Thread Rating:
  • 67 Vote(s) - 3.36 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
(07-11-2020, 01:25 PM)sorbobhuk Wrote: খুব সুন্দর হয়েছে ভাই।  রিশুর মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঝিনুকও পরে আহত হয় এবং সেই বেদনায়  কখন ঘুমিয়ে পড়েছে জানে না। এই দিকে মাকে না বললেও আম্বালিকা বুঝে যায় তার ছেলে কষ্টে আছে। আর বাথরুমে তো ঝিনুক কারেন্ট খেয়ে অবশেষে রিশুকে ভিতরে দিলো। আর যখন বের হয় না তখন রাগান্বিত চেহারায় তাকিয়ে থাকে।  দেখি এখন কি করে ঝিনুক।

এটা আসলেই পিনুদা খুব খারাপ কাজ করেছে , ফুলের মতো কোমল মেয়েটাকে কারেন্ট এর শক দিলো নিজে বাথরুমে ঢোকার জন্য !!!!
Angry Angry

দিতে হলে আমাকে দিতো , আমি কিছু মনে করতাম না একদমই 

Tongue Tongue Big Grin
[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(07-11-2020, 03:36 PM)ddey333 Wrote: চোখগুলো তো আসলে পিনুদার !!!! Big Grin Big Grin

উনি কি চোখ বন্ধ রাখার মতো ভদ্দরলোক ?????
Tongue Tongue

?????
Like Reply
এই পর্বটা দারুন লাগলো ( যতো নতুন পর্ব আসে সেগুলোই মনে হয় এখনও অবধি সেরা ! )। অম্বালিকা জন্মদায়িনী না হয়েও যেভাবে দূর থেকে রিশুর কথা আর স্বর শুনে বুঝে যায় কি হয়েছে সেটা অসাধারণ  Heart রিশুর প্রতি দুর্ব্যবহার করার পর ঝিনুক যে অনুতপ্ত হয়েছে সেটা একটা আশার আলো  Smile গিজার চালানোর খুনঁসুটিটা মন কাড়লো, রিশু চোখ বন্ধ করেনি তা তো বুঝলাম  happy   কিন্তু কি দেখলো সেটা আমাদের জানাল না  Dodgy
[+] 1 user Likes Mr Fantastic's post
Like Reply
আচ্ছা একটা কথা জানবার ছিল, ' পিনুরাম ' শব্দটার অর্থ কি ? 
[+] 1 user Likes Mr Fantastic's post
Like Reply
(07-11-2020, 11:35 PM)Mr Fantastic Wrote: আচ্ছা একটা কথা জানবার ছিল, ' পিনুরাম ' শব্দটার অর্থ কি ? 

আমি জানি , তোমার কানে কানে বলবো কখনো Smile

কিন্তু তুমি মধ্যরাতে .... অনুবাদ দিলে না , নিজের গল্পও বললে না ,ওগুলোর পরে বলবো
Big Grin
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
দাদা পরবর্তী আপডেট কবে আসবে?
[+] 1 user Likes johny23609's post
Like Reply
ও পিনু দা, পিনু দা....এই রকম কেন করছো? একে তো ছোট ছোট আপডেট দাও তারপরে আবার প্রতিদিন দাও না। দিনের মধ্যে ৪-৫ এসে ঘুরে যাচ্ছি  ২ দিন ধরে। প্রতিদিন দাও না গো আপডেট টা। একবার নেশা ধরিয়ে এমন করচো আমাদের সাথে.?????
[+] 2 users Like Chinmoy's post
Like Reply
(07-11-2020, 02:00 AM)বাউন্ডুলে Wrote: দাদা সেটা হলেই তো ভাল হয়।  আমি  সব সময়  নতুনত্বের খোজে।  ওই গল্পটার অনুবাদের থেকে ওই আঙ্গিকের নতুন গল্প পেলে তো সোনায় সোহাগা।  I loved that story and loving this one too.

ধন্যবাদ! এটা কেমন লাগছে? অবশ্য আগেই জানিয়েছেন যে এই ঝিনুক আর সেই ঝিনুকের মধ্যে অনেক পার্থক্য, আরো অনেক কিছুই খুঁজে পাবেন আগামী দিনে !!!!!!
রেপু পয়েন্টস +1
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(07-11-2020, 05:42 AM)TumiJeAmar Wrote: বরফ গলছে !! ??

(08-11-2020, 08:43 PM)Isiift Wrote: দাদা পরবর্তী আপডেট কবে আসবে?

(08-11-2020, 11:12 PM)Chinmoy Wrote: ও পিনু দা, পিনু দা....এই রকম কেন করছো? একে তো ছোট ছোট আপডেট দাও তারপরে আবার প্রতিদিন দাও না। দিনের মধ্যে ৪-৫ এসে ঘুরে যাচ্ছি  ২ দিন ধরে। প্রতিদিন দাও না গো আপডেট টা। একবার নেশা ধরিয়ে এমন করচো আমাদের সাথে.?????

আসবে আসবে, আমার নিজেরই আসা হচ্ছে না এখানে অনেক কারনে আর কি বলব। তবে ঝিনুক আপনাদের ছেড়ে যাবে না !!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(07-11-2020, 10:59 AM)ddey333 Wrote: এমা ছি ছি , এসব কি বাজে বাজে কথা সবার সামনে হাটের মাঝখানে !!!!!!!!!!!

(07-11-2020, 03:36 PM)ddey333 Wrote: চোখগুলো তো আসলে পিনুদার !!!! Big Grin Big Grin

উনি কি চোখ বন্ধ রাখার মতো ভদ্দরলোক ?????
Tongue Tongue

(07-11-2020, 03:42 PM)ddey333 Wrote: এটা আসলেই পিনুদা খুব খারাপ কাজ করেছে , ফুলের মতো কোমল মেয়েটাকে কারেন্ট এর শক দিলো নিজে বাথরুমে ঢোকার জন্য !!!!
Angry Angry

দিতে হলে আমাকে দিতো , আমি কিছু মনে করতাম না একদমই 

Tongue Tongue Big Grin

এখন পর্যন্ত রিশু বিশেষ কিছুই দেখতে পায়নি, পার্থ অনেক কিছুই দেখেছে, এবারে তুমি ভাবো তুমি পার্থের চোখ দিয়ে দেখতে চাও নাকি রিশুর চোখ দিয়ে ঝিনুকের দর্শন পেতে চাও !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 3 users Like pinuram's post
Like Reply
(07-11-2020, 11:40 AM)bourses Wrote: মোর ভাবনারে কী হাওয়ায় মাতালো,
দোলে মন দোলে অকারণ হরষে।
হৃদয়গগনে সজল ঘন নবীন মেঘে
রসের ধারা বরষে॥
তাহারে দেখি না যে দেখি না,
শুধু মনে মনে ক্ষণে ক্ষণে ওই শোনা যায়
বাজে অলখিততারি চরণে
রুনুরুনু রুনুরুনু নূপুরধ্বনি॥
গোপন স্বপনে ছাইল
অপরশ আঁচলের নব নীলিমা।
উড়ে যায় বাদলের এই বাতাসে
তার ছায়াময় এলো কেশ আকাশে।
সে যে মন মোর দিল আকুলি
জল-ভেজা কেতকীর দূর সুবাসে॥

আহা ভীষণ সুন্দর, এর বেশি কি লিখব সেটা আমিও বুঝে পাচ্ছি না !!!!!
রেপু পয়েন্টস +1
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 3 users Like pinuram's post
Like Reply
Heart 
(07-11-2020, 01:25 PM)sorbobhuk Wrote: খুব সুন্দর হয়েছে ভাই।  রিশুর মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঝিনুকও পরে আহত হয় এবং সেই বেদনায়  কখন ঘুমিয়ে পড়েছে জানে না। এই দিকে মাকে না বললেও আম্বালিকা বুঝে যায় তার ছেলে কষ্টে আছে। আর বাথরুমে তো ঝিনুক কারেন্ট খেয়ে অবশেষে রিশুকে ভিতরে দিলো। আর যখন বের হয় না তখন রাগান্বিত চেহারায় তাকিয়ে থাকে।  দেখি এখন কি করে ঝিনুক।

ধন্যবাদ !!!!!
রেপু পয়েন্টস +1
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 3 users Like pinuram's post
Like Reply
(07-11-2020, 02:32 PM)Isiift Wrote: প্রতিদিন অসাধারণ অসাধারণ বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে গেছি।তবে সবচেয়ে বড় কথা ।রিশু চোখ বন্ধ করল না কেন?

যা বাবা, চোখ বন্ধ করে কি কেউ বাথরুমে ঢুকতে পারে নাকি? Tongue Tongue Tongue Tongue
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(07-11-2020, 07:09 PM)Mr Fantastic Wrote: এই পর্বটা দারুন লাগলো ( যতো নতুন পর্ব আসে সেগুলোই মনে হয় এখনও অবধি সেরা ! )। অম্বালিকা জন্মদায়িনী না হয়েও যেভাবে দূর থেকে রিশুর কথা আর স্বর শুনে বুঝে যায় কি হয়েছে সেটা অসাধারণ  Heart রিশুর প্রতি দুর্ব্যবহার করার পর ঝিনুক যে অনুতপ্ত হয়েছে সেটা একটা আশার আলো  Smile গিজার চালানোর খুনঁসুটিটা মন কাড়লো, রিশু চোখ বন্ধ করেনি তা তো বুঝলাম  happy    কিন্তু কি দেখলো সেটা আমাদের জানাল না  Dodgy

(07-11-2020, 11:35 PM)Mr Fantastic Wrote: আচ্ছা একটা কথা জানবার ছিল, ' পিনুরাম ' শব্দটার অর্থ কি ? 

রিশু এখন কি সব কিছু দেখেছে বলে আপনার মনে হচ্ছে, পার্থ হয়ত অনেক কিছুই দেখেছে, এখন আপনি ঠিক করুন কার চোখ দিয়ে দেখতে চান ঝিনুককে, পার্থ যে প্রতারক সেই চোখে নাকি এই নতুন মানুষ রিশুর চোখে ? Tongue 

পিনুরাম নামটার মধ্যে একটা গল্প লুকিয়ে আছে সেটা না হয় পরে একদিন বলব !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
পর্ব পাঁচ – (#6-23)

 
কথা বলার সময়ে ঝিনুকের দিকে চোখ যায় রিশুর। ঝিনুক দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে থাকলেও ওর বুঝতে অসুবিধে যে সুন্দরী ললনা শুধু মাত্র তোয়ালে গায়ে জড়িয়ে। হাত, বাজু কাঁধ সব অনাবৃত, চুল এলোমেলো। মেহেন্দির গাড় বাদামি রঙ্গে রাঙ্গান ফর্সা এক হাত কোন রকমে বুকের কাছে জড় হয়ে শক্ত করে তোয়ালে চেপে ধরে। ঝিনুক ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে থাকায় রিশু মাথা নাড়িয়ে একটু হেসে বেড়িয়ে আসে বাথরুম থেকে। ভোরের আলো ফোটার আগেই ওকে দৌড়াতে হবে হসপিটালে, তাই শোয়ার ঘরে ঢুকে পরে নিজের জামা কাপড় নেওয়ার জন্য। ঘরে ঢুকে চোখ পরে বিছানার ওপরে খোলা সুটকেসের দিকে। ওপরে দিকে পাতলা ফিনফিনে লঞ্জারি গুলো দেখে হেসে ফেলে, বেশ দুরন্ত মেয়ে, অনেক কিছুই লুকিয়ে আছে ওই ভয়ার্ত চোখের আড়ালে। তখন পর্যন্ত ঝিনুক বাথরুমে, মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, মেয়েটার সর্দি লাগলো বলে আর কি।
 
আলমারির বেশ কয়েকটা তাক জুড়ে মায়ের কাপড় চোপর, ভাই বোনের পোশাক আশাক ভর্তি, রেসিডেন্টশিপ পাওয়ার পরে কোলকাতা যাওয়া কমে যাওয়াতে ওর মা প্রত্যকে মাসেই ওর কাছে আসেন, কখন ভাই বোনকে সঙ্গে নিয়ে না হলে একাই দুই তিন দিনের জন্য ঘুরে যান। মায়ের ভাই বোনের কাপড়ের দিকে হাত বাড়ায় না রিশু, নিজের জামা কাপড় গুলো একটা তাকের মধ্যে ঠেসে দিয়ে ঝিনুকের জন্য কয়েকটা তাক খালি করে দেয়। এপ্রন আর কাচা জামা প্যান্ট হাতে নিয়ে শোয়ার ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে আসে। ছোট শোয়ার ঘরের খাটে জামা কাপড় রেখে ঝিনুকের অপেক্ষায় বসার ঘরের সোফায় বসে পরে। এখন পর্যন্ত ঝিনুক ওকে আপনি করেই সম্বোধন করে চলেছে, আধুনিকা মেয়ে তাই ঝিনুকের মুখে আপনি সম্বোধন একদম মানায় না। বুঝতে অসুবিধে হয় না রিশুর যে ঝিনুক হয়ত ওর সাথে সুদুর দিল্লীতে এসেছে কিন্তু মেয়েটার আত্মা কোথাও যেন হারিয়ে গেছে।
 
বেশ কিছুক্ষন পরে বাথরুমের দরজা খুলে বাইরে উঁকি মারে ঝিনুক, কোথায় গেল? বসার ঘরের সোফার ওপরে বসে থাকতে দেখে মুখ টিপে হাসি লুকিয়ে বেড়িয়ে আসে। এতক্ষন কেন বসে, ওর অপেক্ষায় নাকি? ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে দেখে রিশু, পরনে হাঁটু পর্যন্ত চাপা একটা ঘিয়ে রঙের প্যান্ট আর ওপরে একটা চাপা টপ। পরনের পোশাক বেশ আঁটো যার ফলে ঝিনুকের বাড়ন্ত দেহের আকার অবয়াব স্পষ্ট ভাবেই ফুটে উঠেছে রিশুর চোখের সামনে। ধির পায়ে বাথরুমে থেকে বেড়িয়ে আসার ফলে ফর্সা পায়ের গোড়ালিতে বাঁধা পাতলা নুপুরের নিক্কনে ভরে ওঠে সারা ঘর। ছনছন আওয়াজ বেজে ওঠে রিশুর বুকের ভেতরে। ভীষণ ঠান্ডার ফলে ঝিনুকের স্তনের বোঁটা জোড়া শক্ত হয়ে গেছে, টপের নিচে ব্রা পরে না থাকায় ভীষণ ভাবেই ফুটে উঠেছে স্তনের বোঁটা জোড়া। ভীষণ লজ্জা লাগে ঝিনুকের, তোয়ালেটা বুকের কাছে জড়সড় করে ধরে পিনোন্নত স্তন জোড়া কোন রকমে রিশুর রক্তিম চাহনি বাঁচিয়ে ওর দিকে হাজার প্রশ্ন নিয়ে তাকায়, এত কি দেখছ বল’ত? রিশু মুচকি হাসি দেয় ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে। রিশুর ওই হাসি দেখে ভীষণ লজ্জা পেয়ে ত্রস্ত পায়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে পরে ঝিনুক।
 
বুক ভরে শ্বাস নেয় রিশু, শোয়ার ঘরের মধ্যে ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে বলে, “এখন ঘুমাতে যাও, যা গুছাবার কাল সকালে গুছিও।” নিজের পোশাক বড় সুটকেসের মধ্যে রেখে বাধ্য মেয়ের মতন মাথা দোলায় ঝিনুক। রিশু ওকে বলে, “আমার ট্রমা সেন্টারে মর্নিং ডিউটি, আমি এই সাড়ে চারটে নাগাদ বেড়িয়ে যাবো।” ছোট উত্তর দেয় ঝিনুক, “আচ্ছা” সেই সাথে জিজ্ঞেস করে কখন ফিরবে? কিন্তু গলা দিয়ে স্বর বের হল না ওর। রিশু সেই অব্যাক্ত প্রশ্নের উত্তরে বলে, “আমার ফিরতে সেই বিকেল তিনটের মতন হয়ে যাবে। মাম্মা হয়ত সকালেই কাজের মেয়ে রোজিকে ফোন করে দেবে, সে এসে রান্না করে যাবে।” ঝিনুক এক মনে রিশুর দিকে তাকিয়ে সব কথা মন দিয়ে শুনে যায়। রিশু ওকে বলে, “এখন ঘুমিয়ে পড় আর জাগতে হবে না।”
 
রিশু নিজের ঘরে ঢুকে লেপ মুড়ি দিয়ে চুপচাপ সিলিঙ্গের দিকে একভাবে তাকিয়ে চিন্তায় পরে যায়। অনেক সময়ে ওটিতে থাকলে ওর বাড়ি ফিরতে দেরি হয়ে যায়, সেই পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে পারবে ঝিনুক? মাঝে মাঝে যখন এমারজেন্সি অথবা কোন ডাক্তার ছুটিতে যায় তখন মধ্য রাতেও অনেক সময়ে ডাক পরে। অনেক সময়ে অনেক রোগীকে বাঁচাতে পারে না, কেউ কেউ অপারেশান টেবিলেই মৃত্যু বরন করে, সেসব দিনে খুব চুপচাপ থাকে রিশু। দুঃখে ভাবাবেগে বয়ে যায় না সত্যি কিন্তু ওর মা ওর গলা শুনেই বুঝতে পারে ওর কি হয়েছে। সেসব দিনে ওর মা হসপিটালে থাকাকালীন একদম আর ফোন করে না, সেসব দিনে ওর মা অনেক রাতের দিকে ফোন করে ওকে স্বান্তনা দিতেন। মা ছাড়া ওর এই সব দুঃখ কষ্ট কোন তৃতীয় ব্যাক্তির পক্ষে অনুধাবন করা অসম্ভব।
 
আগে থেকেই একটা ধারনা ছিল যে ঝিনুক জেদি আর অবাধ্য প্রকৃতির মেয়ে কিন্তু সুটকেসে রাখা পোশাকের বাহার দেখে মনে হল শুধু মাত্র জেদি নয় এই মেয়ে ভীষণ ভাবেই দুরন্ত আর ডানপিটে স্বভাবের। এইসব দুরন্ত আর চঞ্চল স্বভাবের মানুষ সবসময়ে নিজের সুখের কথা আগে চিন্তা করে। ওর মা কোনদিন নিজের চিন্তা করেনি আর সেই শিক্ষাই ওকে দিয়ে এসেছে চির জীবন। মায়ের কথা মনে পড়তেই চোখের কোনা জলে ভরে যায়। মেডিকেল এনট্রান্স পরীক্ষায় যেদিন পাস করেছিল সেই রাতের ঘটনা চোখের সামনে ভেসে উঠতেই হুহু করে ওঠে ওর হৃদয়, বহুদিন পরে সর্বাঙ্গ কাঁপিয়ে এক অব্যাক্ত কান্না ঠিকরে বেড়িয়ে আসে গলা থেকে, “মা গো...” সেই রাতে আর ঘুমাতে পারল না রিশু।
 
রাত তখন সাড়ে তিনটে একটু পরেই রিশু বেড়িয়ে যাবে। ঝিনুকের চোখে ঘুম একদম ছিল না। গলা পর্যন্ত লেপ মুড়ি দিয়ে বিছানায় শুয়ে ভাবে নিজের কথা, এরপর কি হবে, এই চার দেয়ালের মধ্যে গন্ডিবদ্ধ হয়েই কাটাতে হবে বাকি জীবন। হয়ত এরপরে ওর নিত্য কাজ হবে রিশুর জন্য সকালে উঠে টিফিন বানানো, তারপরে ঘরের কাজ কর্ম, তারপরে রান্না বান্না করা, সেই বিকেলে কখন ওর স্বামী আসবে তার অপেক্ষায় থাকা। মায়ের মতন ঘর বন্দি জীবন কাটাতে চায়নি ঝিনুক। রানীগঞ্জে থাকতে মাকে দেখেছে, মা রোজ দিন সকালে উঠে বাবার জন্য চা জল খাবার বানাত, তারপরে ওদের কলেজের টিফিন বাবার টিফিন বানাত। সেই কাজের পরে যখন বাবা আর ওরা অফিস আর কলেজের জন্য বেড়িয়ে যেত তারপরে রান্না করতে বসত। হয়ত কোনদিন দুপুরে একটু ঘুমাত না হলে পাশের কোয়াটারের কস্তুরি আন্টির সাথে গল্প করত। এই ছিল ওর মায়ের নিত্য দিনের কাজ। বড় হতে হতে ঝিনুক মনে মনে ঠিক করে ফেলেছিল, না মায়ের মতন এই গতানুগতিক জীবন যাপন করবে না।
 
এমবিএ পড়ার সময় থেকেই ইচ্ছে ছিল চাকরি করার, কিন্তু শেষের দিকে পার্থের সাথে মেলামেশা হওয়ার ফলে আশানুরূপ ভালো ফলাফল হল না। ক্যাম্পাস ইন্টারভিউতে চাকরি পায়নি তবে সেজন্য অনুতাপ ছিল না কারণ ততদিনে ওর জীবনে পার্থ এসে গিয়েছিল এবং ঝিনুকের চোখে তখন এক রঙ্গিন ধোঁয়াশা স্বপ্নের আবরন পরে গিয়েছিল। এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করার ইচ্ছেও ছিল না ওর, কিন্তু মনের কোন এক গহীন কোনে লুকিয়ে ছিল পূর্ণ রূপে শারীরিক সঙ্গমের প্রবল ইচ্ছে। পার্থের হাতের উষ্ণ ছোঁয়া মাঝে মাঝেই ওকে উত্তপ্ত করে তুলতো, কামনার লেলিহান শিখা জ্বলে উঠত তখন, কতবার ব্রা আর প্যান্টি পরে পরেশের ফ্লাটে পাশাপাশি দুইজনে শুয়ে কাটিয়ে গেছে। যৌন সঙ্গমের তীব্র ইচ্ছে থাকলেও কোথায় যেন একটু বাধা পরে যেত ঝিনুক, সেই অনাস্বাদিত শারীরিক সুখের ইচ্ছেটাকে সম্পূর্ণ রূপে উপভোগ করার জন্য কলেজ শেষ করেই পার্থের সাথে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। বুকের পাঁজর ককিয়ে ওঠে সেই কথা ভেবে, কেন মরতে পার্থের সাথে দেখা হয়েছিল।
 
ভাবতে ভাবতে একটু তন্দ্রাভাব এসেছিল রিশুর, ঠিক সেই সময়ে ফোন বেজে ওঠে ওর। অন্যপাশে ওর কলিগ ব্রিজেশ, ওকে জানায় যে রাতে একটা ট্রাকের সাথে একটা বাসের এক্সিডেন্ট হয়েছে, একের পর এক এ্যাম্বুলেন্স এসে চলেছে, ওকে তাড়াতাড়ি হসপিটাল আসতে হবে। ঘুম আর হল না ওর, ভেবেছিল একটু চোখ বুজে পরে থাকবে কিন্তু কর্তব্য সবার আগে। খাট ছেড়ে উঠতে একদম ইচ্ছে করছিল না, গতরাতেও ঠিক করে ঘুমাতে পারেনি, কাউচে বসে কাটাতে হয়েছিল। বিছানা ছেড়ে উঠে, পাশের ঘরে উঁকি মেরে দেখল যে ঝিনুক ওর ওঠার শব্দ শুনে উঠে পড়েছে। একটা পাতলা কারডিগান গায়ে জড়িয়ে ওর চটি পরে দরজায় দাঁড়িয়ে ঘুম জড়ানো চোখে ওর দিকে তাকিয়ে।
 
তোয়ালে হাতে করে ঝিনুককে জিজ্ঞেস করে, “এত তাড়াতাড়ি উঠলে কেন?”

ঘুম জড়ানো গলায় ঝিনুক ওকে জিজ্ঞেস করে, “না মানে, এত রাতেই যেতে হবে আপনা...?”

মুখ দিয়ে আপনি আর একটু হলেই বেড়িয়ে যাচ্ছিল, সেটা বুঝতে পেরে একটু হেসে মাথা দোলায় রিশু, “হ্যাঁ, একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে যেতে হবে।”
 
জামা কাপড় পড়ে তৈরি হয়ে নেয় রিশু। বড় শোয়ার ঘরে ঢুকে আলমারি খুলে কাগজপত্র নিজের ল্যাপটপের ব্যাগের মধ্যে গুছিয়ে নেয়। ঝিনুক চুপচাপ একভাবে রিশুকে শুধু দেখে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই করনীয় থাকে না। ও ত এখন ঠিক ভাবে চেনেই না রিশুকে, বোঝেই না ঠিক ভাবে একটা সারজেনের কাঁধে কত বড় দ্বায়িত্ত।

হাতে মোবাইল নিয়ে ঝিনুক কে জিজ্ঞেস করে, “তোমার মোবাইল নাম্বার কি?”

ঝিনুক নিজের নম্বর জানিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কখন ফেরা হবে?”

হেসে ফেলে রিশু, জড়তা কাটেনি ঝিনুকের, এখন সেই ভাববাচ্যে কথা বলে চলেছে, “দেরি হবে, আমি টাইম পেলে ফোন করব।”
 
বাধ্য মেয়ের মতন মাথা দোলায় ঝিনুক। জুতো পরে হাতে হেলমেট নিয়ে বেড়িয়ে যাওয়ার আগে পেছন ফিরে একবার তাকায়। হটাত করে মনে হল যেন ঝিনুকের মুখ খুব শুকনো হয়ে গেছে, ওর চোখে চোখ রেখে ক্ষনিকের জন্য দাঁড়িয়ে পরে, তারপরে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বেড়িয়ে যায়। পেছনে দরজা বন্ধ করার আওয়াজ পায় রিশু। গায়ে হলুদের গন্ধ তখন পর্যন্ত কাটেনি কিন্তু কর্তব্য সবার আগে। গত এক বছরে প্রচুর প্রাইভেট হসপিটাল থেকে ডাক এসেছিল ওর কাছে, দুই তিন লাখের মাইনে, মাকে জানিয়েছিল সেসব কথা। ওর মা সব শুনে একটু আহত হয়ে ওকে বলেছিলেন, টাকার জন্য তোকে ডাক্তারি পড়াইনি আমি, তোর নাম হবে যশ হবে মানুষের সেবা করবি সেইজন্য তোকে পড়িয়েছিলাম। সেদিনের পর যখনি কোন প্রাইভেট হসপিটাল থেকে কল আসত, মানা করে দিত রিশু।
 
ভোরের আলো ফুটতে অনেক দেরি, রয়াল এনফিল্ডে কয়েকবার কিক মেরে স্টারট করে বেড়িয়ে পরে হসপিটালের উদ্দেশ্যে। পাপা অনেকবার বলেছিল একটা গাড়ি কিনে দিচ্ছি, ছোট গাড়ি। রিশু বলেছিল বাড়িতে দুটো গাড়ি আছে এখানে গাড়ি কিনে লাভ নেই তাই বাইক কেনে। যেতে যেতে ভাবে ঝিনুকের কথা, বর্তমান যুগে কেউই আপনি বলে সম্বোধন করে না, সেখানে এই চঞ্চলমতি মেয়েটা এখন আপনি করেই ওকে ডেকে চলেছে, মেয়েটার ভেতরের জড়তা বুঝতে অসুবিধে হয় না ওর। সেই সাথে এক অজানা আশঙ্কা ভর করে আসে মনের আঙ্গিনায়, এই মেয়ে ভবিষ্যতে কেমন ব্যাবহার করবে সেটা ওর অজানা। ওর বাড়ির সাথে মানিয়ে নিতে পারবে ত? দিপ আর দিয়া ওর দুটো চোখের মণি, ঝিনুক কি কখন সেইভাবে নিজের বোনের সাথে মেলামেশা করেছে? আগামী বছরে কোলকাতা ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে আছে ওর, সেখানে গিয়ে আবার বলবে না ত যে নিজের আলাদা বাড়ি চাই? একসাথে অনেক বাসন থাকলে নড়াচড়া হয় আওয়াজ হয়, রিশু তাই কখন চায়নি যে ওর পরিবারের মাঝে কেউ আসুক। মাকে কেমন ভাবে সন্মান দেবে ঝিনুক, ও যেমন ওর মাকে ভালোবাসে তেমন যদি না করতে পারে তাহলে মরেও শান্তি পাবে না রিশু।
 
হসপিটালে পা রাখতেই বুঝতে পারে যে অবস্থা খুব খারাপ। এমারজেন্সি ভর্তি হয়ে গেছে, দুই জন স্পটডেড অনেকের অবস্থা অনেক সঙ্গিন। কাজে নেমে পরে রিশু, ওর ওটি টেবিল থেকে কোন লোক হতাশ হয়ে ফিরে যায়নি। মাকে একটা মেসেজ করে জানিয়ে দেয় যে হসপিটালে পৌঁছে গেছে এবং সারাদিন ওটিতে ব্যাস্ত থাকবে। ব্রিজেশ আর সুন্দরের সাথে কথাবার্তা আলোচনা করে ঢুকে পরে ওটি তে, আজকে আর নাওয়া খাওয়া হবে না।





====================== পর্ব পাঁচ সমাপ্ত ======================
[Image: 20210115-150253.jpg]
Like Reply
আম্বালিকার জায়গা রিশুর মনের গভীরে অন্য কেউ নিতে পারবে না কোনদিনই ঠিকই, কিন্তু গল্পের প্রবাহে এটা অনেকটাই পরিষ্কার যে দিল্লিতে আম্বালিকার অনুপস্থিতি অনেকটাই বা পুরোটাই পূরণ করে দেবে ঝিনুক... মনের গভীরে একটু একটু করে গড়ে উঠতে থাকা অনুরাগের ছোঁয়ায় পরিপূর্ণতা লাভ করতে চলেছে তাদের সেই দাম্পত্য জীবনের আগত মূহুর্তটার... তবে তার সাথে সেই সিন্দুঁরে মেঘের কথাটা মাথায় রাখতে হচ্ছে... গলার মধ্যে কাঁটার মত খচখচে অনুভূতি... "রীতিকা"... হুমমম... কখন আর কবে সে ছন্দপতনের যতি হয়ে ওঠে সেটাই দেখার...

একটা ছোট্ট ছত্রে যে মুনশিয়ানায় ঝিনুকের দেহের বর্ণনার ছবি এঁকে দিলে, রিশুর মনে কতটা জানি না, তবে পাঠক হৃদয়ে ঝড় তোলার মত যথেষ্ট...


Heart Heart Heart Heart Heart Heart

তোমার আমার এক জীবনের পথ
সমান্তরাল সরলরেখায় বাঁধা
তোমার আমার দুই হৃদয়ের প্রেম
তানপুরাতে সুরে সুরে সাধা...

এক জীবনের নীরব চাওয়া পাওয়া
অন্য জীবন যত্নে ঢেকে রাখে
এক জীবনের অনাদর উপেক্ষা
অন্য জীবন আদর মেখে ডাকে...

তোমার আমার দৃষ্টি বিনিময়
চোখের তারা নীরব কথা বোঝে
তোমার জীবন ডাকছে আমায় কাছে
আমার জীবন কেবল তোমায় খোঁজে...

এক জীবনের অপেক্ষা অবসান
অন্য জীবন বিরহ স্বপ্ন গাঁথে
এমনি করে থাকলে না হয় রেশ
দুই জীবনের আলাপন এক সাথে...

এমনি ভাবে কাটুক বসন্ত দিন
রাত পেরিয়ে সূর্য ওঠা ভোর
আদর আর অনাদরের মাঝে
তোমার আমার প্রসবিত শহর...
[+] 4 users Like bourses's post
Like Reply
খুব স্বাভাবিক কারণেই ঝিনুক মানসিক ভাবে একটা চরম টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে , আকাশে ওড়া পাখির হঠাৎ খাঁচায় বন্ধ পড়া অবস্থা , এছাড়া পার্থর ছোড়া তীরের রক্তাক্ত ক্ষত তো আছেই আছে
রিশুর এখন অগ্নিপরীক্ষা , খুব সাবধানে এগোতে হবে ওকে
বেশি তাড়াহুড়ো করলে যেমন হিতে বিপরীত হবে , আবার একেবারে চুপচাপ একা  ছেড়ে দিলেও ঝিনুক আরো তলিয়ে যাবে !!
তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ও পারবে  , রিশু এরকম পরিস্থিতি সামলানোর জন্য পুরোপুরি উপযুক্ত চরিত্র !!

Namaskar

ওই রিতিকা কে দিল্লিতে রাখার কি কোনো দরকার ছিল ?? ঝামেলাগুলো ওর মাধ্যমেই আসবে মনে হচ্ছে , আমি যদি পারতাম তাহলে ওকে কন্যাকুমারী পাঠিয়ে দিতাম !!! 

Angry
[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
ভীষণ ধীরে ধীরে বরফ গলছে।
তবে অন্টার্টিকা তেও এর থেকে তাড়াতাড়ি গলে।
[+] 2 users Like TumiJeAmar's post
Like Reply
যদি ঋতিকা দিল্লিতে না থাকে তবে পিনু ঝামেলা পাকাবে কাকে দিয়ে !!
তখন আবার আরেকটা মেয়ে আনতে হবে। সেটা কেমন হবে কে জানে। তার থেকে ঋতিকা ই থাক।
[+] 3 users Like TumiJeAmar's post
Like Reply
"বহুদিন পরে সর্বাঙ্গ কাঁপিয়ে এক অব্যাক্ত কান্না ঠিকরে বেড়িয়ে আসে গলা থেকে, “মা গো...” সেই রাতে আর ঘুমাতে পারল না রিশু। "
 ------- অসাধারণ! ছেলেরাও কাঁদে.   হ্যা..ছেলেরাও কাঁদে. MARD KO DARD NAHI HOTA, ছেলেরা আবার কাঁদে নাকি মেয়েদের মতো? তুই না ছেলে... ছেলেদের কাঁদতে হয়?

এসব কথার কোনো মানে হয়না, ওগুলো ফিল্মে মানায়. মন বড়ো অবুঝ. তারাও কখনো নরম হয়, একাকিত্ব অনুভব করে, কাউকে কাছে পেতে ইচ্ছে করে, মা বাবার কাছে ছুটে যেতে ইচ্ছে করে. কিন্তু সবসময় কিছু করার থাকেনা হয়তো. তাই কান্না পায়, কাঁদতে হয়. এই কান্না বেরোনোর সময় সেই জলের বিন্দু দেখেনা সে পুরুষের নাকি নারীর চোখ দিয়ে বেরিয়ে আসছে. সে শুধুই বেরিয়ে যায়.

এই ব্যাপারটা আপনি দারুন ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন. আর বাকি ব্যাপারে তো আপনাকে কিছু বলারই নেই. লাইক রেপুটেশন দিলাম.
[+] 5 users Like Baban's post
Like Reply




Users browsing this thread: 62 Guest(s)