Thread Rating:
  • 20 Vote(s) - 2.75 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance Accounting_Teacher
#1
#___Part___1
.
.
ক্রিং ক্রিং ক্রিং,,,,
---ঘুম ঘুম চোখে,,হ্যালো!(আমি)
---রাখ তোর হ্যালো!!এখন কয়টা বাজে সেই খেয়াল আছে তোর??(ঊর্মি)
--কয়টা আবার,৭ টা ৮ টা হবে হয়তো।কেনো কি হয়েছে বলতো??(আমি)
---কি হয়নি তাই বল,,সেই ১ঘন্টা ধরে কল দিতেই আছি,নো রেসপন্স।আজকে যে এক্সাম আছে সেটা কি ভুলে গেছিস??ঘড়ি টা একটু দেখ তো আগে(ঊর্মি)
--৯.৩৫ মিনিিিিট,,,
আল্লাহ ৯.৩৫ বেজে গেছে,,আমি রেডি হবো কখন??আর ভার্সিটিতে পৌছাবো কখন
ঐ এনাকন্ডা টা তো আমারে আজ কুপিয়ে কিমা বানিয়ে খাবে।
দোস্ত প্লিজজ তুই ৫ মিনিট খাড়া আমি ২০ মিনিটে আইতেছি
বলেই মাথায় এক থাবড় পায়ে এক থাবড় দিয়ে রেডি হলাম কোনো রকমে।
রেডি হয়ে আসতে আসতে ১০.১০ বেজে গেছে।
,
---এতক্ষণে তোর আসার সময় হলো???কুত্তি,না আসলেও পারতিস,
এখন তোর জন্য আমারেও ঐ জল্লাদ স্যারের বকা শুনা লাগবে।(ঊর্মি)
---এই চুপ থাক তোহহ,,প্যাঁচাল পাড়িস না কানের কাছে।
ঐ মুখ পোড়া লাল হনুমান,কালা কুমির, বিলাতি ইদুর,অস্ট্রেলীয়ান গরু,আফ্রিকান জঙ্গলি, বিট্রিশ লম্বু কি করবে হুমমমম???
তুই আয় তো আমার সাথে দেখি কেডায় কি কয়,,
(মনে মনে বলছে,উর্মি রে তো কলেম আমি।আমারি তো ভয় করছে না জানি জল্লাদেরর বংশটা ক্লাসে ঢুকতেই দেয় কিনা।আর এক্সাম না দিলেও পানিশমেন্ট এর ব্যবস্থা আছে।)
দোয়া দরুদ সব পড়ে বুকে ফুঁ দিয়ে আস্তে আস্তে করে ক্লাসের দিকে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনি,,কি ভাবছেন আন্নেরা??ঐ ডেভিল, সাপিনীর বর টা আমার সামনে এসে দাড়িয়ে আছে???
আরে নাহহহহ,,বৃষ্টি পড়েছে রাত্রে হাল্কা ঐ রাস্তা পিচ্ছিল করে রেখে গেছে আরকি।আর আমিও কানার মতো হাটতে গিয়ে পড়িতেছিলাম কিন্তু আমার বান্ধপ্পি মধুর জন্য আর পড়া হলো না।
---ঐ কুত্তি দেইখা চলতে পারস না??আমি যদি এখন না ধরতাম??তাহলে কি হতো বুঝছোস??(মধু)
--ঐ শাকশুঁটকি!!তোরে কি মুই ধরতে কইছিলাম??নাহয় পড়ে কোমর টাই ভাঙ্গতো,তাহলে অন্তত কদিন ভার্সিটিতে আসার প্যারা থেইক্কা মুক্তি পেতাম।
এল্যা ক তো বইন,কিচ্ছা ডা কি??তুই লেট করছিস ক্যা??(আমি)
---ইয়ে মানে দোস্ত(মাথা চুলকিয়ে)
---শালা সারারাত জিজুর সাথে প্রেমালাপ কইরা এহন আইছে।(উর্মি)
--হ বুঝবার পারছি।তয় তোরা এহন কি করবি?এইহানেই খাড়া থাকবি নাকি??অলরেডি ১০.২০ বেজে গেছে।
এক্সামের সময় কি আর আছে???চল তার পরেও ঘুরে আসি।
--হু,চল যাই।(মধু)
,
--দেখ সবাই শুধু চুপচাপ লিখেই চলেছে।কুনো কতা নাই,,ডেভিল টা কই??উঁকি দিয়ে দেখলাম নাহ,নেই তো কোথাও,,,
তারপরেও সিওর হওয়ার জন্য,,সুমি,,ঐ হাম্রি আস্তে লেখ।
হাত ভেঙ্গে যাবি।(আমি)
---------(সুমি)
---কিরে চুপ করে আছিস ক্যান??আচ্ছা, ঐ জল্লাদের বংশ, থুক্কু নেংটি ইদুর,ধলা চিকা থুক্কু বজ্জাৎ সার টা কই রে???
-------------(সুমি)
----ঐ ছেমড়ি মুখে কি কুলু পেতে রেখেছিস নাকি???
কতা ক,আরে ঐ খবিশ ব্যাটারে ভয় পাওয়ার কি আছে?? এই দেখ আমারে।আমি ভয় পাইনা ঐ ব্যাটা এনাকন্ডা টারে।
পেছন থেকে মধু বার বার জামা টেনে ধরছে,,ইঙ্গিতে কিছু বলার ট্রাই করছে বাট আমি পাত্তাই দিচ্ছি নাহহ।
না এই ছেড়ি তো খুব জ্বালাচ্ছে আমায় দেখতেছি।কি হয়েছে কি??? এতো টানাটানি করছিস ক্যাাাা,,,,,,,,,,,???(স্বয়ং যমরাজ আমার সামনে দাড়িয়ে)
---কি হলো??চুপ হয়ে গেলা কেনো???কি যেনো বলছিলে না আমায়???আমি সার না???আমি বজ্জাৎ সার তাই না???আরো কি যেনো বলছিলে না???নেংটি ইদুর আমিিিিিিিি???(দাঁতে দাঁত চেপে)
---ক,,,,কইই স,স্যা,,ররররররর???আপনি তো লাল হনুমান,থুক্কু কালা কুমির, আফ্রিকান কাইল্লা গ,,,রুুুুুুু বলেই ঢোক গিলছি(আমি)
---আমি আফ্রিকান কাইল্লা গরু নাহহহহহ(শুভ্র)
--নাতোহহহ সার থুক্কু স্যার!আপনি কাইল্লা গরু হবেন কিনু??আপনি তো ধলা গরুুু,,,থুক্কু বলেই মুৃখে হাত দিছে ঋতু,,,,
আমার মুখে কিছু আটকায় না।আসলে আমি চুপ করে থাকতে পারি না,মনে হয় কথা আমার পেটের মধ্য পোকার মতো কিলবিল করছে আর তখন আমার ঠোঁট দিয়ে বেরিয়ে পড়ছে।এই ডেভিল টা তো আমার উপ্রে এটম বম হয়ে আছে।এমনিতেই লেট করে আসছি তার উপর আবার ছাগলের মতো ভ্যা ভ্যা শুরু করে দিছি।যে ভাবে রাগে ফুঁসছে সাপের মতো মনে হয় আমায় এখনি গিলে খাবে।(আমি)
----কত্তবড় বেয়াদব,,এমনিতেও লেট করে আসছে,তার উপর আবার আমায় সার বলছে,,মনে হয় কানের নিচে দেই চারটা লাগিয়ে।কিন্তু যেই ছিৎকাদুনে তখন আবার সারা কলেজ কান্নার বন্যা বানিয়ে ফেলতো।এই মেয়েদের চোখে পানির ট্যাং মনে হয় বসানো।অবশ্য টাহা লাগে না বিনামূল্যে ছাড়ে চোখ দিয়ে।
মধু,আর উর্মি এই নাও প্রশ্নপত্র যাও নিজ সিটে গিয়ে এক্সাম দাও।(শুভ্র)
---আর আমি?????
---তুমি কান ধরে এক পায়ে খাড়া থাকবে ২০ মিনিট।তারপরে এক্সাম দিতে পারবা।আর যদি তা না করো তাহলে অন্য পানিশমেন্ট এর ব্যবস্থা করি।
কি করবো নাকি?????(শুভ্র)
---না নাহহহ থাক।এক পায়ে খাড়া থাকা যায় নাকি???একবার নিজেই করে দেখুক নাহ,,কিরাম কষ্ট লাগে এক পায়ে খাড়া থাকতে।২ মিনিট ই থাকা যায় না আর ২০ মিনিট,,(আমি)
---আমি তোমার মতো লেট করে আসি নাহহ,যে আমি কান ধরে দাড়িয়ে থাকবো।ভুলে যেওনা তুমি আমার স্টুডেন্ট আর
আমি তোমার টিচার।চুপচাপ কান ধরে দাড়ি থাকো,নইলে ৪০ মিনিট করে দিবো।বলেই শয়তানি একটা হাসি দিয়ে ক্লাস রুমে চলে গেলো ডেভিল টা।
মনচায় কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হাড্ডি মাংস আলাদা করে কুতকুত খেলি।এক মাঘে কখনো শীত যায় না,সময় আমারো আসবে তখন বুঝাবো মজা,কত ধানে কতো গম,,
,
উফফফহহহহহহ,,,আর পারছিনা।এভাবে আর কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে হবে কে জানে।
আমার পা লেগে যাচ্ছে তোহহ,,(আমি)
---দূর থেকে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ওর কার্যকলাপ দেখছি আর হাসছি।কত্তবড় ফাজিল,কান ধরে দাড়িয়ে আছে তবুও মুখের হাসি কমে না।পড়াশুনা তো করবেই নাহহহ,দিন দিন বেয়াদব হয়ে যাচ্ছে।এতো পানিশমেন্ট দেই,গায় লাগে না নাকি,
হয়েছে এবার সীটে গিয়ে বসতে পারো।আর দয়া করে আগামীকাল থেকে টাইমলি আসার ট্রাই কইরো।নইলে তো বুঝতেই পারছো।
---হুহহহহহহহহহ,,বুঝতে পারছি।প্রশ্ন নিয়ে লেখা শুরু করে দিলাম।সময় নেই এখন বসে থাকার।কি লিখছি নিজেও জানিনা।একটা Journal, Ledger, Trial balance+ Equation করছি মাত্র ১০ মার্কস করেই বসে আছি।কারণ আর কিছুই পারতেছি না।এই সব ম্যাথ আসবে না বলে ফেলে রাখলাম আর এ গুলাই আইছে সব।
সব কয়টা শাঁকচুন্নি, শেওড়া গাছের পেত্নি,সাপিনী গুলা ম্যাথ করেই যাচ্ছে করেই যাচ্ছে খালি।আমিই একমাত্র ব্যাক্তি যে বসে বসে কলম চিবুচ্ছি।এছাড়া আর কি করবো।কিছু তো কমন ও পড়েনি।সব গুলা দাগানোর ভেতর থেকেই আসছে।
---ঐ,,,কলম দিয়ে খুচাচ্ছি,,,
---কি হইছে???কলম দিয়ে খুচাচ্ছিস ক্রে??(উর্মি)
---দোস্ত প্লিজজজ একটু হেল্প কর,,আমি পারতেছি নাহহ,,(আমি)
--কেন দেখা যাচ্ছে না এখান থেকে???পারলে দেখ না পারলে বসে বসে মুড়ি খা।(উর্মি)
---ঐ হাম্রি তুই আইনা দে বসে বসে খাই,,আর এমন করে লিখিস ক্যা??মনে হচ্ছে তোর লেখার মধ্যে তেলাপোকা হাটঁছে।(আমি) 
---কিহহহহহ!!এত্তবড় কথা???ঐ দুর হ,,দুর হ আমার সামনে থেকে।কেনো রে???আমি কি বলছি তোরে??বলেই ঢেকে করা শুরু করলো উর্মি।
---ধুররররর,,আমি ও নাহহহ,,একজনকে না খোচালে মনে হয় পেটের ভাত হজম হয় না,,এখন কি করিিিিিিি,,
আবার মধুকে খোচানো শুরু করলাম,,এই শাকশুঁটকি(মধু চিকন তোহহ,তাই আমি আবার শাকশুঁটকি বলেই ডাকি,আর ও তো তখন ক্ষেপে লাল মরিচের মতো বম হয়ে থাকে।হেব্বি কিউট লাগে তখন।)থুক্কু মধু বেপ্পি কেরাম আছ্যেও??
---দেখছিস না কেরাম আছি??নাটক করিস???চুপচাপ বসে থাক নইলে উষ্টা খাবি কলেম।(মধু)
---এরুম করিস কিনু বনু,,তুই না আমার মিষ্টি পাখি(পাম দিয়ে,ডাইনির মতো লাগে কুত্তি তোরে)
একটু দেখা না।(আমি)
---পারবো নাহ,,তুই সড় তোহহ।তোর জন্য শুভ্র স্যারের পানিশমেন্ট খাওয়ার কোনো ইচ্ছেই আমার নেই।(মধু)
---ওকে সরিিিি।(একটা মলিন মুখ করে)
---থাক আপনাকে আর মন খারাপ করতে হবে না দেখেন।ড্রামাকুইন একটা।(মধু)
---হুহহহ,,পেত্নি কুনহানকার।(আমি)
,
----কত্তবড় সাহস,,এক্সাম দেওয়া বাদ দিয়ে বসে বসে গল্প করতেছে।দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।
ঋতু,ঋতু,, স্ট্যান্ড আপ!আই সে স্ট্যান্ড আপ!!(শুভ্র)
---জ্বি স্যার!!(আমি)
---এখানে এসে আমার সামনে বসে এক্সাম দাও।গল্প করা বের করছি দাড়াও,,মনে মনে বলছে শুভ্র,,
---এমনিতেই কিছু পাড়ছি না,,মধুর টা দেখে দেখে করছিলাম তাও বজ্জাত টা তুলে দিলো।মন চাচ্ছে ওরে ঐ ইছামতির পচা পানিতে গোসল করাই।ইয়াক?
,
---তাড়াতাড়ি লেখা ফিনিশড করো,সময় খুব কম।আর মাত্র ৫ মিনিট টাইম আছে।
কিছুক্ষণ পরে,,টাইম ইজ ওভার।(শুভ্র)
,
খাতা নিয়ে গেলো ঐ জল্লাদ সার টা।২-৩ টা ম্যাথ করছি মাত্র।কম মার্কস পেলেও পানিশমেন্ট আছে তার জন্য।এসব ভাবছি মনে মনে তখনি,,
---হারামি,সারারাত গল্প পড়বে আর প্রতিদিনই লেট করে ঘুম থেকে উঠবে।মনে হয় আমাদের ওর বরের কেনা সার্ভেন্ট পাইছে।(উর্মি)
উফফফহহহ!!কান টা একদম ঝালাপালা করে দিলো এই ডাইনি গুলা।এদিকে ক্ষিদেয় আমার পেটের মধ্য ইদুর রেস দেওয়া শুরু করছে।
চল তো ক্যান্টিনে যাই, আগে কিছু খাবো।(আমি)
---হু,চল।আমিওও সকালে এই পরিক্ষার জন্য খেয়ে আসিনি।(উর্মি)
,
সবাই মিলে ক্যান্টিনে বসে রতন মামার গরম গরম সামুসা খেলাম,,
খাওয়ার শেষে বিল দেওয়ার সময়,,,
মধু বিল টা দিয়ে তাড়াতাড়ি চলে আয়।(আমি)
---আমি বিল দিবো কেন???
---কেন?তুই কি খাস নি???আর তোর না আমাদের ট্রিট দেওয়ার কথা ছিলো,তাড়াতাড়ি দিয়ে জুবলিতে চলে আয়।জানি পেত্নি টা চিল্লাচ্ছে তাতে আমার কি??সকাল সকাল একটা বাশ দিয়ে চলে এলাম।অবশ্য এমুন করতে আমার ভালোই লাগে।
,
---কিরে আপু!!এক্সাম কেমন দিলি??আর কই ছিলি এতক্ষণ তোরা??ক্লাস শেষে তো তোদের পেলাম নাহ।(রবিন আমার ফ্রেন্ডস,আপু বলেই ডাকে)
---জাহান্নামের চৌরাস্তায় গেছিলাম, তাতে তোর কি??একটা হাম্রি ও আমার সাথে কথা বলবি না বলে দিলাম।(আমি)
---এই শালা,আমরা আবার তোর কোন পাকা ধানে মই দিলাম রে??সকাল সকাল এতো ক্ষেপেছিস কেন??(আশিক)
---দোস্ত আমার মনে হয় কি জানিস!ঋতু ঐ লম্বু শুভ্রের রাগ টা আমাদের উপর খাটাচ্ছে।ওরে কেউ ধরে জুবলির পানিতে চুবিয়ে ঠান্ডা কর।(অপু)
--এতক্ষণ মনেই ছিলো না ঐ নাইজেরিয়ান উগান্ডা,বিলাতি ইদুর,আফ্রিকান জঙ্গলি, ধলা চিকা,সাপিনীর বরের কথা।বলেই রাস্তার দিকে যাচ্ছিলাম।
---কিরেে!!কই যাস ঐ দিকে??পাগল টাগল হলি নাকি???(আশিক)
---তোরা থাক আমার কাজ আছে একটা।এখনি চলে আসতেছি।আপ্পু তোরে এত্তগুলান থ্যাংকু,,তুই আমারে বিরাট একখান ইম্পর্টেন্ট কথা মনে করাই দিছস।(অপু কে আমি আপ্পু বলেই ডাকি।)
---ওরে কেউ আমারে ধর,পড়ে গেলাম,,এই ছেড়ি মনে হয় সত্যিই পাগল হয়ে গেছে।ওরে আমি আবার কি মনে করাই দিলাম।(অপু)
,
কলেজ এসে নিচে গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
#___Part___2
.
.
---ওরে কেউ আমারে ধর,পড়ে গেলাম,,এই ছেড়ি মনে হয় সত্যিই পাগল হয়ে গেছে।ওরে আমি আবার কি মনে করাই দিলাম।(অপু)
কলেজ এসে নিচে গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি।হঠাৎ স্যারের সদ্য কেনা নিউ বিএম ডব্লিউ কার টা দেখে মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধির উদয় হলো।
আমারে বকা দেওয়া নাহহ,,ব্যাটা আস্ত বড় একটা শয়তান।দাড়াও চান্দু!এইবার বুঝবা মজা?
ঋতুর সাথে পাঙ্গা নেয়া নাহহহ,এই বার হারে হারে টের পাবা।
,
স্কার্ফ থেকে কয়েকটা পিন খুলে টায়ারে শপাং শপাং করে ঢুকিয়ে হাওয়া ছেড়ে দিলাম।
এবার বাড়ি যায় কেমনে দেখি,নবাব পুত্র আমার তো হেটে যেতে পারে নাহ,প্রেস্টিজে লাগে উনার।
,
ক্লাস শেষে বাড়ি ফিরবো তাই পার্কিং থেকে গাড়ি বের করছিলাম।কি ব্যাপার "!
গাড়ি স্টার্ট নেয় না কেন?বার বার স্টার্ট দেই বাট নেয় না।
ওহহ শীট!বলেই হাতের তালুতে বারি দিলো শুভ্র।
এখান থেকে ওর বাসার দূরত্বও অনেক।বাস,অটো বা রিক্সা তে ওর যাওয়ার অভ্যাস নেই।ছোট থেকেই নিজেদের গাড়ি করে চলাফেরা করে।
আসার সময় ও তো ভালোই ছিল গাড়ি টা।হঠাৎ করে কি হলো কে জানে।

কি হয়েছে দেখার জন্য নিচে নামলেই দেখি টায়ার পামচার হয়ে আছে।কেউ টায়ারে সূচালো কিছু দিয়ে আঘাত করে হাওয়া বের করে দিয়েছে।
মাথায় কিছু ঢুকছে না,কে এসব করলো? আর করেই বা কি লাভ হবে তার?চারিপাশ টা ভালো করে গোয়েন্দাদের মতো ঘুরে ফিরে দেখছে শুভ্র।যদি কোনো ক্লু পাওয়া যায়!!
চারপাশ ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ করে একটা সাদা স্টোনের পিন(মেয়েরা হেজাব বাধার সময়ে সাধারণত ব্যবহার করে থাকে।) দেখতে পেলো গাড়ির নিচে।
এটা কি?আর এখানেই বা এলো কোথা থেকে??
শুভ্র বাসায় কল দিয়ে ড্রাইভার গাড়ী নিয়ে আসতে বলছে।
এটা সার্ভিসিং এ পাঠিয়ে ঐটা নিয়ে ও বাসায় চলে যাবে।
.
--কিরে?তুই ঐভাবে দৌড়ে কই গেলি??আর কিসের কাজ ছিলো রে তোর?(উর্মি)
--ছিলো রে,,বলছি তোদের।(আমি)
--হু,বলে ফেল তো শুনি।(মধু)
তারপরে আমি সবাইকে বললাম স্যারের গাড়ির টায়ার লিক করার কথা।আমার কথা শুনে তো ওদের যায় যায় অবস্থা।চোখ কোটরের মধ্য থেকে মনে হয় এখনি বেরিয়ে আসবে একেকটার।
--তুই এসব কি করেছিস??একবার যদি শুভ্র স্যার জানতে পারে তো কেল্লাফতে করে দিবে।আমাদের আর আস্ত রাখবে না ঐ ডেভিল টিচার টা।এমনিতেই আমাদের দেখতে পারে না।
আমি আর বাপু তোদের সাথে নেই।(রবিন)
--তো যা নাহহ?তোরে কি ধরে রাখছি আমি? যত্তসব?
আমি মরি আমার জ্বালায়,,
যতক্ষণ না নিজের চোখে জল্লাদের বংশটার অসহায় মুখ টাকে দেখছি ততক্ষণ শান্তি নেই আমার।যখন দেখবে ওনার পছন্দের গাড়ির এই অবস্থা।
না জানি উনার রিয়েকশন টা কেমন হবে।ইশশশ!!যদি নিজের চোখে দেখতে পারতাম।?
কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব নহে,ব্যাটা বুঝে যেতে পারে।
কিন্তু আমি সেই কৌতুহল টাকে দমিয়ে রাখবো আর কতক্ষণ এভাবে?
,
-----উফফফহহহহহ!!এই পাবনার শহরেও দেখি এখন ঢাকার মতো জ্যাম বেধে থাকে।এতো জনসংখ্যা,এতো গাড়ি ঘুরা।?মাঝেমাঝে মনে চায় বাড়ি ঘর বেইচা উগান্ডায় চলে যাই।কিন্তু আপসুস যাইতে পারি না।
এস.এস.সি পরিক্ষা চলছে সম্ভবত, আর মাত্র এক্সাম শেষ হলো মনে হয়।সব পরিক্ষার্থীকে ফাইল হাতে বের হতে দেখা যাচ্ছে।আর যার কারণেই এত্তো জ্যাম রাস্তায়।ধুরররর বোরিং,,,,,এভাবে আর কতক্ষণ বসে থাকতে হবে কে জানে??
এফএম টা চালু করে দিলাম।
সময় টা কেটে যাবে।চোখ টা বন্ধ করে রেডিও শুনছিলাম মনোযোগ দিয়ে।এতোই মনোযোগ দিয়ে শুনছি যে জ্যাম ছেড়ে গেছে কখন সেটা বুঝতেই পারি নি।
আল্লাহ এতো মনোযোগ যদি পড়াশুনার কাজে লাগাইতাম তাইলে নির্ঘাত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর হতে দেরি হতো না।?
এদিকে পেছন থেকে সব গাড়ি ওয়ালা হর্ন বাজিয়ে বাজিয়ে কানের বারো টা বাজিয়ে দিলো আমার।
মনে হয় খুব ক্ষেপে আছে।তাড়াতাড়ি গাড়ি টান দেই নইলে খবর করে দেবে পাব্লিক আমার।
ওহহহ নোহহ!!ভাগ্যিস ব্রেক কষেছিলাম নইলে খবর ছিল?এতক্ষণে মার্ডার কেসের আসামি হয়ে জেলে থাকতে হতো।
গাড়ি থেকে তাড়াতাড়ি নেমে গিয়ে,,,,,,,,,,
----সরিিিিি সরিিিি!!আপনি যে এভাবে সামনে এসে পড়বেন বুঝতে পারি নি আমি।
আপনার লাগে নি তো কোথাও???(অভি)
----নো নো,ইটস ওকে।It's only my fault.
আমারই উচিৎ ছিল গাড়ি দেখে পার হওয়া।আপনাকে এতো উত্তেজিত হতে হবে না আমার লাগে নি তেমন।
একটু ছিলে গেছে,,(শোভা)
--চলুন সামনেই ডক্টরের দোকান আছে।ক্ষত টায় ঔষুধ লাগাতে হবে।
--উহু,আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না।আমি একাই যেতে পারবো।(শোভা)
--উহু,নো এক্সকিউজ।ক্ষতটায় ইমিটেডলি ঔষুধ লাগাতে হবে।নইলে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে।আর এটুকু না করতে পারলে গুইল্টি ফিল হবে।
---ওকে!ওকে চলুন।(শোভা)
মেয়েটাকে সাথে করে হাসপাতাল রোড থেকে ডক্টর দেখিয়ে ক্ষত টায় ঔষুধ লাগিয়ে নিলাম।অনেক খানি কেটে গেছে।
Actually,মেয়ে টা গাড়ির ড্রাইভ করার সময় অপজিট সাইড থেকে হুট করে এসে পড়ে আমার গাড়ির সামনে,আর আমি জোরে ব্রেক কষায় যা হওয়ার তাই হলো।
,
---থ্যাংকস দিয়ে আপনাকে আর ছোট করতে চাই না।
--আরে না নাহহ ইটস ওকে।
তো চলুন আপনাকে বাসা অব্দি ড্রপ করে দেই।
ইটস ওকে।তার আর দরকার নেই।আমি একাই যেতে পারবো।আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না।
এমনিতেই আপনার গাড়ির সামনে পরে বিপদে ফেলতেছিলাম।(শোভা)
--কি যে বলেন না।বিপদে ফেলবেন কেনো?।যাই হোক চলুন!বাসা পর্যন্ত ড্রপ করে দিয়ে আসি।ভয় নেই  আপনার বাসা চলে যাবো না।(অভি)
--ভয় পাবো কেনো?ওকে চলুন।(শোভা)
গাড়ি টা ঘুরিয়ে চলতে শুরু করলাম।
,
এতক্ষণে খেয়াল করলাম মেয়ে টাকে।
হাল্কা ছিপছিপে গড়নের, উজ্জ্বল শ্যাম বর্নের মেয়েটি কে চোখে মোটা করে কাজল,খোলা চুলে সাদা লং চুড়িদারে বেশ ভালোই লাগছে।দেখে তো মনে হয় বয়স ১৬/১৭ আনুমানিক।
উফফহহহহহ কখন থেকে সেই মেয়ে টা মেয়েটা করছি।এখনো তো নাম টাই জানা হলো না।
,
উহুম,উহুমম!!গলা টা ঝাকিয়ে কথা বলার জন্য প্রস্তুত করে নিজেকে।
ইয়ে মানে এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কেউ কারো সম্পর্কে কিছুই জানতে পারলাম না।
---হুমমম,আমি শোভা।শোভা আহমেদ।এবার ইন্টার ১ম বর্ষ, সরকারী মহিলা কলেজ।
মা বাবার একমাত্র রাজকন্যা অবশ্য বড় ভাই আছেন যার কলিজা আমি।?এবার আপনি বলুন
--তা তো অবশ্যই বলতে হবে।আমি অভি,
বাসায় মা আছেন শুধু,আর বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন।
--নাইস টু মিট ইউ,
--মি টু,,
,
স্টপ!স্টপ দ্যা কার।এটাই আমার বাসা।
গল্প করতে করতে কখন যে নিজ গন্তব্যপথে চলে এসেছি বুঝতেই পারি নি।গাড়ি থেকে নেমে।
---চলুন ভেতরে যাবেন।কফি খাবেন,,
--নো ইটস ওকে।আমার একটু তাড়া আছে,অন্য আরেক দিন।
--উমম!!অন্য আরেকদিন আপনাকে পাবো কোথায়?(শোভা)
---তাও ঠিক!ওকে আমার কন্টাক্ট নাম্বার টা রাখুন।
--হু,আইডি আছে??(শোভা)
--সরি!বুঝলাম না!
--বুদ্ধু!ফেসবুক আইডি আছে না আপনার??(শোভা)
---হুমম
---ওকে,নাম বলুন।
---অভি চৌধুরি।
--??ইয়ার্কি মারছেন আমার সাথে???(শোভা)
---আজব তোহ!আপনি কি আমার বেয়াইন যে ইয়ার্কি করুম আপনার লগে।
---আপনি সত্যিই অভি চৌধুরি?মিন সেলিব্রেটি রাইটার অভি চৌধুরি।
--হুমম,আমিই অভি চৌধুরি।তবে সেলিব্রেটি বা রাইটার নই।শখের বসে দু একটা গল্প লেখে থাকি।
কিন্তু আপনি জানলেন কিভাবে???(অভি)
---আমি আপনার সব গল্পই পড়েছি।বিশ্বাস করুন একবার না,,একেকটা গল্প বার বার পড়ি।আপনি এতো নিখুঁত করে কিভাবে লেখেন???আপনি কি জানেন আমি আপনার কত্ত বড় বিশাল ফ্যান??
---ওহহহ রিয়েলী??জানতাম না তোহহ,,
--তা আপনার আইডি নেম কি??(অভি)
--বলবো না,,
--কেনো??আমি বললাম না????(অভি)
---??আপনিই সেই বদ গুনধর পাঠক??যে আমায় ইনবক্সে হুমকি দেন??
---হুমমম,,ঠিকই তো আছে।আপনি গল্প দেন না কেনো এখন??
--সময় হয় না তাই,,
---সময় বের করুন।
--চেষ্টা করবো।আচ্ছা, আজকের মতো বায়।
--হু,বায়।
,
আমার তো খুশিতে লুঙ্গী ডান্স দিতে ইচ্ছে করছে যে আমি আমার ক্রাশ অভির সাথে এতক্ষণ ছিলাম।?
আচ্ছা, এটা আমার কল্পনা নয় তো?চোখ খুললেই হারিয়ে যাবে?হাতে চিমটি কেটে,,ওমাগোোোোোোোোোো,,,,,
তারমানে এটা আমার স্বপ্ন নয় বাস্তব।ইশশশশশশ?
আমার এতো খুশি লাগে ক্রে,,,,(শোভা)
.
.
.
.
.
.
.
 
.
.
.
.
.
#চলবে
Like Reply
#3
#___Part___3 
.
.
আমার তো খুশিতে লুঙ্গী ডান্স দিতে ইচ্ছে করছে যে আমি আমার ক্রাশ অভির সাথে এতক্ষণ ছিলাম।
আচ্ছা, এটা আমার কল্পনা নয় তো?চোখ খুললেই হারিয়ে যাবে?হাতে চিমটি কেটে,,ওমাগোোোোোোোোোো,,,,,
তারমানে এটা আমার স্বপ্ন নয় বাস্তব।ইশশশশশশ
আমার এতো খুশি লাগে ক্রে,,,,(শোভা)
.
---আজকের মতো তো ডেভিলটার হাত থেকে বেচে গেছি জানি না,,আগামীকাল কে আমার কপালে কি আছে।
যাই থাকে থাকুক,আগামীকালকের টা আগামীকাল ভাবা যাবে।আপাতত এখন আমার একটু ঘুমের দরকার।
ভার্সিটি থেকে এসেই বিছানায় গা এলিয়ে দেয়ার সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পড়লো ঋতু,,
বর্ষার ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো,,চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে,,,,
-কি হয়েছে কি?এভাবে আমার স্বাদের ঘুম টা ভাঙ্গলি কেনো??
--ওলেেে আমাল নবাবজাদির স্বাদের ঘুম রে,,,,
এই তোর বরের টাকার সার্ভেন্ট পাইছোস আমায়?সব কাজ আমি একাই করবো,আর তুই শুয়ে বসে গিলবি।(বর্ষা)
---ঐ বস্তার ঘরের বস্তা,তোর সাহস তো কম না?আমারে কথা শুনাস।(আমি)
--হুহহহহহহহ
---আমার কাঁচা ঘুমটা দিল ভাঙা দিলো শাঁকচুন্নি টা,,
কিছুক্ষণ বসে থেকে অলসতা কেটে ফোন টা হাতে নিয়ে আমার চোখ তো কপালে?
৪:৩৫ মিনিট বাজে।তার মানে ভার্সিটি থেকে এসে আমি ৪ ঘন্টার বেশি ঘুমাইছি।এদিকে এখন আবার ক্ষিদেয় যায় যায় অবস্থা।পেটের মধ্যে কিছু দিতে হবে তার আগে বড় কথা গোসল করা টা জরুরি।ইশশশশ!!আজকে যোহরের নামায টা কাযা হয়ে গেলো আমার।
গোসল শেষ করে ডাইনিং এ বসলাম পেটে কিছু দেয়ার জন্য,নইলে ইন্দুর মামা রা যে রেস শুরু করছে?
,
যেই না মুখে এক লোকমা ভাত তুলে দিয়েছি ওমনি আম্মা কোথা থেকে যেনো এসে সামনে হাজির হলো।
---তোর কি সংসারের কোনো কাজ কর্মই করতে মন চায় না।আমি একা একজন মানুষ সব দিকেই খেয়াল রাখতে হয়।
বয়স হয়ে যাচ্ছে কবে মারা যাবো না জানি।এতো বলি করে বিয়ের কথা কে শুনে কার কথা।মরার আগে মনে হয় না আর মেয়ের জামাইয়ের মুখ দেখে যেতে পারবো।,,,,,
---উফফফহহহহহহ!!আম্মা তুমি একটু থামবা?সব সময় তোমার এসব আর শুনতে ভাল্লাগে না।
দেখছোই তো খেতে বসেছি,একটু শান্তিমতো খেতে দিবা তো নাকি?
---তোকে খেতে কে নিষেধ করছে?আমার কথা তো তোর ভালোই লাগে না কোনো সময়।
----ধুরররররররর,,,খাবোই না আমি।(বলেই ভাতের প্লেট টা ছুড়ে মেরে রাগে গজগজ করতে করতে ডাইনীং ছেড়ে রুমে ঢুকে দরজা লক করে দিলো।)
এ দিকে পেছন পেছন ডেকেই চলেছেন ঋতুর আম্মা,,,,,
বড্ড জেদি আর একগুঁয়ে স্বভাবের।একদম ওর বাবার মতো হয়েছে।
,
ধমক দিয়ে কিছু বলতেও পারি না।বাপ মরা মেয়েটা আমার কষ্ট পাবে।কখনো কোনো কিছুর অভাব বুঝতে দেয়নি।
কখনো বলতে যেনো না পারে আজ আমার বাবা থাকলে এটা হতে পারতো না।আমরা মানুষেরা বড়ই অদ্ভুদ এক প্রাণী।
যে থাকবে না,মানে বর্তমানে যে অনুপস্থিত।সে হোক না খারাপ তখন তারই গুনগান গাইবে।আপনি যতোই তাকে কলিজা কেটে খাওয়ান না কেনো একটু কমতি হলেই হলো।
,
অনেক রাত হয়ে গেছে ক্ষিদেয় এদিকে আমার তো করুন অবস্থা।তখন ঐভাবে রাগ করে না চলে আসলেও পারতাম।
আসলে আমার রাগ হলে একদম মাথা কাজ করে না।যখন রাগ টা একটু কমে তখন অনুপ্ত হই নিজের ব্যবহারের জন্য।
এমন টা না করলেও পারতাম।কিন্তু অনুতপ্ত হয়ে কি লাভ?যা হওয়ার তো হয়েই গেছে।
আম্মা তখনকার বিহাভের জন্য অনেক কষ্ট পেয়েছে জানি।কিন্তু কি করবো বলুন।খুব ভালোবাসি আমি আমার আম্মা কে।নিজের থেকেও বেশি।খুব কষ্ট হয়,ভেতরটা দুমড়ে মুছড়ে যায় আম্মার মুখে মরার কথা শুনলে।স্বার্থপরের মতো বাবা আমাদের ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছে।এই আম্মা ছাড়া যে আমার দুনিয়া টাই অন্ধকার।
বাবা মারা গেলে মা তার বুঁকের মধ্যে সন্তানকে আগলে রাখে।মা বাবা দূজনেরই ভূমিকা পালন করে।কিন্তু মা মরে গেলে কখনোই একজন বাবা মায়ের মতো করে আগলে রাখতে পারেনা।এই পৃথিবীতে যাদের বাবা মা বেচে নেই তারাই জানে একমাত্র মা বাবার অভাব টা।
যাই একটু দেখে আসি আম্মা কি করছে,,
আমি জানি এখন আমার অভাগি মা টা খাওয়ার টেবিলে আমার জন্য খাওয়ার নিয়ে বসে বসে চোখের পানিতে বুঁক ভাসাচ্ছে।
হুমমম,,ঠিকই বলেছি।
উহুম উহুমমম,,,,আজকে মনে হয় আমাদের বাড়িটা কারো চোখের পানির বন্যার প্লাবনে ডুবে যাবে।
আমার কথার আওয়াজ পেয়ে আম্মা উপরে তাকাঁলো।
---ওহহ আম্মা, আমার না খুব ক্ষিদে পেয়েছে।
--তো আমি কি করবো?
---একটু কি খাইয়ে দিবা??
---কেনো নিজে খেতে পারস না?
---তুমি খাইয়ে দিবা কি না তাই বলো।
--পারবো না।নিজের হাত দিয়া খা,,
---আচ্ছা, ঠিক আছে।কাউকে কষ্ট করে আর আমারে খাইয়ে দেওয়া লাগবে না।আমি তো আর নিজের মেয়ে না।পরের মেয়েকে কি কেউ খাইয়ে দেয়।আমার আব্বু থাকলে ঠিকই খাইয়ে দিতো।(আরেকটু রাগানোর জন্য বললাম) 
---তো যা নাহ,তোর বাপ কে কবর থেকে তুলে নিয়ে আয়।
আমায় বলিস কেন?
এভাবে আমি প্রতিদিনই আম্মাকে রাগিয়ে দেই,,আম্মাকে রাগাতে আমার ভালো লাগে।
,
ঘুম থেকে উঠতে আজকেও লেট,ক্লাস শুরু হতে আর মাত্র ১৫ মিনিট বাকি।এমনিতেই আজকে লেট তার উপরে ১ম ক্লাস টাই ঐ বদ রাগি এনাকন্ডা টার।আমারে তো আজ পরোটার সাথে জেলি বানিয়ে খাবে।
আল্লাহ তুমি আমারে বাঁচাও
এই ডেভিলের হাত থেকে নয়তো দড়ি ফালাও আমি উপরে উঠে যায়।তড়িঘড়ি করে রেডি হয়ে নিলাম।
ব্রেকফাস্ট না করার জন্য আম্মা পেছন থেকে চিল্লিয়েই যাচ্ছে।আমার আবার না খেয়ে থাকলে সমস্যা হয়।
,
অলরেডি ক্লাস শুরু হয়ে গেছে ১৫ মিনিট আগে।
জল্লাদের বংশ টা লেকচার দিয়ে যাচ্ছে।আর সবাই মন্ত্র মুগ্ধ হয়ে শুনছে।শুনছে বললে ভুল হবে সব লুচ্চি মাইয়্যাগুলো স্যারের দিকে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে আছে।পারে তো মনে হয় স্যারকে গিলে খাবে।
.
.
.
Like Reply
#4
#___Part___4
.
আর তাকাবেই না বা কেনো?এমন সুদর্শন পুরুষ কে,কে না চায় জীবন সঙ্গী হিসেবে।আমাদের শুভ্র স্যারকে দেখে মনেই হয় না যে উনি একজন ভার্সিটির লেকচারার।যে কেউ প্রথম দেখায় ভেবে নিবে উনি একজন স্টুডেন্ট।আমাদের কলেজের সব থেকে ইয়াং টিচার শুভ্র স্যার।জাতির ক্রাশ।
আমার জানামতে আঙ্কলের নিজের বিজনেস আছে।যার শাখা প্রশাখা বাংলাদেশের বাইরেও আরো কয়েক টা রাষ্ট্রে ছড়িয়ে আছে।তার ছেলের এই অন্যের আন্ডারে জব করার রহস্য ঠিক আমার মাথায় ঢুকে না।হতেও পারে উনি সব কিছু নিজ যোগ্যতা দিয়ে অর্জন করতে চায়।অন্যের উপর নির্ভরশীলতা হয়ে থাকা টা পছন্দ করেন না।
,
ব্লু শার্ট সাথে ব্ল্যাক ব্লেজার,হাতে ঘরি,চুল এক পাশে স্ট্যাইলিশ করে শিথি করে জেল দিয়েছেন।
লেকচার দেওয়ার সময় হাত উচিয়ে উচিয়ে কথা বলার মাঝেমাঝে ঠোঁট কামড়ানো বাচ্চাদের মতো।সব মিলিয়ে একটা মেয়েকে ঘায়েল করার জন্য যথেষ্ট।
এতক্ষণ যেনো ঘোরের মাঝে হারিয়ে ছিলাম।ক্লাসের সবার হাসির শব্দে ঘোর থেকে বাস্তবে ফিরে এলাম।
কি হলো হঠাৎ করে কিছুই তো বুঝলাম না।উৎসুক চোখে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে ঋতু।
,
ক্লাসে এসে দেখলাম মধু,উর্মি সুমি, অপু, আশিক,অপু মোট কথা ওদের ফ্রেন্ডসারর্কেলের সবাই ক্লাসে উপস্থিত আছে শুধু মহারাণী ছাড়া।নিশ্চয় ঘুমাচ্ছে পড়ে পড়ে।সারারাত নেটে থাকবে আর সকাল হলে ঘুমাবে।যার দুদিন পরে টেস্ট পরিক্ষা আর সে কি না আজ ক্লাসে অনুপস্থিত।এমনিতেই ফিন্যান্স এর কিছুই পারেনা।বাচ্চাদের মতো আজাইরা প্রশ্ন করে করে মাথা টা খেয়ে ফেলে।আর আজকে ক্লাসে অনুপস্থিত?
রাগে মনে হয় থাপ্পড় দিতে ইচ্ছে করে এগালে ওগালে এলোপাথাড়ি।আপসোস বেয়াদব টা এখন আর সামনে নেই,থাকলে হতো।
প্রায় ১০.৩০ টা মিনিট বাজতে চললো এখনো আসার নাম গন্ধ নেই।বজ্জাত টা আজ আসুক আগে।
ক্লাস নেওয়ায় মনোযোগ দিলাম। 'ফিন্যান্স' এর "অর্থের সময় মুল্যের" নোট গুলো করে দিলাম।আগামী দিন থেকে ম্যাথ গুলো শুরু করবো।দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলাম বজ্জাত টা হা করে তাকিয়ে আছে।এমন ভাবে হা করে তাকিয়ে আছে যেনো আস্তো একটা রোস্ট ওর সামনে ধরলে গিলে খাবে তবুও টের পাবে না কিছুই।
কয়েকবার ডাক দিলাম নাম ধরে বাট নো রেসপন্স।এমন উজবুকের মতো করে কি ভাবছে কে জানে।এদিকে ওর কর্মকান্ডে যে সবাই ওকে নিয়ে হাসাহাসি করছে সেদিকে কি ওর খেয়াল আছে।
,
রাগে আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে।হাতের কাছের মার্কারি টা ছুড়ে মারলাম ওর গায়ের উপর।আর এতে সবার হাসাহাসির পরিমাণ আরো বেড়ে গেলো যেনো।
কি হচ্ছে টা কি?এখান থেকে কি আমি চলে গেছি।হাসাহাসির ইচ্ছে থাকলে ক্লাসের বাইরে চলে যেতে পারো।
আর আপনি?এখন কয়টা বাজে?এটা কি আপনার নিজের বাসা পেয়েছেন যে যখন ইচ্ছে আসবেন আবার ইচ্ছে হলেই চলে যাবেন।কয়টা বাজে?
ওয়াট টাইম ইজ ইট?আন্সার মি ড্যামন ইট।
চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে কথাগুলো বলছে শুভ্র।শুভ্রর রাগী আর ভয়ংকর রুপ দেখে সবাই ভয়ে থর থর করে কাপঁছে।
এর আগে কেউ শুভ্রের এমন ভয়ংকর রুপ দেখেনি।
এ যেনো নতুন রুপে দেখছে সবাই শুভ্রকে।
পুরো ক্লাস জুরে পিনপিন নিরাবতা।যেনো কিছুক্ষণ আগেই ঝড়ে সব সর্বশান্ত করে দিয়ে গেছে।
গেট লসট,গেট লসট মাই ক্লাসরুম।
,
সব কিছুই ঋতুর মাথার উপর দিয়ে চলে গেলো।সামান্য লেট হওয়ার জন্য এতোটা রিয়েক্ট করবে শুভ্র যা ঋতুর ভাবনার বাইরে।কান্না করতে করতে ক্লাসের বাইরে চলে গেলো ঋতু।
,
ক্লাসে মন বসাতে পারছে না শুভ্র।ঋতুর চোখে স্পষ্ট জল দেখতে পেয়েছে শুভ্র।বুঁকের ভেতরটায় তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে।কাল বৈশাখীর ঝড় যেনো বইছে।এতোটা রিয়েক্ট না করলেও পারতাম।কিন্তু রাগ হলে যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনা।কেউ ওকে নিয়ে হাসাহাসি করবে সেটা শুভ্রের সহ্য হয় না।
ও কি সেই ছোট্ট বাচ্চাই রয়েছে নাকি?নিজের বুঝটা কি বুঝতে শিখেনি নাকি?বাচ্চাদের মতো পাগলামি করে সবার সামনে নিজেকে হাসির পাত্র বানায়।
,
হুরররররররর,,,আমি আর কখনোই ঐ চুড়েল,বজ্জাত, জল্লাদের বংশ,আফ্রিকান এনাকন্ডা,মেনি মুখো হুলো বিড়াল,নেংটি ইদুর।কালা কুমিড়।অস্ট্রেলীয়ান বাছুর,টিকটিকি, ভেড়া,গরু,ছাগল,আলু,বেগুন,টমেটো টার ক্লাস করবো না।সব সময় হুদাই রাগ দেখায়।
হতচ্ছাড়া তোর কপালে দেখিস বউ জুটবে না।
একা একাই বকবক করছে ঋতু আর মনেমনে শুভ্রকে গালাগাল করছে।
,
এদিকে ক্লাস শেষে ঋতুকে পুরো ক্লাস রুমে তন্নতন্ন করে খুজে বেড়াচ্ছে।ও নিশ্চিত ঋতু ভার্সিটিতেই আসে।আর কোথাই ওকে পাওয়া যাবে সে বিষয়ে নিশ্চিত।
,
কিরে?তুই তখন ওমন হা করে কি দেখছিলিরে??পরে গেছিস নাকি?(উর্মি)
---পরে গেছি মানে?কিসের কথা বলছিস?(আমি)
--আর আমাদের শুভ্র স্যারের উপর ক্রাশে ক্রাশিত তুই।নইলে কি আর ওমন হা করে স্যারের দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকিস?(মধু)
---একদম ফালতু কথা বলবি না।
--হুহহহহ তুমি করলে ভালো আর আমরা বললেই কালো তাই না?(আশিক)
তা বাদদে,তুই কি কোনোদিন ই ঠিকঠাক মতো ক্লাস টাইমে ক্লাসে উপস্থিত হতে পারবি না?দুদিন বাদে এক্সাম সে খেয়াল আছে তোর?(উর্মি)
---শোন এতো পড়ে আমি কখনোই বিদ্যাসাগরের বউ হতে পারবো না।তুই ভালো কর পড়বি তোর টা দেখে লেখলেই চলবে।এতো পড়ে কি হবে?সেই তো অন্যের চুলোয় ছাই তুলতেই হবে।
---যাহ শয়তান সর সামনে থেকে।তোকে এবার আর আমরা কেউ দেখাবোনা।তুমি একটা করে ঝামেলা বাধাবে আর আমাদের ও তার মাঝে জড়াবে।ভাগ্যিস সেদিনের স্যারের গাড়ির টায়ার ফুটো করার ব্যাপারটা স্যার এখনো বুঝতে পারেনি।নইলে এতক্ষণে জুবলির পানিতে চুবাতো সবাইকে।(মধু)

,

হুম খুজতে খুজতে লাইব্রেরিতে পাওয়া গেলো শেষমেশ।
পেছনে দাড়িয়ে ওদের সবার কথা শুনছে আর রাগে ফুঁসছে শুভ্র।
.
.
চলবে
Like Reply
#5
#___Part___5
.

স্যাাাাাররররর আাাাাপনিিিি?ককককখখননম এলেন?আর এখানেে কি করছেন?
এ বাল তোদের এখানে আসতে বলছিল কিডা?আর আসছিস যখন ভালো কথা মুখ টা বন্ধ রাখতে পারিস না কোনো সময়?আসছে আমায় উদ্ধার করতে।হাতে হারিকেন আর পেছনে বাঁশ।মনে মনে ওদের বকা দিচ্ছে ঋতু।
শুভ্র ঋতুকে খুজতে এসে ওদের সব কথোপকথন শুনে ফেলে।
শুভ্রের ভয়ংকর আর রাগী চেহারা দেখে তো ওরা শেষ।কথা বলার সময় খেয়ালই করেনি যে শুভ্র ওদের পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে।ওদেরই বা কি দোষ,ওরা কি আর জানতো যে শুভ্র ওদের ফলো করে লাইব্রেরীতেই চলে আসবে।ঋতু না বললে বুঝতেই পারতো না শুভ্র ওদের পেছনে এসে দাড়িয়ে আছে।
নইলে হয়তো এফএম রেডিও এর মতো নন স্টপ বকবক করেই যেতো।
.
ওদের ভুলের জন্য এখন বেচারি ঋতুকে খেসারত দিতে হবে।না জানি এই ল্যামপোস্ট টা কি পানিশমেন্ট দেয়।
আস্তে আস্তে রুমের বাইরে যাওয়ার সময়,,,
--আপনি কোথায় যাচ্ছেন?খপ করে ঋতুর হাত ধরে ফেলে।
--স্যাররর বাসায় যাবো।ওরা সবাই চলে যাচ্ছে প্লিজজ যেতে দিন আমায়।
--বাসায় যাবে তাই না?দাঁতে দাঁত চেপে,সেদিন আমার গাড়ির টায়ারে সূচ দিয়ে খোচায়ে ফুটা করে দিছিলো কে?
--কিিি কিিি বলছেন স্যাাররর গাড়ি আর টায়ার ফুটো
--কেনো?মনে হচ্ছে কথাটা আজ নতুন শুনছো?
--স্যার প্লিজজ যেতে দিন আমায়।নিচে আমার ফ্রেন্ডস রা আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
শুভ্র সামনে আগাচ্ছে আর ঋতু ভয়ে পেছাতে পেছাতে দেয়ালের সাথে ঠেকে যাচ্ছে।
---বাসায় যাবে?তো আটকে রেখেছে কে?যাও না চলে যাও
--এভাবে ষাড়ের মতো সামনে এসে গুতো দিলে যাবো কিভাবে আমি
--এই মনে মনে গালি দেয়া বন্ধ করো।যাবে নিশ্চয়ই বাসায় যাবে তবে আর আগে আমার প্রশ্নেরর উত্তর দিয়ে যাও।
--কিিি প্রশ্নেরর উত্তর?
--আরে এতো তোতলামি করছো কেনো?তুমি কি তোঁতলা?
আমার গাড়ির চাঁকা ফুটো করছে কে?
--শুভ্রকে ধাক্কা দিয়ে, আমার গাড়ির চাঁকা ফুটো করছে কে,করছে কে?মুখ ভেংচি করে।
আরে জানেনই যখন আমি করছি তখন এতো জেরা করার কি আছে?হিরোগিরী দেখান?
--ইউউ ইডিয়ট
--হু,বলেন বলেন।ইডিয়ট,গম্ভার্ট,মাথামোটা, ব্ল্যা ব্ল্যা
এইরেেে বেশি বলে ফেলেছি। রাক্ষস টা যেভাবে তেড়ে আসছে,ভাগ ঋতু ভাগ।বাচঁতে চাইলে ভাগ।দিলাম চোখ বন্ধ করে ভৌ দৌড়।এক দৌড়ে ৩য় তলা থেকে মেইন গেটে চলে আসছি।এত জোরে হুসাইন বোল্ডেরর মতো দৌড় দেয়ার কারণে হাপাচ্ছি,,
--কিরে দোস্ত, কেমন পানিশমেন্ট দিলো?(পুতুল)
--শালা চুড়েল,বজ্জাতের কিমা,নেংটি ইদুঁর,লুচু কোম্পানি, কান খেরু কুনহানকার,ল্যাফটেনেন্ট খুঁটি,মোটা আলু,ভুঁই কুমড়ার দল।সব তোদের জন্য হয়েছে।কে বলছিল তোদের আমার পিছু গিয়ে লেকচার দিতে?একটু হলেই তো জল্লাদের বংশটা আমায় খপাৎ করে ধরে কপাৎ করে গিলে খাচ্ছিল।
--বেশ হচ্ছিল।শালা তারছিঁরা লাগতে যাস কেনো স্যারের সাথে?নিজেও মরবি শালা আর সাথে আমাদের ও মারবি।(আশিক)
--তোদের কে বলেছিল আমার সাথে থাকতে?যা না,ধরে রাখছে কে?আজাইরা সব,ধুররর বাল থাক তুরা।
আমার সাথে আর কথা বলতে আসবি কেউ।তাইলে ভালো থাকবি।
.
রাগ দেখিয়ে বাসায় চলে গেলো ঋতু।অবশ্য আজ এটা ওদের কাছে নতুন না।প্রতিদিনই এমন হয়।
নিজেই রাগ করবে,আবার নিজেই এসে সরি বলবে।একটু বদমেজাজি তবে মনটা ভীষণ ভালো।
হুমায়ুন স্যারের একটা কথা ছিল এমন টা;ভালো মানুষদের রাগ বেশি।যারা মিচকা শয়তান তারা কখনো রাগে না।পাছায় লাথি মারলেও লাথি খেয়ে হাসে।ওর ক্ষেত্রে ও তাই।একটু রাগি এই আরকি।তবে বন্ধুদের সাথে রাগ করে বেশিক্ষণ থাকতে পারে না।
মাঝে মাঝে অদ্ভুদ ধরণের সব কান্ড করে বসে।যার না হাসলেও হয়না।একদম সহজ,সরল, সাঁদামাটা তবে ভীষণ ভালোবাসতে জানে।
এই যে এখন রাগ করে চলে গেলো।রাত্রে আবার নিজে থেকেই কল দিয়ে কথা বলবে।যেনো কিছুই হয়নি।
,
ক্লাসে রাগ করছি বলে দেখতে গেলাম মন খারাপ করে কোথায় গেলো পাগলি টা।কোথাও খুজে পাচ্ছিলাম না।শেষমেশ খুজে না পেয়ে লাইব্রেরিতে গেলাম।পেয়েও গেলাম তবে যা শুনলাম সেখানে গিয়ে তাতে তো আমার মনে হচ্ছিল তুলে ৪ তলার উপর থেকে আছাড় দেই।কত্তবড় বেয়াদব।বেয়াদবির একটা লিমিট আছে।কিছু বললেই তো ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে বাচ্চাদের মতো কাঁদবে।অনার্সের পড়া একটা স্টুডেন্ট কি এখনো বাচ্চাই আছে?কাজ কর্মে সব সময় বাচ্চামির স্বভাব।
এভাবে চলতে থাকলে ওর পড়াশুনার ক্ষতি হবে।আন্টিকে আজই জানাতে হবে।
,
খাওয়ার টেবিলে,,,
--ঋতু আমি কি শুনছি এসব?
--আম্মা তুমি বা কি শুনছো আর আমি তোমাকে কি বলবো বলোতো?
--শুভ্র আমায় তোমার নামে কমপ্লেইন করছে।তুই নাকি ভার্সিটিতে পড়াশুনা করিস না। উল্টা বেয়াদবি করে বেড়াচ্ছিস।
সেদিন নাকি শুভ্রের গাড়ির হাওয়া ছেড়ে দিছিস।
--কিহহহহ!!ঐ ধলা চিকার এত্তবড় সাহস আমার নামে বিচার দেয়।সেদিন তো শুধু ওর গাড়ির হাওয়া ছেড়ে দিছি,
সুযোগ পেলে এবার ওর হাওয়া ছেড়ে দিবো।আমায় চিনো না বাচ্চু।তোমার লাইফের নাট বল্টু খুলে দিবো কিচ্ছু টের পাবানা??
---ঋতুউউহহহ,তুই ভালো হবি কবে?তুই জানিস না তোর সামনে টেস্ট পরিক্ষা ১ম বর্ষের।ভার্সিটি কতৃপক্ষের নির্দেশ যারা টেস্টে অকৃতকার্য হবে তাদের কোনো ভাবেই ফাইনালে এলাউ করা হবে না।
---হু,জানি তো।
-জানিস?জানিস যখন পড়াশুনার প্রতি সিরিয়াস হস না কেন?
--আম্মা আমি তো ভীষণ সিরিয়াস পড়াশুনার প্রতি।
--ওহ রিয়েলি?তুই যখন পড়াশুনার প্রতি এতই সিরিয়াস।তখন আগামীকাল থেকে শুভ্রর বাসায় গিয়ে পড়ে আসবি।আমি জানি একমাত্র শুভ্রই তোকে জাতে তুলতে পারবে।
--কি বলছো আম্মা???প্রাইভেট পড়বো আমি?তাও আবার ঐ ল্যামডা ডাইনোসর টার কাছে?দেশে কি প্রাইভেট টিউটরের এতই আহাল পড়ছে?যে আমায় ঐ ইটালিয়ান ধলা চিকার কাছে প্রাইভেট পড়তে হবে।ইয়াম পসিবল মাম্মা।
নো নেহি,কাভি নেহি।
--আমি কোনো কথা শুনতে চাইনা।এতদিন যা বলেছিস সব শুনেছি। আদর দিয়ে যখন মাথায় তুলেছি তখন মাথা থেকে নামাতে ও পারবো।আমি তোকে আস্ক করিনি যে পড়বি না ক পড়বি বলবি।আমি তোকে অর্ডার করছি সো ইউ উইল ডু।
আই হোপ।
--না আম্মা,তুমি এমনটা করতে পারো না।তুমি জেনেশুনে তোমার মেয়েকে ঐ রাক্ষসের ডেরায় ভরে দিতে পারো না।মাগোোোো আমি তোর পায়ে পরি।তুই তোর এই নাদান মাসুম বাচ্চা টাকে এমন সাঁজা দিতে পারিস না।
--আমি কি পারবো কি পারবো না সেটা তোমার থেকে শিখতে হবে না।তুমি ভালো করেই জানো আমি একবার যা বলি তাই করি।
যাও ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।ফার্দার যদি কোনো নিউ ড্রামা স্টার্ট করো তো কোনো রিক্সাওয়ালার সাথে ধরে বিয়ে দিয়ে দিবো তখন আমায় কিছু বলতে পারবা না।
--আল্লাহ গোোো তুমি কোথায়??তুইল্লা লও না ক্যা মোরে।আমার নিজের মা ও আজ আমার বিরোধী তা করছে।শত্রুপক্ষের সাথে মির্জাফরের মতো হাত মিলিয়েছে।ঘষেটি বেগম কুনহানকার।নিজের মেয়েকে বাঘের থুক্কু বিটকেলের হাতে তুলে দেয়,আদৌ আমার আপন মা তো?
--এনি ডাউট?ডাউট হলে ডিএনএ টেস্ট করতে পারো।
.
--আইলা?এরা সবাই কি মনের কথা শুনতে পারে এনাকন্ডার মতো?মনে হয় ঐ বিট্রিশ ল্যাম্পপোস্ট থুক্কু ধলা চিকার কাছে প্রতিদিন ট্রেনিং নিচ্ছে।
বুঝে গেছি,আর এই বাড়িতে আমার কোনো রাজত্ব নাই।নিজের মাথার চুল নিজেই ছিড়তে ইচ্ছা করছে।
ঐ নেংটি ইদুঁর টা যদি আমায় হাতের নাগালে পায় তো কুপিয়ে কিমা বানিয়ে খাবে।
রাত্রের বেলা ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছি ডেভিল টিচার থুক্কু জল্লাদের বংশ থুক্কু আংকেলের ছেলে আমায় চাইনিজ কুড়াল দিয়ে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।টমেটোর সচ রেডিই আছে।শুধু খপ করে ধরে সপাং করে ফুটন্ত গরম তেলের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে কাবাব করে খাবে।
আল্লাহ রাতের স্বপ্ন টা যেনো কোনোদিনও সত্যি না হয়।
শুনেছি ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয় কিন্তু আমি তো দেখেছি মধ্যরাতে।?
,
ভদ্র মেয়ের মতো মায়ের কথামত রাক্ষসপুরি থুক্কু স্যারের বাড়িতে রওনা দিলাম।এর আগেও আব্বু আম্মুর সাথে অনেকবার এখানে এসেছি।তাই চিনতে অসুবিধা হলো না।কলিংবেল দেয়ার সাথে সাথেই স্যারের মা দরজা খুলে দিলো।
মনে হয় দরজার পাশেই দাড়িয়ে ছিল।
--আরে ঋতু কেমন আছিস?
--ভালোই ছিলাম সোনা মা।তবে এখন আর থাকবো না মনে হয়।
--কি যা তা বলছিস এসব?আয় ভেতরে আয়।
--ঋতুপু কেমন আছো?(শোভা)
--এই আছি,তুই?
--ভালো আর থাকি কই বইন?এই দেখছো না কত্তগুলো পড়া দিয়ে রাখছে।এসব কম্পিলিট না হলে আমার লান্চ বন্ধ।এদিকে ক্ষিদেয় আমার পেটে ছুঁচোবাবাজী গুঁতোগুঁতি করছে।
--কে করছে এসব??সোনা মা?
--নারে বইন।আমার যমরাজ ভাই ছাড়া আর কে।
--অ্যাঁ বলিস কি.?
--অ্যাঁ নয় গো হ্যাঁ।তা তোমার কি অবস্থা?
--আমারো তোর মতোই অবস্থা।চল দুই বোন মিলে কচু গাছের সাথে ফাঁসিতে লটকায় পড়ি।
,
প্রথম দিনের জন্য হয়তো অল্প পড়া দিছে।এসব কম্পিলিট করতেই তো নয়দিন লাগবে আমার।?
বাসায় গিয়ে দেখলাম অভি ভাইয়া এসেছে।
--আরে অভি ভাইয়া যে,কতদিন পরে এলে?পথ ভুলে রং রোডে চলে আসোনি তো আবার??
--আসলো বান্দরনি।
--তা কেমন আছো বলো?
--আমি তো ভালই আছি।তোর কি খবর বল?
--আমার আর ভালো থাকা।
-কেন রে বুড়ি তোর আবার কি হলো?
--জেনেশুনে নিজের মা যদি নিজের পেটের সন্তানকে বাঘের খাচাঁয় রেখে আসে।তাহলে কি ভালো থাকা যায়?যায় না তোহ।
--কি বলিস এসব?
--কিনু?আমি তো বাংলাতেই বললাম।না বুঝলে মুড়ি খাও
--তাই না শয়তান।
--হ।অভি ভাইয়া তুমি ৫ মিনিট বসো আমি ১৫ মিনিটে আইতাছি।
--যাহ ফাজিল একটা।তাড়াতাড়ি আয়।
,
কিরে রসুন তুই কি কখনো বড় হবি না?
--ভাইয়া প্লিজজ ডোন্ট কল মি রসুন।মাই নেম ইজ রশনি।ঋতু রশনি?
--ওলে আমাল ঋতু রশনি লে
.
[+] 1 user Likes Manjarul Haque's post
Like Reply
#6
#__Part__6

.

কিরে রসুন তুই কি কখনো বড় হবি না?
--ভাইয়া প্লিজজ ডোন্ট কল মি রসুন।মাই নেম ইজ রশনি।ঋতু রশনি?
--ওলে আমাল ঋতু রশনি লে
.
অভি ভাইয়ার সাথে অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দিলাম।ঘুমাতে ঘুমাতে প্রায় রাত ২ টা বেজে গেলো।কতক্ষণ ঘুমিয়েছি তা জানিনা।বর্ষার ঐতিহাসিক চিল্লানীতে আমার সাধের ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো।কোথায় স্বপ্নে দেখছিলাম আমার ক্রাশ শেখ সাদির সাথে আমি বসুন্ধরায় বসে বসে রোমাঞ্চ করছি আর হেতি দিলো আমার স্বপ্নের তেরোটা বাজিয়ে।মনডায় চায় কুইট্টালায়।ঐ হাল্ফ টিকেটের বাচ্চু,ট্যাম্পু গ্যারেজ সকাল সকাল দিলি তো আমার সাধের ঘুমটা ভেঙ্গে।কি হয়েছে কি ষাঁড়েরর মতো থুক্কু ইন্ডিয়ান রাম ছাগির মতো ভ্যাঁ ভ্যাঁ করছিস কেনো?বাড়িতে ডাকাত ঢুকে কি তোরে কিস করছে নাকি?
ইয়াককককক!!ডাকাত দের খায়ে দায়ে কোনো কাম নাই তোহ তোর মতো ডাইনিরে কিস করবো।
,
তুমি কি পাগল?পুরাই একটা মেন্টাল।আমার মনে হয় তোমার মানসিক প্রবলেম আছে খাড়াও আম্মারে বলে তোমার জন্য ডাঃ মোহাম্মদ আলীর কাছে সিরিয়াল দিয়ে আসি।কি রকম পাগলের মতো অদ্ভুূদ অদ্ভুদ কথা বলো।মানুষজন শুনলে তো তাই ভাববে।
--তুই পাগল,তোর বাপ পাগল,তোর চৌদ্দ গোষ্ঠী পাগল।
--এই দেখো রাগলে তুমি হিতাহিত জ্ঞান বুদ্ধি হারিয়ে ফেলো।
আমার চৌদ্দ গোষ্ঠী পাগল হলে তুমি কি?তুমিও তাদের মধ্যে একজন।
ফালতু প্যাঁচাল পারতে চাইছি না তোমার সাথে।কখন থেকে ডেকে যাচ্ছি আমি তোমায়। আর তুমি গন্ডারের মতো নাক ডেকে ঘুমিয়েই যাচ্ছ।
---ঐ ট্যাম্পু গ্যারেজ মুখ সামলে কথা বল।আমি না তুই নাক ডাকিস,তোর বাপ থুক্কু তোর বর ডাকে।গরুর মতো ঘ্য ঘ্য করে।
--আচ্ছা ঠিক আছে বাবা।আমি মেনে নিলাম।এবার দয়া করে একটু ঘড়ির দিকে তাকান তো।দেখুন কয়টা বাজে।
--কয়টা আর বাজবেেেে?একিরে আপু সাত রা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিট বাজতে চললো আর তুই কিনা এখন আমায় ডাক দিচ্ছিস?
সাত টা থেকে এনাকন্ডার কাছে পড়া আছে আর আমি কিনা এতো দেরিতে ঘুম থেকে উঠছি।টাইমলি যেতে না পারলে পানিশমেন্ট দিবে তার জন্য।আমি এত ভুল করি কেমনে কে জানে।তাড়াহুড়ো করে ১৫ মিনিটে রেডি হয়ে কোনো রকমে স্যারের সামনে হাজির হলাম।১ ঘন্টা লেট করে এসেছি আমি।
,
সময়মত না আসার জন্য কান ধরে এক পায়ে ভর করে দাড়িয়ে রেখেছে ধলা চিকা টা।আল্লাহ এই ডাইনোসর টার মনে একটু দয়া দাও।
--হোম ওয়ার্ক দেখাও
--কিিি বলছেন স্যার?হোম ওয়ার্ক ছিল কি?
অভির সাথে গল্প করতে করতে শুভ্রের দেয়া হোম ওয়ার্কের কথা মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল একদম।
--ননসেন্স। কোনে কাজ হবে না তোমার দ্বারা।একটা কাজ ও যদি ঠিকমতো করতে পারে।কবে যে বুদ্ধি সুদ্ধি হবে কে জানে।কেয়ার লেস একটা যার দুদিন পরে এক্সাম সে কি না আরামে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
হয়েছে আর কান ধরে দাড়িয়ে থাকতে হবে না।বসো আর এই প্রবলেম গুলো সল্ভ করে দিয়ে যাচ্ছি আমি তুমি করতে থাকো।বুঝতে না পারলে নিচে আন্ডারলাইন করে রাখবে।
আর যতক্ষণ না তোমার ম্যাথ করা সম্পূর্ণ কমপ্লিট হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তুমি এখান থেকে এ পা ও নড়তে পারবে না।আমি বাইরে থেকে দরজা লকড করে রেখে যাচ্ছি।লকড করার কথাটা মিথ্যে বলে গেলাম।জানি ইডিয়েট টা আর দরজার সামনে গিয়ে পরখ করে দেখবে না দরজা টা আদৌ লক আছে নাকি।
,
ডেভিল টা ভার্সিটির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলো।এমন অবিচার আমার সাথে উপরওয়ালা ও সইবে না জানি।পরেছ যখন মোল্লার হাতে একসাথে তো তোমায় খানা খেতেই হবে।
৪র্থ বর্ষের ফাইনাল এক্সামের কারণে আমাদের ক্লাস অফ রাখছে।
,
পরিক্ষার কারণে ক্লাস নাই আজ আমার।গার্ডে ডিউটির জন্য আমার কোনো চাপ নেই।আর আমায় বলেও না কখনো কেউ কেনো জানি না।
টিচার্স রুমে ভার্সিটির ট্যুর নিয়ে আলোচনা বৈঠক চলছে।ব্যবস্থাপণা আর হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ মিলে ১ দিনের ট্যুরে নাটোরের লালপুর গ্রীণ ভ্যালি পার্কে যাবে মেবি এমনটাই তো শোনা গেলো।ক্লাস অফ থাকায় এখনো স্টুডেন্টদের মাঝে এনাউন্স করা হয়নি।শুধু দুই ডিপার্টমেন্ট এর টিচার্স রাই পূর্ব প্ল্যানিং করছে আরকি।
পুরো ভার্সিটির টিচার্সদের মাঝে আমিই একমাত্র শিশু।এ জন্য সবাই আমায় অনেক স্নেহ করে।আর ভার্সিটির বেয়াদব মেয়েগুলো তো আমায় জ্বালিয়ে মারে।
আমার শিক্ষকতার বয়স সবে দুই মাস হতে চললো।শখের বসে এই পেশায় জয়েন করা তবে সেটা সীমিত সময়ের জন্য।
এটা আমি আমার ইনকামের জন্য করিনা।কারণ টা নাহয় অন্য কোনো একদিন জানাবো।
১ম বর্ষের হিসাব বিজ্ঞানের ১ টা সাবজেক্টস ছাড়া অন্য ক্লাস নেই আমার।সিগনেচার টা করে বাসায় চলে এলাম।
,
এর আগে অনেক ট্যুরে গেছি তবে সেটা ফ্যামিলি ট্যুরে।একা একা কখনো যাইনি।ফ্যামিলির সাথে যাওয়ার এক মজা আর ফ্রেন্ডের সাথে যাওয়ার আরেক মজা।কিন্তু আমার মা জননী কে কে বোঝায়?একা কিছুতেই ছাড়বে না।আমিও নাছোড়বান্দা যাবোই।শেষমেশ যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে তবে সে দেয়ার থেকে না দেয়াই ভালো।ঐ কান খেরু,ধলা চিকার সাথে কথা বলে পার্মিশন দিয়েছে।আসার আগে হাজার টা জ্ঞানমূলক বাণী বলে দিয়েছে।সব সময় যেনো তাদের গুনধর শুভ্রের সাথে থাকি।সব সময় যেনো তার কথা মতো চলি।আরে আমি কি ছোট বাচ্চা নাকি।

অনার্সে পড়ি।আজ বিয়ে দিলে কাল দুই পোলার মা হমু আর এখনো আমায় এতো নজরদারী করে।ভাল্লাগে না আমার এসব।বাস জার্নি করতে আমার বেশ ভালোই লাগে।তবে জানালার পাশের সীট না হলে কি আর বাস জার্নির মজা থাকে?সারা রাস্তা প্রকৃতি বিলাশ করতে করতে যাবো কত্ত প্ল্যান করে রেখেছি।পুরো রাস্তা ফ্রেন্ডসদের সাথে এনজয় করতে করতে যাবো। সব প্ল্যানে পানি ঢেলে দিলো ঐ ডাইনোসর টা।বডি গার্ডের মতো চিপকে বসে আছে আমার সাথে।বাসে ওঠার আগেই বমি বন্ধের ঔষুধ খাইয়ে দিছে।
আমার অবশ্য এমন রেকর্ড নাই তারপরেও বলা তো আর যায় না কখন কি হয়।জানালার পাশের সীট টা আমায় দিয়ে উনি আমার পাশের সীটে বসে আছে।
এত্ত কেয়ারে আমার খুশিতে কান্না পাচ্ছে।ট্যুরে যাচ্ছি কোথায় একটু আমোদ প্রমোদ করবো তা না কুচকি মুরগির মতো বসে থাকো।
,
সেন্টার ফ্রুট চিবোচ্ছি আর কানে হেডফোন ঢুকিয়ে নিউজ ফিড স্ক্রল করছিলাম। এছাড়া আর কি করবো?আমার সব ফ্রেন্ডস রা কত্ত মজা করছে আর আমি?ভাবতেই কান্না পাচ্ছে আমার।
পাবনা শহর থেকে লালপুরের দূরত্ব বেশি না।ঘন্টা দুয়েক লাগে।(প্রায়)
গন্তব্যের কাছাকাছি আসতেই আমার সামনের সারি তে কে যেনো গরগর করে বমি করে দিলো।তা দেখো আমার কেমন যেনো গা গুলিয়ে যাচ্ছিল।বেহুশ হয়ে বমি করে দিলাম স্যারের গায়ের উপর।এটা একটা খুব খারাপ জিনিস।গাড়িতে উঠার আগে স্যার অনেকবার নিষেধ করছিল ভাজা পোড়া খেতে।কে শুনে কার কথা।চিপস আর চানাচুর সামনে থাকলে আমার হুশ থাকে না।
গাড়ি থামিয়ে আগে আমায় কুলি করিয়ে দিলো।আমার মুখ হাত পরিষ্কার করে দিলো নিজ হাতে।অন্য সময় হলে রাগ করতো কিন্তু এখন একবারো টু শব্দ টাও করলো না।
তারপরে নিজেও ফ্রেশ হয়ে পরনের পোশাক টা বদলে নিলো।
,
কিছুক্ষণ পরেই আমরা আমাদের গ্রীণ ভ্যালিতে পৌঁছালাম। নাটোর রাজবাড়ী, উত্তরা গণভবন,সিংড়া চলনবিল,লালপুরের লাল সাগর,নাটোর শিশু পার্ক,সাহারা প্লাজা শিশু পার্ক,
বনলতা সেন, রানী ভবানী,মিনি কক্সবাজার পাটুল আর কাচাগোল্লার জন্য আগে থেকেই দেশবাসীর কাছে বিখ্যাত হয়ে আছে নাটোর। এবার নাটোরকে আরো এক ধাপ রাঙিয়ে তুলতে দেশের বিপুল সংখ্যক বিনোদনপ্রেমী ও দর্শনার্থীদের মনের খোরাক মেটাতে নাটোরের লালপুরে তৈরি হয়েছে গ্রীনভ্যালী পার্ক। উদ্বোধনের আগেই যা দর্শনার্থী ও বিনোদন প্রেমীদের নজরে এসেছে।
নান্দনিক সৃষ্টিশীলতার বহিঃপ্রকাশ এই পার্ক...মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।দেখলেই পরাণ টা জুরে যায়।
আশা করি এই পার্কের সৌন্দর্য আপনাদের ও মুগ্ধ করবে আমাদের মতো।
অনেক মজা করেছি তবে সব সময় ছায়ার মতো শুভ্র স্যার আমায় আগলে রেখেছেন।হয়তো মাকে দেয়া কথা রাখতেই।
,
বাসায় রওনা হওয়ার আগেই স্যারের ফোনে একটা কল আসলো।জানিনা কল টা কার ছিল।তারপর থেকেই কেনো জানি উনার মুখ টা আমাবস্যার মতো কালো হয়ে গেলো।
টিচার্সদের সাথে কথা বলে আমাকে নিয়ে রওনা হলেন পাবনার উদ্দেশ্যে।আমি নিরব দর্শকের মতো ছাড়ের পিছু পিছু দৌড়াচ্ছি।কারণ আমার হাতটা শক্ত করে স্যারের হাতের মুঠোয় বন্দি।যেনো ছেড়ে দিলেই আমি ছুটে পালাবো।
.
.
.
.
.
.

.
.
.
.
.
.

.
.
.
.
.
.
.
.
To be Continue.......
[+] 1 user Likes Manjarul Haque's post
Like Reply
#7
#___Part___7
.
.
হাসপাতালে গিয়ে দেখি স্যারের বাসার সবাই আছে সাথে বর্ষা ও।সবাইকে দেখছি আম্মুকে তো দেখছি না।
মাথার ভেতর অনেকগুলো জটিল প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
ডাঃ বেরিয়ে এলেন।ডাঃ মামনি কেমন আছে?শুভ্র স্যার ডাঃ আংকেল কে আসতে দেখে দৌড়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন।
ভয়ের কিছু নেই।অতিরিক্ত টেনশনের কারণে এমন হয়েছে।
কোনো কিছু নিয়ে অতিরিক্ত টেনশন করছে হয়তো।আমি কিছু ঔষুধ প্রেসক্রিপ করে দিচ্ছি সময় মতো খাওয়াবেন।
.
ডাক্তার আর স্যারের বলা কথাগুলো আমার মাথার ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছে।মামনি মানে?স্যার তো আম্মুকেই আম্মু বলে।সবাই আছে,তাহলে আম্মু কোথায়?বর্ষা কে দেখে মনে হচ্ছে কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে গেছে।
দৌড় দিয়ে কেবিনে ঢুকে গেলাম যেখান থেকে ডাক্তার বের হলেন।আর কেউ নয় আমার আম্মুই যে বেডে শুয়ে আছে।আম্মা ছাড়া যে এই পৃথিবীতে আমার আপন বলতে কেউ নেই।বাপি ও উপরে চলে গেলেন আমাদের রেখে,সেই থেকে আম্মুই আমাদের কাছে সব।বাবা মা দুটোই।
কখনো কোনো কিছুর অভাব বুঝতে দেয়নি আমাদের।
সেই আম্মুর কিছু হলে আমি কি নিয়ে বাচঁব।
,
কান্না করতে করতে আমার হে্চকি উঠে যাচ্ছে।আমি কান্না করতে পারিনা।দম বন্ধ হয়ে আসে।শুনেছি কান্না করতে পারলে নাকি ভেতরের কষ্ট টা কিছুটা হলে নাকি কমে।
কিন্তু আমি তো পারি না তা।আমার কান্নার শব্দে আম্মুর ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
--আরে পাগলি মেয়ে কান্না করছিস কেনো?আমি কি মরে গেছি নাকি।
--আম্মুউউউহহহ,,মায়ের মুখে মরার কথা শুনে আমার কান্নার শব্দ টা আরো বেড়ে গেলো 5G স্পিডে।অক্সিজেন ছাড়া আমাদের বেচে থাকা কখনোই সম্ভব নয় আর আমার অক্সিজেন হলো আমার মা।
,
আম্মু সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় চলে আসিতেছিলাম কিন্তু কামাল আঙ্কেল জোর করে উনাদের বাসায় নিয়ে এলেন।আর আঙ্কেলদের পাশের ফ্ল্যাটেই আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন।এত করে বললাম আমরা আমাদের বাসাতেই থাকতে পারবো তারপরেও উনি শুনলেন না।জোর করে নিয়ে এলেন।মামনি,শোভা টা হয়েছে আঙ্কেলের মতো।
,
--ভাই সাহেব!!এতকিছু করার কোনো দরকার ছিল না।আমরা আমাদের বাসাতেই থাকতে পারতাম আপনি শুধু শুধু কষ্ট করতে গেলেন আমাদের জন্য।
--কিসের কষ্ট?কোনো কষ্ট হয়নি।আমার অনেক আগেই আপনাদেরকে এখানে আনা উচিত ছিল।যাই হোক আজ থেকে এটাও আপনার বাসা।
---ঠিক তা নয়।ওর আব্বু মারা যাবার পর থেকে আপনি কম করেননি আমাদের জন্য।এ যুগে এমন বন্ধু পায় কজন বলুন?ওর আপন ভাইয়েরাও এমন করেনি কখনো।আমাদের সব সময় ছায়ার মতো করে আগলে রেখেছেন।
--বাদ দিন তো ভাবি।আপনার এখন বিশ্রামের প্রয়োজন।ডাক্তার কি বলছে আপনি শোনেনি? একদম টেনশন করা যাবে না।যে কোনো সময় আপনার হার্ট ব্লক হতে পারে।
নিজের জন্য নাহলে মেয়ে দুটোর কথা ভেবে হলেও নিজের শরীরের যত্ন নিন।আপনি ছাড়া যে ওদের আর কেউ নেই এই নিষ্ঠুর দুনিয়াতে।আপনি বরং রেস্ট করুন আমি শুভ্রর মাকে বলছি খাবার পাঠাতে।
,
অনেকদিন হলো এখন আমরা স্যারের থুক্কু আঙ্কেলের বাসাতেই থাকি।আর আমাদের আগের বাসাটা ভাড়া দেওয়া আছে।
এখানকার সবাই কত্তভালো।সবাই কত্ত আদর করে আমায়।আর ঐ বজ্জাত গুমরামুখো টা কথায় কথায় আমায় বকা দেয়।একটু ও ভালোবাসে না আমায়।রাতদিন শুধু পড়া পড়া করে আমার মাথা খাবে।বই পোকা থুক্কু পড়ার পোকা একটা।আমার এসব বোরিং পড়া মরা ভাল্লাগেনা।
মনচায় তো শুধু রাতদিন ইতিপু,রিতুপু,উষাপু,সাথীপুর গল্পগুলা পড়ি।আমি আবার সেই লেবেলের গল্পখোর।আমায় যদি কেউ বলে তোকে আজ খেতে দেওয়া হবে না।সারাদিন গল্প পড়বি তো আমার মতো খুশি মনে হয়না আর কেউ হবে না।কিন্তু আমার একটা ভাঙ্গা কপাল আছে না?কথায় আছে না কানার কপালে ধন(নেগেটিভলি নিবেন না কেউ আশা করি) মিলে না।আমার পড়ার টেবিল থেকে সব উপন্যাসের বই সরিয়ে ফেলছে সেই সাথে আমার সাধের মোবাইল ডাও কাইড়ে নিছে বজ্জাত চুড়েল স্যার টা।
কিছু বলতেও পারিনা আবার সইতেও পারিনা।আমার মা পারে তো বজ্জাত টারে মাথায় তুলে নাচে।গা জ্বলে যায় এমন আদিখ্যেতা দেখে।
কি এমন একটা বালের বোরিং লাইফ।তেজপাতা করে দিলো একেবারে ডাইনোসর টা।
"মাঝেমাঝে মনে হয় পালিয়ে যাই কোথাও কিন্তু গাড়ি ভাড়ার অভাবে যেতে পারি না "
এত রসকষহীন কোনো মানুষ হয় নাকি বুঝি না বাপু।
,
রাত্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে বাংলাদেশের খেলা দেখছিলাম।টানটান উত্তেজনা পর্বে যখন যখন কেউ আউট হয়ে যায় তখন
--হোয়াট দ্যাাাাাাাা?(শুভ্র)
--দিজ ইজ বোল্ড থুক্কু আউট স্যার।
--ইডিয়ট
--সেতা খায় না মাথায় দেয় স্যার থুক্কু আঙ্কেলের ছেলে?
--হোয়াট দ্যা ল্যাংগুয়েজ
--হুররর মিয়া খালি ইংরেজি কন ফরফর করে মুখে বাতাস ঢুকতে দেন।ওমন দুই চারটা ইংরেজি আমরাও কইতে জানি হুহহ।
,
প্রতিদিন ভার্সিটিতে যাওয়ার সময় নিয়ে যাবে এবং নিয়ে আসবে।কত্তদিন হলো বন্ধুদের সাথে ক্যাম্পাসে আড্ডা দেয়া হয় না।এত অত্যাচার করলে আমি আর মনে হয় বেশিদিন বাচঁবো না।আগামীকাল নুপুরের বিয়ে।তিন বছর রিলেশনের পরে নীল ভাইয়ার সাথে ফাইনালি বিয়ের পিরিতে বসছে।নুপু আসলেই অনেক লাকী।নীল ভাইয়া নুপু কে অনেক ভালোবাসে।

একদিন আগে যাওয়ার জন্য কত্ত করে বলে দিল।একমাত্র কলিজার টুকরা বেস্টির বিয়ে বলে কথা।না জানি সাতদিন আগে থেকেই নাচ শুরু করে দিব।মেক আপ শেকাপ করবো।
হলুদের অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে সবাই মিলে,মেয়েরা লাল পারের হলুদ শাড়ি।কাচা ফুলের গহনা পড়বো আর ছেলেরা পড়বে ম্যাচিং হলুদ শাড়ি।
বিয়েতে চার বান্ধপ্পি মিলে একই সাজ দিবো।যাতে করে আমাদের জিজু মহাশয় তাক লাগিয়ে যায়।বিয়ে বাড়ি থেকে বরের ভাইয়েরা মানে আমাগো বিয়ান রা আসবে তাদের সাথে ফ্লার্টিং করবো।কত্ত প্ল্যানিং করেছি সবাই মিলে আর সব শেষে কি হলো?এ জন্যই কোনো কিছু নিয়ে এত এক্সাইটেড হতে নেই।আমি অনেক খেয়াল করে দেখেছি যে আমি যে বিষয় টা নিয়ে বেশি উত্তেজিত থাকি দিন শেষে ফল হিসেবে শূন্য পাই।
এই তো সেদিন ফ্রেন্ডস রা মিলে রাত জেগে জেগে প্ল্যানিং করলাম আমরা সিলেট ট্যুরে যাব সাতদিনের।চাঁদাও দিলাম,শপিং ও করলাম কিন্তু পরে আর যাওয়া হলো না আমাদের কোনো কারণে।
,
আম্মার কাছে গিয়ে বলায়য় আম্মা স্ট্রেট বলে দিলো গেলে শুভ্র কে সাথে করে নিয়ে যেতে হবে।
--আম্মুউউউউহহহহহহহ
--কি হয়েছে এত চিল্লাচিল্লি করছিস কেন?
--আমি একাই যাব।
--নাহ বললাম না?
--আমি কি সেই দু বছরের শিশু নাকি যে সব সময় বডি গার্ড নিয়ে ঘুরতে হবে আমার।একা চলতে পারি না?একটা অনার্স পড়ুয়া মেয়ে কে শাসন করো যেভাবে মনে আমি ছোট্ট সান্জু।
--আমি ওত শত বুঝিনা।শুভ্র কে নিয়ে গেলে যাবি নয়তো কানের গরে প্যানপ্যান করবি না।
মুড অফ করে বসে রইলাম ঘরে।কান্না করতে করতে চোখ ফুলে গেছে।হারামি গুলা বারবার ফোন দিচ্ছে।সবাই আগে থেকে চলে গেছে আমি বাদে।
.
.
Like Reply
#8
#___Part___8

.
.
মুড অফ করে বসে রইলাম ঘরে।কান্না করতে করতে চোখ ফুলে গেছে।হারামি গুলা বারবার ফোন দিচ্ছে।সবাই আগে থেকে চলে গেছে আমি বাদে।
,
--সেই কখন থেকে নিচে বসে আছি মহারাজা বিজয়ের এখনো আসার সময় হয়নি।এত্ত কষ্ট করে সাজুগুজু করলাম আটা ময়দা মেখে সব তো এখন গলে গলে পড়বে।এই গরমে গাড়ির মধ্যে সং সেজে কি বসে থাকা যায়।
ধুররর ভাল্লাগেনা এসব প্যারা।সবাই চলে গেছে ঐদিকে নুপু বারবার কল দিয়েই যাচ্ছে।
আম্মার উপরে এখন যা মেজাজ হচ্ছে না?কি হতো আমি একা গেলে।সাথে আবার লেট লতিফ বডি গার্ড দিয়ে দিচ্ছে।
সেদিন পিকনিকে গিয়ে যেভাবে আমায় অত্যাচার করছে সে কথা ভেবে আমার চিৎকার করে কাদঁতে ইচ্ছা করছে কিন্তু সাজগোজ নষ্ট হবার ভয়ে কাদঁতে পারছিনা। 
আল্লাহ গো এই ব্যাটা কি মেয়েদের মতো ছুনু পাউডার ঘষতে বসছে নাকি কে জানে।এত্ত লেট করছে কেনো?
বসে বসে বোরিং হওয়ার থেকে হেডফোনে গান শুনি।
.
♪♪তোমার ইচ্ছেগুলোওওও ইচ্ছেগুলো
তোমার ইচ্ছেগুলো ইচ্ছে হলেই আমায় দিতে
পারো।♪♪
আমার ভাল লাগা ভালোবাসা
তোমায় দেবো আরো।
তোমার ইচ্ছেগুলোওও ইচ্ছেগুলো
তোমার ইচ্ছেগুলো ইচ্ছে হলেই আমায় দিতে
পারো।
,
তুমি হাতটা শুধু ধরো আমি
হবো না আর কারি।
তুমি হাত টা শুধু ধরো আমি
হবো না আর কারো।
তোমার স্বপ্নগুলো আমার চোখে
হচ্ছে জড়োসড়ো।
তোমার ইচ্ছেগুলোওও........................
.................পারো।
আমার ভাল লাগা.................
....................জড়োসড়ো।
,
তোমার আবেগমাখা খামখেয়ালী হাটঁছে
আমার পিছু,আমার আসা যাওয়ার পথের বাঁকে
পাইনি আমি কিছু।
তোমার আবেগমাখা..................
........................♪♪♪….......
...............কিছু।
তুমি হাতটা শুধু ধরো আমি
 হবো না কারো।
তুমি.......♪♪......................
........................................
........... কারো।
তোমার স্বপ্নগুলো আমার চোখে
 হচ্ছে জড়োসড়ো।
তোমার ইচ্ছেগুলোওওও ইচ্ছেগুলো
তোমার ইচ্ছেগুলো ইচ্ছে হলেই আমায় দিতে
পারো।
আমার ভাল লাগা ভালোবাসা
তোমায় দেবো আরো।
,
আমার হৃদয় যেনো বান ভাসি হয় তোমার
স্রোতের টানে।
আমি তোমার কাছে যাবোই যাবো
একলা থাকার দিনে।
আমার হ্দয় যেনো বান ভাসি হয় তোমার
স্রোতের টানে।
আমি তোমার কাছে যাবোই যাবো
একলা থাকার দিনে।
,
তুমি হাতটা শুধু ধরো আমি
হবো না আর কারো।
তুমি হাতটা শুধু ধরো আমি
হবো না আর কারো।
তোমার স্বপ্নগুলো আমার চোখে
হচ্ছে জড়োসড়ো।
তোমার স্বপ্নগুলো আমার চোখে
হচ্ছে জড়োসড়ো।
তোমার ইচ্ছেগুলোওওও ইচ্ছেগুলো,
তোমার ইচ্ছেগুলো ইচ্ছে হলেই আমায় দিতে
পারো।
আমার ভাল লাগা ভালোবাসা
তোমায় দেবো আরো।
(গান টা সবাই নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন।)
,
গান শুনিতেছিলাম গভীর মনোযোগে হঠাৎ তীব্রতর গাড়ির হর্ণের শব্দে আমার গান শোনায় ব্যাঘাত ঘটে।
এত জোরালো শব্দ যে আমি ফুল ভলিউমে গান শোনার পরেও কানে যাচ্ছিল।
---আমি কোনো ড্রাইভার নই।সো সামনে এসে বসুন।(শুভ্র)
--এই কথা বলার জন্য এত কাহিনী করার কি আছে।ডাকলেই তো পারতো হুহহহহহ
--ইয়াহ।ইউ আর অল রাইট।বাট আপনি যেভাবে গান শুনছিলেন যে আপনার পাশে কেউ মারা গেলেও টের পাবেন নাহ।আর ডেকে কোনো কাজ হয়নি বলেই তো ব্যতিক্রম পথ বেছে নিয়েছি।
যাই হোক অনেক লেট হয়ে গেছে হারিয়াম।
---এইরেেে এই লোক টা বারবার আমার মনে মনে বলা কথাগুলো শুনে ফেলে কিভাবে জানি।
---যেভাবে বলো তাতে তো মনে হয় মাইকে এনাউন্স করার সময়েও এতো জোরে শব্দ করে না।কানে তালা লেগে যায় তোমার কথা শুনে।তাই তো কানে তুলা দিয়ে রেখেছি।
---কিহহহহহ এই লোক টার এত্তবড় সাহস আমায় ইনসাল্ট করলো??এক বার বাগে পাই আগে বিচ্চু তারপরে বুঝাবো রশনি কি জিনিস।
---ম্যাম!!আপনার মনে মনে গালি দেয়া হলে সিটবেল্ট টা কাইন্ডলি বেধে নিবেন।
,
নুপুর দের বাসা তো এইদিকে না তাহলে এই লোকটা এইদিকে কোথায় যাচ্ছে।পাগল টাগল হলো না তো আবার।কি জানি আগে আস্ক করে দেখি তো।
এই যেেেে আপনি এইদিকে কোথায় যাচ্ছেন?আপনি হয়তো ভুলে গেছেন নুপুরদের বাসা রাধানগর মধ্যপাড়ায় মিন এডওয়ার্ড কলেজের পাশে।আর আপনি শহরে কেনো যাচ্ছেন কিছুইতো বুঝতেছি না।
---জ্বী নাহ!!আমার মেমরি খুব শার্প।অন্যের মতো গোবর পোরা মাথা নয়।১মত আমাদের নুপুরের জন্য কিছু গিফট কিনতে হবে।আর ২য়ত ওর বিয়েটা কমিউনিটি সেন্টারে হচ্ছে।
---এই রেেেে আমার তো গিফটের কথা মাথা তেই আসেনি।জ্বিব্বাহ্ তে কামড় দিয়ে।এত্ত মনভুলা কেনো
আমি।
মাম্মিহহহহহহহ?
এই লোকটা আমায় আবারো ইনসাল্ট করলো।
,
আমরা এখন রবিউলের ২য় তলায় আছি।নুপুরের জন্য গিফট চয়েজ করছে শুভ্র না কুভ্র।
মুখের ভাব দেখে মনে হচ্ছে চয়েজ হচ্ছে না কোনো কিছু।
আমি আনমনে সব হাতরে বেড়াচ্ছি।
হঠাৎ কোথা থেকে একটা বেটা ছেলে এসে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরলো।
--আরে শুভ্র বেইবি!! কেমন আছিস?
--আম ফাইন।তুই?
--সেইম টু।
,

জিন্স,টি শার্ট পরহিতা সেই বেটা ছেলে।নাম জানিনা।মেয়ে হলেও দেখতে পুরাই ছেলে।প্রথম দেখায় যে কেউ বলবে যে এটা ছেলে।হেয়ার স্টাইল ও ছেলেদের মতো করে ছোট ছোট করে ছাটা।তবে যতোই ছেলে সাজার চেষ্টা করুক না কেনো 

মেয়েদের চিন্হগুলো তো আর মিথ্যে নয়।
এটা কেমন পোশাক।পোশাক আশাকে কোনো প্রকার শালীনতা নাই।কেমন ফ্যামিলির মেয়ে কে জানে।এ রকম পোশাকে ঘুরে বেড়াচ্ছে ফ্যামিলি থেকে কিছু বলে না নাকি।
আর বলেই বা লাভ কি কজন বা শোনে।
কি বেহায়া মেয়েরে বাবা শপিং মলের মধ্যে এসে অন্য পুরুষের সাথে ঢলাঢলি করছে একটু ও লজ্জাশরম নাই নাকি।
আর লজ্জা থাকলে কি আর এমন পোশাক পরে বের হতো না কি।
রাগে আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে যে ঐ লুচ্চা ব্যাটা ঐ ব্যাটা ছেলেরে জড়িয়ে ধরেছে।
হিতাহিত জ্ঞান ভুলে গেছি রাগে।আমার কি হলো জানিনা
হাতে একটা শো-পিচ ছিল আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে টুকরোটুকরো করে ফেললাম।
মনে হচ্ছে এইভাবে আছাড় দিয়ে ঐ ডাইনি হাল্ফ লেডিস টারে টুকরোটুকরো করতে পারলে গায়ের জ্বালা মিটতো কিছুটা।
,
কিছু ভাঙ্গার শব্দে শুভ্র এনা কে ছেড়ে দেয়।তাকিয়ে দেখে ঋতু ওর দিকে আগুন চোখে তাকিয়ে আছে।
---ঐ ডাইনি টাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে শুভ্রর হাত ধরে টানতে টানতে নিচে নেমে এলাম।
ঋতুর এহেন কান্ডে শুভ্র হা হয়ে আছে।অবাকের উচ্চ সীমায় অবাক হয়েছে।এই প্রথম ঋতু কে এত রাগতে দেখছে।
ওর জানামতে ঋতু খুব শান্তশিষ্ট একটা মেয়ে তবে হ্যাঁ ও একটু দুষ্টু প্রকৃতির।তবে এখন ওর সামনে যে ঋতু দাড়িয়ে আছে মনে হয় সে অন্য কেউ।
একটু আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা টা হজম করতে শুভ্রের একটু সময় লাগছে।আসলে ও এখনো বুঝতে পারেনি ঋতুর এত রাগার কারণ।
সব কিছুই তো ঠিক ছিল।দুজন মিলে গিফট চুজ করতেছিল হঠাৎ করে কি হলো।
,
শুভ্রর মতো ঋতুও অবাক হয়েছে।এতক্ষণ যেনো একটা ঘোরের মাঝে ছিল।
---আর ইউ ওকে?ঋতু
--হু,আসলে ঐ ব্যাটা ছেলেটা আপনাকে জড়িয়ে ধরছিল দেখে মাথা গরম হয়ে গেছিল।
---ব্যাটা ছেলে মানে????ও এনা।
--এনা হোক আর ও প্যানা হোক তাতে আমার কি?
--আপনি ওকে জড়িয়ে ধরবেন কেনো?
--যাস্ট শাট আপ ঋতু।ও আমার ফ্রেন্ডস।কানাডায় আমরা এক সাথে স্ট্যাডি করতাম।অনেকদিন পরে দেখা তাই হাগ করছে।এটা ওদের কালচার।
এ্যানি ওয়ে তাতে তোমার কি?আমি কাকে জড়িয়ে ধরবো না কি করবো তা কি তোমার থেকে শুনে করতে হবে নাকি?(শুভ্র)
---ওর একটু আগে করা কান্ডে লজ্জায় মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।ঠিকই তো বলছে শুভ্র।ওর যা খুশি তাই করতে পারে তাতে ওর কি?
সসসররররিিিি স্যার,,র,,আম রিয়েলী সরিি।প্লিজ ফর গিভ মি।
--ইটস অকে।যাও গাড়িতে গিয়ে বসো আমি আসছি।
,
সারা রাস্তা কেউ কারো সাথে কথা বলে নি।কিছুক্ষণের মাঝেই কমিউনিটি সেন্টারে গাড়ি এসে থামলো।আমায় গাড়ি থেকে নামিয়ে উনি গাড়ি পার্ক করতে গেলেন।
আমার আসা দেখে দূর থেকে সুমি,উর্মি,মধু,আশিক,দাদু,অপু,রবিন সবাই ছুটে এলো।হয়তো এতক্ষণ আমার অপেক্ষাই করছিল ওরা।আমিই লেট করেছি।যে আমি সাতদিন আগে থেকেই প্ল্যানিং করছি আর সেই আমিই লেট।আমার মতো দূর্ভাগা কি আর কেউ আছে কি না জানি না।
--আগে নুপু'র সাথে দেখা করে আয়।ও খুব রেগে আছে তোর ওপর।
--ওকে তোরা থাক আমি আসতেছি।
আঙ্কেল আন্টির সাথে দেখা করে নুপু'র কাছে দেখা করার জন্য ওর রুমের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে আছি।জানি না আমার কপালে আজ কি আছে।রাক্ষস রাণী কটকটি না জানি আমার প্রাণ দন্ড না নিয়ে নেয়।
দরজার দিকে দুটি চোখ অগ্নিমূর্তি ধারণ করে তাকিয়ে আছে।মনে হয় ঐ চোখ দুটি দিয়ে আমায় ভস্ম করে দিবে।
এক পা দু পা করে আগাচ্ছি আর দু'আা পড়ছি।
,
--বের হ আমার রুম থেকে।বের হ
নুপু জুতা হাতে করে তেড়ে আসছে আমার দিকে।
--সরি জান আমার ভুল হয়ে গেছে।প্লিজজ এবারের মতো আমায় ক্ষমা করে দে।
--কিসের জান?কার জান?আমি কারো জান নই।
এক্ষুণি বের হ তুই আমার রুম থেকে।
--সত্যি সত্যি বের হবো তো?
--হ বের হ তুই
--সত্যি যাবো তো?
--হ তুই বের হ।
--অকে আমি চলে গেলাম।?কেউ আমায় ভালোবাসে না।সবাই খালি পর পর করে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়।
বিরক্ত করলে ক্ষমা করবেন আপা দয়া করে।একটু ন্যাকা সুরে।এছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
--ঐ কুত্তা কই যাস?আর এক পা এগোলে ঠ্যাং ভেঙ্গে লুলা করে দেবো তোকে।
--এমা নাহহ,তাইলে আমি হাটবো কেমনে?আমি লুলা হলে কেউ আমায় বিয়ে করবে না।?আমার বিয়ে না হলে আমি বাচ্চাকাচ্চা পামু কই?আর তোরে আমি বেয়াইন বানামু কেমতে,,এ্যাাাাাাাাাাাাাাাা
---ঐ ঢঙ্গি থামবি তুই?এমনিতেই লেট করে আসছে আবার এসেই ঢং শুরু করছে।

.
চলবে
Like Reply
#9
#___Part___9
.
.
--ঐ কুত্তা কই যাস?আর এক পা এগোলে ঠ্যাং ভেঙ্গে লুলা করে দেবো তোকে।
--এমা নাহহ,তাইলে আমি হাটবো কেমনে?আমি লুলা হলে কেউ আমায় বিয়ে করবে না।?আমার বিয়ে না হলে আমি বাচ্চাকাচ্চা পামু কই?আর তোরে আমি বেয়াইন বানামু কেমতে,,এ্যাাাাাাাাাাাাাাাা
---ঐ ঢঙ্গি থামবি তুই?এমনিতেই লেট করে আসছে আবার  দএসেই ঢং শুরু করছে।
ওদের এই খুনশুটি ভালোবাসা দেখে সবাই হেসে ফেলেছে।
দুজনে যেনো দুজনের আত্না।
,
বাইরে শরগোল শোনা যাচ্ছে খুব।মনে হচ্ছে বর এসেছে।সব ফ্রেন্ডস রা মিলে গেট ধরলাম।
জিজুর থেকে মোটা অংকের টাকা খোসানোর ধান্দা আরকি।
তার আগে জিজুর জন্য স্পেশালি নাস্তার ব্যবস্থা করেছি।শালিকা হিসেবে জিজু কে সারাজীবন জ্বালানোর লাইসেন্স প্রাপ্ত হতে যাচ্ছি।গেটে জিজু কে আপ্যায়ন করলাম খুব সুন্দর ভাবেই।
--আরে তোরা সবাই এভাবে দাড়িয়ে আছিস কেনো?দেখছিস না আমার জিজুর গুলুমুলু ফেস টা কেমন শুকিয়ে আছে।
একটু ঠান্ডা দে জিজু কে।হুররর একটাও কাজের না সব শালা অকাজের।
অনেক মজা করলাম গেট ধরার সময়।বাচ্চা বাচ্চা পোলাপাইন আসে এই #ঋতুর সাথে টক্কর দিতে।ওরা জানেনা হয়তো আমার সাথে টক্কর দেওয়ার আগে আমার থেকে ওদের ট্রেনিং নিতে হবে।তার আগে সম্ভব নাহ।
শালা যাদের নাক চিপলে দুধ বের হয় তারা আসে আমার সাথে পার্ট নিতে।হুহহহহহহ?এমন নাকানিচুবানি দিমু যে সারাজীবনেও ভুলতে পারবো না মোরে।
,
ব্যাটা কুভ্র আজ হাল্কা আকাশী কালারের জিন্স,ওয়াইট শার্ট,আকাশী কালারের ব্লেজার।
মেচিং সু।চোখে সান গ্লাস,চুলে জেল দিয়ে এক পাশে সাট করা।জাতির ক্রাশ আজ জাতির কাছে ধরা দিয়েছে।বিয়ে বাড়ির সব মেয়েরা তো চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে।নির্লজ্জ,বেহায়া মেয়েরা কেমন আগ বাড়িয়ে আলাপ করতে যাচ্ছে।সব কয়টা শাঁকচুন্নিকে মনে হচ্ছে মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেই।রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে আমার।কি লুইচ্চা রে বাবা দাড়িয়ে দাড়িয়ে মেয়েদের সাথে মজা নিচ্ছে।চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে বিষয় টা তে ও খুব ইনজয় ফিল করছে।
,
অনেকক্ষণ ধরে লক্ষ করছি যে একটা ছেলে আমায় ফলো করছে।যেখানেই যাচ্ছি দূর থেকে লক্ষ করছে।
মেয়েদের নাকি পঞ্চ-ইন্দ্রীয় আছে।দূর থেকে যদি কেউ তাকিয়ে থাকে তার দিকে তাহলে নাকি বুঝতে পারে সে।সত্যি সেটার বাস্তব প্রমাণ পেলাম নিজ থেকে।
----সেই কখন থেকে দেখছি আপনি আমায় ফলো করছেন।কি ব্যাপার বলুন তোহ।(আমি)
---আমি যে আপনায় ফলো করছি সেটা আপনি বুঝলেন কি করে?আপনিও নিশ্চয়ই আমায় দূর থেকে আড়চোখে দেখছিলেন।
--মোটেও নাহ।আমি আপনার দিকে তাকিয়ে থাকবো কেনো?
--মোটেও হ্যাঁ।অবশ্য কিউট,হ্যান্ডসান,ডেসিং ছেলেদের দেখলে মেয়েরা এমনিতেই ফিদা হয়ে যায় তার ওপর যদি হয় আমার মতো।?তাহলে তো কোনো কথাই নেই।(অচেনা ছেলেটি)
--যেই না চেহারা কুত্তায় দেয় পাহারা।আয়নায় কখনো নিজের এই বান্দর মার্কা চেহারা দেখেছেন?
হেয়ার স্ট্যাইল কি?ইয়াকক আমার তো দেখেই বমি পাচ্ছে।
?
কলাগাছের হনুমান,লাল কুমির একটা নাক টা দেখেছেন?মনে হচ্ছে যেনো হাতির নাক।একটা কাজ করতে পারেন প্রতিদিন এভাবে,(নাকে হাত দিয়ে নাকের ডগায় হাতের তালু উচা করে)করলে ও করতে পারেন।
--জ্বি আচ্ছা!! অবশ্যই মনে থাকবে।
--চশমা তো কানারাও পড়ে আপনি কি কানা?
--কানা না।আবার ভাব করেও নেই যে এমন তা না।
--হু,বুঝলাম।
---হ্যালো! আমি ইহান।
--হোয়াট?হ্যালো?আমি কি আপনার পূর্ব পরিচিত বা আপন কেউ?হ্যালো বলে সম্বধন করে তাদেরই যারা আপনার কাছের কেউ।
--জানতাম না তোহ।
--এখন তো জানলেন।
--হু,সরি।(কানে হাত দিয়ে)
--ইট'স অকে।ইট'স অকে।কোনো ব্যাপার না।(একটু হেসে)
--নাইস স্মাইল।
--কিছু বললেন?
--কই না তোহ।
--না বললেই ভালো।
দূর থেকে বোঝা যাচ্ছে এক জোড়া চোখ আমার দিকে তাকিয়ে রাগে ফুসছে।
খেয়াল করলাম  ব্যাটা শুভ্র আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে।কিন্তু কেনো বুঝতেছি না।
রাগলে আমার কি হুহহহহ।আমি কারো রাগের ধার ধারি নাকি।
আমার তো বেশ ভালই লাগছে ইহান নামের এই জোকার ছেলেটা কে।কে না চায়! সব মেয়েরাই চাইবে সুন্দর,হ্যান্ডসাম ছেলেদের এটেনশন।আমিই বা তার ব্যতিক্রম হবো কেনো।
যেখানে আমার সব বান্ধবী রা ৩-৪ বছর করে রিলেশন করে বিয়ের পিড়িতে বসছে আর আমি সেখানে এখনো সিঙ্গেল।
এই দুঃখ আমি কই রাখুম?আল্লাহ তুমি মাটি ফাঁক করো আমি ঢুকে যাই।
আজ যদি বফ থাকতো তাহলে কি আর একা একা ঘুরতে হতো??কপাল সবই আমার এই ভাঙ্গা কপালের দোষ।
লাইফে কম প্রোপজাল পাইনি।কিন্তু একটাও মনের মতো হয়নি বলে আজোও প্রেম করতে পারলাম না একটা।
তবে এবার ভেবে নিয়েছি যেই প্রথম প্রপোজ করবে তাকেই এক্সেপট করবো।দেন জমিয়ে প্রেম করবো।সবাইকে দেখিয়ে বেড়াবো,হুহহহহহ।
,
আম্মা কল দিচ্ছে বারবার।আম্মা এরকমই আমি বাইরে গেলেি বারবার কল দিয়ে খোজ খবর নিতে থাকবে।আসলে বাবা নেই আর বড় মেয়েতো।তাই একটু সবার আদরের নয়ন মনি।কল কেটে দিচ্ছি তারপরেও দিয়েই যাচ্ছে। মেজাজ টা গরম হয়ে যাচ্ছে।এতবার কেউ কল দেয় নাকি ফাউ।কি দরকার ফালতু বকবক করার?বুঝিনা কিছু এসব আদিখ্যেতা।একটু পর পর কল দিয়ে বলবে বাবু কি করিস?
খেয়েছিস কিছু?বাইরের খাবার খাস না তুই অসুস্থ হয়ে পড়বি।বেশিক্ষণ বাইরে ঘুরাঘুরি করিস না বাবু।শহরের অবস্থা  ভালো না তুই তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসিস।
এত্ত সব প্যারা ভাল্লাগে আপনারাই বলুন?এসব নিয়ে মাঝেমাঝে ফ্রেন্ডস দের হাসির বলির পাঠা মনে হয় আমার।সেকেন্ডে সেকেন্ডে কল দেবে আর খোজ নেবে।
এর জন্য কম বকাবকি করি না তারপরেও আবার কল করবে আগের মতো।
একটু বেশিই ভালোবাসে তোহ।
কোথা থেকে যেনো শুভ্র এগিয়ে আসলো।
এসে-
তোমার ফোন কই?
--কেনো?এই তো আমার হাতেই তোহ
--কই দেখি তোহ
--এক্সকিউজ মি!!আমার ফোন আমি আপনাকে দিতে যাব কেনো বলুন তো?
--এই মেয়ে এত কথা বলো কেন?দিতে বলছি দাও(ধমক দিয়ে)
--এ,,,,ই নিিিনন(ধমক শুনে কাঁপা কাঁপা হাতে)
--কল লিস্ট চেক করে।ঋতুর সামনে ফোন ধরে,
এটা কি?মামনি কতবার কল দিয়েছে তোমায়?কি প্রবলেম টা কি?ফোন রিসিভ করতে যখন এতই প্যারা তাহলে ফোন ব্যবহার করতে যাও কেন?
--আমি ভাবছি এমনিই কল দিচ্ছে আম্মু তাই রিসিভ করিনি।আর ফোন সাই,,,,,,,,,,,,,,,,,
---নো এক্সকিউজ,আই টোল্ড ইউ না নো মোর এক্সকিউজ?
আন্সার মি ড্যামন?
,
স,,সরিিিিিি স,,্যাররররর।আর এই ভুল হবে না।?
--ইট'স অকে।মনে থাকে যেনো।
এখন চলো।
--কই যাব স্যার?
--জাহান্নামে?
--কি বলেন কি স্যার?জাহান্নামে কেউ যায় নাকি?ঐখানে তো শুধু আগুন আর আগুন।?
--হোয়াট ননসেন্স।
--জ্বি স্যার।
--ইডিয়ট একটা।
--জ্বি স্যার জানি।
--হোয়াট দ্যা
--জাহান্নাম,না মানে আপনি নাকি জাহান্নামে যাবেন বললেন? তো চলুন
--হোয়াট দ্যা হেল
--হুররর,,সেই জাহান্নামেই তো যাব বলছি তো চলুন নাহ
---ইডিয়ট ওটা জাহান্নাম না হাসপাতাল
--কিহহহহহহ!!হাসপাতালে কেনো?কার কি হয়েছে?
--প্রিয়া কে হাসপাতালে এডমিট করা হয়েছে নাকি শুনলাম।
--প্রিয়া কে মানে?ওর কি হয়েছে?
প্রিয়া হলো ঋতুর ছোট ফুফুর মেয়ে।ওর জন্মের ১মাস পরেই ওর বাবা মারা যায়।আর মা থেকেও না থাকার মতোই।
ছোট থেকেই আমাদের কাছে বড় হয়েছে।সব সময় নিজের বোনের মতোই ভালোবেসে গেছি।
পড়াশুনা করলো না।সবাই মিলে একটা সু পাত্রের হাতে কন্যা দান করলো।ওর বয়স টা খুব বেশি হলে ১৩ বছর ৬ মাস।
খুব অবাক হচ্ছেন তাই না?এত ছোট বয়সে বিয়ে হয়েছে শুনে।
অবাক হওয়ার মতোই কথা।একে তো বাবা মা নেই,এতিম।যদিও আমরা এতদূর লালন পালন করেছি তবুও ওর লাইফের ডিসিশন নেয়ার অধিকার আমাদের নেই।
সবার মতামতেই অল্প বয়সে বাল্য বিবাহের মতো একটা অপরাধের বলির পাঠা হতে হয় ওকে।তাদের কথা;
একেতো গ্রামের মেয়ে।তারপরে এতিম।আবার পড়াশুনাও জানে না।চেহারা টাও তেমন উজ্জল যে তা না।
এখন বিয়ে না দিলে তখন বয়স বেশি হলে বিয়ে দিতে গেলে সমস্যা হবে।
যে বয়সে ওর বই হাতে স্কুলে যাবার কথা সেই বয়সে ও স্বামী সংসার সামলাতে ব্যস্ত।যার এখনো সংসার,স্বামী সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই আর আজ তাকে সব কিছু সইতে হচ্ছে।
,
কিচ্ছু করার নেই।মেয়েদের একবার বিয়ে হয়ে গেলে আর বাপের বাড়িতে কোনো দাম থাকে না।থাকে না অধিকার।
আর ও তো এতিম।
যেখানে আমি পড়াশুনা করছি আর সেখানে ওর মতো তেরোষি বয়সী বাচ্চাকাচ্চার মা হতে যাচ্ছে।
বিষয়টা সত্যিই হাস্যকর বটে।
পাবনা সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের বারান্দায় জীর্ণ শীর্ণ হয়ে শুয়ে আছে পাগলি টা।
দেখেই চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি পড়ছে।
কে বলবে এই মেয়েটাই দুদিন আগেও আমাদের বাসায় গিয়ে মাতিয়ে রেখেছিল ওর পাগলামি তে।
ওর পেটের তিন মাসের বাচ্চা টা নষ্ট হয়ে গেছে অর্থাৎ মিসক্যারিয়েজ হয়েছে।হাসপাতালে ঢুকে সমস্ত গাইনি ওয়ার্ড ঘুরে দেখলাম প্রায় অধিকাংশ রোগী আসছে মিসক্যারিয়েজ এর।
অল্প বয়সে বিয়ে দিয়েছে।যারা নিজেই এখনো বাচ্চা তারা অন্য আর একটা বাচ্চার যত্ন নেবে কি করে?তার ভাল দেখবে কিভাবে?
প্রচুর পরিমাণে ব্লিডিং হচ্ছে।কিছু কিছু রোগীরা অতিরিক্ত ব্লিডিং আর শরীর দূর্বলতার কারণে উঠে দাড়াতেই পারছে না।গলা কাটা মুরগির মতো ছটফট করছে বেডে শুয়ে।
একটা বাচ্চা হওয়ার সময় না যে কষ্ট হয় তার থেকে বেশি কষ্ট হয় বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেলে।
খুব রাগ হলো আমার ফ্যামিলির ওপর।ফ্যামিলির মানুষদের ওপর ঘৃণায় তাকাতে ইচ্ছে করছে না।নিজের মেয়ে হলে কি এরা পারতো এমন টা করতে?১৩ বছর যখন কষ্ট করে পালতে পারছে আর ৬ টা বছর কি একটু কষ্ট করতে পারতো না?
বাংলাদেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর।এর নিচে হলে সেটা বাল্যবিবাহ।আর বাল্যবিবাহ এর উপরে সরকার জোরদার আইন পালন করছে তারপরে ও এমন হচ্ছে।
পরিণত বয়সে বিয়ে হলে আর আজ এই মরণ যন্ত্রণায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাতে হতো না।
,
দুদিন পরে সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় চলে এলাম।
এর মধ্যে নুপুরের বিয়ে হয়ে ফিরনী ও চলে গেছে।সেদিন ফোন পেয়ে বিয়ের আসর থেকেই চলে আসতে হয়েছিল আমার।ওর বিয়ে পড়ানোর সময় আর দেখার সৌভাগ্য হয়নি।অবশ্য ভিডিও কলে কথা বলেছিলাম তার পরেও ভিডিও কলে কথা বলা আর সামনাসামনি কথা বলা এক হলো নাকি?
অনেক কান্নাকাটি করছিল নীল জিজুদের বাসায় যাওয়ার সময়।
.
.
Like Reply
#10
#___Part___10

.
.
প্রিয়া এখন মোটামুটি সুস্থ।ওর শশুর বাড়ি থেকে নিতে এসেছিল তবে আম্মা কিছুতেই যেতে দিবে না।
তার মতে ওর নিজেকে গুছিয়ে নেয়ার জন্য কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। এতবড় ঝড় বয়ে গেলো ওর জীবনে।এখন রেস্টে থাকা প্রয়োজন।যাওয়ার হলে যাবে তার জন্য সময়ের প্রয়োজন।
এর মাঝে নুপু একদিন নীলের সাথে করে আমাদের বাসায় এসে দেখা করে গেছে।
দেখতে দেখতে কেটে গেলো কয়েক্টা দিন।
.
সারাদিন ক্লাস,কোচিং নিয়ে এত্ত বিজি থাকি যে দম ফেলাবার সময় টুকু দেয় না ঐ ব্যাটা কুভ্র।
তবে আমিও নাছোড়বান্দা! সারাদিন ওর পেছনে কাঁঠালের আঠার মতো লেগে থাকি।সারাক্ষণ শয়তানি করি শোভা কে সাথে নিয়ে।আমার দল টাই বেশি ভারী।
আঙ্কেল,সোনা মা, শোভা আমার দলে আর আমার আম্মার কথা কি বলবো।মাঝেমাঝে মনে হয় আমার নিজের মা তো নাকি। নাহলে কিভাবে মেয়েকে সাপোর্ট না করে ডেভিল টার পক্ষ নেয়।
কখনো গাড়ির চাকা ফুটো করে,কখনো বা খাবারে কিছু গন্ডগোল করি আবার একেক সময় একেক রকম ফন্দী আটি।কিন্তু তাতে কোনো লাভই হয় না।
কেনো জানি আমার সব প্ল্যানিং ভুন্ডুল করে আমায় ফাসিয়ে দিয়ে চলে যায় গোমরামুখো টা।
এতো নিপুণ ভাবে প্ল্যানিং করি তারপরেও বুঝে ফেলে কিভাবে মাথায় ঢোকে না আমার।
তবে আমিও হাল ছাড়ার পাত্রি নই।সময় আমারো একদিন আসবে আর সেদিনই সব উশুল করে নেবো।
.
ইদানিং অভি ভাইয়া টা ঘনঘন আসা ধরেছে আমাদের বাসায়।
যাকে ফোনের পর ফোন করে ও আনা যায় না সে এখন প্রতিদিন আসে ব্যাপারটায় কেমন জানি রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি।
আর একটা ব্যাপার লক্ষ করেছি অভি ভাইয়া আসার কিছুক্ষণ পরই শোভা ও আসে।
ব্যাপার টা কেমন জানি আমার সুবিধার ঠেকছে না।ডাল মে কুছ কালা হে।
আমি যে কিছু আন্দাজ করতে পারছি তা ওদের কিছুতেই বুঝতে দেওয়া যাবে না।
সময় মতো বোম ব্লাস্ট করবো।?
,
শোভা!চল ঘুরতে যাই।
-----
---এই শোভা!!শুনছিস?
--উউ,,,কিছু বলছো আপি?
--হুম,সেই কখন থেকে ডাকছি।
--ওহহ!শুনতে পাইনি।বলো কি বলবে?
--তা শুনতে পাবি কি করে?মন এখানে থাকলে তো শুনবি।
--হুমম,,,,এ্যাাাাহহহহ কি বলছো?
--হুম ঠিকই বলছি।
আচ্ছা বাদ দে অভি ভাইয়া কে আসতে বল ঘুরতে যাবো।
--তোমার ভাই তুমি বলো।আমায় বলছো কেনো?
--ন্যাকা,যেনো কিছুই বোঝে না।ঢং বাদ দিয়ে বলেন।
"এই শোন তুই যে স্কুলে পড়তিস না সেই স্কুলের প্রিন্সিপাল আমি।"
সো আমার সাথে একদম চালাকি করার চেষ্টা করবি না।
--আপিিিিিিিিিিিি,,কান্না করে দেবো কিন্তু।
কি বলছো এসব?
---এই তোকে বললাম না আমার সাথে ঢং করবি নাহ।
--অকে করবো না।
--হুমম,গুড গার্ল।এবার সত্য করে বল তো বাছা এসব চলছে কবে থেকে?
---কোন সব আপি?ক্লিয়ার করে বলবা কি?
--সত্যি সত্যি বলবি নাকি সোনা'মা কে গিয়ে বলতে হবে?
---এই না নাাা আপিি।তুমি আমার লহ্মি আপি না।
এমন করতে পারো না তুমি।
--শোনো এসব হাওয়ায় কাজ হবে না।কবে থেকে চলছে এসব আমায় বলো তাড়াতাড়ি।
--তোমার ভাইয়ের থেকেই শুনে নিও।
--গুড আইডিয়া।তুই রেডি হয়ে আয়। আর শোন তোর কিছু বলার প্রয়োজন নেই ভাইয়া কে।
যা বলার আমিই বলবো নে।
---আচ্ছা আপি।আমি গেলাম।
--যাহ।
আহাাাা!!কি যে শান্তি লাগছে।চোর দুটো ধরতে পেরে।তবে ঐ টাকে একটু ধোলাই দেওয়া উচিৎ।
আগে আসুক তারপর বুঝবে মজা কত ধানে কত গম?
.
গোসল করে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিলাম।অভি ভাইয়া ফোন করছিল চলে এসেছে প্রায়।
নিচে অপেক্ষা করতে বলছে।
আমার আটা ময়দা মাখতে একটু লেট হচ্ছে।
মনে হচ্ছে বফের সাথে ডেটে যাচ্ছি সেরাম ফিলিং মনে।
শোভা মুখ গোমরা করে এসে সোফায় বসে পড়লো।
বেচারির মুখ টা দেখে পেট ফেপে হাসি বেরিয়ে আসতে চাইছে তবে অনেক কষ্টে সেটাকে আটকে রেখেছি।
--কিরেেে!!তুই রেডি?
--হুমম।
--মন খারাপ?নাকি পেট খারাপ?
--কোনো টাই না আপি।তোমার দেরি থাকলে বলো আমি রুমে যাই।
--কেনো এটা কি রুম না?
--না কে বলছে?
---তোর কি হইছে বলতো সত্যি করে?
---কই কি হইছে?
---কই কিছু না তো আপি।
--তাহলে মুখ টাকে এমন করে রেখেছিস কেনো?
--কই?
--কই তো পুকুরে থাকে।আমার হয়ে গেছে চল নিচে যাই।
অনেকক্ষণ ধরে নিচে ভাইয়া অপেক্ষা করছে।
,
---তাই তো বলি ময়দার এতো দাম কেনো?
তা কয় কেজি ময়দা মেখেছিস মুখে?
--দোকানের সব ময়দা মেখে এসেছি। তোমার কোনো সমস্যা?
--আমার আর সমস্যা হবে কেনো?তা কোথায় যাবি বল।
--উম!!
আপাত খাইতে চলো বনলতায়।খুব ক্ষিদা লাগছে। তারপরে ভাবা যাবে।
--যো আপকা হুকুম।
খাওয়া দাওয়া করে হাটতে লাগলাম। উদ্দেশ্য স্টেশনের দিকে।
গাড়ি নিয়ে আসলেও আমার কথায় পার্কিং করে এসেছে।
সব সময় আর গাড়িতে চড়ে ঘুরতে ভালো লাগে নাকি।
রিক্সায় চড়ে ঘোরার মজাই আলাদা।
এতসময় শোভা একটা কথাও বলেনি।চুপচাপ আছে।
চোখে মুখে স্পষ্টতর ভয়ের ছাপ দেখা যাচ্ছে। হয়তো ভাবছে আমি যদি সবাই কে বলে দেই।
বিকেল টাইমে এখানে সকল শ্রেণির মানুষদেরই প্রায় দেখা যায়।
বিশেষ করে কাপল রাই তাদের সুন্দর কিছু মুহূর্ত কে স্মৃতির পাতায় বন্দি করছে।
,
ওদের দুজনকে একটু স্পেস দেওয়ার জন্য একটু দূরে চলে এলাম।
নিজেকে কেমন জানি কাবাবে হাড্ডি মনে হচ্ছিল।
এদিকে আমার জন্য আমার বন্ধুরা সবাই অপেক্ষা করছিল।
ওদের কে আগেই কল করে লোকেশন টা দিয়েছিলাম।
ছোট বোন হিসেবে তো আমার একটা দায়িত্ব আছে।
তবে সামনে অনেক বড় একটা দায়িত্ব আছে সেটা কে আমায় পালন করতেই হবে।
অভি ভাইয়ার ফোনে ছোট্ট করে একটা টেক্সট করে দিলাম
"এই যে আমার ভাবি কে স-সম্মানে বাসায় পৌছে দিয়ে আসবেন সন্ধ্যার আগেই।
আমার থেকে লুকানোর জন্য অনেক বড় শাস্তি পেতে হবে এবং তার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করো।"
অনেক মজা করেছি আজকে।
সারাদিনের ক্লান্তিতে বিছানায় গা টা ছেড়ে দেয়ার সাথে সাথেই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম।
ভোর হলেই আবার শুরু হবে আমার সেই রুটিনবাঁধা জীবন।
,
এভাবে কেটে গেছে এর মাঝে কিছুদিন।
আমার ১ম বর্ষের ফাইনাল পরিক্ষার আর কয়েক্টা দিন বাকি আছে।যার কারণে পড়াশুনায় নিজেকে নিয়ে খুব ব্যস্ত সময় পার করছি।
আগের মতো আর আড্ডা দেয়া হয় না।আসলে পড়াশুনার এত্ত চাপ যে মনে হয় কদিন পরে আমায় হেমায়েতপুরে এডমিট করাতে হবে।
ফিন্যান্স,হিসাব বিজ্ঞান, ব্যস্টিক অর্থনীতির কিছুই পারি না মনে হচ্ছে এখন।?সারাজীবন ফাঁকি দিয়ে এসে এখন ফেঁসেছি মাইন্ক্যার চিপায়।
আম্মা বলেছে ফার্স্ট ক্লাস না পেলে রিক্সাওয়ালার সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে।?
আমার মনে হচ্ছে ৬ টা সাবজেক্টেই ইনপ্রুভ দিতে হবে।কি এক্টাবস্থা আমার।
এতদিন ফাঁকি দিলেও ভয়ে ভয়ে বই নিয়ে পড়তে বসি।কি পড়ি সব তো মাথার উপর দিয়ে চলে যায়।
এর মধ্যে একবারো স্যারের বাড়িতে যাইনি।
,
সন্ধ্যায় পড়তে বসেছি আর সে সময় শোভা এসে জড়িয়ে ধরে কান্না করছে।
--কি করে পাগলি কি হলো?হঠাৎ এমন জড়িয়ে ধরে কান্না করছিস?
--আপিিিি
--হুমম!!কি হলো?কাহিনী টা কি?
--আপি আজকে অভির আম্মা এসেছিল আমাদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।
--ওহহ ভালো তো।
--বাবা মা। রাজি হয়েছে।
--ওহহ এই ব্যাপার।তো কান্নাকাটি করার কি আছে?
--আমি জানি আপু এই সব কিছু সম্ভব হয়েছে তোমার জন্য।
তুমি না থাকলে হয়তো এসব সম্ভব হতো না।
--হয়েছে হয়েছে এতো সেন্টিমেন্টাল হতে হবে না।বিয়ের পর কিন্তু আমি তোকে অনেক জ্বালাবো আফটার অল আমি ননদ বলে কথা।
আমার ভাইগত অধিকার এটা।?
--অকে তোমার ইচ্ছা।
অভি ভাইয়া ও এসে দেখা করে গেছে।বিয়ের ডেট টা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে আমার এক্সামের কারণে।
,
আপনারা হয়তো ভাবছেন এতকিছু হলো কখন?
অকে তাহলে শুনুন বলছি।
সেদিন মানে যেদিন ওদের ঘুরতে নিয়ে গেছিলাম সেদিনই আমি আমার মণির কাছে গিয়েছিলাম মানে অভি ভাইয়ার মায়ের কাছে।
---মনি মা কেমন আছো?
--এই তো আমার কথা বাদ দে।তোর কি অবস্থা বল?
--এখন তো আসা বাদই দিয়েছিস।তা পথ ভুল করে চলে আসিস তো নি?
---না গো।একদম কারেক্ট পথেই এসেছি। খুব ক্ষিদা লেগেছে তাড়াতাড়ি কিছু নিয়ে এসো তো যাও।
--তুই বস আমি আসছি।
---ঐঐঐঐ আপনারা আবার ভাইবেন না যে আমি খাদক আসলে আমার মুখে একটু রুচি বেশি তো তাই আর কি।
--ওয়াওওওওও!!সরষে ইলিশ,কালো জিরা বাটা,ডালের বড়া,আর সাথে তো মনি মায়ের স্পেশাল পায়েস।
দেখেই জীভে জ্বল এসে যাচ্ছে।
মনি মাাাাা এসব কি সব আমার?
--হ্যাঁ সব তোর।কেউ ছিনিয়ে নেবে না।আস্তে আস্তে খা।
--হুমমম খাবোই তো।
আচ্ছা মনি মা।তোমার বয়স তো আর কম হলো না।তোমার ঐ বুড়ো ব্যাটারে বিয়া দিলেও তো পারো।তহন পায়ের উপর পা তুলে খাইতে পারবা।
---কথা টা কিন্তু মন্দ বলিস নি।কিন্তু তেমন মেয়ে পাবো কই বল?
--কেনো?আমি আছি না।আমার উপর ওসব ছেড়ে দাও।
--কেন তুই কি ঘটকালী শুরু করলি নাকি?
--ওই একটু আধটু আরকি।মনি মাকে সব বললাম (মানে ওদের দুজনের বিষয়ে)
মনি মা আমার কোনো কথাই ফেলে না।আমায় নিজের মেয়ের মতোই ভালোবাসে।
মনি মার সাথে প্লান করে স্যারের বাসায় প্রস্তাব পাঠালাম তবে ওদের রিলেশনের বিষয়টা গোপন রেখে।কারণ যদি মেনে না নেয়।
স্যারের বাসা থেকে পজিটিভ আনসার আসে।নেগেটিভ আসার মতো কোনো কারণ ই নেই অভি ভাইয়ার মধ্যে।
আমার অভি ভাইয়া লাখে নয় কোটিতে এক পিছই।
খুব ভালো লাগছে যে ওদের দুজনকে মেনে নিয়েছে সবাই।
,
১ তারিখ থেকে আমার এক্সাম শুরু হয়েছে।গতকালকে সীট দেখাতে নিয়ে গেছিল শুভ্র স্যার।
আমাদের বুলবুল কলেজের সীট পড়েছে এডওয়ার্ড কলেজে আর ওদের সীট পড়ছে আমাদের কলেজে।
আমার সীট পড়ছে এডওয়ার্ডের ০২ নং মিলনায়তনে।ফ্রেন্ডসারর্কেল এর সবারই সীট এলোমেলো ভাবে পড়ছে।
নিশ্চয়ই স্যার রা এমন করছে।সবাই একসাথে বসতে পারলে কতো ভালো হতো।নুপু বসছে সেই ০৪ নং এ।
এত ভেবে এখন লাভ নেই।প্রথমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভূদ্যয়ের ইতিহাস পরিক্ষা।
প্রিপারেশন মোটামুটিভাবে ভালো।তারপরেও ভয় করছে একটু।আমি একাই যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু তা আর হলো কই?স্যার কে আমার সাথে পাঠিয়ে দিয়েছে আম্মা।
পরিক্ষার টেনশনে খেয়ে আসি নি।গাড়ির ভেতরে বই রিভিশন দিচ্ছি।
একটা কেক মুখের সামনে ধরে,,মামনি বললো খেয়ে আসো নি।তাড়াতাড়ি এটা শেষ করে নাও চার ঘন্টা এক্সাম দিতে দিতে ক্ষুধা লেগে যাবে।
--আমি এখন খাবো না।ক্ষুধা নেই আমার।
--আমি খেয়ে নিতে বলছি সো চুপচাপ খেয়ে নাও।
--কিছু বলতে চেয়েও বললাম না কারণ বলে লাভ নেই।
চুপচাপ খেয়ে নিলাম।
কলেজে চলে আসছি গাড়ি থেকে নামার সময় ডাক দিলো আবার।
--এদিকে এসো।
--কি হইছে বলুন।
--তোমার মুখে
আমার মুখে কি?বলে হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে আরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিলাম মুখে লেগে থাকা খাবার।
---টিস্যু দিয়ে মুছে দিলাম ওর মুখে লেগে থাকা খাবার টুকো।
শোনো!!একদম তাড়াহুড়া করবে না লেখার সময়।রোল রেজিস্ট্রেশন নম্বর ভালো করে দেখে তুলবে।
কোনো কিছু না বুঝলে স্যার কে আস্ক করবে।নিজে পন্ডিত গীরি করবা না।আর এক্সাম শেষ হলে এখানেই দাড়িয়ে থাকবে আমি না আসা পর্যন্ত।
--হু।
শুভ্রের ডিউটি থাকায় সে থাকতে পারবে না চাইলেও।
,
দুই পাশে ব্যবস্থাপণা আর মাঝখানে হিসাব বিজ্ঞান ডিপার্টমেন্ট দের সীট ফেলছে।
দুই পাশে অন্য কলেজে বেড়া আর চাটমোহর কলেজের স্টুডেন্ট দের সীট পড়ছে।
ভয়ে হাত পা কাপাঁকাপিঁ শুরু করছে।০৪ টা রুম একত্রে একটা মিলনায়তন রুম।যেখানে কয়েকশ স্টুডেন্ট আর প্রায় ২০ জনের মতো টিচার্স।
এতলোক এক সঙ্গে দেখে নার্ভাস হওয়ারই কথা।টিচার্স দের মাঝে একজনকে দেখে একটু হলেও ভয় কেটে গেলো ঋতুর।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
To be Continue
Like Reply
#11
#___Part___11
.
.

দুই পাশে ব্যবস্থাপণা আর মাঝখানে হিসাব বিজ্ঞান ডিপার্টমেন্ট দের সীট ফেলছে।
দুই পাশে অন্য কলেজে বেড়া আর চাটমোহর কলেজের স্টুডেন্ট দের সীট পড়ছে।
ভয়ে হাত পা কাপাঁকাপিঁ শুরু করছে।০৪ টা রুম একত্রে একটা মিলনায়তন রুম।যেখানে কয়েকশ স্টুডেন্ট আর প্রায় ২০ জনের মতো টিচার্স।
এতলোক এক সঙ্গে দেখে নার্ভাস হওয়ারই কথা।টিচার্স দের মাঝে একজনকে দেখে একটু হলেও ভয় কেটে গেলো ঋতুর।
আর সে টা হলো ইহান কে দেখে।সেদিন এর ইহান আর আজকের ইহানের মাঝে দারুণ তফাৎ। আজকের ইহানের মাঝে কেমন টিচার টিচার ভাব ফুটে উঠেছে।
যদিও ইহান কে ঋতু সেভাবে চিনে না বা পরিচিত হয়নি।
তারপরেও একটু ভয় টা কমছে এই ভেবে হয়তো একজন কে টিচার কে চিনে।
পরিক্ষা শুরু হতে আর মাত্র কয়েক মিনিট বাকি আছে।খাতা দিয়ে দিয়েছে সবাই রোল,রেজিস্ট্রেশন নম্বর পূরণ করায় বিজি।স্যার ম্যাম রা বার বার বলে দিয়ে যাচ্ছে কেউ যেনো ভুল করেও কাটাকাটি বা ঘষাঘষি না করে খাতায়।
ভুল হলে উপস্থিত শিক্ষক দের দ্বারা দেখে নিতে পারে।
.
১ম বর্ষের পরিক্ষার হলে মিলনায়তন ০২ নং কক্ষে গার্ডের ডিউটি পড়ছে আমার।যথা সময়ে ক্লাসে উপস্থিত হয়ে গেলাম।সবার সাথে কুশল বিনিময় করে খাতা এগিয়ে দিচ্ছিলাম সব স্টুডেন্ট দের মাঝে।হঠাৎ চোখ দুটো এক জায়গায় গিয়ে আটকে গেলো।এ তো সেই পিচ্চি মেয়েটা(ঋতু) নীলের বিয়েতে গিয়ে দেখেছিলাম।
ওহহ!!আই সি।তার মানে পিচ্চি টা অনার্সে পড়ে।দেখে তো মনে হয় সবে ক্লাস টেনে উঠলো।যাই হোক অতটাও পিচ্চি না।
দেখে মনে হচ্ছে অনেক টেনশনে আছে পরিক্ষা নিয়ে।
অভয় দিতে এগিয়ে গেলাম ওর কাছে।ভয় নেই আমি আছি বলে আশ্বাস দিলাম।কোনো সমস্যা হলে জানাবে বললাম।
আমার কথায় কিছুটা ভয় মুক্ত হলো মনে হচ্ছে।
ঘন্টা পড়ছে দেখে প্রশ্ন দেয়া শুরু করলাম।
,
প্রশ্ন মোটামুটি সহজ হয়েছে।যতটা ভয় পেয়েছিলাম অতটাও ভয় পাওয়ার মতো না।খুব সুন্দর হয়েছিল প্রশ্ন টা।
চার ঘন্টা সময় ও মনে হয় কম হয়ে গেছে।লেখে কভার করা যায় না।আগে তিন ঘন্টায় সাত টা সৃজনশীল কম্পিলিট করে রিভিশন দেয়ার জন্য পনেরো মিনিট সময় থাকতো হাতে আর এখন চার ঘন্টায়ও হয়না।
যাই হোক পরিক্ষা টা খুব ভালো হয়েছে।ঐ লোকটা মানে ইহান এসে বার বার খোজ খবর নিয়ে গেছে।
পরিক্ষার শেষে গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি।স্যার এখানে দাড়িয়ে থাকতে বলে গেছিলেন তাই।
আস্তে আস্তে কলেজ ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। পরিক্ষার শেষে যে যার মতো ঘরে ফেরায় ব্যস্ত।
ইতিহাস খুব সহজ একটা সাবজেক্ট। অল্প কিছু পড়ে নিজে থেকে বানিয়ে ও লেখা যায়।
সবাই হাসি মুখেই বের হয়ে যাচ্ছে তার মানে মোটামুটি সবারই ভালো হয়েছে।
,
পরিক্ষার শেষ হওয়ায় অফিশিয়াল কাজে একটু ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।আস্তে আস্তে সবাই হল পরিত্যাগ করে চলে যাচ্ছে।
মেয়েটাও হয়তো অন্য সবার মতো চলে গেছে।
কাজ শেষ করে চলে যাচ্ছিলাম উদ্দেশ্য বাসার দিকে।
আমার ভাবনা ভুল হলো মেয়েটাকে ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বেঞ্চিতে বসে থাকতে দেখে।
সেই কখন থেকে মেয়েটা মেয়েটা করে যাচ্ছি কি যেনো নাম ওর।ওহ সীট!আমি তো ওর নামই জানি না।
আচ্ছা..!কি নাম হতে পারে?
উমম!!আমার মোটা মাথায় এসব ভাবা হবে না।
এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ওর পাশে এসে দাঁড়িয়েছি খেয়াল নেই।ওর কথায় হঠাৎ কল্পনার জগত থেকে বাস্তবে ফিরে এলাম।
,
এই যে শুনছেন!!!
--হু কিছু বলছো?
--সেই কখন থেকে দেখছি কি যেনো ভাবছেন।এতো কি ভাবছেন শুনি?
--ওহ কিছুনা।তারপর বলো এক্সাম কেমন দিলে?
--আলহামদুলিল্লাহ, ভালো।থ্যাংকস ফর এভরিথিংক এন্ড সেই সাথে সরি ও।
--থ্যাংকস কেনো?আবার সরিই বা কেনো?
--আজকের জন্য থ্যাংকস।আর সেদিনের ব্যবহারের জন্য সরি।
--নো নো ইটস অকে।
--থ্যাংকস।একটা প্রশ্ন করতে পারি?
--হুম। কেনো নয়?
--আপনাকে দেখে কেনো জানি স্যার স্যার মনে হয় না।
--তাই নাকি?তা কি মনে হয়?
--স্টুডেন্ট।
--হাহাহা।আমি কিছুদিন হলো জয়েনিং করছি।
বাই দ্যা ওয়ে।আমি ইহান মাহমুদ।
আজকে নাম বলতে নিশ্চয় তোমার কোনো আপত্তি নেই?
--নাহ।আমি ঋতু রশনি।
--নাইস নেম।
--ধন্যবাদ।
--স্বাগতম। আমি কিন্তু তোমায় রশনি বলেই ডাকবো।
--আপনার ইচ্ছা সেটা।
--থ্যাংকস। এনি ওয়ে কারো জন্য ওয়েট করছো নাকি?
--জ্বি।
--ওহহহ!!আমি কি ওয়েট করবো সে না আসা পর্যন্ত?
--না নাাহ। কোনো দরকার নেই।এখনি এসে পড়বে।
ঐ তো এসে পড়ছে।বায় বলে চলে এলাম।
,
কয়েকদিন পড়াশুনা নিয়ে অনেক বিজি ছিলাম। ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া ঘুম কোনো টাই হয়নি।
আবার পরবর্তী পরিক্ষা হতে প্রায় সপ্তাহ খানিক সময় বাকি।
বাসায় গিয়ে গোসল করে খাওয়াদাওয়া করে একটা লম্বা ঘুম দিলাম।এক ঘুমে রাত টা কেটে গেলো।খুব ভোরে ঘুম ভেঙ্গে গেলো।সচরাচর আমার এত ভোরে কখনো ঘুম ভাঙ্গে না।
আজ হঠাৎ কি মনে করে হলো জানিনা।এই ঘুমের জন্য ফযরের নাম পড়া হয়না কখনো।আজ যখন সময় পেয়েছি তখন নামায টা পড়েই নিই।
নামায পড়ে কুরআন তেলাওয়াত করলাম খানিকখন।
মনটা বেশ ফুরফুরে।
অনেকদিন ছাদে যাওয়া হয় না যেই ভাবা সেই কাজ।
ছাদে গিয়ে ফুলের টবে পানি দিলাম।
আমি আর শোভা ছাদের এক কোনায় ফুলের বাগান
করছি ছোট্ট করে।আর এক পাশে কিছু শাক সবজি।
আসলে শহরে ঐভাবে মাটি পাওয়া যায় না তাই সবাই যেটুকু পারে ছাদেই এসব করে।অবসরে আমরা এখানে গাছের পরিচর্যার কাজে সময় দেই আঙ্কেল আমাদের কাজে সাহায্য করেন মাঝেমাঝে। 
,
নিচে গিয়ে টুকটাক পড়াশুনা করে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম।
আসলে সাধারণত, পরিক্ষার আগে ছুটি থাকলে কখনোই আগের দিন ছাড়া পড়তে বসি না আমরা।এটা তো আগে থেকেই হয়ে আসছে।
আজকে শুক্রবার সাপ্তাহিক একটা ছুটির দিন।
আঙ্কেল বাইরে গেছেন কি একটা কাজে।আম্মা আর সোনা মা গল্প করছে আর এদিকে আমি শোভা আর বর্ষা প্ল্যানিং করছি বিয়েতে কি কি করবো।
আর শুভ্র ড্রয়িংরুমে বসে ল্যাপটপে কি সব ঘাটাঘাটি করছে।
আসলে ল্যাপটপে তেমন কিছুই করছে না।এখানে বসার মূল উদ্দেশ্য হলো ওকে দেখা।ওর কথা শোনা এ ছাড়া আর কিছুই না।
একটা মানুষ কি করে অনর্গল এত কথা বলতে পারে তা এই মেয়েটা না দেখলে আর জানা হতো না।
কথা না বললেও কেমন মানায় না ওকে। ও যদি কখনো কোনো কারণে চুপ থাকে তাহলে কেমন যেনো বেমানান লাগে।মাঝেমাঝে মনে হয় গুরুগম্ভীর ওর জন্য না।ওর সাথে যায় না।শুভ্র ঋতুকে একটা নাম দিয়েছে আর সেটা হলো কথার রাণী।
শুভ্র ওর এই পাগলামো, বেশি কথা বলা,অদ্ভুদ আচরণ গুলোকেই কিভাবে যেনো ভালোবেসে ফেলেছে।
মেয়েটার মাঝে কেমন অদ্ভুদ রকমের একটা টান অনুভব করে শুভ্র।যেটা ওকে দূর থেকে চুম্বকের মতো ওর দিকে টানে।
অনার্স পড়ুয়া মেয়ের স্বভাব এখনো কেমন বাচ্চাদের মতো।
কেউ ওর কথার ধরণ,ওর বাচ্চামী দেখে বিলিভই করবে না যে ও অনার্সে পড়ে।
দূর থেকে যে কেউ ওর উপর লক্ষ্য রাখছে সে খেয়াল ওর নেই।ও তো কথার ফুলঝুরি নিয়ে বসে আছে।এত কথা পায় কোথায় কে জানে!!
মাঝেমাঝে ওদের কথা শুনে শুভ্র হেসে ফেলছে।
,
এদিকে ঋতু ভাবছে একজন মানুষ এত রোবট অর্থাৎ যান্ত্রিক মানবের মতো হয় কি করে?একটা রস কষহীন আনরোমান্টিক বুইড়া ব্যাডা।মনে শখ আল্লাদ বলতে কিছুই নাই নাকি।যে হের বউ অইবো তার কপাল এক্কেবারে পুরছে।
এর সাথে কেমনেই যে সংসার করবে।
কখনো ভুলেও হয়তো আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখার চেষ্টা করেনি যে হাসলে আসলে তাকে কেমন দেখায়।
হাসতেও মনে হয় আজকাল টাকা পয়সা লাগে।
তানাহলে কিভাবে পারে উনি?
আচ্ছা মানুষ এমন রোবট তো তখনি হয়ে যায় যখন কারো কাছে থেকে তীব্র থেকে তীব্রতর ভাবে একেরপর এক আঘাত পেতে পেতে ভেতরটায় আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না অনুভূতি হীন শূন্যতায়।
আচ্ছা উনি কারো কাছে ছ্যাঁক ট্যাঁক কিছু খায়নি তো নাকি।
কি জানি খাইলেও খাইতে পারে।
,
আপুউউউউউহহহহ
--কি কিিিিিি,,ষাঁড়ের মতো এতো চেঁচাচ্ছিস কেনো?
--চেঁচাবো না তো কি করবো।তোকে ডাকছি সেই কখন থেকে তুই শুনছিসই না।
--কি বলছিলি আবার বল।
--চল লুডু খেলি।বসে থাকতে আর ভাল্লাগছে না।
--নট এ ব্যাড আইডিয়া।চল খেলা যাক।
--তিন জনে খেলায় মজা হবে না আপু।
--তিনজন ছাড়া এখন আর লোক পাবো কোথায়?
--চলো আম্মু আর আন্টিকে বলে দেখি রাজি হয় কিনা।
--অকে চল।
দুজনের কেউই রাজি হলো নানা বাহানায়।
এখন বাকি আছে একজন জানি রাজি হবে না।তারপরেও চেষ্টা করা তো নেই মানা।
শোভা আর বর্ষা কে পাঠিয়ে দিয়ে আমি রুমের বাইরে দাড়িয়ে আছি।
--ভাইয়া কি করছিস?
--দেখছিস না কাজ করছি।
--সে তো করবিই।ল্যাপটপ ঘাটা ছাড়া তোর আর কোনো কাজ আছে নাকি।
শুক্রবার সাপ্তাহিক একটা ছুটির দিন সেদিনেও তোর যত রাজ্যের কাজ।
--এত প্যাঁচাল না পেরে যা বলতে এসেছিস তাই বলে চলে যা।আমার অনেক কাজ পরে আছে হাতে।(ধমক দিয়ে)
--হুমম যাবোই তো।দুদিন পরে যখন পরের ঘরের চলে যাব,তখন আর কেউ সময়ে অসময়ে জ্বালাতন করতে আসবে না।তখন বুঝবি আমি তোর কি ছিলাম।খুব বিরক্ত হস আমার উপর তাই না?যখন আমি থাকবো না তখন আর কেউ বিরক্ত করতে আসবে না।বলে শোভা কান্না করতে করতে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।

--কাজ ছাড়া কিছুই বুঝেন না আপনি। ঠিক কবে বাবা মা,বোন কে সময় দিয়েছেন আপনার মনে আছে?
আপনি কি আসলেই একটা মানুষ? নাকি মানুষের ছদ্মবেশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অনুভূতিহীন একটা যান্ত্রিক রোবট।যার মধ্যে ভালোবাসা বলে কিছু নেই।কাজ পাগল লোক একটা।
--ঋতুউউউহহহ!!তোমার স্পর্ধা হয় কি করে আমার মুখের উপর কথা বলার।
--আরে রাখেন তোহ!!শুভ্রকে থামিয়ে দিয়ে।
পারেন তো শুধু ঐটাই।সব সময় ধমকি ধামকি করবেন অন্যের উপর।এটা আপনার ভার্সিটি নাহ আর আমিও এখানে আপনার স্টুডেন্ট নই সো ডোন্ট শাউট।
আপনি সব সময় নিজেকে কি মনে করেন বলেন তো?প্রেসিডেন্ট? হাহাহাাা,আর বাকি সবাই আপনার প্রজা তাই আপনার ভয়ে মুখ লুকিয়ে বেরাবে।
অবশ্য আপনার মতো রষকষ হীন মানুষের কাছে এর থেকে বেশি কিছু এক্সপেক্ট ও করা উচিৎ না।
যে কাজ টা হুমকি ধামকি দিয়ে করছেন সেটা ভালোবেসেও খুব সহজেই করতে পারবেন।
আপনি নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করুন তোহহ আপনি যা করছেন তা আদৌ ঠিক করছেন তো।
ভার্সিটি,বাসায় সবাই আপনার ভয়ে ভীতু।সবাই ভয়ে থাকে কখন না জানি কোন ভুলের পানিশমেন্ট পেতে হয়।
আপনি কি কখনোই উপলম্ধি করতে পেরেছেন এভাবে আস্তে আস্তে আপনি আপনার ফ্যামিলির মাঝে দূরত্ব তৈরী করছেন। 
কখনো কি প্রয়োজন ব্যতীত আপনার মা কে জিজ্ঞেস করেছেন
করছেন সে আদৌ ভালো আছে কি না।কি করছে,কিভাবে সময় যাচ্ছে। ছোট বোন কে শাসন ছাড়া কখনো ভালোবেসে বুকে টেনে নিয়েছেন?নেন নি তো।
এভাবে চলতে থাকলে দেখবেন সবাই আপনার থেকে মুখ লুকিয়ে নিচ্ছে। কাউকে পাশে পাবেন না আপনার।
জানি আজ এই কথা গুলো বলার জন্য হয়তো আমার পানিশমেন্ট এর ব্যবস্থা করছেন অবশ্য আপনার মতো মানুষ আর কি বা করতে পারবে।আমি আর সবার মতো আপনাকে দেখে ভয় পাই না আপনি শুনে রাখুন।
কথা গুলো একদমে বলে থামলো ঋতু।
শুভ্র ঠিক সেই জায়গাতেই ঠাই দাড়িয়ে আছে।লাল টকটক করছে চোখ দুটি,ভয়ংকর দৃষ্টিতে ঋতুর দিকে তাকিয়ে আছে।
,
ঋতু ভাবছে সে কি বলতে কি বলে ফেললো।আসলে রাগের সময় মাথা ঠিক থাকে না।মাথা ঠান্ডা হলে পরে তার জন্য অনুশোচনায় অনুতপ্ত হয়।
এভাবে শুভ্রকে বলাটা উচিৎ হয়নি বলে মনে হচ্ছে এখন ঋতুর।
শুভ্রের কাছে সরি বলার জন্য এগিয়ে গেলো।
--স,,,সররররিিিি
--গেট লস্ট।
--সরিি
--আই সে গেট লস্ট।(জোরে ধমক দিয়ে)
শুভ্রের ধমকে ঋতুর বুকেঁর ভেতরটায় ভয়ে কেঁপে উঠলো।
ঋতুর মুখের উপর ধরাম করে দরজা লাগিয়ে ধপ করে বিছানায় বসে পড়লো শুভ্র।রাগে ফসফস করছে।
কিছুতেই নিজেকে সংযত করতে পারছে না।ঘরের মধ্যে তান্তব বয়ে চলেছে।
,
আর এদিকে ঋতুর মা পারলে ঋতু কে মারে।যাচ্ছে নয় তাই বলে ঋতু কে গালাগাল পারছে।
শুভ্রর কিছু হলে ঋতুকে দেখে নিবে।কত বড় সাহস ওর যে শুভ্রের মুখে মুখে কথা বলে।
আর এদিকে শুভ্রের মা ঋতুর কে মা কে বলছে ও তো ভুল কিছু বলেনি যা সত্য সেটাই শুধু বলেছেন।তুমি অযথাই ঋতুর উপর রাগ দেখাচ্ছ।
সোনা মা তুই রুমে যা।কোনো টেনশন করিস না আমি আছি তো।আমি থাকতে তোকে কেউ কিছু বলতে পারবে না।
,
বিকেল বেলা বই হাতে ছাদে বসে আছি।রুমে ভালো লাগছিল না তাই ভাবলাম বই নিয়ে ছাদে যাই।মনটাও ভালো হবে আর মাঝেমধ্যে একটু আধটু বই পড়াও হবে।
এক জায়গায় স্থির হয়ে বসে পড়লে আমি খুব একটা মনে রাখতে পারি না।আমার একটা বদ অভ্যাস আছে হেটে হেটে পড়া।এই ধরুন একটানা আধ ঘন্টা পড়লাম এর পরে বিনোদনের জন্য একটা গান শুনে বা দেখে আবার পড়তে বসবো।আমি বুঝে গেছি এখন আর পড়া হবে না।
আসলে সকালে শুভ্র স্যারের সাথে ঐ বিহাভ টা করা আমার ঠিক হয়নি।অবশ্যই আমার উচিৎ এখন তাকে সরি বলা।যে যেভাবে থাকতে পছন্দ করে তাকে সেভাবেই থাকতে দেওয়া উচিৎ।
নিচে যাচ্ছিলাম স্যারের কাছে ক্ষমা চাইতে আর ঐদিক থেকে হদন্ত হয়ে ছুটে আসছিল এক জোড়া চোখ,,,,
.
Like Reply
#12
#__Part__12
.

.

সেটা আর কেউ নয় শুভ্র।যাক একদিক দিয়ে ভালোই হলো।ছাদে কেউ নেই এখানে সরি বলা যাবে।বকা দিলেও কেউ শুনতে পারবে না।

--স,,সরিি(দুজনে একসাথে বলে ওঠে)

--সরি স্যার আসলে,,

--নো নো ইটস অকে।সরি তো আমার বলা উচিৎ।কথার মাঝখানে ঋতু কে থামিয়ে দিয়ে।

এতদিন আমি একটা ঘোরের মাঝে ছিলাম। সবার সাথে রুড বিহাভ করতাম।না জেনে কতজনের মনে যে কষ্ট দিয়েছি কে জানে।তুমি আজকে আমার চোখে আঙুল দিয়ে আমার ভুল গুলো ধরিয়ে দিয়েছ। তারজন্য তোমায় ধন্যবাদ দিয়ে আর ছোট করতে চাই না।

--হয়েছে হয়েছে আর বলতে হবে না আপনাকে। আমি বুঝতে পারছি।

খুব হাসি পাচ্ছে আমার,লাটসাহেব সরি বলছে তাও আবার আমায়।হুশে বলছে নাকি বেহুশে আছে কে জানে।

--কি এত ভাবছো?

--ক,ককই কিছু না তোহ।

--মনে হলো ভাবছো কিছু।যাই হোক।

ফ্রি আছো তো?

--হু,কেনো বলুন তো?

--না মানেে মাথা চুলকিয়ে আসলে ভাবলাম তোমাদের কে নিয়ে বাইরে থেকে একটু ঘুরে আসি।

---ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনে তো আমার খুশি তে বাকবাকম অবস্থা। ঘুরতে আমি ভীষণ ভীষণ পছন্দ করি।

খুশিতে মুখে চওড়া হাসির রেখা ফুটে উঠলো ঋতুর।

--এইইই না নাাা,,তোমার না এক্সাম চলছে।

ওহহহ শীট আমি ভুলেই গেছিলাম। আর পড়া চুন্নি পড়া বাদ দিয়ে ঘুরতে যেতে চাইছে।

মনে হলো।কেউ ধপ করে জলন্ত আগুনের উপর পানির ঝাপটা মেরে দিয়ে গেলো।

যত তাড়াতাড়ি খুশি হয়েছিল তার থেকেও দ্বিগুণ স্পিডে মন খারাপ হয়ে গেলো ঋতুর শুভ্রের কথা শুনে।

--শুভ্র বিষয় টা বুঝতে পারলো।

অকে আমি নিয়ে যেতে পারি তবে এক শর্তে।

---আমি আপনার সব শর্তে রাজি।বলুন কি করতে হবে।

--তোমার নেক্সট কি এক্সাম আছে?

--ব্যবস্থাপনা।

--ঘুরে এসে ঠিক মতো পড়তে যদি বসার কথা দাও তাহলেই হবে।

--অকে ডান।

,



৫ টার দিকে বেরিয়েছিলাম বাসা থেকে ফিরতে ফিরতে রাত ৮ টা বেজে গেছিল।আমার এক্সামের জন্য বেশিক্ষণ ঘুরলো না।

শহরের মধ্যেই ঘুরাঘুরি করে কিছু কেনাকাটা করলাম।

বাইরে থেকে খাওয়াদাওয়া করে আসলাম।

আজকে আর কোনো কারণে বকাঝকা করেনি।

আর ভয়ে আমরাও কোনো রকম দুষ্টামি করি নি।কখন জানি বাঘ আবার গর্জন করে ওঠে।

বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসলাম। স্যার কে কথা দিয়েছি পড়বো একদিন ঠিক মতো।আর আমাকে সে কথা রাখতেই হবে।

,

এখন আর শুভ্র আগের মতো রাগারাগি করে না।ভার্সিটি,বাসা সব খানেই ফ্রেন্ডলি আচরণ করে।সবাই শুভ্রের এহেন আচরণে সত্যিই অবাক আর সেই সাথে খুশি ও।

শুভ্রের সাথে ঋতুর সম্পর্ক টা আগের থেকে উন্নতি হয়েছে।

দেখতে দেখতে ঋতুর এক্সাম টা খুব সুন্দর ভাবেই কেটে গেলো।

অর্থায়নের নীতিমালা টা একটু খারাপ হয়েছে এ নিয়ে ঋতুর মন খারাপ।শুভ্র ঋতুকে মানসিক সাপোট দিচ্ছে। কিচ্ছু হয় না একটা সাবজেক্টে খারাপ হলে।এবার খারাপ হয়েছে তো কি হয়েছে সামনে বার আরো ভালো হবে।

ঋতুর মন ভালো করার জন্য অবশ্য বাইরে নিয়ে যেতে হয়েছিল শুভ্র কে।

,

এদিকে দুই পরিবারে বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে।

আগাম সপ্তাহে শোভা আর অভির বিয়ে।

কত্ত কাজ পরে আছে।কত্তো কিছু কেনাকাটা বাকি আছে।

ঋতুর হয়েছে ঝামেলা।দুই পরিবারেই থাকতে হবে।

একদিকে সোনা মার কড়া আদেশ অন্যদিকে মনি মার।

মনি মায়ের কথা সে বুড়ো মানুষ,বয়স হয়েছে তার। এসব কি আর একা হাতে সামলাতে পারে নাকি সে।

আবার সোনা মাও কেমন জিদ ধরে বসে আছে।ঋতু কে ছাড়া নাকি বিয়ে বাড়ি মজা হবে না।

আমার এখন মনে হচ্ছে করাতের নিচে নিজেকে দিয়ে দুই খন্ড করে ফেলি।

,

এক্সামের পরে কয়েকদিন হলো ভার্সিটিতে যাওয়া হয় না।

তার জন্য সব হাম্রিগুলা আমার বাসায় চলে এসেছে।

--তোরা কখন এলি?আর আমায় কল দিলেই তো পারতিস আমিই চলে যেতাম দেখা করার জন্য।(আমি)

--ওমাাাাা!!আমরা কি তোর সাথে দেখা করতে এসেছি নাকি?শুভ্র স্যার আমাদের সবাইকে ইনভাইট করছে।

তাই গায়ে হলুদের আগেই চলে এসেছি।

--স্যার ওদেরকে ইনভাইট করেছে"কই আমায় তো কিছু বললো না একবারো।

যাক গা যার যা খুশি তাই করতে পারে তাতে আমার কি,হুহহহ

,

আসার পর থেকেই লক্ষ্য করছি সায়নী কেমন শুভ্র স্যারের পেছন পেছন ঘুরঘুর করছে।

কি ছ্যাঁচড়া ছেমড়ি রে বাবা গায়ে পড়া স্বভাব।মনে হচ্ছে শাঁকচুন্নি টারে ব্লেন্ডারের মধ্যে ঢুকিয়ে ব্লেন্ড করে জুস বানিয়ে খেয়ে ফেলি।এই লুচ্চা মাইয়্যারে ইনভাইট করতে বলছে কে ঐ খারুস টারে।অসহ্য লাগছে আমার ঐ ডাইনী টাকে।আমি বুঝতে পারছি না কেনো এমন হচ্ছে।স্যারের আশেপাশে কেনো জানি আমার অন্য কাউকেই সহ্য করতে পারি না।কেনো এমন হয় জানি না।আমি কি তাহলে স্যারকে মনে মনে..!!না নাাাহহহ

আমি কি এসব ভাবছি এসব।

সারাদিন শপিং এ ঘুরতে ঘুরতে বেহাল অবস্থা।এতো ঘুরাঘুরি করা যায় নাকি।কি আর করার বিয়ের শপিং কি আর যেমন তেমন ভাবে করা যায় নাকি..!

শোভা জন্য বিয়ের বেনারসি, জুয়েলারি সব কিছু স্যার আগে থেকেই অর্ডার করে রেখেছিল।

হলুদের সব কিছু আজকেই কিনে নিয়ে যেতে হবে।সময় তো আর বেশি হাতে নেই।

রাতের আধার কেটে ভোর হলেই নতুন আরেকটা দিনের সূচনা হতে চলেছে।আগামীকাল কেই শোভা আর অভি ভাইয়ার গায়ে হলুদ।

,

ছাদের উপর শোভার গায়ে হলুদের ব্যবস্থা করা হয়েছে।



একটু পরেই শুরু হবে শোভার হলুদ সন্ধ্যা।

পার্লার থেকে লোক এসেছে শোভা কে সাজানোর জন্য।

তারা শোভা কে সাজাতে ব্যস্ত।

ঋতু একটা সিম্পল হলুদ ড্রেস পড়ে আছে।তার মতে শাড়ি পরা একটা এক্সট্রা ঝামেলা।শাড়ি পরে ভালো করে হাটতে পারে না।এই তো সেদিন ওর এক কাকার বিয়েতে মায়ের জোরাজুরিতে শাড়ি পরে গেছিল বর যাত্রীদের সাথে।সেখানে গিয়ে কি কান্ড টাই না করলো ঋতু।কনে দেখতে যাওয়ার সময় কনে বাড়ির উঠোনের মাঝে শাড়ির সাথে পা পেচিয়ে তাল সামলাতে না পেরে পরে গেলো।কি একটা অবস্থা বিয়ে বাড়ির অত লোকের মাঝে।পরে ওর ঐখানকার একটা আন্টি এসে ঠিক করে দিল।সেদিনের কথা মনে হলেই লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করে।

ওর সব বান্ধবি গুলো শাড়ি পরেছে।আর সায়নীর কথা কি বলবো।সেই দুপুর থেকেই রুপ চর্চায় ব্যস্ত হয়ে পরেছে।যেনো ওর নিজেরই গায়ে হলুদ আজকে।

যেভাবে ময়দা মারছে ইচ্ছে করছে আমাদের বাসার সব ময়দা ওর মুখে ঢেলে দিয়ে বলি নে ধর আরেকটু নে কম হয়ে গেছে।

আদিখ্যেতা দেখলে গা জ্বলে যায়।আমি বুঝিনা কি কিছু সব কিছুই শুভ্র স্যারের ফোকাস পাওয়ার জন্য।

রিচুয়াল অনুযায়ী 

অভির গায়ে ছোঁয়ানো হলুদ কনের গায়ে দেয়া হবে।

বসে বসে শোভাকে সাজানো দেখছিলাম।শুভ্র স্যার পার্লারের এক কর্মচারী কে ডেকে কি বললো জানি না।ওরা জোর করে আমার গায়ের ড্রেস খুলে একটা হলুদ রঙের জামদানি শাড়ি পরিয়ে দিলো।এত জোর করলাম তবুও শুনলো না।আমার এখন ভীষণ কান্না পাচ্ছে।আবার না জানি ঐদিনের মতো ঘটনা না ঘটে।কাচা ফুলের গহনা আর কোমড়ে একটা ফুলের বিছা দেয়া।

,

রিচুয়াল অনুযায়ী বরের গায়ে ছোঁয়ানো হলুদ কনের গায়ে দিতে হবে।ঐ বাড়ি থেকে গায়ে হলুদের তথ্য নিয়ে সবাই আসা শুরে করে দিয়েছে।

সোনা মায়ের কথা মতো আমরা সবাই মানে আমি উর্মি,মধু,সায়নী,আশিক রা মিলে ঐ বাড়ি থেকে যারা আসবে তাদের হাতে একটা করে ফুল দিবো।

সবাই কে দেয়া শেষে একজন হাত পাতল ঋতুর সামনে।

আমি রজনীগন্ধা নিবো না আমায় গোলাপ দিতে হবে।

--সরিিি!!গোলাপ তো বলে উপরের দিকে তাকিয়ে ঋতু

আপনিিিিিহহহহহ

--মিটিমিটি হেসে,,হু আমি।কেনো অবাক হলে নাকি?(ইহান)

---না মানে আপনি এখানে?

--হুম আমিই এখানে।বর পক্ষের লোক মানে বরের বন্ধু আমি।

---আপনি অভি ভাইয়ার বন্ধু??কই আমি তো কখনো আপনাকে দেখিনি?

--তাই নাকি!!আমি তো তোমাকে দেখেছি।একবার নয় বহুবার।

--তাই নাকি?

--হুম তাই।একটা কথা বলবো?

--কেনো?এতক্ষণ কি বললেন না?

--হুম বলেছি তো তারপরেও অনুমতি চেয়ে নিচ্ছি,,

--তাই নাকি!!তা বলুন কি বলবেন।

পরি কখনো দেখিনি আমি তবে আমার সামনে দাড়িয়ে থাকা এক

মাটির তৈরী হলুদ পরী কে দেখেছি।

আমি না কখনো কারো প্রেমে পরিনি তবে আজকে খুব ইচ্ছে

করছে তোমার প্রেমে হারিয়ে যেতে।

বালিকা দেবে কি আমায় সেই সুযোগ একবার?

--ফ্লার্টিং করছেন আমার সাথে?

--না গো,,বিশ্বাস করো সত্যি বলছি।

হয়েছে বুঝলাম। ভেতরে গিয়ে বসুন আপনি আমি ঐদিক টা একটু দেখে আসছি।

--অকে।

অনুষ্ঠানে আসা সবার ফোকাস এখন ঋতুর উপর।ইহানের কথা গুলো ঋতু মজা হিসেবে উড়িয়ে দিলেও ইহান কথাগুলো মন থেকেই বলেছে।

ছেলেরা অনেকে ঋতুর পাশে ভাব জমানোর চেষ্টা করছে।

,

নিচে নামার সময় কেউ একজন ঋতুর হাত ধরে টেনে দেয়ালের সাথে হাত দুটি চেপে ধরে।

লোড শেডিং হলো মাত্র।অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।

নিচে নেমে রুমের দিকে যাচ্ছিল ঋতু হঠাৎ করে কে যেনো হাত ধরে টান দেয়।ইলেক্ট্রিক চলে আসায় বুঝতে পারে এটা এটা শুভ্রের রুম।

ব্যথায় ককিয়ে ওঠে ঋতু।দেয়ালের সাথে হাত চেপে ধরে দাড়িয়ে আছে শুভ্র।চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে ভয়ংকর রকমের রেগে আছে শুভ্র।মনে হচ্ছে এখনি তার চোখের আগুনে ঋতুকে ভস্ম করে দেবে।

শুভ্রকে রাগতে দেখেছে তবে এই রুপের সাথে আজকেই পরিচয় ঋতুর।ওর যতদূর মনে পরছে সে সারাদিন শুভ্রের থেকে দূরেই ছিল।তাকে তো রাগায়নি বা এমন কোনো কাজ করেনি যাতে শুভ্রর রাগ হয়।ঋতু বুঝতে পারছে না কি হলো হঠাৎ উনার।ভয়ে ঢোক গিলছে ঋতু।

---ক্্্কিিিি হয়েছে,,আমায় এখানে টেনে আনলেন কেনো?

--কি হয়েছে তুই জানিস না??ছেলেদের সাথে তোর এতো পিরিত কিসের?খুব (দাঁতে দাঁত চেপে বলছে কথাটা শুভ্র)

--ছেলেদের সাথে পিরিত করবো না তো কি মেয়েদের সাথে করবো?আমি কি সমকামী নাকি?

--খুব সাহস বাড়ছে নাহহহ,,আরো জোরে চেপে ধরে।

তোকে যেনো আমি ঐ ছেলের আশে পাশে আর না দেখি।

আর যদি দেখি তো তাহলে আগে ঐ ছেলেকে মারবো তার পরে তোকে।

---আহহহহহহ!!লাগছে ছাড়ুন।

--লাগুক,লাগার জন্যই তো দি,,,

ঋতুর চোখ থেকে দু ফুটা পানি গড়িয়ে পরলো শুভ্রের হাতে।

সাথে সাথে ঋতুকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায় শুভ্র।

সব সময় কেনো এমন করেন উনি!!একটু ভালো ব্যবহার করলে কি হয় উনার।সব সময় কেমন খারুসের মতো করে।

মনটাই খারাপ হয়ে গেলো ঋতুর।কত্ত সুন্দর মজা করছে সবাই।কেউ কিছু বলছে না কাউকে আর উনি কেন জানি আমার সাথেই এমন করে।ধুরররররর ভাল্লাগে না কিছু।

রুমে এসে শাড়ি খুলে ফেলে,,সব কিছু টেনে ছিড়ে ফেলে।

উনার কি!!আরো বেশি বেশি করে করবে ও।

আমি কি করবো না করবো উনাকে বলে করতে হবে নাকি মনে মনে এসব বলছে আর রাগ কমানোর চেষ্টা করছে ঋতু।

আদৌ এসব কথাগুলো জোরে বলার মতো সাহস আছে তো ঋতুর?

এদিকে ঐ বাড়ি

থেকে আসা মেহমান রা সবাই চলে গেছে।

ছাদে সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছে। আমার যদিও বা যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না তবে শোভার রিকুয়েস্ট না রেখেও পারলাম না।

জোর করে এসে ধরে নিয়ে গেলো।

ছাদে মাদুর পেতে গোল হয়ে সবাই বসে আছে।সবাই স্যারকে গান গাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে।

ভূতের মুখে রাম রাম।এই কর্কশ কন্ঠি কাক করবে কা কা?

'যেই না আমার গলা,নাম রাখছে সুরেলা'?

এতো তেলানোর কি আছে বুঝিনা,হুহহহহহ

ভাব দেখায় এক্সট্রা ভাব আরকি।কথা গুলো মনে মনে বলছে ঋতু।সাউন্ড হলে নিশ্চিত ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিবে জল্লাদ টা।

আসিক কে কি যেনো বললো ও নিচে চলে গেলো।

একটু পরে একটা গিটার হাতে করে নিয়ে এলো।

তারমানে গান গাইবে উনি।করুক না কিছুক্ষণ কা কা ভালই লাগবে।

.

.

চলবে
Like Reply
#13
#__Part__13
.
একটু পরে একটা গিটার হাতে করে নিয়ে এলো।
তারমানে গান গাইবে উনি।করুক না কিছুক্ষণ কা কা ভালই লাগবে।
গিটার হাতে নিয়ে টুংটাং করে আওয়াজ তুলছে চোখ দুটো বন্ধ করে।
''''''To Jo Rootha,To kaun hasega,tu jo
chlUta,to kaun rahega........
To chhup Hai to,Ye Darr lagta hain
Apna Mujhko Ab,Kaun Kahega..............
Tuhi wajah,Tere bina,Bewajah bekaar
                        Hoon Main
Tera Yaar Hoon Main...Tera Yaar Hoon
                           Main.....
Hu......Wuuuuuu...Huuuu.....Huu......
Aja Laade Fir,khillaquno ke liye,tu
Jeete Main Haar Jaun,Aaja Karre fir
Wahi Shararate,Tu Bhaage,Main
                  Maar Khaaun........
Meethi Shi Wo Gaali teri,Sunne Ko
                   Taiyar Hoon Main...........
Tera Yaar Hoon Main......Tera Yaar Hoon
        Main......Tera Yaar Hoon Main
Khushiyaan Ch Nachda Main Phiraar,
Hanjuaan Ta Bachda Main Phiraar.....
Oo......Ho Jaate Nahi Kahin Rishte
Puraane,Kisi Nayi Ke Aa Jaane Se,
Jaate Hoon Main,To Mujhe tu jaane
De,Kayun Pareshaan Hai Mere Jaane
                         Se............................
Toota Hai To,Judda Ha Kyun Mere
Tafaf tu mudd hai kayun,Haq Nahi Tu
Ye Kahhe ke, Yaar Ab Hun Na Rahe........
Ek Teri Yaar Ha hI,Saato Janam
Haadaar Hoon Main
Tera Yaar Hoon Main......Tera Yaar Hoon
Main....Tera Yaar Hoon Main....Tera
    Yaar Hoo Main...........
বলে থামলো শুভ্র।
আমি তো একদম হা হয়ে আছি।এত সুন্দর করে গাইছিল যে আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো হা হয়ে শুনছিলাম। একদম নেশা লেগে গেছিল।এত সুন্দর করে ও কেউ গাইতে পারে আমার জানা ছিল না।
তবে যখন আবার সন্ধ্যার সময় কার কথা মনে হল তখন মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
কি দরকার ছিল এমন করার।কি এমন করছিলাম আমি।শুধু ইহানের সাথে একটু কথা বলেছিলাম তাতেই ঐ বিহাব টা করলো।
সবাই শুভ্রের গানের প্রশংসা করছিল আর শুভ্র তার বিনিময়ে একটা করে তেডি স্মাইল দিচ্ছিল। 
উনি কি জানে যে উনার ঐ একটা হাসিতেই কত রমনীর রাতের ঘুম হারাম।জানলে হয়তো বুঝতো।
আড্ডা শেষে যে যার মতো নিচে চলে গেছে।অনেক রাত হয়ে গেছে ঘুমাতে যেতে হবে।সকাল সকাল উঠতে হবে আবার আগামীকাল।
ঘুম পাচ্ছে খুব।সারাদিনে কম ধকল যায় নি।আবার সকালে উঠতে হবে।এত ঘুম পেয়েছে যে মনে হচ্ছে এখানেই ঘুমিয়ে পড়ি।
হাই তুলতে তুলতে নিচে নামছিলাম।চোখে ঘুমে ঢুলু ঢুলু খাচ্ছে।আমার পক্ষে এ অবস্থায় নামা সম্ভব নাহ।
কি কেয়ারলেস মেয়েরে বাবা।দাঁড়িয়েই ঘুম পারছে।একে এখন ডেকেও লাভ নেই।
কোলে তুলে নেয় শুভ্র।আবছায়া আলো মুখ টা দেখতে কি মায়াবী লাগছে।মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকতে নেশা লেগে যাচ্ছে।বাতাসে এলোমেলো চুল গুলো মুখের সামনে এসে পরছে।ফুঁ দিয়ে সরিয়ে দিয়ে কপালে একটা ভালোবাসার পরশ একে দিলো শুভ্র।
মেহমানে গিজগিজ করছে পুরো বাড়ি।কোথাও পা রাখার মতো জায়গা নেই।ওর রুমে নিয়ে গিয়ে আলতো করে শুইয়ে দিলাম।শুভ্র মনে মনে হাসছে।এতকিছু হয়ে গেলো ও টেরই পেলো না।চলে আসার সময় হঠাৎ করে ঋতুর হাতের দিকে নজর গেলো শুভ্রের।বাম হাত টায় কেমন কালচে হয়ে আছে।
মনে পরে গেলো সন্ধ্যার কথা।দেয়ালের সাথে চেপে ধরায় এমন হয়ে গেছে।
ইশশশ!!কতই না ব্যাথা পেয়েছে মেয়েটা।আমিও নাহ কেমন জানি রেগে গেলে মানুষ থেকে বন মানুষ হয়ে যাই।
কি করবো,,ওর পাশে অন্য কাউকে দেখলে যে আমার মেজাজ খারাপ হয় সেটা কি আর ও বোঝে না নাকি?
তাও ঠিক ওকে আমি না বললে ও বুঝবে কি করে?
ব্যাথা পাওয়া অংশ নিজের গালের সাথে ঠেকিয়ে কিছু আদর করে ঋতুর গায়ে চাদর বিছিয়ে রুম আটকিয়ে দিয়ে চলে আসে শুভ্র।
,
সকালে ঘুম থেকে উঠে ঋতু ভাবছে সে তো যতদূর মনে পরে ছাদের রেলিং এর সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে ছিল।তাহলে রুমে আসলো কি করে?তাহলে কি ওর মা নিয়ে এসেছে??
--মা ও মাহহহ
--কিরে সকাল সকাল এত চিৎকার করছিস কেনো?
--রাতে আমায় কে ঘরে এনেছে?? তুমি এনে দিয়ে গেছো নাকি?
---কি যাতা বলছিস??পাগল টাগল হলি নাকি বলতো।
কে আনতে যাবে তোকে??তোর কি সাথে পা নেই?
--আমি তো ছাদেই দাড়িয়ে ছিলাম তাহলে এখানে এলাম কি করে?
--দেখ সকাল সকাল এসব ভাল্লাগছে না আমার।প্রচুর কাজ পরে আছে আমার হাতে।তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নে।
কয়টা বাজে সে খেয়াল আছে তো তোর?
--কি বলছো মা?কয়টা আর বাজবে বলো ঐ নয়টা হয়তো।
--আজ্ঞে না মহারাণী। বেলা ১২ টায় নবাবী ঘুম ভেঙ্গে এখন আসছে কয়টা বাজে।
--কিহহহহহ!!১২ টা বাজে আর তুমি আমায় একবারো ডাকলে না।
--তোমার কানের কাছে পুরো বাজার তুলে আনলেও তুমি টের পাবা না।এখন রেডি হয়ে নাও সবার শেষ হতে চললো।
--এত বকো না তোহহ।আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি টেবিলের খাবার দাও খুব ক্ষিদা লাগছে।আর শোনো আমি এখন কি পরবো একটু চুজ করে দাও তোহহ।
--শোনো মেয়ের কথা তুই কি এখনো ছোট বাচ্চাই আছিস নাকি?নিজের কাজ নিজে করে নে আমার কাজ আছে।
--ধুরররররররর বাল ভাল্লাগে

না।ব্রেকফাস্ট করে গোসল করে নিলাম আগে।সিম্পল একটদ ড্রেস পরে আছি।চুল গুলো হেয়ার ড্রাই দিয়ে শুকাবো আগে।এত গরমে চুল ছেড়ে দিলে থাকতে পারবো না আমি।
--মধু ডাকতে এসেছে কি রে তোর ঘুম ভাঙ্গলো তাহলে এতক্ষণে?আমরা ভেবেছি আজকে আর ঘুম ভাঙ্গবে না তোর।
??ওয়াওওওওওওওও,,এত্ত সুন্দর লেহেঙ্গা।

,
আলমারি খুলে ড্রেস খুজতে গিয়ে হঠাৎ একটা প্যাকেট হাতে এসে বাধে।
খুলে দেখি একটা নিউ লেটেস্ট মডেলের মহামানথানের লেহেঙ্গা।সিদূর লাল রঙের যার্দূসী ও কুন্দুল ওয়ার্কের কাজ করা।ঘের গুলা অনেক বড়।ডাবল ক্যান ক্যান দেয়া।
শোভার বিয়ের শপিং করতে গিয়ে লেহেঙ্গা টা আমার প্রথম দেখায়ই ভালো লেগে যায়।প্রাইজ জানতে চাওয়ায় বলেছিল তেইশ হাজারের মতো তাই আর নেয়া হয়নি পরে।
আসলে এটা কেনার মতো সামর্থ্য আমাদের ফ্যামিলির নেই।
কিন্তু এটা তো আমি মনে মনে পছন্দ করছিলাম কাউকে বলি নি।তাহলে কে এনেছে?নিশ্চয়ই আম্মা নিয়ে এসেছে।
কি দরকার এসব করার। শুধু শুধু এতগুলো টাকা নষ্ট করার কোনো মানেই হয় না।
--কিরে কবে কিনলি এত সুন্দর লেহেঙ্গা?কি সার্থপর তুই দেখেছিস।আমাদের বললে কি আমরা কেরে নিতাম নাকি?
--কি জানি!!
--মানে টা কি,তোর জিনিস আর তুই জানিস না।
--আমিই আজকে আর এখনি দেখলাম তাহলে তোদের বলবো কখন?মনে হয় আম্মা কিনে এনে রেখেছেন।
--সত্যিই আন্টির চয়েজ আছে বলতে হবে।আমাদের মা কেনো যে তোর মায়ের মতো হয় না।
--হয়েছে আর ন্যাকা কান্না করতে হবে না।আমায় একটু রেডি করে দে তোহ।
প্যাকেটের মাঝেই সব কসমেটিকস,জুয়েলারি ম্যাচিং করে রাখা আছে।আম্মা যে এইভাবে আমায় সারপ্রাইজ দেবে ভাবতেই পারি নি।
চুল গুলো সামনে কিছুটা পাম্প করে খোপা করে দিলাম।চোখে মোটা করে কাজল।দু হাত ভর্তি রিয়েল স্টোন লাগানো চুড়ি।কানে গলায় ম্যাচিং করা দুল ও হার।
ওড়না সুন্দর করে শাড়ির মতো স্ট্যাইল করে নিলাম।আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেই নিজেকে চিনতে পারছি না।লজ্জায় গাল দুটো লাল হয়ে যাচ্ছে।হারামি গুলা তো খুব পচাচ্ছে আমায়।
বাহহহহহ!!আমার মা টাকে তো খুব সুন্দর লাগছে আজকে।
দেখি একটা তীলক দিয়ে দেই যাতে করে কারো নজর না লেগে যায় তাই বলে সোনা মা নিজের চোখ থেকে একটু খানি কাজল নিয়ে আমার কপালে ছুইয়ে দিল।
সবাই আমার লেহেঙ্গার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।আমায় নাকি একদম রাজকন্যার মতো লাগছে দেখতে।
স্যারের রুমের সামনে দিয়েই শোভার রুমে যেতে হয়।পেছন থেকে কে যেন হাত টেনে ধরে।
--আহহহহ!!এত নড়াচড়া করো কেনো?একটু চুপ করে দাড়িয়ে থাকতে পারো না।
খোপায় একটা তাজা গোলাপ গুজে দিয়ে এবার ঠিক আছে যেতে পারো।
--মানে টা কি এই লোকটার সমস্যা টা কি?এমন অদ্ভুদ আচরণ করে কেনো বুঝি না।
সে যাই হোক সকাল থেকে শোভার কাছে একবারো যাওয়া হয়নি।সবাই শোভা কে সাজাতে ব্যস্ত। এদিকে সায়নী তো আমায় দেখে হা হয়ে আছে।
--মুখে মশা ঢুকবে মুখটা বন্ধ কর।সায়নী কে হা করে থাকতে দেখে বললাম। 
---এই লেহেঙ্গাতে তোমায় পুরো রাজকন্যার মতো লাগছে আপু।বাহহহ আমার ভাইয়ার পছন্দ আছে বলতে হবে।দেখতে হবে না ভাইয়া টা কার?
ঋতুকে দেখে শোভা কথাটা বললো।
--মানে টা কি শোভা?কি বলছিস এসব?
--ঠিকই তো বলছি। তুমি কি ভেবেছো আন্টি এনেছে এটা?
নাহহহ,তুমি যখন এটা বার বার চেয়ে চেয়ে দেখছিলে তখনি ভাইয়া তোমার অগোচরে এটা কিনে ফেলেছিল।আর তোমার মনে আছে আমি তোমায় একটা প্যাকেট দিয়েছিলাম এটাই সেটা।
কিহহহহহহহ!!!তারমানে আমি এতক্ষণ যা ভাবছিলাম সব কিছুই ভুল।স্যার এটা কিনেছে।কিন্তু কেনো রেখেছে।
স্যার আমায় এই লেহেঙ্গা টা গিফ্ট করছে শুনে সায়নীর মুখটা কালো হয়ে গেছে।ওর মুখটা দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছে বেচারা
স্যার কে নিয়ে কত্ত স্বপ্ন দেখছিল আর স্যার কি না।
চেঁচামেচি শুনে বাইরে চলে এলাম।বর চলে এসেছে।
সিড়ি বেয়ে দৌড়ে নামতে গিয়ে লেহেঙ্গার ঘের পায়ের নিচে পরে পরে যেতে গিয়ে স্যার ধরে ফেলে।
একদম ফিল্মি স্ট্যাইলে স্যার ধরে রেখেছে।দুজন দুজনার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।
বুকের ভিতর কেমন হাতুড়ি পিটাচ্ছে মনে হচ্ছে ধক ধক করছে।আমাদের এভাবে জরিয়ে ধরা অবস্থায় ফটোগ্রাফার ছবি তুলে নিলো কয়েকটা।আর এদিকে সবাই সিটি বাজাচ্ছে। এতক্ষণ দুজন যেনো একটা ঘোরের মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলাম। তুড়ির আওয়াজে হুশ ফিরলো আমাদের।
লজ্জায় আমার মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে।আল্লাহ তুমি মাটি ফাক করো আমি ঢুকে যাই।
দেখে শুনে চলতে পারো না?কেয়ার লেস একটা।উপরের কথাটা শুভ্র ঋতুকে বলে চলে গেলো।
লোকটা পারেও ভালো গিরগিটির মতো রং পাল্টাতে।
শুভ্র আজকে সাদা রঙের চিকেন কাপড়ের পান্জাবী পরেছে।
ফর্সা মানুষকে যে সাদা পান্জাবীতে এত সুন্দর লাগতে পারে তা আমার জানা ছিল না।
সাদা পান্জাবীতে স্যার কে এত সুন্দর লাগছিল যে বলার বাই রে।মন চাচ্ছিল সারাক্ষণ তাকিয়ে থাকিয়ে ওর দিকে।কেনো জানি আজকে বিরক্ত লাগছে না বরং এক ধরনের ভাল লাগা কাজ করছিল।

,
বর এসেছে।গেটের সব আমাদের রুলস পালন করলাম। বরপক্ষের থেকে একটা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছি।হোক না সে আমার ভাই তাতে কি আমি তো এখন কনে পক্ষের লোক।
ছাদে স্টেজ করা হয়েছে।অভি ভাইয়া কে সেখানে নিয়ে গিয়ে বসানো হয়েছে।
সবাই আমার পরিচিত তাই সব তদারকি করার ভার আমার উপর পরেছে।
ওয়েটার রা আছে সার্ভ করছে তার পরেও আমি মাঝেমধ্যে চেক করছি।সোনা মা ভেতরে আছেন ঐদিক টা দেখছেন।আঙ্কেল আর স্যার বর যাত্রীদের দেখছেন।
--শুভ্র বেইবি! কেমন আছো?
--আম ফাইন,ইউ?
--আম অলসো ফাইন।সরি বেবি লেট করে আসার জন্য।একচুয়েলি কাজ পরে গেছিল সেগুলো করতেই লেট হয়ে গেলো।
--ইটস অকে।ইটস নট ম্যাটার।
মেজাজ টা আমার ৩৬০ ডিগ্রি গরম হয়ে গেছে।এই এনা না তেনারে এখন আসতে বলছে কে?
রাগে আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে মনে হচ্ছে কেউ আমার গায়ে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দিয়ে রাখছে।
এই মেয়ে টাকে আমার একদমি সহ্য হয় না।আর ঐ ধলাচিকার কথাই বা কি বলবো মেয়ে দেখলেই লুচ্চামি শুরু হয়ে যায়।এত শখ কোলাকুলি করার।কই আমার সাথে তো কখনো করে না ঐ ডাইনীর সাথে এত কি?মনে হচ্ছে দুই ডারেই ধাক্কা দিয়ে ছাদের নিচে ফেলে দেই।
,
বিয়েটা আল্লাহর রহমতে খুব ভালোভাবেই কম্পিলিট হয়ে গেলো।এখন কনে কে ঐ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পালা।
সব রিচুয়াল শেষে কনে বিদায়ের শেষে শোভার সেকি কান্না।কিরে কেদে কেটে নদাী বানাবি নাকি?শোন তোর সব মেকাপ নষ্ট হচ্ছে এতে তোকে দেখতে পেত্নির মতো লাগবে।
আর দেখিস আমার ভাই যেনো ভয়ে না পালিয়ে যায়।
সোনা মা আঙ্কেল সবাই খুব কান্না করছে।কান্না করারই কথা।এক মাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা।এতদিন তীলে তীলে এত কষ্ট করে বড় করেছে।কখনো কোনো চাওয়া পাওয়া অপূর্ণ রাখে নি।খুব আদরের মেয়ে সবার।সবাই কে দেখছি এখানে কিন্তু স্যারকে কোথাও দেখতে পারছি না।উনি হঠাৎ কোথায় গেলেন? সবাই স্যারকে খুজছে।
স্যারকে পুরো বাসার কোথাও স্যার কে পেলাম না।উনি হঠাৎ কোথায় গেলো বুঝতেছি না।
এখন শুধু ছাদেই আছে বাকি খোজা।খুজতে খুজতে স্যারকে পেয়েও গেলাম।
স্যার,স্যারর,,নিচে সবাই আপনাকে খুজছে
ওমাাা একিিিি!!আমি কি দেখছি এসব।স্যার কান্না করছে এটাও কি সম্ভব।
শুনেছি ছেলেরা অধিক কষ্ট না পেলে নাকি কান্না করে না কখনো।হয়তো আদরের ছোট বোন টাকে বিদায় দেয়ার কষ্ট টাকে সামলাতে না পেরে এখানে চলে এসেছে। ছোট থেকে যাকে আদর দিয়ে বড় করে তুললো তাকে যে এক সময় বিদায় দিতে হবে এভাবে হয়তো এটা কখনো ভাবেনি।
আচ্ছা সব সময় মেয়েদের কেই কেনো এত ত্যাগ করতে হয় বলুন তো?বিয়ে করে ছেলের বাসায় থাকতে হবে কেনো?ছেলে রাও তো থাকতে পারতো।
শুভ্র হয়তো এতক্ষণ ধরে একজনকে খুজছিল যার বুকে মাথা রেখে একটু কান্না করতে পারে।
ঋতুকে জরিয়ে ধরে হু হু করে কাদঁছে শুভ্র।না ডাকে ও যে পারবে না চোখের সামনে দাড়িয়ে শোভার যাওয়া টাকে।
খুব কষ্ট হচ্ছে শুভ্রের।কষ্টে বুক টা ফেটে যাচ্ছে।
শুভ্রের এহেন কান্ডে ঋতু যেনো জমে পাথর হয়ে গেলো।নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেছে মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না।
এখন শুভ্র কে কি বলা উচিৎ ঋতুর জানা নেই।
নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছে ঋতু শুভ্রকে কিছু বলে স্বান্তনা দিতে হবে।
শুভ্রের চোখে পানি দেখে ঋতুর ও খুব কান্না পাচ্ছে। ওর ছোট থেকে একটা বদ অভ্যাস আছে যে কারো কান্না দেখলে নিজেও কেঁদে ফেলে।
এই মুহূর্ত এমন টা করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
 স্যার প্লিজজজ কান্না করবেন না।দেখুন এক টা নির্দিষ্ট সময় পরে সব মেয়েকেই এভাবে তার পরিবার ছেড়ে অন্য অচেনা একটা পরিবারে যেতে হয় এটাই নিয়ম।
দেখুন না আপনার মা আমার মা সবাই এই নিয়মে গেছে।
আপনি শান্ত হন প্লিজ।আর শোভা তো দূরে কোথাও যায় নি।এখান থেকে এখানেই আছে।যখনি মন চাইবে চলে আসবে আর আপনিও দেখতে যেতে পারবেন।
আর চিন্তা করবেন না অভি ভাইয়া শোভাকে সুখেই রাখবেন।
আমার মনি মা শোভা কে নিজের মেয়ের মতোই রাখবেন।আপনি কোনো চিন্তা করবেন না প্লিজ।
ঋতুর গলায় কেমন যেনো দলা পাকিয়ে আসছে।ও কি বলছে নিজেই জানে না।
শুভ্রকে শান্ত করতে গিয়ে ও নিজেই কেঁদে ফেলছে।
কাঁদতে কাঁদতে হিচকি উঠে গেছে ঋতুর।
শুভ্রের এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি অবস্থা। নিজের দুঃখ কোথায় ভোলাবে সেখানে ওকে এখন ঋতুর কান্না থামাতে হবে।
শুভ্রের খুব হাসি পাচ্ছে এখন কিন্তু হাসতে গেলে এখন অবস্থা বেগতিক হতে পারে।
.
.
.
Like Reply
#14
#__Part__14



শুভ্রের খুব হাসি পাচ্ছে এখন কিন্তু হাসতে গেলে এখন অবস্থা বেগতিক হতে পারে।

পেট ফেপে শুভ্রের হাসি আসছে।এই প্রথম ও কাউকে দেখছে যে একজনের কান্না থামাতে এসেই নিজেই কান্না করছে।

হাহাহা করে হেসে দিল শুভ্র।হাসি যেনো থামছেই না।শুভ্রের খুব মজা পাচ্ছে।

স্যারের সাথে সাথে আমিও যে কখন বাচ্চাদের মতো ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কান্না শুরু করে দিছি বুঝতেই পারি নি।

খুব রাগ হচ্ছে স্যারের উপর।কেমন শয়তানের মতো করে হাসছে দেখো ব্যাটা বিটকেল একটা।

রাগে আমার শরীর রি রি করছে।যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর।

চলে যাচ্ছিলাম স্যার এক ঝটকায় হাত ধরে টান দেয়ায় হুরমুর করে স্যারের বুকে এসে আছড়ে পড়লাম।

এত কাছে কখনো আসি নি।স্যারের গায়ের পারফিউম এর তীব্র কড়া ঘ্রাণ আমার নাকে এসে লাগছে।কেমন মাতাল করা একটা ঘ্রাণ।

আমি স্পষ্ট স্যারের বুকের হৃদ স্পন্দন শুনতে পাচ্ছি। গণনা করার চেষ্টা করছি ১,২, ৩,,,,,,,

--পিচ্চি মানুষের এত রাগ?অবশ্য লাগলে তোমায় তোমাদের পাড়ার কুনুর মতো লাগে দেখতে।

---কিহহহহহ!!এত বড় অপমান।

হাত সরানোর যতই চেষ্টা করছি স্যার ততোই বুকের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে ধরছে।কে বলছে আমায় দেখতে হুহহ

যান না আপনার সেই ন্যাকু এনার কাছে।

--পিচ্চি মানুষের গায়ে যে এত জোর আগে জানতাম না তোহ।আর হ্যাঁ যাবোই তো আমার এনার কাছে।

তাতে তোমার কি হু?

--হ্যাঁ আমার কি?

--সত্যি তোমার কিছু না তো?

--নাহহ কিছুনা।

--ভেবে বলছো তো?

--এত ভাবার কি আছে?

--যদি কিছুই না হবে তাহলে তোমার এত জ্বলে কেনো আমার পাশে কোনো মেয়ে কে দেখলে?

--ক,,, কককিিিি ব,,বললছেনন?জ,,জ্বললবে কেেনো?

--ভালোবাসো?

-ক,,,কিিিি বলছেন এসব?ছাড়ুন কেউ এসে দেখে ফেলবে।

--না ছাড়বো না আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও।

ঋতুর ঘাড়ের মুখ গুজে আছে শুভ্র।মাঝেমাঝে ঘাড়ে গলায় সুরসুরি দিচ্ছে। ঋতুর সারা শরীর জুরে শিহরণ বয়ে যাচ্ছে।

রক্ত চলাচল যেনো বন্ধ হয়ে গেছে।জমে পুরো শরীর পাথর হয়ে গেছে।নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেছে।

কি বলছে শুভ্র এসব?শুভ্রের ভালোবাসো কথাটায় যেনো পুরো শরীর জুরে একটা বাতাস বয়ে গেলো।

ঋতু কি বলবে ভাবছে।

--কি হলো কিছু বলছো না কেনো?ভালোবাসো আমায়?

--মোটেই নাহহ।আমি আপনাকে ভালোবাসতে যাবো কেনো?

--সত্যি তো?

--হু সত্যি।

--তাহলে কেনো আমার কষ্টে তোমার চোখে পানি আসে?কেনো তুমি আমার পাশে সায়নী বা এনাকে সহ্য করতে পারো না?আনসার মি ড্যামন।

--ঋতু কিছু না বলে ছাদ থেকে নেমে যায়।

আমিও দেখে নিবো মিসেস চৌধুরী কতদিন এভাবে তোমার মনের মধ্যে আমার জন্য আস্তে আস্তে গড়ে ওঠা ভালোবাসাকে ইগনর করো।তোমায় তো আমার কাছে আসতেই হবে।

তুমি নিজে আমায় এসে ভালোবাসি বলবে।শুভ্র মনে মনে নিজের সাথে কথাগুলো বলছে।

,

বর যাত্রীরা অনেকক্ষণ হলো কনে নিয়ে চলে গেছে।নিচে গিয়ে শোভার সাথে কথা বলে নিয়েছে ঋতু।ওরা ভালোভাবেই পৌছে গেছে বাসায়।শুভ্রদের বাড়ি টা কেমন চুপচাপ কারো মুখে কোনো কথা নেই আর ঐদিকে অভিদের বাসায় তার উল্টো টা।সবাই নতুন বউকে বরণ করায় ব্যস্ত।

বর বউয়ের সব রিচুয়াল শেষ করে শোভা কে অভির ঘরে রেখে এসেছে। খুব ভয় করছে শোভার।এতদিন ধরে দুজন এই দিনটার অপেক্ষা করে এসেছে। আজ ওরা এক হতে পেরেছে।ঘড়িতে ১১ টা বাজতে চললো এখনো রুমে অভির আসার কোনো খবর নাই।এই ছেলেটা কে আমি আজো বুঝে উঠতে পারলাম না।কোনো কান্ড জ্ঞান নেই নাকি।ঘরে নতুন বউকে রেখে আড্ডা দিচ্ছে আগে আসুক রুমে তারপর জম্মের মতো আড্ডা দেয়াবো।মনে মনে রাগ করছে শোভা।

দরজায় ঠক ঠক আওয়াজ হওয়া শোভা ঠিক ঠিক করে বসলো।ঘোমটা টা আরো নিচে টেনে দিল।

নিজেকে যথা সম্ভব গুটিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।

নার্ভাস নেসে ঘিরে রেখেছে যেনো চারিপাশ।

আজকে শোভার নতুন জীবনের প্রথম সকাল।

সকালে ফোনে বাবা মায়ের সাথে কথা বলেছে।ওরা কিছুক্ষণের মাঝেই চলে আসবে।অভির মা খুব ভালো।

অমায়িক ব্যবহার তার।অল্প সময়েই কেমন শোভা কে আপন করে নিয়েছেন।

,

সকাল থেকে শুভ্র কেমন ঋতুকে ইগ্নোর করছে।ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে এনার সাথে ঘুরছে।

ঋতুর খুব কষ্ট হচ্ছে এসব কেনো যেনো। সহ্য করতে পারছে না।

এনা টা ও না কেমন বেশরম যে শুভ্রের গায়ে ঢলে ঢলে পরছে।

সবাই রেডি হচ্ছে অভি দের বাসায় যাওয়ার জন্য।

মেয়েরা সবাই একসাথে রেডি হচ্ছে।

শুভ্র এসে এনা কে ডাকছে।

এনা এদিকে এসো তো।এই ড্রেস টা পরে রেডি হয়ে আসো।

ঋতুকে দেখিয়ে দেখিয়ে বলছে শুভ্র।

--শুভ্র বেবি এসবের কোনো দরকার ছিল না।আম ফাইন।

--কে বলছে দরকার ছিল না?যাও রেডি হয়ে আসো কুইক।

--অকে বেবি।যাস্ট ওয়েট করো।

শুভ্র মনে মনে বলছে "দেখবে শুনবে আর লুচির মতো ফুলবে"।

এই ন্যাকু টাও হয়েছেএকটা ড্রেস পেয়ে খুশিতে কেমন গদগদ করছে দাড়াও তোমায় দেখাচ্ছি মজা।

একবার তোমায় বাগে পেয়ে নেই চান্দু তারপর বুঝাবো কত ধানে কত চাল।কেঁদেও কুল পাবে না তখন তুমি।

,

ঋতু টকটা নীল শাড়ি পরেছে যার পার দিয়ে কালো রঙের কাজ করা।সাথে ম্যাচিং কানের দুল গলায় সিম্পল একটা চেইন।হাতে এক গুচ্ছো রেশমি চুড়ি।

চোখে হাল্কা কাজল দিয়ে চুল গুলো এক পাশে সিথি করে ছেড়ে দেয়া।

--ওয়াওওওও!!দোস্ত তোকে না খুব সুন্দর



লাগছে আজকে।নজর ফেরানো দায় তোর থেকে।

আমি নিজেই ক্রাশ খেয়ে ফেলছি তোর উপর।

আমি ছেলে হলে তোকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেলতাম।

--হয়েছে তোর বকবক?আমি মরি আমার জ্বালায় আর উনি আছেন বিয়ে নিয়ে।

আদিখ্যেতা দেখে গা জ্বলে যায় আমার।

শুভ্র ও আজকে একটা নীল পান্জাবী পরেছে।এই ছেলে যাই পরে না কেনো সব কিছুতেই ওকে সুন্দর লাগে।

শেভিং করে না কয়েকদিন মনে হয়। দাড়ি গুলো কে ধরে রেখেছে।ছোট ছোট করে ছেটেছে।

খোচা খোচা দাড়িতেই ছেলেদের কে মানায়।

ঐ বদ লোকটা ও নীল পরছে।

আমি যে ওর সামনে এসে দাড়িয়ে আছি সেটা দেখেও না দেখার ভান করে আছে।অন্য সময় হলে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে থাকতো আর এখন ফিরে তাকাচ্ছে না।

--ছটু,এই ছটু দেখতো আমায় কেমন লাগছে?

--কেমন লাগছে আবার? সুন্দরই তো লাগছে।

--সত্য করে বলতো কেমন লাগছে?একটু ভালো করে দেখ তাকিয়ে।

---এক কথা কয়বার জিজ্ঞাস করিস?বললাম তো ভালো লাগছে।

---ধুরররররর ভাল্লাগে না।

ঋতু শুভ্রকে দেখিয়ে দেখিয়ে ছটুকে ডেকে বলছিল।ভেবেছিল শুভ্র ওর দিকে তাকাবে।কিন্তু শুভ্রের মাঝে কোনো পরিবর্তন নেই।শুভ্র মনে মনে হাসছে ঋতুর কান্ড দেখে।

,

সবাই গাড়িতে উঠে গেছে শুধু ঋতু ছাড়া।ও মধুদের গাড়িতে গিয়ে দেখলো সবাই বসে পড়ছে কোনো সীট খালি নেই।

একে একে সব গাড়িই দেখলো কোথাও সীট ফাঁকা নেই শুভ্রদের গাড়ি ছাড়া।শুভ্র আর এনা আছে বসে।

এনা তুমি আমার ঐখানে বসলে কেনো?আমার পাশে এসে বসো।

--ওহহ শীট।ওয়েট বেবি আমি আসছি এখনি।

শুভ্র ড্রাইভ করছে আর তার পাশে এনা বসে আছে।

এত অবহেলা আর ভালো লাগছে না ঋতুর।চোখ দুটো ছলছল করছে মনে হচ্ছে এখনি কেঁদে দিবে।না এখন কাঁদলে শুভ্র দেখে ফেলবে।ওর কাছে আমার চোখের পানির কোনো মূল্যই নেই।যদি থাকতোই তাহলে আর এত কষ্ট দিতে পারতো না আমায়।

ঋতু বুঝতে পারছে শুভ্র সব ইচ্ছে করেই করছে ওর মুখ থেকে ভালোবাসি কথাটা শোনার জন্য।কিন্তু ঋতু তো ভালোবাসে না শুভ্রকে।তাহলে কেনো এত কষ্ট হচ্ছে শুভ্রের অবহেলায়।

পুরো রাস্তা জুরে এনা শুভ্রের বকবক শুনে মাথা ধরে গেছে।কই আমার সাথে তো কখনো এত কথা বলেনি আর ঐ ত্যানার সাথে এত কথা বলে।হুহহহহ বললে বলুক আমার কি?

আমি তো ওকে ভালোই বাসি না।ঋতু ওর মনের সাথে যুদ্ধ করছে।সত্যিই কি তাই?নাকি ওর মনের ওপর জোর করছে ঋতু?ও নিজের মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছে।

নাহহ এখন আর নিজের মন কে বেধে রাখবে না শিকলের বাধন দিয়ে।ওর মন টাকে মুক্ত করে দিল। সে যা চাইবে তাই করবে ঋতু।আর যাই হোক মনের উপর কারো জোর চলে না।

,

শোভার সাথে দেখা করে এসেছে ঋতু।মনি মা তো আমার সাথে কোনো কথাই বললো না। গিয়ে দেখি খুব রাগ করে আছে।কত্ত কষ্ট করে তার রাগ ভাঙ্গাতে হলো।

আমি আজকে এখানে থাকবো বলে রাগ ভাঙ্গল।

মধু রা এখানে সবাই নতুন তাই ওদের পুরো বাড়ি টা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছিলাম।

কোথা থেকে যেনো ইহান এসে সামনে দাড়িয়ে পরে।

--বালিকা কেমন আছো?

--দেখতেই পারছেন কেমন আছি।

--ইশশ!!এভাবে হাসি দিয়ো না বালিকা।আমি তোমার হাসিতেই ঘায়েল হয়ে গেছি।

--কি আবোলতাবোল বলছেন এসব?আপনার মাথা ঠিক আছে তো?

---সে তো কবেই হয়েছি পাগল তোমার প্রেমে।সে তো নতুন না।তোমার একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ব্যাকুল এই পাগল।

বালিকা বাসলে ভালো একটু ক্ষতি কি?

--আপনি ফ্লার্টিং করতে খুবই ভালো পারেন।

--ওহে বালিকা

ফ্লার্টিং না,মত্ত তোমার প্রেমে দিওয়ানা।

--এবার কিন্তু আমার সত্যি সত্যি রাগ হচ্ছে।

--রাগো না।রাগলে তোমায় রসগোল্লার মতো লাগে।

--কি বললেন?

--সত্যি তো বলেছি।

--ধুরররররর!!থাকেন আপনি।

---আরে আরে বালিকা কই যাও?

---জাহান্নামে।যাবেন?

--সে তুমি বললে তো আমি পাতালেও যেতে রাজি।

পাতালে যেতে হবে না আপাতত ছাদে যাবো।এত কোলাহল আমার ভালো লাগে না।যাবেন নাকি আমি একাই যাব?

--না তো বলিনি বালিকা।

--তো চলুন।

চারিদিকে অন্ধকার নামতে চলেছে।যে যার নীড়ে ফিরে চলেছে।

--গৌধুলি সন্ধ্যা ভালো লাগে?

-হুমমম,,খুউউব।

--কবিতা পারেন?

--পারি কিনা জানিনা তবে

তবে কি?

তোমার জন্য আমি কবি হতেও রাজি।

"চোখ কেড়েছে চোখ

উড়িয়ে দিলাম ঝড়া পাতার শোক।"

--বাহহ! সুন্দর ছন্দ মিলান তো।

আপনার প্রিয় কবি কে?

-রুদ্র গোস্বামী। 

কয়েক লাইন বলুন আপনার পছন্দ মতে।



                        অসুখ



আজকাল কি যে উল্টোপাল্টা বায়না শিখেছে ও

যখন তখন এসে বলবে,ওর একটা আকাশ চাই।

আর আমিও বোকার মত সব কাজ ফেলে

                    ওর চোখের মাপের আকাশ খুঁজতে থাকি।

                   শুধু কি তাই!তাতেও আবার ওর আপত্তি 



এটাতে বলে মেঘ ভর্তি তো ওটাতে এক ঘেয়ে আলো

গৌধুলি আকাশ দেখলেই ও আবার লজ্জায় মরে যায়।

আমার হয়েছে জ্বালা,মেঘ থাকবে না রোদ থাকবে না

এমন একটা আকাশ আমি কোথেকে খুঁজে আনব?

                    গোলাপ হবে অথচ কাঁটা হবে না।



রঙটাও আবার লাল?এমন আবার হয় নাকি!

একটা আমি কিছুতেই বুঝতে পারি না,

      ভালোবাসা বুকে এসে বসলেই মানুষ কেন পাখি হতে চায়।

        ---রুদ্র গোস্বামী



ঋতু এতক্ষণ গভীর মনোযোগে ইহানের কবিতা আবৃত্তি শুনছিলো।এত সুন্দর করে কবিতা আবৃত্তি করছিল যেনো মনে হচ্ছিল মনের সব টা ঢেলে দিয়েছে কবিতার মাঝে।



নিজেকে বিলীন করে দিয়ে রেখেছে।

খুব সুন্দর কবিতা বলেন তো আপনি।

-তোমার মতো সুন্দর করে তো আর না।

--কি বিরবির করছেন একা একা?

-হু,কই কিছু না তোহ।চলো নিচে যাওয়া যাক।তোমায় খুজতে পারে নিজে অনেকক্ষণ হলো এসেছো।

-- হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে সাত টা বাজতে চললো।আসলে শহরে কখন সকাল, কখন রাত বোঝা যায় না।দেখতে কখন আধা ঘন্টা পার হয়ে গেছে খেয়ালই করে নি ঋতু।

কি করবে নিচে গিয়ে শুভ্র আর এনার কার্যকলাপ সহ্য করার থেকে এখানেই শ্রেয় বসে থাকা।

ফোন বেজে উঠলো হঠাৎ ঋতুর।মধু কল দিয়েছে।হয়তো খুজে পাচ্ছে না নিচে তাই।পাবে কি করে আমি তো ছাদে।

,

--কিরেেে কই ছিলি তুই এতক্ষণ? তোকে স্যার খুজছে সেই কখন থেকে।

--উনি আমায় খুজবে কেনো?যা গিয়ে দেখে আয় কেনো ডাকছে।

বলতে বলতে ফোনের স্কিনে জল্লাদ লেখা নাম্বার টা ভেসে উঠলো।ধরবো না ধরবো না করেও ধরলাম।

---কোথায় তুমি?

--আপনাকে বলতে আমি বাধ্য নই।ফোন দিয়েছেন কেনো সেটা বলুন।মধু বললো আমায় খুজছেন আপনি

--ওহহ হ্যাঁ আসলে আমার আর এনার কয়টা কাপল পিক তোলার জন্য তোমায় ডেকেছিলাম।

এখানে ভালো কাউকে পাচ্ছি না যে তুলে দিবে।

কত্তবড় বেয়াদব দেখছো আমায় বলে কিনা কাপল পিক তুলে দিতে।তোর পিক তুই তোল খবরদার আমায় কল দিবি না।

রাগে আমার মেজাজ গরম হয়ে আছে মনে হচ্ছে সামনে পেলে দুইটাকেই আমি লবন মশলা ছাড়া চিবিয়ে গিলে খাইতে পারলে গায়ের জ্বালা মিটতো।

পেছনে ঘুরে দেখি বদ লোক,লুচু ব্যাটা দাড়িয়ে আছে।

হলুদের দিনে ইহানের সাথে দেখায় রেগে গেছিল না?

মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধি চাপলো।

দাড়াও চান্দু কি ভেবেছো মজা শুধু তুমিই নিতে পারো আমি পারি না???এখন দেখবা আর জ্বলবা।

লও ঠ্যালা জ্বলা কারে কয়।

শুভ্রের সামনে ইহানের হাত ধরে নিয়ে আসলাম। এহেন ঘটনায় ইহান অবাক আর শুভ্র রেগে ফায়ার।তাতে আমার কি আমি ও তো তাই চাইছি।এই ঋতু রশনিও পাল্টা চাল দিতে জানে।

শুভ্রকে দেখিয়ে দেখিয়ে ইহানের সাথে ঘুরছি।শুভ্র বার বার রাগী চোখে তাকাচ্ছে আমার দিকে।তাতে আমার কি?

আমিও তো এটাই চাইছি।

আমরা এখন পুকুরপাড়ে বসে আছি।ইহানের একটা ইমারজেন্সি কল আসায় সে আসছি বলে চলে গেলো।

ভয়ে আমার জান যাবার মতো অবস্থা। ভূত দেখে নয় আমার ডেভিল টিচার কে দেখে।আমার সামনে দাড়িয়ে গোঁখরা সাপের মতো শুধু ফোস ফোস করছে।চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।আমি এখন পালানোর মতো রাস্তা খুঁজছি।

কিন্তু কোনো পথ খুজে পাচ্ছি না।আজকে আর আমার বাঁচার কোনো রাস্তাই নেই।

ভয়ে আমার ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি অবস্থা।

শুভ্র এগিয়ে আসছে আমার দিকে আর আমি পিছাচ্ছি পিছাতে পিছাতে একদম পানির কাছে চলে এসেছি। একটু সরলেই পরে যাবো।পা পিছলে পরতে গেলেই শুভ্র হাতটা ধরে ফেলে।ঋতু তো ভয়ে চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলে এই ভেবে যে ও হয়তো পরে গেছে।সাঁতার জানেনা পরলে আজ আর নিস্তার থাকবে না।

শুভ্র ঋতুকে টানতে টানতে গাড়ির সামনে এনে গাড়ির ডোর খুলে ভেতরে জোর করে বসিয়ে রেখে লক করে দিল।

--কি করছেন টা কি??আমায় ধরে আনলেন কেনো?

আর কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন??আমি কিন্তু চিৎকার করে লোক জরো করবো।বলবো আপনি আমায় কিডন্যাপ করে বিক্রি করতে যাচ্ছেন।

--স্টপ ইট ননসেন্স।

--চুপ করবো না আমি আরো চেঁচাবো। আপনি আমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? 

এতক্ষণ অনেক কষ্টে রাগ টাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছিল শুভ্র কিন্তু ঋতুর জন্য তা আর হলো না।এবার আর চুপ থাকতে পারলো না।

দাঁতে দাঁত চেপে খুব ভালো লাগে অন্য পর পুরুষের ছোয়াঁ তাই না?

তোকে আমি নিষেধ করছিলাম না ঐ ছেলের সাথে মিশতে?তারপরেও কেনো,কোন সাহসে তুই কথা বললি ওর সাথে?

কি হলো কথা বল,এতক্ষণ তো মুখে খুব খই ফুটেছিল।

--আমি কার সাথে মিশবো না মিশবো তা আপনাকে বলতে হবে?কই আপনি যখন এনার সাথে থাকেন আমি তো কিছু বলি নি।তাহলে আমার সাথে কেনো করছেন?

---মুখে খই ফুটছে খুব তাই না?

--হ্যাঁ ফুটছেই তো।কোন অধিকারে আপনি আমায় শাসন করছেন?কিসের অধিকারে আপনি আমার উপর জোর খাটাতে আসেন বলুন।আনসার দিন।আমি কি করবো না করবো সব আপনাকে বলতে হবে আমার।কেনো বলুন?

আপনার একটা মেয়েতে হয় না দুকা লাগে?

--ঋতুর কথায় শুভ্রের চোয়াল শক্ত হয়ে আসছে।গাড়ি ঘুরিয়ে সোজা বাই পাসের দিকে ছুটে চলেছে।

হাই স্পিডে গাড়ি চালিয়ে চলেছে।যেকোনো সময় এক্সিডেন্ট হতে পারে।ঋতু ভয়ে চুপসে আসে।

মুখে হাত দিয়ে আছে কি বলতে কি বলে ফেলেছে।

শুভ্রের মাথায় শুধু ঋতুর বলা কথা গুলোর বার বার প্রতিধ্বনি হচ্ছে।

'।কোন অধিকারে আপনি আমায় শাসন করছেন?কিসের অধিকারে আপনি আমার উপর জোর খাটাতে আসেন বলুন।আনসার দিন।আমি কি করবো না করবো সব আপনাকে বলতে হবে আমার।কেনো বলুন?''

.

.

চলবে
Like Reply
#15
#__Last__Part


কোন অধিকারে আপনি আমায় শাসন করছেন?কিসের অধিকারে আপনি আমার উপর জোর খাটাতে আসেন বলুন।আনসার দিন।আমি কি করবো না করবো সব আপনাকে বলতে হবে আমার।কেনো বলুন?''
--ঋতুর কথায় শুভ্রের চোয়াল শক্ত হয়ে আসছে।গাড়ি ঘুরিয়ে সোজা বাই পাসের দিকে ছুটে চলেছে।
হাই স্পিডে গাড়ি চালিয়ে চলেছে।যেকোনো সময় এক্সিডেন্ট হতে পারে।ঋতু ভয়ে চুপসে আসে।
মুখে হাত দিয়ে আছে কি বলতে কি বলে ফেলেছে।
শুভ্রের মাথায় শুধু ঋতুর বলা কথা গুলোর বার বার প্রতিধ্বনি হচ্ছে।
এদিকে সবাই শুভ্র আর ঋতুকে খোজাখুজি করে না পেয়ে সবাই বাসায় চলে আসে।
,
শুভ্র আর ঋতু এখন বসে আছে কাজি অফিসে।
এসি চলছে ফুল ভলিউমে তারপরেও ঋতু ঘামছে।শুভ্রকে দেখতে ভয়ংকর লাগছে।একদম ক্ষ্যাপা পাগলের মতো মনে হচ্ছে শুভ্রকে।যেনো কিছু বললেই তেড়ে আসবে সে।
কেনো যে তখন রাগের মাথায় ঐ কথা গুলো বলতে গেলাম।
নিজেই এখন ফেসে গেলাম।আসলে সব দোষ আমারি।উনি নিষেধ করার পরেও ইহানের সাথে কথা বলতে গেলাম।
আসলে রাগ হচ্ছিল এনার সাথে দেখে তাই তো।
--স্যাররর প্লিজজ এমন করবেন না আমার সাথে।
প্লিজ আমায় যেতে দিন।
--একদম চুপচাপ এখানে বসে থাকবে।যা বলবো শুধু তাই করবা।
--বাসায় সবাই টেনশন করছে প্লিজ আমায় যেতে দিন।
--যাস্ট স্টপ।সিগনেচার টা করে দাও তাহলে বাসায় যেতে পারবে।
--নাহহহ,,আমি সই করবো না।
--দেখো ঋতু।আমায় তুমি রাগিয়ে সই করতে বাধ্য করো না।এর ফল কিন্তু ভালো হবে না।
--জানি এখন আর কিছু বলেও কোনো লাভ হবে না।
এক হাত দিয়ে চোখের পানি মুচছে আর অন্য হাত দিয়ে সই করছে।
শুভ্র ও কোনো কিছু না ভেবেই সই টা করে পেপারস কাজি সাহেবের হাতে ধরিয়ে দিল।
সব আনুষঙ্গিকতা শেষ করে বিয়ের কার্য সম্পূর্ণ হলো।
ঋতু ভাবছে এখন বাসায় গিয়ে কি বলবে।ওর মাকে গিয়ে কি জবাব দেবে কে জানে।
অনরবত চোখ দিয়ে পানি পরছে।বাসায় যদি না মেনে নেয়?
সোনা মা,আঙ্কেল এদের কে কি বলবে ঋতু?মুখ দেখাবে কি করে।
এখানে তো ঋতুর কোনো দোষ নেই।যা কিছু করেছে শুভ্র।
বাসার সামনে এসে গাড়ি পার্কিং করলো শুভ্র।ঋতুর পা দুটি যেনো অসার হয়ে আছে।চলতেই চাইছে না।মনে হচ্ছে পা যেনো কেউ কিছু একটা বেধে দিয়েছে।
ভয়ে ভেতরে যাওয়ার মতো সাহস পাচ্ছে না ঋতু।
,
সবাই শুভ্রদের বাড়ির ড্রয়িংরুমে বসে আছে।সেখানে ঋতুর মা,বোন ও উপস্থিত আছে।
কলিংবেল দেয়ার সাথে সাথেই দরজা খুলে দিল সোনা মা।
--কিরেেেে কোথায় হারিয়ে গেছিলি দুজন?
সবাই পাগলের মতো খুজছে তোদের।ও যেনো ছোট মানুষ কিন্তু তুই তো কল করে বলতে পারতিস শুভ্র।
--একসাথে এত প্রশ্ন করলে উত্তর দিবো কিভাবে?
--কোথায় হারিয়ে গেছিলি বিয়ে বাড়ি থেকে।
--কাজি অফিসে গেছিলাম বিয়ে করতে।আর কিছু জানার আছে?
শুভ্রের এমন উত্তরে সবাই হা হয়ে আছে।কি বলছে কি লোকটা।মনে হচ্ছে উনার কাছে এটা গর্বের বিষয়।কেমন বুক ফুলিয়ে বলছে দেখো।
কথাটা হজম করতে সবার সময় লাগলো।
--কিরে ঋতু মা,শুভ্র কি বলছে এসব?
--এই ঋতু শুভ্র কি বলছে এসব?চুপ করে আছিস কেনো তুই?উত্তর দে।
--উনি যা বলছে ঠিকই বলছে সোনা মা।কাপা কাপা স্বরে কথাটা ঋতু বলছে।ও জানেনা এরপরে ওর জন্য আর কি অপেক্ষা করছে সামনে।
উনি তো কথাটা বলেই পার পেয়ে গেলো।আর আমায় এখানে সবার প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
---সোনা মা যেখানে ছিল সেখান থেকে এক পা দূরে চলে গেলো।হয়তো ভাবতে পারেনি এমন কিছু।
কি বলছিস কি তোরা এসব?একবার তো আমাদের জানাতে পারতিস তোরা।আমাদের জানালে কি আমরা মেনে নিতাম না?
পুরো ড্রয়িংরুম জুরো পিনপিন নিরাবতা চলছে।যেনো সবাই শোক পালন করছে।এক মাত্র ছেলের বিয়ে টা এভাবে হবে হয়তো মানতে পারছে না।
বাড়িতে এক বিয়ে শেষ হতে না হতেই আরেক টা।
শোভা তুই ঋতু কে তোর রুমে নিয়ে যা।
,
সবাই মিলে কি যুক্তি করলো জানি না।কিছুক্ষণ পরে শোভা এসে আমার পরনের শাড়ী খুলে একটা লাল রঙের জামদানি দিলো পরতে।হাল্কা সাজগোজ করিয়ে শুভ্রের রুমে বসিয়ে দিল।
বাড়ির পরিবেশ টা একদম থম থমে।এত সহজেই কি মেনে নেয়া যায়?হয়তো শুভ্রের রাগের ভয়ে এসব করছে।
আসার পর থেকে সোনা মা,আম্মা কেউ কথা বলছে না আমার সাথে।খুব রাগ হচ্ছে ঐ ব্যাটা বিটকেলের উপর।
ওর জন্যই তো আজ আমার এই অবস্থা। মনে হচ্ছে সামনে পেলে কেটে কুচি কুচি করতাম।আমিই মনে হয় একমাত্র বউ যে বাসর ঘরে বসে স্বামীকে কুচি কুচি করছি।
বসে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ছি বুঝতেই পারি নি।
সকালে এলার্মের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায়।এত সকালে আবার এলার্ম দিলো কে?আমি তো এলার্ম দিয়ে ঘুমাই না কখনো তাহলে কে দিল?
ওহহ তখন মনে পরলো আমি তো এখন শুভ্র স্যারের রুমে।রাত্রের কথা মনে পরে গেলো ব্যাটা জল্লাদ কখন এসেছিল রুমে?হয়তো আমি ঘুমিয়ে গেলে আর এলার্ম টাও উনিই দিয়েছে নিশ্চয়ই।পুরো রুমের কোথাও খুজে পেলাম না।
যেখানে খুশি সেখানে যাক তাতে আমার কি?আমি গোসল করে রেডি হয়ে নিলাম।
একটু পরেই শোভা এল রুমে।ঋতুপু কি করছো?
সরিিি ভাবী।
--ভাবী কিসের?
--বা রে তুমি আমার দশটা না পাশটা নও এক মাত্র ভাইয়ের বউ।সো ভাবী বলেই ডাকবো।
--বড্ড খই ফুটেছে মুখে তাই না?তা আমার ভাইয়া টা কোথায়?
--আর বলো না গো।ওর নাকি

কাজ পরে গেছে যার জন্য সকাল সকাল বেরিয়ে পরতে হলো।
রাত্রে আমায় আম্মার সাথে চলে যেতে বলেছে।
---ওওও!!কি আর করবি বল।মন খারাপ করিস না সোনা।
-আরে নাহহ মন খারাপ করবো কেন?
--ঠিক আছে।চল নিচে যাই সোনা মার কাছে।
--হু চলো যাই।
আমি কিচেনে সোনা মার পেছনে দাড়িয়ে আছি।সোনা মা আমায় দেখেও চুপ করে আছে।কিছু বলছে না।
খুব রেগে আছে।আর রেগে থাকাটাই স্বাভাবিক নয় কি.?
পেছন থেকে জরিয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলাম।
সোনা মা আর রেগে থাকতে পারলেন না।আমার চোখের পানি সোনা মা সহ্য করতে পারে না।
বাচ্চাদের মতো ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদছিস কেনো?তোকে কেউ মেরেছে নাকি বকেছে?
--কাঁদবো না তো কি করবো?আমি বিয়ে করে মনে হয় পাপ করে ফেলেছি? তোমরা কেউ আমার সাথে কোনো কথা বলছো না?আমার বুঝি কষ্ট হয় না তাই না?
--হয়েছে হয়েছে আর কাঁদতে হবে না তোকে।
--থ্যাঙ্কু শাশুড়ি মা।
তবে রে শয়তান মেয়ে দাড়া।

,
সবাই মেনে নিয়েছেন এখন।আর আমার #Accounting_Teacher থুক্কু জল্লাদ বর টার রাগ ভাঙ্গাতে কম কষ্ট করতে হয়নি।ব্যাটা আসলেই একটা আস্ত জল্লাদ।
তার ভালোবাসায় কখনো এট্টুখানি কম হলেই সে ডেভিলের মতো করে সেটা পুষিয়ে নেয়।
এখন মনে হয় শুভ্রের সেদিনের জোর করে বিয়েটা করা হয়তো ঠিকই ছিল।দেরিতে হলেও বুঝতে পেরেছি এই ডেভিল বর টা আমায় কতটা ভালোবাসে।আমিও কম বাসি না হুহ।
ওহ হ্যাঁ এখন সে আঙ্কেল থুক্কু শশুড় আব্বুর বিজনেস দেখা শুনা করে।আমি চাই না আমার বর টা ভার্সিটির ক্লাস নিতে যাক আর কোনো ডাইনী এনা ত্যানার নজর পরুক তার উপ্রে।
নজর দিয়েও কোনো লাভ নেই হুহহহ চোখ একদম গেলে দিবো।
ওহহ হ্যাঁ আপনাদের সু খবর টাই তো দেয়া হলো না।
অভি ভাইয়া ও শোভার কোল আলো করে ফুটফুটে একটা ছেলে বাবু হয়েছে।আমি আমার পছন্দের #অলক নাম রেখেছি।
খুব শীঘ্রই শুভ্র ঋতুর খবর ও পাবেন।?

-------------সমাপ্ত -------------------
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)