01-01-2021, 06:13 PM
বেশ ভালো শুরু করেছ!!!!!!
Misc. Erotica অমৃতের সন্ধানে
|
01-01-2021, 06:19 PM
তোমাকে খুঁজে বেড়াই
01-01-2021, 06:21 PM
(01-01-2021, 06:13 PM)pinuram Wrote: বেশ ভালো শুরু করেছ!!!!!! তোমার মাঝের পায়ে মাথা ঠেকিয়ে গল্পটা শুরু করলাম.........দেখা যাক ।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই
01-01-2021, 06:39 PM
Shuru ta bhalo hoyeche update r anurodh roilo
01-01-2021, 06:44 PM
(01-01-2021, 06:39 PM)kingaru06 Wrote: থ্যাংকস.........সময় নিয়ে গল্পটা পড়ার জন্য। আপডেট দেবো। যথা সময়ে।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই
01-01-2021, 06:48 PM
খুব সুন্দর শুরু করেছ ! লেখাটাকে এই ভাবেই ধরে রেখে এগিয়ে যাও ! A Very Happy New Year to you all !
01-01-2021, 07:46 PM
(This post was last modified: 01-01-2021, 07:48 PM by Rajdip123. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(01-01-2021, 06:48 PM)dada_of_india Wrote: খুব সুন্দর শুরু করেছ ! লেখাটাকে এই ভাবেই ধরে রেখে এগিয়ে যাও ! A Very Happy New Year to you all ! গল্পের সাথে তোমার টাও ধরে রাখতে হবে তো....???
তোমাকে খুঁজে বেড়াই
01-01-2021, 08:00 PM
01-01-2021, 08:02 PM
(This post was last modified: 01-01-2021, 08:03 PM by Avenger boy. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
শুরুটা চমৎকার হয়েছে,,,,,, পরবর্তী আপডেটের অপেক্ষায় থাকব.......
01-01-2021, 08:41 PM
বেশ ভালো সূচনা দাদা। গল্পে একটা আলাদা গন্ধ পাছি। তবে সেটা বলবো না। আমাদের মতো একুশ থেকে তিরিশ বছরের বয়সের ছেলেদের সুপ্ত বাসনাকে মেলে ধরার সুযোগ করে দিয়েছেন।
01-01-2021, 11:46 PM
(01-01-2021, 08:41 PM)Jupiter10 Wrote: বেশ ভালো সূচনা দাদা। গল্পে একটা আলাদা গন্ধ পাছি। তবে সেটা বলবো না। আমাদের মতো একুশ থেকে তিরিশ বছরের বয়সের ছেলেদের সুপ্ত বাসনাকে মেলে ধরার সুযোগ করে দিয়েছেন।হাহাহাহা......... ওই যে একজন বলেছেন না......... ভোর হওয়ার আগে ফুল ও জানে না সে পুজার আসনে স্থান পাবে না, মৃতদেহের.........গন্ধ একটা নিশ্চয়ই আছে।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই
01-01-2021, 11:56 PM
(01-01-2021, 06:21 PM)Rajdip123 Wrote: তোমার মাঝের পায়ে মাথা ঠেকিয়ে গল্পটা শুরু করলাম.........দেখা যাক । তাই বলি, চুলের জায়গায় হটাত করে টেকো টেকো কেন ফিল করছিলাম লিঙ্গের ডগায় !!!!!! তবে হ্যাঁ, গল্পের ব্যাপারে এখন তেমন কিছুই আসেনি, সুতরাং এখন গল্প ঠিক মতন শুরু হয়নি। কমেন্ট আসবে অপেক্ষা কর !!!!!!
02-01-2021, 09:20 AM
02-01-2021, 05:56 PM
Happy New Year
খুব সুন্দর শুরু... কিন্তু এখনই কোন মন্তব্যে যাচ্ছি না... একটু পড়ি, তারপর জানাবো...
02-01-2021, 09:19 PM
(02-01-2021, 09:20 AM)ddey333 Wrote: কি জানি বাবা কারো কারো মাঝের পায়ের দিকে মাথা বাড়িয়ে দাও !!তুমি হচ্ছ আমার ডার্লিং। সাথে থাকো। একটু ব্যাস্ত ছিলাম। আজকে আপডেট দিলাম।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই
02-01-2021, 09:23 PM
(02-01-2021, 05:56 PM)bourses Wrote: Happy New Year গল্পের এখনও কিছুই শুরু হয়নি। মেনে নিলাম। প্রথমেই জানাই, happy new year to you and your entire family. সময় বের করে আমার গল্প পড়ার জন্য থ্যাংকস। সাথে থাকো তুমি।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই
02-01-2021, 09:33 PM
একই ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে কখন যে তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে বুঝতে পারেনি ইন্দ্র। হটাত দূরে সেই পরিবারের লোকজনদের মধ্যে একটু চঞ্চলতা লক্ষ্য করে সেই দিকে কয়েক পা এগিয়ে গেল ইন্দ্র। একটু একটু করে নাকি জ্ঞ্যান ফিরছে উত্তম বাবুর। ততক্ষনে ওনাকে অপারেশান থিয়েটার থেকে বের করে পোস্ট অপারেশান ওয়ার্ডে দেওয়া হয়েছে। সেটাও অপারেশান থিয়েটারের লাগোয়া একটা ছোট্ট ওয়ার্ড। প্রথমেই দুজন ঢুকলেন ওয়ার্ডে , মানিক বাবু আর সাথে ওই মাঝবয়সী ভদ্রমহিলা। একটু পরেই সেই মানিক বাবু হন্তদন্ত হয়ে বেড়িয়ে এসে অভিজিত সিংহের দিকে ইশারাতে কিছু বললেন।
“ইন্দ্র এইদিকে আয়, ভেতরে চল তোর কাকু আমাদের ডাকছেন”। বাবার গুরুগম্ভীর আওয়াজ টা কানে আসতেই থতমত খেয়ে এগিয়ে যায় ইন্দ্র। ওয়ার্ড টা ছোট, প্রায় পনেরোটা বেড পাতা আছে। প্রতিটা বেডের সাথে লাইফ সাপোর্ট মেশিন, অক্সিজেন সব লাগানো আছে। ইন্দ্রজিত তার বাবার পেছনে পেছনে এগোতে থাকে। প্রত্যেক টা বেডেই পেশেনট আছে। কেমন একটা নিস্তব্ধতা চারিদিকে, মাঝে মাঝে শুধু মেশিনের মৃদু আওয়াজ ভেসে আসছে। একটা ঘোরের মধ্যে হাঁটতে থাকে ইন্দ্রজিত কিছুটা দম দেওয়া পুতুলের মতন। ওই তো সেই অভিজাত মহিলাটি দাঁড়িয়ে রয়েছেন একটা বেডের পাশে। ফর্সা গাল বেয়ে চোখের জলের ধারা নেমে আসছে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন আর এক ভাবে বিছানায় শায়িত মানুষটার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। বেডে শায়িত মানুষটার দিকে ঝুকে পড়ে জিজ্ঞেস করে অভিজিত সিংহ, “বল উত্তম, কি বলতে চাইছিস বল আমাকে, আমরা তো আছি, কিছু হবে না তোর। একদম ভেঙ্গে পড়বি না তুই। আমি আছি তো। একবার তাকিয়ে দেখ, আজকে আমার সাথে আমার ছেলেও এসেছে তোর কাছে”। বলতে বলতে অভিজিত সিংহের গলা ধরে আসে। বিছানায় শায়িত তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর একটা হাত শক্ত করে ধরে থাকে। বেডের আরেক পাশে দাঁড়িয়ে আছে ইন্দ্র। বাবার সাথে এই ভদ্রলোকটি এত ঘনিষ্ঠ সেটা আগে কোনোদিন জানতে পারেনি। জানবেই বা কেমন করে, চার বছর সে পুনে তে ছিল, তারপর এসে চাকরী। বাবার সাথে সেই অর্থে তেমন ভাবে গল্প কোনদিনও করেনি ইন্দ্র। তার যত গল্প হতো সে তো মায়ের সাথে। কিন্তু মা ও কোনোদিন এদের কথা বলেননি ওকে। “তুই আমার একটা কাজ করে দে অভি। আমি জানিনা আমি আর কতক্ষন বেঁচে আছি। আমার একমাত্র মেয়ে রইলো আর ওর মা রইলো, ভাই মানিক রইলো, তুই দেখিস ওদের। তোর ছেলে আর আমার মেয়ের বিয়েটা হয়তো আমি দেখে যেতে পারবোনা। তুই একাই ব্যাবস্থা করে নিস। এটা বহুদিনের স্বপ্ন আমাদের দুজনের, তাই না"? বলতে বলতে উত্তম বাবুর কণ্ঠস্বর রুদ্ধ হয়ে আসে। মাথাটা একদিকে হেলে পড়ে। অভিজিত সিংহ তখনও বলে চলেছেন, “আমি তো আছি, সব ব্যাবস্থা করে দেব। তুই এমন বলিস না উত্তম”। কথার মাঝেই মনিটরের দিকে চোখ চলে যায় অভিজিতের সিংহের। একটা যান্ত্রিক শব্দের সাথে একটা সোজা লাইন মনিটরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যাচ্ছে। এতক্ষন বাকরুদ্ধ হয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে ছিল ইন্দ্র। বাবা যে কথাগুলো তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে বলছিলেন, তার মানে টা তার কাছে বেশ কিছুটা পরিষ্কার হয়ে আসে। এই জন্যই ওই মানিক বাবু তাদের দুজনকে ভেতরে ঢুকতে বলেছিলেন। তার মানে খুব তাড়াতাড়ি তার বিয়ে হবে। কথাটা ভাবতেই মুখটা থমথমে হয়ে যায় ইন্দ্রর। কিন্তু পরিস্থিতি এমন যে, সে যে প্রতিবাদ করবে, সে উপায় নেই। ফ্যাল ফ্যাল করে হতাশা মাখা চোখ নিয়ে চেয়ে থাকে বিছানায় শোয়া মানুষটার দিকে। মানিক বাবু ইতিমধ্যে দৌড়ে গিয়ে ওয়ার্ডের ডাক্তার কে ডেকে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু বিধির বিধান কে কেও খণ্ডাতে পারেনা। চলে গেলেন বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু উত্তম দত্ত।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই
02-01-2021, 09:42 PM
এর পর ইন্দ্রজিতের বিয়ে হয় সুমিত্রার সাথে। তাদের এক সন্তান ও হয়। তারও কয়েক বছর পরে ইন্দ্রজিতের বাবার স্ট্রোক হয়। তিনিও বিছানা ছেড়ে বেশি হাঁটাহাঁটি করতে পারেন না। ফলে ইন্দ্রজিত কে চাকরী ছেড়ে তার পৈতৃক ব্যাবসার কাজ সামলাতে হয়। এই পার্ট টা তেমন কিছু বলার মতন না। তাই মাঝখানের এই সময় টা নিয়ে বেশি কিছু লিখলাম না।
গল্পটা টা আবার শুরু হয় যখন ইন্দ্রর বিয়ের সাত বছর পার হয়ে গেছে। ইন্দ্র এখন সংসারী মানুষ। তার মধ্যেও নিয়মিত জিম করে সে। ব্যাবসার কাজে মাঝে মাঝেই তাকে ধানবাদের বাইরেও যেতে হয়। পিতার আমলে ব্যাবসার যা অবস্থা ছিল, ব্যাবসা টা ইন্দ্র হাতে নেওয়ার পর আরও গতি পেয়ে গেছে। আগে তাদের ব্যাবসা শুধু ধানবাদের মধ্যেই সীমিত ছিল। কিন্তু এখন ইন্দ্রর দৌলতে ব্যাবসা ধানবাদের গণ্ডি ছাড়িয়ে রায়পুর, কলকাতা, জামশেদপুর, রাঁচি, ভুবনেশ্বরে ছড়িয়ে গেছে। সব জায়গাতেই যাওয়া আসা করতে হয় ইন্দ্রকে। কিন্তু ব্যাবসায়িক ব্যাস্ততার মধ্যেও ইন্দ্র যেন মাঝে মাঝে আনমনা হয়ে যায়। এমন গতানুগতিক জীবনধারা তার ভালো লাগেনা। সারাদিন ব্যাবসার কাজে ব্যাস্ত থাকার পর ঘরে গিয়েও খুব যে শান্তি পায় ইন্দ্র এমন কিন্তু না। বাবার পছন্দে হটাত করে বিয়ে করা। পাত্রী কে দেখে শুনে যাচাই করে নেওয়ার সুযোগ পায় নি ইন্দ্র। ফল যা হওয়ার তাই হল। সুমিত্রা দেখতে সুন্দরী হলে কি হয়েছে, মাঝে মাঝেই দুজনের মধ্যে মতান্তর প্রকাশ পেতে থাকে। আগে ছোট খাটো তর্ক, বাকবিতণ্ডা হতো। সেও বোকারোর আর্থিক ভাবে খুব সচ্ছল পরিবারের একমাত্র মেয়ে। একটু জেদ থাকা স্বাভাবিক কিন্তু তার সাথে যোগ হয়েছে একটু অহংকার। ফলে যে কোনও ব্যাপারে সহজেই চুপ করে থাকার পাত্রী নয় সে। সুমিত্রার সাথে ছোট তর্ক গুলো পরের দিকে বড় আকার ধারন করতে থাকে। এর সাথে যোগ হয় সুমিত্রার পরিষ্কার বাতিক। সুমিত্রার এই বাতিক টা যত দিন যায় অস্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসতে থাকে। বার বার যে কোনও জিনিষ ধোয়া, ঠাকুর পুজা , যে কোনও ধার্মিক ব্যাপারে উপোষ করে পুজা দেওয়া, এই ব্যাপার গুলো নিয়ে প্রায়ই মতান্তর হতে শুরু করে ইন্দ্রর সাথে, যার প্রভাব তাদের সাংসারিক জীবনে পড়তে শুরু করে। ঘরেও তাই একদম ভালো লাগে না ইন্দ্রর। জীবনটা যে এমন হয়ে যাবে বুঝতে পারেনি ইন্দ্র। ঠিক যেন একটা নদি বয়ে যাচ্ছে। না আছে তীব্র স্রোত, না আছে কোনও ঢেউ। নদীর মাঝে মাঝে কিছু পাথর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। নদীর জল সেই পাথরে ধাক্কা খেয়ে, পাথর গুলোকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে। কত ইচ্ছা ছিল নিজের জীবন টা কে ভালো মতন উপভোগ করার। জীবন তো একটাই। একবার এই জীবন শেষ হয়ে গেলে সব শেষ চিরদিনের মতন। তারই কত বন্ধু, দিব্যি প্রেম করে বিয়ে করেছে। তারা যখন নিজেদের সাংসারিক জীবন, যৌনতা নিয়ে নিজেদের মাঝে কথা বলাবলি করে, হাসি ঠাট্টা করে, তখন ইন্দ্র চুপ করে থাকে। কেমন একটা অপরাধ বোধ ওকে ধীরে ধীরে গ্রাস করতে থাকে। মাঝে মাঝে সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে আয়নায় নিজেকে দেখে ইন্দ্রজিৎ। পেশীবহুল চেহারা, লম্বা, একটা আদিম পুরুষালি ভাব চেহারার মধ্যে, তেমনই নিজের পুরুষাঙ্গের আকার। তেজ যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে সারা শরীর থেকে। নিজের জীবন নিয়ে কত কি ভেবে রেখেছিল ইন্দ্রজিত। এই সময় টাই তো উপভোগ করার আদর্শ সময়। সব কিছুই তো আছে তাঁর কাছে। কিন্তু একটা শূন্যতা ধীরে ধীরে গ্রাস করতে থাকে ইন্দ্রকে। নিজের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত অফিসে মাঝে মাঝে চুপ করে বসে এইসব আকাশ কুসুম চিন্তায় ডুবে যায় ইন্দ্র। কিছু ঘনিষ্ঠ বন্ধু আছে ইন্দ্রজিতের। তাদের মধ্যে প্রবাল বলে একজন আছে যার সাথে তার ঘনিষ্ঠতা সেই ছোটবেলার থেকে একটু বেশী। প্রবালের সাথে অনেক কথা হয় ইন্দ্রজিতের। তবে প্রবাল একটু ভিন্ন্ স্বভাবের মানুষ। চরিত্র খুব একটা ভালো না বলে একটু বদনাম আছে তাঁর। প্রবাল মাঝে মাঝে আসে ইন্দ্রজিতের কাছে। দুজনে বসে গল্প গুজব করে। সেই সময় টা বেশ ভালো লাগে ইন্দ্রর। আজ সন্ধ্যের কিছু আগেই এসেছে প্রবাল ইন্দ্রর অফিসে। বিকেলের দিকে সাধারণত কাজের লোকরা কম আসে ইন্দ্রর অফিসে। এসেই ইদ্রর মুখোমুখি চেয়ারে বসে পরে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে একরাশ ধোঁওয়া ছেড়ে ইন্দ্রকে জিজ্ঞেস করে, “কিরে, বাবু সাহেব…… একা একা বসে বসে কি চিন্তা করছিস? আজ কি কাজের চাপ একটু কম? নাকি অন্য কিছু”? প্রবালের কথা শুনে, মাথায় আসা চিন্তাগুলো এলোমেলো হয়ে যায় ইন্দ্রজিতের। একটু হেসে বলে ওঠে, “আরে বস বস……কি ব্যাপার আজকাল আসা কম করে দিয়েছিস? অন্যদিকে কোনও নতুন ব্যাস্ততা খুঁজে পেয়েছিস নাকি”? হাহাহাহা…… করে হেসে বলে ওঠে প্রবাল, “আরে তুই যে ব্যাস্ততার কথা বলতে চাইছিস, সেই সব একটু চেষ্টা করলেই পাওয়া যায় গুরু। তুই একটু চেষ্টা করে দেখ, এই ব্যাবসা ছাড়াও তুই ব্যাস্ত হতে পারবি, আর তোর যা চেহারা, যা সুন্দর দেখতে তুই, খুব সহজেই তুই ও ব্যাস্ত হয়ে পড়বি। আরে একবার চেষ্টা তো করে দেখ। তারপর যদি ভালো না লাগে তাহলে আমার নাম বদলে দিস। তখন তোর কাছে এই শর্মার জন্যও সময় থাকবে না। আর সব থেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে তোর নিজস্ব অফিস আছে, কম্পিউটার আছে, আমার কাছে এত সুবিধা নেই রে ভাই। আমাকে এই সুবিধা নেওয়ার জন্য ইন্টারনেট কাফে তে গিয়ে বসতে হয়”। ইন্দ্র কিছুক্ষণ অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে প্রবালের দিকে। কি বলছে প্রবাল? কি এমন করছে ও? কিসের সুবিধার কথা বলছে প্রবাল? নাহ মাথায় কিছুই আসছেনা ইন্দ্রজিতের। তাহলে কি কোনও নিষিদ্ধ ব্যাপারের কথা বলছে প্রবাল? একবার দেখাই যাক না এমনিতেও বোরিং লাইফ ওর। একটু উতসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করে ইন্দ্র, “কি বলতে চাইছিস, আমাকে একবার খুলে বল তো। দেখ, প্রবাল এমন কিছু বলিস না যা কিনা লোক সমাজে জানাজানি হয়ে বদনাম হয়ে যেতে হয়। এমন হলে কিন্তু আমার ব্যাবসার ক্ষতি হতে পারে ভাই”।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই
02-01-2021, 10:01 PM
ঝুকে পরে প্রবাল ইন্দ্রর টেবিলের ওপর। তারপর একবার মাথা ঘুরিয়ে চারিদিক টা দেখে নিচু স্বরে বলতে থাকে, “আরে ধুর বোকা। কাক পক্ষীতেও জানতে পারবে না যদি না তুই নিজের থেকে কাউকে বলেছিস। তেমন কিছুই করতে হবে না ভাই। অনলাইন চ্যাট রে ভাই। সবথেকে প্রথমে তোকে রেডিফ ডট কম এ নিজস্ব আইডি তৈরি করতে হবে। সেটা কেমন করে করে করতে হবে, আশা করি সেটা তোকে বলে দিতে হবে না। তুই আগে একটা আইডি তৈরি কর নিজের। তারপর আমি আগামিকাল আসবো এখানে, নিজেকে সেই সময় একটু ফ্রি রাখিস, তোকে আমি একবার বুঝিয়ে দেব, তারপর দেখবি তুই ব্যাপারটা ছাড়তে পারছিস না। ভালো লাগবে, সময় ও কাটবে। এখন আমাকে উঠতে দে, একটা কাজ আছে। আগামিকাল আসছি, একটু অপেক্ষা করো সোনা”। বলে উঠে দাড়ায় প্রবাল। কাঁচের দরজা টা ঠেলে বেড়িয়ে যায় প্রবাল। এতক্ষন মন দিয়ে প্রবালের কথা গুলো শুনছিল ইন্দ্র। শুনছিল বললে ভুল হবে, হয়তো কথা গুলো গিলছিল ইন্দ্র। প্রবাল বেড়িয়ে যেতেই, তাঁর যাওয়ার পথে তাকিয়ে থাকে ইন্দ্র।
অনলাইন ফ্রেন্ডশিপ ব্যাপারটা কয়েক জনের মুখে শুনেছিল ইন্দ্র। কিন্তু সেটা নিয়ে কোনোদিন চিন্তা করেনি সে। অনলাইনে আবার বন্ধুত্ব হয় নাকি? চোখে দেখা যাবে না, কথা বলা যাবে না। শুধু লিখে লিখে কি বন্ধুত্ব হয়? কে জানে? যদিও বা বন্ধুত্ব হয়, সে কেমন হবে? কি বলবে তাকে? নাহ……আর ভাবতে পারছে না সে। মনে মনে স্থির করে নেয়, দেখাই যাক না। তেমন যদি হয়, যদি না ভালো লাগে তাহলে আর এইসব না করলেই হল। অফিসের ফোন নাম্বার তো আর কাউকে দিচ্ছে না সে। মনের মধ্যে কেমন একটা অজানা উত্তেজনা তৈরি হতে থাকে ইন্দ্রর। অফিসের কাজে আর মন বসাতে পারে না। সন্ধ্যেও হয়ে গেছে ভালই। ঘরে যাওয়ার সময় আবার বাবার জন্য কয়েকটা অসুধ কিনে নিয়ে যেতে হবে। অফিস বন্ধ করে বেড়িয়ে পড়ে ইন্দ্র। আবার ঘরে ফিরতে হবে, ব্যাপারটা ভাবতেই মনটা বিরক্তি তে ভরে যায় ইন্দ্রর। ভালই বুঝতে পারে, তাদের এই দাম্পত্য কলহ ধীরে ধীরে তাঁর সন্তানের ওপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। একটা সিগারেট ধরায় ইন্দ্র। নিজেকে নিজে বোঝাতে শুরু করে ইন্দ্র। মনে মনে ঠিক করে নেয়, এখন থেকে সে আর বেশী কথা বলবে না ঘরে। যতটা সম্ভব চুপ করে থাকবে। তাতে যদি মতবিরোধ কিছুটা হলেও কম হয়। রাস্তায় বাবার জন্য দোকান থেকে ওষুধ কিনে ঘরে ফিরে আসে ইন্দ্র। কার টা গ্যারাজে ঢুকিয়ে ঘরের ভেতরে আসতেই, ঘরের ভেতরের থমথমে আবহাওয়া দেখেই ইন্দ্র বুঝতে পারে যে কিছু একটা হয়েছে। ওষুধ টা বাবার রুমে রেখে বেড়িয়ে আসার সময় বাবার ডাক শুনে দাঁড়িয়ে যায় ইন্দ্র। “বেটা, এদিকে এসে একটু আমার কাছে বস। অফিস কেমন চলছে বেটা? সব ঠিকঠাক আছে তো”? বাবার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বাবার পালঙ্কের এক ধারে চুপ করে বসে থাকে ইন্দ্র। বুঝতে পারে, বাবা নিশ্চয় কিছু বলার জন্যই তাকে বসতে বললেন। “বেটা অফিস তো ঠিক আছে, এবারে একটু বাড়ির প্রতি মন দে। বাড়িতে কিন্তু সব কিছু ঠিক ঠাক চলছে না। তোর বুদ্ধি আছে বেটা, তুই চাইলেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। আমি জানি বেটা আমি তোর কাছে অনেক বড় দোষী। তাও তুই একটু মানিয়ে চলতে চেষ্টা কর। বাচ্চা ছেলেটার কথা চিন্তা কর। ওর কি দোষ? ও যদি এত ছোট বয়স থেকে বাবা মায়ের ঝগড়া দেখে, তাহলে ওর মনে খারাপ চিন্তা ধারা বাসা বাঁধতে শুরু করবে। বৌমা কে একটু বুঝিয়ে বল, তুই যদি একটু বুঝিয়ে বলিস, দেখবি বৌমা ঠিক তোর কথা শুনবে”। বাবার কথাগুলো শুনে, মুখ তুলে বাবার দিকে তাকায় ইন্দ্র। ভালো করে বাবার দিকে তাকাতেই বুঝতে পারে, বাবার চোখের কোল চিকচিক করছে। কোনও কারনে দুঃখ পেয়েছে মানুষটা। বাবাকে কি বলে সান্ত্বনা দেবে বুঝতে পারে না। বাবার কথা রাখতেই সে বিয়েতে সন্মতি দিয়েছিল, সেই বাবাই আজকে মনঃকষ্টে ভুগছে। মনটা ভার হয়ে আসে ইন্দ্রর। ঘরের জানালা দিয়ে বাইরের দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকে। “তুমি দোষ নিও না বাবা। পুরোটাই আমার কপালের দোষ। দেখছি কি করা যায়”, বলে উঠে পড়ে ইন্দ্রজিত। নিজের রুমের দিকে পা বাড়াতেই, বন্ধ দরজার ভেতর থেকে সুমিত্রার হাসির আওয়াজ ভেসে আসে। কারও সাথে ফোনে কথা বলছে সুমিত্রা। দরজার বাইরেই থমকে দাঁড়িয়ে যায় ইন্দ্র। কান পেতে শোনার চেষ্টা করে, সুমিত্রা কার সাথে কথা বলছে। ঠিক সে যা ভেবেছিল তাই, সুমিত্রা নিজের মায়ের সাথে কথা বলছে। ইন্দ্রর মাথাটা আরও গরম হয়ে যায়। এই ভদ্রমহিলাটির রোজ অন্তত দুবার তাঁর মেয়ের সাথে কথা বলা চাই। রোজ রোজ কি যে এত কথা থাকতে পারে, বুঝতে পারে না ইন্দ্র। তবে এটা সে এতদিনে বুঝে গেছে, সুমিত্রাকে যাবতীয় কুউপদেশ, কুপরামর্শ তাঁর মাই প্রদান করেন। ইন্দ্র নিজের রুমে ঢুকতেই ফোন রেখে দেয় সুমিত্রা। মুখ ঝামটা দিয়ে ইন্দ্রকে বলে ওঠে সুমিত্রা, “কি হল? বাইরে থেকে এসেছ, সব কি বলে দিতে হবে নাকি তোমাকে? আগে জামা কাপড় চেঞ্জ করে তারপর এই রুমের কোনও জিনিষে হাত দেবে। বাচ্চা নাকি তুমি যে সব কিছু বলে দিতে হবে? কি জানি কার সাথে মিশে এখানে আসছ? তোমাদের বাড়ির কোনও আচার বিচার আছে নাকি? যাও যাও আগে বাথরুমে গিয়ে হাত পা ধুয়ে, ড্রেস চেঞ্জ করে তারপর এই রুমে ঢুকবে”। ইন্দ্র বুঝতে পারে না সে তাঁর নিজস্ব ঘরে ঢুকেছে না কোনও মন্দিরে। সারাদিন পরে বাড়িতে এসেছে সে, কোথায় তাঁর স্ত্রী তাঁর জন্য একটু চা করে এনে দেবে, এক গ্লাস জল দেবে………আর ভাবতে পারে না ইন্দ্র, মাথাটা দপ দপ করে ওঠে। বুঝে উঠতে পারেনা, সে তার বিয়ে করা স্ত্রী কে কেমন করে বোঝাবে? একদিকে স্ত্রীর খারাপ ব্যবহার, আরেক দিকে তার বাবা মা কে শান্তি তে রাখা......কি করবে সে? চুপ করে মাথা নিচু করে রুম থেকে বেড়িয়ে মা কে খুজতে থাকে। সুনন্দা দেবী রান্না ঘরে ছিলেন। ইন্দ্রকে সেই দিকে আসতে দেখে, এগিয়ে এসে বলেন, “শরীর ঠিক আছে তো বাবা”? শাড়ির আঁচল দিয়ে ইন্দ্রর কপালে বিন্দু বিন্দু জমে ওঠা ঘাম পরম যত্নে মুছিয়ে দিতে দিতে বলেন, “জল খাবি? তুই ডাইনিং টেবিলে চেয়ার নিয়ে বস, আমি চা করে নিয়ে আসছি তোর জন্য”।
তোমাকে খুঁজে বেড়াই
03-01-2021, 12:07 AM
(This post was last modified: 03-01-2021, 12:08 AM by pinuram. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
গল্প ঘুরছে এবারে, এই বারে মনে হচ্ছে কেন ইন্দ্রজিৎ কে "অমৃতের সন্ধানে" বের হতে হবে! গতানুগতিক জীবন থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য অনেকেই খুঁজে বেড়ায় একটু আনন্দ একটু ভালোবাসা! সেই রোজ সকালে উঠে হাত মুখ ধুয়ে ব্যাবসার কাজে বসা, বাড়ি ফিরে সেই বাড়ির কাজ, এটা নেই যাও দোকান যাও, ওটা কেন করছ, ওটা ওইখানে কেন ইত্যাদি শুনতে শুনতে মানুষের মন এক সময়ে বিষিয়ে যায়! মানুষ কথাটা মান আর হুঁশ থেকে এসেছে, সেই মান আর হুঁশ যখন লোপ পায় তখন আর মানুষ কেন? ভেতরের পশু বেড়িয়ে পরে! শরীর বলেও একটা জিনিস আছে মানুষের! ইন্দ্রের ব্যাথা বেদনা ধিরে ধিরে ফুটে উঠছে তার অনুভুতির মাধ্যমে! ভালো চলছে! অপেক্ষায় আছি সেই মুহূর্তের, যেখানে শেষ ধাক্কা ওকে এই "অমৃতের সন্ধানের" পথে ঠেলে দেবে !!!!!!!
Reps Added +1 |
« Next Oldest | Next Newest »
|