Posts: 18
Threads: 2
Likes Received: 117 in 17 posts
Likes Given: 4
Joined: Mar 2019
Reputation:
37
ddey333, আপনার অনুরোধে।
সাংঘাতিক সব কাণ্ডকারখানা
বেজায় গরম, দিব্বি এসি ঘরে শুয়ে আছি তবু ঘেমে অস্থির । ঘাম মুছতে রুমালটা যেই তুলতে গেছি অমনি, নাঃ 'হযবরলর’ মতন রুমালটা বেড়াল না হয় হলো আমার গোঁয়ারগোবিন্দ বর, হেঁকে বললে, "চলো গো, ভালো ফুচকা খেয়ে আসা যাক ।" পতিবাক্য অমান্য করলেই কুম্ভীপাক, তাই গুটিগুটি পায়ে চলে এলাম গড়িয়াহাটে ।
সেই আলু মাখা, সেই কাঁচা লঙ্কা, সেই ভাজা মশলা মনটাকে উদাস করে দিলো । ফাউ সহযোগে পেটটা ভরিয়ে ফেললাম । চোখের জলে, নাকের জলে, ঘামের জলে একাকার । কিন্তু অনুভূতি? স্বর্গীয় ।
"দিদি না?" ঠিক কানের পাশে একটা কণ্ঠস্বর শুনে চমকে উঠলাম । মুখ তুলে দেখি বাইকে বসা একজন, মুখ হেলমেটে ঢাকা । তড়িঘড়ি হেলমেট খুলে এগিয়ে এলো আমাদের দিকে। মুখে আকর্ণবিস্তৃত হাসি ।
"দিদি, চিনতে পারছেন না? আমি সুকুমার," অধীর আগ্রহে ও বললো । ওর সেই হাসিটা, অনেক পুরোনো দিনের কথা মনে পরিয়ে দিলো । সুকুমার ঘাড়টাকে একটু কাত করে বললো, "দাদা, আমাকে মনে আছে? আপনি ভালো তো? ওঃ, সে সব দিনের কথা কি ভোলা যায়? দাদা, সিগারেট কি কমালেন? দিদি কি রাগই না করতেন । দিদি, রঞ্জু ভালো তো আর গুড়িয়ার মা?" এক নিঃশ্বাসে সব বলে তবে থামলো । খাঁটি অকপট আন্তরিকতার প্রতিমূর্তি ।
হটাৎ 'এই যাঃ, একদম ভুলে গেছি' বলে জিভ কেটে কিছু বোঝার আগেই ঢিপ করে প্রণাম, আগে আমাকে, তারপর ওকে । কোনো ভুল নেই, আমাদের সেই অতি পরিচিত সুকুমারই বটে ।
"কেমন আছো সুকুমার? কতদিন পর আবার তোমাকে দেখলাম। কী যে ভালো লাগছে না!" আমার বর সুকুমার এর মাথায় হাত দিয়ে আদর করলো । ওকে বাস্তবিক খুব খুশি মনে হলো ।
প্রাথমিক আনন্দ চঞ্চল মুহূর্তটা কাটিয়ে উঠলাম আমরা সবাই । সুকুমারের ঠোঁটের সেই হাসিটা রয়েই গেলো। ছেলেটার মধ্যে কোনো পরিবর্তন নেই । আমি সেই প্রশ্নটাই করলাম যা আমি আগে অজস্রবার করেছি, "কেমন চলছে সব তোমাদের?"
"খুব ভালো দিদি, খুব ভালো, আপনার আশীর্বাদ দিদি," প্রতিবারের মতো একই উত্তর দিলো সুকুমার ।
"আর তোমার সুন্দর বউর খবর কিছু বলো!" আমার নচ্ছার বরটা দুষ্টুমীপূর্ণ সুরে জিজ্ঞাসা করলো । লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠলো ওর মুখ, আমতা আমতা করে বললো, "খুউব ভালো দাদা, খুব ভালো; চিন্তা করা যায়না । আপনি তো ওকে জানেন । ও এখন অনেক বাড়িয়েছে, অনেক, সময় পায়না তো একদম ।"
প্রতিক্রিয়াটা প্রত্যাশিত । সুকুমারের জীবন পত্নীপ্রেমে ওতঃপ্রোত ।
"তা তোমরা কি বারাসত থেকেই কাজ করছো না কলকাতার কাছাকাছি কোথাও শিফট করলে?" আমি জিজ্ঞাসা করলাম ।
সুকুমার প্রশ্নটা শুনে কেমন একটু থতমত খেয়ে গেলো তারপর হাসিমুখে বললো, "না মানে, মিতালী কলকাতাতে আছে, ব্যবসাটা তো ওখানেই । খুব বড় ব্যাপার, বারাসত থেকে কি ম্যানেজ হয়?
"তা মাসিমা রাজি হলেন বারাসত ছাড়তে?" আমি একটু খোঁচা দিলাম । মাসিমার তো বারাসত অন্ত প্রাণ ।
সুকুমার কয়েক মুহূর্ত একটু চুপ করে থাকলো, তারপর অতিরিক্ত উৎসাহের সঙ্গে বললো, "আরে না না । মা কখনো রাজি হয়? বয়স হয়েছে, তার ওপর একটু খিটখিটে । মিতালী একলাই গেছে । এখন ওর উপযুক্ত সাহায্যের দরকার । সেই বাইক করে ব্যবসা করার দিন কি আর আছে? কলকতায় ও খুব বড় বুটিক খুলেছে, বুঝলেন না দিদি ।" সুকুমারের গলায় গর্ব ফুটে উঠলো ।
"নাঃ, ঠিক বুঝলাম না ।" আমার বর পাশ থেকে বললো, "ঠিক বুঝলাম না সুকুমার!"
সুকুমারের মুখটা যেন মলিন লাগলো, একটু বিব্রত হয়ে বললো, "মিতুর অসুবিধে হচ্ছিলো বারাসত থেকে, ব্যবসা বাড়াতে টাকারও দরকার হলো । এখন ও একজনের সাথে পার্টনারশীপ এ কাজ করছে । আমার সাথে থাকলে কোনোদিনই উন্নতি করতে পারতো না । আমিই বললাম ওকে যেতে, ও চাইছিলো না । একদিন ওর বুটিকে যাবেন নিশ্চই করে । ও ভীষণ খুশি হবে ।"
সুকুমার অসংলগ্ন ভাবে কথা বলতে থাকলো । প্রায় সবটাই বুটিকের কথা । কত ভালো, কত বড়, কীভাবে সবাইকে টেক্কা দিয়ে নাম করেছে, সবই শুনলাম, সবই জানলাম ।
কিছুক্ষন পর ওর কথা শেষ হলে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, "সুকুমার! কবে হলো এই সব? "
সুকুমার কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলো তারপর বললো, "দিদি, এক বছর হলো, কিন্তু বিশ্বাস করুন, কোনো উপায় ছিল না ওর কাছে । আমিই ওকে বলেছিলাম । "
সুকুমার হটাৎ চুপ হয়ে গেলো । হেলমেটটা পরে অন্য দিকে তাকিয়ে বললো, "যদি সময় হয় তো একদিন যাবেন, খুব সুন্দর । " একটু চুপ করে বললো, "সবাই তাই বলে ।"
আচমকা একটা কার্ড আমার হাতে গুঁজে দিয়ে সুকুমার বাইকটা স্টার্ট করে জোরে চালিয়ে চলে গেলো । আমরা দুজনে দাঁড়িয়ে থাকলাম, দেখতে থাকলাম যতক্ষণ না লাল আলোটা ভিড়ে হারিয়ে যায় ।
Posts: 18
Threads: 2
Likes Received: 117 in 17 posts
Likes Given: 4
Joined: Mar 2019
Reputation:
37
দুই।
বাড়ি ফিরে সুকুমারের কথা বার বার মনে পড়ছিলো । তখন আমরা রেস কোর্সের কাছে থাকতাম, প্রায় চার বছর আগেকার কথা । সেদিন আমি ছিলাম বেতনহীন, প্রসংশাহীন, স্বীকৃতিহীন খাঁটি গৃহবধূ যার একমাত্র কাজ ছিল এক ফালতু বর (শুধু মা মা ডাক) আর এক পাজী মেয়ের (বাবা বলতে অজ্ঞান) দেখাশোনা করা । মে মাসের গরম, তদুপরি একশো শতাংশ হুউমিডিটি, সব মিলিয়ে প্রাণ যায় যায় অবস্থা । ঘড়িতে তখন বারোটা, বেল শুনে দরজা খুলে দেখি একজন ছোটোখাটো লোক দাঁড়িয়ে । মুখে 'কান এঁটো করা হাসি ।' এক কথায়, চিনি না ।
মানুষটি কিন্তু অকুতোভয় । দ্বিধাহীন ভাবে সে বললো, "দিদি, আমরা বারাসত থেকে আসছি, যাঁর সাথে দেখা করবো তিনি বাড়িতে নেই, আমার স্ত্রী এসেছেন সঙ্গে, তিনি একটু কাহিল হয়ে পড়েছেন । লিফটম্যান বললো যে আপনি বাঙালি । আমি মিতু কে বললাম এক গ্লাস জল কি উনি আমাদের দেবেন না? নিশ্চই দেবেন । দিদি, দেবেন একটু জল?" আমি তখন লক্ষ করলাম যে একটি লাজুক ছোট্টখাট্ট মেয়ে সিঁড়ির ওঠার মুখে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছে ।
"দিদি, আমি সুকুমার আর এ মিতু…মিতালী । আমরা সেই সকালে বেড়িয়েছি, কী গরম! মিতুর শরীরটাও ভালো নেই, একটু ভেতরে আসবো?"
উপায়ন্তর নেই, তাই আসতে দিলাম ভেতরে । মেয়েটি মানে মিতালী একটু ইতস্তত করে সোফাতে বসলো কিন্তু সুকুমার কালবিলম্ব না করে সোজাসুজি বৌয়ের পায়ের কাছে কার্পেটে বসে গেলো । চারদিকে তাকিয়ে উৎসাহিত হয়ে বললো, "দিদি, কি সুন্দর বাড়িটা সাজিয়েছেন আর ওই ছোট ছোট গণেশগুলো, চমৎকার! আপনি কালেক্ট করেছেন? মিতালী একটু অপ্রস্তুত হয়ে সুকুমারের পিঠের একটা খোঁচা দিলো কিন্তু সুকুমার অকুঠচিত্তে প্রশংসায় পঞ্চমুখ । আমি জল আর কিছু মিষ্টি দিলাম ওদের। সুকুমার কিছুতেই মিষ্টি খাবে না কিন্তু মিতালী কে খাওয়াবেই । অবশ্য শেষ পর্যন্ত সে নিজেও প্লেটটা শেষ করেছিল ।
খুব শিগগিরই জানতে পারলাম (সুকুমার বললো) যে এই রোগা মেয়েটা মানে মিতু অসাধারণ আর ব্যতিক্রমী শিল্পী, তদুপরি আশ্চর্য ভালো ব্যবসায়ী । তার নকশা শিল্প অনবদ্দ, আর তার শাড়ি শুধুমাত্র তাদের বিক্রি করা হয় যারা শিল্পের কদর করে । ভদ্রতার খাতিরে আমি কিছু প্রশ্ন করলাম আর মুহূর্তের মধ্যে সুকুমার দৌড়ে গিয়ে নিচের থেকে দুটো বিশাল ব্যাগ এনে হাজির করলো । মিতালী তো লজ্জায় একেবারে একশেষ । সুকুমার একের পর এক শাড়ী দেখাতে আরম্ভ করলো । একটু পরেই আমি বুঝলাম যে সুকুমার কথাগুলো মিথ্যে বলেনি । বাস্তবিক, দুজনেই অসাধারণ শিল্পী । কিছুক্ষনের মধ্যেই মিতালী নিজেও উৎসাহিত হয়ে বিভিন্ন শিল্পের ব্যাপারে আলোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো । সুকুমার বৌয়ের প্রসংশায় পঞ্চমুখ (আমার বরটাকে যদি দেখাতে পারতাম!) ।
যদিও কোনো দরকারই ছিল না তবু দুটো শাড়ী কেনা হয়েই গেলো । অবশেষে ওরা ফিরে গেলো, ব্যাগদুটো ভীষণ বিপজ্জনকভাবে বাইকের দুপাশে ঝুলিয়ে ।
সেই শুরু । এক বছরেই ওদের সৃজনশীলতার খুঁটিনাটি সব জেনে গেলাম । ওরা দুজন সময় পেলেই বাড়িতে এসে আমাকে দেখাতো যে নতুন কি করেছে । বিশেষ করে মিতালী । ও প্রায়ই বিভিন্ন মোটিফ, প্যাটার্ন আর ডিসাইন এর ব্যাপারে আলোচনা করত আর তারপর সেটা নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতো । আশ্চর্য সুন্দর আর্টওয়ার্ক তৈরী করতো । আর সুকুমার? সে অক্লান্তভাবে মিতালী কে নিয়ে সারা কলকাতা শহর চষে ফেলতো হাসিমুখে । খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে সুকুমারের কোনো কুন্ঠা ছিল না । আমার মনে আছে, একদিন আচমকা দুপুরে দুইমুর্তি এসে হাজির । সুকুমার এসেই বললো,"দিদি জল দিন শিগগির, আর একটু ডালভাত হবে? সোজা শান্তিনিকেতন থেকে আসছি, কিচ্ছু খাওয়া হয়নি । সেদিন সত্যিই বাড়িতে ভাত আর ডাল ছাড়া কিছু ছিলোনা । কিন্তু সেই দুটো ভাত ওরা ডিমভাজা দিয়ে যা তৃপ্তি করে খেয়েছিলো তা আমি কখনও ভুলবো না । মিতু ভালো করে খেলো কিনা তার ওপর সুকুমারের হেডমাস্টারী নজর থাকতো সদাই বিদ্যমান ।
মিতালী ছিল ইংরেজিতে এম.এ তাও আবার যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে । শাড়ির ব্যবসাতে কি করে এলো তা কিছুতেই আমার বোধগম্য হোতনা । সুকুমার আর মিতুর বিয়েটাও আমাকে অল্পবিস্তর অবাক করতো । দুজনে দু রকম । মিতালী প্রচুর পড়াশোনা করতো, বিভিন্ন বিষয়ে তার জ্ঞান ছিল গভীর আর সুকুমার.......সে মানুষটা ছিল বড়ো ভালো । মিতু পারতো অক্লান্ত পরিশ্রম করতে আর সদাহাস্যমুখ সুকুমার ছিল ততোধিক ক্লান্তিহীন, ওকে নিয়ে ঘুরতে। মানিকজোড়।
Posts: 18
Threads: 2
Likes Received: 117 in 17 posts
Likes Given: 4
Joined: Mar 2019
Reputation:
37
তিন।
তারপর, আমরা কলকাতা ছেড়ে পাড়ি দি দিল্লি। রাজধানী টেনে নেয় আমাদের কর্মব্যস্ততার আবর্তে, আস্তে আস্তে সেই গভীর বন্ধন ক্ষীণ হতে থাকে। তিন বছর পর সুকুমারের সাথে আকস্মিক ঘটনাচক্রে দেখা কিন্তু মনটা না জানি কেন উদাস হয়ে গেলো।
রাত্রে বিছানায় পাশাপাশি শুয়ে আমি ওদের কথাটা না তুলে পারলাম না। কিন্তু দেখলাম যে এ ব্যাপারে আমার বর বেশ প্রাকটিক্যাল। "বেশি চিন্তা কোরোনা তো, আপনি বাঁচলে বাপের নাম, নিজের চরকায় তেল দাও," বলে পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়লো। অসভ্য ইনসেন্সিটিভ লোক।
পরের কয়েক দিন আমরা কলকাতার তীর্থস্থানগুলোর দর্শনে মশগুল রইলাম। এই যেমন নিউমার্কেট, একাডেমী, বলরাম মল্লিক, হাটারি, রবীন্দ্র সদন, কফি হাউস আর কত কি! সম্মোহিতের মতো আমরা ঘুরে বেড়ালাম। সকালে বের হই আর রাত্রে ঢুকি ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত কিন্তু উজ্জীবিত, প্রফুল্লিত, উচ্ছসিত। পরের দিন কি করা হবে সেই প্লানে নিবিষ্ট।
পরের দিন, যাদবপুর ইউনিভার্সিটি, দক্ষিণাপন, মধুসূদন মঞ্চে নাটক, বেদুঈনের রোল, গিরিশের কাঁচাগোল্লা, বাসন্তী দেবী কলেজের সামনে দাঁড়ানো বুড়োটার কাছে ফুচ্কা খেয়ে পেট আইঢাই হয়ে করুণ অবস্থা। ক্রমে অন্ধকার ঘনিয়ে হয়ে এলো, আমরা তখনো দিশাহীন ভাবে গড়িয়াহাটের এ রাস্তা ওই গলি ঘুরে বেড়াচ্ছি হটাৎ আমার বর একটা খোঁচা দিলো আমার পিঠে । ঘুরে দাঁড়াতেই দেখি ও একটা নিয়ন বোর্ডের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। ঝলমলে আলোতে লেখা 'মিতালি ক্রিয়েশন্স।' আমাদের মিতালি নাকি? পরমুহূর্তেই আবার মনে হলো কলকাতায় 'মিতালি' নামটা মোটেও বিরল নয়। বরের চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম যে ঠিকানা ভুল হয়নি। আমার পাদুটো আপনাআপনি চললো সে দিকে।
বিশাল বড় বুটিক, সুন্দর সাজানো, দুর্দান্ত উদ্ভাবনী পরিকল্পনা। রঙের বর্ণবিন্যাস, পরিধান, কস্টিউম , দেয়ালে ঝোলানো রঙিন চিত্রাঙ্কন সবের মধ্যেই ব্যতিক্রমী সৌন্দর্যবোধের পরিচয়। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। একটি ছিমছাম সেলসকন্যা এগিয়ে এসে আমাদের অভ্যর্থনা জানালো, জানতে চাইলো সে আমাদের কীভাবে সাহায্য করবে। আমি বিব্রত হলাম ; সত্যিই তো, আমার তো কিছু কেনার নেই। আমার বরটা দেখি বুদ্ধি ধরে; খুব কায়দা করে বললো যে আমরা মিতালি দেবীর সাথে দেখা করতে এসেছি। "উনি তো এখন নেই, আপনি আপনার কন্টাক্ট নম্বরটা দিয়ে যান" মেয়েটা অনুরোধ করলো। আমার বর্বর বর খসখস করে আমার নাম আর মোবাইল নম্বর অতিথিপুস্তকে লিখে দিলেন। আমরা বেরিয়ে এলাম। ফিরে তাকালাম। যথার্থই নাক্ষত্রিক বিন্যাস, স্টেলার শো।
আমি কি খুব আশ্চর্য হলাম? মিতালির কাছে আমার এটাই তো প্রত্যাশা ছিল? কিন্তু অঙ্কটা মিলছে কই?
জবাবটা এলো পরদিন ভোরে, ঘুম ভাঙল ফোনের ডাকে। দেখি অজানা নম্বর তাকিয়ে আছে আমার দিকে। একটু ইতস্তত করে শেষমেশ পিক করলাম। ওপারে মিতালি, সেই অতি পরিচিত মিষ্টি স্বর। সে আর আমি দুজনেই কিঞ্চিৎ কুন্ঠিত , কি কথা বলব বুঝতেই পারছি না। ও আজ আসতে চায় মানে আসবেই। আমার ঘুমন্ত বরটা হটাৎ জেগে উঠে হাত পা নেড়ে বলবার চেষ্টা করলো যে কাটিয়ে দাও। মিতালীও জানিয়ে দিলো যে সে শুধুমাত্র আসবেই তা নয়, লাঞ্চও খাবে। বেচারা বর , তার মেনল্যান্ড বুফেটার চোদ্দটা বাজলো। ভদ্রলোক দেখলাম মনে কষ্ট পেলেও বাজারে গিয়ে যাবতীয় কেনাকাটা করে আনলেন। মাঝে মাঝে মনে হয় যে লোকটা খুব একটা মন্দ নয়। তবে আমার একটু সন্দেহ হয় যে ব্যাটা বাজারে যাবার নাম করে সিগারেট খায়।
মিতালি ঠিক বারোটার সময় ঢুকলো, নিজের গাড়িতে। আমি চোখ ফেরাতে পারছিলাম না। সেই মিতালি যাকে আমি চিনতাম সে কোথায়? আমাদের সেই রোগারোগা লাজুক মেয়েটা যে সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে এ বাড়ি ও বাড়ি মোটরবাইকে ঘুরে বেড়াতো, ঝোড়ো কাকের মতন, এই মেয়ে তো সেই মেয়ে নয়। স্মার্ট, অসীম সুন্দরী, নির্ভীক 'ওম্যান অফ সাবস্টেন্স', জীবনযুদ্ধে জয়ী নারী আজ আমার সামনে দাঁড়িয়ে। সে তো এসেই ঝড় বইয়ে দিলো, আমার বরের সাথে খুনসুটি, আমার এলোমেলো চুল আঁচড়ে দেওয়া, সবই হলো। আমি আমার রান্না করা অল্প কয়েকটা পদের কথা ভেবে লজ্জা পেলাম। তার সামনে, আমরা যেন টিমটিমে, ম্যাড়ম্যাড়ে।
আমি ভেবেছিলাম আমাদের মিতু আসবে কোনো সিইও না। এমনকি আমার 'অতিচালাক' বরের অবস্থাও দেখলাম বেশ সঙ্গিন, সেনা ছত্রভঙ্গ।
Posts: 18
Threads: 2
Likes Received: 117 in 17 posts
Likes Given: 4
Joined: Mar 2019
Reputation:
37
চার।
অবশ্য কিছু সময়ের মধ্যেই আমাদের পুরানো মিতালি তার স্মার্ট খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলো। আমরা যেন বাঁচলাম। তবে নতুনত্বটা রয়েই গেলো। দেখলাম যে পুরোনো দিনের ছোটোখাটো সব ঘটনাই তার মনে আছে, সব গল্পই ও করে ফেলতে চায়। আমার জন্য একটা শাড়ি উপহারস্বরূপ এনেছিল, নিজের হাতে করা কাজ, সরু তুলির বাটিক, অপূর্ব , চোখ ফেরানো যায় না। দেখেই বুঝলাম যে দশ বারো হাজার টাকা দাম হবে। স্বভাবতই একটু ইতস্তত করলাম। ও আচমকা হাঁটু গেড়ে বসে শাড়িটা আমার পায়ের ওপর চেপে ধরলো, কিছুতেই ছাড়বে না, কি গেরো।
খাবার সময় আমি স্বল্প আয়োজনের জন্য ত্রুটিস্বীকার করতেই তার কি বকাবকি! বাবাঃ, কি গিন্নি।
শুধু দেখলাম যে আমার বর চুপচাপ মিতু কে লক্ষ্য করে যাচ্ছে, যেন কিছু ভাবছে। ওর আবার কি হলো?
খাওয়ার পর মিতু খাটে আয়েশ করে বসলো আর আমাকেও টেনে বসালো। এতক্ষন ও নিজের বা তার কাজের, কোনো কোনো কথাই আমাদের, আমরাও কিছু জিজ্ঞাসা করিনি। শেষমেশ, আমি জিজ্ঞাসা করেই ফেললাম ওর সেই আশ্চর্যসুন্দর বুটিকের কথা। ও একটু যেন চুপচাপ হয়ে গেলো মনে হলো যেন ওর ভেতরে কোনো টানাপোড়েন চলছে। হটাৎ ঝোঁকের মাথায় বলে ফেললো, "দিদি, আমি আর সুকুমারের সাথে থাকি না!"
এটা আমাদের জানা ছিল কিন্তু আমাদের অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। ও মাথা নিচু করে বসে থাকলো। বুঝতে পারলাম যে মিতালি বলতে চায় অনেক কিছু কিন্তু কীভাবে আরম্ভ করবে তা বুঝতে পারছে না। একটু সহজ করার জন্য আমি প্রশ্ন করলাম, "বারাসাত থেকে ম্যানেজ করাটা কি মুশকিল হচ্ছিলো?" মিতালী মনের ভেতরে আমরা প্রশ্নটা নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে বলল, "দিদি, আমি তিন বছর বারাসাতে অসম্ভব স্ট্রাগল করেছি। তুমি তো জান, যে কাজ করতে, পরিশ্রম করতে আমি কোনোদিনই পিছু হটিনি। আমি খুব ভালো কাজ করতাম আর দরজায় দরজায় তা বিক্রি করতাম, সবার প্রশংসাও অনেক পেয়েছি। কিন্তু বিক্রি হতো না আমার কাজ কারণ আমার দাম তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। তাতেও আমার আপত্তি ছিল না কিন্তু যাদের কাছে আমি যেতাম তারা কখনো আমাকে শিল্পীর মর্যাদা দেয়নি, তাদের চোখে আমি সব সময় ছিলাম একজন ছোট ভেন্ডার , শাড়ীর ব্যবসাদার। আমার কাজকে প্রতিষ্ঠিত করতে বা ভালো প্রমাণ করতে কলকাতা আসার দরকার ছিল। । সুকুমার বারাসাতের অল্প পরিসরের কাজেই সন্তুষ্ট ছিল কিন্তু আমি হতাশ, ফ্রাস্ট্রেটেড হয়ে যাচ্ছিলাম। কি করতাম ? তোমরা বলো? আমি অনেক চিন্তা করে দেখলাম যে আমাকে যদি এগোতে হয় তাহলে আমাকে কলকাতা যেতে হবে। এক ভদ্রলোক আমাকে সাহায্য করলেন, এই বুটিকটা তৈরী করতে, টাকা দিলেন, পরিকাঠামো দিলেন। আজ আমি গাড়ি করে ঘুরি, যাই তাদের কাছে যারা শিল্প বোঝে, তার কদর জানে।আজ আমার স্বপ্ন সফল। দিদি তুমি বলো আমি সুকুমারকে ছেড়ে কি ভুল করেছি? দাদা, আপনি বলুন আমার কাছে কি অন্য কোন বিকল্প ছিল?"
সোজাসাপটা কথা, আমাদের কি বা বলার থাকতে পারে? অকাট্য যুক্তি। কিন্তু বারবার আমার চোখের সামনে সুকুমারের সেই মলিন হাসিমুখটা ভাসতে থাকলো। মনের এই দ্বন্দ্বের কোনো ব্যাখ্যা আমার কাছে ছিল না।
আমার বর লক্ষণীয়ভাবে চুপ করে মিতুর কথা শুনছিলো। হটাৎ সে কথা বলে উঠলো, আমি স্বা স্বাভাবিকভাবেই অবাক হলাম।
ও বললো, "মিতালি, দেখো। এই ব্যাপারে আমাদের কিছু বলা সম্পূর্ণভাবে অনধিকারচর্চা কিন্তু তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে তোমাকে অনেকদিন ধরে চিনি তাই যদি কিছু মনে না করো তাহলে দুটো কথা বলি যদিও এটাকে আমার ধৃষ্টতা হিসেবেই ধরা যেতে পারে। আমার মতে তুমি অযথা নিজেকে দোষারোপ করছো।বারাসাত ছেড়ে কলকাতা যাবার ডিসিশন খুবই সঠিক আর বিবেচনাপূর্ণ। কঠিন নির্ণয় কিন্তু সুকুমারের সাথে তোমার সম্পর্কের ভিত খুবই দুর্বল ছিল আর কোনো ভবিষ্যৎ ছিলোনা বললেই ভালো হয়। তোমার মতো বুদ্ধিমতী মেয়ের কাছে আমি অন্তত এটাই আশা করি আর অভিনন্দন জানাই যে তুমি অযথা আমাদের এই ঠুঁটো সমাজের হিজিবিজি শাসন থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পেরেছো। সেলাম তোমাকে।"
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে ও আবার বললো, "সুকুমারের বিষয়ে আমার মতামত তোমার ভালো নাও লাগতে পারে। আমার মতে সুকুমার যথেষ্ট পরিমানে সুযোগসন্ধানী ছেলে তা নাহলে কি কেউ বৌয়ের কাঁধে ভর দিয়ে জীবন যাপন করে? কারণ, বৌ অত্যধিক মেধাবী আর নিজে পুরোমাত্রায় অদক্ষ। এটা কিন্তু সে ভালোই জানে যে সে তোমার উপযুক্ত নয় কিন্তু আজেবাজে যুক্তি দিয়ে তোমাকে আটকে রাখবে, আত্মসর্বস্ব স্বার্থপর লোকেরা এরকম হয়। যেহেতু এদের আত্মসম্মান বলে কিছুই থাকেনা তাই এরা সবার সামনে ভালো ব্যবহার করে, বৌকে তোয়াজ করে যাতে জীবনটা আনন্দেই মজা করে কেটে যায়। আর কষ্টটা হয় কার ? তোমার মতন সুপিরিয়র মেয়েদের যাদের জীবনটা সংসারের জোয়াল টেনেই কেটে যায়।
আসলে কি জান? সুকুমার একটা পরগাছা যে তোমাকে ব্যবহার করতো তোমার কিছু মালপত্র তুলে আর তোমাক বাইকে করে এদিক ওদিক নিয়ে গিয়ে। আর সবার মনে হতো যে ওহ বৌকে কী না ভালোবাসে। ইংরেজি তে এদের বলে এটেনশন সিকার। এদের লজ্জাও হয় না।
আমি দেখতাম যে আমাদের বাড়ি এলে সে ন্যাকামি করে তোমাকে খেতে বলতো। আমি দূর থেকে হাসতাম যদিও তোমার দিদি বেশ ইম্প্রেসেড হতো। এই ভাবে এরা সিমপ্যাথি আদায় করে। এভাবেই এরা বাঁচে, এটাই এদের গেম।
সত্যি কথা বলতে কি ওর সাথে দিনকয়েক আগে দেখা হয়েছিল। ও কিন্তু দেখলাম এখনো বেশ হোপফুল। দেখলাম বেশ কায়দা করে তোমার দিদিকে বুটিকের কার্ডটা গছিয়ে দিলো যাতে আমরা ওখানে যাই আর বলি যে সুকুমার কত ভালো ভালো কথা বলছিলো। ফেরার পথ খুলে রাখা আরকি। পরগাছারা কখনো বদলায় না।
তার ওপর সংসারের ছোটোখাটো ঝামেলা তো আছেই। কোনো মা কি চাইবে যে ছেলের স্ত্রী ছেলের চেয়ে ভালো হোক? আমার নিজের মা ই চাইতেন না আর এ তো মফঃস্বল! বুঝতেই পারি শ্বশুরবাড়িতে কত রকম অবমাননা তোমাকে পোয়াতে হয়েছে। তাই আবার বলছি, তুমি খুব ভালো আর সাহসী ডিসিশন নিয়েছো, এতে তোমার দৃঢ়সংকল্প ফুটে উঠেছে। নতুন জীবন শুরু করো তার সাথে যে তোমার মূল্য বুঝবে, তোমার সমকক্ষ হবে, সুকুমারের মতন হেরো নয়।
একটু চা হোক নাকি? মিতালীর নতুন জীবন আমরা সেলিব্রেট করি। "
এই বলে ও ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
Posts: 18
Threads: 2
Likes Received: 117 in 17 posts
Likes Given: 4
Joined: Mar 2019
Reputation:
37
পাঁচ।
আমি স্তব্ধ হয়ে বসে রইলাম
কারো মুখে কোনো কথা নেই। আমি তো মিতালীর দিকে তাকাতেই পারছিলাম না। কি করবো বুঝতে না পেরে রান্নাঘরে গেলাম চা বানাতে। দুজনেরই চিন্তা করার কোনো ক্ষমতা শেষ হয়ে গিয়েছিলো।
মিনিট দশ পরে চা আর বিস্কুট নিয়ে যখন ঘরে ঢুকলাম তখন দেখি মিতালি উপুড় হয়ে শুয়ে আছে বালিশ আঁকড়ে, ওর সমস্ত শরীর কান্নায় গুমরে গুমরে উঠছে। আমি ওর মাথায় হাত দিতেই ও ধড়মড় করে উঠে বসলো। সজল চোখে কান্না জড়ানো গলায় শুধু বললো, "দাদা সব ভুল বললেন।"
প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ও চলে গেলো, চা না খেয়েই। আমার স্টুপিড বর যে কোথায় হাওয়া হলো তাও বুঝলাম না। চাটা রান্নাঘরে গিয়ে ফেলে দিলাম।
ও অনেক রাত্রে ফিরলো, কথা বলার চেষ্টা করলো কিন্তু আমি ঠিকই করেছিলাম যে ওর সাথে আমার কোনো কথা নেই। মানুষ যে এতো নির্মম, নিষ্ঠুর আর দয়ামায়াহীন হতে পারে আমার জানা ছিল না.
মনস্টার!
তিন দিন ওর সাথে আমার কোনো কথা হলো না, আমি পারলাম না.
চতুর্থ দিন সকালে ঝড়ের মতন এসে ঢুকলো মিতালি. এসেই বললো, "দিদি শিগগির এক কাপ ভালো চা খাওয়াও তো." মুখটা দেখলাম খুশি খুশি. কি ব্যাপার! যাই হোক চা নিয়ে যখন ঢুকলাম তখন দেখি জমিয়ে বসেছে বিছানায়. আমার হাত থেকে চা টা নিয়ে বললো, " দিদি, কলকাতার পাট শেষ, বারাসাত ফিরছি."
বলে কি মেয়েটা? আমি তো তাজ্জব বনে গেলাম, মিনমিন করে বললাম, "কি সব বলছিস, এতো বড় সিদ্ধান্ত, কখন নিলি, কিছুই তো বুঝতে পারছিনা?"
মিতু আমার গায়ে হাত দিয়ে বললো, “বড় সিদ্ধান্ত বলেই তো এতো সহজে নিতে পারলাম দিদি."
আমার মুখ দেখে মিতু বুঝতেই পারলো যে আমার মনের অবস্থা একাধারে বিহবল, বিভ্রান্ত আর অতীব খুশি.
মিতালি চায়ে শেষ চুমুকটা দিয়ে বললো, "সেদিন যখন এ বাড়ি থেকে বেরোলাম তখন আমার মন যে কি টানাপোড়েনের মধ্যে ছিল তা ভাবতেও আমার গা শিউরে ওঠে, কি করবো, কোথায় যাবো. যাক, শেষে ড্রাইভার কে বললাম বুটিকে নিয়ে যেতে. তুমি বিশ্বাস করো যে বুটিক গত এক বছর ধরে আমার অস্তিত্ব কেন্দ্র ছিল সেটা সেদিন আমার অপরিচিত মনে হলো, এ আমি কোথায় এসেছি? কিন্তু এতো কাজ ছিল যে সময়টা না জানি কিভাবে বেরিয়ে গেলো. সাড়ে আটটার সময় দোকান বন্ধ করে সবাই চলে গেলে আমি বসে রইলাম. আমি জানতাম ও আসবে, আমার সব ইন্দ্রিয়গুলো একজোট হয়ে তার অপেক্ষা করতে লাগলো. নটার সময় দেখলাম ও বন্ধ দরজাটার সামনে দাঁড়িয়ে আছে, আমি দরজাটা খুলে দিলাম. আমাকে দেখে লজ্জিত মুখে হাসলো, ধরা পরে গেলে যেমন হয়.
জানো দিদি, এই এক বছর পর আমি ওর সাথে প্রথম কথা কি বললাম? জিজ্ঞাসা করলাম, “তুই কি রোজ আসিস?”
ও লজ্জায় লাল হয়ে মাথা নাড়লো. আমি কোনোদিন জানতেও পারিনি দিদি.
বললাম, "ভেতরে আয়ে. প্রথমটা একটু ইতস্তত করলো তারপরে খুব সাবধানে ঢুকলো. কিন্তু ভেতরে এসে ও অবাক চোখে চারদিকটা দেখতেই থাকলো, ওর চেহারায় স্পষ্ট দেখলাম আনন্দ আর গর্ব. আর আমি দেখলাম ওর মলিন জামাকাপড়, কিন্তু মনের কোনো অমলিনতা দেখলাম না.
বিশ্বাস করতে পারো, জুতোটা বাইরে খুলে তবে ঢুকলো, সেই পুরোনো ময়লা জুতোটা, এবার দেখলাম ছিঁড়েও গেছে.
ও শুধু বললো, "কি সুন্দর রে."
আমার বলার কিছু ছিল না, কি বলবো? ক্ষমা চাইবো? আমার নিজের আচরণে? কিন্তু ওর চোখে আমি তো কোনো ভুলই করতে পারি না. ক্ষমা চাইলে হয়তো অবাক হয়তো অপ্রস্তুত হবে.
তাই ওর সাথে মাটিতেই বসলাম, ও মন দিয়ে দামি টাইলসগুলো দেখলো, এগুলোও নাকি সুন্দর.
তারপর আমার দিকে তাকালো. দিদি, লোকে বলে মানুষে মুখ আয়নাস্বরূপ, আমি ওর মুখে কত কিছুই না দেখলাম, ওর অবাক চোখ, ওর সেই হাসি আর শেষে চোখ নিচু করে মাটির দিকে তাকানো, সবই দেখলাম দিদি. এই মানুষটার মনের অন্তস্থল দেখা হয়ে গেলো আমার. আমি নিজেকেই কোনোদিন দেখলাম না.
কিন্তু আমার তো কথা বলার প্রয়োজন ছিলই, তাই একটু ভেবেচিন্তে বললাম, "শোন, আমি বারাসাত ফিরে যাবো." ও অবাক হয়ে আমার দিকে খানিক্ষন তাকিয়ে রইলো, এইমাত্র আগে তুমি যে ভাবে তাকিয়ে ছিলে ঠিক সেইভাবে.
আমি বলতেই থাকলাম, "দ্যাখ, এই বুটিকটার জন্য, আমার পার্সোনাল কন্টাক্টগুলো হারিয়ে যাচ্ছে, আবার ব্যক্তিগত যোগাযোগটা আরম্ভ করতে হবে. তাতে আমাদরে বিসনেস বাড়বে."
ও বুঝলো, মাথা নাড়লো কিন্তু পরমুহূর্তেই দেখলাম ওর চোখে শঙ্কার ছায়া. কেন, তা বুঝলাম. ওকে আস্বস্থ করার জন্য বললাম, "এই বুটিকটা আমাদের ম্যানেজার চালাবে, আমরাও মধ্যে মধ্যে এসে দেখে যাবো, হবে না?"
এবার দেখলাম ও খুশি, কথাটা মনে ধরেছে.
আমার কথা শেষ, ও দেখি কিছু বলবে বলবে করে বলতে পারছেনা.
আমি ওর হাতটা ধরলাম, "বল, কি বলবি?"
অনেক্ষন ভেবেচিন্তে, লজ্জায় লাল হয়ে চোখ নামিয়ে বললো, "এই যে ভদ্রলোক তোকে সাহায্য করছেন, তুই হটাৎ করে ছেড়ে দিলে রাগ করবেন না?"
ও, এই কথা? আমি হেসে বললাম, "রাগ করবেন বৈকি, দেখিস আমাদের দুজনকে বেধড়ক প্যাঁদাবেন, চল আমরা পালাই, যাবি?
ও হাসিমুখে বললো, "কখন?"
আমি বললাম, "এখনই, গাড়িতে তেল আছে?"
সোজা শান্তিনিকেতন! আজ সকালে ফিরলাম."
Posts: 18
Threads: 2
Likes Received: 117 in 17 posts
Likes Given: 4
Joined: Mar 2019
Reputation:
37
09-12-2020, 07:40 PM
(This post was last modified: 09-12-2020, 08:47 PM by Trambak. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ছয়।
সুকুমার কোথায়?" আমি প্রশ্ন করলাম.
"ওকে বুটিকে ছেড়ে এসেছি." মিতু জানালো.
"কি সর্বনাশ, জুতোটা পাল্টিয়েছিস তো," আমি ব্যগ্রভাবে জিজ্ঞেস করলাম?
মিতু আমার গায়ে হাত দিয়ে বললো, "দিদি, আমার সুকুমার যেমন আছে তেমনি যেন থাকে, ওর মিতু পাল্টালে ও মেনে নেবে, মিতু পারবে না."
হক কথা.
এর মধ্যে হটাৎ রসভঙ্গ. দরজায় খটখট, আমার রাক্ষস বরটা ফিরেছে. সেদিনের কথা ভেবে পুনরায় কুন্ঠিত হলাম. তড়িঘড়ি করে মিতুর হাতটা ধরে বললাম, " মিতু, শোন, সেদিনের ঘটনায় আমি সত্যি খুব লজ্জিত, তোর দাদা যে মাঝে মাঝে কি করে না, আমার মাথা কাটা যায়, ভীমরতি হয়েছে, তুই মাপ করে দিস ভাই."
বলতে বলতেই লোকটা এসে হাজির, মিতু কে দেখে একটু থমকে গেলো তার পরমুহূর্তেই নির্লজ্জের মতন হেসে বলে, "এই যে মিতু দেবী, গল্পটা কি দাঁড়ালো তাহলে, আমিও শুনি!"
বলে কি লোকটা?
নচ্ছার লোকটা আমার সামনে এসে বললো, "আদু প্রিয়ে, আমিও একটু চা পাবো না?"
এর মধ্যেই দেখি মিতু আমার বরকে একটা ঢিপ করে প্রণাম ঠুকে দিয়ে বললো, "দাদা, এ জীবনে আপনার এই ঋণ আমি শোধ করতে পাবো না."
তারপর আমাকেও একটা প্রণাম করলো.
ব্যাপার স্যাপার দেখে গা পিত্তি জ্বলে গেলো. আমাকে কেউ কিচ্ছু বলে না!
রাগে গজগজ করতে করতে চা বানাতে গেলাম.
আয়েশ করে চা খেয়ে আর এক প্রস্থ গল্পটা শুনে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করলেন, "মিতু দেবী, তাহলে কি বুঝছেন?"
মিতু একটু ভেবে বললো, "দাদা, একটু সাবধানে চলতে হবে, শান্তিনিকেতনে গিয়ে দেখলাম যে ও প্রচন্ড হীনমন্যতায় ভুগছে. বারবার আমাকে দেখে আর নিজেকে আমার সাথে তুলনা করে. আর লজ্জা পায়ে. আমি এর জন্যে নিজেকে ক্ষমা করতে পারিনা. কিন্তু আমাকেই এর সমাধান বের করতে হবে. ওকে আমি আর হারাতে পারবো না."
"কি করবে ভাবছো?" ওঁর প্রশ্ন.
"দাদা, আমি বলেছি যে আমাদের এতো বড় বিসনেস, আমাদের পর কে সামলাবে, ছেলেপুলে হতে হবে তো. ঠিক বলিনি দাদা?" মিতুর জবাব.
দাদা কিছুক্ষন মিতুর দিকে তাকিয়ে থেকে আমাকে বললো, "আদু, মিতু ভালো বলেছে, কি বল? বেশ রোমাঞ্চকর উত্তর, না?"
আমি চুপ.
হটাৎ মিতু তড়িঘড়ি করে উঠে বললো, "দিদি যাই, প্রচুর কাজ বাকি, বিকালে আবার আসবো, ওই মালটাকেও সঙ্গে আনবো."
"শান্তিনিকেতনে কি হোল? সমস্যার কোন সুরাহা? আমার বর বলে উঠলো।
মিতু মাথা নিচু করে পায়ের নখ খুঁটতে লাগলো। কিছুক্ষণ পরে বললো, "দাদা, আপনাদের সামনে কি করে যে বলব জানি না। সে রাত্রে আমরা চার ঘন্টা বাইকে ছিলাম। সে সময় আমি ওর যা নিকতত্ব অনুভব করলাম তা কোনোদিন করিনি। ঠিক করেছিলাম ওকে ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দেব। যা আমি কখনো দিইনি। শান্তিনিকেতনের আমাদের চেনা হোটেলে আমি সবচেয়ে ভালো ঘরটা নিলাম। আমরা ক্লান্ত ছিলাম, শুয়ে পড়লাম। সুকুমার বিছানার এক পাশে অন্য দিকে মুখ করে শুলো। আমি ওকে জড়িয়ে ধরে নিজের দিকে ঘোরাবার চেষ্টা করলাম কিন্তু ও কিছুতেই পাশ ফিরলো না। বিছানার কোনটা শক্ত করে ধরে রাখল। আমি অনেক চেষ্টা করলাম, কেঁদে ফেললাম কিন্তু ও ফিরলো না। ওর নিঃশব্দ প্রতিবাদ ওর অভিমানের জানান দিলো। আমি যে ক্ষমা চাইবো সেটুকু সাহসও আমার হলো না। এটা আমার পাওনা ছিল। কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না। যখন ঘুম ভাঙল তখন দেখি ও পাশে বসে আমার চুলে বিলি কাটছে।"
Posts: 18
Threads: 2
Likes Received: 117 in 17 posts
Likes Given: 4
Joined: Mar 2019
Reputation:
37
09-12-2020, 07:48 PM
(This post was last modified: 09-12-2020, 08:51 PM by Trambak. Edited 3 times in total. Edited 3 times in total.)
সাত।
আদি ও ত্রম:
কি হবে তাহলে," ওর কাঁধটা খামচে ধরলাম?
"কিচ্ছু হবে না, তুমি ভয় পেওনা। সঙ্কটকাল অতিক্রান্ত, বিপদ কেটে গেছে।" ওনার মন্তব্য।
লোকটার সাহস দেখে অবাক লাগে।
সহাস্যমুখে তিনি আমার পিঠ চাপড়ে বললেন, "ভয় নেই গো, বিপদ কেটে গেছে।"
উফফ, কি লাগলো। কোন কাণ্ডজ্ঞান নেই। অসভ্য।
রাত্রে লোকটাকে চেপে ধরলাম, "এই জো নাটের গুরু, গোয়েন্দাগিরিটা একটু বেশী হয়ে যাচ্ছে না? সব কথা খুলে বলো শিগগির।"
ভদ্রলোক দেখলাম উদারতার প্রতিমূর্তি, আমার হাতটা ধরে (বেশি পিরিত) বললেন, "যে ভাবে সুকুমার কার্ডটা ধরিয়ে দিয়ে তড়িঘড়ি পালিয়ে গেলো, পরিষ্কার বুঝলাম যে মনের মধ্যে সে কি চরম যন্ত্রনা বয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু সে নিজের কষ্টটাকে প্রাধান্য দেবার কথা ভাবতেই পারে না। মিতালীর আনন্দেই তার আনন্দ, তার সুখেই সুখ, তার ইচ্ছাই প্রধান। কিন্তু বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না।
ভেবে দেখ, নিঃসন্দেহে সুকুমারের মুখ ফুটে কিছু না বলাটাই তার সবথেকে বড় গুণ এবং দোষ। কখনোই সে মিতালি কে কোন পরামর্শ দেয়নি, মুখ বুজে কাজ করে গেছে। মিতালি আস্তে আস্তে সুকুমারের মানবিক দিকটা আর তারও যে একটা মতামত থাকতে পারে তা সহজেই বিস্মৃত হোল। দুঃখের কথা এই যে যখন মিতালি সুকুমারকে ছেড়ে যাবার ডিসিশন নিলো, সেদিনও সে বলতে পারল না যে 'যেয়ো না'। তার জন্য মিতালীর স্বপ্ন চুরমার হয়ে যাবে তা কি সে কখনোই হতে দেবে না দিতে পারে না। আরো একবার সুকুমার নিজেকে সরিয়ে নিল, মিতালীর পথ থেকে। কিন্ত হৃদয়ের থেকে পারলো না।
এদিকে, মিতালি নিজের সমস্ত উৎসাহ, সমস্ত স্বপ্ন ঢেলে দিল নিজের বুটিকে যা হয় উঠল তার প্রাণ। স্বাভাবিক ভাবেই সুকুমার আস্তে আস্তে তার জীবন আর মন দু জায়গা থেকেই সরে গেল। দুর্ভাগ্য আর কাকে বলে।
এদিকে আমি দেখলাম যে তুমি ওদের বিচ্ছেদে ভীষণ ভাবে এফেক্টেড হয়ে পড়েছ কিন্তু ভুলটাকে ঠিক করার কোনো পথ তোমার কাছে ছিলো না। তাই আমি চেষ্টা করলাম। আমি বুটিকটা খুঁজে বের করলাম আর মিতালি চলে যাবার পর তোমাকে নিয়ে গেলাম সেখানে যাতে তোমার নামধাম লিখে আসতে পারি। সুকুমার গড়িয়াহাটে কি করে তাও নিশ্চিতরূপে বুঝলাম। সে রোজ আসে বৌকে লুকিয়ে দেখতে।
কিন্তু সবই যেত ভেস্তে যদি মিতালি তোমাকে ফোন না করত।
যাই হোক, ও তোমার ডাকে সাড়া দিলো। আমি এমন ভান করলাম যেন আমি যারপরনাই বিরক্ত। ওর কথা শুনে বুঝলাম যে সুকুমারের চান্স খুবই কম, তখন একরকম নিরুপায় হয়েই একটা অন্য বাঁকাপথ ধরলাম। সুকুমারকে আচ্ছা করে গালমন্দ করতে আরম্ভ করলাম, সে যে কতবড় কুচক্রী, অলস আর বাজে লোক তা বোঝালাম। শুনে তুমি আমার ওপর খেপে গেলে। আমি মিতালীর সুপিরিয়র ইন্টেলিজেন্স টাকে টার্গেট করলাম। চেষ্টা করলাম যদি পূনরায় সেই হারানো ভালোবাসা জাগিয়ে তুলতে পারি। সুকুমারের ভালোটা যদি মিতালি দেখতে পেয়ে আমার মোটিভটা বুঝতে পারে।
"ধরো, সুকুমার যদি রাত্রে না আসতো? তাহলে?" আমার কুন্ঠিত প্রশ্ন।
"আসবে না মানে, আমিই তো ওকে বলেছিলাম যেতে!" ওনার গর্জন।
সেই রাতে।
সুকুমারের বিষয়ে তুমি যখন বাজে কথাগুলো বলছিলে তখন আমার ইচ্ছা হচ্ছিলো যে তোমাকে গুলি করে দি।
জানি, তবে আমার গায়ে গুলি লাগতোই না ।
কেন?
আমার কাছে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট আছে যে!
সেকি? কোথায়? দেখিনি তো!
তুমিই আমার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট আদু, তুমি থাকতে কোন বুলেট আমার কাছে পৌঁছাতেই পারবে না ।
ন্যাকা, ছাড়ো, নির্লজ্জ বেহায়া!
গভীর রাতে
বলি হচ্ছেটা কি?
কেন গো? বুঝতে পারছো না?
না, মানে অভ্যাস তো নেই। ক্ষেপে টেপে গেলে নাকি?
আমি আমার বরকে আদর করব তাতে তোমার আপত্তিটা কোথায় মশাই? পাশের বাড়ির লোকটাকে চুমু খেলে কি ভাল লাগবে?
বলতে পারি না। লোকটা শুনেছি মহা খৈনিখোর।
জানি, ৩২০ নম্বর । হ্যাঁগো, তোমাকে প্রথম দিন দেখেই ঠাকুমা একটা সত্যি কথা বলেছিলেন কিন্তু।
বটে! কি বলেছিল ওই শয়তান বুড়ীটা?
বলেছিল, ছোঁড়াটা হাড় হারামজাদা।
The following 21 users Like Trambak's post:21 users Like Trambak's post
• al0o0z, Bichitro, BIRJO, Bondhon Dhali, Boti babu, crappy, DarkPheonix101, ddey333, Dem_nking, kapil1989, kublai, LajukDudh, minarmagi, MNHabib, mofizulazad1983, pcirma, Pocha, ppbhattadt, ray.rowdy, S_Mistri, অভিমানী হিংস্র প্রেমিক।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
এই গল্পটা ঠিক কবে পড়েছিলাম মনে পড়ছে না কিন্তু মনে একটা সাংঘাতিক দাগ রেখে গেছিলো !!
দুর্দান্ত , অনেক অনেক ধন্যবাদ আবার নিয়ে আসার জন্য !!
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
ত্রম্বক দাদা , এই দুটো ছাড়া আপনার কি আর কোনো বাংলা গল্প ছিল xossip এ।
থাকলে দয়া করে দেবেন এখানে।
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(14-12-2020, 05:12 PM)ddey333 Wrote: ত্রম্বক দাদা , এই দুটো ছাড়া আপনার কি আর কোনো বাংলা গল্প ছিল xossip এ।
থাকলে দয়া করে দেবেন এখানে।
অপেক্ষায় আছি ....
Posts: 170
Threads: 0
Likes Received: 146 in 87 posts
Likes Given: 1,430
Joined: May 2019
Reputation:
5
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
এরকম একটা গল্পে কারো কোনো কমেন্ট নেই , xossip ও ছিলোনা যতদূর মনে পরে ...
কি অদ্ভুত তাই না !!!
খারাপ লাগে ...
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(26-10-2021, 11:22 PM)ddey333 Wrote: এরকম একটা গল্পে কারো কোনো কমেন্ট নেই , xossip ও ছিলোনা যতদূর মনে পরে ...
কি অদ্ভুত তাই না !!!
খারাপ লাগে ...
অদ্ভুত সব কান্ড কারখানা আর তার চেয়েও অদ্ভুত এখানকার পাঠকেরা ...
•
Posts: 72
Threads: 0
Likes Received: 23 in 22 posts
Likes Given: 2
Joined: Jun 2019
Reputation:
0
এই গল্পটা আগে পড়িনি। একটা ভাল গল্প অপঠিত থেকে গেছিল। পুনরায় প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ।
কমেন্টের স্বল্পতার কারণ সম্ভবত গল্পের প্লটটার জটিলতা এবং গল্প বলার ভঙ্গি। একজন মানুষের সুপ্ত ভালবাসা মনের কোন জটিল আবর্তে চাপা পড়ে থাকে, সেই ভালবাসা হঠাৎ কোন ধাক্কায় আবার উছলে উঠে ছড়িয়ে পড়ে তা প্রকাশ পেয়েছে গল্পটাতে। এটা একটা সার্থক ছোট গল্প।
গল্পটা পড়ে ত্র্যম্বক বাবুর আরো গল্প জোরদার পড়ার ইচ্ছা জাগল।
•
Posts: 170
Threads: 0
Likes Received: 146 in 87 posts
Likes Given: 1,430
Joined: May 2019
Reputation:
5
একটাই আমার যে তুমি কেন বোঝো না- would love to see updates or many more stories from the author
•
Posts: 273
Threads: 0
Likes Received: 106 in 86 posts
Likes Given: 2,261
Joined: Mar 2020
Reputation:
2
Bapre baap!!!!
Chokh kopale uthe gechhe!!!
Durdanto!!!!
•
Posts: 4
Threads: 0
Likes Received: 1 in 1 posts
Likes Given: 64
Joined: May 2019
Reputation:
0
•
Posts: 147
Threads: 3
Likes Received: 81 in 69 posts
Likes Given: 105
Joined: May 2019
Reputation:
4
•
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(27-10-2021, 07:22 AM)minarmagi Wrote: একটাই আমার যে তুমি কেন বোঝো না- would love to see updates or many more stories from the author
দুঃখের বিষয় যে লেখক গত দুমাসের বেশি ধরে ফোরামে লগইন করেননি ....
•
Posts: 1,976
Threads: 56
Likes Received: 1,966 in 954 posts
Likes Given: 228
Joined: Jan 2019
Reputation:
125
Good story.
Good climax.
Repped you.
•
|