Thread Rating:
  • 67 Vote(s) - 3.36 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
(28-10-2020, 12:21 PM)TheLoneWolf Wrote: রিশুর এখন আবার চন্দ্রিকাকে মলম লাগানো ইচ্ছা না হলেই হয়...xD

ইচ্ছে কেন থাকতে পারে না, এই পিনুর ত মাঝে মাঝে সানি লিওনি কে লাগাতে ইচ্ছে হয় (নুনু নয়, Tongue , মলম যদি পাওয়া যায়)
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 3 users Like pinuram's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(28-10-2020, 01:28 PM)bourses Wrote: "প্রহরশেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস–

তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।।
এ সংসারের নিত্য খেলায় প্রতিদিনের প্রাণের মেলায়
বাটে ঘাটে হাজার লোকের হাস্য-পরিহাস–
মাঝখানে তার তোমার চোখে আমার সর্বনাশ।।
আমের বনে দোলা লাগে, মুকুল প’ড়ে ঝ’রে–
চিরকালের চেনা গন্ধ হাওয়ায় ওঠে ভ’রে ।
মঞ্জরিত শাখায় শাখায়, মউমাছিদের পাখায় পাখায়,
ক্ষণে ক্ষণে বসন্তদিন ফেলেছে নিশ্বাস–
মাঝখানে তার তোমার চোখে আমার সর্বনাশ।।"

চৈত্র মাস না হলেও তোমার গল্পের বর্ণনায় দাড়ি বুড়োকে না শরণ করে পারলাম না... 

yourock

সেই দাড়িওয়ালা বুড়োকে স্মরন করলে ঠিক তবে এই অবস্থা হয়েছিল বুধাদিত্যের ঝিলামকে দেখে "দ্বিতীয় অঙ্ক" গল্পে আর হয়েছিল অভিমন্যুর পরীকে Heart দেখে, এখানে কি সেই রকম কিছু পেলে দেখতে?
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 3 users Like pinuram's post
Like Reply
(28-10-2020, 02:53 PM)sorbobhuk Wrote: খুব সুন্দর হয়েছে। রিশু মায়ের সাথে কথা বলে অবশেষে বিয়েতে মত দেয়।  আর সেই সাথে মায়ের হাতের ডাল দিয়ে ভাত খেতে চায়।  যাই বলুন মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ টাই আলাদা। যা পৃথিবীতে কারো কাছে পাওয়া সম্ভব নয়। আর ঝিনুক ও রিশু দুজনেই একে অপরকে দেখে ভাবতে থাকে।  আর রিশু কিভাবে ঝিনুকের শরীর ও মন ভালো করে সেটা দেখার বিষয়।

মায়ের হাতের ডাল ভাত তার স্বাদ আলাদা সত্যি, কত কিছু মেশান থাকে তার মধ্যে, তাই না? "আয় ছোঁড়া তোর বিয়ে" এই অবস্থায় বিয়ে হচ্ছে দেখার বিষয় এখন এটাই যে এরপর কি হয়, "আসছে আষাড় মাস মন তাই ভাবছে কি হয় কি হয়" যদিও এখানে গল্পে ডিসেম্বর মাস এবং দিল্লীতে জব্বর ঠান্ডা পরে, এবারে দেখার বিষয় যে এই ঠান্ডায় কি হয় কি হয় !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 3 users Like pinuram's post
Like Reply
বা বেশ ভালো ই তো শুরুটা হোল। প্রথম দেখা তেই এমন কথা বলবে কেউ ভাবেনি এটা বেশ একটা রিয়াল লাইফ এর ঘটনা র সাথে অনেক মিল আছে ।। গল্পটা পড়লে মনেই হচ্ছে না যে গল্প পড়ছি সব সময় মনে হয় যে ঘটনা গুলো চোখে র সামনে ঘটছে ।।
[+] 2 users Like dreampriya's post
Like Reply
(28-10-2020, 04:20 PM)pinuram Wrote: Big Grin Big Grin Big Grin Big Grin  যখন কোন উদ (গান্ডু) গ্রীবা বার করিয়া বসিয়া থাকে তাহাকে কয় উদগ্রীব, এবারে তুমি কি সেটা বল। শুধু বুকের ক্ষত দেখে, বদমাশ লোক বটে Tongue কেন বাবা, হাতে গালেও ত আঁচর দিয়েছিল সেটার দিকে নজর যায়নি? শুধু বুক আর বুক ছি ছি !!!!!!

এমা ছি ছি , আমি ওর গভীর বুকের ( মানে হৃদয়ের ) ক্ষতের কথা বলতে চেয়েছিলাম , Sad
আর যাই করো ঝিনুকের ব্যাপারে উল্টোপাল্টা কিছু বললে কিন্তু আমি রেগে যাবো বলে দিলাম !! Angry
তখন ওসব গ্রিজ টিজ লাগিয়েও পালাতে পারবে না , ঠিক ধরে ফেলবো .....   Big Grin Big Grin
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
Dada bohu din por tomar thread e ashlam. Sotti khub bhalo laglo update gulo ek kothay osadharon... Ambalika ar Rishu r majhe je bojha pora dekhieccho seta sotti obhabonio ❤️. Bishesh kore oi jaiga ta jekhane Rishu bolche "etodin por amar nijer jibon amar hoy gelo?? " Sotti jaiga ta unspeakable
[+] 2 users Like Rocky996's post
Like Reply
(28-10-2020, 04:46 PM)dreampriya Wrote: বা বেশ ভালো ই তো শুরুটা হোল। প্রথম দেখা তেই এমন কথা বলবে কেউ ভাবেনি এটা বেশ একটা রিয়াল লাইফ এর ঘটনা র সাথে অনেক মিল আছে ।। গল্পটা পড়লে মনেই হচ্ছে না যে গল্প পড়ছি সব সময় মনে হয় যে ঘটনা গুলো চোখে র সামনে ঘটছে ।।

আমি যতদূর সম্ভব আপ্রান চেষ্টা করব যাতে গল্পটা আপনারা দেখতে পারেন আর আপ্রান চেষ্টা করব যাতে গল্পের গরু গাছে না চড়ে। আপনার কমেন্ট দেখে মনে হচ্ছে, কিছুটা অন্তত সফল হয়েছি আমি !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 3 users Like pinuram's post
Like Reply
(28-10-2020, 05:18 PM)ddey333 Wrote: এমা ছি ছি , আমি ওর গভীর বুকের ( মানে হৃদয়ের ) ক্ষতের কথা বলতে চেয়েছিলাম , Sad
আর যাই করো ঝিনুকের ব্যাপারে উল্টোপাল্টা কিছু বললে কিন্তু আমি রেগে যাবো বলে দিলাম !! Angry
তখন ওসব গ্রিজ টিজ লাগিয়েও পালাতে পারবে না , ঠিক ধরে ফেলবো .....   Big Grin Big Grin

আচ্ছা বাবা, ক্ষমা চাইছি এরপর আর বলব না এমন ভাবে। Heart । নো উল্টো পালটা কমেন্ট, মাফি !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(28-10-2020, 05:29 PM)Rocky996 Wrote: Dada bohu din por tomar thread e ashlam. Sotti khub bhalo laglo update gulo ek kothay osadharon... Ambalika ar Rishu r majhe je bojha pora dekhieccho seta sotti obhabonio ❤️. Bishesh kore oi jaiga ta jekhane Rishu bolche "etodin por amar nijer jibon amar hoy gelo?? " Sotti jaiga ta unspeakable

বহুদিন পর পর তোমার দেখা পাই, যাই হোক দেখে বেশ ভালো লাগলো তোমায় !!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
পর্ব চার – (#3-17)

 
পিয়ালী মেয়ের হাত নিজের হাতে নিয়ে রিশুর দিকে তাকিয়ে বলে, “অম্বরীশ, তোমার মা তোমাকে সব বলেছেন হয়ত।” রিশু মায়ের দিকে দেখে মাথা দুলিয়ে সায় দেয়, হ্যাঁ।
 
আম্বালিকা আন্টি এতক্ষনে অম্বরীশকে সব বলে দিয়েছে? কি বলেছে, কতটা বলেছে? বুকের ধুকপুকানি বেড়ে ওঠে ঝিনুকের। শরীর কাঠ হয়ে যায় ওর, চেহারা রক্ত শুন্য হয়ে যায়। হাতের মুঠো শক্ত করে, চোখ বুজে দম বন্ধ করে শুধু ভাবে, মা ধরণী দ্বিধা হও আমাকে তোমার কোলে নাও। সামনের ছেলেটা জানে পার্থ ওর সাথে কি করেছে? সামনের ছেলেটা কি জানে যে পার্থের মোবাইলে ওর অর্ধ উলঙ্গ ছবি ছিল, যদিও সেই মোবাইল ভেঙ্গে দিয়েছে ঝিনুক। জানে কি, যে পার্থের সাথে থাকতে থাকতে মদের নেশা আর সিগারেটের নেশা ধরেছে ওর। পার্থের সাথে দেখা হলেই লুকিয়ে একটু মদ খাওয়া, ফাঁক পেলেই লুকিয়ে চুরিয়ে একটু সিগারেটে টান মারা এই সব বদ অভ্যেস আছে ওর। মনে হয় কেউ যেন ওর গলা চেপে ধরেছে, দম বন্ধ হয়ে আসে ওর। সত্যি কি সব কিছু জেনে শুনেও এত বড় এক ডাক্তার ওর সাথে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেছে? কেন হয়েছে, কি কারণ? ওর বাবা কি আম্বালিকা আন্টিকে টাকার লোভ দেখিয়েছে? ওর বাবা কি বলেছে যে এই ছেলেকে গাড়ি কিনে দেবে অথবা দিল্লীতে বাড়ি কিনে দেবে? টাকা পয়সা সম্পত্তির লোভ অনেকের থাকে। লোকের চোখ দেখে কি আর বোঝা যায় মনের মধ্যে কি চলছে?
 
আম্বালিকা বাকি সবার দিকে চোখ বুলিয়ে পিয়ালীকে বলে, “সবাই যখন এখানে আছে, তখন আমি রিশুর ব্যাপারে একটা কথা বলতে চাই।” রিশু এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে ম্লান হাসে। আম্বালিকা প্রতি উত্তরে একটু হেসে ছেলেকে বল জুগাতে অনুরোধ করে বলে, “সবাই এখানে আছে, সবার সামনে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাওয়া উচিত।” একটু থেমে বলতে শুরু করে, “রিশুর একটা অতীত আছে।” পিয়ালী আর সোমনাথ হা করে তাকায় আম্বালিকার দিকে। আম্বালিকা হেসে ফেলে ওদের চেহারার ভাব দেখে, “না না তোরা যেমন ভাবছিস তার কিছুই নয়।” তারপরে বলতে শুরু করে চন্দ্রিকার কথা, কি ভাবে প্রেম হয়েছিল রিশুর সাথে এবং কি ভাবে একটা ভুল বোঝাবুঝির জন্য সেই ভালোবাসা ভেঙ্গে যায়।
 
সব শেষ করে আম্বালিকা, নীলাদ্রির হাত নিজের হাতের মুঠোতে নিয়ে ঝিনুক আর রিশুর দিকে তাকিয়ে বলে, “যাকে ভালোবাসো তার ওপরে বিশ্বাস রাখবে। আমি হয়ত এক সময়ে এর ওপরে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলাম” বলতে বলতে চোখের কোনা চিকচিক করে ওঠে, “কিন্তু এ আমার ওপর থেকে বিশ্বাস হারায়নি।”
 
ঝিনুক আড় চোখে একবার রিশুর দিকে তাকিয়ে দেখে, মাথা নিচু করে বসে সামনের মানুষটা, ঠিক ভাবে ঠাহর করা যায় না যে ওর মনের মধ্যে কি চলছে। চশমার পেছনের চোখের ভাষা পড়তে অক্ষম হয় ঝিনুক। আম্বালিকা আন্টি ওর পাশে বসে থাকলেও ঝিনুকের কানে কোন কথাই ঠিক করে পৌঁছায় না, ঝিনুক নিজেকে ততক্ষণে এক অন্ধকার বাক্সের মধ্যে বন্দী করে ফেলেছে। কাঁধের ওপরে মায়ের হাতের আলতো ধাক্কায় নিজেকে ফিরে পায় ঝিনুক।
 
পিয়ালী জিজ্ঞেস করে মেয়েকে, “কিছু বলার আছে তোর?”
 
মাথা নাড়ায় ঝিনুক, না, ওর আর কি বলার থাকতে পারে। ওর সব স্বপ্ন ভুঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে অনেক আগেই। এক কাঁচের পুতুল ছাড়া এখন ও আর কিছুই নয়। চুপ করে বাবা মায়ের কথা মেনে নেওয়া ছাড়া ওর সামনে আর কোন পথ খোলা নেই।
 
আম্বালিকা রিশুর দিকে দেখে প্রশ্ন করে, “তোর কিছু বলার থাকলে বল। কিছু প্রশ্ন থাকলে করতে পারিস।”
 
রিশুও মাথা নাড়ায়, না ওর মা যখন ঠিক করেছে এই মেয়ের সাথে বিয়ে দেবে তাহলে ওর কিছুই করার নেই। প্রেম ভালোবাসা সঠিক অর্থে কোনদিন চন্দ্রিকার সাথে ছিল না হয়ত, হয়ত চন্দ্রিকা এমএসের ডাক্তার দেখেই ওর কাছে এসেছিল। মাথা নাড়ায় রিশু, না ওর কোন প্রশ্ন নেই।
 
দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে সোমনাথ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে হাসি মুখে সবাইকে বলে, “তাহলে কাজে লেগে পড়া যাক আর কি?”
হেসে ফেলে নীলাদ্রি, “হ্যাঁ হ্যাঁ, হাতে সময় নেই একদম। আমাদের ত কিছুই করা হয়নি, কোন প্রস্তুতি নেই।”
 
গতকাল সকাল থেকে ঘুম হয়নি রিশুর, গতকাল ট্রমা সেন্টারে অনেক চাপ ছিল, তারপরে এই অবস্থা, সারা রাত সবাই জেগে। আলাপ আলোচনা শেষে আম্বালিকা সবাইকে নিয়ে নিজের বাড়ি ঢাকুরিয়া ফিরে আসে। হাতে মাত্র দুইদিন সময়, কেনা কাটা কিছুই নেই। বাড়ি ফিরে স্নান সেরে নেয় রিশু, স্নানের পরে শরীর একদম ছেড়ে দেয় ওর। বিছানায় আধা শোয়া হয়েই বন্ধুদের ফোন করে জানিয়ে দেয় বিয়ের কথা, সেই সাথে এইচওডিকে জানিয়ে দেয়। তারপরে একটু ঘুমিয়ে নেয় রিশু, শরীরে আর শক্তি বেঁচে নেই ওর। সন্ধ্যের মধ্যে শালিনীকে নিয়ে ইন্দ্রজিৎ উপস্থিত হয়ে যায় ওর বাড়িতে, সেই সাথে বেশ কিছু বন্ধুরাও আসে যুদ্ধ কালীন তৎপরতায় শুরু হয় ওর বিয়ের প্রস্তুতি, কেনা কাটা ইত্যাদি। ছুটি একদম নেই, ঠিক হয় যে বিয়ের একদিন পরেই ফিরে যাবে দিল্লীতে, বউভাত হবে না ওদের।
 
ঝিলিক আর দিয়ার আনন্দ আর ধরে না, পারলে ক্লাসের সব বন্ধু বান্ধবীকেই নেমন্তন্ন করে ফেলে। দিয়ার সেই সাথে একটাই দুঃখ, ভেবেছিল বিয়ের দিন গাউন পড়বে আর বউভাতে লেহেঙ্গা, কিন্তু বউভাত হবে না শুনে মুষড়ে পরে যায়। দিয়া আর ঝিলিকের জন্য দামি লেহেঙ্গা কেনা হয়। আম্বালিকা আর নিলাদ্রী ফোনেই সব নেমন্তন্ন সেরে ফেলে, বিয়ের কার্ড ছাপিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেমন্তন্ন করার মতন হাতে সময় একদম নেই।
 
সেদিনের পরে ঝিনুক নিজের খোলসের মধ্যে সম্পূর্ণ ভাবে সেঁধিয়ে যায়। বাড়িতে লোকজনের আনাগোনা শুরু, নতুন উদ্দমে বিয়ের কাজে সবাই মেতে উঠেছে, কিন্তু ঝিনুক নিজেকে সেই সাথে একদম মেলাতে সক্ষম হয় না। যত সময় পার হয় তত ওর মনে হয় যেন মৃত্যুর হাতছানি ওকে ভীষণ ভাবে কাছে ডাকছে।
 
বিয়ের দিন সকাল থেকেই তোরজোড় শুরু, বিয়ের জন্য যে ব্যাঙ্কোয়েট হল ভাড়া করা হয়েছে সেটা বাড়ি থেকে একটু দূরে। এই কয়দিনে বন্ধু বান্ধবীদের অনেক ফোন এসেছিল কিন্তু কারুর সাথে কথা বলার মতন মানসিকতা ওর ছিল না। যার সাথে বিয়ে হবে তার ফোন আসেনি এই কয় দিনে, জানে না তার পছন্দ অপছন্দ। কিন্তু বাবা মায়ের মুখেই শুনেছে যে বিয়ের একদিন পরেই সেই অচেনা মানুষটার হাত ধরে পাড়ি দিতে হবে সুদুর দিল্লী। বাবা মাকে ছেড়ে যেতে হবে ভেবেই মন কেঁদে ওঠে ওর, এর আগে এইভাবে কোনদিন ওর মন কেঁদে ওঠেনি।
 
স্নানের জন্য বাথরুমে ঢুকে নিজেকে একা পেয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলে ঝিনুক। অজানা এক ব্যাথায় সারা শরীর কেঁপে ওঠে বারে বারে। “উড়তে মানা আকাশে তোর, বসতে মানা ডালে, বাসা বাঁধিতে ও মানা কি আছে কপালে বলি ঝড়ে হারাতে ত মানা নাই...” এই কি সেই ঝড় যার সাথে এবারে হারিয়ে যেতে হবে কোন অচিন পুরিতে, সঠিক জানে না ঝিনুক। দুপুরের পরেই বাড়িতে বিউটিসিয়ান পৌঁছে যায় ওকে সাজাতে। সাবেকি আঠপৌরে ধাঁচে লাল বেনারসি পরান হয় ওকে, হাতে গলায় ভারী সোনার গয়না। আগের দিনেই দুই হাতে কুনুই পর্যন্ত মেহেন্দি লাগিয়ে দিয়েছিল বিউটিসিয়ান সেইসাথে আবার দুপায়েও হাঁটু পর্যন্ত মেহেন্দি পড়িয়ে দিয়েছিল। খুব হাসিহাসি হয়েছিল এই মেহেন্দি পড়ান নিয়ে, বিউটিসিয়ান বলেছিল দুইজনের নাম লিখে দেবে কিন্তু ঝিনুক মানা করেছিল। হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে, গাড় বাদামি রঙ হয়েছে দুই হাতে। সেদিন একটা মলমের নাম লিখে দিয়েছিল ওই অচেনা ডাক্তার, সেটা এই দুইদিনে লাগিয়ে গালের হাতের বুকের নখের আঁচর কিছুটা মিলিয়ে গেছে। সাজের মাঝে একবার ঝিলিক দিদিকে জড়িয়ে ধরে আদর করে বলে যায় যে ওকে ভারী সুন্দরী দেখাচ্ছে। ছলছল চোখে বোন কে দেখে, বোনের চেহারায় খুশির আমেজ আনন্দে যেন মাটিতে আর পা পড়ছে না। সময় পেরিয়ে যায় সেই সাথে হৃদপিণ্ডের ধুকপুকানি বেড়ে ওঠে। গতদুই দিনে কারুর সাথে ঠিক ভাবে কথা বলেনি ঝিনুক। মাটির পুতুলের মতন সাজিয়ে ওকে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে বিয়ে হবে। সন্ধ্যের পরেই লোকজন আসতে শুরু করে দিয়েছে। এর মাঝেই মা ওর কানে কানে এসে সান্ত্বনা দিয়ে গেছে, ঝিলিক ও এসে ওর কাছে প্রবোধ দিয়ে গেছে।
 
পিঁড়িতে বসিয়ে নিয়ে যাওয়া হল অম্বরীশের সামনে। দুই হাতে ধরা পান পাতা কিছুতেই সরাতে ইচ্ছুক নয় ঝিনুক। শরীরের শেষ শক্তিটুকু বুকের মধ্যে জড় করে বুক ফাটিয়ে চেঁচিয়ে ওঠে ঝিনুক, “না আমি এই বিয়ে করব না। আমাকে জোর করে বিয়ে দিলে আমি বিষ খাবো, আমি আত্মহত্যা করব।” ঝিনুকের গলা পর্যন্ত সেই আওয়াজ ঠিকরে উঠে এসেছিল কিন্তু পারেনি আওয়াজ করতে। হাতের পান পাতা সরিয়ে কোন রকমে তাকিয়ে ছিল সামনে দাঁড়ান সেই অচেনা পুরুষের দিকে। কেমন যেন শরীর অবশ হয়ে আসে ওর, কোন কিছু ভাবনা চিন্তা করার শক্তি লোপ পেয়েছে, ওর পাশে দাঁড়িয়ে ওর মা ওকে যেমন ভাবে নির্দেশ দিচ্ছে চাবি দেওয়া কলের পুতুলের মতন করে চলেছে ঝিনুক। বিবাহের যজ্ঞ শুরু, পাশাপাশি বসিয়ে দেওয়া হয় দুজনকে। হাতের ওপরে হাত রেখে বেশ খানিকটা মন্ত্র উচ্চারণ করে গেল ব্রাহ্মন, পাশে যে বসে তার দিকে ক্ষনিকের জন্যেও তাকিয়ে দেখার ইচ্ছে করছিল না ওর।
 
এই কটা দিন রিশুর কেমন যেন স্বপ্নের মতন মনে হয়েছিল। এত তাড়াতাড়ি সব কিছু ঘটে চলেছে ওর আশেপাশে যে ঠিক ভাবে কিছুই ঠাহর করে উঠতে পারছিল না। এমন কি যখন ঝিনুককে ওর সামনে এসে দাঁড় করান হয় তখন ওর মনে হয়েছিল এটা একটা দুঃস্বপ্ন, এখুনি হয়ত ওর মা এসে ডাক দেবে আর রিশু ঘুম থেকে উঠে পড়বে। স্বপ্নের ঘোর তখন কাটে রিশুর যখন সামনা সামনি বসিয়ে ওর হাতের ওপরে ঝিনুকের কোমল হাত খানি রাখা হয়। ডাক্তার হিসাবে বহু দেহ স্পর্শ করেছে ডক্টর অম্বরীশ সান্যাল, তবে সামনে বসা মেয়েটার হাত যেমন কোমল তেমন শীতল, যেন ওর সামনে একটা বরফের পুতুল বসে রয়েছে। ওর কঠিন তপ্ত হাতের ছোঁয়াতে ঝিনুকের চাঁপার কলির মতন কোমল আঙ্গুল গুলো বারংবার কেঁপে উঠছে সেটা বুঝতে অসুবিধে হয় না। পদ্ম কুসুমের মতন নরম হাত খানি কুঁকড়ে ছোট হয়ে যায় রিশুর হাতের থাবার মধ্যে। অনুষ্ঠানের পর্ব পেরিয়ে যায়, একে একে মন্ত্র উচ্চারন করে চলে ব্রাহ্মন। এক সময়ে মা এসে ওর পাশে বসে জানিয়ে দিল যে এইবারে পাশে বসা ওই অচেনা মেয়েটার সিঁথিতে ওকে সিঁদুর পরাতে হবে। আড় চোখে তাকিয়ে দেখে পাশে বসা সুন্দরীর দিকে। পাশে বসার পর থেকেই ঘন ঘন রুমাল দিয়ে চোখ মুছে চলেছে, নাকের ডগা লাল, চোখের পাতা ভিজে। একবারের জন্য মনে হয়েছিল অভয় জানিয়ে মেয়েটাকে বলে, “আমি আছি ত সাথে” না সে কথা বলতে পারে না রিশু, ভয় হয় আবার সেই কে ছেড়ে যাবে আর কে থাকবে জানা নেই এই মুহূর্তে। সেই যে একবার দেখা হয়েছিল ওদের বাড়িতে তারপরে এই দুইদিনে দেখাও হয়নি কথাও হয়নি। এই ভাবে অচেনা একজন মেয়েকে নিজের জীবন সঙ্গিনী করতে হবে সেটা রিশু স্বপ্নেও ভাবেনি।
 
ঘনিয়ে আসে মহেন্দ্রক্ষন, সিঁদুর দানের পর্ব। ভেজা চোখে ঝিনুক শেষ বারের মতন চারপাশে দেখে আর বাবাকে খুঁজে বেড়ায়। সোমনাথ অদুরে দাঁড়িয়ে ছিল, মেয়ের জল ভরা চোখ দেখে কাছে এসে দাঁড়ায়। রিশু আংটিতে সিঁদুর নিয়ে ঝিনুকের কপাল ছুইয়ে সিঁথির মাঝে টেনে দেয়, ফর্সা কপাল, ফর্সা নাকের অনেকটাই সিঁদুরের লাল রঙ্গে রঞ্জিত হয়ে যায়। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে ঝিনুকের, সেই সাথে চারপাশের তুমুল হর্ষধ্বনি। অচেনা এক মানুষের আংটির সিঁদুরে বদলে গেল সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ হয়ে গেল মিসেস সঙ্ঘমিত্রা সান্যাল।
 
বাবাকে ইশারায় কাছে ডাকে ঝিনুক, বাবার সেই ছোট মেয়ে ঝিনুক আর নেই। সোমনাথ মেয়ের পাশে হাঁটু গেড়ে বসে পিঠের ওপরে হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি হয়েছে রে মা?”
 
যখন ছোট ছিল, যখন খেলতে গিয়ে পরে যেত আর ব্যাথা লাগত কোথাও, তখন ঠিক এই ভাবেই ওর বাবা ওকে কোলে নিয়ে আদর করে জিজ্ঞেস করত, কি হয়েছে রে মা? অনেকদিন পরে বাবার কন্ঠে সেই আওয়াজ শুনে আর চোখের জল বাঁধ মানাতে পারল না ঝিনুক।
 
বাবার পা জড়িয়ে ধরে ভেঙ্গে পরে, “বাবা, প্লিজ বাবা শুধু একবার, একটা চান্স দাও বাবা, আমি তোমার ভালো মেয়ে হয়ে দেখাব, প্লিজ বাবা তোমাকে ছেড়ে যেতে চাই না।”



============= পর্ব চার সমাপ্ত ============
[Image: 20210115-150253.jpg]
Like Reply
আমি তোমাকে ছেড়ে যেতে চাই নাআআআ /.........বললেই হবে ? খরচ নেই নাকি?
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
(28-10-2020, 05:18 PM)ddey333 Wrote: এমা ছি ছি , আমি ওর গভীর বুকের ( মানে হৃদয়ের ) ক্ষতের কথা বলতে চেয়েছিলাম , Sad
আর যাই করো ঝিনুকের ব্যাপারে উল্টোপাল্টা কিছু বললে কিন্তু আমি রেগে যাবো বলে দিলাম !! Angry
তখন ওসব গ্রিজ টিজ লাগিয়েও পালাতে পারবে না , ঠিক ধরে ফেলবো .....   Big Grin Big Grin

কোথাকার ক্ষত দেখতে চাও ? গুদের ? সেটা একমাত্র রিশু দেখবে
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
অসাধারণ আপডেট ছিল এটা. ❤️ এবারে বিশ্বাস ও ভালোবাসা কিভাবে বৃদ্ধি পাবে সেটাই দেখার.
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
ইমোশনটা ভালোই ক্যাপচার করেছেন লেখায়। দেখা যাক সামনে কি হয়।

একটু spoiler চাই। Dawn of Midnight এ কি Happy Ending আছে? থাকলে শুরু করে দিতাম। : |
[+] 2 users Like TheLoneWolf's post
Reply
ইমোশন টা সবে নাড়া দিয়ে উঠেছিল, এর মধ্যে পতন...
[+] 1 user Likes Chinmoy's post
Like Reply
(28-10-2020, 08:27 PM)dada_of_india Wrote: আমি তোমাকে ছেড়ে যেতে চাই নাআআআ /.........বললেই হবে ? খরচ নেই নাকি?

শুধু পয়সাটা দেখলে, চোখের জলের দাম দেখলে না?

(28-10-2020, 09:26 PM)Baban Wrote: অসাধারণ আপডেট ছিল এটা. ❤️ এবারে বিশ্বাস ও ভালোবাসা কিভাবে বৃদ্ধি পাবে সেটাই দেখার.

দেখা যাক কি হয় এর পর !!!!!

(28-10-2020, 10:54 PM)Chinmoy Wrote: ইমোশন টা সবে নাড়া দিয়ে উঠেছিল, এর মধ্যে পতন...

বেশি কাঁদালে তখন বলেন যে অনেক বেশি কাঁদাচ্ছি, তাই এর বেশি এখানে কিছু দিলাম না !!!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(28-10-2020, 10:20 PM)TheLoneWolf Wrote: ইমোশনটা ভালোই ক্যাপচার করেছেন লেখায়। দেখা যাক সামনে কি হয়।

একটু spoiler চাই। Dawn of Midnight এ কি Happy Ending আছে? থাকলে শুরু করে দিতাম। : |

ওই গল্পের নামের মধ্যেই অনেক কিছু লুক্কায়িত, এর বেশি আর কিছু বলব না, এবারে নাম দেখে গল্প পড়তে শুরু করে দেন কথা দিচ্ছি ভালো লাগবে গল্পটা (সাথে রুমাল রাখবেন অবশ্য), কাল যেন উত্তর পাই !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(28-10-2020, 11:14 PM)pinuram Wrote: ওই গল্পের নামের মধ্যেই অনেক কিছু লুক্কায়িত, এর বেশি আর কিছু বলব না, এবারে নাম দেখে গল্প পড়তে শুরু করে দেন কথা দিচ্ছি ভালো লাগবে গল্পটা (সাথে রুমাল রাখবেন অবশ্য), কাল যেন উত্তর পাই !!!!!!
আশার কথা শোনালেন একটা। কালকে হয়তো সময় পাবোনা। তবে সামনের সপ্তাহের আগেই শেষ করতে পারবো আশা করছি। ১ম গল্প থেকে শুরু করা লাগবে, অনেক জিনিস এড়িয়ে গেছে হয়তো আগেরবার পড়ার সময়।
[+] 1 user Likes TheLoneWolf's post
Reply
Aha!!!dilen bite ta kechiye!!!biye niye apnar nischoi problem ache!!!pari-abhi ta nasta korechen,budha- jhilam er ta at lst holo!!!ebar sanghamitra-rishu!!! Khub kharap hochhe!!!kintu volpe to bole dilen j biswas thaka darkar,eta holo siri deoa,last e dekhiye dilen Mitra er biswas tai nei,mane siri kere neoa!!!!ami kano kejriwal ji o khama korbe na apnake!!
[+] 1 user Likes Debartha's post
Like Reply
ঝিনুকের মনের ভেতরের তোলপাড়ের বর্ণনা অসাধারণ। গান সিলেকশন "উড়তে মানা আকাশে তোর......" ভীষণ apropriate.
[+] 3 users Like TumiJeAmar's post
Like Reply




Users browsing this thread: 7 Guest(s)