Thread Rating:
  • 67 Vote(s) - 3.36 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
(29-10-2020, 02:53 PM)Baban Wrote:
[Image: 20201029-144125.jpg]

এই ছবি আপনার এই অসাধারণ আপডেটের জন্যে  Heart


কভি ইস পগ মে কভি উস পগ মে বন্ধতা হি রাহা হু ম্যায়,
কভি টুট গ্যায়া, কভি তোড়া গ্যায়, শ বার মুঝে ফির জোড়া গ্যায়,
ইউহি লুট লুট কে, ইউহি মিট মিট কে, বনতা হি রাহা হু ম্যায়,
ঘুঙরু কি তরহ, বজতা হি রাহা হু ম্যায়, ঘুঙরু কি তরহ বন্ধতা হি রাহা হু ম্যায় !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 3 users Like pinuram's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
খুব সুন্দর হয়েছে ভাই। অবশেষে অনেক কিছু হওয়ার পরে বিয়ে টা হয়ে গেলো। আর ঝিনুক কেনো শেষে বাবার পা জড়িয়ে কাদতে কাদতে বলল বাবা আমাকে একটা চান্স দাও। আর বৌ ভাত হবে না বিয়েতে। দেখি রিশু ও ঝিনুকের পরবর্তী জীবন কোথায় নিয়ে যায়। দুই জনেই বা কেমন করে একে অপরকে মানিয়ে নেয়।
[+] 1 user Likes sorbobhuk's post
Like Reply
(29-10-2020, 11:32 PM)pinuram Wrote: কভি ইস পগ মে কভি উস পগ মে বন্ধতা হি রাহা হু ম্যায়,
কভি টুট গ্যায়া, কভি তোড়া গ্যায়, শ বার মুঝে ফির জোড়া গ্যায়,
ইউহি লুট লুট কে, ইউহি মিট মিট কে, বনতা হি রাহা হু ম্যায়,
ঘুঙরু কি তরহ, বজতা হি রাহা হু ম্যায়, ঘুঙরু কি তরহ বন্ধতা হি রাহা হু ম্যায় !!!!!!
Kishore dar sei asadharon gaan!!!kintu ei gaan ta mention korlen mane dukkho ache kapal e near future e!!!
[+] 1 user Likes Debartha's post
Like Reply
(29-10-2020, 11:18 PM)pinuram Wrote: কিসের সুর মিলছে না, আরে বাবা, কাহারবা নয় দাদরা বাজাও উল্টো পালটা মারছ চাঁটি, শশিকান্ত তুমি দেখছি আসরটাকে করবে মাটি, কাহারবা (পার্থ কে ছেড়ে দাও) নয় দাদরা বাজাও (রিশুর দিকে দেখ) রোশনি বাঈয়ের পায়ের পায়েল কলজে টাকে করুক ঘায়েল (ঝিনুক করুক এখানে) আমার পদ্মপাতায় লাগবে না দাগ কলঙ্কপাঁক যতই খাঁটি (রিশুর প্রতি সবার একটা যেমন ধারনা আছে যে ও প্রেম করতে জানে না) শশিকান্ত তুমি দেখছি আসরটাকে করবে মাটি, কাহারবা নয় দাদরা বাজাও (পিনু বাজাতে শুরু করে দিয়েছে, এবারে সেই তালে কে তাল মেলায় দেখা যাক) !!!!!!!

Amar experience bale erokom introvert rai kintu a1 premik hoy!!
[+] 1 user Likes Debartha's post
Like Reply
(29-10-2020, 11:01 PM)pinuram Wrote: আচ্ছা বাবা, বলেন দেখি আমি কি করব এখানে? পরী আর অভির কথা ছেড়ে দিলাম, বুধাদিত্য আর ঝিনুকের কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ে হয়েছিল। এখানে ঝিনুক আর রিশুর বিয়ে হয়ে গেল একদম আগে ভাগেই, তারপরেও আমার দোষ? এবারে যাই কোথায় বলুন'ত? সিঁড়ি ওদের হাতে ধরিয়ে দিয়েছি এবারে কি ভাবে চড়বে সেটা কি বলে দিতে হবে নাকি ওদের? আমি ত সূত্রধর মাত্র Tongue !!!!!!

Jhinuk e moje gechen puro!!!ota jhilam!!! Sanghamitra naam ta amar mon kereche,karon ta akhon bolbo na
[+] 1 user Likes Debartha's post
Like Reply
(30-10-2020, 12:20 AM)sorbobhuk Wrote: খুব সুন্দর হয়েছে ভাই।  অবশেষে অনেক কিছু হওয়ার পরে বিয়ে টা হয়ে গেলো।  আর ঝিনুক কেনো শেষে বাবার পা জড়িয়ে কাদতে কাদতে বলল বাবা আমাকে একটা চান্স দাও। আর বৌ ভাত হবে না বিয়েতে। দেখি রিশু ও ঝিনুকের পরবর্তী জীবন কোথায় নিয়ে যায়।  দুই জনেই বা কেমন করে একে অপরকে মানিয়ে নেয়।

মেয়ের বিয়ে, চারদিকে ইমোশানের ছড়াছড়ি, তার ওপরে যেমন ভাবে ঝিনুক এর আগে ব্যাবহার করেছে, হতে পারে তার জন্য ক্ষমা চেয়েছে? যাই হোক বিয়ে'ত হয়ে গেল এবারে দেখা যাক কি ভাবে কি এগোয় এরপর !!!!!
রেপু পয়েন্টস রইল +1
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(30-10-2020, 04:52 AM)Debartha Wrote: Kishore dar sei asadharon gaan!!!kintu ei gaan ta mention korlen mane dukkho ache kapal e near future e!!!

(30-10-2020, 04:57 AM)Debartha Wrote: Amar experience bale erokom introvert rai kintu a1 premik hoy!!

(30-10-2020, 05:01 AM)Debartha Wrote: Jhinuk e moje gechen puro!!!ota jhilam!!! Sanghamitra naam ta amar mon kereche,karon ta akhon bolbo na

গানের অর্থ, কেন দিলাম কিসের জন্য দিলাম, সব কিছু কিন্তু আপনাদের খুঁজে নিতে হবে, আমি এখানে কিছুই বলব না! তবে হ্যাঁ, এই গল্প লিখতে লিখতে ঝিনুকে একটু মজে গেছি তাই ঝিলাম আর ঝিনুকে একটু গুলিয়ে ফেলেছি, দুটোই খুব কচি মিষ্টি সুন্দরী তাই। একদিন তাহলে আপনার সাথে বসেত হয় এই সঙ্ঘমিত্রার গল্প শোনার জন্য, কানে কানে না হয় বললেন, আমি শুনতে প্রস্তুত !!!!!
রেপু পয়েন্টস রইল +1
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
পর্ব পাঁচ – (#1-18)

 
বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে অনেক রাত হয়ে যায়। রিশুর ছুটি নেই, পরের দিনেই ওকে ফিরে যেতে হবে দিল্লী তাই সে রাতেই নব বিবাহিত দম্পতিকে নিয়ে আম্বালিকা ফিরে আসে নিজের বাড়িতে। গাড়িতে সারাটা রাস্তা মাথা নিচু করে চুপচাপ রিশুর পাশে বসেছিল ঝিনুক। মাঝে মাঝে তাকিয়ে দেখে পাশে বসা মেয়েটার দিকে যার সাথে এই মাত্র ওর বিয়ে হয়ে গেল। মা যার ছবি ওকে দেখিয়েছিল তার সাথে পাশে বসা মেয়েটার মধ্যে কোন মিল খুঁজে পায় না। কেমন যেন ভাবলেশ হীন চোখের চাহনি ঝিনুকের, যেন কোন সম্মোহনের বশে কাঁচের পুতুলের মতন নড়াচড়া করে চলেছে। গলা খ্যাঁকরে জানান দেয় নিজের উপস্থিতি, ঝাপসা দৃষ্টি নিয়ে তাকায় ঝিনুক রিশুর দিকে। বেদনা কাতর চাহিনি দেখে আর কিছু বলতে পারে না রিশু, বুঝতে পারে ঝিনুকের কষ্ট। গাড়িতে ওরা দুজন ছাড়াও সামনের সিটে দিয়া বসে, ঝিনুকের পাশে ওর বোন ঝিলিক বসে তাই চুপ করেই থাকে রিশু। নব দম্পতিকে বরন করে নতুন জীবনের আশীর্বাদ করে আম্বালিকা আর নিলাদ্রী।
 
রিশুর ঘরে ঢুকে চারপাশে তাকিয়ে দেখে ঝিনুক। ওদের ফ্লাটের চেয়ে অনেক বড় এই বাড়িটা। মায়ের মুখে শুনেছে যে আম্বালকা আন্টির বাবা নাকি খুব নাম করা একজন ডাক্তার ছিলেন। রিশুর থাকার ঘরটা ওর ঘরের চেয়ে অনেক বড়, এক পাশে ধবধবে সাদা বিছানা, এক পাশের দেয়াল জুড়ে বড় একটা কাঁচের জানালা, সেই জালানার পাশে একটা পড়ার টেবিল, একটা চেয়ার, সেই সাথে বিছানার পাশে একটা কাউচ রাখা। ঘরে ঢোকার আগেই ওর সুটকেস দুটো কোন কাজের লোক এই ঘরে এনে রেখে দিয়েছিল। সারাদিন ঘুম হয়নি ওর তার ওপরে মানসিক অবস্থা ভালো নয়, খুব ক্লান্ত হয়ে গেছে। যে সুটকেসে ওর সাধারন দৈনন্দিনের জিনিসপত্র ছিল সেটা হাতে নিয়ে বিছানার ওপরে রাখার সময়ে বুঝতে পারে যে দরজায় কেউ একজন দাঁড়িয়ে। ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখে যে যার সাথে একটু আগে বিয়ে হয়েছে সেই রিশু দরজার পর্দা সরিয়ে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করেছে। ধুক করে এক লহমার জন্য ওর হৃদপিণ্ড গলার কাছে এসে আটকে যায়। এত কিছু হয়ে গেল কিন্তু কেউই এক বারের জন্য মুখ খোলেনি। যেন কারুর কিছুই বলার নেই কারুর কাছে।
 
রিশু বেশ কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে ঝিনুকের দিকে। লাল বেনারসি পরিহিত, কপাল জুড়ে এখন লাল সিঁদুর মাখা, গালে নাকের ওপরেও লাল সিঁদুরের ছোপ ছোপ দাগ। কি ভাবছে ঝিনুক? লাজুক স্বভাবের কোনদিন নয় রিশু যে মেয়েদের সাথে কথা বলতে দ্বিধা বোধ করবে, কিন্তু এই মেয়েটার দিকে তাকাতেই কেমন যেন সব গুলিয়ে আসে ওর মাথার মধ্যে। ঝিনুক একা একাই সুটকেস খুলতে চেষ্টা করাতে এগিয়ে যায় রিশু।
 
রিশু এগিয়ে এসে বলে, “দাঁড়াও আমি খুলে দিচ্ছি।”

চুপচাপ সুটকেসের পাশ থেকে সরে দাঁড়ায় ঝিনুক। এটা ওর সাথে দ্বিতীয় বার কথা বলেছে।

সুটকেস খুলে দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে রিশু, “যে অয়েন্মেন্টটা বলেছিলাম সেটা লাগিয়েছিলে?”

মাথা দোলায় ঝিনুক, হ্যাঁ, এনেছিল এবং সেটা নিয়ম মতন লাগিয়েছিল আঁচড়ের দাগের ওপরে। ছেলেটার গলার আওয়াজ বেশ রাশভারী, ভীষণ ভাবেই কাছে ডাকে, দূরে সরে থাকতে চাইলেও যেন দূরে সরিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

রিশু ওকে বাথরুম দেখিয়ে দিয়ে বলে, “যাও, আগে ফ্রেশ হয়ে নাও।”
 
সুটকেস থেকে রাতে পড়ার একটা নতুন কেনা মাক্সি আর তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে পরে ঝিনুক। বাথরুমটা বেশ বড়, এক পাশে একটা বড় বাথটাব। গিজার চালিয়ে গরম জল করে এক এক করে নিজের সাজ খুলে ফেলে, সাবান দিয়ে মুখ হাত ধুয়ে নেয়। কপালের সিঁদুর ধুতে গিয়ে হটাত করেই কেমন যেন বাঁধা পরে যায় ওর মন, না এটা এমন থাকুক, হয়ত এটাই নিয়তি। আয়নায় নিজের গালের দিকে দেখে, এতক্ষন সাজের পেছনে লুকিয়ে ছিল দাগ গুলো, মেকআপ ধুয়ে যেতেই সেই অস্পষ্ট দাগ বেড়িয়ে পরে। গালের দাগ এখন একটু আছে তবে হাতের আঁচড়ের দাগ তেমন আর নেই। মাক্সিটা পরে গায়ে তোয়ালে জড়িয়ে পরনের ভারী বেনারসি আর বাকি কাপড় হাতে বেড়িয়ে আসে বাথরুম থেকে। বেড়িয়ে এসে দেখে রিশু হাতে নিজের জামা কাপড় নিয়ে বাথরুম খালি হওয়ার অপেক্ষায়।
 
রিশু নিজের আলমারি খুলে একটা ঢিলে প্যান্ট আর একটা টি শারট বের করে নেয় পড়ার জন্য। বাথরুমের ভেতর প্রথমে কোন আওয়াজ না পেয়ে একটু ভাবনায় পরে যায়। ঝিনুক সকাল থেকে কিছুই খায়নি, খেয়েছে সেই রাতে বিয়ে শেষ হওয়ার পরে তাও আবার খুব অল্প। প্রেসার লো হয়ে মাথা ঘুরে পরে গেল না ত বাথরুমের মধ্যে? দেরি দেখে দরজায় একবার টোকা দেওয়ার কথা ভাবে, তারপরে ভাবে না, এটা ঠিক হবে না, মেয়েদের সাধারণত দেরি হয়। তারপরে যখন জলের আওয়াজ পায় তখন ধড়ে প্রান ফিরে পায়, না ঠিক আছে ঝিনুক। এক ধাক্কায় এতবড় একটা দায়িত্ব ওর ওপরে এসে পড়েছে, সেই সাথে ভীতি ওর বুকের মাঝে ছায়া ফেলে, মানিয়ে নিতে পারবে ত? এরপর একে নিয়ে দিল্লী ফিরে যেতে হবে, জানা হয়নি ঝিনুকের পছন্দ অপছন্দ, আসলে চেনেই না যার সাথে হটাত করে বিয়ে হয়ে গেল। বাথরুম থেকে ঝিনুক বেড়িয়ে আসতেই ওর চোখ আটকা পরে যায় ঝিনুকের মুখের দিকে। এতক্ষন মেকি সাজের নিচে লুকিয়ে থাকা মেয়েটার আসল সৌন্দর্য বেড়িয়ে এসেছে। পানপাতার মতন মুখ বয়াব, টানাটানা ভাসা ভাসা দুই চোখ, ওর দিকে তাকিয়ে যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। গালের দিকে চোখ যায় ওর, এখন আঁচড়ের দাগ মিলিয়ে যায়নি। কপাল নাক জুড়ে তখন সিঁদুরে মাখামাখি দেখে মনে মনে হেসে ফেলে রিশু। রিশুর দিকে আড় চোখে তাকিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যায় ঝিনুক।
 
রিশু ঢুকে পরে বাথরুমের মধ্যে। ধুতি পাঞ্জাবী খুলে, হাত মুখ ধুয়ে ঘরের মধ্যে ঢুকে দেখে ঝিনুক আলো নিভিয়ে ওর বিছানার ওপরে এক কোনায় চুপচাপ হাঁটু মুড়ে মাথা নিচু করে কুঁকড়ে বসে। রিশু ঘরের ডিম লাইট জ্বালিয়ে দেয়, হাল্কা নীল আলোয় ভরে ওঠে ঘর। দরজা বন্ধ করে দেয় রিশু, দরজা বন্ধের আওয়াজে কেঁপে ওঠে ঝিনুক, ভাসা ভাসা চোখে ওর দিকে দেখে। কি করতে চলেছে এবারে, এবারে কি ঝাঁপিয়ে পড়বে নাকি ওর ওপরে? হাল্কা নীলাভ আলোয় রিশু পরিস্কার দেখতে পায় যে ঠান্ডার জন্য হোক কি কোন অজানা আশঙ্কায় ঝিনুকের কমনীয় শরীরে কাঁপন ধরেছে। বিছানার দিকে এগিয়ে যায় রিশু। ওকে এইভাবে এগিয়ে আসতে দেখে ঝিনুক আরও কুঁকড়ে যায়। ঝিনুকের এই ভাবে কুঁকড়ে যাওয়ায় রিশু খুব ব্যাথা পায়, এইভাবে কাউকে ব্যাথা দিতে কোনদিন চায়নি।
 
ঝিনুকের দিকে দেখে নরম গলায় বলে, “ঝিনুক যে অবস্থায় আমাদের...”

কথাটা শেষ করতে দেয় না ঝিনুক, ভগ্ন হৃদয়ে চাপা কন্ঠে চেঁচিয়ে ওঠে, “আমাদের বিয়ে হয়েছে বলে আপনি আমাকে কিনে নেন নি।”

সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীর মুখে “আপনি” সম্বোধন শুনে হেসে ফেলে রিশু, “এখন আপনি ধরেই বসে আছো?” ঝিনুক চোয়াল চেপে ওর দিকে রক্ত চক্ষু হেনে তাকিয়ে তখন। রিশু নরম গলায় বলে, “আমি জানি তোমার মনের অবস্থা।”

ঝিনুক ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “না, আপনি কিছুই জানেন না। আমার দিকে এক পাও এগোবেন না।”

হাত তুলে শান্ত ঝিনুককে শান্ত করিয়ে বলে, “প্লিজ এত ফরমালিটি কর না, আপনি নয় তুমি করেই বল। আমরা সত্য যুগে বসবাস করছি না।” ঝিনুক হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারে না। নরম গলায় ঝিনুকের রাগ প্রশমিত করার জন্য বলে, “এত রাতে এইভাবে চেঁচাতে নেই। বাইরে মা পাপা আমার ভাই বোন তোমার বোন সবাই আছে।” ঝিনুক নিজের ভুল বুঝতে পেরে চুপ করে যায়। মাথা নাড়ায় রিশু, “না সত্যিই আমি কিছুই জানি না।”
 
কথা বাড়ায় না ঝিনুক, লেপটা গায়ের ওপরে টেনে নিয়ে এক কোনায় কুঁকড়ে শুয়ে পরে। বিছানার পাশের কাউচে চুপচাপ বসে পরে রিশু, ওর দিকে পেছন করে ঝিনুক শুয়ে। হাল্কা নীলাভ আলোয় পরিষ্কার বুঝতে পারে যে শায়িত ঝিনুকের দেহ থেকে থেকে ফুলে ফুলে উঠছে, চাপা কান্নার আওয়াজ ওর কানে ভেসে আসে।
 
আলমারি খুলে একটা মোটা শাল গায়ে জড়িয়ে চুপ করে সারা রাত কাউচে বসে কাটিয়ে দেয় রিশু। চোখের দৃষ্টি সাদা বিছানায় শায়িত ক্রন্দনরত ললনার দিকে নিবদ্ধ। এক দুশ্চিন্তায় ডুবে যায় ওর মন, যে মেয়ে বাবা মাকে অমান্য করতে পারে সে অনায়াসে ওর বাড়ির লোককে অমান্য করবে। মায়ের ছোট বেলার বান্ধবী তার বড় মেয়ে তাও মনের কোনায় এক বড় কিন্তু জাগে ওর। এর আগেও একজনের ওপরে বিশ্বাস করেছিল, কিন্তু সেই তৃতীয় ব্যাক্তি মায়ের মাতৃস্নেহ সঠিক অর্থে অনুধাবন করতে পারেনি। ঝিনুক বদরাগী জেদি মেয়ে একদম ওর স্বভাব বিরুদ্ধ। বাবা মায়ের কথা অমান্য করে কেউ যদি বারেবারে আত্মহত্যার ভয় দেখায় সেই মেয়েকে জীবন সঙ্গিনী করা ভীষণ বিপদ। নিজেকেই প্রশ্ন করে রিশু, মা কি শুধু মাত্র বান্ধবীর মুখের দিকে চেয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে? একবারের জন্য মনে হয়েছিল যে বলে, মা মেয়েটা খুব বদরাগী আর জেদি, মনে হয় একে ওদের মাঝে এনে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু মায়ের চোখে তখন মহামায়ার রূপ, কি করে একটা ভেসে যাওয়া মেয়েকে বাঁচাবে সেটাই চিন্তা ঘোরাফেরা করছিল ওর মায়ের মাথায়। সহজ সরল রেখায় ওদের জীবন ধারা অগ্রসর হবে না সেটা সেই রাতেই অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছিল রিশু।
 
কয়েক বছর আগের কথা মনে পরে যায়, বেশ কয়েকবার চন্দ্রিকার সাথে বাড়ি নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল, কয়েকবার বুঝাতে চেষ্টা করেছিল ওর সাথে ওর বাড়ির সম্পর্ক। কিন্তু যা ভেঙ্গে গেছে সেটা শেষ পর্যন্ত জোড়া লাগাতে কোনদিন চেষ্টা করেনি রিশু, খানিকটা অহম ভাব জেগে উঠেছিল শেষের দিকে, যার জন্য কোনদিন চন্দ্রিকাকে ক্ষমা করতে পারেনি রিশু। কিন্তু এখানে ঝিনুকের ওপরে সেই রাগ সেই ক্ষোভ দেখাতে পারবে না রিশু, নিজের অহম ভাবটাকে ঢেকে রাখতে হবে শুধু মা আর দিয়ার মুখ চেয়ে। মা হয়ত কোনদিন চাইবে না ওর প্রিয় বান্ধবীর সাথে আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাক অথবা এই দরজার বাইরে ওই ওর বোন আর বান্ধবী যে ভাবে হেসে খেলে বেড়াচ্ছে সেটাকেও ভেঙ্গে দিতে ওর মন চায় না।  লেপের মুড়ি দেওয়া ঝিনুকের ঢেউ খেলানো দেহ পল্লবের দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়েটা তখন চাপা কান্নায় কেঁপে চলেছে।
 
ভোরের দিকে তন্দ্রা ভাব এসে গেছিল রিশুর, দরজায় আলত ঠকঠকের আওয়াজ পেয়েই সেই তন্দ্রা ভাব কেটে যায়। জানালায় দিয়ে নতুন ভোরের আলো ওর সাদা বিছানার ওপরে এসে পড়েছে। চোখ ডলে, চশমা পরে দেখে গলা পর্যন্ত লেপ জড়িয়ে বিছানায় বসে ওর দিকে তন্দ্রাচ্ছন্ন চোখে তাকিয়ে ঝিনুক। ভুরু নাচিয়ে প্রশ্ন করে ঝিনুককে, কি হয়েছে? ঝিনুক মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেয়, কিছু না। সারা রাত কাঁদার ফলে ওর চোখ জোড়া ফুলে উঠেছে, কিন্তু স্বান্তনার সঠিক ভাষা খুঁজে পায় না। কাকে দেবে স্বান্তনা, নিজেকে না বিছানায় বসা মেয়েটাকে।
 
দরজা খুলতে যাওয়ার আগে, ঝিনুকের দিকে গায়ের শাল এগিয়ে দিয়ে বলে, “এটা গায়ে দাও না হলে ঠান্ডা লেগে যাবে। এখন উঠে পর, ব্রাশ করে মুখ ধুয়ে নাও।”
 
কথা বাড়ায় না ঝিনুক। সারা রাত জেগেছিল, লেপের তলায় অন্য পাশে মুখ ফিরিয়ে শুয়েও ওর ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জানে বিছানার পাশের কাউচে বসে সারা রাত ওর দিকেই তাকিয়েছিল রিশু। ওর হাত থেকে শাল নিয়ে, সুটকেস খুলে ব্রাস বের করে বাথরুমে ঢুকে পরে ঝিনুক। রিশু আড়ামোড়া ভেঙ্গে, ঘুম থেকে ওঠার ভান দেখিয়ে দরজা খুলে দেখে দিয়া আর ঝিলিক একটা ট্রে তে চা নিয়ে দাঁড়িয়ে।
 
দিয়া দাদার মুখের দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে ফেলে, “কি দাদা ভাই, ঘুম হয়েছে?”

ঝিলিকের ঠোঁটে দুষ্টুমি ভরা হাসি, বান্ধবীকে ঠেলে ইয়ারকি মেরে বলে, “ধ্যাত তুই না, ঘুম কি আর হয়। দুইজনে সারা রাত প্রেমালাপ করেছে।”

ওদের কথা শুনে হেসে ফেলে রিশু, “তোরা দুটো না বড্ড শয়তান হয়ে গেছিস।”

ঘরের মধ্যে ঢুকে পরে দুইজনে। ঝিলিক জিজ্ঞেস করে, “দিদি কোথায়?”

চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বাথরুম দেখিয়ে দিয়ে উত্তর দেয় রিশু, “বাথরুমে।”
 
ঝিনুক বাথরুম থেকে বেড়িয়ে এসে দেখে দিয়া আর ঝিলিক ওদের ঘরে উপস্থিত। রিশু ঘাড় ঘুরিয়ে নতুন ভোরের সদ্য ফোটা ফুলের দিকে তাকিয়ে দেখে। কপালের সিঁদুর ধুয়ে ফেলেছে বইকি কিন্তু এখন যেন মাথার চুলে একটু লেগে রয়েছে। শাল জড়িয়ে মুখে হাসি টেনে দিয়া আর ঝিলিকের দিকে তাকায় ঝিনুক। ভেতরে খানিক ইতস্তত ভাব, বুদ্ধিমতী ঝিনুক সেই ভাব আড়াল করে রিশুর দিকে তোয়ালে এগিয়ে দিয়ে চোখের ইশারায় বাথরুমে ঢুকে যেতে বলে। এই টানাটানা চোখের হুকুম অমান্য করা ওর সাধ্যের বাইরে। তোয়ালে নেওয়ার সময়ে দুইজনের আঙ্গুল ক্ষনিকের জন্য একে অপরের সাথে ছুঁয়ে যায়। জোর করে রিশুর হাতের মধ্যে তোয়ালে গুঁজে দিয়ে মিষ্টি হেসে দিয়া আর ঝিলিককে নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়। রাতের ওই ঝড়ের পরে ভোরের বেলায় ঝিনুকের ঠোঁটের হাসি দেখে বিভোর হয়ে যায় রিশু, দরজা দিয়ে বেড়িয়ে না যাওয়া পর্যন্ত নিস্পলক ওর যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে থাকে।।
[Image: 20210115-150253.jpg]
Like Reply
Sandipan Chatterjee দাদা, শুধু দেখলে হবে খরচা আছে যে, আপনি দেখি রিশুর মতন মুখচোরা ভীষণ, লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ে চলে যান, কোন চন্দ্রিকা ধাক্কা দিয়েছিল নাকি !!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 4 users Like pinuram's post
Like Reply
শুরুটা যে একটু কঠিন হবে সেটা তো জানা কথাই, একে কেউ কাউকে চেনে না তার ওপর ঝিনুকের এই মানসিক অবস্থা ,
কিন্তু ওই যে আঙুলে আঙ্গুল ছোয়াছুয়ি হওয়া , আড়চোখে লুকিয়ে চেয়ে দেখা এগুলোই আমাদের  মনপ্রাণ মাতিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট    
This is why PINURAM is called a legend !!!

yourock clps Smile
[+] 4 users Like ddey333's post
Like Reply
ঝিনুকের ব্যবহার একদম স্বাভাবিক। শুরুতে রিসুর একটু কষ্ট হবে।
[+] 3 users Like TumiJeAmar's post
Like Reply
(30-10-2020, 10:38 AM)TumiJeAmar Wrote: ঝিনুকের ব্যবহার একদম স্বাভাবিক। শুরুতে রিসুর একটু কষ্ট হবে।

তা যা বলেছো !!
একেবারে আনকোরা নতুন তালা , ভাঙা কি অত সোজা নাকি !!!!
রিশুর বেশ ভালোই কষ্ট হবে , ঘামিয়ে একাকার হবে বেচারা !!! 

happy
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
ঝিনুকের মাথায় ভালো সমস্যা আছে বলে মনে হচ্ছে।
[+] 1 user Likes TheLoneWolf's post
Reply
পিনুদা তোমার অন্যান্য গল্পের নায়কদের চেয়ে রিশু অনেকটাই আলাদা ধরণের। একদম অচেনা অজানা দুজন মানুষের ঝপ করে বিয়ে হয়ে গেল, বলা যেতে পারে কারোরই বিয়েতে মন থেকে ইচ্ছা ছিল না। অন্তর্মুখী মুখচোরা রিশুকে কি জেদি সংঘমিত্রা বুঝতে পারবে ?  Sad Sad  আর তোমার চিরপরিচিত বিয়েবাড়ির জাঁকজমকপূর্ণ গমগমে জান্তব বর্ণনাটা মিস করলুম  Smile
আর পার্থর কথা বলছিলাম কারণ একটা কঠিন প্রতিপক্ষ পাচ্ছি না  Dodgy যদিও এই গল্পে রিশু আর ঝিনুকের মানসিক অবস্থাই দুজনের ভালোবাসার অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে  Blush
[+] 1 user Likes Mr Fantastic's post
Like Reply
আরে পিনুদা এ কি সমস্যা শুরু হলো বলুনতো কাল থেকে? মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে. কাল দেখলাম আপনার আমার আরও হয়তো অনেকেরই কমেন্ট, রিপ্লাই সব কমে গেছে... এমনকি আমার, আপনার রেপুটেশন স্কোর পর্যন্ত কমে গেছে. কাল আপনার 123 ছিল সেটা 121 হয়ে গেছিলো আমারো 2টা কমে গেছিলো. সেগুলো আবার পাঠক দিয়ে দিলো কিন্তু এখন আবার নতুন প্রব্লেম আমার.
আপনার থ্রেডে যারা কমেন্ট করছে সেগুলো show করছে কিন্তু আমার রিপ্লাই বা কমেন্ট দেখাচ্ছে যে রয়েছে কিন্তু show করছেনা. কাল থেকে শুরু এসব..... কি রে ভাই.... আমি গল্প আপলোড করবো কিকরে রে....." দৃষ্টি আকর্ষণ " থ্রেডে জানালাম.. দেখি কি হয়. আবার নতুন থ্রেড খুলতে হবে নাকি একই গল্পের জন্য.
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে পরে নিলাম! আপ্লুত হলাম
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
এ এক মহা সমস্যা হয়েছে তো... কাজের শেষ নেই, কিন্তু গল্পটা এমন ভাবে টানলে কাজ করি কি করে? ভেবেছিলাম আজকে আর সাইটটায় ঢুকবই না, হাতে প্রচুর কাজ জমে আছে... কিন্তু তা না, সুট করে ঠিক ঢুকে পড়েছি? আর ঢুকে পড়েছিই না, আপডেটটা পড়েও ফেললাম... যা তা... 

তবে আপডেট পড়ে একটা গান মনে পড়ে গেল, শ্যামল মিত্রের... কেন জানি না, হটাৎ করেই বোধহয়...

যদি কিছু আমারে শুধাও
কি যে তোমারে কব?
নীরবে চাহিয়া রব
না বলা কথা বুঝিয়া নাও
যদি কিছু আমারে শুধাও

ওই আকাশ নত
যুগে যুগে সংযত
নীরবতায় অবিরত
কথা বলে গেছে কত

তেমনি আমার বানী
সৌরভে কানাকানি

হয় যদি ভ্রমরা গো
সে ব্যাথা বুঝিয়া নাও

অন্তরে অন্তরে
যদি কোন মন্তরে বোবা এ প্রাণের ব্যাথা বোঝানো যেত গো তারে

কবির কবিতা সবই
তুলি দিয়ে আঁকা ছবি
কিছু নাই তার কাছে
এটুকু বুঝিয়া নাও।

যদি কিছু আমারে শুধাও
কি যে তোমারে কব?
নীরবে চাহিয়া রব
না বলা কথা বুঝিয়া নাও


Heart Heart Heart Heart Heart
[+] 2 users Like bourses's post
Like Reply
(30-10-2020, 01:40 PM)dada_of_india Wrote: রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে পরে নিলাম! আপ্লুত হলাম

গাড়ি দাঁড় করালে , পড়লে , আপ্লুত হলে , সব বুঝলাম !!

বলি গাড়ির সাথে অন্য কিছু দাঁড়ায়নি তো আবার ??????

Big Grin banana
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
(30-10-2020, 02:08 PM)ddey333 Wrote: গাড়ি দাঁড় করালে , পড়লে , আপ্লুত হলে , সব বুঝলাম !!

বলি গাড়ির সাথে অন্য কিছু দাঁড়ায়নি তো আবার ??????

Big Grin banana

কাল পাঞ্জাবি মাগি চুদলাম ! আর দাঁড়ায় ? happy happy happy horseride
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
খুব সুন্দর হয়েছে ভাই। কিন্তু বাসর রাতে এরকম হয় এটা কোনো দিন দেখ নাই। আর ঝিনুকের উচিৎ ছিল রিশুর কথা শোনা। তা না করে মনে যা এসেছে সেটা মেনে রিশুর উপর চিৎকার করাটা কি ঠিক হল। দিয়া আর ঝিলিক দুজনেই আছে আপনি খেয়ালমে৷ আর এই নিয়ে তারা রিশুর সাথে মজা নিচ্ছে। আর ঝিনুক বাথরুম থেকে যখন বেড়িয়ে বোন আর বোনের বান্ধবীকে দেখলো তখন একদম পালতে গেল যেন রাতে তারা ফুলসজ্জা করেছে। আসলে মেয়েরা পারসনাল লাইফে যেমনটাই থাকুক না কেনো অন্যের সামনে তারা নিজেদের সম্পর্কটাকে কখনো কাউকে বুঝতে দেয় না। আশা করি ঝিনুক রিশুর সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে ধীরে ধীরে।
[+] 1 user Likes sorbobhuk's post
Like Reply




Users browsing this thread: 8 Guest(s)