Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব ১৪
★ আমি বাইক নিয়ে বাসার দিকে রওয়ানা দিলাম বাসার গেটের কাছে এসে
ফারিয়াকে বললাম ফারিয়া তারাতাড়ি বাইক থেকে নামো""আপু দেখার আগে?
(ফারিয়া)) আপু দেখলে কি হবে ভাইয়া?
(আমি)ও তুই বুঝবিনা,, শাকচুন্নি আমাকে মেরেই ফেলবে?
★আমি আস্তে আস্তে আমার রুমের দিকে পা বাড়ালাম,, রুমের কাছে গিয়ে দেখি আপু আমার খাটে বসে আছে,, চোখ গুলো ফুলে আছে চেহারায় কমট রাগ?
আমি ভয়ে ভয়ে আস্তে আস্তে আপুর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম,,, দাঁড়াতে দেরী আচমকা আমার দুই গালে
ঠাস,সসসস ঠাস,সসসসস,,,
আমি গালে হাত দিয়ে কেঁদে ফেললাম তুমি আমাকে সব সময় এভাবে মার কেন কথা নাই বার্তা নাই খালি থাপ্পর মারো?
আমি ব্যথা পাই না বুঝি,,, এত জোরে কেউই থাপ্পর মারে?
(আপু) তোর তো সাহস কম না তুই আমাকে দেখিয়ে ফারিয়াকে বাইকের পিছনে বসিয়ে ঘুরতে নিয়ে যাস?
((আপু))★ তাতে তোমার কি তোমার লাগে কেন,,, আমি আমার বাইকের পিছনে যেকোনো মাইয়া কে নিয়ে ঘুরবো,,তাই বলে তুমি আমাকে কথা নাই বার্তা নাই এত জোরে থাপ্পর মারবা (রেগে)???
★আমি রেগে রুম থেকে বাহির হয়ে যাব দরজার কাছে যেতেই আমার শার্টের কলার ধরে ফেলেছে,,,, আমাকে টেনে খাটের কাছে এনে দাঁড় করালো?
(আমি) কি হলো এভাবে আমাকে টেনে ধরেছে কেন? ছাড়ো আমাকে।। তোমার সাথে আমার কোন কথা নেই?
আপু কেঁদে দিল""হায় হায় কাঁদছো কেন আমাকে মারবা আবার নিজেই কাঁদবা???
(আপু) তুই আমাকে কাঁদিয়ে মজা পায হেহ?
(আমি) আমি তোমাকে আবার কখন কাঁদালাম?
(আপু)তা না হলে তুই আমার সাথে এরকম ব্যবহার করছিস কেন???(((কেদে কেঁদে)))
(আমি) কিরকম ব্যবহার করলাম??
(আমি) আমি তোকে নিষেধ করার শর্তে ও তুই আমাকে দেখিয়ে ফারিয়াকে বাইকের পিছনে বসিয়ে চলে গেলি,,, আমি কতবার ফোন দিচ্ছি তুই একটা ফোনও রিসিভ করিস না,,, আমার দিকে তাকাস না,, আমার সাথে কথা বলিস না? আমাকে ইগনোর করে চলছিস? তুই জানিস না তোর সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারিনা,,,, তোর সাথে কাউকে দেখলে আমি সহ্য করতে পারিনা?
((((((হায় হায় রাগের মাথায় ইমোনেশনাল হয়ে সব সত্য কথা বলে ফেলেছে,,, তার মানে শাকচুন্নি আমাকে পছন্দ করে,,, কিন্তু শাকচুন্নি কে তো আমি এত সহজে ছাড়বো না,,, আমাকে কথায় কথায় থাপ্পর মারা,, তার প্রতিশোধ নিয়ে তারপর?)))
(আমি) সব দোষ আমার হ্যাঁ তুমি অন্য ছেলের সাথে দাঁড়িয়ে হেসে হেসে কথা বললে তোমার কোন দোষ নেই??
((আপু)) তুই ভুল বুঝছিস,,ঐ ছেলেটা কে আমি চিনি ঐ না,,, সকাল বেলা আমি ফুল গাছে পানি দিচ্ছিলাম,,, হঠাৎ করে ছেলেটা এসে আমাকে বলল আমি এই বাড়ির কে ,, আমি বললাম এটা আমার নানুর বাড়ি,এর বেশি আর কোন কথা হয় নায়,,,এই দুটা কথা বলার কারণে,, তুই আমার সাথ এরকম ব্যবহার করা শুরু করেছিস,,,আমি জানলে কখনো ঐ ছেলের সাথে কথা বলতাম ???
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে আমি বুঝতে পেরেছি,, আমি সরি।
(আপু)........
(আমি) এখন একটা কথা বলব(((( আবেগ এবং সাহস নিয়ে)))))
(আপু) কি?
(আমি) তুমি কি আমাকে পছন্দ করো?
(আপু) আমি বলতে পারব না((((( লজ্জা পেয়ে))))
(আমি) পছন্দ করলে বলতে পারবে না কেন,, আচ্ছা না বললে নাই পরে কিন্তু আফসোস করবা?
(আপু) কেন??
(আমি) কারণ কালকে কলেজে গেলে একটা মেয়ে আমাকে প্রপোজ করবে,, আমি ভাবছি প্রপোজাল টা একসেপ্ট করে নিব,,((( একটু বানিয়ে মিথ্যা বললাম আর কি)))))
(আপু)কিই ইইইইই. তোর ঘাড়ে আবার কোন শাকচুন্নি চাপবে,, ঐ শাকচুন্নি কে আমি জ্যান্ত মাটি দিয়ে ফেলবো,, আর শালা তুই যদি ভুলেও ওই মাইয়া দিকে তাকাস,, তাহলে তোর চোখ দুটো তুলে শুটকি করে বাজারে বিক্রির জন্য পাঠিয়ে দিব?? ((((হঠাৎ রেগে গেল))))
((((আমার ঘাড়ে আবার কোন শাকচুন্নি চাপবে তুই ঐ তো সবচেয়ে বড় শাকচুন্নি গণ্ডি একটা,, কিভাবে আমাকে ওয়ার্নিং দেয়,, আমার চোখ তুলে ফেলবে??))))
(আমি) কি আমাকে কি বলো এগুলা শালা শালি,,, আমি কি তোমার শালা হয়??
(আপু)তা নাহলে তুই ঐ মাইয়ার কথা বলিস কেন???
(আমি) আসলে ওই মাইয়া টা খুব সুন্দর তো,,, যেন কিউটের ডিব্বা,, আমিও তাকে খুব লাইক করি খুব ভালো লাগে ওকে??
(আপু) বদমাশ ছেলে তুই আমার সামনে ওই মাইয়ার রূপের প্রশংসা করিস,,, আজকে তোকে আমি খাইছি?
(((একথা বলে আমার শার্টের কলার জোরে চেপে ধরেছে))))
(আমি) আরে কি করছো এভাবে কেউ ধরে,, আমি ছোট্ট মানুষ,, আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে তো ?
(আপু) তুই ছোট্ট মানুষ শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে,, হক একবারে মেরে ফেলবো,, আমার সামনে ওই মেয়ের প্রশংসা করিছ?
আমি ছোটার জন্য জোর জবস্তি শুরু করে দিয়েছি,, কিন্তু গুন্ডি মেয়ের শরীরে প্রচুর শক্তি,, আমি কি পারি না কি গুন্ডি বড় আপুর সাথে,,, এক পর্যায়ে আমাকে হাটের উপড়ে ফেলে দিয়েছে,, আমিও কম কিসের আমিও তাকে আমার উপরে ফেলে দিয়েছি??
আপু আমার ওপরে লেপটে আছে,, কি রকম একটা অনুভূতি লাগছে,, নিজের অস্তিত্ব নিজে টের পাচ্ছি না,, কিছুক্ষণের জন্য কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছি?
আপু দুহাতে আমার গলা চেপে ধরে আছে,, আরে এভাবে ধরেছো আমি শ্বাস নিতে পারছি না তো। মারা যাবো তো আমি,,,
(আপু) তোর শ্বাস নিতে হবে না,, তুই বল আর বলবি নাকি ওই মেয়ের কথা,,,
(আমি) বলবো 100 বার বলবো,,,, তুমি জানো ওই মেয়ে কত ভালো,, ঐ মেয়ে আমাকে কখনও মারবে না,, খুব আদর করবে,,, আর তুমি আমাকে কথাই কথাই মারো,,, এখন ঐ মেয়ের কাছে থাকলে কি করতো জানো,,, আমার দুগালে দুটা পাপ্পি দিতো,,,
(আপু) শয়তান ছেলে লুচ্চা ছেলে আর এক মেয়ের পাপ্পি খেতে ভালো লাগে,,,,
(আমি) লাগবে না কেন তুমি তো আমাকে পাপ্পি দাও না শুধু মারো???
(আপু) আচ্ছা ঠিক আছে দিচ্ছি,, কিন্তু ওই মাইয়ার দিকে তাকাতে পারবিনা,, শুধু ওই মাইয়া কেন কোন মাইয়্যার দিকেই তাকাতে পারবিনা???
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে তাকাবো না,, এ কথা বলতে দেরি আপু চোখ বন্ধ করে আমার এক গালে উম্মাহমমমমমমা?
((আমি ঘুরের মধ্যে আছি,, কি বলছি না বলছি কিছু ঐ বুঝতে পারছি না?))))
(আমি) এক গালে কেন তুমি তো আমাকে দু গালে থাপ্পড় দিয়েছো,,
(আপু) আমার কিন্তু লজ্জা করছে?
(আমি) তাহলে এখন আমি ফারিয়ার কাছে চলে যাবো?
আপু আমার আরেক গালে উম্মাহমমমমমমা? আর ফারিয়ার কথা বলবি না কিন্তু তাহলে খেয়ে ফেলবো?
★ আপু আমার উপর থেকে উঠে চলে যাচ্ছে,, আমি তার হাত ধরে ফেললাম??
(আপু) হাত ধরেছিস কেন?
(আমি) আমার পাওনা এখনো বাকি আছে?
(আপু) লুচ্চা ছেলে হাত ছাড় কেউ দেখে ফেলবে,,,
(আমি) দেখলে দেখুক আমার পাওনা দেও আগে?
(আপু) কিসের পাওনা?
(আমি) কালকে রাতে জানি আমাকে দুটা থাপ্পড় দিয়েছো তার বদলে এখন আরও দুটো পাপ্পি দিয়ে যাও?
(আপু) লুচ্চা ছেলে এখন কিন্তু আমার সত্যি সত্যি লজ্জা করছে,,হাত ছাড় বলছি?
(আমি) দিবা না তো আচ্ছা ঠিক আছে যাও গা সমস্যা নাইক্কা,,,
আমি হাত ছেড়ে দিয়েছি অভিমান করে খাটের উপরে বসে আছি,, হঠাৎ করে আচমকা আপু এসে আমার দু গালে দুটা পাপ্পি দিয়ে,, দৌড়ে চলে গেল,,, আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম,,,
আনন্দে আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না,, আপু আমাকে সত্যি সত্যি ভালোবাসে,,, আমার এতদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে,,, বড় আপুর সাথে প্রেম হবে,,, আমি ভাবতেই পারছি না,,তাহলে আপুর সেই পিচ্চি বয়ফ্রেন্ড টা আমি,, যার নামের প্রথম অক্ষর গুলো F A F আমার বন্ধু শামীম ঠিক বলেছে? আমি এখন কি করবো,হাত পা ছেড়ে দিয়ে লম্বা হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লাম,,,
★ কিন্তু শাকচুন্নি আমাকে প্রপোজ করো না কেন,,,, নাকি আমি করব সে আশায় বসে আছে,,, কিন্তু আমি তো শাকচুন্নি কে প্রপোজ করব না,,, শাকচুন্নি উল্টা আমাকে প্রপোজ করতে হবে,,,
• আমি তো আর ভাবতে পারছি,, এখান থেকে গুন্ডি মেয়ে যদি আমাকে একটা থাপ্পর দেয়,, তাহলে তার বদলে একটা পাপ্পি
এই আনন্দের মাঝে বসে থাকলে চলবে না,, আনন্দটাকে উদযাপন করতে হবে,, রুমের ভিতর ফুল সাউন্ড দিয়ে গান লাগিয়ে দিলাম,, তারপর শুরু করলাম মাইকেল জ্যাকসনের ডান্স,,,
হঠাৎ করে মনটা খারাপ হয়ে গেল,,,ইশিতা আপুর আমার বড়,,, আমাদের এই ভালোবাসা কি আমাদের ফ্যামিলি মেনে নিবে,,, লোকে কি বলবে,,,
যে যায়ই বলুক,, লোকের কথায় কিছু যায় আসে না,, ফ্যামিলি মেম্বার মেনে নিলেই চলবে? কিন্তু ফ্যামিলি মেম্বারের সবাই কি মেনে নিবে?
আম্মুকে বুঝিয়ে বললে হয়তো মেনে নিতে পারে,,,
মাগার বাপ লাখের ভিতরে একজন,,, যে রাগি মানুষ হয়তো সেই গাদ্দার হয়ে আমাদের প্রেমে বাধা দিতে পারে,,,
সমস্যা নাইক্কা,, আম্মুকে বুঝিয়ে আব্বুর সাথে কথা দ্বন্দ্ব লাগিয়ে দিব,, তাদের মধ্যে প্রচুর ঝগড়া হবে,, শেষ পর্যন্ত আম্মুরই বিজয় হবে,,, আম্মুর বিজয় মানে, আমার বিজয়ী,, আম্মু আমাকে খুব ভালোবাসে,,, একমাত্র ছেলের কষ্ট সইতে পারেনা?
আমি আবার ও ড্যান্স শুরু করলাম,, হঠাৎ করে রুমে ফারিয়ার আগমন,, আমি গান বন্ধ করে দিলাম,,,,
ফারিয়া) ভাইয়া তোমাকে দেখছি খুব আনন্দে আছো,,,
(আমি)হ্যা আজকে আমি আনন্দে আছি?
(ফারিয়া)তা সে আনন্দের কারণ কি,,,
(আমি)ও তুই বুঝবিনা,,,এখন তুই বল আজ আমার কাছে কি চাস যা চাইবি তাই দিব?
(ফারিয়া) আমার কিচ্ছু চাই না শুধু বিকেল বেলা আমাকে বাইকে করে ঘুরাতে নিয়ে যেতে হবে?
(আমি) এটা কোন একটা চাওয়া হল,, আচ্ছা যা নিয়ে যাব,,,
হঠাৎ করে মনে হল আনন্দের চোটে কি বলে ফেললাম,, ওকে যদি বিকালে বাইকে করে ঘুরতে নিয়ে যায়,,আর আপু যদি দেখে ফেলে তাহলে গুন্ডি মেয়ে আমাকে একবারে মেরেই ফেলবে""না না বাইকে করে ওকে ঘুরতে নেয়া যাবেনা?তা নাহলে আমাকে পাপ্পির বদলে,, থাপড়ায়া গাল দুটো টমেটোর মত লাল করে ফেলবে।
(আমি)ফারিয়া?
(ফারিয়া)হ্যাঁ ভাইয়া?
(আমি)আমার বাইকে একটু সমস্যা,,বাইকে করে ঘুড়তে নিয়ে যেতে পারবোনা?
(ফারিয়া)তাহলে সারা বিকাল হেঁটে হেঁটে ঘুরবো হাঁটার মজাই আলাদা?
(আমি) এইটু গুড গার্লস হাঁটার মজা ও বোঝিস,,এখন যা ভাইয়ার একটু কাজ আছে?
★ফারিয়া চলে গেল আমি আবার ও গান চালো করে ড্যান্স শুরু করলাম, কিছুক্ষণ ডান্স করে তারপর ওয়াশ রুমে চলে গেলাম,,, ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে দুপুরে খাওয়া দাওয়া করলাম,,, আজকে আর বাড়িতে যাব না,,, কালকে সকালে বাড়িতে যাব,,,তাই একটু ঘুমাতে চলে গেলাম?
বিকাল ৪.০০টা কারো ফোনে ঘুম ভাঙলো,, স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড রিয়ার ফোন"" ফোনটা রিসিভ করলাম?
(আমি)হ্যা রিয়া বল?
(রিয়া)তুই কখন আসবি তোর না আজকে বিকালে আসার কথা ?
(আমি)হ্যা আসার কথা ছিল,,, কিন্তু নানুর শরীরের অবস্থা বেশি ভালো না,,তাই আজকে আর আসবনা কালকে সকালে আসবো?
(রিয়া) আচ্ছা ঠিক আছে তোর যখন খুশি তখন আসিস কিন্তু আমার জন্মদিনের আগে আসতে হবে,,
(আমি) আমি যেখানেই থাকি তোর জন্মদিন এর আগে অবশ্যই চলে আসবো তুই কোন চিন্তা করবিনা?
(আমি) রিয়া একটা কথা শোননা?
(রিয়া)হ্যা বল?
(আমি) না মানে আমাকে একজনে খুব ভালোবাসে রে?
রিয়া যেন আকাশ থেকে পড়ল কি বলছিস তুই?
(আমি)হ্যাঁ আমি সত্যি বলছি?
(রিয়া)কে সে?
(আমি)আছে কিন্তু একটা সমস্যা ও আছে?
(রিয়া) কি সমস্যা আর কে সে?
(আমি)না মানে ইয়ে আসলে?
(রিয়া) আমি বুঝতে পেরেছি ইশিতা আপু)
(আমি)হ্যাঁ?
(রিয়া)তুই ও ইশিতা আপুকে ভালবাসিস?
(রিয়া)হ্যা বাসি অনেক ভালবাসি?
(রিয়া)তোকে না আগে জিজ্ঞাসা করেছি ইশিতা আপু সাথে তোর কিছু চলচে নাকি তুই বললি ইশিতা আপু তোর বড়,,তুই তাকে সম্মান করিস,,,,
(আমি)হ্যা বলেছি সম্মান করি,,,আসলে আমি এত দিন বুঝিনি ইশিতা আপু কথায় কথায় থাপ্পড় মারার ভিতরে জানি প্রেম লুকিয়ে ছিল ,,, তার শাসনের ভিতরে প্রেম লুকিয়ে ছিল তা ঐ জানা ছিলনা,, আসলে আমিও কোন সময় কখন তাকে আমার মনের ভিতরে জায়গা দিয়ে ফেলেছি বলতে পারি না,,,, তার ঐ থাপ্পর,, শাসন
কিয়ারন্যান্সিের প্রেমে পড়ে গেছি,,সে ও আমাকে খুব ভালবাসে আমি ও তাকে খুব ভালবাসি,,,, এখন চাইলেও তাকে ভুলতে পারব না"""এটা আমার প্রথম প্রেম। তুই তো জানিস আমি কখনো প্রেম করি নাই, একজন বড় আপুর সাথে প্রেম করবো বলে,,,
এ কথা শোনার পর রিয়া স্টপ হয়ে গেল আর কোন কথা বলছে না আমি মনে করলাম লাইন বুঝি কেটে গেছে,, আমি মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখি লাইন আছে?
(আমি)হ্যালো রিয়া কথা বলিস না কেন?
রিয়া........
(আমি)আরে কি হল,কথা বল?
(রিয়া) কি বলবো,,, আচ্ছা ইশিতা আপু ত তোর বড় তোদের এই ভালবাসা তোদের ফ্যামিলি মেম্বার মেনে নেবে,,, সমাজ কি বলবে?
(আমি) কেন মেনে নিবে না,, ভালোবাসা কখনো ছোট বড় যাচাই করে হয় না,, আর সমাজ কি বলবে সমাজ এর কথা আমি কান দেয়না,, আমি কষ্ট থাকলে সমাজ় এসে আমার কষ্ট ভুলিয়ে দিবে? আর আমার ফ্যামিলি মেম্বারকে বুঝিয়ে বিশেষ করে আম্মুকে বুঝিয়ে বললে অবশ্যই রাজি হবে আম্মু রাজি তো সবাই রাজি,,?
★ রিয়ার আর কোন কথা বলছে না,, আমি বুঝতে পেরেছি রিয়া কান্না করছে?
(আমি) হ্যালো রিয়া কাঁদছিস কেন?
(রিয়া)...........
(আমি) আরে পাগলি কাঁদছিস কেন কোন সমস্যা,, কেউই কিছু বলেছে?
(রিয়া) না কেউই কিছু বলে নাই,, এমনি কাঁদছি?
(আমি) পাগল একটা এমনি কখনো কেউ কাঁদে?
(রিয়া)..............?
(রিয়া)? আচ্ছা একটা কথা বলি?
(আমি) হঠাৎ করে তোর কন্ঠ এরকম হয়ে গেলে কেন। আর একটা কথা বলবি অনুমতি নেওয়ার কি আছে,, কি বলবি বল?
(রিয়া) আচ্ছা তোর আর ইশিতা আপুর যদি বিয়ে হয়ে যায়,, তাহলে কি আমার সাথে আগের মত মিশবি,,, আগের মত আমাকে সময় দিবি,, আগের মত বাইকে করে ঘুরতে নিয়ে যাবি আমাকে ভুলে যাবি,,,,,,?
★ কি বলছিস তুই এগুলা,, তোকে আমি ভুলে যাবো,,, তোকে ভুলে গেলে তো নিজের সাথে বেইমানি করা হবে,, আমার কলেজ ঘন্ডি থেকে শুরু করে আজ ভার্সিটি পর্যন্ত এতটা সময় তোর সাথে আমার পথ চলা,, ,,যে তুই আমার বিপদে আপদে সব সময় ছায়ার মতো পাশে ছিলি,,, আর সেই তুকেই আমি ভুলে যাব বিয়ে করে,,,,, পাগল একটা,, একটা পুরুষ যেমন জীবনে চলতে গেলে একজন জীবনসঙ্গী প্রয়োজন, তার সাথে একজন ভালো বেস্ট ফ্রেন্ড এর প্রয়োজন,,,তুই কি জানিস না বন্ধু ছাড়া লাইফ ইম্পসিবল,,, তুই আমার সেই রকম বন্ধু,, তোকে ছাড়া আমার জীবনটা সম্পূর্ণভাবে পূরণ না পাবে না? আর আমি এমন মেয়েকে বিয়ে করব না,,, যে আমার বন্ধুর সাথে চলতে দেবে না,,,, হোক সে ঈশিতা আপু বা অন্য কেউ,, এখন তোর সাথে আমি যেভাবে চলছি,,, বিয়ের পর ঠিক এভাবেই চলবো?
রিয়া আমার কথা শুনে কাঁদছে,, কি হলো কাঁদছিস কেন,,,
(রিয়া)............?
(আমি) আরে বাবা কি জন্য কাঁদছিস বলবি তো।
(রিয়া)? না তেমন কিছু না, আমার মনে হয় আমার চোখ কিছু একটা পড়েছে,, আমি ওয়াশরুম থেকে একটু পানি দিয়ে আসি,, তোর সাথে পরে কথা বলব,,,
রিয়া ফোনটা কেটে দিল,।
আমি বুঝতে পেরেছি রিয়া কেন কাঁদছে,, ও আমাকে মনে মনে পছন্দ করে,,, কিন্তু আমি কি করবো,, আমি তো সব সময় ওকে বন্ধুর মতোই দেখি,, কখনো বন্ধুর বাহিরে দেখি নাই,,, বা মনের গভীরে নিয়ে ভাবি নাই,,, ভাববো কি করে,,ওতো সব সময় বন্ধু বন্ধুই ছিল,,,,, আসলে সবাইকে নিয়ে ভাবা যায় না,, একবার মন যাকে চয়েজ করে ফেলে,,, শুধু তাকে নিয়েই ভাবতে ইচ্ছে করে,, সবাইকে দেখলে মনের ভিতরে ঘন্টা বাড়ি দেয় না,, কিন্তু এমন একজন অবশ্যই আছে,, যাকে দেখলে মনের ভিতর ঘন্টা বারি দেয়,,, যার ছবি মনের গভীরের এঁকে ফেলেছি,,,,হোক তার সাথে কম দিনের পরিচয়? ইচ্ছে করলে সবাইকে নিয়েই ঘুমের ঘরে স্বপ্ন দেখা যায় না,, যার সাথে আপনার সারাদিন, চলাফেরা,, যার সাথে বহু দিনের পরিচয়,, ইচ্ছে করলে তাকে স্বপ্নে এনে স্বপ্ন দেখতে পারবেন না,,, যাকে আপনার মন চাইবে সে আপনা আপনিই স্বপ্নে চলে আসবে,,,, আসলে ভালোবাসাটা অনুভব করার জিনিস,,, যার সাথে মনের মিল হয়ে যায়, শুধু তার ভালোবাসাটাই অনুভব করা যায়?
ভালোবাসাটা এমন একটা জিনিস হঠাৎ করে চলে আসে,,, আপনার ভার্সিটির সুন্দর একটি মেয়ে,, আপনার বন্ধু সব সময় আপনার পাশে পাশে থাকে,, এবং সে আপনাকে মনে মনে ভালবাসে,,, কিন্তু আপনার মন যদি তাকে না চাই তাহলে আপনি তার ভালোবাসাটা বুঝতে পারবেন না,,, আপনার মনে যাকে ভালো লাগবে আপনি শুধু তার ভালোবাসাটায় বুঝতে পারবেন,।
একটা মানুষ যাকে একবার মনের গভীরে জায়গা দিয়ে ফেলে,,, তার কান্না মাখা মুখ দেখলে নিজের ভিতরে ভুমিকম্প শুরু হয়ে যায়,,, তার একটু ভুবন ভুলানো হাসি দেখলে,,, দুনিয়ার সব কিছু ভুলে যায়,,, তার একটু অবহেলা পেলে বুকের বাম পাশে চিন চিন ব্যাথা শুরু হয়ে যায়,,,, সে একটু অভিমান করলে,, হাজারো উপায় এর মাধ্যমে তার অভিমান ভাঙ্গানো,,,, ব্লা ব্লা ব্লা আর সেটাকেই প্রকৃত ভালোবাসা বলে,,, আর এই ভালোবাসাটা শুধু একজনকে বাসা যাই,,, যার মুখের ভুবা ভালোবাসার কথাগুলো বুঝতে পারি।। বা মন যাকে চাই,,, একতরফা কখনো ভালবাসা হয় না ভালোবাসা পরস্পরের মনের মিল হতে হবে পরস্পরে ভালবাসতে হবে।।। ভালোবাসার বোবা কথা গুলো পরস্পরে চোখের ইশারায় বুঝে নিতে হবে?
আগে বাসায় যেয়ে নেই তারপর রিয়াকে বুঝিয়ে বলব,,,, রিয়া মেয়েটাও একটা পাগলি আমার বন্ধু শামীম ওকে পাগলের মত ভালবাসে টানা চার বছর ধরে ওর পিছনে ঘুরতেছে। কিন্তু পাত্তা দিচ্ছে না"" ওকে কত করে বুঝালাম ও আমার বন্ধু ওর সম্পর্কে আমি সবকিছু জানি খুব ভালো ছেলে রাজি হয়ে যা,, কিন্তু রাজি হয় নাই,
আসলে মেয়েরা সত্যি কারের ভালোবাসা বুঝেনা,,, এবার কিছু একটা করতে হবে রিয়া কষ্টে থাকলে আমার ভালো লাগেনা,,
বন্ধু শামীম কে দিয়ে রিয়ার জন্মদিনের আগে কিছু একটা ব্যবস্থা করে ফেলতে হবে।
আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে ছাদে চলে গেলাম,, আপু এবং ফারিয়াকে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না,, আমি ছাদের এক কোনায় দাঁড়িয়ে প্রকৃতি সৌন্দর্যকে দেখছি,,, নিশ্চুপ বিকালের সূর্যের তেজ কমে দক্ষিণা শীতল হাওয়া বইছে,,, সন্ধ্যা নেমে আসার আগ দিয়ে যার যার বাড়ি ফিরতে ব্যস্ত পাখিরা?
★ নীল আকাশ আড়াল করে ভেসে চলছে সাদা সাদা মেঘ তার ঠিক নিচে ছাদের এক কনারে দাড়িয়ে আমি,, অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা আমাদের এই বাংলা,, নানুর বাড়িতে ছয় বছর পরে এসে,,, আজকের বিকালটা খুব করে উপভোগ করছি,,,আমাদে বাসার ছাদে কখনো বিকালটাকে এভাবে উপভোগ করি নাই,,,, হঠাৎ করে ফোনের রিংটোন টা বেজে উঠলো,,,, স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখে বন্ধু শামীমের ফোন,,, শালা আবার আমাকে স্মরণ করলো? ফোনটা রিসিভ করলাম?
(আমি)হ্যালো?
(বন্ধু) কিরে শালা তুই কই?
(আমি) হারামি আমিতো নানুর বাড়িতে?
(বন্ধু) তুই কখন আসবি,, দুদিন পরে না রিয়ার জন্মদিন?
(আমি)হ্যা আমি জানি কালকে চলে আসব?
(বন্ধু) আচ্ছা শালা শুন রিয়ার জন্মদিনে রিয়াকে আবার প্রপোজ করব,, তুই আমাকে হেল্প করবি?
(আমি) রিয়া তো তোকে পাত্তা দেই না ?
(বন্ধু) শালা তোর জন্য?
(আমি) আমি আবার কি করলাম?
(বন্ধু) রিয়া মনে হয় মনে মনে তোকে পছন্দ করে,, সে জন্য বারবার আমাকে রিফিউজ করে,।
(আমি) শালা একটা লাথি দিবো রিয়া শুধু আমার বন্ধু।
(বন্ধু) তাহলে এবার তুই রিয়াকে যেভাবে হোক রাজি করাতে হবে?
(আমি) অবশ্যই এবার যেভাবে হোক রিয়াকে রাজি করাবো,, কিন্তু বড় ধরনের ট্রিট দিতে হবে?
(বন্ধু) তুই যদি রাজি করাতে পারিস,, শুধু বড় ধরনের ট্রিট না,,, তোর এক মাসে খানার টাকা আমি দিবো?
(আমি) শালা হারামী মিথ্যা বলবি না আমার সাথে আমার ক্রিকেট খেলার 3000 টাকা এখনো পাওনা?
(বন্ধু) তোর টাকা সুদে আসলে সব ফেরত দিয়া দিব,,, তুমি শুধু একবার রাজি করা?
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে করাবো তুই এক কাজ করবি,, রিয়ার জন্মদিনের দিন একজোড়া কাচের নুপুর এনে রিয়াকে প্রোপোজ করবি,,, বাকিটা আমি সামলে নিব।
(বন্ধু) শালা কাচের নুপুর কেন?
(আমি) কাচের নুপুর রিয়া খুব পছন্দ করে, অনেকদিন ধরে আমাকে বলছে একজোড়া কাচের নুপুর এনে দিতে?
(বন্ধু) তাই নাকি সত্যি বলছিস তো শালা?
(আমি)হ্যা আমি সত্যি বলছি?
(বন্ধু) তাহলে এখনই আমি মার্কেটে গিয়ে কাঁচের নপুর কিনে আনবো,,, তুই তাড়াতাড়ি কালকে সকালে চলে আসবি,,, হারামি এবার যদি তুই রাজি করাতে না পারিস শালা তোকে আমি কিরবো আমি নিজে ও জানিনা?
(আমি) শালা এবার যেভাবে হোক রাজি করাব তোর চেয়ে বেশি ইম্পরট্যান্ট আমার?
(বন্ধু) কিরে শালা কি বলছিস তুই,,, আমার চেয়ে ইম্পরট্যান্ট তোর মানে?
(আমি) হারামি তুই বুঝবি না,,, রিয়া মনে হয় আমাকে সত্যি সত্যি মনে মনে ভালবাসত?
(বন্ধু) কি বলছিস তুই কেন?
(আমি) কারণ কিছুক্ষণ আগে রিয়াকে আমি ঈশিতা আপুর কথা বললাম,,, রিয়া শুনে কেঁদে ফোন রেখে দিল???
(আমি) শালা আমি যা ভাবলাম তাই হলো,, তুই আমার প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়াবি,,, তুই আয় তোকে আমি মজা বোঝাবো?
(আমি) আরে শালা আমার কথা শোন?
(বন্ধু) কি কথা?
(আমি) রিয়া হয়তো আমাকে ভালবাসতে পারে কিন্তু আমি রিয়াকে কখনো ভালবাসার চোখে দেখি নাই ,,, ওকে আমি সব সময় বন্ধু ভেবে এসেছি, বন্ধু বেশি কখনো ভাবি নাই,,, আর তোর কথা সত্য ইশিতা আপু আমাকে ভালবাসে?
(বন্ধু) কি ভাবে বুঝলি??
(আমি) ইশিতা আপু আজকে তার কথা এবং ব্যবহারে ইঙ্গিত দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে।
(বন্ধু) আমি বললাম না ঈশিতা আপু তোকে ভালবাসে,,,, এখন তুই ইঙ্গিত মিঙ্গিত বাদ দিয়ে ঈশিতা আপুকে সোজা প্রপোজ কর,,,, তারপর আমার লাইন ক্লিয়ার কর?
(আমি)হ্যা করবো তোর লাইন ক্লিয়ার করব আগে,,, এখন তোকে আমি যেভাবে বলেছি,,, একজোড়া কাচের নুপুর এনে রিয়ার জন্মদিনে ওকে প্রোপোজ করবি?
তার পর বাকিটা আমি দেখে নিবো?
(বন্ধু) শালা দেখাদেখি বাদ দে,, তুই বাসায় এসে সর্বপ্রথম ইশিতা আপুকে প্রপোজ করবি,,, তা না হলে আমার লাইন ক্লিয়ার হবে না,,,,
(আমি) শালা প্রপোজ করার জন্য বাসায় আসবো কেন?
(বন্ধু) তাহলে তুই বাসায় না এসে কিভাবে প্রপোজ করবি,,, তুই প্রপোজ না করলে তো রিয়াকে আমি পাবো না?
(আমি) আপু আমার সাথেই আছে নানুর বাড়িতে?
(বন্ধু) তাহলে এখনি যেয়ে প্রপোজ কর?
(আমি) দোস্ত আমার না ভয় করে,, যদি থাপ্পর মারে?
(বন্ধু) শালা ভয় কিসের রে,,তুই না বললি ইশিতা আপু তোকে ভালবাসে,,,
(আমি)হ্যা ভালবাসে তার পরে ও আমার ভয় করে?
(বন্ধু) শালা তোর ভয়ের গুষ্টি কিলাই,, তুই ঈশিতা আপুর সামনে গিয়ে চোখ বুজে বলে ফেলবি,,,আমি আগ ঐ জানি ইশিতা আপু তোকে ভালবাসে,,, কিচ্ছু করবেনা আপু তোকে"""?
(আমি) হ্যাঁ শালা সত্যি বলছিস তো?
(বন্ধু)হ্যাঁ সত্যি বলছি তুই এখনই গিয়ে প্রপোজ কর?
(আমি) যদি তোর কথা সত্যি হয় তাহলে তোকে একটা উম্মাহমমম,, আর যদি না হয় তাহলে তোকে????? কথাটা বলে শেষ করতে পারলাম না। তার আগেই আমার হাত থেকে কে যেন মোবাইলটা কেড়ে নিয়েছে,,, পিছনে ফিরে দেখি ঈশিতা আপু?
হায় হায় রেগে পর্বতের শেষ চূড়ায় উঠে আছে,,,, এ শাকচুন্নি হঠাৎ করে হঠাৎ করে কোথা থেকে আসলো,,,,, আমি শামীমকে উম্মাহ দিয়েছি এখন তো মনে করবে,,, কলেজের ওই মাইয়া কে দিয়েছি। আজকে তো আমাকে খবর করে ছেড়ে দিবে। আর না হয় ছাদ থেকে ফেলে দিবে। আমি এখন কি করবো। দৌড় দিব,, না দৌড় দিব না দেখি কি করে। সাহস করে দাঁড়িয়ে আছি
হায় হায় এটা কিরলো আমার এত দামি মোবাইল টা আছাড় মেরে ভেঙ্গে ফেলল,,, আমার অনেক কষ্টের টাকায় কিনা পাক্কা গুণে গুণে ১৬০০০হাজার টাকা নিয়েছিল?
মোবাইলটা ভেঙ্গে আবার আমার দিকে আসছে,, তার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি চোখগুলো দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে,, আমার কাছে এসে,, আমার দুগালে ২+২=৪টা থাপ্পর দিয়ে কলার চেপে ধরেছে?
আমি কেঁদে দিলাম তুমি আমাকে মারলে কেন আর আমার এত দামি ফোনটা ভাঙলে কেন?
(আপু) তোর সাহস দেখে আমি আর পারছি না,,, তোকে দুপুরে না করলাম ওই মেয়ের দিকে না তাকানোর জন্য,,ঐ মেয়ের সাথে কথা না বলার জন্য?
তারপরও তুই ঐ মাইয়াকে ফোন দিয়ে পাপ্পি দিচ্ছিস,,,
(আমি) তাই বলে তুমি আমার মোবাইলটা ভেঙ্গে ফেলবে, আমার অনেক কষ্টের টাকায় কিনা,,,
(আপু) শুধু তো মোবাইলটা ভেঙেছি,,,তোকে এখন ছাদ থেকে নিচে ফেলে দিবো?
আমার রাগ উঠে গেলো। ফেলে দিবা ফালাও,,,, কি পেয়েছ তুমি কথায় কথায় থাপ্পড় মারো,,, থাপ্পর মেরেছে সমস্যা নেই কিন্তু আমার মোবাইলটা ভেঙ্গেছো কেন,,, আমার অনেক কষ্টের টাকায় কেনা মোবাইলটা"""
আপু স্টপ হয়ে গেল কোন কিছু বলছে না,,, আমি রেগে আবারো বলতে শুরু করলাম,,, না জেনে না বুঝে সব সময় আমার সাথে রেগে যাও কেন,,, তুমি জানো আমি কার সাথে কথা বলছিলাম,,,,
আমার বন্ধু শামীম এর সাথে কথা বলছিলাম,,,ও আমাকে একটা কাজে হেল্প করেছিল,,, তাই ওকে আমি আনন্দের কারণে,,, একটা উম্মামম দিয়েছিলাম,,,আর তুমি মনে করেছ আমি ঐ মাইয়াকে উম্মাহমমমমা দিয়েছি,,, আমি কোন মাইয়াটা টাইয়া চিনিনা,,, তোমাকে আজকে আমি মিথ্যা বলেছিলাম,,,,,আর না জেনে না বোঝে আমাকে থাপ্পর মারলা আমার মোবাইলটা ভেঙ্গে ফেললা সব সময় আমার সাথে এরকম করো।। কি পেয়েছ তুমি?
তোমার সাথে আমার আর কোন কথা নাই,, আজকের পর থেকে তুমি আমার সাথে আর কোন কথা বলবা না?আর আমি আর এক মুহূর্তেও এখানে থাকবো না এখনই বাসায় চলে যাব,,, আপুর দিকে তাকিয়ে দেখি চোখে পানি টলমল করছে,,,
আমি রাগের কারনে চোখ বুজে সব গুলো কথা বলে ফেললাম,,, রাগ উঠেছে শুধু মোবাইলটা ভাঙ্গার কারণে,,, থাপ্পড়ের কারণে না,,, মোবাইল টার ভিতরে আমার অনেক ইম্পরট্যান্ট জিনিস আছে?
আপু আমার শার্টের কলার ছেড়ে স্থির হয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে,,, আমি রেগে হাটা শুরু করলাম,,, অল্প একটু যেতেই আপু এসে বলতে শুরু করল?
কোথায় যাচ্ছিস শুননা,, আরে আমার কথাটার তো শুন,,, আমি বলছি আমার ভুল হইছে,,, আর কখনো তোর সাথে এরকম করবো না?
আমি থামছিনা আমি সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছি?
(আপু) আমি বুঝতে পেরেছি আমার ভুল হইছে,, প্লিজ তুই যাসনা না,,, আরে দাড়া না আমার কথাটা তো শুন,,,, আমি বলছি তো আমার ভুল হইছে,,,, সেই ভুলের জন্য তুই যা বলবি আমি তাই করবো।এই যে আমি কান ধরছি আর কখনো তোর সাথে এরকম করবো না। তার পরে ও তুই যাসনা?
আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি সত্যিই আপু কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে আর কান্না করছে,,, আমার রাগ আর ধরে রাখতে পারলাম না,,, নিজের কাছেই খারাপ লাগছে,, কতগুলো কথা বলে ফেলেছি,,, এভাবে কাঁদানো উচিত হয় নাই,,, মোবাইল ভেঙ্গেছে তো কি হয়েছে,,, আরেকটা কিনে নিবো?
আমি নিজেকে আর সামলিয়ে রাখতে পারলাম না,, আমি তাড়াতাড়ি আপুর কাছে গেলাম কি করছো তুমি কান ধরেছো কেন,,, কান ছাড়ো,,, আর কান্না করতে হবে না,,,, আমি সরি রাগের মাথায় সব গুলো কথা বলে ফেললাম।।
তুমি মনে করেছো আমি সত্যি সত্যি চলে যাবো,, কক্ষনো না,,, আবেগি হয়ে উঠলাম,, তোমাকে ছেড়ে কখনো যাবনা,, তুমি ভাবলে কি করে তোমাকে ছেড়ে চলে যাব?
আপু নিজেকে আর সামলাতে পারল না,, কেঁদে কেঁদে আমাকে জড়িয়ে ধরল,,, আর বলতে লাগলো,, তুই জানিস না তুই কারো সাথে কথা বললে আমি সহ্য করতে পারিনা,,, তাই আমি মনে করেছি তুই ঐ মাইয়ার সাথে কথা বলছিস,,, এর জন্য আমি রাগের মাথায় এগুলো করেছি,, আমি সরি (( কেঁদে কেঁদে))))
আমিও আপুকে জড়িয়ে ধরেছি,,, কতক্ষণ ধরে জড়িয়ে আছি বলতে পারব না,,, প্রথম জড়িয়ে ধরা,, প্রথম অনুভূতি,, প্রথম জড়িয়ে ধরার ফিলিংস উপভোগ করছি,,, দুজনের কেউই কোন কথা বলছি না,,,
হঠাৎ করে ফারিয়ার কন্ঠ শুনতে পেলাম,,, ফারিয়া সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠছে,,, আমি আপুকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম,,, কিন্তু শাকচুন্নি আমাকে এভাবে ধরেছে যে আমি ছাড়াতে পারছিনা?
আরে কি করছো ছাড়ো ফারিয়া আসছে তো,, দেখলে সর্বনাশ হয়ে যাবে""" ও সবাইকে বলে দিবে।।
(আপু) দেখলে দেখুক,, তুই আমাকে ছাড়বিনা,, বলে দিলাম,,, দুদিন পরে সবাই এমনি জানতে পারবে??
তাই বলে এখনে নানুর বাড়িতে দেখে ফেললে সমস্যা হবে,,, ছাড়ো ফারিয়া চলে এসেছে,,,, আমি অনেক কষ্টে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম,,, তারপর ছাদ থেকে নেমে সোজা রুমে,,,, কিছুক্ষণ পরে আপুর কাছে বলে ফারিয়াকে নিয়ে ঘুরতে গেলাম,,,, কিন্তু আমাকে বারবার সাবধান করে দিয়েছে ফারিয়ার শরীরে যেন একটু টাচ না লাগে,, ফারিয়ার কাছ থেকে যেন পাঁচ হাত দূর দিয়ে হাঁটি।
সারা বিকাল ফারিয়াকে নিয়ে ঘুরে সন্ধ্যায় বাসায় আসলাম,,, বাসায় এসে দেখি আপু নাই,,, আমি কাউকে কিছু বললাম না,,,
রাত ৮. ৩০ আপুকে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না,,, বাসার সারে রুম উঁকিঝুঁকি মারলাম,, কিন্তু কোথাও দেখতে পাচ্ছি না,,, বুকের বাম পাশে দুগ দুগ ব্যাথা অনুভব করছি।
কোথায় গেল শাকচুন্নি,,, কাউকে জিজ্ঞাসা করলাম না রুমে চলে আসলাম।।।
রাত ৯.৩০ টা আমার ভিতর অস্থিরতা বেড়েছে,,, কোথায় গেল আমাকে না বলে,,, কিছুক্ষণ পরে ফারিয়া ডাকতে আসলো আমাকে খেতে সবাই বলে ওয়েট করছে।।
আমি মনে করলাম আপু হইতো আছে,, আমি তাড়াতাড়ি খাবার টেবিলে চলে গেলাম,,, খাবার টেবিলে গিয়ে তো আমি চমকে গেলাম,, খানার টেবিলে সবাই আছে,, কিন্তু আপুকে দেখতে পাচ্ছি না,,, সবার চেহারাই স্বাভাবিক দেখা যাচ্ছে।। কিন্তু আমার আর মানছে না,,, সারা শরীর কাঁপতে লাগলো,,,
কোথায় গিয়েছে মেয়েটা,,, রাত এখন সাড়ে নয়টা বাজে,,, আর সবাই কি স্বাভাবিক দেখছি,,, তার মানে কিছু হয় নাই তো,,,, কিন্তু মনে হচ্ছে বুকের ব্যাথাটা ক্রমেসে বাড়তে লাগলো।।
কখনো তো আমাকে না বলে কোথাও যায় না,,, তাহলে আজকে কোথায় গেল,,, সব চিন্তা মাথার মাঝে এসে ভর করেছে।। আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নানা বাই বলতে শুরু করলো।কি হয়েছে নানা বাই দাড়িয়ে আছো কেনো? আমি বললাম নানা বাই আপু কোথায় গিয়েছে। কিন্তু নানা ভাই কিছু বলছে না।সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে ,,, নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছি না,,,, মনে হচ্ছে আমার পুরো মাথা ঘুরছে,,, এখনই বুঝি পড়ে যাব।
হঠাৎ করে পিছন থেকে মাথায় কে যেন একটা টুন্ডা দিল,,,,, পিছনে ফিরে ব্যাকা চেকা খেয়ে গেলাম,,, গুন্ডি মেয়ে আমার পিছনে দাঁড়িয়ে,,, শাকচুন্নি এতক্ষন কোথায় ছিলো,, আজকের শাকচুন্নি কে মজা দেখাবো,,, আমাকে টেনশনে রাখা।
(((((((((চলবে)))))))))))))
•
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব ১৫
(আপু) এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন।
আমি কোন কথা বললাম না,, এমন ভাব করেছি যে আমি খুব রেগে আছি।।
(আপু)(((( পিচ্চির আবার কি হলো))))))
★ দুজনে খানার টেবিলে গিয়ে বসলাম,,, খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমি আমার রুমে গিয়ে টিভি দেখতে লাগলাম,,, আসলে মোবাইল নাই তো,,, তাই টিভি দেখছি,,, একটা ছেলের সব কিছু থাকলেও কিন্তু মোবাইল না থাকলে,,, সম্পূর্ণভাবে একা,,, মোবাইল ছাড়া সময় যেন এক জায়গায় দাড়িয়ে থাকে;; কিছুক্ষণ পরে আমার রুমে শাকচুন্নির আগমন,মানে আপু আগমন?
আমার পাশে সোফায় বসে বলতে লাগলো কি হয়েছে,,,
আমি কোন জবাব দিচ্ছি না।।।
(আপু) কি হলো কথা বলিস না কেন।
তার পরে আমি কোন জবাব দিচ্ছি না।
(আপু) আরে কি হয়েছে বলবি তো,,আমি কি আবার কোন কিছু করেছি?
(আমি) কি করো নাই সেটা বল,,, এতক্ষণ কোথায় ছিলে তুমি,,, সন্ধ্যা থেকে সারা বাড়ি তন্ন তন্ন করে তোমাকে খুঁজছি কোথাও তোমার দেখা নাই।
(আপু)ও আমি বুঝতে পেরেছি,,, এজন্য আমার সাথে কথা বলিস না,,,, আসলে আমি একটু শপিংমলে গিয়েছিলাম।
(আমি) শপিংমলে গিয়েছো ভালো কথা আমাকে তো একবার বলে যাবা,,, কত টেনশনে ছিলাম আমি জানো,, তোমাকে দেখতে না পেয়ে কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগছিল)))
(আপু)তোকে কি ভাবে বলে যাবো,,,তুই তো ফারিয়াকে নিয়ে ঘুরতে গেলি,,,আর তোর তো মোবাইল ও নাই যে তোকে ফোন করে বলবো"""
আমি আর কিছু বললাম না।
(আপ) তোর জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে,,
(আমি) লাগতো না তোমার কোনো সারপ্রাইজ আমার।।
(আপু) এখনো রেগে আছিস আমার উপর,,, আচ্ছা বাবা আমি সরি আর কখনো তোকে না বলে কোথাও যাবো না,,
এখন চোখটা বন্ধ কর।
(আমি) চোখ বন্ধ করবো কেনো,,
(আপু) আমি বলছি তাই।
(আমি)না আমি চোখ বন্ধ করব না।
(আপু)তুই চোখ বন্ধ করবি না,, আচ্ছা ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি।
(আমি)এই না না তুমি যেও না,, আমি চোখ বন্ধ করছি,,,
আমি চোখ বন্ধ করার পরে আপু আমার কাছে এসে আমার হাতে একটা বক্স দিল।।
আমি চোখ খুলে,,,
(আমি)কি এটা?
(আপু) খুলে দেখ।
আমি খুলে দেখি ওয়াও মোবাইল এত সুন্দর?,,, মোবাইল আনতে গেলে কেন।।
(আপু) এমনি এনেছি,,,তোর পছন্দ হয় নাই,,
(আমি)হুম অনেক পছন্দ হয়েছে,,কিন্তু আমি তোমার মোবাইল নিবো না?
(((( একটু চাপা মারতে হবে,,আমি জানি শাকচুন্নি আমার মোবাইল ভেঙ্গেছে শাকচুন্নি ঐ টাকা দিয়ে কিনে দিবে,,, শাকচুন্নি আমার মোবাইল ভেঙ্গেছে
আমার টাকা দিয়ে মোবাইল কিনবো নাকি,,, পাগল আমি))))))
(আপু)কেন?
(আমি)কারণ আমার ব্যবহারের জিনিস আমার টাকা দিয়ে কিনি, তুমি আমার মোবাইল ভেঙ্গেছো,,,, এজন্য আমাকে দিচ্ছো।
(আপু)আমি রাগে মাথায় তোর মোবাইল ভেঙ্গেছি,,,আবার কিনে দিচ্ছি তাতে সমস্যা কি?
(আমি)না আমার মোবাইল আমি কিনে নিবো,,তোমার মোবাইল নিবো না আমি)
(আপু) পিচ্চি ছেলে এখন কিন্তু বেশি করছিস,,, নিবি না তো তুই আমার মোবাইল।
(আমি)না?
(আপু)তাহলে মোবাইলটা আমার হাতে দে?
(আমি)কেনো তোমার হাতে দিলে কি করবা?
(আপু)তোর মোবাইলটার মত এই মোবাইলটা ও আছার মেরে ভেঙ্গে ফেলবো।।
★শাকচুন্নির কথায় কথায় এত রাগ করে কেনো,,, মেয়ে মানুষের এত রাগ থাকে,,,, শাকচুন্নি কে দিয়ে বিশ্বাস নাই সত্যি সত্যি ভেঙ্গে ফেলতে পারে,,আমি মোবাইলটা তারাতারি পকেটে ভরে ফেললাম।
★তা দেখে আপু হাসতে শুরু করলো,,,আমি আপু দিকে তাকিয়ে সেই হাসি যে মোনালিসাকে ও হার মানাই,,, হাসি থেকে যেন মুক্তার দানা ছড়িয়ে পড়ছে,,,আপু হাসত থাকুক,, আর আমি দেখতে থাকি?
হঠাৎ করে আপু আমার দিকে খেয়াল করল হাসি বন্ধ করে দিয়েছে।
(আপু)এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন,,,
(আমি)তুমি হাসতে থাক না,আমি তোমাকে দেখতে থাকি,,,তোমার হাসি দেখলে দুনিয়ার সব কিছু ভুলে যাই,,, মন চাই সারাক্ষণ তোমার দিকে তাকিয়ে থাকি,, অপরূপ এক মায়াময় হাসি তোমার,,,
(আপু) লুচ্চা ছেলে চুপ কর,,, তোর কোন লজ্জা শরম নাই,,,আমার কিন্তু লজ্জা করছে?
(আমি)আ হা লজ্জা পাওয়ার কি আছে আর একটু হাসো না?
(আপু) এখন কিন্তু তোকে সত্যি সত্যি থাপ্পর দিব,,, শয়তান ছেলে,,,
আমি থাপ্পড় এর ভয়ে আর কিছু বললাম না,,, কিছুক্ষণ পরে আপু বলতে লাগলো।
(আপু)শুন কালকে বাড়িতে যাবো না এর পরের দিন বাড়িতে যাবো?
(আমি)আরে না না কালকে সকালেই বাড়িতে যেতে হবে জরুরী কাজ আছে।।
(আপু)তো কিসের জরুরী কাজ,,তোর তো কলেজ ছাড়া আর কোন কাজ নাই?
(আমি)আরে দুদিন পরে রিয়ার জন্মদিন,,
ওর জন্মদিনে যদি না থাকি তাহলে রিয়া অনেক কষ্ট পাবে,,,তা ছাড়া আর ৫ দিন পরে তোমার জন্মদিন,,, খামাখা কেনো আরো এক দিন এখানে থাকবো?
★ আমি আপু দিকে তাকিয়ে দেখি রিয়ার কথা শুনে মুখ কালো করে ফেলেছে?
(আমি)কি হল হঠাৎ করে মুখ কালো হয়ে গেল কেন?
(আপু)এমনি?
আমি বুঝতে পেরেছি রিয়ার কথা শুনে মুখ কালো করে ফেলেছে?
(আমি)শুনো রিয়া আমার বেস্ট ফ্রেন্ড,, ছোট থেকে রিয়া আর আমি এক সাথে বড় হয়েছি,, খেলাধুলা ফাইজলামি আড্ডাবাজি কলেজ কলেজ ভার্সিটি সবই ওর সাথে করেছি,,, ওর প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে ওকে আমি সাহায্য করেছি,,,,,, ও আমার প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে আমাকে সাহায্য করেছে,,, ওকে আমি সব সময় বন্ধু বন্ধু ঐ ভাবি,, বন্ধুর বাহিরে কখনো ভাবিনি,,, ও জাস্ট আমার বন্ধু এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমার বন্ধু হয়ে থাকবে ছোট কালের বন্ধুকে কখনো ভুলা যায়না,,,তুমি আমাদের এই বন্ধুত্বকে অন্য চোখে দেখো না,, আমরা বন্ধু আছি বন্ধু ওই থাকবো,, বিশ্বাস রাখো আমার ওপর।
(আপু) আমি কি তোকে কিছু বলেছি।
(আমি) তাহলে হঠাৎ করে মুখ কালো করে ফেলেছো কেন,, তুমি জানো তুমি মুখ কালো করলে কতটা বিশ্রী লাগে। এখন একটু হাসো।।।
(আপু) হাসতে পারবো না।
(আমি)কেনো,,, তুমি জানো তুমি হাসলে
তোমাকে কতটা সুন্দর লাগে,,, তুমি যখন হাসো তোমার বাম গালে যখন টোল পড়ে আমার তখন কি করতে মনে চায় জানো,,, লবণ মরিচ এনে তোমার গালের টোল পড়া জায়গায় রেখে বড়ই খেতে,,,হিহিহিহি?
(আপু) বদমাশ ছেলে কি বললি তুই,, আজকে তোরে আমি খাইছি,, আমার গালে লবন মরিচ রেখে তুই বড়ই খাবি,,,
((আমার কলার জোরে চেপে ধরেছে??)))
((আমি))আরে কি করছ ছাড়ো আমাকে এভাবে ধরেছো কেন,,,,
(আপু) না ছাড়বো না আজকা তোকে মেরেই ফেলবো?
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে আর কখনো এরকম বলবো না,সরি সরি,,,
আসলে তুমি
হাসলে পৃথিবীর সবচেয়ে মায়াময় সুন্দরী লাগে,,, তুমি যখন হাসো তোমার গালে যখন টুল পড়ে,,তখন যদি স্বর্গের কোনো অপ্সরী দেখে তাহলে নিশ্চিত লজ্জায় পড়ে যাবে,, কারণ তোমার হাসির সৌন্দর্য কাছে স্বর্গের অপ্সরী কেও হার মানাতে হবে,,,,তুমি যখন হাসো তোমার ঠোঁট দুটো একটু বাঁকা হয় তখন তোমার গোলাপী ঠোটের নিচের তিলটা তোমার হাসির উজ্জ্বলতা আরো কয়েকশো গুনে বাড়িয়ে দেই?
(আপু) লুচ্চা ছেলে তুই এখনি আমার সাথে ফাইজলামি করবি,,, আবার এখনি আমাকে লজ্জায় ফেলে দিবি,,, তুই যা এখন এখান থেকে,,
(আমি) আমি যাব কেন এ রুমে তো আমি থাকি,,,
ও তাই তো আপু লজ্জা পেয়ে দৌড়ে চলে গেলে।
আমি খাটে বসে পকেট থেকে তাড়াতাড়ি মোবাইলটা বের করলাম,, শাকচুন্নি কি মোবাইল এনেছে,, বাহ খুব সুন্দর মোবাইল তো,,, স্যামসাং নোট,, শাকচুন্নি কত টাকা দিয়ে এনেছে এটা,, শাকচুন্নির পছন্দ আছে বলতে হবে।। ভালো হইছে আমার মোবাইলটা ভেঙ্গেছে,,, এখন নতুন মোবাইল পেয়েছি,,, মোবাইলটা অন করে দেখি,, হায় হায় প্রজেক্টর মোবাইল,,, সিনামার পর্দার মতো দেওয়ালে গান দেখা যায়,,, শাকচুন্নি এটা কত টাকা দিয়ে এনেছে,,,মনে হয় ১৮ ১৯ হাজার টাকার মত হবে,,, শাকচুন্নি এত টাকা কোথায় পেয়েছে,,, আমি আস্তা মারা একটা গাধা ,,, শাকচুন্নির বাপের টাকা অভাব আছে নাকি,, একমাত্র কোটিপতি বাবার মেয়ে,,
কোনমতে যদি আমার বউ হয়ে যায়,,, তাহলে রাজ্য সহ রানী আমার,,, এখন তো শুধু মোবাইল দিয়েছে,,, দুদিন পরে বলব শাকচুন্নি কে বাইক দিতে,,, আমার বাইক টা পুরান হয়ে গিয়েছে,, পালসার বাইক আর ভালো লাগে না,,, আরোওয়ান ফাইভ নিবো নতুন মডেলের,,, শাকচুন্নি কে তার আগেই হাতের মুঠোয় আনতে হবে। শাকচুন্নি তো আমার সাথে আঠার মত লেগে আছে, তার হাবভাবে বুঝতে পেরেছি আমাকে অসম্ভব ভালোবাসে,, প্রথম প্রেম মেয়েরা কখনো ভুলতে পারে না,, শাকচুন্নি যদি আমাকে ভালবেসে থাকে,,,তাহলে আমাকে ভুলতে পারবে না,,, আমারও প্রথম প্রেম,, তাতে সমস্যা নাই,,,, গুন্ডি বড় আপুর,,, নরম দিল টাই আঘাত দিয়েই সব নিয়ে নিবো,,, ?
সিমে ৫ টাকা আছে,, ডাটা ও চালু করতে পারবো না? কারো সাথে চ্যাটও করতে পারবো না,,,, নতুন মোবাইল একটু ঘাটাঘাটি করে,,, তারপর বালিশের নিচে রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম,,,, কিন্তু শালার অর্ধেক রাত জাগা চোখ,,,, এত সকালে ঘুম আসবে না,,,, কিছুক্ষন এপাশ ওপাশ করলাম,,,, মোটেও ঘুম আসছে না,,, শুধু শুধু শুয়ে থাকা আর পিটটাকে অযথা বিছানায় মরানো কোন মানে হয় না।
উঠে একটা কফি এনে টিভি চালু করে টিভি দেখতে লাগলাম,,,, ইন্ডিয়ান একটা চ্যালেনে ইমরান হাশমি ছবি চলতেছে,,, ইমরান হাশমি একটু রোমান্টিক বেশি,,, নায়িকা কে কথায় কথায় কিস করে,,,, এসব ফিলিম দেখতে আমার কাছে বেস্ট ইন্টারেস্টিং লাগে।
★ ফিলিম দেখতে দেখতে রাত বারোটা বেজে গেল,,, বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম,, কিন্তু শালার ঘুম মনে হয় আজকে কোথাও হারিয়ে গিয়েছে,,, কি করা যায় শাকচুন্নি কে ফোন দিয়ে এনে গল্প করা যায়,,,, শাকচুন্নি কি ঘুমিয়ে গিয়েছে,,,,
মোবাইলটা এনে শাকচুন্নি কে ফোন দিলাম,,,হায় হায় শাকচুন্নির ফোন ওয়েটিংয়ে,,,, শাকচুন্নি তো রাত 11 টার পরেই ঘুমিয়ে যাই,,, আজকে কার সাথে কথা বলছে,,,, হয়তো কোন বন্ধু বান্ধব ফোন দিয়েছে,,,, আরো 10 মিনিট অপেক্ষা করলাম,,, আবার ফোন দিলাম,,, হায় হায় এবার ওয়েটিংয়ে,,,, মনের ছোট্ট হৃদপিণ্ডটা চিৎ করে উঠলো।। গুন্ডি শাকচুন্নি মেয়েকে কারো সাথে প্রেম করে নাকি,, তানাহলে হলে এতক্ষন কার সাথে কথা বলে,,, আরও 10-15 মিনিট অপেক্ষা করলাম,,, আবার ফোন দিলাম,,,, এবার ওয়েটিং এ,,,,, বুকের বাম পাশটা চিন চিন ব্যাথা শুরু করেছে,,,, শাকচুন্নি তাহলে আমার সাথে মিছা মিছা এগুলা করে।।।
রেগে আস্তে আস্তে গেলাম শাকচুন্নির রুমে,,, জানালার পাশে দাঁড়িয়ে জালানার পর্দাটা অল্প সরিয়েছি,,, শাকচুন্নি একটা বালিশ মাথার নিচে দিয়ে,,, আর একটা বালিশ জড়িয়ে ধরে কার সাথে জানি কথা বলছে,,,,,
তাহলে সত্যি সত্যি শাকচুন্নি অন্য কোন ছেলের সাথে প্রেম করে,,, তাহলে আমার সাথে এগুলো করে কেন,,,, নাকি ছোট ভাই হিসাবে আমার সাথে এরকম ব্যবহার করে? আমার তো মনে হয় না,,,,, শাকচুন্নির হাব ভাবে বুঝি সে আমাকে অসম্ভব ভালোবাসে।।। মাথার মধ্যে রাগ উঠে গেলো মন চাচ্ছে দরজাটা মেলে শাকচুন্নির গালে 10-12 তার থাপ্পড় দেয়,,, তারপর শাকচুন্নির মোবাইলটা আছাড় মেরে ভেঙ্গে ফেলি।।। কিন্তু আমার তো শাকচুন্নির মত সাহস নাই।।।
কি করবো আমি,,,, দিশেহারা হয়ে গেছি,,, রাগে সারা শরীর জ্বলতেছে,,,, শাকচুন্নি আমার সাথে মিছা মিছা অভিনয় করল।
চলে আসলাম রুমে কিন্তু দু চোখের পাতা এক করতে পারছি না,,,, নিদ্রাহীন রজনী কেটে গেল,,,, ভোরের সিক্ত সকাল শুরু হতে শুরু করল,,,,, তখন আমার দু চোখে তন্দ্রা এসে জমা হয়েছে,,,, ঘুমিয়ে পড়লাম সবকিছু ভুলে,,,,
সকাল ৯.৩০ আপু ডাকাডাকিতে ঘুম ভাঙলো,,,, আর কত ঘুমাবি বেলা কয়টা বাজে জানিস,,,, বাড়িতে যাবি কখন,,,, তাড়াতাড়ি ওঠ?
আমি উঠে বসলাম,,,, আপুকে দেখতে মানে শাকচুন্নি কে দেখতে সকাল সকাল খুব মায়াবী লাগছে,,,, হঠাৎ করে রাতের কথা মনে হয়ে গেল,,,, স্টপ হয়ে গেলাম আমি,,,, শাকচুন্নির সাথে কোন কথা না বলে,,, সোজা ওয়াশ রুমে চলে গেলাম,,,,
শাকচুন্নি আমার দিকে তাকিয়ে ব্যাকা ছ্যাকা খেয়ে গেল।
ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে দেখি শাকচুন্নি রুমে বসে আছে,,, আমি আর কোন কথা বললাম না,,,, তাকে এড়িয়ে সোজা খানা টেবিলে চলে আসলাম।
খানার টেবিলেও কোন কথা বললাম না?
আপু অবাক দৃষ্টি নিয়ে খাবার টেবিলে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল,,, আমি তার দিকে তাকাই নি,,,,
কিছুক্ষণ পরে কাপড় চোপড় পড়ে রেডি হয়ে,,,, সবার কাছ থেকে বিদায় নিলাম,,, শাকচুন্নি মানে আপুও রেডি হয়ে সবার কাছ থেকে বিদায় নিল,,, সবাই এগিয়ে দেওয়ার জন্য বাসার গেয়েট পর্যন্ত এলো?
আপু এসে আমার বাইকের পেছনে বসবে,,, আমি বাধা দিলাম,,, তুমি আমার বাইক দিয়ে যেতে পারবে না।
(আপু) কি বলছিস তুই?
(আমি)হ্যা সত্যি বলছি?
(আপু)এই পিচ্চি ছেলে আমি আবার কি করেছি,, আমার সাথে সকাল থেকে একটা কথাও বলিস নি?
(আমি) তুমি কিছু করোনি,, আমি যা বলছি তাই,,, তুমি আমার বাইক দিয়ে যেতে পারবে না,,,, বাস বা ট্যাক্সিয়ে তুমি চলে যাও।।।
(আপু) এই বদমাইশ ছেলে আমি এমন কী করেছি যে তোর বাইক দিয়ে যেতে পারবো না,,,
(আমি) আমি বললাম না তুমি কিছু করোনি,,, আমি তোমাকে নিয়েই যেতে পারবো না ব্যাস,,, তুমি অন্য কিছু দিয়ে চলে যাও।
(আপু) এই পোসকা ছেলে আমার কিন্তু এখন রাগ উঠে যাচ্ছে,,,, সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে,,,, তুই এমন করছিস কেন।
(আমি) আমার সাথে রাগ দেখাও কেন,,, রাতে যার সাথে কথা বলছো? তাকে বল এসে নিয়ে যেতে।
(আপু) আমি রাতে কার সাথে কথা বললাম।
(আমি) কেন তুমি জানো না,,, রাত বারোটার সময় কার সাথে মোবাইলের কচুর কচুর ফুসুর ফুসুর কর,,,,, তুমি মনে করেছো আমি জানিনা,,,, আমি রাতে তোমাকে কয়েকবার ফোন দিয়েছি,,, তোমার ফোন ওয়েটিং এ,,,, তারপর গেলাম তোমার রুমের জানালায়,,, দেখি তুমি শুয়ে শুয়ে কথা বলছো?
(আপু) বদমাশ ছেলে তুই জানিস আমি কার সাথে কথা বলছিলাম?
(আমি) আমি জানি তো কার সাথে কথা বলছিলা,,,,, এর জন্যই তো বললাম তার সাথে যেতে।
(আপু) লুচ্চা ছেলে আমার কিন্তু এখন পুরোপুরি রাগ উঠে গিয়েছে,,,, তোকে এখন কইটা থাপ্পর দিতাম আমার জানা ছিল না। কিন্তু অনেক কষ্টে রাগ কে কন্ট্রোল করে আছি এখানে সবাই দাঁড়িয়ে আছে বলে?
(আমি) আমার সাথে তো রাগ দেখাবাই,,,, তোমার রাগকে আমি আর ভয় পাইনা।
(আপু)আমি কিন্তু এখন সত্যি সত্যি রাগ কন্ট্রোল করতে পারছি না,, কুত্তা বান্দর বিলাই হনুমান,,, লাল বান্দর লাল কুত্তা,,, তুই জানিস আমি তার সাথে কথা বলছিলাম,,,আমি আব্বুর সাথে কথা বলছিলাম,, অনেকদিন পরে আব্বু ফোন দিয়েছে,,,, তাই প্রায় এক ঘন্টার মতো কথা বললাম,,,, আব্বু বলেছে,,,, তাকে সরকারিভাবে ৬ মাসের ছুটি দিচ্ছে,,,তাই আমার জন্মদিনের আগে দেশে আসবে,,,,,আর তোকে ছারা মোবাইলে কখনো কোন ছেলের সাথে এক মিনিটের জন্য ও কথা বলিনি।
(আমি) সত্যি বলছো তুমি।
(আপু)তোর সত্যির গুষ্টি কিলাই?
(আমি) আরে রেগে যাচ্ছ কেন,,, উঠো তাড়াতাড়ি উঠ,,,সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে?
আপু রাগে কটর মটর করতে করতে আমার বাইকের পিছনে উঠে বলতে শুরু করল,,,,চালা সামনে যেয়ে নেই,,,তার পর তোকে আজকে আমি দেখবো থাপ্পর কাহাকে বলে,,,, কত প্রকার,, এবং কি কি।
আমি থাপ্পড় এর ভয়ে আর কোন কথা বলছি না,,,, আমি বুঝতে পেরেছি আমার বড় ধরনের ভুল হয়েছে,,,,আপু তাহল রাতে তার আব্বুর সাথে কথা বলছিল।
আর আমি খামাকা সারারাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিলাম,,,,
এখন সামনে গেলে আমাকে কি করে কে জানে,,,, কিন্তু শাকচুন্নিকে আমাকে থাপ্পর দেওয়ার সুযোগ দেওয়া যাবে না,,,, আমি গাড়ি হাই স্পিডে টানতে হবে,,, তাহলে আপু আমাকে থাপ্পর দেওয়ার চান্স পাবে না,,,, উল্ট আমাকে জড়িয়ে ধরবে।
আমি বাইক হাই স্পিডে টানতে শুরু করলাম,,, আপু দু হাতে আমাকে অল্প জড়িয়ে ধরে আছে।।
আধাঘন্টা বাইক চলার পর হঠাৎ করে আপু বলল,,, এই বাইক থামা?
(আমি) বাইক থামিয়ে কি করবে।
(আপু) আমি বলছি তোকে থামাতে,,, তুই বাইক থামা।
আমি বুঝতে পেরেছি ”"শাকচুন্নি কি জন্য বলছে আমাকে বাইক থামানোর জন্য।
হয়তো আমাকে থাপ্পর দেওয়ার ইচ্ছা হইছে,,,, আমি বাইক থামালাম,,, ভয়ে হাত পা কাপতেছে,,,, রাক্ষসী- ডাইনি মেয়ে যে জোরে থাপ্পর মারে,,, আমি চোখ বন্ধ করে গালে হাত দিয়ে বাইকে বসে আছি,,,,
5 মিনিট হয়ে গেল আমার চোখ বন্ধু,,,, আপুর কোন রেসপন্স পাচ্ছিনা,,, চোখ খুলে তাকালাম,,, আপুকে কোথাও দেখতে পাচ্ছি না,,,, শাকচুন্নি আবার গেলে কোথায়,,, এই শাকচুন্নি কে নিয়ে তো মহা টেনশনে আছি,,, শাকচুন্নি আমাকে থাপ্পড় না দিয়ে কোথায় চলে গেল,,,
আমি বাইক থেকে নেমে খুঁজতে যাবো,,,
তখন দেখি আপু একটা?
(((((((((চলবে))))))))))
•
Posts: 342
Threads: 1
Likes Received: 218 in 145 posts
Likes Given: 199
Joined: Jul 2019
Reputation:
11
গল্পটি সত্যি খুব সুন্দর , আমার ছেলেবেলার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে , আমার চেয়ে ৪ বছরের বড় খালাতো বোন এর উপর বিশাল ক্রাশ ছিলো আমার । অবশ্য এই গল্পের নায়ক এর মতো ভাগ্যবান না আমি ।
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
(10-01-2020, 02:44 PM)gang_bang Wrote: গল্পটি সত্যি খুব সুন্দর , আমার ছেলেবেলার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে , আমার চেয়ে ৪ বছরের বড় খালাতো বোন এর উপর বিশাল ক্রাশ ছিলো আমার । অবশ্য এই গল্পের নায়ক এর মতো ভাগ্যবান না আমি ।
সো সেড। আপনাকে সমবেদনা জানানোর ভাষা আমার কাছে নাই। কারণ এই ব্যথায় আমিও আছি। তবে সে আমার ১বছরের বড় মামাতো বোন ছিল।
•
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব ১৬
আমি বাইক থেকে নেমে খুঁজতে যাবো,,,
তখন দেখি আপু একটা ফুলের দোকান থেকে কি যেন কিনছে?
৫ মিনিট পরে আপু দুটো হাত পিছনে নিয়ে আমার সামনে এসে দাড়ালো,,,, আমাকে বলল,, বাইক থেকে নেমে আমার সামনে স্টেট হয়ে দাড়া,,, আমি আপুর কথা মত তার সামনে এসে সোজা হয়ে দাঁড়ালাম,,,,
হঠাৎ করে আপু হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়ল,,,তার দুটো হাত পিছন থেকে সামনে আনলো,,, দেখি হাতের ভিতর ৪ ৫ টা লাল গোলাপ,,,
আপু ফুল গুলোর সামনে এনে বলতে শুরু করল,,,,, এই পিচ্চি লাল বান্দর,,, তোকে আমার মনের গভীরে জায়গা দিয়ে ফেলেছি অনেক আগে,,,, আমার প্রতিটি দিনের সিক্ত সকাল শুরু হয় তোকে ভেবে,,,, আমার প্রতিটি রজনীর শেষ হয় তোকে ভেবে,,,,, আমি জানি তুই আমার ছোট,,, কিন্তু কি করবো বল,,,, আমার এই অবুঝ মন যে মানে না,,,, অনেক চেষ্টা করেছি মন কে ফিরিয়ে আনতে,,, কিন্তু পারিনা,,, তোকে না দেখলে কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগে,,,,,, তোর সাথে কথা বলতে না পারলে,,,, কেমন জানি বুকের ভিতর একটা চিনচিন ব্যাথা শুরু হয়।।। তোর সাথে কাউকে দেখলে আমি সহ্য করতে পারিনা,,,,, তুই কি আমাকে ভালবাসবি,,, তোর ছোট্ট দুটি হাত ধরে বাকিটা জীবন চলার অধিকার দিবি"''' তোর বুকে মাথা রেখে ভরা চাঁদের জোসনা দেখার অধিকার দিবে। তোর সকাল বেলার ঘুম ভাঙ্গানোর কোকিল করবি""" তোর অগোছালো জীবনটাকে গোছানোর অধিকার দিবি"""" বৃষ্টি রাতে তোর হাত দুটি ধরে নিঝুম বৃষ্টিতে ভিজার অধিকার দিবি,,, মধ্য রাতে তোর ঘুম ভাঙ্গিয়ে বলবো গল্প করার জন্য সে অধিকারটুকু দিবি।। শেষ বিকালে বারান্দায় দাঁড়িয়ে এক কাপে দুজনে কফি খাওয়ার অধিকার দিবে,,,, মাঝে মাঝে রাগ উঠে গেলে তোকে অনেক ঝাড়ি দিব সে ঝাড়ি উপেক্ষা না করে আমাকে কি আদর করে বুকে টেনে নিবি,,,
তোর সুখ দুঃখ কষ্ট গুলো ভাগ করে নেওয়ার অধিকার টুকু দিবে,,,, কথা দিচ্ছি জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তোর সাথে থাকবো,,,,
((((শাকচুন্নি থাপ্পড়ের কথা বলিস না কেন,,, তুই তো আমাকে থাপ্পড় না দিলে তোর ভাত হজম হয় না,,, তোকে ভালবাসলে তো গালের মধ্যে আলগা তোলা লাগাতে হবে??))))))
আপু একনাগাড়ে কথাগুলো বলতেছে? আর আমি হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছি,,, ভরা রাস্তার মানুষ আমাদের দিকে অবাক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে,,, হয়তো এক ঘটনা বিরল,,,, আমি ভাবতেও পারিনি,,, আপু মাঝ রাস্তায় এতো মানুষের সামনে হাটুগেড়ে বসে আমাকে প্রপোজ করবে?
সারা জীবন শুনেছি বা দেখেছি ছেলেরা মেয়েদেরকে প্রপোজ করে আজ জীবনের প্রথম দেখলাম,,,, কোন এক সুন্দরী রূপসী মেয়ে,, মানুষ ভরা রাস্তায় তার চেয়ে বয়সে ছোট কোনো ছেলেকে প্রপোজ করছে। এখন এখানে যদি কোন সাংবাদিক বা মিডিয়ার লোক থাকতো তাহলে আমি নিশ্চিত গ্রিনিজবুকে অপুর নাম উঠে যেত।
(আপু) কি হল কথা বলিস না কেন?
(আমি) কি বলবো?
(আপু) কি বলবো মানে আমি আধা ঘন্টা ধরে ভরা রাস্তা মানুষের মধ্যে তোকে প্রোপজ করছি,,,,আর তুই বলছিস কি করবো?
(আমি) এখনো ভালবাসি বলো নাই তো।
(আপু) লুচ্চা ছেলে আমি মেয়ে হয়ে প্রপোজ করছি দেখে ভাব মারছিস।
(আমি) ভাব মারবো কেন তুমি তো এখনও আমাকে বল নাই ভালোবাসি?
(আপু) আচ্ছা ঠিক আছে বলছি,, I love you পিচ্চি I love you so much লাল বান্দর?
(আমি) এটা কোন প্রপোজ হলো।
(আপু) বদমাশ ছেলে আর কিভাবে বলব?
(আমি) তুমি বান্দর বল কেন,,,,, ভালো ভাবে প্রপোজ কর।
(আপু) তোর প্রপোজ এর নিকুচি করি,,, করব না তোকে প্রপোজ?
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে আমি যাই?
(আপু) যাবি মানে আধাঘণ্টা ধরে তোকে প্রপোজ করছি,,, তোকে এত সহজে যেতে দিব?
(আমি) তাহলে ভালো ভাবে প্রপোজ কর?
(আপু) আচ্ছা ঠিক আছে করছি,,, I Love You,I Love You So Much পিচ্চি?
(আমি) ইংরেজিতে বল কেন বাংলায় বলো?
(আপু) তোকে কিন্তু খেয়ে ফেলবো এখন আমি?
(আমি) পরে খেয়েও আগে প্রপোজ কর?
(আপু) আমি তোকে ভালোবাসি? অনেক বেশি ভালোবাসি?
আমি আপুর হাত থেকে ফুলগুলো নিলাম,,
(আপু) কি হলো ফুলগুলো নিয়ে দাঁড়িয়ে আছিস কেন,,, আমাকে জড়িয়ে ধর।
(আমি) আরে আমার লজ্জা করছে তো,, সবাই আমাদের দেখছে?
(আপু) কুত্তা তোর কিসের লজ্জা' দুই পুরুষ মানুষ,,, আমার লজ্জা করছে তাড়াতাড়ি জড়িয়ে ধর শয়তান,,,,
আমি জড়িয়ে ধরবো কি আপু ঐ আমার বুকে মুখ লুকালো?
(আপু) তুই আমাকে কখনো কষ্ট দিবি না তো?
আমি) কষ্ট দেবো কেন,,, আমিও যে তোমাকে খুব ভালবেসে ফেলেছি?
(আপু)তাহলে আর মেয়ের দিকে তাকাতে পারবিনা ইটিশ পিটিশ করতে পারবি না?
(আমি) আচ্ছা কোন মেয়ের দিকে তাকাবো না ইটিশ পিটিশ করবো না? এখন একটা কথা বলবো।
(আপু)কি?
(আমি) তুমি যে বলেছিলে তোমার পিচ্চি বয়ফ্রেন্ডের নামের প্রথম অক্ষর গুলো F A F অক্ষর গুলো কি আমার নামের?
(আপু) বুদ্ধ তোর না হলে কার,,, যেদিন তোর নামের প্রথম অক্ষর গুলো বলেছিলাম,,, সেদিন ওই তোকে বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সাহস হয়নি।
(আমি)কেন?
(আপু) তুই যদি আমাকে ফিরিয়ে দিস? তাহলে আমি সহ্য করতে পারবো না?
(আমি) তাহলে এখন কিভাবে সাহস করে বললে?
(আপু) কারণ এতে দিনে আমিও জেনেছি তুই ও আমাকে ভালবাসিস,,, তাই আর অপেক্ষা না করে সাহস করে বলে
ফেললাম,,,, আমি মেয়ে হয়ে প্রপোজ করেছি সেজন্য ভাব নিস না?
(আমি) পাগল ভাব নিব কেন,,, তুমি প্রপোস না করলে আমি ওই তোমাকে প্রপোজ করতাম?
(আপু) কখন করতি?
(আমি) তোমার জন্মদিনে?
(আপু) আমি এতদিন অপেক্ষা করতে পারতাম না,,, তাই আজকে ঐ বলে ফেলেছি""" এখন কথা না বলে শক্ত করে জড়িয়ে ধর?
আমি আপুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম,,, হায় হায় রাস্তার সব লোক আমাদের ভিডিও করতেছে?
(আমি) এই ছাড়ো?
(আপু) ছাড়বো কেন?
(আমি) আরে রাস্তার সব লোক আমাদের ভিডিও করতেছে?
(আপু) কি বলিস?
(আমি)হ্যা?
আপু আমার বুক থেকে মাথা তুলল,,হ্যা সত্যি ঐ তো,,,, আপু লজ্জা পেয়ে গেল?
তাড়াতাড়ি আমার বাইকে ওঠো আপু বাইকে উঠে বসলো আমি বাইক জোরে টান দিলাম,,,,, শাকচুন্নি আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে,,,,, আমার বাইক চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
(আমি) আরে এভাবে ধরেছে কেন,,,, আমি বাইক চালাতে কষ্ট হচ্ছে তো?
(আপু) বাইক চালাতে হবে না।
(আমি)তাহলে বাসায় যাবো কি কিরে?
(আপু)যেতে হবেনা?
(আমি)আরে বাবা একটু হালকা করে জরিয়ে ধর এতো শক্ত করে কেউই জড়িয়ে ধরে?
(আপু)হালকা করে জরিয়ে ধরতে পারবোনা?
কি আর করার শাকচুন্নির সাথে পারা যাবে না? আমি বাইক চালাচ্ছি,, হঠাৎ একটা দোকানের সামনে এসে বলল বাইক থামা?
(আমি)কেনো?
(আপু) আমি আইসক্রিম খাবো?
(আমি) টাকা নাই আমার কাছে?
(আপু) তোকে টাকার কথা বলছি?
(আমি)না?
(আপু) তাহলে টাকার কথা বললি কেন?
(আমি)সরি?
শাকচুন্নি 1000 টাকার একটা নোট বের করে আমার হাতে দিলো,,, আমি দোকান থেকে দুটো আইসক্রিম নিয়ে আসলাম?
শাকচুন্নির হাতে দুধ আইসক্রিম দিলাম?
(আপু) দুইটা আমাকে দিচ্ছিস কেন,,,আর আমার বাকি টাকা কয়?
(আমি) কিসের টাকা?
(আপু) কিসের টাকা মানে এক হাজার টাকার নোট দিয়েছে দুটা আইস ক্রিম এর দাম ৪৫+৪৫=৯০টাকা আরো ৯১০দে?
হায় আল্লাহ শাকচুন্নি তো হার কিপটা টাকা গুনে গুনে হিসাব করে,,, আমি তো মনে করেছি শাকচুন্নি বুঝি এ টাকা নেবে না?
কি আর করবো পকেট থেকে খুলে ৯১০টাকা শাকচুন্নির হাতে দিলাম?
গণ্ডি মেয়ে কিছু বলে নাই,,, শুধু একটা মুচকি হাসি দিয়েছে,,,
(আপু) এই নে ধর((( একটা আইসক্রিম আমার দিকে বাড়িয়ে?
আমি শাকচুন্নির হাত থেকে আইসক্রিম টা নিলাম দুজনে আইসক্রিম খাচ্ছি,,, হঠাৎ করে শাকচুন্নির দিকে খেয়াল করলাম,,,
শাকচুন্নি আইসক্রিম খাচ্ছে পিচ্চি বাচ্চারদের মত আইসক্রিম ঠোঁটে লেগে আছে,,,এখন আপু কে ঠিক পিচ্চি বাচ্চাদের মত লাগছে,,, আপুর এই দৃশ্যটা দেখে মনটা কি জানি করতে যাচ্ছে,,,, শুধু তার ঠোঁটের দিকে আকর্ষণ করছে?
(আপু) কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?
(আমি) তোমার ঠোঁটে আইসক্রিম লেগে আছে তারাতারি মুছো?
(আপু)কেন?
(আমি) আমার কি জানি করতে মন চাচ্ছে?
আপু একটু লজ্জা পেয়ে গেল,,, লুচ্চা ছেলে চুপ কর?
(আমি) তাড়াতাড়ি মুছে ফেলো না।
(আপু)না মুছবোনা?
(আমি) তাহলে কিন্তু?
(আপু) তাহলে কি হেহ""" বদমাশ ছেলে আমার কাছে আসবি না বলে দিলাম?
(আমি) তোমার ঠোঁট আমাকে আকর্ষণ করে টানছে?
আমি আপুর কাছে যাবো তারাতারি আপু ঠোট মুছে ফেললো?
(আমি) কি হলো মুছলা কেনো,,,আমি মুছে দিতাম?
(আপু)এহহি শখ কত,,,, চল এখন যাই?
আমি আর কিছু না বলে বাইকে উঠলাম বাইক আপুদের বাসার সামনে এসে পৌঁছলে,,,
(আপু) চল ভেতরে চল দুপুরে লাঞ্চ করে তারপর বাসায় যাবি?
(আমি)না ভিতরে যাবো না আম্মু হয়তো টেনশনে আছে আমাকে নিয়ে,,, দুদিন হয়েছে বাসা থেকে গিয়েছে আম্মুকে একটা ফোন ও দেয়নি?
(আপু) আচ্ছা ঠিক আছে দুপুরে আমাদের বাসায় এসে খাবি?
(আমি) দুপুরে কেন,, কালকে থেকে তিন বেলা তোমাদের বাসায় খাই?
(আপু) তিন বেলা কেন?
(আমি) দুদিন পরে সম্পর্ক দুটো হবে তাই?
(আপু) দুইটা সম্পর্ক হবে মানে?
(আমি) তোমার মাথার সেন্স হিউমার কম নাকি,,, একটা খালাম্মার বাড়ি দুদিন বড় হবে শ্বশুরবাড়ি,,, তাহলে সম্পর্ক দুটা হলোনা?
(আপু) লাল কুত্তা যা তুই এখান থেকে,,
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে যাচ্ছি?
(আপু) এই শোন এই টাকা গুলো রাখ?
(আমি) টাকা দিয়ে কি করবো?
(আপু) তুই না বললি তার কাছে টাকা নাই?
(আমি)ও হ্যা তাই তো?
আমি টাকাগুলো নিলাম গুনে দেখি 5000,,
যাক সিনিয়র রূপসী গার্লফ্রেন্ড পেলাম,,, দুদিন পরে তার বাবার টাকা পাবো,,, এখন থেকেই নেওয়া শুরু করি?
★ আমি টাকাগুলো পকেটের রাখবো,,, হঠাৎ করে ফোনটা বেজে উঠলো,,,
টুন You are not alone,,,, Another day has gone,,,I’m still all alone,,,,How could this be,,,, স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখি,,, বন্ধু শামীমের ফোন,,, আপু বলতে শুরু করল কার ফোন? আছে,,,, এখন আমি যায়?
(আপু) যাই মানে কার ফোন আগে বলে যা?
(আমি) বন্ধু শামীমের ফোন""
(আপু) দেখি মোবাইল দেখা?
মোবাইল টা দেখালাম?
(আমি)কথায় কথায় এত সন্দেহ কর কেন,,,,
(আপু) তোদের ছেলেদের দিয়ে বিশ্বাস নেই,, একটা সুন্দরী মেয়ে পেয়েছিস তো,,, সারছে, বর্তমান প্রেমিকাকে সাবেক প্রেমিকা বানিয়ে দিবি।
(আমি) তুমি কি আমাকে সে রকম ছেলে ভাবো?
(আপু এত ভাবা ভাবি বুঝিনা,,, সোজা বাসায় যাবি তারপর খালাম্মার সাথে কথা বলবি,,, গোসল টোসল দিয়ে সোজা আমাদের বাসায় চলে আসবি,,, যদি তেরিং ফেরিং দেখি তাহলে খাইছি তোরে?
(((আরে বাবা এটা কি মেয়ে নাকি আজরাইল শাকচুন্নি একটা))))
আচ্ছা ঠিক আছে আমি এখন যাই,,,,
★ চলে আসলাম বাসায়,,, আম্মুর সাথে কথা বলে,, গোসল টোসল দিয়ে দুপুর 2 টায় রওনা দিলাম আপুর বাসায়?
যাওয়ার সাথে সাথে শাকচুন্নি দরজা খুলে দিল,,, খানার টেবিলে গিয়ে বসলাম,,, শাকচুন্নি মানে আপুও আমার সাথে বসলো,,,
হঠাৎ করে পকেটের থাকা মোবাইলটা বেজে উঠলো,,,,, মোবাইলটা পকেট থেকে খুলে দেখি রিয়ার ফোন,,,, শাকচুন্নি আপু ক্ষপ করে মোবাইলটা নিয়ে নিয়ে নিলো,,,
স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখে রিয়ার ফোন শাকচুন্নির মাথা গরম হয়ে গিয়েছে,,,
হায় হায় মোবাইলটা নি আবার ভেংগে ফেলে,,,, সত্যি সত্যি মোবাইলটা আছাড় মারবে আমি গিয়ে হাত ধরে ফেললাম?
(আমি) তুমি কি পাগল নাকি?
(আপু) ও তোকে এমন সময় ফোন দিলো কেন?
(আমি) আমি কিভাবে বলবো?
(আপু) লুচ্চা ছেলে তলে তলে অনেক দূর এগিয়ে গেছিস?
(আমি) দেখো শুধু শুধু আজাইরা কথা বলবা না?
(আপু) কিসের আজাইরা কথা?
(আমি) সব সময় কিন্তু এগুলা ভালো লাগেনা?
(আপু)আমার কথা ভাল লাগবে কিরে,,,রিয়ার কথা তো খুব ভাল লাগে?
(আমি) দেখো তোমাকে আমি আগই বলেছি রিয়া আমার একজন ভাল বন্ধু,,
(আপু) বন্ধু নাকি ছাই,,আমি ভালো করে জানি?
(আমি)ধুরররর,,,এখানে খাবো ঐ না?
রাগ করে বেরিয়ে পড়লাম বাসা থেকে,,,,আপু অনেক বার বাধা দিয়েছি,,,
আমি চলে আসলাম,,,,সব সময় এগুলা ভালো লাগে না?
★বাসায় না গিয়ে একটা দোকানে গিয়ে,, বিস্কিট আর কলা খেলাম,,, আধাঘণ্টা ধরে দোকানে বসে আছি? হঠাৎ করে খালাম্মার ফোন,,,, ফোনটা রিসিভ করলাম?
(খালাম্মা) ফারাবী তুই কই?
(আমি) কেন?
(খালাম্মা) তাড়াতাড়ি আমাদের বাসায় আয়?
(আমি) কেন কি হইছে?
(খালাম্মা) ঈশিতা ঘরের সব জিনিসপত্র ভেঙ্গে ফেলছে?
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে আমি আসছি?
শাকচুন্নির এত রাগ কেন,,, এত রাগী মেয়ে তো, আমি বাপের জন্মেও দেখিনি,,,,, এই মেয়েকে বিয়ে করলে,,, আমার যে কি অবস্থা হয় আল্লাহ ভালো জানে,,,,, আবার কি সুন্দর করে প্রপোজ করেছে কবি সাহিত্যিকরাও এভাবে প্রোপোজ করতে পারবে না?
★ আমি বাইক নিয়ে তাড়াতাড়ি খালাম্মার বাসায় চলে গেলাম,, যেয়ে দেখি হাই হাই সব ভেঙ্গে তছনছ করে ফেলেছে,,, দেখি আপুর হাত দিয়ে রক্ত পড়ছে,,,, আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে হাত ধরলাম????
(((((চলবে)))))
•
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব ১৭
(আমি) কি করছো পাগল হয়ে গিয়েছো?
(আপু) হ্যা আমি পাগল হয়ে গিয়েছি?
(আমি) তোমার হাত দিয়ে প্রচুর রক্ত পড়ছে,,, তাড়াতাড়ি আসো আমি হাত বেঁধে দেয়?
(আপু)না ছাড় তুই আমার হাত ধরবি না,,,।
(আমি) কেন শুধু শুধু পাগলামি করছ""" প্রচুর ব্লেডিং হচ্ছে তো?
(আপু) হতে দে তাতে তোর কি?
(আমি) দেখো তুমি যদি আমার সাথে না যাও,,, তাহলে আমার হাতও কেটে রক্ত ঝরাবো,,,,,
আমি একটা কাঁচ ভাঙা দিয়ে হাতে যে মাত্র হাত কাটতে যাবো,,,তখন আপু এসে আমার হাত ধরে ফেলল,,,
কি করছিস তুই পাগল হয়ে গেছিস,,, আমার হাত কাটলে ও,,, তোর হাত কাটা আমি সহ্য করতে পারবো না?
তাহলে আমার সাথে চলো,,,আমি আপুকে রুমে নিয়ে কাটা জায়গাটা স্যাভলন দিয়ে পরিষ্কার করে হাত বেধে দিলাম?
আপু কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগল,,, তুই আসলি কেন,?
তোমার জন্য,,, এত বড় হইছে এখনো ছোট বাচ্চাদের মত পাগলামি কোরো?
তুই জানিস না তোকে আমি কতটা ভালোবাসি,,, তুই কারো সাথে মোবাইলে বা এমনে কথা বললে আমি সহ্য করতে পারিনা?
আরে বাবা কালকে রিয়ার জন্মদিন,,, আমার বন্ধু শামীম গত তিন বছর ধরে রিয়া কে ভালোবাসে,,,, রিয়া আমার বন্ধু,,, আমি যাচ্ছি, রিয়াকে শামীমের হাতে তুলে দিতে,,,, কিন্তু রিয়া কিছুতেই রাজিনা? রিয়া আমাকে ফোন দিলে রিয়াকে বার বার বুঝিয়ে বলি,,,, রিয়ার জন্মদিনে রিয়াকে যে ভাবে হোক রাজি করাতে হবে?
(আপু) আমি এতকিছু বুঝিনা,,, তুই শুধু আমার,,, আমার সাথে কথা বলবি,,, আমার দিকে তাকিয়ে থাকবি?
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে,, তুমি যা বলবে আমি তাই করবো? এখন খানা খেয়েছো?
(আপু)না( অভিমানী কণ্ঠে)
(আমি) তুই চলে গেছিস কেন?
(আপু) আরে ওই সময় আমার মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল,,,, তুমি বসো আমি খাবার নিয়ে আসি?
আমি রুম থেকে বাহির হতে যাবো,, দেখি খালা মনি খাবার নিয়ে আসছে,,,
(খালা) এই নে ধর,,, তোরা দুজনের খাবার,,, এত বড় মেয়েটা মাঝে মাঝে কি পাগলামি যে করে,,,,, তুই ওকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে খাওয়া নোর চেষ্টা করিস।
আচ্ছা,, আমি খাবার নিয়ে বললাম” খেয়ে নাও,,,
(আপু) খাব না?
(আমি) কেন?
(আপু) আমার হাত কাটা কিভাবে খাব?
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে আমি চামচ নিয়ে আসছি?
(আপু) না আমি চামচ দিয়ে খাব না?
(আমি) তাহলে কিভাবে খাবা।
(আপু) আমি জানিনা?
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে আমি খাইয়ে দিচ্ছি,,,,, শাকচুন্নির দিকে তাকিয়ে দেখি,,,, একটা মুচকি হাসি দিয়েছে,,, হয়তো মনে মনে এটাই চাচ্ছে?
★ আমি আমার হাত দিয়ে খাইয়ে দিতে লাগলাম,,আপু ভাত চাবাচ্ছে পিচ্চি বাচ্চাদের মত,, আমি তার দিকে এক দৃষ্টিতে নিয়ে তাকিয়ে আছি?
(আপু) কি হলো তুই খাবি না?
(আমি) খাব পরে,, আগে তুমি খেয়ে নাও,,,
(আপু)না তুই এখনই খাবি?
কি আর করা আমি আপুকে খাইয়ে দিচ্ছি আমিও খাচ্ছি,,,,,, খাওয়া দাওয়া শেষ করে আপুকে বললাম,,, এখন একটু রেস্ট করো? আমি শামীম কে নিয়ে একটু মার্কেটে যাবো,,,,
(আপু) কেন মার্কেটে কেন?
(আমি) আরে শামীম রিয়াকে একজোড়া কাচের নুপুর দিয়ে প্রপোজ করবে? কিন্তু শালা আমাকে ছাড়া নাকি মার্কেটে যাবে না?
(আপু) আচ্ছা ঠিক আছে সন্ধ্যার আগে চলে আসবি,,,, আর মার্কেটে গিয়ে কোন মেয়ের দিকে তাকাতে পারবিনা,,,, খবরদার যদি তাকিয়েছিস,,, তাহলে আমি আবার কিছু একটা করে বসবো,,,
এই শাকচুন্নি কে নিয়ে তো মহা সমস্যা আছি,,, এখনো বিয়ে করিনি কিচ্ছু করিনি,,, এর দিকে তাকাতে পারবি না ওর দিকে তাকাতে পারবিনা,,, মোবাইলে কথা বলতে পারবি না,,,,, এই মেয়েকে বিয়ে করলে তো জীবন তামা তামা হয়ে যাবে,,,, কি জন্য যে এত রাগী মেয়ের প্রেমে পড়তে গেলাম?
(আমি) আচ্ছা ঠিক তাকাবোনা,,, আমি এখন যাই,,,, তুমি রেস্ট নাও?
বন্ধু শামীমের সাথে মার্কেটে চলে গেলাম,,, পাক্কা চার ঘন্টা ঘুরে একজোড়া কাচের নুপুর পেয়েছি,,,, এর ভিতর শাকচুন্নি কয়েক বার ফোন দিয়েছে,, একটু একটু কথা বলে রেখে দিয়েছি।
সন্ধ্যার দিকে বাসায় ফিরলাম আম্মু দেখেই বলতে শুরু করল,,, সারাদিন কোথায় থাকিস কি করিস,,, পড়ালেখার তো নাম গন্ধ নাই,,,, আর এই তিন দিন ধরে বাসায় তিন বেলা ও খাস নাই,,, এভাবে চলতে থাকলে হবে?
আমি কি করবো তোমার বোন ঝি এইতো আমাকে ডেকে ডেকে নিয়ে খাওয়াই,,,, আর না গেলে আমাকে ধমক মারে?
(আম্মু) মেয়েটা খুব ভালো রে?
(আমি) কচু ভালো কথায় কথায় আমাকে থাপ্পড় মারে।
(আম্মু ) তুই ওর ছোট ওর সাথে ফাইজলামি করলে থাপ্পড় তো দিবেই?
(আমি) কি জন্য থাপ্পর দে ও তুমি বুঝবে না।
(আম্মু) আমার এত বোঝাবোঝির দরকার নাই এখন গিয়ে পড়তে বস?
চলে আসলাম রুমে,,, আমার আবার পড়ালেখা,,,, না পড়লেও আম্মু আবার বকা দিবে,,, তাই বাধ্য হয়ে বইটা নিয়ে বসলাম,,,, 10 মিনিট পড়ার পর মোবাইলে মাইকেল জ্যাকসনের গানটা বাজতে লাগলো,,,,,,,, আমি বুঝে ফেলেছি কে ফোন দিয়েছে,,,,,, শাকচুন্নি ছাড়া আর কেউই হবে না।।। স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখি যা ভাবছে তাই,,,,, পড়ালেখা এখন চাঙ্গে উঠবে।
★ ফোনটা রিসিভ করে কথা বলতে শুরু করলাম শাকচুন্নি গুন্ডি মেয়ে এত কথা বলতে পারে,,,, কানটা একবারে ঝালাপালা করে ফেলেছে।
আধা ঘন্টা কথা বলে রেখে দিলাম,,, বইটা দিল মেরে বিছানার ওপর ফেলে,,, ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়লাম,,, এক বন্ধুর সাথে চ্যাট করতেছি,,, হঠাৎই দরজায় আম্মুর কটকট শব্দ,,,,,,, তাড়াতাড়ি ল্যাপটপ অফ করে,,, বইটা নিয়ে পড়তে শুরু করলাম,,,,
(আম্মু) কি হল দরজা মিলিস না কেন?
বইটা হাতে নিয়ে পড়তে পড়তে দরজা খুললাম,,,,,,, আম্মু আমার এভাবে পড়া দেখে হাসতে লাগলো,,,
(আমি) হাসো কেন?
(আম্মু) তুই মার চোখ ফাকি দিবি?
(আমি) কেন?
(আম্মু) এতক্ষণ তো আমি পড়ার আওয়াজ পাই নাই,, নিশ্চয় দরজা বন্ধ করে ল্যাপটপ টিপতে ছিলি,,, আর না হয় মোবাইল ঘাটাঘাটি করতেছি লি?
আমি আর কিছু বলি নাই প্রতিটি মা এই সন্তানের অন্তরের খবর জানে,,,, সবার চোখ ফাঁকি দিতে পারলেও,,, মার চোখ কখনও ফাঁকি দেওয়া যায় না,, এ যে এক মায়ের সাথে সন্তানের নাড়ির সম্পর্ক।
(আমি) কে বলল তোমাকে আমি ল্যাপটপ চালাচ্ছিলাম,,,, আমি তো এতোক্ষণ পড়তেছিলাম?
(আম্মু) হইছে হইছে আর বানিয়ে মিথ্যা বলতে হবে না,,, এখন খেতে আয়?
(আমি) তুমি যাও আমি আসছি?
(আম্মু) তাড়াতাড়ি আয় খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে?
আমি আর কিছু না বলে বইটা রেখে খানার টেবিলে চলে গেলাম? হঠাৎ করে ফোনটা বেজে উঠলো,,,, মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখে শাকচুন্নি মানে আপু ফোন দিয়েছে?
(আমি) হ্যালো?
(আপু) কোথায় তুই?
(আমি) আমি তো বাসায়?
(আপু) তোকে না বললাম রাতে এখানে আসার জন্য?
(আমি) কিভাবে আসবো,,, আম্মু বকা দিচ্ছে সারাদিন আমি নাকি বাহিরে বাহিরে থাকি?
(আপু) খালামণির কিচ্ছু বলবে না,,, তুই আয়?
(আমি) না আমি পারব না?
(আপু) তুই না আসলে,,, দুপুরে যেভাবে হাত কাটছিলাম,,, সে ভাবে হাত কাটবো?
(আমি) শুধুশুধু কেন পাগলামি করো?
(আম্মু) কি হয়েছে রে?
(আমি) দেখো তোমার আদরের বোন জি কি বলে?
আম্মুর কাছে ফোনটা ধরিয়ে দিলাম,,,, কে জানে কিছুক্ষণ কি জানি বললো শাকচুন্নি আম্মুর সাথে,,,, ফোন রাখার পরে আম্মু বলতে লাগলো,,,, যা তোর খালামণির বাসায় থেকে আয়?
(আমি) কেন আমি যেতে পারব না?
(আম্মু) আমি বললাম তোকে যেতে তুই যা?
আমি আর কিছু না বলে বাইক নিয়ে খালামনির বাসায় পৌছে গেলাম,,,, সোজা আপুর রুমে গিয়ে দেখি,,, শাকচুন্নি গুটিশুটি মেরে বসে নখ কামড়াচ্ছে?
আমি দূর থেকে দেখে মাথা খারাপ হয়ে গেল,,,, কি যে একটা খারাপ উদ্দেশ্য মনের ভিতরে জাগনা দিয়ে উঠলো,,, আপু বেখেয়ালি নখ কামড়েইযাচ্ছে,,, আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না,,,, আপুর ঠোটের দিকে আমাকে আকর্ষণ করে তার টানছে,,,, নিজেকে আর ধরে রাখতে পারতেছি না,,,, দিলাম এক ধমক,,,, এই কি করতেছো?
আপু হঠাৎ করে আমার কথা শুনে চমকে উঠলো,,, মুখ থেকে হাত সরালো?
(আপু) তুই কখন আসলি?
(আমি) তুমি কি করতে ছিলে নখ কামড়াচ্ছিলা কেন?
(আপু) কেন নখ কামড়ালে কি হয়?
(আমি) তোমার নখ কামড়ানোর দৃশ্য দেখে আমার যে কেমন কেমন লাগতেছিল,,, আর এভাবে কখনো নখ কামড়াবে না,,, তা না হলে আমি কিছু একটা করে বসবো?
(আপু) লুচ্চা ছেলে বদমাশ ছেলে চুপ কর,,, কি করে বসবি?
(আমি) ও তুমি বুঝবে না আমি কি করি?
(আপু) আমি না বুঝলে এখনই নখ কামড়াবো,,,,,
(আমি) দেখো এ কাজ তুমি করো না,, তাহলে নিজেকে সামলাতে পারবো না,,,
কিন্তু শাকচুন্নি আমার কথা শুনে নাই নখ কামড়ানো শুরু করে দিয়েছে,,,, আমি নিজেকে আর ধরে রাখতে না পেরে,,, আপুর ঠোটের মধ্যে আমার ঠোঁট মিলিয়ে মিলিয়ে দিলাম,,,, আপু আমার ঠোটের উষ্ণ ছোঁয়া পেয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলেছে সারা শরীর একটা কম্পন দিয়ে উঠলো,,,, নিজের অজান্তেই আমার গেঞ্জি খামছি এ ধরলো,,,, দু তিন মিনিট লম্বা চুম্বনের পর ছেড়ে দিলাম,,,, আপু চোখ বন্ধ করে হাপাচ্ছে, আমিও হাপাচ্ছি,,, আমার জীবনে প্রথম কোন মেয়েকে চুম্বন প্রথম অনুভূতি প্রথম ফিলিংস,,, কি যে এক ভালো লাগা বলে বুঝাতে পারবো না,,,, আমি খানিকটা লজ্জা পেয়ে গেলাম,,, লজ্জা পেয়ে রুম থেকে বাহির হয়ে যাচ্ছি,,,
আপু নরম সুরে বলল কোথায় যাচ্ছিস,,,,,
আমি একটু বাহিরে যাচ্ছি 10 মিনিট পরে আসবো?
(আপু) না কোথাও যাবি না এদিকে আয়,,,,
আমি আপুর কাছে গেলাম কিন্তু লজ্জায় আপুর দিকে তাকাতে পারছি না?
(আপু) বদমাইশ ছেলে তোর মনে এই ছিল?
(আমি) আমি কি করবো তোমাকে তো আমি বারবার মানা করেছি??
(আপু) তাই বলে তুই?
(আমি) দেখো আমার উপর দোষ দিবা না? তোমাকে নিষেধ করার পরেও তুমি নখ কামড়েই যাচ্ছ,,,, আমি কি করবো,, তাই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি নাই,,,
(আপু) হয়েছে হয়েছে আর বদমাশি করতে হবে না,,, এখন খেতে চল?
(আমি) আচ্ছা একটা কথা বলি,,
(আপু) কি?
(আমি) আমি জানি কিছুক্ষণ পরে পরে তোমাদের আসি,,,এসে খাওয়া দাওয়া করি,,, খালামণি কি ভাববে,,, খালামণি তো সন্দেহ করতে পারে?
(আপু) সন্দেহ করলে করুক,,, আর আমি আম্মুকে বলে দিয়েছি ফারাবী আমাদের বাসায় তিন বেলা এসে খাবে,,,, আম্মু আমার কথা শুনে আরো খুশি হয়েছে?
★ শাকচুন্নি খালামনি কি জন্য খুশি হয়েছে সে তুমি বুঝবা না,,, আমি বুঝতে পেরেছি,, খালামণির তো কোনো ছেলে সন্তান নেই,,, তাই বোনের ছেলে,,মানে আামকে নিজের সন্তানের মত দেখে,,,,, খুব ভালোবাসে,,খুব আদর করে,,, খালামণি যদি সত্যিটা জানতে পারে,,,,,, যে আমি তার মেয়ের সাথে ইটিশ পিটিশ করতেছি,,,,, তাহলে তিন বেলা খাওয়া কেন,,, বাসায়ই আসতে দেবে না?
(আপু) কি হলো কি ভাবছিস?
(আমি) না কিছু না?
(আপু) তাহলে খেতে চল?
(আমি) তুমি খাবে কি করে তোমার হাত তো কাটা,,,
(আপু)ও হ্যা তাই তো,,,
(আমি) আচ্ছা দাঁড়াও আমি খাবার নিয়ে আসছি,,,, শাকচুন্নি আমার কথা শুনে একটা মুচকি হাসি দিয়েছে?((((((( মনে মনে বলছে এইজন্যই তো তোকে ফোন দিয়ে এনেছি,,, তোর হাতে খাবো বলে)))))))
আমি খাবার এনে আগের মত নিজের হাতে খাইয়ে দিলাম,,,,, তারপর আমি খাওয়া দাওয়া করে বাসায় চলে আসলাম।
এসে ডায়রেক ঘুমের দেশে,,,
সকাল ৯টায় আম্মুর ডাকাডাকি ঘুম ভাঙলো?
(আম্মু) এই ফারাবী কি হল ওঠ,,, আর কত ঘুমাবি বেলা কয়টা বাজে জানিস,,, কলেজে যাবি না,,, এক সপ্তাহ ধরে কলেজে যাস না?
(আমি) আম্মু সকাল বেলা চিল্লা চিল্লা কইরো না,,,, আজকেও কলেজে যাব না,?
(আম্মু) কেন আজকে কলেজে যাবি না কেন?
(আমি)আরে আজকের রিয়ার জন্মদিন?
(আম্মু) রিয়ার জন্মদিন আজকে?
(আমি)হ্যা?
(আম্মু) আচ্ছা ঠিক আছে এখন ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে আয়?
(আমি) তুমি যাও আমি আসছি,,,,,
★ ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে,, চলে গেলাম বাহিরে,,, বন্ধুদের সাথে ঘন্টা তিনেক আড্ডা দিলাম,,, আর বন্ধুর শামীমকে বুঝি দিয়ে আসলাম,,,, কিভাবে রিয়াকে প্রপোজ করতে হবে,,,,
তারপর বাসায় এসে গোসল দিয়ে প্রায় 5 দিন পরে দুপুরে আমাদের বাসায় খেলাম?
তারপরে এক ঘুম দিলাম এক ঘুমে সন্ধ্যা ৬ টা,,, মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখি ২০ টা ফোন,,,৭ টা রিয়ার বাকি গুলো আপুর?
আমি ফ্রেশ হয়ে আপুকে ফোন দিলাম,,, শুরু হলো তার বকা এবং বক্তব্য,,,,,,, প্রায় এক ঘন্টার মতো আমার সাথে কথা বলল,,,,,রিয়ার জন্মদিন অনুষ্ঠানে আপুকে নাকি ইনভাইট করেছে,,,,, আমার সাথে নাকি যাবে,,,,,,,আমি বললাম তুমি আগে চলে যেও আমি পরে আসবো,,,,রিয়ার জন্য কিছু গিফট প্যাকেট করতে হবে?।
আমি সন্ধ্যা ৯. ৩০ রিয়াদের বাসায় গেলাম,,,যেয়ে দেখি রিয়ার বন্ধু বান্ধব,,, এবং আমারও কিছু বন্ধুবান্ধব এসে পৌছে গেছে,,,,,, সবাই আমার জন্য ওয়েট করতেছে,,,তাদের মাঝে আপু ও আছে,,,
★ আমি বিয়ার সামনে গিয়ে রিয়ার হাতে গিফট গুলো ধরিয়ে দিয়ে,,,,, রিয়া কে উইশ করলাম,,,, তারপর বিয়ার হাতে একটা স্পেশাল গিফটের প্যাকেট দিয়ে বললাম,,, এটা তোর স্পেশাল গিফট,,, এখন আপনারা জিজ্ঞাসা করবেন স্পেশাল গিফট টা কি,,,, স্পেশাল গিফট টা হল একটা ঘড়ি,,,, প্রায় ৩৫০ ডলার দিয়ে ঘড়িটা অর্ডার করে বানিয়েছি,,, এর ভিতরে ডিজাইন করা বন্ধুত্বের দুটো হাত আছে,,,, হাতের মেডেলে ঘড়ির কাঁটাগুলো,,, তার ঠিক নিচে রিয়ার নাম দেওয়া আছে,,,,
রিয়া গিফট টা খুলে অবাক হয়ে গিয়েছে,,,, ও কল্পনাও করেনি এমন গিফট আমি ওকে দিব,,,, ও আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো,,,,ওকে মাথায় হাত বুলিয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা করলাম,,,,,,
মাগার শাকচুন্নি যে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,, তা আমি বুঝতে পারিনি,,,, আমি যখন আপুর দিকে তাকালাম,,,,,আপুর চোখের আগুনের ঝিলিক দেখতে পাচ্ছি,,,,
এমন ভাবে তাকিয়ে আছে,,,,যে আজকে আমাকে রাতের ১৪ টার খবর দেখাবে,,,,
আমি অবস্থা ভেদিক দেখে রিয়াকে ছাড়িয়ে অন্য জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালাম?
রিয়া স্বাভাবিক হয় সবার সাথে কথা বলছে,,,আমি একটু ঘুরতেই কেউ আমার গেঞ্জি ধরে টানছে?
পিছনে ঘুরে দেখি শাকচুন্নি,,হায় হায় আজকে তো আমাকে শেষ করে ফলবে?
আমাকে টেনে দুতলা ছাদের উপরে নিয়ে গেল,,,,?
(আপু) রিয়াকে জড়িয়ে ধরে কি করতে ছিলি?
(আমি) কই আমি কি করলাম?
(আপু)ঠাসসসসস,,ঠাসসসসস? বদমাইশ ছেলে,,,, কচি মেয়েরা জড়িয়ে ধরলে ভালো লাগে?
আমি রাগে এবং ব্যাথায় কেঁদে ফেললাম?
এমন জোরে থাপ্পর দিয়েছে,,, যে আমি 2 মিনিট ধরে আশেপাশের কোন সাউন্ড ঐ পাচ্ছিনা?
তুমি আমাকে এত জোরে
থাপ্পর মারলা কেন,,,,,,, আমি ব্যথা পাই না বুঝি,,,, তুমি আর আমার সাথে????
((((((চলবে))))))
•
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব ১৮
তোমার সাথে আমার কোন কথা নাই? কথায় কথায় তুমি শুধু আমাকে মারো,,,,আমি একটু রাগ দেখিয়ে গালে হাত নিচে নেমে যাচ্ছি,,,,
আপু দৌড়ে এসে পিছন থেকে আমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে,,,,
(আমি) কি হয়েছে এভাবে জড়িয়ে ধরেছ কেন ছাড়ো বলছি?
(আপু) ছাড়বো বলে তো ধরে নি?
(আমি) তোমার এই জড়িয়ে ধরা আমার ভালো লাগেনা?
(আমি) বদমাশ ছেলে লুচ্চা ছেলে ভাল লাগবে কি করে,,, আর এক মেয়ে জড়িয়ে ধরলে তো খুব ভালো লাগে খুব আরাম লাগে?
(আমি) একদম বাজে কথা বলবে না,,, আমি কাউকে জড়িয়ে ধরি নি?
(আপু) তাহলে রিয়াকে কি করেছিলা বাবু?
(আমি) আমি রিয়াকে কিচ্ছু করি নাই রিয়া আমাকে আবেগে জড়িয়ে ধরেছিল?
(আপু) বদমাইশ ছেলে বিয়া তোকে আবেগে জড়িয়ে ধরল তুই সরলি না কেন?
(আমি) আরে আজিব তো আমি ঐ সময় সরে দাঁড়ালে ও অনেক কষ্ট পেতো?
(আপু) তোরা ছেলেদের কে চিনি কোন মেয়ে জড়িয়ে ধরার জন্য তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকিস?
(আমি) একদম বাজে কথা বলবে না,,, এভাবে জড়িয়ে ধরেছ কেন,,, মেরে আসছে আমাকে জড়িয়ে ধরতে,, গাল গুলো কি করেছো তুমি দেখো?
(আপু) দেখে বাবু কি হয়েছে,,, আমাকে ঘুরিয়ে গালে হাত দিয়ে কিছু হয় নাই তো?
আমি সাথে সাথে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করলাম,,, তারপর মোবাইলের স্কিনে গাল গুলো দেখলাম বাপরে বাপ 10 আঙ্গুলের দাগ পড়ে গিয়েছে,,, আর শাকচুন্নি বলছে কিচ্ছু হয় নাই?
(আমি) কি করেছ তুমি এগুলা 10 আঙ্গুলের দাগ ফেলে দিয়েছো আবার বলছো কিছু হয় নাই?
(আপু) আমি কি করবো,,, তুই তো আমাকে রাগ তুলে দিস,,, আমার রাগ উঠে গেলে আমার কোনো চান্স থাকে না,, কিনা কি করে বসি,,, খুব লেগেছে না?
(আমি) না একটুও লাগেনি খুব আরাম পেয়েছি?((( অভিমানী কণ্ঠে)
(আপু) বাবু রাগ করেছো দেখি দেখি?
(আমি) দেখতে হবে না এখন দুইটা পাপ্পি দাও?
(আপু) কিসের পাপ্পি?
(আমি) কিসের পাপ্পি মানে তুমি আমার গালগুলো লাল করে ফেলেছ,,, তোমার সাথে কোন কথা নাই যাও?
(আপু) আরে আমার পিচ্চিটা দেখি সত্যি সত্যি রাগ করেছে,,,, আচ্ছা বাবু চোখ বন্ধ কর?
(আমি) না চোখ বন্ধ করতে পারব না?
(আপু) তাহলে পাপ্পি ও দেব না?
(আমি) কেন চোখ খোলা থাকলে সমস্যা কি?
(আপু) বদমাশ ছেলে আমার লজ্জা করে চোখ বন্ধ কর বলছি??
আমি চোখ বন্ধ করলাম"সাথে সাথে আমার দু গালে দুইটা পাপ্পি দিয়ে,,, লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলল।
(আমি) কি হল মুখ ঢাকলে কেন?
(আপু) বদমাশ ছেলে তুই যা এখান থেকে আমার লজ্জা করছে?
(আমি)তাই নাকি দেখি হাত সরাও লজ্জা পেলে তোমাকে কেমন লাগে?
(আপু)তুই এখান থেকে যাবি লুচ্চা ছেলে,, এ কথা বলে আপু দৌড়ে চলে গেল,,,।
★ আমি আস্তে আস্তে নিচে নামলাম,,, যে দেখি রিয়া ওয়েট করতেছে কেক কাটার জন্য আমাকে দেখে বলল কোথায় গিয়েছিলি,,, কতক্ষণ ধরে অপেক্ষা করতেছি,,, একটু ঐদিকে গিয়েছিলাম এখন কেক কাট,,, রিয়া সব গুলো মোমবাতি নিবে কেক কাটল,,, আমি রিয়ার পাশে দাঁড়ালাম আমার ঠিক পিছনে আপু,,,, সবাই একসাথে রিয়া কে উইশ করলাম,,,, চাচা চাচি কেক তুলে রিয়াকে খাইয়ে দিল,,, রিয়া ও তাদেরকে খাইয়ে দিল,,, তারপর রিয়া একটু কেক তুলে আমাকে খাওয়াতে যাবে,,, এমন রত অবস্থায় আপু আমাকে ধাক্কা দিয়ে আমার সামনে এসে হ্যা করে কেক টা খেয়ে নিল,,,, আমি তা দেখে ব্যাকা ছ্যাকা খেয়ে গেলাম,,,, আমার বন্ধু বান্ধব সবাই ব্যাপারটা লক্ষ্য করেছে,,, রিয়া ও বুঝতে পেরেছে,,, রিয়া আর একটু কেক তুললো,,, আমি আপুকে ফিসফিসিয়ে বললাম,, কি শুরু করে দিয়েছো,,, ও আমার বন্ধু,,, আপু কিছু বলল না,,, তারপর পুরো নাই রিয়া আমাকে খাইয়ে দিল,,, আমিও রিয়াকে খাইয়ে দিলাম?
★সবাই বলতে লাগলো গান গাওয়ার জন্য,,, কে গান করবে,,, সবার দৃষ্টি আমার দিকে,,, কিন্তু আমি শামীমকে ইশারা করে বলে দিলাম আপুর নাম উল্লেখ করে বলতে?
শামীম সবাইকে বলতে লাগলো,,, এভরিবডি গাইস লিসন,,, আজকের রিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে,,, আমাদেরকে গান গেয়ে শোনাবেন,,, আমাদের শ্রদ্ধেয়
ইশিতা আপু,,, এ কথা শুনে সবাই হাততালি দেওয়া শুরু করলো,,, ঈশিতা আপু বলতে লাগলো ওই ছেমরা আমি গান পারিনা,,।
সবাই বলতে লাগল গান না পারলেও আজকে গাইতে হবে,,, সবাই চিল্লাফাল্লা শুরু করে দিয়েছে,,,, ঈশিতা আপু আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,, রাগে কটমট করছে,,, আমি তার কাছে গেলাম,,, কি হলো কি ভাবছো শুরু করে দাও""" তা না হলে সবাই আজকে তোমাকে ছাড়বে না?
(আপু) বদমাশ ছেলে আমি গান পারিনা?
(আমি) আরে কি বলছো তুমি,,,, তুমি তো আমার প্রেস্টিজ ডুবাবে,,,,, যা পারো তাই ঐ গাও,।
(আপু) তুই আমাকে বিপদে এনে ফেললি""" আর ঐ শামীম ছেমরাকে আমি দেখে নিবো,, আমার নাম উল্লেখ করা?
আমি মনে মনে হাসছি,, আজকে শাকচুন্নি বিপদে ফেলে দিয়েছি,,,এখন মজা বোঝো আমার মনে হয়না শাকচুন্নি গান পারবে,,, আর যাই হোক দেখি শাকচুন্নি কি গান গা,,, কন্ঠ টা কি রকম?
আপু বলতে লাগলো এখানে তো বাজনা নাই মিউজিক নাই,, কি গান গাইবো,,
আমি বললাম সমস্যা নাই গিটার নিয়ে আসছি? আপু আমার দিকে চোখ দুটি বড় করে তাকালো,,, যেন আমাকে গিলে খাবে?
আমি আগে ওই জানি রিয়ার জন্মদিনের গান গাইতে হবে,,, তাই গীটার টা এনে একটু সাইডে রেখে দিয়েছিলাম,,, আমি গিটার টা এনে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললাম এখন শুরু করা যাক,,, আমি 2-3 মিনিট ধরে গিটারে সুর তুলছি,, আপু সাইডে দাঁড়িয়ে আছে,,, হঠাৎ করে আমার হাত থেকে গিটারটা নিয়ে নিল,,, আমি বললাম গিটার নিলে কেন গিটারের তার গুলো তো তুমি ছিড়ে ফেলবে,,, গিটার তো মনে হয় কখনো বাজা যাও নাই,,,
(আপু) তুই চুপ করে বসে থাক?
হায় আল্লাহ আজকে তো সত্যি সত্যি আমার গিটারের বারোটা বাজাবে,, আমার এত দামে গিটার,, না পারবে গান গাইতে না পারবে গিটার বাজাতে,,,,
আপু গিটারটা নিয়ে সোফায় বসল তারপর একটা পাওয়ের উপর আরেকটা পা দিয়ে গিটারের সুর তোলার চেষ্টা করছে,,, 2৷3 মিনিট গিটারের তার গুলো আউলাঝাউলা বাজালো,,, সবাই একটু হাসাহাসি করছে,,,
হায় আল্লাহ আমি কি জন্য বলছিলাম শামীম কে আপু কথা,,, গান তো গাইতে পারবোনাঐ না,,, উল্টা আমার গীটারের বারোটা বাজাবে,,,, আমি কিছু না বলে একটু দূরে সরে গেলাম,,, আমার কাছে শামীম আসলো এসে বলতে লাগল,, কিরে শালা আপুকে তো মাইনকার চিপায় ফেলে দিয়েছি,,,, শালা মাইনকার চিপায় ফেলেছিস ভালো করেছিস কিন্তু আজকে তো আমার গীটারের বারোটা বাজাবে?
শামীম এর সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ করে মিষ্টি একটা সুর আমার কানে এসে লাগলো আমি থমকে দাঁড়ালাম? আমি খুব স্পিডে মাথাটা ঘুরিয়ে দেখি আপু গিটারের সুর তুলছে,,, খুব মিষ্টি একটা সুর,,, আমি কখনও কল্পনাও করতে পারিনি,, আপু গিটারে এরকম সুর তুলতে পারবে,,, আপুর এরকম সুর তুলা দেখে সবাই আপুর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,,, আমিও আপুর দিকে এক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছি,,,,আমি আপুকে কখনো দেখি নাই গিটার বাজাতে বা গান গাইতে,,,
আপু একমনে ১০ ১২ মিনিট ধরে গিটারটা বাজিয়ে চলছে,,, আমি হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছি,,,, আজকে ১০ বছর যাবত
গিটার বাজাচ্ছি আপুর মতো এতো সুন্দর করে গিটার কখনো বাজিয়েছি কিনা আমার মনে হচ্ছে না?
হঠাৎ করে আপু সবাইকে অবাক করে দিয়ে শো মধুর কন্ঠে গান শুরু করলো,,
মিলি হো তুম হাম কো বড় নছিবো ছে”ছোরা ইয়া হে মেনে,, কিস মত কি লাকি জো ছে?
আমি আপুর কন্ঠ শুনে টাসকি খেয়ে গেলাম,,আপু এরকম সুন্দর সুর দিয়ে হিন্দি গান গাইতে পারে তা আমি কল্পনা ও করিনি,,,অরজিনাল ভাবে যে গানটা গেয়েছে সে শুনলে ও টাসকি খেয়ে যেত?
আপু গান শেষ করার পর সবাই সাথে তালি দিতে শুরু করলো,,,আমি ও আপু গানে মুগ্ধ হয়ে তালি দিচ্ছি? আপু আমার সামনে এসে একটা হাসি দিল,,,, সে হাসি দেখে আমি আবার ও ক্রাশ খেয়েলাম,,,
আপু আমার হাতে গিটারটা দিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে বললো,,,কি ভেবে ছিলি,,,আমি গান পারি না গিটার বাজাতে পারি না?
(আমি)তো তো তুমি এগুলা শিখলা কোথায় থেকে?
আপু একটু হেসে আর তোতলাতে হবে না,,এখন তুই গান গা,,,আপু সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল এখন ফারাবী গান গাইবে,,,,
কি আর করা আমি একটা গান গাইলাম,,, আমি গান গাওয়ার সময় আপু এক দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল,,,, জানিনা আপু হয়তো আমার গানে মধ্যে ডুবেছিল,,,,, গান গাওয়া শেষ হওয়ার পর সবাই আমাকে হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানালো,,, কিন্তু শাকচুন্নি হাত তালি দেই নাই,,, আমি শাকচুন্নির দিকে তাকালাম শাকচুন্নি একটা মুচকি হাসি দিলো?
আমি শাকচুন্নি কে ইশারায় বোঝালাম,, হাততালি দেও নাই কেন,,,, শাকচুন্নি বিড়বিড় করে কি জানিয়ে বলল আমি শুনতে পাই নাই,,,, হয়তো বলেছে এটা কোন গান হইলো,,, শাকচুন্নি তোকে আমি পরে মজা বুঝাবো,,, আমার গান শুনে হাততালি দেয় না এমন মানুষ নাই?
★ সবাই আমাকে রিকুয়েস্ট করতেছে আর একটা গান গাওয়ার জন্য,,, কিন্তু না আমি আর গান গাইবো না,,, আমি রিয়াকে বললাম রিয়া তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে,,,
(রিয়া) কি কথা?
(আমি) আগে ছাদে চল তারপর বলছি?
(রিয়া) কি কথা এখানে বল?
(আমি) আরে আমি না,,, শামীম তোকে কিছু বলবে?
(রিয়া) আমার সাথে ওর কি কথা থাকতে পারে?
(আমি) অনেক কথা ঐ তো থাকতে পারে প্লীজ চল না?
(রিয়া আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাচ্ছি?
রিয়া ছাদে চলে গেল,, আমি শামীম কে বুঝিয়ে রিয়ার পিছনে পাঠালাম,,, আমি বললাম তুই রিয়াকে সুন্দর করে প্রোপোজ করবি,,, বাকিটা আমি দেখে নিবো?
রিয়া ছাদের এক কনারে দাঁড়িয়ে আছে,,, শামীম আস্তে আস্তে রিয়ার সামনে গেল,,,
রিয়া ঘুরে শামীম কে বলল,, কি কথা বলবেন বলেন,,,
শামীম সাথে সাথে পকেট থেকে নুপুর গুলো বের করে হাঁটু গেড়ে বসে বলতে লাগলো,,, রিয়া আমি জানিনা কি জন্য তুমি বারবার আমাকে রিফিউজ করো,,, কিন্তু আমি সত্যি সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি,,, আজকে তিনটা বছর তোমার পিছনে পাগলের মত ঘুরছি,, তোমার মুখে একবার হা শব্দটা শোনার জন্য,,, আমার ওপর বিশ্বাস রাখো,,, তোমার সাথে কখনো প্রেমের নামে ছলনা করবো না,, জীবনের শেষ নিঃশ্বাসটুকু থাকা পর্যন্ত আমি তোমার পাশে থাকব,,, তোমাকে অনেক ভালোবাসবো,,, তুমি হয়তো জানো না আমার দিনের সকাল শুরু হয় তোমাকে নিয়ে এবং সন্ধ্যা রজনী শেষ হয় তোমাকে নিয়ে,,, সত্যি আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি,,,,, প্লিজ আজকে তুমি আমাকে রিফিউজ করো না,,, তাহলে সত্যি সত্যি আজকে আমি কিছু একটা করে বসবো?
(রিয়া) দেখেন আমি আপনাকে আগেই বলেছি আমি আপনাকে ভালবাসতে পারব না?
(শামীম) কেন পারবে না,,, আমাকে কি তোমার পছন্দ হয় নাই,,, নাকি আমি দেখতে খারাপ,,,।
(রিয়া) আপনি দেখতে খারাপ আমি সে কথা বলি নাই,,,।
(শামীম) তাহলে সমস্যা কি কেন বার বার আমাকে রিফিউজ করছো?
(রিয়া) আসলে আমি একজনকে ভালোবাসি?
(শামীম) কে সে,,, নিশ্চয় ফারাবী?
(রিয়া)হ্যা?
(শামীম) কিন্তু ফারাবী তো তোমাকে ভালোবাসে না,,,
(রিয়া) আমি জানি,,, আমি আমার মনের কথাগুলো ওকে ঠিক সময় জানাতে পারেনি,,,, কিন্তু আমি ওকে পুরোদমে ভালোবাসি,,, ওকে কখনো ভুলে আপনাকে ভালবাসতে পারবনা,,, শুধু শুধু আপনি আমার কাছ থেকে আরো কষ্ট পাবেন?
আমি এতক্ষণ ধরে ছাদে ওঠার সিঁড়ির মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলাম,,, আমি আস্তে আস্তে রিয়ার কাছে গেলাম,, রিয়া একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল,,,, দেখ রিয়া একতরফা কখনো ভালবাসা হয় না,,, আমি তোকে সব সময় বন্ধু বন্ধুঐ ভেবে এসেছি,,,, বন্ধুর বাহিরে কখনো ভাবি নাই,,,, আর মরার আগ পর্যন্ত আমার ভালো বন্ধু হয়ে থাকবি,,, আসলে ভালোবাসাটা অনুভব করার বিষয়,,,, প্রকৃত ভালোবাসা টা তখনই মধুর হয়,,, যখন একজনের মনের কথা আরেক জন উপলব্ধি করতে পারে বা অনুভব করতে পারে। শামীম ও আমার বন্ধু,,, ওর সম্পর্কে আমার চেয়ে বেশি কেউ জানে না,,, 7 ঘণ্টা ধরে ঘুরে তোর পছন্দের নূপুরগুলো এনেছে। তোকে ও অনেক ভালোবাসে,,, আজকে তিনটা বছর যাবত ও তোর পিছনে ঘুরছে,,, সারাদিন চলতে গেলে খাইতে গেলে তোর কথা বলে,,,, এরকম ভালোবাসা অবহেলা করলে পরে পস্তাবি,,, তখন হাজার খুঁজলেও এরকম ভালোবাসা পাবি না,,, আমার বিশ্বাস শামীম তোকে অনেক সুখে রাখবে,,, প্লিজ ওকে তুই ফিরিয়ে দিস না,,,।
(রিয়া) দেখ ফারাবী আমি তোর কথাটা রাখতে পারবো না?
(আমি) বন্ধুত্বের কোনো দাম নাই তোর কাছে,,, আমি এত করে তোকে বুঝাচ্ছি,,, তারপরও কি জন্য তুই বুঝতে পারছিস না।
আরে পাগল আমি তোকে কথা দিচ্ছি,,, আমি সব সময় বন্ধু হয়ে তোর পাশে থাকবো,,,, তুই কি চাস আমি তোর জীবন থেকে হারিয়ে যাই?
(রিয়া) দেখ ফারাবী মানুষের মন একটাই একবার কাউকে দিয়ে ফেললে,,, সে জায়গায় আর কাউকে বসানো যায় না?
(আমি) একতরফা কাউকে মনের ভিতরে জায়গা দিলে,, সে জায়গা থেকে শুধু কষ্টে ঐ আসবে,,, আমি তোর বন্ধু হয়ে বলছি,,, শামীম ছেলেটা ভালো তুই একবার ওকে বিশ্বাস করে দেখ,,,,, দুদিন পরে আমি যে তোর বন্ধু,,, আমাকে ঐ ভুলে যাবি?
(রিয়া) কক্ষনো না?
(আমি) তুই আমার কোন কথা শুনবি না?
(রিয়া)না আমি তোর এ কথাগুলো রাখতে পারছিনা?
(আমি) রাখতে পারবি না তো?
(রিয়া)না?
(আমি) আর কখনো আমি তোর সামনে আসবো না,,, বন্ধুত্বের ইতি এখানেই শেষ করে দিলাম?
(রিয়া) তুই এটা বলতে পারলি?
(আমি) কেন বলতে পারবো না,,, যে বন্ধু একজন বন্ধুর কথা রাখতে পারে না,,, তার সাথে কোনো বন্ধুত্ব নাই?
শামীম উঠে ছাদ থেকে নিচে নেমে যাচ্ছে,,।
(আমি) দেখ রিয়া ও কষ্ট পেয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে,, তুই যদি আমার বন্ধু হয়ে থাকিস,, তাহলে ওকে আটকা।
(রিয়া)না আমি পারবো না?
(আমি) পারবি না তো আচ্ছা আমিও ওর সাথে চলে যাচ্ছি,,, আর কখনো তোর সামনে আসবো না,,,, আমি ঘুরে নিচে নেমে যাচ্ছি,, হঠাৎ করে পিছন থেকে কে যেন আমাকে টেনে ধরল,,,, পেছন ঘুরে দেখি রিয়া?
(আমি) আটকালী কেনো?
(রিয়া) তোর বন্ধু শামীমকে বল আস্তে।
(আমি) আমি পারবো না ও কষ্টকে পেয়ে চলে যাচ্ছে তুই গিয়ে ওকে আটকা।
রিয়া দৌড়ে বিয়ে শামীম'এর হাত ধরল,,
শামীম অবাক হয়ে গেল,,, একটু ভাব নেবার জন্য বলতে লাগলো,,, হাত ধরোছো কেন ছাড়ো?
(রিয়া) ছাঁদে আসো?
(শামীম) কেন ছাদে গিয়ে কি করবো,, তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না?
(রিয়া) এত কথা বল কেন আমি বলছি ছাদে আসার জন্য?
শামীম এবং রিয়া ছাদে আসলো,, পাশাপাশি দুজন দাঁড়িয়ে আছে কেউই কোনো কথা বলছে না,,,, কি হলো শালা দাঁড়িয়ে আছিস কেন,,, নতুন করে প্রপোজ কর,,, সাথে সাথে শামীম হাঁটু গেড়ে বসে নুপুর গুলো দিয়ে প্রপোজ করল,,, রিয়া শামীম এর হাত থেকে নুপুর গুলো নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,, বেচারা শামিম কিছু বলতে পারছে না,,,,
(আমি) কি হলো রিয়া দাঁড়িয়ে আছিস কেন?
(রিয়া) তো কি করবো?
(আমি) জড়িয়ে ধর?
(রিয়া) শয়তান ছেলে তুই যা এখান থেকে?
(আমি) আচ্ছা আচ্ছা আমি যাচ্ছি তাদের কথা বলা শেষ হলে আমাকে ডাক দিস?
আমি ছাদ থেকে নিচে নামছি আর মনে মনে বলছি আমার শাকচুন্নি বড় আপু টা গেলে কই,,, নিচে নেমে সারা জায়গায় খুজলাম,,, কিন্তু আপুকে কোথাও পাচ্ছি না,,, দিলাম একটা ফোন,,, শাকচুন্নি ফোন ধরে বলতে লাগলো?
(আপু) ফোন দিয়েছিস কেন?
(আমি) আরে কি বলছো কি হল আবার?
(আপু) কি হব তুই গিয়ে রিয়ার সাথে ছাদে কোলাকুলি কর?
(আমি) আমি কোলাকুলি করব কেন রিয়াকে তো শামিমের সাথে জোড়া লাগিয়ে দিয়েছি,,, শামীমা আর রিয়া এখন ছাদে কোলাকুলি করছে,,,
(আপু) বদমাইশ ছেলে তুই ঐ জায়গায় কি করছিলি?
(আমি) আরে আমি তো ওদেরক জোড়াটা লাগিয়ে দিয়েছি?
(আপু) তোর জোড়া লাগেনি আমি বের করবো,,, তুই আগে বাসায় আয়?
(আমি)কার বাসায়?
(আপু) কেন তোদের বাসায়?
(আমি) তুমি আমাদের বাসায় কি কর?
(আপু) খালাম্মা + শাশুমার সাথে কথা বলছি।
(আমি) দেখো আপু তুমি আম্মুর সাথে এখন কিছু বলো না,,, আমি পরে আম্মুকে সব বুঝিয়ে বলবো?
(আপু) তোর আপুর গুষ্টি কিলাই তুই তাড়াতাড়ি বাসায় আয়,,,
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে আসছি আমি?
ফোনটা কেটে দিলাম দু মিনিট পরে রিয়া ফোন দিল আমিও পুরো নাই আবার ছাদে গেলাম,,, যেয়ে দেখি দুজনে দাঁড়িয়ে হেসে কথা বলছে,,, শামীম একটু সামনে এসে বলল শালা তুই রিয়ার সাথে এখন যত কথা কম বলবি,,, ততো ঐ আমার জন্য ভালো,,,, আচ্ছা ঠিক আছে কম কথা বলব,,, এখন আমি যাওয়ার পরে রিয়া কি কি করেছে,,,
)শামিম) কে কি করবে,,, বলেছে এগুলো পরিয়ে দেওয়ার জন্য,,, পরিয়ে দিয়েছে বাস,,,
(আমি) তোকে জড়িয়ে ধরে নাই?
(শামিম) শালা পাঁচ মিনিট জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে ছিল,,, আর কেঁদে কেঁদে কি বলল জানিস।
(আমি) কি বললো?
(শামিম) আমি যেন ওকে কষ্ট না দেয়।
(আমি) শাল কষ্ট দিবি কেন তোকে তো আমি খেয়ে ফেলবো,, ও আমার বন্ধু।
আমরা দুজন রিয়ার কাছে গেলাম রিয়া একটু আনমনা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,, আমি বললাম কি হলো রিয়া এভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেন,,, না কিছু না,,, তাহলে তোরা থাক গল্পগুজব কর আমি বাসায় যাই।
শামিম? বাসে যাবি কেন?
(আমি) আরে খুব খিদা লেগেছে?
(শামিম) তাহলে চল খেয়ে আসি?
(আমি) কোথায় থেকে খেয়ে আসবো?
(শামিম) কেন রেস্টুরেন্টে যাব?
(আমি)তাই নাকি,,, তাহলে চল,,, আমি তো মনে মনে এটাই চাচ্ছি,।
আমরা তিন জন নিচে নামলাম,,, বাইক একটা কিভাবে তিনজন যাব,,, আর শাকচুন্নি কে ফেলে যাব,,, শাকচুন্নি তো বলেছে,, কিছুক্ষনের ভিতর বাসায় যাওয়ার জন্য,,,, শামীম বলল আপুকে একটা ফোন দে,, আমি শাকচুন্নি কে একটা ফোন দিলাম,,,, বললাম রেডি হয়ে গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে,,,, তারপর 1টা রিস্কা নিয়ে বাসে চলে গেলাম,,, যেয়ে দেখি ইশিতা আপু সেজেগুজে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছি,,, আমি রিসকা থেকে নেমে আমার বাইক টা বের করলাম তারপর শাকচুন্নি কে বল্লাম পিছনে উঠার জন্য,,, শাকচুন্নি কিছু না বলে পিছনে উঠে বসলো,,, এক হাত দিয়ে আমার কাধে ধরে আছে,,, আমি বললাম তুমি কি আম্মু কে কিছু বলেছো,,,,, কি বলবো,,, আমাদের কথা,,,না কিছু বলিনি,,, এমনি খালামণিকে দেখতে গিয়েছিলাম,,, খালামণি বললো আজকের রাতটা তোদের বাসায় থেকে যেতে,,,, তারপর তুমি কি বললে,,,,, আমিতো একপায়ে ঐ রাজি,,,,, খাইছে আমারে শাকচুন্নি থাকলে তো আমার ঘুমের বারোটা বাজাবে,,,,
(আপু) এখন আমরা কোথায় যাচ্ছি,।
(আমি) শামীমেরকে রিয়ার সাথে জোড়া লাগিয়ে দিয়েছি,,, সেজন্য শামীম ট্রিট দিবে।
(আপু) তুই রিয়ার সাথে ছাদে কী করছিলি?
(আমি) আমি কি করব রিয়াকে বুঝাচ্ছিলাম,, অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করেছি,,,।
(আপু) রিয়ার সাথে তুই কিন্তু কম মিশবি।
(আমি) রিয়া তো এখন আমার সাথে মিশার টাইম ঐ পাবে না,,,।
এ কথা বলতে বলতে ওদের কাছে চলে আসলাম,,, রিয়া শামীমের বাইকের পিছনে উঠেছে,,, আর শাকচুন্নি তো আমার পিছনে আগেই আছে,,, শামীম বাইক একটু স্পিডে চালাচ্ছে,,, আমি বুঝতে পেরেছি,, রিয়া যেন ওকে জড়িয়ে ধরে,,,, আমি শামিমকে জোরে উদ্দেশ্য করে বললাম বাইকে কি আর স্পিড নাই,,, শামীম আরোহী স্পিড বাড়িয়ে দিলে,,, ততক্ষণে রিয়া শামীমকে একটু জড়িয়ে ধরেছে,,, শামীম আমার বাইকের একটু আগে আমি একটু পেছনে পড়ে গেলাম,,,
কিন্তু আমার শাকচুন্নির বলতে শুরু করল,,, কি হলো বাইক চালাতে পারিস না,, ও তোর আগে যায় কিভাবে,,,,
আরে ও কি জন্য স্পিডে চালাচ্ছে ও তুমি বুঝতে পারছো না,,,,
(আপু) আমার বোঝার দরকার নাই,, তুই ওর আগে থাক,,,
(আমি) তাহলে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরো।
(আপু) তুই আগে স্পিড বাড়া?
কি আর করা দিলাম স্পিড বাড়িয়ে,, সাথে সাথে আমাকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরেছে,,, আমি আরো স্পিড বাড়িয়ে দিলাম,, ততক্ষনে শামীম আমার পিছনে পড়ে গেছে,,, এবার আমি একটু স্পিড কমিয়ে দিলাম,,,, অনেকক্ষণ ইস্পিড পালাবদল করে রেস্টুরেন্টে গিয়ে পৌছালাম,,,,
একটা টেবিলে আমরা চারজন বসলাম,,, হঠাৎ করে আমাদের টেবিলে একটা মেয়ে আসলো খাবারের অর্ডার নেওয়ার জন্য,,, মেয়েটার দিকে আমি তাকিয়ে টাস্কি খেয়ে গেলাম,,, জিন্সের প্যান্ট সাদা শার্ট চুলগুলো একটু স্টাইলিশ করে বাধা,,, ঠোঁটে হাল্কা গোলাপি লিপস্টিক,,, চেহারার ফেস কাটিং খুবই সুন্দর,,, আমি মেয়েটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি,,, ঈশিতা আপু যে এখানে আছে আমার মনে ওই নাই,,,, মেয়েটার ডাকে ঘোর কাটল ভাইয়া অর্ডার দিবেন না,,,, আমি শাকচুন্নির দিকে তাকালাম,,, হায় আল্লাহ আমি শেষ,,,, এমন ভাবে শাকচুন্নি আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,, চোখের পলক একটু পড়ছে না।
আমি শামীমকে আস্তে করে বললাম অর্ডার দে।
শামীম অর্ডার দিল মেয়েটা অর্ডার নিয়ে চলে যাচ্ছে এমন সময় আপু মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগল,,, খাবার গুলো অন্য ওয়েটারকে দিয়ে এখানে পাঠাবেন,,, মেয়েটা আচ্ছা বলে চলে গেল,,, মেয়েটা চলে যাওয়ার পর শাকচুন্নি আমাকে বলল দাড়া,,, আমি বললাম কেন দাড়াবো কেন,,,, তোকে বলছি দাঁড়াতে দাঁড়া,,,, আমি দাড়ালাম,, দেখো এখানে কিন্তু আমাকে থাপ্পর দিবানা একানে বহুৎ লোক আছে,,,
(((চলবে))
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব ১৯
★এ কথা বলার সাথে সাথে।
ঠাসসসসশ,ঠাসসসসসস। লুচ্চা ছেলে তুই কি মনে করিস আমি কিচ্ছু বুঝি না,, মেয়ে মানুষ দেখলেই মন আনচান আনচান করে তাকিয়ে থাকতে মন চায়,,,, আমি গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি,,, আশে পাশে আড়চোখে তাকালাম,, অনেকে আমার দিকে তাকিয়ে আছে,,,, রিয়া এবং শামিমের দিকে তাকালাম,,, ওরা দুজন মিটিমিটি করে হাসছে,,, আমার একটু রাগ উঠে গেলো। আমি রাগে এ টেবিল ছেড়ে আরেক টেবিলে গিয়ে বসলাম,,,। সাথে সাথে আরেকটা মেয়ে ওয়েটার আসলো,,,, একই কালারের ড্রেস,,, মেয়েটা বলল স্যার কি লাগবে,,, আমি বললাম বোন কিচ্ছু লাগবে না আমার,,, আপনি যান এখান থেকে?
মেয়েটা বলল স্যার কি বলছেন এগুলা।
তোর স্যার এর গুষ্টি কিলাই যা এখান থেকে,,, মেয়েটা তবু এখানে ঐ দাঁড়িয়ে আছে,,, পিছন থেকে কে যেন আমার গেঞ্জি টানছে,,, আমি পেছন ঘুরে দেখি শাকচুন্নি,,, তুই আলাদা টেবিলে আসছিস মেয়ের সাথে কথা বলার জন্য,,,
দেখো আমাকে আর থাপ্পড় দিও না,,, আমি প্রমিস করে বলছি আর কার সাথে কথা বলবো না কারো দিকে তাকাবো না।
মেয়েটা চলে গেল আমাকে টেনে নিয়ে আগের টেবিলে বসালো। রিয়া এবং শামীম এখনো হাসছে,,,, আমি মাথা নিচের দিকে দিয়ে বসে আছি,,৭ ৮ মিনিট পরে আগের মেয়েটাঐ আসলো,,,, আপু সাথে সাথে বলতে লাগলো আপনাকে না না করেছি আসার জন্য,,,, সরি ম্যাম আমাদের এখানে আর কোনো লোক নেই,,, সবাই যার যার কাজ করছে,,,, এখানে সবার অর্ডার নেওয়া এবং দেওয়া আমার কাজ।
আপু তারাতারি মেয়েটার হাত থেকে খাবার গুলো নিল ঠিক আছে আপনি যান,, আমি তখনও মাথা নিচের দিকে দিয়ে আছি,,, আপু বলতে লাগলো কি হলো খাবি না',,, না আমি খাব না তোমরা খাও,,, তুই খাবি আরো ভালো বলবি। কি আর করা শাকচুন্নির সাথে পারা যাবে না,,,, খাওয়া দাওয়া শেষ করে,, বিল মিটিয়ে বাইকে উঠলাম,,,, আমি বাইক এক মনে চালিয়ে যাচ্ছি,, শাকচুন্নির সাথে কোন কথা বলছি না,,,, শাকচুন্নি হয়তো ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে,,, যে আমি একটু কষ্ট পেয়েছি তার ব্যবহারে,,,, বাসায় পৌঁছে আমি আমার রুমে চলে গেলাম,,,, শাকচুন্নি আম্মুর সাথে কি জানি বলছে,,,,, আমি দরজা লাগিয়ে শুয়ে পড়লাম,,,,।
দশ মিনিট পর আমার দরজায় খটখট শব্দ,,,, আমি বুঝতে পেরেছি কে এসেছে,,, আমি দরজা খুললাম না,,,,আপু অনেক ডাকাডাকি করল অনেক সরি বলল। কিন্তু আমি দরজা খুললাম না? ছোট চাচ্চু চট্টগ্রাম থাকে তাকে একটা ফোন দিলাম,,, আমি চাচ্চু কে বললাম আগামীকাল তোমাদের এখানে আসছি,,,, চাচ্চু আমার আসার কথা শুনে অনেক খুশি(((((শাকচুন্নি কে একটু ট্রাইড দিতে হবে,,, দেখি শাকচুন্নি কি করে কথায় কথায় আমাকে থাপ্পড় মারে)))))
অনেক ভেবে চিন্তে ঘুমিয়ে পড়লাম,,,, ফজরের আজান দিচ্ছে আমি ঘুম থেকে উঠে মসজিদে চলে গেলাম,,, নামাজ শেষ করে একটু হাঁটাহাঁটি করলাম ,,,, 9 টার ট্রেনে চট্টগ্রামে যাবো,,,,, আম্মু হইত দেবে না কিন্তু আমার যেতে হবে,,, বাসায় এসে বিছানায় শুয়ে পরলাম নয়টার ট্রেন হলে 8 টা বা সাড়ে আটটায় উঠেলেই চলবে,, শুয়ার সাথে সাথে ঘুম আসে দুচোখে জড়ো হল,,, কিছুক্ষণ পরে মাথার মধ্যে ঠান্ডা একটা হাতের স্পর্শ অনুভব করছি,,,, চোখ খুলে দেখি আম্মু আমার মাথায় হাত বোলাচ্ছে,,, আমি আম্মুকে দেখে আম্মুর কোলে মাথা দিয়ে আবার শুয়ে পড়লাম,,,
আম্মু বলতে লাগলো,,, কি হয়েছে তুই মেয়েটাকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছিস কেন।
আমি ধর ফুরিয়ে চোখ খুলে তাকালাম,,, কার কথা বলছো কোন মেয়ের কথা বলছো।
(আম্মু) কেন ঈশিতার কথা বলছি।
(আমি)মানে আমি বুঝতে পারছিনা কি বলছো।।
(আম্মু) রাতে তোকে ২ ঘন্টা ডাকলো তুই দরজা মেললি না কেন।
(আমি) দরজা না মেললে এখানে কষ্ট পাওয়ার কি আছে।
(আম্মু) মেয়েটা তোকে অনেক পছন্দ করে,,, আমি জানি মেয়েটার একটু রাগ বেশি,,, কিন্তু রাগী মানুষের মায়া মহাব্বত বেশি থাকে।
(আমি)আমি আম্মুর কথা শুনে টাশকি খেয়ে গেলাম,, আপু আমাকে পছন্দ করে তুমি জানো কিভাবে?
(আম্মু) আমার একমাত্র ছেলে সারাদিন কোথায় থাকে কি করে কোথায় খায় কার সাথে কথা বলে,, আমি জানবো না তো কে জানবে।
(আমি)তার মানে তুমি আগেই জানতে,,,,
(আম্মু) শুধু আগে জানতাম না,,, তোর আর ঈশিতার বিয়ের কথা তোর খালা খালুর সাথে আগেই ঠিক করে রেখেছি,,,,মেয়েটাকে আমার খুব পছন্দ তোর খালু দুদিন পরে আসবে,, তোর আব্বু আসবে দুদিন পরে,,, সবাই আসলে তোদের বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করবো।
(আমি) কি বলছো আম্মু আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছি না,,, আমি কি স্বপ্নের মধ্যে আছি নাকি, হাতে একটা চিমটি কাটলাম ওমা ব্যাথা পাচ্ছি, তার মানে আমি বাস্তবেই আছি।
(আম্মু) দেখো পাগল ছেলে কি করে?
(আমি) আম্মু তুমি সকাল সকাল যে কথা শোনালে পাগল না হয়ে উপায় আছে,,,,আর তুমিতো আগে কখনও আমাকে একথা বলো নাই,,।
(আম্মু) আগে বললে কি করতি,,,
(আমি) আগে বললে এতদিন একা একা বাসার সব কাজ তোমার করতে হতো না?
(আম্মু) একা একা সব কাজ করতে হতো না মানে?
(আমি)আমি কি বোঝাতে চাচ্ছিলাম,, তুমি বুঝতে পারো নাই?
আম্মু একটু মুচকি হেসে আমার এত বোঝার দরকার নেই।
(আমি) আম্মু একটা কথা বলি?
(আম্মু)কি কথা?
(আমি) খালু আসার দরকার কি ল্যাপটপে না হয় মেয়ের বিয়ে দেখবে,।
তোরে তো আগে জানাইয়া ভুল করলাম,,, এখনতো আমাকে পাগল করে ছাড়বি,,,,।
(আমি)তোমার ভাল জন্যই বলছি,,, তুমি সারাদিন বাসায় একা একা থাক,,, আমি এখানে থাকি ওখানে থাকে,,,,,মানুষের আপদ বিপদের কথা তো বলা যায় না।
(আম্মু)হয়েছে আমাকে আর বোঝাতে হবে না,,, তুই কি বলতে চাইছিস আমি বুঝছি?
আজকে বিকালে তোর খালা মণির আসবে আসলে কথা বলবো?
সত্যি আমার লক্ষি আম্মু।
(আম্মু) হয়েছে হয়েছে আর বেশি ভালোবাসা দেখাতে হবে না।
(আমি) আমি আমার আম্মুকে ভালোবাসে দেখাবো কার কি,,, জানো আম্মু তোমার বোন ঝি না আমাকে কথায় কথায় থাপ্পর মারে,,,
(আম্মু) মারবেই তো,,, তোকে তো আমি ঠিক করতে পারিনা,,তাই ওকে দিয়ে তাকে ঠিক করাবো।
(আমি) তোমার বোন ঝি আমাকে ঠিক করবে হা হাহাহাহা।
(আম্মু) পাগল ছেলে কিভাবে হাসে দেখো,,,, শুন উঠ নাস্তা করে তারপর বাজারে যা।
আচ্ছা তুমি যাও আমি আসছি,,, আবার একটা কথা মনে পড়ল,,,আম্মু আম্মু,,, কি হল আবার ডাকছিস কেন,,, আমাদের এই কথা কি ইশিতা আপুর জানে,,,, না?
তাহলে তুমি ঈশিতা আপুকে এ ব্যাপারে কিছু বলবে না,,, আমি তাকে পরে জানাবো।
(আম্মু) আচ্ছা ঠিক আছে এখন উঠে আয়?
(আমি) তুমি যাও আমি আসছি,,,
আমি উঠে একটু ফ্রেস হয়ে নিলাম,, তারপর আপুন যে রুমে শুয়ে আছে সে রুমে চলে গেলাম,, যে দেখি একটা কম্বল দিয়ে মরা মানুষের মত শুয়ে আছে,, পা থেকে মাথা অব্দি কম্বল দিয়ে ঢাকা,,, আমি আস্তে আস্তে খাটের কাছে গেলাম,,, রুমে হালকা অন্ধকার,,, ভোর হয়েছে রুমের ভিতর থেকে বোঝা যায় না,,,
আমি খাটের এক পাশে বসলাম,, তারপর আস্তে আস্তে কম্বলটা টান দিতে লাগলাম,, আমি একবার কম্বল টান দিয়ে অল্প নিয়ে আসি,, আপু আবার পড়োনাই টান দিয়ে মাথা ঢেকে ফেলে,,, এভাবে কয়েক বার করার পর আমি হাল ছেড়ে দিলাম,,, আস্তে আস্তে কম্বলের ভিতরে ঢুকতে লাগলাম,,, কড়া একটা পারফিউমের ঘ্রাণ আমার নাকে আসতে লাগলো,,, আমি আস্তে আস্তে ফুল বডি কম্বলের ভিতরে ঢুকিয়ে ফেললাম,,,, সাথে সাথে একটা মিশ্রণ ঘ্রাণ আমাকে গ্রাস করে ফেলেছে,,, যে ঘ্রাণটা শুধু মেয়ে মানুষে শরিল থেকে আসে,,, ট্রিবো সেই মিশ্রন ঘ্রাণ নাকের ছিদ্র দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে আমার সমস্ত পালস গুলো কে অসাড় করে দিচ্ছে?
হঠাৎ করে আপু একটু নড়েচড়ে আমাকে কোলবালিশ মনে করে জড়িয়ে ধরেছে,,,হায় হায় এমনভাবে ধরেছে যে আমি নড়তে পারছি না আবার একটা পা ও দিয়েছে আমার উপর,,, কিছুক্ষণ ধরে চুপ করে শুয়ে আছি,,, এক অন্যরকম ভালো লাগার কাজ করছে,,, ও মা হঠাৎ করে আপু তার হাত দিয়ে আমার নাক মুখ চোখ দেখতে লাগলো,,, হয়তো মনে মনে বলছে বালিশ মানুষ হলো কিভাবে,,, আমার মুখ মন্ডল থেকে যখন হাত সরিয়ে মাথার চুলে হাত দিল,,, আপু হঠাৎ করে জড়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো,,হয়তো মনে করছে কোবালিশের মাথায় চুল আসলো কোথা থেকে,,,সাথে সাথে আমি আপুর মুখ চেপে ধরেছি,,, একদম চিৎকার দিবানা তাহলে মেরে ফেলবো,,, আপু আর কোন কিছু বলে না,,, আমি আপুকে শুয়ে দিলাম তারপর আমি তার উপরে শুয়ে পড়লাম,,,
(আমি) তুমি এভাবে চিৎকার দিলে কেন?
(আপু) বদমাইশ ছেলে তুই এখানে কিভাবে আসলি,,, খালা মনি দেখলে তো সর্বনাশ হবে যাবে,,, তুই যা এখান থেকে তারাতারি,,
আমার ঠোঁট আপু ঠোঁটের কাছে নিয়ে বললাম,,, যাওয়ার জন্য তো আসেনি কিস করার জন্য আসছি,,,
(আপু) কিসের কিস তুই যা কান থেকে খালা মণি দেখলে সমস্যা হবে৷
দুজন এত কাছে যে দুজনের নিঃশ্বাস ক্রমশে ভারী হয়ে আসছে,,, আপুর বুক এত দ্রুত উঠানামা করছে যে বিদ্যুতের গতি কেও হার মানাবে,,, আমি আপুর উপরে লেপ্টে আছি কম্বলের উপর থেকে যে কেউ দেখলে মনে করবে একজন শুয়ে আছে,,
(আমি) আম্মু দেখলে কিচ্ছু হবে না,,, কালকে রাতে তুমি আমাকে দু'টা থাপ্পড় দিয়েছো,,, সেজন্য এখন দুটা কিস দাও।
(আপু) আমি পারবো না?
তুমি জানো কালকে রাতের থাপ্পরের কারনে আমি আজকে চট্টগ্রাম চলে যেতাম।
(আপু) সত্যি?
(আমি)হ্যা?
(আপু) তুই আমাকে এভাবে কষ্ট দিস কেন।
(আমি) কখন কষ্ট দিলাম?
(আপু) কাল রাতে তোকে এক ঘন্টা ধরে ডাকলাম তুই দরজা মেললি না,, আজকে আবার চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছিলে,,,, তুই আমাকে ছেড়ে থাকতে পারতি।
(আমি)না পারতাম না কিন্তু কি করবো বলো,,, তুমি তো শুধু আমাকে কথায় কথায় থাপ্পড় মারো।
(আপু) আচ্ছা ঠিক আছে আর কখনো থাপ্পড় দিব না((( একটু আদুরী হয়ে)
(আমি) থাপ্পড় যত খুশি দিও এখন আমাকে কিস দাও।
(আপু) যা লুচ্চা ছেলে আমার লজ্জা করে,,
আপু একথা বলতে দেরি আমি চোখ বন্ধ করে আপুর ঠোঁটে মধ্যে আমার ঠোট ডুবিয়ে দিলাম,,, পাগলের মত কিস করতে লাগলাম,,, আপু আমার ঠোটের উষ্ণন ছোঁয়া পেয়ে শিহরিত হয়ে উঠলো নিজের অজান্তে আমার মাথার চুল খামছে ধরলো,,, আমি লম্বা সময় ধরে কিস করে যাচ্ছি,,,, হঠাৎ করে আম্মুর ডাক মনে হয় আপুর রুমের দিকে আসছে,,,আমি তারাতারি আপুকে ছেড়ে দিলাম,,,তার পর আপুকে বললাম কম্বল দিয়ে পা থেকে মাথা অব্দি ডেকে ফেলতে,, আপ সাথে সাথে কম্বল দিয়ে পা থেকে মাথা অব্দি ডেকে ফেললো। আমি একটু দূরে দাঁড়িয়ে আপুকে ডাকতে লাগলাম,,,
কই একটা ডাক দেওয়ার পরে আম্মু আসলো,,, আম্মু এসে বলল তুই এখানে কি করিস,,,, আমি আপুকে ডাকতে আসছি,,,, তোর ডাকতে হবে না,, তুই যেয়ে নাস্তা কর,,, আমি চলে যাচ্ছি আম্মু পেছন থেকে বলল দাঁড়া,, তোর ঠোঁটে এগুলা কি,,, হায় আল্লাহ ধরা পড়ে গেলাম নাকি,,, আমার ঠোঁটে মনে হয় কোন কিছু একটা লেগে আছে,,,, হয়তো লিপিস্টিক।
আমি ঠোঁটে হাত দিয়ে দেখি রক্ত,,,,, হঠাৎ করে ঠোঁটটা ব্যাথা করতে শুরু করে দিয়েছে,,,, তার মানে আমি বুঝতে পেরেছি,,, শাকচুন্নি আমার ঠোঁটে কামড় বসিয়ে দিয়েছে,,,, খুব জ্বলতেছে,, শাকচুন্নি তোকে আমি পরে মজা বুঝাবো। এখন আম্মুর কাছ থেকে কোনমতে বাঁচতে হবে,,,
ও কিছু না,,
কে বলল কিছু না এদিকে আয়,,, আমি আস্তে আস্তে আম্মুর কাছে যাচ্ছি,,, ভয়ে আমার সারা শরীর কাঁপতে লাগল ততক্ষণে আপু ঘুম থেকে উঠে বসলো শাকচুন্নির দিকে তাকিয়ে দেখি শাকচুন্নির ঠোটে ও রক্ত হায় হায় দুনো জনের ঠোঁটে ওই রক্ত আজকের ধরা পড়ে গেছি গ্যারান্টি,,??
(((((চলবে))))))))
•
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব ২০
★ আমি হাত দিয়ে রক্ত টা মুছতে মুছতে আপুকে ইশারায় বুঝালাম তোমার ঠোঁটে রক্ত,,, কিন্তু শাকচুন্নি আমার ইশারা করা ভাষা বুঝে না,,,, শুধু আমাকে মাথা দিয়ে বোঝাচ্ছে কি হইছে,,,, আমি আবারো তাকেই ইশারাই বুঝালাম তোমার ঠোঁটে রক্ত তাড়াতাড়ি মুচ,,,,, শাকচুন্নি এবারও কথা বুঝে নাই,,, আজকের শাকচুন্নির কারণে আম্মুর কাছে ধরা পড়তে হবে? এবার আমি একটু রাগি লুক নিয়ে আঙ্গুল দিয়ে তাকে বোঝালাম?
সে এবার বুঝতে পেরেছে,,, সে তার ঠোটে হাত দিয়ে দেখতে পেলে রক্ত,,,, সাথে সাথে বিছানার চাদর দিয়ে রক্ত টা মুছে ফেলল,,,, তারপর আমাকে ইশারা করে বোঝালো রক্ত আছে,,,, আমি তাকে বললাম না?
★ আমি আমার ঠোঁটের রক্ত টা হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে মুছে আম্মুর কাছে গিয়ে দাড়ালাম,,, আম্মু আমার ঠোটে হাত দিয়ে তোর ঠোঁট কেটেছে কিভাবে,,,,
★ বাথরুমে সিলিপ খেয়ে পড়ে গিয়েছিলাম((( ঠাডাপড়া মিছা কথা)))
(আম্মু) এত বড় ছেলে বাথরুমে সিলিপ খেয়ে পড়ে যায়,,, আচ্ছা ঠিক আছে তুই যেয়ে মলম লাগিয়ে নে?
আমি বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে ওখান থেকে চলে আসলাম,,, আমি আমার রুমে ঢুকে ড্রেসিংএর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখি বেশ খানিকটা কেটে গেছে,,,, আমি ঠোটে মলম লাগিয়ে নাস্তা করতে চলে গেলাম,,, দেখি আম্মু আপুর রুম থেকে বাহির হইতেছে,,,, আম্মু আমার দিকে এক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে,,,, আম্মু হয়তো বুঝতে পেরেছে কিছু,,, আমি চুপচাপ নাস্তা করে আমার রুমে চলে যাচ্ছি?
★ আম্মু আমাকে ডাক দিল,,, কোথায় যাচ্ছিস,,,,,, রুমে যাচ্ছি,,,, বাজারে যাবি না,,,, আম্মু তুমি জান আমি বাজার করতে পারি না,,,, না পারলেও আজকে তোকে বাজার করতে হবে,,, আম্মু তুমি বুঝতে পারছ না আমি বাজারে গেলে,,, বলবা একটা আনার জন্য নিয়ে আসবো অন্যটা,,, আর কোনটার দাম কত এটাও তো আমি জানি না?
(আমমু)তুই দাম জেনে কি করবি তুই কি সবজির ব্যবসা করবি,,, তুই যেয়ে জিজ্ঞাসা করবি কোনটা কত,,, আর আমি এখানে বাজারের লিস্ট দিয়ে দিয়েছি কি কি আনবি?
(আমি) হুম বুঝলাম,,, আচ্ছা আমি যদি দাম জিজ্ঞাসা করি,,, যদি আমাকে বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলে?
(আম্মু) তোকে বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলবে কেন,,, যদি বাড়িয়ে ও বলে তাহলে দেখবি আরো অনেক লোক কিনতেছে ওদের কে জিজ্ঞাসা করবি?
(আম্মু) আমি যদি খালি লোকেরারে জিজ্ঞাসা করি তাহলে আমি বাজার করব কোন সময়?
(আম্মু) তোকে নিয়ে আর পারা যাবে না,, এত বড় ছেলে হয়েছিস এখন যদি বাজার টা করতেন না পারিস,,, তাহলে পরে কি করবি?
হঠাৎ করে আপু কন্ঠ শুনতে পেলাম,,, কি হয়েছে খালা মনি?
(আম্মু) দেখ না ওরে বলতেছি বাজার করার জন্য,,, ও বলে বাজার করতে পারবো না এত বড় ছেলে বাজার করতে বলে পারবে না?
(আপু) আচ্ছা ঠিক আছে খালামণি আমি ওর সাথে যাবো?
(আমি) আরে কি বলতেছ মেয়ে মানুষ কখনো বাজারে যাই,,, ছি: ছি: সারে লোক তাকিয়ে থাকবে তোমার দিকে দরকার নেই,,,?
(আপু) আমি বোখরা পড়ে যাব?
(আমি) দরকার নাই আমি একাই যেতে পারবো?
(আম্মু) ও গেলে সমস্যা কি """"তুই যেহেতু কখনো বাজার করিস নাই,,,, আজকে ঈশিতার সাথে গিয়ে দেখে আয় কিভাবে বাজার করতে হয়?
আমি আর কিছু বললাম না,, শাকচুন্নি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করলো,,সকাল 7 টা বাজে,, শাকচুন্নি নাস্তা শেষ করে আমাকে বলল,,, চল আমাদের বাসায়,,,,, এখন তোমাদের বাসায় গিয়ে কি করব,,,, আমি কি এখানে কাপড়-চোপড় নিয়ে আইছি,,, বোখরা পড়বো না,,,,
★ আচ্ছা ঠিক আছে চলো,, বাজারের লিস্ট নিয়ে,, রিসকায় চেপে আপুদের বাসায় পৌঁছলাম,, আমি আপুদের বাসার গেটের সামনে রিসকায় বসে আছি,, আপু ভিতরে গেল? কিছুক্ষণ পরে আসলো,,, আমি আপুকে দেখে রাগ উঠে গেলো,,, এটা কি পড়েছে,,, এরকম বোকরা তো আমি কখনো দেখি নাই,, এটা কে কী বোখরা বলে,,,, বডি টাইট ফিটিং,,,, শরীরের অঙ্গ পতঙ্গ যা আছে সব দেখা যাচ্ছে,,, রিস্কা চালক আপুর দিকে তাকিয়ে আছে,,, আমি রিস্কা চালককে ধমক দিয়ে বললাম,,, মামা নিচে দিকে তাকান? রিস্কা চালক আমার দিকে ঘুরে তাকালো,,, আমি একটা রাগী লোক নিয়ে রিস্কা চালক এর দিকে তাকালাম,,,,,, রিস্কা চালক ভয় পেয়ে গেল?
★ আপু কাছে এসে রিস্কায় উঠতে যাবে,,, আমি বললাম দাঁড়াও রিসকায় উঠবে না,,,
কেন কি হয়েছে,,,,,, রিসকা থেকে নেমে তার হাত ধরে টেনে একটু সাইডে নিলাম,,,,
এটা কি পড়েছো?
কেন কি হইছে?
কি হইছে মানে তুমি নিজেকে আয়নায় দেখো নাই?
হ্যা দেখছি তো কেন কি হইছে?
যে বোখরা পড়েছ এটাকে কি বোখরা বলে,, শরীরের অঙ্গ পতঙ্গ যা আছে সব দেখা যাচ্ছে,,,ছি:,,, রিস্কা চালক তোমার দিকে কি ভাবে তাকিয়ে ছিল তুমি জানো?
বদমাশ ছেলে একদম বাজে কথা বলবি না?
★ আমি কোন বাজে কথা বলি নাই যাও এটা চেঞ্জ করে আসো,,, আর এরকম বডি ফিটিং টাইট বোখরা কখনো পড়বে না,,, আর এটাকে আজকেই আগুনে পুড়ে ফেলবা,,,
কি বলিস এত দামি বোখরাটা পুড়ে ফেলবো,,,
এটাকে বোখরা বলে বোখরা কে অপমান করো না,,,, আর দামি হইছে তো কি হইছে,, এর চেয়ে 3 গুন দামি বোখরা এনে দিবো?
(আপু)কিসের চাকরি করেন স্যার আপনি?
(আমি)এখানে চাকরি আসলো কোথা থেকে?
আপু)না আপনি যে বললেন এর চেয়ে তিনগুণ দামে বোখরা কিনে দিবেন কত টাকা বেতন আপনার?
আমি)আমার চাকরি বা বেতন দিয়ে কি করবে,, আমার বাবার যা আছে তা আমার বউ বাচ্চা-কাচ্চা আজীবন খেয়ে যেতে পারবো,, আর কিছুদিন পরে তো,,, আমার একমাত্র বউয়ের বাপের টাকা পয়সা সব আমারই হবে??
আপু একটু মুচকি হেসে বদমাশ ছেলের স্বপ্ন কত দেখো?
আচ্ছা ঠিক আছে এখন যাও এটা তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে আসো,,,, আপু ভিতরে চলে গেল,,, আমি রিকশায় বসে আছি,, 10 মিনিট পরে একজন মহিলার রিসকায় উঠতে চাচ্ছে,,, আমি আশ্চর্য হয়ে মহিলাকে বললাম,,, আন্টি কি করছেন,,, আমি রিকশায় বসে আছি আপনি দেখতে পাচ্ছেন না ,,, সাথে সাথে মহিলাটি মুখের পর্দাটা সরানো,,, হায় আল্লাহ আমি শেষ এটাতো আপু?
বদমাশ ছেলে কি বললি আমি আন্টি,,, সরি সরি ভুল হইছে,,, আমি আসলে চিনতে পারি নাই,,, কিভাবে চিনবো মাথা থেকে পা অবধি সম্পূর্ণভাবে ঢাকা বোখরা হাতে পায়ে মৌজা,,, এরকম বোখরা পড়লে মেয়েলোক কোন বয়সের কত বয়সে তা বোঝা যায় না,,,
ওই জন্যই তো আমি ঐ বোখরা টা পড়েছিলাম,,?
ওই বোখরার কথা মুখে ও আনবে না??
এখন যে বোখরা পড়েছ কোন জায়গায় যাওয়ার প্রয়োজন হলে এ বোকরা টা পড়ে যাবা,,, আমি যখন তোমাকে ছিনতে পারিনি তাহলে কেউই তোমাকে চিনতে পারবে না?
★ আচ্ছা ঠিক আছে ওই বোখরা পড়বো না? এখন তো চল? রিস্কা চলতে শুরু করল,, আপু আমার সাথে একবারে গায়ের সাথে গা ঘেঁষে বসেছে,,, সিক্ত সকালের মন দুর্বল করা সচ্ছল নব পূর্ণ আবহাওয়া, হালকা রোদেলা বাতাস,, উষ্ণতার সেই আবেশে ভরা মায়ায় ভরা সকালে রবির কিরণ যখন হালকা উকি দিই,, এরকম সকালটাকে দেখতে মনে হাজারো অনুভূতি এসে জড়ো হয়,,, কখনো এত সকালে উঠি নাই,,, প্রকৃতি তাকেও এরকম ভাবে দেখি নাই,,, সকালের জনমানবহীন হালকা সন্য রাস্তায়,, রিস্কার মাঝে আমি আমার সিনিয়র প্রিয়সি আমার সাথে,,, মনের ভিতর এক অজানা ভালো লাগা কাজ করছে,,, ইচ্ছে করছে সিনিয়র পড়শীর হাতটা ধরে বাজারে অব্দি যাওয়ার জন্য?
আমি আনমনে হয়ে কিছু ভাবতে লাগলাম,,, আমার হাতটা কেউ শক্ত করে চেপে ধরেছে,, আমি তাকিয়ে দেখি আপু তার হাতের মৌজা সহ করে আমার ডান হাতটা শক্ত করে চেপে ধরেছে,,,, আমি তাকানোর সাথে সাথে আপু তার হাতের মোজাটা খুলে ফেললো,,, তারপর তার নরম উষ্ণন হাতটা আমার হাতের উপর রাখল,,, আমি তার পাঁচটা আঙ্গুলের ভিতর আমার পাঁচটা আঙ্গুল চেপে ধরেলাম,,, হালকা জুড়ে চাপ দেওয়াতে শাকচুন্নি ওহ করে উঠলো?
কি হল ব্যাথা পেলি নাকি? শয়তান ছেলে এত জোরে কেউ চাপ দেয় দিল ?
আজকের সকালে তুমি আমাকে এটা কি করলে?
কি করলাম?
তুমি আমার ঠোঁটে এভাবে কামড় বসিয়ে দিয়েছো কেন?
আমি কি করবো আমি কি ঐ সময় বুঝতে পেরেছি নাকি?
আচ্ছা আম্মু তোমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করেছিল?
জিজ্ঞাসা করবে?
সকালে আমার দুটো রক্ত ছিল তোমার দুটো রক্ত লেগে ছিল,,, আমি তোমাকে বারবার ইশারায় বুঝাচ্ছি তোমার ঠোঁটের রক্ত,,,, কিন্তু তুমি বুঝতে পারছনা,,, আরেকটু হলেই তো ধরা পরে যেতাম?
ধরা পড়লেই ভালো হতো?
কি বলতেছ তুমি?
হ্যা খালামণির জানতে পারত তার পর সব সমস্যার সমাধান হতো?
যদি জানার পর আমাদের সম্পর্ক না মেনে নেই””
কেন মানবে না,,,, না মানলেও আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারবো না,,,,,
আচ্ছা ধরো আমি তোমার জীবন থেকে হারিয়ে গেলাম,,, এ কথা বলতে দেরি আমার হাতে এমন ছুড়ে এক চাপ দিয়েছে আমিও মাগো করে উঠলাম,,,,, শাকচুন্নি এত জোরে কেউ চাপ দে,,,, একথা দ্বিতীয়বার মুখে আনবি না,,,, যদি এই কথা আর কোনদিন মুখে আনিস তাহলে আমি সুই সুতা দিয়ে তোমার মুখ সেলাই করে দিব?
আচ্ছা ঠিক আছে আনবো না? আমি আপুর হাত ধরে আছি,, কিছুক্ষনের ভিতর বাজারে পৌঁছে গেলাম,,,, রিস্কা থেকে নেমে রিস্কা ভাড়া মিটিয়ে বাজারের ভিতরে ঢুকলাম,,,, হঠাৎ করে মনে হলো হায় হায় বাজারের ব্যাগ কোথায়,,,, আমি আপুকে বললাম বাজারের ব্যাগ ছাড়া কিভাবে নিবে,,, লুঙ্গি তো আনি নাই?
লুঙ্গি দিয়ে কি করিবে,,,
বাজার নেবে কিভাবে এখন ব্যাগ ছাড়া,,,
পাগল বাজারের ব্যাগ অভাব আছে,,,, 1 ঘন্টা ঘুরাঘুরি করে বাজার করলাম,,, আমি করি নাই আপু করলো,,,, আরে বাপরে বাপ যেভাবে লোকের সাথে পটাপট কথা বলে,,,, আমি জিন্দেগীতেও বলতে পারবো না,,,, দুইটা ব্যাগ আমার হাতে ধরিয়ে দিয়েছে আমি তার পেছনে পেছনে থাকি,,,,, তা ছাবানের দাম জিজ্ঞাসা করে,,,
ভাই এগুলা কত করে,,,
এগুলা ম্যাডাম ৬০ টাকা?
ওরো মিয়া মিথ্যা বলেন কেন,,
ওই জায়গায় বিক্রি করে 50tk আর আপনি বলেন 60 টাকা,,,
আপু 50 টাকা বলে চলে আসছে,,,, পিছন থেকে ওই লোক ডাকতে লাগলো,,, ম্যাডাম নিয়ে যান,,,,, তারপর আপু নিল,,, আমি আপুকে জিজ্ঞাসা করলাম ওই জায়গায় 50 টাকা তুমি কিভাবে বুঝলে তুমি কি জিজ্ঞাসা করেছো,,,,
আরে এমনি ফাফর দিলাম আর কি,,, আচ্ছা ঠিক আছে দাড়াও ওই লোকের কাছে জিজ্ঞেস করি,,, আমি আরেকটা লোকের কাছে গিয়ে বললাম,,, ভাই এগুলা কি 60 টাকা করে দিবেন না,,,,, ওই দিক বলতেছে ক কেজি লাগবে আপনার?
টাচ করে পেছন থেকে মাথায় একটা টুস দিল,,, দেখি আপু টুস দিলে কেন,,, শয়তান ছেলে 60 টাকা করে দিবেন না বলে,,,, এখন ওই লোক যদি দিয়ে দেই,,, দিলে নিয়ে নেব 60 টাকা করে,,,
তুই আস্তা মারা একটা গাঁধা? 50 টাকা করে কিনে এখান থেকে 60 টাকা করে কিনব কেন,,,, আমাদের বাজার করা প্রায় শেষের দিকে?
চলে আসবো আপু বলল কুদু নিবি?
আমি বললাম কুদু আমি খেতে পারি না,,, আরে ভালো জিনিস,, টাকি মাছ দিয়ে পাক করলে অনেক ভালো লাগে,,,,
আচ্ছা ঠিক আছে নাও,,,, আপু গিয়ে বলল,,,, ভাই এই কুদু টার দাম কত ঐ লোক বললো ৮০ টাকা,, তুরো মিয়া বড়ো হয়ে গেছে কুদু ৮0 টাকা কিভাবে,,, এটাতো 30 টাকা বিক্রি হবে না?
ঐ লোক বললো ম্যাডাম একদাম 80 টাকা বিক্রি করব?
আচ্ছা ঠিক ৮০ না ১০০ টাকা বিক্রি করেন ?
ঐ লোক বললো ম্যাডাম আপনি কত দিবেন?
আমি আপনাকে যত বললাম তত দিব?
কত বললেন ম্যাডাম?
কেন আপনাকে বললাম না 30 টাকা?
আমি আপুকে বললাম এই লোক আরো বেশি দামে বিক্রি করবে চলে যাই,, আপু আমার দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকাল? আমি ভয় পেয়ে গেলাম?
আপু আর আমি চলে আসতেছি ওই লোক ডাকতে লাগলো ম্যাডাম আর দশ টাকা দিয়েন?
আপু বলল না,,, আমি আপুকে বললাম আরে 10 টাকা দিয়ে দেব,,, আমাকে বলে তুই চুপ থাক আমি চুপ হয়ে গেলাম? শেষ পর্যন্ত ৩০ টাকা ঐ় বিক্রি করলো? আমিতো অবাক হয়ে গেলাম,,, ওই লোক 80 টাকা বলে 30 টাকা কি করে বিক্রি করে কিভাবে,,, আমাকে যদি 80tk টাকা বলতো তাহলে আমি 70 টাকা দিয়ে নিয়ে নিতাম? বাজার শেষ করে রিসকা করে বাসায় পৌঁছলাম আম্মুর কাছে বাজার দিয়ে আমি আমার রুমে চলে গেলাম?,,
আম্মু আর আপু বাজার সম্পর্কে কথা বলতেছে,,, কিছুক্ষণ পরে আপু এসে বলল আমি বাসায় যাই রে? তুই দুপুরে আমাদের বাসায় আসিস?
আমি বললাম ভার্সিটিতে যাবানা?
না আমার জন্মদিনের পরে যাব?
আচ্ছা ঠিক আছে?
তুই যাবি নাকি?
হ্যা যেতাম কিন্তু এখন তুমি যাবা না তাই আমিও যাব না?
আচ্ছা ঠিক আছে তুই এখন আমাকে বাসায় দিয়ে আয়,,,।।
কি আর করা আমি শাকচুন্নি কে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসলাম,,, সকাল 9:30 হঠাৎ করে আমার ফোনটা বেজে উঠলো,,, ফোনটা রিসিভ করে দেখি আমার এক বন্ধু ফোন দিয়েছে,,,, কিছুক্ষণ কথা বলে রেখে দিলাম,,, তারপর প্যান্ট শার্ট পরে রেডি হয়ে গেলাম কলেজে যাওয়ার জন্য??
আসলে বন্ধু ফোন দিয়েছিল স্যার নাকি আমাকে কি বলবে আমাকে জরুরী আজকে কলেজে যেতে হবে,,, তাই যত সম্ভব রেডি হয়ে বাইক নিয়ে রওনা দিলাম,, কলেজে পৌছাতে পৌছাতে 10:15৷ 10 টা থেকে প্রথম ক্লাস তার মানে 15 মিনিট লেট আমাদের আদনান স্যার একটু রাগও মানুষ প্রথম ক্লাস উনার 15 মিনিট দেরিতে যাওয়া মানে সারাটা ক্লাস কানে ধরে দাঁড়িয়ে থাকে,,,,, তাই মনে মনে ভাবলাম প্রথম ক্লাসটা করব না,,,, পরক্ষনে মনে পড়ল স্যার না আমাকে কি বলবে,,,, আমি আস্তে আস্তে আমাদের ডিপার্টমেন্টের রুমে গেলাম,,,, আমি দরজার সামনে দাঁড়িয়ে স্যার কে উদ্দেশ্য করে বললাম,,, মে আই কামিং স্যার,,, স্যার আমার দিকে একটা রাগী লুক নিয়ে তাকালো,,,, আমি কিছুক্ষণ ধরে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছি,,, হঠাৎ করে স্যার বলল ভিতরে আসো,,, আমি ভেতরে গিয়ে একটা টেবিলে বসলাম,, স্যার আসলো,,, স্যার আমাকে বলল এতো ক্লাস মিস করো কেন,, সামনে তো ফাইনাল এক্সাম আসতেছে তার কোন প্রস্তুতি আছে,,, জি স্যার আছে,,,, আর স্যার এক্সামের তো আরো অনেক দিন বাকি,,, স্যার আমার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে তারপর সবাইকে বোঝাতে লাগলেন? স্যারের ক্লাস টা শেষ করে আমরা সবাই ক্লাস রুম থেকে বাহির হলাম,,,, দেখি শামীম সাগর মিশাল সবাই একসাথে বসে আছে আমি তাড়াতাড়ি হারামি গুলোর কাছে গেলাম? ওমা কাছে গিয়ে দেখি শামিমের সাথে রিয়া ও আছে,,
আমি ওদের কাছে গিয়ে বললাম আজকে আমাকে এভাবে জরুরি তলব দিয়ে কলেজে আনলি কেন?
সবগুলো হারামি বলতে লাগলো তোকে জরুরি তলব দিয়ে আনছি দরকার আছে,,, ভার্সিটি ছুটির পর প্রফেসর স্যার আর তোর সাথে কথা বলবে,,,,
স্যারের সাথে আমার কি কথা,,,, আর ভার্সিটি ছুটির পর মানে সবগুলা ক্লাস আজকে আমার করতে হবে,,,,,
সবগুলো বন্ধু বলতে লাগলো সবগুলা ক্লাস করলে সমস্যা কি,,,, আরে তোরা বুঝতে পারছিস না,,, আমি ঈশিতা আপুকে বলছি আজকে কলেজে আসবো না,,, এখন তা যদি জানতে পারে কলেজে এসেছি তাহলে আমি শেষ,,,,,
(বন্ধু) আরে কলেজে আসলে ইশিতা আপুর সমস্যা কি?
আরে শালা তুই বুঝবি না মেয়ে মানুষ কোন জায়গার গিট্টু কোন জায়গায় নিয়ে লাগাই কেউই বলতে পারে না,,, আমি আসছি তোদের জরুরি তলব পেয়ে,,,, আর আপু যদি জানতে পারে আমি কলেজে এসেছি তাকে না জানিয়ে তাহলে সে কি মনে কি করবে জানিস,,, মনে করবে আমি তাকে না জানি কোন মেয়ে টানে কলেজ এসেছি???
বন্ধু শামীম বলল জানলেও কিছু হবে না আমরা আপুকে বুঝিয়ে বলব,,,
আইচ্ছা এখন তোরা বল কি কারনে এত জরুরি তলব দিয়ে কলেজে আনলি?
(বন্ধু)আসলে সরকারিভাবে দশটা কলেজ নিয়েএকটা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ছেড়েছে,,,,, আর এই খেলা থেকে যেকলেজ চ্যাম্পিয়ন হবে,,,সরকার তাদেরকে পুরস্কৃত করবে।।।
এবং কলেজের মান উন্নয়ন সম্পর্কে দেখবে,,,,তাই আমাদের ভার্সিটি থেকে একটা দল অংশগ্রহণ করবে এজন্য স্যার তোকে ডেকেছে,,,, আরেকটা কাজ আছে,,
(আমি) কি কাজ?
(বন্ধু) তুই তো জানিস সাগর লিমাকে ভালবাসে,,, সাগর অনেকদিন যাবত লিমার পেছনে ঘুরতেছে,,, সাগর আজকে বলল,,, আমাকে যদি ওর সাথে কথা বলাতে পারিস তাহলে আমাদেরকে বড় ধরনের ট্রিট দিবে? আর এ কাজ তুই ছাড়া কেউই পারবে না।
(আমি) কোনটাই আমার পক্ষে সম্ভব না,,, না ক্রিকেট খেলা না ওই বদ মেজাজী মাইয়ার সাথে সাগরের কথা বলি দেওয়া?
আমি এখনই বাসায় চলে যাব??
শামীম বলল কি বলছিস তুই,, তুই সাগরকে রিমার সাথে কথা না বলে দিস,,, কিন্তু ক্রিকেট খেলতে হবে? আমাদের ভার্সিটির একটা মান সম্মান আছে,,, আর প্রফেসার স্যার যেহেতু তোকে ডেকেছে না খেলে পারবি না।।।
দেখ শামীম তুই জানিস ঈশিতা আপু খেলা পছন্দ করে না,,, আমি কোনভাবেই খেলতে পারবো না,,,, এর আগে খেলতে গিয়ে তোকে থাপ্পর দিয়েছে মনে নাই?
শামীম) আরে শালা ঈশিতা আপুকে এত ভয় পাওয়ার কি আছে? ঈশিতা আপুকে আমরা বুঝিয়ে বলব???
(আমি) তারপরেও সম্ভব না???
আমাদের কথার মাঝখানে হঠাৎ করে আমার বন্ধু সাগর এসে পড়বো,,, আমাকে দেখে এসে জড়িয়ে ধরেছে,,, শালা হারামী তুই এতদিন পরে কলেজে আসছিস???
(আমি) আজকেও তো কলেজে আসতাম না কিন্তু এই হারামি গুলো জরুরি তলব দিয়ে নিয়ে আসছে?
(সাগর) দোস্ত একটা কাজ করে দেনা লিমার সাথে আমাকে কথা বলে দে না?
(আমি) অসম্ভব ওই বদ মেজাজী মাইয়ার সাথে আমি তোকে কথা বলিয়ে দিতে পারবো না,,,,, তুই অন্য কোন মাইয়ার কথা বল তোর সামনে এনে হাজির করবো,,, সে যত বড় সুন্দরী হোক না কেন?
(সাগর) না দোস্ত আমি শুধু লিমার সাথে কথা বলবো,,, তুই একটু কথা বলিয়ে দে না,,, তুই যা খেতে চাইবি তোকে খাওয়াবো?
সবগুলো হারামি চেপে ধরেছে,,, লাস্ট পর্যন্ত আমি বাধ্য হয়ে বললাম,,, ঠিক আছে কথা বলিয়ে দিবো। কিন্তু আমাকে এখন 50 ডলার দিতে হবে?
সবাই বলতে লাগল ডলার কোথায় থেকে পাবি,,, আমি বললাম ডলারের হিসাবে যত টাকা আসে তত টাকা দিবি?
সাগর একটা 1000 টাকার নোট বের করে আমার হাতে দিলো,,,,, আমি টাকাটা পকেটে ঢুকিয়ে তাদের সাথে বসলাম?
এখন তারা বল লিমা কোথায়,,, ওরা আমাকে বলল ওর ডিপার্টমেন্টের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে,,,, আমি তাকিয়ে দেখি একটা সাদা ড্রেস পরে আর মাথায় খয়রি ওড়না দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,,,,
ওর সাথে ওর দুই তিন বান্ধবী আছে,,,, আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি ওর বান্ধবীরা চলে যাবে তারপর ওর সাথে কথা বলবো,,,,,,
বন্ধুরা বলল যাস না কেন,,,
আমি বললাম না যাব না,,,
বন্ধুরা বলল তা না হলে টাকা দে?
টাকা একবার পকেটে ঢুকিয়ে দিয়েছি আর নিতে পারবি না?
বন্ধুরা বলল কিভাবে তোর কাছ থেকে টাকা নিতে হয় আমাদের জানা আছে সাথে সাথে সব গুলো হারামি আমার সাথে জোরজবস্তি করতে শুরু করল,, দুজনে হাতে ধরেছে একজন কোমরে আর 2 জন পায়ে আর একজন পকেটে হাত ঢুকিয়ে দিল,,,, আমি কোন উপায় না পেয়ে লাস্ট পর্যন্ত ওদের কাছে হার মানতে হলো,,, আমি বললাম ঠিক আছে আমি যাচ্ছি?
তার আগে দেখ ওর সাথে ওর বান্ধবীরা আছে নাকি?
তাকিয়ে দেখি এখন ওর সাথে ওর বান্ধবীরা আছে,,,, আমি বললাম 2 মিনিট দাঁড়া ওর বান্ধবীরা যখন চলে যাব তখন আমি ওর কাছে গিয়ে কথা বলব?? পাঁচ মিনিট পরে ওর বান্ধবীরা চলে গেল,,, ও একা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে,,,, আমি তাড়াতাড়ি সিড়ি দিয়ে উপরে উঠলাম যদি ওর বান্ধবীরা চলে আসে,,,, আসলে ওই মাইয়ার বান্ধবীরা আপুর সাথে চলে,,, যদি আড়ালে লিমার সাথে আমাকে কথা বলতে দেখে তাহলে হয়তো আপুকে বলে দিতে পারে??? তাই এই ভয়ে তাড়াতাড়ি সিড়ি দিয়ে উঠতে লাগলাম??
হঠাৎ করে কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে গেলাম,,,, দুজনে গড়াগড়ি খেতে খেতে একবারে নিচে,,,,, আমার হাতে একটু ব্যাথা পেয়েছি অল্প অল্প রক্ত পড়ছে,,, আমি তাকিয়ে দেখি আপুদের ডিপার্টমেন্টের এক সিনিয়র বড় ভাই,,,, সে আমার কাছে এসে বলতে লাগলো? চোখে দেখিস না,,,, আমি বললাম আপনি দেখেন না,,,, সে সাথে সাথে আমাকে একটা থাপ্পড় মারল,,,,, আমার রাগ উঠে গিয়েছিল কিন্তু রাগটা আমি কোনমতে কন্ট্রোল করলাম,,,, সে আমাকে আরেক গালে আরেকটা থাপ্পড় দিতে যাবে,,,, আমার সব বন্ধুরা সে ধরে ফেলল??
সবাই বলতে লাগল আপনি ওকে থাপ্পড় দিয়েছেন কেন,,,, সিনিয়র ভাই বলতে লাগলো ছাগলের বাচ্চা চোখে দেখতে পানা??? এ কথা শোনার পরে আমি রেগে গেলাম সাথে আমার বন্ধুরাও ক্ষেপে গেল,,,,,, হঠাৎ করে সিনিয়র ভাইয়ের ডিপার্টমেন্টের আরো দুইজন বড় ভাই আসলো,,,, পরিস্থিতি খুব খারাপ অবস্থায়,,,,, আমাকে কেউই আটকে রাখতে পারছে না,,,, ও আমাকে থাপ্পর দিয়েছে ভালো কথা কিন্তু ও আমাকে ছাগলের বাচ্চা বলে গালি দিলে কেন???
হঠাৎ করে পিছন থেকে কেউ যেন আমাকে জোরে একা টান দিল,,,, আমি পিছনে ফিরে ব্যাকা চ্যাকা খেয়ে গেলাম,,,, ঈশিতা আপু এখানে কিভাবে,,, তাকে দেখে আমার রাগ ক্রমে সে নিভে গেল,,,,
ঈশিতা আপু বলতে লাগলো কি হয়েছে এখানে,,,,, আর তুই আমার কাছে না বলে কলেজে আসলি কেন,,,, আমি কোন কিছু বলছি না,,,, হঠাৎ করে আমার গালে হাত দিয়ে বলল,,,, তোর গালে আঙ্গুলের দাগ কেন,,, আমি মাথা নিচের দিকে দিয়ে রাখছি,,,, আপু আমার মাথাটা উপরে তুললো কি হলো কথা বলিস না কেন,,,,
আমি সবাই দিকে তাকিয়ে দেখি সবাই দাঁড়িয়ে আছে এবং সিনিয়র ভাই গুলো আছে,,,,
(আমি) কিছু হয় নাই?
(আপু) কিছু না হলে তোর গালে দাগ কোথা থেকে আসলো?
আমি চুপ করে আছি,,,, আপুর রাগে খুলতে ফুলতে লাগল,,,, তার চেহারা পুরোদমে রাগে লাল হয়ে গিয়েছে,,,
আপু শামীমের কলার ধরে জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছে,,, শামীম ভয়ে আপুকে সব কিছু বলল,,,, তারপর আপু আমাকে টেনে ওই বড় ভাইয়ের কাছে নিয়ে গেল,,, বড় ভাইয়ের কাছে গিয়ে বলল তুই ওকে থাপ্পর দিয়েছিস কেন,,,,,, বড় ভাই বলতে লাগলো ও আমাকে ইচ্ছে করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে,,,, আপু বলতে লাগলো তুই বললেই আমি বিশ্বাস করব,,, ফারাবী তোকে ধাক্কা দিয়েছে,,,,, থাপ্পর দিয়েছিস আবার গালি দিয়েছিস কেন,,,,
বড় ভাই বলতে লাগলো থাপ্পর দিয়েছে ভালো করেছি কি করবেন কি করব,,,, আপু পুরোদমে রেগে গেল,,, তারপর আপু সেই বড় ভাইয়ের গালে ঠাস ঠাস দুইটা থাপ্পড় দিল,,, বড় ভাই গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,,, আপু রাগে বলতে লাগলো,,,, তুই চিনিস আমাকে তোর এমন অবস্থা করব না আজীবন জেলে পচে মরতে হবে।।। তোর তো সাহস কম না তুই ওক থাপ্পর দিয়েছিস আবার গালিও দিয়েছিস,,,, আবার আমার সামনে বলতিস দিয়েছিস ভাল করেছিস।।। আমি ইচ্ছে করলে আগামী 10 মিনিটের মধ্যে তোকে জেলে ঢুকাতে পারি,,,, আমার ক্ষমতা সম্পর্কে তুই জানিস না,,,, আর যদি কখনো তোকে দেখি তুই ওর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আসিস,,,, তাহলে এই কলেজ থেকে তোকে বের করার ব্যবস্থা করবো,,,, দিস ইস লাস্ট এন্ড ফাস্ট ওয়ার্নিং কথাটা যেন মনে থাকে,,,,
আপু বড় ভাইকে যে জারি দিয়েছে আগামী 10 মিনিটের মধ্যে তোকে জেলে ঢুকাতে পারি,,, আসলে আপু ইচ্ছা করলে পারবে আপুর বাবা সেনাবাহিনীর উচ্চ পদে চাকরি করে,,,, আপু দুই চাচা একজন র্যাবে চাকরি করে আরেকজন ম্যাজিস্ট্রেট?
আপু ওখান থেকে আমাকে টেনে একটু দূরে আনল,,,, তারপর আমার গালে ঠাস ঠাস করে দুটো থাপ্পর দিল,,, আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম,,,, সবাই তাকিয়ে আছে,,,, আমি বললাম আমাকে এভাবে থাপ্পর দিলে কেন,,,
(আপু) আমার মন চেয়েছে দিয়েছি?
(আমি) তাহলে ওই ভাই আমাকে থাপ্পড় দিয়েছে শুনে ক্ষেপে গেলে কেন।
(আপু) আমাকে ছাড়া তোর দিকে কেউ চোখ তুলে তাকাবে আমি তার চোখ তুলে ফেলবো,,, তোকে টাচ করা তো পরের কথা,,,,।
তুই আমাকে না জানিয়ে কলেজে আসলি কেন,,,,
শামীম আমাকে জরুরী ফোন দিয়ে নিয়ে এসেছে প্রফেসর স্যার নাকি আমার সাথে কি বলবে??
আপু শামিমকে ডাকতে লাগল,,, শামীম ভয়ে কাচুমাচু করে আপুর সামনে আসতে লাগল সাথে রিয়াও আসতে লাগলো?
আপু শামীম কে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগল তুই ওকে ফোন করে ডেকে আনলি কেন? আপু রাগে কটর মটর করতে লাগলো,,,, আপুর এই রাগ দেখে আমার সব বন্ধুরা ভয় পেয়ে গেল,,,
আর শালা বলে আপুকে নাকি বুঝিয়ে বলবে আমার খেলার জন্য?
শামীম আমতা আমতা বলতে লাগলো,,,,আসলে প্রফেস্যার স্যার বলেছে ওকে ফোন দিয়ে আনার জন্য।।।
(আপু) কি জন্য?
(শামিম)জানিনা?
আমি মনে মনে শামীম কে গালি দিচ্ছি,,, শালা এখন বুঝিয়ে বল খেলার কথা,,,, এখন তো ভয়ে কথা বলতে পারিস না?
আপু আমাকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগল তুই কলেজে আসবি আমাকে তো একবার ফোন দিবি??
আসলে শামীম এত জরুরি তলব করল যে তোমাকে ফোন দিতে মনে নাই,,,,, তুমি এখানে আসলে কিভাবে।
আগে তোর মোবাইলটা বের কর। আমি পকেট এ্ হাত দিয়ে মোবাইলটা বের করলাম।
স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখি 42 টা ফোন আর সবগুলো ঈশিতা আপুর,,,, আপু আমার হাত থেকে মোবাইলটা নিয়ে নিল,,, তার পর তার ব্যাগের ভিতর ঢুকিয়ে ফেলল।
মোবাইল ব্যাগ এর ভিতরে ঢুকালে কেন।
তোর মোবাইল ইউজ করার দরকার নেই।।।
আমি বুঝতে পেরেছি আপু ফোন দিয়েছে আমি ধরি নাই সেইজন্য,,,
আসলে তুমি এতগুলো ফোন দিয়েছো মোবাইল পকেট এ ভাইব্রেশন লাগানোর ছিল তাই তোমার ফোন ধরতে পারিনি।
(আপুু) আর ধরতে হবে না মোবাইল ইউজ করা লাগবে না,,,, আমি তোকে একটা দুইটা পঞ্চাশটার অধিক ফোন দিয়েছি,,,, একটা ফোন যদি ধরতি বুঝতাম আমি কত টেনশনে ছিলাম জানিস,,,, খালামণি কে ফোন দিয়ে যখন তোর কথা জিজ্ঞাসা করলাম,,,, খালামণি যখন বলল তুই কলেজে,,, তখন রাগে তোকে যদি আমি ওই সময় পাইতাম তাহলে তোকে কি করতাম তুই ভাবতেও পারতি না?
(আমি) আচ্ছা ঠিক আছে আমার ভুল হইছে তোমাকে ফোন দেওয়ার দরকার ছিল,,, সরি এবারের মত মাফ করে দাও।
কিসের মাফ এত সহজে তোকে মাফ করবো না?
তাহলে কি করলে মাফ করবে?
যা বলবো তাই করবি তো?
হ্যা করবো?
তাহলে ঐ ছেলেটাকে দেখছিস,,ওকে গিয়ে একটা থাপ্পর দিবি?
আরে কি বলতেছো ও তো আমার বন্ধু সাগর""
তোর বন্ধু হোক আর যেই হোক তুই গিয়ে ওকে একটা থাপ্পড় দিবি,,,
আমি আপুর কথা মত আমার বন্ধু সাগরের কাছে যেতে লাগলাম,,,, থাপ্পর দিলে ও নিশ্চয়ই কিছু বলবে না,,, যদি জানতে পারে আপু বলেছে থাপ্পর দেওয়ার জন্য,, তাহলে মাইন্ড করতে পারে,, আমি সাগরের কাছে গিয়ে থাপ্পর দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি এমন সময় পিছন থেকে কে যেন আমার হাত টেনে ধরেছে।। আমিতো মনে করেছি আপু,,, কিন্তু পিছনে ফিরে তো দেখি আমার ক্লাসমেট ফারিয়া,,,, ফারিয়া মনে মনে আমাকে পছন্দ করে,,, এটা আমি জানি,,, কিন্তু আমার হাত ধরেছে কেন,,, আমি আপুর দিকে তাকিয়ে দেখি আপু তেলে বেগে আগুন হয়ে আমাদের দিকে আসছে""""" আমি ভয়ে হাতটা সরিয়ে ভদ্র ছেলের মত দাঁড়িয়ে রইলাম????
(((((চলবে)))))
•
Posts: 31
Threads: 0
Likes Received: 15 in 12 posts
Likes Given: 216
Joined: Jun 2019
Reputation:
1
অসাধারন।
এক নিঃস্বাসে পড়ে শেষ করলাম।
আশা রাখি লেখক গল্পটি চালু রাখবে।
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব ২১
★ এরমধ্যে ফারিয়া আমার হাতে একটা চিরকুট ধরিয়ে দিয়েছে,,, আর বলল এ চিরকুটটা আমার বন্ধু মিশালকে দেওয়ার জন্য,,, আপু যে তেলে বেগে আগুন হয় এদিকে আসছে ফারিয়ার সেদিকে খেয়াল নাই,,,, আমার হাতে চিরকুট টা দিয়ে চলে যাচ্ছে?
আমি চিরকুটটা খুলে পড়তে যাব,,, এরমধ্যে আপু এসে আমার হাত থেকে টান দিয়ে চিরকুট টা নিয়ে নিল,,,, তারপর কিছু সময় ধরে চিরকুট টা পড়লো,,,, আমি আপুর দিকে খেয়াল করে দেখি,,, তার চোখে পানি এবং চেহারা রাগে কটমট করছে,,,, হঠাৎ করে আমি কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার দুগালে ঠাসস ঠাসসসস,, দুটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল,,, আর বলতে লাগলো বেইমান তোকে আমি এই বিশ্বাস করেছিলাম,,,, কি অপরাধ ছিল আমার,,,, কেন এমনটা করলি,,, আমার সরলা ভালোবাসা আর অসম্ভব বিশ্বাসকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিলি,,, তুই এমন টা করতে পারলি""" আমি তো বিশ্বাস করতে পারতেছি না,,, তুই আমার হাজারো দেখা স্বপ্ন,, আর আমার অবিরাম অফুরন্ত ভালোবাসার ছলনা করলি,,,, তুই তলে তলে ওর সাথে এতটুকু এগিয়ে গেছিস,,,, তুই আমাকে বলতি তুই ওকে পছন্দ করিস,,, তাহলে আমার মনকে আমি হাজার বুঝিয়ে তোর কাছ থেকে ফিরিয়ে রাখতাম,,,,
★ একনাগাড়ে কথা গুলো বলতে লাগলো আর কান্না করতে লাগল,,, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না,,, আমি কার সাথে তোলে তোলে এতটুকু এগিয়ে গেলাম,,, আমি তার সাথে কোন সময় প্রেমের ছলনা করলাম,, কিছুই বুঝতেছি না?
★ আপু কান্না করতে করতে চিরকুটা দিল মেরে ফেলে দৌড়ে চলে যাচ্ছে,,,, আমি তার পিছনে পিছনে দৌড়ে যেতে লাগলাম,,, তারপর আমি তার হাত ধরে টান দিলাম বললাম কি হয়েছে,,,,, আমি আবার কি করেছি,,,, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না,,, তুমি কান্না করছো কেন আর আমাকে এখানে ফেলে চলে যাচ্ছো কেন।।।
আপু এক ঝটকায় তার হাতটা সরিয়ে নিল আর বলতে লাগলো,,, বেইমান তুই আর আমার হাত ধরবি না,,, আমার সাথে কোন ভাবে যোগাযোগ করবি না,,, আর আমাদের বাসায় যাবি না,,,, তা না হলে আমি উল্টাপাল্টা কিছু করে বসবো???
(আমি) আরে কি হয়েছে বলবে তো??
(আপু) আমার সাথে নাটক করিস,,, আরেক মেয়ের সাথে সব কিছু করে,,, আমার সাথে কেন প্রেমের নামে ছলনা করলি,,,, তুই আর কোনদিন আমার সাথে যোগাযোগ করবি না,, এ কথা বলে আপু চলে যাচ্ছে,,, আমি আবারো যেয়ে তার হাত ধরলাম,,, সাথে সাথে আরো দুইটা থাপ্পড় দিল,,
আমি গালে হাত দিয়ে তাকে বললাম কেন এমন করছো? কার সাথে কি করেছি সেটা তো আগে বলবা?
(আপু) আমি কিছু বলতে পারব না,,, তুই আর আমার সাথে কথা বলবি না বলে দিলাম,,,, আর আমার পিছনে পিছনে আসবি না,,, যদি আসিস তাহলে এখনই আমি গাড়ির নিচে ঝাঁপ দিব।
* আমি আর কিছু না বলে গালে হাত দিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম,, আপু কান্না করতে করতে চলে যাচ্ছে,,, হঠাৎ করে মনে হলো চিরকুটের কথা,, আমি দৌড়ে কলেজের ভিতরে ঢুকলাম এবং চিরকুট টা খুঁজে বের করলাম,,, তারপর পড়তে লাগলাম,,, তাতে লেখা হে রাজকুমার তুমি যেদিন বর্ষার বৃষ্টির দিনে আমাদের বারান্দায় এসেছিলে,,, সেদিন তোমার দু চোখে আমি আমার জন্য জমানো হাজার সহস্ত্র আবেগ
আর ভালোবাসা দেখেছি,,, সেদিন আমি বিজলী চমকানো ভয় তোমাকে জড়িয়ে ধরে ছিলাম,,, সেদিন অজানা এক ভালো লাগা আমাকে চতুর পাশ থেকে ঘিরে ধরে ছিল,,, তার কিছুদিন পরে কলেজের সিঁড়ি দিয়ে তাড়াতাড়ি উঠতে গিয়ে তোমার সাথে ধাক্কা খেয়ে দুজনই গড়িয়ে গড়িয়ে যখন তোমার উপরে আমি পড়লাম,,, কিছু সময়ের জন্য যে তোমার ঠোঁট আমার ঠোঁট দুজনের অজান্তে এক হয়ে গিয়েছিল,,, তখন এক অদ্ভুত অনুভূতি মনে শিহরণ তুলেছিল,,, তারপর থেকে তুমি আমাকে সব সময় ফলো করতে,,, আমিও তোমাকে সবসময়ই খিয়াল করতাম,,,, আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো,,, আমিও তোমাকে আমার মনের অজান্তে ভালোবেসে ফেলেছি,,, তুমি এত বোকা কেন রাজকুমার,,,, যাকে ভালোবাসো তাকে কি মুখ ফুটে বলা যায় না,,, আমি মেয়ে মানুষ হয়ে কিভাবে তোমাকে আগে বলি,,,, তাই তোমাকে চিরকুট এর মাধ্যমে জানিয়ে দিলাম,,,, আমি তোমাকে ভালোবাসি,,,
ইতি। রাজকুমারী ফারিয়া?
★ আমি এতক্ষণে বুঝতে পেরেছি আপু কেন উল্টা পাল্টা বকে চলে গেল,,,, ফারিয়া বিশাল কে ভালোবাসে,,, আমাকে তো বলল চিরকুট টা মিশালকে দেওয়ার জন্য??? আর আমার শাকচুন্নি আমাকে ভুল বুঝে কতগুলো কথা বলে গেল,,,আর ভুল বুঝার ও কারণ আছে,,,কারণ ভার্সিটিতে আমার বন্ধুরা প্রায়ই,, আমাকে
রাজকুমার বলে ডাকে,,,আর ফারিয়া চিরকুটেতে রাজকুমার উল্লেখ করেছে,,,
এখন আমি কি করবো?আমি যে তার সাথে কথা না বলে থাকতে পারবো না,,,, এই কিছুদিনের ভিতর যে আমার হৃদয় আত্মার সাথে মিশে গিয়েছে।
মিশালকে ফোন দিলাম,,, বললাম আগামী পাঁচ মিনিটের মধ্যে ক্যান্টিনে আয়,,,, ২ ৩ মিনিটের মধ্যে মিশাল আসলো,,,, আমি ওকে সবকিছু বুঝিয়ে বললাম,,, তুই বৃষ্টির দিনে ফারিয়ার সাথে এরকম এরকম কাজ করেছিস,,,, ও হ্যা বলল?
★ আমি ওকে বললাম তুই কি ফারিয়াকে ভালবাসিস,,,
(বন্ধু) হ্যাঁ বাসি?
(আমি)ফারিয়া তোকে লাভ লেটার দিয়েছে।
সত্যি বলছিস দোস্ত,,,,
(আমি)হ্যা এই নে তোর লাভ লেটার।
থ্যাংক ইউ দোস্ত আমি এই দিনের ওই অপেক্ষায় ছিলাম,,, তুই আজকে যা চাইবি তাই খাওয়াবো,,,, আমি কিছু বললাম না,, চুপ করে বসে আছি,,,, অন্য কোন সময় বললে হয়তো ওকে নিয়ে 3-4 হাজার টাকা রেস্টুরেন্টে বিল তুলতাম ,,,, কিন্তু আজকে ঈশিতা আপু উল্টা রিএক্ট দেখে কোন কিছু ভালো লাগছে না।
আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আমার বন্ধু বলল। কি হলো চুপ করে আছিস কেন,,, অন্য সময় বললার আগেই আমাকে বাঁশ দেওয়ার জন্য রেডি থাকতি আজকে কি হলো।
আমি ওকে বললাম তোদের এই প্রেম পত্রর জন্য ঈশিতা আপু আমাকে ভুল
বুঝে গেল,,, ফারিয়া কি চিরকুট টা দেওয়ার লোক পাই নাই,,, আমাকে দিয়ে এই দিতে হল?
(বন্ধু) কি ভুল?
আমি বন্ধুকে সব বুঝিয়ে বললাম,,, ও বলল তুই চিন্তা করিস না,,, আগামীকাল ঈশিতা আপুকে আমি আর ফারিয়া বুঝিয়ে বলব।
আমি উঠে বাসায় চলে যাচ্ছি,,,, পিছন থেকে আমার বন্ধু ডাক দিল।।
কোথায় যাচ্ছিস?
বাসায়?
স্যার না তো কে বলল দেখা করে যাওয়ার জন্য?
হ্যা?
আমি ঐখান থেকে উঠে স্যারের রুমে গেলাম,,, এবং স্যারকে বলে আসলাম স্যার আমি খেলতে পারবো না
,,,, স্যার অনেক রিকুয়েস্ট করেছে, কিন্তু স্যার আমার কাছে হার মানলো,, আমি খেলব না ব্যাস খেলব না?
তারপর আমি বাইক নিয়ে সোজা আপুদের বাসায় দরজার কলিং বেল চাপতে আপু দরজা খুলে দিল,,, দরজা খুলে আমাকে দেখে রেগে গেল,,, তুই এখানে কেন আসলি,,, তোকে না বললাম আমার কাছে আর না আসার জন্য,,,,
(আপু) দেখো তুমি ভুল বুঝছো,,, আমার কলেজ লাইফ থেকে ভার্সিটি পর্যন্ত প্রেমের নামে কোন সম্পর্কে জড়ায়নি,,, জীবনের প্রথম একজনকে মনের খাচায় জায়গা দিয়েছি সে তুমি?
(আপু) তোর এই ন্যাকামো ভন্ডামি নাটক বন্ধ কর,,, তুই কি পেয়েছিস আমি কিছু বুঝিনা,,, তুই আমার কাছে না বলে কলেজে কেন গেছোস তাও আমি জানি,,, আমার কাছে আর কোনো মিথ্যে বাহানা চলবে না,,,, তুই যা এখান থেকে বলছি।
(আমি) প্লিজ বিশ্বাস করো ফারিয়া
(আপু) কিসের বিশ্বাস,, বিশ্বাস একটা কাচের আয়না একবার ভেঙ্গে গেলে তার জোড়া লাগানো যায় না,,,, তুই এখান থেকে যা বলছি আমি।
(আমি) আমি তোমাকে কিভাবে বিশ্বাস করাবো ফারিয়া মিশালকে কথাটা শেষ করতে পারলাম না এর ভিতর ফোনটা বেজে উঠলো স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখি আননোন নাম্বার,,, আপু আমার হাত থেকে টান দিয়ে মোবাইলটা নিয়ে নিল,, তারপর ফোনটা রিসিভ করে লাউড স্পিকার দিল,,
(আপু) হ্যালো কে?
আমি ফারিয়া আমাকে চিনতে পারছ না,,,
★ ফারিয়াকে আর কিছু জিজ্ঞাসা না করে আমার মোবাইলটা আছাড় মেরে ভেঙ্গে ফেলল,,, আমি তার দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেলাম,,, রাগে পুরো চেহারা লাল রক্তিম ধারণ করেছে,, মনে হচ্ছে শরীরের সারা রক্ত আপুর চেহারায় ভেসে উঠেছে।
তারপর আমাকে ঠাস করে এক থাপ্পর মেরে,, এই আমাকে বুঝাতে এসেছিস,,, বিশ্বাস করতে বলছিস,,,, আজকের পর থেকে শুধু আমার সামনে কেন,, আমাদের বাড়ির ত্রিসীমানায় ভিতরে যেন না দেখি তোকে,,, যদি বাইসেস ভুলেও আমার সামনে এসেছিস তাহলে আমার মরা মুখ দেখবি,,,,, আমি বলে দিলাম আমার শেষ কথা
(আমি) আমি তার ব্যবহারে কেঁদে ফেললাম,,, কি বলছো তুমি,,, কেন আমার সাথে এরকম করতেছ,,, না জেনে না বুঝে,, প্লিজ এরকম করো না আমার সাথে,, আমি তোমাকে না দেখে থাকতে পারবো না।
আপু আমার কোন কথায় শুনলো না?
আমার মুখের উপর দরজাটা বন্ধ করে দিল??
এখন সত্যিই আমার কাছে খারাপ লাগছে,,,আপ কখনো আমার সাথে এরকম করে না? আজকে একটা ভুল জিনিস নিয়ে ভুল বুঝল? পছন্ড রাগ হচ্ছে,, ফারিয়াকে যদি এই মুহুর্তে হাতের সামনে পেতাম,,, তাহলে কষিয়ে দুইটা থাপ্পর দিতাম,,,, বাইক নিয়ে সোজা মালেক চাচার দোকানে গিয়ে এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে বাসায় চলে গেলাম,,,
নিজের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে সিগারেট টানতে লাগলাম??
কিছুক্ষণ পরে আম্মু আমার রুমের দরজায় ধাক্কাতে লাগলো,,,, আমি সিগারেট ফেলে দিয়ে দরজা খুলে দিলাম?
আম্মু ভিতরে ঢুকে বলতে লাগলো,,,, রুমের ভিতরে সিগারেটের গন্ধ কেন,,, তুই কি রুমে সিগারেট খেয়েছিস""
আমি কোন কথা বলছি না"
(আম্মু) কি হল কথা বলিস না কেন?
(আমি)না?
(আম্মু) তাহলে রুমে সিগারেটের গন্ধ কোথা থেকে আসলো?
(আমি) জানিনা?
(আম্মু) আচ্ছা ঠিক আছে খেতে আয়?
(আমি) খাব না খিদে নাই?
(আম্মু) কি বলছিস সকালে তো কিছু খাস নাই? শরীর খারাপ লাগছে?
(আমি)না?
(আম্মু) তাহলে খাবি না কেন?
(আমি) বললাম তো আমার এখন খিদে নেই""" যাও তুমি এখন এখান থেকে?
(আম্মু ) কি হয়েছে তোর কোন সমস্যা?
(আমি)না?
(আম্মু) তাহলে তোর চেহারা এরকম দেখা যাচ্ছে কেন,, আর সকালে খাস নাই,, এখনো খাবি না,, কলেজ থেকে এত তাড়াতাড়ি এসে পড়লি,, কিছুতো একটা হয়েছে
(আমি) আমার কিচ্ছু হয় নাই?
(আম্মু ) দেখ আমার চোখ ফাঁকি দিতে পারবি না,,, আমাকে বল কি হয়েছে?
(আমি) বললাম তো কিছু হয় নাই,,, তুমি এখন এখান থেকে যাও আমি ঘুমাবো?
★ আমি সোফা থেকে উঠে খাটে শুয়ে পড়লাম,,, আম্মু আর কিছু না বলে চলে গেল,,
রাত ৮ তা আম্মু দরজায় অনেক ডাকাডাকি করলো খাবার জন্য,,,, কিন্তু আমি খাব না বলে দিলাম,,,,
রাত ১টা ঘুম ভেঙ্গে গেল খিদায় তাড়নাই,,, কখনো এক বেলা না খেয়ে থাকি নি,,, বালিশের নিচে হাত দিয়ে মোবাইলটা চেক করবো আপু ফোন দিয়েছে কিনা,,,, হঠাৎ করে মনে হলো আরে মোবাইল তো নাই,,, আছাড় মেরে ভেঙ্গে ফেলছে,,,
আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে ফ্রিজ থেকে কিছু খেতে যাবো দেখি সবকিছু ঠান্ডা হয়ে আছে,,, আমি আম্মুর রুমের দরজায় গিয়ে ডাকতে লাগলাম,,, এক ডাক দেওয়ার সাথে সাথে আম্মু দরজা খুলে দিল,,, হয়তো আম্মু বুঝতে পেরেছে আমার কিছু একটা হয়েছে,,, সে চিন্তাই মনে হয় আম্মুর ঘুম হচ্ছে না,,,,
আম্মু দরজা খুলে আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল,,, কী হয়েছে আমার একমাত্র ছেলেটার,,, যে ছেলেটা এক বেলা না খেয়ে থাকতে পারে না,,, আজকের তিন বেলা না খেয়ে আছে,,,, বাবা আমাকে বল না তোর কি হয়েছে,,,
আমি আম্মুর চোখের পানি মুছে দিয়ে আম্মুকে বললাম আমার কিছু হয় নাই,,, শুধু শুধু টেনশন করছো,,, ওই সময় আমার পেট ভরা ছিল,,,, এখন প্রচুর খিদে লেগেছে?
(আম্মু) সবকিছুতো ফ্রিজে ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে,,, তুই বস আমি তোকে রুটি বানিয়ে দিচ্ছি,,,
(আমি) এত রাতে তুমি রুটি বানাবে,,,
(আম্মু) রুটি বানাতে বেশিক্ষণ লাগবেনা তুই মাত্র 5 মিনিট বস,, ফ্রিজে বাজি রাখা আছে শুধু গরম করলেই হবে।।।
আমি মার কথা শুনে ভাবনার জগতে চলে গেলাম,,, মার ভালোবাসা এরকমই হয়,, প্রিয় সন্তান না খেয়ে আছে মাকে রাত দুইটা বাজে এক ডাক দেওয়ার সাথে সাথে দরজা মেরে দিল,,, তারপর সন্তানের খিদের কথা শুনে রুটি বানাতে চলে গেল,,, প্রতিটি মা এই তাদের সন্তানকে নিস্বার্থভাবে ভালবেসে যাই সারা জীবন,,, কিন্তু বোকা সন্তান গুলো মাকে পুরোপুরিভাবে চিনতে পারে না,,,,, মা একটু বুড়ো হলে মাকে অবহেলার পাত্র ভেবে ছুড়ে ফেলে দেয় ডাস্টবিনে?
রাত দুইটা বাজে যদি নিজের বিয়ে করা বৌকে বলতাম আমার খিদা লেগেছে রুটি বানিয়ে দাও,,, বউ বলতো তুমি কি পাগল হয়েছ,,, এত রাতে তোমাকে রাতে রুটি বানিয়ে দিব,,, আমি পারবো না,,, এখন ঘুমিয়ে পড়ো সকালে বানিয়ে দিব,,,, আর যদি প্রেম করে বিয়ে করা বউ হয়,,, তাহলে তো রাত 10 টার পরে বাহিরে থাকা যায় না,, কোন সাহসে রাত দুইটা বাজে প্রেম করে বিয়ে করা বউকে বলবে রুটি বানিয়ে দিতে,,, তুমি যে তার চোখের দিকে তাকাতে ভয় পাও,,, আর যদিও তুমি আদর মাখা কন্ঠে বল আমার প্রচুর খিদে লেগেছে রুটি বানিয়ে দাও না।। তাহলে বলবে কি বলছিস তুই পাগল হয়ে গিয়েছিস,, রাত দুইটা টা বাজে আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে বলছিস রুটি বানিয়ে দিতে,,, এমন রুটি বানাবো না,,, জে কামোর দিও ছিঁড়তে পারবা না,,, চুপচাপ বিছানায় শুয়ে পড়ো,,,, কিন্তু আপনার পেটে খিদে থাকলে কি শুয়ে পড়লে ঘুম আসবে,,,,, আবার এরকম অনেক আছে সারাদিন কাজ করে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে এসে দেখে বউ সিরিয়াল নিয়ে ব্যস্ত,,,, বউকে খাবারের কথা বললে ,,,, বউ বলে,,, ভাত পাক করা আছে ডিম টা পোস করে খেয়ে নাও,,, বউয়ে রাগী চোখে দিকে থাকিয়ে আর কিছু বলতে পারে না,,,
আর শুধু রাত দুইটা বাজে না রাত যত ঐ বাজুক মাকে যেয়ে বলবেন মা আমার না প্রচুর খিদে লেগেছে,,,, মা সাথে সাথে বলবে তাহলে আগে বলিস নি কেন,,, তুই বস আমি ব্যবস্থা করছি,,, প্রিয় সন্তানের খিদা মা সহ্য করতে পারে না,,,, রাত যত ঐ বাজুক মা কখনো বলে না এত রাতে আমাকে ডাকলি কেন,,, আমি পারব না তোকে এখন রুটি বানিয়ে দিতে,,,,
এজন্যই তো মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত,,, আমি ধিক্কার জানাই সেসব সন্তানকে যারা বউয়ের কথায় পরে,, অমূল্য রতন অমূল্য সম্পদ জন্মদাত্রী মা কে,,, যে মা দশ মাস দশ দিন অসহ্য মৃত্যুর যন্ত্রনা সহ্য করে তোমাকে দুনিয়াতে এনেছে,,, সেই মা বাবাকে বৃদ্ধাশ্রম নামক একটা বাসে স্থলে পাঠিয়ে দেয়,,, আমি সেসব সন্তানকে কখনো মানুষ রূপে গণ্য করি না,, তারা কখনো মানুষ হইনি,,, এবং কখনো হতে পারবে না,,,
কারণ মা শব্দটা এমন একটা জিনিস,, যার ভেতরে লুকায়িত আছে লক্ষ কোটি দরদ মায়া মোহাব্বত অফুরন্ত নিঃস্বার্থ হীন ভালোবাসা,, সে মা যদি একবার দুহাত তুলে মাওলার দরবারে কন্দন করে আপনার ভাল জন্য,,, তাহলে আল্লাহ তোমাকে এমন উঁচু মাকামে পৌঁছে দিবে যে,,,, তুমি কখনো কল্পনাও করনি,,,
আর মা যদি একবার বদ দোয়া করে আপনার জন্য,, তাহলে আপনি জলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবেন,,, কারণ মায়ের দোয়া আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে দ্রুত বেগে কবুল করেন,,,, কারণ মাঝে সন্তানের জন্য জান্নাতের একটা অংশ,,,, সে মাকে কখনো মনে কষ্ট দিও না,,,, কারণ মায়ের মনে কষ্ট দিলে,,, আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠে,,, মায়ের মত আপন এই দুনিয়াতে আর কেউ নাই,,, মায়ের ভালবাসা এবং ত্যাগের কথা বলে বা লিখে আমার মতো কয়েক হাজার কোটি অধম শেষ করতে পারবো না?
আজ শুধদুর প্রবাসে থেকেও কাজের ফাঁকে মাকে অসংখ্যবার মিস করি,,, বিশেষ করে লাঞ্চ টাইমে,,, মায়ের হাতের রান্না খুব মিস করি,,,, তাই তো বুক ফুলিয়ে মাকে প্রতিবারেই মোবাইলে জানাই,,, মা তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসি এবং অনেক বেশি মিস করি
? আই লাভ ইউ মা ?"""?আই লাভ ইউ সো মাচ? ?
মা রুটি বানানো শেষ হলে,,, আমি রুটি খেয়ে রুমে আসলাম মা আমার পিছনে পিছনে আসলো,,,, আমি এসে বিছানায় শুয়ে পড়লাম,,, মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,,, মার আদর মাখা মমতাময়ী হাতের স্পর্শে কিছুক্ষনের ভিতর আমি অজানা ঘুমের দেশে হারিয়ে গেলাম।
সকাল 9 টায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে রুমে বসে রইলাম,,, মা এসে বলল কলেজে যাবি না,,, আমি বললাম না""
তাহলে রুমে বসে আছিস কেন,,, যা বাহির থেকে একটু ঘুরে আয়,,, মনটা ভালো লাগবে,,,, মা আমার হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিল আর বলল বিকালে তোর আব্বু আসবে,,,,
কিন্তু আমি রুম থেকে যাই নাই,,, কিছুক্ষণ পরে আম্মুর মোবাইল টা বাজতে লাগলো,,, আম্মু ফোন ধরে কথা বলছে,, কে ফোন দিয়েছে জানিনা,,, পাঁচ মিনিট পরে আম্মু আমার কাছে ফোনটা দিলো,,, ফোন ধরে দেখি খালামণি,,,,, বলতে লাগলো,,, তোর মোবাইল কোথায়,,, কোন সময় থেকে ফোন দিচ্ছি তোর মোবাইল বন্ধ,,, আমি বললাম মোবাইল হারিয়ে গিয়েছে,,,,
খালামণি বলল আচ্ছা ঠিক আছে,,, আজকে বিকাল চারটায় তোর খালু আসবে,,, তুই আর ঈশিতা গিয়ে রিসিভ করে আনবি,,,, খালামণি এ কথা বলতে দেরি আমি মোবাইলে স্পষ্ট শুনতে পারছি,,, ইশিতা আপু বলছে ও যদি যাই তাহলে আমি যাব না,,,,, খালামণি বলল কেন ও গেলে তুই যাবি না কেন,,, সারাদিন তো তুই ও সাথেই থাকিস?
আপু বলতে লাগল কে বলল আমি ওর সাথে থাকি,,, ও গেলে আমি যাব না ব্যাস,,, আমি আর কিছু বললাম না আমি খালামণিকে বললাম খালা মনি আমার শরীরটা ভাল না আমি যেতে পারবো না,,, তারপর ফোনটা রেখে দিলাম,,, আম্মু বলতে লগলো কেন যাবিনা তুই,,, আমি বললাম আমার শরীরটা ভালো লাগছে না তাই যেতে পারবো না,,,,,, আম্মু তো আর জানে না ঈশিতা আপু কি বলছে?
আম্মু বলল আচ্ছা ঠিক আছে,,, তোর মোবাইল হারিয়েছিস কিভাবে,,,
পকেট থেকে পড়ে গিয়েছিল?
আম্মু আমার হাতে 10 হাজার টাকা দিয়ে বলল এখন গিয়ে মোবাইল কিনে আনবি,,, মোবাইল ছাড়া কি চলা যায়,,, কোন সময় কখন কোন কাজে লাগে,,, যা এখন গিয়ে কিনে আনবি?
আমি মার্কেটে গিয়ে একটা মোবাইল কিনে আনলাম,, সারাদিন আর কারো সাথে কোন কথা বললাম না,,, বিকালের দিকে আব্বু আসলো,,, ওইদিকে খালু ও আসলো,,, আজ রাত 12 টায় আপুর বার্থডে কালকে হইতে অনুষ্ঠান করবেন,,, আমি একটা অন্য নাম্বার থেকে আপুকে ঠিক ১২টায় বার্থডে উইশ মেসেজ পাঠালাম,,,, আমাকে কিছুক্ষণ পরে তার রিপ্লাই দিল,,,,
থ্যাঙ্ক ইউ,,, আপনাকে কেতো ঠিক চিনলাম না,,, সবার আগে আপনি আমাকে উইশ করলেন,, কে আপনি,,, আমি মেসেজটা সিন করে মোবাইলটা পকেট এ রেখে দিলাম,,,, কে আমি পরিচয় দিতে ইচ্ছে করছে না,,,, আমি ভাবতে লাগলাম একটা মানুষ এত বড় বেইমান কিভাবে হয়,,, সামান্য একটা জিনিস নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি করে,,, আজকে দিনের জন্য
আমাকে এক মিনিটের জন্য ফোন দিল না,, যে মেয়ে প্রতি মিনিটে মিনিটে আমাকে ফোন দিয়ে ঝারি দিতো,,, আজকে তার বার্থডে আমাকে কে একটুও মিস করে না,,, আমার ভাবতে কষ্ট হচ্ছে,, এই আমাকে ভালবেসেছিল,,, একটা জিনিস যাচাই না করে,, আমাকে এভাবে কষ্ট দিচ্ছে,,, আচ্ছা দেক আমাকে কষ্ট দিয়ে যদি সুখ পাই,,, তাহলে দেক সমস্যা নেই,,, আজকে তাকে হয়তো অনেকে তাকে বড় করে উইশ করবে,,,, আমার উইশের আশায় সে বসে থাকবে নাকি,,, আমি তো প্রেমের নামে ছলনা করেছি,,,,,।
মাথা থেকে সব চিন্তাভাবনা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে,,, ঘুমানোর চেষ্টা করলাম,,,, কিন্তু ঘুম নামে বস্তুর টা মনে হয় কোন জায়গায় হারিয়ে গেছে,,, এপাশ-ওপাশ করতে লাগলাম,,,, কোন লাভ হল না,,, তাই বাধ্য হয়ে বাইরে চলে আসলাম,,, আসার সময় আম্মু আমাকে দেখেছে,,,, আমি একটা দোকান থেকে দুটো ঘুমের ঔষধ নিলাম,,, আমি রুমে ঢুকে ঘুমের ওষুধ গুলো খেয়ে ঘুমাতে যাব,,, এমন সময় আমার দরজায় আম্মু ডাকতে লাগলো,,, আমি উঠে দরজা খুলে দিলাম,,, দেখি আম্মু আব্বু দাঁড়িয়ে
আম্মু বলতে লগ্লো কি হয়েছে তোর,,,
(আমি)কিছু হয়নি এমনি ঘুম আসছে না,,,
(আম্মু) আজকের দু'দিন যাবত দেখছি,, তুই কেমন মনমরা হয়ে আছিস,, আমাকে বল কি হয়েছে,,,
কিচ্ছু হয়নি আমার,,,, আমার কথা শুনে আব্বু বলতে লাগলো,,, আমার কাছে না বলিস তোর আম্মুর কাছে বল,,, কি হয়েছে,,,, আগে তো তোর শরীরের অবস্থা এরকম ছিল না,,,, আর আমি আসার পরেও আমার সাথে কোন কথা বলিস নি?
তোর আম্মুকে বল কি হয়েছে,,, আমি আব্বুকে বললাম কিচ্ছু হয় নাই আমার তোমরা ও অযথা টেনসন করছো,,, আমি এখন ঘুমাবো না যাও,,,,
★ আব্বু আম্মু আর কোন কথা না বলে চলে গেল,,, সকাল দশটায় কারো ডাকে ঘুম ভাঙলো,,, তাকিয়ে দেখি আমার বেডে আমার বন্ধু শামীম বসে আছে,, আমি ওকে দেখে বললাম কিরে তুই এখানে কিভাবে,,, শামীম শালা তুই দুদিন ধরে বাহিরে বের হোস না,,, কলেজে যাস না,,, তোকে অনেকবার ফোন দিয়েছি তোর মোবাইলে বন্ধ,,,,,,
(আমি) মোবাইল হারিয়ে গিয়েছে,,, কিন্তু তুই এখানে কিভাবে,,,
(বন্ধু) আন্টি ফোন দিয়েছিল তুই দুদিন ধরে মন খারাপ করে রুমে বসে থাকিস,,, আন্টি আঙ্কেল কাউকে কিছু বলিস না,,,, তাই আমাকে আন্টি সকালে ফোন দিয়ে বলল আস্তে,,,,, এখন উঠ ফ্রেশ হ তারপর দুজনে নদীর পারের দিকে যাব,,, অনেকদিন ঐ দিকে যাওয়া হয় না।
★ আমি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে,,, নদীর পারে চলে গেলাম,,, দুজনে প্রায় তিন ঘন্টার মতো ঘুরাঘুরি করলাম,,, আমি শামীম কে সব খুলে বলেছি,,,,,, শামীম বলল তুই কোন চিন্তা করিস না,,, আমি ফারিয়াকে আর মিশালকে এনে আপুর সামনে দাঁড় করাবো,,,, ওরা আপুকে সব খুলে বলবে?
সন্ধ্যা 7 টা আব্বু আম্মু চলে গেল খালামনির বাসায় আপুর বার্থডের অনুষ্ঠান,,, আমাকে বলল,,, আমি বললাম আসবো তোমরা যাও,,,
৭.৩০ আমি এখনো রুমে বসে আছি,,, আমি কি তাদের বাসায় যাব,,,, সেতো আমাকে বলেছে,,, আমি যদি তার সামনে যাই তাহলে তার মরা মুখ দেখবো?
না যাওয়া যাবে না,,,, এক কাজ করা যায়,, প্রেমিকা হিসেবে নয় আপু হিসাবে তো তাকে আমি বার্থডে গিফট দিতে পারি?
অনেক আগে একজোড়া নুপূর কিনে রেখেছিলাম আপুর বার্থডে তে তাকে পড়িয়ে দিবো বলে,, নুপুরের দুটা পকেট এ নিয়ে বাইকে করে মার্কেটে রওনা দিলাম,,, আরো কিছু তার পছন্দের গিফট কিনলাম,,, সাথে আমার এবং তার পছন্দের একটা নীল কালারের শাড়ি কিনলাম""""
সবগুলো গিফট প্যাকেট করে বাইকে রওয়ানা দিব,, এমন সময় ফোনটা বেজে উঠলো,,, স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি আমার বন্ধু শামীম,,,,
ফোন ধরে শামিম আমাকে যে কথা শোনালো,,, আমি কিছুক্ষণের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম,,, আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেল,,, মনে হচ্ছে আকাশ টা ভেঙ্গে আমার মাথার উপরে পড়েছে,,,, আমি পছন্দ কাপতে লাগলাম,,,, সামান্য একটা ভুলের জন্য আমার সাথে এত বড় অন্যায় হতে পারে না,,,,
★ খালু নাকি আপুর বিয়ে অন্য একটা ছেলের সাথে ঠিক করেছে,,, আর তাতে নাকি আপু রাজি,,, ছেলেটা এখন আপুদের বাসায় আছে,,, কিছুক্ষণ পরে তাদের এনগেজমেন্ট আংটি পড়ানো হবে,,, আব্বু আম্মু নাকি খালা খালুকে বুঝিয়ে বললো,,,, কিন্তু আপু নাকি এখন কারো কথাই শুনছে না,,, সে নাকি এই ছেলেকেই বিয়ে করবে,,,,, আম্মু নাকি আপুকে অনেক বুঝিয়েছে,,,, আব্বু আম্মুকে নাকি অনেক কথা শুনিয়ে দিয়েছে,,,, আমার চরিত্র খারাপ আমার নাকি আরো অনেক মেয়ের সাথে সম্পর্ক আছে,, আরো অনেক কিছু,,,, আমি ভাবতেও পারছি না,,, আপু সামান্য একটা বিষয় নিয়ে,, এরকম সিদ্ধান্ত নিবে,,,, আমি শামীম কে বললাম মিশাল ফারিয়া আসে নাই,,,, ও বলল ওরা নাকি জ্যামে পড়ে গেছে,, আসতে একটু দেরি হবে,,,,
আমি গিফট গুলো নিয়ে বাইকে উঠে আনমনা হয় বাইক চালাচ্ছি,,,, কিছুক্ষণ পরে আবার ফোনটা বাজতে লাগলো,,,, বাইক স্টপ না করে পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে রিসিভ করলাম,,,শামিম সাথে সাথে বলতে লাগলো,,, তুই কোথায় তাড়াতাড়ি আয়,,, মনে হয় আগামী কিছুক্ষনের ভিতর আপুকে আংটি পড়ানো হবে,,,,, তুই তাড়াতাড়ি আয় তা না হলে সব শেষ হয়ে যাবে,,,,, আমি আর কিছু ভাবতে পারছিনা,,, আমি মোবাইলটা কানে লাগি এই বাইকের হাই স্পিড তুললাম,, এত দ্রুত বাইক চলতে লাগল যে,,, রাস্তার দুই পাশের গাছগুলো কয়েক সেকেন্ডের ভিতর আমার পিছনে পড়ে যাচ্ছে,,,, হঠাৎ করে সামনে খেয়াল করে দেখি একটা লরি আসছে,,, আমি লোরী টার সাইট কেটে গিয়ে সামনে যে আর একটা গাড়ি আছে,,, আমার খেয়াল নাই,,, একটা মাইক্রোবাস এর সাথে এত স্পিডে সংঘর্ষ হলো যে আমার বাইক অর্ধেকটা দুমড়ে মুড়ছে গেছে,,, কিছুক্ষণের জন্য আমি জ্ঞান হারালাম,,,, কিছুক্ষণ পরে যখন জ্ঞান ফিরলো দেখি আমার চারপাশে মানুষ সভা গম,,, আমি উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু পারছিনা,,,, কিছু লোক ধরে আমাকে দাঁড় করালো,,,, আমি তাকিয়ে দেখি সারা রাস্তা রক্ত দিয়ে ভেসে যাচ্ছে,,, আমার মাথা দিয়ে প্রচুর রক্ত পরছে,,, আমি হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি হাত কেটে অঝোর ধারায় রক্ত পড়তে লাগলো,,, আমার সারা শরীরে রক্ত আর রক্ত,,, কিছু লোক আমাকে কয়েকটা কাপড় দিয়ে হাত-পা বেঁধে দিল,,, পিঠে প্রচন্ড ব্যথা করছে,,,, কিছু লোক আমাকে একটা গাড়িতে তুলে হসপিটালে নিতে চাচ্ছে,,,, কিন্তু আমি যাব না,,,, আমার যে ঐ জায়গায় যেতে হবে,,,,, লোকেরা বলতে লাগলো,,, তুমি এখন যদি হসপিটালে না যাও,,, তোমার শরীরের সমস্ত রক্ত বের হয় রক্ত হীনতায় তুমি মারা যাবে,,, কিন্তু আমি তাদের কোনো কথা ঐ তোয়াক্কা করলাম না,,,,,, এটা আমার প্রথম প্রেম,,, তাকে ছাড়া বেঁচে থাকাটা মৃত্যুর সমান,,,, তাকে যদি না পাই তাহলে বেঁচে থেকে লাভ কি।।
আমি তাদেরকে বললাম আমাকে একটা গাড়িতে তুলে দেন,,,, তারা আমাকে এবং আমার মোবাইল গিফট গুলো কে গাড়িতে তুলে দিল,,,, মোবাইলের স্কিন ফেটে গেছে। গাড়ির সিটে হেলান দিতে গিয়ে দেখি হেলান দিতে পারছি না,,,, সাথে সাথে পিছনে হাত দিলাম,,, বুঝতে পারলাম বড় কোন কাঁচের খন্ড আমার পিঠ দিয়ে ভিতরে ঢুকে আছে,,,, অঝোর ধারায় রক্ত পড়তে লাগলো,,,, আমি ড্রাইভারকে বললাম ভাই তাড়াতাড়ি যান,,, ডাইভার কিছুক্ষনের ভিতর আমাকে পৌঁছে দিল,, আমি ড্রাইভারকে বললাম ভাই আপনার কাছে কোন কাপড় চোপড় আছে,,,, সে আমাকে একটা চাদর দিল,,, আর আমাকে বলল আপনি কি পাগল,,, যেভাবে রক্ত পড়ছে কিছুক্ষনের ভিতর তো আপনি মারা যাবেন,,, আমি জীবনের শেষ শক্তিটুকু দিয়ে হেটে আপুর বাসার গেটের সামনে গেলাম,,,, চাদর দিয়ে সমস্ত শরীর দেখে ফেললাম,,,, জানিনা ভিতরে কি হচ্ছে,,, আমি দারোয়ান চাচার কাছে গিফট গুলো দিয়ে বললাম,,,, আমি যে দিয়েছি সে কথা বলবেন না,,,, তাহলে সে হয়তো এখানে আসতে পারে,,, আর সে আমাকে বলেছে আমি তার সামনে গেলে তার মরা মুখ দেখবো? দারোয়ান চাচা গিফট গুলো নিয়ে ভিতরে চলে যাচ্ছে,,, আমি গেট থেকে একটু দূরে উল্টো হয়ে বুক টা দেওয়ালের লাগিয়ে জীবনের শেষ নিঃশ্বাসটুকু টানছি,,,, প্রচন্ড যন্ত্রণা হচ্ছে,,, মনে হচ্ছে কেউ আমার কলিজা টা টেনে বের করে নিচ্ছে,, মৃত্যুর যন্ত্রনা হয়তো এরকমই,,
শেষবার মা বাবার চেহারাটা দেখতে খুব ইচ্ছে করছে,,,, হয়তো দেখতে পাবো না,,তার আগেই রক্ত হীনতায় মারা যাব আমি,,, আমার সিনিয়র খালাত বোন এখন অন্যের হয়েগেছে???
(((চলবে))))
Posts: 736
Threads: 2
Likes Received: 424 in 340 posts
Likes Given: 2,323
Joined: Sep 2019
Reputation:
12
আপনার গল্পটা মিষ্টি প্রেমের হচ্ছে
অসাধারণ লেখনী দাদা।
Posts: 46
Threads: 0
Likes Received: 36 in 26 posts
Likes Given: 4
Joined: Feb 2019
Reputation:
1
Dada next update ta din nahole amader hurt er dhuk pukano bandho hocche na je
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব ২২
শেষবার মা বাবার চেহারাটা দেখতে খুব ইচ্ছে করছে,,,, হয়তো দেখতে পাবো না,,তার আগেই রক্ত হীনতায় মারা যাব আমি,,, আমার সিনিয়র খালাতো বোন বিয়ে করা আর হলো না,,, এতক্ষণে মনে হয় আমার সিনিয়র খালাতো বোন অন্যের হয়ে গিয়েছে,
★দ্রুত বেগে পকেটে হাত দিয়ে মোবাইলটা বের করলাম,,,তার পর মোবাইল টা ওপেন করার চেষ্টা করছি,,,কিন্তু ফোনটা ওপেন হচ্ছে না? কয়েকবার ট্রাই করার পরে হঠাৎ করে মোবাইল টা ওপেন হল,,, কিন্তু হাতের রক্তের কারণে মোবাইলের স্ক্রীনে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না,,, চাদর দিয়ে রক্ত টা মুছে কোনমতে আম্মুর নাম্বারে ট্রাই করলাম,,, ফোন একবার বাজতেই আম্মু ফোন রিসিভ করলো,,,
আমি নিজের কণ্ঠে টাকে যত সম্ভব কন্ট্রোল করে আম্মুকে বললাম,,, আম্মু আব্বুকে নিয়ে একটু বাইরে আসো না,,, তোমাদেরকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে,,,
(আম্মু) কি হয়েছে তোর এভাবে কথা বলছিস কেন,,, কোথায় আছিস তুই,,,
(আমি)আমি আপুদের বাসার বাহিরে?
(আম্মু) তুই বাহিরে কি করিস ভিতর আয়,,,
(আমি) আমি ভিতরে আসতে পারবো না,,, একটু তাড়াতাড়ি আসো না আম্মু প্লিজ,,, হয়তো তোমাদের কে আর দেখতে পাবো না?
(আম্মু) কি বলছিস তুই আমি তো কিছু বুঝতে পারছি না?
(আমি) আম্মু প্লীজ তাড়াতাড়ি আসো?
(আম্মু) আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোর আব্বুকে নিয়ে আসছি?
★আমি দেওয়ালের সাথে বুক হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আছি,,, কারণ পিছনে তো কাচঁ ভাঙ্গা ঢুকে আছে,,, পিঠ দিয়ে হেলান দিতে পারছি না,,, আমার দুচোখ ঝাপসা হয়ে আসছে,, এই বঝি নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে,, জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে শুরু করলাম বুঝতে পেরেছি জীবনের সময় ঘনিয়ে এসেছে,,,, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে,,, জীবনের শেষ বার আপুর মুখটা দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। হঠাৎ করে পিছনে মানুষের শব্দ শুনে,,
আমি আমার শেষ শক্তিটুকু দিয়ে ঘুরে দাড়ালাম,, দেখি সবাই আমার দিকে আসছে,, আব্বু আম্মু খালা খালু ঈশিতা আপু আর আমার বন্ধু বান্ধব সবাই,,,
*আমাকে ওয়ালের সাথে চাদর মুড়ি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে সবাই হতভম্ব হয়ে গিয়েছে,,,
*আব্বু আম্মু তারাতারি আমার কাছে আসতে লাগলো,,, পিছনে ঈশিতা আপু ও আসতে লাগলো,,, আমি সামনে কিছুই দেখতে পাচ্ছি না,,, আমার হাত-পা অবশ হয়ে আসছে এই বুঝি লুটে পরবো জমিনে?
★আমি আব্বু আম্মুকে দেখে নিজেকে সামলাতে পারলাম না,,, নিজের অজান্তেই চাদরটা শরীর থেকে পড়ে গেল,,, সাথে সাথে সবাই চিৎকার দিয়ে উঠল,, কারন আমার মাথা থেকে পা অবধি পর্যন্ত রক্ত ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না,,,
আমি দুটো হাত বাড়িয়ে দ্রুত বেগে আব্বু আম্মুর কাছে অগ্রসর হচ্ছি,,, কিন্তু আব্বু আম্মুর কাছে যেতে পারলাম না,,,তার আগেই হোঁচট খেয়ে জমিনের লুঠে পরলাম," আর বিধাতার কাছে বলতে লাগলাম,,, হে বিধাতা একটু সময় দাও না আমাকে,,, শেষবার আপুর সাথে দুইটা কথা বলে যাই,,,
হয়তো বিধাতা আমার ডাক শুনতে পাচ্ছে না,,, আমার চোখ দুটো প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে লাগল,,, আস্তে আস্তে চোখ দুটো নিভু নিভু হতে লাগলো,,, চোখ থেকে পানি গাল বেয়ে জমিনে পড়ছি,,, খুব কষ্ট হচ্ছে আব্বু আম্মুর জন্য,,, তাদের একমাত্র ছেলে আমি ছাড়া তাদের আর কেউই নাই,,, আমি চলে যাওয়ার পরে কে দেখবি আমার মা বাবা কি,,, বিধাতা শেষ পর্যন্ত আব্বু আম্মুকে একটু জড়িয়ে ধরার সময় টুকু দিইনি?
★আব্বু আম্মু এ দৃশ্য দেখে ফারাবি বলে এতো জোরে চিৎকার দিয়েছি যে,, আমার হৃদয় আত্মা বেত করে,,,শেষ বারে মায়ের চিৎকার করে ফারাবী ডাক যেন আমার কলিজায় গিয়ে কাঁপন তুলেছে?চোখ দুটো বুঝার আগে আরেক জনের হৃদয় কাঁপানো চিৎকার শুনতে পেয়েছি,,, হারিয়ে গেলাম কোন এক দূর অজানায়।।।
(((চলবে))))
•
Posts: 46
Threads: 0
Likes Received: 36 in 26 posts
Likes Given: 4
Joined: Feb 2019
Reputation:
1
Dada apni amon jaygai ses korlen ,Tate kore Mon aro kepe uthce,plz dada suspence ta katan
Posts: 4
Threads: 0
Likes Received: 3 in 3 posts
Likes Given: 3
Joined: Feb 2019
Reputation:
0
অস্থির আপডেট দাদা। ভাষা হারিয়ে ফেললাম।
Posts: 303
Threads: 0
Likes Received: 219 in 174 posts
Likes Given: 601
Joined: Jan 2019
Reputation:
4
Posts: 242
Threads: 1
Likes Received: 142 in 118 posts
Likes Given: 25
Joined: May 2019
Reputation:
5
Posts: 303
Threads: 0
Likes Received: 219 in 174 posts
Likes Given: 601
Joined: Jan 2019
Reputation:
4
Posts: 758
Threads: 6
Likes Received: 1,591 in 804 posts
Likes Given: 2,169
Joined: Jan 2019
Reputation:
193
পর্ব ২৩
"""এদিকে ঈশিতা তার প্রিয় মানুষের এ অবস্থা দেখে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে নাই,,, সাথে সাথে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।।
ফারাবীর বন্ধুবান্ধব খালা খালু দৌড়ে ফারাবীর কাছে যাই,,, এবং ফারাবীকে ডাকতে থাকে,,,, কিন্তু ফারাবীর কোন সারা শব্দ নাই,,,, সবাই কান্না করতে থাকে তাদের প্রিয় বন্ধু জন্য।।
ফারাবীর খালা ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে আহাজারি করতে থাকে,,,, এবং ফারাবীর বুকে কান পেতে বোঝার চেষ্টা করছে ফারাবীর শ্বাস-নিঃশ্বাস চলছে কিনা,,,,,, কিন্তু না ফারাবির কোন শ্বাস-নিঃশ্বাস চলছে না।।
ফারাবীর খালামণি আরো জোরে জোরে কান্না করতে থাকে,,,, এবং তার স্বামীর শার্টের কলার ধরে বলতে লাগে।।
তুমি দাড়িঁয়ে দাড়িঁয়ে কি দেখো। কিছু একটা কর না,,, ফারাবী যদি মারা যায়,,,তাহলে আমার বোন তো পাগল হয়ে যাবে।। আমার কোন ছেলে নাই,,,,, আমার বোনের একটা মাত্র ছেলে,,,, ওর কিছু হয়ে গেলে তো আমার বোন সত্যি সত্যি পাগল হয়ে যাবে?
তোমার মেয়ের কথা একবার চিন্তা কর।।
ফারাবীর খালু দিশেহারা হয়ে গেলে। একজনের জায়গায় এখন চারজনের অবস্থা সিরিয়াস।।।। ফারাবীর খালু বলতে লাগলো,,, চিন্তা করো না,,, আল্লাহ যদি সহায় হোন,,,, তাহলে ফারাবী বাঁচবে,,,,, আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব।।
অ্যাম্বুলেন্স কে ফোন করা হলো,,, অল্প কিছুক্ষনের ভিতর অ্যাম্বুলেন্স এলে,,, সাথে সাথে ফারাবীকে অক্সিজেন মাক্স লাগিয়ে গাড়িতে তুলে,,,, সাথে যারা জ্ঞান হারিয়েছে তাদের কেউ।।।
গাড়ি কুমিল্লা জেনারাল হসপিটালে পৌঁছালে,,,, ডাক্তার দূরত্ব ফারাবীকে ইমারজেন্সিতে ভর্তি করে,,,,,, তখন পর্যন্ত যারা জ্ঞান হারিয়েছে তাদের জ্ঞান ফিরে নাই”” আধাঘন্টা পর ডাক্তার ইমারজেন্সি থেকে বের হলে,,, ফারাবীর খালা খালু ডাক্তারের কাছে যাই,,, ডাক্তার বের হয়ে বলতে লাগল""" ওর অবস্থা এত গুরুতর যে,,, আমাদের পক্ষে এখানে চিকিৎসা করা সম্ভব না,,, আপনারা ওকে ইমিডিয়েটলি ঢাকাই শিফট করুন,,,, আমরা ওর ক্ষত জায়গা গুলো পরিষ্কার করে দিয়েছি,,,, আর রক্ত বের হবে না।
আপনারা এখন যত দ্রুত পারেন ওকে ঢাকায় নিয়ে যান। দেরি করলে হয়তো ওকে বাঁচানো সম্ভব না।।
একথা শুনে ফারাবির খালা কান্না করতে লাগল,,, এখন আমরা কি করব,,,, ফারাবীকে বুঝি আর বাঁচাতে পারলাম না।
ফারাবীর খালু বলতে লাগলো আহা টেনশন করো না,,, একটা ব্যবস্থা করছি,,,
ফারাবীর খালুর হেলিকপ্টার ভাড়া করে,,,
ফারাবীকে হেলিকপ্টারে তুলে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই,,,, হেলিকপ্টার যখন ভাসমান শূন্য আকাশে দ্রুত বেগে চলতে লাগলো,,,, তখন ফারাবীর আম্মুর জ্ঞান ফিরে,,,, জ্ঞান ফেরার পর আবারো প্রিয় সন্তানের জন্য আহাজারি করতে শুরু করে,, তোমরা আমার ফারাবীকে আমার কোলে ফিরিয়ে দাও,,, আমার একটা মাত্র ছেলে,,, সে যদি আমাদেরকে ছেড়ে চলে যায়,,,, তাহলে আমরা কি নিয়ে বাঁচবো,,, কে আমাকে মা বলে ডাকবে,,, আমার যে আর কোন সন্তান নাই,,, এ কথা বলে হাজারী করতে করতে আবারও জ্ঞান হারালো।। ফারাবীর আম্মুর কাথা শুনে,,, ফারাবীর খালা খালু নিজেদেরকে সামলানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছে,,,,,
কিছুক্ষণ পরে ফারাবীর আব্বু ও জ্ঞান ফিরে,,,, উনার মুখে কোন কথা নাই,,, মনে হই প্রিয় সন্তানের জন্য বোবা হয়ে গিয়েছে,,, ফারাবীর খালো ফারাবির আব্বুকে সান্তনা দেবার চেষ্টা করছে।।
এদিকে ঈশিতার এখনো জ্ঞান ফিরে নাই,,,
হেলিকপ্টার ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছালে,,,
ডাক্তার ফারাবীর গুরুতর অবস্থা দেখে জরুরি বিভাগে ভর্তি করে ট্রিটমেন্ট করতে থাকে,,,,
এদিকে ততক্ষণে ঈশিতার জ্ঞান ফিরেছে,, ওকে কোনোভাবেই সামলানো যাচ্ছে না।
তার প্রিয় মানুষটির জন্য একবারে পাগল পারা হয়ে গিয়েছে,,,, মাকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কাঁদতে লাগলো আর বলতে লাগলো,,,,মা কী হয়েছে আমার ফারাবীর।। তুমি কথা বলোনা কেন,,, আমার ফাবীর কিছু হয়েছে,,,, ফারাবীর কিছু হলে যে আমি বাচঁবো না,,, আমার কাছে আমার ফারাবীকে এনে দাও,,,
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে হেঁচকি উঠে গেছে,, একটা পর্যায়ে আবারো জ্ঞান হারালো,,,,
আধাঘন্টা পর দুজন ডাক্তার ইমারজেন্সি থেকে বের হলে সবাই দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যাই,,, ডাক্তারের চেহারায় দুঃখের আভা দেখা যাচ্ছে,,,, ফারাবীর আব্বু জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছে ডাক্তার,,,, আমার ছেলে বাঁচবে,,,, ডাক্তার বলতে লাগলো,,,, দেখুন আপনার ছেলের অবস্থা এতটাই গুরুতর যে ওকে হয়তো বাঁচানো আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না,,,,
এ কথা শোনার সাথে সাথে ফারাবির আব্বু ডাক্তারের হাত ধরে বলতে লাগলো,,, ডাক্তার যে করে হক আমার ছেলেকে বাঁচান,,, যত টাকা লাগে আমি দিবো,,, দরকার হলে আমি আমার সব সম্পত্তি বিক্রি করে দিব??
(ডাক্তার) দেখুন টাকা দিয়ে সবকিছু হয় না। হায়াত মউত আল্লাহর হাতে,,, আমরা শুধু চেষ্টা করে থাকি,,,, আমার এক বন্ধু আছে ডাক্তার ইব্রাহীম হামিদ,,,, ওকে ফোন দিয়েছি কিছুক্ষনের ভিতর চলে আসবে,,, দেখা যাক কি করে যাই।।।
★ কিছুক্ষণ পরে ডাক্তার ইব্রাহিম হামিদ এসে ফারাবীকে 1 ঘন্টা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাইরে বের হয়ে আসে,,,,,
ফারাবীর আব্বু দৌড়ে ডাক্তার ইব্রাহিম হামিদের কাছে যায়,,,, ডাক্তার ইব্রাহিম হামিদ বলতে লাগলো আপনার ছেলের অবস্থা খুবই খারাপ,,,, ডাক্তার কথা শেষ করতে পারল না তার আগেই ফারাবির আব্বু ডাক্তারের হাত ধরে ফেলে,,,,, ডাক্তার আমার একমাত্র ছেলে,,,, ওকে ছাড়া আমাদের আর কেউই নাই,,,, যে করে হোক আমার ছেলেকে বাঁচান।।
(ডাক্তার) দেখুন চিন্তা করবেন না,,, আল্লাহর উপর ভরসা করুন,,,, দেখুন আপনার ছেলের শরীর থেকে এত পরিমান রক্ত বের হয়েছে যে,,, ও এতক্ষণ বাঁচার কথা না,,, হয়তো আপনাদের দোয়া এবং ভালোবাসায় এখনো বেচেঁ আছে।।
কিন্তু আগামী 30 মিনিটের মধ্যে যদি ওর শরীরে A (-) পজেটিভ রক্ত পোস না করা হয়,, তাহলে হয়তো আর শ্বাস প্রশ্বাস নিবে না? এখন যত দ্রুত সম্ভব A(-) পজিটিভে ৬ থেকে৭ রক্তের ব্যবস্থা করুন। 30 মিনিট ওভার হয়ে গেলে ওকে আর বাঁচানো সম্ভব হবে না।।।
সাথে সাথে ফারাবীর আব্বু খালু বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংক ফোন করতে লাগলো,,, কথায় আছে বিপদ যখন আসে তখন চারপাশ থেকে আসে,,,, কোন ব্লাড ব্যাংক থেকে এক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করতে পারলো না,,,
বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজন সবার কাছে ফোন করা হয়েছে কারো রক্তের সাথেই ফারাবীর রক্তের গ্রুপ মিলেছে না।। তারা দিশেহারা হয়ে গিয়েছে,,,, এ বুঝি তাদের প্রিয় সন্তানকে হারিয়ে ফেললো?
এদিকে ফারাবীর আম্মুর জ্ঞান ফিরেছে,,, জ্ঞান ফেরার পর যখন শুনল কোন রক্তের ব্যবস্থা হচ্ছে না,,,, তখন কাঁদতে লাগলো আর বিলাপ করতে লাগল,,, আমার ছেলে কি তাহলে আমার কাছে ফিরে আসবে না,, আমাকে মা বলে ডাকবে না,,, আমি কি নিয়ে থাকবো,,,, কাকে বাবা বলে জড়িয়ে কপালে চুমু দিব।। শেষ বার
আমার কলিজার টুকরো ছেলেটাকে একবার জড়িয়ে ধরতে পারিনি। একনাগাড়ে বিলাপ করে যাচ্ছে,,, আসলে কোন মায়ের একমাত্র ছেলে যদি অকালে তাদের কাছ থেকে হারিয়ে যায়,,, তা যে ঐ মায়ের জন্য কতটা কষ্টের কতটা বেদনার,, কতটা যন্ত্রণার শুধু ঐ মা ওই উপলব্ধি করতে পারে।।
অলরেডি ২৫ মিনিট ওভার হয়ে গেছে,, এক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করতে পারে নাই,,, ডাক্তার বের হয়ে আসলো এসে জিজ্ঞাসা করল রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে।।
ফারাবী আব্বু চোখ দুটো নিচের দিকে দিয়ে না সূচক বাক্য উচ্চারণ করলো,,, তার চোখ থেকে গাল বেয়ে পানি ফ্লোরে পড়তে লাগলো,,,,, একজন বাবা হয়ে তার প্রিয় সন্তানকে রক্তের কারণে শেষ হতে দেখে কিভাবে নিজেকে সামলাই।।।
ডাক্তার ফরাবীর আব্বুর চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পেরেছে,,, এই চোখে যে কত আকুতি মিনতি খেলা করছে,,, প্রিয় সন্তানকে বাচাঁনোর জন্য।।
ডাক্তার চোখ নিচের দিকে দিয়ে বলতে লাগলো।
দেখুন A (-) পজিটিভ রক্তের ব্যবস্থা না হলে আপনার ছেলেকে আর বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না,,,, আমরা দুঃখিত।
এদিকে ঈশিতার জ্ঞান ফিরেছে কিছুক্ষণ আগে,,, জ্ঞান ফেরার পর থেকে এক নাগাড়ে কেদেই যাচ্ছে,,, ডাক্তারের মুখ থেকে যখন শুনলো A(-) পজিটিভ রক্ত না হলে ফারাবীকে বাঁচানো যাবে না?
ঈশিতা এ কথা শুনে দৌড়ে গিয়ে ডাক্তারের পা জড়িয়ে ধরল,,, আর বলতে লাগলো ডাক্তার আমার ফারাবীকে বাঁচান,,, আপনার যা কিছু লাগে আমরা দিব?
((ডাক্তার)) দেখুন টাকা দিয়ে কিচ্ছু হবে না,,, ওর রক্ত দরকার?
ঈশিতা বলতে লাগলো ডাক্তার ফারাবীর রক্ত আমার রক্ত এক আমার শরীর থেকে সব রক্ত নিয়ে নেন,,, তারপরও আমার ফারাবীকে আপনি বাঁচিয়ে দেন।
(ডাক্তার) দেখুন আপনার শরীর থেকে এত পরিমান রক্ত নিলে আপনি মারা যাবেন।।
ঈশিতা বলতে লাগলো ডাক্তার ফারাবীকে ছাড়া আমি বেঁচে থেকে কী করব,,,, ওকে ছাড়া বেঁচে থাকাটা যে আমার মৃত্যুর সমান মনে হবে,,,, ওকে ছাড়া আমি নিজেকে কল্পনাও করতে পারি না।। আমি বেঁচে থাকতে ওর মৃত্যু আমি সহ্য করতে পারবো না,,, আমার শরীর থেকে সব রক্ত নিয়ে নিন।
ফারাবীর আব্বু আম্মু ঈশিতার কথা শুনে অবাক হয়ে গিয়েছে,, তারা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি যে ঈশিতা ফারাবীকে এতটা ভালবাসি,, এবং ফারাবীর রক্তের গ্রুপ আর ঈশিতার রক্তের গ্রুপ এক?
ইশিতার কথা শুনে ডাক্তার বলতে লাগলো তা কখনো সম্ভব না,,, আপনার শরীর থেকে সব রক্ত নেওয়া মানে আপনাকে সে ইচ্ছায় হত্যা করা,, আমাদের কাজ মানুষকে বাঁচানো,,, কাউকে হত্যা করা না,,,, আপনি আমাদের সাথে আসুন আপনার শরীর থেকে ততটুকু রক্ত নিব যতটুকু রক্ত নিলে আপনি বেঁচে থাকবেন।।
ডাক্তার ঈশিতার শরীর থেকে তিন ব্যাগ রক্ত নিল।। তিন ব্যাগ রক্ত দিয়ে ঈশিতা দুর্বল হয়ে পড়েছে।।
তারপর ডাক্তার এমার্জেন্সি তে গেল ঘন্টা দুয়েক পর ডাক্তার ইমারজেন্সি থেকে বের হলে সবাই দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যায়,,
ডাক্তার জোরে একটা নিশ্বাস ফেলে বলতে লাগলো,,, আপনার ছেলের শরীরে তিন ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে,,, কিন্তু সে রক্ত আপনার ছেলের শরীরে কাজ করছে না। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি,,,,, আমাদের আর কিছু করার নাই,, আমাদের ক্ষমা করবেন।
আপনারা ওকে,যত দ্রুত পারেন ওকে উন্নত চিকিৎসার জন্য,, বাহিরে কোন রাষ্ট্র নিয়ে যান।।।
এ কথা শুনে সবাই দিশেহারা হয়ে গেছে,,, কি করবে এখন,,,,, ঈশিতার আব্বু সেনাবাহিনীতে কাজ করে দু ঘন্টার ভিতরে সিঙ্গাপুরের টিকেট কেটে সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হস্পিতাল নেওয়া হয়।।।
ডাক্তার ফারাবীর গুরুতর অবস্থা দেখে আই সি তে ভর্তি করায়,,,, তারপর সেখানের কয়েকটা ব্লাড ব্যাংক থেকে 5 ব্যাগ রক্তের
রক্তের ব্যবস্থা করে??
টানা 9 ঘণ্টা ধরে দুজন ডাক্তার ট্রিটমেন্ট করে কেবিন থেকে বের হয়ে আসে।
সাথে সাথে সবাই দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যাই,,,, ডাক্তার দুঃখের সহিত বলতে লাগলো,,,, আপনার ছেলেকে রক্ত দেওয়া হয়েছে,,, এবং ওর যাবতীয় সব ট্রিটমেন্ট ভালোভাবে হয়েছে,,,, কিন্তু ওর জ্ঞান ফিরছে না,,,, আর জ্ঞান কখন ফিরবি তাও আমরা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না।।। ঈশ্বরের উপর ভরসা করুন,,, ঈশ্বর যদি সহায় হোন,,, তাহলে যেকোনো সময় আপনার ছেলের জ্ঞান ফিরতে পারে।
★ ডাক্তারের কথা শুনে সবার চেহারাই একটা আতঙ্কের ছাপ ভেসে উঠলো।।।
এক এক করে 10 টা দিন অতিবাহিত হয়ে গেল কিন্তু ফারাবির জ্ঞান ফিরছে না,,,
ফারাবীর আম্মু চব্বিশটা ঘন্টা জায়নামাযে দাঁড়িয়ে প্রিয় সন্তানের জন্য দোয়া করতে থাকে,,,
এভাবে আরো দিন অতিবাহিত হতে লাগলো,,, চারজন মানুষের নিদ্রাহীন ২০ রজনী কেটে গেল,,, কিন্তু ফারাবির জ্ঞান ফিরে না,,,,
এদিকে ঈশিতা সারাটা সময় জায়নামাজে দাঁড়িয়ে তার প্রিয় মানুষটির জন্য কান্না করতে থাকে,,, কেঁদে কেঁদে আল্লাহকে বলে,, হে আল্লাহ তোমার কাছে কখনো কিচ্ছু চাইনি,,,, আজ আমি আমার ফারাবীকে চাই,,, আমার ফারাবীকে তুমি আমার কাছে ফিরিয়ে দাও।।।
সময় তার নির্দিষ্ট গতিতে চলতে লাগল,,,
সূর্য তার নিয়ম মত পৃথিবীকে আলোকিত করে যেতে লাগল,,, কিন্তু ফারাবীর আব্বু-আম্মুর মনে কোন আলো নেই,,,, সে আলো যেন হারিয়ে গেছে,, কোন এক অজানা অন্ধকার গুহার ভিতরে,,, সেখান থেকে মনে হয় আলো আর ফিরে এসে তাদের জীবন আলোকিত করবে না।।
৩০ দিন অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে কিন্তু ফারাবির জ্ঞান ফিরছে না,,, ফারাবীর আব্বু আম্মুর বিশ্বাস,, তাদের প্রিয় সন্তান আবারো ফিরে আসবে তাদেরই বুকে,,
31 দিনের মাথায় ডাক্তার এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলে,,, আগামী পাঁচ দিনের মাথায় যদি ওর জ্ঞান না ফিরে,, তাহলে হয়তো আর কখনো জ্ঞান ফিরবে না।।
ডাক্তারের কথা শুনে সবাই যেন বোবা হয়ে গেছে,,, কারো মুখে কোন বাক্য উচ্চারণ হয় না??
৩৪ দিন চলতে লাগলো,,, ফারাবীর কেবিনে ফারাবীর আব্বু আম্মু খালা খালু বসে আছে,,, আর ঈশিতা হোটেলে,, এখানে আসলে সারাক্ষণ কান্নাকাটি করে,,, সেজন্য বেশিরভাগ ওকে হোটেলে রাখা হয়,,,
বিকালবেলা ফারাবির কেবিনে,, ফারাবীর পাশে ফারাবীর আব্বু আম্মু বসে প্রিয় সন্তানের দিকে তাকিয়ে আছে,,, আর আস্তে আস্তে বলছে,,, বাবা চোখ খোল না,, দেখ না একবার আমাদের কে,,, তোর কি মায়া লাগেনা আমাদের জন্য,,,, আমাদেরকে ছেড়ে যাস না বাবা তুই,,,,, দেখ তোর মার দিকে একবার তাকিয়ে,,, কত রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছে কত বেলা না খেয়ে কাটিয়ে দিচ্ছে তোর মা তোর জন্য,,,,, কিন্তু ফারাবীর জ্ঞানকে মনে হয স্রষ্টা ঘুমিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে ক্ষনিকের সময়ের জন্য,,,, তাইতো স্রষ্টার হুকুম ছাড়া জ্ঞানটা এনে তার জন্মদাত্রী মা দিকে একবার তাকাতে পারছে না।।।
তারা ফারাবির পাশে বসে ভাবতে লাগলো
তাদের সন্তানকে বুঝি আর ফিরে পাবে না,,, ডাক্তারের দেওয়া পাঁচ দিনের ভিতরে আর মাত্র 2 দিন বাকি আছে,,,, এই দুই দিনের ভিতর জ্ঞান না ফিরলে,,,, তাহলে ফারাবীর আর কখনো জ্ঞান ফিরবে না,,, এ কথা ভাবতেই ফারাবীর আব্বু-আম্মুর হৃদয় আত্মাই কাপন তুলে,,,
হঠাৎ করে ফারাবীর আম্মু খেয়াল করে দেখে ফারাবীর হাত নড়তে লাগলো,,, সাথে সাথে দৌড়ে ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে,,, মায়ের মায়াময় কণ্ঠ দিয়ে প্রিয় সন্তানকে ডাকতে লাগলো,,,, কয়েকটা ডাক দেওয়ার পরে হঠাৎ করে ফারাবির জ্ঞান ক্ষনিকের এই দুনিয়ায় আসে,,, এবং ফারাবির ভিতরে প্রবেশ করে?
হঠাৎ করে ফারাবী চোখ খুলে তাকাই,,, সাথে সাথে ফারাবীর আম্মু ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কাঁদতে থাকে,,,, আমার সোনা মানিক,,, আমাকে দেখ,,, ভালোভাবে চোখ খুলে তাকানা বাবা,,,, আজকের কান্না মায়ের কষ্টের কান্না নয়,,,, প্রিয় সন্তানকে হারানোর কান্না নয়,,,,, একমাত্র কলিজার টুকরোকে ফিরিয়ে পাওয়ার কান্না।
ফারাবীর চোখ খোলা দেখে সবার ভিতর একটা আনন্দের আবা ফুটে উঠে,,,,, সবাই ফারাবীকে ঘিরে ধরে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞাসা করতে থাকে,,,, ফারাবী কোন কথা বলছে না,,,, ক্ষিন দৃষ্টি নিয়ে প্রিয় মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে,,,, 20 মিনিট পরে
ফারাবী সর্বপ্রথম পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর ডাক মা শব্দটা উচ্চারণ করে,,,,,
প্রিয় সন্তানের মুখে মা ডাক শুনে ফারাবী আম্মুর হৃদপিণ্ডয় মনে হয় কাপন তুলেছে,,, কলিজা মনে হয় ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে,,,, ফারাবীর মুখে মা ডাক শুনে ফারাবীর আম্মুর 34 দিনের না ঘুমানোর ক্রান্তি,,, না খাওয়ার দুর্বলতা,,, প্রিয় সন্তানকে হারানোর অসহ্য যন্ত্রণা,,, মনে হয় কয়েক সেকেন্ডের ভিতর পৃথিবীর অন্তরালের বাহিরে চলে গিয়েছে??
ফারাবী টুকটাক সবার সাথে কথা বলছে,,
ফারাবীর আম্মু ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করে কিভাবে অবস্থা হয়েছিল,,,, ফারাবী আস্তে আস্তে সব কিছু খুলে বলে,,,
★ হঠাৎ করে ফারাবীর চোখ দুটো অন্য কাউকে খুজতে লাগলো,,,,, সে মনে মনে দৃঢ়তা প্রকাশ করে বলে আমারে পয়শী মনে হয় আসে নাই,,,, হারিয়ে ফেললাম আমার পয়শীকে আজীবনের জন্য,,,
সবাই ফারাবীর চতুর্দিকে বারবার তাকিয়ে দেখার মানে বুঝতে পেরেছে,,,, ফারাবীর আম্মু বলতে লগ্লো,,, কাকে খুঁজছিস বাবা ঈশিতাকে,,,, ফারাবী কোন কথা বলল না চোখ দুটো নিচে নামিয়ে ফেললো,,, ফারাবীর আম্মু ফারাবীর হাত ধরে বলতে লাগলো,,,,, মেয়েটা তোকে অসম্ভব ভালোবাসে,,,, যা আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারিনি,,,,৩৪ দিনে মেয়েটা মনে হয় একটা রাতের জন্য ও ঘুমায়নি,,,, আরো কি কি করেছে কতবার জ্ঞান হারিয়েছে কে রক্ত দিয়েছে সবকিছু খুলে বলল ফারাবীকে??
ওই দিকে ঈশিতাকে ফারাবীর জ্ঞান ফিরেছে এ খবর শোনালে,,, সাথে সাথে পাগলপারা হয়ে যায়,,,, কখন সে হসপিটালে পৌঁছাবে,,,,, ট্যাক্সির ভিতরে বসে পাগলের মত ছটফট করতে থাকে,,, ট্যাক্সির হাই গতিবেগ তার কাছে কচ্ছপের হাঁটার সমান মনে হয়,,, সে ধৈর্য্য হারা হয়ে যাচ্ছে,, মন চাচ্ছে উড়ে চলে যায় হসপিটালে করিডোরে,,,, টেক্সি ওয়ালাকে বার বার বলতে লাগলো,,, ভাই আরো স্পিডে চালান না।। গাড়ি হসপিটাল এর কাছে পৌঁছালে,,, ঈশিতা দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে দৌড়াতে শুরু করে,,,, গাড়িতে বসে থাকতে তার আর সহ্য হচ্ছে না,,, সে মনে মনে বলতে লাগলো গাড়ির চেয়ে আমি দৌড়ে আগে পৌঁছাতে পারবো হসপিটালে।।
ঈশিতা দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে ফারাবীর কেবিনের দরজায় গিয়ে দাঁড়ায়,,, ফারাবী সবার সাথে কথা বলতে দেখে,,, তার ভিতরে আত্মা মনে হয় ফিরে পাই,,,, দরজার সাথে হেলান দিয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকে,,,, তার বুক এত দ্রুত উঠানামা করছে যে,,,, তার ভিতরে হৃদপিণ্ড নামে জিনিস মনে হয় তার সারা শরীরে ভূমিকম্প তুলে দিয়েছি??
ঈশিতার জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলার শব্দ শুনে সবাই দরজার দিকে তাকাই,,, ঈশিতাকে দেখার সাথে সাথে সবাই রুম থেকে বের হয়ে যায়,,, ঈশিতা নিজেকে আর সামলাতে পারে না,,, দৌড়ে গিয়ে ফারাবীর কপালে নাকে ঠোঁটে গালে চুমু দিতে থাকে,,,, আর ফারাবীকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কাঁদতে লাগে আর বলতে লাগে।।।।।
((((চলবে)))
|