07-10-2020, 09:05 AM
Indian Private Cams | Porn Videos: Recently Featured XXXX | Most Popular Videos | Latest Videos | Indian porn sites Sex Stories: english sex stories | tamil sex stories | malayalam sex stories | telugu sex stories | hindi sex stories | punjabi sex stories | bengali sex stories
Romance শেষের পাতায় শুরু (Completed)
|
07-10-2020, 10:09 AM
07-10-2020, 03:20 PM
পিনুদা কোথায় তুমি
দেখা পাবো বলে বারবার ঢুঁ মেরে যাচ্ছি
07-10-2020, 03:40 PM
07-10-2020, 10:31 PM
আমার মনেহয় অম্বা ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে! একটি নিষ্পাপ শিশুকে বাঁচাতে এছাড়া আর ভালো কোনো পথও ছিল না! নিলাদ্রীর ভালোবাসার শক্তি যদি সত্য হয় তবে অম্বা আর নিলাদ্রীর মিলন হবেই হবে! আমাদের শুধু পিনুদাদুর উপর বিশ্বাস রাখতে হবে এইটুকুই!
08-10-2020, 12:44 AM
পরী দিদি নিশ্চয়ই আবার বকাবকি শুরু করেছে, টাই পিনুদা আসতে পারছে না
08-10-2020, 12:51 AM
(06-10-2020, 03:30 PM)Baban Wrote: আবারো একটা দারুন আপডেট. মানুষের ভেতরের আসল রূপটা ঠিক কেমন হয় সেটাই ফুটে উঠেছে এই পর্বে. অম্বালিকা আজ মা হিসেবে নিজেকে যেভাবে পাল্টে ফেলেছে সেটা অসাধারণ. তার জগতে তার নিজের আগেও ওই ছোট্ট নিষ্পাপ শিশুটাকে স্থান দিয়েছে সে. কিন্তু অতিরিক্ত আকর্ষণ ও অতিরিক্ত চিন্তা কোথাও একটু হলেও মনে ভুল ভাবনা নিয়ে আসে. যে প্রাণের নীলাদ্রিকে মেয়েটা এত ভালোবাসতো.... আজ তাকে নিয়েই ভুলভাল চিন্তা মাথায় আসছে. থিঙ্ক থিঙ্ক ভাবো ভাবো এরপরে কি হবে সেটাই ত মজা রে ভাই ... ভালো লাগছে এবারে সেই সাথে গতকাল আম্বালিকাও আমার কানে কানে এসে বলে গেল "ওদের ভাবতে দাও, একটু মজা দেখো" তবে সেই সাথে নীলাদ্রি কেঁদে আমাকে বলল, "তুমি শালা এইভাবে মজা দেখলে আমি কিন্তু কেলাবো" তাই ওদের কথা শুনেই আমার ভালো লাগলো যে তোমরা গল্পের গভীরে ঢুকে গেছ !!!!!!!
08-10-2020, 12:54 AM
(06-10-2020, 04:47 PM)SUMON shill Wrote: করনার ঘা কিছুটা শুকাতে না শুকাতে নতুন করে আবার সেই কষ্টের প্রতিছবি চোখের সামনে তুলে ধরলা মনটা বেদনায় মলিন হয়ে গেল বাঙালি মানুষ, বুঝতেই পারছ তাই শুক্ত দিয়েই শুরু করেছি ভুরি ভোজ, সাথে থেকো যেওনা কোথাও পাতে এখন অনেক কিছু বাকি !!!!!!!
08-10-2020, 12:56 AM
(06-10-2020, 06:19 PM)TumiJeAmar Wrote: সত্যি তুমি বেশ অদ্ভুত অদ্ভুত সিচুয়েশন তৈরি করতে পারো। কি করে কল্পনায় আসে তোমার মনে!! বেশ ভালো লাগছে। তোমার এর ইংরাজী ভার্সান টা পড়িনি। তাই তুলনা করতে পারছি না। সত্যি বলছি দাদা, আমি কোন গল্পের সিচুয়েসান তৈরি করিনা, চরিত্র গুলো চোখের সামনে এসে সিচুয়েশান তৈরি করে দেয় আর আমি সেই দেখে লিখি ব্যাস এইটুকু !!!!!!!
08-10-2020, 12:59 AM
(08-10-2020, 12:51 AM)pinuram Wrote:
আমরা লেখকরাও কত শয়তান বলুন.... নিজেরাই এক একটা চরিত্র সৃষ্টি করছি, আবার বেচারাদের নানারকম বিপদ ও পরীক্ষার মধ্যেও ফেলছি.... সত্যিই আমরা লেখকরা বড়ো পাজি.
08-10-2020, 12:59 AM
(06-10-2020, 09:46 PM)Mr Fantastic Wrote: এইরে ! এরকম একটা কিছু আশঙ্কা করেছিলাম। তবে নীলাদ্রির কিছু দোষও ছিল। ওই পরিস্থিতিতে ওর উচিত ছিল অম্বালিকার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা, ওর পাশে দাঁড়ানো। আমি হলে তো তাই করতাম, আমার প্রেমিকার পরিবার কোনো বিপদে পড়লে আমি সবসময় নিজের সাধ্য মতো পাশে থাকি। অম্বালিকারও ঠিক হয়নি এতটা রূঢ় হওয়ার। অন্তত নীলাদ্রি কি বলতে চাইছিলো সেটা না শুনেই চলে গেল। সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিস্বাসটা বড়ো কথা, অম্বা আর নীলাদ্রি প্রেমিক-প্রেমিকা হলেও ওদের মধ্যে সেই লেভেলের বোঝাপড়া বা পারস্পরিক বিশ্বাস ছিল না। মানছি অম্বালিকা এখন জটিল পরিস্থিতি আর টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাও.... ওহ গুরু এই'ত শুরু, এবারে মনে হচ্ছে বন্ধুরা কাটা ছেঁড়া করতে নেমে গেছে কোমরে গামছা বেঁধে, খুব খুশি হয়েছি ভাই, বেশ কয়েকজনার উত্তর পড়লাম, যেভাবে তোমরা এই গল্পের মধ্যে ঢুকে গেছ সেটা দেখে সত্যি খব খুশি আমি !!!!!!!
08-10-2020, 01:01 AM
(08-10-2020, 12:44 AM)Mr Fantastic Wrote: পরী দিদি নিশ্চয়ই আবার বকাবকি শুরু করেছে, টাই পিনুদা আসতে পারছে না পারলে "Dawn At Midnight" এর একদম লাস্টটা পড়বে, যেখানে শুধু ডায়লগ লেখা, সেটাই আমার অবস্থা ভাই, বকাবকি চলতেই থাকে!!!!!! (এরপর এইভাবে হাটে হাড়ি ভাংলে কিন্তু আমি তোমার কান মুলে দেব)
08-10-2020, 01:04 AM
(06-10-2020, 11:58 PM)Mr Fantastic Wrote: হ্যাঁ এটা আমারও প্রশ্ন। পিনুদা আসল জগতে লেখালেখি করলে চারদিকে নামডাক পড়ে যেত !! তোমরা সাথে আছো ত, আর আমি তোমাদের পিনুরাম, সেটাই আমার পক্ষে যথেষ্ট। ভালোবাসো বলেই ত সেই টানে ফিরে আসতে হল !!!!!!
08-10-2020, 01:05 AM
(07-10-2020, 03:40 AM)Debartha Wrote: Dekhben panu panu jano na hoye jay!!! এই যে, যখন অসীম তৃষ্ণা পড়েছিলে তখন কি মনে নেই যে এই পিনু সেই পানু লিখেছিল
08-10-2020, 01:09 AM
(07-10-2020, 01:48 PM)Chinmoy Wrote: অনেক কষ্টের পরে খুজে পেলাম... আর হারাতে দেব না। সেই টানেই ত ফিরে আসা, তোমার কথা শুনে একটা গানের কলি মনে পরে গেল যদি কাগজে লেখ নাম সে নাম ছিঁড়ে যাবে, পাথরে লেখ নাম সে নাম মুছে যাবে, হৃদয়ে লেখ নাম সে নাম রয়ে যাবে...
08-10-2020, 01:10 AM
(07-10-2020, 03:20 PM)Mr Fantastic Wrote: পিনুদা কোথায় তুমি (07-10-2020, 03:40 PM)ddey333 Wrote: আমিও সক্কাল থেকে বার বার আসছি আর যাচ্ছি !!!!!!! (07-10-2020, 07:20 PM)sorbobhuk Wrote: ভাই অপেক্ষায় রইলাম হাম কাহি নেহি গিয়া, হাম সব বন্ধু কা দিল মে হ্যায় !!!!!!!
08-10-2020, 01:12 AM
(07-10-2020, 10:31 PM)ব্যাঙের ছাতা Wrote: আমার মনেহয় অম্বা ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে! একটি নিষ্পাপ শিশুকে বাঁচাতে এছাড়া আর ভালো কোনো পথও ছিল না! নিলাদ্রীর ভালোবাসার শক্তি যদি সত্য হয় তবে অম্বা আর নিলাদ্রীর মিলন হবেই হবে! আমাদের শুধু পিনুদাদুর উপর বিশ্বাস রাখতে হবে এইটুকুই! মনে হওয়াটাই বড় কথা, সেটাই আমার সব থেকে বড় প্রাপ্য আমার পুরস্কার !!!!!!!
08-10-2020, 01:18 AM
(08-10-2020, 12:59 AM)Baban Wrote: সত্যি কথা বড় পাজি এই হৃদয় কাকে কি বুঝাবে, অবুঝ মনের পাতা খুলে বসে আমরা সবাই একের পর এক আঁকিবুঁকি কেটে মনের মতন গল্প খুঁজতে বের হয়ে যাই, জীবন কি আর অঙ্ক নাকি যে দুয়ে দুয়ে চার হবে? সেই আঁকিবুঁকির মাঝে মাঝে কখন যোগ করতে গিয়ে বিয়োগ করে বসি !!!!!!!!
08-10-2020, 01:23 AM
পর্ব এক (#4-4)
পরীক্ষা শেষে একদিন এডভোকেট প্রমথেশ বাবুকে ফোন করে বলে যে ও রিশুর আইনত অবিভাবক হতে চায় সেই সাথে এও জানায় যে এই বাড়ি বিক্রি করে রিশুকে নিয়ে কোলকাতা ছেড়ে চলে যেতে চায়। কোথায় যাবে কার কাছে যাবে কিছুই জানে না, ওর মামা বাড়ি জলপাইগুড়ি কিন্তু মা মারা যাওয়ার পর থেকে সেই আত্মীয়তা ভেঙ্গে গেছে। বাবা গত হয়ার প্রায় এক বছর হতে চলল, দেখতে দেখতে রিশুর জন্মদিন এগিয়ে এসেছে। বিকেলের ফ্লাইট, মোটামুটি সব ঠিক করা হয়ে গেছে। প্রমথেশ বাবুর কাছে বাড়ির চাবি দিয়ে দিয়েছে, বলে দিয়েছে বাড়ি বিক্রি করে দিতে। এই বাড়িতে আম্বালিকার জন্ম রিশুর জন্ম, সেই জন্মস্থান ছেড়ে চলে যেতে বুক ভেঙ্গে যায় ওর, কিন্তু রিশুর মুখ চেয়েই আর নীলাদ্রির কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার জন্য ওকে কোলকাতা ছাড়তে হয়। প্রমথেশ বাবুর এক বন্ধু, রজনীশ রাঁচিতে থাকেন, সেখানেই সব কিছু ঠিক করে দেন তিনি। একমাত্র প্রমথেশ বাবু ছাড়া আর কেউ জানে না আম্বালিকা কোথায় যাচ্ছে। রিশুকে কোলে নিয়ে সেই বিকেলে কোলকাতা ছাড়ে আম্বালিকা। ছোট্ট রিশুর অনেক প্রশ্ন, কোথায় যাচ্ছে? হাসি মুখে উত্তর দেয় আম্বালিকা, বেড়াতে যাচ্ছে অনেক দূরে। প্লেনটা কোলকাতার মাটি ছাড়তেই ছলছল চোখে প্লেনের জানালার বাইরে তাকিয়ে বিদায় জানায়, হয়ত এই জীবনে আর কোনদিন ফিরে আসবে না এই শহরে। আসার আগে বাগানের এক মুঠো মাটি একটা প্যাকেটে করে নিয়ে এসেছিল, শহর ছাড়লেও ওর বুকের মাঝে এই শহর আঁকা। এই গঙ্গার পাড়ে বসে কত বিকেলে নীলাদ্রির সাথে গল্প করেছে, পীয়ালির সাথে অনান্য বন্ধু বান্ধবীর সাথে কফি হাউসে বসে কত আড্ডা মেরেছে, লাইঠ হাউস গ্লোবে কত সিনেমা দেখছে, কত বিকেল কেটে গেছে এই ময়দানে নীলাদ্রির হাতে হাত রেখে বসে থাকা। রিশু জুলু জুলু চোখে মাম্মার দিকে তাকিয়ে থাকে আর জানালার বাইরের আলো গুলো ছোট হতে হতে মিলিয়ে যেতে দেখে। কোলকাতা থেকে রাঁচি প্লেনে বেশি সময়ের পথ নয়। রজনীশ বাবু যদিও বলেছিলেন যে তাঁর বাড়িতে উঠতে কিন্তু স্বভিমানী আম্বালিকা আগে থেকেই এক সপ্তাহের জন্য একটা হোটেল ভাড়া করে রেখেছিল। পরের দিন সকালে রজনীশ বাবু আসেন হোটেলে ওদের সাথে দেখা করতে, ওর ব্যাপারে আগে থেকেই প্রমথেশ বাবু জানিয়ে রেখেছিলেন। রজনীশ বাবু ওকে বেশ কয়েকটা কলেজের নাম আর কার সাথে দেখা করতে হবে সেই সব জানিয়ে দেয়। নতুন শহর, সব কিছুই অজানা সবাই অচেনা, একা এক তন্বী তরুনির কোলে বাচ্চা ছেলে দেখে বহু মানুষের মনে বহু প্রশ্ন। মানুষের মনে ভালো চিন্তা কখনি আসে না, আসে খারাপ চিন্তা ধারা, সেই সব কথায় কান দেয় না আম্বালিকা। রিশুকে কোলে নিয়েই সেই কলেজে গুলোতে টিচারের এল্পলিকেশান দিয়ে এসেছিল, বাড়ি খুঁজতে বেরিয়েও সমস্যা, একা কোন মেয়েকে কেউই ভাড়া দিতে চায় না। কাউকে জবাবদিহি দিতে নারাজ আম্বালিকা, কারুর সামনে ঝুঁকতে নারাজ। অনেক খোঁজা খুঁজির পরে একটা ছোট ফ্লাট পায়। যেহেতু সেই বাড়ির মালিক বিদেশে থাকে তাই বেশি প্রশ্নের সম্মুখীন করতে হয়নি, তাও আশেপাশের লোকের কানাঘুষো ওর কানে আসে। সেসবে কান না দেয় না আম্বালিকা। পড়াশুনায় সর্বদা ওর ভালো মার্ক্স ছিল, কেমিস্ট্রিতে মাস্টার্স তাই কলেজের চাকরি পেতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি। শুরু হয় এক নতুন জীবন এক নতুন শহরে, মা আর ছেলের ছোট সংসার। কোলকাতার বাড়ি বিক্রি হয়ে যাওয়ার পরে রাঁচিতেই একটা ছোট ফ্লাট কেনে আম্বালিকা। রিশুকে নিজের কলেজেই ভর্তি করিয়েছিল আম্বালিকা, ক্ষনিকের জন্যেও চোখের আড়াল করতে নারাজ একমাত্র ছেলেকে। বড় হতে হতে রিশুর মনে অনেক প্রশ্ন জাগে, ওর বাবা কোথায়, ওদের বাড়ি কোথায়? সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর না দিলেও সম্পূর্ণ মিথ্যে বলেনি আম্বালিকা, রিশু জানে ওর বাবা অনেকদিন আগে গাড়ির এক্সিডেন্টে মারা গেছে, ওদের বাড়ি ছিল কোলকাতায়, ওর বাবা মারা যাওয়ার পরে শহর ছেড়ে দেয় ওর মাম্মা আর এই শহরে এসে বসবাস করা শুরু করে। দেখতে দেখতে দশ বছর কেটে যায়, রিশু ক্লাস সেভেনে পড়ে, সেদিন রিশুর জন্মদিন। নিজের জন্মদিন ভুলে গেলেও ছেলের জন্মদিন কোন বার ভোলে না। আম্বালিকাও অনেক বদলে গেছে, যে তন্বী তরুণী কোলকাতা ছেড়েছিল সেই মেয়েটা আর নেই। রাঁচির এক নামকরা ইংরেজি মিডিয়াম কলেজের শিক্ষিকা, চোখে চশমা, খানিক ভারিক্কি হয়ে গেছে ততদিনে, কিন্তু মুখের হাসিটা এখন বদলায়নি আর বদলায়নি রিশুর প্রতি ভালোবাসা। একমাত্র ছেলের পড়াশুনার প্রতি একটু বেশি কড়া। ওর বাবার ইচ্ছে ছিল মেয়ে ডাক্তার হবে সেটা নিজের অভিমানের জন্য হতে পারেনি কিন্তু রিশুকে ডাক্তারি পড়াতে চায়। প্রতিবারের মতন সেদিনও কলেজ থেকে ছুটি নিয়েছিল আম্বালিকা, ছেলে অরেঞ্জ কেক খেতে ভালোবাসে তাই সকাল থেকেই লেগে পড়েছিল অরেঞ্জ কেক বানাতে। কলেজের পরে ঝোড়ো কাকের মতন কাঁধে ব্যাগ আর হাতে জুতো নিয়ে রিশুর আগমন। সেটা দেখেই আম্বালিকা ভীষণ রেগে যায়, নিশ্চয় কারুর সাথে ঝগড়া মারামারি করে এসেছে। এই কয়েক মাস আগেই একজোড়া নতুন জুতো কিনে দিয়েছিল। ছেলের দিকে রোষকষিত চোখে ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “কি রে কার সাথে আবার মারপিট করেছিস? তোর জ্বালায় যদি একটু শান্তিতে থাকা যায়।” যদিও রিশু একটু শান্ত প্রকৃতির অহেতুক কারুর সাথে ঝগড়া মারামারি করে না, তাও বাচ্চাদের মধ্যে কখন কি নিয়ে মারামারি লাগে সেটা কি আর কেউ বলতে পারে। অপরাধীর মতন মায়ের পেছন পেছন ঘরের মধ্যে ঢুকে বলে, “নিরঞ্জন খেপাচ্ছিল তাই মেরেছি। শা...” বলতে গিয়েই থেমে যায়, এবারে এই গালাগালি শুনলে মা মেরেই ফেলবে। আম্বালিকা ঝাঁঝিয়ে ওঠে, “কেন মারপিট করেছিস? কাল কলেজে গেলেই তোর নামে কমপ্লেন আসবে আমার কাছে।” অপরাধি রিশু মায়ের সামনে মাথা নিচু করে মিন মিন করে উত্তর দেয়, “না কলেজে হয়নি, বাসে হয়েছে, নিরঞ্জনের সাথে সিট নিয়ে ঝামেলা হয়েছে তাই।” তারপর মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে, “না মাম্মা, আমি আগে মারিনি, নিরঞ্জন খেপাতে খেপাতে সুমিতের মাথায় মারে আর সেই নিয়েই ঝগড়া শুরু।” আম্বালিকা প্রশ্ন করে, “বাসে ত রিনা ম্যাডাম বসেছিল বলতে পারিসনি?” বড় হয়েছে রিশু আর রিশুর বন্ধুরা, নিজেদের ঝামেলা আজকাল নিজেরাই মেটাতে চায়, “বাঃ রে, মারামারি নিরঞ্জন শুরু করেছে তাই আমরাও থেমে থাকিনি। জুতো খুলে দিয়েছি দু ঘা ওর ওপরে।” জুতো দিয়ে মেরেছে শুনে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠে আম্বালিকা, “জুতো দিয়ে মেরেছিস মানে? আজকে তোর বারথডে না হলে তোর পিঠের ছাল চামড়া নামিয়ে দিতাম।” ঘরে ঢুকেই নাকে অরেঞ্জ কেকের গন্ধ এসেছিল, কিন্তু মায়ের রাগ দেখে কিছু আর বলতে সাহস পাচ্ছে না। কান ধরে মায়ের সামনে কচি বাচ্চার মতন আদো আদো কন্ঠে বলে, “আল কোব্ব না মাম্মা, প্লিজ...” এমন করলেই আম্বালিকার মন ভিজে যায়, তাও মিষ্টি কঠোর কন্ঠে বলে, “বাবা, কাউকে ওইভাবে জুতো দিয়ে মারতে নেই।” ছেলের উষ্কখুষ্ক চুলের মধ্যে বিলি কেটে বলে, “যা তারাতারি হাত মুখ ধুয়ে নে। তোর অরেঞ্জ কেক প্রায় তৈরি, তোর বন্ধুরাও হয়ত কিছুক্ষনের মধ্যে এসে যাবে।” মাকে দুহাতে জাপ্টে জড়িয়ে ধরে, এখানে ওর প্রান আটকে, ওর ভালোবাসা, ওর ঘুম ওর শান্তি ওর হাসি ওর কান্না সবকিছুই ওর মা। “এই যাচ্ছি, প্লিজ একটু কেক দাও আগে?” ওইভাবে জড়িয়ে ধরলেই গলে যায় আম্বালিকা, কচি রিশুকে কোলে নিয়ে সেই যে কোলকাতা ছেড়েছিল সেকথা মনে পড়ে যায়। “আরে বাঁদর, এখন কেক হচ্ছে, আর বারথডে কেক কাটার আগেই কেক খাবি কি রে?” বিকেল গড়িয়ে সন্ধে নেমে আসে, একে একে বাড়িতে রিশুর বন্ধু বান্ধবীর আগমন শুরু হয়ে যায়। বসার ঘর জমজমাট, জনা দশেক বাচ্চাদের কোলাহলে মুখরিত। ঠিক এমন সময়ে কলিং বেল বাজে, ওর কোন বন্ধু এসেছে ভেবেই দরজা খুলে কিঞ্চিত থমকে যায়। দরজায় দাঁড়িয়ে এক ভদ্রলোক হাতে এক বেশ বড়সড় গিফটপ্যাক। কোনদিন এই ভদ্রলোক কে কোথাও দেখেছে বলে রিশুর মনে পড়েনা। রিশু জিজ্ঞেস করে, “কাকে চাই, আপনি কে?” আময়িক হেসে সেই আগন্তুক ওকে জিজ্ঞেস করে, “তোমার মা বাড়িতে আছেন?” আম্বালিকা রান্নাঘরে ব্যাস্ত ছিল কোন এক কাজে, “কে এলো রে?” জিজ্ঞেস করে। মাথা দোলায় রিশু, “হ্যাঁ আছেন।” ডাক দেয় মাকে, “জানি না মাম্মা, এক বার এসো তোমাকে ডাকছেন।” বসার ঘরে ঢুকে আগন্তুককে দেখে চমকে ওঠে আম্বালিকা, এতদিন পরে চোখের সামনে নীলাদ্রিকে দেখে থমকে যায়। যার জন্য কোলকাতা ছেড়ে এতদুর এসেছিল সেই নীলাদ্রি কি করে খুঁজে পেল ওকে? নীলাদ্রি অনেক বদলে গেছে আগের থেকে, একটু মোটা হয়েছে, গায়ের রঙ একটু বেশি তামাটে হয়ে গেছে। কি বলবে ভেবে পায়না, ক্ষনিকের জন্য মাথা ঘুরে যায় ওর কিন্তু ঘর ভর্তি রিশুর বন্ধু বান্ধবী তাই সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে সামলে নিয়ে নীলাদ্রিকে বসার ঘরে বসতে বলে। রিশু নিজের বন্ধু বান্ধবী নিয়েই ব্যাস্ত। সোফায় বসে নীলাদ্রিকে জিজ্ঞেস করে, “কেমন আছো?” ম্লান হাসে নীলাদ্রি, “বেঁচে আছি কোন রকমে এই যেমন থাকা যায় আর কি।” আম্বালিকার প্রান ডুকরে কেঁদে ওঠে, চোয়াল চেপে সেই অশ্রু সংবরণ করে ম্লান হেসে জিজ্ঞেস করে, “বাড়ির সবাই ভালো? মাসি মা, মেসো?” বুক ভরে শ্বাস নিয়ে মাথা নাড়িয়ে হেসে ফেলে নীলাদ্রি, “তাঁদের খবর বিশেষ জানা নেই, আশা করি ভালো আছে তারা। তোমার কি খবর?” অন্য ঘরে রিশু তখন বন্ধুদের সাথে গল্পে মশগুল, সেদিকে দেখিয়ে উত্তর দেয় আম্বালিকা, “আমার খবর ঐযে হাসছে।” খানিক থেমে জিজ্ঞেস করে, “তোমার ফ্যামিলি কেমন আছে?” হেসে ফেলে নীলাদ্রি, “জানি না গো, এইত প্রশ্ন করলাম কিন্তু সঠিক উত্তর পেলাম না।” এবারে অবাক হওয়ার পালা আম্বালিকার, “মানে?” নীলাদ্রি বলে, “আমি আর বিয়ে থা করিনি আম্বা। তুমি চলে আসার পরে অনেক খুঁজেছি তোমাকে।” ঠোঁট জোড়া কেঁপে ওঠে আম্বালিকার, “কেন? আমি তোমার জন্য ওই শহর ছেড়েছিলাম, কেন তুমি তোমার জীবনে ফিরে যাওনি?” নীলাদ্রি ম্লান হেসে বলে, “আমার যা ছিল সব কিছু নিয়ে চলে এলে, আমি আর কি নিয়ে থাকতাম বলো।” আম্বালিকার বুঝতে বিন্ধুমাত্র কষ্ট হয়না যে ওর জীবনের পথ নীলাদ্রির সাথেই বাঁধা। “কি করে খুঁজে পেলে আমাকে?” নীলাদ্রি নিজের গল্প শুরু করে, “আমি আমার বাড়িতে অনেক বুঝাতে চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু তারা কিছুতেই তোমাকে আর রিশুকে মেনে নিতে পারবে না সেটা সোজা জানিয়ে দিল। বাবা মায়ের সাথে অনেক ঝগড়া মন কষাকষির পরে আমি বাড়ি ছেড়ে দিলাম। সেটা জানাতে যেদিন তোমার বাড়িতে গেলাম সেখানে গিয়ে জানতে পারলাম যে তুমি শহর ছেড়ে চলে গেছ। কোথায় গেছ সেটা আর কেউ বলতে পারল না। ভারাক্রান্ত মন নিয়ে কয়েক মাস অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়ালাম যদি কোথাও তোমার দেখা পাই। কিন্তু তুমি যে একদম হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে সেটা বুঝতে পারিনি। আমি আর আমার কয়েক বন্ধু মিলে একটা আরকিটেকচার ফার্ম খুললাম, তার কাজেই অনেক জায়গায় যেতে হয়। আমি আর বিয়ে করলাম না” বুকের বাঁ দিক চেপে বলে, “এখানে আর কাউকে সেইভাবে বসাতে পারলাম না গো।” আম্বালিকা কেঁদে ফেলে নীলাদ্রির কথা শুনে, “তুমি না সত্যি একটা পাগল লোক।” নীলাদ্রি গানের কয়েক কলি গেয়ে ওঠে, “যখন কেউ আমাকে পাগল বলে, তার প্রতিবাদ করি আমি, যখন তুমি আমায় পাগল বল, ধন্য যে হয় সে পাগলামি, ধন্য আমি ধন্য যে...” মাঝ পথে থামিয়ে জল ভরা চোখে হেসে ফেলে আম্বালিকা, “এই বুড়ো বয়সে আর গান ধরতে হবে না, থামো।” নীলাদ্রি ওর হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোর মধ্যে নিয়ে বলে, “ফিরে চল আম্বা, আমি তোমায় নিয়ে যেতে এসেছি।” পাশের ঘরে রিশুর দিকে তাকিয়ে ম্লান হেসে বলে, “তোমাকে সেদিন ও যা বলেছিলাম আজকেও সেই এক কথা বলব নীলাদ্রি, আমার জীবনের পথ তোমার পথের সাথে আর নেই গো।” কাতর মিনতি করে নীলাদ্রি, “তোমার ছেলে বড় হয়েছে আম্বা, এখন নিশ্চয় অনেক কিছু বুঝতে শিখেছে। আমি প্রতিজ্ঞা করছি আম্বা, তোমার আর রিশুর মাঝে আমি কোনদিন আসব না। শুধু তুমি আমার পাশে থেক ব্যাস তাহলেই হবে।” এত ভালোবাসা উপেক্ষা করতে পারে না আম্বালিকা, অগত্যা আম্বালিকা হেরে যায় নীলাদ্রির ভালবাসার কাছে। |
« Next Oldest | Next Newest »
|
Users browsing this thread: 63 Guest(s)