Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(04-10-2020, 07:04 PM)Mr Fantastic Wrote: বড়োই বেদনাদায়ক মর্মান্তিক শুরু। অসহায় পরিস্থিতির শিকার অম্বালিকা। রিশুর কথা তো ছেড়েই দিলাম, ওকে তো ঠিক করে পৃথিবীর আলো চেনানোর আগেই বাবা-মা বিদায় নিলো Sad Sad
অম্বার ওপর এখন গুরুদায়িত্ব। ঠিক পারবে, পারতেই হবে। মেয়েরা মায়ের জাত, দশভূজা ! নীলাদ্রিকে ওর পাশে দাঁড়াতে হবে এই অবস্থায়।
আর এভাবে ফিরে আসার জন্য পিনুদা তোমায় আরেকবার সুস্বাগতম আর অনেক ভালোবাসা :)
এই পৃথিবীতে কে বড়, যে জন্ম দেয় নাকি যে মানুষ করে? সেই প্রশ্নের উত্তরে এই আপডেট দিয়েই এই গল্পের শুরু, তোমাকে সর্বদা পাশে পাব সেটা জানি ধন্যবাদ দিয়ে তাই আর ছোট করব না, ভালোবাসা নিও ...
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(04-10-2020, 07:31 PM)Rocky996 Wrote: দাদা অসাধারণ শুরু। আর লেখার দুনিয়ায় ফিরে আসার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। তোমার লেখা পড়ে আমি সত্যি বাকরুদ্ধ হয়ে গেছি।
জানেমান ইয়ে ত জাস্ট পিকচার কা ট্রেলার হ্যায়, এরপরে কি হয় সেটা জানার অপেক্ষায় থাকো !!!!!!!
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(04-10-2020, 08:25 PM)dreampriya Wrote: Wow .... Darun suru .... Abar amra darun akta golpo pete cholechi ... Welcome back dada ... Apnar natun golpo peye darun kushi ....
তোমায় দেখে বেশ ভালো লাগলো, যে বেটা আমাকে ফোনে গালাগালি দিয়ে এখানে টেনে এনেছিল সেই ব্যাটা এখন আসেনি সেটাই আমার এখন রাগ হচ্ছে (তার নাম এখানে বলা বারন )
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(04-10-2020, 08:52 PM)TumiJeAmar Wrote: গল্প শুরু হতেই কত কিছু হয়ে গেল !!
অনেকদিন পরে তোমার লেখা পড়ে মন মাতাল হয়ে গেলো।
এখুনি মাতাল হলে চলে দাদা, এখন ত তোমার হাতে অনেক সময় আমার গল্প পড় আর কি !!!!!!
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(04-10-2020, 09:19 PM)ddey333 Wrote: এখন একটু ভালো লাগছে , শেষ অবধি পেয়েছি পিনুদাকে , বহু বছর তপস্যা করার পর,
আমার অন্য এক গল্পের থ্রেডে তোমার উত্তর পড়ে বেশ আহত হয়েছিলাম, ভাবলাম হটাত কি হল, কেন দুঃখ? ভাইরে, এই গল্পটাও প্রেমের তবে একটু ভিন্ন ধরনের পড়েই দেখ কি হয় !!!!!!!
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
(04-10-2020, 11:44 PM)sorbobhuk Wrote: সর্বপ্রথম আপনাকে ধন্যবাদ আপনি আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন সেই জন্য। শুরুতেই ইমোশন লাগিয়ে দিলেন। আর অম্বালিকা ও নিলাদ্রির জীবনে আর কি কি ঘটে দেখি। আর অম্বালিকা কি করে ছোট ভাই য়ের খেয়াল রাখে আর তার সাথে নিজের আশা–আখাঙ্কা আর ভালোবাসা সব এক সাথে কিভাবে সামনে আগায়,। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ জানিয়ে আর ছোট করব না, অনেক ভালো লাগলো সেই পুরানো বন্ধুদের একসাথে কাছে পেয়ে, গল্প পড়ার সাথে সাথে একটু গল্প করাও যাবে !!!!!!
Posts: 1,887
Threads: 6
Likes Received: 6,479 in 1,870 posts
Likes Given: 2,644
Joined: Jun 2019
Reputation:
742
পর্ব এক (#2-2)
কিছু পরে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে নীলাদ্রিকে ডেকে আম্বালিকা বলে, “আজকে রিশুর জন্মদিন। আমি ওর জন্মদিন আগে পালন করব তারপরে বাকি কাজ।”
ওর কথা শুনে সবাই অবাক, মেয়ে বলে কি? নীলাদ্রি জিজ্ঞেস করে, “তুমি কি পাগল হয়ে গেছ নাকি?”
মাথা নাড়ায় আম্বালিকা, কন্ঠের স্বর দৃঢ়, “বাবা আর সুমিতা মারা গেছেন সেটা আমার অদৃষ্ট। সেটাকে আমি বদলাতে পারব না, যারা চলে গেছেন তাদের আমি ফিরিয়ে আনতে পারবো না। কিন্তু আজকে রিশুর জন্মদিন, আমার কাছে রিশুর মুখের হাসির দাম অনেক বেশি, আমি সেটা হারাতে চাই না।”
আম্বালিকার এই কঠিন সংকল্পের অনেকেই বিরোধিতা করে, কিন্তু সেদিন ও নিজের কথায় অনড় ছিল। ওর কথা শুনে অনেকেই আম্বালিকাকে পাগল বলে বিশেষ করে সুমিতার বাড়ির লোকজন, কিন্তু কারুর কথায় কান দেয় না। বেশির ভাগ লোকজন ওর পাশ ছেড়ে চলে যায়, তবে সেদিন নীলাদ্রি আর পিয়ালী ওর পাশে দাঁড়িয়েছিল। যে কেকের অর্ডার দেওয়া হয়েছিল সেটা আনা হয়। চোখের জল আটকে, মুখে হাসি মেখে ওপরের তলায় সেদিন ছোট করে রিশুর জন্মদিন পালন করা হয়। রিশুকে ক্ষনিকের জন্যেও কারোর কাছে ছাড়ে না আম্বা। প্রান ঢেলে দিয়েছিল সেদিন সেই কচি শিশুটার মুখে হাসি দেখার জন্য। রিশু যতবার ওর মাকে খোঁজে ততবার নানা কথায় ভুলিয়ে, নানা ভাবে ভুলিয়ে রাখে আম্বা। বরাবর রিশুকে ওর মা খাইয়ে দিত, সেদিন বহু কষ্টে রিশুকে খাইয়ে দিয়ে ঘুম পাড়াতে হয়েছিল আম্বালিকার। ওর ওড়না ছোট মুঠোর মধ্যে আঁকড়ে ধরে কোলের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়েছিল।
রিশু ঘুমানোর পর বহু কষ্টে সেই ছোট মুঠো ছাড়িয়ে নিচে নেমে আসে। রাত অনেক, তাই আম্বালিকা পিয়ালীকে অনুরোধ করে বাড়ি ফিরে যেতে, তবে নীলাদ্রি ওর পাশ ছাড়েনা শেষ পর্যন্ত। কাজের মেয়েকে বলে যায় যেন এক মুহূর্তের জন্য রিশুর পাশ থেকে না নড়ে। গভির রাতের অন্ধকারে বাবা আর সুমিতার মৃতদেহ দাহ সংস্কার করা হয়। নিজের অদৃষ্টের জন্য সেদিন আর ওর চোখে জল ছিল না। মা অনেকদিন আগেই গত হয়েছেন, এবারে বাবাকেও শ্মশানে পুড়িয়ে দিয়ে এই পৃথিবীতে একা হয়ে গেল। বাবার সাথে যত ঝগড়া বা কথাকাটি হোক না কেন, মনের গভিরে আম্বালিকা এটা জানত যে ওর বাবা ওকে কোনদিন জলে ফেলে দিত না। সুমিতা সৎমা হলেও এক বান্ধবীর মতন ব্যাবহার করত সব সময়ে।
নীলাদ্রি ওকে জিজ্ঞেস করে, “কি ভাবছ এবার?”
শুন্য চোখে ওর দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয় আম্বালিকা, “রিশুকে নিয়েই ভাবছি, কি করে ওকে বড় করব।”
ওর হাতের ওপর হাত রেখে উত্তর দেয় নীলাদ্রি, “আমি সাথে আছি’ত, সব ঠিক হয়ে যাবে।”
শুষ্ক হাসি টেনে উত্তর দেয় আম্বালিকা, “তোমার অনেক ধকল গেছে, তোমার জন্য বাড়িতে হয়ত চিন্তা করবে। তুমি এইবার বাড়ি যাও।”
নীলাদ্রি উত্তর দেয়, “আমাকে সরিয়ে দিচ্ছ নাকি?”
হাতের ওপর হাত রেখে উত্তর দেয়, “না না, তেমন কিছু নয়। এরপর জীবনের অঙ্ক আবার নতুন করে কষতে হবে তাই বাড়ি গিয়ে একটা নতুন খাতা কিনব।”
নীলাদ্রি ভেবে পায় না এর উত্তর কি দেবে, তবে যে আম্বালিকাকে সেদিন চোখের সামনে দেখছে, যে ভাবে রিশুকে আগলে রেখেছিল নিজের আঁচলের তলায়, যেভাবে দৃঢ় কন্ঠে নিজের মতামত জানিয়েছিল সেদিন, তাতেই নীলাদ্রি বুঝে গিয়েছিল যে এই আম্বালিকা আর সেই আগের আম্বালিকা নেই, ওর প্রেমিকা আম্বালিকা কোথাও লুকিয়ে গেছে এক মাতৃময়ী মূর্তির আড়ালে।
দাহ কর্ম শেষ করতে করতে ভোর হয়ে যায়। আগের দিন থেকেই আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা চলছিল, ভোরের দিকে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। নীলাদ্রি চলে যাওয়ার পরে একা একাই গাড়িতে চেপে বাড়ি ফিরে আসে আম্বালিকা। বাকি আত্মীয় সজ্জনেরা ওর হাবভাব আচরনের কোন অর্থ খুঁজে পায় না। ঘরে ঢুকেই আগে নিজের ঘরে উঁকি মারে, ওর বিছানায় দলা পাকিয়ে ঘুমিয়ে কচি রিশু, কাজের মেয়েটা পাশের একটা চেয়ারে বসে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছে। জামা কাপড় নিয়ে বাথরুমে ঢুকে পরে, শাওয়ার চালিয়ে অনেকক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে আগামী দিনের কথা চিন্তা করে। এক ধাক্কায় অনেক কিছু হারিয়ে ফেলেছে, এক ধাক্কায় অনেক বড় হয়ে গেছে, ওর কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব এসে পড়েছে। শেষ পর্যন্ত ভেঙ্গে পরে আম্বালিকা, হাউ হাউ করে কেঁদে ওঠে বাথরুমের মধ্যে।
সম্বিত ফেরে বাথরুমের দরজায় কাজের মেয়েটার ধাক্কাতে। কাজের মেয়েটা জানায়, যে রিশু ঘুম থেকে উঠে পড়েছে আর কাঁদছে। রিশু কাঁদছে শুনেই সব কিছু ভুলে যায় আম্বালিকা, কোন মতে স্নান সেরে বেড়িয়ে আসে বাথরুম থেকে। ঘুম থেকে উঠে মাকে না পেয়ে রিশুর কান্না, মা চাই। সদ্য মা হারা কচি শিশুটাকে সান্ত্বনা দিতে ততপর হয়ে ওঠে। বৃষ্টি বাইরে, সেই সাথে বুকের মধ্যে অপার শূন্যতা, কিন্তু চোখে বিন্দু মাত্র জল আনা বারণ। রিশুকে কোলে নিয়ে কাজের মেয়েটাকে ওর জন্য দুধ বানাতে বলে।
রিশুকে কোলে নিয়ে আদর করে বলে, “আমরা দুদু খেয়ে রেড কার নিয়ে খেলবো।”
সদ্য মাতৃহারা রিশু মাকে খোঁজে, “মাম্মা কই?”
বুক ভরে শ্বাস নিয়ে উত্তর দেয়, “এখুনি চলে আসবে, আমার সোনার জন্য রেড কার আনতে গেছে। সেই গাড়িতে করে আমরা বেড়াতে যাবো।”
রিশু মাথা দোলায়, “বেলাতে দাবো? কোথায় দাবো?”
উত্তর দেয় আম্বালিকা, “কোথায় যেতে চায় আমার সোনা?”
রিশু খিলখিল করে হেসে উত্তর দেয়, “রেড কার কিনতে দাবো...”
কথা শুনে হেসে ফেলে আম্বালিকা, “রেড কারে চেপে আরো একটা রেড কার কিনতে যাবো।”
অনেক ভুলিয়ে ভালিয়ে দুধ আর সেরেল্যাক খাইয়ে শান্ত করে রিশুকে। নিচের তলায় তখন বেশ কিছু আত্মীয় সজ্জন বর্তমান, বিশেষ করে সুমিতার বাড়ির লোকজন। আম্বালিকার বাবার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে, তার এডভোকেট বন্ধু, মিস্টার প্রমথেশ বড়াল ও বাড়িতে পৌঁছে যান। রিশুকে কোলে নিয়েই নিচে নেমে আসে আম্বালিকা। মিহি গুঞ্জনে ভরে ওঠে হল ঘর। এরপর কি করবে আম্বালিকা, এই বাড়ি, কলেজ পড়াশুনা, ছোট রিশু, এই সবের আবছা প্রশ্ন ওর কানে ভেসে আসে বটে তবে ওর শক্ত চোয়াল আর কোলের মধ্যে জেঁকে বসা রিশুকে দেখে কারুর সাহস হয় না কিছু প্রশ্ন করার। প্রমথেশ বাবু জানান যে ওর বাবা কোন উইল করে যায়নি। অকস্মাত এইরকম কিছু একটা দুর্ঘটনা ঘটে যাবে সেটা কারুর জানা ছিল না, তবে ওর বাবার ইচ্ছে ছিল এই সম্পত্তির অর্ধেক ভাগ আম্বালিকাকে দেওয়া হবে আর বাকি অর্ধেক সুমিতার নামে হবে। প্রমথেশ বাবু ওকে জিজ্ঞেস করেন যে ও কি করতে চায়। আম্বালিকা জিজ্ঞেস করে যে আইনত কি রিশুর মামা বাড়ির লোকেরা রিশুকে নিয়ে যেতে পারে? তার উত্তরে প্রমথেশ বাবু জানিয়ে দেন যে, যেহেতু আম্বালিকা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা এবং রিশুর সাথে ওর রক্তের সম্পর্ক সেই কারনে আম্বালিকা না চাইলে রিশুকে কেউ ওর কাছ থেকে নিয়ে যেতে পারবে না। সেটা শুনে আম্বালিকা আস্বস্থ হয়ে রিশুর গালে চুমু খায়।
সেদিন থেকে শুরু হয় আম্বালিকার এক নতুন জীবন। আর্থিক দিক থেকে ওর বাবা কম টাকা রেখে যান নি, সেই নিয়ে বিশেষ চিন্তা ছিল না। ওর নিজের ব্যাঙ্ক একাউন্টে কয়েক লাখা টাকা পড়ে আছে। কয়েক মাস পরেই ওর মাস্টার্সের পরীক্ষা, কলেজ ওকে শেষ করতেই হবে। বাড়িতে সব কাজের জন্য আলাদা লোক নিযুক্ত, রান্নার লোক আলাদা, এমনি কাজের লোক আলাদা, তাও আম্বালিকা রিশুকে দেখা শোনা করার জন্য এক জন গভর্নেস নিযুক্ত করে। তবে যতটা সময় বাড়িতে থাকত ক্ষণিকের জন্যেও রিশুকে চোখের আড়াল হতে দিত না। ছোট্ট রিশু কয়েকদিনের মধ্যেই মায়ের অভাব অনুভব করতে পারে না, আম্বালিকার অগাধ স্নেহ মায়া মমতা দিয়ে ওকে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়। সকালে কলেজে বের হওয়ার আগে গভর্নেসকে সবকিছু বুঝিয়ে সুঝিয়ে দিয়ে যায়। কলেজে গেলেও ওর মন পড়ে থাকে বাড়িতে রিশুর কাছে, একা বাচ্চাটা কি করছে, গভর্নেস ঠিক সময় মতন খাইয়েছে কি না, ঠিক সময়ে স্নান করিয়েছে কি না ইত্যাদি। আগের সেই আম্বালিকা আর নেই সেটা পীয়ালিও বুঝতে পারে, কলেজের পরে বন্ধু বান্ধবীদের সাথে দাঁড়িয়ে আড্ডা আর মারে না। শুরুর দিকে পীয়ালির সাথে বেড়াতে না বের হলেও ফোনে কথা হত, ধিরে ধিরে সেই ফোনের যোগাযোগ অনেক কমে যায়। নীলাদ্রির সাথে ঘুরতে না বের হলেও ওর সাথে রোজদিন ফোনে যোগাযোগ হত। আম্বালিকার কথাবার্তা আর সেই আগের মতন নয়, মার্জিত এক মহিলার মতন কথাবার্তা হত দুইজনের।
ঠান্ডার আমেজ কেটে গেছে, কোলকাতায় তেমন ঠান্ডা পরে না। রবিরারের দিন, সারাদিন অনেক ব্যাস্ত ছিল আম্বালিকা। রিশুর ঠান্ডা লেগেছে, নাক থেকে জল পরছে। ছেলেটা কিছুতেই সোয়েটার জ্যাকেট গায়ে রাখবে না, পায়ের মোজা এই পরালেই সেই খুলে দেয়, তাতে ওর দেখাশোনা করার গভর্নেস বেশি বকা খায়, দেখতে পারো না ছেলেটা খালি পায়ে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে? যদিও বুঝতে পারে যে আসল দোষী এই কচি শিশুটা কিন্তু ওকে বকাঝকা করতে বড্ড মায়া লাগে আম্বালিকার। রিশুকে নিয়ে বিকেলের দিকে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিল, সারাটা রাস্তা গাড়িতে আম্বালিকার কোলে বসে চুপ করে জুলুজুলু চোখে বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখে আর হাসে। ওর খুব চিন্তা, ছেলে খুব কম কথা বলে। বাড়িতে কাজের লোক আর ড্রাইভার ছাড়া আর কোন মানুষ নেই যে রিশু কথা শিখবে। ডাক্তার হেসে ওকে জানিয়ে দেয় যে সব বাচ্চারা এক ধরনের হয় না আর বিশেষ করে ছেলেরা একটু দেরিতেই কথা শেখে, কিন্তু ওর মন কিছুতেই মানতে চায় না।
সন্ধ্যের পরে নিজের ঘরের চেয়ারে বসে পড়াশুনা নিয়েই ব্যাস্ত ছিল আম্বালিকা। পড়ার ফাঁকে মাঝে মাঝেই কানে রিশুর আওয়াজ আসে, গভর্নেস ওকে খাওয়াতে ব্যাস্ত কিন্তু সেই ছেলে কিছুতেই খাবে না। কখন বারান্দায় দৌড়ে পালায় কখন বসার ঘর তোলপাড় করে ফেলে। শেষ পর্যন্ত আম্বালিকা থাকতে না পেরে নিজের ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে আসে।
চোখ পাকিয়ে রিশুর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি কঠোর কন্ঠে বলে, “চুপচাপ খেয়ে নাও না হলে জুজু বুড়ো এসে যাবে কিন্তু।”
গুটিগুটি পায়ে অপরাধীর মতন আম্বালিকার কাছে এসে কচি কন্ঠে বলে, “জুজু বুলো...”
আদর করে কোলে তুলে নেয় রিশুকে, “হ্যাঁ, না খেলে এইবারে জুজু বুড়োর কাছে দিয়ে আসব।” বলে গভর্নেসের হাত থেকে খাওয়ারের বাটি নিয়ে নিজেই খাওয়াতে বসে।
টিভিতে কোন এক কারটুন চলছিল, দু চামচ খেয়ে রিশু টিভির দিকে দেখে দিদির গলা জড়িয়ে আদো আদো কন্ঠে বলে ওঠে, “মাম্মা ব্লাক ভৌ ভৌ...” প্রথমে আম্বালিকা ঠিক ভাবে বুঝতে পারেনি রিশু কি বলছে। রিশু টিভির দিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলে, “মাম্মা ব্লাক ভৌ ভৌ...”
মাতৃ হারা ছেলের মুখ “মা” ডাক শুনে চোখে জল চলে আসে আম্বালিকার, হাতের চামচ হাতেই থমকে যায়। জল ভরা চোখে রিশুর দিকে তাকিয়ে বলে, “বল দিদি, আমি তোর দিদি”
রিশু বুঝতেই পারে না ওর দিদির চোখে কেন জল, আদো আদো কন্ঠে আবার ডাকে, “মাম্মা”
কেঁদে ফেলে আম্বালিকা, খাওয়ার বাটি রেখে দিয়ে আঁকড়ে ধরে বুকের মাঝে, হয়ত বা নিজের গর্ভে ধারন করেনি রিশুকে কিন্তু বুকের প্রতিটি পাঁজর দিয়ে আগলে রাখা এই সবে ধন নীলমণি। রিশুর মন থেকে ওর মায়ের অভাব কখন মুছে গেছে সেটা আর টের পায়নি, আম্বালিকাকেই কচি রিশু নিজের মা নিজের বাবা নিজের পৃথিবী বলেই ভেবে নেয়।
আশ্রুভরা নয়নে, রিশুর গালে বার কয়েক চুমু খেয়ে বলে, “হ্যাঁ রে বাবা, তুই আমার সব, আমি তোর মা।”
The following 21 users Like pinuram's post:21 users Like pinuram's post
• a-man, astroner, Baban, bismal, bluestarsiddha, Buro_Modon, crappy, Crushed_Burned, ddey333, dreampriya, iamhere, in_roni, Mr Fantastic, o...12, ppbhattadt, Sage_69, Sandipan Chatterjee, sorbobhuk, suktara, vichitra_1, zetNted
Posts: 6,161
Threads: 42
Likes Received: 12,438 in 4,169 posts
Likes Given: 5,340
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,799
"মাতৃ হারা ছেলের মুখ “মা” ডাক শুনে চোখে জল চলে আসে আম্বালিকার, হাতের চামচ হাতেই থমকে যায়। জল ভরা চোখে রিশুর দিকে তাকিয়ে বলে, “বল দিদি, আমি তোর দিদি”
রিশু বুঝতেই পারে না ওর দিদির চোখে কেন জল, আদো আদো কন্ঠে আবার ডাকে, “মাম্মা”
কেঁদে ফেলে আম্বালিকা, খাওয়ার বাটি রেখে দিয়ে আঁকড়ে ধরে বুকের মাঝে, হয়ত বা নিজের গর্ভে ধারন করেনি রিশুকে কিন্তু বুকের প্রতিটি পাঁজর দিয়ে আগলে রাখা এই সবে ধন নীলমণি। রিশুর মন থেকে ওর মায়ের অভাব কখন মুছে গেছে সেটা আর টের পায়নি, আম্বালিকাকেই কচি রিশু নিজের মা নিজের বাবা নিজের পৃথিবী বলেই ভেবে নেয়।
আশ্রুভরা নয়নে, রিশুর গালে বার কয়েক চুমু খেয়ে বলে, “হ্যাঁ রে বাবা, তুই আমার সব, আমি তোর মা।”
এই কয়েকটা লাইনের কোনো তুলনা হয়না... চোখে জল এসে গেলো দাদা.
সত্যিই কি আজব এই দুনিয়া. এই জগতেই এক মা নিজের সন্তানকে ডাস্টবিনে ফেলে দেয়, আবার এই জগতেরই কোনো নারী সেই শিশুকে উদ্ধার করে কোলে তুলে নেয়. হয়ে ওঠে তার মা. সত্যিকারের মা.
Posts: 14
Threads: 0
Likes Received: 7 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Jan 2020
Reputation:
0
pinu da is back...thank u for posting this again dada.i was searching for it for quite sometimes. FERVOR Regained...most favorite from your creations
And Welcome back dada
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 66,050 in 27,781 posts
Likes Given: 23,869
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
Posts: 952
Threads: 1
Likes Received: 875 in 551 posts
Likes Given: 3,441
Joined: Dec 2018
Reputation:
40
Posts: 952
Threads: 1
Likes Received: 875 in 551 posts
Likes Given: 3,441
Joined: Dec 2018
Reputation:
40
সত্যিই এই পৃথিবী একটা রঙ্গমঞ্চ ।। সবাই অভিনয় করে চলেছে ।কেউ মা , বাবা , আবার কেউ দিদি বা দাদা ।।। নিজের শখ আল্লাদ ছেড়ে একটা মাতৃহারা শিশুকে নিজের বুকে টেনে নেওয়া ।। আজকের দিনে ভাবাই যায়না ।।
Posts: 1,541
Threads: 5
Likes Received: 2,700 in 911 posts
Likes Given: 1,512
Joined: Dec 2018
Reputation:
579
05-10-2020, 12:55 PM
(This post was last modified: 05-10-2020, 12:55 PM by bourses. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
যাক তাহলে আমাদের কথা মনে পড়ল তোমার অবশেষে, এটাই সবচেয়ে ভালো খবর এই মুহুর্তে… আবার আমরা আমাদের সবচেয়ে কাছের আর ভালোবাসার লেখকের গল্প পড়তে পারবো… এর থেকে বোধহয় ভালো কিছু আর হয় না…
IPLএর আবহাওয়ায় Test এর গোড়াপত্তন বোধহয় তোমার পক্ষেই সম্ভব গুরু… একদম অনবদ্য ভাবে নিজস্ব স্বাভাবিক ঢংএ ধীত্রে ধীরে গল্পের গোড়া পত্তন করে চলেছ… একটা একটা করে ইঁট গাঁথা হচ্ছে গল্পকে বিশাল অট্টালিকায় রূপান্তরিত করার অভিপ্রায়ে… অনেকদিন পর সত্যিই এই সাইটটা আবার প্রাণ ফিরে পাবে… আমরা আবার সত্যিইকারের ভালো গল্পের আস্বাদন করতে পারবো…
তবে ‘চোরাবালির’ আফসোসটা এখনও রয়ে গেলো বস্… ওটা এখনও মিস্ করি ভিষন ভাবে… জানি গল্পের খেই একবার হারিয়ে গেলে সেটাকে পুনোরুদ্ধার করা বেশ কষ্টসাধ্য, তাও, দেখো, যদি ভবিষ্যতে সম্ভব হয় সেটা করার…
এখনই আর কিছু বলব না এই গল্প নিয়ে… কিছুটা লেখ, তারপর ফের আসবো… ততদিন আমার আন্তরিক শুভ কামনা রইল তোমার এই পরিশ্রমের জন্য…
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 66,050 in 27,781 posts
Likes Given: 23,869
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
Posts: 421
Threads: 10
Likes Received: 437 in 312 posts
Likes Given: 226
Joined: Jan 2019
Reputation:
20
অসাধারণ ভাই। অম্বালিকা নিজেই রিশুর দেখাশুনা করছে আর সাথে একজন গভর্নস রেখেছে। তারপরও তার শান্তি হয় না। আর পিয়ালি ও নিলাদ্রির সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছে। দেখি অম্বালিকা ও নিলাদ্রির ভালোবাসা কিভাবে সামনে আগায়। পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম
Posts: 1,541
Threads: 5
Likes Received: 2,700 in 911 posts
Likes Given: 1,512
Joined: Dec 2018
Reputation:
579
(05-10-2020, 01:54 PM)ddey333 Wrote: বাব্বা , কতদিন পরে দেখা দিলেন দাদা !!!
কোথায় লুকিয়ে ছিলেন এতদিন ?
ফেবু তেও আজকাল আর দেখা যায় না আপনাকে !!

ছি ছি, লুকোতে যাবো কেন ভাইটু... ব্যাপারটা লুকানোর মত কিছু নয়... আসলে এই ২০২০ আমাদের যা বাঁশ দিয়ে দিল, সেটা সামলাতে সামলাতে হয়রান হয়ে যেতে হচ্ছে, এই আর কি... আগে ছিল জীবনটা এক রকম ভাবে ছকা, কিন্তু লকডাউন উত্তর সব কিছুই এলোমেলো হয়ে গিয়েছে, তাই এখন আর আগের মত সময় করে নিয়মিত ফেসবুক বা এই সাইটে আসা হয়ে ওঠে না, আর যদিও বা কখন সখনও আসি, কিন্তু নতুন করে গল্প লেখার আর সময় বের করতে পারি না... জানি এখন অনেক নবীন লেখকেরা খুব ভালো গল্প এখানে উপহার দিয়ে চলেছে, কিন্তু সেই সময় বের করে পড়বো, তাও আর হয়ে ওঠে না... পিনুরাম না মেসেজ করলে জানতেও পারতাম না যে ও আবার এখানে গল্প দিতে শুরু করেছে, তাই ওর মেসেজ পেয়ে আর থাকতে পারি নি...
আশা করি তোমরা সকলে ভালো আছো... আমিও তোমাদের সত্যিই খুব মিস্ করি...
ভালো থেকো, সাবধানে থেকো...
Posts: 6,542
Threads: 21
Likes Received: 7,066 in 3,717 posts
Likes Given: 12,105
Joined: Feb 2020
Reputation:
240
[quote pid='2484088' dateline='1601837422']
রিশুকে কোলে নিয়ে আদর করে বলে, “আমরা দুদু খেয়ে রেড কার নিয়ে খেলবো।”
সদ্য মাতৃহারা রিশু মাকে খোঁজে, “মাম্মা কই?”
বুক ভরে শ্বাস নিয়ে উত্তর দেয়, “এখুনি চলে আসবে, আমার সোনার জন্য রেড কার আনতে গেছে। সেই গাড়িতে করে আমরা বেড়াতে যাবো।”
রিশু মাথা দোলায়, “বেলাতে দাবো? কোথায় দাবো?”
উত্তর দেয় আম্বালিকা, “কোথায় যেতে চায় আমার সোনা?”
রিশু খিলখিল করে হেসে উত্তর দেয়, “রেড কার কিনতে দাবো...”
টিভিতে কোন এক কারটুন চলছিল, দু চামচ খেয়ে রিশু টিভির দিকে দেখে দিদির গলা জড়িয়ে আদো আদো কন্ঠে বলে ওঠে, “মাম্মা ব্লাক ভৌ ভৌ...” প্রথমে আম্বালিকা ঠিক ভাবে বুঝতে পারেনি রিশু কি বলছে। রিশু টিভির দিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলে, “মাম্মা ব্লাক ভৌ ভৌ...”
মাতৃ হারা ছেলের মুখ “মা” ডাক শুনে চোখে জল চলে আসে আম্বালিকার, হাতের চামচ হাতেই থমকে যায়। জল ভরা চোখে রিশুর দিকে তাকিয়ে বলে, “বল দিদি, আমি তোর দিদি”
রিশু বুঝতেই পারে না ওর দিদির চোখে কেন জল, আদো আদো কন্ঠে আবার ডাকে, “মাম্মা”
কেঁদে ফেলে আম্বালিকা, খাওয়ার বাটি রেখে দিয়ে আঁকড়ে ধরে বুকের মাঝে, হয়ত বা নিজের গর্ভে ধারন করেনি রিশুকে কিন্তু বুকের প্রতিটি পাঁজর দিয়ে আগলে রাখা এই সবে ধন নীলমণি। রিশুর মন থেকে ওর মায়ের অভাব কখন মুছে গেছে সেটা আর টের পায়নি, আম্বালিকাকেই কচি রিশু নিজের মা নিজের বাবা নিজের পৃথিবী বলেই ভেবে নেয়।
আশ্রুভরা নয়নে, রিশুর গালে বার কয়েক চুমু খেয়ে বলে, “হ্যাঁ রে বাবা, তুই আমার সব, আমি তোর মা।”
[/quote]
এই অংশগুলো পড়ে বুকের ভেতরটা কেমন হু হু করে উঠলো Sad Sad
Posts: 300
Threads: 0
Likes Received: 354 in 238 posts
Likes Given: 495
Joined: Apr 2020
Reputation:
19
Boss esei chuke jol aniye kadiye dilo........❤❤❤
Posts: 18,225
Threads: 471
Likes Received: 66,050 in 27,781 posts
Likes Given: 23,869
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,275
Posts: 76
Threads: 0
Likes Received: 105 in 68 posts
Likes Given: 4
Joined: Sep 2020
Reputation:
8
Ekebare notun theme mone hochhe!!!aro kichu episode pori,tarpor regular hobo,ami ekhon kajaldighi ta porchen asole!!!
|