16-10-2020, 09:26 AM
(15-10-2020, 02:13 PM)bourses Wrote: রূঢ় বাস্তবের প্রতিচ্ছবি...
একদম, তবে কতটা তুলে ধরতে পেরেছি সেটা বুঝতে পারছি না চেষ্টা করেছি এইমাত্র !!!!!!!
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
|
16-10-2020, 09:26 AM
(15-10-2020, 02:13 PM)bourses Wrote: রূঢ় বাস্তবের প্রতিচ্ছবি... একদম, তবে কতটা তুলে ধরতে পেরেছি সেটা বুঝতে পারছি না চেষ্টা করেছি এইমাত্র !!!!!!!
16-10-2020, 09:27 AM
(15-10-2020, 02:18 PM)Isiift Wrote: একটু পড়লে আরেকটু পড়তে ইচ্ছে করে।একটুতে যেন আশ মেটে না।পার্থ একটা বোকাচুদা। ইসসস, কি করব বলুন যতটা পারি ততটা লিখি তাই মাঝে মাঝে দেরি হয়ে যায় আপডেট দিতে !!!!!!
16-10-2020, 09:29 AM
(15-10-2020, 05:37 PM)Rocky996 Wrote: Dada kichu porbo thake jekhane bolar kichui thake na ar recent update dekhe ektai kotha bolbo sotyi jhinuk khub boro bhul koreche manush chinte. Ar ei ghotonar probhabe jhinuk er nam ta sarthok holo janina kokhon se kholos chere asbe..... আমি চেষ্টা করি আমার গল্পে চরিত্রদের নামের সাথে তার চিত্রায়ন সার্থক করার, সেই প্রচেষ্টায় কতটা সফল জানি না !!!!!
16-10-2020, 09:30 AM
(15-10-2020, 07:10 PM)SUMON shill Wrote: তুমি শালা পাথ কে লম্পট বানিয়ে ঝিনুকের সাথে সেটে বসবে আর ঝিনুক থেকে মুক্তা বের করবে না গুরু একদম না, আমি মুক্তো বের করব না কথা দিলাম। আপনি পারেন ত একবার পার্থকে একটা উচিত শিক্ষ দিন, হয়ত দেখবেন ঝিনুক আপনার প্রেমে পরে গেছে !!!!!!!
16-10-2020, 09:31 AM
(15-10-2020, 07:42 PM)dada_of_india Wrote: মাঝখানে এইভাবে ছেড়ে দেওয়া কি ভালো জিনিস ? ... ছিঁড়ে আঁঠি বাধো তুমি, কে কোথায় পালিয়েছে ????
16-10-2020, 09:32 AM
(16-10-2020, 08:16 AM)ব্যাঙের ছাতা Wrote: আপাতত বেঁচে গেলো বেচারি! এটা কি আমাদের পুরানো পোকাদা নাকি ??? বেশ ভালো হয়েছে কবিতা !!!!!!
16-10-2020, 09:37 AM
পর্ব দুই – (#4-9)
সন্ধ্যের পরেই আম্বালিকা দীপকে নিয়ে পীয়ালির বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিল, কথা ছিল নীলাদ্রি অফিস থেকে সোজা ওদের সল্টলেকের বাড়িত চলে আসবে। দিয়া আর ঝিলিক নিজেদের নিয়েই সকাল থেকে ব্যাস্ত, ওর দুজনে খুব খুশি একে অপরের সাথে গতরাতে গল্প করেই কাটিয়েছে। বসার ঘরে জমিয়ে গল্প চলছে, নীলাদ্রি অনেক আগেই চলে এসেছিল পীয়ালির বাড়িতে। গল্প করলেও পীয়ালির মন পরে ছিল ঝিনুকের জন্য, এত রাত হয়ে গেল এখন মেয়েটা এল না, ফোন উঠাচ্ছে না, ভীষণ চিন্তায় পরে যায়। সোমনাথ মাঝে মাঝেই ঘড়ির দিকে তাকায় আর ইশারায় পীয়ালিকে জিজ্ঞেস করে ঝিনুকের কথা। পীয়ালির অস্থির ভাব আম্বালিকার চোখ এড়ায় না, “কি রে কিছু হয়েছে নাকি?” বুকের মধ্যে অজানা আশঙ্কায় দুরু দুরু করতে শুরু করে দিয়েছে ততক্ষনে, তাও মুখে হাসি টেনে বলে, “না রে কিছু না।” আম্বালিকা এদিক ওদিক দেখে জিজ্ঞেস করে, “ঝিনুক কে দেখছি না যে? কোথাও গেছে নাকি?” কিছু বলার আগেই, বিধস্ত ঝিনুক খোলা দরজা দিয়ে ঝড়ের বেগে ঘরে ঢুকে মায়ের কোলে মুখ লুকিয়ে কেঁদে ফেলে। ওকে ওই বিধস্ত অবস্থায় দেখে সবাই আশ্চর্যচকিত হয়ে যায়। পীয়ালির বুক ভয়ে দুরুদুরু করে ওঠে, মেয়ের দিকে তাকিয়ে আরো ভয় পেয়ে যায়, সারা গালে হাতে নখের আঁচর, চুল অবিন্যাস্ত। চরম আশঙ্কাজনিত কন্ঠে মেয়েকে জিজ্ঞেস করে, “কি হয়েছে? তুই এতক্ষন কোথায় ছিলিস?” মায়ের কোলে মুখ লুকিয়ে গুমড়ে কেঁদে ফেলে ঝিনুক, “আমি বিয়ে করব না, পার্থ একটা মস্ত বড় শয়তান আমকে কি না শেষ পর্যন্ত...” কথাটা আর শেষ করতে পারে না। পীয়ালি মেয়েকে বুকের কাছে জড়িয়ে কেঁদে ফেলে। আম্বালিকা ঝিনুকের মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি হয়েছে একবার খুলে বল। পার্থ তোর সাথে কিছু করেছে?” মায়ের কোলে মাথা গুঁজে মাথা নাড়িয়ে বলে, “আমি বিয়ে করব না, ও আমাকে ...” ভীত সন্ত্রস্থ সোমনাথ নীলাদ্রির দিকে নিস্পলক চোখে তাকিয়ে থাকে। ঝিলিক আর দিয়া কথা বলতে ভুলে যায়। দিপ মোবাইলে গেম খেলছিল, সেটা থামিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে। আরো বেশ কয়েকজন আত্মীয় সজ্জন উপস্থিত ছিল ঘরের মধ্যে, সবাই অজানা আশঙ্কায় ঝিনুকের দিকে তাকিয়ে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে কেঁদে মায়ের কাছে পুরো ঘটনার বিবরন দেয় ঝিনুক। ক্রোধে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠে সোমনাথ, “তোকে হাজার বার বলেছিলাম পার্থ ছেলেটা ভালো নয়, কোনদিন ওর মতিগতি আমার ভালো লাগে নি। কিন্তু তুই কিছুতেই শুনবি না। আমি ওর বাবার সাথে কথা বলছি।” বাবার ক্রোধিত গলা শুনে রাগে দুঃখে আরো বেশি ফেটে পরে ঝিনুক, “হ্যাঁ যার সাথে কথা বলার বলে নাও, কিন্তু আমি ওই শয়তানটাকে বিয়ে করব না।” মায়ের কোল ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বাবার দিকে দেখে, “আমি কাউকেই বিয়ে করব না।” ক্রোধে দিগ্বিদিক জ্ঞান শুন্য হয়ে যায় সোমনাথ, মেয়ের দিকে তেড়ে গিয়ে বলে, “আমার মান সন্মান সব জলাঞ্জলি দিয়ে এখন বলছিস বিয়ে করবি না? তিন দিন পরে বিয়ে, সবাইকে নিমত্তন্ন করা হয়ে গেছে, লোকে কি বলবে? কতবার বলেছিলাম রানীগঞ্জের দিলিপের ছেলের সাথে বিয়ে দেব, তখন কিছুতেই আমার কথা শুনিস নি।” জল ভরা চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে থাকে ঝিনুক। মেয়েকে শাসিয়ে বলে সোমনাথ, “আর তোর কোন জেদ আমি মানব না। যখন বলব, যার সাথে বলব তখন তার সাথেই তোর বিয়ে হবে।” আহত ঝিনুক পা দাপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে যায়। বেড়িয়ে যাওয়ার আগে বাবার দিকে দেখে বলে, “আমাকে জোর করে বিয়ে দিলে আমি বিষ খাবো।” ওর যে সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে, ভালোবাসার ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে গেছে। মেয়ের কথা শুনে ডুকরে কেঁদে ওঠে পীয়ালি। বসার ঘরে নেমে আসে শ্মশানের স্তব্ধতা, কারুর মুখে কোন কথা নেই। আম্বালিকা পীয়ালিকে শান্তনা দিলেও কান্না থামান যায় না, বারেবারে আম্বালিকার কোলের ওপরে মূর্ছা যায়। সোমনাথ ফোন করে পার্থের বাবাকে সব ঘটনা জানায়, পার্থের বাবা ক্ষমা চায় কিন্তু সেই সাথে সোমনাথ জানায় যে তার মেয়ে এই বিয়েতে একদম নারাজ। মাথায় হাত দিয়ে সোফায় বসে আক্ষেপ করে বলে সোমনাথ, “এ জীবনে কি যে পাপ করেছি জানি না।” নীলাদ্রি ওকে শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করাতে, সোমনাথ ওকে বলে, “কি করিনি বলবেন? বাড়ির বড় মেয়ে, ছোট বেলা থেকে আদর দিয়ে মানুষ করেছি, যখন যা চেয়েছে দিয়েছি। পড়াশুনায় মাথা ভালো ছিল কিন্তু কিছুতেই সায়েন্স নিয়ে পড়ল না, ইংরেজি নিয়ে পড়ল তাতেও মানা করিনি। ওই এলাকার সব থেকে ভালো কলেজে দুই মেয়েকে পড়িয়েছি।” দুশ্চিন্তায় হাত পা কাঁপতে শুরু করে দেয় সোমানাথের। নীলাদ্রি সান্ত্বনা দিয়ে বলে, “কিছু একটা উপায় বেড়িয়ে আসবে অত চিন্তা করবেন না।” কাঁপা হাতে ফোন ধরে বলে, “একবার ভাবছি দিলিপকে ফোন করে জিজ্ঞেস করি, কয়েক মাস আগেও আমাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করছিল ঝিনুকের কথা। ওর ছেলে কিশলয় ব্যাঙ্গালোরে একটা আইটি কোম্পানিতে চাকরি করে।” নীলদ্রি একবার আম্বালিকার দিকে দেখে একবার সোমনাথের দিকে দেখে। আম্বালিকাকে জড়িয়ে ধরে পীয়ালি ডুকরে কেঁদে ওঠে, “আমার অদৃষ্ট কি করব বল...” আম্বালিকা ওকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে, “নিজেকে একটু সামলা, দ্যাখ দিলিপ কে ফোন করে কি বলে।” রাগে গজগজ করতে করতে পীয়ালিকে দোষারোপ করে সোমনাথ, “এবারে আর মেয়ের জন্য কি করতে বলছ? বলত দিলিপের পায়ে ধরব? আমি আর কিছু চিন্তা ভাবনা করতে পারছি না।” পুরুষ মানুষ না হলে এতক্ষনে হয়ত কেঁদে ফেলতেন সোমনাথ। আম্বালিকা পীয়ালিকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে, “তোর মেয়ে খারাপ ত নয়, একটু জেদি এই বয়সে অনেকেই একটু জেদি হয়। একদম বিপথে যেতে পারত, অনেক খারাপ কিছুও করতে পারত, আশা করি সেইসব কিছু করে বসেনি এতদিনে। আজকাল কত ছেলে মেয়ে বাড়ি ছেড়ে প্রেমিক প্রেমিকার সাথে লিভ-ইন করছে, তোর মেয়ে সেই পথে যায়নি। হ্যাঁ মানুষ চিনতে ভুল হয়েছে সেটাই আমাদের হামেশাই হয়। ভগবান সময় থাকতেই ঝিনুককে পথ দেখিয়ে দিয়েছে, না হলে একবার ভাব, যদি বিয়ের পর এইসব কান্ড হত তখন কি করতিস?” কথাটা ভুল বলেনি আম্বালিকা, পীয়ালি বলে, “এই জেদি মেয়ে নিয়ে কত ভুগেছি জানিস। রানীগঞ্জে থাকতে এই আসানসোল, দুরগাপুর করে বেড়িয়েছে। কিছু বললেই মেয়ের মুখ ফুলে যেত, বেশি শাসন করতে আসলে দরজা বন্ধ করে না খেয়ে বসে থাকত।” চোখ মুছে আম্বালিকাকে বলে, “হ্যাঁ পারত হয়ত বিপথে যেতে, হয়ত কোন জন্মের পুন্য ফলেই ভগবান সময় থাকতে চোখ খুলে দিয়েছে।” নিজের ঘরের মধ্যে ঢুকে বিছানায় লুটিয়ে পরে ঝিনুক। ডুকরে কাঁদতে কাঁদতে গায়ে হাতে নখের আঁচর কেটে নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করে তোলে। আর বেঁচে থেকে লাভ কি, ওর ত সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। শুধু মাত্র টাকার লোভে আর ওর শরীরের লোভেই প্রেমের নাটক করে গিয়েছে এতদিন। একটানে গায়ের টপ খুলে ফেলে, পেটে বুকে নখের আঁচর কেটে নিজেকে কষ্ট দেয়। ফর্সা ত্বক লাল হয়ে যায় নখের আঁচরে। কাঁপতে কাঁপতে বিছানার এক কোনায় কুঁকড়ে বসে থাকে। শ্বাস নিতে কষ্ট হয় ওর, বাড়ির ছাদ যেন যেকোনো মুহূর্তে ওর মাথার ওপরে ভেঙ্গে পড়বে। ফ্যানের দিকে তাকায় ঝিনুক, কতটা উঁচু সেটা মাপতে চেষ্টা করে, ওর ভার নিতে পারবে নিশ্চয়। বিছানার চাদর হাতে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। তৎক্ষণাৎ ঝিলিক দৌড়ে এসে না ধরলে হয়ত ঝিনুক আত্মহত্যা করে নিত, ওর পেছন পেছন দিয়াও ঘরের মধ্যে ঢুকে ঝিনুকের এহেন অবস্থা দেখে আঁতকে ওঠে। দিদিকে ওইভাবে চাদর হাতে বিছানায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে প্রমাদ গোনে ঝিলিক। দৌড়ে এসে দিদিকে জড়িয়ে ধরে, “একি করছিস তুই?” বলেই কেঁদে ফেলে। “একটা বাজে ছেলের জন্য তুই আমাকে ছেড়ে বাবা মাকে ছেড়ে চলে যাবি?” ঝিলিককে জড়িয়ে ধরে ভেঙ্গে পরে ঝিনুক, “বোন রে খুব পাপ করেছি...” দুই বোন কে এই ভাবে কাঁদতে দেখে দিয়াও সান্ত্বনা দিয়ে বলে, “ঝিনুকদি আমরা সবাই আছি, বাবা মা আছেন সব ঠিক করে দেবেন, তুমি এমন কর না।” বোনের কোল থেকে মাথা উঠিয়ে জিজ্ঞেস করে, “বাবা কি দিলিপ আঙ্কেলকে ফোন করেছে নাকি?” মাথা দোলায় ঝিলিক, “মনে হয়, সেই নিয়েই কথা হচ্ছিল।” জোরে জোরে মাথা নাড়ায় ঝিনুক, “আমি কাউকেই বিয়ে করব না। এই জীবনের ওপর থেকে আমার বিশ্বাস উঠে গেছে রে বোন।” দিদির মাথা বুকের ওপরে চেপে ধরে সান্ত্বনা দেয়, “আমার সোনা দিদি” দিদির চোখের জল মুছিয়ে বলে, “তোকে কাউকেই বিয়ে করতে হবে না, আমি বাবা মাকে বুঝিয়ে বলে দেব। এবারে প্লিজ একটু শান্ত হ।” বসার ঘরের পরিবেশ থমথমে, কারুর মুখে কোন কথা নেই। বেশ কিছুক্ষন পরে আম্বালিকার পাশে এসে বসে নীলাদ্রি, ওর চোখে চোখ রেখে ভুরু নাচিয়ে কিছু একটা ইঙ্গিত করে। ভুরু কুঁচকে তাকায় স্বামীর দিকে, সত্যি ও যেটা ভাবছে সেটা কি নীলাদ্রি ও ভাবছে? অল্প হেসে মাথা দুলিয়ে সম্মতি দেয় নীলাদ্রি। আম্বালিকা মুচকি হেসে নীলাদ্রিকে বলে, “সেইজন্য তোমাকে এত ভালোবাসি।” এহেন পরিস্থিতিতে ওদের মুখে হাসি দেখে পীয়ালি আর সোমনাথ আশ্চর্য হয়ে যায়। আম্বালিকা পীয়ালির হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বলে, “আমার একটা প্রস্তাব আছে যদি তোরা কিছু মনে না করিস।” সোমনাথ, নীলাদ্রি আর আম্বলিকার দিকে হাজার প্রশ্ন নিয়ে তাকিয়ে থাকে। আম্বালিকা বলে, “আমার বড় ছেলে, রিশু। অনেক দিন থেকেই রিশুর জন্য মেয়ে দেখছি কিন্তু ছেলে আমার কিছুতেই বিয়ে করবে না।” পীয়ালি আশ্চর্য হয়ে যায়, “রিশু? কিন্তু ওকি এই অবস্থায় ঝিনুককে মেনে নেবে?” নীলাদ্রি সোমনাথকে বলে, “যতদূর আমি ওকে চিনি, রিশু ওর মায়ের কথা কোনদিন ফেলতে পারবে না।” কালো মেঘের কোনায় আশার আলো দেখতে পেয়ে পীয়ালির বুকে বল আসে, “জীবনে ভাবিনি যে আমার মেয়ে তোর বাড়ির বোউমা হবে। আমার জামাই যে একজন এতবড় ডাক্তার হবে সেটা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি রে।” বলেই আম্বালিকার দুই হাত জড়িয়ে কেঁদে ফেলে। এতক্ষন যে ভয়ার্ত চাপা আওয়াজে বসার ঘর গুঞ্জরিত হয়েছিল সেটা আশার আলোয় পরিনত হয়। বুক ভরে শ্বাস নিয়ে নীলাদ্রিকে জড়িয়ে ধরে সোমনাথ, “আপনাদের কি বলে যে ধন্যবাদ জানাবো ভেবে পাচ্ছি না।” নীলাদ্রি হেসে সোমনাথকে জড়িয়ে ধরে বলে, “বুকে বল আনুন, বিয়ে এখন শেষ হয়ে যায়নি, শুধু বর পালটে গেছে বাকি সব ঠিক আছে।” চোখের জল মুছে হেসে ফেলে পীয়ালি, আম্বালিকা আর নীলাদ্রির দিকে তাকিয়ে বলে, “তোদের বাড়ির বোউমা হবে সেটা আমার সৌভাগ্যরে আর ঝিনুকের ভাগ্য।” বুক ভরা শ্বাস নিয়ে পীয়ালি আর সোমানাথের দিকে তাকিয়ে আম্বালিকা বলে, “রিশু আসছে ঠিক আছে তবে তার আগে আমি রিশুর ব্যাপারে কিছু বলতে চাই। সব কিছু শুনে তবেই তোরা চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিস। তুই জানিস রিশু আমার কে।” পীয়ালি মাথা দোলায়, ও সব জানে, তাও আম্বালিকা বলে, “রিশু আমার ভাই, আমার গর্ভে ধরা সন্তান হয়ত নয় কিন্তু ও আমার বড় ছেলে। আমি আমার বুকের রক্ত মাংস দিয়ে ওকে বড় করেছি। দিপ আর দিয়া কিন্তু সে কথা জানে না, এই পৃথিবীতে হয়ত এখন খুব কম লোক আছে যারা জানে যে রিশু আসলে আমার পুত্র নয়। রিশু নিজে সেকথা জানলেও সেসব ভুলে ও কিন্তু আমাকে নিজের মা বলেই ...” শেষের কথাটা বলতে বলতে কেঁপে ওঠে মাতৃ হৃদয়। পীয়ালি ওর হাত ধরে বলে, “তুই মহামায়া, তুই যেভাবে রিশুকে মানুষ করেছিস তারপর কারুর কিছু বলার থাকে না। আমাদের সৌভাগ্য যে ঝিনুক এই জীবনে তোর আঁচলের ছায়ায় থাকতে পারবে।” বুক ভরে স্বস্তির শ্বাস নেয় আম্বালিকা, সেই সাথে মনের কোনায় এক বিশাল বড় কিন্তু দেখা দেয়। রিশুকে এখুনি সব কিছু বলে দিলে দিল্লী থেকে আসবে না। যদিও আম্বালিকা মনে প্রানে জানে যে ওর কথার অমান্য করবে না তাও একবার রিশুর মতামত জানা প্রয়োজন। যত হোক এটা ওর জীবনের খুব বড় পদক্ষেপ। তবে যতক্ষণ না রিশু ওর সামনে এসে পৌঁছায় ততক্ষন কিছু বলে বোঝানো মুশকিল। ছেলেকে অনেক বার বলেছে বিয়ে করতে, দেখতে দেখতে একত্রিশ বছর বয়স হয়ে গেল, কিন্তু সেই ছেলে কিছুতেই বিয়ে করতে নারাজ। রিশুর একটা অতীত আছে, যেটা আম্বালিকার অজানা নয়, মায়ের কাছে কোনদিন কিছু লুকায়নি রিশু। আম্বালিকা দিপকে ডেকে জিজ্ঞেস করে, “দিয়া কোথায় রে?” দিপ জানিয়ে দেয় দিয়া ঝিনুক দিদির ঘরে। দিপ দিয়াকে ডেকে নিয়ে আসার পরে আম্বালিকা দিপ আর দিয়াকে সব কিছু সবিস্তারে জানিয়ে দেয়। সেই শুনে দিপ আর দিয়ার আনন্দ আর ধরে না। এতদিন পরে ওদের দাদার বিয়ে হবে তাও আবার ঝিনুক দিদির সাথে। দুই বাড়ির মধ্যে এতদিন শুধু মাত্র বন্ধুত্তের সম্পর্ক ছিল, যেমন ওদের মায়েদের মধ্যে ছিল তেমনি দিয়ার আর ঝিলিকের মধ্যে ছিল। এরপর ঝিনুক দিদির বিয়ে যদি ওর দাদাভাইয়ের সাথে হয়ে যায় তাহলে ওদের দুই বাড়ির মধ্যে সম্পর্ক চিরকালের জন্য বাঁধা হয়ে যাবে। দিয়া একটু ভেবে বলে, “কিন্তু মাম্মা, দাদাভাইকে যদি তুমি এখুনি এইসব কথা বল তাহলে দাদাভাই কিন্তু কিছুতেই আসবে না।” আম্বালিকার আশঙ্কা অমূলক নয়, ছোট ছেলেকে অনুরোধ করে, “তাও একবার ফোন করে দেখ।” দিপ মুখ বেঁকিয়ে উত্তর দেয়, “দাদাভাইয়ের কাল ট্রমা সেন্টারে মর্নিং ডিউটি এতক্ষনে হয়ত ঘুমিয়ে পড়েছে।” আম্বালিকা তাও ছোট ছেলেকে আদর করে বলে, “একবার ট্রাই ত কর তোর দাদাকে ফোন করতে। তোর দাদা যদি না আসে তাহলে কি ভাবে এই বিয়ে হবে?” দিপ চোখ নাচিয়ে বলে, “আমাকে তাহলে দিদির মতন একটা ট্যাব কিনে দেবে?” হেসে ফেলে আম্বালিকা আর সেই সাথে ঘরের সবাই। পীয়ালি ওকে কাছে ডেকে আদর করে বলে, “তুই যা চাস সব দেব।” দিয়া মুচকি হেসে বলে, “আমার কাছে একটা উপায় আছে দাদাভাইকে কোলকাতা নিয়ে আসার।” বলেই দিপের কানে ফিসফিস করে কিছু একটা বলতেই দিপের মাথায় দুষ্টুমি বুদ্ধি খেলে যায়। রিশুকে ফোন করে আর্ত চিৎকার করে ওঠে দিপ, “দাদাভাই আমার হাত ভেঙ্গে গেছে তুমি তাড়াতাড়ি এস।” =============== পর্ব দুই সমাপ্ত ===============
16-10-2020, 12:14 PM
16-10-2020, 12:35 PM
ও দ্বিতীয় পর্ব শেষে এসে হাত ভাঙার
রহস্য উন্মোচিত হলো! তবে অনুরোধ শেষের পাতাটি যেন অনেক পরে আসে!
16-10-2020, 03:45 PM
একটু শান্তি পেলাম
ওসব ভাঙা হাত পা তো সব আবার জোড়া লেগে যাবে ! কিন্তু রিশু কি পারবে ?? পারবে কি আমার ঝিনুকের ভেঙে যাওয়া ছোট্ট কোমল হৃদয়টাকে আবার জোড়া লাগিয়ে সারিয়ে তুলতে ??????
16-10-2020, 04:04 PM
দারুন ❤️ এইবারে হাত ভাঙার ব্যাপারটা বুঝলাম.. কি দুস্টু ভাই বোন রে ❤️
এই আপডেটের কিছু অংশ আমায় আমার লেখা সেই ভালোবাসার গল্পের কিছু মুহূর্ত মনে করিয়ে দিলো আবার (যারা পড়েছে তারা বুঝবেন). পুরোনো স্মৃতিগুলো আবার ফুটে উঠলো চোখের সামনে. সত্যিই খুব ভালো এগোচ্ছে গল্পটা. পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম. লাইক রেপুটেশন দিতেই হলো... না দিয়ে থাকা যায় নাকি?
16-10-2020, 04:31 PM
(16-10-2020, 09:15 AM)pinuram Wrote: বর্তমান জেনারেশান অনেক কিছুই বোঝে না, এরা অনেক দুরন্ত খামখেয়ালী, সঠিক অর্থে এখানে ঝিনুকের চরিত্র চিত্রায়ন হয়েছে কি না সেটা আপনারা পাঠিকেরা বলতে পারবেন, যতটুকু পেরেছি চেষ্টা করেছি বর্তমান যুগের ছেলে মেয়েদের একটা ছবি তুলে ধরতে !!!!!!! এবং আপনি successfully সেটা তুলে ধরেছেন. সমাজে নারীদের প্রতি আকর্ষণ, তাদের অপমান, নোংরামি, যৌন চাহিদা, ভোগ, ব্যবহার... এসব আগেও ছিল, আজও আছে. কিছু পুরুষদের চোখে নারী মানেই ভোগের বস্তু.... আবার কিছু পুরুষের চোখে নারী মানে - মা, বোন, ভালোবাসার মানুষ. প্রেমিকার সাথে দুস্টু মিষ্টি কথা বলা আলাদা ... আর মনের অন্তরে তাকে অশ্লীল চাহুনিতে দেখে চোখ দিয়ে ;., করা আলাদা.
16-10-2020, 05:15 PM
মিষ্টি মধূর, সুন্দর মেলোড্রামাটিক পর্ব...
16-10-2020, 05:16 PM
Wow ... Sotti ei porbo ta darun ... Family r choto choto kusi , dukkho , bedona , anondo ei golo apnar golpe kub sundor vabe fute ute .. maje maje mone hoi golpo porchi na .. chokhe r samne sob kichu dekte pacchi ... R ajker update niye to kichu bolar nei .. anekta prottasito chilo i eta .. tobe seser line ta je ager porber sei gotona ta eta vabna chinta r upor chilo ... Valo thakben dada ...
16-10-2020, 10:28 PM
সঙ্ঘমিত্রার ব্যাপারটা বুঝতে পারছি। প্রথমবার হৃদয়ভঙ্গের পর ভালোবাসা থেকে বিস্বাসটাই চলে যায়, মনে হয় দুনিয়ায় বিপরীত লিঙ্গের সবাই স্বার্থলোভী। কিন্তু অবচেতন মন সবসময় আরেকটা ভালোবাসা আঁকড়ে ধরতে চায়। রিশু কি সেই জায়গা নিতে পারবে? রিশু দিল্লীতে আবার কোনো মেয়েকে নিজের মন-ধোন দিয়ে বসে নেই তো !!!!
17-10-2020, 11:44 AM
আমি কিছুই বলবো না। গল্প পড়ে যাই, দেখি কি হয়।
তোমার গল্পের এতো সাধারণ মানের ভিলেন, এতো সহজে মুক্তি, এতো সিম্পল সমাধান ....! ঠিক হজম হচ্ছে না।
17-10-2020, 09:03 PM
|
« Next Oldest | Next Newest »
|