Thread Rating:
  • 67 Vote(s) - 3.36 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
(08-10-2020, 01:49 AM)pinuram Wrote: আহা ভাইরে, একদিন সময় করে বসতে হবে তোমার সাথে, দুই আঙ্গুলের মাঝে সিগারেট আর সামনে স্কচ অন রক্স সেই সাথে আড্ডা হবে গল্প নিয়ে !!!!!!

(08-10-2020, 10:56 AM)pinuram Wrote: আয় গুরু আয় চলে আয়, দিল্লী এলে জানিও, (তোমার কাছে আমার পারসোনাল ইমেল আইডি আছে মনে হয়), স্কচ অন রক্স এক হাতে অন্য হাতে ক্লাসিক মাইল্ড, বসা যাবে এক সাথে আড্ডা মারতে !!!!!!
বোকাচোদা ! আমাকে তো কোনোদিন খাওয়ালে না ! বাইরের লোককে মাল খেতে ডাকছো?
[+] 3 users Like ddey333's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
বাগদি বাড়ির মেয়ে আর ফেরারি ভালোবাসা দুটোই এবার পুরো করবো ! পিনু এসে গেছে আর কি চাই !
[+] 5 users Like ddey333's post
Like Reply
(08-10-2020, 08:17 PM)dada_of_india Wrote: বাগদি বাড়ির মেয়ে আর ফেরারি ভালোবাসা দুটোই এবার পুরো করবো ! পিনু এসে গেছে আর কি চাই !

এই গল্পদুটো আপনার লেখা? নাম শুনেছি গল্পগুলোর কিন্তু কখনও পড়া হয়নি, এবার পড়বো তাহলে। 
Like Reply
(04-10-2020, 08:52 PM)TumiJeAmar Wrote: গল্প শুরু হতেই কত কিছু হয়ে গেল !!
অনেকদিন পরে তোমার লেখা পড়ে মন মাতাল হয়ে গেলো।

দাদা কয়লানগরীর মেয়েদের খবর কি? তুমিও শুরু করে দাও গুরু   Namaskar Blush
[+] 2 users Like Mr Fantastic's post
Like Reply
Welcome back dada.
[+] 1 user Likes Niklu Biklu's post
Like Reply
এত দিন পর এসেই ইমোশনালকরে দিচ্ছেন!!!
[+] 1 user Likes Chinmoy's post
Like Reply
(08-10-2020, 08:13 PM)dada_of_india Wrote: বোকাচোদা ! আমাকে তো কোনোদিন খাওয়ালে না ! বাইরের লোককে মাল খেতে ডাকছো?

(08-10-2020, 08:16 PM)dada_of_india Wrote: বোকাচোদা ! আমাকে তো কোনোদিন খাওয়ালে না ! বাইরের লোককে মাল খেতে ডাকছো?

(08-10-2020, 08:17 PM)dada_of_india Wrote: বাগদি বাড়ির মেয়ে আর ফেরারি ভালোবাসা দুটোই এবার পুরো করবো ! পিনু এসে গেছে আর কি চাই !

এসেই পিনুর নামে কাঁঠাল ভেঙ্গে খাওয়া, তাই না, এতদিনে নিজে কেন লেখোনি সেটা একবার বল না। দেখলুম তোমার বাগদি বাড়ি... !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(08-10-2020, 11:21 PM)Niklu Biklu Wrote: Welcome back dada.

(09-10-2020, 01:54 AM)Chinmoy Wrote: এত দিন পর এসেই ইমোশনালকরে দিচ্ছেন!!!

ইমোশান না থাকলে কি আর গল্প আসে, শুধু মাত্র ধর তক্তা মার পেরেক হয়ে গেলে একটা বড় জোড় বাক্স তৈরি করা যাবে কিন্তু তাতে বাসা বাঁধা যায় না। বাসা বাঁধতে একটা পাখির অনেক সময় আর অনেক পরিশ্রম খরচ হয়, আসুন না সবাই মিলে বাসা বাঁধি !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 7 users Like pinuram's post
Like Reply
খুব সুন্দর হয়েছে ভাই। অবশেষে নিলাদ্রি খুজে পেলো আম্বালিকা কে। আর রিশুও বড় হয়ে গেছে আর সব বুঝতেও শিখেছে। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে রিশু নিলাদ্রিকে কিভাবে মেনে নেয়। আর আম্বালিকাও রাজি হয়ে গেলো। দেখি আগে কি হয়।
[+] 1 user Likes sorbobhuk's post
Like Reply
(09-10-2020, 09:09 AM)pinuram Wrote: এসেই পিনুর নামে কাঁঠাল ভেঙ্গে খাওয়া, তাই না, এতদিনে নিজে কেন লেখোনি সেটা একবার বল না। দেখলুম তোমার বাগদি বাড়ি...  !!!!!!

সবাই তো এলাম ফিরে । কিন্তু রাজদীপ দাদা র খবর কি ।। কোথায় গেল ।।।
[+] 3 users Like dreampriya's post
Like Reply
(08-10-2020, 08:17 PM)dada_of_india Wrote: বাগদি বাড়ির মেয়ে আর ফেরারি ভালোবাসা দুটোই এবার পুরো করবো ! পিনু এসে গেছে আর কি চাই !

খুমি হলাম শুনে গল্প দুটো আবর শুরু হবে। তা কবে থেকে নতুন পর্ব দিবেন দাদা।
[+] 1 user Likes sorbobhuk's post
Like Reply
(09-10-2020, 09:14 AM)pinuram Wrote: ইমোশান না থাকলে কি আর গল্প আসে, শুধু মাত্র ধর তক্তা মার পেরেক হয়ে গেলে একটা বড় জোড় বাক্স তৈরি করা যাবে কিন্তু তাতে বাসা বাঁধা যায় না। বাসা বাঁধতে একটা পাখির অনেক সময় আর অনেক পরিশ্রম খরচ হয়, আসুন না সবাই মিলে বাসা বাঁধি !!!!!!

আমরা তো আসি বাসা বাধার জন্য আপনার সাথে।  আপনি শুধু আমাদের দিকে লক্ষ রাখবেন তাহলেই হবে
[+] 2 users Like sorbobhuk's post
Like Reply
পুরো ফিল্মী ড্রামা। দারুন সুরু করেছেন। বুরো বয়েসে নিলাদ্রির নুংকু দারাবেতো? ?
আপডেট দেওয়ার জন্নে ধন্নবাদ।?
[+] 3 users Like bluestarsiddha's post
Like Reply
(09-10-2020, 11:07 AM)dreampriya Wrote: সবাই তো এলাম ফিরে । কিন্তু রাজদীপ দাদা র খবর কি ।। কোথায় গেল ।।।

খবর নেই গো, দেখি যদি ফোনে পাওয়া যায় !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(09-10-2020, 11:25 AM)sorbobhuk Wrote: খুমি হলাম শুনে গল্প দুটো আবর শুরু হবে। তা কবে থেকে নতুন পর্ব দিবেন দাদা।

(09-10-2020, 11:28 AM)sorbobhuk Wrote: আমরা তো আসি বাসা বাধার জন্য আপনার সাথে।  আপনি শুধু আমাদের দিকে লক্ষ রাখবেন তাহলেই হবে

আহা রে, তোমাদের দিকে লক্ষ্য রাখবো না সেটা কি আর হতে পারে নাকি? নিশ্চয় রাখবো !!!!!!
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
(09-10-2020, 12:52 PM)bluestarsiddha Wrote: পুরো ফিল্মী ড্রামা। দারুন সুরু করেছেন। বুরো বয়েসে নিলাদ্রির  নুংকু দারাবেতো?  ?
আপডেট দেওয়ার জন্নে ধন্নবাদ।?

এই বয়সে যদি তোমার দাঁড়ায় তাহলে ওর কেন দাঁড়াবে না? Tongue Tongue Tongue Tongue Tongue
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 2 users Like pinuram's post
Like Reply
পর্ব এক (#5-5)

 
নীলাদ্রি জানায়, রাঁচিতে কাজের সুত্রে এসেছিল। সেদিন বিকেলে স্কুলের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময়ে রিশুকে দেখতে পেয়েই চিনতে পেরেছিল, রিশুর মুখবয়াব হুবহু আম্বালিকার মতন, সেই চোখ সেই নাক, সেই হাসি। তখন থেকেই পিছু নিয়েছিল স্কুল বাসের এবং বাড়ি খুঁজে পেয়েছিল সে ভাবে। নীলাদ্রি আরো জানায়, আম্বালিকা চলে যাওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে ওর যে কোলকাতার বাড়ি ছিল সেটা নীলাদ্রি কিনে নেয়, তার জন্য যদিও বিশাল টাকা লোন নিতে হয়েছে ওকে তবে বাড়িটা হাতছাড়া করতে চায়নি নীলাদ্রি। আম্বালিকা এই সবের কি জবাব দেবে ভেবে পায় না।
 
রিশুও বড় হয়েছে, মায়ের দুঃখ কষ্ট অনেক কিছুই বোঝে। মনের মধ্যে অনেক বড় কিন্তু সেই সাথে নীলাদ্রির ওপরে একটু হিংসে তবে মেনে নিয়েছিল আম্বালিকা আর নীলাদ্রির বিবাহ। শুরুতে আঙ্কেল বলে নীলাদ্রিকে সম্বোধন করত, ধিরে ধিরে সেটা “পাপা” তে পরিনত হয়। নীলাদ্রি কোনদিন নিজের গন্ডি উলঙ্ঘন করেনি, রিশুর ব্যাপারে কোনদিন আম্বালিকাকে কিছু বলেনি। ও ভালো ভাবে জানত যে আম্বালিকার রিশু অন্ত প্রান, সবেধন নীলমণি যখের ধন ঐ ছেলে। রাঁচি ছেড়ে আবার কোলকাতা ফিরে আসে আম্বালিকা, আবার সেই পুরানো বাড়ি, সেই পুরানো বাগান যেখানে ছোট্ট রিশু খেলা করত। যেমন রেখে গিয়েছিল ঠিক তেমন ভাবেই নীলাদ্রি রেখে দিয়েছিল বাড়িটাকে। আম্বালিকা বাড়ির লোন শোধ করে দেয়। বাড়ির নিচের তলায় একটা প্লে স্কুল খোলা হয়, কয়েক মাসের মধ্যেই বেশ নামডাক হয়ে যায় সেই স্কুলের। বিয়ের দু বছরের মাথায়, ঘর আলো করে একটা কন্যের জন্ম দেয় আম্বালিকা। রিশু তার বোনের নাম রাখে দ্বীপানিতা, আদরের নাম রাখা হয় দিয়া।
 
দেখতে দেখতে রিশুর স্কুল শেষ হয়ে যায়। আম্বালিকার কড়া তত্ত্বাবধানে আর অগাধ মাতৃ স্নেহের ফলে মেডিকেল এনট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় রিশু। কোলকাতার মেডিকেল কলেজেও পেয়েছিল রিশু সেই সাথে দিল্লীর এইএমএস এও চান্স পেয়েছিল। সারা ভারতে দিল্লীর এইএমএস খুব নামকরা মেডিকেল কলেজ। আম্বালিকা জানিয়ে দেয় যে দিল্লীতেই ওকে যেতে হবে, ভারতের নাম করা মেডিকেল কলেজ সেই চান্স কিছুতেই ছাড়া যায় না।
 
যেদিন রিশুর মেডিকেল এন্ট্রান্সের রেজাল্ট বের হয় সেদিন বাড়িতে সবাই খুব খুশি। বেশ রাত পর্যন্ত সেদিন জেগেছিল রিশু, নিজের ঘরে বসে বন্ধুদের সাথে মোবাইলে গল্প করছিল। রাত অনেক, এমন সময়ে মাকে ঠাকুর ঘরের দিকে যেতে দেখতেই কেমন যেন মনে হয়। এত রাতে কি হল মায়ের? চুপ চাপ নিজের ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে এসে দেখে ওর মা, ঠাকুর ঘরে বসে হাতে কিছু একটা নিয়ে হাপুস নয়নে কাঁদছে। রিশু মাকে এই ভাবে কোনদিন কাঁদতে দেখেনি তাই ভীষণ ভাবে আশ্চর্য হয়ে যায়।
 
আম্বালিকা তাঁর বাবার ফটো, সুমিতার ফটো আর নিজের মায়ের ফটো বের করে কাঁদতে কদাতে বলে, “আমি আমার কথার খেলাপ করিনি, আমি ছেলেকে ডাক্তার করতে পেরেছি।”

মায়ের চোখের জলের অর্থ রিশুর বোধগম্য হয়না। মায়ের পাশে বসে মাকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করে, “কাঁদছ কেন মাম্মা, আমি তোমায় ছেড়ে কোথাও যাবো না।” তারপর চোখ যায় মেঝেতে রাখা তিনটে ফটোর দিকে।

আম্বালিকা চোখের অশ্রুভরা নয়নে রিশুকে জড়িয়ে ধরে বলে, “আরেক বার আমাকে মা বলে ডাক।”

“মাম্মা এইত আমি” বলে রিশুও কাঁদতে শুরু করে দেয়, মায়ের অব্যাক্ত বেদনার কারণ কিছুতেই বুঝতে পারে না।
ফটো গুলো রিশুকে দেখিয়ে আম্বালিকা ধরা গলায় বলে, “আমি তোর মা নয় রে” সেই বাক্যটা বলতে বলতে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে ওর, সুমিতার ফটো দেখিয়ে ওকে বলে, “এটা তোর আসল মা।” বাবার ফটো দেখিয়ে বলে, “এটা তোর বাবা” তারপর নিজেকে দেখিয়ে বলে, “আমি তোর দিদি রে রিশু।” কথাটা শেষ করে রিশু কে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে হাউহাউ করে কেঁদে ফেলে আম্বালিকা।
 
রিশু কিছুক্ষন থম মেরে বসে থাকে, বোঝার চেষ্টা করে যে দেবী প্রতিমাকে এতদিন মায়ের স্থানে দেখেছে আসলে সে তার দিদি কি করে? ধিরে ধিরে চোখের সামনে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যায়, যাকে জড়িয়ে ধরে ওর দিন আর রাত কেটেছে সেদিন সেই দেবী প্রতিমা যে নিজের মা নয় সেটা মানতে নারাজ ওর হৃদয়।
 
ফটো গুলোর দিকে দেখে মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে রিশু বলে, “সত্যি মিথ্যে জানি না মাম্মা, যখন থেকে আমার জ্ঞান হয়েছে তখন থেকে তোমার আঁচলের ছায়ায় বড় হয়েছি মাম্মা। শাসন করতে তুমি আবার আদর করতে তুমি, অন্য কেউ আমার পাশে ছিল না। যখন রাতে আমার ঘুম হত না তখন তোমার মুখে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়েছি, পড়ে গিয়ে যখন আমার ব্যাথা লাগত তখন তোমার একটা ফুঁতেই সেই ব্যাথা ঠিক হয়ে যেত। আমি জানতে চাই না আমার বাবা কে আমার আসল মা কে। মাম্মা আমি শুধু তোমার ছেলে হয়েই থাকতে চাই।”

ছেলেকে বুকে মাঝে জড়িয়ে ধরে আম্বালিকা, “হ্যাঁ রে বাবা, তুই আমার বুকের পাঁজর আমার রক্ত আমার সন্তান।”
 
ঠিক হয় এইএমএস ভর্তি করানোর জন্য সবাই দিল্লী যাবে। ছেলে চলে যাবে বলে মায়ের মন খুব খারাপ। রিশুর ইচ্ছে ছিল মায়ের কাছে থাকার, মায়ের আঁচল  ছাড়ার কথা চিন্তা করতেই কেঁদে ফেলে রিশু। ছোট্ট দিয়া বেশ আনন্দে আছে, দিল্লী ঘুরতে যাবে, সকাল থেকে সারা বাড়িময় মাতিয়ে বেড়িয়েছে দাদাভাইয়ে সাথে মায়ের সাথে বাবার সাথে দিল্লী বেড়াতে যাবে।
 
বুকের ওপরে পাথর রেখে সুটকেস গুছাতে গুছাতে ঘন ঘন চোখ মোছে আম্বালিকা, “এরপর হোস্টেলে থাকবি, নিজের দিকে একটু দেখিস। উল্টোপাল্টা কেউ কিছু দিলে খাবি না, কোন বদ ছেলের সাথে একদম মেলামেশা করবি না।”

মায়ের আঁচল ধরে ঘ্যান ঘ্যান করতে করতে বলে, “আমি দিল্লী যাবো না, আমি কোলকাতায় থাকব।”

চোখ মুছে ছেলেকে বুঝায় আম্বালিকা, “কয়েক বছর মাত্র, দেখিস দেখতে দেখতে কেটে যাবে। শুধু ত পড়তে যাচ্ছিস বাবা।”

রিশুর অবুঝ মন কি আর সে কথা বোঝে, “কোলকাতার মেডিকেল কলেজ থেকেও ডাক্তারি পড়া যায়।”

আম্বালিকা বুঝিয়ে বলে, “দিল্লীর এইএমএস বিশ্ব বিখ্যাত মেডিকেল কলেজ, সেখান থেকে ডাক্তারি পড়ে পাশ করার অর্থ আলাদা। এমবিবিএস পড়ার পরে এইখানে চলে আসিস, এখানে এমডি অথবা এমএস করিস।” ছেলেকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে বলে, “বাবারে সব পাখিরা এক সময়ে উড়তে শেখে, কতদিন মায়ের আঁচল ধরে থাকবি বল?” একটু হেসে বলে, “বড় হয়েছিস, এরপর লোকেরা বলবে মায়ের নেওটা ছেলে।”

রিশু অভিমান করে বলে, “আমি পাখী নয় মাম্মা যে আমাকে ঘর ছেড়ে যেতে হবে।”

মাথায় গালে হাত বুলিয়ে বুঝিয়ে বলে, “আচ্ছা বাবা পাখী নয়, ঘাট হয়েছে, কয়েকটা বছর ব্যাস তারপর ফিরে আসবি চিন্তা কিসের।”

নীলাদ্রি পেছন থেকে মা আর ছেলের কান্নাকাটি দেখছিল, “দিল্লী বেশি দূরে নয়, দিনে পাঁচ ছয় খানা ফ্লাইট, মোটে দুই ঘন্টার রাস্তা। যেকোনো সময়ে চলে যাওয়া যায়। আমার অনেক জানাশোনা আছে সি আর পার্কে, নয়ডাতে, মহাভির এঙ্কলেভে। দরকার পরলে ওখানে একটা ফ্লাট ভাড়া নেওয়া যাবে।”
 
সবাই মিলেই দিল্লী যায় রিশুকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করতে। ফিরে আসার দিনে বুকের একাংশ কেটে দূর দেশে রেখে আসে আম্বালিকা। ফেরার পথে কোলের মধ্যে আঁকড়ে ধরে থাকে দিয়াকে। ফ্লাইটে উঠে বারেবারে নীলাদ্রিকে জিজ্ঞেস করে, একা ছেলেটা ঠিক করে থাকবে ত? ছেলের একটু সর্দির ধাত, আবহাওয়া একটু বদল হলেই সর্দি লাগে। বাড়ি থাকলে না হয় এই গারগেল কর, এই ওষুধ খা, এই সব বলতে পারত, ওই দূর দেশে ওকে কে গরম জল করে দেবে গারগেলের জন্য, কে ওষুধ খেতে মনে করাবে? ঠিক বিয়ের পর আর দিয়া হওয়ার আগে ওরা দারজিলিং বেড়াতে গিয়েছিল, সেখানে গিয়ে সারাক্ষন নাক থেকে জল পরছিল রিশুর, সেই নিয়ে খুব চিন্তায় ছিল আম্বালিকা। পড়াশুনা করার জন্য রাত জাগে ছেলেটা, রাতে খিধে পেলে কে খেতে দেবে? বাড়িতে না হয় ওর জন্য স্যান্ডউইচ বানিয়ে রেখে দিত, ফ্রিজে কেক, ম্যাগি, ডিম সেদ্ধ ইত্যাদি বানিয়ে রেখে দিত, হস্টেলে যদি খিধে পায় তাহলে কি করবে?
 
সেই বছর আম্বালিকার কোল ভরে দ্বৈপায়নের জন্ম হয়, আদর করে নাম রাখা হয় দীপ। প্রত্যকে মাসে রিশুর বাড়ি আসা চাই, শুক্রবার ক্লাস শেষ করেই রাতের ফ্লাইটে বাড়ি ফেরে আর সোমবারের ভোরের ফ্লাইট ধরে ফিরে যায় দিল্লী। পড়াশুনায় বেশ ভালো, অচিরে এম বি বি এস পাশ করার এক বছর পরেই এইএমএস এই এম এস এর পরীক্ষায় পাশ করে। রিশু অরথপেডিক সারজেন হয়, দিয়া বুক ফুলিয়ে সবাইকে বলে বেড়ায় ওর দাদাভাই দিল্লীর নামকরা মেডিকেল কলেজের অরথপেডিক সারজেন। তবে রিশুর একটাই দুঃখ সেই সাথে আম্বালিকার একটাই দুঃখ, কোলকাতায় আর ফিরতে পারল না রিশু। এই এম এস এই রেসিডেন্ট ডাক্তারি পায় রিশু। দিল্লীতে অনেক জানাশোনা ছিল নীলাদ্রির তাই সি আর পার্কে একটা দুই কামরার ফ্লাট ভাড়া পেতে কোন অসুবিধে হয়নি। রেসিডেন্ট ডাক্তার হওয়ার পর বাড়ি আসা কমে যায় রিশুর, খুব কম ছুটি পায় আজকাল। তবে ছুটি পেলেই আম্বালিকা ছেলে মেয়ে নিয়ে চলে যায় দিল্লী।
 
দিয়া বড় হয়েছে, অতীব আধুনিকা মেয়ে তবে পড়াশুনায় ভালো। ক্লাস ইলেভেনে সায়েন্স নিয়ে পড়ছে, আম্বালিকার ইচ্ছে ওর মেয়েও ডাক্তারি পড়বে তবে রিশুর ইচ্ছে দিয়া যা পড়তে চায় যা করতে চায় সেটাই করবে। ভাই বোন মাকে যমের মতন ভয় পেলেও ওরা জানে দাদাভাই ওদের ঢাল, তাই সব আদর আবদার রিশুর কাছেই। রিশুও যা মাইনে পায় তার বেশির ভাগ দিয়ার আবদার মেটাতেই খরচ হয়ে যায়, তার জন্যে যদিও খুব বকা খায় মায়ের কাছে তাও মাকে লুকিয়ে দিয়ার আর দীপের সব আবদার মেটায় রিশু। দিয়ার কখন নতুন মোবাইল চাই, কখন ট্যাব চাই, কখন নতুন জিন্স অথবা থাই হাই জুতো। নতুন কোন খেলনা দেখলেই দীপ রিশুর কাছে আদবার করে আর সেটা চলে আসে। দিপের যখন জন্ম হয় তখন রিশু চলে যায় দিল্লীতে পড়াশুনা করতে তাই দিপের প্রতি রিশুর আদর সব থেকে বেশি আর মায়ের কথায় সেই আদরে দিপ বাঁদর হয়ে গেছে। রিশু বাড়িতে এলেই কেউ দিয়া আর দীপকে বকতে পারে না, কারুর সাধ্য নেই ভাই বোন কে আলাদা করার। ঘুমানোর সময়েও দীপ ওর পেটের ওপরে ঘুমাত আর দিয়া ওর হাতের ওপরে।
 
দিনের মধ্যে বহুবার বাড়িতে ফোন করে রিশু। ট্রমা সেন্টারে ডিউটি ছিল রিশুর, সকাল থেকে একটার পর একটা এক্সিডেন্টের কেস দেখতে দেখতে হয়রান হয়ে গিয়েছিল। বাড়ি ফিরেই মায়ের সাথে কথা হয়েছিল, সারাদিনের বিবরণ কি কি অপারেশান করেছে, কি খেয়েছে, সব কিছু না জানালে ছেলের পেটের ভাত হজম হয় না আর ওদিকে মায়ের ঘুম হয়না। শীত কাল, দিল্লীতে অনেক ঠান্ডা পড়ে। রাত প্রায় সাড়ে ন’টা, পরের দিন ভোর বেলায় ট্রমা সেন্টারে ডিউটি, খাওয়া শেষে বসে বসে একটু টিভি দেখছিল ডক্টর অম্বরীশ সান্যাল।
 
ঠিক তখন ফোন বেজে ওঠে, অন্যপাশে দীপের কান্না ভেজা আর্ত চিৎকার শুনে বুকের রক্ত হীম হয়ে যায় ওর। “দাদাভাই আমার হাত ভেঙ্গে গেছে তাড়াতাড়ি এস।”




===================== প্রথম পর্বের সমাপ্তি =====================
[Image: 20210115-150253.jpg]
[+] 9 users Like pinuram's post
Like Reply
(09-10-2020, 12:59 PM)pinuram Wrote: এই বয়সে যদি তোমার দাঁড়ায় তাহলে ওর কেন দাঁড়াবে না? Tongue Tongue Tongue Tongue Tongue

দাঁড়াবে বৈকি , একদম টানটান হয়ে দাঁড়াবে !!

happy
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply
খুব তাড়া রয়েছে নাকি? এত স্পিডে চালাচ্ছ? পাঁচটা পর্ব, তার মধ্যেই রিশুকে একেবারে ডাক্তার বানিয়ে দিলে... ঠিক বুঝতে পারছি না তোমার ব্যাপারটা... এটা কি মুখবন্ধই চলছে? প্রথমে তো মনে হয়েছিল গল্পের নায়ক নায়িকা, আম্বা আর নীল, কিন্তু যে গতিতে গল্পটাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছ, আর আম্বার বয়স বাড়িয়ে দিলে, ইতিমধ্যেই আরো দুই ছেলে মেয়ের মা সে, তাতে তো মনে হচ্ছে এরা দুজনেই পার্শচরিত্র, আসল নায়ক অম্বরিশ... মানে নায়িকার আগমন এখনও ঘটেনি... তাই কি?

আগেই অবস্য বলেছিলাম, তোমার গল্পের তল পাওয়া এত সহজ নয়... হমমমম... দেখা যাক... আছি তো বটেই...

yourock
[+] 2 users Like bourses's post
Like Reply
তুমি বেশ গন্ডগোলের লোক আছো। ভাবলাম গল্পটা আমার প্রিয় জায়গা রাঁচিতে থাকবে। তা না সেই নিয়ে গেলে দিল্লিতে। এবার আবার কোনোভাবে সেই হিমালয়ের কোলে চলে যাবে।

খুব তাড়াতাড়ি ঘটনা গুলো ঘটে চলেছে। তাই মনে হচ্ছে আসল গল্প এখনও শুরুই হয়নি।
[+] 3 users Like TumiJeAmar's post
Like Reply




Users browsing this thread: 8 Guest(s)