Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(06-12-2020, 12:57 AM)pinuram Wrote: যাবার বেলায় পিছু থেকে ডাক দিয়ে,
কেন বলো কাঁদালে আমায়,
যাবার বেলায় পিছু থেকে ডাক দিয়ে,
আমার এ মন বুঝি মন নয়, যাবার বেলায়
হাসি আর গানে গানে এতদিন
ফুল ফোটানোর খেলা চলেছিল,
যে কাঁটা রয়েছে বিঁধে মরমের মাঝে
তার কথা মন ভুলেছিল,
ব্যাথায় ব্যাথায় তাকে মনে পরে যায়
যাবার বেলায় !!!!!!
গল্পটা কোথা থেকে শুরু হয়েছিল, সেখান থেকে যেভাবে তুমি এটাকে টেনে এক ভিন্ন মাত্রা দিয়েছ সেটা সত্যি অনবদ্য। গল্পের মোড় যে এভাবে ঘুরে যাবে এটা আশা করিনি, তবে হ্যাঁ এটা জানতাম যে কোন দুর্বিপাকে পরেই দেবিকাকে দেহপসারিণী হতে হয়েছে, বাবা মা মারা গেছে এই পর্যন্ত অনুমানিক ছিল, কিন্তু ওর রক্ষা কর্তা যে উজান হবে সেটা ভাবিনি আর এটাও ভাবিনি যে শেষ পর্যন্ত তুমি কাঁদিয়ে ছাড়বে। কারণ, দেবিকার লিভার ক্যানসার, শেষ দৃশ্য ভীষণ হৃদয় বিদারক হয়ত এটাই ওদের শেষ রাত, জানিনা, মানতে ইচ্ছে করছে না একদম, আমার সুন্দরী রূপসী দেবিকা এত তাড়াতাড়ি চলে যাবে !!!!!!!
আমার মতো এক নবাগতের লেখা পড়ে তোমার ভালো লেগেছে, এটা পরম প্রাপ্তি আমার তোমার দেখানো পথ অনুসরণ করেই তো লেখার চেষ্টা করি বস, তুমি যেমন আমাদের আনন্দ দাও, হঠাৎ করে গল্পে টানটান উত্তেজনা আনো, নতুন মোড় আনো, কখনও আমাদের কাঁদাও - আমিও সেই পদাঙ্ক মেনে চলার চেষ্টা করি আর বাকিটা পরের পর্বে বিস্তারিত বলা হবে
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
(06-12-2020, 06:01 PM)Mr Fantastic Wrote: চুপ থাকলে চলে ? তোমাদের মতো পোড় খাওয়া লেখকদের মতামত আমার কাছে অনেক মূল্যবান !
চ্যালা চিনি হয়ে গেছে আর গুরু গুড় ! এর থেকে বেশি কিছুই বলার নেই !
Posts: 88
Threads: 0
Likes Received: 73 in 51 posts
Likes Given: 68
Joined: Jul 2019
Reputation:
13
sptti sar apnar lakha golpo porle mone hoy sudhu portai thaki, ei update ta jno ses na hoy....
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(06-12-2020, 08:38 PM)tarunpatra9386; Wrote: sptti sar apnar lakha golpo porle mone hoy sudhu portai thaki, ei update ta jno ses na hoy.... আমার লেখা কোনো পাঠককে চুম্বকের মতো টানছে দেখে অত্যন্ত তৃপ্ত হলাম, ধন্যবাদ দাদা
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
06-12-2020, 09:38 PM
(This post was last modified: 07-12-2020, 09:44 AM by Mr Fantastic. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
কম্পিত হাতে আমার বুকে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে ওঠা দেবিকাকে জড়িয়ে ধরে কাঁপা কাঁপা মোহাচ্ছন্ন গলায় বললাম, তারপর কি হল ?
দেবিকা ঘোর লাগা স্বরে বলে চলল, তিনদিন পর ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জানতে পারে আমার অসুস্থতার কথা। পেটব্যথায় কুঁকড়ে থাকতাম দেখে ওদের সন্দেহ হয়। একটা ক্লিনিকে আবার হোল অ্যাবডোমেন ইউএসজি করানো হয় আমার। রিপোর্টে জানা যায় লিভারে একটা সিস্ট হয়েছে কিন্তু ওটা কোনো ম্যালিগন্যান্ট টিউমার নয়। আসলে গ্রামের ডাক্তাররা রোগ নির্ধারণে ভুল করেছিল। শহরের ওই বেসরকারি হাসপাতালও বড়ো দাও মারবার লোভে আসল কথা চেপে যায়। আসল চিকিৎসা শুরু হতেই আমি সুস্থ হতে থাকি, সব খরচ ওই এনজিও থেকেই দেওয়া হয়। মাঝখান দিয়ে প্রাণ দিতে হয় আমার মা-বাবাকে – এতটা বলে দেবিকা থামল। ওর দুচোখ ভরে উঠেছে জলে।
প্রচণ্ড রাগ হতে থাকে আমার এইসব মিথ্যাচারী মানুষদের ওপর যারা চিকিৎসাজগতে ভদ্রতার মুখোশ পরে আসলে ডাকাতি করছে।ওর পিঠে স্নেহের পরশে হাত বুলিয়ে পরের ঘটনা জানতে চাওয়ায় দেবিকা আবার বলল, এরপর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলে আমাকে হাওড়ার একটা অনাথ আশ্রমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে আমার মতো আরও দশটা বাপ-মা মরা ছেলেমেয়ের সাথে হেসে-খেলে বেড়ে উঠতে থাকি। সবাই একটা পরিবারের মতো ছিলাম।
আমার যখন তেরো বছর বয়স তখন একদিন দুই স্বামী-স্ত্রী আসে আশ্রমে দত্তক নিতে। সবার মধ্যে থেকে আমাকেই ওদের পছন্দ হয় আর দত্তক নেয়। আমার নতুন ঠিকানা হয় আহিরিটোলার একটা বাড়িতে। কিন্তু তখন থেকেই আমার জীবনে নেমে আসে কালো আঁধার। ওই দম্পতি আসলে নিজেদের বাড়িতে মধুচক্র চালাত। সেখানে দেখলাম আমি ছাড়াও নানা বয়সের আরও মেয়েদের ওখানে বন্দি করে রাখা হয়েছে। যারা পুরনো তাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয় আমার মতো ‘নয়া চিড়িয়া’দের মগজধোলাই করতে, আদব কায়দা শেখাতে। রাত নামলেই দেখতাম মেয়েরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে খদ্দের ধরার চেষ্টা করছে, সবার ঘর থেকে শীৎ্কারের আওয়াজ ভেসে আসছে, কোথাও বা মদ-নাচের আসর।
দেবিকা একটু থেমে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ষোল বছর বয়সে আমি কুমারীত্ব হারাই, কি বিভীষিকাময় যন্ত্রণাদায়ক ছিল সে রাত। ঘুমিয়ে থাকা এক গোলাপের কুঁড়িকে ভোর হওয়ার আগেই অকালে জোর করে পাপড়ি টেনে খুলে ফেলা হয়। বলতে বলতে দেবিকা দু’হাতে মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে উঠলো। আমার চোয়াল শক্ত হয়ে গেল, বুকে চিনচিনে ব্যথা অনুভব করলাম।
দেবিকা বলে চলল, একদিন কলকাতা পুলিশ খবর পেয়ে রেড করে ওই বাড়িতে। আমি সবে এক নারীমাংসলোলুপ জানোয়ারকে সামলে ক্লান্ত হয়ে শুয়েছিলাম বিছানায়। হঠাৎ ‘পুলিশ পুলিশ!’ চিৎকারে বাইরে বেরিয়ে দেখি নীচে একতলায় সবার ঘরে পুলিশ হানা দিয়েছে। ভয় পেয়ে আমি একছুটে বারান্দায় গিয়ে রেলিং টপকে পাশের বাড়ির ছাদে চলে যাই। তখন আমার এই জ্ঞান ছিল না যে পুলিশ আসলে আমাদের উদ্ধার করতেই এসেছিল। পাশের বাড়ির ছাদ থেকে লোহার ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে নীচে রাস্তায় নেমে এসে উদ্দেশ্যহীন ছোটাছুটি করতেই রতনদার সামনে পড়ে গেলাম। রতন দালাল আমাকে নিয়ে গেল এক এসকর্ট এজেন্সিতে। ধীরে ধীরে হয়ে উঠলাম মোস্ট ডিজায়ারেবেল কলগার্ল।
সব শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। কিছুক্ষন বিহ্বল হয়ে থাকার পর নীরবতা ভেঙে ক্রন্দনরতা দেবিকার মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম, এতো বছর পর তুমি চিনতে পারলে আমাকে ?
দেবিকা চোখ মুছে শুষ্ক হেসে বলল, হ্যাঁ বললাম না তোমার তীক্ষ্ণ উজ্জ্বল চোখদুটো আর এই নাক চিনতে আমার কোনো ভুল হয়নি। মনে আছে প্রথম যেদিন এখানে এসেছিলাম সেদিন তোমাকে দেখে আমি স্থানুর মতো থমকে গিয়েছিলাম ? কেন জানো ? আমাকে যে মানুষটা অসহায় পরিস্থিতিতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তার সাথে এতদিন পর দেখা করতে পেরেছি বলে, আমার দীর্ঘদিনের মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়েছে বলে।
বাঁহাতে দেবিকার চিবুক ধরে ওর পানপাতার মতো মুখটা আমার দিকে তুলে ধরে আরেকহাতে সযত্নে ওর বেদনাশ্রু মুছিয়ে দিয়ে বললাম, তোমাকে এভাবে নতুন রুপে পাবো আমি ভাবতেই পারিনি দেবিকা।
আমার ঠোঁটে একটা চুম্বন এঁকে দিয়ে বুকে মাথা রেখে দেবিকা বলল, সেই জন্যই তোমার এই চওড়া বুকের মাঝে মাথা রাখলে বড়ো নিশ্চিন্ত মনে হয় নিজেকে। তুমি আমার কাছে দেবদূতের মতো। তুমি না থাকলে আজ যে কি হতো ভাবতেই আমার হাত-পা অবশ হয়ে আসছে উজান।
চোয়াল শক্ত করে মুষ্টিবদ্ধ হাতে বিছানায় একটা ঘুষি মেরে বললাম, ওই শালা সুরজকে আমি ছাড়বো না, খুঁজে বার করে গঙ্গায় ওর লাশ ফেলে দেবো! আর সেই হসপিটালের বিরুদ্ধেও কেস করে দেবো!
দেবিকা আমার মুখ ওর হাত দিয়ে চেপে আঁতকে উঠে বলল, একদম এমন গোঁয়ার্তুমি করবে না তুমি, একা পেয়ে ওকে শায়েস্তা করেছো, কিন্তু ওর দলবল বোমা-পিস্তল নিয়ে ঘোরে সবসময়।যদি কোনো ক্ষতি হয়ে যায় তোমার ? ওকে অজ্ঞান করে ফেলে রেখে এসেছো ব্যাস আর খুঁজে পাবে না আমাদের।
আমার ঠোঁটের ওপর থেকে দেবিকার নরম হাতটা সরিয়ে নিজের দু’হাতের মুঠোয় নিয়ে কিছুক্ষন একদৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললাম, দেবিকা, চলো আমরা বিয়ে করে নিই।
দেবিকা ঘোলাটে চোখে আমার দিকে চেয়ে অস্ফুটে জিজ্ঞেস করলো, বিয়ে ?
দু’হাতে ওর দুই পেলব গোল কাঁধ ধরে ওর চোখে চোখ রেখে গাঢ় স্বরে বললাম, হ্যাঁ বিয়ে করবো আমরা, তোমার গায়ে কোনো শয়তানের এতটুকু আঁচড় লাগতে দেবো না, খুব ভালবাসবো তোমাকে। তুমি ভালোবাসো আমাকে ?
দেবিকা দুই কাজলকালো সজল চোখের উদ্ভাসিত দৃষ্টিতে মধুর স্বরে বলল, হ্যাঁ বাসি উজান, খুব ভালোবাসি তোমায়।
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
আহা, অবশেষে আমিও বেশ হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম, সত্যি ওই হসপিটালের বিরুদ্ধে কেস করা উচিত, এই সব উল্টোপাল্টা ডায়াগোনসিস করে অনেক টাকা লুটে নেয় এই হসপিটাল গুলো! তাহলে শেষ পর্যন্ত বিয়ে হচ্ছে উজান আর দেবিকার !!!!!!!
Posts: 1,886
Threads: 6
Likes Received: 6,324 in 1,869 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
739
(06-12-2020, 06:08 PM)Mr Fantastic Wrote: আমার মতো এক নবাগতের লেখা পড়ে তোমার ভালো লেগেছে, এটা পরম প্রাপ্তি আমার তোমার দেখানো পথ অনুসরণ করেই তো লেখার চেষ্টা করি বস, তুমি যেমন আমাদের আনন্দ দাও, হঠাৎ করে গল্পে টানটান উত্তেজনা আনো, নতুন মোড় আনো, কখনও আমাদের কাঁদাও - আমিও সেই পদাঙ্ক মেনে চলার চেষ্টা করি আর বাকিটা পরের পর্বে বিস্তারিত বলা হবে
তুমি নিজ গুণেই অনন্য, অনবদ্য !!!!!!
Posts: 446
Threads: 3
Likes Received: 11,694 in 2,466 posts
Likes Given: 4,988
Joined: Jan 2019
Reputation:
2,925
যাক, আমার কথা রেখেছো তাহলে । দেবিকার ব্যাক স্টোরি দেখতে পেলাম । সত্যি বলছি চোখে জল চলে এলো । আর বেশি কিছু বলবো না এখন । পরে বলবো । পরের আপডেট এলে জানিও ।
Posts: 88
Threads: 0
Likes Received: 73 in 51 posts
Likes Given: 68
Joined: Jul 2019
Reputation:
13
(06-12-2020, 09:33 PM)Mr Fantastic Wrote: আমার লেখা কোনো পাঠককে চুম্বকের মতো টানছে দেখে অত্যন্ত তৃপ্ত হলাম, ধন্যবাদ দাদা
sar sottie chumboker moto tanche.. r aj ker update tao just fatafati...
kono kota hobe na boss...
apnader lakher akta aladai mahatto ache....ei rokom lakha r lekhok paye amra dhoynno.......
Posts: 88
Threads: 0
Likes Received: 73 in 51 posts
Likes Given: 68
Joined: Jul 2019
Reputation:
13
(06-12-2020, 09:38 PM)Mr Fantastic Wrote: কম্পিত হাতে আমার বুকে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে ওঠা দেবিকাকে জড়িয়ে ধরে কাঁপা কাঁপা মোহাচ্ছন্ন গলায় বললাম, তারপর কি হল ?
দেবিকা ঘোর লাগা স্বরে বলে চলল, তিনদিন পর ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জানতে পারে আমার অসুস্থতার কথা। পেটব্যথায় কুঁকড়ে থাকতাম দেখে ওদের সন্দেহ হয়। একটা ক্লিনিকে আবার হোল অ্যাবডোমেন ইউএসজি করানো হয় আমার। রিপোর্টে জানা যায় লিভারে একটা সিস্ট হয়েছে কিন্তু ওটা কোনো ম্যালিগন্যান্ট টিউমার নয়। আসলে গ্রামের ডাক্তাররা রোগ নির্ধারণে ভুল করেছিল। শহরের ওই বেসরকারি হাসপাতালও বড়ো দাও মারবার লোভে আসল কথা চেপে যায়। আসল চিকিৎসা শুরু হতেই আমি সুস্থ হতে থাকি, সব খরচ ওই এনজিও থেকেই দেওয়া হয়। মাঝখান দিয়ে প্রাণ দিতে হয় আমার মা-বাবাকে – এতটা বলে দেবিকা থামল। ওর দুচোখ ভরে উঠেছে জলে।
প্রচণ্ড রাগ হতে থাকে আমার এইসব মিথ্যাচারী মানুষদের ওপর যারা চিকিৎসাজগতে ভদ্রতার মুখোশ পরে আসলে ডাকাতি করছে।ওর পিঠে স্নেহের পরশে হাত বুলিয়ে পরের ঘটনা জানতে চাওয়ায় দেবিকা আবার বলল, এরপর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলে আমাকে হাওড়ার একটা অনাথ আশ্রমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে আমার মতো আরও দশটা বাপ-মা মরা ছেলেমেয়ের সাথে হেসে-খেলে বেড়ে উঠতে থাকি। সবাই একটা পরিবারের মতো ছিলাম।
আমার যখন তেরো বছর বয়স তখন একদিন দুই স্বামী-স্ত্রী আসে আশ্রমে দত্তক নিতে। সবার মধ্যে থেকে আমাকেই ওদের পছন্দ হয় আর দত্তক নেয়। আমার নতুন ঠিকানা হয় আহিরিটোলার একটা বাড়িতে। কিন্তু তখন থেকেই আমার জীবনে নেমে আসে কালো আঁধার। ওই দম্পতি আসলে নিজেদের বাড়িতে মধুচক্র চালাত। সেখানে দেখলাম আমি ছাড়াও নানা বয়সের আরও মেয়েদের ওখানে বন্দি করে রাখা হয়েছে। যারা পুরনো তাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয় আমার মতো ‘নয়া চিড়িয়া’দের মগজধোলাই করতে, আদব কায়দা শেখাতে। রাত নামলেই দেখতাম মেয়েরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে খদ্দের ধরার চেষ্টা করছে, সবার ঘর থেকে শীৎ্কারের আওয়াজ ভেসে আসছে, কোথাও বা মদ-নাচের আসর।
দেবিকা একটু থেমে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ষোল বছর বয়সে আমি কুমারীত্ব হারাই, কি বিভীষিকাময় যন্ত্রণাদায়ক ছিল সে রাত। ঘুমিয়ে থাকা এক গোলাপের কুঁড়িকে ভোর হওয়ার আগেই অকালে জোর করে পাপড়ি টেনে খুলে ফেলা হয়। বলতে বলতে দেবিকা দু’হাতে মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে উঠলো। আমার চোয়াল শক্ত হয়ে গেল, বুকে চিনচিনে ব্যথা অনুভব করলাম।
দেবিকা বলে চলল, একদিন কলকাতা পুলিশ খবর পেয়ে রেড করে ওই বাড়িতে। আমি সবে এক নারীমাংসলোলুপ জানোয়ারকে সামলে ক্লান্ত হয়ে শুয়েছিলাম বিছানায়। হঠাৎ ‘পুলিশ পুলিশ!’ চিৎকারে বাইরে বেরিয়ে দেখি নীচে একতলায় সবার ঘরে পুলিশ হানা দিয়েছে। ভয় পেয়ে আমি একছুটে বারান্দায় গিয়ে পাশের বাড়ির ছাদে চলে যাই। তখন আমার এই জ্ঞান ছিল না যে পুলিশ আসলে আমাদের উদ্ধার করতেই এসেছিল। পাশের বাড়ির ছাদ থেকে লোহার ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে নীচে রাস্তায় নেমে এসে উদ্দেশ্যহীন ছোটাছুটি করতেই রতনদার সামনে পড়ে গেলাম। রতন দালাল আমাকে নিয়ে গেল এক এসকর্ট এজেন্সিতে। ধীরে ধীরে হয়ে উঠলাম মোস্ট ডিজায়ারেবেল কলগার্ল।
সব শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। কিছুক্ষন বিহ্বল হয়ে থাকার পর নীরবতা ভেঙে ক্রন্দনরতা দেবিকার মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম, এতো বছর পর তুমি চিনতে পারলে আমাকে ?
দেবিকা চোখ মুছে শুষ্ক হেসে বলল, হ্যাঁ বললাম না তোমার তীক্ষ্ণ উজ্জ্বল চোখদুটো আর এই নাক চিনতে আমার কোনো ভুল হয়নি। মনে আছে প্রথম যেদিন এখানে এসেছিলাম সেদিন তোমাকে দেখে আমি স্থানুর মতো থমকে গিয়েছিলাম ? কেন জানো ? আমাকে যে মানুষটা অসহায় পরিস্থিতিতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তার সাথে এতদিন পর দেখা করতে পেরেছি বলে, আমার দীর্ঘদিনের মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়েছে বলে।
বাঁহাতে দেবিকার চিবুক ধরে ওর পানপাতার মতো মুখটা আমার দিকে তুলে ধরে আরেকহাতে সযত্নে ওর বেদনাশ্রু মুছিয়ে দিয়ে বললাম, তোমাকে এভাবে নতুন রুপে পাবো আমি ভাবতেই পারিনি দেবিকা।
আমার ঠোঁটে একটা চুম্বন এঁকে দিয়ে বুকে মাথা রেখে দেবিকা বলল, সেই জন্যই তোমার এই চওড়া বুকের মাঝে মাথা রাখলে বড়ো নিশ্চিন্ত মনে হয় নিজেকে। তুমি আমার কাছে দেবদূতের মতো। তুমি না থাকলে আজ যে কি হতো ভাবতেই আমার হাত-পা অবশ হয়ে আসছে উজান।
চোয়াল শক্ত করে মুষ্টিবদ্ধ হাতে বিছানায় একটা ঘুষি মেরে বললাম, ওই শালা সুরজকে আমি ছাড়বো না, খুঁজে বার করে গঙ্গায় ওর লাশ ফেলে দেবো! আর সেই হসপিটালের বিরুদ্ধেও কেস করে দেবো!
দেবিকা আমার মুখ ওর হাত দিয়ে চেপে আঁতকে উঠে বলল, একদম এমন গোঁয়ার্তুমি করবে না তুমি, একা পেয়ে ওকে শায়েস্তা করেছো, কিন্তু ওর দলবল বোমা-পিস্তল নিয়ে ঘোরে সবসময়।যদি কোনো ক্ষতি হয়ে যায় তোমার ? ওকে অজ্ঞান করে পালিয়ে এসেছি আর খুঁজে পাবে না আমাদের।
আমার ঠোঁটের ওপর থেকে দেবিকার নরম হাতটা সরিয়ে নিজের দু’হাতের মুঠোয় নিয়ে কিছুক্ষন একদৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললাম, দেবিকা, চলো আমরা বিয়ে করে নিই।
দেবিকা ঘোলাটে চোখে আমার দিকে চেয়ে অস্ফুটে জিজ্ঞেস করলো, বিয়ে ?
দু’হাতে ওর দুই পেলব গোল কাঁধ ধরে ওর চোখে চোখ রেখে গার স্বরে বললাম, হ্যাঁ বিয়ে করবো আমরা, তোমার গায়ে কোনো শয়তানের এতটুকু আঁচড় লাগতে দেবো না, খুব ভালবাসবো তোমাকে। তুমি ভালোবাসো আমাকে ?
দেবিকা দুই কাজলকালো সজল চোখের উদ্ভাসিত দৃষ্টিতে মধুর স্বরে বলল, হ্যাঁ বাসি উজান, খুব ভালোবাসি তোমায়। bolchi biye ta jano ektu jomkalo vabe hoy sar....
Posts: 607
Threads: 0
Likes Received: 470 in 365 posts
Likes Given: 1,298
Joined: Apr 2019
Reputation:
28
বাহ,,, খুব সুন্দর হলো,,, দেবিকা সুন্দর মত সেড়ে উঠেছিল,,, আর এখন আমাদের গল্পের নায়কও বিয়ে করতে চাইছে দেবিকাকে,,,এখন দেখা যাক সামনে কি হয়!!!
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(06-12-2020, 10:38 PM)pinuram Wrote: তুমি নিজ গুণেই অনন্য, অনবদ্য !!!!!!
Getting complements from Pinuram, is one of my biggest achievements ! I'm honoured
Posts: 18,205
Threads: 471
Likes Received: 65,410 in 27,674 posts
Likes Given: 23,734
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,261
অনবদ্য হচ্ছে লেখাটা !!
পারলে দেবিকার একটা ছবি দাও যদি আপত্তি না থাকে !!
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(07-12-2020, 11:51 AM)ddey333 Wrote: অনবদ্য হচ্ছে লেখাটা !!
পারলে দেবিকার একটা ছবি দাও যদি আপত্তি না থাকে !!
ছবি দেওয়ার দায়িত্ব তোমার, নায়িকার বর্ণনা আর চরিত্র অনুযায়ী ছবি বাছতে তুমি তো ওস্তাদ !
•
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(07-12-2020, 12:02 AM)tarunpatra9386; Wrote: sar sottie chumboker moto tanche.. r aj ker update tao just fatafati...
kono kota hobe na boss...
apnader lakher akta aladai mahatto ache....ei rokom lakha r lekhok paye amra dhoynno.......
আপনাদের প্রশংসা আমাকে আরও ভালো লিখতে উৎসাহ যোগায়, চেষ্টা করবো আপনাদের এই প্রত্যাশা বজায় রাখতে
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(07-12-2020, 12:22 AM)Shoumen Wrote: বাহ,,, খুব সুন্দর হলো,,, দেবিকা সুন্দর মত সেড়ে উঠেছিল,,, আর এখন আমাদের গল্পের নায়কও বিয়ে করতে চাইছে দেবিকাকে,,,এখন দেখা যাক সামনে কি হয়!!!
হ্যাঁ দেবিকাকে তো সেরে উঠতে হতোই, এবার বাকি রইল বিয়ে...অনেক ধন্যবাদ দাদা, সাথে থাকুন
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(07-12-2020, 12:06 AM)tarunpatra9386; Wrote: bolchi biye ta jano ektu jomkalo vabe hoy sar....
স্যার বলে লজ্জা দেবেন না, গল্পের উজান প্রফেসর হলেও আমি নই
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(06-12-2020, 11:42 PM)Jupiter10 Wrote: যাক, আমার কথা রেখেছো তাহলে । দেবিকার ব্যাক স্টোরি দেখতে পেলাম । সত্যি বলছি চোখে জল চলে এলো । আর বেশি কিছু বলবো না এখন । পরে বলবো । পরের আপডেট এলে জানিও ।
দেবিকার আসল পরিচয়, ওর বৃত্তান্ত আমি দেখতামই, শুধু উপযুক্ত সময়ের অপেক্ষা করছিলাম আর লেখার সময় আমারও কষ্ট হয়েছিল
•
Posts: 765
Threads: 29
Likes Received: 1,591 in 626 posts
Likes Given: 134
Joined: Dec 2019
Reputation:
98
সবার মত আমি ও বলবো খুব সুন্দর হয়েছে। বাট ক্ষমা করবেন একটা লাইনের কিছু মিসিং মনে হলো। দেবিকা বললো প্রথম দিন বাসায় এসে উজানকে দেখে থমকে যাবার কারণ। তার রক্ষাকর্তা কে আবার দেখতে পাবে এটা আশা করেনি তাই। কিন্তু আগে তো বলা আছে এই উজান তার শিক্ষক তাহলে ? আগে তো বহু বার দেখা হয়েছে এমনকি চাইলে কথাও হতো।
জানিনা আমি নিজে ভুল করছি কিনা। লেখক অবশ্যই আমাকে নিজ গুনে ক্ষমা করবেন । প্রণাম দিবেন। রেপু রইলো
""পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ আমরা সবাই অভিনেতা"" !!
Posts: 6,494
Threads: 21
Likes Received: 6,992 in 3,702 posts
Likes Given: 12,097
Joined: Feb 2020
Reputation:
239
(06-12-2020, 09:53 PM)pinuram Wrote: আহা, অবশেষে আমিও বেশ হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম, সত্যি ওই হসপিটালের বিরুদ্ধে কেস করা উচিত, এই সব উল্টোপাল্টা ডায়াগোনসিস করে অনেক টাকা লুটে নেয় এই হসপিটাল গুলো! তাহলে শেষ পর্যন্ত বিয়ে হচ্ছে উজান আর দেবিকার !!!!!!!
হসপিটালের দোষ তো আছেই, সেই সঙ্গে যারা অনাথ আশ্রম গুলো থেকে দত্তক নেবার নাম করে মেয়েদের নিয়ে দেহব্যবসায় নামায় তারাও এই সমাজের কলঙ্ক এক একটা। আর বিয়েটা আশা করা যায়...
•
|