Thread Rating:
  • 14 Vote(s) - 3.29 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance বড় আপুর বান্ধবী যখন বউ (সম্পূর্ণ)
#21
পর্ব-১৬



------------------------------------



ফোনটা হাতে নিতেই আমি শেষ।আরে এতোগুলা কল কখন আসলো।আজ আর রক্ষা নেই। নিলা অনেকগুলো কল করেছে। আমি ও না। কিভাবে যে এতো গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম। ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে দেখি আর বেশিক্ষন নেই সূর্যাস্তের। এক ঘন্টার কিছু বেশি আছে।তাড়াতাড়ি করি। সময় আছে এখনো। তাই এক লাফে উঠে কোনোরকমে ফ্রেশ হয়ে রওয়ানা দিলাম।

:-----আম্মু আমি গেলাম।ফিরতে রাত হবে।(বলেই বের হয়ে গেলাম)

বাইকটা নিয়ে খুব ভালো স্পিডে নিলাদের বাসার সামনে পৌছে গেলাম। স্বাভাবিক সময়ের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সময় লেগেছে। বাসা টা ভুতুড়ে লাগছে। বাসার সামনে এসে ফোন দিলাম নিলাকে।
প্রথমবার ধরলো না।না জানি কি হবে আমার আজ। দ্বিতীয়বার ও ধরলো না। কয়েকবার ট্রাই করলাম। এখন বন্ধ। এখন তো আমার ভয় করছে। তাই সোজা নিলাদের বাসায় চলে গেলাম। কলিং বেল দিলাম।

:-----আসসালামু আলাইকুম আন্টি।কেমন আছেন।(আমি)
:-----হুমম।বাবা ভালো।তুমি কেমন আছো।আর তোমার বাসার সবাই কেমন আছে।(আন্টি)
:-----হুমম।সবাই আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো।
:-----ভিতরে আসো।
:-----নিলা কোথায়।
:-----ও তো ওর রোমেই আছে।
:-----আচ্ছা আমি একটু নিলার সাথে দেখা করে আসছি।
:-----আচ্ছা।

সোজা নিলার রোমে চলে গেলাম। গিয়ে দেখি শাড়ি পরে আছে। চোখের কাজল নষ্ট হয়ে গেছে।কান্না করেছে মনে হয় আমার জন্যে সেজে বসে ছিলো। ভিতরে গেলাম। আমাকে দেখেই অন্যদিকে মুখ করলো।

:-----কেনো এসেছো।(নিলা)
:-----আমি আ....(শেষ করতে দিলো না)
:-----ওহ আমি বেঁচে আছি কি না দেখতে এসেছো।(কান্না কান্না কন্ঠে)
:-----আরে কি বলছো এগুলো।
:-----চলে যাও আমাকে নিয়ে কোথাও যেতে হবে না।(কান্না করেই দিলো)
:-----সত্যিই চলে যাবো।
:-----চলে যেতে বলেছি না।
:-----আচ্ছা আমি গেলাম।(আমি জানি নিলা আমাকে যেতে দেবে না)
যা ভাবছিলাম। দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে কান্না শুরু করলো।
:-----কতগুলো কল করেছি।তুমি জানো আমার কত চিন্তা আর কষ্ট হয়।(কান্না করেই যাচ্ছে)
:-----আরে বাবু আমি একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।ক্লান্ত লাগছিলো তাই।
:-----আর কখনো এমনটা করবে না তো।
:-----এই কান ধরছি।আর এরকম হবে না।
:-----সত্যি তো।(বাচ্চাদের মতো মুখ বাঁকিয়ে কথাটা বললো)
:-----হ্যাঁ।তিন সত্যি।
:-----আচ্ছা আজ তাহলে ক্ষমা করলাম।
:-----এখন তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও।
:-----আমি তো রেডি ই।
:-----কাজলের অবস্থা দেখেছো।
:-----একটু বসো।
চোখের পলকেই নিলা পারফেক্ট হয়ে রেডি হয়ে চলে আসলো।
:-----তোমাকে যা লাগছে না।
:-----যাও কি বলো।লজ্জা করে না বুঝি।
:-----আরে সত্যিই।
:-----(লজ্জায় লাল হয়ে গেলো)

আমি নিলার চোখ থেকে খানিকটা কাজল নিয়ে গালের এক কোনে ছোটো করে দিয়ে দিলাম।

:-----আরে কি করছো।
:-----যাতে কারো নজর না লাগে আমার নিলা পরীটার উপরে।
:-----ধ্যাত কি যে বলো।
:-----চলো এখন।
:-----হুমম।

দুজন বেরিয়ে পড়লাম সূর্যাস্ত দেখতে। মনোরম একটা পরিবেশ। আমার হাত ধরে মাথাটা আমার কাঁধে রেখে হাঁটছে। অন্যরকম লাগছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সূর্যাস্ত যাবে। তাই এক যায়গায় বসলাম। সবুজ ঘাসের উপর আমি আর নিলা। সূর্যাস্তের দৃশ্যটা খুব সুন্দর লাগছে। নিলা সাথে থাকায় আরো ভালো লাগছে। কিছুক্ষণ পরে আবার হাঁটা শুরু করলাম। সূর্য অস্ত গেছে।

:-----কেমন সময় কাটছে।
:-----জানিনা।
:-----এটা কেমন উত্তর হলো
:-----হি হি।

হঠাৎ একটা গাড়ি আমাদের সামনে এসে দাঁড়ালো। আরে এটাতো আমাদের গাড়ির মতোই। গাড়ি থেকে আপু বেরোলো। আমি দেখেই নিলাকে নিয়ে চলে যেতে লাগলাম।

:-----তুই দাঁড়াবি।(আপু রাগে কথাটা বললো)
:-----আরে রুহি তুই এখানে।(নিলা)
:-----ওকে দাঁড়াতে বল।(আপু)
:-----আরে আকাশ দাঁড়াও।(নিলা)
:-----কি হলো।(আমি)
:-----আরে শোনো তো আগে যে রুহি কি বলতে চাচ্ছে।(নিলা)
:-----বলতে বলো।(আমি)
:-----তুই আমাকে এমন এড়িয়ে চলছিস কেনো।(আপু)
:-----কই আমি তো ঠিকই আছি।(আমি)
:-----প্লিজ আমার সাথে এমন করিছ না।(আপু)
:-----আমি আবার কেমন করলাম।(আমি)
:-----কি হয়েছে একটু বলবি প্লিজ।(আপু)
:-----কিছু হয়নি তো আমি কি বলবো।(আমি)
:-----এই নিলা তুই একটু ওকে বুঝা প্লিজ।(আপু)
:-----রুহি আসলে হয়েছে কি।(নিলা)
:-----কি হয়েছে বল আমাকে।(আপু)
:-----আকাশ না তোর জন্যে একটা ছেলে দেখেছে।(নিলা আমাকে একটা চোখ মারলো।বুঝলাম হয়তো কোনো প্লান করছে)
:-----ছেলে দেখেছে মানে।(আপু)
:-----আরে তোর বিয়ের জন্যে আর কি।(নিলা)
:-----বিয়ের জন্যে মানে।তুই তো সব ই জানিস।এটা কি বলছিস তুই।(আপু)
:-----আমি কি বলবো।আকাশের মুখের উপরে কি আমি কিছু বলতে পারি।(নিলা)
আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনছি আর হাসছি। আপুর তো প্রায় কান্নামুখ হয়ে গেছে। আমি দেখে অনেক মজা পাচ্ছি।
:-----নিলা এখন কি যেতে পারি আমরা।(আমি)
:-----হুমম চলো।এই রুহি বাই।তোর ভাইটা না আমাকে খুব শাসনে রাখে।ওর কথার বাইরে কোনো জানি আমি যেতে পারি না।তাই গেলাম আমরা।(নিলা)
:-----আচ্ছা।(আপু)
আমরা চলে আসলাম ওই স্থান থেকে। কিন্তু একটু দুরেই আমরা দুজন লুকিয়ে রইলাম।

:-----তখন তুমি এটা কি বললে।(আমি)
:-----আরে বোকা দেখোই না কি হয়।(নিলা)
:-----আচ্ছা দেখি তাহলে।
:-----হুমম।

কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর আরো একটা গাড়ি আসলো। গাড়ি থেকে রাকিব ভাইয়া নামলো।

:-----কি ব্যাপার এতো জরুরি তলব।কোনো জরুরি কাজ আছে নাকি।(রাকিব ভাইয়া)
:-----তুমি আমাকে ভুলে যাও।(আপু)
:-----আরে কি বলছো এগুলো।পাগল হয়ে গেছো নাকি।
:-----আকাশ নাকি আমার জন্যে ছেলে দেখেছ।তুমি তো জানো আমি আকাশের সাথে কথা না বলে থাকতে পারি না।এখন ওর দেখা ছেলেকে যদি পছন্দ না করি তাহলে কি হবে তুমি বুঝতে পারছো।
:-----প্লিজ এগুলো বলো না।আমি আকাশের সাথে কথা বলবো।তুমি তো জানো আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।তুমি তো জানো আমি তোমাকে কত ভালোবাসি।ছয় বছর তোমার পিছনে ঘুরেছি।তারপরে আজ একটু কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।আর আজ এগুলো কি বলছো।
:-----সরি রাকিব।আমি আগে জানলে আজকেও তোমার সাথে কথা বলতাম না।আজ সারাদিন আকাশ আমাকে এড়িয়ে চলেছে আমার যে কি কষ্ট হচ্ছে তোমাকে বলে বোঝানো যাবে না।আমি আজ আসি।
:-----রুহি প্লিজ কথাগুলো ভেবো।

আপু বাসায় চলে গেলো।আমরাও চলে গেলাম। নিলাকে আজ আমার সাথেই নিয়ে গেলাম। আমাদের বাসায়। রাতে খাবার টেবিলে বসলাম। আজ আব্বু ও আছে সাথে।

:-----আব্বু।(আমি)
:-----হুমম বলো।(আব্বু)
:-----আমি রুহির জন্যে একটা ছেলে দেখেছি।খুব ভালো ছেলে।আমার ক্লাসমেটের বড় ভাই।(আমি)
:-----তুমি এখন বড় হয়েছো।তোমারো তো একটা কর্তব্য আছে।আর তুমি তো রুহির খারাপ চাইবে না।(আব্বু)
:-----তোমার থেকে এটাই আশা করেছিলাম।কাল ওনারা আমার বাসায় আসবে।(আমি)
:-----বেশ তো।খুব ভালো কথা।(আব্বু)
:-----আচ্ছা গুড নাইট।আর নিলা একটু চলো কথা আছে।(আমি)
:-----হুমম।(হালকা ভাবে কথাটা বললো)

খাওয়া শেষ করে রোমে চলে গেলাম। ভাবছি কালকে কি কি করবো। ওদিকে রাফিকেও সেট করে রেখেছি।বাহ এতো বুদ্ধি কিভাবে আসলো আমার মাথায়। একটু পরেই নিলার আগমন।

:-----কি কি প্লান সব মনে আছে তো।(আমি)
:-----হুমম।সব মনে আছে।(নিলা)
:-----আচ্ছা তাহলে ঘুমের ওষুধ টা দিয়ে তুমিও ঘুমিয়ে পড়ো।
:-----ঘুমের ওষুধ মানে।
:-----মানে ওই আর কি।





চলবে......
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#22
পর্ব-১৭


------------------------------------



:-----মানে ওই আর কি।(আমি)
:-----বুঝেছি।(নিলা)
:-----সত্যিই।
:-----কিন্তু আজ ঘুমের ওষুধ খাওয়ার দরকার নেই।
:-----আচ্ছা তাহলে আর আজ ঘুমাবো না।(কিছুটা মন খারাপ করে)
:-----আরে মন খারাপ করো কেনো।
:-----তো আর কি করবো।
:-----ওরে বাবু টা মন খারাপ করো না।(টুপ করে দুইটা ইয়ে দিয়ে দিলো।(ওই আর কি)
:-----থ্যাংক ইউ বাবুটা
:-----আচ্ছা এখন ঘুমাও।
:-----হুমম।গুড নাইট।
:-----হুমম।

নিলাকে আজ রাখার কারণ হচ্ছে কাল আপু কে দেখতে আসবে।তাই আজ রাত টা আপুর সাথেই থাকবে শুয়ে পড়লাম। সারাদিনের ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়লাম। আপাতত কোনো টেনশন নেই। তাই খুব শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন সকালে কারো ডাকে ঘুম ভাঙলো।হুমম সে অন্য কেউ না। ভাবছি এই ডাকেই সারাজীবন আমার ঘুম ভাঙবে। যদি আল্লাহ্ তায়ালার ইচ্ছা থাকে।

:-----এই আকাশ ওঠো।অনেক বেলা হয়ে যাচ্ছে।(নিলা)
:-----উমম।আরেকটু ঘুমাই না।(আমি)
:-----না এখনই উঠবে।(আমার কিছুটা সামনে এসে)

আমিও কম কিসে এক টানে নিলাকে জড়িয়ে নিলাম।

:-----আরে আরে কি করছো।কেউ দেখে ফেললে খুব খারাপ হবে।
:-----আরে কে দেখবে।আর দেখলেই বা কার কি।আমি তো আমার জান টাকে ধরেছি।
:-----জান টান বাদ দিয়ে এখন উঠে ফ্রেশ হও।সবকিছু কি ভুলে গেছো নাকি।
:-----ধ্যাত।এখনই উঠতে হবে।
:-----হুমম।এখনই উঠতে হবে।
:-----একটা ইয়ে দাও তাহলে।
:-----না পারবো না।
:-----আচ্ছা তাহলে আমিও ছাড়বো না।
:-----তুমি আস্ত একটা পাগল।
:-----হি হি।
:-----চোখ বন্ধ করো।
:-----চোখ আবার কেনো বন্ধ করবো।
:-----করো নয়তো পাবে না।
:-----আচ্ছা করলাম।তুমি কিন্তু চিটিং করতে পারবে না।
:-----আচ্ছা করবো না।
:-----এইযে চোখ বন্ধ করলাম।(চোখ বন্ধ করলাম)

আমার ঠোঁটে কিছুর স্পর্শ অনুভব করলাম। তারপর একে একে গালে আর কপালেও অনুভব করলাম।

:-----এবার চোখ খুলি।
:-----হুমম।

আমিও নিলার কপালে ছোট্টো করে একটা চুমু দিয়ে উঠে পড়লাম। প্রতিটা সকাল যাতে এভাবেই শুরু হয় এটাই আল্লাহ তায়ালার কাছে চাওয়া। ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখি নিলা আমার রোম গুছিয়ে চলে গেছে। আমি নিচে গিয়ে গিয়ে দেখি সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আপু আমার দিকে কেমন করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

:-----সবাই বসে আছো কেনো।খাওয়া শুরু করো।(আমি)
সবাই একসাথে ব্রেক ফার্স্ট করলাম।
:-----আব্বু ওনারা কিন্তু বিকালের দিকে চলে আসবেন।(আমি)
:-----ছেলেদের বাসা কোথায় সেটাও তো বললি না।(আব্বু)
:-----এতো প্রশ্ন কেনো করো তোমরা।(আমি)
:-----আচ্ছা আমি সব ব্যবস্থা করছি।(আব্বু)
:-----আচ্ছা।আর হ্যাঁ বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম।(আমি)
:-----কি।(আব্বু)
:-----আজকে রাত্রি আপুর বিয়ের রিসিপশন।(আমি)
:-----তা ভালো তো।তুই রুহি আর নিলাকে নিয়ে চলে যাস।(আব্বু)
:-----কেনো তোমরা যাবে না।(আমি)
:-----না।(আব্বু)
:-----আচ্ছা এখন বাই।(আমি)
:-----ওকে।(আব্বু)

দেখতে দেখতে বিকাল হয়ে যাচ্ছে। দেখি রাফি কে একটা কল করে।টুং টুং....

:-----হ্যাঁ বল।(রাফি)
:-----তুই কোথায়।(আমি)
:-----এইতো আর বেশিক্ষণ লাগবে না।
:-----সবকিছু প্লান মাফিক করছিস তো।
:-----আরে হ্যাঁ বাবা।সব তোর প্লান মাফিক ই হচ্ছে।
:-----আচ্ছা তাহলে বাই।
:-----ওকে।

ইতিমধ্যে আল-আমীন চলে এসেছে। কিছুক্ষণ পরে রাফির পরিবারও আমাদের বাসায় উপস্থিত হলো। আর বলতে ভুলেই গিয়েছিলাম রাফির পরিবারের সাথে আমাদের পরিবারের খুব ভালো সম্পর্ক।
তাই আব্বু ওনাদের কে দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে গেছে। আপুকে সাজাচ্ছে নিলা। তাই আর ডিসটার্ব করিনি। রাকিব ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি অবাক হয়ে বসে আছে। কি বলবে ভেবেই পাচ্ছে না।
আসলে এগুলো সব আমার প্লান। কালকে রাতে রাফিকে সব বলেছি প্লানের কথা। তারপরেই সব কিছু করা। একটু পরে আপু কে নিয়ে আসা হলো। আপুর দিকে তাকিয়ে দেখি মুখটা শুকিয়ে গেছে। আর মনমরা হয়ে আছে। আমার তো হাসি পাচ্ছে। এদিকে রাকিব ভাইয়া হা করে সব দেখছে। কিছু বলছে না।

:-----ভাই রাফি আমাদের আগে কিছুই জানায়নি।শুধু আজ আমরা কোথাও মেয়ে দেখতে যাবো এটা বলেছে।(রাফির আম্মু)
:-----আকাশ ও আমাদের কিছুই বলেনি।শুধু বলেছে আজ মেহমান আসবে।(আব্বু)
:-----তোর মেয়ে আমার মেয়ে।এতে আর কোনো কিছু বলার দরকার নেই।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তোর মেয়েকে আমাদের ঘরে তুলবো।(রাফির আব্বু আর আমার আব্বু বন্ধু।তাই একে অপরকে তুই বলেই সম্বোধন করে)
:-----তুই যা ভালো বুঝিস।তোর সাথে কি আমি কখনো কথায় পেরেছি।(আব্বু)
:-----হা হা হা।(রাফির আব্বু)
:-----তুই কি আলাদা করে কিছু বলবি।(রাফির আম্মু)
:-----হ্যাঁ...না...মানে...না..না..কি বলবো।তোমরা যা বলার বলো।(রাকিব ভাইয়ার ধ্যান মাত্র ভাঙলো।বাস্তবতা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে)
আপু এখনো কাউকে দেখেনি। নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।

:-----তাহলে তো আলহামদুলিল্লাহ্।আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক এখন আরো গভীর হলো।(রাফির আব্বু)
:-----হ্যাঁ।(আব্বু)
:-----নে এটা পড়িয়ে দে।(একটা আংটি দিয়ে রাফির আম্মু রাকিব ভাইয়াকে বললো)
:-----হ্যাঁ।(রাকিব ভাইয়া)

আপু মাত্র দেখলো যে রাকিব ভাইয়া তাকে আঙটি পড়াচ্ছে। আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

:-----নিলা মা তুমি রুহি কে রোমে নিয়ে যাও।(আব্বু)
:-----জ্বি আব্বু।(মায়া)

তারপরে আপুকে রোমে নিয়ে গেলো। সবাই কথা বলছে আমি আর রাফি দুজন রাজ্য বিজয়ের হাসি দিলাম। সবার কথা শেষ হলো। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে আপুর বিয়ে।

:-----দেখলি তোকেই আগেই বলেছিলাম তোকে আমার বিয়াই বানাবো।(রাফি)
:-----হুমম।তোর কথা কি ফেলতে পারি।(আমি)

সবাই হো হো করে হেসে উঠলো। তারপর ওনারা চলে গেলেন। যাই একটু আপুর রিয়েকশন দেখে আসি। তাই আপুর রোমে গেলাম।

:-----নিলা রেডি হয়ে নাও।রাত্রি আপুর বিয়েতে যাবে তো নাকি।(আমি)
:-----যাবো তো।(নিলা)
:-----সুন্দর করে সাজবে ঠিক আছে।
:-----আমার মনে আছে।
:-----মনে থাকলে ভালো।আর হ্যাঁ এই ছেলেকে কারো পছন্দ হোক বা না হোক।বিয়ে কিন্তু এখানেই হবে।

ওমনি দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো।

:-----আরে কান্না করছেন কেনো আপনি।ছেলে আপনার পছন্দ না হলেও আমার কিছু করার নেই।(আমি)
:-----তুই অনেক খারাপ।আমার সাথে কথা বন্ধ করেছিস কেনো।তুই জানিস না তোর সাথে কথা না বললে আমার কতো খারাপ লাগে।(আপু)
:-----এই জন্যই তো কথা বলিনি।(আমি)
:-----মানে কি।(আপু)
:-----তুই আমাকে না জানিয়ে রাকিব ভাইয়ার সাথে কথা বলেছিস।তাই আমিও তোর সাথে কথা বলিনি।(আমি)
:-----বিশ্বাস কর।এই প্রথম সেদিন রাকিবের সাথে কথা বলেছি।একটু কথা বলার জন্যে রিকোয়েস্ট করেছিলো।তাই কথা বলেছি।(আপু)
:-----জানি আমি সবই।(আমি)
:-----জেনেও আমাকে এতো কষ্ট দিয়ে আমার সাথে কথা বলিসনি।(আপু)
:-----হি হি।তোকে সারপ্রাইজ দিলাম।(আমি)
:-----দরকার নেই আমার এমন সারপ্রাইজ।(আপু)
:-----আচ্ছা।এখন রেডি হ।কিছুক্ষণ পরে আবার রাত্রি আপুর বিয়েতে যেতে হবে।(আমি)
:-----হুমম।(আপু)

আমি চলে আসলাম নিজের রোমে। এখন ফ্রেশ লাগছে অনেকটা। আর খুব ভালো ও লাগছে। কিছুক্ষণ পরে রেডি হয়ে নিলাম। নীল একটা স্যুট। চুলগুলো স্পাইক করলাম সাথে একটা গ্লাস। এখন আপু আর নিলার জন্যে অপেক্ষা করছি। একটুপরে ওরা দুজন আসলো আমি গাড়িতে বসে আছি। বাইকে তো আর তিনজন যাবো না। নিলাকে দেখে আমার চোখ কপালে উঠে যাওয়ার অবস্থা। যা লাগছে কি আর বলবো। আমার সাথে ম্যাচ করে শাড়ি। আর নীল শাড়ির সাথে সবকিছু ম্যাচিং। একদম নীল পরী।

:-----আজ কি আমরা যাবো।(আপু)

আপুর কথায় আমার আর নিলার ধ্যান ভেঙে গেলো। আমরা এতক্ষণ একে অপরের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। নিলা লজ্জায় মাথা নিচু করলো।

:-----হ্যাঁ চল।(আমি)
:-----আজ তাহলে যেতে পারবো।আমি তো ভেবেছি আজ এখানেই একে অপরকে দেখতে দেখতে শেষ করে দিবি।(আপু)
:-----চল তো।
:-----হুমম চল।

আমি আপন মনে ড্রাইভিং করছি। ওদিকে আপু আর নিলা কথার ফুলঝুরি বের করছে। আমার কানের চোদ্দটা বাজাচ্ছে আর কি। রাত্রি আপুর বাসা আমাদের বাসা থেকে কিছুটা দূরে। তাই একটু সময় লাগলো পৌঁছাতে পৌঁছাতে। পৌছে গেছি।

:-----নামো আমি গাড়ি পার্ক করে আসছি।(আমি)
:-----হুমম।(নিলা)
ওদের নামিয়ে আমি গাড়ি পার্ক করতে চলে গেলাম।
:-----আচ্ছা তুই ভেতরে যা।আমি আকাশের সাথে আসছি।(নিলা)
:-----হুমম আচ্ছা গেলাম আমি।(আপু)
:-----হুমম।(নিলা)

এসে দেখি নিলা একা একা দাঁড়িয়ে আছে।

:-----আপু কোথায়।(আমি)
:-----রুহি কে ভেতরে পাঠিয়ে দিয়েছি।(নিলা)
:-----খুব ভালো করেছো।এখন চলো।
:-----হুমম চলো

ভেতরে যাচ্ছি। সবাই কেমন করে আমাদের দিকে তাকাচ্ছে। নিলা আমার হাতের ভেতরে হাত দিয়ে আমাকে হালকা জড়িয়ে ধরে হাঁটছে। অন্যরকম আরেকটা অনুভূতি হচ্ছে। পাশ থেকে কেউ বলে উঠলো

:-----জোড়া টা খুব মানিয়েছে।

আমি এগুলোতে কান না দিয়ে অনুষ্ঠানে যোগদান করলাম। রাত্রি আপুর সাথে একজন অপরিচিত লোক বসে আছে। বুঝলাম এটাই রাত্রি আপুর বর। রাত্রি আপুর সাথে মানিয়েছে। রাত্রি আপুর দিকে তাকিয়ে দেখি আমাকে ইশারায় বলছে আমাকে আর নিলাকে খুব সুন্দর লাগছে। রাত্রি আপুর সামনে গেলাম। কনগ্রাচুলেশন আপু।

:-----তুমি এখনো আমাকে আপু বলবে।বাই দ্য ওয়ে ও হচ্ছে আকাশ।যার কথা তোমাকে বলেছিলাম।(রাত্রি আপুর বর কে উদ্দেশ্য করে বললো)
:-----হাই ব্রো।তুমি আসলেই খুব কিউট।(রাত্রি আপুর বর)
:-----থ্যাংকস।আপনিও কম না।(আমি)
:-----থ্যাংক ইউ।(রাত্রি আপুর বর)
:-----আর হ্যাঁ।ও হচ্ছে সেই ভাগ্যবতী মেয়েটা নিলা।আকাশের হবু জীবনসঙ্গীনী।(রাত্রি আপু)
:-----আপুর তো আগামী মাসে বিয়ে।(আমি)
:-----কি বলো কার সাথে।(রাত্রি আপু)
:-----রাফির বড় ভাই আছে না।তার সাথে।(আমি)
:-----ওহ।খুব ভালো লাগলো।(রাত্রি আপু)

কিছুক্ষণ কথা বলে চলে আসলাম। বাড়িটা একটু ঘুরলাম। দেখি আপু তার ফ্রেন্ড দের সাথে কথা বলছে আর হাসছে। নিলা আমার সাথে থাকায় এখনো বান্ধুবীদের সাথে দেখা করেনি। তাই নিলাকে নিয়ে আপুর কাছে গেলাম।

:-----আরে নিলা আকাশ কে পেয়ে তো আমাদের ভুলেই গেছিস।(আপুর বান্ধুবী রা হাসাহাসি করছে)
:-----কি যে বলিস না তোরা।(নিলা)
:-----হয়েছে হয়েছে আর বলতে হবে না।সব তো চোখের সামনেই হচ্ছে।

সবাই কথা বলছে আমি আর এখানে কি করবো। তাই একটু ওপাশে গেলাম। গিয়ে দেখি রাফি আর আল-আমীন। সাথে রাকিব ভাইয়া ও আছে।

:-----কিরে তুই এখানে।(আমি)
:-----আরে দোস্ত তুই এখানে।(রাফি)
:-----আমারো তো একই প্রশ্ন।(আমি)
:-----বিয়ের বর ভাইয়ার বন্ধু।(রাফি)
:-----আর আমার আত্মীয়।(আল-আমীন)
:-----যাক ভালোই হলো।একা একা বোরিং লাগছিলো।তোদের দেখে ভালোই লাগছে।(আমি)
:-----আমাদের ও তোকে ছাড়া একদম ভালো লাগছিলো না রে।আল-আমীনকে জিজ্ঞেস কর।তোর কথা বারবার বলছিলাম।(রাফি)
:-----আচ্ছা চল তাহলে।এখন অনুষ্ঠান টা ইনজয় করি।(আমি)
:-----এখন তুই এসে গেছিস।সেলিব্রেট হবে সেই ভাবে।(রাফি)
:-----হুমম।(আমি)

কিছুক্ষণ ঘুরা ঘুরি করলাম আমরা তিনজন। আপু আর নিলার দিকে আসার সময় হলো আরো এক ভেজাল। দুইটা ছেলে আপু আর নিলাকে উত্যক্ত করছে। অনিচ্ছাকৃতভাবে কথা বলছে। আমার তো রাগ মাথায় চড়ে বসলো। আজ এদের একটা কিছু করতে হবে। সামনে গেলাম। রাফি আর আল-আমীন একটু দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। এখানো খেয়াল করেনি। ওদের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলাম।

:-----কি ভাই পছন্দ হয়েছে।(আমি)
:-----তোকে বলবো কেনো রে।(একজন)
আমার তো আরো রাগ উঠে গেলো।
:-----না আমি সাহায্য করতে পারতাম আর কি।(আমি)
:-----না আমরাই পারবো।(একজন)
:-----তাই নাকি।(আমি)
:-----হুমম।
:-----আমার বোন আর গার্লেফ্রন্ড কে নিবেন।এতো সাহস আপনাদের।(আমি)
:-----সাহসের দেখেছিস কি রে।

কথা না বাড়িয়ে দিলাম টুস্ করে একটা। এটা দেখে অপর ছেলেটা আমার দিকে তেড়ে আসতে লাগলো। আমি ঘুষি দিতে যাবো। এমন সময় দেখি কুপকাৎ হয়ে গেলো। হ্যাঁ রাফি আর আল-আমীন শুরু করে দিয়েছে। আমাদের তিনজনের এটার এক্সপেরিয়েন্স আছে। আনেক মানুষ পিটিয়েছি। তিনজন শুরু করে দিলাম। ঘুষি আর লাথি মারতেই আছি। ইতিমধ্যে ছেলে দুইটা আধমরা। শেষে রাকিব ভাইয়া এসে ছাড়িয়ে দিলো।

:-----কি হচ্ছে রাফি এটা।(রাকিব ভাইয়া)
:-----ওরা দুইটায় আমার দুই ভাবি কে ডিসটার্ব করেছে।নোংরা কথা বলতে চেয়েছিলো।(রাফি)
:-----আরে রাকিব ভাই আপনে।(ওই দুইটার মধ্যে একজন)
:-----ওনারা কারা জানিস।(রাকিব ভাইয়া)
:-----এইযে এই পিচ্চু টা বলছে একটা নাকি ওর গার্লেফ্রন্ড।আর একটা বোন।(একজন)
:-----তাহলে তো বলেছে ই।তারপরও আবার কথা বলছিস।তোদের কি জীবনের মায়া নাই।(রাকিব ভাইয়া)
এই কথা শুনেই ওই ছেলে দুইটা দিলো ভো দৌড়।

:-----আচ্ছা এখন বাড়ি চলো।(আমি)
:-----আচ্ছা বাই।পরে দেখা হবে।(রাকিব ভাইয়া)
:-----বাই রে দোস্ত।(রাফি)
:-----আল-আমীন আমাদের সাথে চল।(আমি)
:-----আচ্ছা চল।(আল-আমীন)

রাত্রি আপুকে বিদায় জানিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।
যাক এবার আমিও কথা বলতে পারবো। এই জন্যই আল-আমীনকে সাথে নিয়ে এসেছি।

:-----রুহি আজ তাহলে যাই।(মন খারাপ করে নিলা)
:-----আচ্ছা ।(আপু)

আপুকে বাসায় ড্রপ করে নিলার বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। নিলার বাসার সামনে চলে এসেছি।

:-----নামো এসে গেছি।
:-----এতো তাড়াতাড়ি।
:-----হুমম।
:-----যেতেই হবে।
:-----আরে হ্যাঁ রে বাবা।
:-----আচ্ছা বাই।
:-----কিছু কি ভুলে গেছো।
:-----না তো।কি ভুলবো আবার।
:-----আচ্ছা গেলাম বাই।
:-----আরে রাগ করো কেনো।ভুলিনি তো।
:-----সত্যিই।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা তাহলে.....
কথাটা শেষ করার আগেই.....



চলবে......
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
Like Reply
#23
পর্ব-১৮



------------------------------------



কথাটা শেষ করার আগেই.....টুপ করে একটা দিয়ে দিলো।

:-----থ্যাংক ইউ।(আমি)
:-----হয়েছে এখন যাও।নয়তো আমার তোমাকে ছাড়তে ইচ্ছা করবে না।(নিলা)
:-----আচ্ছা বাই।
:-----আর হ্যাঁ বাড়িতে গিয়ে অবশ্যই একটা কল করবে।
:-----হুমম ওকে।
:-----আমি কিন্তু অপেক্ষায় থাকবো
:-----আচ্ছা আজ তাহলে যাই।
:-----হুমম।

নিলাদের বাসার সামনে থেকে চলে আসলাম। অনেক রাত হয়ে গেছে। তাই আল-আমীনকে ওর বাসায় ড্রপ করে আমি বাসায় চলে আসলাম। খুব ক্লান্ত লাগছে। সারাদিন অনেক কাজের চাপ ছিলো। এই রে নিলাকে কল করতে একদম ভুলে গেছিলাম। যাই একটা কল করে জানিয়ে দিই। টুং টুং করে কল দিলাম একটা।

:-----হ্যালো।(নিলা)
:-----একটু আগেই পৌছে গিয়েছি।(আমি)
:-----আমি জানতাম তোমার মনে থাকবে না কল করার কথা।
:-----আরে রাগ করো কেনো।তোমার কথা মনে না থাকলে কার কথা মনে থাকবে।
:-----হয়েছে।
:-----আরে সত্যি।
:-----আচ্ছা এখন কি করছো
:-----আমি তো আমার সুইট সুইট দুইটা বাবুর আম্মুর সাথে কথা বলছি।তুমি কি করছো নিলা পরী।
:-----আমি আমার সুইট সুইট দুইটা বাবুর পিচ্চু আব্বুটার সাথে কথা বলছি।
:-----তাই নাকি।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা তাহলে ঘুমাও আজ।
:-----তুমিও ঘুমাও।
:-----হুমম।

নিলার সাথে কথা শেষ করে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। খুব ক্লান্ত থাকায় শুতেই ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলাম।।পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙলো মোবাইলের শব্দে। আরে এখনো তো সকালে হতে কিছুক্ষন বাকি আছে। কোনো বিপদ হলো না তো। এতো সকালে তো কল করার কথা না।

:-----উমম হ্যালো।(আমি)
:-----এখনো ঘুম শেষ হয়নি।(নিলা)
:-----না এখনো তো সকাল হয় নাই।
:-----তা তো আমি জানি।
:-----তাহলে এতো সকালে আমার ঘুমের চোদ্দটা কেনো বাজালে।
:-----হাঁটতে যাবো।
:-----হাঁটতে যাবে মানে।
:-----মানে হালকা শীতের সকালে খালি পায়ে শিশির ভেজা ঘাসের উপর হাঁটবো।তুমি আর আমি।
:-----না এখন খালি পায়ে হাঁটতে পারবো না।ঠান্ডা লাগবে অনেক।
:-----আচ্ছা রাখছি তোমার আসতে হবে না।
:-----আরে হ্যালো হ্যালো.....(যাহ ফোনটা কেটে দিলো)

ধ্যাত প্রেমে এতো পেরা আগে জানলে আমি চোখ বন্ধ করে রাস্তায় বের হতাম। কিছুই করার নেই। উঠেই নিলাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম দিলাম। খুব শীত করছে। কি করার বলুন। নিলার বাসার সামনে এসে নিলাকে কল করলাম।

:-----হ্যালো।(নিলা)
:-----কোথায় তুমি।(আমি)
:-----কেনো কল করেছো।যাও ঘুমাও।
:-----আরে নিলা পরী রাগ করো কেনো।বারান্দায় এসে দেখো আমি তোমার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।(আমি)
:-----মিথ্যা কথা।
:-----আরে না তোমার সাথে মিথ্যা বলবো।আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা।
:-----সত্যিই এসেছো।
:-----আরে হ্যাঁ।
:-----আচ্ছা দুই মিনিট দাঁড়াও আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছি।
:-----আসো।

একটু পরে নিলা বেরিয়ে আসলো। যাক আমার এতো সকালে আসার লাভ টা এখন পেলাম। শীতের সকালে নিলাকে খুব মায়াবি লাগছে লাগছে। প্রেমে পড়ে গেলাম আবারও।

:-----ওই ওভাবে কি দেখছো।(নিলা)
:-----তোমাকে দেখি।(আমি)
:-----আগে দেখোনি।
:-----যতবার দেখি ততবারই নতুন করে প্রেমে পড়ে যাই।
:-----কি যে বলো না তুমি।(কিছুটা লজ্জা)
:-----চলো।(আমি)
:-----হুমম চলো।

হালকা শীতের সকাল। তাই রাস্তায় মানুষ কম। বড় একটা মাঠের কাছে বাইকটা রাখলাম। মাঠটা পুরো সবুজ ঘাসে ছেয়ে গেছে। হালকা শিশিরের বিন্দুতে মাঠটা খুব সুন্দর লাগছে। নিলা আর আমি খালি পায়ে হাঁটছি।নিলা আমার হাত ধরে হালকা জড়িয়ে হাঁটা শুরু করলো। অনুভূতিটা বলে বোঝানো যাবে না। দুজনেই হাঁটছি।

:-----খুশি হয়েছো।(আমি)
:-----ভিশন।আমি কখনো ভাবিনি কেউ আমাকে এমন একটা সকাল উপহার দেবে।থ্যাংক ইউ আকাশ ।থ্যাংক ইউ সো মাচ।(নিলা)
:-----ওভাবে বলার কি আছে।
:-----তবুও।তোমার সাথে এভাবে হাঁটা।তোমার পাশে তোমার কাঁধে মাথা রেখে।সব কিছুই স্বপ্নের মতো লাগছে।আমি আসলেই খুব ভাগ্যবতী।(কান্না ই করে দিলো)
:-----আরে পাগলী কান্না করো কেনো।আমি আছি তো তোমার সাথে।
:-----সারাজীবন এভাবেই থাকবে তো।
:-----হুমম।কখনো ছেড়ে যাবো না।

এদিকে পাগলীটা কান্না করেই চলেছে। আরো কিছুক্ষণ হেঁটে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। কলেজে ও তো আবার যেতে হবে।

:-----যাও রেডি হও।আমি একটু পরে আসছি।(আমি)
:-----হুমম বাই।তাড়াতাড়ি এসো কিন্তু।(নিলা)
:-----হুমম।

আমি বাসায় চলে আসলাম।

:-----কিরে এতো সকালে কোথায় গিয়েছিলি।(আম্মু)
:-----ঘুরতে গিয়েছিলাম একটু।(আমি)
:-----নিলার সাথে নাকি বন্ধু।
:-----বন্ধু নিয়ে এতো সকালে কোথায় যাবো।নিলাকে নিয়েই একটু হাঁটতে গিয়েছিলাম।
:-----ওহ ভালো করেছিস।এখন ফ্রেশ হয়ে খেতে আয়।
:-----হুমম যাচ্ছি।

তারপরে ফ্রেশ হয়ে খেতে গেলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ করে কলেজের জন্যে রেডি হচ্ছি এমন সময় আপুর আগমন।
:-----নিলাকে পেয়ে তো আমাকে একেবারে ভুলেই গেলি।এখন কলেজে ও নিয়ে যাস না।(আপু)
:-----তোর জন্যে তো গাড়ি আছে ই।(আমি)
:-----গাড়ি দিয়ে একা এক যেতে ভালো লাগে নাকি।
:-----তাহলে কি করবো।
:-----আমাকে আর নিলা গাড়ি করে নিয়ে যাবি।
:-----হুমম।আমি তো আপনাদের ড্রাইভার।
:-----হুমম্।ড্রাইভার ই।এবার খুশি।
:-----বাহ্ আমাকে এখন ড্রাইভার বানিয়ে দিলি।(আমি)
:-----ড্রাইভার সাহেব গাড়ি বের করেন।(বলেই আপু চলে গেলো)

কি করার ই বা আছে গাড়ি নিয়েই বের হতে হলো। আমাকে ড্রাইভার বানিয়ে দিলো। আপুকে নিয়ে বের হলাম। নিলাদের বাসার সামনে থেকে নিলাকে পিক করে কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।

:-----তোরা ভেতরে যা।আমি পার্ক করে আসছি।(আমি)
:-----হুমম।ড্রাইভার তুই পার্ক করে আয়।(আপু)
:-----এখন কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে।(আমি)
:-----আচ্ছা আর বলবো না।(আপু)

গাড়িটা পার্ক করে ক্যাম্পাসে যেতে লাগলাম। একটু অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটছিলাম। এই রে ধপাস্ করে পড়ে গেলাম। কারো সাথে ধাক্কা লেগে গেলো। কানের বারোটা বাজাবে এখন। যেহেতু আমি অন্যমনস্ক ছিলাম তাই কথাগুলো আমারই শুনতেই হবে।

:-----এই যে মিষ্টার।(কথা থামিয়ে)
:-----মিষ্টার আকাশ।(আমি)
:-----যেই লয় ই হোন না কেনো।চোখে কি দেখতে পান না।(মেয়েটি)
:-----হুমম।পাবো না কেনো।দিব্যি দেখতে পাই।(আমি)
:-----তাহলে ধাক্কা খেলেন কেনো।(মেয়েটি)
:-----আরে আমি ইচ্ছা করে ধাক্কা খেয়েছি নাকি।(আমি)
:-----তাহলে কেনো খেয়েছেন।(মেয়েটি)
:-----হঠাৎ করে লেগে গেছে।সরি।(আমি)
:-----সরি বললেই সব সমাধান হয়।(মেয়েটা)
:-----আরে রুপু তুই।(নিলা)
যাক নিলা এসে গেছে। এই যাত্রায় বেঁচে যাবো।
:-----আরে নিলা আপু তুমি।(রুপু মেয়েটার নাম)
:-----তুই এই কলেজে কি করিছ।(নিলা)
:-----নিউ এডমিশন।(রুপু)
:-----ওহ।তা এতো ঝগড়া করছিস কেনো।(নিলা)
:-----এই ছেলেটা আমাকে ধাক্কা মেরেছে।(রুপু)
:-----এইসব বাজে ছেলেদের আর কোনো কাজ নাই।সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে দেখলেই ধাক্কা খেতে ইচ্ছা করে ওনাদের।(নিলা)

আরিব্বাস নিলা দেখি দল বদল করলো। আমি তো পুরাই অবাক।

:-----ছেলেটাকে তো আমার খুব পছন্দ হয়েছে আপু।(রুপু নামের মেয়েটা বলে উঠলো)
:-----ওকে চিনিস।(নিলা)
:-----না।আজকেই তো প্রথম কলেজে আসলাম।(রুপু)
:-----এটা তোর দুলাভাই।(নিলা)
:-----ঠিক বুঝলাম না।(রুপু)
:-----আমি তোর কি হই।
:-----আপু।
:-----আপুর জামাই তো অবশ্যই তোর দুলাভাই হবে।
:-----কিহ।সত্যিই।
:-----হুমম।এই পাগল টাকে মানুষ করার দায়িত্ব আমার উপরে।
:-----সরি আপু।
:-----ইটস ওকে।
যাক নিলা বাঁচিয়ে দিলো। আমার কানগুলো।
:-----হাই আমি রুপু।(রুপু)
:-----আমি আকাশ।ধাক্কা টা আমি ইচ্ছা করে দিইনি।তাই সরিম।(আমি)
:-----ইটস ওকে দুলাভাই।(বলেই হো হো করে হাসতে শুরু করলো)

নিলা কিছুক্ষন ওই মেয়েটার সাথে কথা বললো। তারপরে কয়টা ক্লাস করলাম। নিলাকে ওর বাসায় ড্রপ করে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।

:-----এই আকাশ শোন।(আম্মু)
:-----হুমম বলো।(আমি)
:-----ঝিনাত আজ সন্ধ্যার ট্রেনে আমাদের এখানে বেড়াতে আসবে।তুই গিয়ে নিয়ে আসিস।।
:-----আমারই যেতে হবে।
:-----হুমম।তোর আব্বুর কাজ আছে।তাই তোর ই যেতে হবে।
:-----আচ্ছা যাবো।

ধ্যাত ঝিনাত আবার এখন কেনো আসছে। ও তো একটা পাগলী মেয়ে। কি থেকে কি করে ফেলে নিজেও জানে না। বুদ্ধি পেয়েছি একটা। নিশা কে সাথে করে নিয়ে যাই। যেই ভাবা সেই কাজ। নিলাকে কল করলাম।
:-----হ্যালো নিলা পরী।(আমি)
:-----হঠাৎ এতো আদর।(নিলা)
:-----তোমাকে আবার কবে আদর না করলাম।
:-----বলো।
:-----নিশা কোথায়।
:-----এইতো আমার সাথেই।কিন্তু কেনো।
:-----ওর কাছে একটু দাও তো।
:-----এই নিশা নে আকাশ তোর সাথে কথা বলবে।
:-----হ্যালো আকাশ ভাইয়া।(নিশা)
:-----কিরে শালি।দুলাভাই কে তো একেবারেই ভুলে গেছিস।(আমি)
:-----আমি কই ভুলে গেছি।তুমি ই তো ভুলে গেছো।
:-----আমি ভুলে গেলে কি কল করতাম।
:-----তা অবশ্য ঠিক।কিন্তু আমি কল করবো কি দিয়ে।আমার তো আর পার্সোনাল মোবাইল নেই।
:-----ওরে আমার শালির কি কষ্ট।আজকে বিকালে ই আমি আমার শালিটাকে মোবাইল কিনে দেবো।
:-----সত্যিই।
:-----হুমম।তিন সত্যি।
:-----থ্যাংক ইউ।
:-----বিকালে ঘুরতে যাবো।
:-----আচ্ছা।
:-----নিলাকে ফোনটা দে।
:-----আপু নাও।(নিশা)
:-----শালি-দুলাভাই কি প্লান করলে।(নিলা)
:-----আমরা ঘুরতে যাবো সেটা।(আমি)
:-----ওহ।এই জন্যই নিশাকে এতো খুশি দেখাচ্ছে।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা যেও
:-----আচ্ছা বাই।

বিকালে নিশাকে পিক করলাম। তারপর দুজন স্টেশনের দিকে গেলাম। ট্রেন এখনো আসে নি।

:-----এই নিশা ফুসকা খাবি।(আমি)
:-----কথাটা খারাপ বলো নি।চলো খেয়ে আসি।(নিশা)
:-----হুমম চল।

তারপর দুজনে মিলে ফুসকা খেয়ে নিলাম। ট্রেন চলে এসেছে। ঝিনাত নামলো।

:-----এই আকাশ ভাইয়া।(ঝিনাত)
:-----কেমন আছো ঝিনাত।(ভদ্রতার খাতিরে জিজ্ঞেস করলাম আর কি)
:-----এতোদিন তো ভালো ছিলাম না।তবে এবার ভালো থাকবো।(ঝিনাত)
:-----কেনো।
:-----তুমি বুঝলে তো হতোই।
:-----আমি আবার কি বুঝলাম না।
আমি তো সবই বুঝে গেছি। কিন্তু তুমি যে অনেক ছোটো। এখন ধাক্কা দিলে বেশি ইমোশনাল হয়ে যেতে পারো। মনে মনে বললাম।
:-----কিছু না চলো।
:-----আকাশ ভাইয়া আমার মোবাইল।(নিশা)
:-----তুই এখানে কি করছিস।(ঝিনাত)
:-----সেটা তোর জানা কি খুব দরকার।(নিশা)
:-----হুমম।আমার জানা দরকার।(ঝিনাত)
:-----আকাশ ভাইয়া আজ আমাকে মোবাইল কিনে দিবে।(নিশা)
:-----তোকে কেনো মোবাইল দিবে।তা ও আবার আকাশ ভাইয়া।(ঝিনাত)
:-----তো কাকে কিনে দিবে।(নিশা)
:-----আমাকে সব কিনে দিবে।(বিড়বিড় করে বললো)
:-----ওই বিড়বিড় করে কি বলছিস।(নিশা)
:-----কিছু না।আকাশ ভাইয়া চলো।(ঝিনাত)
:-----হুমম চলো।

এইজন্যই নিশাকে সাথে আনা। যাতে এই মেয়েটার মাথা থেকে ভূত নামে। কথামতো নিশাকে ফোন কিনে দিলাম। তারপর ঝিনাতকে বাসায় ড্রপ করে নিশাকে নিয়ে ওর বাসার দিকে চলে গেলাম।
পৌঁছে গেছি।

:-----এই নাম।আর হ্যাঁ মোবাইল বেশি ব্যবহার করা যাবে না।দরকার পরলেই ব্যবহার করবি।আর সারাদিন গেইম খেলিস না আবার।
:-----হ্যাঁ বুঝেছি।ভেতরে চলো।
:-----হ্যাঁ চল।
ভেতরে গেলাম।
:-----আসবো।(আমি)
:-----তুমি আসবে।এতে আবার পারমিশন নেওয়ার কি আছে।(নিলা)
:-----হি হি।মজা করছিলাম।(আমি)
:-----তোমার তো আছেই শুধু মজা
:-----আরে এমন করে কথা বলছো কেনো।
:-----এমনি ই।
:-----আচ্ছা চলো আমরা ঘুরতে যাই।
:-----না যাবো না।তুমি একা ই যাও।
:-----আরে চলো তো।
:-----আচ্ছা চলো।কিন্তু যাবো কোথায়।
:-----প্রথমে একটু ঘোরাঘুরি।আর তারপরে বাসায় যাবো।
:-----সত্যিই।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা তুমি বসো আমি চেঞ্জ করে আসছি।
:-----হুমম।

একটু পরে নিলা ড্রেস চেঞ্জ করে আসলো। খোলা চুলে নিলাকে দারুণ লাগছে। আমি হা করে তাকিয়ে আছি।

:-----এই হা করে কি দেখছো।
:-----এইতো আমার নিলা পরীটাকে দেখছি আর কি।
:-----আমাকে কি আজ নতুন দেখছো নাকি।।
:-----তোমাকে যতবার দেখি ততবারই নতুন করে দেখার স্বাদ পাই।
:-----ধ্যাত কি যে বলো না।
:-----এদিকে আসো।
:-----কেনো।
:-----আসো ই না।

নিলা একটু কাছে আসলো। আমি কাজল দিয়ে ছোটো করে একটা ফোঁটা দিয়ে দিলাম নিলার গালে।

:-----কি করছো।
:-----আরে যদি কারো নজর লাগে।
:-----আর কার নজর লাগবে?একজনের তো লেগেই গেছে।
:-----কিহ।কার নজর লেগেছে তোমার প্রতি।
:-----তোমার আর কার।
:-----হুমম।তা তো লেগেছে ই।
:-----চলো এখন।পরে বাসায় ফিরতে দেরী হয়ে যাবে।
:-----হুমম চলো।

তারপরে আমি আর নিলা বেরিয়ে পড়লাম ঘুরতে। সন্ধ্যা হয়ে গেছে।এখন আমরা সহর টার রাতের চেহারা দেখবো। বিশেষ কোথাও গেলাম না।একটু এদিক ওদিক ঘুরলাম।

:-----চলো এখন বাসায়।
:-----কোন বাসায়।
:-----এক বাসায় গেলেই হবে।দুইটা ই তোমারই বাসা।
:-----আচ্ছা তাহলে তোমাদের বাসায় চলো।
:-----আমি ওই বাসার কথা ই বলছিলাম।
:-----চলো তাহলে।
:-----হুমম।চলো যাওয়া যাক।

বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।।বাসায় পৌছে কলিং বেল দিলাম। আপু দরজা খুলে দিলো।

:-----আরে নিলা কেমন আসিছ।(আপু)
:-----এইতো ভালো।তুই কেমন আসিছ।(নিলা)
:-----এখন তুই এসে গেছিস।খারাপ কিভাবে থাকি।(আপু)
:-----কথা বলা হয়ে থাকলে এখন ভেতরে যাই।(আমি)
:-----তোকে কে দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছে।(আপু)
:-----আমি তো বাড়ির অতিথি।(আমি)
:-----যা তোর রোমে।নিলা তুই চল আমার সাথে।(আপু)
:-----হ্যাঁ হ্যাঁ।আমি তো কিছু না।নিলা ই তো সব।(আমি)
:-----দেখলি কেমন হিংসে করছে।(আপু)
:-----হি হি।(নিলা)

নিলা আপুর সাথে চলে গেলো। আমি আমার রোমে চলে গেলাম।
একটু বিশ্রাম নিচ্ছি।

:-----আকাশ ভাইয়া আসবো।(ঝিনাত)
:-----আসো এতে বলার কি আছে।(আমি)
:-----একটা প্রশ্ন ছিলো।(ঝিনাত)
:-----হুমম্ বলো কি প্রশ্ন।(আমি)
:-----নিলা আপু এই বাসায় কি করে।(ঝিনাত)
:-----আসলে হয়েছে কি।না মানে।(আমি)
:-----এমন করছো কেনো।ভালো করে বলো।(ঝিনাত)
:-----আপুর থেকে জিজ্ঞেস করো।(আমি)
:-----আচ্ছা।(ঝিনাত)

আমার রোম থেকে চলে গেলো। আমিও ঝিনাতের পিছনে পিছনে গেলাম। আমাকে খেয়াল করেনি হয়তোবা।

:-----আরে নিলা আপু তুমি এখানে কি করছো।(ঝিনাত)
:-----আমি কি করছি মানে।(নিলা)
:-----মানে তুমি এখানে কিভাবে।(ঝিনাত)
:-----ও আসবে না তো কে আসবে।(আপু)
:-----বুঝলাম না ঠিক।(ঝিনাত)
:-----আরে নিলা ই তো আমার একমাত্র ভাবিটা।(আপু)
:-----রুহি কি বলছিস।(নিলা কিছুটা লজ্জা পেয়ে বললো)
:-----বুঝলাম না ঠিক।(ঝিনাত)
:-----আরে বোকা।আমার ভাই কয়টা।(আপু)
:-----একটা।(ঝিনাত)
:-----তাহলে না বুঝার কি আছে।(আপু)
:-----এবার ও বুঝতে পারছি না।(ঝিনাত)
:-----আরে ও হচ্ছে আকাশের হবু বউ।আর আমার একমাত্র ভাবি।(আপু)
:-----কিন্তু নিলা আপু তো আকাশ ভাইয়ার বড়।(ঝিনাত)
:-----তাতে কি।(আপু)
:-----এটা হয় নাকি।(ঝিনাত)
:-----হুমম হয়।(আপু)

ঝিনাত রোম থেকে চলে গেলো। আমি আপুর রোমে প্রবেশ করলাম।

:-----কি করলি এটা।(আমি)
:-----কেনো কি হয়েছে।(আপু)
(-------)
নানু বাসায় যা যা ঘটেছে সব বললাম।
:-----এত কিছু ঘটে গেলো আর আমি কিছুই জানলাম না।(আপু)
:-----হুমম।(আমি)
:-----কোনো সমস্যা নেই।ঝিনাত এখনো অনেক ছোটো।(আপু)
:-----কিছু না হলেই ভালো।(আমি)
:-----হুমম।(আপু)
:-----নিলা চলো ডিনার করবে।(আমি)
:-----রুহি তুই ও চল।(নিলা)
:-----হুমম।(আপু)

তারপর সবাই একসাথে ডিনার করলাম। ঝিনাত কেমন করে যেনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কি আর করার।

:-----নিলা চলো।(আমি)
:-----হুমম চলো।আম্মু আজ তাহলে যাই।(নিলা)
:-----আচ্ছা।(আম্মু)

নিলাকে নিয়ে বেরিয়ে আসলাম। নিলাকে ড্রপ করে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। রাস্তায় কারো কল আসলো......




চলবে.......
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
Like Reply
#24
পর্ব-১৯


------------------------------------



রাস্তায় কারো কল আসলো। আল-আমীনের কল। এতো রাতে আল-আমীন কল করলো।

:-----হ্যালো।(আমি)
:-----হুমম।তুই কোথায় রে?(আল-আমীন)
:-----এইতো বাসায় যাচ্ছি।কেনো বল তো।(আমি)
:-----না তেমন কিছু না।একটা পার্টি ছিলো।তোকে ছাড়া একা একা যাবো।তাই তোকে কল করলাম।(আল-আমীন)
:-----রাফি যাবে।(আমি)
:-----তোর কথা বললেই যাবে।(আল-আমীন)
:-----আচ্ছা একটু দেরি কর।আমি আসছি।(আমি)

আসলে আমরা একে অপরকে ছাড়া থাকতেই পারি না। সেই ছোট্ট বেলার বন্ধুত্ব। আল-আমীন আর রাফি কে পিক করলাম। আল-আমীনের কথামতো যায়গায় চলে গেলাম। পার্টিতে যোগদান করলাম। আল-আমীনের কোনো আত্মীয়ের অনুষ্ঠান। আমি আর রাফি কথা বলছি। আল-আমীন ওর আত্মীয়দের সাথে দেখা করতে গেছে।

:-----মামা দেখ দেখ।ক্রাশ খাইছি মামা।এইটা লাগবো।(রাফি)
:-----কি বলিস ব্যাটা।(আমি)
:-----আমি কিন্তু সিরিয়াস।
:-----তুই তো সারাজীবন সিরিয়াস ই থাকিস।
:-----না এটাতে আমি সিরিয়াস।
:-----সত্যি তো।পরে আবার মতামত পাল্টাতে পারবি না।
:-----না এটাই ফাইনাল।
:-----আচ্ছা আল-আমীন আসুক।ব্যাপারটা দেখতে হয় তাহলে।
:-----যা ইচ্ছা কয।তবে উত্তর হ্যাঁ তে এনে দিস।
:-----দেখি চেষ্টা করে।
:-----হুমম কর।
:-----আল-আমীন এই (---) পড়া মেয়েটা কে রে।(আমি)
:-----আমার খালাতো বোনের বান্ধুবী হবে মনে হয়।কিন্তু কেনো সেটা তো বল।(আল-আমীন)
:-----মেয়েটাকে লাগবে।(আমি)
:-----কি বলছিস বুঝতে পারছিস।নিলার কি হবে তাহলে।(আল-আমীন)
:-----আরে আমার জন্যে না।(আমি)
:-----তাহলে।(আল-আমীন)
:-----রাফির জন্যে।(আমি)
:-----ওহ আচ্ছা সেটা বল।(আল-আমীন)
:-----হুমম।(আমি)
:-----আচ্ছা চল কথা বলা যাক একটু।(আল-আমীন)
:-----হুমম চল।(আমি)

মেয়েটার সামনে যেতেই আমি অবাক। এতক্ষণ চেহারা দেখা হয়নি।
এটাতো রুপু। কলেজে যার সাথে ধাক্কা লেগেছিলো। কি করি কি করি।

:-----এক্সকিউজ মি।(আল-আমীন)
:-----আমাকে বলছেন।(রুপু)
:-----জ্বি।আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো।(আল-আমীন)
:-----আরে আকাশ ভাইয়া আপনি এখানে কিভাবে।(রুপু)
:-----পরিচিত মানুষের অনুষ্ঠান।(আমি)
:-----ওহ।তা আপনি কি যেনো বলছিলেন।(রুপু)
:-----আপনি কি সিঙ্গেল।(আল-আমীন)
:-----কেনো বলুন তো।(রুপু)
:-----আসলে আপনাকে আমার বন্ধুর অনেক পছন্দ হয়েছে।(আল-আমীন)
:-----মজা নিচ্ছেন।ওনার তো প্রথম থেকেই গার্লেফ্রন্ড আছে।(রুপু)
:-----আরে আপনি ভুল ভাবছেন।আমার অন্য বন্ধুর কথা বলছিলাম।(আল-আমীন)
:-----হুমম রুপু।ও রাফির কথা বলছে।(আমি)
:-----আচ্ছা আমি পরে জানাবো।(রুপু)
:-----নিলার সাথে ফোনে যোগাযোগ হয়।(আমি)
:-----হুমম।হয় মাঝে মাঝে।(রুপু)
:-----আচ্ছা তাহলে নিলার কাছে তোমার ডিসিশন জানিয়ে দিও।আর ওইযে দাঁড়িয়ে আছে(রাফিকে দেখিয়ে) ওটাই আমার বন্ধু।(আমি)
:-----আচ্ছা।(রুপু)
:-----ওকে বাই।(আমি)
রাফির কাছে চলে আসলাম।
:-----কি বললো রে দোস্ত।(রাফি)
:-----বলেছে জানাবে।(আমি)
:-----ওহ।(রাফি)
:-----ট্রিট দিবি কিন্তু।(আমি)
:-----আগে রাজি হোক।(রাফি)
:-----আরে হবে হবে।তোর দিকে যেভাবে তাকিয়ে ছিলো।(আমি)
:-----মজা নিচ্ছিস।(রাফি)
:-----আরে না।মজা কেনো নিবো।(আমি)
:-----চল এখন।(রাফি)
:-----হুমম চল।(আমি)

তারপর পার্টিতে কিছুক্ষন থেকে বাসায় চলে আসলাম। আজকে তো নিলাকে ফোন দেওয়া হয়নি। মোবাইলটাকে ভৌতিক লাগছে। র্স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখি অনেকগুলো কল। সাথে এস এম এস ও আছে। এখন আমার কি হবে। ভয়ে ভয়ে নিলাকে একটা কল করলাম। প্রথম বার কেটে দিলো। পরপর কয়েকবার ট্রাই করলাম। প্রতিবারই কেটে দিচ্ছে। এবার রিসিভ করেছে।

:-----হ্যালো নিলা।(আমি)
:-----কি ব্যাপার এতো কল করছো কেনো।(নিলা)
:-----সরি।
:-----বাই।আমি বিজি আছি।
:-----হ্যালো হ্যালো.....(কল টা কেটে দিলো)
আবার দিলাম।
:-----হ্যালো বাবুটা রাগ করছো।
:-----ওই তুই জানিস না আমি রাগ করছি কি না।তুই একটা কল করার সময় পেলি না।কতগুলো কল করেছি।সাথে এস এম এস ও।আমার কোনো মূল্য নাই তোমার কাছে।(কেঁদেই ফেললো)
:-----আমার কথাটা একবার শোনো।
:-----কি শোনবো হ্যাঁ।জানো আমার কতো টেনশন হয়েছিলো।তোমার কি একটুও কমন সেন্স নাই।এতো রাতে একা একা গেলে।একবার কল করে জানানোর প্রয়োজন মনে করোনি।(কান্না করতেই আছে)
নিলার কান্না আমার সহ্য হয় না।
:-----রাস্তায় আল-আমীন কল করে বলে যে ওর আত্মীয়ের একটা পার্টি আছে।তাই ওর সাথে একটু পার্টিতে গিয়েছিলাম।(আমি)
:-----পার্টিতে গিয়েছিলে ভালো কথা।আমাকে কল করে জানানোর প্রয়োজন মনে করোনি।কেনোই বা করবে।আমাকে তুমি একটুও ভালোবাসো না।
:-----কি বলছো এইসব।আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।খুব খুব খুব।।
:-----সত্যি তো।
:-----হুমম।তিন সত্যি।
:-----আচ্ছা এবারের জন্যে ক্ষমা করলাম।আর এমনটা করবা না।
:-----হুমম।আর কখনো এমন করবো না।
:-----এখন তাহলে ঘুমাও।
:-----কিছু ভুলে গেছো।
:-----না ভুলিনি।
:-----তাহলে।
:-----উম্মাহ।
:-----ওকে গুড নাইট।
:-----ওকে।

আমিও ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙলো একটু দেরি করে। তবে নিলার ফোনেই ঘুম ভেঙেছে। আজ তো আবার শুক্রবার। তাই হয়তো আমাকে একটু ঘুমোতে দিয়েছে।

:-----উমম হ্যালো।(আমি)
:-----এখনো ঘুম শেষ হয়নি।(নিলা)
:-----না ওই আর কি।(আমি)
:-----আজ এতো দেরি করে কল করলাম।তবুও ঘুম ভাঙে নি।
:-----আজ শুক্রবার তো।তাই একটু বেশী করে ঘুমিয়ে নিচ্ছিলাম আর কি।
:-----ভালো করেছো।বিকালে ঘুরতে যাওয়ার কথা মনে আছে তো।
:-----না তো।আজকে বিকালে আবার ঘুরতে যাবো। রাগানোর জন্যে কথাটা বললাম)
:-----রাখছি।তোমার কিছুই মনে থাকে না।
:-----আরে সরি সরি।একটু মজা করছিলাম আর কি।
:-----মনে থাকে যেনো।
:-----কি বলো।আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা।যে এটা ভুলে যাবো।
:-----রাফি আর আল-আমীনকে সাথে নিয়ে এসো।
:-----ভালো কথা মনে করিয়েছো।
:-----কি কথা।
:-----রুপু কি কিছু বলেছিলো।
:-----সেটাই বিকালে বলবো।
:-----এখন বলো না প্লিজ।
:-----রুপু রাজি হয়ে গেছে।
:-----যাক ট্রিট পাবো।
:-----হি হি।
:-----আর হ্যাঁ আল-আমীনকে সাথে আনতে কেনো বললে।
:-----ওর জন্যে ও একটা সারপ্রাইজ আছে।
:-----কি সারপ্রাইজ।
:-----আরে সবকিছু কি এখন ই বলে দিবো নাকি।
:-----হি হি।
:-----আচ্ছা এখন ফ্রেশ হয়ে ব্রেক-ফার্স্ট করো যাও।
:-----যথা আজ্ঞা মহারানি।
:-----হয়েছে এখন যাও।
:-----ওকে।
:-----হুমম।

আরো কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে উঠলাম।ফ্রেশ হতে গেলাম। ছুটির দিনে কেউ আমাকে ডাকে না। কারণ আমি ছুটির দিনে ঘুমাই। ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম।

:-----আম্মু....আম্মুউউ....(জোরে চিৎকার করে)
:-----কি হলো।এতো চিত্কার চেঁচামেচি কিসের।(আম্মু)
:-----খেতে দাও।ক্ষুধা লেগেছে।
:-----বস দিচ্ছি।এতে এতো চিতকার করার কি আছে।
:-----হি হি।
খাওয়া শুরু করলাম। দেখি রাফিকে একটা কল করে।
:-----কিরে তোর ঘুম ভেঙেছে।(রাফি)
:-----আরে রাখ তোর ঘুম।(আমি)
:-----আচ্ছা রাখলাম আমার ঘুম।
:-----মাম্মা তোমার তো লাইফ সেট।
:-----ঠিক বুঝলাম না।
:-----রুপু রাজি।
:-----সত্যি।
:-----হুমম।তিন সত্যি।
:-----যাক আলহামদুলিল্লাহ্।আমি সিঙ্গেল মরমু না।
:-----সিঙ্গেল মর বা ডাবল।আজ তোর পকেট মরবে।
:-----সেটা কি আর বলতে।
:-----হি হি।(একটা ভিলেন হাসি দিলাম)
:-----কি করছিস এখন।
:-----এইতো ব্রেক-ফার্স্ট করছি আর তোর সাথে কথা বলছি।
:-----তাহলে রাখি।খাওয়া দাওয়া কর।
:-----শোন।
:-----হুমম বল।
:-----বিকালে দেখা করতে যাবো।
:-----কার সাথে।
:-----আরে ছাগল রুপু আসবে।
:-----ওহ।
:-----হুমম।নিলা বললো আল-আমীনকে ও সাথে নিয়ে আসতে।
:-----তাহলে ওকে ও নিয়ে নিবো।
:-----হুমম।দেখি ওর জন্যে কাউকে পাই কি না।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা বাই।
:-----হুমম বাই।

আল-আমীনকে কল করলাম।

:-----হ্যালো।(আমি)
:-----হুমম বল।(আল-আমীন)
:-----বিকালে ঘুরতে যাবো রেডি থাকিস।
:-----আচ্ছা ঠিক আছে।

তারপর খাওয়া শেষ করে রোমে চলে গেলাম। দুপুরে নামাজ পড়তে গেলাম। নামাজ শেষে বাসায় ফিরে খাওয়া দাওয়া করে একটু ঘুমিয়ে নিলাম। বিশ্রাম প্রয়োজন একটু। ঘুম ভাঙলো সময় মতো। এমন সময় মোবাইল টা বেজে উঠলো। হ্যাঁ নিলা কল করেছে।

:-----হুমম বলো।(আমি)
:-----কি করছো।(নিলা)
:-----এই তো কিছু না।
:-----তাহলে চলে আসো।বিকাল হতে আর বেশি বাকী নেই।
:-----হুমম।কিছুক্ষনের মধ্যেই আসছি।
:-----হুমম গুড বয়।।

মায়ার সাথে কথা শেষ করে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে নিলাম। এখন গন্তব্য নিলা দের বাসা। আজ আর গাড়ি নিলাম না। বাইক নিলাম। একটু পরেই পৌছে গেলাম নিলাদের বাসার সামনে। দেখি নিলাকে একটা কল করি।

:-----হ্যালো কোথায় তুমি।(আমি)
:-----এইতো রেডি হচ্ছি।(নিলা)
:-----কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবো।
:-----তুমি চলে এসেছো।
:-----তোমার কি মনে হয়।
:-----তাহলে ভেতরে আসো।
:-----আচ্ছা।
:-----হুমম।

কি আর করার। বাড়ির ভিতরে গেলাম। কলিং বেল দিলাম। নিশা এসে দরজা খুলে দিলো।

:-----কেমন আছো আকাশ ভাইয়া।(নিশা)
:-----এইতো আলহামদুলিল্লাহ ভালো।তুই কেমন আছিস।আর আন্টি কেমন আছে।(আমি)
:-----আমি ভালো আছি।আম্মু ও খুব ভালো আছে।
:-----ওহ।
:-----বাইরে দাঁড়িয়ে আছো কেনো।ভিতরে আসো।
:-----হুমম।
ভিতরে গেলাম।
:-----নিলা কোথায় রে।(আমি)
:-----আপু তো রোমে।রেডি হচ্ছে।মনে হয় কোথাও যাবে।
:-----হ্যা।সেজন্যই তো নিতে আসলাম।
:-----তাহলে আপুর রোমে যাও।
:-----হুমম।
নিলার রোমের দিকে গেলাম।
:-----আসবো।(আমি)
:-----হুমম।এটা আবার জিজ্ঞেস করতে হয়।(নিলা)
:-----কি বলো জিজ্ঞেস করবো না।
:-----তুমি আবার কি জিজ্ঞেস করবে।
:-----আর কতক্ষণ লাগবে।
:-----এইতো আর বেশিক্ষণ লাগবে না।প্রায় রেডি আমি।
:-----তা তো দেখতেই পাচ্ছি।
:-----কি দেখতে পাচ্ছো।
:-----তোমাকে একদম অপ্সরী লাগছে।
:-----মিথ্যা বলছো।আমাকে বাজে দেখাচ্ছে।
:-----আরে না কি বলো।তোমাকে একদম অপ্সরী লাগছে।তোমাকে যতবার দেখি ততবারই নতুন করে তোমার প্রেমে পড়ে যাই।
:-----কি যে বলো না।
:-----সত্যি কথা ই বলেছি।
:-----হুমম।যা সত্যি বলছো না।চলো এখন আমি রেডি।
:-----কোকোথায় রেডি।
:-----কি হলো আবার।
:-----এটা ভুলে গেছো।(ছোট্ট একটা টিঁপ দিয়ে দিলাম নিলার কপালে)
:-----এবার চলো
:-----না আরো কিছু বাকি আছে।তোমাকে অসম্পূর্ণ লাগছে।
:-----আরো কি বাকী।
:-----এটা।(প্রতিদিনের মতো কিছুটা কাজল নিলার গালের এক কোনে দিয়ে দিলাম)
:-----তুমি পারো ও।
:-----এবার চলো
:-----হুমম চলো।

তারপর আল-আমীন আর রাফিকে ফোন করে আসতে বললাম। নির্দিষ্ট যায়গায়। নিলা আমার বাইকের পিছনে। আমাকে হালকা জড়িয়ে ধরে আছে। একটুপরে আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। দুজন কিছুক্ষন গল্প করলাম। ইতিমধ্যেই রাফি আর আল-আমীনের আগমন। দুজনেই বাইকে এসেছে। আমাদের সবার ই বাইক আছে। আর সবাই মোটামুটি ভালো ড্রাইভ করতে পারি।
আমি একটু পাঁকা ওদের দুজনের থেকে।

:-----সরি রে দোস্ত।একটু লেট হয়ে গেলো।(রাফি)
:-----ব্যাপার না।(আমি)
:-----অনেকক্ষণ ধরে বসে আছিস নাকি।
:-----না বেশিক্ষন হয়নি।
:-----তাহলে তো বেঁচে গেলাম।
:-----কিভাবে বাঁচলি।
:-----মানে কি।।
:-----মানে আজকে ট্রিট দিবি।
:-----তা তো দিতেই হবে।
:-----হুমম।

কিছুক্ষন পরে রুপু আর সাথে অপরিচিত একটা মেয়ের আগমন।

:-----হাই নিলা আপু।কেমন আছো।(রুপু)
:-----ভালো।তুই কেমন আছিস।(নিলা)
:-----আমিও ভালো।(রুপু)
:-----ওকে তো ঠিক চিনলাম না।(নিলা)
:-----আরে সকালে যার কথা তোমাকে বললাম।ও হচ্ছে সেই।মানে অনু।(রুপু)
:-----ওহ আচ্ছা।চিনতে পেরেছি।কেমন আছো তুমি।(নিলা)
:-----হুমম ভালো।তুমি কেমন আছো আপু।(অনু)
:-----আমি খুব ভালো।(নিলা)

এদিকে আমি রাফিকে বললাম যে রুপু কে প্রপোজ কর। যেই বলা সেই কাজ। রুপু কে একটু দুরে নিয়ে হাঁটু গেড়ে প্রপোজ করলো রাফি। সাথে সাথে একসেপ্ট ও করে নিলো। এদিকে অনু একগুচ্ছ গোলাপ নিয়ে আল-আমীনকে প্রপোজ করে বসলো। আমি তো রীতিমতো অবাক। নিলা কি তাহলে এই সারপ্রাইজের কথাই বলেছিলো। নিলাকে দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালাম। নিলা চোখ দিয়ে সম্মতি দিলো যে এটাই সেই সারপ্রাইজ। যাক ভালোই হলো।

:-----এখন তাহলে যাওয়া যাক।(আমি)
:-----হুমম চল।(রাফি)

প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে। এখনই সূর্য অস্ত যাবে। সবাই এমন একটা যায়গায় গেলাম যেখান থেকে সূর্যাস্ত টা অনেক স্পষ্ট দেখা যায়। সবার সবাই সবার বাইকের পিছনে বসে গেলো। সবাই একসাথে সূর্যাস্ত টা উপভোগ করছি। নিলা আমার কাঁধে মাথা রেখে দাঁড়িয়ে আছে। একইভাবে রুপু আর অনু যথাক্রমে রাফি আর আল-আমীনের কাঁধে মাথা রেখে সূর্যাস্ত দেখছে।

:-----এমন করেই যেনো সারাটা জীবন তোমার সাথে থাকতে পারি।(নিলা)
:-----হুমম।(আমি)




চলবে......
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
Like Reply
#25
পর্ব-২০



------------------------------------


আরে এতো সকালে বৃষ্টির শব্দ।আরে এটা তো আমার মোবাইলের রিং টোন। মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখি নিলা কল করেছে। কি আর করার। ঘুমের চোদ্দটা বেজে গেলো।ফোনটা ধরে....

:-----উমম হ্যালো।(আমি)
:-----বিরক্ত করে ফেললাম নাকি।(নিলা)
:-----আরে কি যে বলো না তুমি।তুমি বিরক্ত কেনো করতে যাবে
:-----আমি তো এমনিতেই বলছিলাম।(বলেই হো হো করে হেসে উঠলো)
:-----আজ আমার নিলা পরীটাকে খুব খুশি খুশি লাগছে।ব্যাপারটা কি।
:-----ব্যাপারটা হচ্ছে কিছুই না।শুধু শুধু তোমার ঘুম ভাঙালাম।তুমি জানো না তোমার ঘুম ভাঙাতে আমার কত ভালো লাগে।
:-----তা তো জানি ই।-(আমার জীবনটাকে তেজপাতা করছো আর কি)-বিড়বিড় করে কথাটা বললাম।
:-----ওই বিড়বিড় করে কি বলছো।
:-----না কিছু না।
:-----আচ্ছা উঠেই যখন গেছো ফ্রেশ হয়ে আমাকে পিক করে নিয়ে যাও।একটু ঘোরাঘুরি করে কলেজে চলে যাবো।
:-----সব ই তো বুঝলাম।কিন্তু আমার ঘুম ভাঙানোর ওষুধ কে দিবে।
:-----তোমার আবার কিসের ওষুধ।
:-----আমি কি জানি।
:-----উম্মাহ।নাও এখন ওঠো।।
:-----এইতো উঠে গেছি।
:-----আচ্ছা বাই।ফ্রেশ হয়ে খাওয়া শেষ করে কল করবে।মনে যেনো থাকে।
:-----যথা আজ্ঞা।

কি করার উঠে গেলাম। হালকা হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে। ধ্যাত এতো সকালে কেউ ঘুম ভাঙ্গায়। আম্মু বা আপু কেউই আমাকে এতো সকালে ডাকে না। আর ভুলেও যদি ডাকে তাহলে বাড়ি মাথায় তুলে ফেলি। কিন্তু এখানে আর কিছু বলার থাকে না। প্রতিদিন সময় করে আমার ঘুম ভাঙায়। যাইহোক উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে হালকা কিছু খেয়ে বেড়িয়ে পড়লাম। কলেজের এখনো অনেক বাকি। একে তো সকাল তার সাথে আবার হালকা শীত। তাই আর বাইক নিলাম না। গাড়ি নিয়ে নিলাম। নিলাদের বাসার সামনে পৌছে গেছি। এই রে কল করতে একদম ভুলে গেছিলাম। দেখি একটা কল করে।

:-----ওই তোর ফ্রেশ হতে এতক্ষণ লাগে।তুই কি বাথরুমে ঘুমিয়ে পড়েছিলি।(কিছুটা রেগে)
:-----আরে এতো রাগ করো কেনো বাবু।মনে ছিলো না।বাইরে দেখো আমি গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।(আমি)
:-----সত্যি তো।(নিলা)
:-----হ্যাঁ তিন সত্যি।
:-----ওকে একটু ওয়েট করো আমি আসছি।আজ কলেজে যাবো না।ঘুরবো সারাদিন।
:-----মানে কি।
লাইনটা কেটে গেলো। কিছুক্ষন পরে নিলার আগমন।
:-----এহুম এহুম।(কাশি দিলো) আমার কি ওইদিকে খেয়াল আছে নাকি।
:-----এই আকাশ ।চলো আমি এসে পড়েছি তো।
:-----ওহ।তুমি কখন আসলে।
:-----যখন তুমি হা করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলে।
:-----ওহ।
:-----হুমম।এখন চলো।
:-----হুমম।কিন্তু কোথায় যাবো
:-----আগে চলো তো পরে দেখা যাবে কোথায় যাই।
:-----আচ্ছা।
:-----এইতো গুড বয়।
:-----গান শুনবে।
:-----উমম কথাটা মন্দ না।
:-----(ফির মোহাব্বাত কারনে চালা)

গান শুনছি দুজনেই। আর নিলা আমাকে রাস্তা বলে দিচ্ছে যে কোথায় যাব। রাস্তায় মার্কেটে নামলাম। বাচ্চাদের জন্য অনেক জামা-কাপড় শীতের। বৃদ্ধদের জন্যেও কিছু শীতের জামা-কাপড়। কিছুই বুঝলাম না কোথায় যাচ্ছি। নিলাকে জিজ্ঞেস করলাম। বললো গেলেই নাকি দেখতে পাবো। অনেকক্ষণ পরে গন্তব্যে পৌঁছালাম। কোথায় আসলাম।

:-----নামো চলে এসেছি।(নিলা)
:-----কিন্তু কোথায় আসলাম।(আমি)
:-----আরে আগে চলো তো ভিতরে।
:-----হ্যাঁ চলো।

অনেক বড় যায়গাটা। অনেক বড় ঘাস যুক্ত মাঠ। মাঝে একটা রাস্তা।
পরিবেশটা খুব মনোরম।

:-----এই কোথায় সব।(নিলা)

নিলার ডাক শুনেই কতগুলো বৃদ্ধ এবং শিশু চলে আসলো। এখন বুঝলাম এটা বৃদ্ধাশ্রম এবং এতিমখানা একসাথে। সবাই নিলাকে পেয়ে খুব খুশি। কেমন আছে,এতদিন পরে মনে পড়লো এইসব প্রশ্ন সবার মুখে। নিলাকে ও খুব খুশি দেখাচ্ছে। নিলাকে এর আগে অনেক খুশি দেখেছি কিন্তু আজ ওর চেহারাতে অন্যরকম একটা উজ্জ্বলতা দেখতে পাচ্ছি। খুব ভালো লাগছে দেখতে।

:-----এটা কে?(একজন বৃদ্ধা)
:-----পরিচয় করিয়ে দিতে ভুলেই গিয়েছিলাম।এটা হচ্ছে তোমাদের মেয়ের জামাই।(নিলা)
:-----আপু দুলাভাই না অনেক কিউট।(একটা বাচ্চা বলে উঠলো)
:-----তোমাদের সবার জন্যে নতুন কাপড় এনেছি।শীত তো চলেই এসেছে।(নিলা)
:-----এগুলো আবার কেনো আনতে গেলি।তুই এসেছিস এটাই বড় কথা।(একজন)
:-----কি যে বলো না তোমরা।ভিতরে যাবো নাকি এখান থেকেই বিদায় করে দিবে।(নিলা)
:-----তোকে পেয়ে সবকিছু একদম ভুলে গেছিলাম।(একজন)
:-----হুমম চলো।(নিলা)
আমি বোকার মতো দাঁড়িয়ে আছি।
:-----এই আকাশ ভিতরে আসো।(নিলা)
:-----হুমম।হ্যাঁ চলো।(আমি)
ভিতরে গেলাম।

:-----আরে নিলা মা কেমন আছো।(একজন মধ্য বয়স্ক ব্যক্তি)
:-----হুমম।আঙ্কেল ভালো তুমি কেমন আছো।(নিলা)
:-----এইতো ভালো।বাসায় সবাই ভালো আছে তো।(মধ্য বয়স্ক লোকটা)
:-----হুমম।সবাই ভালো।এখানকার কি খবর।সবকিছু ঠিকঠাক চলছে তো।(নিলা)
:-----হুমম।

সবার সাথে অনেক মজা করলাম। নিলাকে খুব খুশি লাগছে। প্রায় দুপুর হয়ে গেছে। তাই বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। সবাইকে বিদায় জানিয়ে চলে আসলাম। আমারও খুব ভালো লাগলো সবার সাথে সময় কাটাতে। গাড়িতে ওঠলাম।

:------এবার বলো।(আমি)
:------এটা একটা বৃদ্ধাশ্রম।দেখতেই তো পেলে।আমি মাঝে মাঝে এখানকার মানুষের সাথে সময় কাটাই।এবার অনেকদিন পরে আসা হলো।(নিলা)
:------হুমম।খুব ভালো কাজ করেছো আমাকে সাথে নিয়ে এসে।
:------খুব ভালো লেগেছে না।
:------হুমম খুব।

নিলাকে বাসায় পৌছে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম। খুব ক্লান্ত লাগছে। তাই বিশ্রাম নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। উঠে দেখি সন্ধ্যা হয়ে গেছে। নিলা ও কল করেনি। কারণ ও জানে আমি খুব ক্লান্ত। দেখি নিলাকে একটা কল করে।

:------হ্যালো ঘুম ভেঙেছে।(নিলা)
:------তুমি কিভাবে জানলে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।(আমি)
:------তোমার বাসায় আমার সিক্রেট এজেন্ট লাগানো আছে।
:------ওহ তাই বলো
:------হুমম তাই।
:------কি করো নিলা পরী।
:------এইতো কারো সাথে কথা বলছি আর কি।
:------আমি এখন কারো হয়ে গেলাম।
:------আরে বাবু রাগ করো কেনো।আমি তো এমনিই বলেছি।
:------আমিও তো এমনিই রাগ করেছি।
:------তুমি আসলেই পাগল হয়ে গেছো।
:------হুমম।তোমার জন্যেই।
:------জানি।
কথা বলতে বলতে রাত হয়ে গেছে।
:------এই শোনো না।
:------হুমম।বলো আমি শুনছি।
:------আমি ফুসকা আর আইসক্রিম খাবো।
:------কি বলছো শুনতে পাচ্ছি না।
:------আমার এখন ফুসকা আর আইসক্রিম খেতে ইচ্ছা করছে।
:------মনে হয় নেটওয়ার্কে সমস্যা।
:------রাখলাম বাই।তুই থাক তোর নেটওয়ার্ক নিয়ে।
:------আরে.....হ্যালো হ্যালো...... কল টা কেটে দিলো।

এ কেমন পেরায় পড়লাম। আল্লাহ্ বাঁচাও। কি করার নিলার বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম বাইক নিয়ে।
.
.
.
.
পরের দিন সকালে নিলা মোবাইল অন করতেই অবাক। আকাশের একটাও কল নেই। একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে অনেকবার কল এসেছে।(কল অ্যালার্ট অন থাকায়) নিলার মনে আলাদা একটা ভয় কাজ করছে। তবুও ফোনটা রিসিভ করলো।নিলাল মনে আলাদা একটা ভয় কাজ করছে।।তবুও ফোনটা রিসিভ করলো। ফোনটা রিসিভ করতেই নিলার হাত থেকে মোবাইলটা পড়ে গেলো। নিলা দাড়ানো থেকে বসে পড়লো। চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। কি এমন শুনলো যে এরূপ আচরণ করছে। চলুন নিলা আর অপরিচিত নাম্বারের কথপোকথন শুনি-

:-----হ্যালো নিলা।(অপরিচিত)
:-----কে আপনি।রাতেও এতোগুলা কল করেছেন?(নিলা)
:-----আমি রাফি।তোমার মোবাইল বন্ধ কেনো ছিলো।(অনেকটা সংকোচ নিয়ে কথাগুলো বলছে রাফি)
:-----কি হয়েছে তুমি এমন করে কথা বলছো কেনো।আকাশ....আকশের কিছু হয়নি তো।রাতে একটাও কল করেনি।
:-----আ.....আকাশ....(বলেই কান্না শুরু করে দিলো রাফি)
:-----কি হয়েছে কান্না করছো কেনো।বলো আমাকে।আকাশ ঠিক আছে তো।
:-----কালকে রাতে আকাশের এক্সিডেন্ট হয়েছে।এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে।(বলেই কান্না শুরু করে দিলো রাফি।রাফি আকাশকে ছাড়া কিছুই বুঝে না।অনেক ছোটবেলার বন্ধুত্ব)

এই কথা শুনেই নিলার এরূপ আচরণ করলো। নিলার পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে মনে হচ্ছে। এটা আমি কি করলাম। আমি নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবো না। ইতিমধ্যে নিলার আম্মু আর নিশা হাজির।

:-----কিরে নিলা ওভাবে কান্না করছিস কেনো।(নিলার আম্মু)
নিলা কান্না করেই চলেছে।
:-----কি হয়েছে কিছু বলছিস না কেনো।
:-----আম্মু......আ.....আকাশ নাকি এক্সিডেন্ট হয়েছে।(বলেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো।
:-----কি বলছিস।এখন কোথায় আছে।
:-----মেডিকেলে।
:-----তাহলে বসে আছিস কেনো।তাড়াতাড়ি চল।
:-----হ্যাঁ চলো।

তারপর নিলার পরিবার ঢাকা মেডিকেলে চলে গেলো। গিয়ে দেখে সবাই বসে আছে। আকাশের আম্মু আর আপু অনেক কান্না করছে।

:-----তুই এসেছিস নিলা।(আপু)
:-----হুমম।(নিলা)
:-----দেখ না কি থেকে কি হয়ে গেলো।
:-----কি হয়েছে।আকাশ কোথায়।আমি ওর সাথে দেখা করবো।
:-----কিছু যায়গায় ব্রোন ফ্রাকচার হয়ে গেছে।অনেক কেটে ও গেছে।
:-----আমি ওর সাথে দেখা করবো।
:-----এখন ঘুমের ইনজেকশন পুশ করেছে।
:-----তবুও আমি দেখতে যাবো।আমাকে নিয়ে চল।
:-----চল।

তারপর নিলা আর আপু রোমে গেলো। গিয়ে দেখে আকাশ ঘুমিয়ে আছে। মাথায়,হাতে,পায়ে অনেক যায়গায় ব্যান্ডেজ করা। দেখেই নিলা আবারও কেঁদে উঠলো। দুপুরে নিলয়ের জ্ঞান ফিরলো। চারদিক তাকিয়ে দেখলাম আমি হসপিটালের বেডে আছি।কালকে রাতের কথা মনে পড়লো।নিলাদের বাসায় যাচ্ছিলাম।তখনই একটা ট্রাক ব্রেক ফেইল হয়ে আমার দিকে আসছিলো।আমি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে রাস্তার রেলিংয়ের সাথে ধাক্কা খাই।পরে আর কিছু মনে নেই। পুরো শরীর ব্যথা করছে। ইতিমধ্যে বাসার সবাই উপস্থিত হলো। নিলা,রাফি,নিশা আর আন্টি ও আছে সাথে।

:-----আকাশ বাবা কিভাবে এমন হলো।(আম্মু)
:-----আর বলো না।(আমি)
:-----এতো রাতে তুই কেনো বেরোতে গেলি।(আম্মু)
:-----এইতো একটু ঘুরতে বেরিয়েছিলাম।ভাগ্য ভালো নয়তো ট্রাকের নিচে চাপা পড়তাম।(আমি)
:-----এসব কি বলছিস।(আম্মু)
:-----একটা ব্রেক ফেইল ট্রাক থেকে বাঁচার জন্য গাড়ি অন্য দিকে নিতে গিয়ে এই অবস্থা যাক আল্লাহ্ তায়ালা বাঁচিয়েছে।(আমি)
:-----আচ্ছা রেস্ট নে।(আম্মু)
:-----হুমম।(আমি)
নিলা আমার সাথেই থেকে গেলো।

মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে। খুব করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।

:-----সবকিছু আমার জন্য হয়েছে।(কান্না শুরু করে দিয়েছে)
:-----কি বলো।তোমার জন্য কেনো হবে।(আমি)
:-----হুমম।আমি এতো রাতে জেদ না করলে এমনটা হতো না।(নিলা)
:-----কিছু হয়নি আমার।
:-----তা তো দেখতেই পাচ্ছি।
:-----হুমম।আমি একদম ঠিক আছি।
:-----হুমম।চুপ করে শুয়ে থাকো।আমি খাইয়ে দিচ্ছি চুপ করে খেয়ে নাও।।
:-----হুমম।
:-----আমি রাগ করলেই কি সব করতে হবে।(আমাকে খাইয়ে দিতে দিতে বললো)
:-----আমার নিলা পরী বলেছে আমি না করে পারি।
:-----তোমার যদি কিছু হয়ে যেত।(বলেই কান্না শুরু করে দিয়েছে)
:-----কান্না করছো কেনো।
কান্না করেই চলেছে।
:-----কান্না বন্ধ করো।
:-----হুমম।(চোখের পানি মুছতে মুছতে)
আমাকে খাইয়ে ওষুধ খাইয়ে দিলো।
:-----আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।ঘুমোনোর চেষ্টা করো।
:-----সারাদিন তো ঘুমিয়েই ছিলাম।
:-----তবুও।
:-----আচ্ছা।সব ওষুধ দিয়েছো।
:-----হুমম।
:-----সব দিয়েছো।
:-----ওহ ভুলে গিয়েছিলাম।
(কপালে একটা ছোট্ট করে চুমু দিয়ে দিলো)
:-----খুশি।এখন ঘুমাও।
:-----হুমম।

ঘুম ভাঙলো। বুকের উপরে কিছু অনুভব করলাম। নিলা আমার বুকের উপরে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে। কি মায়াবি লাগছে। অবাধ্য চুলগুলো এলোমেলো হয়ে মুখে এসে পড়েছে। এটা যেনো নিলাকে আরো মায়াবি করে তুলছে। আমি নিলার অবাধ্য চুলগুলো সরিয়ে দিলাম। একটু পরে নিলার ঘুম ভাঙলো। আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ায় কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে লজ্জা পেয়ে গেলো।

:-----তোমার ঘুম কখন ভেঙেছে।(নিলা)
:-----এইতো একটু আগে।(নিলা)
:-----একটু ফ্রেশ হয়ে চলো খেয়ে ওষুধ খাবে।
:-----হুমম।
নিলা আমাকে ধরে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলো। রাতে হালকা কিছু খেয়ে ওষুধ খেয়ে নিলাম। রাতে ঘুমিয়ে পড়লাম।(ঘুমের ওষুধ সাথে আছে) পরের দিন সকালে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হলো।
হাসপাতালে আমার ভালো লাগে না তাই। কিছুদিনের জন্য বেড রেস্ট নিতে বলা হয়েছে।

এখন আমি প্রায় সম্পূর্ণ সুস্থ। অনেকদিন পরে আজ কলেজে যাচ্ছি। এই কয়েকদিনে নিলা আমার অনেক সেবা করেছে। আমার বাইক চালানো ও কিছুদিনের জন্য বন্ধ। তাই গাড়ি নিয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। সাথে আপু ও আছে। প্রথমে নিলাদের বাসায় যেতে হবে। আপু নিলাকে কল করলো। একটু পরে নিলা বেরিয়ে আসলো। অনেকদিন পরে আজ নিলাকে আবার নতুন রূপে দেখছি। এতোদিন আমার চিন্তায় কেমন যেনো এলোমেলো হয়ে গিয়েছিলো। আজ খুব সুন্দর আর মায়াবি লাগছে। নতুন করে ওর প্রেমে পড়ছি।

:----আজ কি কলেজে যাওয়া হবে নাকি।(আপু)





চলবে..........
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
Like Reply
#26
পর্ব-২১



------------------------------------


আপুর কথায় ধ্যান ভাঙলো।

:-----ধ্যাত দিলি তো ধ্যান টা ভেঙে।(আমি)
:-----এতো ধ্যান করে তাকিয়ে থাকার কি আছে।(আপু)
:-----আরে কতদিন পরে এভাবে দেখছি বল তো।
:-----হুমম।সেটাও ঠিক।কিন্তু কলেজে ও তো যেতে হবে নাকি।
:-----হুমম যেতে তো হবেই।কতদিন ধরে যাওয়া হয় না।(আমি)
:-----কি কথা হচ্ছে।আমাকে নিয়ে কিছু কথা হচ্ছে না তো।(বলেই ভুবন ভোলানো হাসিটা দিলো)
(ক্রাশ খেতে ভালোই লাগে)

রাস্তায় আর বেশি কথা হয়নি। কারণ আপু আর নিলা একসাথে থাকলে আমার কথা কারোরই মনে থাকে না। এটাই বুঝি না। দুজনেরই আমি কলিজার টুকরা। কিন্তু আমার মূল্য মাঝে মাঝে থাকে না। যা কিছুই হোক সবশেষে আমিই আপুর আর নিলার দুনিয়া। যাক কলেজে পৌঁছে গেলাম। আপু আর নিলাকে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি পার্ক করতে চলে গেলাম। কলেজে ঢুকলাম। কিছুটা অন্যরকম লাগছে কলেজটা। কেমন যেনো মানুষ কম। ক্লাসে গিয়ে দেখি খুব সুন্দর করে সাজানো ক্লাসটা। আরে আজ তো কোনো ফাংশন ও নেই। তাহলে এর মানে কি।

এমন সময় কিছুটা জোরে শব্দ হয়ে উঠলো। আমি একদম ভয় পেয়ে গেছি। অনেক মানুষ (আপুর ক্লাসমেট+আমার ক্লাসমেটরা+কিছু সিনিয়র ভাই ও আছে+কিছু স্যাররা ও আছেন)
সবাই একসাথে বলে উঠলো.......
Happy Birthday To You........
Happy Birthday Dear Akash......
Happy Birthday To You......

আমি তো পুরাই অবাক। আরে ভুলেই গিয়েছিলাম আজ তো আমার জন্মদিন। কলেজের স্যারদের সাথে আমার সম্পর্ক খুব ভালো।

:-----শুভ জন্মদিন আমার কিউটু ভাইটা।(আপু)
:-----Happy Birthday Dost.....(রাফি)

একে একে সবাই বার্থডে উইশ করলো। একমাত্র নিলা এখনো উইশ করেনি। হয়তো সারপ্রাইজ দেবে। তারপর কেক কাটা হলো। আজ আর ক্লাস করা হলো না। খুব সুন্দর করে দিনটা উদযাপন করা হলো।
আমারও খুব ভালো লাগলো। এতোদিন পরে বাসা থেকে বের হওয়ার প্রথম দিনই এতো ভালো একটা সময় কাটানো হলো। সবাইকে ধন্যবাদ জানালাম। কলেজ শেষ করে আপু আর নিলাকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম। তারপর আপু আর নিলাকে নিয়ে বাসায় গেলাম। আমি আমার রোমে চলে গেলাম। সারাদিনের ক্লান্তি তাই ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। এসে দেখি আম্মু,আপু আর নিলা কথা বলছে। ইতিমধ্যে আব্বুর আগমন।

:-----আকাশ ।(আব্বু)
:-----হুমম আব্বু বলো।(আমি)
:-----সন্ধ্যায় নিলার আর রাফির পরিবারের সবাইকে দাওয়াত করা হয়েছে।তোমার বন্ধু থাকলে সাথে নিয়ে এসো।আর বেশি রাতে বাসার বাইরে থেকো না আজ।
:-----আচ্ছা তাহলে এখন গেলাম।
:-----হুমম।
:-----আপনাকে কি ইনভাইট করতে হবে নাকি নতুন করে।(আমি)
:-----আব্বু দেখো না তোমার ছেলে আমার সাথে কেমন ব্যবহার করছে।(ন্যাকা কান্নার ভাব করে)
:-----আকাশ এটা তোমার কেমন ব্যবহার।(আব্বু)
আমি চুপ করে থাকলাম।
:-----এখন চুপ করে আছো কেনো।উত্তর দাও।এখন চলো।(কিছুটা ভাব নিয়ে)
:-----হুমম।(আমি)

অনেকদিন যাবত বাইক চালানো হয় না। যদিও আমি বাইক ছাড়া থাকতে পারি না। তবুও এক্সিডেন্টের কারনে কিছুদিন বাইক চালানো বন্ধ ছিলো। যাইহোক আজ বাইক নিয়েই বের হবো। পড়ন্ত বিকাল।
এখনকার আবহাওয়াটা আমার খুব ভালো লাগে। বাইকটা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। নিলা আমাকে হালকা জড়িয়ে ধরে বসেছে। অনেকদিন পরে আবার এই অনুভূতি।

:-----তুমি আমার নামে বিচার দিলে কেনো।(আমি)
:-----তোমার একা আব্বু-আম্মু নাকি।(কিছুটা ভাব নিয়ে)
:-----সেটাও ঠিক।(আমি)
:-----হুমম।(নিলা)
:-----এতটুকু ব্যাপারে আবার বিচার দিতে হয়।
:-----হি হি।তোমাকে একটু বকা খাওয়ালাম আর কি।
:-----পাগলী একটা।
:-----জানো এই কয়দিন এই সময়গুলোকে খুব মিস করেছি।
:-----হুমম।আমিও খুব মিস করেছি।
ধ্যাত ট্রাফিক জ্যামে আটকা পড়ে গেলাম।
:-----ভাইয়া ফুল নিবেন।ভাইয়া ফুল নিয়ে নেন।(একটা মেয়ে।বয়স বেশি হবে না)
:-----এই তোমার নাম কি।(আমি)
:-----ঝুমকি।(মেয়েটা)
:-----তা ঝুমকি ফুল কত টাকা করে বিক্রি করো।(আমি)
:-----পনেরো টাকা করে।আপুকে দেন।আপু খুব খুশি হবে।(ঝুমকি)
:-----আচ্ছা সবগুলো ফুল আপুর হাতে দিয়ে দাও।আর এই নাও।(আমি)
:-----ধন্যবাদ ভাইয়া।(বলেই খুব সুন্দর একটা হাসি দিলো।মনে হয় অনেক খুশি হয়েছে)

নিলার ও ফুলগুলো পছন্দ হয়েছে। একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম। এখন নিলা আমাকে বার্থডে উইশ করলো। সবার সাথে উইশ করলে তো একই হয়ে যেতো এটা ভেবেই হয়তো এখন করলো। তারপর আমি আর নিলা কিছুক্ষন ঘোরাঘুরি করে বাসায় ফিরে আসলাম। একটু তাড়াতাড়িই চলে আসলাম। বাসায় গিয়ে নিলা সরাসরি আপুর রোমে চলে গেলো।

:-----আকাশ রাফিকে একটা কল করে দেখো তো।(আব্বু)
:-----হুমম দেখছি।(আমি)
রাফিকে কল করলাম।

:-----হ্যালো দোস্ত।(রাফি)
:-----কোথায় আছিস।(আমি)
:-----এইতো রওয়ানা দিয়েছি।
:-----আচ্ছা সাবধানে আসিস।(আমি)
:-----ওকে বাই।

:-----আব্বু ওরা রওয়ানা দিয়েছে।(আমি)
:-----আচ্ছা নিজের রোমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করো।(আব্বু)
:-----হুমম।(আমি)

দেখি ইভান কে একটা কল করে দেখি।(Season-1 এ ব্যবহৃত আল-আমীনের পরিবর্তে ইভান নাম ব্যবহৃত করা হবে)

:-----হুমম দোস্ত।এইতো এসে পড়েছি।আর কিছুক্ষণ লাগবে।(ইভান)
:-----আচ্ছা।(আমি)

একটু বিশ্রাম নিলাম। একটু পরেই ইভান চলে আসলো।

:-----চলে এসেছি।(ইভান)
:-----হুমম বস।(আমি)

একটু পরে একে একে সবাই উপস্থিত হয়ে গেলো। এরপর সবাই আবারও একসাথে আমাকে উইশ করলো। নিলা আর আপু একরকম রঙের শাড়ি পড়েছে। নিলাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। সবাই আছে বলে কোনোরকমে চোখ ফিরিয়ে নিলাম। সবশেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো আগামী সপ্তাহে আপু আর রাকিব ভাইয়ার বিয়ে। একদিকে যেমন খুশি লাগছে অন্যদিকে তেমনই। একদিকে যেমন খুশি লাগছে অন্যদিকে তেমনই খুব খারাপ লাগছে। আপুকে ছাড়া কখনো থাকিনি। আমিও বেড়াতে বা ট্যুরে গেলে আপু তাড়াতাড়ি চলে আসতে বলতো। বাসায় আছিই তো আমরা দুজন। এখন আপু চলে গেলে বাসা টা একদম খালি হয়ে যাবে। ভাবতেই কেমন কান্না চলে আসছে। কিন্তু কি আছে করার। মেয়েদের তো একদিন না একদিন বাবার বাড়ি থেকে চলে যেতে হয়। রাফিদের বাসা আমাদের থেকে অনেক দূরে না। যখন মন খারাপ হবে তখন গিয়ে দেখে আসতে পারবো। সবাই যাওয়ার জন্যে বিদায় নিয়ে নিলেন।নিলা ও চলে গেলো। নিলাকে আজকে দারুণ লাগছিলো।

সবাই সাথে থাকার পরও আড়চোখে দেখেছি অনেকবার। প্রত্যেকবারই নিলা লজ্জায় মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সবাই চলে গেলো। অনেক রাত হয়ে গেছে। তাই আর বাইরে আড্ডা দিতে গেলাম না। এখন তো আবার ঘুমানো ও যাবে না। নিলা গিয়ে আমাকে কল করবে তারপর ঘুমোতে যাবো। তাই একটু ফেসবুক থেকে ঘুরে আসি। একটু পরে নিলার কল।

:-----হুমম।ঠিকমতো পৌঁছে গেছো তো।(আমি)
:-----হুমম।(নিলা)
:-----কি করছ এখন নিলা পরী।
:-----এইতো ফ্রেশ হয়ে তোমাকে কল করলাম।তুমি কি করছো পিচ্চু।
:-----এইতো আমার নিলা পরীটার কলের অপেক্ষায় বসে ছিলাম।
:-----হুমম ভেরি গুড।
:-----তোমাকে না আজকে খুব সুন্দর লেগেছে।
:-----ওহ।বাকি দিন অসুন্দর লাগে তাই তো।
:-----আরে না কি বলো তুমি।তোমাকে তো যখন দেখি তখনই অনেক সুন্দর লাগে।
:-----তবে বললে যে।
:-----বললাম আজ অন্যদিনের থেকে বেশি সুন্দর লাগছিলো।
:-----তাই নাকি পিচ্চু।
:-----হুমম তাই।সিনিয়র পরী নিলা ম্যাডাম।
:-----হি হি।
নিলার সাথে কথা বলতে বলতে অনেক রাত হয়ে গেছে।
:-----এই শোনো।(নিলা)
:-----হুমম শুনছি বলো।(আমি)
:-----আমাদের ভবিষ্যত বাবুদের নাম কি রাখবে।
:-----তুমি বলো।
:-----না তোমার পছন্দের নাম নেই কোনো।
:----না তেমন কোনো পছন্দ করা তো নেই।
:-----আচ্ছা ভাবতে থাকো আমিও ভেবে দেখি।
:-----আচ্ছা।
:-----এই আমাদের ছেলের নাম নীল রাখলে কেমন হয়।
:-----তোমার পছন্দ এইটা।
:-----হুমম খুব পছন্দ।
:-----তাহলে এটাই রাখা হবে নিলা পরীর ছেলে-বাবুর নাম।
:-----শুধু আমার।
:-----মজা করছি।
:-----এবার বলো মেয়ে-বাবুর নাম কি রাখা যায়।
:-----মুহাত নামটা কেমন।
:-----ওয়াও তোমার পছন্দ কতো সুন্দর।
:-----তুমি ও তো আমারই পছন্দ।
:-----হুমম।
:-----আচ্ছা তাহলে ঘুমাও।কালকে কলেজে যাবে।
:-----না।আজকে খুব ক্লান্ত লাগছে।
:-----আচ্ছা তাহলে এখন ঘুমাও।
:-----হুমম বাবু গুড নাইট।
:-----আমি তোমার থেকে জুনিয়র বলে বাবু বলো।
:-----না এটাতো ভালোবেসে বলি।
:-----আচ্ছা বাই তাহলে।
:-----ওকে।

ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন সকালে প্রতিদিনের মতো নিলার কলেই ঘুম ভাঙলো

:-----উমম হ্যালো।(আমি)
:-----এখনো ঘুম শেষ হয়নি।(নিলা)
:-----হুমম হলো তো।
:-----ওকে তাহলে কলেজে যাও।
:-----আচ্ছা।

ফ্রেশ হয়ে হালকা কিছু খেয়ে চলে গেলাম কলেজে। বাইকটা পার্ক করে ভেতরে ঢুকবো এমন সময় কারো ডাক। তাকিয়ে দেখি কয়েকটা ছেলে। অনার্স তৃতীয় বা শেষ বর্ষের হবে। গেলাম তাদের কাছে।

:-----জ্বি ভাই বলেন।(আমি)
:-----কোন ক্লাস।(একজন)
:-----ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার।(আমি)
:-----এটা নিয়ে ওই মেয়েটাকে প্রপোজ কর যা।(একটা মেয়েকে দেখিয়ে বললো)
:-----কেনো? আমি তো ওই মেয়েকে চিনি ও না।(ভদ্র সাজলাম)
:-----ওই যেইটা বলা হয়েছে সেইটা কর।(সাথের অন্য একটা ছেলে বলে উঠলো)
:-----রেগ করছেন নাকি।(আমি)
:-----ওই আমরা তোর কত বছরের সিনিয়র জানিস।মুখে মুখে তর্ক করছিস কেনো।
:-----প্লিজ ভাই এমন করবেন না।মেয়েটা আমাকে খুব মারবে।(মজা নিচ্ছি আর কি)
:-----যা বলা হয়েছে সেইটা কর।

এমন সময় রাফি আর রাকিব ভাইয়ার আগমন।

:-----কি হচ্ছে এখানে।(রাকিব ভাইয়া)
:-----আরে রাকিব ভাই।কেমন আছেন।(সবাই বললো)
:-----হুমম ভালো।(রাকিব ভাইয়া)
:-----কিছু না ভাই।ওকে একটু কলেজের নিয়ম কানুন শেখাচ্ছিলাম আর কি।
:-----তা কি শেখাচ্ছিলে।(রাকিব ভাইয়া)
:-----না ভাই তেমন কিছু না।
:-----তাহলে তোমরা ওকে প্রাক্টিক্যাল করে দেখিয়ে দাও।(রাকিব ভাইয়া)
:-----ঠিক বুঝলাম না ভাই।
:-----ওকে কি শেখাচ্ছিলে সেটা প্রাক্টিক্যাল করে দেখাও।(রাকিব ভাইয়া)
:-----সরি ভাই।
:-----আকাশ তোমাকে কি করতে বলেছে।(রাকিব ভাইয়া)
:-----তেমন কিছু না।শুধু ওই মেয়েটাকে প্রপোজ করতে বলেছে আর কি।(আমি)
:-----ওই তোদের কানে কি কথা যায় না।যা বলেছি তা কর।(রাকিব ভাইয়া)
:-----ভাই এবারের মতো ক্ষমা করে দেন।
:-----ক্ষমা তো সাধারণ মানুষকে রেগ করালে করা যায়।কিন্তু আমার ছোট ভাইকে রেগ করলে কি তোদের ক্ষমা করা যাবে।তাই যা বললাম তাই কর।(রাকিব ভাইয়া)

তারপর যে ছেলেটা প্রথমে আমাকে রেগ করেছিলো তাকে পাঠানো হলো ওই মেয়েকে প্রপোজ করার জন্য।

:-----দোস্ত আর কোনো খারাপ ব্যবহার করেনি তো তোর সাথে।(রাফি)
:-----না আর কি খারাপ ব্যবহার করবে।(আমি)
:-----করলে বল।ওদের বুঝিয়ে দিই মানুষ না চিনে রেগ করার পরিনতি কি।(রাফি)
:-----না ঠিক আছে।(আমি)

ওইদিকে ছেলেটি ওই মেয়েটিকে যেই প্রপোজ করলো।
তেমনি ঠাআআআ ঠাআআআস করে দুইটা বসিয়ে দিলো।

:-----ওই শোন বলে দিচ্ছি।এরপর যদি কোনোদিন ওর সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করিস তাহলে তোদের খবর আমি নিজে নিবো।(রাকিব ভাইয়া)
:-----জ্বি ভাই।
:-----মনে যেনো থাকে।(রাকিব ভাইয়া)
:-----মনে থাকবে ভাই।
:-----আচ্ছা রাফি ক্লাসে যা বাই।(রাকিব ভাইয়া)
:-----ওকে।(রাফি)

তারপর যেই ক্যাম্পাসের দিকে আসছিলাম আমি আর রাফি তেমনি আমার চোখ পিছন থেকে ধরলো।

:-----এই কোন শালায় রে।থুক্কু আমার তো কোনো শালা ই নেই।কোন শালী রে।(আমি)
:-----আমি।

কন্ঠটা পরিচিত লাগছে। চোখ ছেড়ে যেই সামনে সামনে আসলো আমি তো পুরাই অবাক.......




চলবে......
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
Like Reply
#27
পর্ব-২২



------------------------------------



চোখ ছেড়ে যেই সামনে সামনে আসলো আমি তো পুরাই অবাক।

:-----আরে তুই এখানে।(আমি)
:-----একদম সারপ্রাইজড হয়ে গেছিস দেখছি।(মীম)
:-----হুমম একদম সারপ্রাইজড।
:-----এজন্যই তো তোকে সারপ্রাইজ দিতে চলে আসলাম।
:-----তা এখানে কিভাবে তুই।
:-----তোর টানে চলে আসলাম রে।
:-----মানে কি।
:-----হি হি।কিছু না।
:-----কেমন আছিস।
:-----এইতো এখন বিন্দাস আছি।রাফি কেমন আছিস রে।
:-----এইতো ভালো।তুই কেমন আছিস।(রাফি)
:-----হুমম ভালো।(মীম)
:-----তা কোন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন আপনি।(আমি)
:-----ওই আমি তোর আপনি হলাম কবে।
:-----হি হি।
:-----তোদের বিভাগে ই।
:-----ভালো চল তাহলে ক্লাস করতে।
:-----না এখন ক্লাসে যাবো না।
:-----তাহলে কোথায় যাবি।
:-----অনেক দিন পরে তোকে পেয়েছি।আজ সারাদিন ঘুরবো তোর সাথে।
:-----পাগল নাকি যে সারাদিন ঘুরবো।
:-----কেনো ঘুরলে কি হবে।
:-----কিছু না কিন্তু...!
:-----কোনো কিন্তু শুনছি না।চল এখন।
:-----আচ্ছা।
:-----এইতো গুড বয়।
:-----হয়েছে।
:-----হি হি।

ভাবছেন এই মীম টা আবার কে। মীম আমার ক্লাসমেট ছিলো। ক্লাস এইটে থাকতে ওর বাবা বদলি হওয়ায় এখান থেকে চলে যায়। এখন আবার আসছে। কলেজ জীবনে আমার বেষ্ট-ফ্রেন্ড ছিলো। যদিও সবাই বলতো মীম নাকি আমাকে পছন্দ করতো।কিন্তু মীম আমাকে কখনো নিজ মুখে বলেনি। আর আমিও কিছু জিজ্ঞেস করিনি। কারণ আমি মীম কে বন্ধু থেকে আর বেশি কিছু ভাবিনি।

:-----ওই এতো কি ভাবছিস ।(মীম)
:-----কই।না কিছু না।(আমি)
:-----তোর বাইক আছে না।
:-----না নেই কেনো।
:-----ওই একদম মিথ্যা বলবি না আমার সাথে।
:-----হি হি।
:-----চল বাইক দিয়ে ঘুরবো।
:-----কি বলছিস।মানুষ দেখলে কি বলবে বা ভাববে।
:-----মানুষ আবার কি বলবে।আমাকে কি তুই জোর করে নিয়ে যাচ্ছিস নাকি।
:-----না।জোর করতে কেনো যাবো।-(আমি তো নিতেই চাচ্ছি না)-বিড়বিড় করে বললাম।
:-----বিড়বিড় করে কি বলছিস।
:-----না কিছু না।
:-----তাহলে চল এখন।
:-----না গেলে হয় না।
:-----না!হয় না খুশি এবার চল।
:-----আপু এই কলেজেই পড়ে।দেখে ফেললে সর্বনাশ।
:-----কেনো রুহি আপু কি আমাকে আগে দেখেনি।
:-----তুই আমাকে নিয়ে ই ছাড়বি।
:-----হুমম।এইতো বুঝতে পেরেছিস।

আমার ইচ্ছা করছে না যে ওকে নিয়ে এখন ঘুরতে যাই। কিন্তু এতোদিন পরে দেখা আবার যা জেদি মেয়ে। যা বলবে তাই করবে। তাই অনিচ্ছা সত্তেও বাইক টা নিতে হলো। আর মীম ও বাইকের পিছনে উঠে বসে পড়লো। আমি যতটা পারছি ওর থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছি। যাইহোক অনেক যায়গায় ঘুরা হলো।

:-----এখন বাসায় চল।(আমি)
:-----না এখানে লাঞ্চ করবো।(একটা রেস্টুরেন্ট দেখিয়ে)
:-----কার মুখ দেখে যে আজ ঘুম ভেঙেছে।
:-----কি বলছিস।
:-----না কিছু না।চল।
:-----হুমম।
লাঞ্চ শেষ করে।
:-----এখন তো চল।
:-----ওই বাসায় কি বউ রেখে এসেছিস নাকি।
:-----আমি কি বিয়ে করেছি নাকি যে বউ রেখে আসবো।
:-----তাহলে এতো বাসা বাসা করছিস কেনো।
:-----তো কি করবো।
:-----বলেছি না সারাদিন গুরবো আজকে।
:-----ধ্যাত।
:-----তোর ধ্যাত আজকে শুনছি না।

কিছু বলতেও পারছি না।দেখি নিলাকে একটা কল করে। যেই কল করবো। তেমনি মোবাইলটা নিয়ে নিলো।

:-----আজ তোকে মোবাইল ও দেওয়া হবে না।(মীম)
:-----আগে তো এতো পাগলী ছিলি না।(আমি)
:-----আগের থেকে অনেক পাগলী হয়ে গেছি ঠিক না।
:-----হুমম একদম।
দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে গেছে।
:-----চল এখন একটু শপিং করতে যাবো।
:-----যাক আল্লাহ্ বাঁচাইছে।যা যা জলদি যা।
:-----মানে কি।তুই ও আমার সাথে যাচ্ছিস।
:-----না আমি যেতে পারবো না।আর মেয়েদের শপিংএ আমার কি কাজ।
:-----তুই যাবি ব্যাস।
:-----না যাবো না।
:-----তুই যাবি তোর ঘাড় ও যাবে।

কি করার জোর করেই নিয়ে গেলো। শপিং করতেই আছে। বারবার আমাকে দেখাচ্ছে এটা কেমন ওটা কেমন। একটু কি বুঝছে না যে আমি বিরক্ত বোধ করছি। হঠাৎ ই নিলার কল।

:-----হ্যালো।(আমি)
:-----কোথায় তুমি।(নিলা)
:-----এইতো একটু শপিং এ এসেছি।
:-----এখন কিসের শপিং করতে গেলে।
:-----না কিছু না এমনিই।
:-----একা নাকি সাথে কেউ আছে।
:-----না একা না।
:-----কে আছে সাথে।
:-----আমার সাথে কে থাকে তুমি জানো না।
:-----রাফি নাকি ইভান।
:-----না আজ ওরা নেই।
:-----তাহলে।
:-----নতুন বন্ধু।
:-----কেমন নতুন বন্ধু একটু বলবে।
:-----নতুন বন্ধু মানে নতুন বন্ধু।
:-----এমন রেগে কথা বলছো যে।
:-----রেগে কোথায় কথা বলছি।
:-----তা বন্ধুর সাথে তো ভালোই ঘোরাঘুরি হচ্ছে।আবার শপিং ও করতে এসেছেন।
:-----এমন করে বলছো যে।
:-----পিছনে তাকিয়ে দেখেন।
:-----আপনি করে বলছো কেনো।
:-----আমার যা ইচ্ছা বলবো।

এদিকে মীম আমার কাছ ছাড়ছে না। আমার সাথে ঘেঁষে ঘেঁষে বসছে। এমন সময় পিছনে তাকিয়ে আমার চোখ কপালে উঠে গেছে।

:------খুব ডিস্টার্ব করে ফেললাম না তো।
:------নিলা তুমি এখানে।
:------আমাকে আশা করোনি ঠিক না।
:------এমন করে কথা বলছো কেনো।
:------কেমন করে কথা বলবো একটু বলবে।
:------দেখো নিলা তুমি ব্যাপারটা যেটা ভাবছো আসলে ব্যপারটা সেটা নয়।
:------আমার কিছু ভাবা বা বলার নাই।
:------আমার কথা টা তো শোনো।
:------আরো কিছু বলার আছে তোমার।
:------হুমম।
:------আর কি বলবে।বলার মতো কি আছে।সব তো নিজের চোখেই দেখলাম।
:------সবসময় চোখের দেখা টা সত্যি হয় না।
:------আকা এটা কে।
:------প্লিজ তুই একটু চুপ থাক।
:------ওকে চুপ করাচ্ছো কেনো।বলতে থাও ওকে।
:------প্লিজ নিলা একটু সময় দাও।I can explain.
:------দরকার নেই কিছু এক্সপ্লেইন করার।গুড বাই ভালো থাকবেন।(বলেই কান্না করতে করতে চলে গেলো)

আমি চোখের সামনে সব ঘোলাটে দেখছি। কি হলো এটা আমার সাথে।

:------আকাশ এই মেয়েটা কে।(মীম)
আমি চুপ করেই আছি।
:------কি হলো চুপ করে আছিস কেনো।
:------কি বলবো।
:------এটা কে।এমন কান্না করে চলে গেলো কেনো।

আমি কিছু না বলে বাসায় চলে আসলাম। রাস্তায় অনেকবার নিলাকে কল করেছি। মোবাইল বন্ধ। কি থেকে কি হয়ে গেলো। সোজা রোমে চলে গেলাম। কারো সাথে আর কথা হয়নি। সারারাতে আর একটু ও ঘুম আসলো না। আন্টিকে একটা কল করে দেখি...

:------আসসালামু-আলাইকুম আন্টি।
:------ওয়ালাকুমুসসালাম।
:------কেমন আছেন।
:------এইতো ভালো তুমি কেমন আছো।
:------ভালো।আন্টি নিলা কোথায়।ওর ফোনটা বন্ধ।
:------নিলা তো সন্ধ্যায় শপিং থেকে এসে আর রোম থেকে বেরোয়নি।মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছে।
:------আচ্ছা তাহলে রাখি।ভালো থাকবেন।
:------আচ্ছা।

নিলার কি যে হলো। একটু বোঝানোর সময় ও দিলো না। এদিকে মীম রাতে কয়েকবার কল করেছে। কিন্তু ধরিনি। সারারাত ছাঁদে কাটিয়েছি। সকালের দিকে একটু চোখ লেগে গেছে। আর তখনই একটু ঘুমিয়েছিলাম।

:------আকাশ.....এই আকাশ....(মীম)
কারো ডাকে ঘুম ভাঙলো।
:------উমম কে? (আমি)
:------আমার ফোন ধরলি না কেনো রাতে।
:------এতো সকালে কেনো ঘুমটা ভাঙালি।(কিছুটা বিরক্তি নিয়ে কথা টা বললাম)
:------এখন সকাল।
:------তো কি।
:------এখন দুপুর।
:------তোকে বলেছে।
:------এই তোর চোখ এমন লাল কেনো।সারারাত ঘুমানো হয় নাই নাকি।
:------বাদ দে।এতো সকালে কোনো এসেছিস এটা বল।
:------কেনো আবার।কালকে ওভাবে চলে গেলি।আর ওই মেয়েটা ই বা কে ছিলো।
:------ওর নাম নিলা।
:------আমি নাম জিজ্ঞেস করিনি।
:------আপুর ক্লাসমেট।
:------আপুর ক্লাসমেট তাতে তোর কি।
:------আমার পৃথিবী।এইতো কয়েক মাস হবে আমাদের রিলেশন।
:------মানে কি।তোর সিনিয়র মানুষের সাথে তোর রিলেশন।(কিছুটা অবাক হয়ে)
:------হ্যাঁ।খুব ভালোবাসি নিলাকে ।আর নিলা ও খুব ভালোবাসে আমাকে।
:------ওহ।(কিছুটা মন খারাপ করে)
:------হুমম।এবার বুঝলি কেনো এমন করলো কালকে।
:------হুমম।বুঝতে পেরেছি।সরি রে।
:------সরি কেনো।
:------এইযে আমার জন্যে তোদের এমন হলো।
:------না ঠিক আছে।
:------না কিছু ঠিক নেই।আমি তোকে এরকম দেখতে পারবো না।
:------তো কি করবি শুনি।
:------নিলা আপুকে সব বুঝিয়ে বলবো।
:------কিভাবে বলবি।কালকে রাতে অনের চেষ্টা করেছি।কিন্তু মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে।ওর আম্মুর কাছে কল করেছি কিন্তু আন্টি ও কিছু জানে না।
:------ওহ তবুও দেখি কি করতে পারি।
:------কিছু করার দরকার নেই।
:------আচ্ছা এখন ফ্রেশ হয়ে নাস্তা কর।
:------হুমম।

নিচে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করলাম।

:------কিরে সারারাত কোথায় ছিলি।(আম্মু)
:------ছাঁদে।(আমি)
:------কেনো রোমে কি ঘুমাতে অসুবিধা হয় নাকি।
:------মজা করো না তো।এখন মজার মুড নেই।
:------মজা কোথায় করছি।জিজ্ঞেস করাটা ও কি দোষের নাকি।
:------হুমম দোষের এখন আমার ভালো লাগছে না।
:------কেনো কি হয়েছে।
:------কিরে নিলার সাথে কি কিছু হয়েছে।(আপু)
:------না কি হবে।(বলেই বাইরে চলে আসলাম)

ইভান কে কল করলাম।

:------হ্যালো ইভান।
:------হ্যাঁ দোস্ত কেমন আছিস।
:------আর বলিস না রে দোস্ত।
:------কেনো দোস্ত কি হয়েছে।
:------মামার চা'য়ের দোকানে আয় বলছি।সাথে রাফি কে ও নিয়ে আসিস।
:------আচ্ছা পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসছি।(

বাসায়-

:------মীম।(আপু)
:------হুমম আপু বলো।(মীম)
:------আকাশের কি হয়েছে একটু বল তো।
:------আসলে আপু...(সব খুলে বললো)
:------ওহ।এই ব্যাপার।আগে বলবি তো।
:------হুমম।সব আমার জন্য হয়েছে।
:------তোর জন্য কেনো হবে।তুই কি জানতি নাকি।
:------হুমম সেটাও ঠিক।
:------আচ্ছা আজ সন্ধ্যায় নিলা দের বাসায় যাবো।সব ভুল ভাঙাতে হবে।কে কখন কি করে বসে।বলা যায় না।
:------আচ্ছা।
----
:------দোস্ত চলে এসেছি।(ইভান)
:------কিরে কি হয়েছে এমন কেনো তোর অবস্থা।(রাফি)
:------আর বলিস না।কালকে তো দেখলি মীম এসেছে।(আমি)
:------হুমম।তা তো দেখলাম ই।কিন্তু সমস্যা টা কি সেটা তো বলবি।(রাফি)
:------(সব বললাম)
:------এটা তো বড় সমস্যা অনেক।(ইভান)
:------হুমম্।(আমি)
:------এটার সমাধান অত্যন্ত জরুরী।(রাফি)
:------হ্যাঁ।আজ সন্ধ্যায় ভাবি দের বাসায় যেতে হবে।(ইভান)
:------আচ্ছা।সন্ধ্যায় দেখা হচ্ছে।(আমি)
:------ওকে।(রাফি)

সন্ধ্যায়....

:------এই আকাশ রেডি হ।(আপু)
:------কেনো কোথাও যাবি।(আমি)
:------হুমম্।
:------না আমার কাজ আছে।।
:------না।সব থেকে বড় কাজ আমার টা ই।
:------দেখ বোঝার চেষ্টা কর একটু।
:------তুই যাবি কি না।(কিছুটা রেগে)
:------আরে বাবা রাগ করছিস কেনো।
:------রেডি হ তাড়াতাড়ি।
:------আচ্ছা।

ইভান আর রাফি কে কল করে বাসায় চলে আসতে বললাম।

:------আমি রেডি চল।(আমি)
:------হুমম চল।(আপু)
:------আরে আব্বু,আম্মু সাথে মীম ও আছে।তোমরা সবাই যাবে নাকি।
:------হুমম।কেনো তোর কোনো সমস্যা নাকি।
:------না আমার কি সমস্যা থাকতে পারে।
:------চল এখন।

এতক্ষণে ইভান আর রাফি ও চলে এসেছে।আমি গাড়ি চালাচ্ছি আর আপু রাস্তা বলে দিচ্ছে। কারণ আমি জানি না কোথায় যাওয়া হচ্ছে।

:------আরে এটাতো নিলাদের বাসার রাস্তা।(আমি)
:------তুই চুপ করে গাড়ি চালিয়ে যেতে থাক।(আপু)
:------হুমম........




চলবে.........
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
Like Reply
#28
পর্ব-২৩



------------------------------------



:------তুই চুপ করে গাড়ি চালিয়ে যেতে থাক।(আপু)
:------হুমম।(আমি)

চুপ করে গাড়ি চালাতে লাগলাম। একটু পরে নিলা দের বাসার সামনে এসে থামলাম।

:------নাম এখন।(আপু)
:------এখানে তো কোনো অনুষ্ঠান দেখতে পাচ্ছি না।
:------তুই চুপ করবি।
:------হুমম।
:------চল।

আপুর পিছন পিছন যেতে লাগলাম। আপু কলিংবেল দিলো।

:------আরে আকাশ ভাইয়া,আপু তোমরা।(নিশা)
:------কেমন আছিস পিচ্চি।(আপু)
:------হুমম খুব ভালো।তোমরা কেমন আছো।(নিশা)
:------এই নিশা কে এসেছে।(আন্টি)
:------দেখে যাও।(নিশা)
:------আরে ভাবি আপনারা।কেমন আছেন।(আন্টি)
:------হুমম ভালো।আপনারা কেমন আছেন।(আম্মু)
:------বাইরে দাঁড়িয়ে কেনো।ভেতরে আসুন।(আন্টি)

তারপর সবাই ভেতরে গেলাম।আব্বু-আম্মু নিলার আব্বু-আম্মুর সাথে কথা বলছেন। আমি,আপু আর মীম নিলার রোমে গেলাম। ভেতর থেকে বন্ধ করা।

:------আপু....ও আপু.....(নিশা)
:------কি হয়েছে।চিৎকার করছিস কেনো।(মায়া)
:------দরজা টা একটু খোলো।(নিশা)
:------আচ্ছা দাড়া।(মায়া)

তারপর দরজা খুলে দিলো।

:------আরে রুহি তুই।(কিছুটা অবাক হয়ে)
:------কেনো আসতে কি বারন আছে নাকি কোনো।(আপু)
:------না না বারন কেনো থাকবে।ভেতরে আয়।(নিলা)

মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে। চোখের নিচে কেমন কালি পড়ে গেছে মনে হচ্ছে। সাথে ফ্যাকাশে ও হয়ে গেছে। সারারাত মনে হয় কান্না করেছে। যেই আমি ভেতরে যাবো তেমনি.....

:------সবাইকে ভেতরে আসতে বলা হয়নি।(নিলা)
:------আরে কি বলছো এগুলো।(আমি)
:------আসতে দে।(আপু)
:------তুই বললি তাই পারমিশন দিলাম।(নিলা)
:------আকাশের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।(আপু)

আরে আপু কি বলছে এগুল ঝগড়া নিষ্পন্ন করতে এসে ঝগড়া বাড়িয়ে দিচ্ছে।

:------ওহ। Congrats Mr. Akash . (নিলা)

আমার কিছু বলার ভাষা হারিয়ে গেছে।

:------এমন কিছুর কি আশা করছিলি নাকি।(আপু)
:------মানে কি।(নিলা)
:------মানে মীম হচ্ছে আকাশের ছোটবেলার বান্ধবী।ক্লাস এইটে থাকতে অন্য কলেজে চলে গিয়েছিলো।এখন আবার নতুন করে আমাদের কলেজে ভর্তি হয়েছে।(আপু)
:------আমি বুঝতে পারিনি যে আকাশের গার্লেফ্রন্ড আছে।জানলে এমন টা কখনোই করতাম না।আমি তো শুধু বন্ধু হিসেবে ওর কাছে থাকি।আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।(মীম)
:------ইটস ওকে।আমার ও উচিত ছিলো আকাশের কথা টা পুরোপুরি শুনার।(নিলা)
:------মীম আর নিশা চল।ওদের ব্যাপার টা ওদের কথা বলে মিটিয়ে নিতে দে।(আপু)
:------হুমম চলো।(নিশা)
সবাই চলে গেলো।
:------নিলা পরী।(আমি)
:------হুমম।(নিলা)
:------সরি।(আমি)
:------আমিও সরি।বুঝতে পারিনি।
:------তুমি কেনো সরি বলছো।দোষ টা তো আমার।
:------দোষ কারোরই না।ভুল বোঝাবুঝির কারণে এটা হয়েছে।
:------হুমম।
:------তুমি জানো কালকে সারারাত কান্না করেছি।(আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিয়েছে)
:------আরে পাগলী কান্না করছো কেনো।
:------তোমাকে অবিশ্বাস করাটা আমার উচিত হয়নি।
:------সমস্যা নেই।আমরা আমরাই তো।
:------সত্যি ক্ষমা করেছো তো।
:------তুমি কোনো ভুল করোনি।তুমি কেনো ক্ষমা চাচ্ছো।তোমার যায়গায় যেকোনো মেয়ে থাকলে এটাই করতো।
:------তবুও সরি।
:------ইটস ওকে।
:------কাল সারাদিন কথা বলিনি।রাতে ও কথা বলা হয়নি।খুব কষ্টে গেছে কালকের দিন টা।
:------আমার ও কি কম কষ্ট হয়েছে নাকি।
:------পিচ্চু টার খুব কষ্ট হয়েছে বুঝি।
:------হুমম।
:------এদিকে আসো ওষুধ দিয়ে দিচ্ছি।
:------হুমম কালকে রাতে একটু ও ঘুম আসেনি।ওষুধ দাওনি তাই।
:------আচ্ছা এই নাও।(বলেই টুপ টুপ করে দুইটা দিয়ে দিলো)
:------থ্যাংক ইউ বাবুনি।
:------ওয়েল-কাম পিচ্চু।
কথা বলছিলাম....

:------কিরে সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছে তো।(আপু)
:------হুমম।(আমি)
:------জানিস নিলা।সকালে ওর চোখ দেখে আমি তো ভয় ই পেয়ে গিয়েছিলাম।(আপু)
:------কেনো কি হয়েছে।(নিলা)
:------চোখ লাল হয়ে গিয়েছিলো।(আপু)
:------রাতে কম ঘুমিয়েছি তাই এমন হয়েছিলো।(আমি)
:------এখন চল।সবাই ওয়েট করছে।(আপু)
:------কি ব্যাপারে ওয়েট করছে।(আমি)
:------এতো প্রশ্ন করা আমার একদম পছন্দ না।(আপু
:------রাগ করিস কেনো।(আমি)
:------চল।(আপু)
:------হুমম।(আমি)

তারপর তিনজন ডইং রোমে গেলাম। সবাই খুব হাসা-হাসি করছে। বিশেষ করে ইভান আর রাফির মুখে তো রাজ্য জয়ের হাসি। ব্যাপারটা আমার ভালো ঠেকছে না। আল্লাহ্ ই জানেন কি হবে।

:------আকাশ এদিকে আয়।(আম্মু)
:------জ্বি আম্মু বলো।(আমি)
:------আগামী মাসের শেষের সপ্তাহে তোমার আর নিলার বিয়ের দিন ঠিক করেছি আমি আর নিলার আব্বু।তোমার কি কিছু বলার আছে।(আব্বু)

আরিব্বাস আব্বু এটা কি বললো।

:------আব্বু এখন কি আমার বিয়ের বয়স হয়েছে।(আমি)
:------সমস্যা কি শুধু এটাই।নাকি আরো কিছু সমস্যা আছে।(আব্বু)
:------না আর কি সমস্যা থাকতে পারে।-(আমাকে তো এখন বললে এখনি বিয়ে করে ফেলি)-বিড়বিড় করে বললাম।
:------আচ্ছা তাহলে এই কথা ই থাকুক বিয়াই সাহেব।(আব্বু)
:------আলহামদুলিল্লাহ্।(নিলার আব্বু)
:------আমাদের এক মেয়ে কিছুদিন পরে বাড়ি থেকে চলে যাবে।তার কিছুদিন পরে নতুন মেয়েকে ঘরে তুলবো।(আম্মু)
:------নে নিলা কে এটা পড়িয়ে দে।(একটা আংটি আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে)
:------এটা কি।(আমি)
:------চোখে কি ইদানিং কম দেখিস নাকি।(আপু)
:------না দেখছি তো।(আমি)
:------তাহলে আবার জিজ্ঞেস করছিস কেনো।(আপু)

কিছু বললাম না। নিলাকে আংটি টা পড়িয়ে দিলাম। নিলার দিকে তাকিয়ে দেখি লজ্জায় মাথা নিচু করে রেখেছে। যাক আমার তো খুশি লাগছে। খুশিতে মনে মনে লুঙ্গি ডান্স দিতে মন চাইলো। কিন্তু প্যান্ট পরে থাকায় দিতে পারলাম না। যাইহোক সব ঠিকমতো হয়ে গেলো। নিলাকে রেডি হতে বললাম। তারপর নিলাদের বাসার সবাইকে বিদায় জানিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।সবাই বাসায় চলে আসলাম।

:------আব্বু তোমরা যাও আমি একটু আসছি।(আমি)
:------কোথায় যাবি এতো রাতে।(আম্মু)
:------একটু ওদের সাথে ঘুরতে যাবো।(আমি)
:------আচ্ছা বেশি রাত করিছ না।(আম্মু)
:------আচ্ছা।(আমি)

আমি,ইভান আর রাফি বেরিয়ে আসলাম ঘুরতে। নিলাকে কল করলাম।

:------হ্যালো নিলা।(আমি)
:------হুমম কোথায় তুমি।(নিলা)
:------এইতো প্রায় পৌছে গেছি।
:------আমিও প্রায় রেডি।
:------ওদের বলা হয়েছে তো।
:------হুমম।
:------আচ্ছা কল এসে করছি।
:------ওকে।

বুঝলেন না তো। এখন ছোটখাটো একটা পার্টি হবে। হ্যাঁ ইভান আর রাফিকে ট্রিট দেওয়া হচ্ছে। নিলাদের বাসার সামনে পৌছে গেলাম।
কল করলাম।

:------হ্যালো।(আমি)
:------এইতো বাইরে এসে পড়েছি।(নিলা)
:------আমি দাঁড়িয়ে আছি।
:------ওকে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই নিলা পরীটার আগমন।আমি হা হয়ে তাকিয়ে আছি।

:------এই।(নিলা)
:------দিনে এমন করে সেজে বেরোবে না।(আমি)
:------কেনো।
:------যদি কারো নজর লেগে যায়।
:------পাগল একটা।
:------হুমম।তোমার জন্যই তো।
:------আচ্ছা রুহি কে ডাকলে কেমন হয়।
:------আপুকে ডাকবো।
:------হ্যাঁ।
:------আচ্ছা তুমি আপুকে কল করো আমি রাকিব ভাইয়াকে বলছি আপুকে পিক করতে।
:------আচ্ছা।

তারপর নিলা আপুকে কল করলো। আমিও রাকিব ভাইয়াকে কল করে আসতে বললাম। রাস্তায় রুপু আর অনুকে নির্দিষ্ট যায়গা থেকে নিয়ে নিলাম। আপু আর রাকিব ভাইয়া ও পৌছে গেছে।

:------কেমন আছো সবাই।(রাকিব ভাইয়া)
:------এইতো ভাইয়া ভালো।তুমি কেমন আছো।(আমি)
:------রাফি ও দেখি সাথে আছে।
:------হুমম।(আমি)
:------সাথে ওটা কে।
:------ওটা কে বুঝতে পারছো না ভাইয়া।(আমি)
:------না তো।
:------এটা হচ্ছে তোমাদের বাসার ছোটো বউ।(আমি)
:------কিরে তলে তলে এতদূর।যাইহোক কনগ্রেটস নিলা আর আকাশ।
:------থ্যাংক ইউ ভাইয়া।(নিলা)

সবাই অনেক মজা আর হাসা-হাসি করলাম। তারপর সবাই একসাথে ডিনার করলাম। শেষে সবাইকে ঠিকমতো বাসায় পৌঁছে দেওয়া হলো। আমিও বাসায় চলে আসলাম। খুব ক্লান্ত হয়ে গেছি। কাল সারারাত এমনিতেই ঘুম আসেনি। নিলাকে কল করে ঘুমিয়ে যেতে বলি।

:------হ্যালো নিলা পরী।(আমি)
:------হুমম।ঠিকমতো বাসায় পৌঁছে গেছো তো পিচ্চু বাবু।(নিলা)
:------হ্যাঁ।সিনিয়র পরী একদম ঠিকমতো পৌঁছে গেছি।
:------কি করছো এখন।
:------এইতো মুহাত-এর আম্মুর সাথে কথা বলছি আর কি।তুমি কি করছো মুহাত-এর আম্মু।
:------আমি তো নীলের আব্বুর সাথে কথা বলছি।
:------তাই।
:------হুমম।
:------আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
:------হুমম্।আজ তো অনেক কিছুই হলো।খুব ক্লান্ত আছো।
:------হুমম।
:------তাহলে ঘুমাও।
:------ওকে।

ঘুমিয়ে পড়লাম। দেখতে দেখতে এই সপ্তাহ টা পার হয়ে গেলো। আজকে আপুর হলুদ। কালকে বিয়ে। বাড়িটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই আত্মীয় স্বজনরা আসা শুরু হয়ে গেছে। নানু বাসার সবাই ইতিমধ্যে চলে এসেছে। বিকেলে সীমা আর সীমার বর ও চলে আসলো। সন্ধ্যা থেকেই সবাই সাজগোজ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। ইভান চলে এসেছে। রাফি তো আসতে পারবে না। নিলার কথামতো একটা নীল পাঞ্জাবী পড়লাম। হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। সবাইকে বেশ হাসিখুশি দেখাচ্ছে। তখনই কারো আগমন.......

(চলবে........)

......বড় আপুর বান্ধবী......
.........session 2............
------------------------------------
SHAHINUL AKASH
পর্ব 04

:------তুই চুপ করে গাড়ি চালিয়ে যেতে থাক।(আপু)
:------হুমম।(আমি)

চুপ করে গাড়ি চালাতে লাগলাম। একটু পরে নিলা দের বাসার সামনে এসে থামলাম।

:------নাম এখন।(আপু)
:------এখানে তো কোনো অনুষ্ঠান দেখতে পাচ্ছি না।
:------তুই চুপ করবি।
:------হুমম।
:------চল।

আপুর পিছন পিছন যেতে লাগলাম। আপু কলিংবেল দিলো।

:------আরে আকাশ ভাইয়া,আপু তোমরা।(নিশা)
:------কেমন আছিস পিচ্চি।(আপু)
:------হুমম খুব ভালো।তোমরা কেমন আছো।(নিশা)
:------এই নিশা কে এসেছে।(আন্টি)
:------দেখে যাও।(নিশা)
:------আরে ভাবি আপনারা।কেমন আছেন।(আন্টি)
:------হুমম ভালো।আপনারা কেমন আছেন।(আম্মু)
:------বাইরে দাঁড়িয়ে কেনো।ভেতরে আসুন।(আন্টি)

তারপর সবাই ভেতরে গেলাম।আব্বু-আম্মু নিলার আব্বু-আম্মুর সাথে কথা বলছেন। আমি,আপু আর মীম নিলার রোমে গেলাম। ভেতর থেকে বন্ধ করা।

:------আপু....ও আপু.....(নিশা)
:------কি হয়েছে।চিৎকার করছিস কেনো।(মায়া)
:------দরজা টা একটু খোলো।(নিশা)
:------আচ্ছা দাড়া।(মায়া)

তারপর দরজা খুলে দিলো।

:------আরে রুহি তুই।(কিছুটা অবাক হয়ে)
:------কেনো আসতে কি বারন আছে নাকি কোনো।(আপু)
:------না না বারন কেনো থাকবে।ভেতরে আয়।(নিলা)

মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে। চোখের নিচে কেমন কালি পড়ে গেছে মনে হচ্ছে। সাথে ফ্যাকাশে ও হয়ে গেছে। সারারাত মনে হয় কান্না করেছে। যেই আমি ভেতরে যাবো তেমনি.....

:------সবাইকে ভেতরে আসতে বলা হয়নি।(নিলা)
:------আরে কি বলছো এগুলো।(আমি)
:------আসতে দে।(আপু)
:------তুই বললি তাই পারমিশন দিলাম।(নিলা)
:------আকাশের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।(আপু)

আরে আপু কি বলছে এগুল ঝগড়া নিষ্পন্ন করতে এসে ঝগড়া বাড়িয়ে দিচ্ছে।

:------ওহ। Congrats Mr. Akash . (নিলা)

আমার কিছু বলার ভাষা হারিয়ে গেছে।

:------এমন কিছুর কি আশা করছিলি নাকি।(আপু)
:------মানে কি।(নিলা)
:------মানে মীম হচ্ছে আকাশের ছোটবেলার বান্ধবী।ক্লাস এইটে থাকতে অন্য কলেজে চলে গিয়েছিলো।এখন আবার নতুন করে আমাদের কলেজে ভর্তি হয়েছে।(আপু)
:------আমি বুঝতে পারিনি যে আকাশের গার্লেফ্রন্ড আছে।জানলে এমন টা কখনোই করতাম না।আমি তো শুধু বন্ধু হিসেবে ওর কাছে থাকি।আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।(মীম)
:------ইটস ওকে।আমার ও উচিত ছিলো আকাশের কথা টা পুরোপুরি শুনার।(নিলা)
:------মীম আর নিশা চল।ওদের ব্যাপার টা ওদের কথা বলে মিটিয়ে নিতে দে।(আপু)
:------হুমম চলো।(নিশা)
সবাই চলে গেলো।
:------নিলা পরী।(আমি)
:------হুমম।(নিলা)
:------সরি।(আমি)
:------আমিও সরি।বুঝতে পারিনি।
:------তুমি কেনো সরি বলছো।দোষ টা তো আমার।
:------দোষ কারোরই না।ভুল বোঝাবুঝির কারণে এটা হয়েছে।
:------হুমম।
:------তুমি জানো কালকে সারারাত কান্না করেছি।(আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিয়েছে)
:------আরে পাগলী কান্না করছো কেনো।
:------তোমাকে অবিশ্বাস করাটা আমার উচিত হয়নি।
:------সমস্যা নেই।আমরা আমরাই তো।
:------সত্যি ক্ষমা করেছো তো।
:------তুমি কোনো ভুল করোনি।তুমি কেনো ক্ষমা চাচ্ছো।তোমার যায়গায় যেকোনো মেয়ে থাকলে এটাই করতো।
:------তবুও সরি।
:------ইটস ওকে।
:------কাল সারাদিন কথা বলিনি।রাতে ও কথা বলা হয়নি।খুব কষ্টে গেছে কালকের দিন টা।
:------আমার ও কি কম কষ্ট হয়েছে নাকি।
:------পিচ্চু টার খুব কষ্ট হয়েছে বুঝি।
:------হুমম।
:------এদিকে আসো ওষুধ দিয়ে দিচ্ছি।
:------হুমম কালকে রাতে একটু ও ঘুম আসেনি।ওষুধ দাওনি তাই।
:------আচ্ছা এই নাও।(বলেই টুপ টুপ করে দুইটা দিয়ে দিলো)
:------থ্যাংক ইউ বাবুনি।
:------ওয়েল-কাম পিচ্চু।
কথা বলছিলাম....

:------কিরে সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছে তো।(আপু)
:------হুমম।(আমি)
:------জানিস নিলা।সকালে ওর চোখ দেখে আমি তো ভয় ই পেয়ে গিয়েছিলাম।(আপু)
:------কেনো কি হয়েছে।(নিলা)
:------চোখ লাল হয়ে গিয়েছিলো।(আপু)
:------রাতে কম ঘুমিয়েছি তাই এমন হয়েছিলো।(আমি)
:------এখন চল।সবাই ওয়েট করছে।(আপু)
:------কি ব্যাপারে ওয়েট করছে।(আমি)
:------এতো প্রশ্ন করা আমার একদম পছন্দ না।(আপু
:------রাগ করিস কেনো।(আমি)
:------চল।(আপু)
:------হুমম।(আমি)

তারপর তিনজন ডইং রোমে গেলাম। সবাই খুব হাসা-হাসি করছে। বিশেষ করে ইভান আর রাফির মুখে তো রাজ্য জয়ের হাসি। ব্যাপারটা আমার ভালো ঠেকছে না। আল্লাহ্ ই জানেন কি হবে।

:------আকাশ এদিকে আয়।(আম্মু)
:------জ্বি আম্মু বলো।(আমি)
:------আগামী মাসের শেষের সপ্তাহে তোমার আর নিলার বিয়ের দিন ঠিক করেছি আমি আর নিলার আব্বু।তোমার কি কিছু বলার আছে।(আব্বু)

আরিব্বাস আব্বু এটা কি বললো।

:------আব্বু এখন কি আমার বিয়ের বয়স হয়েছে।(আমি)
:------সমস্যা কি শুধু এটাই।নাকি আরো কিছু সমস্যা আছে।(আব্বু)
:------না আর কি সমস্যা থাকতে পারে।-(আমাকে তো এখন বললে এখনি বিয়ে করে ফেলি)-বিড়বিড় করে বললাম।
:------আচ্ছা তাহলে এই কথা ই থাকুক বিয়াই সাহেব।(আব্বু)
:------আলহামদুলিল্লাহ্।(নিলার আব্বু)
:------আমাদের এক মেয়ে কিছুদিন পরে বাড়ি থেকে চলে যাবে।তার কিছুদিন পরে নতুন মেয়েকে ঘরে তুলবো।(আম্মু)
:------নে নিলা কে এটা পড়িয়ে দে।(একটা আংটি আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে)
:------এটা কি।(আমি)
:------চোখে কি ইদানিং কম দেখিস নাকি।(আপু)
:------না দেখছি তো।(আমি)
:------তাহলে আবার জিজ্ঞেস করছিস কেনো।(আপু)

কিছু বললাম না। নিলাকে আংটি টা পড়িয়ে দিলাম। নিলার দিকে তাকিয়ে দেখি লজ্জায় মাথা নিচু করে রেখেছে। যাক আমার তো খুশি লাগছে। খুশিতে মনে মনে লুঙ্গি ডান্স দিতে মন চাইলো। কিন্তু প্যান্ট পরে থাকায় দিতে পারলাম না। যাইহোক সব ঠিকমতো হয়ে গেলো। নিলাকে রেডি হতে বললাম। তারপর নিলাদের বাসার সবাইকে বিদায় জানিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।সবাই বাসায় চলে আসলাম।

:------আব্বু তোমরা যাও আমি একটু আসছি।(আমি)
:------কোথায় যাবি এতো রাতে।(আম্মু)
:------একটু ওদের সাথে ঘুরতে যাবো।(আমি)
:------আচ্ছা বেশি রাত করিছ না।(আম্মু)
:------আচ্ছা।(আমি)

আমি,ইভান আর রাফি বেরিয়ে আসলাম ঘুরতে। নিলাকে কল করলাম।

:------হ্যালো নিলা।(আমি)
:------হুমম কোথায় তুমি।(নিলা)
:------এইতো প্রায় পৌছে গেছি।
:------আমিও প্রায় রেডি।
:------ওদের বলা হয়েছে তো।
:------হুমম।
:------আচ্ছা কল এসে করছি।
:------ওকে।

বুঝলেন না তো। এখন ছোটখাটো একটা পার্টি হবে। হ্যাঁ ইভান আর রাফিকে ট্রিট দেওয়া হচ্ছে। নিলাদের বাসার সামনে পৌছে গেলাম।
কল করলাম।

:------হ্যালো।(আমি)
:------এইতো বাইরে এসে পড়েছি।(নিলা)
:------আমি দাঁড়িয়ে আছি।
:------ওকে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই নিলা পরীটার আগমন।আমি হা হয়ে তাকিয়ে আছি।

:------এই।(নিলা)
:------দিনে এমন করে সেজে বেরোবে না।(আমি)
:------কেনো।
:------যদি কারো নজর লেগে যায়।
:------পাগল একটা।
:------হুমম।তোমার জন্যই তো।
:------আচ্ছা রুহি কে ডাকলে কেমন হয়।
:------আপুকে ডাকবো।
:------হ্যাঁ।
:------আচ্ছা তুমি আপুকে কল করো আমি রাকিব ভাইয়াকে বলছি আপুকে পিক করতে।
:------আচ্ছা।

তারপর নিলা আপুকে কল করলো। আমিও রাকিব ভাইয়াকে কল করে আসতে বললাম। রাস্তায় রুপু আর অনুকে নির্দিষ্ট যায়গা থেকে নিয়ে নিলাম। আপু আর রাকিব ভাইয়া ও পৌছে গেছে।

:------কেমন আছো সবাই।(রাকিব ভাইয়া)
:------এইতো ভাইয়া ভালো।তুমি কেমন আছো।(আমি)
:------রাফি ও দেখি সাথে আছে।
:------হুমম।(আমি)
:------সাথে ওটা কে।
:------ওটা কে বুঝতে পারছো না ভাইয়া।(আমি)
:------না তো।
:------এটা হচ্ছে তোমাদের বাসার ছোটো বউ।(আমি)
:------কিরে তলে তলে এতদূর।যাইহোক কনগ্রেটস নিলা আর আকাশ।
:------থ্যাংক ইউ ভাইয়া।(নিলা)

সবাই অনেক মজা আর হাসা-হাসি করলাম। তারপর সবাই একসাথে ডিনার করলাম। শেষে সবাইকে ঠিকমতো বাসায় পৌঁছে দেওয়া হলো। আমিও বাসায় চলে আসলাম। খুব ক্লান্ত হয়ে গেছি। কাল সারারাত এমনিতেই ঘুম আসেনি। নিলাকে কল করে ঘুমিয়ে যেতে বলি।

:------হ্যালো নিলা পরী।(আমি)
:------হুমম।ঠিকমতো বাসায় পৌঁছে গেছো তো পিচ্চু বাবু।(নিলা)
:------হ্যাঁ।সিনিয়র পরী একদম ঠিকমতো পৌঁছে গেছি।
:------কি করছো এখন।
:------এইতো মুহাত-এর আম্মুর সাথে কথা বলছি আর কি।তুমি কি করছো মুহাত-এর আম্মু।
:------আমি তো নীলের আব্বুর সাথে কথা বলছি।
:------তাই।
:------হুমম।
:------আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।
:------হুমম্।আজ তো অনেক কিছুই হলো।খুব ক্লান্ত আছো।
:------হুমম।
:------তাহলে ঘুমাও।
:------ওকে।

ঘুমিয়ে পড়লাম। দেখতে দেখতে এই সপ্তাহ টা পার হয়ে গেলো। আজকে আপুর হলুদ। কালকে বিয়ে। বাড়িটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই আত্মীয় স্বজনরা আসা শুরু হয়ে গেছে। নানু বাসার সবাই ইতিমধ্যে চলে এসেছে। বিকেলে সীমা আর সীমার বর ও চলে আসলো। সন্ধ্যা থেকেই সবাই সাজগোজ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। ইভান চলে এসেছে। রাফি তো আসতে পারবে না। নিলার কথামতো একটা নীল পাঞ্জাবী পড়লাম। হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। সবাইকে বেশ হাসিখুশি দেখাচ্ছে। তখনই কারো আগমন.......




চলবে........
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
Like Reply
#29
পর্ব-২৪ (শেষ পর্ব)



------------------------------------



তখনই কারো আগমন। সে আর কেউ নয় হ্যাঁ নিলার আগমন। হালকা হলুদ রঙের শাড়িতে খুব সুন্দর লাগছে নিলা কে। চোখ ই ফেরাতে পারছি না। কখন যে আমার সামনে চলে এসেছে বুঝতেই পারিনি।

:-----আকাশ।(নিলা)
:-----নো রিপ্লে।(আমি)
:-----এই আকাশ।
:-----হুমম।হ্যাঁ....হ্যাঁ....কি....কি।
:-----তোমাকে ডাকছি শুনতে পাচ্ছো না।
:-----না কিভাবে শুনবো।
:-----মানে কি।
:-----তোমাকে দেখে আমার সময় থেমে গেছে।
:-----তুমি ও না।(কিছুটা লজ্জা পেয়ে নিলা বললো)
:-----সত্যি।
:-----হয়েছে।সবার সামনে ওভাবে তাকিয়ে থাকলে সবাই কি ভাববে বলো।
:-----যে যা বলুক।তাতে আমার কি।আমি তো আমার নিলা পরীর দিকে তাকিয়ে থাকি।
:-----পাগল হয়ে গেছো পুরোপুরি।
:-----হুমম তোমার জন্যই।
:-----অনুষ্ঠানে মনোযোগ দাও।
:-----তুমি সামনে থাকলে অনুষ্ঠানে কিভাবে মনোযোগ দিবো বলো।
:-----তাহলে থাকো তুমি।আমি গেলাম।
:-----কোথায় যাবে।
:-----অনুষ্ঠান টা একটু ঘুরে দেখবো।আর রুহির কাছে যাবো।
:-----ওওহ যাও তাহলে।
:-----তুমি যাবে না।
:-----হ্যাঁ যাবো তো।
:-----ওকে চলো।

এমন সময় একটা ছেলে আমাদের পথ আটকে দাঁড়ালো।

:-----এক্সকিউজ মি।(ছেলেটা)
:-----জ্বী।(নিলা)
:-----আপনার নাম'টা কি জানা যাবে।
:-----কেনো বলুন তো।
:-----এমনিই।
:-----রং নাম্বারে ডায়াল কলে ফেলেছেন ভাইয়া।
:-----মানে কি।
:-----এইযে আমার সাথে দাঁড়িয়ে আছেন।ওনার সাথে আমার আগামী মাসে বিয়ে।
:-----মজা করছেন আমার সাথে।
:-----এখানে মজার কি দেখলেন।(আমি কিছুটা রেগে)
:-----আকাশ এটা বিয়ে বাড়ি।রাগ টা একটু কন্ট্রোল করো।(নিলা)
:-----কি হয়েছে নিলয়।(ইভান)
:-----এই লোকের নাকি বিশ্বাস হচ্ছে না নিলার সাথে আমার বিয়ে।(আমি)
:-----ভাই।বিশ্বাস না করার কি আছে।(ইভান)
:-----সরি ভাই বুঝতে পারিনি।
:-----ইটস ওকে।(আমি)

এদিকে নিলা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।

:-----ওভাবে হাসছো কেনো নিলা পরী।আমার বুকে গুলির মতো বিধছে।(আমি)
:-----পাগল একটা।(আমার মাথায় হালকা একটা ঠুস দিয়ে বললো)
:-----আরে নিলা আপু কেমন আছিস।(ঝিনাত)
:-----এইতো ভালো।তুই কেমন আছিস।(নিলা)
:-----আমি আর ভালো কিভাবে থাকি।(আমার দিকে তাকিয়ে ঝিনাত বলছো)
:-----থাক মন খারাপ করিস না।
:-----আকাশ তুমি কেমন আছো।
:-----আমি তো বিন্দাস আছি।
:-----তোমরা ভালো থাকলেই হলো।
:-----আমাদের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
:-----কি বলিস কবে।
:-----এইতো আগামী মাসের শেষের দিকে।
:-----কনগ্রেটস।
:-----থ্যাংক ইউ বইনা।
:-----ওদিকে চল।
:-----হুমম চল।

দেখতে দেখতে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গেলো। সারাদিন অনেক কাজ করা হয়েছে। তাই শুতেই ঘুমিয়ে পড়লাম। কালকে আবার খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে। বিয়ে বাড়ি বলে কথা। কোনো কাজ না থাকলেও কাজের অভাব থাকে না। একটু আগে নিলার সাথে কথা বলায় আর কল করলাম না। নিলা ও জানে যে আমি খুব ক্লান্ত। ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন সকালে কারো ডাকার আগেই ঘুম থেকে উঠে পড়েছি। সন্ধ্যায় আপুর বিয়ের রিসেপশন। সারাদিন একটু একটু কাজ করতে করতে অনেক কাজ করা হয়ে গেছে। সন্ধ্যায় সব কাজ প্রায় শেষ করে রোমে আসলাম। ফ্রেশ হয়ে হালকা কিছু খেয়ে নিলাম। সারাদিনে কিছু খাওয়া হয়নি। এমন সময় নিলার কল।

:-----হ্যাঁ বলো।(আমি)
:-----খুব বিজি নাকি।(নিলা)
:-----সবকিছু জেনে ও আবার প্রশ্ন করছো।
:-----এখন কি করছো।
:-----এইতো মাত্র খাওয়া শেষ করলাম।
:-----সারাদিনে কিছু খাওয়া হয়নি ঠিক না।
:-----হুমম।
:-----কি পড়তে বলেছি মনে আছে তো।
:-----হ্যাঁ একদম মনে আছে।
:-----এইতো গুড বয়।
:-----তোমাকে আজকে আমার হার্ট এট্যাক করাতে হবে।
:-----বাজে কথা বলবে না একদম।
:-----ওকে লাভ ইউ টু।
:-----পাবনা ভর্তি করাতে হবে তোমাকে।
:-----হি হি।
:-----এখন তাহলে রেডি হও।
:-----তুমি কি রেডি।
:-----না রুহির সাথে একসাথে রেডি হবো আমি।
:-----ওকে বাই এখন।
:-----ওকে।

নিলা আমাকে কালো স্যুট এর সাথে ম্যাচিং করে সবকিছু পড়তে বলেছে। এটাই আবার মনে করিয়ে দিলো আর কি। যেহেতু নিলা বলেছে আমি আর ওর কথা কিভাবে ফেলি। রেডি হয়ে আমি আর ইভান রোম থেকে বেরিয়ে আসলাম। রিসেপশনে চলে গেলাম আমরা দুইজন। দেখি কোনো কাজ বাকি আছে কি না।

:-----আরে আকাশ।(মীম)
:-----হ্যাঁ বল।(আমি)
:-----তোকে তো একদম রাজপুত্র লাগছে।(মীম)
:-----আজ বাজে চেহারা বলে মজা নিচ্ছিস।(আমি)
:-----না রে সত্যি।(মীম)
:-----হয়েছে।(আমি)
:-----মন চাইছে এখনই বিয়ে করে ফেলি।(মীম)
:-----তোর মাথায় কি আর অন্য কিছু আসে না।(আমি)
:-----না।(বলেই হো হো করে হেসে উঠলো)
:-----পাগলী মেয়ে কোথাকার।(আমি)
:-----হি হি।(মীম)

:-----আকাশ ভাইয়া।(নিশা)
:-----হুমম।(আমি)
:-----তোমাকে একদম হিরো লাগছে।
:-----তুই ও শুরু করে দিলি।
:-----হি হি।সত্যি কথা ই তো বলেছি।
:-----হয়েছে আর সত্যি কথা বলতে হবে না।
:-----আপুকে দেখেছো।
:-----না রে কিভাবে দেখবো।
:-----আজকে দেখলে তো হার্ট এট্যাক করবে।
:-----কেনো।
:-----আপু আজ খুব সুন্দর করে সেজেছে।
:-----তা তো আমার জন্যই।
:-----হি হি।

ইভান আর আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছি।

:-----এই আকাশ ওদিকে দেখ।(ইভান)
:-----ওদিকে....ক...কি....(আমি তো দেখেই অবাক)

কি বলবো মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। একটু বর্ণনা দিই। লাল-লেহেঙ্গা সাথে ম্যাচিং করা সব। চুলগুলো এক সাইডে ফালানো। কপালে ছোট্ট করে একটা টিঁপ। সব মিলিয়ে একদম পারফেক্ট। আসলেই আমার হার্ট-এট্যাক করানোর মতো লাগছে। ইভান কে ছেড়ে নিলার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। তেমনি আব্বুর এক বন্ধুর ছেলে নিলার পথ আটকে দাঁড়ালো। ধ্যাত দিলো মাথা টা খারাপ করে। কি ভালো একটা অনুভূতি তে ছিলাম।

:-----একটু শোনো।
:-----জ্বী আমাকে বলছেন ভাইয়া।(নিলা)
:-----হ্যাঁ তোমাকেই।আর আমি তোমার কোন জনমের ভাইয়া একটু বলবে।
:-----তাহলে কি বলবো।
:-----যাই বলো।তোমার বিয়ে হয়ে গেছে।
:-----এক্সকিউজ মি।(বলেই নিলার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম)
:-----আরে আকাশ কেমন আছো।
:-----হ্যাঁ ভাইয়া ভালো।আপনি কেমন আছেন।(আমার থেকে অনেক সিনিয়র।বিদেশে জব করে)
:-----হুমম ভালো।তুমি ওকে চেনো নাকি।
:-----হ্যাঁ।আপুর বান্ধবী হয়।মানে আপুর ক্লাসমেট।
:-----তাহলে তো ভালোই হলো।
:-----ঠিক বুঝলাম না ভাইয়া।
:-----সে কিছু না।
:-----ওহ
:-----হুমম।
:-----নিলা।(বলেই হাতটা একটু সরিয়ে দিলাম।যাতে নিলা আমার হাতের মাঝে হাত দিয়ে হাঁটতে পারে)

নিলা ও সেইরকম ভাবেই আমার হাতের ফাঁকে হাত দিয়ে হাঁটা শুরু করে দিলো।

:-----এটা কি ছিলো আকাশ।
:-----তেমন কিছু না।আগামী মাসে আমাদের বিয়ে।আপনার দাওয়াত।(বলেই একটা হাসি দিলাম)

উনি তো অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। আমি আর নিলা অনুষ্ঠানের দিকে চলে গেলাম।

:-----নিলা পরী।
:-----হুমম।বলো পিচ্চু।
:-----ইচ্ছে করছে এখনই তোমাকে বিয়ে করে ফেলি।আর এইভাবে সারাজীবন সাজিয়ে রাখি।
:-----কি বলো।(কিছুটা লজ্জা পেয়ে নিলা)
:-----সত্যি কথাই তো বলেছি।
:-----পাগল হয়ে গেছো।
:-----হুমম।

একটু পরে রাফি রা চলে আসলো। আপুর বিয়ে টা ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়ে গেলো। এখন বিদায়ের পালা। কোনো কিছু ভাবার আগেই আমার চোখ দিয়ে পানি চলে আসলো। মনে হচ্ছে বুকের উপরে অনেক ভারী কিছু রাখা হয়েছে। নিশ্বাস টা ও ঠিকমতো নিতে পারছি না। জীবন থেকে অনেক মূল্যবান কিছু হারিয়ে ফেললাম। ভাবতেই গা টা শিউরে ওঠলো। আপুকে বিদায় দেওয়া হলো। সবার মন খুব খারাপ হয়ে গেছে। নিলা তো আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিয়েছে। আপুর জন্য মন টা খুব খারাপ হয়ে আছে। রাতে একটু ও ঘুম আসলো না। খুব সকালে উঠে নামাজ পড়তে চলে গেলাম। তারপর কিছুক্ষণ হাঁটাহাটি করে বাসায় ফিরে আসলাম। এক সপ্তাহ চলে গেলো।আজ এক সপ্তাহ পরে কলেজে গেলাম। যদিও নিলা সাথে আছে কিন্তু আপুকে মিস করছি অনেক।

:-----আকাশ শোনো।(নিলা)
:-----হুমম বলো।(আমি)
:-----চলো রুহি কে দেখে আসি।
:-----হ্যাঁ চলো।
:-----হুমম।

তারপর আমি আর নিলা আপুর সাথে দেখা করতে চলে গেলাম।
গিয়ে দেখি রাফি আর রাকিব ভাইয়া বসে আছে।

:-----আরে দোস্ত কেমন আছিস।(রাফি)
:-----কেমন আর থাকবো বল।(আমি)
:-----রাফি...রুহি কোথায়।(নিলা)
:-----ভাবি তো কিচেনে আম্মুকে সাহায্য করছে।(রাফি)
:-----ওহ আচ্ছা।আমি যাচ্ছি দেখা করতে।(নিলা)
:-----আচ্ছা।(রাফি)

নিলা চলে গেলো আপুর সাথে দেখা করতে। নিলা পিছনে গিয়ে আপুর চোখ ধরলো।

:-----আরে নিলা।(আপু)
:-----তুই কিভাবে বুঝলি।(নিলা)
:-----আমার একমাত্র ভাইয়ের একটা মাত্র হবু বউ।তাকে না চিনলে কাকে চিনবো।
:-----কেমন আছিস রে।
:-----খুব ভালো।তোরা কেমন আছিস।
:-----আমরাও ভালো।কিন্তু তোকে ছাড়া একদম ভালো লাগছে না রে।
:-----হুমম।তোকে তোদের সবাইকে ছাড়া আমার ও ভালো লাগছে না।
:-----হুমম।
:-----আকাশ কোথায়।
:-----রাফির সাথে কথা বলছে।
:-----ওহ চল।
:-----হুমম চল।

:-----আকাশ।(আপু)
:-----আপু কেমন আছিস।(আমি)
:-----ভালো।তুই কেমন আছিস।আর আব্বু আম্মু কেমন আছে।
:-----আছে ভালোই।
:-----রাকিব ভাইয়া।
:-----হুমম।আকাশ বলো।
:-----আজ বিকেলে আপু আর তুমি বাসায় চলে যেও।
:-----আচ্ছা।
:-----এখন তাহলে আমরা আসি।
:-----সে কি।মাত্র ই তো আসলি।দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে যাবি।
:-----না অন্য কোনো দিন করবো।
:-----আচ্ছা তাহলে সাবধানে যাস।
:-----রাফি কলেজের ওদিকে যাবি নাকি।(আমি)
:-----হ্যাঁ চল।(রাফি)
:-----আচ্ছা গেলাম রে।(নিলা)
:-----আবার যখন ইচ্ছে করবে চলে আসবি।(আপু)
:-----হুমম।(নিলা)

তারপর আপুর বাসা থেকে চলে আসলাম। এখন একটু ভালো লাগছে। আপুকে ছাড়া বাসা টা একদম ফাঁকা লাগে। রাস্তায় রুপু কে পিক করে নিতে বললো রাফি। তাই করলাম। পরে চারজন মিলে। বিকাল পর্যন্ত ঘোরাঘুরি করলাম। প্রায় কিছুদিন পরে ভালো একটা সময় কাটানো হলো।

:-----নিলা পরী।(আমি)
:-----হ্যাঁ বলো।(নিলা)
:-----চলো এখন বাসায় চলে যাই।
:-----এখনই যেতে হবে।আরো কিছুক্ষন থাকলে হয় না।(আহ্লাদি স্বরে বললো নিলা)
:-----হ্যাঁ নিলা আপু কিন্তু একদম ঠিক কথা বলেছে।(রুপু)
:-----আচ্ছা বাবা ঠিক আছে।তোমাদের উপরে কথা বলতে পারবো নাকি।আমাদের ঘাড়ে কয়টা মাথা আছে।(আমি)
:-----একদম ঠিক বলেছিস দোস্ত।(রাফি)
:-----হি হি।(আমি)

আরো কিছুক্ষণ সময় একসাথে কাটানো হলো। এখন সন্ধ্যার আর বেশিক্ষন নেই সূর্যাস্ত প্রায় হয়ে যাবে।

:-----এখন চলো।(আমি)
:-----ধ্যাত সময়টা এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে চলে গেলো।(ন্যাকা কান্না করে নিলা)
:-----সময় ঠিক ভাবেই চলেছে।(আমি)
:-----আচ্ছা চলো।(নিলা)

তারপর আমরা চারজন নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেলাম। আমি ই সবাইকে ড্রপ করে দিয়েছি। বাসায় গিয়ে একটু রেস্ট নিয়ে নিলাম। শুয়ে শুয়ে নিলার কলের অপেক্ষা করতে লাগলাম। একটু পরে নিলার কল।

:-----হ্যালো।(আমি)
:-----ওই তুমি কল করলে না কেনো।(কিছুটা রেগে)
:-----আমি কল করলে তোমার কলের অপেক্ষায় কে থাকতো।
:-----মিথ্যা কথা।তোমার আমাকে কল করতে মনে ছিলো না।(কিছুটা কান্না কান্না ভাব)
:-----আরে পাগলী সত্যি।আমি তোমার কলের অপেক্ষায় ই ছিলাম।
:-----সত্যি তো।
:-----দেখলে না কল দেওয়ার সাথে সাথে ধরে ফেললাম।
:-----হুমম।আজকের মতো ক্ষমা করলাম।
:-----ধন্যবাদ নিলা পরী আমার।
:-----(যেদিনই কল করবো না।ওইদিনই এমন বাচ্চাদের মতো করে)
:-----তা কি করা হচ্ছে নীলের আব্বুর।
:-----এইতো মুহাতের আম্মুর সাথে কথা বলা হচ্ছে।আর মুহাতের আম্মুর কি করা হচ্ছে।
:-----মুহাতের আম্মুর ও নীলের আব্বুর সাথে কথা বলে হচ্ছে।
:-----তাই নাকি।
:-----হ্যাঁ তাই।
:-----কালকে কি কলেজে যাওয়া হবে নাকি।
:-----হ্যাঁ যাওয়া হবে।তোমার যাওয়া হবে নাকি পিচ্চু।
:-----নিলা পরীটা যখন যাবি আমি না গিয়ে পারি।
:-----গুড বয়।এখন ঘুমিয়ে পড়বে।সারাদিনের ক্লান্তি দূর হবে তাহলে।
:-----এখনই ঘুমিয়ে পড়বো নাকি।
:-----হুমম।এখনই ঘুমিয়ে পড়বে।
:-----আচ্ছা।
:-----একদম ফেসবুকে ঢুকে পড়বে না কিন্তু।
:-----আচ্ছা ঠিক আছে।তুমিও ঘুমিয়ে পড়।
:-----ওকে বাই।
:-----ওকে।

তারপর আপুর সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরের দিন সকালে যথারীতি কারো কলে ঘুম ভাঙলো। দেড় মাস পরে..... কালকে আমার আর নিলার বিয়ে। ভাবতেই অবাক লাগে। কাল থেকে নিলা আর আমি অন্য একটা বন্ধনে আবদ্ধ হবো। আজকে হলুদ...সকাল থেকেই অনেক তোড়জোড় চলছে বাসায়। রাফি আর ইভানই সব কাজ সামলাচ্ছে। সবাই বেশ হাসিখুশি। বাসার পরিবেশটা ও খুব সুন্দর। ভালমতো আজকের অনুষ্ঠান টা ও শেষ হয়ে গেলো। রাতে ছাঁদের উপরে আমরা কলেজের সব বন্ধুরা মিলে একটা পার্টি দিলাম।(লাস্ট ব্যাচেলর পার্টি) ইভান,রাফি,রাকিব ভাইয়া সহ্ প্রায় সব বন্ধুরাই ছিলো। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়তে চলে গেলাম। রাফি আর ইভান ও সাথে আছে।

:-----দোস্ত তোর তো লাইফ সেট হয়ে গেলো।(ইভান)
:-----হুমম্ রে দোস্ত।খুব খুশি আমি।(আমি)
:-----ভাবি আর তোকে একদম পারফেক্ট মানিয়েছে ঠিক না ইভান।(রাফি)
:-----ঠিক মানে।দুই'শ পার্সেন্ট ঠিক।(ইভান)
:-----আজ দেখতে খারাপ বলে এভাবে পচাঁবি তোরা।(মজা করে বললাম)
:-----না রে দোস্ত পচাঁবো কেন।আসলেই তোদের জুটি টা একদম পারফেক্ট।(রাফি)
:-----চল এখন বাসায় চলে যাই।(আমি)
:-----ওনার দেখি আর তর সইছে না।(বলেই ওরা দুজন হো হো করে হেসে উঠলো)

আমি মাঝে বোকার মতো দাঁড়িয়ে থাকলাম। বাসায় গিয়ে সকালের নাস্তা করে নিলাম। বাড়ি ভর্তি মানুষ। সকল আত্মীয় স্বজনরা এসেছেন। যাইহোক বিয়েটা ভালো ভাবে সম্পন্ন হয়ে গেলো। এখন নিলাকে নিয়ে বাসায় ফিরছি। এতক্ষণ কান্না করে গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছে। আমার কাঁধে মাথা রেখে। একটু পরে বাসায় চলে আসলাম। পরে বিয়ের কি সব নিয়মকানুন আছে সেগুলো করে আমাদের বাড়িতে বরণ করা হলো। আমি ড্রেস চেঞ্জ করে ছাঁদে চলে গেলাম। আমি,ইভান আর রাফি আড্ডা দিচ্ছি।

:-----দোস্ত আজকে কিন্তু ঘরের সব বিড়াল মারতে হবে।(ইভান)
:-----হ্যাঁ ইভু একদম ঠিক বলেছিস।একটা বিড়াল ও যাতে না বাঁচে।(রাফি)
:-----ওই তোরা কিসের বিড়াল বিড়াল করছিস হ্যাঁ।(আমি)
:-----ওরে কচি খোকা রে।কিছুই বুঝে নাহ।দেখি একটু নাক টা টিপে।দুধ গলে নাকি।(রাফি)
:-----ওই আমার ঘরে এতো বিড়াল কোত্থেকে আসবে।(আমি)
:-----এতো বিড়ালের কথা কে বলেছে।আমরা তো একটা বিড়ালকেই অনেকবার মারতে বলেছি।(বলেই মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে হাঁটতে শুরু করে দিলো)
:-----তোরা আর তোদের বিড়াল।(আমি)
:-----হ্যাঁ।(ইভান)
:-----আচ্ছা ঘরে ঢোকার সময় লাঠি নিয়ে যাবো খুশি এবার।(আমি)
:-----এই বিড়াল লাঠি দিয়ে মারতে পারবা না মামা।(ইভান)
:-----তাহলে কি করবো একটু বলবি তোরা।(আমি)
:-----গেলেই বুঝতে পারবি।(রাফি)
:-----আচ্ছা।(আমি)
এই সময় রাকিব ভাইয়ার আগমন.....

:-----আরে আকাশ এতো রাতে তুমি ছাদে কি করছো।
:-----এইতো একটু আড্ডা দিচ্ছিলাম আর কি।
:-----নিলা তো রোমে একা আছে।
:-----হুমম।
:-----এখনই তোমার রোমে যাও।
:-----এখনই?

তারপর আর কি জোর করে বাসর ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হলো। রোমে এসে দেখি নিলা বড় করে একটা ঘুমটা দিয়ে বসে আছে। ইনোসেন্ট সাজার জন্য একটা লাঠি নিয়ে এসেছি সাথে করে ছোট করে একটা কাশি দিলাম। কাশির শব্দ শোনা মাত্রই নিলা উঠে সোজা আমাকে সালাম করতে শুরু করলো।

:-----আরে আরে কি করছেন।আপনি আমার থেকে বয়সে বড়।(নিলাকে রাগানোর জন্যে কথাটা বললাম)
:-----ওই কি বললি তুই।(অনেকটা রেগে)
:-----হি হি।(আমি)
:-----মজা নেওয়া হচ্ছে।আর এটা কি।(লাঠি টাকে দেখিয়ে)
:-----ইভান আর রাফি বললো যে ঘরে নাকি বিড়াল আছে।সেটাকে মারতে হবে।
:-----ওরে আমার পিচ্চু বর রে।কিছুই বোঝে না।(বলেই হাসতে শুরু করলো)
এই হাসিটা আমার বুকে গুলির গিয়ে লাগে।
:-----চলো ঘুমিয়ে পড়ি।
:-----ঘুমিয়ে পড়বে মানে।
:-----ঘুমিয়ে পড়বো মানে ঘুমিয়ে পড়বো।
:-----না আজ সারারাতে ঘুমানো চলবে নাহ।
:-----তাহলে কিন্তু আজ সারারাত অনেক দুষ্টুমি করবো।
:-----ভালো দুষ্টু হয়ে গেছো তো তুমি।
:-----হি হি।

নিলার কথামতো রাতে একটু ও ঘুমানো হয়নি। আর আমার কথামতো সারারাত দুষ্টুমি করেছি।
সকালের দিকে একটু ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ বুকের উপরে ভারী কিছু অনুভব করলাম। নিলা পরীটা আমার বুকের উপরে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে। অসম্ভব সুন্দর লাগছে। নিলা কে জাগালাম না।
তাই আমি আবারও ঘুমিয়ে পড়লাম।

হঠাৎ মুখে পানির ছিটার অনুভব করলাম। চোখ খুলতেই আমি অবাক। এইমাত্র গোসল শেষ করে বেরিয়েছে। তোয়ালে দিয়ে মাথাটা মুছতে মুছতে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। সেখান থেকেই পানির ফোঁটা আমার মুখে এসেছে। যাইহোক নিলাকে খুব সুন্দর লাগছে। আমি তো লোভ সামলাতে পারলাম না। সোজা গিয়ে নিলাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। হঠাৎ এমন ভাবে জড়িয়ে ধরায় নিলা কিছুটা নড়ে উঠলো। নিলা ভেজা চুলের ঘ্রানের মোহে আকৃষ্ট হয়ে গেছি পুরোপুরি। চুলের মধ্যে নাক ঘষতে ঘষতে নিলার ঘাড়ে একটা চুমু দিলাম।

:-----এই সারারাত দুষ্টুমি করে মন ভরেনি।(কাঁপা কাঁপা কন্ঠে নিলা)
:-----নাহ্।সারাজীবন দুষ্টুমি করলেও মন ভরবে না।(আমি)
:-----হয়েছে এখন ছাড়ো।সবাই ঘুম থেকে উঠে পড়বে।
:-----না ছাড়লে হয় না।
:-----না পাগল।ছাড়ো এখন।ফ্রেশ হতে যাও।
:-----ধ্যাত।

পাঁচ বছর পরে.... আজ আমাদের প্রথম সন্তানের জন্মদিন। হ্যাঁ প্রথম কন্যা সন্তান। রুহি আপুর ও ছেলে বাবু হয়েছে। রামিম নাম। অনার্স শেষ করে আব্বুর ব্যবসা সামলাই এখন। নিলার সাথে খুব সুখে আছি।





............?সমাপ্ত?...........
বিদ্যুৎ রায় চটি গল্প কালেকশন লিমিটেড 
http://biddutroy.family.blog
[+] 1 user Likes Biddut Roy's post
Like Reply
#30
Misti premer golpo, khub undor laglo. Dhonnobad.
[+] 1 user Likes dweepto's post
Like Reply
#31
বৌ সিরিজের এমন মূল ধারার গল্পগুলো পড়তে ভালোই লাগে Smile
Like Reply




Users browsing this thread: 2 Guest(s)