Thread Rating:
  • 67 Vote(s) - 3.36 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
(27-10-2020, 08:08 PM)sorbobhuk Wrote: খুব সুন্দর হয়েছে ভাই।  অবশেষে ঝিনুক মার বুঝাতে  কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছে এবং আবার বিয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে।  আর ঝিলিক এসে রিশুর ব্যপারে যা বললো তা শুনে ঝিনুক আবার চিন্তায় পড়ে গেল।  যার সাথে বিয়ে সেও জানে না তার বিয়ে।  এগুলো ছাড়া আর কিছু লিখতে পারলাম না।
আগে কি হয় দেখি।

না না এখুনি এর বেশি কিছু বলবেন না, এখন সেই পর্যায়ে এসে পৌঁছায়নি আমরা, এমনিতেই রিশু প্রচুর প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে গেছে Tongue Tongue Tongue !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(27-10-2020, 09:02 PM)Mr Fantastic Wrote: ঠিক আছে আগে দেখা হোক, পরিচয় হোক, মন কষাকষি হোক, তারপর বোঝা যাবে কি হয় কি হয়  Smile

সেইজন্য ঠিক এই জন্যেই তোমাকে সেই গানের কলি উদ্ধৃত করেছিলাম Heart Heart Heart  লাভ ইউ !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(28-10-2020, 04:40 AM)Debartha Wrote: Belated subha bijoya!!!ekebare puro ta pore nilam!!!apnar famous galpa gulor comparison e ekhane nayika er dehabollori er barnana khub kam!!! Kintu nxt ki holo!!!jabar agroho ta continued!!!ei na hole pinuda!!! Ebar most probably 2 job achena manush biye te agree korbe!!mst awkward!!!kintu apni kibhabe awkward take sweet meeting e convert koren tar janna wait korbo!!!

গল্পের নাম "শেষের পাতায় শুরু" সুতরাং ...... Tongue  হ্যাঁ, এর আগের এক কমেন্টের উত্তরে একটা গানের কলি উদ্ধৃত করেছিলাম, প্রচুর অর্থ বহন করে সেই চার পঙ্কতি !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(27-10-2020, 09:06 AM)dreampriya Wrote: আমার মনে হয় ঝিনুক ঠকবে না । যা হয় ভালোর জন্য ই হয় । তবে ঝিনুক ই বা কি এতো সহজে রিসুর মায়ের প্রতি যে ভালোবাসা সেটা কি মেনে নিতে পারবে । কারণ আমি দেখেছি যে বাড়ির নতুন বউ তার স্বামীর মায়ের প্রতি ভালোবাসা টা মেনে নিতে একটু সমস্যা হয় ।। দেখা যাক কি হয় ভবিষ্যতে ।।।।

যদি ঝিনুক ঠকে , তাহলে ওই পিনুদাকে আমি ছেড়ে দেব ভেবেছো ???

চেনে আমাকে খুব ভালো করে !!!!   

Angry Angry
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
পর্ব চার – (#2-16)

 
রিশু গাড়ি থেকে নেমে দেখে যে দরজায় ওর মা দাঁড়িয়ে। আম্বালিকা মাতৃ স্নেহে বড় ছেলের গালে মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে, “ফ্লাইটে কি একটু ঘুমিয়েছিলিস?”

হেসে ফেলে রিশু, “তোমাদের জ্বালাতনে কি আর ঘুম হয়?”

সেই সাথে বাকি সবাই হেসে ফেলে। পেছনে নীলাদ্রি দাঁড়িয়েছিল, মাথা নুইয়ে আদর সম্ভাষণ জানায় রিশু। এই বাড়ির সবাই অচেনা, পিয়ালীর কথা মনে নেই ওর। বসার ঘরে মায়ের পাশে চুপচাপ বসে এদিকে ওদিকে তাকিয়ে দেখে। এটা একটা ফ্লাট ওদের বাড়ির মতন বড় নয় তবে বেশ ভালো। কয়েকদিন পরেই বিয়ে তাই ঘর ভর্তি লোকজন। সোমনাথ ওকে দেখে এগিয়ে এসে হাত মেলায়, আম্বালিকা ইশারা করে প্রনাম করতে। রিশু ভুরু কুঁচকে একবার মায়ের দিকে তাকায়, মা আর পাপা আর কয়েকজন শিক্ষক ছাড়া আজ পর্যন্ত অচেনা কারুর পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করেনি।

রিশুর ইতস্তত ভাব দেখে সোমনাথ নিজেই হেসে বলে, “না না এখন মডার্ন যুগ, এখন কি আর কেউ কারুর পায়ে হাত দেয় নাকি।” রিশুর হাতের ওপরে আলতো চাপ দিয়ে বলে, “আসতে কষ্ট হয়নি ত?”

মায়ের চোয়াল একটু কঠিন হয়ে গেছে বুঝতে পেরে রিশু সোমনাথের পায়ে হাত দিয়ে প্রনাম করে উত্তর দেয়, “না, তেমন কিছু নয়।”

পিয়ালী ব্যাতিব্যাস্ত হয়ে পরে, কি করবে ঠিক ভেবে পায় না। একটা কাঁসার থালায় ফুল প্রদীপ ধুপ ইত্যাদি সাজিয়ে রিশুকে বরন করতে আসতে দেখেই আম্বালিকা একটু বিব্রতবোধ করে।

আম্বালিকা পিয়ালীকে থামিয়ে দিয়ে বলে, “এসব কি করছিস তুই?”

আমতা আমতা করে পিয়ালী উত্তর দেয়, “না মানে এই প্রথম বার বাড়িতে এলো তাই আর কি।”

আম্বালিকা পিয়ালীর চোখে চোখ নিবদ্ধ করে বলে, “এসবের কোন দরকার নেই।” ওর কন্ঠের স্বর দৃঢ়, “আমি আগেই বলেছি, আগে আমি রিশুর সাথে কথা বলব তারপরে বাকি কথা।”
 
পিয়ালী বুঝে যায়, এই সেই আম্বালিকা বহু বছর আগে যে রিশুকে বুকের মাঝে আঁকড়ে ধরে সেই ভীষণ দুর্ঘটনার রাতে ওর জন্মদিন পালন করেছিল। কেউ সেদিন টলাতে পারেনি ওর সিদ্ধান্ত, ওর কন্ঠে সেই দিনের দৃঢ়তা।
 
পিয়ালী নিজের ভুল বুঝতে পেরে রিশুর দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “তোমাকে সেই একদম ছোট বেলায় দেখেছিলাম তোমার দি...” বলতে গিয়েও থেমে যায় আম্বালিকার চোখের দিকে তাকিয়ে, “তোমার মায়ের কোলে।”
 
রিশু একটু হেসে মাথা নুইয়ে প্রনাম জানায়। আম্বালিকা পিয়ালীকে অনুরোধ করে ওদের একটু একা ছেড়ে দিতে। পিয়ালী ওদের একটা ঘরে বসতে বলে, সেই সাথে জিজ্ঞেস করে রিশুর খাওয়ার জন্য কি কিছু নিয়ে আসবে? রিশু মাথা দোলায়, এখুনি নয়, প্লেনে এক কাপ কফি খেয়েছিল। পিয়ালী বেড়িয়ে যাওয়ার পরে আম্বালিকা ঘরের দরজা বন্ধ করে রিশুর পাসে এসে বসে।
 
ছেলের মাথায় গালে হাত রেখে আদর করে জিজ্ঞেস করে, “কিছুই ত খাস নি খাবি কিছু?”

রিশু হেসে উত্তর দেয়, “যা বাবা, ডিনার করে ঘুমাতেই যাচ্ছিলাম কিন্তু তোমাদের জ্বালায় ঘুম আর হল কই।”

হেসে ফেলে আম্বালিকা, “কি করব বল। সব মায়ের ইচ্ছে হয়, চোখ বন্ধ করার আগে...”

মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “এইসব একদম বলবে না।”

ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, “আচ্ছা বাবা বলব না। তবে সত্যি কথা বলছি, তোর বয়স বাড়ছে, ইচ্ছে ত হয় বাড়ির বড় ছেলে একটা টুকটুকে বৌমা বাড়িতে আনুক, আমিও একটু নাতি নাত্নির সাথে খেলা করি।”

রিশু মাথা নাড়িয়ে হেসে বলে, “একা আছি ভালই ত আছি। এই যে তুমি আছ, পাপা আছে দিয়া দিপ আছে আর কি চাই।”

আম্বালিকা ছেলের মাথায় সস্নেহে হাত বুলিয়ে বলে, “দিয়া বড় হচ্ছে, এরপর কোথায় পড়াশুনা করতে যাবে সেটা জানি না, তারপর ওর একদিন বিয়ে হয়ে যাবে। একদিন দিপ ও বড় হবে তার একটা পরিবার হবে, তুই তখন বুড় হয়ে যাবি, তোকে কে দেখবে?”

মাকে জড়িয়ে উত্তর দেয়, “কেন তুমি দেখবে?”

হেসে ফেলে আম্বালিকা, “আমি কি আর চিরকাল থাকব নাকি রে পাগল?”

বুক ভরে শ্বাস নেয় রিশু, জন্মিলে মরিতে হবে অমর কে কোথা রবে। এক এক করে সত্যি একদিন সবাই ছেড়ে চলে যাবে, “তোমার কি ইচ্ছে আমি বিয়ে করি?”

ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে হাসে আম্বালিকা, “আগে সব কিছু শুনে তবেই বল।”

হেসে ফেলে রিশু, “মাম্মা, তুমি দেখেছ, তোমার পছন্দ এই যথেষ্ট আমার কাছে।”

চোখে জল চলে আসে আম্বালিকার, “এরপর জীবন তোর, তাই বলছিলাম যে একবার শুনে নে পুরো ঘটনা।”

চোখের কোনা চিকচিক করে ওঠে রিশুর, “এতদিন পরে আমার জীবন আমার নিজের হয়ে গেল?”

আম্বালিকা বুঝতে পারে কথাটা ঠিক হয়নি বলা, “না রে বাবা, আমি ঠিক সেই অর্থে বলিনি।”

চোখের কোনা মুছে হেসে উত্তর দেয় রিশু, “আচ্ছা বাবা বল কি বলতে চাও।”
 
আম্বালিকা শুরু করে পিয়ালীর বড় মেয়ে সঙ্ঘমিত্রার কথা, কয়েক মাস আগে তেইশে পা দিয়েছে, পড়াশুনায় ভালো, ইংরেজি নিয়ে স্নাতক তারপরে কোলকাতার এক কলেজ থেকেই এমবিএ করেছে এইচআর নিয়ে। কলেজে পড়ার সময়ে একটা ছেলের সাথে প্রেম হয়, পার্থ তার নাম, বাবা মায়ের অমতেই বিয়ে তবে ঝিনুকের প্রচন্ড জেদের জন্য শেষ পর্যন্ত সোমনাথ আর পিয়ালী মেনে নেয় ওদের বিবাহ। এই বিয়ে নিয়েই অনেক ঝামেলা হয়েছে ওদের বাড়িতে, কথায় কথায় আত্মহত্যা করবে এমন বলেছিল। ছেলেটা শেষে পর্যন্ত ঝিনুকের সাথে প্রতারনা করে, শুধু মাত্র টাকার লোভেই আর ঝিনুকের শরীরের লোভেই ছেলেটা এতদিন প্রেমের ছলনা করে গেছে। ওইদিন বিকেলে একটা ফ্লাটে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওর সাথে জোর জবরদস্তি করতে যায়। পার্থের আসল চেহারা আসল উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে খুব ভেঙ্গে পড়েছে মেয়েটা। রাত পার হলে আর দুইদিন পরেই বিয়ে, সোমনাথের অফিসের লোকজন আত্মীয় সজ্জন সবাইকে নেমন্তন্ন করা হয়ে গেছে, এখন এই অবস্থায় বিয়ে না হলে মান সন্মান খুইয়ে দেবে পিয়ালী আর সোমনাথ। আম্বালিকা আরো জানায়, যে ঝিনুক একটু বেশি জেদি, চঞ্চল প্রকৃতির তবে যতটা শুনেছে পিয়ালীর কাছে, মেয়েটা একদম উচ্ছন্নে যায়নি। আজকালের যুগে ছেলেরা মেয়েরা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, প্রেমিক প্রেমিকারা বিয়ে থা না করেই একসাথে লিভ-ইন থাকে, যত জেদি হোক না কেন, মেয়েটা সেই পথে যায়নি, বিয়ে করেই পার্থের সাথে যেতে চেয়েছিল। চুপ করে মায়ের সব কথা শুনে যায় রিশু।
 
সব কিছু শোনার পরে রিশু দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলে, “সব বুঝলাম, এরপর তুমি কি বলতে চাও?”

আম্বালিকা হেসে বলে, “আমি এই মেয়েকে বৌমা করতে চাই।”

একটু হেসে ভুরু নাচিয়ে বলে রিশু, “বদরাগী আর জেদি মেয়ে কিন্তু...”

হেসে ফেলে আম্বালিকা, “তাতে কি হয়েছে, তোর মা ও ওই বয়সে কম জেদি ছিল না।”
 
রাস্তায় আসার সময়ে ওর বোন ওকে সঙ্ঘমিত্রার ছবি দেখিয়েছিল, মানস চক্ষে সেই মুখবয়াব মনে করতে চেষ্টা করে রিশু। ভারী মিষ্টি দেখতে মেয়েটাকে, কাজল টানা চোখ দুটো সত্যি খুব উচ্ছল প্রানবন্ত, বেশ ছটফটে মেয়ে সেটা বুঝতে অসুবিধে হয় না। চুলে আবার রঙ করা, হাল ফ্যাশানের সাথে তাল মিলিয়ে গাড় বাদামি রঙ আবার সামনের দিকের এক গোছা চুল লাল রঙের। মনে মনে হেসে ফেলে রিশু, ভবিষ্যতে ধাক্কা আছে অনেক। তবে মায়ের ইচ্ছে মায়ের বিশ্বাস সেই বিশ্বাসকে আঘাত হানার শক্তি ওর নেই।
 
মাকে জড়িয়ে হেসে ফেলে রিশু, “সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।”

ছেলের মাথার চুলে বিলি কেটে স্নেহ ভরা কন্ঠে বলে, “আমার বিশ্বাস সব ঠিক হয়ে যাবে।”

মাথা নিচু করে একটু ভেবে রিশু বলে, “কিন্তু মাম্মা আমি শুধু জেদের কথা ভাবছি না...”

ভুরু কুঁচকে ছেলের দিকে তাকিয়ে বুঝে যায় আম্বালিকা তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ঠিক কি কথা বলতে চাইছে, “দ্যাখ বাবা, আগের পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল, সেই ক্ষেত্রে ব্যাবধান আসাটাই স্বাভাবিক সেটাই বর্তমান যুগের নিয়ম। এই ক্ষেত্রে পিয়ালী আমার ছোটবেলার বান্ধবী, অন্তত সেই ভয়টা আমার নেই যে এই মেয়ে আমাদের পরিবারের মাঝে একটা দেয়াল তুলে দাঁড়াবে।”

মাথা দুলিয়ে শেষ পর্যন্ত সায় দেয় রিশু, “তোমার বিশ্বাস যখন তখন আমি আর কিছু বলব না।”

ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে কপালে স্নেহের চুম্বন এঁকে বলে, “আমি আছি ত সাথে, ভয় কি। দ্যাখ বাবা, যে গাছের শিকড় যত গভীরে যায় সেই গাছ তত অটল অবিচল হয়ে সকল প্রকার ঝড় ঝঞ্ঝায় দাঁড়িয়ে থাকে।” শেষ পর্যন্ত মায়ের দিকে তাকিয়ে মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানায় রিশু। ছেলের মাথায় স্নেহের চুম্বন এঁকে দরজা খুলে পিয়ালীকে জড়িয়ে ধরে বলে, “যা এবারে তোর জামাইকে মিষ্টি খাওয়া।”

খুশির অশ্রু ধারা বয়ে যায় পিয়ালীর দু’চোখ দিয়ে। সোমনাথ জড়িয়ে ধরে নীলাদ্রিকে, “কি যে বলব আপনাদের ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।”

দিয়া আর দিপ দৌড়ে ঢুকে পরে ঘরের মধ্যে। দিয়া দাদার কাছে আবদার করে, “বিয়েতে আমার কিন্তু একটা গাউন চাই আর বউভাতের দিনে লেহেঙ্গা পড়ব।”

দিপের আবদার, “আমি কিন্তু একটা সুট পড়ব।”

ঘরের মধ্যে তাকায় আম্বালিকা, রিশুকে জিজ্ঞেস করে, “কিছু খাবি?”
 
রিশু মাথা নাড়ায়, সারা রাত ঘুম নেই একটু খিধে পেয়েছে বটে নিজের বাড়ি হলে মাকে বলত গরম ভাত আর মুশুরির ডাল সেদ্ধ আর আলু সেদ্ধ বানাতে। দিল্লীতে রান্নার লোকের হাতের রান্না খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে গেছে, মায়ের মতন ডাল রান্না করতে জানে না কাজের লোক।
 
মুচকি হেসে উত্তর দেয় রিশু, “তোমার হাতের ডাল সেদ্ধ পাওয়া যাবে কি...”

হেসে ফেলে আম্বালিকা, “আচ্ছা দেখছি...”
 
দিপ আর দিয়ার সাথে গল্প করতে শুরু করে রিশু। দিয়ার খুব আনন্দ, ওর প্রিয় বান্ধবী ঝিলিকের দিদির সাথে ওর দাদার বিয়ে হবে। কথার ফাঁকে একবার ঘরের দিকে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করে সব কিছু, ঘরটা ছোট, এক পাশে একটা চেয়ার আর পড়ার টেবিল, বই গুলো দেখে বুঝতে পারল এটা ঝিলিকের ঘর। একদিকে একটা বিছানা, এতক্ষন মায়ের সাথে বিছানায় বসেই কথা হচ্ছিল। এর মাঝে সোমনাথ আর নিলাদ্রী ঘরে এসে রিশুর সাথে কুশল বিনিময় করে।
 
এমন সময়ে আম্বালিকা আর পিয়ালী, ঝিনুক কে নিয়ে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে। বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় রিশু, সোমনাথ একটা চেয়ার এগিয়ে দেয় রিশুর দিকে। রিশু চোখ তুলে ঝিনুকের দিকে দেখে মাথা নুইয়ে সম্ভাষণ জানায়। মাথা নিচু করে থাকার ফলে ঝিনুক সেটা দেখতে না পারায়, মা আর আম্বালিকা আন্টির সাথে ঘরে ঢুকে বিছানায় বসে। রিশুর পাশের দুটো চেয়ারে নিলাদ্রী আর সোমনাথ বসে পরে। রিশুর চুপচাপ মায়ের দিকে তাকায়, আম্বালিকা আলতো মাথা দুলিয়ে ইশারায় জানায় যে পাশের মেয়েটাই সঙ্ঘমিত্রা যার ব্যাপারে এতক্ষন কথা বলছিল। রিশু তাকিয়ে দেখে ঝিনুকের দিকে, পরনে একটা ঘিয়ে রঙের সালোয়ার কামিজ তার ওপরে একটা শাল জড়ান। মাথা নিচু করে থাকলেও বুঝতে অসুবিধে হয় না যে মেয়েটার চোখের পাতা ভিজে, কেঁদে কেঁদে চোখ জোড়া ফুলে গেছে। চুপচাপ বসে নরম চাঁপার কলির মতন আঙ্গুল খুঁটছিল মেয়েটা। নরম ফর্সা গালের ওপরে নখের আঁচর, অনাবৃত হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে, সেখানেও নখের আঁচড়ের দাগ। সাধারন পাঁচটা বাঙালি মেয়েদের চাইতে একটু লম্বা গড়নের, দেহের গঠন বাড়ন্ত, মুখবয়াব বেশ মিষ্টি। ছবিতে যে চোখ দেখেছিল এখন সেটা বুক ভাঙা কান্নার পেছনে হারিয়ে গেছে, যে হাসি খুশি চেহারা দেখেছিল সেটা আর নেই।
 
হটাত করে ডাক্তারি স্বভাব বশত ঝিনুকের গালের আর হাতের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে রিশু, “এহ বাবা এই আঁচড় কি করে লেগেছে? বেশ খারাপ অবস্থা দেখছি, আমি একটা অয়েন্টমেন্ট লিখে দেব নিয়ে আসবে, না হলে এই দাগ পরে ঘা হয়ে যেতে পারে।”
 
হটাত রিশুর মুখে এই কথা শুনে ঝিনুক কি বলবে ভেবে পায় না, এতক্ষন বুকের এক কোনায় একটা অজানা আশঙ্কার কালো মেঘ ছেয়েছিল সেটা একটু কেটে গিয়ে এক ক্ষীণ সূর্যের আলো উঁকি মারে এক কোনায়। সামনের অচেনা মানুষটার কথা শুনে কান্না ভুলে ভেজা চোখেই তাকিয়ে দেখে রিশুর দিকে। বাকিরা হেসে ফেলে রিশুর কথা শুনে। ওকে প্রথম দেখে রিশু যে এই কথা বলবে সেটা একদম আশাতীত, ঝিনুক কাঁদবে না হাসবে ভেবে পায় না। নিচের ঠোঁট চেপে ভাসা ভাসা চোখে তাকিয়ে থাকে রিশুর দিকে। সামনের ছেলেটার দিকে দেখে ঝিনুক, পরনে একটা অতি সাধারন শারট আর একটা জিন্সের প্যান্ট। ভাইয়ের হাত ভেঙ্গেছে শুনেই সেই রাতে যা পেরেছে সেই পরেই নিশ্চয় বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেছে, কথাটা ভাবতেই কেমন যেন লাগে ওর। কতটা নিবিড় বন্ধন না হলে সুদুর দিল্লী থেকে এই ভাবে কেউ এত রাতে আসে না। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট, তাও দুটো চোখ ভীষণ উজ্জ্বল। বেশ বলিষ্ঠ দেহের গঠন, চওড়া কাঁধ, চওড়া ছাতি, ওকে দেখে যখন উঠে দাঁড়িয়েছিল তখন বুঝে গিয়েছিল যে ছেলেটা বেশ লম্বা চওড়া। মুখবয়াব হুবহু আম্বালিকা আন্টির মতন, বিশেষ করে উজ্জ্বল চোখ জোড়া।
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 12 users Like pinuram's post
Like Reply
এইতো এইতো মলম লাগানো শুরু হলো তাহলে , গালের আর হাতের ক্ষতেই সই !!!
ঝিনুকের বুকের গভীর ক্ষতগুলোর কবে চিকিৎসা শুরু হয় , সেটা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে বসে আছি !!  

Heart Smile
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
পিনুদা,
এল আর বি এর একটা গান মনে পরে গেল...
কতদিন দেখেনি দু চোখ
নির্ঘুম চোখ
বন্ধু তোমায়....
তোমাদের লেখনি প্রায় বন্ধ হতে জওয়াও ফোরাম এ ঢুকাই বন্ধ হয়ে গেছিল...
অনেক ভালো লাগছে....
অসাধারণ শুরু, এক নাগাড়ে পরে শেষ করেছি...
[+] 2 users Like Voboghure's post
Like Reply
রিসুর মলম লাগিয়ে দেওয়াতে অনেক সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে হয়। তবে এই লেখকের মাথা তো সোজা দিকে চলে না, আবার কোন সমস্যা এসে দাঁড়ায় ঠিক নেই।
[+] 2 users Like TumiJeAmar's post
Like Reply
(28-10-2020, 10:45 AM)TumiJeAmar Wrote: রিসুর মলম লাগিয়ে দেওয়াতে অনেক সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে হয়। তবে এই লেখকের মাথা তো সোজা দিকে চলে না, আবার কোন সমস্যা এসে দাঁড়ায় ঠিক নেই।

যা বলেছো দাদা ,একদম ঠিক কথা ,

এটা পিনুদাকে নিয়ে একটা গুরুতর সমস্যা বৈকি !!!

Sad
Like Reply
(28-10-2020, 10:45 AM)TumiJeAmar Wrote: রিসুর মলম লাগিয়ে দেওয়াতে অনেক সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে হয়। তবে এই লেখকের মাথা তো সোজা দিকে চলে না, আবার কোন সমস্যা এসে দাঁড়ায় ঠিক নেই।

জীবনে সমস্যা থাকবেই, থাকতে বাধ্য। তবে কঠিন থেকে কঠিনতর সমস্যা সমাধান করেই অমলিন আনন্দ পাওয়া যায়  Smile
[+] 2 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply
খুবই সুন্দর আপডেট. প্রথম দেখা বা প্রথম পরিচয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ. যদিও প্রথম দেখায় কিছুই সেইভাবে বোঝা যায়না. প্রথম দেখা কেন কখনো একজন মানুষের আসল রূপ জানতে বহু বছরও কম পড়ে আবার অনেক ক্ষেত্রে কিছু আলাপই যথেষ্ট.

তবে এই গল্পের মূল গুন হলো চরিত্র গুলো একদম বাস্তবিক ভাবে ফুটিয়ে তোলা. রিশু খুবই ভালো চরিত্রের ও মনের ছেলে কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে সামান্য দোষও আছে. যেমন একটুতেই রেগে যাওয়া, সব বড়োদের পা ছুঁয়ে প্রণাম না করা.... যদিও এগুলো খুবই ছোট ব্যাপার কিন্তু পিনুদা যে মূল চরিত্রের অভ্যন্তরীণ গুন গুলির সাথে এই ব্যাপার গুলোও তুলে ধরেছেন সেগুলো সত্যিই অসাধারণ.

লাইক রেপুটেশন দিতেই হলো.
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
রিশুর এখন আবার চন্দ্রিকাকে মলম লাগানো ইচ্ছা না হলেই হয়...xD
[+] 2 users Like TheLoneWolf's post
Reply
"প্রহরশেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস–

তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।।
এ সংসারের নিত্য খেলায় প্রতিদিনের প্রাণের মেলায়
বাটে ঘাটে হাজার লোকের হাস্য-পরিহাস–
মাঝখানে তার তোমার চোখে আমার সর্বনাশ।।
আমের বনে দোলা লাগে, মুকুল প’ড়ে ঝ’রে–
চিরকালের চেনা গন্ধ হাওয়ায় ওঠে ভ’রে ।
মঞ্জরিত শাখায় শাখায়, মউমাছিদের পাখায় পাখায়,
ক্ষণে ক্ষণে বসন্তদিন ফেলেছে নিশ্বাস–
মাঝখানে তার তোমার চোখে আমার সর্বনাশ।।"

চৈত্র মাস না হলেও তোমার গল্পের বর্ণনায় দাড়ি বুড়োকে না শরণ করে পারলাম না... 

yourock
[+] 2 users Like bourses's post
Like Reply
খুব সুন্দর হয়েছে। রিশু মায়ের সাথে কথা বলে অবশেষে বিয়েতে মত দেয়। আর সেই সাথে মায়ের হাতের ডাল দিয়ে ভাত খেতে চায়। যাই বলুন মায়ের হাতের রান্নার স্বাদ টাই আলাদা। যা পৃথিবীতে কারো কাছে পাওয়া সম্ভব নয়। আর ঝিনুক ও রিশু দুজনেই একে অপরকে দেখে ভাবতে থাকে। আর রিশু কিভাবে ঝিনুকের শরীর ও মন ভালো করে সেটা দেখার বিষয়।
[+] 1 user Likes sorbobhuk's post
Like Reply
(28-10-2020, 09:23 AM)ddey333 Wrote: যদি ঝিনুক ঠকে , তাহলে ওই পিনুদাকে আমি ছেড়ে দেব ভেবেছো ???

চেনে আমাকে খুব ভালো করে !!!!   

Angry Angry

আগে এটা ঠিক কর কাকে চাই, তিতলি না ঝিনুক, তিতলি ঠকেনি কিন্তু, এখানে ঝিনুকের কথা বলতে পারছি না এখুনি কারণ জানিনা এখন। আর ধরার কথা বলতিছ, আমি গায়ে গ্রিজ লাগিয়ে থাকব ধরতে এলেই হাত ফস্কে বেড়িয়ে যাবো Big Grin Big Grin
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(28-10-2020, 10:13 AM)ddey333 Wrote: এইতো এইতো মলম লাগানো শুরু হলো তাহলে , গালের আর হাতের ক্ষতেই সই !!!
ঝিনুকের বুকের গভীর ক্ষতগুলোর কবে চিকিৎসা শুরু হয় , সেটা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে বসে আছি !!  

Heart Smile

Big Grin Big Grin Big Grin Big Grin  যখন কোন উদ (গান্ডু) গ্রীবা বার করিয়া বসিয়া থাকে তাহাকে কয় উদগ্রীব, এবারে তুমি কি সেটা বল। শুধু বুকের ক্ষত দেখে, বদমাশ লোক বটে Tongue কেন বাবা, হাতে গালেও ত আঁচর দিয়েছিল সেটার দিকে নজর যায়নি? শুধু বুক আর বুক ছি ছি !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 3 users Like pinuram's post
Like Reply
(28-10-2020, 10:29 AM)Voboghure Wrote: পিনুদা,
এল আর বি এর একটা গান মনে পরে গেল...
কতদিন দেখেনি দু চোখ
নির্ঘুম চোখ
বন্ধু তোমায়....
তোমাদের লেখনি প্রায় বন্ধ হতে জওয়াও ফোরাম এ ঢুকাই বন্ধ হয়ে গেছিল...
অনেক ভালো লাগছে....
অসাধারণ শুরু, এক নাগাড়ে পরে শেষ করেছি...

এবারে এসে গেছি, সাথে থাকবেন আশা করি !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(28-10-2020, 10:45 AM)TumiJeAmar Wrote: রিসুর মলম লাগিয়ে দেওয়াতে অনেক সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে হয়। তবে এই লেখকের মাথা তো সোজা দিকে চলে না, আবার কোন সমস্যা এসে দাঁড়ায় ঠিক নেই।

আরে দাদা, এই লেখকের মাথা জীবন যুদ্ধের জিলিপির প্যাঁচের মতন সোজা সরল এর বেশ আর কি Tongue Tongue Tongue
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(28-10-2020, 11:18 AM)Mr Fantastic Wrote: জীবনে সমস্যা থাকবেই, থাকতে বাধ্য। তবে কঠিন থেকে কঠিনতর সমস্যা সমাধান করেই অমলিন আনন্দ পাওয়া যায়  Smile

এদ্দম হক কতা, আম্বালিকার উক্তি তেই উত্তর দিলাম "যে গাছের শিকড় যত গভীর সেই গাছ তত অবিচল অটল হয় তত বড় হয়"
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(28-10-2020, 11:34 AM)Baban Wrote: খুবই সুন্দর আপডেট. প্রথম দেখা বা প্রথম পরিচয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ. যদিও প্রথম দেখায় কিছুই সেইভাবে বোঝা যায়না. প্রথম দেখা কেন কখনো একজন মানুষের আসল রূপ জানতে বহু বছরও কম পড়ে আবার অনেক ক্ষেত্রে কিছু আলাপই যথেষ্ট.

তবে এই গল্পের মূল গুন হলো চরিত্র গুলো একদম বাস্তবিক ভাবে ফুটিয়ে তোলা. রিশু খুবই ভালো চরিত্রের ও মনের ছেলে কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে সামান্য দোষও আছে. যেমন একটুতেই রেগে যাওয়া, সব বড়োদের পা ছুঁয়ে প্রণাম না করা.... যদিও এগুলো খুবই ছোট ব্যাপার কিন্তু পিনুদা যে মূল চরিত্রের অভ্যন্তরীণ গুন গুলির সাথে এই ব্যাপার গুলোও তুলে ধরেছেন সেগুলো সত্যিই অসাধারণ.

লাইক রেপুটেশন দিতেই হলো.

ছোট ছোট আচরনে ধরা পরে কোন ব্যাক্তির আসল পরিচয়, রিশু ত রক্ত মাংসের মানুষ, দোষ গুন মিলে মিশেই মানুষ, এত আর হিন্দি সিনেমার হিরো নয় যে এক ঘুসিতে দশ জন কে ঘায়েল করবে, পা ঘুরালে ঘূর্ণিবার্তা শুরু হয়ে যাবে, নামবে মারসেডিজ থেকে থাকবে গগনচুম্বী অট্টালিকায়, এ'ত আমাদের রিশু, সেই ছোট থেকে আমরা একে দেখে এসেছি তাই না, "মাম্মা ব্লাক ভৌ ভৌ" সেই শুরু !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 4 users Like pinuram's post
Like Reply




Users browsing this thread: 91 Guest(s)