18-12-2020, 11:46 AM
(This post was last modified: 18-12-2020, 11:48 AM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ত্রিবেনির ঘাটে নিজের হাতে মঞ্জুর চিতাতে আগুন লাগালাম ! আমার জীবনের একটা অধ্যায় শেষ হয়ে গেলো ! রাজু আর সমিরকে কানাই গিয়ে এয়ারপোর্ট পৌঁছে দিয়ে এলো ! আমি যেন কেমন হয়ে গেছি ! বাড়ি থেকে বের হই না ! খেতে দিলে খাই না খেতে দিলে চাইনা ! বাবা মা সবাই খুব চিন্তিত আমার এই পরিবর্তনে ! ওদের টুকটাক কথা বার্তা শুনতে পাই ! "মঞ্জুকে সুনন্দ খুব ভালবাসত ! তাই হয়ত মঞ্জুর মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছে না ! "
এই ভাবেই দিন দশেক কাটিয়ে দিলাম ! শ্রাদ্ধ শান্তি সব মিটে গেলো ! জিবনে হয়ত প্রথমবার ন্যাড়া হলাম ! কানাই নিলয় সবাই রোজ আসে আর শুকনো মুখে ফিরে যায় ! কারুর সাথেই কথা বলিনা ! চুপচাপ বিছানায় শুয়ে থাকি ! ঝর্না এসে আমাকে জোর করে খাইয়ে দিয়ে যায় ! আমার দায়িত্ব মা বাবা ঝরনার উপর ছেরে দিয়েছে !
সন্ধ্যেবেলায় কানাই আর বুধু এসে জোর করে ধরে নিয়ে গেলো ! ক্লাবের ভিতরে কেউ কেরাম খেলছে কেউ তাস ! আমাকে দেখে সবাই খেলা থামিয়ে দিল ! শম্ভু সাধুকে মালের বোতল নিয়ে আস্তে বলল ! মাল খেতে খেতেই কানাই বলল " এইরকম ভাবে আর কতদিন চলবি সুনন্দ ? নিজেরও তো একটা জীবন আছে নাকি ? তোর বাবা মা সবাই খুব চিন্তিত তোকে নিয়ে ! বাস্তবে ফিরে আয় সুনন্দ !"
- বাস্তবেই তো আছি ! কিন্তু অতীত কে ভুলতে পারছিনা ! আর জার্মানি যাবো না ! যেখানে গিয়ে মঞ্জুকে পাবনা সেখানে গিয়ে লাভ কি ?
- তোর বাবা মা কি দোষ করল ? কেন তুই ওদের শাস্তি দিচ্ছিস ? সব ভুলে যা ! শুধু সামনের দিকে তাকিয়ে দেখ !
অনেক উপদেশ অনেক স্বান্তনার বানী সমস্ত বন্ধুদের কাছ থেকে ভেসে আসলো ! কোন কিছুই কানে ঢুকছিল না ! আমি চুপচাপ মদ খেয়ে চলেছি ! ভালই নেশা হয়ে গেছে ! ক্লাবের বাইরে থেকে বুধু এসে বলল "ঝর্না এসেছে সুনন্দকে নিয়ে যেতে ! " কানাই বেড়িয়ে গিয়ে ঝর্নাকে বলল "তুই যা আমরা বাড়ি পৌঁছে দেবো ! " কিন্তু ঝর্না শুনল না ! সোজা ক্লাবের ভিতরে ঢুকে আমার হাত ধরে আমাকে দাঁড় করিয়ে হিড়হিড় করে টানতে টানতে বাড়ি নিয়ে এলো ! টলমল পায়ে ঝরনার টানে বাড়িতে এসে ঢুকলাম ! মা একবার বিষণ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ঝর্নাকে বলল " ওকে শুইয়ে দে ! আর আজ থেকে তুই ওর ঘরেই শুবি ! বলা যায়না কখন কি করে বসে ! " ঘুমিয়ে পরেছিলাম ! বুকেতে কেউ যেন মাথা রেখে কাঁদছে ! চোখের জলে আমার বুক ভিজে গেছে ! চোখ খুলে দেখি ঝর্না আমার বুকে মাথা রেখে শুয়ে শুয়ে কাঁদছে ! ওকে ঠেলে তুলে দিলাম ! ঘরের ডিম আলোতে দেখি ঝর্না একেবারে ল্যাঙট হয়ে আমাকে জরিয়ে ধরার চেষ্টা করছে ! ঝরনার কান্না ঝরা চোখ আমাকে মঞ্জুর চোখের কথা মনে করিয়ে দিল ! আমি দু হাত বাড়িয়ে ঝর্নাকে জরিয়ে ধরলাম ! ওর মুখে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিলাম ! ও আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে আমার বুকে মুখ লুকালো !
ওকে জরিয়ে ধরেই ঘুমিয়ে পড়লাম ! ওর স্তন আমার বুকের সাথে লেপটে আছে কিন্তু আমার ভিতর কোন উত্তেজনা কাজ করছিলোনা !
সকাল বেলায় ঘুম ভাঙল ! নিজেকে অনেক ফ্রেস মনে হচ্ছিলো ! চুপচাপ ঝর্নার ঘুমন্ত শরিরকে দেখতে থাকলাম ! সত্তিই ভগবান একটা কষ্টি পাথরে কতো সুন্দর একটা সৃষ্টি করেছে ! আমি ওর ঘুমন্ত মুখে একটা চুমু দিলাম ! ঘুমের ঘোরেই ও আমাকে জরিয়ে ধরতে চাইল ! আমি ওর বাহুবন্ধনে ধরা দিলাম ! আমার ঠোঁটের সাথে ঠোঁট লাগিয়ে ও আমাকে কিস করতে শুরু করল ! আমিও জবাব দিলাম ! আমার প্যান্টের নিচে আমার তৃতীয় অঙ্গে রক্তের সঞ্চালন অনুভব করতেই বাস্তবে ফিরে এলাম ! ঝর্নাকে জোর করে ছাড়িয়ে দিয়ে ওকে জামাকাপড় পরে নিতে বললাম ! গায়ে একটা গেঞ্জি ছরিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম মাঠের দিকে !
অনেক দিন সকালে ছোঁটা হয়নি ! আজ খুব ছুটতে ইচ্ছা করছিল ! ছোঁটা শুরু করেদিলাম ! কতপাক দিয়েছি আমার সেই পরিচিত মাঠে সেটা আর গুনিনি ! বুধু আর শম্ভু ক্লাবের ঘর পরিস্কার করতে এসেছিলো ! আমাকে ছুটতে দেখে ওরা নিজেদের কাজ থামিয়ে আমাকে দেখতে থাকলো ! প্রায় এক ঘণ্টা হয়ে গেছে আমি বাড়ি থেকে বেরিয়েছি ! দূর থেকে দেখি ঝর্না আসছে ! সারা চোখে মুখে দুশ্চিন্তা নিয়ে ! আমাকে দেখে কিছুটা শান্ত হোল !
ওকে দেখে আমি ধীর পায়ে মাঠের ধারে বসে বুধুর কাছে জল চাইলাম ! বুধু তারাতারি একটা জলের বোতল নিয়ে আমার হাতে দিয়ে দিল ! সারা শরির ঘামে জ্যাব্জ্যাবে হয়ে গেছে !
ঝর্না আমার সামনে এসে দাঁড়ালো ! আমি চোখ তুলে ওর মুখের দিকে তাকালাম ! ওর চোখ দুটো আনন্দে জ্বললেও মুখ গম্ভির ! " একবার কি বোলে আসা যেতনা ?"
আমি কিছুই বললাম না ! উঠে পরে বুধুর হাতে বোতল ধরিয়ে বাড়ির পথে হাঁটা দিলাম ! আমার পিছন পিছন ঝর্না ! মা আর বাবা উৎকণ্ঠায় দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ! ওনাদের দেখে একটা ম্লান হেসে আমি বাথরুমে চলে গেলাম ! ফ্রেশ হয়ে বাইরে এসে মাকে বললাম " খেতে দাও ! খিদে পেয়েছে ! " মায়ের চোখ আনন্দে উচ্ছল হয়ে উঠল ! " ওরে ও ঝর্না ! তারাতারি তোর দাদাকে পরোটা আর আলু চচ্চড়ি করে দে !
ঝর্না তারাতারি রান্না ঘরে গিয়ে নিজের কাজে লেগে গেলো ! বাবা আমার পাশে এসে বললেন "তোকে তো একবার হায়দেরাবাদ যেতে হবে ! তোর সার্টিফিকেট, সমস্ত জিনিসপত্র সব কিছুই তো ওখানেই রয়ে গেছে ! " বাবার দিকে একটা স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম " জাবখন"
পরোটা খেতে খেতেই আমি মাকে বললাম " মা আমি বৈদ্যবাটি যাবো আজ ! "
- কি দরকার আছে ? যে গেছে তাকে নিয়ে আর কেন ঘাঁটাঘাঁটি করবি ?
- যাবো মা ! যেতে আমায় হবেই ! আজ যদি না যাই তাহলে হয়ত আর কোনোদিন আমার যাওয়া হবে না ! পিসিমা পিসেমসাইকে সব বলা আর হবে না !
আমার গম্ভির গলা শুনে বাবা বললেন " ঠিক আছে যা ! কিন্তু কাউকে সাথে নিয়ে যা ! "ঝর্না পাশ থেকে বোলে উঠল " আমি যাবো দাদার সাথে !"
জানিনা কেন আমার বাবা মা ঝর্নার উপর বেশ ভরসা করতে ছিখে গেছেন ! এখন ঝর্নার অনেক মতামত তারা নিয়ে থাকেন ! ঝর্নার কথায় বাবা বললেন তাই হোক তবে ! তুই যা ওর সাথে !
বাইক বের করে সাফ করছি ঠিক সেই সময় কানাই আমার বাড়ির সামনে নিজের কার দাঁড় করাল ! চৈতালি গারি থেকে নেমে এলো ! আমাকে জরিয়ে ধরল ! আমি কোন রেস্পন্স দিলাম না ! আমাকে ছেরে চৈতালি ঘরের ভিতর চলে গিয়ে বাবা মাকে প্রনাম করল !
কানাই এগিয়ে এসে আমাকে বলল " বাইক ঢুকিয়ে দে ! আমরাও বৈদ্যবাটি যাচ্ছি ! তুই আমাদের সাথেই চল ! কাল ফিরে আসব ! "
- ব্যাপারটা কি রে ? আমার যাবার কথা তুই কি করে জানলি ?
আমতা আমতা করে কানাই বলল "একটু আগে ঝর্না ফোন করেছিল মানে তোর বাবা ওকে আমায় ফোন করতে বলেছিল ! আজ আমার কোন কাজও নেই ! তাই ভাবলাম তোর সাথেই যাই ! এই ফাঁকে স্বশুরবারিতেও একটু ঘুরে আসা যাবে ! "
বুঝলাম বাবা বা মা আমাকে একা এখন বাইক চালাতে দিতে চাইছেন না ! ! একটু মনক্ষুন হলেও বাবার কথা মেনে নিলাম !
কানাই গারি চালাচ্ছে পাশে আমি ! পিছনে চৈতালি আর ঝর্না ! কেউই কোন কথা বলছে না ! পিসির বাড়ির সামনে পৌঁছে দেখি পিসিমা দরজা খুলে দাঁড়িয়ে আছেন ! বুঝলাম এখানেও ফোন করে দেওয়া হয়েছে ! আমাকে দেখেই পিসিমা কেঁদে ফেললেন ! আমি কোন কথা না বোলে সোজা মঞ্জুর ঘরে ঢুকে গেলাম ! আমার পিছনে পিছনে ঝর্না আর পিসিমা ! মঞ্জুর আলমারি খুলে আমি মঞ্জুর ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে এলাম ! ড্রয়িং রুমে এসে পিসিকে বললাম পিসেমসাইকে ডাকো !
আমার গলা শুনে পিসেমসাই নিজের রুম থেকে বেড়িয়ে এলেন ! সবাই সোফায় বসে ! শুধু ঝর্না আমার পাশে বসে বসে চুপচাপ আমার কার্যকলাপ দেখে যাচ্ছে !
সবার সামনেই মঞ্জুর ব্যাগ খুলে আমাদের রেজিস্ট্রি সার্টিফিকেট পিসির হাতে দিয়ে বললাম " হয়ত এটাই আমার ভুল ছিল ! তাই আমি মঞ্জুকে হারিয়েছি ! " আর এটার দরকার নেই ! আশা করি তোমরা আমার আর মঞ্জুর সম্পর্ক কে ক্ষমা করে দেবে !" শরির মন তখন আমার শক্ত ! পিশি আর পিশেমসাই ম্যারেজ সার্টিফিকেট টা দেখে কেঁদে ফেললেন " ওরে তোরা যদি আগে আমাদের বলতিস তাহলে আজ আমাদের এইদিন দেখতে হতনা ! " আমি কোন কথা না বোলে পিসিমা আর পিসেমসাইকে প্রনাম করলাম " হয়ত এটাই আমাদের শেষ দেখা ! জানিনা জীবন আমাকে কথায় নিয়ে যাবে ! আমাকে ক্ষমা করে দিও !
সোজা বেড়িয়ে এসে কানাইয়ের গাড়িতে বসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লাম ! ঝর্নার চোখেও জল ! কানাই গারি স্টার্ট করল ! পিছন ঘুরে দেখি পিসিমা কেঁদে চলেছেন আর কিছু বলতে চাইছেন ! কিন্তু আমার শোনার ক্ষমতা নেই ! ঝর্না আমার এই আকস্মিক ব্যবহারে আশ্চর্য হয়ে গেছে ! আমি কানাই কে বললাম আমাকে কমলদার বাড়িতে ছেরে দে !
এই ভাবেই দিন দশেক কাটিয়ে দিলাম ! শ্রাদ্ধ শান্তি সব মিটে গেলো ! জিবনে হয়ত প্রথমবার ন্যাড়া হলাম ! কানাই নিলয় সবাই রোজ আসে আর শুকনো মুখে ফিরে যায় ! কারুর সাথেই কথা বলিনা ! চুপচাপ বিছানায় শুয়ে থাকি ! ঝর্না এসে আমাকে জোর করে খাইয়ে দিয়ে যায় ! আমার দায়িত্ব মা বাবা ঝরনার উপর ছেরে দিয়েছে !
সন্ধ্যেবেলায় কানাই আর বুধু এসে জোর করে ধরে নিয়ে গেলো ! ক্লাবের ভিতরে কেউ কেরাম খেলছে কেউ তাস ! আমাকে দেখে সবাই খেলা থামিয়ে দিল ! শম্ভু সাধুকে মালের বোতল নিয়ে আস্তে বলল ! মাল খেতে খেতেই কানাই বলল " এইরকম ভাবে আর কতদিন চলবি সুনন্দ ? নিজেরও তো একটা জীবন আছে নাকি ? তোর বাবা মা সবাই খুব চিন্তিত তোকে নিয়ে ! বাস্তবে ফিরে আয় সুনন্দ !"
- বাস্তবেই তো আছি ! কিন্তু অতীত কে ভুলতে পারছিনা ! আর জার্মানি যাবো না ! যেখানে গিয়ে মঞ্জুকে পাবনা সেখানে গিয়ে লাভ কি ?
- তোর বাবা মা কি দোষ করল ? কেন তুই ওদের শাস্তি দিচ্ছিস ? সব ভুলে যা ! শুধু সামনের দিকে তাকিয়ে দেখ !
অনেক উপদেশ অনেক স্বান্তনার বানী সমস্ত বন্ধুদের কাছ থেকে ভেসে আসলো ! কোন কিছুই কানে ঢুকছিল না ! আমি চুপচাপ মদ খেয়ে চলেছি ! ভালই নেশা হয়ে গেছে ! ক্লাবের বাইরে থেকে বুধু এসে বলল "ঝর্না এসেছে সুনন্দকে নিয়ে যেতে ! " কানাই বেড়িয়ে গিয়ে ঝর্নাকে বলল "তুই যা আমরা বাড়ি পৌঁছে দেবো ! " কিন্তু ঝর্না শুনল না ! সোজা ক্লাবের ভিতরে ঢুকে আমার হাত ধরে আমাকে দাঁড় করিয়ে হিড়হিড় করে টানতে টানতে বাড়ি নিয়ে এলো ! টলমল পায়ে ঝরনার টানে বাড়িতে এসে ঢুকলাম ! মা একবার বিষণ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ঝর্নাকে বলল " ওকে শুইয়ে দে ! আর আজ থেকে তুই ওর ঘরেই শুবি ! বলা যায়না কখন কি করে বসে ! " ঘুমিয়ে পরেছিলাম ! বুকেতে কেউ যেন মাথা রেখে কাঁদছে ! চোখের জলে আমার বুক ভিজে গেছে ! চোখ খুলে দেখি ঝর্না আমার বুকে মাথা রেখে শুয়ে শুয়ে কাঁদছে ! ওকে ঠেলে তুলে দিলাম ! ঘরের ডিম আলোতে দেখি ঝর্না একেবারে ল্যাঙট হয়ে আমাকে জরিয়ে ধরার চেষ্টা করছে ! ঝরনার কান্না ঝরা চোখ আমাকে মঞ্জুর চোখের কথা মনে করিয়ে দিল ! আমি দু হাত বাড়িয়ে ঝর্নাকে জরিয়ে ধরলাম ! ওর মুখে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিলাম ! ও আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে আমার বুকে মুখ লুকালো !
ওকে জরিয়ে ধরেই ঘুমিয়ে পড়লাম ! ওর স্তন আমার বুকের সাথে লেপটে আছে কিন্তু আমার ভিতর কোন উত্তেজনা কাজ করছিলোনা !
সকাল বেলায় ঘুম ভাঙল ! নিজেকে অনেক ফ্রেস মনে হচ্ছিলো ! চুপচাপ ঝর্নার ঘুমন্ত শরিরকে দেখতে থাকলাম ! সত্তিই ভগবান একটা কষ্টি পাথরে কতো সুন্দর একটা সৃষ্টি করেছে ! আমি ওর ঘুমন্ত মুখে একটা চুমু দিলাম ! ঘুমের ঘোরেই ও আমাকে জরিয়ে ধরতে চাইল ! আমি ওর বাহুবন্ধনে ধরা দিলাম ! আমার ঠোঁটের সাথে ঠোঁট লাগিয়ে ও আমাকে কিস করতে শুরু করল ! আমিও জবাব দিলাম ! আমার প্যান্টের নিচে আমার তৃতীয় অঙ্গে রক্তের সঞ্চালন অনুভব করতেই বাস্তবে ফিরে এলাম ! ঝর্নাকে জোর করে ছাড়িয়ে দিয়ে ওকে জামাকাপড় পরে নিতে বললাম ! গায়ে একটা গেঞ্জি ছরিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম মাঠের দিকে !
অনেক দিন সকালে ছোঁটা হয়নি ! আজ খুব ছুটতে ইচ্ছা করছিল ! ছোঁটা শুরু করেদিলাম ! কতপাক দিয়েছি আমার সেই পরিচিত মাঠে সেটা আর গুনিনি ! বুধু আর শম্ভু ক্লাবের ঘর পরিস্কার করতে এসেছিলো ! আমাকে ছুটতে দেখে ওরা নিজেদের কাজ থামিয়ে আমাকে দেখতে থাকলো ! প্রায় এক ঘণ্টা হয়ে গেছে আমি বাড়ি থেকে বেরিয়েছি ! দূর থেকে দেখি ঝর্না আসছে ! সারা চোখে মুখে দুশ্চিন্তা নিয়ে ! আমাকে দেখে কিছুটা শান্ত হোল !
ওকে দেখে আমি ধীর পায়ে মাঠের ধারে বসে বুধুর কাছে জল চাইলাম ! বুধু তারাতারি একটা জলের বোতল নিয়ে আমার হাতে দিয়ে দিল ! সারা শরির ঘামে জ্যাব্জ্যাবে হয়ে গেছে !
ঝর্না আমার সামনে এসে দাঁড়ালো ! আমি চোখ তুলে ওর মুখের দিকে তাকালাম ! ওর চোখ দুটো আনন্দে জ্বললেও মুখ গম্ভির ! " একবার কি বোলে আসা যেতনা ?"
আমি কিছুই বললাম না ! উঠে পরে বুধুর হাতে বোতল ধরিয়ে বাড়ির পথে হাঁটা দিলাম ! আমার পিছন পিছন ঝর্না ! মা আর বাবা উৎকণ্ঠায় দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ! ওনাদের দেখে একটা ম্লান হেসে আমি বাথরুমে চলে গেলাম ! ফ্রেশ হয়ে বাইরে এসে মাকে বললাম " খেতে দাও ! খিদে পেয়েছে ! " মায়ের চোখ আনন্দে উচ্ছল হয়ে উঠল ! " ওরে ও ঝর্না ! তারাতারি তোর দাদাকে পরোটা আর আলু চচ্চড়ি করে দে !
ঝর্না তারাতারি রান্না ঘরে গিয়ে নিজের কাজে লেগে গেলো ! বাবা আমার পাশে এসে বললেন "তোকে তো একবার হায়দেরাবাদ যেতে হবে ! তোর সার্টিফিকেট, সমস্ত জিনিসপত্র সব কিছুই তো ওখানেই রয়ে গেছে ! " বাবার দিকে একটা স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম " জাবখন"
পরোটা খেতে খেতেই আমি মাকে বললাম " মা আমি বৈদ্যবাটি যাবো আজ ! "
- কি দরকার আছে ? যে গেছে তাকে নিয়ে আর কেন ঘাঁটাঘাঁটি করবি ?
- যাবো মা ! যেতে আমায় হবেই ! আজ যদি না যাই তাহলে হয়ত আর কোনোদিন আমার যাওয়া হবে না ! পিসিমা পিসেমসাইকে সব বলা আর হবে না !
আমার গম্ভির গলা শুনে বাবা বললেন " ঠিক আছে যা ! কিন্তু কাউকে সাথে নিয়ে যা ! "ঝর্না পাশ থেকে বোলে উঠল " আমি যাবো দাদার সাথে !"
জানিনা কেন আমার বাবা মা ঝর্নার উপর বেশ ভরসা করতে ছিখে গেছেন ! এখন ঝর্নার অনেক মতামত তারা নিয়ে থাকেন ! ঝর্নার কথায় বাবা বললেন তাই হোক তবে ! তুই যা ওর সাথে !
বাইক বের করে সাফ করছি ঠিক সেই সময় কানাই আমার বাড়ির সামনে নিজের কার দাঁড় করাল ! চৈতালি গারি থেকে নেমে এলো ! আমাকে জরিয়ে ধরল ! আমি কোন রেস্পন্স দিলাম না ! আমাকে ছেরে চৈতালি ঘরের ভিতর চলে গিয়ে বাবা মাকে প্রনাম করল !
কানাই এগিয়ে এসে আমাকে বলল " বাইক ঢুকিয়ে দে ! আমরাও বৈদ্যবাটি যাচ্ছি ! তুই আমাদের সাথেই চল ! কাল ফিরে আসব ! "
- ব্যাপারটা কি রে ? আমার যাবার কথা তুই কি করে জানলি ?
আমতা আমতা করে কানাই বলল "একটু আগে ঝর্না ফোন করেছিল মানে তোর বাবা ওকে আমায় ফোন করতে বলেছিল ! আজ আমার কোন কাজও নেই ! তাই ভাবলাম তোর সাথেই যাই ! এই ফাঁকে স্বশুরবারিতেও একটু ঘুরে আসা যাবে ! "
বুঝলাম বাবা বা মা আমাকে একা এখন বাইক চালাতে দিতে চাইছেন না ! ! একটু মনক্ষুন হলেও বাবার কথা মেনে নিলাম !
কানাই গারি চালাচ্ছে পাশে আমি ! পিছনে চৈতালি আর ঝর্না ! কেউই কোন কথা বলছে না ! পিসির বাড়ির সামনে পৌঁছে দেখি পিসিমা দরজা খুলে দাঁড়িয়ে আছেন ! বুঝলাম এখানেও ফোন করে দেওয়া হয়েছে ! আমাকে দেখেই পিসিমা কেঁদে ফেললেন ! আমি কোন কথা না বোলে সোজা মঞ্জুর ঘরে ঢুকে গেলাম ! আমার পিছনে পিছনে ঝর্না আর পিসিমা ! মঞ্জুর আলমারি খুলে আমি মঞ্জুর ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে এলাম ! ড্রয়িং রুমে এসে পিসিকে বললাম পিসেমসাইকে ডাকো !
আমার গলা শুনে পিসেমসাই নিজের রুম থেকে বেড়িয়ে এলেন ! সবাই সোফায় বসে ! শুধু ঝর্না আমার পাশে বসে বসে চুপচাপ আমার কার্যকলাপ দেখে যাচ্ছে !
সবার সামনেই মঞ্জুর ব্যাগ খুলে আমাদের রেজিস্ট্রি সার্টিফিকেট পিসির হাতে দিয়ে বললাম " হয়ত এটাই আমার ভুল ছিল ! তাই আমি মঞ্জুকে হারিয়েছি ! " আর এটার দরকার নেই ! আশা করি তোমরা আমার আর মঞ্জুর সম্পর্ক কে ক্ষমা করে দেবে !" শরির মন তখন আমার শক্ত ! পিশি আর পিশেমসাই ম্যারেজ সার্টিফিকেট টা দেখে কেঁদে ফেললেন " ওরে তোরা যদি আগে আমাদের বলতিস তাহলে আজ আমাদের এইদিন দেখতে হতনা ! " আমি কোন কথা না বোলে পিসিমা আর পিসেমসাইকে প্রনাম করলাম " হয়ত এটাই আমাদের শেষ দেখা ! জানিনা জীবন আমাকে কথায় নিয়ে যাবে ! আমাকে ক্ষমা করে দিও !
সোজা বেড়িয়ে এসে কানাইয়ের গাড়িতে বসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লাম ! ঝর্নার চোখেও জল ! কানাই গারি স্টার্ট করল ! পিছন ঘুরে দেখি পিসিমা কেঁদে চলেছেন আর কিছু বলতে চাইছেন ! কিন্তু আমার শোনার ক্ষমতা নেই ! ঝর্না আমার এই আকস্মিক ব্যবহারে আশ্চর্য হয়ে গেছে ! আমি কানাই কে বললাম আমাকে কমলদার বাড়িতে ছেরে দে !