Thread Rating:
  • 100 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance সুপ্তির সন্ধানে
(19-01-2021, 04:21 PM)Mr Fantastic Wrote: ///////

এটা ঠিক কি হল? Dodgy !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(19-01-2021, 05:03 PM)wanderghy Wrote: Update er opekhai achi pinuram. Kobe dicheen

চলে আসবে, আপনি যখন ডাক দিয়েছেন আসবে বৈকি! একটু একটু করে, Tongue ! আপনাদের অধীর আগ্রহ দেখে সত্যি ভালো লাগে !!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(19-01-2021, 01:44 PM)black_shadow Wrote: আপনার তুলনা শুধুই আপনি
ভীষণ সুন্দর হচ্ছে, যেখানে যতটুকু প্রয়োজন, 
তিতলিকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি, একদম যেন 17 বছরের আমি

আরে দাদা, তিতলি তো ভালোবাসার পাত্রী! তবে এখানে আদি অথবা তিতলি কেউই সতেরো বছরের নয়! হটাত করে আপনার সতেরো বছর বয়স হয়ে যেতে ইচ্ছে কেন করল? কোন গোপন কিছু উষ্ণ মধুর মাখামাখির কথা মনে পরে গেল নাকি ! thanks  গল্প পড়ে মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ! ভালোবাসা নেবেন Heart !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 3 users Like pinuram's post
Like Reply
(19-01-2021, 10:50 PM)pinuram Wrote: শোনা যাবে একদিন, নিভৃতে বসে হয়ত গঙ্গার পাড়ে নয়ত কোন শিউলি তলায়! তবে এখন মনে হয় আপনি আদি আর তিতলির প্রেমটা উপভোগ করছেন বেশ! ক্ষীর জমবে না কাটবে সেটা এখুনি বলা মুশকিল! আর পৃথিবী গোল হয়ত কখন কোন পথের বাঁকে দেখা হয়েই যেতে পারে! কে জানে !!!!!
আচ্ছা তিয়াসার কি কি মনে পড়ে গেল সেটা শোনার জন্য গঙ্গার পাড় কিমবা শিউলি তলার দরকার, ব্যাপারটা বুঝলাম না। আমাদের ও শুনতে ইচ্ছে করছে। নিশ্চয় গঙ্গার দূষণ নিয়ে কথা হবে, নাহলে দুর্গাপুজা। Shy Shy Shy Shy Shy
  Heart তোমাকে খুঁজে বেড়াই Heart  
[+] 1 user Likes Rajdip123's post
Like Reply
(19-01-2021, 05:30 PM)bourses Wrote: অনেক স্মৃতি উসকে দিয়ে গেলে... প্রেম যে কোন দশকে বা শতকে বাঁধা থাকে না, সেটা সর্বজনবিধ... তবে কেন জানি না, এখনকার ছেলে মেয়েদের প্রেম করার সাথে এ যেন একেবারেই বেমানান... যেটার মিল পেয়েছিলাম ঝিনুকের সাথে পার্থের সম্পর্কের সময়ে... এই গল্পে তিতলী আর আদির প্রেম এক স্নিগ্ধ আশির দশকের ঘ্রাণে সুবাসিত... সেই গঙ্গার জল থেকে উঠে আসা সোঁদা ভিজে গন্ধ, তখনকার 'gay' অধূনা সেটা সম্ভবত 'স্কুপ' রেস্তোঁরা, সেখানে পাশাপাশি বসে গঙ্গার কুয়াশা মোড়া শোভা দেখতে দেখতে হাতে হাত রেখে আইসক্রিম খাওয়া, গঙ্গার পাড় ধরে ট্রেন লাইনটাকে বাঁয়ে কি ডাইনে রেখে হেঁটে চলা উদ্দেশ্যহীন ভাবে, হাতিবাগানের ফুটপাথের ভীড়, বউবাজারের সার দিয়ে ছোট ছোট গয়নার দোকান, দশ টাকার ঝালে মোড়া টক জলে ডোবানো ফুচকা, হলুদ ট্যাক্সি, বাইকের পেছনে সাওয়ার হয়ে হেলমেটহীন ভাবে অধুনা ট্র্যাফিক সার্জেন্টের তোয়াক্কা না করে প্রেমিকের কোমর জড়িয়ে ধরে পাড়ি দেওয়া... উফফফ... প্রতিটা ছত্র যেন চলচ্ছিত্রের অংশ বিশেষ... 


নাহ! গুরু... আবার নতুন করে ফিরে যেতে ইচ্ছা করছিল আপডেট পড়তে পড়তে, সেই পুরানো দিন গুলোতে... এ যেন ফেলে আসা সেই দিনগুলোরই প্রতিচ্ছবি... নস্ট্যালজিকতার মোড়কে... তুমি হয়তো এখন প্রবাসি ঠিকই... কিন্তু এখনও যে আপাদমস্তক কলকাতাবাসী বাঙালী হয়েই রয়েছ, সেটা তোমার গল্পই প্রমান করে দেয়... 

পথ চেয়ে বসে থাকার মতন মন্তব্য কর তুমি! তোমার এই কথা গুলো পড়ে সত্যি মনে হয় গল্প লেখা সার্থক! নব্বুইয়ের শেষের দিকে জায়গাটার নাম স্কুপ আইসক্রিম পার্লার ছিল যতদূর আমার মনে আছে! আপাদমস্তক বাঙ্গালী কিনা জানি না, তবে হ্যাঁ, যে কটা বছর কোলকাতায় কাটিয়েছি বেশ উপভোগ করেছি জায়গাটা !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 5 users Like pinuram's post
Like Reply
(19-01-2021, 06:42 PM)dreampriya Wrote: Uff dustu misti prem to cholchei .. asole bondini jibone jokon valobasha r manus ase tokon sei onuvuti ta sotti e onnorokom .. ph to mone hoi natun keu koreche r adi no na dekhei kichu bole felbe .. pinuda r golpe twist thakbe na eta abar hoy naki !!!

গল্পটা আসলে নব্বুইয়ের শেষের দিকের সময় কালের গল্প, তখন হাতে হাতে মোবাইল ফোন আসেনি, বোতাম টিপে ডায়াল করা ফোনে তখন সব সময়ে ফোন নাম্বার দেখা যেত না! তাই ফোন নাম্বার দেখে কে ফোন করেছে সেটা জানার অবকাশ নেই !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 5 users Like pinuram's post
Like Reply
(19-01-2021, 10:46 PM)pinuram Wrote: raja05 নতুন থ্রেড আসছে ইংরেজি সেক্সানে, সেখানে পড়তে পারবেন এই গল্প !!!!!!

Yes dada.....already thanked Mr Dey......u plz keep it up with this masterpiece......thank you
[+] 1 user Likes raja05's post
Like Reply
(19-01-2021, 10:55 PM)pinuram Wrote: আরে দাদা, তিতলি তো ভালোবাসার পাত্রী! তবে এখানে আদি অথবা তিতলি কেউই সতেরো বছরের নয়! হটাত করে আপনার সতেরো বছর বয়স হয়ে যেতে ইচ্ছে কেন করল? কোন গোপন কিছু উষ্ণ মধুর মাখামাখির কথা মনে পরে গেল নাকি ! thanks  গল্প পড়ে মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ! ভালোবাসা নেবেন Heart !!!!!!
দাদা নয় দিদি হবে
[+] 1 user Likes black_shadow's post
Like Reply
(19-01-2021, 09:37 PM)Tiyasha Sen Wrote: আপনার কমেন্ট দেখেই আমি দ্বিতীয় অঙ্ক পড়েছি। তার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।।

এবার "রোদে ভেজা তিলোত্তমা" পড়ে দেখুন !  Smile
[+] 2 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply
কয়েকদিন আসতে পারিনি।
এসে দেখি এখনও প্রেম চলছে। সেই ছোটবেলার একে অন্যের হাত ধরে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলা আর স্বপ্ন দেখা।
এবার একটু আগে চলো। টিভি সিরিয়ালের মত সাসপেন্স রেখো না।
[+] 3 users Like TumiJeAmar's post
Like Reply
(19-01-2021, 01:55 PM)ddey333 Wrote: I started posting it but then stopped for some reason..

Now that Pinuda himself has given me the permission , I will post the complete story.

যারা যারা পড়তে চান , English Stories Section এ নজর রাখবেন কাল থেকে ....  

Namaskar Heart

শুরু হয়ে গেছে ...
যদিও পুরো গল্পটাই আছে আমার কাছে কিন্তু আপডেট গুলো এই গল্পের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেওয়া হবে ...
ঘটনাপ্রবাহ কখনোই এখানে যা যা হচ্ছে সেটাকে অতিক্রম করে আগে এগিয়ে যাবে না !! 

Namaskar
[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply
(20-01-2021, 12:05 AM)Mr Fantastic Wrote: এবার "রোদে ভেজা তিলোত্তমা" পড়ে দেখুন !  Smile
Done!!!!!!!
[+] 3 users Like Tiyasha Sen's post
Like Reply
(19-01-2021, 10:58 PM)Rajdip123 Wrote: আচ্ছা তিয়াসার কি কি মনে পড়ে গেল সেটা শোনার জন্য গঙ্গার পাড় কিমবা শিউলি তলার দরকার, ব্যাপারটা বুঝলাম না। আমাদের ও শুনতে ইচ্ছে করছে। নিশ্চয় গঙ্গার দূষণ নিয়ে কথা হবে, নাহলে দুর্গাপুজা। Shy Shy Shy Shy Shy

Big Grin Big Grin Big Grin Big Grin
[+] 2 users Like Tiyasha Sen's post
Like Reply
(20-01-2021, 03:31 PM)Tiyasha Sen Wrote: Big Grin Big Grin Big Grin Big Grin

ইসসসসস......... আপনার দাঁত গুলো আশকরি এর থেকে ভালো  Smile Smile Smile Smile
  Heart তোমাকে খুঁজে বেড়াই Heart  
[+] 1 user Likes Rajdip123's post
Like Reply
(19-01-2021, 11:59 PM)black_shadow Wrote: দাদা নয় দিদি হবে

কালো ছায়া, এই নামে কি আর বোঝা যায় পুরুষ না মহিলা? যাই হোক আমার প্রশ্নের উত্তর গুলো এখন পেলাম না কিন্তু বন্ধু/বান্ধবী !!!!!
Reps Added +1
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(20-01-2021, 02:24 AM)TumiJeAmar Wrote: কয়েকদিন আসতে পারিনি।
এসে দেখি এখনও প্রেম চলছে। সেই ছোটবেলার একে অন্যের হাত ধরে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলা আর স্বপ্ন দেখা।
এবার একটু আগে চলো। টিভি সিরিয়ালের মত সাসপেন্স রেখো না।

প্রেম তো চলবে, প্রেমের গল্পে প্রেম চলবে না, হতে পারে নাকি! দেখলাম, খুললাম, চুদলাম, এতো আমার গল্পে হবে না দাদা!!!!!!!
Reps Added +1
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 5 users Like pinuram's post
Like Reply
পর্ব তিন (#4-#14)

 
ফোন উঠিয়ে খুশির উত্তেজনা নিয়ে উত্তর দিলাম, “কি হল কি করছ...”

কথাটা শেষ করার আগেই অন্যপাশ থেকে ভেসে এলো এক অচেনা নারীর কন্ঠস্বর, “হ্যাপি বার্থডে মিস্টার বুধাদিত্য ঘোষ।”

আমি অবাক হয়েই সেই অচনা নারী কন্ঠের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলাম, “আপনি কে বলছেন?”

ম্লান হাসি দিলেন সেই নারী কন্ঠস্বর, “সেই মানুষ যাকে হয়ত এই পৃথিবীতে সব থেকে বেশি ঘৃণা করা হয়।”

সব কিছুই আমার কাছে ভীষণ ভাবেই হেঁয়ালির মতন লাগছিল। আমি ছিলাম একটা ভীষণ প্রেমের ঘোরের আবর্তে, সেখানে এই অচেনা নারীর প্রবেশ কি করে ঘটল? আমি একটু বিরক্তি প্রকাশ করেই বললাম, “ম্যাডাম আপনার মনে হয় কোথাও ভুল হচ্ছে।”

সেই অচেনা নারীর কন্ঠস্বর ভীষণ শান্ত, “না, ভুল হচ্ছে না।” একটু হাসলেন, “এই যে এসে গেছে।”

তারপরের পুরুষের কন্ঠস্বর শুনে বুঝতে পারলাম সেই পুরুষ আমার বাবা। জিজ্ঞেস করলেন আমাকে, “কেমন আছো?”

নির্বিকার ভাবেই উত্তর দিলাম, “ভালো আছি।” সেই সাথে বেশ কিছু ছবি পরিষ্কার হয়ে গেল আমার সামনে। ওই অচেনা নারী নিশ্চয় বাবার খুব কাছের কেউ, হয়ত তার স্ত্রী।

বাবা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আমি আশা করেছিলাম যে তুমি আসবে।”

বুক ভরে শ্বাস নিলাম আমি, দেখা করার যদিও বিন্দুমাত্র ইচ্ছে ছিল না আমার তাও বললাম, “আচ্ছা দেখছি। যদি পারি এই রবিবার হয়ত যেতে পারি।”

উত্তর দিলেন, “আচ্ছা অপেক্ষা করব। ব্লাকডায়মন্ডে আসবে তো?”

উত্তর দিলাম, “হ্যাঁ।”
 
তারপরে আর ফোনে কথা বলার ইচ্ছে ছিল না। পরের দিন মামিমাকে জানিয়ে দিলাম যে রবিবার আমি ধানবাদে যাবো। তিতলিকে কিছুই বলিনি, কি বলব? বলব যে ছোট বেলায় আমার বাবা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে? বাঁধা পেলাম কোথায় যেন সেই কথা বলতে।
 
যথারীতি, রবিবার ভোরের বেলায় বেড়িয়ে পড়লাম ধানবাদের উদ্দেশ্যে। ট্রেন একটা একটা করে স্টেশান পার হচ্ছে আর আমার বিরক্তি ভাব ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। দুপুর নাগাদ ধানবাদে পৌঁছাল ট্রেন। বেশ বড় রেল স্টেশান, সব দুর পাল্লার ট্রেন এই স্টেশানে থামে। বাড়ির ঠিকানা আমার কাছে ছিল। তাই স্টেশানের বাইরে বেড়িয়ে একটা অটো করে যাত্রা শুরু করে দিলাম। জায়গায় নাম লোহারকুল্লি। সেই এলাকায় ঢুকতেই মনে হল বেশ সম্ভ্রান্ত বড়লোকেদের এলাকা। বড় বড় অট্টালিকা রাস্তার দুইপাশে। খুঁজে খুঁজে একটা দুইতলা বিশাল সাদা রঙের অট্টালিকার সামনে দাঁড়িয়ে গেল অটো। হাতের কাগজের সাথে বাড়ির নাম্বার মিলিয়ে দেখলাম। বিশাল লোহার গেটের পাশের থামে শ্বেত পাথরের প্রস্তর ফলকের ওপরে লেখা “মঞ্জুষা মন্দির”। নামটা দেখে ঠোঁটের কোনায় একটা তির্যক কাষ্ঠ হাসি ফুটে উঠল। আমার মায়ের জায়গা শুধু মাত্র এই শ্বেত পাথরের প্রস্তর ফলকে। বিশাল লোহার গেট ঠেলে ভেতরে ঢুকে পড়লাম। একটু লম্বা মোরাম বিছানো রাস্তা, দুইপাশে বেশ সুন্দর ফুলের বাগান। আমাকে ঢুকতে দেখে সঙ্গে সঙ্গে একটা লোক দৌড়ে এসে আমাকে জিজ্ঞেস করল, কাকে চাই? আমি উত্তর দিলাম, মিস্টার সুবির ঘোষের সাথে দেখা করতে এসেছি। বিশাল ভারী কাঠের দরজা খুলে আমাকে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করতে অনুরোধ করল সেই লোকটা।
 
পায়ের নিচে চকচকে শ্বেতপাথরের মেঝে। মাথার ওপরে বিশাল দামী একটা ঝাড়বাতি। দেখে মনে হল ওই ঝাড়বাতির যা দাম আমার ছোট ফ্লাটের সব আসবাব পত্র বিক্রি করে দিলেও হয়ত আমি ওই ঝাড়বাতি কিনতে পারব না। একটা দেয়াল জুড়ে বিশাল একটা আলমারি, রকমারি বইয়ে ঠাসা। দেয়ালে বেশ কয়েকটা দামী ছবি ঝুলছে। কিছু ছবি দেখে মনে হল বিদেশী। নিজেকে এই অতিসজ্যের মধ্যে কেমন বেমানান ঠেকছিল। কেন এলাম হটাত করেই এখানে। লোকটা আমাকে সোফায় বসতে বলে বাড়ির মধ্যে চলে গেল। চারদিক নিস্তব্দ, তার মাঝে একটা বাচ্চার হাসির শব্দ মাঝে মাঝে কানে ভেসে আসছে।
 
একটু পরে এক ভদ্রমহিলা ঘরের মধ্যে ঢুকলেন। রূপসী বললে ভুল হবে, দেখে মনে হল কোন দেবী দাঁড়িয়ে আমার সামনে। একটা চওড়া আঁচলের সবুজ পাড়ের ঘিয়ে রঙের শাড়ি পরিহিত। চোখে মুখে সুচারু আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট। মাথা ভর্তি কালো কোঁকড়ানো ঘন চুল, কপালে ছোট লাল একটা টিপ। চেহারায় যৎসামান্য প্রসাধনী তাও এক নির্মল লাবন্যের ছটা ঝরে পড়ছে। ঠোঁট আময়িক মিষ্টি হাসি। সিঁথিতে এক চিলতে সিঁদুর দেখে মনে হল তিনি এই বিশাল অট্টালিকার রাজ্ঞী। আমাকে দেখে দুই হাত জড় করে অভিবাদন জানালেন, আমিও উঠে দাঁড়িয়ে হাত জোড় করে প্রতিউত্তরে অভিবাদন জানালাম।
 
সেই মহিলা আমাকে বসতে বলে জিজ্ঞেস করলেন, “মিস্টার ঘোষ গাড়ি নিয়ে স্টেসান গেছিলেন, দেখা হয়নি?”

মাথা নাড়লাম আমি, “কই না তো।”
 
একটা কাজের মেয়ে একটা ট্রেতে করে এক গ্লাস সরবত দিয়ে গেল। আমাকে সরবত খেতে অনুরোধ করলেন সেই মহিলা। মার্জিত মিষ্টি কন্ঠস্বর আর সুচারু মোহময়ী রূপের বসে আমার বাবা যে হেরে গেছেন সেটা বুঝতে অসুবিধে হল না।
 
গ্লাসে একটা ছোট চুমুক দিয়ে তির্যক হেসে বললাম, “অনেক বছর পর তো তাই হয়ত কেউই কাউকে চিনতে পারিনি।”

আক্ষেপের ভঙ্গিমায় মাথা নাড়ালেন এই বিশাল অট্টালিকার রাজ্ঞী, “হ্যাঁ তা হতে পারে। আমি ড্রাইভারকে একটা প্ল্যাকার্ডে নাম লিখে নিয়ে যেতে বলেছিলাম।” মৃদু হেসে বললেন, “কে বা শোনে আমার কথা।”

কিছুক্ষনের মধ্যেই বাইরে গাড়ির আওয়াজ পেতেই মহিলা বললেন, “ওই এসে গেছেন।”
 
দরজা খুলে ঢুকলেন, মিস্টার সুবির ঘোষ, আমার বাবা, সতেরো বছর পরে আমার সাথে দেখা। কেমন দেখতে সেটাও আমি ভুলতে বসেছিলাম। সামনের মানুষটাকে ঠিক বাবা বলে আর মনে হল না, একজন অচেনা বৃদ্ধ পুরুষ মানুষ বলেই মনে হল। কাঁচা পাকা চুল, ফ্রেঞ্চ কাট কাঁচা পাকা দাড়ি গোঁফ। পুরানো পরিচয়কে চাগিয়ে তুলে নতুন পরিচয়ের বাঁধনে আর বাঁধতে চাইনা। সুবির বাবু আমাকে দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন। ভদ্রমহিলা সুবির বাবুর পিঠের ওপরে হাত রেখে মনের মধ্যে বল জুগাতে চেষ্টা করলেন হয়ত। বাবাকে এতদিন পরে দেখে আমার বুকের খাঁচা শুন্য হয়ে গেল। চোয়াল কঠিন। মনে হল একবার জিজ্ঞেস করি, শেষ সময়ে মাকে দেখতে কেন আসনি? আর যখন ভুলেই ছিলে তখন এই বাড়িতে ডেকে এনে কি বুঝাতে চাইছ? ভালো আছো তোমরা এই দেখে গেলাম। না আমি এইসবের কিছুই বলতে পারিনি। আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমি ভদ্রতার খাতিরে ডান হাত বাড়িয়ে দিলাম। তিনি আমাকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরলেন। আমার শ্বাস রুদ্ধ হয়ে গেল, আলিঙ্গনের অতিশজ্যায় নয়, কষ্টে একরাশ বিরক্তিতে।
 
সুবির বাবুর আলিঙ্গনপাশ থেকে নিজেকে মুক্ত করে ঠান্ডা গলায় জিজ্ঞেস করলাম, “কেমন আছো?”

আমার পাশের একটা সোফায় বসে উত্তর দিলেন, “এই বেঁচে আছি।” পাশে দাঁড়ানো সুন্দরী দেবী প্রতিমার হাত ধরে বললেন, “দেবস্মিতা না থাকলে হয়ত বাঁচতাম না।”
 
বুঝতে পারলাম, এই অট্টালিকার রাজ্ঞীর নাম দেবস্মিতা, সত্যি দেবীর মতন রূপ। দেবস্মিতা সোফায় বসলেন না, সুবির বাবুর পেছনে দাঁড়িয়ে রইলেন। বাড়ির মধ্যে থেকে ছোট একটা বাচ্চার গলা শোনা যাচ্ছিল। আমার কৌতূহলী চোখ যেন তাকেও খুঁজে বেড়াচ্ছিল। খুব জানতে ইচ্ছে করছিল সেই বাচ্চাটার আসল পরিচয়। তবে চোখের সামনে সুবির বাবুর পেছনে যেভাবে দেবস্মিতা দাঁড়িয়ে সেই ছবি দেখে অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেলাম আমি। নিজের ভাগ্যের জন্য হাসি পেল। না, এই বিশাল অট্টালিকার জন্য নয়, শুধু এই জন্য যে একটা পদবী ছাড়া আর কিছুই আমার মনে নেই।
 
আমাকে জিজ্ঞেস করলেন সুবির বাবু, “তোমার খবর বল।”

আমি তির্যক হেসে বাড়ির চারপাশে চোখ বুলিয়ে উত্তর দিলাম, “ভালো আছি।” তারপরে সুবির বাবুর চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করলাম, “কেন দেখা করতে চেয়েছ সেটা বল?”

সুবির বাবুর চোখের কোনা ভিজে আসে আমার গলা শুনে। কম্পিত কন্ঠে বলেন, “বাবা হই তোমার। একবার কি দেখা করার অধিকার নেই?”

আমি হিমশীতল কন্ঠে উত্তর দিলাম, “সতেরো বছর। শেষ দেখা হয়েছিল যখন আমি নরেন্দ্রপুরে পড়তে যাই। আমি তখন ক্লাস ফোরে।”

দেবস্মিতার হাত সুবির বাবুর কাঁধের ওপরে আলতো চাপ দিল বুঝতে পারলাম। নরম কন্ঠে সুবিরবাবুকে বললেন, “মিস্টার ঘোষ, একটু ভেবে ...”
 
ঠোঁট জোড়া কেঁপে উঠল সুবির বাবুর। সেদিকে আমার ভ্রুক্ষেপ ছিল না। শুধু মনে হচ্ছিল এই মানুষটা আমার মায়ের শেষ সময়ে আসেনি। দেবস্মিতার ওইভাবে সুবির বাবুর কাঁধের ওপরে হাত রাখাতেই বুঝতে পারলাম, এই মহিলার জন্য হয়ত আমার মাকে কোনদিন কাছে টেনে নেয়নি আমার সামনে বসা মানুষটা। সারা শরীর চিড়বিড় করে জ্বলতে শুরু করে দেয় আমার। বেশিক্ষন বসার ইচ্ছে ছিল না আর, তাও এতদুর এসেছি এবং ভদ্রতার খাতিরে বসে থাকতে হল। শত্রুর বাড়িতে পা রেখেছি বলে মনে হচ্ছিল আমার। বেশ কিছুক্ষন সবাই চুপচাপ, কারুর মুখে কোন কথা বার্তা নেই। নিশ্তব্ধতা ভীষণ ভাবেই কানের মধ্যে বাঁধছিল আমার। শুধু মাত্র ঘড়ির আওয়াজ আর নিজের শ্বাসের আওয়াজ। আমি চুপচাপ বসে সামনে বসা সুবির বাবু আর দেবস্মিতার দিকে তাকিয়ে ছিলাম।
 
শেষ পর্যন্ত ভদ্রতার খাতিরে জিজ্ঞেস করলাম, “তোমার শরীর স্বাস্থ্য ভালো তো?”

মাথা দুলিয়ে ইতিবাচক উত্তর দিলেন সুবির বাবু, “হ্যাঁ, এই চলছে। বয়স হয়েছে, যেমন থাকা যায় আর কি।”
 
মাথা দোলালাম আমি। কিছুপরে একটা কাজের মেয়ে একটা বিশাল ট্রেতে অনেক রকমের খাদ্য দ্রব্য পানীয় নিয়ে বসার ঘরে ঢুকে টেবিলের ওপরে রেখে চলে গেল। খাবারের বহর দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম।
 
আমি খাবারের বহর দেখে বললাম, “না না আমি এত খাই না। এক কাপ চা হলেই হবে।”

দেবস্মিতা স্মিত হেসে বললেন, “এমন কিছুই বানানো হয়নি। এই গুলো খাওয়া যায়। চা এনে দেওয়া যাবে।”
 
বুঝতে পারলাম, কি ভাবে আমাকে সম্বোধন করবেন সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না দেবস্মিতা তাই ভাববাচ্যে কথাবার্তা চলছে। আমি একটা মিষ্টি আর কোল্ডড্রিঙ্কসের গ্লাসে একটু চুমুক দিয়ে বাকি গুলো সরিয়ে দিলাম। দেবস্মিতা আর সুবির বাবু আমার খাওয়া দেখে একটু মনঃক্ষুণ্ণ হলেন বুঝতে পারলাম। দুপুর হয়ে গেছে, বিকেলের ব্লাক ডায়মন্ড এক্সপ্রেসে আমাকে ফিরে যেতে হবে। আমি ঘড়ি দেখালাম, এখন কয়েক ঘন্টা বাকি।
 
আমাকে ওই ভাবে ঘড়ি দেখতে দেখে দেবস্মিতা বললেন, “পাশেই গেস্ট রুম, হাত মুখ ধুয়ে নিলে আমি খাবার বেড়ে দেব।” সুবিরবাবুর দিকে দেখে বললেন, “ওঠো, খাওয়ার আগের ওষুধটা খেয়ে নাও। বেশি ক্ষন না খেয়ে থাকলে তোমার আবার গ্যাস হয়ে যাবে। বাকি গল্প খাওয়ার টেবিলেই হবে।”
 
দেবস্মিতা আমাকে বসার ঘরের পাশের একটা ঘর দেখিয়ে দিল। ঘরটা বেশ বড়, কোন পাঁচ তারা হোটেলের কামরার মতন করে সাজানো বিছানা। বিছানার দুই পাশে ছোট টেবিলের ওপরে আলোর বাতি। একপাশে একটা বড় টেবিল আর চেয়ার। একপাশে একটা ছোট সোফা। এক পাশের দেয়াল জুড়ে জানালা, ভারী পর্দায় ঢাকা। বাথরুমটাও বেশ বড়। আমি বাথরুমে ঢুকে হাত মুখে সাবান দিয়ে ধুয়ে মুছে বেড়িয়ে এলাম। বসার ঘরের অন্যপাশে খাওয়ার ঘর। বেশ বড় খাওয়ার টেবিল, ছয়খানা চেয়ার পাতা।
 
আমি বেড়িয়ে আসতেই একটা ছোট কচি বাচ্চার সাথে দেখা। হাতে একটা খেলনা গাড়ি, মাথা ভর্তি কোঁকড়ানো চুল। দেবস্মিতা সেই বাচ্চাকে কোলে তুলে আমাকে দেখিয়ে বললেন, “হাই বল।”

কচি বাচ্চাটাকে দেখে একটু হাসলাম। বাচ্চাটা আমার দিকে দেখে হাত তুলে বলল, “হাই, তোমার নাম কি?”

আমি আমার নাম বললাম, “বুধাদিত্য। তোমার নাম কি?”

বাচ্চাটা নিজের নাম বলল, “পাপ্পাতিত্ত।”

আমি একটু অবাক হয়েই ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম। দেবস্মিতা হেসে ফেললেন ছেলের কথা শুনে। আমাকে বললেন, “ওর নাম বাপ্পাদিত্য।” ছেলেকে বললেন, “তোমার দাদা হয়।”

ভুরু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে রইল বাপ্পাদিত্য, “দাদাদের গাড়ি মুচ হয় না। আঙ্কেলের গাড়ি মুচ হয়।” বলেই খিলখিল করে নিষ্পাপ হাসি হেসে দিল।
 
আমি হেসে ফেললাম ওর কথা শুনে, সেই সাথে দেবস্মিতাও ছেলের কথা শুনে হেসে ফেললেন। যত জমানো ক্রোধ ছিল, এই নিষ্পাপ শিশুটির নির্মল হাসিতে ভুলে গেলাম। আমার নামের সাথে মিলিয়ে ছেলের নাম রেখেছে ভেবে বেশ ভাল লাগলো। বাচ্চাটাকে দেখে আমার একটু খারাপ লাগলো। আগে থেকে জানলে বাচ্চাটার জন্য হাতে করে কিছু নিয়ে আসা যেত, একটা চকলেট অন্তত। আমি ওর কোঁকড়া চুলে আদর করে দিলাম। বিশাল টেবিলে কাঁসার বাসনে খাবার ব্যাবস্থা। এলাহি ব্যাপার। টেবিলে শুধু মাত্র দুটো থালা পাতা। একটাতে বসে পড়লাম আমি, অন্যটাতে সুবির বাবু। দুটো কাজের মেয়ে এক এক করে খাবার এনে দিল, কিন্তু দেবস্মিতা নিজে হাতেই পরিবেশন করলেন।
 
আমি সুবিরবাবুকে জিজ্ঞেস করলাম, “তোমার আরো বছর তিনেকের মতন চাকরি আছে তাই না?”

খেতে খেতে নাতি বাচক ভাবেই মাথা নাড়লেন সুবির বাবু, “না, পাঁচ বছর আগেই ভলেন্টিয়ারি রিটায়ারমেন্ট নিয়ে নিয়েছি। এই দ্বিতীয় বার এটাক হওয়ার পরে এখন বেশির ভাগ সময়ে বাড়িতেই থাকি। একটা হেভি মেসিনারির কোম্পানি খুলেছি। ট্রাক, হেভি আরথ মুভারস, ইত্যাদি। রাস্তা কন্সট্রাক্সান, বড় বড় বিল্ডিং কন্সট্রাক্সানে কাজে লাগাই।” দেবস্মিতার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বললেন, “এই দেখে, এর অধিনেই সব। আমি এখন নিমিত্ত মাত্র।”
 
দেবস্মিতা লাজুক একটা হাসি দিলেন। ছেলে কোলে একটা চেয়ারে বসে একটা থালায় ভাত নিয়ে ছেলেকে খাওয়াতে শুরু করে দিলেন। চোখের সামনে সম্পূর্ণ একটা ছবি দেখে আমার ভালো লাগলো সেই সাথে বুকের মধ্যে একটা শূন্যতা।
 
আমি খেতে খেতে সুবিরবাবুকে জিজ্ঞেস করলাম, “এই বাড়িটা আগে তো ছিল না?”

নাতি বাচক ভাবেই মাথা নাড়লেন সুবির বাবু, “না।” তারপরে দেবস্মিতার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “কত বছর হল? এই বারো বছর হবে তাই না?” দেবস্মিতা মাথা দুলিয়ে সায় দিলেন সুবির বাবুর কথায়।
 
আমি সুবির বাবু আর দেবস্মিতার কথা বলার ধরন দেখে বুঝতে পারলাম, সুবির বাবুকে সম্পূর্ণ রূপে আয়ত্তে করে রেখেছেন দেবস্মিতা। কিন্তু একটা জায়গায় খটকা লাগলো, এত সুন্দর সাজানো একটা ছবি, এর মধ্যে আমার জায়গা নেই আমি জানি, কিন্তু এই সতেরো বছর পরে কিসের জন্যে আমাকে মনে পরে গেল। খাওয়া শেষে দেবস্মিতা ছেলেকে নিয়ে চলে গেলেন। আমি আর সুবর বাবু বসার ঘরে বসলাম। ঘড়ির কাঁটা যেন নড়তে চায় না। সুবির বাবু একটা ম্যাগাজিনের পাতা উল্টাচ্ছেন আমি একটা পেপার মুখস্থ করতে ব্যাস্ত। মনের মধ্যে খুঁতখুঁত, এই ছবিটার মধ্যে কালো কালির দাগ ফেলার জন্য কি আমাকে ডাকা।
 
কিছু পরে দেবস্মিতা বসার ঘরে এসে আমাদের এইভাবে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে সুবিরবাবুকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি এমন চুপচাপ বসে কেন?”

সুবির বাবু ম্যাগাজিন থেকে মাথা উঠিয়ে একবার আমার দিকে তারপরে দেবস্মিতার দিকে তাকিয়ে বললেন, “না মানে, এই ম্যাগাজিনটা দেখছি।”

দেবস্মিতা বাঁকা একটা হাসি হাসলেন সুবির বাবুর দিকে তাকিয়ে, “তুমি পারো বটে মিস্টার ঘোষ।” আমার দিকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, “অফিস কোথায়?”

ছোট উত্তর দিলাম, “পার্ক স্ট্রিটে।”

দেবস্মিতা জিজ্ঞেস করলেন, “মামা মামি ভালো আছেন?”

আমি ইতিবাচক হিসাবে মৃদু মাথা দোলালাম, “হ্যাঁ।”

দেবস্মিতা মৃদু হেসে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “রাতে কি বানাবো?”

আমি ঘড়ি দেখলাম, ট্রেন ছাড়তে আরও এক ঘন্টা বাকি। আমি ওদের উত্তরে বললাম, “না না, রাতে থাকবো না। আগামী কাল অফিস আছে আমার।”

আমার কথাটা শুনে সুবির বাবু আর দেবস্মিতার চেহারা বেদনায় পাংশু হয়ে গেল। সুবির বাবু বললেন, “মানে এতদিন পরে এলে। একটা রাত থেকে যেতে পারতে।”

আমি ঘড়ি দেখে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম, “না, অত কষ্ট করতে হবে না। এই তো আপনাদের সুখের সংসার দেখে গেলাম। আবার রাতে থেকে এই সুখের সংসারে ভাঙ্গন ধরাতে চাই না।”
 
দেবস্মিতা আর সুবির বাবুও আমার সাথে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন। কারুর মুখে কোন কথা নেই। আমার কথা শুনে দেবস্মিতার চোখের কোনায় একটু জলের রেখা দেখা দিল সেই সাথে বুঝতে পারলাম যে সুবিরবাবুর দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এলো।
 
আমি দরজার দিকে এগিয়ে যেতেই দেবস্মিতা বললেন, “আমি ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি।”

নাতি বাচকে মাথা নাড়লাম আমি, “না দরকার নেই। এতদুর একা একা পাড়ি দিয়েছি, বাকি পথটা আমি একাই হেঁটে চলে যেতে পারব।”
 
আমি আর দাঁড়ালাম না। দরজা খুলে বেড়িয়ে পড়লাম। শেষ বারের মতন গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে শ্বেত পাথরের প্রস্তর ফলকে লেখা মায়ের নামের ওপরে হাত বুলিয়ে দিলাম। পেছনে দেখলাম, দরজায় দাঁড়িয়ে দেবস্মিতা আর সুবিরবাবু। দোতলার বারান্দায় একটা কচি বাচ্চা আমাকে দেখে হাত নাড়াচ্ছে। আমি বাপ্পাদিত্যের দিকে দেখে একটু হাত নাড়িয়ে লোহার গেট পেছনে বন্দ করে খালি রাস্তা ধরে বড় রাস্তার দিকে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম।
 
বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হয়ে গেছিল। সারাটা রাস্তা শুধু মাত্র মায়ের কথা মনে পড়ছিল। ট্রেনের বাথরুমে ঢুকে পার্সের মধ্যে থেকে মায়ের ছবিটা বার করে দেখলাম। ডুকরে কেঁদে উঠতে চাইল মন। মা গো তোমার জায়গা আমার মাথায়।
[Image: 20210115-150253.jpg]
Like Reply
Ei plot ta khub chena chena lagche!!!joddur mone porche ei debasmita mahilati er role ta khub vital
[+] 2 users Like Debartha's post
Like Reply
(20-01-2021, 05:17 PM)pinuram Wrote:  আমি দরজার দিকে এগিয়ে যেতেই দেবস্মিতা বললেন, “আমি ড্রাইভারকে বলে দিচ্ছি।”

নাতি বাচকে মাথা নাড়লাম আমি, “না দরকার নেই। এতদুর একা একা পাড়ি দিয়েছি, বাকি পথটা আমি একাই হেঁটে চলে যেতে পারব।”
অসাধারণ আপডেট ছিল এটা. বাবা ছেলের মুখোমুখি সাক্ষাৎ, যার কারণে বাবাকে হারানো সেই মানুষটার সাথে সাক্ষাৎ আর তার থেকেও বড়ো সেই নিষ্পাপ ফুটফুটে মানুষটার সাথে সাক্ষাৎ.

কেন ডাকলো? শুধুই দেখতে? নাকি অনেক কথা বলার ছিল?


শেষের ওই কথাটা যেটা ওপরে উল্লেখ করেছি...ওটা শুধুই কথা নয়, অনেক জমানো ব্যাথা বেদনা.❤❤
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
ওহ হ্যা... আমার দূরত্ব থ্রেডে আপনার বলা empty mind এর উত্তরে কিছু লিখেছি.... পড়ে নেবেন একবার ❤ Big Grin Iex
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply




Users browsing this thread: 60 Guest(s)