Thread Rating:
  • 8 Vote(s) - 3.5 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
গল্পের মত বাস্তব
একছুট্টে ঘরে এসে দরজাটা বন্ধ করে নিয়েছি | উত্তেজনায় আমার হৃদয়ের গতি যেন শতগুন বেড়ে গিয়েছে | লুকিয়ে লুকিয়ে ভিজতে গিয়েছিলাম ভয়ে ভয়ে, কিন্তু বৃষ্টির শীতল স্পর্শে মুহূর্তে সমস্ত ভয় লাজ লজ্জা কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিল | গেয়ে উঠেছিলাম দু কলি | কিন্তু বুঝতে পারিনি উনি যে এভাবে আমার অলক্ষ্যে আমায় লক্ষ্য করছেন | এতদিন শুধু ওনাকে মনে মনে ভালোবেসেছি, ওনাকে নিজের করে পেতে চেয়েছি | কিন্তু আজ ওনার এত কাছে দাঁড়িয়ে, ওনার ওই গভীর চোখের দিকে তাকিয়ে এমনভাবে হারিয়ে যাব ভাবিনি | ওনার ওই মুগ্ধতার দৃষ্টিতে কোথা থেকে যে একরাশ লজ্জারা এসে জড়ো হয়েছিল আমার দুচোখে, বুঝতে পারিনি | লজ্জা কাটিয়ে তাকাতে পারিনি ওনার ওই অন্তরস্পর্শী দৃষ্টির সামনে | ওনার প্রতিটা নি:শ্বাসে শিহরিত হয়ে উঠছিলাম | জলের ফোঁটা গুলো সেই শিহরনকে যেন আরও উস্কে দিচ্ছিল, এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল সমস্ত ভাবনা গুলো | যদি উনি আমাকে এতটাই অপছন্দ করেন তাহলে আজকে ওনার উপস্থিতিতে এত ভালোলাগার ছোঁয়া কেন??!!! আজ সকল বাঁধন ভেঙে খুব ইচ্ছে করছিল ওনার বুকে মুখ লুকিয়ে বলি......... 

"মেঘলা দিনের আস্কারাতে
 চেয়েছি তোমার হাত ধরতে, 
 ঝড়ের রাতে তোমার পাশে
 থাকব আমি ভালোবেসে....... |"

**************************************

আমি এটা কি করতে যাচ্ছিলাম!!! ছি:!!! আমার নিজেকে, নিজের অনুভূতি গুলোকে সংযত করা উচিত ছিল | এতটা দুর্বলতা আমার শোভা পায় না | আঁখি আমায় ওর স্যার হিসেবে শ্রদ্ধা করে হয়ত ভালোও বাসে আর আমি কিনা....... যে জন্য ওর সাথে আমি এত কড়া ব্যবহার করতাম, ওকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করতাম, আজ সেই ভুলটাই আমি করতে চলেছিলাম | হয়ত করেই ফেলেছি | প্রথম দিন কলেজে দরজার আড়ালে দেখা ওর ওই চোখ দেখেই জীবনে প্রথমবার পড়াশোনা ছেড়ে মন ছুটে গিয়েছিল ওর দিকে | ওর ওই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে হারিয়ে ছিলাম মুখের ভাষা, মনের কথা | চেয়েছিলাম ওর স্বপ্ন গুলোকে সত্যি করে তুলতে, নিজেকে উজার করে ওকে ভালোবাসতে | তবে পারিনি দুজনের মাঝের এই বয়সের ব্যবধানকে মিটিয়ে ফেলতে | তাই চক্ষুলজ্জার ভয়ে, এড়িয়ে গিয়েছিলাম নিজের অনুভূতি গুলোকে | কিন্তু যেদিন থেকে ওর সাথে দেখা বন্ধ হয়ে গেল, যেদিন শুনলাম কোন না কোন ছেলের সাথে ওর বিয়ের ঠিক হয়েছে, সেদিন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি | পারিনি নিজের অনুভূতি গুলোকে অস্বীকার করে দূরে সরিয়ে রাখতে | কলেজের পর ওর আসার অপেক্ষায় নিজের অজান্তেই বার বার ঘড়ি দেখতাম | পথ চেয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতাম | তখন এগুলোকে সামান্য কেয়ার করা বলে চালিয়ে দিলেও ওর অনুপস্থিতি আমায় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ওগুলো কেবল শিক্ষকের ছাত্রীর প্রতি হওয়া টান ছিল না, ছিল অনেক বেশি কিছু | যখন ওর হাসির আওয়াজে ঘরের প্রতিটা কোন মুখরিত হয়ে উঠত, তখন যে অনুভূতিটা মনে অনুভূত হত, সেটা আর পাঁচজন মেয়ের জন্য অনুভূত হয় না |

কিন্তু আমি বুঝি নি এটাও কি করে সম্ভব কারন আমি তো অঞ্জলিকে ভালোবাসি | ও ছিল আমার প্রথম ভালোবাসা | এত গুলো বছর ওকে ছাড়া কাটালেও কখনও ওর অভাব বা অন্য কারোর প্রয়োজন হয়নি | তবে আঁখিকে দেখলে, ওর কথা ভাবলে আমি এতটা দুর্বল হয়ে পড়ি কেন??!! কেন মনে হয় আমার একাকিত্ব জীবনে আঁখির উপস্থিত থাকা খুব খুব প্রয়োজন??!! কিসের জন্যে??!!! নতুন ভাবে জীবন শুরু করার জন্য আমাকে বহুবার বহুজন নানা রকম ভাবে বলেছে | কম বেশি অনেকের কাছ থেকেই প্রস্তাব পেয়েছি | তখন আমি যতটা নিরুদ্বেগ থাকতাম আঁখিকে দেখার পর ততটা নিরুদ্বেগ কেন থাকতে পারি না??!!! কেন মনে হয় আঁখি আমার অনুভূতি গুলো বুঝুক, আমার হয়েই থাকুক??!!! কিন্তু যেদিন রাস্তায় দেখলাম রাঘব আঁখির গায়ে হাত তুলছে, ওর সাথে অভদ্র ব্যবহার করছে, সেদিন আমার সব প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল | আমি বুঝেছিলাম যে........ 

"ভালোবাসায় প্রথম ও দ্বিতীয় বলে কিছু হয় না
 ভালোবাসা কখনও হারিয়েও যায় না, 
 সময়ের সাথে ভালোবাসা শুধু রুপ বদলায়
 ভালোবাসা পূর্ন হয় কেবলই ভালোবাসায়...... |"

***********************************

তাড়াতাড়ি ভিজে জামা কাপড় পাল্টে চুলটা তোয়ালেতে জড়িয়েই বাইরে চলে এলাম | তবে স্যারের ঘরের দরজাটা বন্ধ কেন?? একবার ডাকব?? কিন্তু যদি জিজ্ঞেস করে কেন...... কি বলবো?? ইসসসস, কেন যে আজ ভিজতে গেলাম | উনি হয়ত খুব রাগ করে আছেন আমার ওপর | উফফফ, এত অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে জীবনেও পড়িনি | তবে এমন হাত পা গুটিয়ে বসে থাকি কি ভাবে | এমনিই ওনার বৃষ্টিতে ভেজার অভ্যেস নেই, কে জানে শরীর কেমন আছে!!! এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চিন্তা করার থেকে একবার বরং ডেকেই দেখি | 

রাম নাম জপতে জপতে গিয়ে নক করলাম.......

- স্যা..... স্যার, আপনি ঠিক আছেন??!! 

- কেন কি হয়েছে?? 

- না তখন আমার সাথে ভিজলেন তো তাই আর কি....... 

- তোমার সাথে ভিজলাম মানে!!! কি বলতে চাইছ তুমি?? 

- না মানে আমার সাথে না, মানে ওই একলাই...... আসলে আপনার তো অভ্যেস নেই, যদি....... 

- কি যদি?? 

- যদি..... যদি আপনি..... মানে আমি আদা দিয়ে চা করছিলাম | আপনি খাবেন কিনা তাই জিজ্ঞাসা করতে এসেছিলাম |

- হুমমম, কিন্তু তার আগে বলো তুমি পড়াশোনা বইখাতা ফেলে ছাদে এই বৃষ্টিতে ছাদে কি করছিলে?? 

গেলাম রে!!! ঠিক যেটা ভাবছিলাম সেটাই হল | এবার কি করি?? কি বলি?? কোনো রকমে ঢোক গিলে বললাম......... 

- ইয়ে...... মানে লেখাটা হয়ে গিয়েছে তাই ভাবলাম ছাদ থেকে জামা কাপড় গুলো তুলে আনি যদি বৃষ্টিতে ভিজে যায় | ব্যাস গেলাম আর বৃষ্টি এসে গেল | তাই একটু........ 

- ও তাই বুঝি!!!! 

- হ্যাঁ সত্যি লেখা হয়ে গিয়েছে | আপনি বাইরের ঘরে আসুন, আমি ততক্ষণ চা করে আনছি | তারপর না হয়........ 

- হুমমমম |

উফফফ এখনকার মতো তো চায়ের বাহানায় বাঁচলাম কিন্তু একটু পর যখন লেখাটা দেখতে চাইবে কি দেখাবো?? কিছুই তো লিখি নি | আর যেটা করছিলাম সেটা যদি দেখতে পায় তাহলে তো আর রক্ষে থাকবে না |

- আঁখি, কি ভাবছো এমন আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে??!!! আর একটু হলেই তো গরম চা পড়ে গিয়ে কেলেঙ্কারি বাঁধত | তুমি কি আমায় একটু শান্তি দেবে না?? আমি না এলে এখনই যদি তোমার কিছু হয়ে যেত...... আমি কি করতাম, হ্যাঁ??!!! সামান্য চা করতে এসেই এই অবস্থা, এরপর নাকি তুমি আমার জন্য রান্না করতে | তাই আবার রান্নার লোক রাখতেও না বলছিলে | এমনিই বাড়ি থাকি না, তুমি যে কি করতে তখন, ভাবলেও আমার বুক কেঁপে উঠছে!!! 

- না মানে দেখছিলামই তো..... এত ভয় পাচ্ছেন কেন??!! কিছু হত না, আমি সব সামলে নিতাম | আপনি যান আমি আসছি |

- হ্যাঁ সে তো দেখতেই পাচ্ছি কেমন সামলাতে | তার চেয়ে বরং তুমি গিয়ে বই খাতা নিয়ে বসো, আমিই চা ছেঁকে নিয়ে আসছি | 

আমার কিছু বলতে যাওয়ার আগেই আবার শুরু করলেন......... 

- উহ: হু, কোনো কথা বলবে না, আমি তোমাকে আর একটু খানির জন্যও রান্না ঘরে দেখতে চাই না | যাও বলছি |

ওরে বাবা, ওনাকে কি করে বলি কি ভাবছি!!! এবার তো বসেই বলবে লেখাটা দেখি, কি দেখাব আমি?? উফফফ, এদিকে খাতাটাও তো খুঁজে পাচ্ছি না | গেল কোথায়??!! এখানেই তো টেবিলের ওপর রেখে গিয়েছিলাম | হাওয়ায় পড়ে যায়নি তো??!! একবার বরং টেবিলের নিচ টাও দেখে নি যদি....... 

- কিছু খুঁজছ?? 

- হ্যাঁ, আরে খাতা টা যে কোথায় গেল বুঝতে....... 

কথাটা বলেই মনে হল আরে স্যার কি এখানেই ভেবে মাথাটা তুলতে গিয়ে গেল চুলের তোয়ালেটা খুলে | একে তো খুঁজে পাচ্ছি না, তার মধ্যে ভিজে চুলটা খুলে যাওয়ার আর সময় পেল না |

- তুমি কি এই খাতা টা খুঁজছ?? 

স্যারের হাতে আমার খাতা টা দেখে আমার তো ভিরমি খাওয়ার মত অবস্থা | আর রক্ষে নেই | কোনো মতে ঢোক গিলে বললাম........ 

- ইয়ে মানে..... হ্যাঁ.... আসলে এটা..... মানে ওই খাতা টা....... 

একি, উনি আমার দিকে এগোচ্ছেন কেন??!! এবার মারবেন নাকি??!! এদিকে পিছতে পিছতে যে দেওয়ালে এসে পিঠ ঠেকে গিয়েছে, পাস কাটিয়ে যে পালাবো তারও উপায় নেই | কি করি ভাবতে ভাবতে এদিক ওদিক দেখতে লাগলাম | তখন স্যার একদম সামনা সামনি দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করলেন........ 

- এটা খুঁজছিলে?? 

- হ্যাঁ মানে....... 

- লেখা হয়ে গিয়েছে তাহলে?? 

- ইয়ে, মানে একবার দেখতে হবে সব ঠিক আছে কিনা |

- ও তাই বুঝি!!! তাহলে আমিই দেখি, যদি কিছু ভুল হয় আমিই ঠিক করে দেব | কি বলো?? 

- না...... না!!! মানে একবার আমাকে দিন, আমি পরিষ্কার করে লিখে দিচ্ছি | ওটাতে হাতের লেখা খুব খারাপ হয়েছে | দিন না প্লিজ!!! 

আমার আরও কাছে সরে এসে চোখে চোখ রেখে জিজ্ঞাসা করলেন......... 

- আমায় তুমি খুব ভয় পাও তাই না আঁখি?? 

ওনার এত কাছে, যেখানে ওনার প্রতিটা নি:শ্বাস আমি নিজের নি:শ্বাসে অনুভব করতে পারছি, যেখানে আমার হৃদয়ের গতিবেগ স্তব্ধ হওয়ার উপক্রম, সেই পরিস্থিতিতে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কি এতই সহজ!!! আমি নিষ্পলক ওনার দিকে চেয়ে রইলাম |

***************************************

আমি এসেছিলাম আঁখিকে শাসন করতে, কিন্তু আবার ওর কাছে হেরে গেলাম | একটা সামান্য খাতা না খুঁজে পাওয়ায় যে কেউ এতটা ব্যাকুল হতে পারে, সেটা ওকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না | ওর ওই ভিজে চুল গুলো যখন মুখের ওপর এসে পড়ে, ওকে ব্যাস্ত করে তোলে | মনে হয় ওর ওই ব্যাস্ততাকে নিজের বুকে আগলে রেখে দিই | যখন হাওয়ায় ভেসে আসা ওর ওই ভিজে চুলের মিষ্টি সুবাস আমায় আবিষ্ট করে রাখে, যখন ব্যাস্ততার মুহূর্তে ওর ভিজে চুলের থেকে ছিটকে আসা জলের ফোঁটা গুলো আমায় মাতাল করে তোলে, যখন আমার কাছে এসে ওর নি:শ্বাসের গতি দ্রুত থেকে দ্রুততর হয়ে ওঠে, তখন আমি অনুভব করি নিজের অস্তিত্ব | খুঁজে পাই বেঁচে থাকার কারন | তখন মনে হয় সময়টা যেন এখানেই থমকে থাকে, আমাদের মাঝে, আমাদের জন্য |
[+] 3 users Like eklasayan's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
সেরা আপডেট দাদা সেরা। দো দিল মিল রাহে হে মাগার চুপকে চুপকে
Like Reply
Wow ... Dada ki darun hocche romantic bornona ta je vasa kujhe pachhi na bornona korar ... Next update r opekkha i roilam ..
[+] 1 user Likes dreampriya's post
Like Reply
জবাব নেই দাদা।  
আসুন আমরা সবাই চটি গল্প উপভোগ করি।
[+] 1 user Likes Mr.Wafer's post
Like Reply
দাদা আপনার কাছে অনুরোধ, প্রতিদিন যেন একটা করে আপডেট পাই Smile
Like Reply
(30-04-2020, 10:00 AM)Mr Fantastic Wrote: সেরা আপডেট দাদা সেরা। দো দিল মিল রাহে হে মাগার চুপকে চুপকে

অনেক ধন্যবাদ দাদা। ভালোবাসা হয়ত এমনই। সাথে থাকবেন ।
Like Reply
(30-04-2020, 12:14 PM)dreampriya Wrote: Wow ... Dada ki darun hocche romantic bornona ta je vasa kujhe pachhi na bornona korar ... Next update r opekkha i roilam ..

Osonkkho Dhonnobaad... Sathe thakben.
Like Reply
(30-04-2020, 12:27 PM)Mr.Wafer Wrote: জবাব নেই দাদা।   

অনেক ধন্যবাদ দাদা। সাথে থাকবেন। 
Like Reply
(30-04-2020, 10:45 PM)Mr Fantastic Wrote: দাদা আপনার কাছে অনুরোধ, প্রতিদিন যেন একটা করে আপডেট পাই Smile

আমি সেটাই চেষ্টা করি দাদা । ভবিষ্যতেও করবো। 
[+] 1 user Likes eklasayan's post
Like Reply
আমার অবস্থাটা আন্দাজ করেই হয়ত উনি একটু সুর নরম করে বললেন........ 

- কি হল উত্তর দিলে না?? আমায় তোমার খুব ভয় করে, খারাপ লাগে না?? 

- ইয়ে.... মানে ভয় করবে কেন..... 

- তাহলে তো নিশ্চয়ই খারাপ লাগে!! 

- আরে, না না খারাপ লাগবে কেন!!! আপনার মত এত বড় মনের মানুষ আমি দুটো দেখিনি, আপনাকে তো আমার খুবই ভালো....... মানে, ইয়ে..... ওই আপনি...... 

আমার আরও কাছাকাছি ঝুঁকে এসে মুখের ওপর পড়া ভিজে চুল গুলো আলতো হাতে কানের পাশ থেকে সরিয়ে মুখটা নামিয়ে বললেন...... 

- ভয় যদি নাই পাও তাহলে এত তোতলাচ্ছ কেন?? বল.... কি আমি???

আমার গালের ওপর ওনার উষ্ণ নি:শ্বাসের ওঠানামা, ওনার ওই আঙুলের ছোঁয়ায় আমার সারা শরীরে যেন বিদ্যুৎ তরঙ্গ প্রবাহিত হল | কথা বলার শক্তি তো আমি অনেক আগেই হারিয়েছি, এবার বোধ হয় মাথা ঘুরে পড়েই যাব | তবু বহু কষ্টে মুখটা নামিয়ে নিয়ে বললাম........ 

- আপনি চা...... 

চকিতে সোজা হয়ে বললেন........ 

- কি??!! আমি চা??!!!

- না মানে আপনি, মানে আপনার চা টা ঠান্ডা হয়ে গেল | আমি বরং গরম করে আনছি |

বলেই ওনার সামনে থেকে ছুটে পালালাম |

সত্যিই মেয়েটা পুরো পাগলী | নিজে তো পাগলই, এবার দেখছি আমায় পাগল করে ছাড়বে | শেষমেষ কিনা আমার এই ছবি!!! এত্তবড় গোল মুখ, ইয়াব্বড় একটা নাক, বড় বড় দুটো চৌকো চোখ, না না হয়ত চশমা বানাতে গিয়েছিল শেষ করেনি | তার ওপর আবার মাথায় বিশাল একটা টিকি??!!! এতদিন লোকের কাছে কম বেশি সুপুরুষ বলেই পরিচিত ছিলাম, শেষে আমার কিনা এই পরিণতি??!! ভগবান আমি সত্যিই বুঝতে পারি না যে এই মেয়েটাকে নিয়ে কি করবো | ওর পড়া ফাঁকি দেওয়ার জন্য বকবো, না ওর ছেলেমানুষি গুলোর কথা ভেবে হাসবো, নাকি ওর ওই লাজুক মুখটা দেখে আরও আরও বেশি করে ভালোবাসবো!!! 

**********************************

আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে মনটা বেশ ফুরফুরে লাগছে | মনে হল সকালের মিঠে রোদ যেন আমায় কিছু বলতে চায়, তাই বিছানা থেকে উঠে আস্তে করে বারান্দার দরজা টা খুলে দিলাম আর আর হুড়মুড় করে একঝলক ঠান্ডা হাওয়া হাজির হল মিঠে রোদের সাথে আমায় সকালের শুভেচ্ছা জানাতে | এই বারান্দা টা আমার বেশ পছন্দের জায়গা | বাড়ির সামনের এই কৃষ্ণচূড়া গাছটা বেশির ভাগ সময়ই ফুলে ভরে থাকে আর এই গাছে থাকা হরেক রকমের পাখি, কাঠবিড়ালি এরা হল আমার মনের সঙ্গী | না, ভাষাটা হয়ত বুঝতে পারে না, তবু এদের সাথে সুখ দু:খ ভাগ করে নিতে আমার বেশ লাগে | যখন হাওয়ায় গাছের পাতা গুলো দুলে ওঠে, দেখে মনে হয় যেন আমার কথায় ওরা সম্মতি জানাচ্ছে | আজ আবার কলেজে নাকি বিশেষ একজন অতিথি শিক্ষক আসবেন, তাই সকলকে সময়ের মধ্যে ক্লাসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে | তার আগে একবার অয়নের সাথেও কথা বলতে হবে ওই বিষয়টা নিয়ে....... এত সহজে তো আর সম্পর্কটা ভেঙে দিতে দেওয়া যায় না | এসব এলোমেলো ভাবতে ভাবতে ঘরে ঢুকে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি, হায় ভগবান!! ৮টা বেজে গিয়েছে যে বুঝতেই পারিনি | এত অল্প সময়ে সবকিছু গুছিয়ে কি করে সাড়ে দশটার মধ্যে কলেজে ঢুকব কে জানে!!! বাড়ি থেকে কলেজে যেতে আসতেই তো প্রায় এক ঘন্টার কাছে সময় লাগে, আজ নির্ঘাত দেরি হবে |

কোনো রকমে চান সেরে কুর্তিটা গলিয়ে বাইরে এসে দেখি স্যার তৈরি | ব্রেকফাস্ট টেবিলে আমার জন্য অপেক্ষা করছেন | কিন্তু আজ যে আমি ওনার সাথে কলেজে যাব না, সেটা ওনাকে বলি কি করে!!! 

- দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এত ভাবনা চিন্তা না করে তাড়াতাড়ি বরং জলখাবার টা খেয়ে নাও | তোমার তো আজ আবার তাড়া আছে |

- হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন বড্ড দেরি হয়ে গেল....... 
এক মিনিট, আপনি কি করে জানলেন আজ আমার তাড়া আছে??!!! 

- তুমি তো আমার সাথেই কলেজে যাবে, গেলেই জানতে পারবে কি করে আমি জানলাম যে তোমার আজ তাড়া আছে |

- ইয়ে..... মানে, আপনাকে একটা কথা বলার ছিল | মানে....... 

- কি মানে মানে করছো, তুমি কবে থেকে এত ভেবেচিন্তে কথা বলা শুরু করলে?? উন্নতি হয়েছে দেখছি |

কোনো রকমে চোখ বন্ধ করে বলে দিলাম........ 

- আজ আমি আপনার সাথে কলেজে যেতে পারব না, একটু কাজ আছে |

- কি??!!! তাহলে কলেজ যাবে কি করে???!!! 

- আসলে অয়নের সাথে একটু অন্য দরকার আছে, তাই আমি অয়ন কে আসতে বলেছি | কলেজেও আমি ওর সাথেই বাইকে......... 

কথাটা শেষ হওয়ার আগেই অয়ন এসে বাইকের হর্ন দিতে আমিও আসছি বলতে বলতে ছুট লাগালাম | স্যার নিশ্চয়ই খুব রেগে যাবেন কিন্তু আমার হাতে এখন একদম সময় নেই, ফিরে এসে ওনার রাগ সামলানো যাবে | এতদিনে ওনার রাগ সামলানোর অভ্যাস আমার হয়ে গিয়েছে |

************************************

কি হল ব্যাপারটা!!! আঁখি কলেজে আমার সাথে না গিয়ে কলেজ যাওয়ার জন্য অয়ন কে বাইক নিয়ে আসতে বলেছে..... আর কি বলল অয়নের সাথে দরকার আছে??!! সারাদিন তো কলেজে একসাথেই থাকে, এমন কি দরকার যার জন্য ওকে আলাদা করে দেখা করতে হবে!!! কি এমন কথা আছে যেটা কলেজে বলা সম্ভব না??!!! এখন আমার থেকে অয়ন ওর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেল!!! আমি যে ওর জন্য অপেক্ষা করে বসে আছি তাতে ওর কিছুই আসে যায় না??!!! এত তাড়াতাড়ি যে আজ ঠিক মতো বসে জলখাবারটাও খেতে পারল না | কি এমন আছে অয়নের মধ্যে যে আমার থেকে ওর প্রাধান্য আঁখির কাছে বেশি হয়ে গেল, এটা তো আমায় জানতেই হবে | 

- আরে, আরে দাদাবাবু, জলখাবারটা তো খেয়ে যান........ 

- আমার খিদে নেই, আমি বেরচ্ছি | আপনি কাজ হলে সব গুছিয়ে চলে যাবেন |

- ওই দেখ দিকিনি কান্ড, এই বলল তাড়াতাড়ি খাবার বাড়তে খিদে পেয়েছে, হঠাৎ যে কি হল কিছু মুখে না দিয়েই বেরিয়ে গেল | এদিকে নতুন দিদিমণি খেতে বসেও কিছু খেল না, বুঝি না বাপু এদের মতিগতি |
বলি এতই যখন পীড়িত তখন মুখ ফুটে বল না কেন!!! এ বলবে দাদাবাবুর পছন্দের জিনিষ বানাতে, উনি বলবেন দিদিমণির কি পছন্দ সেই বুঝে কাজ করো | আমার হয়েছে জ্বালা, উফফফ!!! এখন আবার সব গুছোতে হবে |

**********************************

- তুই ঠিক সময়মত এসে বাঁচিয়ে নিলি | জানিস, নাহলে আজ স্যারের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতেই দেরি হয়ে যেত | 

- আমি বাঁচালাম তোকে না তুই আমাকে বাঁচালি!!! কেউ যে আমার জন্য এত কিছু করবে কোনো দিন ভাবিনি | সেখানে ভগবান আমাকে উপহার দিলেন তোকে | তোকে পাশে পাওয়া যে কত বড় পাওনা, এটা তোকে সারা জীবন বলেও বোঝাতে পারব না |

- হয়েছে আমার প্রশংসা, বাকি টা পরে করিস | এবার কলেজের দিকে এগোনো যাক | আজ কিন্তু গেস্ট লেকচারার আসছেন, দেরি করে ঢুকলে আর রক্ষে থাকবে না |

- ওহ:, হ্যাঁ হ্যাঁ চল | তুই ঠিক করে বসিস আমি কিন্তু একটু জোরে চালাবো, না হলে সময়মত ঢুকতে পারব না |

- হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক আছে | যত জোরে ইচ্ছে চালা, ব্যাস হাত পা গুলো যাতে গোটা থাকে এইটুকু খেয়াল রাখিস |

- হে হে তুই যে কি বলিস না, আমি থাকতে তোর কিছু হবে ভাবলি কি করে !!!

- হুমমম, বুঝলাম | এবার চল |

কোনো রকমে কলেজে ঢুকে হাঁফাতে হাঁফাতে ছুটলাম ক্লাসের দিকে | ঠিক যেটা ভেবেছিলাম, রুমের দরজা বন্ধ মানে গেস্ট লেকচারার এসে গিয়েছেন | এবার কি করি, এই ক্লাস মিস করার তো প্রশ্নই ওঠে না | কিন্তু ঢুকব কি করে!!! দুজনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছি, অয়ন বলল......... 

- দেখ এত ভেবে লাভ নেই | ক্লাস যখন করতেই হবে আর দেরি যখন হয়েই ছে, তখন বকাও আমাদের খেতেই হবে | আর তাতে অন্তত পড়াটা মিস হবে না | সুতরাং আর দেরি না করে চল |

- ইয়ে, মানে, বলছি তুই আগে ঢুকবি!!প্লিজ!!! 

- আচ্ছা ঠিক আছে...... 

বলে একটু নক করে দরজা টা ফাঁক করতেই দেখি অয়ন হা করে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে রইল | 

আমি ওর এহেন আচরণ দেখে, পাশের পাল্লাটা খুলে তো ভিরমি খাওয়ার জোগার | ইনি আজকের গেস্ট লেকচারার!!! মানে অনিরুদ্ধ স্যার!!!! তাই তখন বললেন কলেজে গেলেই জানতে পারবে সবকিছু | হে ভগবান, আজই এমনটা হওয়ার ছিল!!!! 

আমি আর অয়ন দুজনে পাশাপাশি হা করে দাঁড়িয়ে আছি দেখে অনিরুদ্ধ স্যার বেশ রাগী স্বরে বলে উঠলেন......... 

- এটা তোমাদের ক্লাসে আসার সময়?? পড়াশোনার ইচ্ছে না থাকলে রাস্তায় রাস্তায় বাইক নিয়ে ঘুরে বেড়ালেই পারো, অন্তত তোমাদের দেরি করে আসার ফলে বাকিদের বিরক্ত তো হতে হবে না | কোথায় ছিলে এতক্ষন দুজনে??? 

আমার মুখে তো কথাই সরছে না দেখে অয়নই তাড়াতাড়ি বলল........ 

- আসলে ট্রাফিকে আটকে একটু দেরি হয়ে গিয়েছে স্যার | আগে কোনো দিনও এমন হয়নি, আর ভবিষ্যতেও এমন কখনও হবে না | আমরা আপনার ক্লাস করার জন্য খুবই আগ্রহী | অন্তত শেষবারের মত ক্ষমা করে দিন আমাদের |

- আমাদের??? কেন ও কি কথা বলতে পারে না, নাকি তোমার........ 

আমি তাড়াতাড়ি নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম........ 

- না স্যার..... মানে হ্যাঁ স্যার, আমারও ভুল হয়ে গিয়েছে | দয়া করে এবারের মতন ক্লাস করার অনুমতি দিন |

তখনকার মত মুখে ক্লাস করার অনুমতি দিলেও আমার ওপর নিবদ্ধ ছিল ওনার স্থির দৃষ্টি | ওনার ওই অগ্নি দৃষ্টির সম্মুখে বসে পড়াশোনায় মন বসানো যে কি মুশকিল, সেটা একমাত্র আমিই বুঝতে পারছি | আমি জানি ওনার মনে এখন হাজার প্রশ্ন | কেন আমি অয়নের সাথে বেরলাম, কেন কলেজে আসতে এত দেরি হল, ইত্যাদি ইত্যাদি | দেবো দেবো, আমি সব প্রশ্নের উত্তর দেবো | একবার বাড়ি যাই, তখন সব বুঝিয়ে বলব আপনাকে |

দেড় ঘন্টার ক্লাস হওয়ার পর আমাদের একটু টিফিনের জন্য ব্রেক দেওয়া হয়েছে বলে সবাই এসে ক্যান্টিনে জড়ো হয়েছি | টুকটাক হাসি মজা চলছে | কিন্তু আমার যে টেনশনে মুড অফ হয়ে আছে | আর আমাদের ক্লাসের মেয়ে গুলোও বটে, এমনিতে তো সবার দুটো তিনটে করে বয়ফ্রেন্ড আছে, তবু অনিরুদ্ধ স্যারকে দেখে এমন করছে যেন কোনোদিন ছেলে দেখেনি | বেশ বিরক্তই লাগছিল | উঠতে যাব, দেখি অনিরুদ্ধ স্যার এদিকেই আসছেন | আমি কিছু বলার আগেই বাকি মেয়ে গুলো পড়া জানবার বাহানায় ওনাকে গিয়ে ঘিরে ধরল | সারা বছর এরা বই খাতা ছুঁয়েও দেখে না, আর আজ দেখো...... আমি দূরে দাঁড়িয়ে আছি, ওনার দিকেই তাকিয়ে আছি সেটা বেশ ভালোই বুঝতে পারছে অথচ একবার তাকাচ্ছেন না | আমিও রাগ করে অয়নের পাশে বসে পড়লাম |

- তোমাদের মত ছাত্র ছাত্রীদের পেয়ে আমার ভীষন ভালো লাগছে | তোমরা পড়াশোনা নিয়ে কত সিরিয়াস, না হলে এখানে এমন অনেকে আছে যারা কলেজে আসে শুধু ঘুরতে, গল্প করতে | যতই তাদের পড়াশোনার সুযোগ করে দাও না কেন, তারা কলেজে আসে শুধু বড়লোকের ছেলে পটাতে, আড্ডা দিতে | পড়াশোনা টা তো শুধু বাহানা লোক দেখানোর জন্য, বাড়ি থেকে ফাঁকি মেরে বাইরে বেড়ানোর জন্য |

অনিরুদ্ধ স্যার কথা গুলো এমন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন যে মোটামুটি সেখানে উপস্থিত কারোরই বুঝতে বাকি রইল না যে কথা গুলো আমাকে উদ্দেশ্য করে বলা | কিন্তু উনি একবারও আমার সাথে কথা না বলে এভাবে আমাকে সবার সামনে অপমান করতে পারলেন!!! একবারও বাঁধল না!!! মানছি দোষ আমার, ওনাকে আগে থেকে সব কিছু বলিনি, তাই বলে উনি সবার সামনে আমাকে এইভাবে ছোটো করবেন!!! শেষমেষ উনিও আমাকেই ভুল বুঝলেন, মিলিয়ে ফেললেন বাকিদের সাথে | এতদিন এত কাছে থেকেও আমায় চিনলেন না | হয়ত ভুলটা আমারই, আমিই ওনার দয়া টাকে ওনার ভালোবাসা ভাবার ভুল করেছি | আজ যা হল খুব ভালোই হল | এটা দরকার ছিল আমার ভুলটা ভাঙার জন্য | শুধু কষ্ট হচ্ছে একটা কথা ভেবে যে........ আমি আবারও হেরে গেলাম, ঠকে গেলাম কঠোর বাস্তবের কাছে!!!!!
[+] 2 users Like eklasayan's post
Like Reply
ওফফ আবার খালি ভুল বোঝাবুঝি
Like Reply
Dur abar vul bojha ... Kobe je romantic scene suru hobe .. kichu valo lagche na ..
Like Reply
(01-05-2020, 01:06 PM)dreampriya Wrote: Dur abar vul bojha ... Kobe je romantic scene suru hobe .. kichu valo lagche na ..

সত্যিকারের ভালোবাসা এরকমই  Sad   হয় আর তাছাড়া সবুরে মেওয়া ফলে  Big Grin
Like Reply
(01-05-2020, 09:57 AM)Mr Fantastic Wrote: ওফফ আবার খালি ভুল বোঝাবুঝি

পরিস্থিতি মানুষকে অনেক সময় ভুল বোঝায় দাদা। কি আর করা যাবে বলুন । দেখা যাক কি হয় সুদূূর ভবিষ্যতে। সাথে থাকবেন।  
[+] 1 user Likes eklasayan's post
Like Reply
(01-05-2020, 01:06 PM)dreampriya Wrote: Dur abar vul bojha ... Kobe je romantic scene suru hobe .. kichu valo lagche na ..

Poristhiti manush ke onek somoy bhul bojhay... Ki r kora jabe bolun... Dekha jak ki hoy sudur bhobishyote.... Sathe thakben. 
[+] 1 user Likes eklasayan's post
Like Reply
(01-05-2020, 08:20 PM)Mr Fantastic Wrote: সত্যিকারের ভালোবাসা এরকমই  Sad   হয় আর তাছাড়া সবুরে মেওয়া ফলে  Big Grin

একদম ঠিক বলেছেন দাদা।
[+] 1 user Likes eklasayan's post
Like Reply
ক্যান্টিন থেকে বেরিয়ে আর এক মুহূর্তও দাঁড়াতে ইচ্ছা করছিল না, তাই কাউকে কিছু না বলেই বেরিয়ে এলাম | আজ উনি আমাকে এই ভাবে সবার সামনে বলতে পারলেন কথা গুলো!!! একবার আমায় জিজ্ঞেস তো করতে পারতেন যে আমি অয়নের সাথে কোথায় গিয়েছিলাম, কেন গিয়েছিলাম | উনি আমাকে আগেও অনেকবার বলেছেন এই কথা গুলো | তখন আমি মনে করতাম সেই রাগের কথা গুলোর আড়ালে ওনার আমার জন্য চিন্তা, না বলা ভালোবাসা লুকিয়ে আছে | উনি যে সেগুলো মন থেকে বলতেন ভাবতে পারি নি, ভাবতে পারি নি নিজে নিজের কাছে এতটা ছোটো হয়ে যাব | 

ছোটো বেলায় মা বাবা কে হারানোর পর ভালোবাসা কি, কাছের মানুষ বলতে কি বোঝায় কোনোদিন বুঝিনি | জানতাম না | যেদিন থেকে বুঝতে শিখেছি, সেদিন থেকে কাকু কাকীমার লাথি ঝাঁটা খেয়েই বড় হওয়া | লোকে বলে বড় দাদা দিদি থাকা ভাগ্যের, আমারও খুড়তুতো দিদি ছিল, কিন্তু সে থাকা যে ভাগ্যের চেয়ে বেশি দুর্ভাগ্যের ছিল | চিরকাল অন্যের ফেলে দেওয়া জিনিস কুড়িয়েই বড় হয়েছি, সে জামা কাপড় বই খাতাই হোক আর খাবার দাবার ই হোক | নিজের বলতে থাকার মধ্যে ছিল একটু রুপ, কিন্তু তাও চিরকাল গলার কাঁটার মত বিধত | বাড়িতে কাকুর পার্টির অথবা কাজের যখনই মিটিং বসত, নানা অছিলায় কাকীমা আমায় তাদের সামনে পাঠাতেন | কারণটা কি আমি আর বুঝতাম না আর তাই হয়ত ছোটো থেকে লড়াই করে নিজের সন্মান বাঁচানোটা শিখে ফেলে ছিলাম | যখন রুপসা দি কাকীমার গা ঘেঁসে বসে কিছু আবদার করত আর কাকীমা মাথায় হাত বুলিয়ে সেই আবদার পূরণ করত, তখন আমারও খুব ইচ্ছে করত এমন ভাবেই আবদার করতে | না না কিছু জিনিসের নয়, একটু ভালোবাসা পাওয়ার | প্রথম প্রথম বুঝতাম না, ছোটো ছিলাম, তো কাকীমা কেই মা ভেবে ছুটে যেতাম | একটু বড় হতে শিখে যাই সবার কপালে ভালোবাসা থাকে না | তাই ছুট্টে চলে আসতাম নিজের ঘরে | বাবা মার ছবিটার দিকে তাকিয়ে খুব কাঁদতাম আর অভিযোগ করতাম কেন ফেলে গেলে আমায় একলা এইখানে!!! কেন নিয়ে গেলে না আমায়!!!! তোমরাও কি আমায় ভালোবাসতে না??!!! 

এই অবহেলিত অবাঞ্ছিত জীবনে একঝলক মুক্ত বাতাসের মতন এসেছিলেন অনিরুদ্ধ স্যার | ভগবান যেন আমার ওপর করুণা করে পাঠিয়ে ছিলেন ওনাকে আমার স্বপ্ন পূরণের সারথী হিসাবে | ওনার আকর্ষণীয় পুরুষালী ব্যক্তিত্ব, দৃঢ় সাবলীল স্বচ্ছ ব্যবহারে মুহূর্তে আমি ওনার অনুরাগিনী হয়ে উঠেছিলাম | ওনার পাশে দাঁড়ানোর যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও উনি যখন নিজে থেকে দায়িত্ব নিয়ে আমার পড়াশোনার স্বপ্ন পূরণের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন, ওনার প্রতি শ্রদ্ধায় আমার মাথা নুইয়ে গিয়েছিল | ওনার পড়া বোঝানোর ধরন, মানুষ কে তার প্রাপ্য সন্মান দিয়ে আপন করে নেওয়ার ক্ষমতা, বিশেষ করে ওনার ওই দুটি দীর্ঘ গভীর চোখ আমাকে ওনার প্রতি আকর্ষণ করত | উনি নিজের পদমর্যাদা, বয়সের গাম্ভীর্যতা বজায় রাখতে কম কথা বললেও যখন আমার ছেলে মানুষী গুলোতে ওনার ঠোঁটের কোণে এক ঝলক হাসির রাখা ফুটে উঠত, আমি হারিয়ে যেতাম | আমার কল্পনায়, ভালোবাসা পাওয়ার সুপ্ত ইচ্ছে গুলো হাজার দমিয়ে রাখলেও বার বার মাথা চাড়া দিয়ে উঠত | ওনার অতীত জীবন সম্পর্কে সব জেনেও, ওনার সম্পর্কে আমার এই অনুভূতি গুলো পাপ, অনৈতিক জেনেও আমি ভালোবেসে ফেলি ওনাকে | 

তবে আমি কোনো দিনও চাই নি ওনার সামনে নিজের অনুভূতি গুলো প্রকাশিত হোক | কারন এই ভালোবাসা যে একান্ত ভাবে আমার | এতে না ছিল কোনো শারীরিক চাহিদা, না কোনো অধিকার বোধ, না কোনো প্রতিশ্রুতি | এ ছিল ওনার প্রতি আমার জানানো শ্রদ্ধা, আমার নিত্য পূজার পবিত্র ফুল | আর তাই তো যখন কাকু কাকীমা আমার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে, আমি নি:শর্তে রাজি হয়ে যাই | চেষ্টা করি ওনাকে ভুলতে, ওনার থেকে দূরে চলে যেতে, যাতে আমার মত অভাগীর জন্য কোনো দিন ওনাকে কোনো রকম অসুবিধা, অপমানের সম্মুখীন হতে না হয় | সরেও গিয়েছিলাম | কিন্তু উনিই আবারও আমার পরিত্রাতার রুপে ফিরে এসেছিলেন আমাকে সম্পর্কের চোরাবালি থেকে উদ্ধার করতে |

আমার মত একজন সামান্য মেয়ের জন্যও যে ওনার মত একজন এত বড় মাপের মানুষ এতটা ভাবতে পারেন, এটা ভেবেই আমি কৃতজ্ঞতায় মাটিতে মিশে গিয়ে ছিলাম | সেদিন ওনার চোখে দেখেছিলাম আমার জন্য চিন্তা, রাগ, দু:খ,কষ্ট | আমার জন্য, একান্ত আমার জন্য হয় ওনার অনুভূতি গুলো, আমি আমার হৃদয়ে অনুভব করেছিলাম | তারপর ওনার সাথে থাকতে থাকতে ওনাকে আরও নতুন ভাবে চিনতে শুরু করেছিলাম, অনুভব করছিলাম কিছু আছে যেটা একান্ত ভাবে শুধু আমার | 

তবে আজ যখন উনি কথা গুলো বলছিলেন, বড় অচেনা ঠেকছিল ওনার চোখের ভাষা, মুখের অভিব্যক্তি | এতটা অস্থির, অবিশ্বাসী চোখের ভাষা এর আগে কখনও দেখিনি ওনার চোখে | এতদিনের চেনা মানুষটা এক ঝটকায় এতটা বদলে যেতে পারে কি করে, এ যে অবিশ্বাস্য!!! সেদিন বৃষ্টির রাতে দেখা ওনার চোখের ওই মায়া ভরা চাওনি, ভালোবাসা মাখা কন্ঠস্বর, এত দ্রুত কি করে বদলে যেতে পারে!!! এ যে অকল্পনীয়!!!! 

কলেজ থেকে বেরিয়ে ভাবনার মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে এতটা দূর চলে এসেছি বুঝতেই পারিনি | দুপুর বেলা, তার ওপর আবার গরম কাল, তাই রাস্তা ঘাটও বেশ ফাঁকা | এমনিই এদিকে বিশেষ বাড়ি ঘর না থাকায় ফাঁকাই থাকে | টুকটাক যা আছে তারাও এই রোদের হাত থেকে বাঁচতে যে যার বাড়িতে ঢুকে পড়েছে | তাই চারিদিক বেশ শুনশান | মাঝে মাঝে শুধু দু-একটা গাড়ি ঝড়ের গতিতে ছুটে যাচ্ছে |

রাস্তার ওপারে একটা টিউবওয়েল দেখতে পাচ্ছি | এই গরমে এতটা পথ হেঁটে গলাটা বেশ শুকিয়ে গিয়েছে | বোতলের জল তো অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল | দুদিক দেখে তাড়াতাড়ি রাস্তাটা পার হয়ে টিউবওয়েলটার কাছে এসে সবে দু-এক ঝাপটা জল মুখে দিয়ে আজলা করে একটু জল খেতে যাব, সামনে একটা খয়েরি রঙের টাটা সুমো খুব জোরে এসে থামল | আচমকা এমন একটা গাড়ি সামনে এসে পড়ায় বেশ চমকেই গিয়েছিলাম | গাড়ির ভিতরটা ভালো করে দেখা যাচ্ছে না | মোটামুটি মানুষ আছে আন্দাজ করে বললাম............

- চোখে দেখতে পান না নাকি?? এভাবে কেউ গাড়ি চালায়??!!! 

আমার কথাটা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই গাড়ি থেকে যে নামল তাকে দেখেই আমার চক্ষু চড়কগাছ......... 

- এ কি রাঘব তুমি!!! তু.... তুমি এখানে কি করছো??!!!!

- হে হে, চিনতে পেরেছো তাহলে | আর চোখে তো ঠিকই দেখতে পাই মামনি, তাই তো ঠিক জায়গায় গাড়ি থামিয়েছি | কি!!!! 

- কিন্তু তুমি তো জেলে..... তোমায় তো ধরে নিয়ে গিয়েছিল!!!! 

- ঠিক, কিন্তু কতদিন আর ধরে রাখবে বলো সোনা | তোমায় ছাড়া যে আমার রাতে ঘুম আসত না জানেমান |

- একদম কাছে আসবে না, দূরে.... দূরে থাকো বলছি!!! 

- আর কতদিন দূরে রাখবে সোনা, এবার তো একটু তেষ্টা টা মেটাতে দাও | সেই প্রথম রাঘবের নাগাল থেকে কোনো মেয়ে পালিয়ে ছিল, এবার তো সব সুদে আসলে তুলব | সেদিন তোর আর ওই কুত্তা অনিরুদ্ধ টার জন্য আমায় অনেক অপমানিত হতে হয়েছিল | তোদের জন্য আমার ব্যবসার অনেক লোকসান হয়ে যায় | তোর জন্য যে পার্টিরা আমায় মাল দিয়েছিল তারা আমায় হন্যে হয়ে খুঁজছে | কাল তোকে তাদের হাতে তুলে দিতে পারলেই ব্যাস | শালী তোর পিছনে অনেক দিন ধরে ঘুরছি, সব সময় কেউ না কেউ, কোনো না কোনো নাগর ঘিরে রয়েছে তোকে | তবে আজ নাগাল পেয়েছি |

- আগের বারের কথাটা নিশ্চয়ই ভুলে গিয়েছিস না?? অনিরুদ্ধ স্যারের চড় টা মনে নেই বুঝি??? তাই আবার এসেছিস আমার দিকে হাত বাড়াতে |

- এই শালী একদম বড় বড় কথা বলবি না, খুব মনে আছে | রাঘব এত সহজে কিছু ভুলে যায় না | এবার সব পাওনা মিটিয়ে দেব দেখে নিস | এই কোথায় রে সব, তোল মালটাকে!!! 

- এই একদম গায়ে হাত দিবি না, দূরে সর বলছি!!! 

- না সোনা হাত না, এবার সোজা ঠোঁট দেব | হা হা হা!!! 

সামনের ছেলেটাকে এক ধাক্কা মেরে পালাতে যাব, হঠাৎ মনে হল মাথায় যেন খুব ভারী কিছু দিয়ে কেউ আঘাত করল | ধীরে ধীরে চোখের সামনে সব ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে | অচৈতন্য অবস্থায় বুঝতে পারছি ওরা আমার মুখ, হাত পা বেঁধে গাড়িতে তুলছে | শেষ মুহূর্তে একবার অনিরুদ্ধ স্যারের মুখটা ভেসে উঠল |

***********************************

আঁখিকে তখন ওভাবে সবার সামনে বলাটা ঠিক হয়নি | কিন্তু ওর একবার আমাকে বলে যেতে কি হয়েছিল!!! আমি কি ওকে কিছুতে বাঁধা দিই??!! তবে এবার হয়ত একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি, সবার সামনে এভাবে বলাটা আমার ঠিক হয়নি | মনে হয় খুব খুব কষ্ট পেয়েছে, তাই পরের হাফের ক্লাসেও আসে নি | উফফফ কি যে করি!!! আসলে ওকে আর অয়নকে একসাথে দেখলে যে আমি মাথার ঠিক রাখতে পারি না | ভেবেছিলাম এতদিন যে অনুভূতি গুলো নিজের কাছে লুকিয়ে ছিলাম, আজ কলেজ থেকে ফেরার পথে ওকে সব বলে দেব | বলে দেব যে সেই প্রথম দিন থেকেই ওকে আমি কতটা ভালোবেসে ফেলেছি | বলে দেব রোজ নতুন করে ওর প্রেমে পড়তে, ওকে ভালোবাসতে আমার ভালো লাগে | ও শুধু আমার, ওর প্রতিটা দুষ্টুমি, অভিমান, আবদার পূরণ করার অধিকার শুধু আমার | ওর প্রতিটা স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব, অধিকার শুধু আমার | কিন্তু সকালের ওই ঘটনাটাই সব গোলমাল করে দিল |

কিন্তু কলেজ প্রায় ফাঁকা হতে চলল, মেয়েটা গেল কোথায়!!! করিডোর দিয়ে অয়নকে যেতে দেখে জিজ্ঞাসা করলাম........ 

- তুমি আঁখিকে দেখেছো?? ও কি তোমার সাথে?? 

- না স্যার, ওর সাথে সেই ক্যান্টিনেই কথা হয়েছিল | তারপর তো ও ক্লাসেও আসে নি, আর অন্য কোথাও ও তেমন দেখেছি বলে মনে পড়ছে না | কেন স্যার কিছু হয়েছে??? 

- না তেমন কিছু না | আচ্ছা শোনো, আজ সকালে তোমরা একসাথে কোথায় গিয়েছিলে বল তো??!!! 

- আঁখি আপনাকে এখনও বলে নি??!! 
আসলে আমি একটি মেয়েকে ভালোবাসি, সেই ছোটো বেলা থেকে | বাড়িতেও সকলে জানে কিন্তু কিছুদিন হল পড়াশোনার চাপে একদম ওকে সময় দিয়ে উঠতে পারছিলাম না | আর তাতেই মহারানীর রাগ হয়ে যায় | কথা বলা, দেখা করা সব বন্ধ করে দেয় | ও আমার সিচুয়েশন টা বুঝতে চায় না বলে আমারও একটু রাগ হয় | তাইই আঁখি কয়দিন ধরে আমার আর ওর মধ্যে ভাব করানোর জন্য....... আর আজও ওর সাথে দেখা করে সামনা সামনি কথা বলতে আমি আর আঁখি দুজনে ওর কলেজের সামনে গিয়েছিলাম | তবে এই কথা গুলো আমিই ওকে ভয়ে বলতে না করি | যদি আপনি...... ও কিন্তু খুব কষ্ট পেত আপনার থেকে কথা গুলো লুকিয়ে | কিন্তু আঁখি আমাদের জন্য যা করল তার প্রতিদান আমরা সারা জীববেও দিতে পারব না, আর দিতেও চাই না | শুধু এভাবেই ওর পাশে বন্ধুর মত থাকতে চাই | আসলে কি জানেন তো স্যার...... ভালো তো আমরা সবাই বাসি, কিন্তু সেই ভালোবাসাকে বিশ্বাস করে সময় দিতে আমরা পারি না বা চাই না | তাই সম্পর্কে এত জটিলতা চলে আসে | আর এই বিষয় টা আমি আমার জীবন দিয়ে অনুভব করলাম | তবে আমি লাকি যে আঁখির মত একজন বন্ধু পেয়েছি |
এ কি স্যার আপনার চোখে জল!!! আমি কি কিছু ভুল কথা বলে ফেললাম??!!! খুব খুব সরি!!! 

- না ভুল তুমি কর নি, ভুল যা করার করেছি আমি আঁখিকে অবিশ্বাস করে | তুমি ঠিক বলেছ, শুধু ভালোবাসলেই হয় না, ভালোবাসার ওপর বিশ্বাস ও রাখতে হয় | 

আমার মনে হয় আঁখি বাড়ি চলে গিয়েছে, আমি আর দেরি করতে চাই না | আমাকে আমার ভুলটা শুধরে নিতেই হবে, আর সেটা আজই করতে হবে |

**************************************

একি!! বাড়ি এত অন্ধকার কেন!!! তাহলে কি আঁখি এখনও ফেরে নি??!! কিন্তু সন্ধ্যে হতে চলল ও গেল কোথায়??!! একটা ফোন করে দেখি |

ফোনটা বার করতেই দেখি থানার বড়বাবুর পাঁচটা মিসড কল | কি হল উনি হঠাৎ এতবার!!! ভাবতে ভাবতে আগে ওনাকেই ফোন টা করলাম...... 

- হ্যালো, বড়বাবু কথা বলছেন?? আমি অনিরুদ্ধ কথা বলছি | আপনি ফোন করছিলেন, গাড়ি চালাচ্ছিলাম তাই ধরতে পারি নি | বলুন স্যার কি হয়েছে??

- আরে আপনাকে এবং আঁখি ম্যাডাম কে সাবধান করার জন্য ফোন করছিলাম | কারণ রাঘব কে অন্য সেল এ ট্রান্সফার করার সময় ও পালিয়েছে | আর বর্তমানে আপনাদের ওপরেই ওর রাগ বেশি, তাই একটু সাবধানে থাকবেন | বিশেষ করে রাতের দিকে একলা না ঘোরাই ভালো | তবে আমরা চারিদিকে পাহারা বাড়িয়ে দিয়েছি, খুব তাড়াতাড়ি ও আবার ধরা পড়বে | ততদিন আপনারা একটু সাবধানে..... এই জন্যই ফোন করেছিলাম | কিন্তু আপনার ফোন ব্যাস্ত ছিল আর ওনার ও তো ফোন বন্ধ |

ফোন বন্ধ!!!! কিন্তু কেনো???!!! 

- হ্যালো, হ্যালো....... অনিরুদ্ধ বাবু শুনতে পাচ্ছেন??? 

- হ্যাঁ মানে...... আসলে একটু বিপদ হয়েছে যে আঁখি দুপুরের দিকে কলেজ থেকে বেড়িয়েছে কিন্তু এখনও বাড়ি ফেরে নি | আমি ওর বন্ধুবান্ধব দের থেকে খোঁজ নিচ্ছি আর আপনি যদি একটু দেখেন তো......

- কি:!!!!! এটা কিন্তু সত্যিই চিন্তার বিষয় | ঠিক আছে আপনি আপনার মত খোঁজ চালান, আমি এদিকটা দেখছি কি করা যায় | কিছু জানতে পারলেই জানাবেন |

- হ্যাঁ অবশ্যই আর অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে |

ফোনটা রেখে আমার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে | পায়ের তলা থেকে যেন মাটি সরে যাচ্ছে | আঁখি কোথায়??!! ওর কোনো বিপদ হল না তো???!!! 

মিনিট দুয়েক একটু ধাতস্থ হয়েই ফোন করলাম অয়ন কে | আঁখির পরিচিত যারা আছে সবার কাছে খোঁজ নিতে বললাম ওকে আর আমি ছুটলাম ওর কাকু কাকীমার বাড়ি, ওনারা নিশ্চয়ই কিছু জানবেন |
[+] 1 user Likes eklasayan's post
Like Reply
Ja abar to puro action hobe mone hocche ... Darun hocche dada ....
[+] 1 user Likes dreampriya's post
Like Reply
দারুন লেখা, গল্প সবসময় একটা রোমাঞ্চকর পরিস্থিতি নিয়ে এগিয়ে চলছে। দেখা যাক কিভাবে আঁখিকে উদ্ধার করা হয়
Like Reply
(02-05-2020, 08:32 AM)dreampriya Wrote: Ja abar to puro action hobe mone hocche ... Darun hocche dada ....

Onek Dhonnobaad lekhata etota pocchondo korar jonno r amay etota utsaho deoar jonno r obosshoi sathe thakar jonno. 
Like Reply




Users browsing this thread: 6 Guest(s)