20-11-2020, 03:36 PM
Waiting waiting...
Adultery ঝর্ণা The Untold story ! সমাপ্ত
|
20-11-2020, 03:36 PM
Waiting waiting...
20-11-2020, 04:52 PM
20-11-2020, 05:55 PM
20-11-2020, 05:56 PM
20-11-2020, 07:40 PM
(This post was last modified: 20-11-2020, 07:50 PM by ddey333. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
সমস্ত কাজকর্ম মিটিয়ে তিনদিন পরে আমরা প্লেনে কলকাতা ফিরলাম ! কমলদার পরনে সাদা ধুতি ! সারা মুখে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি ! চোখদুটো উদাস ! এয়ারপোর্ট থেকে ভাড়ার গাড়িতে সবাই চলে এলাম কমলদার বাড়ি ! পুরো বাড়িটা যেন খাঁ খাঁ করে আমাদের গিলতে চাইছে ! আমার চোখ কিছুতেই মানছেনা ! জলের ধারা অবিরাম ঝরে যাচ্ছে ! বাড়ির সামনে এসে কমলদা ধপ করে মাটিতে বসে পড়লো ! " কি করে আমি তৃপ্তিকে ছাড়া এই বাড়িতে ঢুকবো ?" বলেই হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলো ! তৃপ্তিদির দাদা আর লাহিড়ীদা অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে কমলদাকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেলেন ! আমার পা কিছুতেই ওই বাড়ির ভিতর ঢুকতে চাইছিলনা ! না আর ঢুকিনি ! লাহিড়ীদাকে বলে আমি একটা রিক্সা নিয়ে সোজা পিসির বাড়ির দিকে রওনা দিলাম !
পিসির বাড়িতেও সেই একই রকম অবস্থা ! মঞ্জু কেঁদে কেঁদে মুখচোখ সব ফুলিয়ে রেখেছে ! আমাকে দেখে মঞ্জু আর থাকতে পারলো না ! আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পরে কাঁদতে শুরু করে দিল ! সাথে আমিও বাচ্চা ছেলের মতো কাঁদতে থাকলাম ! পিসেমশাই আমাদের মাথায় হাত বুলিয়ে আমাদেরকে শান্ত করার বৃথা চেষ্টা করতে থাকলেন ! কোথা দিয়ে যে দিনটা চলে গেলো সেটা বুঝতে পারলাম না ! বিকালবেলা বাবা এসে আমাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে এলেন ! দিন পাঁচেক খুব খারাপ অবস্থায় কাটিয়েছি ! কিছুই ভালো লাগছে না ! কোনো বন্ধুদের সাথে দেখা করিনি ! খেলতেও যাইনি ! দিন পনেরোর মধ্যেই আমার রেজাল্ট বেরুবে ! সেটাও ভুলে গেছি ! সারাদিন নিজের ঘরে ঢুকে বসে থাকি ! শুধু মাত্র ঝর্ণা মাঝে মাঝে এসে আমাকে বিরক্ত করে আমাকে হাসতে চেষ্টা করে ! যদিও ওর ও বুকেতে তৃপ্তিদিকে হারানোর গভীর যন্ত্রনা আছে ! কোনো কিছুতেই আমার সার নেই ! বাড়িতে বলে দিয়েছিলাম যে যতদিন না তৃপ্তিদির কাজ হচ্ছে ততদিন আমি শুধুই আতপচাল সেদ্ধ আর ঘি দিয়ে খাবো ! কেন জানিনা আমার মা সেটা মেনে নিয়েছিলেন ! প্রতিদিন আমাকে সেই ভাবেই খেতে দিতেন ! সন্ধ্যে বেলায় বাবা বললেন তোকে কাল কমলদের বাড়ি যেতে হবে সকালে ! - না আমি যাবোনা ! গিয়ে কি হবে ? - যে কাজটা তুই শুরু করছিলিস সেটাকে শেষ করতে তোকেই যেতে হবে ! এই কদিনে বাবা আমার খুব কাছে চলে এসেছেন ! নানা ছুতোয় আমার সাথে কথা বলেন আমাকে উৎসাহ দেন ! আর এই কদিনে আমাকে অনেক বড়ো আর পরিণত করে দিয়েছে ! এখন আমি সমস্ত কথা বেশ মেপে মেপে বলতে শিখে গেছি ! একটা মৃত্যু যে কত কিছু বদলে দিতে পারে সেটা এখন বুঝতে পারছি ! জীবন মানেই যে শুধু উপভোগ করা নয় সেটা আমাকে তৃপ্তিদি মোর গিয়ে শিখিয়ে দিয়ে গেলো ! পরেরদিন সকাল বেলাতেই আমি কমলদার বাড়ি যাবার জন্য তৈরী হতেই বাবা আমার হাতে একটা নতুন ধুতি,একটা নতুন গেঞ্জি, জাঙ্গিয়া আর একটা নতুন পৈতে দিয়ে দিলেন ! বললেন "স্নান করে আগে এই ধুতি পরে নিও ! তারপর কাজ মিটে গেলে স্নান করার সময় পুরানো পৈতে পা দিয়ে গলিয়ে নামিয়ে দিয়ে নতুন পৈতে পরে নিও আর নতুন গেঞ্জি জাঙ্গিয়া পরে জামা কাপড় পরে নিও ! আর গঙ্গার ঘটে যখন স্নান করবে তখন যে ধুতি তুমি পরে থাকবে সেটা ওখানেই ছেড়ে এসো !" বাবার কথা মন দিয়ে শুনে সব নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ! দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি মা আর ঝর্ণা দাঁড়িয়ে আছে দুজনের চোখেই জল ! যখন কমলদার বাড়ি পৌঁছলাম তখন প্রায় ১১টা বাজে ! আমাকে দেখেই লাহিড়ীদা বলে উঠলেন ! ওই তো সুনন্দ এসে গেছে ! ঠাকুর মশাই আপনার কাজ শুরু করে দিন ! ঠাকুর মশাইয়ের নির্দেশ অনুযায়ী আমি কমলদা দুজনেই স্নান সেরে ধুতি পরে নিলাম ! প্রায় ২ ঘন্টার উপর মন্ত্রোচ্চারণের পর এবং সমস্ত বিধি পূর্ন করার পর পুরোহিতমশাই বললেন "যান এবার গঙ্গার ঘাটে এই পিন্ড দান করে সমস্ত বস্ত্র ছেড়ে নতুন বস্ত্র ধারণ করুন ! আমার দিকে তাকিয়ে বললেন "তোমার কাছে নতুন পৈতে আছে তো বাবা ?" পিসেমশাই বললেন "হা আছে ! কিন্তু নাপিত কোথায় ? গঙ্গায় গিয়ে যে চুল দাড়ি কামাবে সেই যদি না থাকে তাহলে কি করে কি হবে ?" ঘোষদা বললেন ও আগেই গঙ্গায় চলে গেছে ! আমরা গেলেই ও নিজের কাজ শুরু করে দেবে ! লাহিড়ীদার গাড়িতে বসে সবাই গঙ্গার ঘটে পৌঁছলাম ! নাপিত আগেই ঘাটে অপেখ্যা করছিলো ! সে আগে আমার নোখ কেটে আমাকে বললো "যাও স্নান করে এসো ! পৈতে গঙ্গায় বিসর্জন দেবে পিন্ড বিসর্জনের পর আর ধুতিটা সাইডে খুলে রাখবে ! কিছু না বলে আমি ঘাটের দিকে এগিয়ে গেলাম ! নাপিত মহাশয় কমলদাকে ন্যাড়া করতে শুরু করে দিলেন ! আমার সাথে পিসেমশাই আমার নতুন কাপড় নিয়ে পিছনে পিছনে চললেন ! পুরোহিত মশাই কি কি মন্ত্র তখন বলছিলেন সেগুলো কিছুই মাথায় ঢুকছিলনা ! পিন্ড দান করে স্নান সেরে নিজের পৈতে বিসর্জন দিয়ে একটা গামছা পরে ধুতিটাকে ঘাটের পাশে ছেড়ে দিলাম ! নতুন পৈতে ধারণ করলাম ! গঙ্গার প্রবাহিত জলের ধারার সাথে আমার চোখের জল যে কোথায় বয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না ! হটাৎ কেন জানিনা নিজেকে খুব হালকা মনে হতে লাগলো ! যে পাষান ভার আমার বুকে এই কদিন চেপে ছিল সেটা আর নেই ! এখন আমার বুকটা খুব হালকা লাগছে ! কিন্তু চোখ কিছুতেই হালকা হতে চাইছেনা ! সমস্ত কান্না চেপে কাপড় পরে আমি গঙ্গার ধরেই দাঁড়িয়ে রইলাম ! কমলদাও একই রকম ভাবে পিন্ডদান করে স্নান করে কাপড় বদলে উঠে এলেন ! আমার পাশে এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলেন " আমার যে আর কেউ রইলোনা রে সুনন্দ ! কি ভাবে বাঁচবো আমি !" গুরুগম্ভীর গলাতে লাহিড়ীদা বলে উঠলেন "“ জম্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা কবে? চিরস্থির কবে নীর হায়রে জীবন নদে? ”! সত্যিই তো কে কবে অমর হয়েছে ? সমস্ত কাজ মিটিয়ে আমি পিসির বাড়ি চলে এলাম ! মঞ্জু সবাইকার সামনেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলো ! গম্ভীর গলায় বললাম " যে যাবার সে গেছে ! এখন কেঁদে কোনো লাভ নেই ! ছাড় আমাকে আর নিজেকে শক্ত কর ! এখনো অনেক ঝড় আসা বাকি ! এখনই যদি কেঁদে সব চোখের জল বের করে দিস তখন তো আর কাঁদতে পারবি না !" মঞ্জু ধীরে ধীরে আমাকে ছেড়ে দিয়ে নিজের ঘরের দিকে চলে গেলো ! আমি পিসি আর পিশেমশাইকে প্রণাম করে বললাম "এবার আমি যাই ! " দুজনের কেউই কোনো কথা বললেন না ! আমি মঞ্জুর ঘরে ঢুকে মঞ্জুর কপালে একটা ছোটো চুমু দিয়ে বললাম " আমি যাচ্ছি !পরীক্ষার রেজাল্ট বেরুলে আমাকে ফোন কোরো !" মঞ্জু কোনো কথা না বলে শুধু একটু ঘাড় নাড়িয়ে সম্মতি জানালো ! দেখতে দেখতে ১৫ দিন কথা দিয়ে বেরিয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না ! কিছুটা বিষণ্ণতা কিছুটা লেখাপড়া করা কারণ আমাকে জয়েন্ট এ বসতে হবে। . একদিন সকাল বেলায় টিভি খুলে দেখি মাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরিয়েছে ! ( আমি যখনকার কথা বলছি তখন অনলাইন বলে কিছুই ছিলোনা !প্রতিটি বইয়ের দোকানে গেজেট পাওয়া যেতো আর নিজের নাম্বার বলে রেজাল্ট জানতে পারা যেতো ! ) আমি তাড়াতাড়ি জামা প্যান্ট পরে তৈরী হয়ে নিলাম ! মঞ্জুর নাম্বার আমার কাছে আছেই তাই। ..... বেরুতে যাবো ঠিক তখনি ফোনের ঘন্টি। ... বাবা ফোন তুললেন " হাল্লো হ্যা ! আচ্ছা ! খুব ভালো খবর ! কোন ডিভিশন ? সেকেন্ড ? বা ! কত পেয়েছে ? " বুঝলাম পিসির বাড়ি থেকে ফোন এসেছে ! তাই আমি আর বেরুলাম না ! আরো কিছুক্ষন কথা বলে বাবা বেশ আনন্দের সাথেই আমাকে খবর দিলেন ! "মঞ্জুর রেজাল্ট বেরিয়ে গেছে ! সেকেন্ড ডিভিশনে পাস্ করেছে ! তোকে এখুনি পিসির বাড়ি যেতে বলেছে !" মনটা বেশ উৎফুল্ল হয়ে গেলো ! তড়াক করে দু পাক লাফিয়ে ঘুরে নিলাম ! মাকে জড়িয়ে ধরলাম ! পাশে ঝর্ণা ছিল ! ওর গাল দুটো ধরে আদর করে দিলাম ! বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম ! " উফফ ! এতদিন পর কোনো ভালো খবর পেলাম !" আমি এখুনি পিসির বাড়ি যাবো !" - কিছু খেয়ে যা ! মা বললেন ! - যা দেবার তাড়াতাড়ি দাও ! আজ আমি মঞ্জুকে একটা বিরাট ট্রিট দেব ! বলার সাথে সাথেই ঝর্ণা আমার সামনে লুচির প্লেট ধরিয়ে দিলো ! কোনো কথা না বলে আমি গোগ্রাসে সব খেয়ে নিলাম ! মা গম্ভীর হয়ে বললেন মঞ্জুকে নিয়ে আগে তৃপ্তিদির বাড়িতে গিয়ে ওনার ছবিকে প্রণাম করিস !" একটা ঠান্ডা বাতাস আমার সারা শরীরে ছড়িয়ে গেলো ! একটু শিউরে উঠলাম ! মনেই ছিলোনা তৃপ্তিদির কথা ! শুধু ঘাড় নাড়িয়ে বাইক বের করে স্টার্ট দিলাম ! ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি ঝর্ণার ভাষা ভাষা চোখ হয়তো কিছু বলতে চাইছে কিন্তু বলতে পারছে না ! সামনের বছর ঝর্ণাও মাধ্যমিক দেবে ! তখন কি হবে কে জানে ! যদিও ঝর্ণা খুব ভালো ছাত্রী !
21-11-2020, 05:51 AM
সবার পোস্টে কি সব লিখে যাচ্ছ।
আর নিজের গল্পের আপডেট লেখার সময় পাচ্ছ না !
21-11-2020, 05:55 AM
প্রফুল্ল রায়ের লেখা কেয়া পাতার নৌকা প্রথম পর্ব পড়ি কলেজ জীবনে। তারপর অনেক পর্ব লেখা হয়ে গেলেও এখনো গল্প শেষ হয়নি। দুবছর আগে বইমেলায় প্রফুল্ল বাবুকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কবে ঝিনুক আর বিনুর মিলন হবে। উনি মুচকি হেঁসে উত্তর দিলেন, হবে হবে তাড়াতাড়িই হবে।
তুমিও ঝর্নাকে নিয়ে একই জিনিস শুরু করেছো। 100 বছর আগে লেখা শুরু করে আজও শেষ হলো না।
21-11-2020, 06:14 AM
(21-11-2020, 05:55 AM)TumiJeAmar Wrote: প্রফুল্ল রায়ের লেখা কেয়া পাতার নৌকা প্রথম পর্ব পড়ি কলেজ জীবনে। তারপর অনেক পর্ব লেখা হয়ে গেলেও এখনো গল্প শেষ হয়নি। দুবছর আগে বইমেলায় প্রফুল্ল বাবুকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কবে ঝিনুক আর বিনুর মিলন হবে। উনি মুচকি হেঁসে উত্তর দিলেন, হবে হবে তাড়াতাড়িই হবে। প্রফুল্ল বাবুর মত আমিও বলি হবে হবে খুব শিগগিরই হবে
21-11-2020, 12:24 PM
ঝর্ণার চোখের ভাষা কি বলতে চাইছিলো কিছু বুঝতে পেরেছিলেন পরে ?
21-11-2020, 01:45 PM
(21-11-2020, 05:55 AM)TumiJeAmar Wrote: প্রফুল্ল রায়ের লেখা কেয়া পাতার নৌকা প্রথম পর্ব পড়ি কলেজ জীবনে। তারপর অনেক পর্ব লেখা হয়ে গেলেও এখনো গল্প শেষ হয়নি। দুবছর আগে বইমেলায় প্রফুল্ল বাবুকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলাম কবে ঝিনুক আর বিনুর মিলন হবে। উনি মুচকি হেঁসে উত্তর দিলেন, হবে হবে তাড়াতাড়িই হবে। দাদার গল্পটা তো সবে শুরু হলো জাস্ট !!!!
21-11-2020, 06:55 PM
21-11-2020, 11:22 PM
22-11-2020, 01:25 AM
সুনন্দ হচ্ছে কেঁচো, যদি সত্যি সত্যি ঝর্নার চোখের ভাষা বুঝতে পারত তাহলে এতদিনে ঝর্নার গল্প হত এটা, কবে যে ঝর্না আসবে প্রেক্ষাপটে সেই অপেক্ষায় আছি ! তবে একটা কথা বলতে হবে, কমলদার বর্ণনা দুর্দান্ত দিয়েছ, ব্যাথার বর্ণনা এইভাবে লেখা তখনি সম্ভব যখন সুনন্দ সেই ব্যাথা অনুভব করেছে, নাহলে এইসব অত সহজে আসে না। আমার এক খুব কাছের বান্ধবী যেদিন মারা গেছিল সেদিন সত্যি অনেক দুঃখ পেয়েছিলাম, খুব কম বয়সে মারা গিয়েছিল, যদিও কমলদার ব্যাপার আলাদা, তাও মনে পরে গেল তাই লিখলাম !!!!!!!
22-11-2020, 11:49 AM
(22-11-2020, 01:25 AM)pinuram Wrote: সুনন্দ হচ্ছে কেঁচো, যদি সত্যি সত্যি ঝর্নার চোখের ভাষা বুঝতে পারত তাহলে এতদিনে ঝর্নার গল্প হত এটা, কবে যে ঝর্না আসবে প্রেক্ষাপটে সেই অপেক্ষায় আছি ! তবে একটা কথা বলতে হবে, কমলদার বর্ণনা দুর্দান্ত দিয়েছ, ব্যাথার বর্ণনা এইভাবে লেখা তখনি সম্ভব যখন সুনন্দ সেই ব্যাথা অনুভব করেছে, নাহলে এইসব অত সহজে আসে না। আমার এক খুব কাছের বান্ধবী যেদিন মারা গেছিল সেদিন সত্যি অনেক দুঃখ পেয়েছিলাম, খুব কম বয়সে মারা গিয়েছিল, যদিও কমলদার ব্যাপার আলাদা, তাও মনে পরে গেল তাই লিখলাম !!!!!!! আমার থ্রেডে তোমার কমেন্ট ! আমাকে ধন্য করলে ! ঝর্ণার নাম গল্পটা হলেও এখানে ঝর্ণা একটা স্পর্শ মাত্র ! সেই স্পর্শর অপেখ্যায় এখনো দিন কেটে যায় ! সেই স্পর্শও আসবে একদিন ঝর্ণার কাছ থেকে !
22-11-2020, 12:47 PM
(This post was last modified: 22-11-2020, 12:47 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
বাইকে স্টার্ট দিয়ে হাওয়ায় উড়তে উড়তে আমি পিসির বাড়ি পৌঁছে গেলাম ! বাইকের আওয়াজ পেয়ে মঞ্জুই দরজা খুলে দিলো ! আমি মঞ্জু কে উড়িয়ে ধরে সজোরে একটা চুমু খেলাম ! ঘর ঢুকে পিসিকে প্রণাম করলাম ! পিসি আমার মুখে একটা রসগোল্লা ঢুকিয়ে দিয়ে বললো "এটা মঞ্জুর পাশের তোর টা যেদিন আসবে সেদিন পেট পুরে রসগোল্লা খাওয়াবো ! "
আমি মঞ্জু কে বললাম "তৈরী হয়ে নে ! তৃপ্তিদির বাড়ি যাবো ! " মঞ্জুর মুখ আবার গম্ভীর হয়ে গেলো ! চোখের কোণে জলের ঝিলিক ! আমি মঞ্জু কে বললাম " দেখ যে গেছে তাকে তো ফিরিয়ে আনা যাবে না ! যে আছে তাকে তো বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে ! " ঘরে ঢুকে মঞ্জু তৈরী হয়ে এলো ! বাইকের পিছনে বসে পড়লো ! তৃপ্তিদির বাড়ি গিয়ে দেখি বেশ কিছু মজুর লেগে রয়েছে ! সমস্ত বাড়িটাকেই একরকম ভাঙা হচ্ছে বলা যায় ! কমলদা গম্ভীর হয়ে সমস্ত তদারকি করছেন ! আমাদের দেখে একটা বিষন্ন হাসি দিয়ে বললেন "আয় ! মঞ্জুর পাশের খবর পেয়েছি ! " - কিন্তু বাড়ি কেন ভাঙছো ? - তৃপ্তির ইচ্ছা ছিল মা হবার ! আমারও তো ইচ্ছা ছিল বাবা হবার ! আমাদের সেই সাধ পূরণ হলোনা ! তাই এই বাড়িটাকে একটা অনাথ আশ্রম করবো ! কত ছোট ছোট বাচ্ছার কলতানে এই বাড়ি ভোরে থাকবে ! তৃপ্তিও মা হবে আর আমিও বাবা হবো ! আমাদের মুখ থেকে কোনো কথাকে বেরুলোনা ! চুপচাপ কিছুক্ষন বসে থেকে আমরা বেরিয়ে এলাম ! তৃপ্তিদিকে কথা দিয়েছিলাম যতদিন না নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছি ততদিন আমি মঞ্জুকে টাচ করবো না ! মঞ্জুকে বাড়িতে ছেড়ে দুপুরের খাবার খেয়ে বাড়ি ফিরে এলাম ! সন্ধ্যে বেলায় লাহিড়ীদা ফোন করে অভিযোগ করলেন " আমি কমলদার বাড়ি গিয়েও ওনার সাথে কেন দেখা করিনি ! আমি বললাম কমলদাকে দেখার পর মুড্ খুব অফ হয়ে গেছিলো তাই আর দেখা করা হয়নি ! তখন লাহিড়ীদা বললেন কমলবাবুর সাথে ওনার অনাথ আশ্রম গোড়ার কাজে আমিও আছি ! শুনে খুব ভালো লাগলো ! দিন চারেক পরে আমাদের রেজাল্ট বেরুলো ! এতো ভালোও রেজাল্ট যেটা আমার আশাতীত ছিল ! সবাই খুশি ! একবার পিসি, পিসেমশাই, মঞ্জু সবাই আমাদের বাড়িতে এলেন খুব হৈ হুল্লোড় হলো ! কিন্তু আমার কোথায় যেন একটা তাল কেটে গেছে তাই আমি মন খুলে সেই আনন্দে যোগ দিতে পারলাম না ! ধীরে ধীরে জয়েন্টের রেসাল্ট বেরুলো ! সেখানেও আমি ভালো ফল করলাম ! আমি ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ চান্স পেয়ে গেলাম হায়দরাবাদে ! ততদিনে মঞ্জু কলেজে ভর্তি হয়ে গেছে ! বাবা আর আমি একবার হায়দরাবাদে গিয়ে সমস্ত ব্যবস্থা করে এলাম ! জুন এর ১৫ থেকে আমাদের কলেজ শুরু হবে ! তার মানে আমাকে ১২ জুন গিয়ে কলেজে রিপোর্ট করতে হবে ! সেই মতোই টিকিট কাটা হয়ে গেলো ! বাবা, মা, পিসি সবাই খুব উৎকণ্ঠায় ! জীবনে প্রথম ৩ বছরের জন্য বাড়ি ছেড়ে অন্য কোথাও পড়তে যাবো ! সবাইকে বোঝালাম ! যাবার আগের দিন আমাদের বাড়িতে লাহিড়ীদা, ঘোষ দা, কমলদা সবাই এলেন ! কমলদার শরীরে সেই জৌলুস আর নেই ! কোথায় যেন প্রদীপ নিভে গেছে ! মুখেতে একটা ম্লান হাসি ! সবাই আমাকে উপদেশ দিলেন ! রাতের বেলায় মঞ্জুকে জড়িয়ে ধরে একটু আদর করে বললাম "যাচ্ছি তোমার আর আমার ভবিষ্যৎ বানাতে ! " অপেখ্যা কোরো ! আমি তোমার কাছেই ফিরে আসবো ! ( ঠিক তখনি একটা পুরানো গান খুব মনে পরে গেলো "আমি তোমার কাছেই ফিরে আসবো ! তোমায় আবার ভালোবাসবো ! তুমি কি ডাকবে মোরে ! চেনা সে নামটি ধরে ! ) পরেরদিন সবাই আমাকে বিদায় জানাতে হাওড়া স্টেশনে হাজির ! ঝর্ণা কেঁদে যাচ্ছে ! আমি ঝর্ণার কাছে গিয়ে ওর কাঁধে হাত রেখে বললাম "আজ থেকে তোকে আর কেউ ডিস্টার্ব করবে না ! ভালো থাকিস ! বাবা মায়ের যত্ন নিস্ ! " ঝর্ণা এই প্রথম আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলো ! কাঁদতে কাঁদতে মঞ্জুও এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো ! ঝর্ণা আর মঞ্জুকে জড়িয়ে ধরে আমিও কেঁদে ফেললাম ! - এই পাগল গুলোকে নিয়ে আর পারা যাবে না ! সব সময় এদের চোখের কল খোলা ! শুধুই কেঁদে যায় ! আমাকে দেখে শেখ ! আমি এখন আর কাঁদিনা ! কমলদা বললেন কিন্তু নিজের চোখের জল নিজেই রুখতে পারলেন না ! গাড়ির সময় হয়ে গেছিলো ! বাবা আমাকে তারা দিলেন " উঠে পর ! সিগন্যাল হয়ে গেছে ! গাড়ি ছেড়ে দেবে ! আমি ওদের ছেড়ে গাড়িতে উঠতে যাবো কিন্তু ঝর্ণা আমাকে ছাড়তে চাইছে না ! বাবা ঝর্ণা কে একটা ধমক দিলেন " এই ঝর্ণা ! কি হচ্ছে ? ও কি একেবারে বাড়ি ছেড়ে কোথাও যাচ্ছে নাকি ? ও তো পড়তে যাচ্ছে ! ছাড় ওকে ! বাবার ধমক খেয়ে কাঁদতে কাঁদতেই ঝর্ণা আমাকে ছেড়ে দিলো ! সবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মা,পিসি, মঞ্জু ঝর্ণা ! সবার চোখেই জল ! গাড়ি ছেড়েদিলো ! কাঁদতে কাঁদতে সবার দিকে হাত নাড়াতে থাকলাম ! কখন যে সবাই চোখের আড়ালে অদৃশ্য হয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না ! ট্রেন ভালোই স্পিড নিয়েছে ! দরজা বন্ধ করে নিজের সীটে এসে বসলাম ! কিছুক্ষনের মধ্যেই টিটি এসে হাজির ! আমার টিকিট দেখে বললেন " ও তুমিই সুনন্দ ! লাহিড়ীদা তোমার কথা আমাকে বলে দিয়েছেন ! আমিও হায়দরাবাদে থাকি ! কোনো অসুবিধা হলে আমাকে জানাবে ! " ভালো ছেলের মতো আমি ঘাড় নাড়লাম ! উনি বললেন সমস্ত টিকিট চেক করে আমি আসছি ! তখন কথা হবে ! আমি শুধু লাহিড়ীদার দূরদর্শিতার কথা ভেবে অবাক হলাম ! ঘন্টা খানেক পরে টিটি সাহেব ফিরে এলেন ! কি হলো বসে আছো ? ডিনার করবে না ? - করবো ! একটু পরে খেতে ইচ্ছা নেই ! - প্রথম প্রথম একটু মন খারাপ হবেই ! পরে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে ! কথায় কথায় জানতে পারলাম ভদ্রলোকের নাম সুভাষ ব্যানার্জী ! ছেলে হায়দরাবাদে চাকরি করে ! মেয়েও এইবার হায়দরাবাদ আই আই টি তে ইন্সট্রুমেন্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয়েছে ! ছেলের চাকরির সুবিধার জন্যই উনি হায়দরাবাদে সেটেল হয়েছেন ! আমাকে ওনার বাড়িতে আসতে নিমন্ত্রণ জানালেন ! এটাও বললেন যে লাহিড়ী দা ওনার সাথে কলেজে পড়তেন ! খুব ভালো বন্ধু ওরা ! বুঝলাম লাহিড়ীদা এখানেও আমার জন্য ভেবে রেখেছেন ! গল্প করতে করতেই রাতের খাবার খেয়ে নিলাম ! আমার সিট ছিল আপার ! সেখানে উঠে শুয়ে পড়লাম ! দুটোদিন রাস্তার শোভা আর নানা রকম লোকের যাওয়া আসা দেখতে দেখতেই কেটে গেলো ! সন্ধ্যেবেলায় যখন হায়দরাবাদ পৌঁছলাম তখন সুভাষ বাবু এগিয়ে এলেন ! " এই সন্ধ্যে বেলায় তো তোমাকে হোস্টেলে ঢুকতে দেবে না ! তার থেকে বরণ তুমি আমার বাড়িতে চলো ! ! রাতে আমার ওখানেই থেকে যেও ! কাল সকাল বেলায় কলেজে গিয়ে রিপোর্ট করো !
22-11-2020, 07:55 PM
(This post was last modified: 22-11-2020, 07:55 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ঝড়ের গতিতে সময় বয়ে চললো ! প্রথম প্রথম একটু মন খারাপ হলেও ধীরে ধীরে কলেজের নতুন জীবনের সাথে জড়িয়ে গেলাম ! অনেক নতুন নতুন বন্ধু হলো ! আমাদের ছোট বেলার বন্ধু বা কলেজের বন্ধুদের থেকে আলাদা ! সবার চোখে মুখে নতুন জীবনের উৎফুল্ল আনন্দ ! সবাই সোনার ভবিষ্যতের পিছনে ছুঁটছে ! যদিও আমি সেইরকম ভাবে কারুর সাথে মিশতে পারতাম না তবুও তার মাঝেই আমার বন্ধুত্ব হয়ে গেলো সমীর সাক্সেনা আর রাজু শ্রীভাস্তাভের সাথে ! কোয়েল মানে সুভাষ বাবুর মেয়েও আমাদের বেশ ভালো বন্ধু হয়ে গেলো ! আরো অনেক মেয়ে আমাকে চাইতো কিন্তু আমি তাদের পাত্তা দিতাম না ! সমীর আর রাজু আমাকে লেডি কিলার বলে খেপাতো ! কোয়েল আমাদের সাথে বন্ধুর মতো মিশলেও আমাকে একটু বেশি গুরুত্ব দিতো ! বুঝতাম সবই ! কিন্তু কিছুই বলতাম না ! কারণ আমার জীবনে মঞ্জু ছাড়া আর কাউকে জায়গা দিতে পারবো না !
প্রতি সপ্তাহে বাড়িতে ফোন করে এবং পিসির বাড়িতে ফোন করে সবার সাথে কথা বলে নিতাম ! বিশেষ করে মঞ্জুর সাথে কথা বলতে একটু বেশি সময় নিতাম ! মঞ্জু আমাকে ওর কলেজের সমস্ত ঘটনা বলতো আর অকারণে হাসিতে ফেটে পড়তো ! এই ভাবেই ৫ মাস কেটে গেলো ! অক্টোবরে দূর্গা পুজো নভেম্বরে দিওয়ালি ! দিন ২০ মতো কলেজ ছুটি থাকবে ! আমিও সুযোগ বুঝে ফেরার টিকিট করবো বলে চিন্তা করলাম ! বিকালে আমি সমীর রাজু আর কোয়েল কলেজের মাঠে বসে আড্ডা মারছি ! কথায় কথায় আমি বললাম যে দুর্গাপুজোতে আমি কলকাতা যাবো ! সমীর আর রাজু এক সাথে লাফিয়ে উঠলো ! আমরাও যাবো তোর সাথে ! কলকাতার দুর্গাপুজোর নাম অনেক শুনেছি কিন্তু কোনোদিন দেখা হয়নি ! কোয়েল বললো আমিও যাবো ! আমি একটু চিন্তিত হলাম ! যতই হোক সমীর পাঞ্জাবের এক বিরাট বড়োলোক পরিবারের ছেলে আর রাজু দিল্লির এক নাম করা ব্যবসাদারের ছেলে ! ওরা কি আমাদের বাড়িতে মানিয়ে নিতে পারবে ! - কি ভাবছিস ? কোয়েল বলে উঠলো ! - না কিছু না ! তোরা কি আমাদের বাড়িতে মানিয়ে নিতে পারবি ? আমরা মধ্যবিত্ত পরিবার হয়তো। ... খেঁকিয়ে উঠলো সমীর ! " মধ্যবিত্ত মারবি না ! কলেজের হোস্টেলে কি আমরা ফাইভ ষ্টার হোটেলে থাকি নাকি ? নিয়ে যেতে চাইছিস না সেটা বল ! বুঝলাম ওরা মনে দুঃখ পেয়েছে ! " ধুর বোকাচোদা ! আমি তো তোদের সাথে ইয়ার্কি মারছিলাম ! দাঁড়া কাল টিকিট করতে দেবো !! কিন্তু কোয়েল কে কি ভাবে নিয়ে যাবো সেটাই ভাবছি ! কোয়েল রাগে ফুঁসে উঠলো ! তাড়াতাড়ি ওকে বোঝালাম "দ্যাখ তোর বাবা মা কি আমাদের তিনজন ছেলের সাথে তোকে ছাড়বে ? সেই জন্যই বললাম ! " - সেটা আমার ভাবনা ! তোদের দেখতে হবে না ! আমাকে কাল তোদের টিকিটের পয়সা দিয়ে দিবি ! বাবা টিকিট করে দেবে ! ' সেই সন্ধ্যায় আরও কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে কোয়েল বাড়ি চলে গেলো আর আমরা আমাদের হোস্টেলে ফিরে এলাম ! কিছুক্ষন পরেই হোস্টেলের এটেন্ডেন্ট আমার দরজায় করা নাড়িয়ে বললেন সুনন্দর ফোন। . তাড়াতাড়ি গিয়ে ফোন তুলে দেখি মঞ্জুর গলা ! - কি গো কি করছো ? কলেজে কোনো বান্ধবী পেয়ে কি আমাকে ভুলে গেলে নাকি? বুঝলাম মঞ্জু বাড়ি থেকে ফোন করছে না ! আর করলেও বাড়িতে পিসি বা পিসেমশাই কেউ নেই ! তাই তুমি তুমি করে কথা বলছে ! মঞ্জু নিজেই বললো যে ও চৈতালিদের বাড়িতে ! রাতে ওখানে থাকবে ! আজ চৈতালির বার্থডে ! তাই নেমন্তন্ন ! অনেকক্ষন ওর সাথে সুখ দুঃখের কথা বললাম ! যত মান অভিমান সব ফোনেতেই মঞ্জু সেরে নিলো ! ওকে বললাম না যে আমি বাড়ি আসছি পুজোতে! ফোন ছেড়ে দিয়ে রুমে ফিরে গিয়ে শুয়ে পড়লাম ! এক ঘুমে সকাল ! সকালবেলায় উঠেই আমি কলেজের গ্রাউন্ডে ছুঁটতে চলে গেলাম ! এটা আমার অভ্যাস ! এখনো ছাড়তে পারিনি ! রাজু আর সমীর দুজনেই আমার সাথী ! ঘন্টা খানেক ঘাম ঝরিয়ে রুমে ফিরে কলেজের জন্য তৈরী হয়ে বেরুতেই কোয়েলের সাথে দেখা ! চোখে মুখে খুশি যেন ঝরে পড়ছে ! ছুটে আমার কাছে এসে আমার হাতে টিকিট ধরিয়ে দিলো ! বিস্ময়ে হতবাক ! কাল বিকাল বেলায় কথা হলো ! এখনো কিছুই ফাইনাল করিনি তার আগেই টিকিট ! টিকিটের টাকাও দেওয়া হয়নি ! টিকিট দেখলাম পাঁচ জনের ! আমরা তো চারজন ! এই পঞ্চম জন টি কে ? উৎসুক হয়ে কোয়েলের দিকে তাকালাম ! কোয়েল বললো " পঞ্চমী ! আমার ছোট বেলার বন্ধু ! সাউথ ইন্ডিয়ান মেয়ে ! আমরা একসাথে ছোট থেকে কলেজে পড়েছি ! কাল সন্ধ্যে বেলায় যখন আমায় বাবার সাথে কথা বলছিলাম তখন ও এসে পরে ! সব কিছু শুনে ওও জেড করে আমাদের সাথে যাবে ! কলকাতা নাকি ওর স্বপ্নের শহর ! এই সুযোগ আবার যে কবে আসবে। .. তাই ! বাবা সকালবেলাতেই গিয়ে নিজের হাতে টিকিট করে এনেছেন ! ফেরার টিকিট করতে পারেননি কারণ আমাদের ফেরার দিনক্ষণ কিছুই জানা নেই ! ওনার কে এক বন্ধু আছেন কলকাতায় ! ওনাকে ফোন করে দেবেন আমাদের ফেরার টিকিট হয়ে যাবে ! দূর থেকে সমীর আর রাজুকে আসতে দেখে ওদেরকে হাতের ইশারায় ডাকলাম ! ওরা কাছে এলে ওদের হাতে টিকিটটা ধরিয়ে দিলাম ! সমীর টিকিটটা ভালোকরে দেখে হুরররররে বলে লাফিয়ে উঠে কোয়েলকে জড়িয়ে ধরলো ! এক ধাক্কায় কোয়েল সমীরকে ছাড়িয়ে দিয়ে বললো " যা না শালা হরপ্রীতের কাছে গিয়ে জরাগে ! আমাকে কেন জড়াচ্ছিস ?" সমীর হেসে ফেললো " আরে হরপ্রীত আমাকে লাইক করে ! উই আর জাস্ট ফ্রেন্ড ! " -রেহেনা দে ! তুম দোনোকো ম্যায়নে কই বার ক্যান্টিন কে পিছে চুমা চাঁটি করতে হুয়ে দেখা ! মেরা মুহ মত্ খুলবা ! কোয়েলের এ হেনো আক্রমণে সমীর একটু বিপর্যস্ত হয়ে পড়লো ! কাঁচুমাচু মুখ করে বললো " দিলিতো আমার সব রাজ্ খুলে ! " এইবার রাজু আর সুনন্দ আমার জীবন হারাম করে দেবে ! - কেন রাজুও তো সুজাতাকে নিয়ে প্রতি শনিবারে ঘুরতে যায় ! আমি কি জানিনা ভেবেছিস ? এবার রাজুর অপ্রস্তুত হবার পালা ম্যা ম্যা করতে করতে বললো " কেন তুই ফালতু কথা বলছিস ! আমরা এমনিই ঘুরতে যাই ! - এমনিই ঘুরতে যাই ! দাঁত খিঁচিয়ে কোয়েল রাজুকে বললো ! "লাক্সমান গেস্টহাউসের সব ডিটেলস আমার কাছে আছে ! - এ বহেন ! মুঝে মাফ কর দে ! সরে বাজার মে মেরে রাজ মত্ খোল !বলেই কোয়েলের পা ধরতে গেলো ! কোয়েল তড়াক করে লাফিয়ে দু পা পিছিয়ে গিয়ে হাসতে শুরু করে দিলো ! আমি বললাম ব্যাপারটা কি রে কোয়েল ? - শালা দুজনেই ডুবে ডুবে জল খাবে আর ভাববে যেন শিবের বাবাও টের পাবে না ! সমীর আর হরপ্রীত রাজু আর সুজাতা।.ডুবে ডুবে লাইন চালিয়ে যাচ্ছে ! কিন্তু ওরা জানেনা হরপ্রীত আর সুজাতা দুজনেই আমার বান্ধবী ! সব কথা আমাদের মধ্যে আলোচনা হয় ! আর লাক্সমান গেস্ট হাউস আমাদের বাড়ির পাশেই ! আমি অনেকবার রাজু আর সুজাতাকে ঢুকতে আর বেরুতে দেখেছি ! রাজু কান ধরে ওঠবস করতে শুরু করে দিলো ! আর সমীর কোয়েলকে তারা করলো ! বেশ হাসি খুশিতেই সন্ধ্যেটা কাটলো ! আমাদের কলকাতা যাবার টিকিট ১১ অক্টবর সকাল সাতটায় ! হটাৎ সমীর বললো " সুনন্দ যেদিন থেকে হোস্টেলে এসেছি সেদিন থেকে মাল খেতে পাইনি ! আজ একটু ব্যবস্থা হবে কি ?" আমি জানি আমাদের হোস্টেল খুব স্ট্রিক্ট ! আমি ওদের বললাম আমরা দশ তারিখে বেরিয়েগিয়ে লাক্সমান গেস্ট হাউসেই থাকবো সারা সন্ধ্যে মাল খেয়ে এনজয় করবো ! আর সকাল হতেই স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরে নেবো ! ট্রেনের জন্যও কিছু মাল স্টকে রেখে দেব ! রাজু আর সমীর হুরররে বলে লাফিয়ে উঠলো ! কোয়েল বললো " তোরা একা একা মাল খাবি আর আমরা কি আঙ্গুল চুঁষব ? - তাহলে বলুন দেবী আপনাদের জন্য আমরা কি করতে পারি ?হাসির ছলে বললাম ! - আমাদের জন্য ভদকা নিয়ে নিবি ! সবাই ট্রেনে আনন্দ করবো ! - পুলিশ ধরলে কি হবে? আমি বললাম ! - নো চিন্তা ! ডু ফুর্তি ! আমার বাবা কি জন্য আছে ! আর মাত্র ৪ দিন আছে ! আমরা সেইভাবেই সমস্ত গোছগাছ করে নিতে শুরু করে দিলাম ! ১০ তারিখ আমাদের প্ল্যান অনুযায়ী আমরা তিনজন লাক্সমান হোটেলে পৌঁছে গেলাম ! হোটেলের মাইক একটা আমাদের বয়সী ছেলে আমাদের ওয়েলকাম করলো ! আমার আইডি দেখে পরিষ্কার বাংলায় বললো "কলকাতার কোথায় থাকেন ?" আমি অবাক হয়ে গেলাম এই বিদেশ বিভুঁয়ে এতো পরিষ্কার বাংলা। .. আমাকে আশস্ত করে রাহুল বললো " আমার নাম রাহুল আগারওয়াল ! আমাদের সাতপুরুষ বাংলায় ! বাবা এখানে চাকরি করতে এসেছিলেন পরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে এই বিন্ডিংটা কিনে হোটেল তৈরী করেন ! আমি বেশিদূর লেখাপড়া করতে পারিনি ! কোনোরকমে গ্রাজুয়েট হয়েছি ! বাবা এখানে নিয়ে এসে নিজে কলকাতায় গিয়ে রয়েছেন ! " ভালো লাগলো ! একজন মাড়োয়ারিকে শুদ্ধ বাংলা বলতে দেখে ! আমাদের সমস্ত ব্যবস্থা রাহুল করে দিলো ! কথা দিলো যে সকাল পাঁচটায় আমাদের তুলে দেবে ! হোটেল থেকে স্টেশন মাত্র ৫ মিনিটের হাঁটা পথ ! কোনো অসুবিধা হবে না ! আমরা তিনজন সেই রাতে খুব এনজয় করলাম ! জীবনে প্রথম চিকেন সিক্সটিফাইভ খেলাম রাহুলের সৌজন্যে ! কখন যে মালের নেশায় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম কারুর খেয়াল ছিলোনা ! হটাত দরজায় জোরে জোরে ধাক্কায় ঘুম ভেঙে গেলো ! মাথা পুরো ভারী হয়ে আছে ! অনেক কষ্টে মাথা তুলে দরজা খুলে দেখি রাহুল দাঁড়িয়ে ! " পাঁচটা বাজে ! উঠে পড়ুন ! না হলে ট্রেন পাবেন না !" সমীর আর রাজুকে জোর করে তুলে সবাই তৈরী হয়ে সবাই স্টেশনের দিকে পা চালালাম ! মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই স্টেশনের বাইরে পৌঁছে গেলাম ! মাথা পুরো ভারী হয়ে আছে ! তিনজনে স্টেশনের বাইরে চা খেলাম ! কিছুক্ষনের মধ্যেই কোয়েলদের দেখতে পেলাম ! কোয়েল, কোয়েলের বাবা মানে সুভাষ ব্যানার্জী সাথে অন্য দুটি মেয়ে যাদেরকে আমি চিনিনা ! রাজু আর সমীর আমার পিছনে লুকাতে চেষ্টা করলো ! ব্যাপারটা কি নিজেই বুঝতে পারছিলামনা ! এই মেয়েদুটি কারা ? আর রাজু আর সমীর আমার পিছনেই বা কেন লুকাচ্ছে ?
22-11-2020, 07:56 PM
(This post was last modified: 22-11-2020, 08:31 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
কমেন্ট না করলে আমি আর খেলবো না !
22-11-2020, 09:23 PM
23-11-2020, 06:15 AM
সুনন্দ খুব সহজেই ইঞ্জিনিয়ারিং এ চান্স পেয়ে গেলো।
এখন আবার সহজেই দু তিনটে মেয়ে পেয়ে যাচ্ছে। তৃপ্তিদি মঞ্জুকে ছুঁতে নিষেধ করে গিয়েছেন, অন্য মেয়েদের সাথে কিন্ত ইন্টু মিন্টু করতে কোনো বাধা নেই।
23-11-2020, 09:52 AM
দেখা যাক কি হয়, লেখা বন্ধ করবেন না কিন্তু !
|
« Next Oldest | Next Newest »
|