Thread Rating:
  • 4 Vote(s) - 2.5 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL নিকৃষ্ট জীবের কথোপকথন
#1
Information 
ভাবছি একদিন টি.এস.সি চত্ত্বরে বাঁশের সাথে ৩টি মাইক লাগিয়ে রাস্তার মাঝ খানে চিৎকার করে বলব, "হে মনুষ্য জাতি তোমরা সকলে আমার সামনে মাথা নত করো, আমি এই সৃষ্টির তথা সমস্য সমগ্র বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মানুষ।"
কোনো সন্দেহ নেই, আমার এই কথা গুলো শোনার পর প্রায় ২০ শতাংশ লোক ভাববে, "এ ব্যাটা কোই তে আইল?" এবং এরা দর্শকের ভূমিকা পালন কারী গোষ্ঠি। প্রায় ৪০-৪৫ শতাংশ লোক আমার বাকি কথা গুলো শোনার জন্য এতটাই ব্যস্ত হয়ে পরবে যে মোবাইলে ভিডিও শুরু করে দিবে। কে জানে কাল এটাই হয়তো ভাইরাল হয়ে গেল। ১৫ শতাংশ লোক রাস্তার জ্যাম নিয়ে চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিবে। আর বাকি জন্য যারা আছে তারা এজগতের না। আই মিন, আমি কি বলছি কি করছি তা নিয়ে তাদের মাথা ব্যাথা নেই। তবে থেকে গড়ে ৮-১০ জন থাকবে যারা লাঠি নিয়ে মারবে না এলেও বেশ আগে অনেকটাই চোট পাট দেখাবে। এবং তাদের জন্য আমার পুরো কথাটা বাকিদের কাছে পৌছাবে না। কিন্তু যে বিষয়ে আমি শতভাগ নিশ্চিৎ তা হলো, টি. এস. সি. এর চত্ত্বরে উপস্থিত সকল ব্যাক্তি আমাকে পাগল বলে ঘোষণা করে দিবে। শুধু এই টি. এস. সি নয়, এতক্ষন ধরে যে বা যারা আমার লেখা পড়ছে, তারাও আমাকে পাগল বলেই মনে করছে হয়তো। পাগল না হলে, কেউ নিজেকে পেষ্ঠ বলে দাবি করে?
এবার একটু অন্য কথায় আশি আসি। আমার শারিরীক একটা প্রলেম আছে। তার জন্য প্রতিদিন আমাকে "বারবিট ৩০” নামক একটা ঘুমের ওষুধ খেতে হয়। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শেই খাচ্ছিল ওষুধটা। জানিয়ে রাখি এই "বারবিট ৩০" ওষুধটা বাংলাদেশের অন্যতম শক্তিশালী একটা ঘুমের ওষুধ। সম্প্রতি বাজারে এই ওষুধ টা আর পাওয়া যাচ্ছে না। শোনা যাচ্ছে যে সরকার এর অনুমোদন তুলে নিয়েছে। আর কোম্পানি থেকেও তৈরী হচ্ছে না। এর পেছনের কারণ হিসাবে দেখানো হয়েছে যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ অনেক ডিপ্রেশনে থাকা রোগীরা ব্যবহার করতো।
এখন ভাই আমি তো ডাক্তারের কথা মতোই খাচ্ছি। আমি তো স্ব ইচ্ছাই কিনে খাচ্ছি না। বা কোনো নেশাও করছি না। যদিও জানি না এটা দিয়ে আদেও কোনো নেশা হয় কিনা। পরে আমার এক পরিচিত ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম, গত দু বছরে যত গুলো আত্মহত্যা ঘুমের ওষুধের মাধ্যমে হয়েছে তার প্রায় ৮০ শতাংশই এই ওষুধ খেয়ে। কথা হচ্ছে, ডিপ্রেশনের মধ্য দিয়ে কম বেশি সবাইকেই যেতে হয়। হয়তো আজ যে ব্যাক্তি তোমাকে কাদিয়েছে কাল তোমার জন্যই তাকে কাঁদতে হবে। এটা আমার কথা নয়। এটা প্রকৃতির নিয়ম। আমিও কাউকে কাঁদিয়েছিলাম, আজ আমাকে কাঁদতে হচ্ছে। কষ্ট আছে কিন্তু আক্ষেপ নেই। কারণ আমি তো আর প্রকৃি প্রকৃতির নিয়মের বাইরে নই।
ঐ আগের কথাতে ব্যাক আসি, আমি যখন নিজেকে শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করলাম, আমাকে পাগল বলা হলো। আর এই মানুষ জাতি? আমরা মানুষরা নিজেরাই নিজেদের এত ক্ষতি করি। এত অন্যায় করি, তারপরও নিজেদের শ্রেষ্ঠ বলে দাবি করি। অনেকে বলবে, আপনি সমাজের ১০ জনের উপর ভিত্তি করে বাকি ৯০ জনকে খারাপ বলতে পারো না। একটু আগের ঐ হিসাব টা পড়ে আসুন। গড়ে ৮০ শতাংশ মানুষ জাস্ট সাকার্সের মজা নিচ্ছে। বাকি ২০ শতাংশ মানুষের মধ্যেও হয়তো ১০ শতাংশ মানুষের তো এতে ভ্রুক্ষেপই নেই। মানে ১০ জন যদি ভালো কাজ করার মানুষিকতা নিয়েও থাকে, তবুও তারা করতে পারেনা এই ভেবে যে, "বাকিরা কি ভাববে? কেউ নাক না গলালে,আমি কেন গলাতে যাবো? " 
পুরো রাস্তায় ১০০ জনের মধে হয়তো ১-২জন এমন পাওয়া যাে যাদের ভালো কাজ করার মানষিকতা নয়, ভালো কাজ করার স্বভাব রয়েছে। এরপর ও বলবেন আমরা সৃষ্টির সেরা?
যদি কেউ বলেন যে, ভাই আমরা বৈজ্ঞানিক ভাবে তো সেরা জীব। তবে আমি তাকে বলবো সরি আপনার জন্য দুঃসংবাদ আছে। মানুষ এই পৃথিবীতে আসার পর পৃথিবীর যে পরিমাণ ক্ষতি করেছে তাতে প্রকৃতি যে এখনও আমাদের টিকিয়ে রেখেছে, এটা প্রকৃতির দয়া। তবে শ্রেষ্ঠ কে? এই ইথিবীর বৈজ্ঞানিক ভাবে যদি শ্রেষ্ঠ জীব বিচার করতে হয়, তবে তা উদ্ভিদ। নিজের খাবার নিজেই তৈর করে নেয়। অভিযোজন? মিউটেশন? গাছের কাছ থেকে কিছু শেখে।। মানুষ আজ পর্যন্ত নিজেদের কোনো ক্লোন তৈরি করতে পারলো না। অনদিকে গাছকে দেখে। প্রাকৃতিক ভাবেই নিজের ক্লোন তৈরি করে নিতে শিখে গেছে। অত্যন্ত সামাজিক। বটবৃক্ষ। অথচ কোনো অহংকার নেই। এক বটবৃক্ষের ছায়ায় কতশত জীব বাস করে দেখেছো? নিজেই একটা ইকোসিসটেম।
এরারও যদি কেউ বলে মানুষ সৃষ্টির সেরা। সালাম ভাই। টি. এস. সি চত্ত্বরে এসে আমার মাইকটা ধরো।
একজন বড় মিথ্যাবাদী, একজন বড় জাদুকরও
[+] 6 users Like Dead people's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
এই ধরনের লেখা হয়তো এই ফোরামে অচল হতে পারে, কিন্তু কথাগুলো হৃদয় স্পর্শ করে গেল। ভালো থাকবেন  Namaskar

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 2 users Like Somnaath's post
Like Reply
#3
জীবনের প্রতিচ্ছবি। কিছু কথা যার কোনো জবাব নেই। তবে হ্যাঁ একটা সত্য বাণী যে "মানুষ সৃষ্টির সেরা এবং নিকৃষ্ট জীব" Two in One
[+] 2 users Like a-man's post
Like Reply
#4
#২

আমি জানি না এই ফোরামের রাজনৈতিক কথাবার্তা হয় কিনা। তবে আজ রাজনৈতিকভাবে নয় কিছুটা ব্যক্তিগতভাবেই কিছু কথা বলতে চাই। 

ছোট কালে সবার বাবা-মা ই কম বেশি গল্প শোনাতো। অন্তত বাংলার বাবা মায়েদের মধ্যে এই ধরনের একটা প্রভাব আমি দেখেছি। এখন অবশ্য কোনো বাবা-মা গল্প বলে না। গল্প শোনানোর জন্য ইউটিউব আছে। আমার ভাগ্য ভালো। আমি যখন জন্মেছিলাম, তখন ইউটিউব নামক ডিজিটাল ঠাকুমার ঝুলি ছিল না। ভাগ্য অবশ্য কিছুটা খারাপ ও আমার নিজের কোনো ঠাকুমা ছিল না। আই মিন, জীবিত ছিল না।

যায় হোক মূল কথাতে আসি। আমার বাবা ছোটবেলায় মাঝে মাঝেই একটা গল্প শোনাত। কোনো রূপকথা বা লোক কথার বইতে আমি গল্পটা পাই নি। আর বাবাও আজ পর্যন্ত গল্পের মূল স্রষ্টা কে সেটা বলে নি। তবে ধীরে ধীরে যখন বুঝতে শিখলাম, তখন সমাজের সাথে গল্পের এক অদ্ভুত মিল পেয়েছি। আগে চলুন গল্পটা বলি। আর হ্যাঁ গল্পটা ছেলে ভোলানো, তাই কোনো যুক্তি খুজবেন না।

এক দেশে এক রাজা ছিল। রাজার ছিল তিন ছেলে। দুই ছেলে চোখে দেখে না; আরেক ছেলে অন্ধ। তো একদিন যেই ছেলে অন্ধ সে বলল শিকারে যাবে রাজার ছেলে শিকার করবে বলে কথা। ঘোড়া তো লাগবেই। ঘোড়াশালে গিয়ে দেখা গেল পর পর দাড়িয়ে আছে তিন ঘোড়া। দুইটা ঘোড়ার পায়ে গুলি লাগছিল। আর অন্য ঘোড়াটা খোঁড়া। এখন যে ঘোড়াটা খোঁড়া সেটা নিয়ে এক অস্ত্রাগারে যাওয়া অস্ত্রাগারে দেখা গেল তিনটা বন্দুক। প্রথম দুইটার নল নেই। অন্যটার নল ভাঙ্গা। এখন নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো তাই ভাঙ্গা নলের বন্ধুক নিয়ে শিকার করতে গেল। শিকারে গিয়ে জঙ্গলের মধ্যে দেখলো তিনটা হরিণ। যার দুটা মরে গেছে, আর শেষের টা বেঁচে নেই। রাজকুমার চালালো পরপর তিন গুলি। দুইটা গুলি এদিক ওদিক দিয়ে গেল আরেকটা লাগলোনা।

 শিকার শেষে রাজকুমার ভাবলো, আজ রাত এই জঙ্গলে থেকে কাল রাজ্যে ফিরবে। রাতের বেলায় যেই মাত্র রাজকুমার ঘুমিয়েছে। তখনই বেরিয়ে এলো তিনটা বাঘ। দুইটা বাঘে হরিণ খেতে লাগলো। আর অন্য রাজকুমারকে মেরে ফেলল।

সত্যি কথা বলি, এমন কোনো গল্প রূপকথা তো দূর, লোক কথাতেও স্থান পাবে না। কিন্তু বাস্তব অবস্থার সাথে অদ্ভুদ মিল আছে।
গল্পের যে রাজা, সেটা হচ্ছে বাস্তবের একটা দেশ। আর রাজার যে তিন ছেলে; এটা হলো দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। কেউ কারো চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। গল্পের রাজকুমার গুলো কানা, আর বাস্তবে চোর। ঘোড়াশালের ঘোড়া গুলো হচ্ছে আইন ব্যবস্থা। আইন প্রয়োগ করে চোর ধরবে কি, আইন নিজেই খোঁড়া। আর হ্যা আমি বাংলাদেশ থেকে লিখছি তার মানে এই না যে, শুধু বাংলাদেশের এই অবস্থা। যতদূর শুনেছি এবং দেখতে পাচ্ছি ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও প্রায় একই অবস্থা। 

অস্ত্রাগারের বন্দুক গুলো হচ্ছে শাসন ব্যবস্থা। যা শুধু খাতা কলমেই আছে। বস্তবে লবডঙ্কা। শাসনের নামে শোষণ চলছে। এখন কেউ কেউ আছে বলবে, ভাই আপনি তো সরকার বিরোধী কথাবার্তা বলছেন। আমি বলকে, না ভাই। ঐ সব রাজকুমারই এবং কানা। আই মিন চোর। গল্পের হরিণগুলো কি জানেন? গল্পের হরিণগুলো হচ্ছে বাস্তবের নিশ্চুপ জনতা। এরা জীবিত থেকেও মৃত। না পারে কিছু বলতে। না পারে কিছু করতে।

সবশেষ পরে থাকলো বাঘ। না ভাই বাস্তবের সাথে এখানে মিল নেই। গল্পে যেমন বাঘ আসবে রাজপুএকে খেয়ে ফেলবে; বাস্তবে এমন কোনো ক্রান্তি নেই।

ব্যক্তিগতভাবে একটা কথাই বলবো, আমি কোনো রাজনৈতিক ভাবে কথাগুলো বলি নাই। আমি এক পিতার পুত্র হিসাবে কথাগুলো বলেছি। কারন আমি এক পিতার চোখে জল দেখেছি। সন্তানের জন্য খাবার কিনতে না পারার অশ্রু। আমি সেই পিতার স্বীকারোক্তি শুনেছি; "আমরা লোকলজ্জার ভয়ে নিজেদের মধ্যবিত্ত বলি। আসলে আমরা গরিব।"
একজন বড় মিথ্যাবাদী, একজন বড় জাদুকরও
[+] 3 users Like Dead people's post
Like Reply
#5
ভালো লাগলো  clps

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 2 users Like Somnaath's post
Like Reply
#6
আপনার বক্তব্য বাস্তব জীবনের ছবি।
শুভ কামনা রইল। 

লাইক ও রেপু দিলাম। 
[+] 1 user Likes buddy12's post
Like Reply
#7
#3

দুঃখ,কষ্ট,শোক এই তিনটি জিনিসকে কখনো এক ভাবেন না।

কষ্টকে অনেকে আভিধানিক ভাষায় বেদনার সাথে তুলনা করেন এটা ভুল নয়। একদিক থেকে শারীরিক যন্ত্রনাকে বা বেদনা বলা যায়। কিন্তু বেদনা শুধু শারীরিক হয়ে থাকে। অনদিকে কষ্ট মানসিকও। ধরে নিন আপনি ছোট থেকে একটা পরিবেশে বড় হয়েছেন, কলেজ লাইফৈ এসে আপনাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে। আপনি আপনার কাছের মানুষগুলোকে যাদের সাথে এতদিন বড় হয়েছেন, যাদের ভালোবাসা সেহ্ন আপনাকে এক  স্বস্তি ও শান্তি দেয় তাদের হঠাৎ করে মিস করছেন। স্বাভাবিক ভাবে আপনি মেনে নিতে পারবেন? ঐ নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতেও আপনার কমপক্ষে এক মাস লেগে যাবে। আর এই একমাস নিজের সাথে, নিজের যে যুদ্ধ আপনি করবেন, এটাই মানসিক কষ্ট

এবার আসি দুঃখ নিয়ে বলতে। বাংলাদেশের মতো দেশে দুঃখ কে দুই ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। প্রথমত আর্থিক দুঃখ। ঢাকা শহরে অনেক বস্তি আছে। যে কোনো একটা বস্তিতে চলে যান। দেখতে পাবেন অল্প বয়সী কিছু বাচ্চারা নোংরা মাটি গাড়ে মেখে খেলা করছে। আর তাদের মুখের ভাষা তো গায়ে লেগে থাকা নোংরার চেয়েও নোংরা। ওরা তো বাচ্চা। ওদের আর কি দুঃখ থাকতে পারে ?
আপনার চিন্তাধারায় পরিবর্তন আনুন। ওরা যে গালিটা দিছে ঐ গালিটা কিন্তু ওরা এমনি এমনি দিছে না। লক্ষ্য করলে দেখবেন, ওরা গালি দিচ্ছে ওদের মাঝে থাকা সেই বাচ্চাকে যে বাকিদের থেকে আর্থিক ভাবে একটু বেশি সুবিধা পাচ্ছে। এবং ঐ সুবিধাটা সেই বাচ্চাটা ভাগ করতে চায় না। আর বাকিদের মাঝে এটাই আর্থিক দুঃখ।

দুঃখকে আরেক ভাবে তুলে ধরা যায়। মনে করুন আপনি এবং আপনার ভাই বা কোনো বন্ধু একত্রে একটা ব্যবসা বা কাজে নেমেছেন। এখন অতিরিক্ত লাভের আশায় আশায় বা কারো কাছে প্রশংসা পাওয়ার আশাতে আপনার বন্ধু বা ভাই আপনাকে ধোকা দিলো। এই ধরনের বিশ্বাসঘাতকতার কথা আপনি জানলে কিন্তু আপনার মানসিক কষ্ট শুধু কষ্টের সীমায় আবদ্ধ থাকে না। এটাই দুঃখ। এবং আর এখনকার অধিকাংশ মানুষের এই বন্ধুর সংখ্যা কম বা নিজেকে নিজের মধ্যে আবদ্ধ রাখার প্রধান কারণ এই দুঃখ। এখন তো ভাই, মানুষ নিজেকেও বিশ্বাস করতে পারে না।

কিছু কিছু ইচ্ছা অপূর্ণ থাকলে ক্ষতি হয় না। সেই মানুষ অপূর্ণতা পূর্ণ করার ইচ্ছাতেই হোক আর প্রবল জেদের বশেই হোক, সে নতুন কোনো ইচ্ছা পূরণের লক্ষে যাত্রা করে। কিন্তু এভাবে যদি কিছু কিছু করে সকল ইচ্ছাই অপূর্ণ থেকে যায়,তখন সেই মানুষটির বেঁচে থাকার কোনো মানে হয় না। সে বেঁচে থেকেও মৃত। কথায় বলে, আশায় বাঁচে মানুষ। কিন্তু সেই আশায় যদি মুছে যায়? যদি নিরাশার আধার কালো মেঘে গোটা আকাশ ঢেকে যায়? তখন সেই মেঘ আর কাটে না। এসিড বৃষ্টির মত ঝরে পড়ে ভাঙ্গা স্বপ্ন আর ডিপ্রেশনের ওষুধের ধারালো ছুরি। কেউ বেঁচে থাকে। কেউ আত্মহত্যা করে। কিন্তু যারা বেঁচে থাকে, বলাই বাহুল্য তাদের দেহ মৃত্যুর আগেই আত্মার মৃত্যু হয়ে যায়। কেউ কেউ শুনবেন এসব আবার কেমন কথা?

নাম মনে নাই, তবে কোন এক মনিষী বলেছিল, একজন কাপুরুষের জন্ম একবারই হয় কিন্তু মৃত্যু হয় বহুবার। অন্যদিকে একজন যোদ্ধা একবারই জন্মায় আর একবারই মরে। আমি বলবো না তার কথা কোন দিক থেকে ভুল। আমি অতি নগন্য। তার ধারে কাছেও যেতে পারবো না। কিন্তু যে বা যারা জীবনের ছোটখাট ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে এসেছে, বা যাদের খুব আপনজন বা কাছের মানুষ ডিপ্রেশনে মারা গেছে তারা হয়তো বুঝবে। তারা বুঝবে, একজন যোদ্ধার কাছেও কতটা কষ্টকর এই ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসা। কতটা ভয়ানক হয় তার জীবন। কিন্তু লোক তথাকথিত ঐ মুরুব্বিরা বলবেন, "মন তো আমাগেও খারাপ হইত। আমাগের সময় তো ঐসব ডিপ্রেশন বিপ্রেশন ছিল না।আমরা কি বেচে নেই? ইত্যাদি ইত্যাদি।" এইযে মুরুব্বী আপনাকে বলছি, আপনাদের সময় একজনের পাশে হাজার জন এসে দাঁড়াতো। পাশে দাঁড়ানোর অনেক লোক ছিল। আপনার হয়তো একটা গ্রামে আবদ্ধ ছিলেন। কিন্তু তাও আপনারা সব সময় একে অপরের সাথে থাকতেন। হ্যাঁ মুরুব্বি, আমাদের ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে। সারা পৃথিবীতে এখন একটা গ্রাম। সবাই সবার পাশে আছে। কিন্তু আদৌ কি আছে? একদৃষ্টিতে আমরা ঠিক যতটা কাছে, অপর দৃষ্টিতে আমরা ঠিক ততটাই দূরে। আরে ভাই আজকাল তো বাড়িতে দুবেলা কথা বলি। ভিডিও কলে বাবা মাকে সামনে রেখে কথা বলছি। কাছের মানুষ দূরের মানুষ সবাই একসাথে। কিন্তু আপনাদের সময় কার সেই মায়ের কাছে লেখা চিঠি। সেই আবেগঘন চিঠির ধারেকাছেও আমরা যেতে পারব না। এখন তো পাশে বসা বাপের সাথেও ছেলে মন খুলে কথা বলতে পারে না। মন খারাপ আর মনোরোগ এক না। এত কিছুর পরেও কি বলবেন, ডিপ্রেশন কাটানো খুব সহজ?

বাংলা ভাষায় একটি প্রবাদ চালু আছে। "অল্প শোকে কাতর, অধিক শোকে পাথর।" এখন শোক সম্পর্কে আমি ব্যক্তিগত ভাবে সাহিত্যে এবং সামাজিক ভাবে একটা কারনই খুজে পেয়েছি। আর সেটা হতে হলো বিচ্ছেদ। অতি আপন কোনো ব্যাক্তির বিচ্ছেদেই মানুষ শোকাহত হয়। এখানে অবশ্যই বিচ্ছেদ বলতে চিরবিচ্ছেদ বা মৃত্যুকে বোঝানো হচ্ছে।
রাজনীতিতে আমরা হরদম দেখতে পাই, ছোট-বড় পোস্টারে লেখা, 'অমুক নেতার বিচ্ছেদে আমরা শোকাহত।' খোজ নিলে দেখা যাবে যে বা যারা পোস্টার ছাপিয়েছে, তারা রাস্তার পাশের কোনো দোকানে বসে হাসতে হাসতে বিরিয়ানি খাচ্ছে। এটা শোক নয়। পিতার কাধে পুত্রের লাশ, পৃথিবীর সবচেয়ে ভারি জিনির বোঝা। আর বাবা- মাকে কতটা ভালোনাসি সেটা তাদের জীবনাবস্থায় না বোঝানো সবচেয়ে বড় ব্যার্থতা। আমার মনে হয় পাঠকদের জন্য শোক কাকে বলে এটা আরবিস্তারিত লিখতে হবে।
এরপরও যদি কেউ মনে দুঃখ- কষ্ট এবং শোক একই জিনিস। তবে বলবো আপনার অভিধানটা আপগ্রেড করুন।
একজন বড় মিথ্যাবাদী, একজন বড় জাদুকরও
[+] 2 users Like Dead people's post
Like Reply
#8
সত্যি কথা বলছেন দাদা। ডিপ্রেশন যে কতটা ভয়ানক হতে পারে এটা অনেকেই বুঝতে পারে না!
লাইক ও রেপু দিলাম।
[+] 1 user Likes Wow man's post
Like Reply
#9
মন ছুঁয়ে গেল  Namaskar

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 1 user Likes Somnaath's post
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)