12-04-2020, 08:33 AM
Sad life
গল্পের মত বাস্তব
|
12-04-2020, 08:33 AM
Sad life
13-04-2020, 04:40 PM
13-04-2020, 04:41 PM
13-04-2020, 04:43 PM
- হ্যাঁ রে রাঘব, তোর সাথে সেদিন যে মেয়েটাকে দেখলাম, কে রে?
- কোন মেয়েটার কথা বলছিস তোরা? - চাঁদু বেশি ভাও খেও না, আমি সেদিন মাঠের ধারে সব দেখেছি | হেব্বি দেখতে তো মালটা, নতুন পাখি? - হে হে হে..... যা বলেছিস ভাই, এক্কেবারে নতুন | - একলা একলাই কি মিষ্টি টা খাবে চাঁদু? আমরা কবে মালটার স্বাদ পাবো? - সে দেখব ক্ষণ, আগে বল তো এই মালটা কে? আমাদের ঠেকে তো আগে কোনো দিন দেখিনি? দেখে তো আবার ভদ্দরলোক বলে মনে হচ্ছে | ডাক তো | - ওয়ে...... ও হিরো....... এদিকে এসো তো চাঁদু, একটু বদন টা দেখি | - আমাকে বলছেন? - হ্যাঁ সোনা !!!!! তা তোকে তো এদিকে কখনও দেখিনি, নতুন নাকি? - হ্যাঁ, এই কদিন হল - ও, তা দেখে তো মনে হয় না | আগে কখনও মাল চেখেছো? তাহলে এদিকে? প্রেমে আঘাত টাঘাত........... - হুমমমমম, ঠিকই ধরেছেন | জীবনে ওই একজনকেই ভালোবাসলাম, সেও কিনা বলে আমি ধোঁকাবাজ!!!! ফুরররর!!!! সব শালা মেয়ে গুলোই এমন | - এই জন্যই তো, একটার পিছনে ছুটে মরবি তো এমনই হবে বুঝলি | কিন্তু রাঘব দাকে দেখ, আজ একটা মাল তুলছে তো কাল একটা | - তাই নাকি? দারুন তো, কি করে করো গো রাঘবদা? - আরে ক্যালমা আছে সোনা, দম চাই রে দম | - তা তুমি এতজনকে একসাথে সামলাও কি করে? - আরে কাকে সামলাবে, রাঘবদা একজনকে নিয়ে থাকলে তবে তো | একটা করে ফুল তোলে, আমরা সবাই মধু খাই | তারপর, পগার পার | - আরেব্বাস!!!! দারুন তো!!!! তা এখনও কি কেউ........... - আরে আমাদের রাঘবদা কখনও ফাঁকা থাকে না | তোর আসার আগে তো এটা নিয়েই কথা হচ্ছিলো | ও রাঘবদা বলো না বলো না, মালটা কিন্তু হেব্বি | - আরে তেমন কিছু না, ক'দিন হয়েছে | আমার কোন এক দূর সম্পর্কের বোনের কোনো এক আত্মীয় না কি যেন হয় | তবে মালটা এক্কেবারে টাটকা | - তা মিষ্টিটা কেমন? - আরে ধুররররর!!!! এখনও মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে বসে আছি, খাওয়া হয়নি | মালটার হেব্বি ঘ্যাম | - কি বলো গুরু????? তুমি এখনও....... এটা মানা গেলো না | - আরে হ্যাঁ রে, এখনও একটু ছুঁয়েও দেখিনি | তবে দাঁড়া বিয়েটা হতে দে, তারপর দেখবো কত গরম থাকে | - বিয়ে!!!!!! আর তুমি ???!!!!!! হাঁসালে | তাহলে তো তোমার ব্যাবসা লাটে উঠবে | - আরে ধুরররর!!!! এ মধু পেতে একটু বেশি সময় লাগছে ঠিকই, তবে মালটার হেব্বি ডিম্যান্ড | যে দেখেছে সেইই এক পায়ে খাড়া, যত টাকা বলবো পেয়ে যাবো | সাধে কি বিয়েটা করছি চাঁদু!!!! কি বুঝলে সোনা??!!! এই তোর নামটা কি রে? এতক্ষণে তো তোর নামটাই জানা হলো না | - রুদ্ধ, আমার নাম রুদ্ধ | - খাসা নামটা তো!!!! সঙ্গে থাক উন্নতি হবে, তবে আজ চলি রে | ক'দিন শালা এই বিয়ের হ্যাপা সামলাতে হবে | তারপর সোজা তোদের মিষ্টি মুখ, হা হা হা হা | ******************** আজ আইবুড়ো ভাত হয়ে গেল | না না বড় কিছু না | বিশেষ কোনো রান্নাবান্নার আয়োজন হয়নি, সামান্য একটু মন্দিরের প্রসাদ | ব্যাস, তবে লোকজন অনেক এসেছিল | না না আমার পরিচিত কেউ বা বন্ধুদের কেউ না, এই বিয়েটা তো শুধুমাত্র উপলক্ষ ওদের আনন্দ করার | ভাইয়ের মেয়ের বিয়ে কত বিশাল করে দিচ্ছে, কত উদার মন, কত লোক আসবে, কত বড় করে উৎসব হবে | তবে এতে আমার মন আছে কি না, খুশি কি না তাতে কারোরই কিছু মাথা ব্যাথা নেই |
13-04-2020, 05:11 PM
Nice update, carry on
13-04-2020, 07:27 PM
দাদা বরাবরের মত এই আপডেটাও দারুন ছিল। এভাবেই চালিয়ে যান সাথে আছি। রেপু রইল।
আসুন আমরা সবাই চটি গল্প উপভোগ করি।
14-04-2020, 05:23 AM
14-04-2020, 05:25 AM
14-04-2020, 05:25 AM
আচার অনুষ্ঠান নম নম করে সেরে ফেললেও, গায়ে হলুদ পর্ব নিয়ে সবাই খুব মাতামাতি করছে দেখে শত কষ্টেও হাসি পেয়ে গেল | কথায় বলে না "কারো পৌষমাস কারো সর্বনাশ", আজ কথাটার বাস্তবায়ন স্বচক্ষে দেখলাম | আজকের পর আর কোনোদিন এ বাড়ি আসব কিনা, কোনোদিন পুরোনো বন্ধু গুলোর, চেনা মানুষ গুলোর...... কলেজের দারোয়ান দাদা, মালি ভাই যারা পর হয়েও আপন ছিল, তাদের মুখ আর কোনোদিন দেখতে পাবো কিনা...... বিশেষ করে স্যার, অনিরুদ্ধ স্যার কে দেখতে পাবো কিনা জানি না | জানি না এই দম বন্ধ করা পরিস্থিতিতে কতদিন বেঁচে থাকব তবু, তবু আমার হাসি পেলো এদের আনন্দ করার বহর দেখে |
এ সবের মাঝে সময়ের নিয়মেই সন্ধ্যে নামল, ঘনিয়ে এলো অন্ধকার | সারা বাড়ি ঝলমল করে উঠলো আলোয়, ভরে উঠলো ফুলের সুবাসে | লাল বেনারসি, ফুলের মালা চন্দনে সাজিয়ে আমাকে বসিয়ে রাখা কোনো এক দোকান থেকে কেনা পুতুলের মত, যাকে নিয়ে যখন ইচ্ছে খেলা করা যায়...... আবার প্রয়োজন ফুরোলে ছুঁড়ে ফেলতেও কেউ দ্বিধা করে না | তবু এসবের মধ্যে বড় পাওয়া আমার মায়ের হাতের শেষ বালা জোড়া, মায়ের বাকি সমস্ত গয়না গুলো কাকীমা যত্ন করে রেখে দিয়েছেন, যদি বিয়ের ঝঞ্ঝাটে আমি হারিয়ে ফেলি সেই অজুহাতে | বিয়ের পর নাকি দিয়ে দেবেন | যাই হোক, অবশ্য ওই সব নিয়ে আমি বিশেষ মাথা ঘামাই না | জীবনটাই যেখানে...... হুহু:, সেখানে গয়না দিয়ে কি করবো | বিয়েটা আমার, তবু আমাকে নিয়ে বিশেষ কারোর মাথা ব্যাথা নেই | সবাই নিজের মতন আনন্দ করতেই ব্যাস্ত | হাজার লোকের ভিড়ের মাঝেও আমি একলা | খুব খুব ইচ্ছে করছে আজ একবার অনিরুদ্ধ স্যারকে দেখতে | যদি একবার, একবার যদি দেখতে পেতাম | ভাবতে ভাবতেই সামনে দেখি অনিরুদ্ধ স্যার, হাসি মুখে আমার দিকে এগিয়ে আসছেন | আমি স্বপ্ন দেখছি না তো? ভালো করে চোখ রগড়ে দেখলাম, না: ভুল দেখিনি | উনি সত্যিই, কিন্তু কে বললো ওনাকে আজ? ভাবতে ভাবতে দেখি রুপসা দি কোথা থেকে এসে হাসি মুখে ওনার হাত ধরে আমার সামনে নিয়ে এলো | - কেমন আছো? বিয়ে করছো, বললে না তো!!?? - না মানে...... আমি, আসলে এত তাড়াতাড়ি......... - হুমমমমম | যাই হোক, শুভেচ্ছা রইলো | - দ্যাখ আঁখি অনি কত বড় মনের মানুষ, তুই ওনার ক্ষতি করা সত্ত্বেও উনি তোকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে | অবশ্য তুই এসব বুঝবি না, পেটে তো বিদ্যা বুদ্ধি নেই | তুই ফাঁসাবি অনিরুদ্ধ কে!!!!! শখ কতো | ভাবলি কি করে তুই, যে রুপসা থাকতে তুই কিছু করবি!!!! নেহাত উনি ভালো মানুষ তাই কয়েকদিন তোর ঢঙে বিশ্বাস করে ফেলেছিলেন | তবে স্ট্যান্ডার্ড বলে একটা কথা আছে না | হুহু: যা যা বিয়ে করে এখন বিদায় হ তো, আমাদের একটু শান্তি দে | এতক্ষণ অনিরুদ্ধ স্যারের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ শুনে যাচ্ছিলাম | মানুষের মধ্যে কত দ্রুত কত বড় পরিবর্তন হতে পারে, সেটা নিজে চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা খুব কঠিন | যে মানুষটা কয়েক দিন আগে পর্যন্ত সৎ পথে চলার কথা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কথা....... মাথা উঁচু করে বাঁচার কথা বলতো, যে একটা অপরিচিত মেয়ের থেকে কোনো কিছু আশা না করে নিজের দায়িত্বে পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন, নতুন করে বাঁচার আশা দেখিয়েছিলেন....... সেই মানুষটার এরুপ পরিবর্তন কানে শুনলে বিশ্বাস করা আমার পক্ষে অসম্ভব হত | সেই অনিরুদ্ধ স্যার যখন সবকিছু জানা সত্ত্বেও রুপসা দির হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে, প্রতিবাদ না করে যখন মৌনভাবে সম্মতি দিয়ে যাচ্ছেন, তখন আমার চেনা অনিরুদ্ধ স্যার আর আজকের অনিরুদ্ধ স্যারকে কেমন যেন মেলাতে পারছি না | তবে সবকিছু অচেনা ঠেকলেও ওনার ওই চোখ, ওই চোখ দুটো বড্ড চেনা | বড্ড কাছের, বড্ড আপন | উনি সবকিছু বদলে ফেললেও ওনার চোখ দুটো আজও বড্ড স্বচ্ছ | এইসব ভাবনার মাঝে রব উঠলো বর এসেছে, আর তো কিছুক্ষনের ব্যাপার, তাই পুরোনো কথা ভেবে লাভ কি | তাই স্যারের চোখে চোখ রেখেই বললাম ধন্যবাদ, ধন্যবাদ সবকিছুর জন্য | আপনার ঋণ শোধ করা আমার মত সামান্য মেয়ের সাধ্য নয় | নিজের অজান্তে যদি কিছু ভুল করে থাকি, অশিক্ষিত অযোগ্য ভেবেই না হয় ক্ষমা করে দেবেন | আমার কথার উত্তরে হয়তো উনি কিছু বলতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু বাজে সময় নষ্ট না করার অজুহাতে রুপসা দি ওনাকে নিয়ে অনেক অনেক দূরে নিয়ে চলে গেলেন | হয়তো এটাই ঠিক, যা হয়েছে ভালোই হয়েছে | অনিশ্চয়তার পথে যখন পা বাড়িয়েছি, সুতরাং ভবিষ্যত নিয়ে ভেবে কি লাভ | সময় যেন ঝড়ের গতিতে এগোচ্ছে, একটু পরেই সবাই এসে পড়লো আমাকে শুভদৃষ্টির জন্য নিয়ে যেতে | পিঁড়ি তে বসিয়ে, পান পাতায় মুখ ঢাকিয়ে আমাকে নিয়ে যাওয়া হল | যে মানুষ মেয়েদের সম্মান করতে পারে না তার সাথে নাকি আবার শুভদৃষ্টি | এমন একজন নোংরা চরিত্রের দৃষ্টি নাকি শুভ, হুহু: | পান পাতার আড়ালে আমার চোখ দুটো খুঁজছিলো অন্য কাউকে | কই আসে পাশে দেখছি না তো, অবশ্য আমাকে নিয়ে চিন্তা বা মাথা ব্যাথা আমার কাছের লোক গুলোরই কোনোদিন ছিলো না, আর ওনার সাথে তো মাত্র দু'দিনের পরিচয় | তবু আজ আমার চোখ দুটো ব্যাকুল ভাবে ওনাকে খুঁজছে, পেতে চাইছে একান্ত আপন করে | কিন্তু হায়, হায় রে আমার অদৃষ্ট, কোনো দিনই নিজের ইচ্ছে মত কিছু পেলাম না, আর আজ........ হুহু: | তবে খুব খুব মনে পড়ছে মা বাবা কে, হয়ত ওনারা থাকলে আজকের দিনটা আমার জীবনে অন্যরকম হত | আর পাঁচটা মেয়ের মত বিশাল ভাবে না হলেও অন্তত আমার খুশির খেয়ালটা থাকত | আমিও একটু আনন্দ করতে পেতাম | দেখতে দেখতে শুভ দৃষ্টিও হয়ে গেলো, ওই নোংরা লোকটার মুখের দিকে তাকাতে না ইচ্ছে হলেও এখন আমি নিরুপায় | বিয়ের কাজও শুরু হয়ে গেলো | না: আর কষ্ট হচ্ছে না, কিছু অনুভূত হচ্ছে না | চোখের জল যে আজ শুকিয়ে গিয়েছে, তারাও আজ বড় ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত |
14-04-2020, 09:59 AM
অসম্ভব সুন্দর গল্প, গড়পড়তা চটির মাঝে এক অন্যরকম গল্প
15-04-2020, 09:02 AM
Wow .... Next update ta din taratari
16-04-2020, 02:58 AM
16-04-2020, 03:02 AM
16-04-2020, 03:11 AM
কিরে মুখের সামনে থেকে পান পাতাটা কি সরানোর জন্য কি এবার...... সরা সরা বলছি, রাঘব অপেক্ষা করছে আর মেয়ের কান্ড দ্যাখো...... কি হল??!!!
উপায়হীন হয়ে সবার কথায় পানপাতা টা সরাতে বাধ্য হলাম | বাধ্য হলাম এই নোংরা লোকটার সাথে...... এত লোকের মাঝেও কেমন যেন একটা লোভী দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে | দেখলেই গা টা গুলিয়ে ওঠে, তাই নিয়ম রক্ষার্থে একঝলক তাকিয়েই চোখটা সরিয়ে নিলাম | এরপর চললো মালাবদল পর্ব | এসব মিটিয়ে সবে বিয়েতে বসেছি কিন্তু তাতেও সমস্যা, সম্প্রদান কে করবে | হিসেব মত আমার কাকারই করার কথা কিন্তু ভাবটা এমন যেন না করতে হলেই ভালো হয়, সবই কপাল!!!!! অনেক অনুরোধ উপরোধের পর যাও বা সম্প্রদানে বসতে যাবে, অনিরুদ্ধ স্যার কানে কানে এসে কি একটা বলল যাতে ওনার মুখটা পুরো ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছে | ওদিকে কাকীমা, রুপসা দিও কেমন যেন গুটিশুটি মেরে দাঁড়িয়ে | এদের সবার হল টা কি !!!!! আবার এদিকে রাঘবেরও একটা ফোন আসায় ও ও হঠাৎ কেমন যেন ছটফট করে উঠলো | কিছুই বুঝতে পারছি না, এতক্ষন যে বিয়ের জন্য তাড়া দিচ্ছিলো সে এখন পালাই পালাই করছে | এদিক ওদিক দেখে সবটা বুঝে ওঠার আগেই ঠাকুর মশাই রাঘবের কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে বললেন একদম চালাকি নয়, অনেকদিন থেকে খুঁজছি তোকে | আজ একটু নড়লেই কিন্তু একদম শেষ করে দেব | সাথে সাথে বিয়ে বাড়ির বেশ কয়েকজন অতিথি রাঘব আর ওর ওই বন্ধুবান্ধবদের ঘিরে ধরেছে, সকলের হাতেই বন্দুক | কি যে হচ্ছে কিছুই মাথায় ঢুকছে না | তবে রাঘবের ফ্যাকাসে মুখটা দেখে বেশ ভালোই লাগছিল | এসবের মাঝে অনিরুদ্ধ স্যার আমার কাছে এসে বললেন......... - উঠে পড়ো, আর ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই | সারা বাড়িতে অধিকাংশ অতিথিই পুলিশ, রাঘব আর ওর দলবলের কিছু করার ক্ষমতা হবে না | কি হল উঠতে বলছি না, ওঠো জলদি | এই বলে প্রায় হাত ধরেই আমাকে টেনে তুললেন | - শালা রুদ্ধ, এটা ভালো করলি না কিন্তু | প্রথমে সন্দেহ হলেও মালের নেশায় বুঝিনি | তোর ওপর আমার প্রথম আন্দাজটাই ঠিক ছিল | একবার শালা নাগাল পাই, বুঝিয়ে দেব রাঘব কি জিনিস | - এই: একদম কথা বলবি না শালা, লাথি মেরে মুখ ভেঙে দেব | অনেকদিন ধরে তোদের পিছনে ঘুরছি | ঠিক সুবিধা করে উঠতে পারছিলাম না তাই অনিরুদ্ধ বাবু প্রস্তাবটা দিতেই........ তুই ওনাকে কি দেখবি রে, তুই শুধু চল, তারপর আমরা দেখাচ্ছি | মেয়েদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলার খুব শখ না রে, চল আজ সব ঘোঁচাবো | অনিরুদ্ধ বাবু আপনাকে অনেক ধন্যবাদ | আপনার সহযোগিতা না পেলে এত সুন্দর প্রমান সহ একসাথে এদের পুরো দলটাকে ধরে ওঠা সম্ভব হয়ে উঠত না | ভবিষ্যতে কোনো রকম সাহায্য দরকার হলে নির্দ্ধিধায় বলবেন, আমরা আপনার পাশে থাকব | - ও: তুই সেই অনিরুদ্ধ, আঁখির প্রথম নাগর | তা নিজে তো মালটাকে ভোগ করলি, আমাদের বেলায় বাগড়া দিলি কেন বে?? বললেই পারতিস আরেকবার........... কথাটা শেষ করার আগেই অনিরুদ্ধ স্যার সপাটে একটা চর কসালেন | সেটা সামলে ওঠার আগেই পেটে দুটো লাথি | উনি যে কতটা রেগে গিয়েছেন সেটা ওনার মুখ চোখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে, দুজন কনস্টেবলও ওনাকে সামলে রাখতে পারছে না | আর রাঘব তো এমন অপ্রত্যাশিত আক্রমনে দূরে ছিটকে গিয়েছে | মনে হয় না সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে | কিন্তু এদিকে যে স্যারকে সামলানো মুশকিল হয়ে পড়েছে, উনি ছাড়া পেলে বোধ হয় আজ রাঘব আর বেঁচে ফিরবে না | আমি তাড়াতাড়ি ওনার সামনে গিয়ে পথ আগলে দাঁড়িয়ে বললাম......... - ছেড়ে দিন স্যার, শুধু শুধু ওই নোংরা লোকটার গায়ে হাত দিয়ে নিজেকে ছোটো করবেন না প্লিজ | হাত জোড় করছি, নিজের না হয় একবার আমার কথাটা ভাবুন | আপনার কিছু হয়ে গেলে আমি যে নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না | দয়া করে আপনি শান্ত হন | আমার কথায় উনি একটু শান্ত হতে, পুলিশের বড়বাবু বলে উঠলেন........... - ম্যাডাম ঠিকই বলেছেন, আমি বুঝতে পারছি আপনার রাগের কারণ কিন্তু শুধু শুধু এসবে জড়িয়ে পড়লে আপনাদের জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে | আর ওকে যখন একবার নাগালে পেয়ে গিয়েছি, ওর ব্যাবস্থা আমরাই করে নেব | আপনাকে বা আপনাদের দ্বিতীয়বার ওর সম্মুখীন হতে হবে না | আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা না, এক্ষুনি এদের সব গাড়িতে তোল | নিয়ে চল শালা গুলোকে আজ এদের সব রস বের করবো, দেখি এখনও কত তেজ বাকি আছে | বড় সাহেবের কথায় বাকিরা এদের গাড়িতে তুলতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল | এমনিতেই ধরা পড়ে গিয়েছে, তার ওপর আবার স্যারের রুদ্র রুপ দেখে কেউ আর ট্যা ফো না করে শুড়শুড় করে চলে গেলো | আর রাঘবের অবস্থা দেখে কি যে ভালো লাগছিলো, ওর সব রস এখানেই শুকিয়ে গিয়েছে | স্যারের হাতে মার খেয়ে সোজা হয়েই দাঁড়াতে পারছে না | এরপর পুলিশ স্টেশনে গিয়ে কি যে হবে ভেবেই হাসি পাচ্ছে | পুলিশের লোকজন রাঘবদের নিয়ে চলে যেতেই, কাকু কাকীমা দের কাছে গিয়ে বললেন......... - একদিন সময় দিলাম, কালকের মধ্যেই আঁখির পাওনা সমস্ত কিছু গুছিয়ে আমার বাড়ি দিয়ে আসবেন | একদম চালাকি করার চেষ্টা করবেন না, আশা করি বড়বাবুর কথা গুলো মন দিয়ে শুনেছেন | আর আপনাদের সাথে রাঘবের কি সম্পর্ক, কি প্ল্যান ছিলো সেটা প্রমান করতে আমার একটুও সময় লাগবে না | আর তারপর কি হতে পারে আশা করি বুঝতেই পারছেন | - না না বাবা, আমরা কালকের মধ্যেই আঁখিকে........ আর ও তো আমাদের ঘরের মেয়ে | - না আঁখি আপনাদের ঘরের মেয়ে ছিল, কিন্তু আর না | তারপরেই আমার দিকে ঘুরে বললেন......... - নিজের সব দরকারি জিনিষ এখনই গুছিয়ে নাও | তুমি আজই আমার সাথে আমার বাড়ি যাবে | আমি সবে কিছু বলতে যাবো কিন্তু তার আগেই উনি আমায় থামিয়ে দিলেন.......... - উহু: একটাও কথা বলার চেষ্টা করবে না | আমি তোমায় জিজ্ঞেস করিনি, আদেশ করছি, যাও | আর হ্যাঁ আপনারা কালকের মধ্যে সবকিছু গুছিয়ে আমার বাড়ি দিয়ে আসবেন | আশা করি দ্বিতীয়বার বোঝাতে আসতে হবে না, তাতে আপনাদেরই বিপদ কারণ তখন আর আমি একলা আসবো না | আর রুপসা, কলেজে গিয়ে কিছু পড়াশোনা শেখার চেষ্টা করো | তুমি কি ভেবেছিলে যে আমি তোমার বাবার ভয়ে, তোমার টাকার জোড়ে তোমার পেছনে পড়ে আছি?? সব সময় জেনে রাখবে ছলচাতুরি করে, বা টাকার জোড়ে চালাকি করে, ভয় দেখিয়ে কারুর মন পাওয়া যায় না | যেটা বলছি মাথায় রেখো | আর দ্বিতীয় দিন যদি আঁখি বা অন্য কোনো মেয়ের ক্ষতি করার কথা ভাবো বা চেষ্টা করো, তাহলে আমার থেকে খারাপ তোমার জন্য কেউ হবে না | আর আমি কি কি করতে পারি সেটা তুমি ভালো করেই জানো | কথা গুলো বলেই আমার হাত ধরে টেনে বাড়ি শুদ্ধ লোকের সামনে দিয়ে গটগট করে হেঁটে বেড়িয়ে এলেন |
16-04-2020, 07:20 AM
অপ্রত্যাশিত ভাবে গল্প দুর্দান্ত মোড় নিল !
16-04-2020, 08:03 AM
Wow ... Erokom kichu i asa korechilam ... Holo o tai .... Durdanto ....Next update r opekkha i roilam ...
17-04-2020, 08:32 PM
17-04-2020, 08:33 PM
17-04-2020, 08:35 PM
পাক্কা দশ মিনিট হয়ে গেল স্যারের ড্রয়িংরুমে সোফায় বসে আছি | সারা রাস্তাও উনি একটাও কথা বলেন নি | কিছুই বুঝতে পারছি না, যে আজকের ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসাবে আমার কি করা উচিত আর উনি সেটাকে কিভাবে দেখবেন |
এতক্ষন উত্তেজনা ধরে রাখা বেশ কষ্টকর হয়ে উঠছিল, তাই শেষমেষ থাকতে না পেরে বলেই ফেললাম.......... - আমাকে রাঘবের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কি বলে ধন্যবাদ জানাবো বুঝতে পারছি না | কিন্তু আমাকে এ বাড়িতে নিয়ে এসে বোধ হয় ঠিক করেন নি........ আসলে লোকজন ভুল ভাবতে পারে | কথাটা বলে ওনার চোখের দিকে তাকিয়েই বুঝলাম কত বড় ভুল করেছি | এত আহত ওনাকে আমি কোনো দিনও দেখিনি | দৃঢ় পায়ে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললেন.......... - নিজেকে খুব বড় বুদ্ধিমান বলে মনে করো, তাই না? এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একবার বলার প্রয়োজন পর্যন্ত মনে করলে না | এমনিতে তো খুব বড় বড় কথা, স্যার আপনি আমার কাছে ভগবানের মত, খুব শ্রদ্ধা করি....... আর একবারও বললে না, এমন কি কলেজে দেখা হলেও এড়িয়ে যেতে???!!!! সেদিন যদি রুপসার কথা গুলো আড়াল থেকে না শুনতাম, তাহলে কি যে হত ভাবতেই পারছি না | কি ভাবো কি নিজেকে, খুব মহান?? আমার সন্মান বাঁচাতে আত্মত্যাগ করতে চলেছিলে???!!!!! - না মানে, আসলে কাকা বলেছিল আপনার ক্ষতি...... তাই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম | ওরা খুব খারাপ, আপনি তো ওদের চেনেন না | ওরা টাকার জন্য সবকিছু করতে পারে | - হ্যাঁ কে কি করতে পারে সবকিছু জানা আছে | তাই বলে তুমি সব জেনে বুঝে অন্যায়ের কাছে মাথা নিচু করবে? এটা তোমার কাছে আশা করিনি | - অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে আমি চাই নি কিন্তু....... আমার জন্য আপনার কোনো ক্ষতি যে আমি মেনে নিতে পারি না | শুধু শুধু আপনি এসবের মধ্যে জড়ালেন | আমাকে এখানে নিয়ে আসার কোনো প্রয়োজন ছিলো না | এখন কেউ যদি আপনার দিকে আঙুল তোলে, সেটা আমি কি বলে......... - থাক অনেক হয়েছে, লোকের কথা কম ভেবে এবার একটু নিজের কথা ভাবো | আর আমি কি করবো না করবো, কাকে নিজের কাছে রাখব আর কাকে দূরে সেটা আমাকেই বুঝতে দাও | আঙুল যখন আমার দিকে উঠবে তখন উত্তর টাও আমিই দেবো, তোমার এসব নিয়ে না ভাবলেও চলবে | রাত হয়েছে, চুপচাপ কথা না বাড়িয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পরো | - কিন্তু ও ঘরে আমি গেলে আপনি কোথায় শোবেন, পাশের ঘরটা তো অপরিস্কার | - হুমম, আমি আজকের রাত টা সোফায় শুয়ে পড়বো | কোনো অসুবিধা হবে না | কাল কাজের মাসি এলে আমি পরিস্কার করিয়ে রাখবো | - কিন্তু আপনি এভাবে........ - কোনো কিন্তু না, কথা না বাড়িয়ে সোজা ঘরে যাবে | না হলে আমি কিন্তু.......... - আচ্ছা স্যার, একটা কথা বলবেন? আপনি হঠাৎ আমার জন্যে এতকিছু কেন করছেন??!!! - এমন বিশেষ কিছুই আমি করিনি, সুস্থ শিক্ষিত মানুষ হিসাবে যেভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত সেটাই করেছি | শুধু তোমার জন্য কেন, সে জায়গায় অন্য যে কোনো কেউ থাকলেও আমি এই একই কাজই করতাম | ব্যাস আর কোনো কথা না, ঘরে যাও | - হুমমমমম | ও: তার মানে উনি আমার চিঠিটা পান নি | আর পেলেই বা কি......... ঠিকই তো বলেছেন উনি, যে কোনো মানুষেরই উচিত অন্যায়ের প্রতিবাদে রুখে দাঁড়ানো | আমার জায়গায় অন্য যে কেউ হলে কৃতজ্ঞতায় মাথায় নুইয়ে রাখত আর আমি কিনা উল্টো পাল্টা কি সব ভাবছিলাম | ওনার মত একজন মানুষ যে আমার মত একজন মেয়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, এত সাহায্য করছেন এটাই অনেক | নাহ: !!! আজকের পর থেকে একদম এসব ভুলভাল কিছু ভাববো না | আমার ওপর উনি যে বিশ্বাস করেছেন তার মর্যাদা দিতে আমি পড়াশোনা শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াবই | আমার জন্য ওনার কোনো অসন্মান আমি হতে দেব না | উনি না ই বা আমায় ভালোবাসলেন, কিন্তু আমি তো বাসি | আর সারা জীবন এ ভাবেই দূর থেকেই না হয়......... কাল সকালের প্রথম কাজ হবে ওনার অলক্ষ্যে ওনার ব্যাগ থেকে ওই চিঠিটা সরিয়ে ফেলা | এসব ভাবতে ভাবতেই কখন যে চোখের ক্লান্ত পাতা দুটো বুজে এল বুঝতেই পারি নি | আজ অনেক দিন পর নিরাপদে একটু ঘুমাবো | |
« Next Oldest | Next Newest »
|