Posts: 1,541
Threads: 5
Likes Received: 2,700 in 911 posts
Likes Given: 1,512
Joined: Dec 2018
Reputation:
579
(24-11-2020, 10:50 PM)pinuram Wrote: মাঝে মাঝে ভীষণ বিরক্তি লাগে আবার সেই সাথে ভালো লাগে, অদ্ভুত এক মিশ্রিত অনুভব হৃদয়ে দোলা দেয়।
ভালোবাসি, ভালোবাসি – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ধরো কাল তোমার পরীক্ষা,
রাত জেগে পড়ার
টেবিলে বসে আছ,
ঘুম আসছে না তোমার
হঠাত করে ভয়ার্ত কন্ঠে উঠে আমি বললাম-
ভালবাসো?
তুমি কি রাগ করবে?
নাকি উঠে এসে জড়িয়ে ধরে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
ধরো ক্লান্ত তুমি,
অফিস থেকে সবে ফিরেছ,
ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত পীড়িত,
খাওয়ার টেবিলে কিছুই তৈরি নেই,
রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে
ঘর্মাক্ত আমি তোমার
হাত ধরে যদি বলি- ভালবাসো?
তুমি কি বিরক্ত হবে?
নাকি আমার হাতে আরেকটু চাপ দিয়ে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
ধরো দুজনে শুয়ে আছি পাশাপাশি,
সবেমাত্র ঘুমিয়েছ তুমি
দুঃস্বপ্ন দেখে আমি জেগে উঠলাম
শতব্যস্ত হয়ে তোমাকে ডাক দিয়ে যদি বলি-ভালবাসো?
তুমি কি পাশ ফিরে শুয়ে থাকবে?
নাকি হেসে উঠে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
ধরো রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি দুজনে,
মাথার উপর তপ্ত রোদ,
বাহন পাওয়া যাচ্ছেনা এমন সময়
হঠাত দাঁড়িয়ে পথ
রোধ করে যদি বলি-ভালবাসো?
তুমি কি হাত সরিয়ে দেবে?
নাকি রাস্তার সবার
দিকে তাকিয়ে
কাঁধে হাত দিয়ে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
ধরো শেভ করছ তুমি,
গাল কেটে রক্ত পড়ছে,
এমন সময় তোমার এক ফোঁটা রক্ত হাতে নিয়ে যদি বলি- ভালবাসো?
তুমি কি বকা দেবে?
নাকি জড়িয়ে তোমার গালের রক্ত আমার
গালে লাগিয়ে দিয়ে খুশিয়াল গলায় বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
ধরো খুব অসুস্থ তুমি,
জ্বরে কপাল পুড়েযায়,
মুখে নেই রুচি,
নেই কথা বলার অনুভুতি,
এমন সময় মাথায় জল দিতে দিতে তোমার মুখের
দিকে তাকিয়ে যদি বলি-ভালবাসো?
তুমি কি চুপ করে থাকবে?
নাকি তোমার গরম শ্বাস আমার শ্বাসে বইয়ে দিয়ে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি..
ধরো যুদ্ধের দামামা বাজছে ঘরে ঘরে,
প্রচন্ড যুদ্ধে তুমিও অংশীদার,
শত্রবাহিনী ঘিরে ফেলেছে ঘর
এমন সময় পাশে বসে পাগলিনী আমি তোমায়
জিজ্ঞেস করলাম-
ভালবাসো?
বাকরুদ্ধস্বরে তুমি কি বলবে যাও….
নাকি চিন্তিত আমায় আশ্বাস দেবে, বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…….
ধরো দূরে কোথাও যাচ্ছ তুমি,
দেরি হয়ে যাচ্ছে,বেরুতে যাবে,
হঠাত বাধা দিয়ে বললাম-ভালবাসো?
কটাক্ষ করবে?
নাকি সুটকেস ফেলে চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি
ধরো প্রচন্ড ঝড়,উড়ে গেছে ঘরবাড়ি,
আশ্রয় নেই
বিধাতার দান এই পৃথিবীতে,
বাস করছি দুজনে চিন্তিত তুমি
এমন সময় তোমার
বুকে মাথা রেখে যদি বলি ভালবাসো?
তুমি কি সরিয়ে দেবে?
নাকি আমার মাথায় হাত রেখে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি..
ধরো সব ছেড়ে চলে গেছ কত দুরে,
আড়াই হাত মাটির নিচে শুয়ে আছ
হতভম্ব আমি যদি চিৎকার করে বলি-
ভালবাসো?
চুপ করে থাকবে?
নাকি সেখান থেকেই
আমাকে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
যেখানেই যাও,যেভাবেই থাক,
না থাকলেও দূর
থেকে ধ্বনি তুলো,
ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি..
দূর থেকে শুনব তোমার কন্ঠস্বর,
বুঝব তুমি আছ, তুমি আছ
ভালোবাসি,ভালোবাসি……..!
Posts: 6,542
Threads: 21
Likes Received: 7,066 in 3,717 posts
Likes Given: 12,105
Joined: Feb 2020
Reputation:
240
যতদিন যাচ্ছে ঝিনুক আর রিশুর রসায়ন জমে উঠছে। তবে ঝিনুকের মনটা হলো নরম একতাল কাদামাটির মতো। যে যেমন চাইবে তার মতো করে আকার দিতে পারবে। রিতিকা ওর সেরকম ঘনিষ্ঠ বান্ধবী নয়, এখন মিশতে চাইছে কেন ? ও পার্থর চর নয়তো ?
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 66,050 in 27,781 posts
Likes Given: 23,869
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
বেশ আস্তে আস্তে ওদের মাঝে সহজতা আর স্বাভাবিকতা গড়ে উঠছে , আজ ঝিনুকের নাচতেও ইচ্ছে করছে দেখে মনটা খুশি খুশি হয়ে গেলো ,
রিশুর মধ্যে দায়িত্ববান একজন পিতার মতো রূপটাও অসামান্য , আচ্ছা ও কি জিজ্ঞেস করেছিল গ্যানোকোলজিস্ট কে যে শেষে লজ্জা পেতে হলো ???
:)
সমস্যাটা হলো লেখক পিনুরামকে নিয়ে আসলে , সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল কিন্তু ওনার যে সেটা সহ্য হয় না
সেই পার্থর নাম আবার ঘুরেফিরে এসে গেলো আর ওই রিতিকা নামক যন্ত্ৰটি যে কি বস্তু বেরোবে ভগবানই জানেন !!
banghead:
Posts: 23
Threads: 0
Likes Received: 39 in 16 posts
Likes Given: 87
Joined: Oct 2020
Reputation:
7
(24-11-2020, 10:50 PM)pinuram Wrote: ব্লাড রিপোর্ট আর ইউরিন রিপোরট এসে গিয়েছিল, গায়নোকোলজিস্ট সঞ্জনা ম্যাডামকে দেখিয়েছিল ঝিনুকের রিপোর্ট, ইউরিনে এমোনিয়ার গন্ধ পেয়েই চিন্তিত হয়ে পড়েছিল রিশু, সিস্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে একটু। একটা ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন আর বলেছিলেন যে অনেক জল আর ফল খেতে। কথায় কথায় একটা প্রশ্ন করেছিল রিশু, সঞ্জনা ম্যাডামের উত্তরে ভীষণ লজ্জা পেয়ে যায়, এত তাড়া কিসের, এক সপ্তাহ হয়নি বিয়ে হয়েছে এর মধ্যেই? সেই সব ব্যাপার ঝিনুককে জানায়নি যদিও, তবে রোজদিন বাড়ি ফেরার সময়ে যা ফল পেত কিনে নিয়ে যেত ঝিনুকের জন্য। মেয়েটা জল অনেক কম খায়, বারবার বললেও শোনে না।
I am iin love with Rishu.
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(25-11-2020, 12:07 AM)Baban Wrote: "কলেজে যাকে দেখতে পারত না সেই মেয়ে আজকে ওকে বেড়াতে যাওয়ার জন্য বলছে, ওর জীবনে একের পর এক নতুন আলোর ছটা দেখা দিচ্ছে" ----
বাকি সব খুব ভালোই এগোচ্ছে. আজকের পর্বটা বেশ ভালো কিন্তু এই শেষের লেখাটা পড়ে কেমন যেন লাগছে.... হয়তো আমি ভুল কিন্তু.........
দেখি ভবিষ্যত কি লিখে রেখেছে.
সকাল না হওয়া পর্যন্ত ফুলেরাও জানে না তাদের স্থান মন্দিরের বেদিতে নাকি শ্মশানের চিতায়! সুতরাং এখন সেই সকাল আসতে বাকি, দেখা যাক কি হয় !!!!!!
রেপু পয়েন্টস +1
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(25-11-2020, 12:43 AM)Buro_Modon Wrote: বুঝতে পারছি না কিন্তু কেমন যেনো একটু তিতকুটে আভাস পাচ্ছি, এই রিতিকা মেয়েটা সুবিধের ঠেকছে না ...
Let's hope for the best and prepare for the worst...
আমার ভিতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে ,
আছো তুমি হৃদয় জুড়ে।
ঢেকে রাখে যেমন কুসুম, পাপড়ির আবডালে ফসলের ঘুম।
তেমনি তোমার নিবিঢ় চলা, মরমের মূল পথ ধরে।
পুষে রাখে যেমন ঝিনুক , খোলসের আবরণে মুক্তোর সুখ।
তেমনি তোমার গভীর ছোঁয়া, ভিতরের নীল বন্দরে।
ভাল আছি ভাল থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো।
দিয়ো তোমার মালাখানি, বাউলের এই মনটারে।
আমার ভিতরে বাহিরে………
আমিও মাঝে মাঝে যখন লেখার ভাষা হারিয়ে ফেলি তখন কোন কবিতা অথবা গানের আশ্রয় নেই, আপনার এই কবিতা ভীষণ ভালো লাগলো, বিশেষ করে পুষে রাখে যেমন ঝিনুক , খোলসের আবরণে মুক্তোর সুখ।
রেপু পয়েন্টস +1
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(25-11-2020, 02:30 AM)bluestarsiddha Wrote: সাথেই আছি।আপডেটের জন্ন ধন্নবাদ
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(25-11-2020, 09:46 AM)TumiJeAmar Wrote: মেয়েরা যে তরল পদার্থ সেটাই বোঝা যাচ্ছে। তবে বেশ ভালো লাগছে।
নারী ধরিত্রীর রূপ তারা ভেজা মাটির মতন নরম হতেও পারে আবার আগুনে পোড়ালে ইটের মতন কঠিন হতেও পারে! এই গল্পের আম্বালিকা তার প্রমান !!!!!!
রেপু পয়েন্টস +1
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(25-11-2020, 10:56 AM)bourses Wrote: ভালোবাসি, ভালোবাসি – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ধরো কাল তোমার পরীক্ষা,
রাত জেগে পড়ার
টেবিলে বসে আছ,
ঘুম আসছে না তোমার
হঠাত করে ভয়ার্ত কন্ঠে উঠে আমি বললাম-
ভালবাসো?
তুমি কি রাগ করবে?
নাকি উঠে এসে জড়িয়ে ধরে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
ধরো ক্লান্ত তুমি,
অফিস থেকে সবে ফিরেছ,
ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত পীড়িত,
খাওয়ার টেবিলে কিছুই তৈরি নেই,
রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে
ঘর্মাক্ত আমি তোমার
হাত ধরে যদি বলি- ভালবাসো?
তুমি কি বিরক্ত হবে?
নাকি আমার হাতে আরেকটু চাপ দিয়ে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
ধরো দুজনে শুয়ে আছি পাশাপাশি,
সবেমাত্র ঘুমিয়েছ তুমি
দুঃস্বপ্ন দেখে আমি জেগে উঠলাম
শতব্যস্ত হয়ে তোমাকে ডাক দিয়ে যদি বলি-ভালবাসো?
তুমি কি পাশ ফিরে শুয়ে থাকবে?
নাকি হেসে উঠে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
ধরো রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি দুজনে,
মাথার উপর তপ্ত রোদ,
বাহন পাওয়া যাচ্ছেনা এমন সময়
হঠাত দাঁড়িয়ে পথ
রোধ করে যদি বলি-ভালবাসো?
তুমি কি হাত সরিয়ে দেবে?
নাকি রাস্তার সবার
দিকে তাকিয়ে
কাঁধে হাত দিয়ে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
ধরো শেভ করছ তুমি,
গাল কেটে রক্ত পড়ছে,
এমন সময় তোমার এক ফোঁটা রক্ত হাতে নিয়ে যদি বলি- ভালবাসো?
তুমি কি বকা দেবে?
নাকি জড়িয়ে তোমার গালের রক্ত আমার
গালে লাগিয়ে দিয়ে খুশিয়াল গলায় বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
ধরো খুব অসুস্থ তুমি,
জ্বরে কপাল পুড়েযায়,
মুখে নেই রুচি,
নেই কথা বলার অনুভুতি,
এমন সময় মাথায় জল দিতে দিতে তোমার মুখের
দিকে তাকিয়ে যদি বলি-ভালবাসো?
তুমি কি চুপ করে থাকবে?
নাকি তোমার গরম শ্বাস আমার শ্বাসে বইয়ে দিয়ে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি..
ধরো যুদ্ধের দামামা বাজছে ঘরে ঘরে,
প্রচন্ড যুদ্ধে তুমিও অংশীদার,
শত্রবাহিনী ঘিরে ফেলেছে ঘর
এমন সময় পাশে বসে পাগলিনী আমি তোমায়
জিজ্ঞেস করলাম-
ভালবাসো?
বাকরুদ্ধস্বরে তুমি কি বলবে যাও….
নাকি চিন্তিত আমায় আশ্বাস দেবে, বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…….
ধরো দূরে কোথাও যাচ্ছ তুমি,
দেরি হয়ে যাচ্ছে,বেরুতে যাবে,
হঠাত বাধা দিয়ে বললাম-ভালবাসো?
কটাক্ষ করবে?
নাকি সুটকেস ফেলে চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি
ধরো প্রচন্ড ঝড়,উড়ে গেছে ঘরবাড়ি,
আশ্রয় নেই
বিধাতার দান এই পৃথিবীতে,
বাস করছি দুজনে চিন্তিত তুমি
এমন সময় তোমার
বুকে মাথা রেখে যদি বলি ভালবাসো?
তুমি কি সরিয়ে দেবে?
নাকি আমার মাথায় হাত রেখে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি..
ধরো সব ছেড়ে চলে গেছ কত দুরে,
আড়াই হাত মাটির নিচে শুয়ে আছ
হতভম্ব আমি যদি চিৎকার করে বলি-
ভালবাসো?
চুপ করে থাকবে?
নাকি সেখান থেকেই
আমাকে বলবে,
ভালোবাসি, ভালোবাসি…..
যেখানেই যাও,যেভাবেই থাক,
না থাকলেও দূর
থেকে ধ্বনি তুলো,
ভালোবাসি, ভালোবাসি, ভালোবাসি..
দূর থেকে শুনব তোমার কন্ঠস্বর,
বুঝব তুমি আছ, তুমি আছ
ভালোবাসি,ভালোবাসি……..!
তুমি আছো এতো কাছে তাই
পৃথিবীতে স্বর্গ কে পাই
তোমার চোখে যে স্বপ্ন
তাই দেখি যেদিকে তাকাই।
যত ব্যাথা ছিলো গো আমার
তোমার পরশে দূর হলো
হৃদয়ের মনো-বীনা
নিমেষে গানের সুর হলো,
তোমার দেওয়া সে গান আজ
তোমাকেই গেয়ে যে শোনাই।
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
26-11-2020, 01:25 AM
(This post was last modified: 26-11-2020, 01:25 AM by pinuram. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(25-11-2020, 01:36 PM)Mr Fantastic Wrote: যতদিন যাচ্ছে ঝিনুক আর রিশুর রসায়ন জমে উঠছে। তবে ঝিনুকের মনটা হলো নরম একতাল কাদামাটির মতো। যে যেমন চাইবে তার মতো করে আকার দিতে পারবে। রিতিকা ওর সেরকম ঘনিষ্ঠ বান্ধবী নয়, এখন মিশতে চাইছে কেন ? ও পার্থর চর নয়তো ?
এ যেন অজানা এক পথ
কে জানে কোথায় হবে শেষ
স্বপ্ন একি চেয়ে যে দেখি
এ যেন অচেনা এক দেশ
জানিনা দু' চোখে মোর
এ আলো ছড়ালো আজ কে
জানিনা নতুন এ গান এ
প্রাণে ভরালো আজ কে
ফুরালে এ প্রাণে রবে রেশ
এ যেন অজানা এক পথ
কে জানে কোথায় হবে শেষ!!
-- শ্যামল মিত্র
এই ঝিনুক আর রিশুর জীবন অনেকটা এই রকমের, তাই এই গানটা ভীষণ ভাবেই মনে পরে গেল !!!!!
রেপু পয়েন্টস +1
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(25-11-2020, 02:46 PM)ddey333 Wrote: বেশ আস্তে আস্তে ওদের মাঝে সহজতা আর স্বাভাবিকতা গড়ে উঠছে , আজ ঝিনুকের নাচতেও ইচ্ছে করছে দেখে মনটা খুশি খুশি হয়ে গেলো ,
রিশুর মধ্যে দায়িত্ববান একজন পিতার মতো রূপটাও অসামান্য , আচ্ছা ও কি জিজ্ঞেস করেছিল গ্যানোকোলজিস্ট কে যে শেষে লজ্জা পেতে হলো ???
:)
সমস্যাটা হলো লেখক পিনুরামকে নিয়ে আসলে , সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল কিন্তু ওনার যে সেটা সহ্য হয় না
সেই পার্থর নাম আবার ঘুরেফিরে এসে গেলো আর ওই রিতিকা নামক যন্ত্ৰটি যে কি বস্তু বেরোবে ভগবানই জানেন !!
banghead:
সঞ্জনা ম্যাডামের উত্তর শুনেও কি বুঝতে পারলে না যে রিশুর সেই প্রশ্ন কি হতে পারে? আর বারবার পিনুরামকে টানবে না, রিতিকা কি করবে না করবে, পার্থ কি করবে না করবে, সেটা তাদের ব্যাপার স্যাপার, এর মধ্যে পিনুরামকে টেনে কি বলতে চাও বল'ত? পিনুরাম ছা পোষা মানুষ, সূত্রধর মাত্র, এই চরিত্র গুলো যখন যেমন ভাবে নড়াচড়া করবে তেমন ভাবে তুলে ধরাই পিনুরামের কাজ, তবে হ্যাঁ তোমার প্রেম ঝিনুক কে জানিয়ে দেব, তবে কি জানো কানে কানে বলছি, ঝিনুক কিন্তু রিশুর প্রেয়সী সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী, সেটা যেন মনে থাকে। চুপচাপ মানুষ বলে এই ভেবে বস না যে তুমি ঝিনুক কে উঠিয়ে নিয়ে যেতে পারবে! অরথপেডিক সার্জেন বাওয়া, কত কিছু কেটে কোথায় কোথায় জুড়ে দেবে টের পাবে না !!!!!!
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(25-11-2020, 09:46 PM)anupama99 Wrote: I am iin love with Rishu.
Posts: 6,542
Threads: 21
Likes Received: 7,066 in 3,717 posts
Likes Given: 12,105
Joined: Feb 2020
Reputation:
240
(25-11-2020, 02:46 PM)ddey333 Wrote: আচ্ছা ও কি জিজ্ঞেস করেছিল গ্যানোকোলজিস্ট কে যে শেষে লজ্জা পেতে হলো ???
:) 
রিশু হয়তো জিজ্ঞেস করেছিল যে ঝিনুকের মা হতে কোনো সমস্যা হবে কিনা
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 66,050 in 27,781 posts
Likes Given: 23,869
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
(26-11-2020, 01:33 AM)pinuram Wrote: সঞ্জনা ম্যাডামের উত্তর শুনেও কি বুঝতে পারলে না যে রিশুর সেই প্রশ্ন কি হতে পারে? আর বারবার পিনুরামকে টানবে না, রিতিকা কি করবে না করবে, পার্থ কি করবে না করবে, সেটা তাদের ব্যাপার স্যাপার, এর মধ্যে পিনুরামকে টেনে কি বলতে চাও বল'ত? পিনুরাম ছা পোষা মানুষ, সূত্রধর মাত্র, এই চরিত্র গুলো যখন যেমন ভাবে নড়াচড়া করবে তেমন ভাবে তুলে ধরাই পিনুরামের কাজ, তবে হ্যাঁ তোমার প্রেম ঝিনুক কে জানিয়ে দেব, তবে কি জানো কানে কানে বলছি, ঝিনুক কিন্তু রিশুর প্রেয়সী সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী, সেটা যেন মনে থাকে। চুপচাপ মানুষ বলে এই ভেবে বস না যে তুমি ঝিনুক কে উঠিয়ে নিয়ে যেতে পারবে! অরথপেডিক সার্জেন বাওয়া, কত কিছু কেটে কোথায় কোথায় জুড়ে দেবে টের পাবে না !!!!!!
তোমার চেয়ে বড়ো সার্জন আর কে আছে ??
যেভাবে পুরোনো ইংলিশ গল্পটাকে কাটাছেড়া করে আর জোড়া দিয়ে পুরো নতুন চেহারা দিচ্ছ সেটা যারা বুঝতে পারছে তারা সবাই আমার সঙ্গে একমত হবে !!
তবে সঞ্জনা ম্যাডাম কে রিশু ঠিক কি প্রশ্ন করেছিল ওনার উত্তরে সেটা খুব একটা পরিষ্কার হলো না
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 66,050 in 27,781 posts
Likes Given: 23,869
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
(26-11-2020, 11:55 AM)Mr Fantastic Wrote: রিশু হয়তো জিজ্ঞেস করেছিল যে ঝিনুকের মা হতে কোনো সমস্যা হবে কিনা
হয়তো তাই , কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি ওসব চিন্তা করাটা কি ঠিক ??
এখনো ছুতে পর্যন্ত দেয়নি ওই নরম গরম রমণী, মনে হয়না অদূর ভবিষ্যতে দেবে বলেও !!!!
Posts: 187
Threads: 1
Likes Received: 342 in 169 posts
Likes Given: 1,987
Joined: Feb 2020
Reputation:
23
+8 like গিভেন
স্মোকিং
বান্ধবির সাথে সপিং
পারটি ডিস্কোর প্ল্যানিং,
এর পর মদ বেলেল্লাপনা
কেমন কেমন জেন লাগছে।
বাইদাবাই পরের আপডেট কবে পাব??
Posts: 6,542
Threads: 21
Likes Received: 7,066 in 3,717 posts
Likes Given: 12,105
Joined: Feb 2020
Reputation:
240
(26-11-2020, 01:23 PM)bluestarsiddha Wrote: +8 like গিভেন
স্মোকিং
বান্ধবির সাথে সপিং
পারটি ডিস্কোর প্ল্যানিং,
এর পর মদ বেলেল্লাপনা
কেমন কেমন জেন লাগছে।
বাইদাবাই পরের আপডেট কবে পাব??
পার্থর পাল্লায় পড়ে যে ভুল গুলো করেছিল সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যেন না হয় রিতিকার কথায় মজে গিয়ে, আসলে ঝিনুক সবাইকে খুব সহজে বিশ্বাস করে নেয় Sad
•
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(26-11-2020, 11:55 AM)Mr Fantastic Wrote: রিশু হয়তো জিজ্ঞেস করেছিল যে ঝিনুকের মা হতে কোনো সমস্যা হবে কিনা
(26-11-2020, 12:09 PM)ddey333 Wrote: তোমার চেয়ে বড়ো সার্জন আর কে আছে ??
যেভাবে পুরোনো ইংলিশ গল্পটাকে কাটাছেড়া করে আর জোড়া দিয়ে পুরো নতুন চেহারা দিচ্ছ সেটা যারা বুঝতে পারছে তারা সবাই আমার সঙ্গে একমত হবে !!
তবে সঞ্জনা ম্যাডাম কে রিশু ঠিক কি প্রশ্ন করেছিল ওনার উত্তরে সেটা খুব একটা পরিষ্কার হলো না

(26-11-2020, 12:13 PM)ddey333 Wrote: হয়তো তাই , কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি ওসব চিন্তা করাটা কি ঠিক ??
এখনো ছুতে পর্যন্ত দেয়নি ওই নরম গরম রমণী, মনে হয়না অদূর ভবিষ্যতে দেবে বলেও !!!!

প্রশ্নটা খুবই স্বাভাবিক অন্তত রিশুর মতন দ্বায়িত্ত্ববান মানুষের জন্য। চিন্তার কখন সময় হয় না, চিন্তা ভাবনা অথবা দুশ্চিন্তা যেকোনো সময়ে আসতে পারে !!!!!!!
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
26-11-2020, 06:46 PM
(26-11-2020, 01:23 PM)bluestarsiddha Wrote: +8 like গিভেন
স্মোকিং
বান্ধবির সাথে সপিং
পারটি ডিস্কোর প্ল্যানিং,
এর পর মদ বেলেল্লাপনা
কেমন কেমন জেন লাগছে।
বাইদাবাই পরের আপডেট কবে পাব??
তুমি যে কটা কথা লিখেছ, তার কিছুই কিন্তু এখন ঝিনুক করেনি, স্মোকিং, বান্ধবীর সাথে শপিং, পার্টি ডিস্কো যাওয়া, মদ খেয়ে বেল্লেলাপনা করা, তার কিছুই করেনি কিন্তু ঝিনুক, শুধু মাত্র ভেবেছে করবে। ভাবার মধ্যে আর করার মধ্যে অনেক তফাত। আমরা অনেক কিছুই ভাবি আর তার অনেক কিছুই করি না। সিনেমা দেখতে দেখতে ত এটাও ভাবি যে এই সিনেমার নায়িকার সাথে প্রেম করব কিন্তু করি কি?
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
পর্ব সাত – (#2-31)
ওপিডি শেষ, তারপরে কাজের রিপোর্ট জমা দেওয়া, ফারস্ট ইয়ারের ছাত্র ছাত্রীদের সাথে একটু পড়াশুনা নিয়ে আলাপ আলোচনা, এই সব সেরে যখন বাড়ি ফেরার জন্য পা বাড়ায় তখন সন্ধ্যে হয়ে গেছে। প্রত্যকেদিন ভাবে একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবে, কিন্তু শেষ মুহূর্তে কোন কাজ এসে পরে আর ঠিক সময়ে কোনদিন বের হওয়া যায় না। ঝিনুকের কথা মনে পড়তেই মনে মনে হেসে ফেলে রিশু। এত দিনেও তার সাথে ঠিক ভাবে পরিচয় করা হয়ে ওঠেনি, কি ভালোবাসে, কিসে অপছন্দ, এরপর কি করতে চায় কিছুই জানে না, শুধু জানে যে মেয়েটা সাজতে ভীষণ ভালোবাসে, একটু ভুলো মনের, স্নানের পরে জামা কাপড় গুলো সেই বাথরুমেই পরে থাকে, বিকেলে বাড়ি ফিরে স্নান সেরে নিজেই ওর জামা কাপড় গুলো বারান্দায় শুকাতে দেয়। তখন ঝিনুকের মনে পরে যে নিজের জামা কাপড় শুকাতে দেয়নি আর তখন ওর হাত থেকে নিয়ে যায়। মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, সেই সাথে বুঝতে চেষ্টা করে দুষ্টু মিষ্টি ঝিনুকের মানসিক অবস্থা। যখন চন্দ্রিকা ওকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল তখন চন্দ্রিকাকে ভোলার জন্য ওর কাছে অঢেল সময় ছিল, পড়াশুনায় নিজেকে ডুবিয়ে নিয়েছিল, কিন্তু ঝিনুকের বয়স সবে মাত্র তেইশ, একদিনের মধ্যে ওর ওপরে যে ঝঞ্ঝা গেছে সেখান থেকে তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে আসা দুস্কর। নিজেকেই প্রশ্ন করে রিশু, পা বাড়াতে দ্বিধা কেন? শুধু কি মেয়েটা একটু দুরন্ত আর অবাধ্য ছিল তাই? ওদের বিয়ের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে, সেই দুরন্তপনার কিছুই ওর চোখে পরেনি, তার চেয়ে ওর বাড়িতে যে তন্বী তরুণীর বাস তার ফর্সা পায়ের সুগোল গোড়ালিতে বাঁধা নুপুরের নিক্কনে রোজ সকালে আনমনা হয়ে যায় রিশুর চিত্ত।
পারকিঙ্গের দিকে হাঁটতে হাঁটতে রিশু মাকে ফোন করে, সারাদিনের খবরা খবর না জানানো পর্যন্ত ওর স্বস্তি হত না, অন্যপাশে ওর মা সারাদিন উন্মুখ হয়ে থাকে ছেলের ফোনের জন্য। প্রত্যকে বারের মতন এক প্রশ্ন মায়ের, কেমন আছিস বাবা? এই চলছে, ছাড়া এর বেশি আর কোন সঠিক উত্তর খুঁজে পায় না আজকাল। আগে এর উত্তরে অনেক কিছু বলার থাকত ওর কাছে, আজকে হসপিটালে এই করেছে, কত গুলো অপারেশান হয়েছে, কাজের মেয়ে কি রান্না করে গেছে, ঠান্ডা কেমন পড়েছে ইত্যাদি। ভাই বোনের কলেজের পরীক্ষা চলছে, মাঝে মাঝে দিয়ার প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়, রাতে ইন্টারনেট ঘেঁটে সেই উত্তর খুঁজে মেসেজ করে পাঠিয়ে দেয়। মাকে জানিয়ে দেয় আগামী জানুয়ারিতে লন্ডনের সেমিনারে যাওয়ার ব্যাপারে। মা ভীষণ খুশি তবে প্রশ্ন করেছিল যে ততদিন ঝিনুক কোথায় থাকবে। এর উত্তর এখন জানে না রিশু, পরিচয়ের পরিধি যদি বাড়ে ততদিনে তাহলে সঙ্গে নিয়ে যাবে এটাই ভেবে রেখেছিল।
মায়ের ফোন রাখতেই মোবাইলে মেসেজের আওয়াজ আসে, খুলে দেখে ঝিনুকের মেসেজ, “কখন ফিরবে?”
মুচকি হেসে মাথা দোলায় রিশু, উত্তর লিখে পাঠায়, “বেড়িয়ে গেছি।”
সঙ্গে সঙ্গে ফোন আসে ঝিনুকের, “কতক্ষনে লাগবে আসতে? চা বসিয়ে দেব?”
উচ্ছল চপলার কন্ঠস্বর শুনে হেসে ফেলে রিশু, “পরে বানিও, জ্যামে ফেঁসে গেলে কতক্ষন লাগবে জানি না।”
জ্যামের কথা শুনে দমে যায় ঝিনুক, ভারাক্রান্ত মনেই উত্তর দেয়, “আচ্ছা, সাবধানে এসো। আজকে আবার ঠান্ডাটা খুব বেশি করেই পড়েছে।”
কথাটা শুনে ভীষণ ভালো লাগে রিশুর, এতদিন এই ধরনের দুশ্চিন্তার ভাবনা কি আসেনি ওর মধ্যে? হয়ত এসেছে কিন্তু এতদিন মুখ ফুটে বলতে পারেনি। রিশুও নিজে আগ বাড়িয়ে কোনদিন সেই ধরনের কোন উক্তি প্রকাশ করেনি ঝিনুকের সমক্ষে। পুরুষ শাসিত সমাজে ওকেই সরবাগ্রে পদক্ষেপ নিতে হবে, কিন্তু যে ঝিনুকের কথা শুনেছে সেই ঝিনুক কি কোনদিন ওর সমক্ষে আসবে না। মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, বারবার সেই ছবিটার কথা মনে পরে যায়, প্রথমদিনে ওর বোন গাড়িতে যে ঝিনুকের ছবি দেখিয়েছিল।
ঝিনুকের ফোন রাখা মাত্র ইন্দ্রিজিতের ফোন আসে, “কি রে কি ব্যাপার, একদম উধাও হয়ে গেলি?”
হেসে ফেলে রিশু, “বিয়ের পরে পালিয়ে গেলি, দিল্লী ফিরে সেই যে একবার ফোন করলি তারপর তোর আর দেখা নেই যে। আবার আমাকে কেন বলতে যাস।”
ইন্দ্রজিত উত্তর দেয়, “ওকে বস, আমরা দুইজনে এই পৌঁছে যাচ্ছি তোর বাড়ি। ডিনার কিন্তু তোর তরফ থেকে।”
রিশু উত্তর দেয়, “আচ্ছা আয়, ডিনার বাইরে কোথাও করে নেব।”
ইন্দ্রজিত অবাক হয়েই প্রশ্ন করে, “বাইরে কেন?”
হেসে ফেলে রিশু, “না মানে এখন ঝিনুক ঠিক ভাবে সড়গড় নয়, নতুন জায়গা তাই এখন রান্না করে না। ওই কাজের লোকটাই রান্না করে যায়।”
ইন্দ্রজিত কিছুক্ষন চুপ থাকার পরে জিজ্ঞেস করে, “সব ঠিক আছে ত?”
কি উত্তর দেবে, মা আর বোনের পরে এই ইন্দ্রজিত আর শালিনী, এদের কাছে কিছুই লুকায় না রিশু। তবে ইদানিং মা ছাড়া আর কাউকে সব কথা জানায় না তাই উত্তর দেয়, “বিন্দাস আছি রে, তুই বাড়ি আয়।”
শালিনী ইন্দ্রজিতের হাত থেকে ফোন নিয়ে বলে, “ভাইয়া, আমরা কিন্তু তোমার বাড়ির সামনে পৌঁছে গেছি প্রায়।”
শালিনীর কথা শুনে রিশু অবাক হয়ে যায় ওরা যে এত তাড়াতাড়ি বাড়িতে পৌঁছে যাবে সেটা আশা করেনি। বিয়ের সময়ে ঝিনুকের সাথে ইন্দ্রজিত আর শালিনীর পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় হয়নি কারণ ওদের মাঝে কোন কথাবার্তা হয়নি সেই সময়ে। বাড়িতে ঝিনুক একা ভেবেই ভীষণ অপ্রস্তুত হয়ে পরে রিশু, সঙ্গে সঙ্গে ওদের বলে, “আরে, ঝিনুক একা বাড়িতে।”
হেসে ফেলে শালিনী, “না না, ভাবীকে নিয়ে পালাচ্ছি না চিন্তা নেই।”
হেসে ফেলে রিশু, “আচ্ছা আমি ঝিনুককে ফোন করে দিচ্ছি।”
ওদের ফোন রেখে আবার ঝিনুককে ফোন করে রিশু জানিয়ে দেয় ইন্দ্রজিত আর শালিনীর আসার কথা। কলেজে থাকাকালীন মেয়েদের সাথে গায়ে পরে খেজুরে আলাপ করত ইন্দ্রজিত, যদিও এখন আর সেইভাবে কোন মেয়েদের সাথে গায়ে পরে আলাপ পরিচিতি করে না তবুও ঝিনুকের ব্যাপারে মনের কোন এক গভীর কোনায় অধিকারবোধ জেগে ওঠে, যতই হোক ওর বিবাহিতা স্ত্রী। হেলমেট পরে তাড়াতাড়ি বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পরে বাড়ির উদ্দেশ্যে।
যদিও একটু দোনামনা করছিল ঝিনুক, রিশুর অবর্তমানে কোন অচেনা মানুষের সাথে কিভাবে কথাবার্তা বলবে সেটা ভেবে পাচ্ছিল না, কিন্তু রিশু জানিয়েছে যে ইন্দ্রজিত ওর প্রিয় বন্ধু তাই কিছু বলতে পারেনি। বলার জন্য অনেক কিছুই ভেবে রেখেছিল, বাড়িতে একা একা থাকতে থাকতে ভীষণ একঘেয়ে লাগছিল ওর, রিতিকার সাথে পরেরদিন বেড়াতে যাওয়ার কথা একটু বুঝে শুনে বলতে হবে তার জন্য নিজেকে তৈরি করেছিল। ভেবেছিল রিশু এলে এক সাথে চা খেতে খেতে রিতিকার ব্যাপারে জানাবে। এই সুদুর দিল্লীতে রিতিকা ছাড়া আর কোন জানাশোনা নেই। অগত্যা রিশুর বন্ধু এবং বন্ধু পত্নীর আগমন হবে শুনে একটা সালোয়ার কামিজ পরে তৈরি হয়ে নেয় ঝিনুক। দরজায় কলিং বেলের আওয়াজ শুনেই বুকের ভেতরটা কেমন যেন ধুক করে ওঠে ওর। অপরিচিত মানুষ কিন্তু রিশুর প্রিয় বন্ধু কেমন ভাবে তাদের আদর আপ্যায়ন করবে সেটা ভেবেই পায়না। দরজা খুলে শালিনী আর ইন্দ্রজিতকে দেখে কি ভাবে সম্বোধন করবে ভেবে পায় না ঝিনুক। বার্তালাপ ইংরেজি আর হিন্দি মিশিয়ে শুরু হয় কারণ শালিনী অথবা ইন্দ্রজিত কেউই বাংলা জানে না।
শালিনী ওর ইতস্তত ভাব দেখে হেসে ওর হাত ধরে বলে, “আমি শালিনী, বিয়েতে ঠিক ভাবে পরিচয় হল না।”
কি বলবে ভেবে পায়না ঝিনুক, প্রত্যুত্তরে একটু হেসে বলে, “হ্যাঁ, অনেক ঝামেলার মধ্যে সবাই ছিলাম। আপনারা আসবেন জানিয়ে ও এই একটু আগেই ফোন করেছিল।”
বাইরের মানুষের সামনে রিশুকে কি ভাবে সম্বোধন করবে সেটা ভেবে পায় না। মায়ের সাথে কথা বলার সময়ে রিশুর নাম হয়ে যায় “তোমার জামাই” বোনের সাথে কথা বলার সময় সেটা পালটে যায় “তোর জিজু” কিন্তু নিজের ঠোঁটে আজ পর্যন্ত নাম নিতে পারেনি, “এইযে” বলেই বরাবর সম্বোধন করে গেছে।
ইন্দ্রজিত ঝিনুকের সামনে একটু ঝুঁকে হেসে বলে, “রোজ ইজ ভেরি ডাল ইনফ্রন্ট অফ ইউ (গোলাপ তোমার সামনে তুচ্ছ), থ্রিবার্ড অর ক্যাটলেয়া অর্কিড? এইবারে বুঝেছি ব্যাটা এক রাতের মধ্যে কেন দৌড়াতে দৌড়াতে কোলকাতা পৌঁছে গেল।”
মনে মনে হেসে ফেলে ঝিনুক, ডাক্তার ওর জন্য কোলকাতা দৌড়ে যায়নি, গিয়েছিল নিজের ভাইয়ের হাত ভাঙ্গার কথা শুনে। ইন্দ্রজিতের কথা শুনে ভীষণ লজ্জা পেয়ে যায়। যে অর্কিড ফুলের নাম বলল ইন্দ্রজিত তার একটারও নাম কোনদিন শোনেনি। একেবারে অচেনা মানুষের মুখ থেকে এই ধরনের কথাবার্তা একদম আশা করেনি।
শালিনী স্বামীকে মৃদু ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে বলে, “আরে তুমি থামবে। এসেই শুরু করে দিয়েছ?” তারপরে ঝিনুককে সোফায় বসিয়ে হাত ধরে বলে, “সো, ভাইয়া কখন ফিরবে বলেছে?”
ঝিনুক উত্তরে বলে, “হস্পিটাল থেকে বেড়িয়ে পড়েছে, এই কিছুক্ষনের মধ্যেই ফিরে আসবে।”
ইন্দ্রজিত নিজেই রান্না ঘরে ঢুকে একটা ডেকচিতে চায়ের জল বসিয়ে দিয়ে ঝিনুককে জিজ্ঞেস করে, “ও ব্যাটা ত গরম জল গেলে, তুমিও কি ওর সাথে গরম জল খাও নাকি?”
হটাত করে ইন্দ্রজিতকে রান্নাঘরে ঢুকে চা বানাতে দেখে, ঝিনুক ভীষণ ভাবেই অপ্রস্তুত হয়ে পরে। ও সঙ্গে সঙ্গে সোফা ছেড়ে উঠে বাধা দিয়ে বলে, “এই না না আপনাকে চা বানাতে হবে না, আমি বানিয়ে দিচ্ছি।”
শালিনী ওর হাত ধরে পাশে বসিয়ে হেসে বলে, “তুমি এই বাড়িতে নতুন, এখানে আমাদের যাওয়ার আসা বিগত ছয় বছর ধরে। ও যা করছে করতে দাও, তুমি আমার পাশে বস।” ওর গালে হাত বুলিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, “আর ওই আপনি বলা ছাড়তে হবে কিন্তু। নো ফরমালিটিস, উই আর ফ্রেন্ডস।” শালিনীর কথা শুনে বেশ ভালো লাগে ঝিনুকের।
চা বানাতে বানাতে রান্নাঘর থেকেই ইন্দ্রজিত ওদের উদ্দেশ্যে বলে, “গেট রেডি, আমরা আজকে বাইরে ডিনার করব।”
ইন্দ্রজিতের কথায় ভীষণ ভাবেই অপ্রস্তুত হয়ে পরে ঝিনুক তাই আমতা আমতা করে বলে, “ও আসুক তারপরে না হয়ে...”
ইন্দ্রজিত হেসে ফেলে, “ও ব্যাটার জন্য অপেক্ষা করে লাভ নেই, আমরা তোমাকে হাইজ্যাক করে নিয়ে যেতে এসেছি।”
শালিনীও হেসে বলে, “ভাইয়া কে চেনা আছে, বাড়ি ফিরবে তারপর স্নান করবে, এপাশ ওপাশ ধপাস করবে তারপরে আবার জামা কাপড় পড়বে তাতে অনেক দেরি, তুমি রেডি হও তাহলে ভাইয়া আর বেশি দেরি করতে পারবে না।”
হয়ত সেই রিশু আর নেই, বাড়ি ফিরেই সব থেকে আগে স্নান সেরে কোন মতে এক কাপ চা খেয়েই ওকে জিজ্ঞেস করে বাজারে যাওয়ার কথা। ঝিনুক তাও ওদের বলে, “না মানে ক্লান্ত হয়ে আসবে এসেই আবার...”
শালিনী চোখ টিপে হেসে বলে, “আচ্ছাআআ, ভাইয়ার জন্য এত চিন্তা?”
লজ্জায় পরে যায় ঝিনুক, প্রত্যেক দিন হসপিটাল থেকে বাড়ি ফিরে স্নান সেরে কিছু কেনাকাটা না থাকলেও ওকে নিয়ে এই সামনের বাজারে যায়। ঝিনুক বুঝতে পারে যে রিশু অন্তত এটা বোঝে যে সারাদিন ও একা একা বাড়িতে থেকে একঘেয়ে হয়ে যায়। রিশু কোনদিন ওর পোশাকের দিকে নজর দেয়নি তাও রিশুর মার্জিত স্বভাব পাশে আধুনিক পোশাক অর্থাৎ জিনস টপ শারট ইত্যাদি পরে বের হতে কেমন যেন লাগে। কথায় গল্পে ঝিনুক জানতে পারে যে শালিনী আর ইন্দ্রজিত দুইজনেই ডাক্তার, শালিনী নিওন্যাটালোজিস্ট আর ইন্দ্রজিত জেনারেল মেডিসিন নিয়ে এমডি করেছে। এরা সবাই কত শিক্ষিত ভেবেই নিজেকে খুব হীন বলে মনে হয় ওর, কিন্তু শালিনীর মিষ্টি ব্যাবহারের ফলে সেই জড়তা কিছুক্ষনের মধ্যেই কেটে যায়। ওদের সাথে গল্প করলেও ঝিনুকের কান সজাগ ছিল, অপেক্ষায় ছিল কখন রিশুর বাইকের আওয়াজ শুনতে পাবে। কিছুক্ষনের মধ্যেই ওর চিরপরিচিত বাইকের আওয়াজ শুনেই মনে হল দৌড়ে বারান্দায় যায়, কিন্তু শালিনী আর ইন্দ্রজিত থাকার ফলে সেই উত্তেজনা দমন করে নেয়।
কিছুক্ষনের পরে দরজায় কলিং বেলের আওয়াজে ঝিনুক হেসে বলে, “ওই শেষ পর্যন্ত এসে গেছে।”
বাইক পার্ক করার সময়ে রোজদিনের মতন একবার ওর ফ্লাটের বারান্দার দিকে তাকিয়ে দেখে, না সেদিন আর দাঁড়িয়ে নেই, বুঝতে দেরি হয় না যে এতক্ষনে নিশ্চয় ইন্দ্রজিত আর শালিনী ওর বাড়িতে পৌঁছে গেছে। তাড়াতাড়ি সিঁড়ি চেপে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেলে বাজায়। ঝিনুক যেন দরজার কাছেই অপেক্ষা করেছিল, কলিং বেলের আওয়াজ শেষ হওয়ার আগেই দরজা খুলে দেয়। ঝিনুকের চোখের মিষ্টি হাসির টানে ক্ষনিকের জন্য সব কিছু ভুলে যায় রিশু।
ইন্দ্রজিত ঝিনুকের পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিল, ওকে দেখে হেসে ফেলে বলে, “আরে ভাই নিজের বাড়ি ইয়ার, ঢুকে পর, ওইখানে অত দাঁড়িয়ে কি হবে।”
হেসে ফেলে রিশু, “এতদিন পরে তোর আসার সময় হল?”
ইন্দ্রজিত ওকে জড়িয়ে ধরে বলে, “বোকা... আমি ত তাও এসেছি, তুই ত এসে শুধু একবার ফোন করলি।”
রিশু হেসে উত্তর দেয়, “কাজের চাপে আছি ভাই।”
ইন্দ্রজিত উত্তর দেয়, “বালের ঢপের চপ। চল তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে আজকে বাইরে ডিনার করব।”
রিশুর হাত থেকে ব্যাগ আর এপ্রন নেওয়ার জন্য হাত বাড়ায় ঝিনুক। বাকিদের অলক্ষ্যে ঝিনুকের দিকে একটু মাথা নুইয়ে একটু হেসে ওর হাতের ব্যাগ দিয়ে দেয়। সেই প্রথম দিনে এক বার ঝিনুক ওর হাত থেকে ব্যাগ নেওয়ার জন্য হাত বাড়িয়েছিল, সেদিন বারণ করে দেওয়ার পরে কোনদিন নিজের গন্ডি উলঙ্ঘন করেনি। ঝিনুক ওর ব্যাগ, এপ্রন আর স্টেথো নিয়ে ছোট ঘরের দিকে রাখতে চলে যায়। ইন্দ্রজিতের সাথে কথা বললেও ওর চোখ আটকে থাকে ঝিনুকের চলে যাওয়া দিকে। ভারী নিতম্বের দুলুনি, ছোট ছোট পায়ের চলন আর পিঠের ওপরে ঢেউ খেলানো চুলের আলোড়ন রিশুর বুকের রক্ত জলে ভরা ঘড়ার মতন ছলাত ছলাত করে ওঠে। উফফ মেয়েটা সত্যি মন কাড়তে ওস্তাদ। কোথায় ছিল এই রূপ? রোজদিন যেন এক নতুন রূপে ওর সামনে আবির্ভাব হয় ওর প্রেয়সী, যেন চোখের ভাষায় ওকে সাবধান করে বলে, শুধু দেখবে ছুঁতে অত সহজে দেব না। ঠিক যেন কারটুনের টম আর জেরির খেলা, কে কাকে বেশি উত্যক্ত করে তুলতে পারে সেই নিয়েই এদের যুদ্ধ।
The following 20 users Like pinuram's post:20 users Like pinuram's post
• Baban, bad_boy, Biddut Roy, bluestarsiddha, Bondhon Dhali, bourses, chinu872, Dddd, ddey333, dreampriya, farhn, LajukDudh, Mr Fantastic, o...12, pAndua121, Sandipan Chatterjee, sexybaba, sorbobhuk, suktara, Voboghure
|