Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 3.42 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL অচেনা অতিথি - একটি ছোটদের ছোট্ট গল্প (বাবান)
#1
Heart 
[Image: 20201205-221537.jpg]


প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যে অনেক লিখলাম তাই ভাবলাম এবারে অন্য কিছু লিখি. তাই এই ছোট্ট এক আপডেটের গল্প. এই গল্প ছোটদের হলেও আমাদের সকলের..... কারণ আমাদের ভেতরে আজও একটা বাচ্চা আছে. আমার গল্প সেই বাচ্চাদের জন্য. আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে.


বিল্টু কাঁধ থেকে কলেজের ব্যাগটা নিচে রেখে গাছটার তলায় বসলো. মাটি থেকে একটা ঢিল তুলে পুকুরের জলে ছুড়ে মারলো সেটা. কয়েকবার লাফিয়ে কিছুদূর গিয়ে ডুবে গেলো সেটা. গেছে হেলান দিয়ে চোখ বুজলো সে.

মনটা আজ সেরকম ভালো নেই ওর. ক্লাসে হারু স্যার সবার সামনে এমন ভাবে কান মুলে দিলো..... ব্যাটা নান্টু আর প্রবীর  দুজনে মুখ টিপে হাসছিলো. ইচ্ছে করছিলো গিয়ে দুটো চড় মারতে. হারু বাবুও কম জাননা.... আরে বাপু ওতো শাস্তি দেবার কি আছে? জানেনই তো যে বিল্টু অংকে একটু কাঁচা. তাই বলে ওরকম কান মূলবে? উফফফ... এখনো গরম হয়ে আছে কানটা. কিন্তু তার থেকেও গরম মাথা.

ব্যাটা আজ যদি মাঠে গিয়ে নান্টু ব্যাটাকে গুনে গুনে পাঁচটা গোল না দিয়েছে তো নিজের নাম পাল্টে ফেলবে বিল্টু. নিজে ব্যাটা অংকে গোল্লা পায়... আর অন্যের কান মোলা দেখে কি হাসি.

বিল্টু আসার সময় দেখেছিলো হারুদা, বদ্রিদা গল্প করতে করতে চ্যাটার্জী পাড়ার দিকে যাচ্ছে. নিশ্চই আজকে ওদের ম্যাচ আছে. দুজনেই ক্রিকেট ফুটবল দুটোই ব্যাপক খেলতে পারে.

বিল্টু আবার বদ্রীদার খুব বড়ো ফ্যান. যেভাবে পায়ের খেলা দেখায় ফুটবলে. সামনের মানুষটা বুঝতেই পারেনা কিকরে বল নেবে নিজের পায়ে. বদ্রীদা বলেছে ওকে শিখিয়ে দেবে.
কিন্তু... সে এখনো আসছেনা কেন? ওতো বলেছিলো এরকম সময় এখানে দেখা করতে. আজ নাকি কি জরুরি কথা আছে. এদিকে দেরি হচ্ছে. মা আবার বকাবকি করবে বেশি দেরি হলে. আসলে মা একটুতেই চিন্তায় পড়ে যায়. তবে মা আগলে রাখে বলেই বাবার পিটুনি কম খায় বিল্টু. নইলে তার শয়তানি দস্যিপনার জন্য বাবা পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে দিতো. এইতো সেইবার খেলতে খেলতে বিল্টু এমন একটা লাথি মারলো ফুটবলে..... সেটা গিয়ে লাগলো সোজা রাস্তার কুকুরটার মুখে. আর অমনি হতচ্ছাড়া প্রতিশোধ নিতে তেড়ে এলো বিল্টুদের দিকে.

বিল্টুরা ততক্ষনে অদৃশ্য হয়েছে মাঠ থেকে. কেউ দৌড়ে গাছের ওপর, কেউ পাঁচিল টপকে বাইরে, কেউ পুকুরের জলে লাফ. কি ভাগ্য মাইরি..... সেদিন ওই সামনের রাস্তা দিয়েই তমাল কাকু যাচ্ছিলো. কুত্তাটা বিল্টুদের কাউকে না পেয়ে শেষে কিনা তেড়ে গেলো তমাল কাকুর দিকেই. আর বেচারা কাকুকে প্রানপনে দৌড়োতে হয়েছিল. আর সেইবার বিল্টু, বাবলু সন্তু কাজল মিলে আম বাগানে আম চুরি করছিলো. সেইসময় বিল্টু গুলতি দিয়ে অর্জুনের মতো আমের দিকেই তীর ছুড়লো..... ইয়ে মানে গুলতি দিয়ে ইঁটের টুকরোটা ছুড়লো ঠিকই কিন্তু সেটা বিল্টুকে ধোঁকা দিয়ে সোজা উড়ে গিয়ে পড়লো পাচু দাদুর টাকে.
দে দৌড় ওখান থেকে. যদিও পাচু দাদু লাঠি হাতে রেরে করে তেড়ে এসেছিলো কিন্তু বিল্টুদের ধরতে পারেনি. যদিও বিলটুকে দেখে ফেলেছিলো. আর তার ফল স্বরূপ পরের দিনই বাবার কাছে নালিশ আর তার ফলাফল উদুম ধোলাই.

আর সেইবারে প্রবীরকে ভুতের ভয় দেখানো. সেতো ব্যাটা এমন ভয় পেয়েছিলো যে পরেরদিন কলেজেই আসেনি. সন্ধে বেলায় বিল্টু বাবলু আর কাজল মিলে ভোলার মাঠের সামনে লুকিয়ে ছিল. প্রবীর ব্যাটা ওই রাস্তা দিয়েই সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলো. কাছাকাছি আসতেই বিল্টুর কালো চাদর জড়িয়ে আর দোকান থেকে কেনা ভুতের মুখোশ পড়ে প্রবীরের সামনে দাঁড়াতেই সে মহাশয় তো সাইকেল থেকে লাফিয়ে বাবাগো গেলাম গো ভুতে ধরলো গো বলে উল্টোদিকে দৌড়. যদিও বিল্টুরা ওই কান্ড দেখে হেসেই পাগল কিন্তু পরে নিজেরাই ওর সাইকেল প্রবীরের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছিলো.

বেশ ডানপিটে বিল্টু. ভয় টয় সেরকম ওর নেই. এই তো সেইবার নান্টু আর বন্ধুদের সাথে বাজি ধরেছিলো একা একা ওই ভোলার মাঠের উত্তরের ওই ভাঙা পরিত্যক্ত বাড়িটা থেকে ঘুরে আসবে. বন্ধুরা বাইরে অপেক্ষা করবে. ঐদিকটায় কেউ যায়না. সবাই বলে ঐবাড়িতে কাকে যেন রাতে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়.

কিন্তু বিল্টু এসবে মানেনা. সে বাজি ধরে একাই গিয়েছিলো ওই বাড়িতে. যদিও ভেতরে ঢোকার সময় একটু গা ছম ছম করেছিল কিন্তু বীরত্ব দেখানোর আনন্দই আলাদা. তাই সাহস করে ঢুকে পড়েছিল ভেতরে.

আর সেই খানেই প্রথম দেখা সেই ছেলেটার সাথে. যদিও প্রথম দর্শনে ঐরকম পরিস্থিতিতে একটা আজব বস্ত্র পরিহিত মানুষকে দেখে বিল্টু তাকেই ভুত ভেবে চিল্লিয়ে উঠে ছিল. আর তার চিল্লানি শুনে ওই ছেলেটিও ভয় পেয়ে চিল্লিয়ে উঠেছিল.
এদিকে বাড়ির ভেতর থেকে চিল্লানি শুনে ঐরকম ভুতুড়ে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে থাকাটা আর সম্ভব হয়নি বাকি বন্ধুদের পক্ষে. যে যেদিকে পেরেছিলো দৌড় দিয়েছিলো.

বিল্টুও পালিয়েই আসছিলো কিন্তু একটা কিসে ধাক্কা লেগে পড়ে গেছিলো মেঝেতে. একটু লেগেও ছিল. চামড়া ছুলে গেছিলো.

ওদিকে সেই ছেলেটিকে এগিয়ে আসতে দেখে বিল্টু তো ভয় ভয় রাম নাম নিতে শুরু করেছিল.
ছেলেটি হাসতে হাসতে ওর কাছে এসে বলেছিলো - আরে আমি ভুত নই.... ভয় পেওনা...

ছেলেটি বিল্টুর কাছে এসে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে হটাৎ থমকে গেলো. অবাক হয়ে বিল্টুর দিকে তাকিয়ে রইলো. যেন অদ্ভুত কিছু সে দেখে ফেলেছে. তারপর হেসে উঠলো ছেলেটা আনন্দে. 

যা বাবা..... পাগল নাকি? নাকি অভদ্র? এরকম অবস্থায় একজনকে দেখে হাসছে দেখো. একটু রাগ হলো বিল্টুর. সে বললো - হাসার কি আছে অমন করে? অন্যকে কষ্টে দেখে খুব হাসি পাচ্ছে তাইনা? নিজের হলে বুঝতে কেমন লাগছে.
ছেলেটা এবারে হাসি থামিয়ে বললো - সরি সরি.... আসলে আপনি যা ভাবছেন আমি সেই জন্য হাসিনি.

বিল্টু অবাক. এ ছেলে বলে কি? বয়সে ওর মতোই হবে... বা হয়তো সামান্য বড়োই হবে ওর থেকে. আর কিনা আপনি করে কথা বলছে? তারপর আবার ইংরেজিতে সরি? কেন বাপু... বাংলায় দুঃখিত বলতে কি হয়?

বিল্টু এবারে দাঁড়িয়ে এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে এগিয়ে গিয়ে বাড়ির সিঁড়ির কাছে বসলো. ইশ...... বেশ অনেকটা কেটেছে. রক্ত বেরোচ্ছে. সব হয়েছে এই আধপাগল..... নানা... বদ্ধ উন্মাদটার জন্য.

ছেলেটাও এবারে বাইরে এসে বিলটুকে বললো - ব্যাথা লাগছে বুঝি খুব? বিল্টু খেপে গিয়ে বললো - না না.... দারুন লাগছে.... যত্তসব.

ছেলেটা এবারে ওর পাশে বসে পকেট থেকে কি একটা ছোট বাক্স বার করে তার থেকে একটা শিশি বার করে বিলটুকে বললো - দিন..... পা টা দিন....

বিল্টু খেপে গিয়ে বললো - আরে আমাকে কি বুড়ো দাদু মনে হয়? নিজে তো আমার থেকেও বড়ো.... আর আমাকে আপনি আপনি করে বলছে দেখো.... কেন? তুমি করে বলতে কি গায়ে লাগে?

ছেলেটি হেসে বললো - আচ্ছা দাও.. পা টা দাও... এটা লাগিয়ে দি... দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে.

বিল্টু রাগী সুরেই বললো - উহঃ.... এমন করে বলছে যেন এক্ষুনি আমার পায়ের ব্যাথা কমিয়ে দেবে.... এদিকে আমি হাঁটতে পারছিনা.. আর ইনি ডাক্তারি ফলাচ্ছেন.

ছেলেটা এবারে বিল্টুর অপেক্ষা না করে নিজেই পা টা নিজের কাছে টেনে ওই ক্ষত জায়গায় শিশি থেকে দু ফোঁটা কি ফেললেন. আর বিল্টু তারপর যা দেখলো তাতে সে অবাক হয়ে গেলো. ওর চোখের সামনে ক্ষত স্থান থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে জায়গাটা আবার আগের মতো পরিষ্কার হয়ে গেলো. বিল্টু পা নাড়িয়ে দেখলো. না....... ব্যাথাটাও আর নেই. একি ভোজবাজি নাকি?
বিল্টু ছেলেটার দিকে হা করে তাকিয়ে রইলো. কে এ?
ছেলেটি বিল্টুর জিজ্ঞাসু দৃষ্টি দেখে নিজেই বললো - আমার দিকে ওরকম করে দেখার কিছু নেই. আমি কোনো ম্যাজিশিয়ান নই. এটা এই ওষুধের জাদু.

বিল্টু - এইরকম জাদুর ওষুধ তুমি পেলে কোথায়? আমাদের এখানে তো এরকম ওষুধ নেই. আমাদের এখানে কারোর কিছু হলে ওই বুড়ো রাজেন ডাক্তারই ভরসা. কিন্তু এরকম ওষুধ আমি আগে দেখিনি.

ছেলেটি বললো - এতো আমাদের ওখানে সব জায়গায় পাওয়া যায়.

বিল্টু ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করেছিল সে কোথা থেকে এসেছে. কিন্তু ছেলেটি সেইভাবে কিছুই বলেনি. বলেছিলো আমি অনেক দূর থেকে এসেছি..... ওখানে যাওয়া এই মুহূর্তে তোমার বা কারোর সম্ভব নয়. শুধু আমি পারি ওখানে যেতে. আচ্ছা.... আজ চলি... আবার দেখা হবে. আমি আবার রবিবার আসবো. ওই মন্দিরের পাশের পুকুরপাড়ে ১১টা নাগাদ আমাদের দেখা হবে.

এই ছিল ওদের প্রথম আলাপ. ছেলেটিকে প্রথম দেখে অবাকই হয়ে ছিল বিল্টু. কারণ ছেলেটার মুখের সাথে ওর নিজের মুখের বেশ অনেক মিল আছে. কিন্তু ছেলেটার জামা কাপড় বড়ো  অদ্ভুত. ফিরে আসার সময় বিল্টুর মনে পড়েছিল ছেলেটার নামই জানা হয়নি.

এরপর দ্বিতীয়বার দেখা ওই পুকুর পারে. সেদিন রবিবার বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষন খেলতে খেলতেই ওর মনে পড়ে গেলো সেদিন দেখা করার কথা. বন্ধুদের মিথ্যে বলে ও চলে গেলো মন্দিরের দিকে. মন্দিরের পেছনে একটা কুকুর চারটে বাচ্চা দিয়েছে. মাঝে মাঝেই বিল্টু ওখানে গিয়ে ছানা গুলোকে আদর করে আর ওদের মাকে বিস্কুট দেয়.

আজকে গিয়ে ও দেখলো ছানা গুলো মায়ের দুধ খাচ্ছে আর ওদের সামনেই দাঁড়িয়ে সেদিনের অচেনা ছেলেটি দুই হাতে কি একটা ধরে কি যেন করছে. বিল্টু আরেকটু এগিয়ে গিয়ে দেখলো ছেলেটার হাতে কালো রঙের পাতলা লম্বাটে কি একটা জিনিস. আর সেটা ধরেই ছেলেটা কি যেন করছে.

বিল্টু এগিয়ে গিয়ে ওর কাঁধে হাত রাখতেই ছেলেটা চমকে উঠলো.  তারপর বিলটুকে দেখে বললো - ওহ... তুমি.... আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম.

বিল্টু - এটা কি? কি করছো তুমি এটা ধরে?

ছেলেটা - ছবি তুলছি... কি সুন্দর কুকুর ছানা গুলো.

বিল্টু ছেলেটার কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো. ছবি তুলছে? কিন্তু ক্যামেরা কোথায়?

ছেলেটা - এইতো ক্যামেরা....

বিল্টুর এবার হাসি পেয়ে গেলো. বলে কি এ? ঐটুকু জিনিসটা কিনা ক্যামেরা. বিল্টুর জেঠুর বন্ধুর একটা ক্যামেরা আছে. সেটা ও দেখেছে. বেশ বড়ো আর ভারীও. আর এই ছেলের হাতের ঐটা নাকি ক্যামেরা?

এটা ওকে বলতেই ছেলেটা হেসে বলেছিলো..... এটাই তো তফাৎ তোমাতে আমাতে. এই ছোট্ট জিনিসটাই ক্যামেরা. দাড়াও এই দেখো. অমনি ওই জিনিসটা বিল্টুর দিকে করে কি একটা করতেই অমনি ওই কালো জিনিসটার থেকে ঠিক ক্যামেরার মতোই চোখ ধাঁধানো আলো ছিটকে বেরোলো আর তাতে চোখের সামনে কয়েক সেকেন্ডের জন্য অন্ধকার নেমে এসেছিলো বিল্টুর.

ছেলেটি তারপর ওর কাছে এসে কালো জিনিসটাতে ওকে দেখিয়েছিলো বিল্টুর ছবি. অবাক হয়ে বিল্টু সেদিন দেখেছিলো সেই ছবি. তাও আবার এতো সুন্দর,রঙিন. বিল্টু অবাক হয়ে নিজের ছবি দেখেছিলো সেদিন. ভারী অদ্ভুত জিনিস তো. ছেলেটা বলেছিলো ওই কালো পাতলা জিনিসটার আরো গুন আছে. এই বলে বিল্টুকে অবাক করে দিয়ে ওকে একটা রবীন্দ্রসংগীত শুনিয়েছিল ছেলেটা.

ভারী অদ্ভুত জিনিস তো.... আকৃতিতে ঐটুকু... অথচ ঐদিকে কত কি কাজ করা যায়. ওটার নাম জানতে চাওয়ায় কি একটা "স্মার্টফোন" না কি যেন নাম বলেছিলো. জিনিসটা বিল্টুর এতোই ভালো লেগেছিলো যে ও ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করেছিল এই জিনিস কোথায় কিনতে পাওয়া যায়. তাতে ছেলেটি বলেছিলো এই জিনিস এই মুহূর্তে কোথাও পাবেনা তুমি. এই সময় কোথাও পাওয়া যাবেনা.

বিল্টু ওকে জিজ্ঞেস করেছিল তাহলে তুমি কোথায় পেলে? তাতে ও হেসে বলেছিলো ও তুমি বুঝবেনা. সেদিনও আর নাম জিজ্ঞেস করা হয়নি ছেলেটার.
তারপর শেষ দেখা হয়েছিল তিনদিন আগে. এই পুকুরপাড়ে. দেখে মনে হচ্ছিলো বেশ মন খাড়াপ. বিল্টু ওর পাশে বসে ওর কাঁধে হাত রেখে জিজ্ঞেস করেছিল কি হয়েছে?
ছেলেটা পুকুরের জলে তাকিয়ে বলেছিলো - এই সুন্দর পরিবেশ দেখছি...... দেখছি এই জল, জলে ওই হাঁসগুলো, এই পরিষ্কার আকাশে উড়ন্ত পাখি গুলো, মাঠে খেলতে থাকা ছেলে গুলো..... প্রানভরে দেখছি এগুলো আর ভাবছি..... তুমি কি ভাগ্যবান.
যা বাবা..... এসব আবার কি আবোল তাবোল বলছে রে ছেলেটা? বিল্টু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে - এসব আবার কি বলছো? এগুলো আবার এরকম ভাবে দেখার কি আছে? এতো আমি রোজ দেখি. আমি রোজ এই মাঠে খেলি, জলে সাঁতার কাটি, সরস্বতী পুজোয় ঘুড়ি ওরাই..... এতো আমরা সবাই করি.
ছেলেটা বিল্টুর দিকে তাকিয়ে হেসে বলেছিলো - তাইতো বললাম তুমি বা তোমরা অনেক ভাগ্যবান. কারণ তোমরা খেলতে জানো, খেলতে খেলতে ব্যাথা কে অনুভব করতে জানো, জানো পড়াশুনার গুরুত্ব, জানো হেরে যাওয়ার দুঃখ, উন্নতির স্বাদ নিতে জানো, দুঃখে পাশে দাঁড়াতে জানো, জানো হাসাতে, জানো বাঁচতে. আর আমরা...........

এই টুকু বলেই চুপ করে গেছিলো. সামনের রাস্তা দিয়ে কয়েকটা পুচকে সাইকেলের টায়ার নিয়ে গড়াতে গড়াতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো...চাকার সাথে ওরাও দৌড়োচ্ছিলো. যেই ওটার গতি কমে যাচ্ছে.... অমনি একটা ছেলে একটা লাঠি দিয়ে মেরে ওটার গতি বাড়িয়ে দিচ্ছিলো. বিল্টু দেখলো তার নতুন বন্ধু হা করে ওই খেলা দেখছে. যেন জীবনে প্রথমবার এমন কিছু দেখলো. চোখে মুখে একটা আনন্দ ফুটে উঠেছিল ছেলেটার. বিল্টু ভাবছিলো এ আবার এমন করে হা করে দেখার কি আছে? ছোটবেলায় কত খেলেছে এরকম ও.
বাচ্চা গুলো চলে যাবার পর আবার ছেলেটার মুখটা ভার হয়ে গেছিলো. তারপর বিল্টুর দিকে তাকিয়ে বলেছিলো - প্রানভরে এই প্রতিটা মুহুর্ত উপভোগ করো. কারণ একদিন আর এসব কিছুই থাকবেনা.

বিল্টু - কেন?

ছেলেটা - কারণ একদিন আর তুমি এরকম ছোট থাকবেনা.... বড়ো হয়ে যাবে.

বিল্টু গোমড়ামুখে বলেছিলো - ধুর..... আমি তো চাই বড়ো হতে... তখন না থাকবে পড়াশুনার চাপ, না বাবা মায়ের বকুনি, না তাড়াতাড়ি ঘুমোনো, না কলেজের পরীক্ষা.... শুধু আনন্দ.

ছেলেটা মুচকি হেসে বলেছিলো - হ্যা.... তা ঠিকই.... থাকবেনা পড়াশুনা...... তখন থাকবে সেই পড়াশুনাকে কাজে লাগিয়ে যোগ্যতা প্রমানের লড়াই, থাকবেনা বাবা মায়ের বকুনি..... যে বকুনির মধ্যে থাকে আমাদের প্রতি চিন্তা ভালোবাসা, থাকবেনা তাড়াতাড়ি ঘুমোনো..... হয়তো দেখলে ঘুমোই আসবেনা কখনো কখনো নিজের যোগ্যতা প্রমানের লড়াইয়ের চিন্তায় , হ্যা....থাকবেনা কলেজ.... যে কলেজ তোমায় শিক্ষা দিয়েছে, যে কলেজে তুমি শিক্ষকদের থেকে শিক্ষা পেয়েছো, যে কলেজের মাঠে তুমি বন্ধুদের সাথে খেলা করেছো, ভুলে পেয়েছো শাস্তি আর গুনে পেয়েছো প্রশংসা........ আর শেষে কি বললে আনন্দ? হ্যা.... জীবনে আনন্দ তো একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার.... কিন্তু তার বিপরীতটাকেও ভুলে যেওনা..... জীবন সবসময় তোমায় আনন্দ দেবেনা..... দুঃখও দেবে... হয়তো দ্বিতীয়টাই বেশি দেবে.... কিন্তু তাও এগিয়ে যেতে হবে. এটাই তো লড়াই..... আর এই লড়াই করতে করতে প্রতি মুহূর্তে তোমার সেদিন মনে হবে এর থেকে ছোটবেলাই অনেক ভালো ছিল. প্রতি মুহূর্তে আজকের এই সময় গুলো মনে পড়বে তোমার. আজ তুমি ভাবছো বড়ো হবার পর আর কেউ তোমায় বকবেনা.... কিন্তু সেদিন.... তুমি এই বকুনি, এই শাস্তি গুলোই ভেবে হাসি দুঃখ দুই পাবে.... এই বকুনি গুলো ছিল বলেই তোমার ভবিষ্যত সুরক্ষিত. তবে হ্যা..... প্রগতি তোমায় অনেক কিছুই দেবে কিন্তু তোমার থেকে কেড়েও নেবে অনেক কিছু. তোমায় প্রগতি সাফল্য দেবে, কিন্তু কেরে নেবে তোমার সরলতা, তোমায় সুরক্ষিত ভবিষ্যত দেবে প্রগতি... কিন্তু কেরে নেবে তোমার অতীত. অতীত শুধুই অতীত হয়ে থাকবে.... অতীতের শিক্ষাও হয়তো আর সেই ভবিষতে কাজে লাগবেনা. প্রগতি দেবে তোমায় বড়ো বড়ো বাড়ি গাড়ি..... কিন্তু কেরে নেবে এই সুন্দর সবুজ গাছপালা, নীল আকাশ. প্রগতি দেবে তোমায় নামি মানুষের সান্নিধ্য... কিন্তু হারিয়ে যাবে ছোটবেলার সেই বন্ধুরা.... যাদের সাথে সাঁতার কেটেছো, মাঠে খেলেছো.... ঝগড়া করেছো. প্রগতি তোমায় শেখাবে নকল বন্ধুত্ব কিন্তু কেরে নেবে সেই সত্যিকারের বন্ধুত্ব. তাইতো বলি এই ছোটবেলা কে প্রানভরে উপভোগ করো.... কারণ একদিন তুমি বার বার ফিরে পেতে চাইবে এই দিনগুলো কিন্তু আর পাবেনা. আমি জানি... আমি বুঝি,  আমি আমার বর্তমানকে মাথায় রেখেই তোমায় এগুলো বললাম. তাই আমি যখনি এখানে আসি এই প্রকৃতির  ছবি তুলে বেড়াই, কারণ এখন তো আর এসব........ 
আর কিছু বলেনি ছেলেটা. বিল্টু হা করে শুনেছিলো ছেলেটার সব কথা. বাড়ি এসে ভেবেছিলো ছেলেটার সব কথা. আর অবাক হয়েছিল এই ভেবে যে ওর বয়সী একটা ছেলে এতো গভীর কথা কিকরে বললো? এসব নিয়ে ভাবনা তো ওর কখনো আসেনি.... কিকরেই বা আসবে? ওর বয়সী বা কত? কিন্তু এই ছেলেটা কি করে এরকম সব কথা বললো? এই বয়সে এতো জ্ঞান?

এইসবই চোখ বুজে ভাবছিলো বিল্টু আজ আর তখনি গায়ে কে যেন ধাক্কা দিয়ে বললো - ঘুমিয়ে পড়লে নাকি? চোখ খুলে দেখলো ওর নতুন বন্ধু. আশ্চর্য তো.... ছেলেটা কখন এলো? আর এসে ওর পাশে বসলোই বা কখন? ওতো কোনো পায়ের আওয়াজ পায়নি.

বিল্টুর মাথায় বেশ কয়েকদিন ধরে যে প্রশ্নটা ছিল সেটা আজ শুরুতেই জিজ্ঞেস করলো - আচ্ছা তুমি কে বলতো? তুমি থাকো কোথায়? আর আসোই বা কখন?

ছেলেটা হেসে বললো - বাবা.... এতো প্রশ্ন? আচ্ছা সব বলছি.... আজ সব বলবো বলেই তো এসেছি.... আজই তো আমাদের শেষ দেখা. আর আমি আসবোনা কোনোদিন.... আর আমাদের দেখা হবেনা.

বিল্টু এটা শুনে একটু দুঃখই পেলো. এই কয়েকদিনে ওর ভালো লেগে গেছিলো নতুন বন্ধুকে. বিল্টু গম্ভীর গলায় বললো - আর আমাদের দেখা হবেনা?

ছেলেটা হেসে বলেছিলো - না..... এই আমাদের শেষ দেখা বন্ধু.
বিল্টু - তুমি এই কয়দিনেই আমার ভালো বন্ধু হয়ে গেছিলে... ভেবেছিলাম আমার বন্ধুদের সাথে তোমার পরিচয় করিয়ে দেবো. আমরা সবাই মিলে মাঠে খেলবো.

ছেলেটাও একটু দুঃখী মুখে বললো - আমার পক্ষে আর তা সম্ভব নয়.... বার বার ব্যাবহারে মেশিনে খুব চাপ পড়ে গো.... বাবা বলেছে আর নয়.... এই শেষবার.

বিল্টু অবাক হয়ে বললো - মেশিন? কিসের মেশিন?

ছেলেটা - আমার এখানে আসার মেশিন. তোমরা যেমন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে গাড়ি ঘোরা মানে যানবাহন ব্যবহার করো... আমি তেমনি আমার বাহন ব্যবহার করি.
বিল্টু - কোই তোমায় বাহন? আমিতো কোথাও কোনোদিন তোমার বাহন দেখিনি.

ছেলেটা হেসে নিজের পকেট থেকে একটা ঘড়ির মতো জিনিস বার করে দেখালো বিলটুকে. তাতে একজায়গায় লেখা ডেস্টিনেশন - 11-11-1987 আর আরেক জায়গায় লেখা আরেকটা টাইম - 11-9-2059. আর আরেক জায়গায় খুব দ্রুত একটা কাউন্টিং হয়েই চলেছে.

কি অদ্ভুত ঘড়ি রে বাবা. বিল্টু জিজ্ঞেস করলো - এ আবার কিরকম ঘড়ি? আজব তো?

ছেলেটা হেসে বললো - এটাই আমার বাহন.... এটার সাহায্যেই আমি এখানে আসি.

এটা শুনে আর নিজের হাসি আটকে রাখতে পারলোনা বিল্টু. কি অদ্ভুত কথা...... ওকে কি ছেলেটা এতটাই বোকা ভেবেছে? এই ঘড়ির সাহায্যে ও এখানে আসে? বিল্টু হাসতে হাসতে বললো - আমাকে কি এতটাই বোকা মনে হয়? নাকি পাগল মনে হয়? তুমি চাও যে আমি বিশ্বাস করি যে তুমি এই ঘড়ির সাহায্যে এখানে আসো? ইয়ার্কি হচ্ছে?

ছেলেটা হেসে বললো - আমি জানতাম তুমি বিশ্বাস করবেনা উজ্জ্বল. তুমি কেন.... কেউই আজকের সময় একথা মানবেনা. কিন্তু সত্যি এটাই... আমি শুধু এই জায়গার নয়... এইসময়ের এক অতিথি মাত্র.

ছেলেটার মুখে নিজের নাম শুনে অবাক হয়ে গেলো বিল্টু. ওতো কোনোদিন নিজের আসল নাম একে বলেনি. তাহলে ও জানলো কিকরে ওর নাম উজ্জ্বল? তারপরেই ভাবলো এটা আর এমন কি? কারোর থেকে নিশ্চই জেনেছে. এবারে একটু রাগই হলো হলো বিল্টুর. এইসব চালাকি করে ছেলেটা কি প্রমান করতে চাইছে?

বিল্টু এবারে একটু রেগেই জিজ্ঞেস করলো - তুমি কে বলতো? এসব করে কি প্রামান করতে চাইছো? তুমি কি ভাবছো আমি তোমার চালাকি ধরতে পারবোনা.... আমার নাম বলেছো বলে কি ভাবছো আমি তোমার এসবে বিশ্বাস করবো যে তুমি এই ঘড়ির সাহায্যে এখানে আসো?

ছেলেটা হেসে বললো - এটা কোনো সাধারণ ঘড়ি নয় গো.... এটা টাইম মেশিন.... এর সাহায্যে আমি আসি আমার সময় থেকে তোমাদের সময়.

বিল্টু - মানে? টাইম মেশিন? সে আবার কি?

ছেলেটা - এর সাহায্যে এক সময় থেকে আরেক সময় যাওয়া যায় বুঝলে?

বিল্টু উঠে দাঁড়িয়ে কোমরে হাত রেখে বললো - বটে? গুল মারার আর জায়গা পেলেনা? অন্য সময় থেকে এখানে আসো? তা কোন সময় থেকে আসো শুনি?

ছেলেটা মুচকি হেসে উঠে দাঁড়িয়ে বললো - আমি ভবিষ্যত থেকে আসি বন্ধু..... আমি জানি তুমি আমার একটা কথাও বিশ্বাস করছোনা... করার কথাও নয়.. কিন্তু সত্যি এটাই. যতটা সত্যি এই মুহুর্ত ততটাই সত্যি আমার উত্তর.

বিল্টু : বটে? তাই নাকি? তা কিকরে আমি বিশ্বাস করবো? আমি সবসময় নিজে না দেখে কিস্সু বিস্বাস করিনা.... আগে প্রমান দাও.

ছেলেটা দুবার মাথা নেড়ে ওই ঘড়িতে কিসব টিপলো তারপর বিলটুকে বললো - তোমার হাত দাও. প্রমান দিচ্ছি.
বিল্টু হাত বাড়াতেই ছেলেটা ওর হাত ধরলো আর বললো - প্রমান দিচ্ছি কিন্তু কথা দাও চেঁচাবেনা... আর আমাদের এই কথা কাউকে বলা যাবেনা.... বললেই কেউ বিশ্বাস করবেনা যদিও.

বিল্টু - বেশ...আগে প্রমান তো দাও দেখি.

ছেলেটা বিল্টুর হাত ধরে ওই ঘড়িতে কি একটা টিপলো আর তারপর কয়েক সেকেন্ড বিল্টুর কিছু মনে নেই. চোখের সামনে একবার উজ্জ্বল আলো লাগায় চোখ বুজে ফেলেছিলো. যখন তাকালো তখন ও দেখলো ও দাঁড়িয়ে ওরই বাড়ির সামনে.

বিল্টু ছেলেটাকে বললো - আমি..... আমি এখানে এলাম কিকরে? আমরা তো পুকুরপাড়ে ছিলাম?

ছেলেটা হেসে বললো - এবারে বিশ্বাস হলো?

বিল্টু ছেলেটার হাত ছাড়িয়ে বললো - না.... তুমি কোনো চালাকি করেছো...দাড়াও আমি মাকে ডাকছি...

এই বলে বিল্টু বাড়ির দিকে এগোতে লাগলো. বাড়িতে কি অন্যদিনের থেকে একটু আলাদা লাগছে? একি!! পেয়ারা গাছটা এতো ছোট লাগছে কেন? আর বাড়ির সামনে এতো পরিষ্কার কিকরে হলো? এইতো সেদিন বাইরের দেয়ালে একটা বাছুরের ছবি এঁকেছিল বিল্টু রং পেন্সিল দিয়ে.... গেলো কোথায় ওটা?
বিল্টু ঘরে ঢুকতে যাবে এমন সময় একটা ছোট্ট বাচ্চার হাসির আওয়াজ পেলো ও. বাড়িতে কি কেউ অতিথি এসেছে? বিল্টু আগে জানলায় চোখ রাখলো আর রাখতেই ও যা দেখলো তাতে ওর গায়ের লোম খাড়া হয়ে গেলো.

ভেতরে ওর নিজের বাবা আর মা আর ওদের সামনে একটা ছোটো বাচ্চা. হাত বাড়িয়ে মায়ের কোলে ওঠার বায়না করছে. মায়ের আর বাবার দুজনরই বয়স যেন অনেক কম লাগছে. বাবার মাথায় মাথা ভর্তি চুল, মাকে অনেকটা রোগা লাগছে.

এসব কি দেখছে কি ও? এমন সময় পেছন থেকে ছেলেটা ওর কানের কাছে মুখ এনে বল্ল - কি? এবারে বিশ্বাস হলো?

বিল্টু ওরদিকে ঘুরে বললো - এ কি.... বাবা মা.... এতো আলাদা লাগছে কেন? আর.. আর ওই বাচ্চাটা?

ছেলেটা মুচকি হেসে বললো - ওটা আর কেউ নয়.... ওটা তুমি.

বিল্টু কি বলবে বুঝতে পারছেনা.... চোখের সামনে যা দেখছে তা বিশ্বাস করা যায়না. নিজের গায়ে চিমটি কাটলো ও. উত্তেজনায় হয়তো একটু জোরেই কেটেছিল চিমটিটা . ব্যাথায় মুখ দিয়ে আহ্হ্হঃ আওয়াজ বেরিয়ে গেলো. আর সেই আওয়াজে ওর বাবা বলে উঠলো এই বাইরে কে রে?

ছেলেটা সঙ্গে সঙ্গে বিল্টুর হাত ধরে টেনে গোয়াল ঘরের পেছনে লুকিয়ে পড়লো. বিল্টু দেখলো ওর বাবা বাইরে এসে এদিক ওদিক দেখছে. না...... এই বাবা আজকের বাবা নয়.... ইনিতো অনেক যুবক.... মাথা ভর্তি চুল, বাবার ভুঁড়িটাও নেই. ওদিকে মাকেও একদম আলাদা লাগছে. না চাইতেও বিশ্বাস করতে বাধ্য হলো বিল্টু.

একটু পরে আবার বোতাম টিপে ওরা নিজ পূর্বের স্থানে ফিরে এলো. বিল্টু হা করে তাকিয়ে ওই ঘড়ির দিকে. কি আশ্চর্যজনক, কি অদ্ভুত জিনিস!! অতীতে যাওয়া যায় এই ঘড়ির সাহায্যে! ইশ... যদি অতীতের বাবা মায়ের সাথে দেখা করা যেত. কথাটা ছেলেটাকে বলাতে সে বললো বাবা মায়ের আদর তো পেতেই না উল্টে তোমার বাবা তোমায় পাগল ভেবে লাঠি নিয়ে তাড়া করতেন. কারণ তখন তোমাকে তিনি চেনেনই না.... ওনার সন্তান তখন ওই শিশু.

বিল্টু মাথা চুলকে বললো - তাও ঠিক..... আচ্ছা এবারে তুমি বলতো.... তুমি এখানে এসেছো কেন? কিছু কাজে?

ছেলেটা ঘড়িটা পকেটে রেখে বললো - নাহ..... আমি এসেছি এই সময়টা নিজের চোখে উপভোগ করতে.... এই প্রকৃতি নিজের চোখে দেখতে. আমার দাদু আমায় বলেছে এই সময়ের কথা. সব শুনে আমি আর লোভ সামলাতে পারিনি. এসেছিলাম নিজের চোখে ঘুরে ঘুরে সব দেখবো বলে. আর এসে আমি যেন হারিয়ে গেছিলাম এই সময়.

বিল্টু - কেন? এমন কি আছে এই সময়?

ছেলেটা - পরিষ্কার বাতাস, চারিদিকে সবুজ, নীল আকাশ, সবার মুখে হাসি, সবাই মিলে হৈ হৈ করে আনন্দ করা, সকলের প্রতি ভালোবাসা, মন থেকে উৎসব পালন ..... আরো কত কি..

বিল্টু : কেন? তোমাদের ওখানে এসব নেই নাকি?

ছেলেটার হাসি মিলিয়ে গেলো. বললো - ওই যে বললাম...... ভবিষ্যত বা প্রগতি যেমন কিছু দেয় তেমন অনেক কিছু কেড়েও নেয়.... আর এর জন্য দায়ী মানুষই. আধুনিকতার লোভ মানুষের ভেতরের মানুষটাকে ধ্বংস করে ফেলেছে. আজ আমাদের কাছে অনেক কিছু আছে জানো.... উড়ন্ত গাড়ি, বড়ো বিশাল বাড়ি, টিভি, টিভিতে লক্ষ লক্ষ চ্যানেল, মোবাইল, vr box, Ai robot সব. এককথায় ঘরে বসেই আমরা সব কিছু হাতের মুঠোয় পেয়ে যাই. 

বিল্টু ছেলেটার কথার অর্ধেক কিছুই বুঝলোনা. শুধু বুঝলো আধুনিকতার ম্যাজিক অসাধারণ. অবাক হয়ে বললো - কি বলছো কিগো? উড়ন্ত গাড়ি? মানে আকাশে গাড়ি উড়ছে? আরিব্বাস!! দারুন ব্যাপার তো.... এই আমাকেও দেখাও না এসব.

ছেলেটা বললো - বিশ্বাস করো.... ভবিষ্যত তোমার অতটাও ভালো লাগবেনা.... কারণ এসব পেলেও.... তুমি কথাও সবুজ রং বা নীল রং খুঁজে পাবেনা, পাবেনা একটাও হাসি মুখ, পাবেনা আড্ডা দেওয়া মানুষের দল, শুধু দেখবে হাজার হাজার মানুষের দল চলেছে..... তাদের একটাই লক্ষ সাফল্য আর সাফল্য.

বিল্টু - সফল হতে সবাই চায়... বাবা বলে জীবনে সফল হওয়া খুব জরুরি... তাহলে এতে খারাপ কি?

ছেলেটা বললো - একদম ঠিক বলে তোমার বাবা..... কিন্তু যে সাফল্য মানুষের ভেতরের ইচ্ছে, আনন্দ দুঃখ সব ভুলিয়ে লোভের দিকে চালিত করে সেই সাফল্য ক্ষতিকারক উজ্জ্বল. সেই সফলতা তোমায় অনেক কিছু দেবে কিন্তু তুমি নিজের কাছেই হেরে যাবে. আমি জানি..... আমি দেখেছি. আমি দেখেছি আমার নিজের পরিবারের লোকেদের, নিজের বাবা মাকে. আমি তোমাকে তা দেখাতে চাইনা বন্ধু. তুমি খুব ভাগ্যবান তোমার বাবা মা তোমায় বকেন, আবার আদরও করেন কিন্তু আমি এটার কিছুই সেইভাবে পাইনা..... না বাবার স্নেহ না মায়ের ভালোবাসা. প্রগতির পথে তারা শুধুই এগিয়ে চলেছে সফল হতে. আমার দাদু আমায় রোজ নিজের অতীতের কত ঘটনা বলতেন.... তাঁদের ছোটবেলার খেলা, দুস্টুমি কতকি.... এইসব শুনেই আমি বড়ো হয়েছি. তারপর একদিন তিনিও চলে গেলেন না ফেরার দেশে. আমি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারিনি, বাবার কাছে বার বার বলি দাদুর গ্রামে ঘুরতে আসার জন্য. শেষে অনেক কষ্টে তাকে রাজি করাই বাবাকে. তিনি আমায় এখানে আসতে দিতে রাজি হন... আর আমিও চলে আসি এই মেশিনের সাহায্যে দাদুর গ্রামে বেড়াতে মানে এখানে . আমাদের সময় এই টাইম মেশিন অনেক ধোনিদের কাছেই আছে.

বিল্টু - মানে তোমার দাদু এই গ্রামেই থাকেন? দেখা হয়েছে তার সাথে?

ছেলেটা বললো - হ্যা..... হয়েছে.... তবে কি জানো.... আমি তাকে বলিনি আমি কে? বললে উনিও কি মানবেন কিছু?

বিল্টু ফিক করে হেসে বললো - হয়তো দেখলে তোমার কথা শুনে সেও লাঠি নিয়ে তোমায় তাড়া করেছেন.

ছেলেটাও হেসে উঠলো এটা শুনে. এমন সময় ওর পকেট থেকে পিই... পিই.... পিই করে আওয়াজ হতে শুরু করলো. ছেলেটি ঘড়িটা বার করে বললো - আমার যাবার সময় হয়ে এসেছে বন্ধু. এবারে আমায় যেতে হবে. শুধু যাওয়ার আগে এইটুকুই বলে যাই জীবনে অতীত বর্তমান ভবিষ্যত তিনেরই গুরুত্ব অনেক.... কিন্তু সব থেকে বেশি গুরুত্ব দাও বর্তমানকে, আজকে, এই মুহুর্তকে. কারণ ভবিষ্যত তোমার হাতে নেই আর অতীতও নয় কিন্তু এই মুহূর্তটা তোমার নিজের... একদমই নিজের তাই উপভোগ করো এটাকে.... কারণ এই মুহূর্ত আর কোনোদিন ফিরবেনা.... আমরা পেয়েছি আধুকিন জীবন.... আর তোমরা কাটাচ্ছ সত্যিকারের "জীবন". এই দুয়ের মধ্যে অনেক তফাৎ.... তাই জীবনকে উপভোগ করো. আমার দাদু আমায় শিখিয়েছেন-

হও ধরমেতে ধীর হও করমেতে বীর,
হও উন্নত শির, নাহি ভয় |
ভুলি ভেদাভেদ জ্ঞান, হও সবে আগুয়ান,
সাথে আছে ভগবান,—হবে জয় |

আসি বন্ধু......

বিল্টু অচেনা বন্ধুটার হাত ধরে বললো - আর আসবেনা তুমি? আর দেখা হবেনা কোনোদিন আমাদের?

ছেলেটা হেসে বিল্টুর হাতে হাত রেখে বললো - হবে..... আবার নিশ্চই দেখা হবে..... অন্যভাবে....অন্নরূপে....আজ আসি... বিদায়.

বিল্টু - তোমার নামটা বলে যাও?

ছেলেটা বললো - আমার নাম বিবেক.

বিল্টু - খুব ভালো নাম তোমার.

বিবেক হেসে বললো - দাদু রেখেছিলেন. এবারে যাই বন্ধু.

বিল্টু ভেজা চোখে বললো বিদায় বিবেক

বিবেক মুচকি হেসে হাত নাড়ালো আর মনে মনে বললো - বিদায় দাদু.




সমাপ্ত
[+] 9 users Like Baban's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
খুব ভালো লেগেছে গল্পটা । আমারও মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় নিজের নানা দাদার সময়টা কেমন ছিলো দেখে আসতে । একটা টাইম মেশিন বানিয়ে PM করে দিন প্লিজ
[+] 2 users Like cuck son's post
Like Reply
#3
(06-12-2020, 06:32 PM)cuck son Wrote: খুব ভালো লেগেছে গল্পটা । আমারও মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় নিজের নানা দাদার সময়টা কেমন ছিলো দেখে আসতে । একটা টাইম মেশিন বানিয়ে PM করে দিন প্লিজ

ধন্যবাদ  Heart
এই গল্পটা লেখার সময় বার বার মনে পড়ছিলো -

পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়।
ও সেই চোখে দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়।
আয়    আর একটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়।
মোরা   সুখের দুখের কথা কব, প্রাণ জুড়াবে তায়।
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
#4
গল্পটা পড়তে পড়তে ভীষণ ভাবেই ডোরেমনের নোবিতার কথা মনে পরে গেল ! বেশ ভালো গল্প !!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 3 users Like pinuram's post
Like Reply
#5
(06-12-2020, 10:52 PM)pinuram Wrote: গল্পটা পড়তে পড়তে ভীষণ ভাবেই ডোরেমনের নোবিতার কথা মনে পরে গেল ! বেশ ভালো গল্প !!!!!

ধন্যবাদ পিনুদা   Heart
হ্যা সত্যি... লিখতে লিখতে আমার সামনেও ভেসে উঠছিলো ওদেরই মুখ দুটো আর কানে আসছিলো -

Jindagi sawar dun
ik nai bahaar dun
duniya hi badal dun mai to
pyara sa chamatkar hun
mai kisi ka sapna hun
jo aaj ban gaya hai sach
ab ye mera sapna hai ki
sab ke sapne sach mai karu...... Love u doraemon
[+] 5 users Like Baban's post
Like Reply
#6
(06-12-2020, 11:15 PM)Baban Wrote: ধন্যবাদ পিনুদা   Heart
হ্যা সত্যি... লিখতে লিখতে আমার সামনেও ভেসে উঠছিলো ওদেরই মুখ দুটো আর কানে আসছিলো -

Jindagi sawar dun
ik nai bahaar dun
duniya hi badal dun mai to
pyara sa chamatkar hun
mai kisi ka sapna hun
jo aaj ban gaya hai sach
ab ye mera sapna hai ki
sab ke sapne sach mai karu...... Love u doraemon

নোবিতার কথা বাদ দিলাম, তুমি যেটা আমাকে মনে করিয়ে দিলে সেটা হল আমার ছোট বেলা, সত্যি অন্যের গাছের আম চুরি করে খাওয়াতে যে কি মজা ছিল সেটা এখনকার শহুরে ছেলে মেয়েদের বলে বুঝানো সম্ভব নয়! বিশেষ করে পুকুরে ঢিল মেরে কম্পিটিশান করা, কার বেশি দূরে লাফ দিয়ে যায়!  সত্যি কি মানুষ উন্নতি করছে নাকি এগিয়ে যাওয়ার নাম করে মানুষ পিছিয়ে যাচ্ছে, মনুষ্বত্ত ধিরে ধিরে লোপ পাচ্ছে, মানুষ ইঁদুর দৌড়ে আজ মরিয়া হয়ে দৌড় লাগাচ্ছে!!!!! 
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 5 users Like pinuram's post
Like Reply
#7
(06-12-2020, 11:20 PM)pinuram Wrote:
নোবিতার কথা বাদ দিলাম, তুমি যেটা আমাকে মনে করিয়ে দিলে সেটা হল আমার ছোট বেলা, সত্যি অন্যের গাছের আম চুরি করে খাওয়াতে যে কি মজা ছিল সেটা এখনকার শহুরে ছেলে মেয়েদের বলে বুঝানো সম্ভব নয়! বিশেষ করে পুকুরে ঢিল মেরে কম্পিটিশান করা, কার বেশি দূরে লাফ দিয়ে যায়!  সত্যি কি মানুষ উন্নতি করছে নাকি এগিয়ে যাওয়ার নাম করে মানুষ পিছিয়ে যাচ্ছে, মনুষ্বত্ত ধিরে ধিরে লোপ পাচ্ছে, মানুষ ইঁদুর দৌড়ে আজ মরিয়া হয়ে দৌড় লাগাচ্ছে!!!!! 

একদমই দাদা.....
আমরা যে ছোটবেলা কাটিয়ে এসেছি আর আজকের ছোটরা যে শৈশব কাটাচ্ছে তাতে অনেক পার্থক্য এসে গেছে. প্রগতি ও সাফল্যের চাহিদা তখনো ছিল আজও আছে ও ভবিষ্যতেও থাকবে কিন্তু ওই অসাধারণ মুহুর্তগুলো আর আজ নেই. কমে গেছে সেই কলেজ থেকে ফিরে খেয়ে মাঠে দৌড়ে খেলতে যাওয়া,  বন্ধুদের সাথে সাঁতার কাটা, মাছ ধরা,  রবিবারে শক্তিমানের অপেক্ষা, শুনতে পাইনা আর সেই জঙ্গল বুকের অসাধারণ গানটা. নেই সিম্বা, টম জেরি, নেই সেই নিষ্পাপ আনন্দ. আজ শুধুই নিজ যোগ্যতা প্রমানের লড়াই...... ছোট থেকেই তার প্রস্তুতি. সব ভুলে সাফল্যের পথে দৌড়. এই প্রগতি কি সত্যিই প্রগতি? বিবেকের মাধ্যমে আমি এটাই ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি.
[+] 4 users Like Baban's post
Like Reply
#8
sotti choto baler kota mone pore galo. jodio ami ato tao bor hoye jaini. tobou amader somoy j baire mathe giye khala hoto ekhon seta onek kome gache. ekhon sob kichui boka baksho r smart phoner hate bondi. eta thik golpo noy eta jano amader sobar choto balar ekta smriticharon, jakhane amra sobai nijeke relate korte pari. R teacher der kache j kotobar mar khayachi se to gune ses korte parbo na.
love you sar ei rokom akta lekha uphohar dewar jonno.......
[+] 3 users Like [email protected]'s post
Like Reply
#9
(07-12-2020, 12:26 AM)tarunpatra9386; Wrote: sotti choto baler kota mone pore galo. jodio ami ato tao bor hoye jaini. tobou amader somoy j baire mathe giye khala hoto ekhon seta onek kome gache. ekhon sob kichui boka baksho r smart phoner hate bondi. eta thik golpo noy eta jano amader sobar choto balar ekta smriticharon, jakhane amra sobai nijeke relate korte pari. R teacher der kache j kotobar mar khayachi se to gune ses korte parbo na.
love you sar ei rokom akta lekha uphohar dewar jonno.......

ধন্যবাদ  Heart
আমি যে মূল বিষয়টা তুলে ধরতে চেয়েছি সেটি আপনাদের সকলের ভালো লাগছে, নিজেদের কানেক্ট করতে পারছেন দেখে খুব ভালো লাগলো আমার. সত্যি... আধুনিকতা আমাদের একে ওপরের কাছে আনছে.... নাকি আরো দূরে সরিয়ে দিচ্ছে?
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
#10
ঘুম ঘুম পাচ্ছে, তাও একটাই কথা বলবো জাস্ট অসাধারণ লাগল ! সাইন্স ফিকশন হলেও গল্পের মাধ্যমে একটা সামাজিক বার্তা তুলে ধরেছো, এটা সত্যিই অনেক প্রশংসার দাবি রাখে  Namaskar yourock  নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। ইকলেজ থেকে এসে ব্যাগ রেখেই ফুটবল নিয়ে মাঠের উদ্দেশে দৌড়, ঘুড়ি ওড়ানো, ন্যাড়া পোড়ানো আরও কতো কি !  Heart
[+] 3 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply
#11
(07-12-2020, 01:25 AM)Mr Fantastic Wrote: ঘুম ঘুম পাচ্ছে, তাও একটাই কথা বলবো জাস্ট অসাধারণ লাগল ! সাইন্স ফিকশন হলেও গল্পের মাধ্যমে একটা সামাজিক বার্তা তুলে ধরেছো, এটা সত্যিই অনেক প্রশংসার দাবি রাখে  Namaskar yourock   নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। ইকলেজ থেকে এসে ব্যাগ রেখেই ফুটবল নিয়ে মাঠের উদ্দেশে দৌড়, ঘুড়ি ওড়ানো, ন্যাড়া পোড়ানো আরও কতো কি !  Heart

ধন্যবাদ ❤
এই স্মৃতি গুলোই আমাদের কাছে একটা হিরে মানিক. এই দিনগুলোর অনুভূতি কি ছিল তা আজকের ছোটরা বুঝতেই পারবেনা. 

"হারিয়ে যাওয়া মুক্ত গুলো কয়েক বছর পরে
খুঁজে পেলে মনটা যেন কানায় কানায় ভরে "
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
#12
ছোট্ট পা দুটো একদিন চলতে শেখে
একদিন নিজের পায়ে দাঁড়াতে শেখে
এগিয়ে যাওয়াই জীবন..... কিন্তু এই এগোনোর পথে থেমে মাঝে মাঝে পেছনে ফিরে তাকালে দেখবে কখনো একটি শিশু আবার কখনো একটি কিশোর আবার কখনো একটি বালক হাসিমুখে নিজের হাত বাড়িয়ে তার হাতটা ধরতে বলছে. এবারে এটা তোমার ওপর..... সেই বাচ্চাটার নিষ্পাপ হাসিমাখা মুখটা দেখেও তুমি এড়িয়ে যাবে? নাকি তার হাতটা ধরে তাকে পাশে পাশে নিয়ে চলবে.
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
#13
Heart Heart Heart Heart Heart ❤
Like Reply
#14
(07-12-2020, 01:25 AM)Mr Fantastic Wrote: ঘুম ঘুম পাচ্ছে, তাও একটাই কথা বলবো জাস্ট অসাধারণ লাগল ! সাইন্স ফিকশন হলেও গল্পের মাধ্যমে একটা সামাজিক বার্তা তুলে ধরেছো, এটা সত্যিই অনেক প্রশংসার দাবি রাখে  Namaskar yourock   নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। ইকলেজ থেকে এসে ব্যাগ রেখেই ফুটবল নিয়ে মাঠের উদ্দেশে দৌড়, ঘুড়ি ওড়ানো, ন্যাড়া পোড়ানো আরও কতো কি !  Heart

ha sar akhonkar chale der eto somoy kota.??
amader somy chotobalay amra koto khaladhula kortam. r porasonar chap o ato chilo na. tokon kono gurujon k pronam korle tara asirbad korto boro hoye manusher moto manush how. r akhon choto thakai tadar competition e namiye deya hochhe. class e 1st hote hobe ba tomar bondhur thake basi pate etc..
[+] 2 users Like [email protected]'s post
Like Reply
#15
(07-12-2020, 11:50 PM)tarunpatra9386; Wrote: ha sar akhonkar chale der eto somoy kota.??
amader somy chotobalay amra koto khaladhula kortam. r porasonar chap o ato chilo na. tokon kono gurujon k pronam korle tara asirbad korto boro hoye manusher moto manush how. r akhon choto thakai tadar competition e namiye deya hochhe. class e 1st hote hobe ba tomar bondhur thake basi pate etc..

এখনকার গুরুজনরা ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে বলে, কেউ বলে না প্রকৃত মানুষ হও। 
[+] 2 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply
#16
সত্যি.... খুব ভালো লাগছে আপনারা এই গল্প পড়ে নিজেদের ছোটবেলায় আবার ফিরে গেলেন.... বাস্তব সর্বদা কঠিন.
অতীতের এই স্মৃতি গুলোই আমাদের মনের কোণে লুকিয়ে থাকা সুখ. সেই টিভির পুরোনো কার্টুন, সেই পুরোনো গান, পুরোনো ফিল্ম, চিঠিতে যোগাযোগ, কলেজ, পড়াশুনো আর তার মাঝেই দুস্টুমি, পুজোয় বাবা মার হাত ধরে প্রতিমা দর্শন, ঘুড়ি ওড়ানো.... আর কত বলবো.... ভাবলেও কেমন লাগে আজ.
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
#17
(08-12-2020, 12:15 AM)Mr Fantastic Wrote: এখনকার গুরুজনরা ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে বলে, কেউ বলে না প্রকৃত মানুষ হও। 

tai jonnoi bodhoy akhonkar generation er chele maye dar "man r hush" ta ektu kom.
[+] 3 users Like [email protected]'s post
Like Reply
#18
(08-12-2020, 01:02 AM)Baban Wrote: সত্যি.... খুব ভালো লাগছে আপনারা এই গল্প পড়ে নিজেদের ছোটবেলায় আবার ফিরে গেলেন.... বাস্তব সর্বদা কঠিন.
অতীতের এই স্মৃতি গুলোই আমাদের মনের কোণে লুকিয়ে থাকা সুখ. সেই টিভির পুরোনো কার্টুন, সেই পুরোনো গান, পুরোনো ফিল্ম, চিঠিতে যোগাযোগ, কলেজ, পড়াশুনো আর তার মাঝেই দুস্টুমি, পুজোয় বাবা মার হাত ধরে প্রতিমা দর্শন, ঘুড়ি ওড়ানো.... আর কত বলবো.... ভাবলেও কেমন লাগে আজ.

ha sir se to botai, ei bochor to koronar jonno protima dorshon r holo na pandel e giye, tobe onno bochor jotoi frnd er sate jotoi baroi na kano choto balay oi babar hat dhore thakur dakte jawar moja tai alada chilo....
[+] 3 users Like [email protected]'s post
Like Reply
#19
(09-12-2020, 01:28 AM)tarunpatra9386; Wrote: tai jonnoi bodhoy akhonkar generation er chele maye dar "man r hush" ta ektu kom.

বাহ্ দারুন বলেছেন.... আজকের দিনে ইন্টারনেটের ব্যাবহারে আমরা যেন সবাই ক্রিটিক্স, সবাই কত জ্ঞানী, কত কি জানি,আর তার থেকেও বেশি হিংসা ঘৃণা বেড়েই চলেছে.
অন্যকে ছোট করার একটিও চান্স কেউ ছাড়েনা,.... মান আর হুশ ক্রমে হারাতে হারাতে আমরা অমানুষ হয়ে যাচ্ছি......❤
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
#20
অনেক দিন পরে এসে দেখি আপনার নতুন গপ্পো.

দাদা.... আপনি তো সবরকমের গল্প লিখতে পারেন দেখছি. অ্যাডাল্ট, হরর, রোমান্টিক আর এখন ছোটদের জন্য এতো সুন্দর ছোট একটা গল্প. সত্যি গল্পটার মাধ্যমে যেভাবে অতীত আর বর্তমান সমাজের পার্থক্যটা তুলে ধরেছেন সেটা দারুণ. আগেকার সেই দিনগুলো, ছোটবেলা মনে করিয়ে দিলেন.

Like reps added
[+] 2 users Like Avishek's post
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)