যেন মনে মনে আরো খুশিটা উছলিয়ে ওঠে… চকচক করে ওঠে তার গভীর নীল চোখের দ্যুতি… ঝলমলিয়ে ওঠে মনের খুশিটা তার রাঙানো ঠোঁটের কোনে… 

মৃদু হাসে সূর্য অলিভীয়ার প্রশ্নে… মাথা নেড়ে চাবি ঘোরায় গাড়ির ড্যাসবোর্ডে… তারপরেই কি ভেবে মাথা ফেরায় অলিভীয়ার দিকে… “ওহো!... দাঁড়াও, তুমি বসো, আমি গেটটা আগে খুলে আসি…” বলতে বলতে গাড়ি থেকে নামতে উদ্যত হয় সূর্য…
 
তাড়াতাড়ি তার হাত টেনে ধরে অলিভীয়া… হাসতে হাসতে বলে, “আরে… ওয়েট ওয়েট… তোমায় নামতে হবে না… গেট খুলে যাবে এখুনি… তুমি জাস্ট দুবার হর্ণ বাজাও…”
 
হয়েও তাই… দুবার হর্ণএ আলতো করে চাপ দিতেই সত্যিই গেটটা ধীরে ধীরে নিজের থেকেই খুলে দুই পাশে সরে যায় আপনা থেকে… জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় সে অলিভীয়ার দিকে…
 
“আরে অবাক হচ্ছ কেন? ওটা অটোমেটেড গেট… অ্যাকচুয়ালি বাড়ির ভিতরে আমাদের যে সিকুউরিটি অফিসার আছে, সেই ওখান থেকে গেটটা অপরেট করে… আর ওরা চেনে আমার গাড়ি, তাই হর্ণ বাজালেই যথেষ্ট… যাক… চলো… ভেতরে যাওয়া যাক…” বলতে বলতে সিটের উপরে হেলান দিয়ে সামনে তাকিয়ে বসে অলিভীয়া… সূর্য গিয়ার বদলায়… গাড়ি ধীরে ধীরে গড়ায় সামনের পানে…
 
চারপাশে যেন অনন্ত সবুজ দিয়ে ঘেরা পুরো দূর্গসম অট্টালিকাটা… যাকে ক্যাসেল বলে এখানকার অধিবাসীরা… সেই গাঢ় সবুজ ঘেরাটোপের পরেই নিপুন করে ছাঁটা ঘাসের মাঠ আর সুন্দর কোয়েরি করে রাখা ফুলের গাছের ঝাড়ের মাঝখান দিয়ে বাঁধানো পথ… সেই পথের উপর দিয়ে গাড়ি এগিয়ে চলে অনতিদূরে দাঁড়িয়ে থাকা ধবধবে সাদা বিশাল অট্টালিকার দিকে…
 
পুরো অট্টালিকাটি অদ্ভুত ভাবে তৈরী… একদিকে দ্বিতল, আর অপর পাশটিতে একতলা… সামনের অংশটিতে বিশাল বিশাল চারটি থামের উপরে তার দেউড়ি… বাঁধানো পথের শেষ প্রান্তে এক পাশে সুদৃশ্য গাড়ির গ্যারেজ… সূর্য দেখে গ্যারেজের সামনে আরো দুখানি গাড়ি, একটি বেন্টলী আর একটি রোলস্‌ রয়ালস্‌ দাঁড় করানো রয়েছে… সুদৃশ্য সে অট্টালিকা এতটুকুও কালের ভ্রূকুটির কোন আভাষ নেই… রীতিমত পরিচর্যার ছোঁয়া তার সমস্ত শরীরে…

[Image: 3.jpg]
[Image: 2.jpg]

বাড়িটির একটু দূরেই আর একটি আউট হাউস চোখে পড়ে সূর্যর… হয়তো সেটি অতিথি অভ্যাগতদের আপ্যায়ন বা থাকবার জন্য রাখা রয়েছে… সেটিও যে যথেষ্ট যত্ন করেই রাখা, তা দেখলেই বোঝা যায়… মোটামুটি গাড়ি চালিয়ে যেতে যেতে এদিক সেদিক তাকিয়ে সূর্য যা বোঝে, তাতে এটা তার কাছে স্পষ্ট যে অলিভীয়ার বাড়িটি প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ বিঘার উপরে অবস্থিত… হয়তো আরো বেশি বই কম নয়…
 
তাদের গাড়ি দোড়গোড়ায় দাঁড়াতেই কোথা থেকে দৌড়ে আসে ধোপদূরস্ত পোষাকে পরিহিত এক ভদ্রলোক… হন্তদন্ত হয়ে অলিভীয়ার দিকে এসে তার দরজা খুলে ধরে সে… অলিভীয়া গাড়ি থেকে নেমে ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে ওঠে, “থ্যাঙ্কস্‌ ডেভিড্‌… ড্যাড আছে?”
 
সসন্মানে অলিভীয়ার থেকে একটু তফাতে সরে গিয়ে উত্তর দেয় ভদ্রলোক, “হ্যা, আছেন, তবে একটু ব্যস্ত… লাইব্রেরিতে রয়েছেন…”
 
“ওহ!... সেটা আর নতুন কি? ড্যাড এমনি বসে আছে, এটা তো ভাবাই দুষ্কর…” হেসে বলে ওঠে অলিভীয়া… তারপরেই প্রশ্ন করে সে, “অ্যান্ড হোয়াট অ্যাবাউট মম্‌?”
 
ফের একই রকম বিনয়ের সাথে উত্তর দেয় ডেভিড্‌ নাম্মি ভদ্রলোক… “কাউন্টেস্‌ বেরিয়েছেন… আজকে ওনার রয়াল প্যালেসে একটা মিটিং আছে, সেটার জন্য… তবে উনি এসে পড়বেন খুব শিঘ্রই…”
 
‘কাউন্টেস্‌’ কথাটা কানে লাগে সূর্যের… মনে মনে একটা ছবি আঁকার চেষ্টা করে অলিভীয়ার পিতা মাতার… চেষ্টা করে কাউন্ট কাউন্টেস্‌ কে কেমন দেখতে হবে বা তাদের স্বভাব কি রকম হতে পারে বলে… লন্ডন আসা ইস্তক অনেক মানুষের সাথেই তার আলাপ হয়েছে… তাদের মধ্যে অনেক ধনী ব্যক্তিও আছে… কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোন কাউন্ট বা কাউন্টেসের সাথে আলাপ হওয়ার সৌভাগ্য বা দূর্ভাগ্য ঘটে নি… অলিভীয়ার দৌলতে তাহলে সেটাও হয়ে যাবে… ভাবতে ভাবতে মনে মনে হাসে সূর্য… গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে…
 
“হুম… বুঝলাম…” বলে ওঠে অলিভীয়া, তারপর গাড়ির দিকে ফিরে স্মিত হেসে বলে ওঠে সূর্যকে লক্ষ্য করে, “হেই সূর্য… দিস্‌ ইজ ডেভিড…” তারপর ডেভিডের দিকে ফিরে বলে, “অ্যান্ড দেয়ার হি ইজ… মাই সুইটহার্ট… সূর্য…”
 
সূর্যের দিকে মাথা ঝোঁকায় ডেভিড নাম্নি ভদ্রলোক সসন্মানে… “হ্যালো স্যর…” অভিবাদন জানায় ঘাড় ঝুঁকিয়ে সামান্য… সূর্য বোঝে ডেভিড এ বাড়ির শফিউর…
 
তাদের কথা মধ্যেই বাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে আরেক ধোপদূরস্থ পোষাকের ভদ্রলোক… ডেভিডের থেকে একটু বেশিই বয়ষ্ক… দেখে অন্তত ষাট বাষট্টির কাছেকাছি বলে মনে হলো সূর্যের… ভদ্রলোক এগিয়ে এসে আগের মতই ডেভিডের কায়দায় অভিবাদন জানায় অলিভীয়াকে… অলিভীয়া তার দিকেও স্মিত হেসে হাত তুলে বলে ওঠে, “হ্যালো টম্‌…”
 
টম্‌ নাম্মি ভদ্রলোক বিগলিত হাসি হেসে বলে ওঠে, “আপনি আসবেন সেটা তো বলেন নি আগে… তাহলে স্যরকে বলে রাখতাম…”
 
উত্তর খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে অলিভীয়া… হাসার সাথে যেন তার শরীরটাও একই রকম ভাবে হেসে ওঠে উচ্ছলতায়… “না না… আগে ঠিক ছিল না টম্‌… হটাৎ করেই ভাবলাম চলে আসি বাড়িতে একবার…” 

টম্‌ অলিভীয়ার কথায় মাথা নেড়ে উত্তর দেয়, “তা বেশ করেছেন… কিন্তু স্যর তো এখন একটু ব্যস্ত রয়েছেন… আপনি ততক্ষন না হয় আপনার ঘরেই বিশ্রাম করুন, আমি বলে দিচ্ছি ভেতরে…”
 
“ইটস্‌ ওকে টম্‌… অত ব্যস্ত হতে হবে না তোমায়…” তারপর সূর্যের দিকে ফিরে বলে, “সূর্য… এ হচ্ছে টম্‌… আমাদের বাড়ির বাট্‌লার… তুমি জানো? আমায় সেই ছোট্ট থেকে দেখে আসছে ও…” তারপর টম্‌ এর দিকে ফিরে বলে, “আর টম্‌… আজ কিন্তু আমি একা আসিনি… সাথে আমার মনের মানুষও এসেছে… তাই দেখো…”
 
অলিভীয়ার মুখের কথা শেষ হয় না, টম্‌ ভদ্রলোকটি তাড়াতাড়ি বলে ওঠে, “এ নিয়ে কিছু ভাববেন না ম্যাম্‌… আমি সব বন্দোবস্থ করে দেবো…” 

অলিভীয়ার কথায় মনের মধ্যে বাবামশাইয়ের খাস লোক, যদুর মুখটা ভেসে ওঠে সূর্যের মনের মধ্যে… সরল সাধাসিধে মানুষ যদু… ছোটবেলা থেকে একই রকম দেখে আসছে তাকে… সেই হাঁটুর কাছে উঁচু করে পরা ধুতি আর গায়ে একটা ফতুয়া… শীতকালে ফতুয়ার উপরে বড়জোড় একটা মোটা শাল, সেটাও হয়তো বাবামশাইয়েরই দেওয়া… খালি পায়ে এদিক সেদিন দৌড়ে বেড়াচ্ছে সে বাবামশায়ের মুখের একটা কথায়… আজ পর্যন্ত কোন দিন যদুদার মুখে কখনও বিরক্তির কোন ভাব দেখেনি সে… নিজের হাতে যেন বাড়ির সকলের দায়িত্ব নিয়ে রেখেছে একা, কাঁধের উপরে… আর অলিভীয়ার বাড়ির বাট্‌লার… টম্‌… ধোপদূরস্থ কেতার পোষাক পরিহিত… দেখে যেন তাকেই বাড়ির কর্তা মনে হয়… 

টম্‌ এর কথায় খুশি হয় অলিভীয়া… হেসে বলে, “ইয়েস… দ্যট আই নো ইয়ু উইল…” তারপরেই সূর্যের দিকে ফিরে বলে, “চলো? ভিতরে চলো… এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি?”
 
অলিভীয়ার দিকে ম্লান হেসে ইতিবাচক মাথা নাড়ে সূর্য… পড়ন্ত রোদে যেন তখন ঝলমল করছে অলিভীয়ার মুখটা… পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ডেভিডএর দিকে তাকাতেই শশব্যস্ত হয়ে বলে ওঠে ডেভিড… “ইয়েস ম্যাম্‌… আপনি ভেতরে যান, আমি গাড়ি গ্যারেজে ঢুকিয়ে দেবো…” 

ডেভিডের কথায় তাকে এক উজ্জল হাসি উপহার দিয়ে হাত বাড়িয়ে সূর্যের বাহু ধরে হাঁটা লাগায় বাড়ির দিকে… পেছন পেছন টম্‌ আসে শশব্যস্ততায়…
বাড়ির মধ্যে ঢুকতেই বাইরের তাপ যেন নিমেশে উধাও হয়ে যায়… বেশ আরামদায়ক মনরম আবহাওয়া… চকমিলানো মেঝে… বেশ বড় বৈঠকখানা… অনেকটা তারই যেন বেলাডাঙায় এসে পড়ে সূর্য… কিন্তু তাদের বেলাডাঙার চৌধুরীবাড়ি আজ কালের কবলে অনেকটাই ক্ষইষ্ণু… যেটা এখানে তার কোন ছাপ নেই কোথাও… আসবাব পত্র প্রায় সবই সাবেকি, কাঠের, মূল্যবান… কিন্তু সঠিক পরিচর্যার ছোঁয়া সর্বত্র… কেমন তার মনে হয় যেন হটাৎ করে বিংশ শতাব্দী থেকে এক ঝটকায় অষ্টাদশ শতাব্দীতে এসে ঢুকলো সে… পালিশ করা কাঠের সিড়ি বৈঠকখানার শেষ প্রান্ত থেকে উঠে গিয়েছে উপর তলের পানে… এক দিকে সম্ভবত লাইব্রেরীই হবে… সূর্যের ওখানে দাঁড়িয়ে তাইই মনে হয়… দূর থেকে খোলা দরজা দিয়ে ঘরের ভিতরে দেওয়াল আলমারী জোড়া প্রচুর বইয়ের সারি চোখে পড়ে… বৈঠকখানায় অনেকগুলি মখমলের গদি মোড়া কেদারা পাতা রয়েছে… একটা কালো কাঠের কারুকার্য করা টেবিলের চার ধারে… ঘরের প্রতিটা কোনায় একটি করে মূর্তি রাখা… ধাতুরই হবে… বেশ বড় বড়… মাথার উপর থেকে একটা বড় ঝাড় বাতি ঝুলছে… এটা অবস্য তাদের বাড়িতেও বর্তমান… তাদের প্রতিটা ঘরে এখনও ঝাড়বাতি ঝোলে… সে দিক দিয়ে তারাও যে কম কিছু না এদের থেকে সেটা দেখে বুঝতে অসুবিধা হয় না সূর্যের… আর সেটা বুঝে যেন মনে মনে আগের সেই অস্বস্থিটা অনেকটা হ্রাস পায় তার… হ্যা, এটা ঠিক… অলিভীয়া যথেষ্ট উচ্চবংশের মেয়ে… বিত্তশীলও বটে তার পরিবার… কিন্তু সেখানে তুল্যমূল্য বিচার করতে গেলে সেও কোন যে সে বংশ থেকে আসেনি… তারও পরিবারে রাজরক্তের ছোঁয়া রয়েছে বইকি… শুধু একটাই তফাৎ, তাদের সে বৈভব পড়ন্ত বেলায় পৌঁছেছে, আর অলিভীয়াদের এখনও সেই ঠাঁট বাঁট বজায় রেখে চলছে… আর বেশি কিছু নয়…
[+] 6 users Like bourses's post
Like Reply
চিন্তার জাল ছেঁড়ে অলিভীয়ার আমন্ত্রণে… “চলো সূর্য… ততক্ষন আমার ঘরে গিয়ে বসবে… মম্‌ এর আসতে মনে হচ্ছে আরো একটু সময় লাগবে…”
 
“কিন্তু এ ভাবে হুট করে একেবারে তোমার ঘরে চলে গেলে…” কথাটা শেষ করতে দেয় না অলিভীয়া সূর্যকে… খিলখিলিয়ে হেঁসে ওঠে সে… “তুমি একটা যা তা… তু-মি-ই… মিঃ সূর্যনারায়ণ চৌধুরী… এই অলিভীয়া ব্রাডফিল্ডএর হবু স্বামী… সে আমার ঘরে যাবে, সেটা নিয়ে ইতঃস্থত করছে… এবার কিন্তু আমি সত্যিই খিলখিলিয়ে হেঁসেই ফেলবো… এই বলে দিলাম…”
 
অলিভীয়ার কথায় অনেকটাই সহজ হয়ে ওঠে সূর্য… মৃদু হেঁসে মাথা নাড়ে… “আচ্ছা বাবা… তোমার সাথে কথায় আমার পেরে ওঠা সম্ভব নয়… চলো… কোথায় নিয়ে যাবে আমায়…”
 
গভীর চোখে তাকায় সূর্যের পানে অলিভীয়া… গাঢ় স্বরে বলে ওঠে সে, “যদি বলি মরণের ওপারে? যাবে তাহলে? আমার হাত ধরে?”
 
অলিভীয়ার কথায় খানিক তার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে সূর্য… তারপর ধীরে ধীরে অলিভীয়ার দুটি হাতের পাতা নিজের হাতের মধ্যে তুলে নিয়ে গম্ভীর স্বরে বলে ওঠে সে…
 
অনেক রৌদ্রের দাহ, অনেক ঝঞ্জার প্রহরণ,
অনেক প্লাবন মারী, বহু হৃদি রক্তের ক্ষরণ
সহিয়াও জননী বসুধা
ঋতুপাত্র ভরি ভরি এনে দেয় নিত্য নব সুধা।
 
এ ধরিত্রী মাতা ও দুহিতা
সর্বংসহা, শান্ত, অনিন্দীতা।
তাই ত দুহিতা তার ভঙ্গুর মাটির পত্র ভরি
যোগায় ক্ষুধার অন্ন পানীয় ওষ্ঠে ধরি।
 
নারী সে বিচিত্র রূপে তার
গৃহে ও বাহিরে করে কর্মক্ষেত্র প্রসারি আবার
জননী স্তন্যদানে, ভগিনী কৈশোরে খেলা সাথী
পুরুষের। সন্ধ্যায় সে বধূরূপে জ্বালে গৃহে বাতি।
কঠোর সংগ্রামময় জীবনের অন্ধকার রাতে
আশার বর্তিকা নিয়ে হাতে
নরেরে প্রেরণাদানে নারী
সংসার সাম্রাজ্য হয় তারি,
সাম্রাজ্ঞী সে আপন গৌরবে
রজনীগন্ধার মতো পেলব সৌরভে
নরেরে আপন করি লয়
মমতার মধূভরা নারীর হৃদয়
চিরদিন, সর্বযুগে নারী মহীয়সী
প্রাণের আলোকে জ্বালি এ বিশ্বেরে তুলিছে উদ্ভাসি।
 
সূর্যের কথাগুলির মানে বুঝতে পারে না অলিভীয়া… কিন্তু তার বলার ধরণে এটা বোঝে, সূর্যের মনের গভীরে তার প্রতি, নারী সত্তার প্রতি কতটা অনুরাগ ভরে রয়েছে সেটার… কতটা স্বচ্ছ হৃদয়ের মানুষ সূর্য… সে যে জীবনে চলার পথের সঙ্গীচয়ণে কোন ভুল পদক্ষেপ নেয় নি সেটা দ্বিতীয়বার ভাবার আর অবকাশ নেই… কোন সন্দেহের অবশষ্ট নেই সেখানে… অলিভীয়ার গলা বুজে আসে আবেগে… ইচ্ছা করে তখনই ওখানেই সূর্যকে জড়িয়ে ধরে তার পুরষালী ওষ্ঠে এঁকে দেয় ভালোবাসা ভরা চুম্বন…

[Image: 5.jpg]


সূর্যের হাতে হাত রেখে উঠে আসে তারা উপর তলায়, কাঠের সিড়ি বেয়ে… বেশ বড় অলিন্দ… অবস্য সেটাই হওয়া স্বাভাবিক… বাইরে থেকে বাড়িটি দেখে ভেতরটাও যে বেশ প্রসস্থই হবে, সেটা বুঝে নিতে অসুবিধা হয় নি সূর্যের… অলিন্দের দুই পাশে ঘরের সারি… এরই মধ্যের একটি ঘরের সামনে নিয়ে আসে তাকে অলিভীয়া… ভারী দরজা ঠেলে ঘরে ঢোকে তারা… 

ঘরটি দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় সূর্য… কি অপূর্বতায় সাজিয়ে রাখা সে ঘর… বেশিরভাগই কাঠের ব্যবহার এখানেও… আর চার দেওয়ালেই উপর পানে দেওয়াল জোড়া অয়েল পেনটিং এর সমারহো… মেঝেতে চকমেলানো কাঠের পাটাতন পাতা… ঘরের দেওয়ালেও কাঠের ব্যবহার চোখে পড়ে… এত কাঠের ব্যবহার আসলে বাইরের ঠান্ডা আবহাওয়া রোধকের প্রয়োজনেই ব্যবহৃত, সেটা বোঝে সূর্য…
 
ঘরের এক পাশে কাজ করা সুদৃশ্য ড্রেসিং টেবিল… আর ড্রেসিং টেবিলটার ঠিক মাথার উপরে একটা শ্বেত পাথরের উপরে খোদাই করা অপূর্ব নারী মূর্তি… ড্রেসিং টেবিলের দুই পাশে মোমদানি রাখা দুটি, প্রতিটাতে পাঁচটি করে বড় মোমবাতি বসানো… ঘরের মধ্যে বৈদ্যুতিক আলো থাকলেও এটা যে ঘরের অঙ্গসজ্জারই অংশ সেটা বোঝা যায়… ঠিক তেমনই মাথার উপরের ছাদ থেকে ঝুলতে থাকা প্রায় বিশ পঁচিশটা মোমবাতি বসানো আলোর ঝাড়বাতি… ড্রেসিং টেবিলের এক পাশে একটি গদী মোড়া কাঠের কেদারা… হয়তো সেটাতে বসেই অলিভীয়া তার রূপচর্চা সারে… ঘরের একেবারে কোনায় কাঠেরই বেদীতে বসানো কারুকাজ করা পালঙ্ক… নরম মখমলের গদি মোড়া তাতে… সেটার চারপাশ থেকে ঝুলতে থাকা সাটিনএর পর্দা… যে দেওয়ালে ড্রেসিং টেবিলটা রাখা, তারই ঠিক উল্টো দিকের দেওয়ালে দুটি জানালা… কাঁচের শার্সি তাতে… ওই জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য চোখে পড়ে… একবার তাকালেই বাইরে থাকা সবুজের সমারোহে যেন চোখ জুড়িয়ে আসে আপনা হতেই…

[Image: 7-1.jpg] 

দেখতে দেখতে একটা আন্দাজ করার চেষ্টা করে সূর্য, অলিভীয়াদের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থানের… বিগত দিনে যে এরাও তাদের মত কোন রাজবংশেরই অংশ বিশেষ ছিল, বা সরাসরি কোন রাজবংশের সাথে যুক্ত না থাকলেও হয়তো তখনকার কোন রাজপরিবারের সাথে সম্পর্কিত কোন পরিচয় থেকে থাকবে… কিন্তু এখনও যে তাদের সেই বৈভব এতটুকুও কমে নি, সেটা এই ঘর, বা বাড়ির পরিচর্যাই বলে দিচ্ছে… এখনও পর্যন্ত যতটুকু তার চোখে পড়েছে, সেখানে কোথাও এতটুকুও কোন ক্ষইষ্ণুতার লেশ মাত্র সে দেখতে পায় নি… এখনও প্রতিটা আসবাব যে সঠিক পরিচর্যায় রাখা রয়েছে, সেটার থেকেই বোঝা যায় কতটা বিত্তশালী অলিভীয়ার পরিবার এখনও… হয়তো বা প্রভাবশালীও বটে… আর সেটা বুঝেই যেন আরো বেশি করে অলিভীয়ার প্রতি তার ভালোবাসা বেড়ে ওঠে… এই পরিবারের মেয়ে হয়েও কি সাবলীলতায় সে লন্ডনের মত ওই রকম একটা শহরে মাত্র একটা এক কামরার ফ্ল্যাটে দিন যাপন করে… কি প্রয়োজন এ ভাবে থাকার? শুধু মাত্র নিজের মত করে থাকতে পারবে বলে? নিজের শিল্প চর্চা নিয়ে থাকতে পারবে ধরে নিয়ে… এই এত আরাম, এত বৈভব এত হেলায় পরিমার্জন করে কেউ থাকতে পারে? মুখ তুলে তাকায় অলিভীয়ার পানে সূর্য… 

“হেই!... কি দেখছো অমন করে?” চোখ সরু করে তাকায় অলিভীয়া, সূর্যের পানে… “উহু… এখন কিন্তু কোন দুষ্টুমী নয়…” মুচকি হেঁসে বলে ওঠে অলিভীয়া… 

“না… সে সব কিছু নয়…” মাথা নাড়ে সূর্য… গভীর দৃষ্টিতে অলিভীয়ার চোখের পানে তাকিয়ে… 

কাঁধ ঝাঁকায় অলিভীয়া… “দেন? হোয়াট?” 

মৃদু হাঁসে সূর্য… “ভাবছি… তোমার সাথে কি অদ্ভুত মিল আমার…” 

উৎসুক অলিভীয়া আরো ঘন হয়ে এগিয়ে আসে সূর্যের দিকে… “তাই? কি রকম? কি রকম?” 

“এই যে তুমি… এই এত প্রাচুর্যের মধ্যে বড় হয়েও কি সাবলীলতায় এখান থেকে দূরে, শহরের কোলাহলে একটা সাধারণ জীবন যাপন করো… নিজের সম্পত্তি প্রতিপত্তি প্রতি কোন মোহই নেই তোমার… যেন আমারই সত্তার প্রতিফলন… ঠিক যেমন আমারও দেশের বাড়ির ওই অত সম্পত্তি কি এলো গেলো কখনও কোনদিন ভাবিও নি… নিজের শিল্প চর্চা নিয়েই কাটিয়ে দিয়েছি জীবন… বাবা দাদার হাতে সব কিছু তুলে দিয়ে…” ম্লান হেঁসে বলে সূর্য…
 
“হুমমমম… জানি তো!...” মুচকি হেঁসে উত্তর দেয় অলিভীয়া… সূর্যের বাহুতে হাত রেখে বলে সে, “জানি তো সেটা… তাই তো প্রথম দেখাতেই মনটা দিয়ে ফেলেছিলাম তোমায়… তুলে দিয়েছিলাম আমার যা কিছু সব তোমার হাতে…” বলতে বলতে গলার স্বর যেন গভীর হয়ে ওঠে অলিভীয়ার… “লাভ ইয়ু সূর্য… লাভ ইয়ু ফ্রম মাই হার্টস কন্টেট্‌…”
 
অলিভীয়ার কাঁধে হাত রেখে মুখো মুখি সোজা করে দাঁড় করায় সূর্য… তারপর ধীরে ধীরে নামিয়ে আনে মুখটাকে… অলিভীয়ার কপালে একটা আলতো ছোঁয়ায় একরাশ ভালোবাসা মেশানো উষ্ণ চুম্বন এঁকে দেয়…
 
দরজার বাইরে ঠক্‌ঠক্‌ আওয়াজে সম্বিত ফেরে ওদের… অলিভীয়া মুখ ফিরিয়ে সারা নেয়… “ইয়েস… হু ইজ দেয়ার?”
 
“ম্যাম্‌… স্যর এখন ফাঁকা আছেন… কাউন্টেস্‌ ও ফিরেছেন… ওনারা আপনাদের ডাকছেন ডিনার টেবিলে…” ঘরের বাইরে থেকে টমের গলা ভেসে আসে…
 
“ওকে… থ্যাঙ্কস্‌… উই আর কামিং জাস্ট নাও…” প্রত্তুতোর দেয় অলিভীয়া… তারপর সূর্যের দিকে ফিরে এক গাল হেঁসে বলে ওঠে, “লেটস্‌ গো হানী… মম্‌ এসে গেছে… আমরা আমাদের কথা গিয়ে বলি তাদের…” 

খানিক আগে সহজ হয়ে ওঠা সূর্যের মনের মধ্যে যেন সেই অস্বস্থিটা ফের ফিরে আসে… গলা খ্যেকারি দিয়ে পরিষ্কার করে নিয়ে বলে সে, “ইট’ল বী আলরাইট আই থিঙ্ক… তোমার মম্‌ ড্যাড নিশ্চয়ই আমায় পছন্দ করবেন… তাই না বেবী?’ 

“ওহ! সার্টেনলী হানী…” সূর্যের বুকের উপরে হাত রেখে অভয় দেওয়ার চেষ্টা করে অলিভীয়া… মনে মনে সেও যতটা উত্তেজিত, নিজের মনের মানুষের সাথে মম্‌ আর ড্যাড এর আলাপ করিয়ে দেওয়া নিয়ে… ততটাই এটা সংশয়ের মধ্যেও রয়েছে বটে… মুখে সে যতই বলুক না কেন সূর্যকে… তবুও… সে তো চেনে তার মা’কে… কি ভিষণ প্রভাবশালী তার মা… নিজের উচ্চভীমান সম্পর্কে ভিষণ রকমই অধিকারীনি বলা যেতে পারে… তাও… হাজার হলেও… সে তো তার মেয়ে… এক মাত্র আদরের মেয়ে… তাই নিশ্চয়ই তার কথায় রাজি হয়েই যাবে সূর্যকে মেনে নিতে… নিশ্চয়ই হবে… এতে কোন সন্দেহই নেই… মনে মনে নিজেকে বোঝায় অলিভীয়া, সূর্যের চোখ থেকে নজর নামিয়ে নিয়ে… 

“আসলে আর কিছু না… তোমরা ব্রিটিশ… আমরা ভারতীয়… এখন হয়তো সেই অর্থে দেখতে গেলে এটার কোন মানেই নেই… কিন্তু তাও? একটা জাতের প্রতি তো স্বভীমান থাকেই সকলের… তাই আর কি বলছিলাম…” মৃদু স্বরে বলে সূর্য… 

সূর্যের মনের সংশয় দূর করার জন্য হেঁসে ওঠে অলিভীয়া… তারপর বলে, “আরে দূর… ওটা কোন ব্যাপারই নয়… আমায় দেখে কি তোমার তা মনে হয়?” 

“তুমি তো একেবারেই অনন্যসাধারণ বেবী… ইয়ু আর টোটালী ডিফারেন্ট…” গাঢ় স্বরে উত্তর দেয় সূর্য… হাতের তেলোয় অলিভীয়ার মুখটাকে তুলে ধরে…
 
“আরে বাবা… ও সব অনন্য টনন্যটা কোন ব্যাপার না…” উত্তর দেয় অলিভীয়া… গালের ‘পরে সূর্যের উষ্ণ হাতের ছোঁয়া মনটা যেন হাল্কা হয়ে যায় নিমেশে তার… “আর একটা জিনিস কি জানো… তোমায় তো বলাই হয় নি…” 

ভ্রূ কুঁচকে তাকায় সূর্য… “কি?”
 
“এই যে যা কিছু দেখছ, মানে আমাদের বাড়ি, সম্পত্তি… সব কিন্তু আমার দাদুর… মানে আমার মম্‌ এর ড্যাডএর… আমার ড্যাডএর সাথে মম্‌ এর যখন বিয়ে হয়, তখন আমার দাদু মম্‌কে ড্যাড এর সাথে যেতে দিতে রাজি হন নি… যে হেতু ড্যাডএর পরিবার মম্‌দের মত অত উচ্চবংশিয় নয়… তাই তখন থেকেই ড্যাড যাকে বলে ঘরজামাই এই বাড়ির… আমাদের যা কিছু সম্পত্তি এখন ড্যাড্‌ই দেখাশোনা করে…” বলতে বলতে থামে অলিভীয়া… “তাই বুঝতে পারছ? আমার মম্‌ সেই অর্থে যথেষ্ট দিলদার মানুষ… এই সব জাত পাত নিয়ে কোন বড়াই নেই কোনদিনও…”
 
সূর্য শোনে অলিভীয়ার কথাগুলো… কিন্তু বুঝতে পারে না এটা তাকে জানানোর জন্য বলছে অলিভীয়া, নাকি নিজের মনকেই বোঝাচ্ছে সে… তাই আর মুখে কিছু না বলে কাঁধ ঝাঁকায় সেও… এসেছে যখন, তখন অলিভীয়ার হাত তো তাকেই চাইতে হবে তার মা বাবার কাছ থেকে… এটাই তো স্বাভাবিক…
[+] 6 users Like bourses's post
Like Reply
উপর থেকে তারা দুজনে নেমে আসে একতলায়… এসে ঢোকে ডাইনিং রুমে… এখানেও বৈভবের ছড়াছড়ি… কাঠের কারুকাজ ঘরের সমগ্র সিলিং জুড়ে… সমগ্র দেওয়াল জুড়ে বিশাল বিশাল অয়েলপেন্টিং ঝোলানো… এ বাড়িরই পূর্বপুরুষদের বলে মনে হয় সূর্যের… ঘরের মাঝখানে বিশাল কাঠের পায়ার উপরে ভারী কাঁচের একটি ডাইনিং টেবিল পাতা… যার চার ধারে দশটি গদী মোড়া কেদারা রাখা… টেবিলের উপরে সুদৃশ ফুলদানীতে মরসুমী ফুলের সমারোহ… প্রতিটা চেয়ারের সামনে, টেবিলের উপরে রাখা দামী কাঁচের কাজকরা প্লেট, ডিশ্‌, কাটা চামচ সাজিয়ে রাখা…

[Image: 7-2.jpg]


টেবিলের একেবারে শেষ মাথার চেয়ারে উপবিষ্ট এক ভদ্রমহিলা… আর ঠিক তার বিপরীত দিকের টেবিলের অপর শেষ মাথা এক ভদ্রলোক বসে রয়েছেন… পরণে কেতাদূরস্ত স্যুট… মাথায় সামান্য টাক্‌, মুখে ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি, নিপুন ভাবে কামানো… তবে চেহারাটা খুবই সুন্দর… এই বয়েশেও একেবারে নির্মেদ বলা যায়… রীতিমত বেয়ামপুষ্ট…
 
ঘরের ভদ্রমহিলার দিকে তাকিয়ে চোখ আটকে যায় সূর্যের… বুঝতে অসুবিধা হয় না তার, ইনিই কাউন্টেস্‌… অলিভীয়ার মম্‌… কিন্তু দেখে মনে হয় তার উনি যেন অলিভীয়ার মা নন, তার কোন বড় দিদি যেন… এতটাই অপূর্ব ওনাকে দেখতে… সেই ভাবে এতটুকুও যেন বয়শের কোন ছাপ পড়েনি এখনও… অলিভীয়া আর একটু পরিপক্ক বয়েশে কেমন দেখতে হবে যেন তারই প্রমাণ স্বরূপ… তবে ওনার মাথার চুল অলিভীয়ার মত কালো নয়… বরং পুরোটাই সোনালী… তুলে সুন্দর করে বাঁধা খোঁপার আকারে… পরণে ওনারও ইভিনিং গাউন… কাঁধ খোলা… বুকের উপর থেকে শুরু হয়ে নেমে গিয়েছে নীচের পানে… আর যেহেতু কাঁধ খোলা… তাই বোধহয়, স্তনের উপরিবক্ষ প্রকট হয়ে রয়েছে গাউনের কাপড়ের উপর থেকে… ভরাট স্তনের বিভাজিকা লক্ষ্যনীয়… গায়ের রঙ যেন অলিভীয়ার থেকেও উজ্জল… সম্ভবত অলিভীয়া লন্ডনের রাস্তায় রাস্তায় ঘোরার ফলে একটু পুড়ে গিয়ে থাকবে, যেটা সম্ভব হয়নি এই ভদ্রমহিলার বেলায়… পড়ন্ত বিকেলের আলোয় যেন ওনার শরীর থেকে সে রঙ বিচ্ছুরিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে সারা ঘরের মধ্যে… মুখে হাল্কা প্রসাধন করা… ঠোঁট দুটি রাঙানো লাল রঙে… কানের লতী থেকে ঝুলতে থাকা ঝোলা দুলের থেকে উজ্জল হীরকদ্যুতি... গলার ঘেরে জড়ানো চওড়া হিরের লেকলেস… 

বসে থাকার জন্য আর কিছু সূর্যের চোখে পড়ে না ঠিকই… কিন্তু তার অভিজ্ঞ চোখ বলে, চেহারাও যথেষ্ট লোভনীয় ভদ্রমহিলার… ওনার কাঁধের প্রসস্তিই বলে দিচ্ছে ওনার শারিরিক উচ্চতা… শরিরী গঠনের…
 
ঘরে ঢুকে তারা দাঁড়াতেই মুখ তুলে তাকান ভদ্রমহিলা… তিক্ষ্ণ দৃষ্টিতে একবার দেখে নেন সূর্যকে আপদমস্তক… তারপরে তাকান নিজের কন্যার পানে… যেন সূর্যের উপস্থিতি কোন ধর্তব্যের মধ্যেই আনেন না… সেই মত মৃদু হেঁসে বলে ওঠেন অলিভীয়ার দিকে তাকিয়ে… “ওহ! মাই ডিয়ার… তুমি আসছে সেটা আমাকে জানাতে পারতে আগে… আমি তাহলে আমার মিটিং ক্যান্সেল করে দিতাম…”
 
সূর্যের পাশ থেকে দ্রুত পায়ে নিজের মম্‌ এর দিকে এগিয়ে যায় অলিভীয়া… সামান্য নীচু হয়ে ঝুঁকে নিজের মা কে দুই হাতে আলিঙ্গন করে গাল ঠেঁকায় মায়ের গালে… তারপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে স্মিত হেঁসে বলে, “আসলে তা নয় মম্‌… তোমাদের সার্প্রাইজ দেবার জন্যই এই ভাবে হুট করে চলে এলাম…”
 
“ইয়ু আর আলয়েজ নটি লাই দ্যট…” মৃদু হেসে বলে ওঠেন ভদ্রমহিলা… “তুমি তো জানো… হাউ বিজি উই আর অলয়েজ…”
 
“জানি তো মম্‌… আসলে অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম তোমাদের সাথে সূর্যের আলাপটা করিয়ে দেবার… তাই…” স্মিত হেঁসে উত্তর দেয় অলভীয়া…
 
“সূর্য? কে?” ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করেন ভদ্রমহিলা…
 
মাথা ফিরিয়ে সূর্যের পানে আঙুল তুলে দেখায় অলিভীয়া… “দেয়ার হি ইজ… সূর্য… সূর্য নারায়ণ চৌধুরী…”
 
অলিভীয়ার থেকে মুখ ফিরিয়ে আর একবার তাকায় অনতিদূরে দাঁড়িয়ে থাকা সূর্যের পানে ভদ্রমহিলাম… আর একবার তাকে মেপে নেয় মাথা থেকে পা অবধি… তারপর অলিভীয়ার দিকে ফিরে প্রশ্ন করে, “ইয়োর ফ্রেন্ড?” 

ভদ্রমহিলার প্রশ্ন যেন উজ্জল হয়ে ওঠে অলিভীয়ার মুখ… এক গাল হেঁসে বলে ওঠে সে… “মোর দ্যান দ্যাট… মাই এভ্রিথিং… মাই হার্ট…”
 
অলিভীয়ার কথায় যেন এক লহমার জন্য ভদ্রমহিলার ভ্রুযগল আরো কুঞ্চিত হয়ে ওঠে… পরক্ষনেই অতি দ্রততায় স্বাভাবিক হয়ে যায় মুখের অভিব্যক্তি… স্মিত হেঁসে কন্যার পানে তাকিয়ে বলেন, “ওহ! আই সি…” তারপর সূর্যের পানে তাকিয়ে হাতের ইশারায় চেয়ারে বসার ইঙ্গিত করেন… 

পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা টম্‌ শশব্যস্ত হয়ে এগিয়ে এসে টেনে ধরে একটা চেয়ার, সূর্যের বসার জন্য… সূর্য এগিয়ে গিয়ে ধীর ভাবে বসে সেই চেয়ারে… এই মুহুর্তে সে টেবিলের দুই প্রান্তের দুই মানুষের থেকে সমান দূরত্বে অবস্থান করছে…
 
ওখানে বসেই একটা জিনিস সে খেয়াল করেছে…এতক্ষনে একটা কথাও কিন্তু টেবিলের আর এক প্রান্তে বসা ভদ্রলোক বলেন নি… চুপ করে তাঁর সামনে মেলে রাখা এক গোছা কাগজের মধ্যেই ডুবে আছেন একান্ত মননিবেশে…
 
অলিভীয়া ঘুরে সূর্যের উল্টো দিকের চেয়ারে গিয়ে বসে… টম্‌ আর তার সাথে আরো কিছু পরিচারক পরিচারিকা খাবার ও পানিয় পরিবেশনে ব্যস্ত হয়ে ওঠে… একটা অদ্ভুত নিরবতা বিরাজ করে ঘরের মধ্যে… কারুর মুখে হটাৎ করেই যেন কথা হারিয়ে গিয়েছে… চুপচাপ বসে খেতে থাকে তারা…
 
নিরবতা ভাঙে অলিভীয়া… রেড ওয়াইনের পেয়ালায় চুমুক দিয়ে ভদ্রমহিলার পানে তাকিয়ে প্রশ্ন করে সে, “দাদাদের দেখছি না!”
 
“ওহ!... ওদের কি আর এক জায়গায় বসার সময় আছে ডিয়ার… ওরা ভি-ষ-ন ব্যস্ত… সকাল থেকে রাত অবধি ব্যবসার কাজে ছুটে বেড়াচ্ছে…” কাঁটার সাহায্যে একটা মাংসের ছোট টুকরো মুখের মধ্যে পুরে নেবার আগে বলে ওঠেন… তারপর সেটা মুখের মধ্যে শেষ করে তাকান সূর্যের দিকে, সরাসরি… “তোমার কি ব্যবসা? কিসের?”
 
তখন সবে ওয়াইনের পেয়ালায় চুমুক দিতে যাচ্ছিল সূর্য… ভদ্রমহিলার কথায় থমকে যায় সে… আস্তে করে পেয়ালাটা টেবিলের উপরে নামিয়ে রেখে ন্যাপকিনে মুখ মুছে তাকায় ভদ্রমহিলার পানে, বলে, “না… আমি শিল্পী…” 

“শিল্পী!...” সূর্যের কথাটাই আর একবার পুনরাবৃত্তি করেন ভদ্রমহিলা… আর বলার অভিব্যক্তিতে একটা শ্লেষের রেশ লেগে থাকে যেন… “আর তুমি ভারতীয়… রাইট?”
 
“হ্যা… আমি ভারতীয়…” মাথা উঁচু করে উত্তর দেয় সূর্য, ভদ্রমহিলার প্রশ্নে…
 
শুনে চুপ করে যান ভদ্রমহিলা… মনোনিবেশ করেন নিজের খাবারের প্লেটে… সূর্যও আর কিছু বলে না… 

খাওয়া শেষে উঠে দাঁড়ায় অলিভীয়া… তার ড্যাড্‌ আর সূর্য চেয়ার সরিয়ে…
 
সূর্য বোঝে, আর কোন কথা হবে না অলিভীয়ার বাবা মায়ের সাথে… বাবা তো আগাগোড়াই চুপ করেই থাকলেন, এমন ভাবে, যেন তিনি তাঁর নিজের কাজের মধ্যেই ডুবে রয়েছেন… ওনার ভাবগতিক দেখে একটা ব্যাপারে পরিষ্কার হয়ে যায় সূর্যের কাছে, যে এ বাড়ির সর্বময় কত্রী অলিভীয়ার মম্‌ই… উনিই শেষ কথা… সেখানে অলিভীয়ার বাবার বক্তব্য খুব একটা কার্যকর নয়… বা… ভুলও হতে পারে সে… মনে মনে ভাবে… হয়তো সত্যিই তিনি কাজের মধ্যে এতটাই নিয়জিত যে তার উপস্থিতিও খেয়াল করেন নি… যদিও সেটা কতটা সম্ভবপর, সেটা বিচার্যের বিশয় বইকি… 

টেবিল ছেড়ে যাওয়ার উদ্যগ করতেই মুখ তোলেন কাউন্টেস্‌… স্মিত হেঁসে অলিভীয়াকে বলেন, “উইল ইয়ু প্লিজ লিভ মী অ্যান্ড ইয়োর বয়ফ্রেন্ড ফর সাম টাইম প্লিজ?”
 
এতক্ষন তার মম্‌ এর থেকে কোন আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে বোধহয় কিছুটা হতদ্যম হয়ে পড়েছিল অলিভীয়া… তার এখানে আসার সময়ের উৎসাহে ভাঁটা পড়েছিল অনেকটাই… তাই, কাউন্টেসের কথায় যেন শেষ মুহুর্তের একটা আশার আলো চোখে পড়ে তার… ফিরে আসে আগের সে উত্তেজনা, তার চোখে মুখে… উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে মুখ… “হ্যা হ্যা মম্‌… সার্টেনলি… তোমরা কথা বলো, আমি ততক্ষন বাইরে থেকে একটু ঘুরে আসছি…” বলতে বলতে তাকায় সূর্যের পানে সে… চোখের ইশারায় বরাভয় দেওয়ার চেষ্টা করে যেন… যেন বলতে চায়, “আর কোন চিন্তা নেই… তোমরা কথা বলো… আমি আসছি এখুনি… তারপর তো…” 

অলিভীয়ার সাথে তার বাবাও বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, পেছন থেকে থামালেন কাউন্টেস্‌… “তুমি যেও না… তুমি বরং আর একটু অপেক্ষা করে যাও…” তারপর সূর্যের পানে তাকিয়ে নরম গলায় বললেন, “ইয়ু আলসো সিট ইয়োং ম্যান… লেট আস টক সামথিং অ্যাবাউট ইয়ু…”
 
এক পলক অলিভিয়াকে দেখে নিয়ে চেয়ারটাকে ফের টেনে নিয়ে বসে সূর্য… কাউন্টেসের মুখোমুখি ফিরে… মাথা তুলে সোজা দৃষ্টিতে তাকায় ভদ্রমহিলার পানে…
 
“ওকে মাই বয়… তাহলে তুমি শুধু মাত্র একজন শিল্পী… অ্যান্ড নাথিং এলস্‌…” সূর্যের চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করে ভদ্রমহিলা…
 
“নাহ!... আর কিছু করি না আমি… আমি শু-ধু-উ মাত্র শিল্পীই বটে…” মাথা হেলিয়ে উত্তর দেয় সূর্য… কথার মধ্যে ওই ‘শুধু’টির উপরে টান দেয় সে ইচ্ছা করেই কতকটা… তার অভিজ্ঞতা বলছে যে অলিভীয়ার মম্‌ তাকে সেই অর্থে নিজেদের বরাবর মনে করছেন না মোটেই… আর করছেন না বলেই হয়তো তাকে উনি অপদস্ত করার ইচ্ছাতেই একলা এই ভাবে কথা বলার নাম করে বসিয়েছেন… অলিভীয়াকে বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে… কারণ তা না হলে এতক্ষন ধরে সে রয়েছে ঘরের মধ্যে, কিন্তু অলিভীয়ার কাছ থেকে তার আগমনের হেতু শোনার পরেও একটা কথাও খরচ করেননি অলিভীয়ার সম্নুখে…
 
“হোয়াট ইয়ু থিঙ্ক?” সূর্যর দিকে চোখ রেখেই ফের প্রশ্ন করেন ভদ্রমহিলা… “তোমার যা স্ট্যাটাস… তাতে অলিভীয়ার মত মেয়ের সাথে তোমায় আমরা জীবন সঙ্গি হিসাবে মেনে নেব?”
 
সূর্য হুট করে ভদ্রমহিলার কথার জবাব দেয় না… কয়েক সেকেন্ড সময় নেয় সে… কারন সেই মুহুর্তে তার শরীরের মধ্যে চৌধূরী বংশের রক্ত যেন জেগে উঠেছে… এত সহজে এই ভদ্রমহিলার সামনে মাথা নোয়াতে সে পারবে না… অথচ সে এটাও চায় না কোন রকম অশালিন আচরণ করে অলিভীয়ার নির্বাচনকে ছোট প্রমানিত করতে… ধীর কন্ঠে নম্র ভাবে উত্তর দেয় মুখ তুলে, “দেখুন ম্যাম… আমি আপনার মেয়েকে প্রকৃতই ভালোবাসী… এ ভালোবাসায় কোন অসচ্ছতা নেই… ঠিক যেমন আপনার মেয়ে ভালোবাসে আমায়… আর তাছাড়া… আমরা দুজনেই প্রাপ্ত বয়স্ক… তাই আপনারা আমাকে আপনার মেয়ের জীবন সঙ্গী হিসাবে মেনে নেবেন কি নেবেন না, সেটা সম্পূর্ণই আপনাদের বিচার্য… আমার নয়… তবে হ্যা… এটা বলতে পারি আপনাকে… যদি আপনার মেয়ে চায়… তাহলে… ইয়েস… আই অ্যাম হার উডবী হাসবেন্ড… এবং সেটা খুবই শিঘ্রই…”
 
স্থির চোখে তাকিয়ে থাকে সূর্যের দিকে ভদ্রমহিলা… অত সুন্দর মুখের এক অচেনা ক্রুরতা নেমে আসে যেন… সূর্যের উত্তরে চোয়াল শক্ত হয়ে যায় ওনার… “তুমি আমাকে চেন?” শান্ত গলায় বলে ওঠেন কাউন্টেস্‌…
 
মাথা নাড়ে সূর্য… দৃঢ়তায়… “নাহ!... আগে চিনতাম না আপনাকে… এখানে এসে আলাপ হলো… অলিভীয়ার মা বলে…” শান্ত গলায় উত্তর দেয় সে… 

“কিন্তু আমি শুধু মাত্র অলিভীয়ার মা’ই নই… আমি কাউন্টেস… কাউন্টেস্‌ অফ ব্রাডফিন্ডস্‌…” বলতে বলতে একটু থামেন ভদ্রমহিলা… তারপর ফের বলে ওঠেন… “আমার সাথে রয়াল ফ্যামিলির একটা বিশেষ সম্পর্ক আছে… আমি চাইলে তোমার এখানে থাকা যে কোন মুহুর্তে অসহনীয় করে তুলতে পারি… আর সেটা করতে আমার বেশি সময় লাগবে না… জাস্ট আ ফোন কল অনলি…”
 
ভদ্রমহিলার কথায় এতটুকুও বিচলিত হয় না সূর্য… বলে, “আপনিও বোধহয় আমার সম্পূর্ণ পরিচয় পান নি… হ্যা… এটা ঠিক… আমি আপনার মেয়ের পাণিপ্রার্থি… আবার এটাও ঠিক… আমি রাজা দর্পনারায়ণ চৌধুরীর বংশধর… তাই আপনার রাজবংশের সাথে কতটা আলাপ চারিতা আছে কি নেই জানি না, তবে আমি নিজেই রাজ বংশের সন্তান… এক গর্বিত ভারতীয়… তাই…”
 
কাউন্টেসের বুঝতে অসুবিধা হয় না যে এই ভাবে সূর্য মানবে না… তাই সাথে সাথে মুখের অভিব্যক্তি বদলে যায় ভদ্রমহিলার… নরম হয়ে আসে মুখের চেহারা ওনার… “দেখো সূর্য… আমি বুঝতে পারছি যে তোমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসো… কিন্তু একটা জিনিস বোঝার চেষ্টা করো… অলিভীয়া আমার এক মাত্র মেয়ে… সে এই বংশের সব থেকে আদরের… আর সব থেকে বড় কথা ও একজন ব্রিটিশ পরিবারের মেয়ে… সেখানে ওর সাথে একজন তোমার মত ভারতীয়র কি করে সম্পর্কে মত দিতে পারি আমি?”
 
“ওই যে বললাম আপনাকে… সেটা আপনার বিচার্য… আমার নয়… বা আমাদের নয় বলাটা আরো ভালো করে বোঝায়…” নরম অথচ দৃঢ় স্বরে উত্তর দেয় সূর্য… “তাই আমার মনে হয় আপনাকে জানানোটা আমাদের কর্তব্য ছিল, তাই জানালাম… এখন আপনি সেটা কি ভাবে নেবেন বা কি করবেন সেটা জেনে, সেটা সম্পূর্ণ আপনার হাতে… এখানে আমরা কিছু বলতে পারি না…” তারপর একটু থেমে ফের বলে ওঠে… “আমার মনে হয় এর পরে আর আমাদের কোন কথা এগুতে পারে না…”
 
“তাহলে এটাই তোমার শেষ কথা?” ফের মুখ কঠিন হয়ে ওঠে কাউন্টেসের…
 
উত্তরে কিছু বলতে যাচ্ছিল সূর্য, কিন্তু তার আগেই কাঁধের উপরে আলতো হাতের চাপ পড়তে মুখ ফিরিয়ে তুলে তাকায় সে… কখন তাদের কথার মধ্যে অলিভীয়া এসে দাঁড়িয়েছে পেছনে, সেটা খেয়াল করে নি সে…
 
উত্তরটা দেয় অলিভীয়াই… “আমি সবটাই শুনেছি মম্‌… আমিও সূর্যের সাথে এক মত… আমাদের তোমায় জানাবার প্রয়োজন ছিল, তাই জানিয়েছি… এবার তোমরা যদি মেনে না নিতে চাও, আমাদের কিছু করার নেই তাতে…” 

“নো… ইয়ু কান্ট… আমি না চাইলে তোমরা কিছুই করতে পারো না… আর আমি কি পারি আর না পারি সেটা তো তুমি ভালো করেই জানো অলিভীয়া… আমাকে সেটা করতে নিশ্চয়ই তুমি বাধ্য করবে না…” কঠিন স্বরে বলে ওঠেন কাউন্টেস্‌…
 
“না… পারো না… কিছু করতেই পারো না…” মাথা নাড়িয়ে দৃঢ় স্বরে উত্তর দেয় অলিভীয়া… “আমি সূর্যকে ভালোবাসী… সেখানে ও কি করে বা কোন দেশের, তাতে আমার কিছু যায় আসে না… কারণ আমি কোন তোমার সম্পত্তি নয় যে তোমার যার সাথে ইচ্ছা হবে তার সাথেই আমায় জীবন বাঁধতে হবে… আর তোমার ইচ্ছাতে আমার ভালোবাসার মানুষটাকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে…” বলতে বলতে গলার স্বর চড়ে অলিভীয়ার…
 
এবারে কথা বলেন সূর্যের পাশে উপবিষ্ট ভদ্রলোক… এতক্ষন উনি একটি কথাও বলেন নি এর মধ্যে… কিন্তু মেয়েকে বলতে দেখে বোধহয় চুপ করে থাকতে পারেন না… উঠে এসে অলিভীয়ার কাঁধে হাত রাখেন… “কাম ডাউন বেবী… কাম ডাউন…” তারপর নিজের স্ত্রীর পানে ফিরে বলেন, “ওরা তো ভুল কিছু বলছে না… ইয়ু মাস্ট অ্যাপ্রিশিয়েট দেয়ার লভ্‌…” 

“হেল উইথ দেয়ার লভ্‌…” গর্জে ওঠেন কাউন্টেস্‌… “আমি আমার মেয়েকে একজন ব্রিটিশ রমনী হয়ে একটি ভারতীয়ের হাতে তুলে দিতে পারি না… দ্যটস্‌ নট আওয়ার কালচার…”
 
ফুঁসে ওঠে অলিভীয়াও সাথে সাথে… “ইটস্‌ অলসো নট আওয়ার কালচার টু ডিগ্রেড আ পারসন, হুম আই লভ্‌…” তারপর নিজের বাবার দিকে ফিরে বলে ওঠে সে… “তুমি মম্‌ কে বোঝাও ড্যাড… আমি সূর্যকেই বিয়ে করবো… এবং ওকেই এক মাত্র… তাতে মম্‌ রাজি থাকুক বা না থাকুক… আই ডোন্ট কেয়ার…” 

“ইয়ু সি… ফোর ইয়ু… ফোর আ ব্লাডি ইন্ডিয়ান… হাউ মাউ ডটার ইস বিহেভিং উইথ হার মাদার…” সূর্যের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠেন ভদ্রমহিলা… গলার স্বরে তখন রীতি মত ঘৃণা ঝরে পড়ছে যেন…
 
“এনাফ ইস এনাফ…” উঠে দাঁড়ায় সূর্য… উনি শুধু মাত্র এই মুহুর্তে তাকে অপমান করেন নি… করেছেন গোটা ভারতীয় সভ্যতাকে… আর সেখানে একজন ভারতীয় হিসাবে সেটা সে মেনে নিতে পারে না কোনমতেই… “শুনুন ম্যাম… এখানে একটা কথা আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি… আপনারা এই যে নিজেদের ব্রিটিশ বলে গর্ব বোধ করেন, অ্যাকচুয়ালি ইয়ু আর নট আ অরিজিনাল ব্রিটিশার… আপনারা শুধু মাত্র নিজেদের ঐতিহ্যের অহঙ্কারে একটা ফানুসের মত অবস্থান করেন… কিন্তু বেসিক্যালি আপনাদের মধ্যে মনুষ্যত্বটাই অনুপস্থিত… তা না হলে এখনও… এখনও আপনারা ভারতীয়দের মানুষ বলেই ভাবতে পারেনা… এটা সত্যিই দুঃখের… আপনাদের মানসিকতার কৃশতার…” তারপর একটু থেমে বলে সে, “আপনি মানবেন কি মানবেন না… আপনার মেয়ে আমায় বিয়ে করতে চায় কি চায় না সেটা আর আমি জানতে চাই না… এই যে একটা কথা বলে দিলেন… এর পরে আমার পক্ষে এক মুহুর্ত এখানে থাকা সম্ভব নয়… আপনি থাকুন আপনার উন্নাসিকতা নিয়ে… আপনার সামনে দাঁড়াতেও আমার রুচিতে বাঁধছে… আপনার এই বৈভব, এই বিত্তর কোন দামীই নেই আমার কাছে… এতটাই নীচ আপনার মানসিকতা…” বলে ঘরের বাইরে পা বাড়াবার উপক্রম করে সূর্য… 

পেছন থেকে দ্রুত এগিয়ে এসে ওর হাত চেপে ধরে অলিভীয়া… “ওয়েট সূর্য… আমিও তোমার সাথেই যাবো… তবে যাবার আগে মম্‌ কে একটা কথা শুধু বলে যেতে চাই… এক মিনিট…” বলে পেছন ফিরে সামনে উপবিষ্ট কাউন্টেসের দিকে ফিরে অলিভীয়া বলে ওঠে… “মম্‌… একটা কথা পরিষ্কার শুনে রাখো… আই অ্যাম লিভিং দিস প্লেস ফর এভার… অ্যান্ড উইথ মাই লভ্‌… আর কখনও কোনদিন আমি তোমার কাছে ফিরে আসবো না… কারণ আজকে তুমি যে ভাবে, আর যে ভাষায় সূর্যকে অপমান করেছ, তাতে আমার মনে হয় সেটা আমার অপমানও… কারণ ভারতীয় আমার স্বামী… তাই আমিও ভারতীয়ও সেই সাথেই… সেই জন্য একজন ভারতীয় হয়ে এই অপমান সহ্য করে নেবার কোন ইচ্ছাই আমার নেই…” বলে ফের সূর্যের দিকে ফিরে বলে সে, “চলো সূর্য… লেটস্‌ গো ব্যাক টু আওয়ার ওন প্লেস… আমরা ফিরে যাই আমাদের জায়গায়… যেখানে আমাদের ভালোবাসার সন্মান আছে…”
 
পেছন থেকে তাও শেষ বারের মত চেষ্টা করেন কাউন্টেস্‌… “তুমি যদি এখন এই ভাবে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও… দেন আমি অ্যাম টেলিং ইয়ু… আর কোন দিন এখানে ফিরতে পারবে না… আর এই বাড়ির সমস্ত সম্পত্তি থেকে তুমি বঞ্চিত হবে…”
 
ওনার কথায় বাধা দিয়ে কিছু বলতে ওঠেন অলিভীয়ার ড্যাড… কিন্তু তার আগেই হাত তুলে থামিয়ে দেন কাউন্টেস… “ওটাই আমার শেষ কথা…” 

ফিরে দাঁড়ায় অলিভীয়া তার মম্‌ এর দিকে… হাতে ধরে থাকে শক্ত করে সূর্যের হাতখানি… “সেটা তোমায় না বললেও চলতো মম্‌… আমি তোমারই তো মেয়ে… তাই আমিও যখন একবার ডিসিশন নিয়েছি যে আমি চলে যাব… তার মানে এই নয় যে তোমার এই সম্পত্তির লোভে আবার আমি গুটি গুটি ফিরে আসবো… আমি চলে যাবো সূর্যেরই হাত ধরে… ওর কাছে… চিরতরে… সে যেভাবে আমায় রাখবে, আমি সেই ভাবেই থাকবো… ওর স্ত্রী হয়ে… সারা জীবন…”
 
শক্ত চোয়ালে চুপ করে তাকিয়ে থাকেন কাউন্টেস ওদের চলে যাবার দিকে… তাঁর চোখের সামনে দিয়ে দৃঢ় পদক্ষেপে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় অলিভীয়া সূর্যের হাত ধরে…
 
ক্রমশ…
[+] 10 users Like bourses's post
Like Reply
Besh bhalo laglo ei update ta as natural maa r behavior ta shundor kore likhechen apni aro erpor ghotona janar agraha roilo
[+] 1 user Likes kingaru06's post
Like Reply
এই পর্বটা বেশি ভালো লাগলো না , দেখি সামনে কি হয় । অলিভিয়া আর সূর্য কি ইন্ডিয়া চলে আসবে ?
[+] 1 user Likes cuck son's post
Like Reply
ধীরে ধীরে একটা ক্লাসিক উপনাস্যের মতো রূপ নিচ্ছে কাহিনীটা ,,,

বেশ কিছু প্রশ্ন আসছে মাথায় কিন্তু এখন নয় , আরেকটু যাক , তারপরে জিজ্ঞাসা করবো ...

Namaskar yourock
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
খুব সুন্দর এবং রোমান্টিক দৃশ্যপট বটে,,,, ভালোবাসার জোর না থাকলে মাত্র কয়েকমাসের রিলেশনশিপের কারণে রক্তের সম্পর্ককে ছেড়ে চলে আসতে পারে না,,, ভালোবাসা দেখে খুব ভালো লাগলো আবার সাথেও একটু খারাপও লাগছে যে অলিভিয়া নিজের রক্তের সম্পর্ককে ছেড়ে চলে এলো,,, তবে ভবিষ্যতে যদি অলিভিয়ার মা মেনে নেয় তবে খুব ভালো লাগবে
[+] 1 user Likes Shoumen's post
Like Reply
অসাধারন লেখনী। এমন ভাবে তুমিই লিখতে পারো। ইংরেজি বাংলা মিশিয়ে দাপটের সাথে লিখেছ। অলিভিয়া কে সুন্দর ভাবে সাজিয়েছ। পড়ে মনটা তোমার ওই ফটো তে দেওয়া বাড়িটার আসে পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। আমি, দেবু আর পিনু  জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে চাই, ভেতরে কি হচ্ছে। লিখে যাও। 

থ্রেডে ৫ স্টার রেটিং দিলাম।
  Heart তোমাকে খুঁজে বেড়াই Heart  
[+] 2 users Like Rajdip123's post
Like Reply
(28-02-2021, 04:05 AM)Rajdip123 Wrote: অসাধারন লেখনী। এমন ভাবে তুমিই লিখতে পারো। ইংরেজি বাংলা মিশিয়ে দাপটের সাথে লিখেছ। অলিভিয়া কে সুন্দর ভাবে সাজিয়েছ। পড়ে মনটা তোমার ওই ফটো তে দেওয়া বাড়িটার আসে পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। আমি, দেবু আর পিনু  জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে চাই, ভেতরে কি হচ্ছে। লিখে যাও। 

থ্রেডে ৫ স্টার রেটিং দিলাম।

আমি বাপু ওসব উঁকিঝুঁকি দেওয়া পছন্দ করিনা !!!! Dodgy


সোজা ভেতরে গিয়ে যা করার করে আসা আমার অনেকদিনের অভ্যেস !!!
Big Grin sex
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
Besh alada rokom ekta update......Tobe ager update er je jaigai ses korechilen sekhan theke aro ekta gorom update er asha korechilam
[+] 1 user Likes Cuckold lover's post
Like Reply
Wow..
[+] 1 user Likes A0AZSU's post
Like Reply
darun laglo.
আসুন আমরা সবাই চটি গল্প উপভোগ করি।
[+] 1 user Likes Mr.Wafer's post
Like Reply
দাদা আপডেট এর জন্য অপেক্ষা করছি । Sleepy
[+] 1 user Likes cuck son's post
Like Reply
(27-02-2021, 03:59 PM)kingaru06 Wrote: Besh bhalo laglo ei update ta as natural maa r behavior ta shundor kore likhechen apni aro erpor ghotona janar agraha roilo

ধন্যবাদ ভাই... 
Like Reply
(27-02-2021, 04:23 PM)cuck son Wrote: এই পর্বটা বেশি ভালো লাগলো না , দেখি সামনে কি হয় । অলিভিয়া আর সূর্য কি ইন্ডিয়া চলে আসবে ?

সেকি? ভালো লাগলো না? কিন্তু কি করা যাবে বলো... ঘটনা প্রবাহে তো এই রকম কিছু কিছু আপডেট আসবেই... তা না হলে পরবর্তি ধাপে গল্প এগোবে কি করে? তাই না?
Like Reply
(27-02-2021, 05:44 PM)ddey333 Wrote: ধীরে ধীরে একটা ক্লাসিক উপনাস্যের মতো রূপ নিচ্ছে কাহিনীটা ,,,

বেশ কিছু প্রশ্ন আসছে মাথায় কিন্তু এখন নয় , আরেকটু যাক , তারপরে জিজ্ঞাসা করবো ...

Namaskar yourock

এই তো না... মাথায় যখন প্রশ্ন এসেইছে, তাহলে করেই ফেলো না গুরু... মাথার মধ্যে পুষে রাখলে তো আর সেটা সুদে বাড়বে না... বরং আমিও দেখি, গল্পে আমার কোন কিছু খামতি থেকে গেলো কি না... বেশি পরে বললে তো গল্প ততক্ষনে অনেকটা এগিয়ে যাবে, তখন আর সেটা সোধরাবার সময় পাব না... বলে ফেলো বলে ফেলো... তোমার এই চেপে রাখা স্বভাবটার জন্যই এত কষ্টে ভোগ সব সময়... মনের মধ্যে যা আসে সাথে সাথে উগড়ে দেবে... দেখবে নিজে অনেকটা সুস্থ থাকবে...

[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply
(27-02-2021, 05:45 PM)Shoumen Wrote: খুব সুন্দর এবং রোমান্টিক দৃশ্যপট বটে,,,, ভালোবাসার জোর না থাকলে মাত্র কয়েকমাসের রিলেশনশিপের কারণে রক্তের সম্পর্ককে ছেড়ে চলে আসতে পারে না,,, ভালোবাসা দেখে খুব ভালো লাগলো আবার সাথেও একটু খারাপও লাগছে যে অলিভিয়া নিজের রক্তের সম্পর্ককে ছেড়ে চলে এলো,,, তবে ভবিষ্যতে যদি অলিভিয়ার মা মেনে নেয় তবে খুব ভালো লাগবে

ঠিক বলেছ... ভালোবাসার টানে এই ভাবেই তো অনেকেই রক্তের সম্পর্ককে অস্বীকার করে চলে যেতে বাধ্য হয়... যদি একটু এটা অভিভাবকেরা বুঝতেন... যেটা তাঁরা আগেও বোঝেন নি... বর্তমানেও কটা অভিভাবক বোঝেন, সেটা সন্দেহ আছে... তাঁরা নিশ্চয়ই তাঁদের সন্তানদের মঙ্গলের জন্যই হয়তো বিরূপ হন, কিন্তু সব সম্পর্কই যে খারাপ, আর তাঁরা যেটা বেছে দেবেন, সেটাই যে সব সময় ঠিক হবে, এমনটাও তো হয় না, তাই না? ফলপ্রসু, এই ভাবে রক্তের সম্পর্ককে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে গৃহত্যাগ... 
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply
(28-02-2021, 04:05 AM)Rajdip123 Wrote: অসাধারন লেখনী। এমন ভাবে তুমিই লিখতে পারো। ইংরেজি বাংলা মিশিয়ে দাপটের সাথে লিখেছ। অলিভিয়া কে সুন্দর ভাবে সাজিয়েছ। পড়ে মনটা তোমার ওই ফটো তে দেওয়া বাড়িটার আসে পাশে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। আমি, দেবু আর পিনু  জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে চাই, ভেতরে কি হচ্ছে। লিখে যাও। 

থ্রেডে ৫ স্টার রেটিং দিলাম।

এ মাইরি বলছি... এই সব অসাধারণ টসাধারণ বলে লজ্জা দিও না বস্‌... আমি লিখি, ভালো লাগে বলে, ব্যস... এর থেকে বেশি কিছু না... যা মন চায়, যা দেখি, যা শুনি, সেটাই সাজাবার চেষ্টা করে যাই... সেটা আর যাই হোক... তোমাদের গল্পের সাথে তুলনা টেনে আমায় শুধু শুধু লজ্জায় ফেলো না... 


তবে তোমার তো এই স্বভাবটা ছিল না? এটা তো জানতাম ডিডির আছে,  পরের জানলা দিয়ে উঁকি মারা... ওই নিশ্চয় বলেছে তোমায়... 

রেটিং এর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ গুরু... মুয়াআআআআহহহহহ...
[+] 1 user Likes bourses's post
Like Reply




Users browsing this thread: 47 Guest(s)