Thread Rating:
  • 67 Vote(s) - 3.36 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
পর্ব ছয় – (#6-29)

 
পোশাক হাতে নিয়ে একবার অন্তত ঝিনুক ভাবে যে জিজ্ঞেস করে রিশুকে, তোমার কোন পছন্দ অপছন্দ নেই আমি কি পড়ব না পড়ব? কিন্তু রিশুর নির্বিকার চেহারার দিকে তাকিয়ে বিরক্তিতে সেই প্রশ্ন করা ছেড়ে দিয়েছিল। তাও বার দুয়েক ভদ্রতার খাতিরে জিজ্ঞেস করেছিল ঝিনুক, এটা নেব? এই রঙটা ভালো? রিশু মাথা দুলিয়ে সায় দিয়েছিল, হ্যাঁ, ভালো লাগলে নিয়ে নাও। ধ্যাত কি রসকস হীন মানুষ রে বাবা, এই লোকের সাথে চন্দ্রিকা কি ভেবে যে প্রেম করেছিল কে জানে? তারপর আর কথা বলার ইচ্ছে হয়নি ওর সাথে। প্রথম দুবার সালোয়ার কেনার সময়ে নিজের ব্যাগ খুলেছিল দাম দেওয়ার জন্য, রিশু মানা করে দিয়েছিল ওকে, টাকা আমি দিচ্ছি।
 
রিশু আর ঝিনুক, দুইজনের হাতে ভর্তি শপিং ব্যাগ, পাঁচটা সালোয়ার কামিজ, দুটো বড় ভারী জ্যাকেট, বেশ কয়েকটা বিছানার চাদর, তিনটে ঘরে পড়ার ঢিলে টপ আরো অনেক কিছু, পারলে প্রায় সেদিন পুরো বাজার কিনে নিয়ে আসে। বাপরে, কি ঘুরতে না ভালোবাসে মেয়েটা, এর আগে চন্দ্রিকার সাথে বের হওয়াটা আলাদা ব্যাপার ছিল, তখন জিনিস পত্র কেনার থাকত না বিশেষ, শুধু ঘুরে বেড়ান ছাড়া। কিন্তু ঝিনুকের সাথে জিনিস কিনতে বেড়িয়েছে, ঘুরতে বের হয়নি তাই মাঝে মাঝে বিরক্ত হলেও মেয়েটার মুখের উজ্জ্বলতা দেখে চুপ করে যায়। চারপাশের দোকানে যা দেখছে একবার সব নতুন জিনিস গুলো হাতে নিয়ে দেখা চাই, এটা কি ওটা কি, এর কত দাম ওর কত দাম, না কিনলেও একবার অন্তত জিজ্ঞেস করা চাই। চন্দ্রিকার মধ্যে একটা পরিপক্ক ভাব ছিল, ঝিনুকের মধ্যে ভীষণ কচি কচি উচ্ছল ভাব, দেখে মনে হয় যেন খাঁচায় বাঁধা পাখি ছেড়ে দিলেই উড়ে যাবে খোলা আকাশে। বারবার দুপুরের কথা মনে পরে যায় রিশুর, যেভাবে পা দাপিয়ে লাফিয়ে উঠে মুখ ব্যজার করে বলেছিল, “তুমি ডাক্তার না হাতির মাথা” মনে মনে হেসে ফেলে রিশু। মনের কোনায় অনেক দুরন্ত লুক্কায়িত স্বপ্ন ছিল, পূরণ হবে কি না জানা নেই ওর।
 
প্রায় ঘন্টা খানেক এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে, অনেক কিছু কেনা কাটার পরে খিধে পেয়ে যায় ওদের। ঝিনুকের খুব ইচ্ছে ফুচকা খাওয়ার, কোলকাতার ফুচকার স্বাদ আর এখানে যে ফুচকাওয়ালা গুলো ফুচকা বিক্রি করছে, সেগুলো দেখলেই মনে হয় এর স্বাদ আলাদা হবে। ফুচকার সাথে চাট আছে, দেখে জিবে জল চলে আসে ঝিনুকের কিন্তু রিশুর দিকে তাকিয়ে সে কথা বলার সাহস হয় না ওর। কিন্তু এই কয়দিনে ডাক্তারের খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে একটা ধারনা ওর হয়ে গিয়েছিল, কোন রকম বেশি তেল ঝাল মশলা একদম খায় না, রাস্তার খাবার হয়ত একদম খায় না। তরকারি বা ডিমের ঝোল খাওয়ার সময়ে মনে হত যেন হসপিটালের রান্না খাচ্ছে, মুখ বুজে এই কয়দিনে তাই খেয়েছিল ঝিনুক। এতক্ষন ঘুরে ফিরে আরো একটা চাহিদা ওর বুকের ভেতরে জেঁকে বসে, একটা সিগারেট পেলে ভীষণ ভালো হত, কিন্তু এই কয়দিনে ডাক্তারকে চিনে গেছে, হয়ত সিগারেটের নাম শুনলে ওকে বাড়ি থেকে বার করে দেবে। সবাই ওকেই ধিক্কার জানাবে, বাড়ির কেউই জানে না শুধু মাত্র বোন ছাড়া যে ও সিগারেট খেত।
 
রিশু ঝিনুকের চোখ মুখ দেখে বুঝতে পারে যে খিধে পেয়েছে, পাশেই একটা ম্যাক ডোনাল্ডস দেখিয়ে জিজ্ঞেস করে, “ম্যাক ডোনাল্ডস যাবে নাকি?”

ঝিনুকের ইচ্ছে ছিল ফুচকা, চাট ইত্যাদি খাওয়ার চিকেন বার্গার, পিজ্জা, এসব অনেক খেয়েছে এসবের বিশেষ ইচ্ছে ছিল না ওর। মাথা নাড়িয়ে বলে, “না থাক।” বুকে বল বেঁধে খুব নিচু গলায় বলে, “ফুচকা?”

কথাটা কানে গেছিল রিশুর, তাও না শোনার ভান করে বলে, “খিধে পায়নি ত? বাড়িতে রান্না অবশ্য করাই আছে।”

এতক্ষন হেঁটে হেঁটে ঘুরে ঘুরে পেটের মধ্যে নাড়ি ভুড়ি তালগোল পাকিয়ে গেছিল ঝিনুকের, নিজের ওপরে রাগ হয় ঝিনুকের, বেশ’ত ম্যাক ডোনাল্ডসে খেতে নিয়ে যাচ্ছিল, আদিখ্যেতা করে না বলতে কেন গেল? “হুম চল।”

ভাই বোনের সাথে বের হলেই ফুচকা খাওয়ান চাই, এখানে আবার কোলকাতার মতন শুধু তেঁতুল জল থাকে না, বিভিন্ন ধরনের জল থাকে আর বিশেষ করে দিয়ার সেই জল খেতে খুব ভালো লাগে। ঝিনুকের চেহারার অভিব্যাক্তি ধরে ফেলে রিশু, “ফুচকা খাবে?”

চোখ দুটো চকচক করে ওঠে ঝিনুকের, এতক্ষন তাহলে ওর সাথে ইয়ার্কি মারা হচ্ছিল, চোখ বড় বড় করে রিশুর দিকে দেখে অবাক হওয়ার ভান করে বলে, “আচ্ছাআআ, তুমি ফুচকা খাও?”

নিভু নিভু চোখের তারায় নতুন আলোর ঝলকানি দেখে বেশ খুশি হয় রিশু, “আমার দুটো ভাই বোন আছে, তাদের জ্বালায় খেতে হয় আর কি।”

নেচে ওঠে ঝিনুক কিন্তু , “হ্যাঁ হ্যাঁ আমিও টেস্ট করব।” ফুচকা ওয়ালার কাছে একটাই বাটি চায় রিশু, ঝিনুক একটু অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করে, “তুমি খাবে না?”

মুচকি হাসি দিয়ে রিশু উত্তর দেয়, “ওই তোমার থেকে একটা কি দুটো খেয়ে নেব।” চোখ কপালে উঠে যাওয়ার যোগার হয় ঝিনুকের, ডাক্তার ওর হাত থেকে ফুচকা খাবে, কথাটা বিশ্বাস হয় না একদম। রিশু একটু হেসে বলে, “কি হল ভাগ দেওয়ার ইচ্ছে নেই?”

আনন্দের অতিশজ্যে আর একটু হলেই রিশুকে জড়িয়ে ধরত ঝিনুক, সেই প্রবল ইচ্ছেটা দমন করে নরম গলায় উত্তর দেয়, “না মানে...”
 
ওর নরম গলা আর চোখের তারায় উজ্জ্বল দ্যুতি দেখে ক্ষনিকের জন্য রিশুর মনে হয় যে টুক করে ঝিনুকের টোপা নরম গালে যেখানে এখন একটা ক্ষীণ আঁচড়ের দাগ লেগে, সেখানে একটা ছোট চুমু খায়। কোথায় যেন একটা বাঁধা পায় রিশু, এক এক সাথে এক ছাদের তলায় থেকেও দুই অচেনা ব্যাক্তির মাঝের ব্যাবধান একটু কমলেও একদম নির্মূল হয়ে যায়নি।
 
ফুচকা ওয়ালার চারপাশে অনেক ভিড় তাও সেই ভিড় ঠেলে হাত বাড়িয়ে দেয় ঝিনুক, প্রথম ফুচকাটা মুখে পুরতেই বুঝে যায় এতে সেই পুরানো স্বাদ নেই, হিন্দিতেই ফুচকা ওয়ালাকে নির্দেশ দেয়, “আর ঝাল বানাও, একি তেঁতুল জল নেই?” তারপর একের পর এক ফুচকা খেয়েই চলেছে।

রিশুর দিকে একটা ফুচকা এগিয়ে দিয়ে শিশুসুলভ কন্ঠে বলে, “খাও খাও... এবারে ঝাল দিয়েছে, ইসসস ঝাল আর মিষ্টি মিলে এখানের জলের টেস্ট একদম আলাদা।”
 
ঝিনুকের এই চপল চঞ্চল শিশুসুলভ আচরন দেখে হেসে ফেলে রিশু, মা বলেছিল ওকে, আজকাল মেয়েদের ছাব্বিশ সাতাসের আগে বিয়ে হয় না, সেখানে ঝিনুক মাত্র তেইশ, একটু যেন মানিয়ে নিয়েই চলে। দুই হাত ভর্তি শপিং ব্যাগ, ঝিনুকের হাতেও যেগুলো ছিল সেগুলো ধরতে হয়েছে।
 
দুই ভর্তি হাত দেখিয়ে মাথা নাড়ায় রিশু,  “না না, তুমি খাও।”

কিছু না ভেবেই রিশুর মুখের কাছে ফুচকা ধরে বলে, “আমি খাইয়ে দিচ্ছি খাও না প্লিজ” মাথা নাড়ায় রিশু, রাস্তার মাঝে সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীর হাত থেকে এই ভাবে খাবার খেতে ভীষণ লজ্জা করে ওর। ঝিনুকের সেই দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই, ওর মুখের কাছে হাত উঠিয়ে কাতর কন্ঠে আদর করে বলে, “এই একটা প্লিজ, খাইয়ে দিচ্ছিত...”

নিরুপায় রিশু ঝুঁকে যায় ঝিনুকের দিকে, ফুচকার সাথে কোমল চাঁপার কলি আঙ্গুল তিনটে ওর ঠোঁটে স্পর্শ করে, ইচ্ছে করেই নাকি, ওর ঠোঁটের ওপরে বেশ কিছুক্ষন ধরে ছিল আঙ্গুল। একটা ফুচকা খেয়ে হেসে উত্তর দেয়, “এবারে তুমি খাও আমি আর খাব না।”

ঝিনুকের আঙ্গুলের ডগায় রিশুর ঠোঁটের পরশ বেশ অনেকক্ষণ লেগে থাকে, শয়তান ডাক্তার আরেকটু হলে মনে হয় আঙ্গুল গুলো খেয়ে নিত। লাজুক হেসে চোখ পাকিয়ে তাকায় রিশুর দিকে, “আর দেব না কিন্তু।”

হেসে ফেলে রিশু, “না না তুমি খাও।”
 
শুধু কি আর চোখের দেখায় ভালোবাসা হয়? ক্ষুধার্ত মানুষের সামনে যা রেখে দেওয়া হয় সে তাই গোগ্রাসে খেয়ে নেয়, রিশুর হৃদয় একটু একটু করে ভরতে শুরু করেছে বটে কিন্তু ক্ষুধার্ত নয়। রাতের অন্ধকার থাকতেই হসপিটালের জন্য বেড়িয়ে যাওয়া, যদিও তাড়াতাড়ি ফেরা হয় কিন্তু ঝিনুক বেশির ভাগ সময়ে নিজের ঘরের মধ্যেই থাকে, বেশি ওর সামনে আসে না। রিশুও নিজের পড়াশুনা নিয়েই ব্যাস্ত থাকে, মাঝে মধ্যে খাওয়ার সময়ে এই দু’একটা কথা হয়, “বাড়িতে ফোন করেছিলে আজকে?” “সকালে কি খেলে?” ইত্যাদি ছোট ছোট প্রশ্ন, উত্তর বেশির ভাগ, হ্যাঁ আর না তেই সমাপ্ত হয়। মাঝে মাঝে যখন ঝিনুক নিজের মায়ের সাথে কথা বলে তখন টুকরো কিছু কথা কানে যায়, “হ্যাঁ হ্যাঁ বেশি বলতে হবে না জানি।” “আমি’ত বলিনি দিতে, তাহলে একা আমাকে কেন বলতে যাও। ওকেও ত বলতে পারো।” আবার কখন নিচু গলা শোনা যায়, “না, ও উঁচু গলায় কথা বলে না।” চুপ করে শুনে যায় ওর কথা, কি বলার আর কি বোঝার সেটা জানে রিশু, তাই বিশেষ ঘাঁটায় না ঝিনুককে।
 
মায়ের সাথেও যখন ওর কথাবার্তা হয়, তখন মা ওকে বিশেষ কোন জোর করে না, মা বোঝে এত তাড়াতাড়ি সব কিছু মানিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। গতকাল রাতেই যখন মায়ের সাথে কথা বলছিল তখন ওর মা ওকে জিজ্ঞেস করেছিল, “হ্যাঁ রে বাবা, সত্যি করে বল, কি ইচ্ছে তোর?” চুপচাপ মনে মনে হেসে ছিল রিশু, “জানিনা মাম্মা।”
 
ফুচকা খাওয়া শেষে রিশু ঝিনুক কে বলে, “আর কিছু খাবে?”

মিষ্টি হেসে মাথা নাড়ায় ঝিনুক, “না বাবা আর নয়, অনেক হয়েছে।”

রিশু জিজ্ঞেস করে, “তাহলে এবারে বাড়ি?”

মাথা দোলায় ঝিনুক, হ্যাঁ বাড়ি।
 
এবারে পারকিঙ্গের দিকে হাঁটার সময়ে রিশুর পাশাপাশি হাঁটে ঝিনুক, ঝিনুকের ছোট পায়ের সাথে তাল মিলিয়ে এবারে আর তাড়াতাড়ি হাঁটে না রিশু। হাত ধরাধরি যদিও হয় না তবে মাঝে মাঝেই ওদের বাজু একে অপরকে ছুঁয়ে যায় মাঝে মাঝেই। অনেকদিন পরে ঝিনুককে মন খুলে একটু হাসতে দেখে ভীষণ ভালো লাগে। আবার সেই খাঁচায় ফিরে যেতে হবে ভেবেই ঝিনুকের একটু খারাপ লাগে। সবাই বিয়ের পরে কত নতুন জায়গায় ঘুরতে যায়, কিন্তু ঝিনুকের কপালে বন্দী খাঁচা ছাড়া আর কিছু জোটেনি। ঘুরতে গেলেও যাবে কার সাথে, যার সাথে যাবে সে এখন ওকে নিজের করে নিতে পারেনি হয়ত।
 
এত’কি সব সময়ে ভাবে মেয়েটা, মাঝে মাঝেই কোথায় যেন হারিয়ে যায়, পুরানো দিনের চিন্তা করে নাকি? হয়ত করে, জানা নেই ওর। হয়ত সেইজন্যে এখন পর্যন্ত মন খুলে ওর সাথে কথা বলতে পারেনি। ভিড়ের মধ্যে মাঝে মাঝে ওর খুব ইচ্ছে হয়েছিল ঝিনুকের হাত ধরে, নরম কোমল পদ্ম কুড়ির মতন হাতের স্পর্শ, সকালের সেই কোমল স্পর্শের রেশ এখন যেন ওর হাতের মুঠোর মধ্যে লেগে। বাজুর দাগ গুলো কি মিলিয়ে গেছে? আর কোথায় কোথায় আঁচর কেটেছিল সেটা কোনদিন জিজ্ঞেস করেনি রিশু।
 
বাইকে বসার সময়ে সব কটা ঝিনুকের হাতে ধরিয়ে দিতেই নরম কন্ঠেই বিরক্তি প্রকাশ করে, “এত গুলো আমি ধরব কি করে?”

হেসে ফেলে রিশু, “আচ্ছা তাহলে তুমি বাইক চালাও আমি তোমার পেছনে ব্যাগ নিয়ে বসি।”

আশে পাশের সব মেয়েদের হাত খালি, সেই মেয়েদের সাথে যে পুরুষেরা এসেছে তাদের হাতে ভর্তি ব্যাগ শুধু একমাত্র ঝিনুকের ক্ষেত্রেই অবস্থাটা উল্টো। ছাতার মাথা, কে জানত যে ডাক্তার শেষ পর্যন্ত এইভাবে ছল চাতুরি করবে, চোখে মুখে এক রাশ বিরক্তি নিয়ে বলে, “আমি অটো নিয়ে চলে যাবো কিন্তু।”

হেসে ফেলে রিশু, নাকের ডগা ইতিমধ্যে লাল হয়ে গেছে, ক্ষেপে গেছে সুন্দরী তাও মজা করার সুযোগ হাত ছাড়া করতে চায়না রিশু, একটু দুষ্টুমি করেই বলে, “যাও কে মানা করেছে, বাড়ির চাবি কিন্তু...”

একটু হলেই কেঁদে ফেলত ঝিনুক, রাগে চোখ জ্বালা করতে শুরু করে দিয়েছিল প্রায়, “আচ্ছা আমিই নিয়ে নেব।”
 
মামদোবাজি পেয়েছে, রাস্তার মাঝে এইভাবে দাঁড়িয়ে মস্করা করা হচ্ছে ওর সাথে, আর একটু হলেই পা দাপিয়ে চলে যেত, কতবার এমন করেছে এর আগে, কিন্তু ডাক্তারের সামনে সেই পুরানো দুরন্তপনা দেখানর মতন শক্তি নেই ওর। চারপাশে লোকজন না হলে চেঁচিয়ে দিত ঝিনুক, কি লাগিয়েছ বলত? বাড়ি যাবে নাকি এখানে দাঁড়িয়ে থাকবে? গোমড়া মুখ করে ব্যাগ গুলো কোন রকমে দুই হাতে জাপটে ধরে বাইকের পেছনে উঠে বসতে চেষ্টা করে।
 
যে মেয়ে কোনদিন এই সব কথায় কাঁদেনি বরং উল্টো অন্যকে কাঁদিয়ে এসেছে তার চোখে জলের রেখা দেখে হেসে ফেলে রিশু, বলতে যাচ্ছিল ওরে পাগলি মস্করাও বুঝিস না নাকি? তোকে একা ছেড়ে যেতে পারি নাকি? “দাও জ্যাকেট আর সালোয়ারের ব্যাগ গুলো দাও, ওগুলো সামনে নিয়ে নেব।”
 
ঠোঁটে (অনু)রাগ চোখে হাসি নিয়ে বেশ কয়েকটা ব্যাগ রিশুর হাতে ধরিয়ে দেয়, বাকি ব্যাগ গুলো নিয়ে বাইকের পেছনে বসে পরে ঝিনুক। কিছু ব্যাগ ওদের মাঝে ছিল বটে সেদিন, কিন্তু সেই সহস্র যোজনের ব্যাবধান আর ছিল না ওদের মাঝে। আসার সময়ে ওর কাঁধের ওপরে ছিল এক আলতো ছোঁয়া, ফিরে যাওয়ার সময়ে নরম হাতের স্পর্শ ছিল রিশুর কাঁধে, মাঝে মাঝেই সেই কোমল হাত ওর কাঁধ খামচে ধরত, মাঝে মাঝে অল্প ধাক্কা দুই শরীরের মাঝে। এবারে আর বলতে হয়নি যে শাল জড়াতে, বাইকে উঠেই কান মাথা শালে ঢেকে নিয়েছিল ঝিনুক। বুঝে গিয়েছিল খোলা বাইকে এই ঠান্ডায় ওর শরীর কাহিল হয়ে যাবে। অন্যদিনে বাজারে গেলে বারেবারে ঘড়ি দেখত রিশু, তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে খাওয়া সেরে নিত, যে যার ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ত। সেদিন আর ঘড়ির দিকে দেখার মতন সময় ছিল না ওদের হাতে। বাড়িটা কাছাকাছি না হলেই বেশ ভালো হত মনে হয়, সারাটা রাস্তা দুজনের মনের মধ্যে একটাই ইচ্ছে করছিল, আর একটু রাস্তা হলে ক্ষতি কি ছিল।



======================== পর্ব ছয় সমাপ্ত ========================
[Image: 20210115-150253.jpg]
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(22-11-2020, 12:58 AM)Baban Wrote: পিনুদা...... আপনি আমার লেখা উপভোগ গল্পটা পড়া শুরু করে ছিলেন কিন্তু তারপর হয়তো আর সময়ের অভাবে পড়া হয়ে ওঠেনি. আমি চাইবো সময় পেলে একবার আমার গল্পটি পড়ে দেখবেন. আমি কিন্তু উপভোগ কে যৌন গল্পের থেকেও ভৌতিক বা অলৌকিক গল্প বলাই পছন্দ করবো. রাতে ভয় পেতে পেতে পড়ে নেবেন কোনো সময়.শেষের আপডেটটা আপনার হয়তো বেশ ভালোই লাগবে.

Link- https://xossipy.com/thread-30126.html

আসলে কি জানো ভালো গল্প পড়তে হলে নিজের গল্প লেখা থামাতে হয়, তার কারণ যখন ভালো কোন গল্প পড়তে বসি তখন আর অন্য কিছু মাথায় থাকে না, এই অবস্থায় ঝিনুক আর রিশুকে মাঝ দরিয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া কি ঠিক হবে বল? এদের এখন তরী তীরে ভিড়ল না, একটু তীরে ভিড়ুক এদের তরী তারপরে তোমার গল্প পড়ব। তুমি বলেছিলে এবং সেটা আমার মনে আছে ভাই !!!!!!!
তবে একটা অনুরোধ আছে আমার, থ্রেডের প্রথম অথবা দ্বিতীয় পোস্টে একটা সুচিপত্র বানাও, তাহলে গল্প পড়তে সুবিধে হয় !
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 4 users Like pinuram's post
Like Reply
দুজন মানুষের মনের অনুভূতি ফুটিয়ে তুলতে আপনার জুড়ি মেলা ভার. দারুন হয়েছে পর্বটা. মেয়েটা শরীর অনুযায়ী বড়ো হয়েছে, অনেক কিছু বুঝতেও শিখেছে, অনেক ঝড় তার ওপর দিয়ে বয়েও গেছে তবু মেয়েটার মধ্যে কোথাও নিষ্পাপ বাচ্চাটা রয়ে গেছে আজও. তাইতো নিজের থেকেও নিজের কাছের মানুষটাকে ফুচকা খাওয়াতে এতো উৎফুল্ল ছিল. এদিকে বর দুহাত ভর্তি ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আর স্ত্রী নিজের হাতে স্বামীকে ফুচকা খাইয়ে দিচ্ছে. So sweet. ❤


আর আবারো ধন্যবাদ দাদা আমার গল্পের কথা আপনার মনে আছে. মন দিয়ে আমার গল্পটা পড়বেন বলে ওটা এখন তুলে রেখেছেন. সময় পেলেই বার করে পড়বেন. Thanks
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
(22-11-2020, 01:27 AM)Baban Wrote: দুজন মানুষের মনের অনুভূতি ফুটিয়ে তুলতে আপনার জুড়ি মেলা ভার. দারুন হয়েছে পর্বটা. মেয়েটা শরীর অনুযায়ী বড়ো হয়েছে, অনেক কিছু বুঝতেও শিখেছে, অনেক ঝড় তার ওপর দিয়ে বয়েও গেছে তবু মেয়েটার মধ্যে কোথাও নিষ্পাপ বাচ্চাটা রয়ে গেছে আজও. তাইতো নিজের থেকেও নিজের কাছের মানুষটাকে ফুচকা খাওয়াতে এতো উৎফুল্ল ছিল. এদিকে বর দুহাত ভর্তি ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আর স্ত্রী নিজের হাতে স্বামীকে ফুচকা খাইয়ে দিচ্ছে. So sweet. ❤

আর আবারো ধন্যবাদ দাদা আমার গল্পের কথা আপনার মনে আছে. মন দিয়ে আমার গল্পটা পড়বেন বলে ওটা এখন তুলে রেখেছেন. সময় পেলেই বার করে পড়বেন. Thanks❤

আর দাদা চিন্তা নেই... গল্পটা খুব বড়ো নয়... প্রায় প্রতিটা পৃষ্ঠাতেই একটা করে আপডেট আছে. মাত্র 17টা পেজ. দেখতে দেখতে পড়া হয়ে যাবে. তাই আর সূচিপত্র বানাইনি. আমার উপভোগ আপনিও উপভোগ করবেন আশা রাখি.

আসলে কি জানো, আমাদের সবার ভেতরে একটা কচি নিষ্পাপ শিশু থাকে, ধিরে ধিরে আমরা যত বড় হই তত আঁতলামো পাকামো করি আর নিজের ভেতরের সেই শিশুটাকে নিজের হাতে গলা টিপে ধিরে ধিরে হত্যা করি, আর সেই জন্যেই পৃথিবীতে এত মারামারি কাটাকাটি হয়। নিষ্পাপ শিশুরাই একমাত্র পারে আমাদের বাঁচাতে। "উলঙ্গ রাজা" গল্পটা আশা করি পড়েছ, অত গুলো আঁতেল লোকের মাঝে একমাত্র সেই নিষ্পাপ শিশু কিন্তু সত্যি কথা বলতে পেড়েছিল, "এমা এই রাজা ত ন্যাংটো" আমাদের উচিত আমাদের বুকের ভেতরে কোন এক কোনায় যে নিষ্পাপ শিশু লুকিয়ে আছে সেটাকে যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে রাখতে!
আর তোমার গল্প, নিশ্চয় পড়ব !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 5 users Like pinuram's post
Like Reply
(22-11-2020, 01:48 AM)pinuram Wrote:
আসলে কি জানো, আমাদের সবার ভেতরে একটা কচি নিষ্পাপ শিশু থাকে, ধিরে ধিরে আমরা যত বড় হই তত আঁতলামো পাকামো করি আর নিজের ভেতরের সেই শিশুটাকে নিজের হাতে গলা টিপে ধিরে ধিরে হত্যা করি, আর সেই জন্যেই পৃথিবীতে এত মারামারি কাটাকাটি হয়। নিষ্পাপ শিশুরাই একমাত্র পারে আমাদের বাঁচাতে। "উলঙ্গ রাজা" গল্পটা আশা করি পড়েছ, অত গুলো আঁতেল লোকের মাঝে একমাত্র সেই নিষ্পাপ শিশু কিন্তু সত্যি কথা বলতে পেড়েছিল, "এমা এই রাজা ত ন্যাংটো" আমাদের উচিত আমাদের বুকের ভেতরে কোন এক কোনায় যে নিষ্পাপ শিশু লুকিয়ে আছে সেটাকে যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে রাখতে! 
আর তোমার গল্প, নিশ্চয় পড়ব !!!!!! 
একদমই তাই   Heart ঠিক কথা. আজকের সমাজে লোভ লালসা কর্ম যোগ্যতা প্রমানের লড়াইয়ে  নিজের ভেতরের সেই ছোট্ট  বাচ্চাটাকে বাঁচিয়ে রাখা খুবই জরুরি.

আপনার কথা মতো আমার গল্পের প্রথম পেজের শেষের পোস্টে সূচিপত্র বানিয়ে দিয়েছি. 
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
(22-11-2020, 12:56 AM)pinuram Wrote: এমন ভাবে কালে ভদ্রে টুকি করে বলবেন, "আপডেট কোথায়?" এমন হলে খেলবো না কিন্তু Sad আপনিও নিয়মিত আসুন আমিও তাহলে নিয়মিত আসব Tongue  

Sorry boss......tumer adesh   sirodarjo......chaliye jow sathe chilam sathe takbo.......
[+] 2 users Like Karims's post
Like Reply
রিশু আর ঝিনুকের সর্ম্পকটা আস্তে আস্তে ঘনিষ্ট হচ্ছে। আশাকরি শূঘ্রই সব দ্বিধা কেটে সুন্দর জীবনের সূচনা হবে।
[+] 3 users Like sexybaba's post
Like Reply
সবই ঠিক চলছে তবুও মনে হচ্ছে কোথায় যেন কিছু বেদনার সুর আটকে আছে ! ঝিনুক আর রিশুর সম্পর্কে কোনো বেদনা চাইনা ! ওদের তাড়াতাড়ি মিলন হোক ! এটাই কাম্য !
[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply
দুজনের মনের কুয়াশা আর ধুয়াশা শবে কাটতে শুরু করেছে শীগ্রই আলো ফুটবে এই প্রতাশায়
[+] 3 users Like SUMON shill's post
Like Reply
Just muaahhhh colche golpota, slowly "Forbidden Love" er touch asche eder modhye. apnar lekha just awesome, spellbound, keeps riveted with every update. dada_of_india, thik bolechen, apnar lekha pore ettotai pagol hoye jaii je joto boro update hok na keno mone hoy pora shuru hoya matro sesh hoye gelo. shoob theke bhalo laglo, oi fuchka khaonaro scene ta, just awesome, apnar golpe ei choto choto muhurto gulo vison vabei upovog kori.
Heart  to jhinuk Heart  to rushu and Heart Heart  to pinuda.
[+] 2 users Like anupama99's post
Like Reply
Request to all silent readers, this story is going to touch the milestone of 1000 posts, lets make that quick for our beloved writer "pinuram dada"
[+] 4 users Like anupama99's post
Like Reply
দাদা এই পর্ব টা অন্য আপডেটে র তুলনায় বেশ ভালো লাগলো । কারণ অনেক ছেলে বা মেয়ে থাকে যারা রিশু র ই মত  । বিয়ের পরে প্রেম এই অনুভূতি তাই পুরো অন্যরকম । এই আপডেটে ওদের দুজনের প্রতি দুজনের না বলা অনুভূতি টা প্রকাশ পেয়েছে । তবে খুব তাড়াতাড়ি দুজনের মধ্যে র দূরত্ব টা মিটে যাবে ।  'এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হত তুমি বলতো' ! ।।
[+] 3 users Like dreampriya's post
Like Reply
(22-11-2020, 01:12 PM)anupama99 Wrote: Request to all silent readers, this story is going to touch the milestone of 1000 posts, lets make that quick for our beloved writer "pinuram dada"

  thanks
[+] 1 user Likes dreampriya's post
Like Reply
(22-11-2020, 01:48 AM)pinuram Wrote: আসলে কি জানো, আমাদের সবার ভেতরে একটা কচি নিষ্পাপ শিশু থাকে, ধিরে ধিরে আমরা যত বড় হই তত আঁতলামো পাকামো করি আর নিজের ভেতরের সেই শিশুটাকে নিজের হাতে গলা টিপে ধিরে ধিরে হত্যা করি, আর সেই জন্যেই পৃথিবীতে এত মারামারি কাটাকাটি হয়। নিষ্পাপ শিশুরাই একমাত্র পারে আমাদের বাঁচাতে। "উলঙ্গ রাজা" গল্পটা আশা করি পড়েছ, অত গুলো আঁতেল লোকের মাঝে একমাত্র সেই নিষ্পাপ শিশু কিন্তু সত্যি কথা বলতে পেড়েছিল, "এমা এই রাজা ত ন্যাংটো" আমাদের উচিত আমাদের বুকের ভেতরে কোন এক কোনায় যে নিষ্পাপ শিশু লুকিয়ে আছে সেটাকে যতটা সম্ভব বাঁচিয়ে রাখতে!
আর তোমার গল্প, নিশ্চয় পড়ব !!!!!!

  yourock yourock
[+] 1 user Likes dreampriya's post
Like Reply
এই পর্বটা দারুন ভালো লাগল। সংঘমিত্রা বয়সে আর দৈহিক গঠনে বড়ো হয়ে গেলেও ওর মধ্যে শিশুসুলভ সারল্য, মেয়েলি চপলতা, ব্রীড়াভঙ্গি, কচি ভাব এখনও রয়ে গেছে। কমবেশি সব মেয়েদের মধ্যেই এটা দেখা যায় বিশেষ করে যখন তারা নিজের ভালোবাসার মানুষটার সাথে থাকে। বেশ আদুরে হয়ে যায় তখন। আর শপিং-ফুচকার ব্যাপারটা পুরো আমাদের সাথে মিলে গেল ! পুজোর আগে আগে আমাকে একপ্রকার টেনে টেনেই নিয়ে গেল কেনাকাটা করতে, দুঘন্টা ধরে পুরো মল ঘুরে প্রায় সবকটা সালোয়ার, শাড়ি হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখে লাস্টে শপিং শেষ করে বাইরে বেরিয়ে ফুচকা স্টল দেখেই বায়না শুরু ! এদিকে আমার দুহাতে ব্যাগ ভর্তি আর উনি নিজের শালপাতা থেকে টপাটপ করে ফুচকা খাইয়ে যাচ্ছেন ! আঙুলে ঠোঁট ছোঁয়াতেই অমনি বুকে একটা নরম মুঠির কিল। এভাবে মিলে যাওয়া গল্প পড়তে দারুন লাগে !!  Heart yourock
[+] 2 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply
(22-11-2020, 01:12 PM)anupama99 Wrote: Request to all silent readers, this story is going to touch the milestone of 1000 posts, lets make that quick for our beloved writer "pinuram dada"

Save the energy, there are more records to come !! Three cheers for Pinuram Dada hip hip hurray !!  yourock
Like Reply
আরেকটু রাস্তা হলে ক্ষতি কি ছিল , ওদেরকে নিয়ে শেষ না হওয়া রাস্তায় উড়িয়ে নিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে
এইবার , এইবার পিনুরাম আবার  আমাদের কব্জি টিপে রক্ত নিচ্ছে , যারা জানেন তাদেরকে বলছি
এরকম লেখা , কি  আর কমেন্ট লিখবো
[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
(22-11-2020, 01:12 PM)anupama99 Wrote: Request to all silent readers, this story is going to touch the milestone of 1000 posts, lets make that quick for our beloved writer "pinuram dada"

Yeap...
[+] 2 users Like Voboghure's post
Like Reply
সবে বরফ গলতে শুরু করেছে, তুমি থেমে গেলে।
রিসুর মত আমারও মনে হচ্ছে রাস্তা আর একটু দীর্ঘ হলে ভালো হত।
[+] 2 users Like TumiJeAmar's post
Like Reply
খুব সুন্দর হয়েছে। রিশু ও ঝিনুকের মাঝের ব্যবধান ধীরে ধীরে কমে আসছে দেখি সামনে কি হয়
[+] 2 users Like sorbobhuk's post
Like Reply




Users browsing this thread: 7 Guest(s)