01-12-2020, 03:43 PM
Indian Private Cams | Porn Videos: Recently Featured XXXX | Most Popular Videos | Latest Videos | Indian porn sites Sex Stories: english sex stories | tamil sex stories | malayalam sex stories | telugu sex stories | hindi sex stories | punjabi sex stories | bengali sex stories
নতুন অতীত ( সমাপ্ত)
|
01-12-2020, 03:57 PM
(01-12-2020, 03:37 PM)Mr Fantastic Wrote: বাহ্ ওই কাকোল্ড আর ম্যা ম্যা থেকে বেরিয়ে অন্যকিছু লিখছো দেখে ভালো লাগছে। বাঙাল ভাষা পড়তে অসুবিধা হয় তাও উদ্ধার করতে পেরেছি ! মনটা আমার বড় চঞ্চল একেক সময় একেক জিনিস ভালো লাগে । যখন যেমন ভালো লাগে তখন তেমন হাবিজাবি লিখি । গল্প লেখার সময় আমি নিজের ভালোলাগাকেই সবার উপর প্রাধান্য দেই । বাঙাল ভাষা নিয়ে একটু সমস্যা হতেই পারে কিছু কিছু যায়গায় অনেক ভুল দেখতে পাচ্ছি আমি নিজেই । কোন প্রস্ন থাকলে অবশ্যই করবেন আমি বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো । হয়ত এই হাবিজাবি গল্প পড়তে গিয়ে আপনার বাঙাল ভাষা শেখা হয়ে যাবে মন্দ কি মেলা দেখা আর কলা বেচা একসাথে হলে
01-12-2020, 05:12 PM
update please
02-12-2020, 12:00 AM
02-12-2020, 12:26 AM
অস্বীকার করবো না, আমাদের দেশের কিছু বাঙালি আজকাল বড্ড বেশি হিন্দি ইংরেজি মেশানো বাংলা বলছে যা সত্যিই অশিক্ষার পরিচয় রাখে। তবে শুদ্ধ বাংলা ভাষা আর বাঙাল ভাষার মধ্যে একটা পার্থক্য তো আছে। কলকাতায় তো সচরাচর বাঙাল ভাষা শোনা যায় না, তাই ওটায় ঠিক সড়গড় নই !
02-12-2020, 03:51 PM
কি বলে এই রিক্সা চালক , এটা মিয়াঁ বাড়ি , অসম্ভব দু পাশে পুকুর ছিলো বিশাল বিশাল , প্রায় দুই বিঘা করে এক এক টা পুকুর । মাঝে খোয়া বিছানো রাস্তা , রাস্তার দুই পাশে সাড়ি সাড়ি নারকেল গাছ । অথচ রিক্সা ওয়ালা আমাকে এনে একটা সরু গলির সামনে এনে নামিয়ে দিলো । ১০০ টাকা ভারা আদায় করে চলে ও গেলো । একটা সরু রাস্তাটা খুব বেশি হলে ৭ ফুট হবে পাশে । অথচ মিয়াঁ বাড়ির রাস্তা ২০ ফুট এর বেশি ছিলো । সরু গলির দু পাশে দালান উঠছে লম্বা করে । বোঝা গেলো দোকান হবে ।
“ ভাই এইটাই কি মিয়াঁ বাড়ির রাস্তা “ কর্মরত এক রাজমিস্ত্রি কে জিজ্ঞাস করলাম । প্রথমবার উত্তর দিলো না । দ্বিতীয়বার জিজ্ঞাস করতেই তার সারগেদ জবাব দিলো “ এই রস্তা ধইরা সোজা চইলা জান পাইবেন “ আমি ঢুকলাম সেই শুরু গলিতে । হ্যাঁ একটু একটু পরিচিত মনে হচ্ছে এখন । দুই পাশে দুটি পুকুর এর কংকাল পড়ে আছে । জঙ্গুলে লতা পাতা দিয়ে এমন ভাবে ঢেকে আছে যে একটা মানুষ অনায়েসে এর উপর দিয়ে হেঁটে যেতে পারবে । আমার এই বিশ্বাস কে সত্য প্রমানিত করতেই মনে হয় একটি কুকুর কে দেখলাম কোন কিছুর পিছু নিতে ওই লতা পাতার উপর ভর করে । ঠিক পুকুর এর মাঝ বরাবর । ওই তো দেখা যাচ্ছে দোতলা দালান এর ছাদের কার্নিশ । শ্যাওলা পড়ে বট গাছ গজিয়ে একটা জঙ্গল ভাব চলে এসেছে । অথচ আজমত চাচা কে তিন্ মাস আগে দের লক্ষ্য টাকা পাঠিয়েছি আমি বাড়ি মেরামত এর জন্য । চাচা নিজেই চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন যে দালান মেরামত না করলে আর থাকা যাচ্ছে না । রাস্তার শেষে এবং বাড়িতে ঢোকার পথে একটি বাছুর বাধা দেখলাম । আর সেই বাছুর কে খাবার দিচ্ছে একটি মেয়ে । পড়নে ঘিয়ে রং এর সাড়ি । “ এই যে শুনছেন “ আমি ডাকতেই মেয়েটি ঘুরে তাকালো । আমি একটা ধাক্কা খেলাম বড়সড় । রাবু , এ তো আমাদের রাবু । কিন্তু রাবু বয়স তো এতো কম হওয়ার কথা না । এই মেয়ের বয়স খুব বেশি হলে ২৫-২৬ হবে । রাবু আমার চেয়ে ২ বছর এর বড় ছিলো । আমার দাদার এক জন দূরসম্পর্কের ভাই এর নাতনী ছিলো রাবু , দাদার ওই ভাই পরিবার নিয়ে আমাদের বাড়িতেই থাকতো , কাজ করতো ক্ষেতে । আব্বু যখন এখানকার পাঁট চুকিয়ে চলে গেলো দাদার ওই ভাই ই এই বাড়ির দেখা শুনার দায়িত্বে ছিলো এখন তার ছেলে আজমত চাচা আছেন । “ কারে চান ?” চিকন ঝাঝালো কন্ঠে জিজ্ঞাস কলো মেয়েটি মেয়েটির প্রশ্ন শুনে আমি সম্বিৎ ফিরে পেলাম তবে চোখ ফেরাতে পারলাম না । “ আজমত চাচা আছেন ?” “ নানা জান বাইরে গেছে আপনে পড়ে আসেন “ মেয়েটি আবার বাছুর কে খাবার দিতে ব্যেস্ত হয়ে পড়লো । আমি অবাক হয়ে দেখতে লাগলাম মেয়েটি কে । সেই নাক চোখ মুখের গরন , দুধে আলতা গায়ের রং , শরীর এর বাধন ও এক , বেশ ছড়ানো পাছা , গোল মতন আর ভারি । কুঁজো হয়ে থাকার কারনে পাছার গড়ন স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে । মেয়েটি মনে হয় আমার চাহনি টের পেয়েছে তাই আবার পিছনে ফিরে তাকালো , চোখে মুখে বিরক্তি “ আপনে কি কিছু কইবেন ?” “জী আমি আজমত চাচার কাছে এসেছি “ “ বললাম তো উনি বাড়ি নাই “ মেয়েটির গলার স্বর কঠিন হয়ে আসছে মনে হচ্ছে অনেক রেগে যাচ্ছে । তাই আমি ব্যাপারটা পরিষ্কার করতে চাইলাম । “ আসলে আমি এখানে থাকতে এসেছি “ “ থাকতে আসছেন মানে ? আপনে এইখানে থাকবেন ক্যান ? এইটা কি কোন হোটেল? “ মেয়েটির এমন রেগে যাওয়া দেখে একটু ভরকে গেলাম । কি বলবো বুঝতে পারলাম না , কিভাবে বলবো এই বাড়ির মালিক আমি । অবশ্য বাড়িটিকে নিজের বলে আজকাল আর মনেও হয় না । “ আমি আজমত চাচার পরিচিত “ “তাইলে আপনের আজমত চাচার কাছে জান আমার কাছে বইলা কোন লাভ নাই “ এই বলে মেয়েটি গট গট করে চলে গেলো , আমি রাস্তায় দারিয়েই মেয়েটির চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম । হাটার তালটা একদম রাবুর মতো । কেমন জানি একটু নেচে নেচে হাটা। হঠাত আমার মাথায় এলো মেয়েটি আজমত চাচা কে নানা জান বলছে , এর মানে মেয়েটি রাবুর ই মেয়ে । রাবু ছাড়া আজমত চাচার কোন মেয়ে ছিলো না । আসলে এতো বছর একা একা এসব সম্পর্ক থেকে দূরে থাকার কারনে বুঝতে একটু দেরিই হয়েছে । নয়তো আমার প্রথম ই বোঝা উচিৎ ছিলো এটা রাবুর মেয়ে । তাহলে কি রাবুও এদিকেই আছে নাকি মেয়ে বেড়াতে এসেছে সুধু , আসলে আজমত চাচার সাথে ওনার পরিবার নিয়ে আমার তেমন কথা হয় না তাই কে কি অবস্থায় আছে সেটাও জানা নাই । রাবুর উপস্থিতি থকার সভাবনা আমাকে নতুন করে একটু ভাবিয়ে তুলল , কেমন আছে রাবু , আর এখন দেখতেও বা কেমন হয়েছে । একসময় আমার মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার মতো রুপের অধিকারিনির উপর বয়স তার থাবা কতটা বসাতে পেরেছে সেটা দেখার খুব আগ্রহ হছে। আবার অন্য দিকে এতদিন পর দেখা হলে পরিস্থিতি কেমন হবে সেটাও বুঝতে পারলাম না । “ কে আপনে ?” ধ্যান ভাংলো পেছন থেকে একজন পুরুষ মানুষ এর কণ্ঠ শুনে । পেছনে তাকিয়ে দেখি সাদা পাঞ্জাবি আর লুঙ্গী পড়া এক লোক মুখ ভর্তি সাদা চাপ দাড়ি , মাথায় নৌকা আকৃতির সাদা টুপি । “এইখানে দাঁড়াইয়া আসেন যে “ “ আমি মিয়াঁ বাড়ি এসেছি আজমত চাচার কাছে “ “নাম কি আপনের ? আইসেন কুনহান থেইকা ?” “ আমার নাম সরিফ “ বাকি টুকু আর বলতে হলো না মনে হলো বুড়ো লোকটি এক লাফে মাটি থেকে তিন হাত উপরে উঠে গেলো । “ আরে ছোট মিয়াঁ আপনে রাস্তায় দাঁড়াইয়া ক্যান , আমারে তো একটা খবর ও দেন নাই , আহারে ক্যামনে আইলেন এই পর্যন্ত ?” বুঝতে বাকি রইলো না এই লোকটি ই আজমত চাচা “ না না চাচা আসতে আসুবিধা হয়নি , বাসে বাজার পর্যন্ত এসে রিক্সায় চলে আসছি “ “ আহা রে আমারে একটা খবর দিলে আমি বাজারে গিয়ে বইয়া থাকতাম “ তারপর লাগেজ আর কাঁধ ব্যাগ আমার কাছ থেকে প্রায় ছোঁ মেরে নিয়ে বলল “ আহেন আহেন বিতরে আহেন “ চাচা বয়সে কম করে হলেও আমার চেয়ে বয়সে ৩০ বছরের বড় হবেন । কিন্তু হাটায় ওনার সাথে পেরে ওঠার জো নেই আমার । আমার আনা লাগেজ আর কাঁধ ব্যাগটি নিয়েও ওনার গতি আমার প্রায় দ্বিগুণ । বাড়িতে ঢুকেই হাঁক ছারতে লাগলেন । “ কইরে ঝুমা কই গেলি পোড়াকপালনি এদিকে আয় দেখ কে আইসে “ বাক্য শেষ হতে না হতেই আবার ডাক শুরু করলেন আজমত চাচা ঝুমা নামের মেয়েটিকে কোন উত্তর দেয়ার সুযোগ না দিইয়েই “ ওই ঝুমা গেলি কই “ নিজেই আমার ব্যাগ দুটো আমাদের পুরনো বৈঠক খানার ফাটল ধরা বারান্দায় রাখলো । চাচার ডাকে ঝুমা না এলেও একটি ৭-৮ বছরের বালক বেড়িয়ে এলো কালো গায়ের রং লিক লিকে দেহের মাঝে কেউ যেন বেলুন এর মতো ফুলা একটা পেট বসিয়ে দিয়েছে আর সেই পেটের নিচের দিকে বোতলের কর্ক এর মতো ফুলে ওঠা নাভি । “ মায় গরুর খাওন দেয় বড় আব্বা” “ শিগগীর যা তো বাজান তোর মায় রে ডাইকা আন শিগগীর যা “ ছেলেটি যাওয়ার জন্য দৌর শুরু করতেই ধমকে উঠলেন আজমল চাচা “ওই হারামজাদা সালাম করলি না তোর নানা লাগে “ খুব অস্বস্তি অনুভব হলো নানা শব্দটি শুনে , আমি কারো নানা শুনতেই কেমন জানি লাগে “ থাক থাক বাবা লাগবে না তুমি যাও “ সালাম করতে আসা কালো ছেলেটিকে কোন রকমে বিরত করলাম । কিন্তু আজমত চাচা গর্জে উঠলো “ লাগবো না মানে অবশ্যই লাগবো কর সালাম কর “ অনেকটা আজমত চাচার ভয়েই সালাম গ্রহন করলাম আমার “নাতির”!!!!!!। সালাম গ্রহন করতে করতেই সেই মেয়েটি চলে এলো কোমরে গোজা আঁচল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে । “ কি হইসে কে মরসে “ এসেই খেঁকিয়ে উঠলো তারপর আমাকে দেখে থেমে গেলো । “ কি হইসে মানে মেহমান বাইরে খারাইয়া রইসে , আর তুই বলস কি হইসে “ “ ইনি যে মেহমান সেইটা তো আমারে বলতে হইব , আইয়া ভোন্দার মতন খারাইয়া থাকলে হইব” “ ওই ছেড়ি সাবধানে কথা ক জানস ইনি কে উনি আমাগো ছোট মিয়াঁ “ “ ছোট মিয়াঁ হইলে উনি মেহমান হইব ক্যান উনি তো বাড়ির মালিক , আমরা অনাগো চাকর বাকর “ কথা বার্তায় রাবুর ছায়া স্পষ্ট মেয়েটির মাঝে , রাবু নিজেও এমন ত্যাড়া বাঁকা কথা বলতো “ হইসে মুখপুড়ি ওনার লইগা ঘর পরিষ্কার কর “ “ কোন ঘর দালানের নাকি বৈঠক খানার” “ দালানের ঘর পরিষ্কার করবি আবার কি , উনি কি বৈঠক খানায় থাকবো , বাড়ির পোলা কোনদিন বৈঠক খানায় থাকে? “ “ দালানে ঘর কোনটা ঠিক করমু একটা ঘর ও ঠিক নাই সাপ খোপ ও থাকতে পারে” এবার একটু চুপসে গেলো আজমত চাচা , নিচু গলায় কি যেন বলল ঝুমা নামের মেয়েটিকে । ঝুমা গজ গজ করতে করতে চলে গেলো । আজমত চাচা আমার দিকে চেয়ে একটা অপ্রস্তুত হাসি দিলো । আমি বুঝতে পারলাম আজমত চাচা আমার কাছ থেকে আনা টাকার একটি পয়সা ও মিয়াঁ বাড়ি মেরামত এর কাজে ব্যাবহার করেন নি । “ কিছু মনে করবেন না ছোট মিয়াঁ , ওই একটু এমন ই একদম মায়ের মতো হইসে , রাবুরে তো আপনে দেখসেনই কিমুন ঘাড় তেড়া আসিলো” “না না কিছু মনে করিনি “ এই বলে আমি বাড়িটার চার পাশ চোখ বুলিয়ে দেখতে লাগলাম ।
02-12-2020, 06:34 PM
একটু নতুন ধরণের লেখা ! বাঙাল ভাষা বুঝতে অসুবিধা হলেও উদ্ধার করা যায় ! চালিয়ে যান মামা !
02-12-2020, 09:15 PM
দাদা, খাসা হচ্ছে। লিখে যান।
মা-ছেলে সঙ্গম দিয়েন, মশাই। বাংলা চটি পড়ুন, ঠাকুরদা'র সেরা চটির সাথেই থাকুন
03-12-2020, 02:26 PM
বদরুল ভাই অনেকদিন পর আমার গল্পে আপনার কোন কমেন্ট পরলো তাও আবার গল্প নিয়ে নয় । যাই হোক আপনি গল্প পরছেন তাতেই আমি খুসি ।
ধন্যবাদ "দাদা অফ ইন্ডিয়া" আসলে আপনি আর মি. ফ্যান্টাস্টিক যাকে বাঙ্গাল ভাষা বলছেন ওটা একটা আঞ্চলিক ভাষা । তাই আপনাদের পড়তে অসুবিধা হচ্ছে । ধন্যবাদ zaq000 চোদন ঠাকুর ভাই অতান্ত দুখের সাথে জানাচ্ছি এখানে মা ছেলে সম্পর্ক নেই । তবুও সাথে থাকুন হয়ত আপনার ভালো লাগতেও পারে ।
08-12-2020, 06:19 PM
অসম্ভব সুন্দর শুরু! একটাই অনুরোধ, থেমে যেন না যায়!!!
08-12-2020, 09:16 PM
14-12-2020, 08:25 PM
16-12-2020, 03:47 PM
নির্লজ্জতার একটা সীমা থাকা উচিৎ । মনে হচ্ছে সেটা তোর নেই এক শুক্রবার গিয়ে আরেক এসে যাচ্ছে ।
16-12-2020, 07:39 PM
কিছু মানুষের কথাতে মনে হয় লেখক তার কাছে নিজেকে বিক্রি করে বসে আছে। ভাই, নোংরা মন্তব্য করে নিজের পরিচয় মানুষের কাছে উন্মোচন করে লাভ কি??
19-12-2020, 02:42 PM
কি বিশাল ছিলো একসময় এই মিয়াঁ বাড়ি । আর এখন , নিজেকে একটু একটু অপরাধী মনে হচ্ছে । মনে হচ্ছে জীর্ণ বাড়িটা রাগে চুপ করে আছে কিছু বলছেনা , বুকের জমানো ব্যাথা গুলি নিয়ে আমার কাছ থেকে মুখে ফিরিয়ে রেখেছে । বোবা কান্নায় বুঝিয়ে দিতে চাইছে তার এই দশার জন্য একমাত্র আমিই দায়ী । হঠাত করে তিরিশ বছর পর বাড়িটাকে খুব আপন বলে মনে হচ্ছে । মনে হচ্ছে আমি নিজের খুব আপন একজন কে অনেকদিন আগে ফেলে গিয়েছিলাম আজ হঠাত তাকে রাস্তায় জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় খুঁজে পেয়েছি । বাড়িটাকে দেখে আমার বুকটা তেমনি করে হু হু করে উঠলো যেমনটা ত্রিশ বছর আগে একে ছেড়ে যাওয়ার সময় হয়েছিলো । যদিও পুরনো কেউই আর নেই তবুও বাড়িটা তো আছে , আর আছে সেই পুরনো সব প্রিয় মানুষ গুলর সৃতি । জীর্ণ বাড়িটি এখনো দাড়িয়ে আছে সেই সব প্রিয় সৃতি গুলর এ্যালবাম হয়ে ।
এখনো মনে পড়ে সেই দিনটি যেদিন আমি জানতে পেরেছিলাম এই বাড়ি ছেড়ে আমাকে চলে যেতে হবে । আমার বাবা খুব ছোট বেলা থেকেই বাইরে থেকে পড়াশুনা করায় এই বাড়ির প্রতি তার তেমন কোন মায়া ছিলো না । বরং এই গ্রাম্য পরিবেশ থেকে দূরে থকার জন্য সে সবসময় হাঁসফাঁশ করতো । নিজে শহরে থাকতো সেখানে ব্যাবসা করতো । মাসে এক সপ্তাহের জন্য গ্রামে আসতো । কিন্তু বাবা এই এক সপ্তার জন্য ও এই গ্রাম কে সহ্য করতে পারতেন না । উনি চাইতেন আমাকে আর মা কে শহরে নিয়ে যেতে । কিন্তু পারতেন না আমার দাদাজান এর জন্য । আমার দাদাজান এর সাথে বাবার প্রায় এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হতো । নাহ ঝগড়া নয় মিয়াঁ বাড়ির ছোটরা কখনই বড় দের সাথে উচ্চ স্বরে কথা বলতো না । তাই বাবা প্রায় দাদাজান কে অনুরোধ করতেন আমাদের শহরে নিয়ে যাওয়ার জন্য । কিন্তু দাদাজান কিছুতেই রাজি ছিলেন না । বলতেন “তোমার সমস্যা হলে তুমি ওখানে আর একটা বিয়ে করে নাও । কিন্তু আমার ছেলের বউ আর নাতি এই বাড়ির বাইরে যাবে না । যদিও মিয়াঁ বাড়িতে একাধিক বিয়ে করা তেমন কোন ব্যাপার ছিলো না তবুও আমার বাবা আর তৃতীয় বিয়ে করেন নি । অপেক্ষা করেছিলেন নিজের বাবার শেষ সময়ের জন্য । হ্যাঁ দাদাজান এর মৃত্যুর এক সপ্তার মাঝেই বাবা ঘোষণা করেছিলেন এই বাড়িতে আমাদের আর থাকা চলবে না । প্রতিবাদ করার বয়স ও সাহস কোনটাই আমার ছিলো না । তবে খুব কান্না পেয়েছিলো , আর সে কান্না আমি চেপে রাখিনি কেঁদেছিলাম সবার চোখের আড়ালে । সুধু একজন দেখেছিলো সেই কান্না সে ছিলো রাবু । এ বাড়ির এক আশ্রিতের মেয়ে । আমি বাদে অন্য আর একজন ছিলো যার চোখের জলেও সিক্ত হয়েছিলো এ বাড়ির উঠান , আমার মা । বাবা কে অনেক অনুনয় বিনয় করে বলেছিলো তাকে যেন এই বাড়ি থেকে দূরে না নিয়ে যায় । কিন্তু কোন কাজ হয়নি । মিয়াঁ বাড়ির বউরা সুন্দর পুতুল এর চেয়ে বেশি কিছু নয় । যাদের কাজ সুধু সোভা বর্ধন এবং মনোরঞ্জন । মায়ের শত কান্নাভেজা অনুরধ গুলো বৃথা করে দিয়ে দাদাজানের চল্লিশার দিন আমারা এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাই । আশা ছিলো অন্তত কিছুদিন পড়পড় এসে ঘুরে যেতে পারবো । কিন্তু সে আশাও আঁতুড় ঘরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলো । ঢাকা গিয়েই আমারা জানতে পেরেছিলাম । আমারা ঢাকাও থাকছি না । আমারা চলে গেলাম স্পেন সেখান থেকে সপ্নের দেশ যুক্তরাষ্ট্র । যার জাকজমক এর কাছে মিয়াঁ বাড়ি কিছুই না । আর সেই জাঁকজমক অল্পদিনেই আমার কচি মন থেকে মিয়াঁ বাড়ি আর এই গ্রামে ফেলে যাওয়া মানুষ গুলির সৃতির উপর অন্ধকার একটি পর্দা টানিয়ে দিয়েছিলো । কিন্তু মায়ের উপর কোন আসর পরেনি মা কিছুতেই ভুলতে পারেনি তার প্রিয় বাড়ি কে । অবশ্য বেশিদিন মা কে সহ্য করতে হয়নি , মাত্র তিন বছর বেঁচে ছিলেন মা । অবশ্য একটা দুঃখ আমাকে সব সময় কুরেকুরে খায় সেটা হলো মায়ের কবর ওখানে হওয়া । “ ছোট মিয়াঁ খারাইয়া রইলেন যে বহেন না , কত দূর থাইকা আইসেন , হের উপরে ঐ ঝুমা বান্দিটা আপনেরে কতক্ষণ বাইরে খাড়া করাইয়া রাখসে কে জানে “ আজমত চাচার কথা শুনে ধ্যান ভাংলো , বললাম “ কোন সমস্যা নেই চাচা , চার ঘণ্টা তো বাসে বসেই ছিলাম এখন দাড়িয়ে থাকতেই ভালো লাগছে । “ “ কি দেখেন ছোট মিয়াঁ , বাড়ির অবস্থা তো , আমি জতদিন পারসি বাড়ির জৌলুশ নষ্ট হইতে দেই নাই , এহন আর পারি না বয়স হইসে তার উপর ভিলেজ পলিটিক্স এ পইড়া গেসিলাম , আমারে কিন্তু দোষ দিয়েন না । হ একটা অন্যায় আমি করসি ছোট মিয়াঁ সেইটা হইলো আপনের কাছ থাইকা টেকা আইন্না বাড়ির কাম করিনাই । কিন্তু বিশ্বাস করেন সেইটা আমি মিয়াঁ বাড়ির ভালার লইগাই করসি । দোকান ঘর গুলা উঠলে বাড়ির দশাও একটু বদলাইবো “ কথা গুলি একনাগাড়ে বলে একটু থামল আজমল চাচা । কি বলবো বুঝতে পারছি না , ওনার সাথে কি আমার এক মোট পোষণ করে কিছু বলা উচিৎ , উনি সত্যি সত্যি আমার কাছ থেকে টাকা এনে বাড়ির কাজে না খরচ করে লজ্জা বোধ করছেন কিনা সেটাও বুঝতে পারছি না। তাই চুপ থকাই শ্রেয় মনে করলাম । কিন্তু আজমল চাচা থামলেন না । “ বুজলেন ছোট মিয়াঁ , হইতে পারি আমি এই বাড়ির কেউ না । কিন্তু আমার নাড়ি ও এই বারিতেই পোতা । হেইর লইগা এই বাড়ির লইগা জানের চাইতেও বেশি মায়া লাগে । ১৫ বচ্ছর টানা চেরমেন আসিলাম আমি । বাড়িটারে গেরামটারে ঠিক অমনেই চালাইসি যেমনে আপনের দাদাজান চালাইতো । কিন্তু ঐ ফকিরনীর পোলারা পলিটিক্স করলো আমার লগে । জেইলে পাঠাইল আমারে তার পর এই অবস্থা। তিনটা মানুষ আমারা আর কতোটুক জায়গা লাগে । পুরা বাড়ি জঙ্গল হইয়া পইড়া রইসে “ একটা দীর্ঘশ্বাস পড়লো আজমল চাচার , মনে হচ্ছে এই বাড়িটাকে সত্য ওনার কিছু মায়া আছে । আর না হওয়ার কারন ও আমি দেখি না জন্ম থেকেই এই মিয়াঁ বাড়ি আছেন । “আচ্ছা চাচা ঐ দিকে একটা ঘর ছিলো না “ বাড়ির পূর্ব দিকে যেখানে লতানো জংলা গাছের একটি জঙ্গল তৈরি হয়েছে সেদিকে ইশারা করে বললাম আমি । শেষের দিকে ঐ ঘরটা আমার খুব প্রিয় হয়ে উঠেছিলো । দিনে একবার হলেও ঐ ঘরে আমি যেতাম । একা নয়, এই আজমল চাচারই মেয়ে রাবেয়ার সাথে । “ কোন ঘর এর কথা বলছেন ? ঐ গুদাম ঘরের কথা ? নাহ ঘর আর নাই । একবার ঝর হইলো তখন ভাইঙ্গা গেসে । হের পর আর নতুন কইরা ঐ ঘর বানানোর দরকার হয় নাই “ “ আচ্ছা কাকা রাবু কোথায় , রাবুর মেয়ে এখানে থাকে আর রাবু কই “ “ মাইয়া আমার আর বাইচ্চা নাই ছোট মিয়াঁ , পোড়া কোপালি আসিলো , আপনেরা চইলা যাওয়ার মাস দুই এর মইদ্ধে বিয়া দিয়ে দিসিলো আব্বায় , আর বিয়ার দুই বচ্ছর পর স্বামী হারায় এর পর আমার কাছেই থাকতো । কিন্তু কি রোগ যে হইলো কোন ডাক্তার ধরতে পারলো না। শেষে মাইয়া আমার মইরা গেলো । “ বুকের ভেতর একটা মোচর অনুভব করলাম , রাবুর মৃত্যু সংবাদ শুনে । আমার অবশ্য আগেই বোঝা উচিৎ ছিলো রাবু আর নেই । ও বেঁচে থাকলে ওর মেয়ের এ বাড়িতে সন্তান সহ থকার কথা না । জীবনে অনেক মেয়ে দেখছি নানা দেশের নানা রঙ এর কিন্তু গ্রাম্য মেয়ে রাবুর মত কোন মেয়ে আমি আজো দেখিনি । যেমনি সুন্দরী ছিলো তেমনি আকর্ষণীয় ছিলো ওর চাল চলন । ওকে দেখে মনে হতো ভুল সময়ে ভুল যায়গায় জন্ম হয়েছিলো ওর । আজকালের অনেক উচ্চ শিক্ষিত মেয়েদের চেয়ে রাবু ছিলো অনেক এগিয়ে । সব সময় হাঁসি খুসি থাকতো মেয়েটা , ও যেখানেই থাকতো ওখানটায় পজেটিভ একটা আলোতে আলোকিত হয়ে যেত । তখনকার অন্য মেয়েদের মতো অন্ধকার জরানো ছিলো না রাবুর মন মননে । এর জন্য অবশ্য ওকে নানা রকম কটু কথা শুনতে হতো । কিন্তু ওসব কিছুই রাবুর আলো ঝকঝকে মানসিকতার উপর ছায়া ফেলতে পারেনি । পাগলী ছিলো একটা । “ ঘর ঠিক হইসে নানাজান , ওনারে নিয়া আসেন । আমি পানি নিয়া আসি গোসলের লইগা । “ “ ঐ ছেমড়ি সাবধানে কথা ক , ওনারে কি? ওনারে কি ? হুজুর কবি বুঝছস “ “ ঐসব হুজুর টুজুর আমি কইতে পারুম না আপনের ইচ্ছা হইলে আপনে কন “ এই বলেই মেয়েটা চলে গলো কোমরে আচল গুজতে গুজতে । মেয়েটাকে দেখছি আর অবাক হচ্ছি , কেমন ঝাঝালো এর কথা বার্তা , হ্যাঁ বাবুর চেয়ে অনেক বেশি । রাবু নিজেও অনেকটা এমন ছিলো নিয়ম কানুনের তেমন ধার ধারত না নিজের ইচ্ছে মতন চলতো । আমাদের মিয়াঁ বাড়ির কড়া শাসনের তোয়াক্কা না করে দিব্বি ঘুরে বেড়াতো । আর ওর ঐ ব্যাপারটাই আমাকে বেশি আকর্ষণ করতো । “ চলেন ছোট মিয়াঁ , আপনেরে ঘরে লইয়া যাই “
19-12-2020, 10:34 PM
thanks heaps
21-12-2020, 12:01 PM
(This post was last modified: 21-12-2020, 12:03 PM by gang_bang. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(16-12-2020, 07:39 PM)Rajababubd Wrote: কিছু মানুষের কথাতে মনে হয় লেখক তার কাছে নিজেকে বিক্রি করে বসে আছে। ভাই, নোংরা মন্তব্য করে নিজের পরিচয় মানুষের কাছে উন্মোচন করে লাভ কি?? ভুল বুঝবেন না এই ছেলেটার সাথে আমার মুটামুটি ভালো সম্পর্ক । তাই একটু মশকরা করি এতে লেখক নিজেও তেমন গোস্বা করে না ।তবে আপনার কথায় যুক্তি আছে ভবিষ্যতে সাবধান হয়ে যাবো যেন পাবলিক ভাবে এমন কমেন্ট না করি । ধন্যবাদ
27-12-2020, 12:13 AM
তারপর কী হলো?
01-01-2021, 04:45 PM
আমি দেশে এসেছিলাম অন্য একটা কাজে , আমার প্রথম স্ত্রী আর আমার একমাত্র মেয়ে অনিলা কে দেখতে । অনেকদিন দেখা হয় না, মেয়ের বয়স যখন ৪ বছর তখন মেয়েকে নিয়ে ওর মা দেশে চলে আসে এর পর আর দেখা হয়নি । ভিডিও কলে কথা হয় মাঝে মাঝে , কিন্তু সেটাকে কি ঠিক দেখা বলে যায় কিনা আমি বুঝতে পারি না । হঠাত একদিন মেয়েটি বলল ও আমার সাথে দেখা করতে চায় । কেঁদে ফেলেছিলো অনিলা , আমি তো হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম মেয়ের আচরনে । আগে কখনো এমন করতে দেখিনি ওকে । বিচলিত হয়ে পরেছিলাম খুব , অন্য সব কিছুর মতো আমি আমার মেয়ের প্রতিও তেমন কোন দায়িত্ব পালন করেনি । সেই যে ডিভোর্স এর পর চলে এলো মায়ের সাথে এর পর আমার একবারো মনে হয়নি একবার গিয়ে দেখা আশা দরকার । হ্যাঁ খারাপ লেগেছিলো খুব , অনেক নির্ঘুম রাত গিয়েছে মেয়ের কষ্টে । মেয়েটা আমার খুব নেওটা ছিলো যে , এই পসচিমা কালচারের কেন্দ্র ভুমিতে থেকেও বাবার সাথে ঘুমানর মতো দেশি বায়না সে ধরত ।
অনিলাকে মিস করতাম কিন্তু দেশে এসে মেয়েকে বছরে একবার দেখে যাওয়া সেই বুদ্ধি আমার হয়নি । তাই যখন মেয়ে কেঁদে পরলো তখন টনক নড়ল । চিন্তা করলাম মেয়ের ১৬ তম জন্মদিনের দিক মেয়েকে সারপ্রাইজড করবো । যেই ভাবা সেই কাজ কাউকে না জানিয়ে চলে এলাম । আর এসে নিজের বোকামির জন্য নিজেই বিপদে পড়লাম । মেয়ে তার মা আর সৎ বাবার সাথে ইউরপ ভ্রমনে গিয়েছে । আমি তো আর বলে কয়ে আসিনি দোষ আমারি। ভেবে দেখলাম কি দারকার মেয়ের ইউরোপ ভ্রমন নষ্ট করার । দেশে এসেছিলাম ১০ দিনের ছুটিতে । কি করবো কি করবো ভাবছিলাম , একবার মনে হলো থাইল্যান্ডের টিকেট কেটে চলে যাই সপ্তা খানেক আরামে কাটিয়ে আসি । থাই মেয়েগুলি দারুন হয় সেই সাথে একটা রুচির পরিবর্তন হবে।সাদা চামড়া ছেড়ে একটু ব্রাউন চামড়ার স্বাদ পাওয়া যাবে । কিন্তু সে চিন্তা বাদ দিয়ে হঠাত করে এই কিম্ভূত চিন্তা মাথায় এলো , গ্রাম থেকে একবার ঘুরে এলে কেমন হয় । দালান মেরামত করার জন্য কিছু টাকাও পাঠিয়েছিলাম , নিশ্চয়ই এতদিনে মেরামত হয়ে গেছে । যেই ভাবা সেই কাজ চলে এলাম বাড়িতে । আর এসে দেখলাম বাড়ি আর বাড়ি নেই জঙ্গলে পরিনত হয়েছে । মোটে তিনটে লোকের বাস এক সময়ের গমগমে মিয়াঁ বাড়িতে । তার মাঝে একজন জেল খাঁটা প্রাক্তন চেয়ারমেন , একজন অপুষ্টিতে ভোগা পেটে ক্রিমি ভরা বাচ্চা ছেলে আর , রাবুর মেয়ে । হ্যাঁ এই একমাত্র একটি মানুষ আজ দুই দিন হলো আমাকে আটকে রেখছে । হ্যাঁ আজকে নিয়ে তিনদিন হচ্ছে আমার মিয়াঁ বাড়ির ভাঙ্গা দালানে । প্রথম রাতেই ভেবেছিলাম পরদিন উঠে চলে যাবো , কিন্তু যেতে পারিনি ঝুমা মেয়েটা প্রথম দিন অমন রুক্ষ আচরন করলেও পরদিন সকালে একদম ভিন্ন আচরন শুরু করে । দারুন খেয়াল রাখছে মেয়টি আমার । সারাদিন বাড়ির কাজ কর্মে ব্যাস্ত সময় কাটালেও জখনি সময় পায় আমার সাথে এসে গল্প করে । একটা গ্রাম্য মেয়ের সাথে গল্প করে যে আমি মজে যাবো সেটা আমি ভাবতে পারিনি । এছাড়াও মেয়েটির প্রতি একটা কেমন জানি টান অনুভব করছি আমি , একে তো রাবুর মেয়ে তার উপর দেখতে অনেকটাই রাবুর মতো । প্রথম দিন যেমন মনে হয়েছিলো যদিও ততোটা মিল নেই তবে অনেকটাই আছে । রাবুর চেয়ে একটু মোটা ঝুমা , হ্যাঁ বয়স হয়েছে তার উপর এক সন্তানের মা হয়েছে । তবুও শরীরের গঠন এক নয় । আমি যে রাবু কে চিনতাম সে ছিলো ১৯ এর ঝলমলে কিশোরী আর ঝুমা ৩০ এর মধ্যবয়স্ক বাঙালি নারী । তবে ঝুমার কথা বলার সময় হাত নাড়া হাঁসি এ সব অবিকল রাবুর মতো । “ ছোট মিয়াঁ মামা , আপনে কি খালি ঘরে বইসা থাকন আর জঙ্গলে হাইটা বেড়ানোর লইগা বাড়ি আইসেন ? একটু বাইরে ঘুরা ঘুরি করেন “ হঠাত ঝুমার ডাকে ধ্যান ভাংলো । কি কিম্ভূত নামেই না ডাকে ঝুমা আমাকে “ ছোট মিয়াঁ মামা “ । “ ঝুমা আমি তোমাকে একশো বার বলেছি সুধু মামা ডাকবে , আমি আর তোমার মা বন….. ভাই বোনের মতো ছিলাম বুঝেছ “ আমি ঝুমার দিকে তাকিয়ে বললাম । “ বুঝলাম , কিন্তু নানাজান তো হুজুর ডাকতে কয় আপনেরে “ “ খবরদার একদম ঐ দিকে যাবে না হুজুর যেদিন ডাকবে সেদিন আমি চলে যাবো “ আমি হাসতে হাসতে বললাম “ ঠিক আছে হুজুর ডাকুম না , তয় ছোট মিয়াঁ মামা ডাকতে আমার মজা লাগে “ ঝুমাও হাসতে হসাতে বলল তারপর বলল “ আপনের কি পুরান বন্ধু বান্ধব কেউ নাই এই গেরেমে , হেগো লগেও তো দেখা করতে পারেন “ “ আছে তো লাভ্লু , করিম , নাল্টু , আরও অনেকে ছিলো “ আমি একটা গভির নিঃশ্বাস ছেড়ে বললাম । ভেবে অবাক হলাম ছোট বেলার অনেক সাথীদের আমি নাম মনে করতে পারছি না । “ ওরে আল্লা করিম মামায় আপনের বন্ধু !!!!!!” অবাক হয়ে বলল ঝুমা “হ্যাঁ , কিন্তু তুমি এমন অবাক হলে কেনো ঝুমা , ও তো আমারি বয়সি “ “ হেয় তো অহন আমাগো চেরমেন , নানাজানেরে জেলে তো হেয় পাঠাইসে । আপনে জানেন না “ চোখ দুটো বড় বড় করে বলল ঝুমা । আমি থমকে তাকিয়ে রইলাম , ঝুমার দিকে একদম রাবুর মতো । যেদিন আমি প্রথম ওকে হাত ধরে টেনে গুদাম ঘরে নিয়ে গিয়ে বলেছিলাম । নাল্টুর সাথে আর কথা বলবি না সেদিন রাবু আমার দিকে এমন চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছিলো । এখন ঝুমা তাকিয়ে আছে, ঝুমার মুখের প্রতিটি কোষ এখন যে অবস্থায় আছে মনে হচ্ছে সেদিন রাবুর ও তাই ছিলো । “ আপনে কিন্তু হের লগে দেহা কইরেন না , মিয়াঁ বাড়ির কাউরে হেয় দেখতে পারে না , শেষে কি থাইকা কি কইরা ফালায় “ আমি হেঁসে ফেললাম “ আরে নাহ করিম আর আমি ছোট বেলার বন্ধু , আমারা যেমন ভালো বন্ধু ছিলাম তেমন মারামারি ও করতাম “ তারপর আবার জিজ্ঞাস করলাম “ আচ্ছা লাভ্লু আর নাল্টুর কথা কিছু জানো তুমি ?” “ লাভ্লূ মামায় তো গেরামে থাকে না অনেক খারপ একটা ঘটনা ঘটসে হের লগে হের পর থাইকা হেয় গেরাম ছাইরা গেসে গা । আর নাল্টু কে ? হের আসল নাম কি নকিব “ মেয়ে “ হ্যাঁ হতে পারে আমার মনে নেই , ওরা বেশ বড়োলোক ছিলো ওর বাবার নৌকা ছিলো অনেক “ নাল্টুর আসল নাম আমার মনে নেই তাই কিছু হিন্টস দিলাম ঝুমা কে । “ হ হ বুঝছি ওনার নাম ই নকিব আলি , হেয় এহনো এই গেরামেই থাকে , নৌকার কারবার করে মেলা নৌকা ওনার , হেয় আর করিম মামায় মিল্লা ই তো নানাজান রে জেলে পাঠাইসে । আপনের দুই বন্ধ ই তো মিয়াঁ বাড়ির শত্রু “ এই বলে হি হি করে হেঁসে ফেলল ঝুমা । তারপর বলল “ আচ্ছা আমি অহন যাই কাম আসে অনেক বইয়া বইয়া আপনের লগে গপ মারলে কি আমার হইবো “ কিন্তু আমার ঝুমার সাথে গল্প করতে অনেক ভালো লাগছিলো , ঝুমা আসেপাশে থাকলে ভালো লাগে । হয়ত রাবুর অনেক কিছু আছে ওর মাঝে তাই ওকে ভালো লাগে । এছাড়া আর কোন কারন আমি আর দেখি না । মেয়েটা গ্রাম্য বুদ্ধিশুদ্ধি ও কম ওর মায়ের মতো দেখতে হলেও ওর মায়ের বিশেষত্ব ওর মাঝে বিশেষ কিছু নেই তাও ওকে পাশে বসিয়ে গল্প করতে ভালো লাগে । তাই গল্প বাড়ানোর জন্য বল্লান “ আচ্ছা সারাদিন তুমি এতো কাজ করো কেনো ? তোমার নানা কে বলে একটা মানুষ রেখে নিলেই পারো “ “ ও আল্লা আপনে তো আমার নানারে চিনেন ই না” এই বলে খিল খিল করে হাসতে লাগলো, তারপর আবার বলল “এই যে আমারে আর আমার পোলারে খাওয়াইতাসে হেইটা উসুল করতে হইব না ? হের লাইগা সারাদিন বান্দির মতন খাটায় ” “ ধুর কি বলো তুমি তোমার নানা হয় উনি , তোমাকে লালন পালন করবে তার জন্য কাজ করিয়ে নেবেন কেনো ?” মুখটা কালো হয়ে গেলো ঝুমার । বিড়বিড় করে বল্লো “ তাও যদি ঠিক মতন রাখতো আমাগো , পোলাটার সইল ভালো না একটা ভালা ডাক্তার পর্যন্ত দেখায় না “ তারপর ঝটফট বলল “ অহন আমি গেলাম “ এই বলে ঝুমা আর দাঁড়ালো না গট গট করে চলে গেলো । |
« Next Oldest | Next Newest »
|
Users browsing this thread: mds00, 1 Guest(s)