Thread Rating:
  • 23 Vote(s) - 2.83 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
চাঁদের অন্ধকার_Written By Tumi_je_amar
সমাধান (০৭)

সানি চেঁচিয়ে ওঠে। আর বলে – বাবা
তোমাদের সমাধি ছুঁতে বলা হয়েছে তোমরা
তাই করবে
কানিমলি – কেন তোর বাবা তোদের শত্রু
নাকি?
সানি আবার চেঁচিয়ে ওঠে – মামার সমাধি
ছুঁতে বলেছি। সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে বলিনি
কানিমলি – না আমরা ওই সমাধিতে হাত
দেবো না
মানি আর উর্বশী মিলে কানিমলিকে টেনে
সামনে নিয়ে আসে। চন্দ্রান কানিমলির হাত
চেপে ধরে।
কিন্নরী – যাও তোমরা দুজন গিয়ে দাদা
বৌদির আশীর্বাদ নাও।
চন্দ্রান – না যাবো না
সুধীর – কেন যেতে পারবে না?
কানিমলি হঠাৎ সুধীরের পা চেপে ধরে।
সুধীর – এ কি করছ পিসি?
কানিমলি – আমাদের মাফ করে দে বাবা
সুধীর – তোমরা আশীর্বাদ করবে না ঠিক
আছে। কিন্তু আমার পায়ে হাত দিচ্ছ কেন?
চন্দ্রানও সুধীরের আর মায়িলের পায়ে হাত
দেয় আর মাফ করে দিতে বলে। সুধীর আর
মায়িল হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কিন্নরী
চোখের ইশারা করতে নিখিল নীচে চলে
যায়। দু মিনিট পরেই ওর সাথে চারজন পুলিশ
উঠে আসে, তার মধ্যে একজন দারোগা।
দারোগা – কি হচ্ছে এখানে?
কিন্নরী – চন্দ্রান দাদা বলে দাও তুমি কি
করেছ
চন্দ্রান – আমি কিচ্ছু করিনি
দারোগা – কিছু করিনি মানে কি?
কিন্নরী – দারোগা বাবু আমি ওদের দুজনকে
ওই দুই সমাধি ছুয়ে আশীর্বাদ নিতে বলছি
কিন্তু ওরা যাবে না
দারোগা – এর সামান্য ব্যাপারের জন্যে
পুলিশ ডেকেছেন? তো চন্দ্রান বাবু ওনারা
যা বলছেন তা শুনছেন না কেন?
কানিমলি – আমরা ওই সমাধিতে হাত দিতে
পারবো না
দারোগা – কেন পারবেন না?
কানিমলি – ওই দাদা খুব বাজে লোক ছিল।
ওই সমাধিতে আমি মুতবও না, হাত দেওয়া ও
দুরের কথা
সুধীর লাফিয়ে ওঠে আর কানিমলির হাত ধরে
টেনে তোলে। চেঁচিয়ে বলে যে ওর বাবার
নামে এমন কথা বলার সাহস কি করে হয়।
দারোগা এসে ওকে শান্ত হতে বলে।
দারোগা – চন্দ্রান বাবু আপনাদের দুজনকে ওই
সমাধিতে হাত দিতেই হবে।
চন্দ্রান – না পারবো না।
দারোগা – কেন পারবে না
কানিমলি – ওই সমাধিতে যে হাত দেবে সে
মরে যাবে
দারোগা – ওমা সেকি! তো সেটা আপনারা
কি করে জানলেন?
চন্দ্রান – আমরা জানি
দারোগা – সেটা এতক্ষন বলেননি কেন?
চন্দ্রান – না মানে, না বলিনি, মানে ...
মানে...
কিন্নরী – দাদা বলেই ফেলো তুমি কি করে
রেখে গিয়েছ
চন্দ্রান – আমি কিচ্ছু করিনি
দারোগা – কিচ্ছু করিসনি তো সমাধিতে হাত
দে
কানিমলি – তুমি বলে দাও কি করেছ
চন্দ্রান – আমি করেছি না তুমি করেছ?
কানিমলি – আমি কি এইসব কিছু বুঝি নাকি!
এইসব বুদ্ধি তো তোমার মাথা থেকেই আসে
দারোগা – এবার দুজনে মিলে স্বীকার কর
তোরা কি করেছিস?
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
সমাধান (০৮)
চন্দ্রান কিছু বলার আগে কিন্নরী বলে –
দেখো দুটো সরু তার যা প্রায় দেখাই যায় না।
ওই তার দুটো ওপরের ১১০০০ হাজার ভোল্টের
তারের সাথে লাগানো আর তার দুটোর অন্য
মাথা ওই দুই সমাধিতে জড়ানো। যে
সমাধিতে হাত দেবে ওই তারের ছোঁয়ায় সে
সাথে সাথে মারা যাবে।
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখে কিন্নরী যা
বলেছে একদম তাই করা আছে।
দারোগা – কিরে চন্দ্রান তুই করেছিস এইসব?
চন্দ্রান কেঁদে ফেলে আর বলে – এই
কানিমলির বুদ্ধিতেই আমি করেছি
কানিমলি – আমি এইসব কারেন্টের কিছু বুঝি
না
দারোগা – চল আমার সাথে থানায় দেখি কে
কার বুদ্ধিতে কি করেছে
মায়িল – তার মানে তিন বছর আগে ওই
পাইপটাও তুমিই এনে রেখেছিলে
চন্দ্রান কিছু না বলে চুপ করে মাথা নিচু করে
থাকে। সুধীর লাফিয়ে উঠে চন্দ্রানের হাত
চেপে ধরে আর চেঁচিয়ে বলে, "চল শালা
কুত্তার বাচ্চা, আজ এখনই বাবার সমাধিতে
মাথা ঠেকিয়ে ক্ষমা চাইবি। চল আমার
সাথে চল। আজ তোকে মেরে আমি মরবো।
আর এই খানকি কানিকেও ছেড়ে দেবো না।"
সুধীর দু হাতে চেপে ধরে কানিমলিকে।
কানিমলি আপ্রাণ চেষ্টা করে সুধীরের হাত
থেকে নিজেকে ছাড়াবার জন্যে। কিন্তু
পারে না। দু জনে পুলিশ এসে সুধীরকে ধরে।
দারোগা – আপনি ছেড়ে দিন। আমরা দেখে
নিচ্ছি
সুধীর – তোমরা কেউ দেখনি। আমি সেই দিনই
বলেছিলাম এই খানকি কানি আমার বাবা
মাকে মেরেছে।
দারোগা – এবার বিচারে ঠিক শাস্তি হবে
সুধীর এক ঝটকায় দারগার থেকে হাত
ছাড়িয়ে নেয়। আবার কানিমলিকে চেপে
ধরে। কানিমলির কাপড় খিঁমচে ধরে থাকে।
কানিমলি ওর কাপড় ছেড়ে খালি গায়ে
পিছলিয়ে বেড়িয়ে যায়। পালাতে চেষ্টা
করলে সামনে উর্বশী এসে আটকাতে যায়।
কানিমলি উর্বশীকে খুব জোরে ধাক্কা
মারে। উর্বশী গিয়ে গণেশ রাওয়ের সমাধির
ওপর পড়ে যায়। কিন্নরী গলা ফাটিয়ে
চিৎকার করে ওঠে – মা তুই একি করলি।
সবাই আতঙ্কে চোখ বন্ধ করে নেয়। কিন্তু
কোন দুর্ঘটনা হয় না।
দারোগা – আমরা আসার আগে ১১০০০
ভোল্টের কানেকশন অফ করিয়ে এসেছি।
কানিমলি পালিয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু বাড়ির
নীচে আরও পুলিশ ছিল ওরা কানিমলিকে
ধরে আবার উপরে নিয়ে আসে। চন্দ্রান আর
কানিমলি দুজনের হাতেই হাতকড়া লাগে।
দারোগা আর বাকি পুলিশরা ওদের থানায়
নিয়ে যায়।
Like Reply
সমাধান (০৯)
সবাই চুপ করে বসে থাকে। মায়িল কিন্নরীকে
জিজ্ঞাসা করে যে ওরা কিভাবে সব
জানলো।
কিন্নরী – সানি আর মানির সাহায্য না
থাকলে আমি একা এই কাজ করতে পারতাম
না।
সানি – বৌদি আমরা তোমাদের জন্যে সব
করতে পারি।
মানি – আমরা সব সময় দেখে এসেছি
আমাদের বাবা আর মা কি করত। সেখানে
তোমরাই আমাদের কাছে সব থেকে কাছের
মানুষ আর জীবনের আদর্শ।
কিন্নরী – আমি চন্দ্রানকে মদ খাইয়ে আর
শরীর লোভ দেখিয়ে গত দু বছর ধরে ধীরে
ধীরে সব জেনেছি। সানি আর মানি শুধু ওর
বাবা মা রাত্রে কি কি কথা বলতো সেই শুনে
গেছে। কোন অভিজ্ঞ গোয়েন্দা হলে অনেক
আগেই সব প্রমান করে দিত। কিন্তু আমরা তো
অত শত বুঝি না। তাই পুরো ব্যাপারটা বুঝতে
অনেক সময় লেগেছে। তবে আজকের সব
প্ল্যান অখিল আর নিখিলের। ওরাই আগে
থেকে পুলিশকে সব বলে রেখেছিলো আর
কারেন্টের অফিসে গিয়ে লাইন অফ করার
ব্যবস্থা করেছিলো।
মায়িল – কিন্তু ওরা এই কাজ কেন করল?
কিন্নরী – ওরা দাদা বৌদিকে মেরেছিল
ওদের জমি হাতিয়ে নেবার ধান্দায়। ওরা
ভেবেছিলো দাদা বৌদি মারা যাবার পড়ে
সুধীর ডাক্তার হলে গ্রামে আর থাকবে না।
কিন্তু ওদের বাড়া ভাতে ছাই দিয়ে সুধীরের
সাথে সাথে মায়িলও এখানে থেকে যায়।
প্রথমে চন্দ্রান ভেবেছিলো আবার পাইপ
রেখে যাবে। কিন্তু কেউ একই ফাঁদে দুবার পা
দেয় না। আর তাই এই নতুন ষড়যন্ত্র করে। আজ
যদি সুধীর আর মায়িল মারা যেত তবে ওরা
কোন না কোন ভাবে গণেশ দাদার জমি
হাতিয়ে নিত।
সুধীর – ওই খানকি মেয়েটা বাবার
ছোটবেলা থেকে ওই জমির পেছনে পড়ে
আছে। আমি ওই শালী কে ছাড়বো না।
মায়িল – আইন ঠিক শাস্তি দেবে ওদের।
এই ঘটনার ছমাস পড়ে কানিমলি জেল থেকে
বেড়িয়ে আসে। ও ওর শরীর যথেচ্ছ ভাবে
ব্যবহার করে জামিনে বের হয়। সুধীর
কানিমলিকে দেখেই আবার মাথা গরম করে
ফেলে। সব সময় কানিমলি ওকে দূর থেকে
কাঁচ কলা দেখায় আর বলে – তুই আমার বাল
ছিঁড়বি। একদিন না একদিন তোকে, তোর
বৌকে আর তোদের বাচ্চাকে ঠিক মেরে
দেবো।
সুধীর রেগে ওকে মারতে যায়, কিন্তু
কোনদিনই কানিমলিকে ধরতে পারে না।
আরও তিন মাস পড়ে মায়িলের একটা সুন্দর
ছেলে হয়। মায়িল ওর নাম রাখে অর্জুন। সুধীর
অর্জুনকে ছেড়ে কোথাও যায় না। ওর সব সময়
ভয় কানিমলি ওর ছেলেকে মেরে ফেলবে।
রাত্রে মাঝে মাঝে কানিমলি সুধীরের
বাড়ির আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়। সুধীর
সারারাত ছেলেকে পাহারা দেয়। কানিমলি
ক্রমাগত ওকে ক্ষেপাতে থাকে। তারপর এক
সময় সুধীর মানসিক ভারসাম্য খুইয়ে ফেলে।
আরও বছর খানেক পরে সুধীরের অবস্থা অনেক
খারাপ হয়ে যায়। কানিমলিকে বা ওর মত
চেহারার কাউকে দেখলেই সুধীর ওকে
মারতে তেড়ে যায়। তারপর থেকে সুধীর
রাঁচির মানসিক আরোগ্যশালায় আছে। আরও
কতদিন থাকতে হবে কেউ জানে না।
রাইডান্ডি গ্রামে মায়িল একাই আছে ওর
ছেলেকে নিয়ে। ও ওর ছেলেকে ডাক্তার
করতে চায় না। ও চায় অর্জুন বড় কৃষিবিদ হোক
আর নিজেদের জমিতেই কাজ করুক। আইনের
বিচারে কানিমলির দশ বছর আর চন্দ্রানের ১৮
বছর জেল হয়েছে। সানি, মানি, অখিল,
নিখিল, কিন্নরী সবাই মায়িলের পাশেই
আছে। মায়িল এখনও রুগী দেখে আর সুধীরের
জন্যে অপেক্ষা করে।
সহে না যাতনা
দিবস গণিয়া গণিয়া বিরলে
নিশিদিন বসে আছি শুধু পথপানে চেয়ে--
সখা হে, এলে না।
সহে না যাতনা॥
Like Reply
শেষের কথা (০১)

২৬ বছর আগে আমি মিঃ সরকারের কাছে এই
পর্যন্ত শুনেছিলাম। উনি অবশ্যই এতো বিশদ
ভাবে বলেন নি। ডাঃ সুধীর রাওয়ের বাড়ির
আর গ্রামের যৌনতা নিয়ে কিছু কথা
বলেছিলেন। এর পর ১৯৯২ সাল থেকে ২০০০
সালের মধ্যে আমি অন্ধ্রপ্রদেশের অনেক
জায়গাতেই ঘুরেছি। সেইসময় ওখানকার কিছু
গ্রামের বাসিন্দাদের জীবন ধারা যা
দেখেছি তার অনেকটাই আমি এই গল্পে
মিশিয়ে দিয়েছি। আমি গত বছর মানে ২০১৩
সালে প্রায় এক বছর হায়দ্রাবাদে ছিলাম।
সেই সময় খোঁজ খবর নিয়ে একদিন সেই
রাইডান্ডি গ্রাম যাই। এখনও বেশ ছোট
জায়গা। একটু খোঁজ করতেই দেখা পেয়ে যাই
আমাদের ডাঃ সুধীর রাও আর মায়িলের।
অবশ্যই আমি ওঁদের ওনাদের আসল নাম নিয়েই
খুঁজেছিলাম।
আমি ওই গ্রামে পৌঁছে ঘটনা চক্রে অখিলের
সাথেই প্রথম দেখা হয়। তখনও আমি জানতাম
যে ও অখিল। আমি অখিলকে ডাঃ সুধীর
রাওয়ের নাম বলতে ও আমাকে ওনার
বাড়িতে নিয়ে যায়। তখন সকাল ১১ টা
বাজে। ডাঃ রাও আর মায়িল বসে চা
খাচ্ছিলেন। দুজনেরই বয়েস ৬০ হয়ে গেছে।
ডাঃ সুধীর রাওয়ের চেহারা অনেকটাই
ভেঙে গিয়েছিলো। কিন্তু মায়িলকে দেখে
বোঝা যায় উনি কিরকম সুন্দরি ছিলেন। একদম
দুধে আলতা গায়ের রঙ, পেটানো শরীর। চুলে
একটু সাদা রঙের ছোঁয়া লাগলেও ফিগার
একদম টানটান। সেভাবে দেখলে এখনও
অনেকে ওনার প্রেমে পড়ে যাবে। আমি
নমস্কার বলতে ডাঃ রাও অবাক হয়ে আমার
দিকে তাকিয়ে থাকেন। কিছুক্ষণ পরে বলেন
যে উনি আমাকে চিনতে পাড়ছেন না। আমি
আমার পরিচয় দেই। কিন্তু সেই পরিচয় জেনেও
ওনার পক্ষে আমাকে চেনা সম্ভব ছিল না।
আমি – আপনার সাথে আমার কয়েকবার দেখা
হয়েছিল ১৯৮৮ সালে
মায়িল – তখন তো উনি রাঁচিতে ছিলেন
আমি – ওনার সাথে আমার সেখানেই দেখা
হয়েছিলো
ডাঃ সুধীর রাও – আমার কিছু মনে পড়ছে না
আমি – না পড়াটাই স্বাভাবিক। আমি তখন
মোদি জেরক্সের ইঞ্জিনিয়ার ছিলাম। মিঃ
সরকারের কাছে যেতাম ওনার ফটোকপিয়ার
সারাতে। সেই সময় আপনার সাথে দেখা
হয়েছিলো।
ডাঃ সুধীর রাও – আর আপনি আমাকে একটা
মার্লবোরো সিগারেট খাইয়ে ছিলেন
আমি – হ্যাঁ, সেই সামান্য কথা এতদিন পরেও
আপনার মনে আছে।
ডাঃ সুধীর রাও – সেই সময় একঘেয়ে জীবন
কাটতো। মনে রাখার মত ঘটনা খুব কমই ঘটতো।
তাই মনে থেকে গেছে। আপনি আমাকে
জেরক্সের থিওরিও বলেছিলেন। এখন অবশ্য
সেই থিওরি আর মনে নেই।
আমি ভাবতেও পারিনি ডাঃ সুধীর রাও
আমাকে চিনতে না পারলেও সেই
কয়েকদিনের ঘটনা এতদিন পরেও মনে
রাখবেন। এরপর উনি জিজ্ঞাসা করেন যে
আমি ওনাকে কি করে খুঁজে বের করলাম। আর
মায়িল আমার খুঁজে বের করার কারণ জানতে
চান। আমি ওনাদের জানাই যে আমি
কিভাবে ওনাদের কথা মিঃ সরকারের কাছ
থকে শুনেছিলাম। আমি এটাও বলি যে অনেক
অনুরোধ আর উপরোধের পরেই মিঃ সরকার
নিয়মের বাইরে গিয়ে আমাকে সব বলেছেন।
ডাঃ সুধীর রাও – ঠিক আছে, এতে আমরা
কিছু মনে করছি না। উনি বলেছিলেন বলেই
এতদিন পর আপনার সাথে দেখা হল।
আমি – আপনাদের কথা জানার পরে খুব ইচ্ছা
হয়েছিলো মায়িল দিদির সাথে দেখা
করবার। আর পরে ইচ্ছা হয়েছিলো আপনি
কেমন আছেন সেটা জানার।
মায়িল – আমার সাথে দেখা করার ইচ্ছা
হয়েছিলো কেন?
আমি – আপনাকে প্রনাম করবো বলে। আপনার
মত মহিলার কথা বাস্তবে খুব কমই শুনেছি।
মায়িল – আমি এমন কিছু মহিলা নই। সাধারণ
একজন ডাক্তার আর এই সুধীরের বৌ।
আমি – আমি ইঞ্জিনিয়ার মানুষ। ভাষা
দিয়ে বোঝাতে পারবো না যে কেন
আপনাকে ভালো লেগেছে বা শ্রদ্ধা করি।
শুধু এইটুকুই বলি যে আপনার মত ভালোবাসা
গল্পে পড়েছি। সত্যি জীবনে এই একবারই
দেখলাম।
মায়িল – আমি কিছু বুঝি না ভাই।
আমি – যে মহান সে নিজের মহত্ব কোনদিন
বুঝতে পারে না। তার কাছে ওইটাই সাধারণ
ঘটনা।
মায়িল – বেশ সুন্দর কথা বল তুমি।
আমি – আমার পিনুরাম নামে এক বন্ধু আছে।
সে হলে আরও ভালো ভাবে বোঝাতে
পারতো।
মায়িল – তাই নাকি!
আমি – দিদি একটা অনুরোধ আছে
মায়িল – কি বল ভাই
আমি – আপনাকে একটু ছুঁয়ে দেখতে চাই আর
একবার প্রনাম করবো।
মায়িল – না না প্রনাম করবে না। আমার খুব
লজ্জা লাগবে।
আমি – দিদি আমি আপনাদের থেক সাত বা
আট বছরের ছোট।
মায়িল – তাও প্রনাম করো না। তুমি বরং
আমার কাছে এসো, তোমাকে একবার জড়িয়ে
ধরি।
আমি – সেটা কি ভালো হবে!
মায়িল – তুমি তো সব জানো। আমার এই বুকে
কত লোকের কামনার ছোঁয়া লেগেছে। আর
সেখানে এক ভায়ের শ্রদ্ধার আর ভালবাসার
ছোঁয়া লাগলে কি হবে।
এই বলে মায়িল দিদি উঠে এসে আমাকে
জড়িয়ে ধরেন। ওনার চোখ ছল ছল করে ওঠে।
আমি ওনার দিকে জিজ্ঞাসার চোখে
তাকাতে উনি বলেন যে উনি ভাবতেও পারেন
না কোন অজানা লোক ওদের এতো
ভালবাসতে পারে। আমি ওনার কাছে অনুমতি
নেই ওনাদের কথা গল্পের মত করে লিখতে।
ডাঃ সুধীর রাও হাসিমুখে আমাকে অনুমতি
দেন।
Like Reply
শেষের কথা (০২)

এরপর ডাঃ সুধীর রাও আর মায়িল দিদির
সাথে অনেক কথা হয়। সামাজিক বিয়ে
হয়েছিলো কিনা জিজ্ঞাসা করাতে ডাঃ
সুধীর রাও বলেন যে ওনাদের সেটা আর
দরকার হয়নি। ওনাদের সাথে তিন ঘণ্টা সময়
কাটিয়ে ঘটনার মোটামুটি একটা টাইম লাইন
বানাই।
ডাঃ সুধীর রাও আর মায়িলের জন্ম – ১৯৫২
ডাঃ সুধীর রাও ডাক্তারি পড়তে যান - ১৯৭৪
গণেশ রাও আর কঞ্জরি দেবীর মৃত্যু – ১৯৮০
কানিমলি আর চন্দ্রান ধরা পড়ে – ১৯৮৩
ডাঃ সুধীর রাও মানসিক ভারসাম্য হারান –
১৯৮৪
ডাঃ সুধীর রাও রাঁচিতে ভর্তি হন – ১৯৮৫
আমার সাথে ডাঃ সুধীর রাওয়ের প্রথম দেখা
হয় – ১৯৮৮
ডাঃ সুধীর রাও সুস্থ হয়ে গ্রামে ফেরেন –
২০০৫
এর মধ্যে ওনাদের ছেলে অর্জুন ঘরে আসে।
মায়িল দিদির ইচ্ছা অনুযায়ী ও কৃষিবিদ
হয়েছে। এগ্রিকালচারে মাস্টার ডিগ্রি করে
গ্রামেই থাকে। ওদের নিজেদের জমি আর
আসে পাশের সবার চাষবাস কিভাবে আরও
উন্নত করা যায় সেই নিয়ে কাজ করছে।
কানিমলি আর চন্দ্রান জেল থেকে ছাড়া
পেলেও গ্রামের লোক ওদের ওখানে থাকতে
দেয়নি। ওদের ছেলেরা বাবা মাকে অন্য
কোথাও রেখে দিয়েছে। একটাই ভালো যে
কানিমলির ছেলেরা ওদের ফেলে দেয়নি।
যতটা সম্ভব বাবা মায়ের খেয়াল রাখে।
এরপর আমি ডাঃ সুধীর রাও আর মায়িল
দিদির সাথে ওদের বাড়ির ছাদে যাই। গণেশ
রাও আর কঞ্জরি দেবীর সমাধি দেখতে।
ওনাদের সমাধিতে মাথা ঠেকিয়ে প্রনাম
করি। চলে আসার আগে আমি ওনাদের কাছে
সেই পাথরটা দেখতে চাই। মায়িল দিদি
আমাকে ওঁর পুজার ঘরে নিয়ে যান। একটা
রুপোর সিংহাসনে কাঁচ দিয়ে ঘেরা সাধারণ
দেখতে একটা কালচে পাথর। ওনাদের জীবনে
সেটাই ভগবান।
এরপর মায়িল দিদির হাতে পেসারাট্টু খেয়ে
ফিরে আসি। মায়িল দিদি কানিমলির কাছ
থেকে ওই একটা জিনিসই শিখেছিল। তখন
সানি, মানি, অখিল, নিখিল আর কিন্নরীর
সাথেও দেখা হয়। উর্বশীর বিয়ে হয়ে গেছে
অনেক আগে। ওরা রামাগুন্ডমে থাকে। ওদের
ছেলে আর মেয়ে দুজনেই ডাক্তার। ছেলে
রাইডান্ডিতে থাকে আর গ্রামের সেবা
করে। সবাই বার বার বলেন আবার যাবার
জন্যে। জানিনা আর কোনদিন ওনাদের সাথে
দেখা হবে কিনা।

***********সমাপ্ত***********
[+] 1 user Likes FuckEr BoY's post
Like Reply
অসাধারণ একটি কাহিনী। ভাবা যায় না মানুষের জীবন কত অদ্ভুত, কত বিচিত্র। এত ভাল কাহিনী কি বলব লেখককে স্যলুট জানাই। এত ভাল কাহিনী আমাদের উপহার দেয়ার জন্য।
Like Reply
অশেষ ধন্যবাদ।
পাঠক
happy 
Like Reply
অসাধারণ... অনবদ্য...
Like Reply
ওরা চারজনেই আমার মায়ের চরিত্র সম্পর্কে নোংরা একটা ধারণা নিয়ে বিদায় নিলো আমাদের বাড়ি থেকে | একবারও এটা ভাবলো না এই নোংরা চরিত্রের মহিলাটা এখনই সব নোংরামী ঝেড়ে ফেলে আমাদের সংসার সামলাবে, সারাদিন স্নেহ-মমতা দিয়ে আগলে রাখবে আমাদের | আমাদের হাসিখুশি সংসারে বাবা বা মা কারোরই কোনো ধারণা ছিল না, শুধু আমি বুঝতে পারছিলাম মায়ের অজান্তেই যৌনতার একটা কালো ছায়া ওনার সুখী নিশ্চিন্ত গৃহবধূ জীবনের চারপাশে ঘনিয়ে আসছে |

[b]https://xossipy.com/showthread.php?tid=1...pid1525068[/b]
Like Reply
(25-12-2019, 10:18 AM)ChodonBuZ MoniruL Wrote: অসাধারণ একটি কাহিনী। ভাবা যায় না মানুষের জীবন কত অদ্ভুত, কত বিচিত্র। এত ভাল কাহিনী কি বলব লেখককে স্যলুট জানাই। এত ভাল কাহিনী আমাদের উপহার দেয়ার জন্য।

মনিরুল ভাই এই গল্পের লেখক আমি। এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আর এইরকম ঘটনা বানিয়ে লিখতে পারবো, অতো বড় লেখক নই আমি। যা দেখেছি আর শুনেছি তাই লিখেছি।
Like Reply
ছাই উড়িয়ে দেখতে গিয়ে অমূল্য রতনের মতোই এই গল্পটা খুজে পেয়েছি।পড়ে খুব আনন্দ পেলাম।
yourock     clps
Like Reply




Users browsing this thread: 6 Guest(s)