15-01-2021, 11:48 PM
(15-01-2021, 05:13 PM)Prasenjit Wrote: দাদা ঐ গল্পের মাধ্যমে আমাদের কেউ অনেক কিছু অনুভূতি করিয়েছেন আপনি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ গল্পটা মনে রাখার জন্য !!!!!!
Reps Added +1
Romance সুপ্তির সন্ধানে
|
15-01-2021, 11:48 PM
(15-01-2021, 05:13 PM)Prasenjit Wrote: দাদা ঐ গল্পের মাধ্যমে আমাদের কেউ অনেক কিছু অনুভূতি করিয়েছেন আপনি। অনেক অনেক ধন্যবাদ গল্পটা মনে রাখার জন্য !!!!!! Reps Added +1
15-01-2021, 11:50 PM
(15-01-2021, 05:45 PM)bourses Wrote: আমার এ প্রেম নয় তো ভীরু, আহা, কি সব দিচ্ছ, এর ওপরে কি আর কিছু বলার থাকে নাকি? নির্বাক শ্রোতা হয়েই থাকতে হয় এমন সব কবিতা পড়ে !!!!!
15-01-2021, 11:51 PM
(15-01-2021, 10:32 PM)Mr Fantastic Wrote: বাড়িতে বাবা, কাকা, ভাই কেউ নেই, এই পরিস্থিতিতে যদি তিতলির মায়ের সাথে একটু সদ্ভাব জমাতে পারে তাহলে পরে অনেক কাজে দেবে !! দেখা যাক, ওর মায়ের কি মতিগতি! সেটা আবার বাঘিনী না হয়, তাহলে বলা খুব মুশকিল হবে যে কি হবে ভবিষ্যতে !!!!!
15-01-2021, 11:54 PM
(15-01-2021, 10:58 PM)TumiJeAmar Wrote: ধন্য আদি ধন্য হে যখন বুকে আমার আগুন জ্বলে, তা বুঝে কেউ আহা বলে আমি বলি তাকে মিথ্যে কেন, হচ্ছো আমার অন্তর্যামী যখন একটু তুমি আহা বলো, ভালো করে পুড়ি আমি ধন্য আমি ধন্য হে পুড়ি তোমার জন্য যে !!!!!
15-01-2021, 11:58 PM
(15-01-2021, 10:58 PM)Tiyasha Sen Wrote: হ্যাঁ দেখা যাক কি হয়!!! আচ্ছা, তাহলে দ্বিতীয় অঙ্ক গল্পটা পড়া হয়ে গেছে! তাহলে ওই গল্পের নীলাঞ্জনার গল্প আর ওই বুধাদিত্যের গল্প পড়া হয়ে গেছে! ওই একটা জায়গা এই গল্পে এক রকমের আছে! অর্থাৎ, এখানেও বুধাদিত্যের সাথে বুধাদিত্যের বাবার সম্পর্ক আর বুধাদিত্যের বাবার দ্বিতীয় স্ত্রীর গল্প এক রকমের থাকবে! দুই গল্পের চরিত্রের নাম এক হলেও এতক্ষনে হয়ত বুঝে গেছেন যে এই বুধাদিত্য সেই বুধাদিত্য নয়! ওই একটা বিষয়ে এক থাকলেও এই দুটো ভিন্ন গল্প ! আরো একবার ধন্যবাদ, "দ্বিতীয় অঙ্ক" গল্পটা পড়ার জন্য !!!!!
15-01-2021, 11:59 PM
(15-01-2021, 11:22 PM)bluestarsiddha Wrote: Titlir jonno jan die debo,jan nieo mebo (15-01-2021, 11:28 PM)bluestarsiddha Wrote: 36 eo bie korinai, waiting for titli ৫০০ তম কমেন্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ গুরু !!!!!!
16-01-2021, 12:06 AM
Ajrate e mon ki chay.... Jano jodi e mon ki chay
16-01-2021, 12:10 AM
Ager golpo valo lavenai tai comment korinai, but eita jabardast
16-01-2021, 01:16 AM
(15-01-2021, 04:25 PM)pinuram Wrote: এসে গেছে... এসে গেছে!!
আমি নিয়ে এসে গেছি তোমার গল্পের নতুন পোস্টার!!❤
আর এটা হোলো তোমার signature poster❤
16-01-2021, 09:32 AM
অনেকদিন পরে এলাম, কাজের ব্যস্ততার জন্য সময় করে উঠতে পারিনি।
দেখে ভালো লাগলো বুধো, আদি হতে পেরেছে। আর সাথে উপরি পাওনা হিসাবে জুটলো তিতলির চড়, এতদিনের জমে থাকা মেঘের থেকে আর একটু বেশি বৃষ্টিপাতের আশা করেছিলাম বেশ সুন্দর এগাচ্ছে, এখন mufasa কে সামলানোর দায়িত্ত্ব আদির। সামনে এবার আদিকে সামলে ডিফেন্স করতে হবে, দেখা যাক পিনুরাম কী বলেন। Now Adi be like, "Main udna chahta hoon, daudna chahta hoon, girna bhi chahta hoon ... bus rukna nahi chahta"
16-01-2021, 09:41 AM
(13-01-2021, 11:13 AM)pinuram Wrote: কে কোথায় কবে এই খবর আপনাকে দিল? এই খবর তো আমি নিজেই জানি না !!!!! sorry dada ওটা আলাদা এক দাদার ছিল
16-01-2021, 10:31 AM
(15-01-2021, 11:28 PM)bluestarsiddha Wrote: 36 eo bie korinai, waiting for titli ভাই , একটু ঠান্ডা মাথায় বোঝার চেষ্টা করো.... পিনুদার গল্পের তিতলির বয়স উনিশ বা খুব বড়জোর হলে কুড়ি হতে পারে , তাই তোমার ৩৬ বছরে তুমি ওর কাকা বা মামার মতো , সুতরাং নাকচ হয়ে গেলে !! আর যে সত্যিকারের তিতলি সে গত 4th OCT , ৪৫ এ পা দিলো , সুতরাং তোমার নাগালের বাইরে !!! তুমি একটু চেষ্টা করে ৩০ -৩২ বছরের অন্য কোনো তিতলিকে খুঁজতে থাকো , our best wishes are with you.....!!!
16-01-2021, 12:43 PM
(16-01-2021, 12:06 AM)bluestarsiddha Wrote: Ajrate e mon ki chay.... Jano jodi e mon ki chay (16-01-2021, 12:08 AM)bluestarsiddha Wrote: https://youtu.be/Yv70MKdFb_E (16-01-2021, 12:09 AM)bluestarsiddha Wrote: ++reps,++likes (16-01-2021, 12:10 AM)bluestarsiddha Wrote: Ager golpo valo lavenai tai comment korinai, but eita jabardast নেশা খোর ফেরিওয়ালা মানুষ আমি, আমার সব কটা গল্প যে সবার ভালো লাগবে তার কোন মানে নেই! এই গল্পটা ভালো লাগছে দেখে বড় ভালো লাগলো !!!!!!
16-01-2021, 12:44 PM
(16-01-2021, 01:16 AM)Baban Wrote: জবরদস্ত ব্যাপার, জবরদস্ত এঁকেছ মাইরি !!!!!!
16-01-2021, 12:47 PM
(16-01-2021, 09:32 AM)Buro_Modon Wrote: অনেকদিন পরে এলাম, কাজের ব্যস্ততার জন্য সময় করে উঠতে পারিনি। দু দুটো চড়ের পরে বেশি বৃষ্টি পাত করালে বন্যা হয়ে যাবে, সেই ভয়ে আর ফারাক্কা থেকে জল ছাড়া হয়নি !! আপনাকে আবার দেখতে পেয়ে বেশ ভালো লাগলো !!!!!!
16-01-2021, 12:49 PM
(16-01-2021, 10:31 AM)ddey333 Wrote: ভাই , একটু ঠান্ডা মাথায় বোঝার চেষ্টা করো.... প্রেম কি আর বয়স দেখে ভাই? প্রেমে বয়স দেখে না! এই তিতলি তাহলে সেই হিসাবে তোমার নাতনির বয়সী হওয়া উচিত আর সেই তিতলির কথা বেশি আর নাই বা বললাম !!!!
16-01-2021, 12:53 PM
পর্ব তিন (#2-#12)
আমি ওর ফোল্ডার নিজের ব্যাগে ঢুকিয়ে নিলাম। আমার কাঁধে হাত রেখে কোনমতে ট্যাক্সি থেকে নিচে পা রাখতেই, আউ করে ব্যাথায় একটু ককিয়ে উঠল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হাঁটতে পারবে। মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিল পারবে। গেট খুলে বাড়ির মধ্যে ঢুকে দেখলাম, বাড়ির সামনে বড় বাগান। কাঁধে হাত রেখেই কোন রকমে সিড়ি চড়ে দোতলায় ওঠা হল। বসার ঘর বেশ বড়। তিতলিকে আমার সাথে ঢুকতে দেখেই ওদের কাজের মেয়েটা সঙ্গে সঙ্গে ওর মাকে ডেকে নিয়ে এলো। আমি তিতলির মাকে দেখে মাথা নুইয়ে প্রনাম জানিয়ে তিতলিকে সোফায় বসিয়ে দিলাম। তিতলির মায়ের দিকে তাকিয়ে রইলাম, মমতাময়ী মাতৃ মূর্তি। মেয়ের এই অবস্থা দেখে তিতলির মা অস্থির হয়েই ওকে জিজ্ঞেস করলেন, “কি হয়েছে রে তোর?” ওর হয়ে আমিই উত্তর দিলাম, “কাকিমা আর বলবেন না। আপনার মেয়ে রাস্তা দেখে পার হয় না। ব্যাস আর কি। পা মচকে গেছে।” অস্থির হয়ে উঠলেন তিতলির মা, “কোথায় লেগেছে দেখি।” তিতলি মৃদু হেসে ওর মাকে বলল, “না গো বেশি লাগে নি। এই একটু পা মচকে গেছে। মুভ লাগিয়ে দিলেই ঠিক হয়ে যাবে।” আমার দিকে চোখ পাকিয়ে একটু কটাক্ষ করে তাকিয়ে দেখল। মেয়ের ভাব মনে হয় ওর মা বুঝতে পেরে গেছিলেন। মেয়ের পাশে বসতেই, তিতলি নিজের মাকে একটু আদর করে জড়িয়ে ধরল। মৃদু হেসে আমাকে বসতে বললেন, “বস।” আমি সোফায় বসার পরে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার নাম আদি?” আমি মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ বললাম। বুঝলাম ওর মা আমার সম্বন্ধে জানে। মনে মনে হেসে ফেললাম আমি। যখন নিজেই জানতাম না আমি কি তখন ওর মনে সেই বিশ্বাস ছিল। আমি তিতলির দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসি দিলাম। তিতলির মা কাজের মেয়েটাকে চা বানাতে বললেন। তিতলি সোফা ছেড়ে উঠে বলল, “আমি বানিয়ে আনছি।” কাকিমা মেয়ের দিকে তাকিয়ে আশ্চর্য হয়ে গেলেন, “তুই চা বানাবি? তুই তো...” কথাটা শেষ করতে দিল না তিতলি। ওর মাকে হেসে বলল, “কেন আমি কি চা বানাতে পারি না।” মাথা নাড়িয়ে হেসে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, “না রে মা, তুই অনেক কিছুই পারিস।” আমি দেখতে পেলাম, কাকিমার চোখের কোনা একটু ভিজে এসেছে। আনন্দে নাকি আসন্ন ভবিষ্যতরে কোন মেঘের ছায়া দেখে জানি না। আমি আর কাকিমা তিতলির দিকে তাকিয়ে দেখলাম। পায়ের ব্যাথায় একটু খুঁড়িয়ে চলছে তবে দেখে মনে হল না যে এই মেয়ে একটু আগে পায়ের ব্যাথায় হাঁটতে পর্যন্ত পারছিল না। তিতলি কাজের মেয়েকে নিয়ে রান্নাঘরে চলে যাওয়ার পরে কাকিমা আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি বাঙ্গুরে থাকো?” আমি মাথা দুলিয়ে বললাম, “হ্যাঁ।” কাকিমা কিছু একটা ভেবে মৃদু মাথা নেড়ে মৃদু হেসে বললেন, “তুমি তো জানো যে তিতলি ক্লস্ট্রোফোবিক।” আমি মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিলাম, জানি। কাকিমা বললেন, “ছোট বেলায় খুব ভুগেছি ওকে নিয়ে। কিছুতেই কলেজে পাঠানো যেত না। অনেক সাইকিয়েট্রিস্ট দেখিয়ে, অনেক কাউন্সিলিং করার পরে অনেক ঠিক হয়েছে। তারপরে নাচের কলেজে ভর্তি করে দিলাম। এই কম্পিউটার কোর্সে ভর্তি করে দিলাম। যাতে একটু মানুষ চেনে, মানুষের সাথে মিশতে পারে। এখন পর্যন্ত বাসে চড়তে ভয় পায়। ভিড় বাসে একদম চড়তে পারে না। এক নয় গাড়ি, না হলে ট্যাক্সি।” আমি মৃদু হাসলাম, সেটা জানি। কাকিমা আমার দিকে দেখে বললেন, “জানি না কি করবে।” আমি কাকিমাকে আসস্থ করে বললাম, “এত চিন্তা করছেন কেন? আপনার মেয়ে যথেষ্ট কথা বলে।” আমার কথা শুনে আশ্চর্য হয়ে আমাকে বললেন, “কি বলছ তুমি?” এই কথা আমি ছাড়া আর কে জানে। আমার বাইকের পেছনে চেপে কলেজ থেকে বাড়ি পর্যন্ত, সারাটা রাস্তা যে ভাবে গল্প করে সে মেয়ে মুখচোরা কখনই হতে পারে না। আমি মাথা দুলিয়ে বললাম, “হ্যাঁ, কাকিমা। তবে কি জানেন। ও জানে কোন মানুষের সাথে কি ভাবে কথা বলতে হয়।” একটু ভেবে মাথা নাড়িয়ে আমার দিকে ম্লান হেসে বললেন, “ভালো হলেই ভালো।” একটা ট্রেতে দুই কাপ চা বানিয়ে বসার ঘরে এলো তিতলি। আমাদের দেখে মিষ্টি হেসে নিজের মাকে বলল, “আমার নামে নালিশ চলছে নাকি?” কাকিমা মেয়ের হাত ধরে টেনে নিজের পাশে বসিয়ে সস্নেহে মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, “তোর পা ভালো হয়ে গেছে মনে হচ্ছে?” আমার দিকে একটু তাকিয়ে লাজুক হেসে মায়ের প্রশ্নের উত্তর দিল তিতলি, “তা একটু হয়েছে।” কাকিমা আমাকে বললেন, “তুমি দুপুরে খেয়ে যেও।” আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম, “না না, কাকিমা অন্যদিন খাওয়া যাবে। আমাকে মামাবাড়ি যেতে হবে।” কাকিমা বললেন, “তুমি প্রথমবার এলে আর শুধু চা খেয়ে যাবে?” আমি তিতলির দিকে আড় চোখে দেখে একটু ইয়ার্কি মেরে বললাম, “আপনি রান্না করলে খেতে পারি। এসব আনকোরা হাতের রান্না খেয়ে পেট খারাপ করতে চাই না।” তিতলির মুখ গোমড়া হয়ে গেল। গোমড়া মুখেই আমার দিকে চাঁটি মারার ইশারা করে একটু ধ্যাতানি দিয়ে বলল, “হ্যাঁ তুমি যেন কত আমার হাতের রান্না খেয়েছ।” বলেই নিজে লজ্জা পেয়ে গেল। তিতলির বলার ধরন দেখে কাকিমা হেসে ফেললেন, সেই সাথে আমিও হেসে ফেললাম। কাকিমা আমাকে বললেন, “আচ্ছা তুমি বল তুমি কি খেতে চাও আমি তাই রান্না করে খাওয়াবো তোমাকে।” আমি বললাম, “আপনার হাতের শুক্তো খেতে চাই।” সেই শুনে কাকিমা আর তিতলি, দুইজনেই হেসে ফেলে। কাকিমা জিজ্ঞেস করলেন, “শুক্তো কেন?” আমি মৃদু হেসে উত্তর দিলাম, “শুরুতে তেতো ভালো।” মনে হয় কাকিমা আমার কথার গুঢ় অর্থ অনুধাবন করতে পেরে ম্লান এক হাসি দিয়ে বললেন, “এমন কেন বলছ?” আমি নেতি বাচক ভাবেই মাথা নাড়ালাম, কিছু না, মুখে কোন উত্তর দিলাম না। আরো একটু বসে তিতলির হাতের তৈরি চা খেয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। তিতলি নিচে আমাকে ছাড়তে না এলেও বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল। বাইরে বেড়িয়ে দোতলার বারান্দার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়িয়ে ওকে বিদায় জানাতে গেলাম। একটা ছোট কাগজের টুকরো এসে পড়ল গায়ের ওপরে। আমি হাতে নিতে দেখি তিতলি আমার দিকে তাকিয়ে ওই কাগজের দিকে ইশারা করছে। মোড়া কাগজ খুলে দেখলাম, একটা লাইন লেখা। “সোমবার কলেজে আসবে। না হলে মার খাবে।” আমি মাথা দুলিয়ে জানিয়ে দিলাম, যথাআজ্ঞা মহারানী। মামাবাড়ি পৌঁছাতে বিকেল হয়ে গেছিল। দুপুরে খাওয়া হয়নি। মামিমা আমার বাড়িতে ফোন করেছিল কিন্তু আমি ছিলাম না। মামাবাড়ি ঢুকতেই মামিমার বকা শুনতে হল। সেই দুপুর থেকে তোর ভাত বেড়ে বসে আছি, একটা ফোন করতে পারিসনি। মামিমার বকা খেতেও তখন বেশ ভালো লাগছিল। ফোন নাম্বার নেওয়া হয়নি, তাই রাতে আর ফোন করা হল না। তবে আমি অনির্বাণকে ফোন করে বলে দিলাম যে যদি পারে তাহলে যেন সোমবার আমার অফিসে বাইক নিয়ে চলে আসে। সোমবার বাইক না পেলে তিতলির কলেজ যাওয়া হবে না। তিতলির সাথে দেখা না করতে পারলে, চপেটা ঘাত আছে কপালে। রাতে আর ঘুম হল না আমার। আগের অস্থিরতার কারণ ছিল ভিন্ন, বিরহের শূন্যতা ছিল বুকের ভেতরে। সেদিন বিরহের জন্য নয়, একটা অসীম ভালোলাগায় ভরে ছিলাম আমি। আমার কাঁধে মাথা রেখে বাকিটা রাস্তা আমার হাত নিজের হাতের মধ্যে চেপে ধরে বসেছিল তিতলি। আমার জামায় তখন যেন ওর গায়ের গন্ধে মাখামাখি। আমার সারা মুখের ওপরে ওর রেশমি চুলের আবরণ, নাকে ভেসে আসে স্নিগ্ধ সুঘ্রাণ। আকাশের পোজা তুলোর মেঘের ভেলার মাঝে বাঁকা চাঁদ আর আমাকে দেখে কটাক্ষ করে হাসে না। রাতে হোঁৎকা তোতাপাখির সাথে কথা হল। কিন্তু তিতলির ব্যাপারে কিছুই জানালাম না। এখন সেই পর্যায়ে পৌঁছাইনি। যথারীতি, সোমবার দুপুরে আমার অফিসে বাইক পৌঁছে দিয়েছিল অনির্বাণ। লাঞ্চ টাইমে অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে বেশ কিছুক্ষন দুইজনে গল্প করলাম। অনির্বাণের মুখে হাসি ধরে না। কাবেরিকে নিয়ে ভিক্টোরিয়া, ময়দান, আউট্রাম ঘুরেছে সারাদিন। ওদের প্রেম একটু একটু শুরু হয়েছে। আমাকে জিজ্ঞেস করাতে আমি বললাম তিতলির কথা। বাড়ি পৌঁছে দিয়েছি এইমাত্র। অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে পড়লাম। বেশি দেরি করে সুন্দরী ক্ষেপে যাবে। অনেকদিন পরে কলেজের সামনে আমার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে। একটা হেলমেট এবারে কিনতেই হবে। দিন ছোট হয়ে এসেছে। বাইক নিয়ে যখন বেথুনের সামনে পৌঁছালাম ততক্ষনে সূর্যদেব পশ্চিমে পাটে বসে গেছেন। রাস্তার দুইধারে নিয়নের আলো জ্বলে উঠেছে। সন্ধ্যে হলেই রাস্তায় লোক চলাচল বেড়ে যায়। সবাই হয়ত বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। ওর কলেজের গেটে সন্ধ্যে বেলাতেও দেখলাম ছেলে মেয়েদের ভিড়। আমি ওর কলেজের গেট ছাড়িয়ে আরো একটু এগিয়ে বাইক দাঁড় করালাম। একটা সিগারেট ধরাতে যাবো কি পেছনে একটা কোমল হাতের ছোঁয়া। পেছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখলাম, রূপসীর হাসি মুখ, “দেরি করলে কেন?” আমি ওকে বললাম, “অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বেড়িয়েছি আর তুমি বলছ দেরি?” বাইকের পেছনে উঠতে উঠতে বলল, “বাঃ রে সন্ধ্যে হয়ে গেছে, সবাই চলে গেছে।” আমি ওকে বললাম, “কি করব তাহলে?” কথাবার্তার ধরনে বোঝা মুশকিল যে এই আমি কি আর সেই আমি, এই তিতলি কি আর সেই তিতলি। মনে হল যেন সকালেই দেখা হয়েছিল, ফিরতে একটু দেরি দেখে বকা খাচ্ছি। মনেই হল না যে প্রায় এক দেড় মাস পরে, হৃদয়ের সাথে দুইজনে যুদ্ধ করে ফিরছি। তিতলি বেশ সাবলীল ভাবেই বাইকের পেছনে বসে আমার কাঁধে হাত রাখল। আমাকে বলল প্রেয়সী, “তাহলে কাল থেকে আমি কলেজের পরে তোমার অফিসে চলে আসব।” আমি হেসে ফেললাম ওর কথা শুনে, “তুমি না, পারো বটে।” পিঠের কাছ ঘেঁষে বসে নিজেকে আমার প্রসস্থ পিঠের ওপরে নিবিড় করে উজাড় করে ঢেলে দিল। কানের কাছে ফিসফিসয়ে বললে ললনা, “আচ্ছা এবারে চল।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, “ঠিক করে বসেছ?” মাথা দুলালো, “হ্যাঁ।” আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, “তোমার একটা হেলমেট কিনতে হবে এবারে।” হেসে ফেলল তিতলি, “মনে পড়েছে তাহলে যে এবারে একটা হেলমেটের দরকার।” আমি বাইকে স্টার্ট দিয়ে বললাম, “হ্যাঁ। এই যাওয়ার পথে হাতিবাগান থেকে কিনে নেব।” আদুরে কন্ঠে আবদার করল রমণী, “ওই কালো রঙের কিনব না কিন্তু। আর হ্যাঁ, শুধু মাথা ঢাকা ওয়ালা। এই তোমাদের মতন পুরো মাথা আটকে দেবে এমন নয় কিন্তু।” আমি হেসে ফেললাম ওর কথা শুনে, “আচ্ছা বাবা, তোমার পছন্দ মতন কিনে দেব।” হাতিবাগানে এসে একটা রাস্তার পাশের দোকান থেকে দরদাম করে একটা লাল সাদা রঙের হেলমেট কেনা হল। যেহেতু ভিড় একদম পছন্দ করে না তাই একদম আমার গা ঘেঁষে আমার বাজু দুই হাতে আঁকরে ধরে দাঁড়িয়ে ছিল তিতলি। ভিড় দেখলেই ওর চোখে মুখে একটা ভীতির ছাপ স্পষ্ট দেখা যায়। বাইকে ওঠার পরে ললনার অভিব্যাক্তি পুরো বদলে যায়। দেখে মনেই হবে না এই মেয়ে একটু আগে হাতিবাগানের ভিড় দেখে ভয় পেয়ে গেছিল। পেলব বাহুদ্বয় দিয়ে আমার কোমর পেঁচিয়ে ধরে আমার ডান কাঁধে থুঁতনি রেখে জিজ্ঞেস করল, “এই আদি, পুজোতে কি করলে?” পুজোর কথা মনে করাতেই দিম্মার কথা মনে পরে গেল। দিম্মার কথা মনে পড়তেই মনে হল “আদি” নামটা এই তিতলি না থাকলে হারিয়ে যেত দিম্মার সাথে। মনে হল বাইক থামিয়ে জড়িয়ে ধরি তিতলিকে। আমি বুক ভরে শ্বাস নিয়ে ওকে বললাম, “আমার দিম্মা নবমীর দিন মারা গেছেন।” কথাটা শুনে আঁতকে উঠল তিতলি, “কি ভাবে?” আমি নরম গলায় বললাম, “এই আমরা সবাই মিলে হরিদ্বার ঋশিকেশ বেড়াতে গেছিলাম। বেশ ভালো ঘুরলাম। শেষ দিনে ঠিক ফিরে আসার আগের দিনে হরিদ্বারে মারা গেলেন।” তিতলির মন ভারাক্রান্ত হয়ে গেল। বেশ কিছুক্ষন আমার কাঁধের ওপরে গাল রেখে চুপ করে বসেছিল। বাতাসে একটু ঠান্ডার আমেজ। পিঠের ওপরে তিতলির কোমল নধর দেহের উষ্ণ পরশ আমাকে মাতিয়ে তোলে। বেশ কিছুক্ষন ওকে চুপ করে থাকতে দেখে আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, “কি হল?” মাথা নাড়ল তিতলি, “না কিছু না।” দুই হাতে আস্টেপিস্টে আমাকে জড়িয়ে ধরে মিষ্টি মিহি কন্ঠে বলে, “তুমি না মহা শয়তান। তোমার ফোন নাম্বার ও দিলে না আমাকে।” হটাত করেই পিঠ থেকে সরে গিয়ে, পিঠের ওপরে পাতলা নখের আঁচরে কি সব লিখতে লাগলো। কয়েকটা বুঝতে পারলাম, পাঁচ লিখল, তারপরে তিন, আবার তিন। বুঝলাম নিজের ফোন নাম্বার লিখছে, কিন্তু এইভাবে বাইকে বসে ওই লেখার ওপরে মনোযোগ দিলে একটা দুর্ঘটনা ঘটবেই। লেখার মনোযোগের চেয়ে বেশি, ওই নখের আঁচরে আমার সর্বাঙ্গের সবকটা ধমনী বেয়ে উষ্ণ রক্ত এলোপাথাড়ি ছুটে বেড়াতে শুরু করে দিয়েছিল। আমার শরীর বারেবারে শিউরে ওঠে, আর তাতে খিলখিল করে হেসে ফেলে তিতলি। মিষ্টি হেসে বলল, “এইটা আমার ফোন নাম্বার।” মনে হচ্ছিল বাইক থামিয়ে দুই হাতে পিষে ধরি, এতই শুরুশুরি লাগছিল পিঠের ওপরে, শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে বলেই ফেললাম, “ওইসব থামাবে নাকি বাইক থামিয়ে দেব।” খিলখিল করে হেসে ফেলল তিতলি, “বাঃ রে। এতদিন কষ্ট দিয়েছ তার উচিত শাস্তি দেব না?” আমি ওকে একটু উত্যক্ত করার জন্য বললাম, “জানো দাদা বউদি আমার জন্য মেয়ে দেখেছে।” আঁতকে উঠল তিতলি, “কি?” আমি মুচকি হেসে বললাম, “হ্যাঁ।” হাসিটা অবশ্য হেলমেটের আড়ালে ছিল তাই আর দেখতে পায়নি। তিতলির হাতের বেড় আমার কোমর থেকে আলগা হয়ে গেল। প্রেয়সীর এই অভিমান দারুন লাগে আমার। ওই সেদিন যেভাবে মুখ ভার করে বলেছিল, “জাহান্নুমে যাবো”। চাপা স্বরে জিজ্ঞেস করল, “তারপরে?” আমি বেশ মজা পাচ্ছিলাম ওর অভিমানী কন্ঠ শুনে। তাই ওকে আরো বেশি উত্যক্ত করার জন্য বললাম, “আবার কি। পল সায়েন্স নিয়ে গ্রাজুয়েট। দুর্গাপুরে বাড়ি।” তিতলি বলল, “আচ্ছা তাই দুর্গাপুর যাওয়া হয়েছিল?” মাথা দোলালাম আমি, “হ্যাঁ। দাদা মেয়ে দেখার জন্য ডেকেছিল। সংযুক্তা সাহা, বেশ ভালো দেখতে।” মুখ ভার না দেখতে পেলেও ওর গলা শুনে বুঝতে পারলাম, “আচ্ছা, বেশ।” বেশ কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পরে প্রশ্ন করল, “তোমার পছন্দ হয়ে গেছে তাহলে?” মাথা দুলিয়ে সায় দিলাম, “ওই আর কি।” আসলে ওকে ওইভাবে বিরক্ত করতে বেশ ভালো লাগছিল আমার। দুম করে পিঠের ওপরে কিল মেরে বললে, “আমাকে এখানে নামিয়ে দাও।” আমি হেসে ফেললাম, “কেন? সবে তো বেলগাছিয়া এলাম।” মুখভার, শুধু মাত্র কাঁধে হাত, পিঠের থেকে বেশ সরে বসেছে। চাপা অভিমানী কন্ঠে বলল ললনা, “ওই সংযুক্তাকে বাইকে চড়াতে পারতে।” আমি হেসে বললাম, “বাঃ রে ওতো দুর্গাপুরে।” তিতলি জিজ্ঞেস করল, “আর আমি?” কাঁধ ঝাঁকিয়ে মুচকি হেসে উত্তর দিলাম, “এই একটু প্রাকটিস করছি। আসলে বাইকের পেছনে কোন মেয়েকে নিয়ে কোনদিন বসিনি তাই।” শুরু হল পিঠের ওপরে দুমদাম কিল চাপড়, “তুমি বাইক থামাও এখুনি।” যেমন ভাবে কিল মারতে শুরু করে দিয়েছিল, তাতে বাইক চালানো মুশকিল হয়ে গেছিল। শেষ পর্যন্ত রাস্তার পাশে একটা আইস্ক্রিমের দোকান দেখে বাইক থামিয়ে দিলাম। বাইক থামাতেই লাফিয়ে বাইক থেকে নেমে পরে দুম করে পিঠের ওপরে আরো একটা কিল বসিয়ে দিল রূপসী প্রেয়সী। আমি ওর হাত ধরে ফেলতেই টাল সামলাতে না পেরে একদম আমার গায়ের ওপরে পরে গেল। মুখ ভার, গোলাপি ঠোঁট জোড়া ভীষণ ভাবেই ফুলে গেছে। তীব্র আকর্ষণীয় দেহবল্লরির ছোঁয়ায় মাতাল হয়ে গেলাম। আমি ওর দুই হাত ধরে ওকে জিজ্ঞেস করলাম, “এই পাগলি। মুখ ভার কেন?” মুখ ঝামটা দিয়ে উঠল আমার সুন্দরী, “হ্যাঁ হ্যাঁ আমি তো তোমার প্রাকটিস করার জন্য রয়েছি তাই না।” আমি ওর ভাসা ভাসা টানাটানা আঁখির কালো মণির মধ্যে গভীর ভাবে তাকিয়ে বললাম, “মিস ব্যানারজির সাথে প্রাকটিস না করলে মিসেস ঘোষকে পাবো কি করে বল।” |
« Next Oldest | Next Newest »
|