Thread Rating:
  • 65 Vote(s) - 3.34 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
(02-11-2020, 12:31 PM)dada_of_india Wrote: সুন্দর! শিল্পীর হাতে জাদুর ছোঁয়া!

তোমার ছোট্ট কমেন্ট পেয়েও আমি ধন্য !!!!!! Heart Heart Heart Heart
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(02-11-2020, 12:34 PM)ddey333 Wrote: আজ আমার বড়োই আনন্দের দিন , উৎসবের দিন !!!
ঝিনুকের পদ্মকলির মতো পায়ের পাতা , স্পর্শ করেছে আমার শহরের মাটি !!
এসে গেছে সে !!!!! 

Smile Heart Heart Heart Heart Heart Heart Heart Heart

ইসসসস মনে হচ্ছে একটু ফুট ফেটিস, তাই নাকি?  Tongue 
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(02-11-2020, 12:37 PM)pinuram Wrote: এই নিয়ে কিছু বলতে চাইনি প্রথমে তবে বাঙালি নিয়ে যখন বললে তখন কয়েকটা কথা না বলে পারলাম না। কোলকাতা ছেড়ে সুখে আছো সেটা ভিন্ন ব্যাপার আর বাঙালি হিসাবে নিজের পরিচয় না দেওয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। তুমি কিন্তু দুটোকে একত্র করে ভীষণ ভাবেই তালগোল পাকিয়ে দিয়েছ। জল, কেউ বলে পানী, কেউ বলে ওয়াটার কেই বলে জল তাই বলে কি জলের স্বাদ বদলে যায়? তুমি বলবে হয়ত মিনারেল ওয়াটার আর সাধারন কলের জলে অনেক তফাত, কিন্তু খাও ত সেই জল, দিল্লীর বাঙালি হোক বা কোলকাতার বাঙালি হোক, সরবাগ্রে সে বাঙালি। সেই দেশে কে রাজত্ব করেছে সেটা প্রধান নয়, প্রধান হচ্ছে বুকের মাঝে কে আঁকা, কি ভাষা আমরা বলি। বন থেকে বাঘ তুলে আনা সহজ, বাঘের মধ্যে থেকে বন তুলে নেওয়া সহজ নয়, কিন্তু সেই জায়গায় কুয়োর ব্যাঙ কিন্তু চিরজীবন কুয়োর মধ্যে থেকে  বাইরে বের হলেও সে আশেপাশের জায়গা কে কুয়ো বলেই ভাবতে শুরু করে, যাকে বলে কূপমণ্ডূক। সুতরাং বাঙালি নামটা অন্তত গালাগালি নাকি সন্মান সেটা তোমাকে ঠিক করতে হবে, তুমি বাঘ না ব্যাঙ সেটা প্রমান করতে হবে !!!!!!!

কি সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিলে গুরু  Namaskar  আমি কিছুই বলিনি, লিখতে গিয়ে যদি কোনো অসম্মানজনক কথা বেরিয়ে আসে আঙুল দিয়ে, তাই। এতো সৌহার্দ্যের সঙ্গে কিভাবে মানুষের ভুল বুঝিয়ে দিতে পারো আমাকে  একটু শেখাবে ?  Heart
আর পর্বটা পড়ছি পরে একটা ব্রেক পেলে  Namaskar
[+] 2 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply
(02-11-2020, 12:37 PM)pinuram Wrote: এই নিয়ে কিছু বলতে চাইনি প্রথমে তবে বাঙালি নিয়ে যখন বললে তখন কয়েকটা কথা না বলে পারলাম না। কোলকাতা ছেড়ে সুখে আছো সেটা ভিন্ন ব্যাপার আর বাঙালি হিসাবে নিজের পরিচয় না দেওয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। তুমি কিন্তু দুটোকে একত্র করে ভীষণ ভাবেই তালগোল পাকিয়ে দিয়েছ। জল, কেউ বলে পানী, কেউ বলে ওয়াটার কেই বলে জল তাই বলে কি জলের স্বাদ বদলে যায়? তুমি বলবে হয়ত মিনারেল ওয়াটার আর সাধারন কলের জলে অনেক তফাত, কিন্তু খাও ত সেই জল, দিল্লীর বাঙালি হোক বা কোলকাতার বাঙালি হোক, সরবাগ্রে সে বাঙালি। সেই দেশে কে রাজত্ব করেছে সেটা প্রধান নয়, প্রধান হচ্ছে বুকের মাঝে কে আঁকা, কি ভাষা আমরা বলি। বন থেকে বাঘ তুলে আনা সহজ, বাঘের মধ্যে থেকে বন তুলে নেওয়া সহজ নয়, কিন্তু সেই জায়গায় কুয়োর ব্যাঙ কিন্তু চিরজীবন কুয়োর মধ্যে থেকে  বাইরে বের হলেও সে আশেপাশের জায়গা কে কুয়ো বলেই ভাবতে শুরু করে, যাকে বলে কূপমণ্ডূক। সুতরাং বাঙালি নামটা অন্তত গালাগালি নাকি সন্মান সেটা তোমাকে ঠিক করতে হবে, তুমি বাঘ না ব্যাঙ সেটা প্রমান করতে হবে !!!!!!!

দাদা বাঘ ও নয় , ব্যাঙ ও নয়

দাদা হলো জঙ্গলের রাজা সিংহরাজ , যার একটা হুঙ্কারে বড়ো বড়ো অনেক লোকেদের প্যান্ট ভিজে যায় !!!! 

Big Grin horseride
Like Reply
কেয়া বাত! গল্পে নতুন মোড়।
[+] 1 user Likes TheLoneWolf's post
Reply
(02-11-2020, 12:41 PM)pinuram Wrote: ইসসসস মনে হচ্ছে একটু ফুট ফেটিস, তাই নাকি?  Tongue 

আমার কপালে ওই ফুট টুকুই অনেক কিছু , বাকিগুলো রিশুর জন্য ছেড়ে দিলাম ,কি আর করবো !!!!

Big Grin Tongue
Like Reply
(02-11-2020, 11:25 AM)pinuram Wrote: পর্ব পাঁচ – (#3-20)

 
রিশু ঘাড় ঘুরিয়ে ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে দেখে, কাঁচের জানালায় মাথা রেখে কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছে। এয়ারহস্টেসকে ডেকে একটা বালিশ চেয়ে আলতো করে ওর মাথা তুলে তার নিচে গুঁজে দেয়। গায়ের ওভারকোটটা গলার কাছে ঠিক করে দেয়। নজর যায় ওর বন্ধ চোখের কোনায়, একটা সরু শুকনো জলের দাগ করুন হয়ে বয়ে নাকের ডগা পর্যন্ত চলে গেছে। এত কষ্ট পাবে জানলে সত্যি বিয়ে করত না ঝিনুককে, কিন্তু সেদিন সবার সামনে তাহলে হ্যাঁ কেন বলেছিল, বলতে পারত যে একটু সময় চাই ভেবে দেখার জন্য, রিশু কিছু একটা বলে তাহলে কাটিয়ে দিতে পারত। অন্তত ওর একবার উচিত ছিল বিয়ের আগে একবার ফোন করার, সেটাও করেনি, বাধো বাধো ঠেকেছিল, মনে হয়েছিল আগ বাড়িয়ে কথা বলতে যাওয়া। বুকের বামদিকের পাঁজর ককিয়ে ওঠে এক অজানা ব্যাথায়। এই দুষ্টু মিষ্টি মেয়েটার বুকের ঘা কি সত্যি শুকিয়ে দিতে পারবে রিশুর কোন ওষুধ? শারীরিক ব্যাথা বেদনা, কাটা ছেঁড়া নিয়েই ওর নিত্য দিনের কাজ, শত শত রোগী আসে ওর কাছে তাদের অঙ্গ কেটে সেলাই করে সারাতে চেষ্টা করে রোজদিন। কিন্তু এই মেয়েটার বুকের ক্ষতর ওষুধ ওর জানা নেই।
 
পুরো ফ্লাইটেই ঝিনুক ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছিল। এর আগেও বহুবার বেড়াতে গিয়ে প্লেনে উঠেছে তবে সেইবারের প্লেনে চাপা অন্যবারের চাইতে অনেক আলাদা। অন্যবার বোনের সাথে ঝগড়া হত কে জানালার পাশে বসবে, এবারে অনায়াসে জানালার সিট পেয়ে যায়। প্লেন নিচের দিকে নামতে শুরু করেছে। রিশু ঘুমন্ত ঝিনুকের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে, সিটের ওপরের আলো কোমল গালের মোলায়ম ত্বকের ওপরে পিছলে যায়। ঝিনুকের দিকে একটু ঝুঁকতেই ওর মিষ্টি এক ঘ্রানে ওর শিরা উপশিরা টানটান হয়ে যায়। ইচ্ছে করে বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে গালের ওপরে জলের দাগ মুছে দেয়, কিন্তু কাজটা কি ঠিক হবে? গত রাতে একবার হাত ছুঁতে চেষ্টা করেছিল, আহত সাপের মতন যেভাবে ফোঁস করছিল তাতে আর দ্বিতীয় বার ইচ্ছে হয়নি। ডান হাত মুঠো করে মুখের সামনে নিয়ে গিয়ে ওর কানের কাছে অল্প কাশে।
 
ঘুম জড়ান চোখ মেলে তাকায় ঝিনুক, “কি হল?”

রিশু উত্তর দেয়, “এই ত ব্যাস ল্যান্ড করবে।”

ঝিনুক রুমাল দিয়ে চোখ মুছে জিজ্ঞেস করে, “আর কত দেরি লাগবে?”

রিশু বলে, “লাগেজ নিয়ে এখানে থেকে বের হতে ধর আরো এক ঘন্টা তারপরে ট্যাক্সিতে আরো এক ঘন্টা।” ঘড়ি দেখে বলে, “এখন সাড়ে ন’টা বাজে ত বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে ওই সাড়ে একগারটা বারোটার মতন বেজে যাবে।”

ওরে বাবা, এত দেরি। ঝিনুক ছোট উত্তর দেয়, “আচ্ছা।”

রিশু জিজ্ঞেস করে, “কোন ভারী জ্যাকেট এনেছ?”

ভুরু কুঁচকে তাকায় ঝিনুক, “কোন জ্যাকেট?”

মাথা নাড়ায় রিশু, “আর কোন জ্যাকেট আনোনি?”

মাথা নাড়ায় ঝিনুক, “হ্যাঁ এই এমনি বাড়িতে পড়ার অথবা এই বাইরে যাওয়ার কয়েকটা আছে।”

হেসে ফেলে রিশু, “ওই কোলকাতা মার্কা জ্যাকেটে কিন্তু এই রাতে কোন কাজে দেবে না। বাইরে কিন্ত এখন চার কি পাঁচ চলছে।”
 
ভয় দেখাচ্ছে নাকি ওকে? এত ঠান্ডা নাকি এখানে? আম্বালিকা আন্টি আর দিয়া বলেছিল এখানে খুব ঠান্ডা কিন্তু জ্যাকেট কেনার কথা ওকে কেউ বলেনি, আর সেই মানসিকতা ছিল না শপিং করার। প্লেন থেকে নামতে নামতে বেশ দেরি হয়ে যায়, বারবার ঘড়ি দেখে রিশু। প্লেন থেকে নেমে দুই বাড়িতেই জানিয়ে দেওয়া হয় যে ঠিক ভাবেই ওরা দিল্লী পৌঁছে গেছে, এবারে লাগেজ নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দেবে। বাড়ির সাথে কথা বলার সময়ে বুদ্ধিমতী ঝিনুক আমূল পালটে যায়, যেন বেশ ভালো আছে। ওর কন্ঠস্বর শুনে কারুর বোঝার উপায় নেই ওর মনের ব্যাথা। মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, বেশ চালাক মেয়ে, তাই’ত কলেজে কাউকে পাশে ঘেঁষতে দেয়নি। কিন্তু কি করে যে একটা অপদার্থের কবলে পড়ে গিয়েছিল কে জানে? মানুষ চিনতে সবার ভুল হয়, ওর ও হয়েছিল, চন্দ্রিকার হয়ত কোনদিন ওর ওপরে তেমন বিশ্বাস জন্মায়নি তাই ওর আসল ঘটনা না জেনেই ওকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
 
ঝিলিকের সাথে কথা বলার পরে একটু ভালো লাগে ঝিনুকের। দেখতে দেখতে বোন কত বড় হয়ে গেছে, পার্থের সাথে সম্পর্ক চলাকালিন দুই বোনের সম্পর্কের মধ্যে একটা চিড় দেখা দিয়েছিল। এক ধাক্কায় হারিয়ে যাওয়া বুকের কাছে সম্পর্ক গুলো আবার ফিরে পেয়েছে, পেয়েছে ওর ছোট বেলার খেলার সাথি ঝিলিককে, ফিরে পেয়েছে মাকে, ফিরে পেয়েছে বাবাকে। এয়ারপোরটে সবার সাথে বাবাও ছাড়তে এসেছিলেন, সবার পেছনে দাঁড়িয়ে সবার অলক্ষে চোখের কোনা মুছে নিয়েছিলেন সেই দৃশ্য ওর চোখে ধরা পরে গিয়েছিল। একটু ফ্রেশ হয়ে নিলে ভালো লাগত, ওদিকে রিশু যে হনহনিয়ে হেঁটে চলেছে। ওর সাথে তাল মিলিয়ে হাটা খুব মুশকিল, কি লম্বা লম্বা পা ফেলে রে বাবা ছেলেটা।
 
পেছন থেকে একটু জোরে ডাক দেয় রিশুকে, “হ্যালো, এই যে...” ঝিনুকের ডাক রিশুর কানে পৌঁছায় না কারণ ফোনে কারুর সাথে কথা বলতে ব্যাস্ত। একটু তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে রিশুর পাশে গিয়ে একটু জোরেই ডাক দেয়, “হ্যালো... আমি একটু ওয়াশ রুম যাবো।”

কান থেকে ফোন সরিয়ে এদিকে ওদিকে তাকিয়ে এক পাশে ওয়াসরুম দেখিয়ে ঝিনুককে বলে রিশু, “ওদিকে আছে, আমি লাগেজ বেল্টের কাছে থাকব।”
 
মাথা দোলায় ঝিনুক। ওয়াশ রুমের দিকে এগোতে এগোতে একটা অজানা নাম্বার থেকে ফোন আসাতে বেশ অবাক হয়ে যায় ঝিনুক, সেই সাথে একটু ভয় পেয়ে যায়। ঝিনুক জানত যে ওর বিয়েতে পার্থ নিজের গুপ্তচর লাগাবে, জানতে চাইবে কার সাথে বিয়ে হয়েছে কোথায় বিয়ে হয়েছে। সেদিন রাতে পার্থের ফোন ভেঙ্গে দিয়েছিল, এই নাম্বার পার্থের নয়ত? ওর ছবি পার্থের মোবাইলে ছিল, সেই ছবি অন্য কাউকে দেখিয়েছে কি? যদি দেখিয়ে থাকে তাহলে অনেকের কাছেই ওর অর্ধ নগ্ন ছবি ছড়িয়ে গেছে ইতিমধ্যে। এমন বহু প্রশ্ন মনের দোরগোড়ায় ভিড় করে আসে।
 
শেষ পর্যন্ত দোনামনা করে ফোন উঠায় ঝিনুক, “হ্যালো কে?”

অন্য পাশে এক রমণী বেশ উচ্ছল আওয়াজে প্রশ্ন করে, “কে বলত?”

তাহলে পার্থ করেনি ফোন, ভেবেই ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে ঝিনুকের, কিন্তু অন্যপাশের মেয়েটার গলা একদম চিনতে পারছে না তাই জিজ্ঞেস করে, “ঠিক বুঝতে পারছি না।”

খিলখিল করে হেসে ফেলে অন্যপাশের মেয়েটা, “রিতিকা... মনে আছে কি?”

এত রাতে আচমকা রিতিকার ফোন আসাতে অবাক হয়ে যায় ঝিনুক, “কি ব্যাপার?”

হেসে ফেলে রিতিকা, “বিয়ে করলি আর একবার ও বললি না?”

মাথা নাড়িয়ে হেসে ফেলে ঝিনুক, “সব কিছু ঝড়ের মতন হয়ে গেছে রে কাউকেই ঠিক করে নেমন্তন্ন করতে পারিনি।”

গলা নামিয়ে রিতিকা বলে, “কৃষ্ণা আজ সকালে ফোন করেছিল ওর মুখ থেকে তোর কথা শুনলাম।”
 
এমবিএ ব্যাচের সহপাঠিনী, রিতিকা পান্ডে, জামশেদপুরের মেয়ে, এমবিএ পড়ার সময়ে বিশেষ কথাবার্তা হত না ওদের মধ্যে কারণ দুই জনের মধ্যে একটা রেশারেশি ছিল কে বেশি সুন্দরী। যদি ঝিনুক কোনদিন হাই হিল পরে কলেজ যেত তাহলে পরেরদিন থাই হাই বুটস পরে রিতিকা কলেজে আসত। যদি কেউ লেকমে লিপস্টিকের একটা সেড কিনত পরের দিন অন্যজনে ম্যাবেলিনের অন্য শেড কিনত। কলেজে একটা বয় ফ্রেন্ড ছিল রিতিকার, হরিশ সিনহা নামের বিহারি ছেলে। কলেজ ছাড়ার পরে কোনদিন ফোনে কথা হয়নি ওর সাথে। কৃষ্ণা ওর বান্ধবী, বিয়েতেও এসেছিল, এমবিএ করার পরে কোলকাতায় চাকরি পেয়ে যায় কৃষ্ণা। কৃষ্ণার সাথে রিতিকার কথাবার্তা চলে সেটা ও জানত। কৃষ্ণা কি এমন বলেছে যে হটাত করে এত রাতে রিতিকার ওকে ফোন করতে গেল? কৃষ্ণার ওপরে ভীষণ রাগ হচ্ছিল ঝিনুকের, মেয়েটার পেটে কোন কথা থাকে না। যার সাথে এতদিন কোন সুহৃদ সম্পর্ক ছিল না তাকে কেন ওর হাঁড়ির কথা জানাতে গেল?
 
রিতিকা ওকে বলে, “আমিও দিল্লীতে জানিস।” বলেই হেসে ফেলে খিলখিল করে।

ওহ তাই ফোন করেছে, একটু হেসে অবাক ভাব দেখিয়ে ঝিনুক বলে, “ওহ আচ্ছা তাই নাকি?” কথা বলার বিন্দু মাত্র ইচ্ছে ছিল না ওর।

রিতিকা ওকে জিজ্ঞেস করে, “শুনলাম তোর হাবি (বর) নাকি এমেসের অরথপেডিক সার্জেন?”

ছোট উত্তর দেয় ঝিনুক, “হ্যাঁ।”

রিতিকা জিজ্ঞেস করে, “দিল্লীতে কোথায় আছিস?”

সঠিক ঠিকানা জানে না ঝিনুক, তাও বলে, “সি আর পার্কে।”

রিতিকা অবাক হয়ে উত্তর দেয়, “আরি ব্বাস, আমার অফিসের একদম কাছে রে। ঠিকানা দে কাল দেখা করব। তোর ডাক্তার কখন ফেরে হসপিটাল থেকে?”

এই খবরটাও সঠিক জানা নেই ঝিনুকের তাও আন্দাজ করে উত্তর দেয়, “সন্ধ্যের দিকে ফিরে আসেবে।”

ফিক করে হেসে ফেলে রিতিকা, “এবারে কিন্তু জমিয়ে ঠান্ডা পড়েছে, তবে তোর অসুবিধে হবে না। পুরো গরম থাকবি কি বল।”

কথাটা শুনে একটু লজ্জিত হয়ে কান লাল হয়ে যায় ঝিনুকের। লাজুক হেসে উত্তর দেয়, “জানি না রে এই ত ল্যান্ড করলাম, বাড়ি গিয়ে বোঝা যাবে।”

রিতিকা বলে, “ওহ আচ্ছা, ঠিক আছে তাহলে কাল ফোন করব তোকে।”

ঝিনুক যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে, “হুম ঠিক আছে।”

রিতিকার ফোন রাখার পরেই কৃষ্ণাকে ফোন করে ঝিনুক, মেয়েটা কি বলতে না কি বলেছে সেটা একবার জানা দরকার। এইভাবে বলে বেরালে বড্ড মুশকিলে পরে যাবে। কৃষ্ণা ফোন উঠাতেই ঝাঁঝিয়ে ওঠে ঝিনুক, “তুই কি বলেছিস রিতিকাকে?”

অন্যদিকে এত রাতে ফোন পেয়ে ঘাবড়ে যায় কৃষ্ণা, আমতা আমতা করে উত্তর দেয়, “কই কিছু না ত? কেন কিছু হয়েছে নাকি?”

দাঁতে দাঁত পিষে উত্তর দেয় ঝিনুক, “এই একটু আগেই ফোন করেছিল। সত্যি করে বল কি বলেছিস?”

কৃষ্ণা হেসে উত্তর দেয়, “তুই একটুতেই এক্সসাইটেড হয়ে যাস, বড্ড হাইপার মেয়ে। ওকে শুধু এইটুকু বলা হয়েছে যে তোর বয়ফ্রেন্ড মানে পার্থ যার সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তার সাথে শেষ মুহূর্তে তুমুল ঝামেলা হয় যার জন্য তোর বিয়ে ভেঙ্গে যায়।”

মাথা নাড়ায় ঝিনুক, অবশ্য নিজে সবাইকে এই গল্প বলেছিল তাই এর চেয়ে বেশি কারুর কাছে কোন খবর থাকার কথাও নয়। তাও জিজ্ঞেস করে, “আর কি বলেছিস?”

হেসে ফেলে কৃষ্ণা, “আর কি বলব, বললাম যে দিল্লীর এক বড় হসপিটালের অরথপেডিক সারজেনের সাথে তোর সেই দিনেই বিয়ে হয়েছে। সেই শুনে রিতিকার আর কি বলব, হারটফেল করার মতন অবস্থা।” হিহি করে হেসে ফেলে কৃষ্ণা। তারপরে জিজ্ঞেস করে, “তোরা ঠিক ভাবে পৌছালি?”

মাথা দোলায় ঝিনুক, “হ্যাঁ রে এই একটু আগেই ফ্লাইট থেকে নেমেছি।”

গলা নামিয়ে ওকে প্রবোধ দিয়ে বলে কৃষ্ণা, “একটা সত্যি কথা বলব? জানিস যা হয় ভালোর জন্য হয়। যা হয়েছে ভুলে যা, গুলি মার ওই বোকাচোদাকে, সব কিছু ঝেড়ে ফেলে নতুন শুরু কর। অম্বরীশের ফ্যামিলিকে যেমন দেখলাম ওর বোন আর তোর বোন ত হরিহর আত্মা, কাকিমা ও দেখি তোর শ্বাশুরির সাথে বেশ মিশে গেছে।”

হেসে ফেলে ঝিনুক, “আরে আম্বালিকা আন্টি, মানে ওর মা আর আমার মা ছোট বেলার বান্ধবী, আবার সেই সাথে ঝিলিক আর দিয়া বেস্ট ফ্রেন্ড।”

হেসে ফেলে কৃষ্ণা, “তাহলে এত মুখ গোমড়া কেন তোর? কোন অচেনা বাড়িতে অথবা পরিবারে ত বিয়ে হয়নি। এত মনে হচ্ছে তুই এবাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে গেছিস।”
 
হেসে ফেলে ঝিনুক, কথাটা মিথ্যে বলেনি কৃষ্ণা। আম্বালিকা আন্টি আর মায়ের মধ্যে এক অটুট বন্ধন যেটা প্রথম দিনে যখন বিয়ের নেমন্তন্ন করতে গিয়েছিল তখন ওর চোখে পড়েছিল। সত্যি দেখতে গেলে পরিচয়ের বাইরের কাউকে বিয়ে করেনি ঝিনুক, হ্যাঁ এতদিন হয়ত দূরে থাকার জন্য সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল কিন্তু দুই বাড়ির মা আর দুই বাড়ির বোনের মধ্যে এক নিবিড় সম্পর্ক সেটা সত্যি। যদি সত্যি বিয়ে হয়ে যেত পার্থের সাথে আর তারপরে ওর এই দুশ্চরিত্র ধরা পড়ত তখন ওর করার কিছুই থাকত না, তার সাথে বাবা মায়ের বদনাম নিজের বদনাম হত।
 
কৃষ্ণার সাথে কথা বলার পরে বেশ হাল্কা লাগে ঝিনুকের, “এই আসছি রে এরপর ক্যাব ধরব। আচ্ছা চল আবার পরে কথা হবে।”
 
এতক্ষন পরে একজন বান্ধবীর সাথে অনেকটা কথা বলার পরে মন একটু হাল্কা লাগে ঝিনুকের। ফোন রাখার পরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে ঠিক করে নেয়। টিসু এনেছিল সেটা দিয়ে চোখ গাল মুছে নিয়ে লাল রঙের লিপস্টিক বের করে আরো একবার ঠোঁটের ওপরে বুলিয়ে নেয়। ব্যাগের ভেতরে লিপস্টিক রাখার সময়ে টাকার পার্স খুলে দেখে কত টাকা আছে। পার্স খুলতেই লম্বা সাদা রঙের সিগারেটের প্যাকেটের দিকে নজর পড়তেই ধুক করে ওঠে ওর বুক। গত রাত থেকে এখন পর্যন্ত রিশুকে কোন সিগারেট খেতে দেখেনি, মদ বা অন্য কিছুর নেশা করে কি না জানা নেই। বাড়িতে থাকলে লুকিয়ে চুরিয়ে দিনে একটা কি দুটো সিগারেট জ্বালিয়েই ফেলত কিন্তু সেটা এখন আর হবে না, পার্থ অথবা বন্ধু বান্ধবীদের সাথে বসলে একটু আধটু ড্রিঙ্কস সেটাও প্রায় মাসে কয়েকবার হয়ে যেত। সিগারেট প্যাকেট দেখে ভীষণ বিব্রত বোধ করে ঝিনুক। প্যাকেটটা হাতে নিয়ে দুমড়ে মুচড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে হাসে, এই পর্যন্ত তোর সাথে আমার ছিল সঙ্গ। দুই কব্জির দিকে তাকায়, দুই হাতে সোনার পাতে বাঁধানো শাঁখা পলা, সেই সাথে সোনার পাতে জড়ান লোহা বাঁধানো, বাঙালি এয়োস্ত্রীর চিহ্ন। আয়নার প্রতিফলনে কপালের দিকে চোখ যায় ওর, গাড় লাল রঙের হাইলাইটিং করা চুলের নিচে লুকিয়ে একটা পাতলা লাল রঙের সিঁদুরের দাগ। হয়ত নতুন এক সূর্য দেখা দেবে আগামি কাল, নাকি কালো মেঘ উঠবে আকাশে?
Khub sundor lekha
[+] 1 user Likes Bondhon Dhali's post
Like Reply
Dada,Khub sundor golpo.apnar lekha proti ta lekhai sundor
[+] 2 users Like Bondhon Dhali's post
Like Reply
(02-11-2020, 12:37 PM)pinuram Wrote: এই নিয়ে কিছু বলতে চাইনি প্রথমে তবে বাঙালি নিয়ে যখন বললে তখন কয়েকটা কথা না বলে পারলাম না। কোলকাতা ছেড়ে সুখে আছো সেটা ভিন্ন ব্যাপার আর বাঙালি হিসাবে নিজের পরিচয় না দেওয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। তুমি কিন্তু দুটোকে একত্র করে ভীষণ ভাবেই তালগোল পাকিয়ে দিয়েছ। জল, কেউ বলে পানী, কেউ বলে ওয়াটার কেই বলে জল তাই বলে কি জলের স্বাদ বদলে যায়? তুমি বলবে হয়ত মিনারেল ওয়াটার আর সাধারন কলের জলে অনেক তফাত, কিন্তু খাও ত সেই জল, দিল্লীর বাঙালি হোক বা কোলকাতার বাঙালি হোক, সরবাগ্রে সে বাঙালি। সেই দেশে কে রাজত্ব করেছে সেটা প্রধান নয়, প্রধান হচ্ছে বুকের মাঝে কে আঁকা, কি ভাষা আমরা বলি। বন থেকে বাঘ তুলে আনা সহজ, বাঘের মধ্যে থেকে বন তুলে নেওয়া সহজ নয়, কিন্তু সেই জায়গায় কুয়োর ব্যাঙ কিন্তু চিরজীবন কুয়োর মধ্যে থেকে  বাইরে বের হলেও সে আশেপাশের জায়গা কে কুয়ো বলেই ভাবতে শুরু করে, যাকে বলে কূপমণ্ডূক। সুতরাং বাঙালি নামটা অন্তত গালাগালি নাকি সন্মান সেটা তোমাকে ঠিক করতে হবে, তুমি বাঘ না ব্যাঙ সেটা প্রমান করতে হবে !!!!!!!
অসাধারণ বলেছেন।আপনি একটা জিনিস মাইরি!
[+] 1 user Likes johny23609's post
Like Reply
(02-11-2020, 01:40 PM)Isiift Wrote: অসাধারণ বলেছেন।আপনি একটা জিনিস মাইরি!

সাংঘাতিক দামি জিনিস , একেবারে কোহিনুরের মতো দামি !!!
Namaskar Namaskar

আমাদের ভাগ্য খুব ভালো যে আমরা বিনে পয়সাতেই পাচ্ছি !!!

clps Smile
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
পর্বটা খুব ভালো লাগলো  Heart
গল্প তো নয় যেন ছবির মতো চোখের সামনে ভাসছে সব ঘটনা, এমনই অপূর্ব নিখুঁত তোমার বর্ণনা  Smile
[+] 1 user Likes Mr Fantastic's post
Like Reply
ভালো লিখেছো
রিতিকা এমনি বন্ধু না কিছু গন্ডগোল আছে !!
[+] 1 user Likes TumiJeAmar's post
Like Reply
ঈশান কোনে সিঁন্দুরে মেঘ... নাম তার রিতিকা...

তাহলে, এখন পর্যন্ত তাহলে ক'টা নাম এলো? 
১। পার্থ
২। চন্দ্রিকা
৩। রিতিকা

হুমমমম... ভালোবাসার পথে কাঁটা অনেক গুলোই ছড়িয়ে পড়ছে...
[+] 3 users Like bourses's post
Like Reply
(02-11-2020, 12:37 PM)pinuram Wrote: এই নিয়ে কিছু বলতে চাইনি প্রথমে তবে বাঙালি নিয়ে যখন বললে তখন কয়েকটা কথা না বলে পারলাম না। কোলকাতা ছেড়ে সুখে আছো সেটা ভিন্ন ব্যাপার আর বাঙালি হিসাবে নিজের পরিচয় না দেওয়া সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। তুমি কিন্তু দুটোকে একত্র করে ভীষণ ভাবেই তালগোল পাকিয়ে দিয়েছ। জল, কেউ বলে পানী, কেউ বলে ওয়াটার কেই বলে জল তাই বলে কি জলের স্বাদ বদলে যায়? তুমি বলবে হয়ত মিনারেল ওয়াটার আর সাধারন কলের জলে অনেক তফাত, কিন্তু খাও ত সেই জল, দিল্লীর বাঙালি হোক বা কোলকাতার বাঙালি হোক, সরবাগ্রে সে বাঙালি। সেই দেশে কে রাজত্ব করেছে সেটা প্রধান নয়, প্রধান হচ্ছে বুকের মাঝে কে আঁকা, কি ভাষা আমরা বলি। বন থেকে বাঘ তুলে আনা সহজ, বাঘের মধ্যে থেকে বন তুলে নেওয়া সহজ নয়, কিন্তু সেই জায়গায় কুয়োর ব্যাঙ কিন্তু চিরজীবন কুয়োর মধ্যে থেকে  বাইরে বের হলেও সে আশেপাশের জায়গা কে কুয়ো বলেই ভাবতে শুরু করে, যাকে বলে কূপমণ্ডূক। সুতরাং বাঙালি নামটা অন্তত গালাগালি নাকি সন্মান সেটা তোমাকে ঠিক করতে হবে, তুমি বাঘ না ব্যাঙ সেটা প্রমান করতে হবে !!!!!!!
আমি ব্যাঙ না ঘোড়া সেটা তোমরাই ভালো জানো  ! একটা  সময়ে বিহারী  যেমন  বলাটা একটা গালির সমান ছিলো ঠিক  ভাবেই  বাঙালিদের অবস্থাও  সেইরকম! এখন বাঙালি মানে   বাঙালি জাতি কে ঘৃণ্য হিসাবে সামগ্রিকভাবে ভাবে দেখা !
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(02-11-2020, 12:39 PM)pinuram Wrote: তোমার ছোট্ট কমেন্ট পেয়েও আমি ধন্য !!!!!! Heart Heart Heart Heart

ছোট্ট হলেও কমেন্ট করি! তোমার কমেন্ট পাওয়া তো নিজেকে অপমানিত করা একই ব্যাপার
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(01-11-2020, 03:38 PM)samael Wrote: Fervor Regained. ---> By (Pinuram)

Read it.....thanks
[+] 1 user Likes raja05's post
Like Reply
Apnar Fervor Ragained ta porlam....very nicly wriiten.....bangla teo apni khub sundar bhabe bangali emotions gulo attach korchen....hats off.....thanks
[+] 1 user Likes raja05's post
Like Reply
"হয়ত নতুন এক সূর্য দেখা দেবে আগামি কাল, নাকি কালো মেঘ উঠবে আকাশে?"

দেখা যাক... কি অপেক্ষা করছে দুই অপরিচিত অথচ এক বন্ধনে যুক্ত যুবক যুবতীর জন্যে. লাইক রেপুটেশন added❤️
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
Golpota bes sundor hocche .. Asakori valoi hobe dujoner juti ... Bes onnorokom akta anuvuti ... Tobe ritika ta abar kotha theke elo ? Er abar ki dhanda ache tik boja jacche na ...Sotti e kalker akase natun surjo naki meghachonno akash dekha debe ki jani !!! Goodnight
[+] 1 user Likes dreampriya's post
Like Reply
সুন্দর হয়েছে
[+] 1 user Likes SUMON shill's post
Like Reply




Users browsing this thread: 3 Guest(s)