Posts: 6,104
Threads: 41
Likes Received: 11,800 in 4,106 posts
Likes Given: 5,302
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,690
23-10-2022, 08:28 PM
গল্প - সেই রাত্রি
লেখক ও ছবি - বাবান
ভৌতিক কিছু লেখার ইচ্ছে তো ছিলো। তার ওপর পাঠক বন্ধুদের ইচ্ছেও ছিল আরেকটা কিছু লিখি। তাই এই ছোট্ট গল্পটা লিখলাম। ভূত চতুর্দশী স্পেশাল বলাই যায়।
তাহলে এবার কে বলবে? অতনু? তুই বল নাকি? তুই তো বলেছিলি তোর মামার সাথে কি যেন একটা হয়েছিল না? ওটাই বল।
কার্তিক দার কথা শুনে অতনু একটু সোজা হয়ে বসলো। তারপরে চাদরটা একবার খুলে পুনরায় ভালো করে গায়ে জড়িয়ে নিলো। ডিসেম্বরের ২৭। শীত একেবারে জাঁকিয়ে পড়েছে। পাড়ার আমরা সবাই আমাদের আড্ডা স্থলে এসে জমা হয়েছি। একবার চায়ের কাপে থুড়ি কফির কাপে তুফান তোলা হয়ে গেছে। আবারো তোলা হবে কিন্তু তার আগেই হটাৎ কার্তিকদা প্রস্তাব রাখলো আজ নাকি আড্ডার বিষয় হবে ভুত! তবে তার অস্তিত্ব আছে কি নেই ও বিজ্ঞান সমাজ ভুত নিয়ে কি ভাবে এসব মহান তাত্ত্বিক জ্ঞানের আলোচনার মধ্যে না গিয়ে সরাসরি দারুন ভুতের গল্প হয়ে যাক। নানা.... গল্প নয়,একেবারে সত্য ঘটনা। এখানে বলে রাখি এই প্রস্তাব উঠতে আমিই সবার আগে আমার অফিস কলিগ সুভাষ দার থেকে শোনা ওনার ঘটনাটা সবাইকে বলি। বাড়ি ভেঙে ফ্ল্যাট হবার কারণে অন্যের বাড়িতে সাময়িক ভাড়া থাকতে গিয়ে সে যে কি কি সহ্য করতে হয়েছিল সেটাই। এমনকি আমিও একবার বেড়াতে গিয়ে হয়তো কিছু অনুভব করেছিলাম। সেই পায়ের আওয়াজ।এখনো সুভাষ দা রা ওই বাড়িতেই আছে আর দিব্বি আছে। মাঝে মাঝে একটু আধটু সমস্যা হলেও আগের থেকে অনেকটা কমেছে।
অতনু সোজা হয়ে বসতেই আমরাও নিজেদের প্রস্তুত করলাম ভৌতিক কিছুর সাক্ষী হবার জন্য। আমাদের মধ্যে অসীম খালি একটু যা ভীতু। তাই এই বিষয় নিয়ে আলোচনা উঠলেই সে একটু বাঁধা দেবার চেষ্টা করে, কিন্তু এইবার দেখলাম তার ভুরু কুচকোলেও বাঁধা দিলোনা। একটা শোনার পর আরেকটা শোনার বোধহয় তারও আজ ইচ্ছে জেগেছে। বাঙালী বলে কথা..... ভুত কে নিজের থেকে আলাদা করে রাখা যায় নাকি? আমি কৌস্তভকে ধাক্কা দিয়ে অসীমকে দেখালাম। সেও ব্যাপারটা বুঝে মুচকি হাসলো। দরজা জানলা সব বন্ধ। তাও যেন কোথা থেকে শীতল বাতাস ঢুকে আমাদের হালকা কাঁপিয়ে তুলছে। এই সুখের মজাই আলাদা। যাইহোক আমরা মনোযোগ দিলাম অতনুর ঘটনায়। সে বলতে শুরু করলো -
আমার বড়ো মামার সাথে বেশ কয়েকটা ভৌতিক ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে একটা তোদের বলেওছিলাম। মনে আছে নিশ্চই তোদের ওই মামার ওই মাছ ধরার গল্পটা। সে এক কান্ড হয়েছিল বটে। দেখে কিনা একটা উলঙ্গ বাচ্চা মামার পিছু পিছু আসছে। উফফফ! তবে আজ যে ঘটনাটার কথা বলবো সেটা ঘটেছিলো আমার ছোট মামার সাথে। তা প্রায় ১৭ বছর হয়ে গেলো। ঘটনাটা যখন মামা আমায় বলে তখন আমিও বেশ একটু ভয় পেয়েছিলাম। যদিও আহামরি ভয়ঙ্কর কিছু নয়। তবু কেমন যেন গায়ে কাঁটা দেবার মতন ক্রিপি একটা ব্যাপার আছে। শোন তাহলে।
আমার মামার এক বন্ধু তার নিজের মামার বাড়িতে কদিন কাটিয়ে যাবার জন্য মামাকে আর তার অন্য বন্ধুদের ডাকে। সবাই কলেজ ফ্রেন্ড ওরা। অনেকদিন একসাথে ঘুরতে বেরোনো হয়না তাদের। তাই ওই সুযোগ পেয়ে ছোট মামাদেরও ডেকে নেন তিনি। সেখানে তার এক মামা আর তার স্ত্রী সন্তান ছাড়া কেউই থাকেনা। আরেক মামা ছিলেন, তিনি নাকি কম বয়সেই মারা জান আর দাদু দিদিমাও অনেকদিন আগেই চলে গেছেন। তাই তিনতলা বাড়িটার প্রায় পুরোটাই কেমন ফাঁকা থাকে। মাঝে একবার একতলা ভাড়াও দিয়েছিলো কিন্তু তারাও একসময় বিদায় নেয়। তারপরে থেকে আর ভাড়া দেয়নি। তাই একবার ভাগ্নেকে ডেকে পাঠান সেই মামা। বলে এসে ঘুরে যেতে। অনেকদিন নাকি দেখা হয়নি এইসব আরকি। তা সেই ডাক পেয়ে উনি মানে আমার মামার বন্ধু আমার ছোট মামাকে আমন্ত্রণ জানান ওনার সাথে ঘুরতে যেতে। মামা আর আরেকজন বন্ধু যায় সেই বন্ধুর বাড়ি। ওহ! মামার ওই বন্ধুর নামটাই বলা হলোনা,ওনার নাম হলো রণজয়। আমি নিজেও ওনাকে দেখেছিলাম মামার ছেলের জন্মদিনে একবার এসেছিলো। বেশ বলিষ্ঠ চেহারার আর বেশ মজার মানুষ। তো.....এর আগেও কয়েকবার ওই বন্ধুটি মামাকে বলেছিলেন ঘুরতে যেতে কিন্তু মামার ব্যাবসার তখন শুরুর দিকে। তাই যাওয়া হয়নি। এইবারে একটা সুযোগ পেয়ে নিজের হাতে দুতিন দিন মতো সময় নিয়ে বেরিয়ে পড়েন মামা। সকালে বেরোন আর দুপুরের আগেই পৌঁছেও জান। একটু ভেতরের দিকে ওনার ওই বন্ধুর মামার বাড়িটা। এটা আমি ***** এর দিকের ঘটনা বলছি। অতটাও যেন শহুরে বাতাস লাগেনি তখনও ওদিকে। মামা বলেছিলো যত ওরা এগোচ্ছিলো ততো যেন আধুনিকতার জগৎ থেকে বেরিয়ে চারিপাশে লম্বা লম্বা নারকেল তাল আর সবরকম গাছ আর ধান ভরা জমি দেখতে পাচ্ছিলেন। আহা এসব দৃশ্য দেখার মধ্যেও যেন অদ্ভুত ভালোলাগা আছে। এখন তো যেদিকে তাকাও সবুজের বদলে উঁচু নিচু ফ্ল্যাটের জঙ্গল। মামা আর তার সঙ্গে আরেক বন্ধু এবং রণজয় মামা.... আমি মামা হিসেবেই সম্বোধন করছি ওনাকে.... হ্যা তো ওরা তিনজন দুপুরের আগেই গিয়ে পৌঁছন ওই বাড়িতে। প্রথমে ট্রেন, সেখান থেকে নেমে দুটো রিকশা। মামারা পৌছতেই দেখে দরজা খুলে হাসিমুখে বেড়িয়ে আসছেন রণজয় মামার মামাবাবু,মামী আর ছেলে। ওরা বোধহয় জানলা দিয়ে দেখতে পেয়েছিলেন মামাদের। ভাড়া মিটিয়ে নেমে সবাই একে একে গিয়ে প্রণাম করে ওনাদের। ওনার নাম বোধহয় উদয় না কি যেন ছিল যাকগে তো তিনি মামাদের সকলকে নিয়ে ভেতরে আসেন। প্রথমে একতলাতেই বসার আয়োজন করা হয়েছিল কিন্তু মামাবাবুরা নিজেরা থাকেন দোতলাতে আর তিনতলা ফাঁকাই থাকে। সত্যিই বেশ বড়ো বাড়িটা। পুরানো দিনের বলে ঘরের জানলা গুলো কেমন ছোট ছোট কিন্তু এক একটা ঘর নাকি বেশ বড়ো। তো.......
এর মাঝেই হটাৎ অতনুকে থামিয়ে অসীম হটাৎ বলে উঠলো - ইয়ে মানে এ... এক মিনিট ভাই। তুই বললি ওতো বড়ো বাড়ি তারওপর ফাঁকাই থাকে একতলা আর তিনতলা। তার ওপর আবার ওনার এক মামা মানে ওই বাড়ির ছেলে কম বয়সে মারা গেছিলেন....... আবার বললি ভাড়াটেরাও বেশিদিন থাকেনি......তা ঐবাড়িটাতেই কি......?
আমাদের অসীম বাবুর প্রশ্ন শুনে অতনু হেসে বললো - আরেবাবা নানা! ফাঁকা ঘর বাড়ি হলেই কি সেটা ভুতুড়ে হয়ে যায় নাকি? এটা একদম ভুল কথা। আমাদের একটা মাইন্ড সেট হয়ে গেছে যে ফাঁকা বাড়ি বা পরিত্যাক্ত বাড়ি মানেই নির্ঘাত সেখানে ভুত থাকবে। ওতো সহজ নয় ব্যাপারটা। ওই বাড়ির সাথে কোনো অতৃপ্ত শক্তির একপ্রকার আকর্ষণ বা টান থাকার প্রয়োজন। আরেকটা থিওরি বলে যে এসব ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম হওয়া প্রয়োজন। তার আগে পর্যন্ত ফাঁকা বাড়ি হলেও তাতে আত্মা কব্জা করবেনা। যদি সেই নির্দিষ্ট সময় পার হবার পরেও কেউ সেই স্থানে বসবাস শুরু না করে তবেই আত্মারা ওখানে ডেরা দেয়। বুঝলি? আসলে এই ভূত আত্মা নিয়ে অনেক ভুলভাল কথা ছড়িয়ে পড়েছে। ওই রণজয় মামাদের বাড়িটা সম্পূর্ণ ভুত মুক্ত ছিল বুঝলি? হেহেহেহে.... শান্তি? নে এবার বাকিটা শোন। মামারা ঘরে গিয়ে বসতেই রণজয় মামার মামীমা সকলের জন্য জল খাবারের ব্যবস্থা করলেন। খাওয়া দাওয়া শেষে কিছুক্ষন মামা মামীদের সাথে গল্প করার পরে ছোট মামা আর বন্ধুরা সবাই তিনতলায় চলে এলেন। যদিও দোতলাতেই ঘর ছিল কিন্তু রণজয় মামাই বলেছিলো তিনতলাতে থাকার ব্যবস্থা করতে। এতে কোনোরকম অসুবিধা হবেনা মামা মামীদের। তারা তাদের মতো থাকতে পারবে আর তাছাড়া মামারা নিজেদের মতো কিছু একান্তে সুখের সময় কাটাতে পারবে....... মানে কি বললাম বুঝলি তো হেহেহে। রণজয় মামার মামাবাবু বোধহয় সেটা বুঝেই আর বাঁধা না দিয়ে ওপরের ঘরে থাকার আয়োজন করেছিলেন। ওনার ছেলে সন্দীপ তখন ক্লাস এইটে পড়ে। সেও বেশ ছটফটে। মামাদের সাথে বেশ ভাব হয়ে গেছিলো তার। দুপুরে বেশ কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে সেও নিচে চলে যায় আর মামারাও ভাত ঘুম দেয়। বিকেলের দিকে মামা আর মামার বন্ধুরা ও সন্দীপ সবাই মিলে আসে পাশের থেকে ঘুরে এলো। ওখান থেকে গঙ্গার ঘাট খুব দূরে নয়। সেখানেও কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে সন্ধের অন্ধকার নামার আগেই ফিরে আসে সবাই। মামাবাবু সকলের জন্য বেরিয়ে চপ ফুলুরি এসব নিয়ে এসেছিলেন। সবাই একসাথে বসে খেয়ে একটা দারুন আড্ডা দেয়। রণজয় মামাই বলেন একবার ছাদ থেকে ঘুরে আসা যাক। এই প্রস্তাবে সবাই মিলে ছাদে যাওয়া হয়। শুধু ওনার মামিমা বাদে। উনি যাননি........ নানা ভয় পাস না অসীম ... ছাদে ভূত নেই যে সেই জন্য মামীমা যাননি।
অসীম - আমি কিছু বলেছি তোকে?
অতনু হেসে আবার বলতে লাগলো - যাইহোক সবাই ছাদে যায়। বিরাট ছাদ। ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করা যেতে পারে যেন। তার ওপর সন্ধের নীলাভ অদ্ভুত আকাশ আর শীতল হাওয়া। সব মিলে যেন মায়াবি এক পরিবেশ। সবাই এদিক ওদিক ছড়িয়ে হাটাহাটি করতে লাগলো। মামাও.... মানে আমার মামাও সবার থেকে আলাদা হয়ে একটু পেছনের দিকে আসে, পশ্চিমের দিকটায়। ওদিকটায় নাকি বেশ অনেক গুলো নারকেল গাছের সারি ছিল আর একটা বড়ো পুকুরও ছিল। এ বাড়ির একদম গা ঘেঁষেই আরেকটা দোতলা বাড়ি আর তার উল্টোদিকে পর পর আরও দুটো একতলা আর দোতলা বাড়ি। মাঝে একটা সরু গলি চলে গেছে। ওই গলি ধরে গেলে হয়তো আরও বাড়ির খোঁজ মিলবে। মামাদের মতন ওই উল্টোদিকের বাড়িগুলোর একটাতেও দুজন মতো ছাদে উঠে হাটাহাটি করছিলো। মামা আবার ফিরে নিজের বন্ধুদের জয়েন করেন আর কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে ফিরে আসেন ঘরে। এরপর রাতে সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া সেরে যে যার মতো ঘরে ফিরে আসে। মামারাও ওপরে এসে অনেক্ষন আড্ডা মারে, ইয়ার্কি ঠাট্টা চলে আর সুখটানও চলে। তারপরে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিয়ে একে একে শুয়ে পড়ে সবাই। অসীম বাবু... প্রস্তুত হও...... আসল গল্প শুরু হচ্ছে এবার।
আমি একবার তাকিয়ে দেখে নি অসীম অতনুর কথা শুনে একটা ঢোক গিলে ফেলে কিন্তু চোখে মুখে কোনো ভয়ের ছাপ আসেনি। অতনু বলতে থাকে - মামার একটা প্রব্লেম ছিল রাতের দিকে একবার ওনাকে উঠতেই হবে বাথরুমে যেতে। এবারও তাই হলো। ঘুমটা গেলো ভেঙে আর প্রেসারের চাপ হুকুম করলো কলঘরের দিকে ছুটতে। মামা একবার হাত ঘড়িটা দেখে নেয়। ১টা বাজে। আজকের দিনে ১টা এমন কিছু না হলেও তখন ওই রকম একটা জায়গায় একটা মানে ভালোই গভীর রাত। কি আর করা। উঠে দরজা খুলে বাথরুমের দিকে যেতেই হলো মামাকে। কাজ সেরে যখন ফিরে আসছে ততক্ষনে ঘুম বাবাজি পালাতে শুরু করেছে। এক তো নতুন জায়গা তার ওপর মশার কামড় দুইয়ে মিলে পুনরায় জাগ্রত করে তুলেছে ছোট মামাকে। ঘরে ফিরে এসে মামা দেখে তার দুই বন্ধু ততক্ষনে ঘুমিয়ে কাদা। মামা ভাবলেন যে গিয়ে আবার শুয়ে পড়বে কিন্তু আবার ভাবলেন আরেকটা টান দিলে কেমন হয়। আগে মামা খুবই নাকি স্মোকিং করতো, পরে কমিয়ে দিয়েছে। তো প্যাকেট থেকে একটা বার করে জ্বালিয়ে বেরিয়ে আসে ঘর থেকে মামা। এগিয়ে যায় বারান্দার দিকে। চাঁদের আলোয় বেশ ভালোই দেখা যাচ্ছে বাইরের পরিবেশ। বেশ শান্ত নিরিবিলি এলাকা। ঘুমাতে যাবার আগে কয়েকবার কুকুরের ঘেউ ঘেউ শুনে থাকলেও এখন আর একটাও ডাক শোনা যাচ্ছেনা। তবে ঘন ঝিঁঝির ডাকে যেন পরিবেশটা আরও বেশি শান্ত লাগছে। বারান্দায় রাখা একটা পুরানো চেয়ার ছিল। সেটায় বসে ঠান্ডা হাওয়া গায়ে মাখতে মাখতে সুখটান দিচ্ছিলেন মামা। চাঁদ একেবারে এ বাড়ির যেন মাথার ওপর। পুরো আলোটা বারান্দায় পড়ে মেঝেটা আলোকিত করে তুলেছে। নারকেল গাছ গুলোর পাতা নড়ছে হাওয়ায়। দুটো চামচিকেও যেন উড়ে গেলো যেন। এসব দেখতে দেখতে এক সময় খুব স্বাভাবিক ভাবেই মামার চোখ যায় ওই পশ্চিমের দিকে যেদিকে ওই বাড়ি পুকুর এসব ছিল। তোদের তখন বলেই ছিলাম ঐদিকে রণজয় মামার এই মামার বাড়ির গা ঘেঁষে একটা বাড়ি আর তার উল্টো দিকে আরও দুটো বাড়ি। একটা একতলা আরেকটা দোতলা। সেই দোতলা বাড়ির দিকে চোখ যেতেই চোখটা আটকে যায় মামার। ওনার মনে হয় ওই বাড়ির ছাদে কেউ যেন রয়েছে। প্রথমে চোখের ভুল ভাবলেও একটু ভালো করে লক্ষ করতে উনি দেখেন সত্যিই ওই ছাদে কেউ রয়েছে আর যে রয়েছে সে একজন মহিলা। কারণ লম্বা খোলা চুল বোঝা যাচ্ছে। এতো রাতে ছাদে একজন মহিলা হাঁটছে এটা ভেবে প্রাথমিক ভাবে মামা একটু অবাক হলেও পরে ভাবে তার নিজের বাড়িতে সে কি করবে না করবে সেটা তার ব্যাপার। তার ইচ্ছে হয়েছে তাই হাটছে। মামা আবার ওদিক থেকে চোখ সরিয়ে নিজের কাজে মন দেন। কিছুক্ষন পর আবারো চোখ যায় মামার ওদিকে। হ্যা এখনো সেই মহিলা হাঁটাহাঁটি করে চলেছে। মামার কি মনে হতে উনি উঠে একটু এগিয়ে জান গ্রিলের সামনে আর ভালো করে একটা জিনিস লক্ষ করতে থাকেন। একটু ভালো করে মহিলার হাঁটা চলা পর্যবেক্ষণ করে মামা বুঝতে পারেন মহিলাটি ঠিক স্বাভাবিক নন। মানসিক ভারসাম্যহীন। কারণ তার হাঁটা চলাতেই আর বডি ল্যাঙ্গুয়েয অদ্ভুত। একবার সে একহাতে নিজের চুল ধরে টানাটানি করছে তো একবার মাতালের মতো টলতে টলতে হাটছে তো একবার যেন আনন্দে হাততালি দিচ্ছেন। আবার যেন নিজের সাথেই কথা বলছেন। মামার বুঝতে বাকি রইলোনা এটা মেন্টাল কেস। কিন্তু এমন একজন মানুষ এতো রাতে ছাদে এলো কিকরে? বাড়ির লোক কি খেয়াল রাখেনা নাকি? এটা তো সাংঘাতিক হয়ে যেতে পারে যে কোনোদিন। মামা এমন ভাবছে আর তখনি মামা দেখলো সেই মহিলা যেন মামার কথা সত্যি প্রমান করার জন্যই ছাদের ধারে এগিয়ে গিয়ে ঝুঁকে নিচে দেখতে লাগলো। এদিকে ছোট মামাও যেন চোখ সরাতে পারছেনা। মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে দেখে চলেছে। যেন ভয়ানক কিছুর একটা সাক্ষী হবার নেশা চেপে বসেছে তাকে। সে দেখছে ওই মহিলা ঝুঁকে ঝুঁকে দেখছে আর কি যেন দেখে হাততালি দিচ্ছে। কিন্তু নিচে শুন্য গলি ছাড়া কিছুই নেই। এমন সময় মামা দেখলো ওই মহিলা সত্যিই যেন একটা পা তুলে দিচ্ছে ছাদের রেলিং এর ওপর! আরেক পা তুলতে প্রস্তুতি নিচ্ছে সে!
এমন ভয়ানক দৃশ্যর সাক্ষী হয়ে ছোট মামার মুখ দিয়ে অজান্তেই এই! জাতীয় কিছু একটা শব্দ বেরিয়ে আসে। মামা নিজেও বুঝতে পারেনি উনি এমন কিছু বলে ফেলবেন। যদিও সেটা আস্তেই ছিল। কিন্তু রাতের শান্ত পরিবেশে হওয়ার সাথে ভেসে চলে যায় সম্মুখে মানে সে আওয়াজ যার শোনার সে ঠিক শুনে ফেলে। মামা দেখে সেই মহিলার নজর এবারে এবাড়ির বারান্দায়! হ্যা সে দেখে ফেলেছে এ বাড়িতে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকা সিগারেট হাতে মানুষটাকে! সে নিজের পা নামিয়ে কিছুক্ষন একদম শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে এদিকেই দেখতে থাকে। কোনো নরণ চরণ নেই। তারপরে হটাৎই দ্রুত পায়ে এগিয়ে আসে বাড়ির অন্য দিকের কর্নারে মানে যে দিক থেকে মামাকে দেখা যাচ্ছে সেদিকে। ছোট মামার বুকটা ভয় ধক করে ওঠে! যদিও দুটো বাড়ির মাঝে বেশ ভালোই দূরত্ব কিন্তু এমন কিছু একটা কারো সাথে ঘটলে যেন দূরত্ব মুছে গিয়ে ভয় একদম নিকটে চলে আসে। মামার সাথেও যেন তাই হলো। মামা দেখলেন মহিলা একেবারে সোজা ওনার দিকে তাকিয়ে। এতক্ষনে যেন কিছুটা হলেও স্পষ্ট হলো মহিলার মুখটা। আশ্চর্য! এ কিনা মানসিক রোগী? কিন্তু দেখে তো একদমই মনে হচ্ছেনা। বেশ ভালোই একজন মহিলা।বেশি বয়সও হবেনা তার।সুন্দরীই বলা চলে। যারা মানসিক রোগী হন তাদের চোখ মুখেও সেটা প্রকাশ পায়। স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের থেকে তাদের একটু হলেও ভিন্ন দেখতে লাগে। কিন্তু এ তো একেবারে স্বাভাবিক। অন্তত দূর থেকে যতটা বোঝা যাচ্ছে তাই। তবে কি কোনোভাবে পরে মস্তিস্ক বিকার হয়েছে? কালচে অথবা গাঢ় কোনো রঙের কিছু একটা জড়ানো গায়ে। হয়তো চাদর হবে। মাথাটা একপাশে একস্ট্রিম ঝুকিয়ে একেবারে কাঁধের সাথে ঠেকিয়ে এক দৃষ্টিতে সে তাকিয়ে আছে ছোট মামার দিকে। বিস্ফারিত চোখ আর ঠোঁটে অদ্ভুত এক হাসি। যেন জোর করে যতটা সম্ভব নিজের মুখে হাসি আনার চেষ্টা। দাঁত গুলো যেন সব বেরিয়ে এসেছে। মামার কেমন শিহরণ খেলে যাচ্ছিলো শরীরে। সেটা ভয় নাকি ঠান্ডা বাতাস তা জানেনা সে। কিন্তু কেমন যেন লাগছিলো। মামা বলেছিলো যে তার বার বার মনে হচ্ছিলো আমি এখানে এখনো কেন দাঁড়িয়ে আছি? আমার এখানে থাকাটা উচিত নয়! কিন্তু এই প্রশ্নের পরেও আমি নড়ছিলাম না! দাঁড়িয়ে সব দেখে চলেছি। যেন দেখতে ইচ্ছে করছে আর কিকি হয়। ওই মহিলার প্রতি যেন আকর্ষণ বেড়ে চলেছে। নানা! কোনো খারাপ আকর্ষণ নয়, কিন্তু এক অজানা কিছু একটা মামাকে যেতে দিচ্ছেনা ওখান থেকে।
- বাপরে বাপ! তোর মামার সাহস আছে মাইরি! আমি হলে এতো কিছুর পর আর দাঁড়াতাম না ভাই!
কার্তিক দা বললেন। অতনু হেসে একবার অসীমের দিকে তাকিয়ে ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো - কিরে? তুই হলে কি করতি? লাইন মারতিস নাকি? মামা বলেছিলো হেব্বি সুন্দরী কিন্তু হেহেহেহে। শুনে আমরা একটু হালকা হাসলেও আমাদের অসীম বাবু একটু ভয় ভয় রাগী চোখে অতনুর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো - মার খাবি কিন্তু তুই! এ..... এসব নিয়ে ইয়ার্কি আমার ভালো লাগেনা। তুই বাকিটা বলতো ব্যাটা। এদিকে যে অন্ধকার নেমে এলো। অতনু শুনে মুচকি হেসে তারপরে গলা ঝেড়ে নিয়ে আবারো বলতে শুরু করলো -
কোনো মানুষ যে ঐভাবে অতটা মাথা বেঁকিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে পারে প্রথম এক্সপেরিয়েন্স করেছিল ছোট মামা। সে যে স্বাভাবিক নয় সেটা সুস্পষ্ট। সে ঐভাবেই অন্ধকারে দাঁড়ানো মামাকে দেখতে দেখতে নিজের চুল টানাটানি করছে আর হয়তো হাসছে। মামার মনে হলো আর দাঁড়ানো ঠিক নয়, এবার ফেরা উচিত। ও থাকুক বাবা নিজের মতো। এই ভেবে মামা শেষ টান দিয়ে সিগারেটটা গ্রিল দিয়ে গলিয়ে ফেলে ফিরে যাবে বলে প্রস্তুত হচ্ছেন। কয়েক পা পিছিয়েও এসেছেন এমন সময় দেখলেন ও বাড়ির সেই মহিলাটি হাত তুলে ইশারায় মামাকে ডাকছে! হ্যারে ডাকছে! এমন ভাবেই হাত নেড়ে নেড়ে ডাকছে যেন বলতে চাইছে - এই তুই! যাসনা! আয়! এখানে আমার কাছে আয়! দুজনে মিলে খেলবো! আয়না আয়! হিহিহিহি!
পরের অংশ এখুনি আসছে
Posts: 6,104
Threads: 41
Likes Received: 11,800 in 4,106 posts
Likes Given: 5,302
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,690
23-10-2022, 08:30 PM
উপরের অংশের পর
মামা তো অবাক। এ মেয়ে যে সত্যিই সরাসরি ওনার সাথে ইশারায় কথা বলছে! বারবার হাতের ইশারায় ওই বাড়ির ছাদে যেতে বলছে! কেমন করে হেসে উঠছে মাগো! এই পর্যন্ত তাও ঠিক ছিল কিন্তু এরপরে ইশারায় মহিলাটি যা দেখালো তাতে মামা আরও দু পা পিছিয়ে যেতে বাধ্য হলো। ওনার হাতের ইশারায় মামা কোনো উত্তর দিচ্ছেনা দেখে ওই মহিলাটি নাকি নতুন এক ইশারা করে বোঝাতে চায় যে তাহলে কি সে ওখানে যাবে? মামার পাশে!! এর উত্তরে মামা দু পা পিছিয়ে যেতেই ওই মহিলা নাকি আনন্দে হাততালি দিয়ে ওঠে। মানুষটাকে ভয় পেতে দেখে সে যেন খুব খুশি হয়েছে। মামা একবার ভাবলো একবার রণজয়কে ডেকে এনে দেখাবে এই মহিলাকে, আবার ভাবলো এতো কিছুর দরকার কি? সে চলে গিয়ে শুয়ে পড়লেই তো হয়। এখনো কেন সে দাঁড়িয়ে পাগলের কান্ড কারখানা দেখছে? যদিও মনে মনে বারবার পাগল পাগল বলছিলো মামা কিন্তু ভেতরের থেকে কেউ যেন বারবার সতর্ক করে দিচ্ছিলো ওটা পাগল নয়। পাগল নয়! ওটা অন্য কিছু! তুই পালা! নইলে এখুনি ওটা তোর বারান্দার বাইরে এসে দাঁড়াবে...কিংবা হয়তো তোর পাশে!
ভয় যেসব অদ্ভুত অবাস্তব ব্যাপার গুলো মনে আসে সেসবই অনুভব করছিলেন মামা। কিন্তু সত্যিই কি পুরোটাই অবাস্তব? মামা একবার ভাবলেন ধুর ওটা..... ওটা একটা মেন্টাল পেশেন্টই। ওটাকে নিয়ে ভয় পাবার কোনোরকম দরকার নেই। সে এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে। দেখবে কি করতে পারে ওই পাগলী। মামা বলেছিল পরে নিজেই অবাক হয়ে গেছিলো নিজের সাহস দেখে। এমন একটা মুহূর্তে হটাৎ এতটা সাহস এলো কোথা থেকে? ভূত হোক নাহোক তার তো উচিত ছিল ফিরে গিয়ে বন্ধুদের পাশে শুয়ে পড়ার। কিন্তু কেন যেন তখন মনে হচ্ছিলো না! সে দাঁড়িয়ে আরও দেখবে ওই মহিলার পাগলামি। এটা কি কোনো প্রকার অস্বাভাবিক আকর্ষণ ছিল নাকি আরও ভয়াবহ কিছু সেটা জানেনা মামা। কিন্তু তিনি আরও কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে ছিলেন। মামা আবারো জানলার কাছে এগিয়ে গিয়ে চুপ করে দাঁড়ান। এইবার মামা লক্ষ করেন এতক্ষন যে মানুষটার মুখে হাসির রেখা ছিল সে মুখে হকঠাৎ করেই কেমন রাগ ফুটে উঠছে। তবে সেটা মামাকে দেখে নয়। এবাড়ির পাশের যে গা ঘেঁষে বাড়িটা রয়েছে সেদিকে তাকিয়ে। মামাও একবার গ্রিলে মাথা ঠেকিয়ে সেদিকে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করেন কিন্তু কিছুই দেখতে পাননি। এদিকে আবারো ওই বাড়ির ছাদে তাকাতে তিনি দেখেন সে মহিলা এখনো ভুরু কুঁচকে রাগী কিন্তু ভয় ভয় কাকে যেন দেখছে। চোখ সোজা পাশের বাড়ির ছাদের দিকে কিংবা হয়তো কোনো জানলার দিকে। সে একটু একটু করে পিছিয়ে যাচ্ছে। এমন সময় মামা শুনলো পাশের বাড়িটা থেকে কেউ যেন হালকা চেঁচিয়ে বলে উঠলো - এই! তুই আবার এতো রাতে বেরিয়েছিস! ফিরে যা! কি করছিস তুই এখানে এতো রাতে? যা বলছি! আমি কিন্তু যেতে বলেছি! যা! যাআহ্হ্হ!! এই ওকে যেতে দে! যেতে দে ওকে বলছি! যা মা ফিরে যা!
মামা দেখলো ওই আদেশ শুনে ওই বাড়ির মেয়েটি কেমন মুখ বিকৃত করে আবোল তাবোল নিজে কিসব বলতে বলতে ওই বাড়ির দিকে তাকিয়ে দেখতে দেখতে কোথায় যেন অন্ধকারে মিশে গেলো। আর কোনো আওয়াজ নেই। আবার সব শান্ত। মামাও যেন এবার হাপ ছেড়ে বাঁচলেন। একটা ভয়ের ভার যেন চেপে ছিল এতক্ষন তার ওপর তা সে যতই নিজেকে সাহসী হিসাবে প্রমান করার চেষ্টা করুক। তারমানে ওটা সত্যি একজন মানুসিক ভারসাম্যহীন মহিলা। মামার মতো ও বাড়ির কেউ একজনও তাকে ছাদে এতরাতে ঘোরাফেরা করতে দেখে ওই কথা বললেন। তারা তো একে ওপরের প্রতিবেশি তাই নিশ্চই সে জানে যে এ মেয়ে রাতে এরকম ছাদে হাঁটাহাঁটি করে। কিন্তু ওই দ্বিতীয় বার ওটা কাকে বললেন "এই ওকে যেতে দে?" কাকে যেতে দেবার কথা বললেন লোকটা? ওই মহিলা তো একাই ছিল। সাথে তো আর কাউকে দেখা যায়নি। নাকি ছিল? উহু না কেউ থাকলে ওই মেয়ে ছাদের বাইরে পা বাড়িয়ে দিচ্ছে দেখেও কি সে চুপ করে থাকতো নাকি? মামা এসব ভাবছিলেন এমন সময় ওনার মনে হলো ঝপাং করে কিছু একটা আওয়াজ পেলেন তিনি। যেন কিছু একটা লাফ দিলো কোথাও থেকে। আর সেটা বেশ জোরে গিয়ে মাটিতে গিয়ে পড়েছে। এতো রাতে কেউ কি কিছু ওই পুকুরে ফেললো নাকি? এইরে! ওই মেয়েটা আবার জলে টলে?!! এই সেরেছে! যাইহোক বাবা। আর দাঁড়িয়ে থাকা নয়। মামা আবার ফিরে এসে বন্ধুর পাশে শুয়ে পড়েন।
পরের দিন সবাই একসাথে বসে লুচি তরকারি খাচ্ছে। রণজয় মামার মামাবাবুকে সকাল সকাল বেরিয়ে যেতে হয় তাই তিনি বেরিয়ে গেছেন। বাড়িতে খালি মামিমা আর সন্দীপ এছাড়া আমার মামারা। খাবার টেবিলেই আমার ছোট মামা আগের রাতের ঘটনাটা বলেন। কিন্তু তখন শেষের অংশটা বলতে ভুলে গেছিলেন। শুধুই ওই মহিলাটিকে দেখার কথা বলেন। বাকিরা অবাক হয়ে পুরোটা শোনে। মামিমা তো আকাশ থেকে পড়লেন এমন কথা শুনে। বললেন ওই বাড়িতে তো তুলিকা বলে এক মেয়ে থাকে আর তার বাবা থাকে। মা নাকি অনেক আগেই মারা গেছেন। তুলিকা যখন খুব ছোট তখনই। আর সেই মেয়ে তো মোটেও মানসিক ভারসাম্যহীন নয়, একেবারে স্বাভাবিক একটি মেয়ে। মামীর সাথে না জানে কতবার দেখা হয়েছে কথা হয়েছে। কোনো অস্বাভাবিক ব্যাপার দেখেননি তিনি। আর ওই বাড়িতে তো বাবা মেয়ে ছাড়া কেউ থাকেও না। আর পাশের একতলা বাড়িতেও দুইজন বয়স্ক মানুষ থাকেন। স্বামী স্ত্রী। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে।
কিন্তু মামার কোনোরকম ভুল হয়নি। ওই একতলা বাড়ি মোটেই নয়, উনি ওই উল্টোদিকের দোতলা বাড়িটাতেই দেখেছিলেন ওই মেয়েটিকে। আর সে যে মানসিক ভাবে দুর্বল সেটা ভালো করেই বুঝে ছিলেন। কিন্তু এবাড়ির সবাই বলছে সে স্বাভাবিক? ব্যাপারটা কেমন হলো? সকালে ছাদে গিয়ে মামা ওই বাড়িটা অন্য বন্ধুদের দেখায়ও। যাইহোক সকালে সবাই মিলে আবারো ঘুরতে বেরোয়। পুকুরের পাশ দিয়ে ওই গলি ধরে যাবার সময় যখন মামা ওই বাড়িটা ক্রস করে যাচ্ছিলেন তখনও রাতের কথা মনে পড়তে কেমন যেন একবার ভয় মতো লাগে। অথচ সে বাড়ি কিন্তু একেবারে সাধারণ একটি বাড়ি। বেশ কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে, ঘুরে ফিরে কয়েকটা জায়গার ছবি তুলে তারা ফিরে আসে আবার বাড়িতে। দুপুরে আবার শুয়ে রেস্ট নিয়ে বিকালে এক কাপ করে চা পান করে সবাই ছাদে যায়। সন্দীপও আসে ওদের সাথে ছাদে। এইবার আবার দেখা পায় মামা ওই মেয়েটির। রান্না ঘরের জানলা দিয়ে দেখা যাচ্ছে তাকে। নিজের বন্ধুদের ডেকে দেখায় মামা। রান্না ঘরের ছোট জানলা দিয়ে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে তাকে। কোনো কাজ করতে করতে পেছন ফিরে কারো সাথে কথা বলছে আর হাসছে। বোধহয় বাবা। কিন্তু আজকের এই হাসি একেবারে স্বভাবিক। সত্যিই আগের রাতের সাথে এর কোনো মিল নেই। কিন্তু মেয়েটা যে সেই সেটা বোঝা যাচ্ছে ভালোই। রাতে দিনের মতো পরিষ্কার সব কিছু বোঝা না গেলেও চাঁদের আলোয় যে এই মেয়েটিকেই মামা দেখেছিলো তাতে কোনো সন্দেহ ছিলোনা। মুখটা চিনতে ভুল হয়নি ওনার।
ব্যাপারটা কি? কালকে একরকম দেখলো আর আজ একরকম। যমজ বোন টোন কেউ আছে নাকি? যে একটু এবনর্মাল? কিন্তু মামী তো বললো খালি বাবা আর মেয়ে থাকে। সব কেমন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। সন্দীপকে জিজ্ঞেস করাতে সেও বললো ওই দিদিটা তো থার্ড ইয়ারে পড়ে। খুবই ভালো পড়াশুনায়। এই বাড়িতে প্রতি বছর লক্ষী পুজোর প্রসাদ দিতে আসে। এ বাড়ি থেকেও যায় প্রসাদ। কই কোনোদিন তো কিচ্ছুটি টের পায়নি কেউ। আরও মাথাটা গোলমাল হয়ে যায় মামার। আশ্চর্য! কাল নিজে দাঁড়িয়ে দেখলো ওই মেয়ে অদ্ভুত সব কান্ড কারখানা করছিলো। আর তাকে দেখে কি বিকৃত ভাবে ঘাড় বেঁকিয়ে হাসছিলো..... সেসব কি চোখের ভুল নাকি?
সন্ধে নাগাদ মামাবাবু যখন বাড়ি ফিরলেন তখন সবাই মিলে ওনাকে ঘটনাটা জানালে উনি প্রথমে অবাক হলেন। তারপরে কি একটা ভেবে মুচকি হেসে নিজ মনেই বললেন - এখনো যায়নি তারমানে। আসে এখনো দেখতে। ছোট মামা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন কে যায়নি? কে আসে মামাবাবু? উত্তরে নিজের বৌকে সবার জন্য চা বানাতে বলে তিনি বলেন - মামা যা দেখেছে তা মোটেই ভুল কিছু দেখেনি। ওটি ওই মেয়েটিই ছিল, তুলিকা। এর আগেও দুবার নাকি এমন হয়েছিল তুলি মানে তুলিকার সাথে। কিন্তু সেটা ওর আরও কম বয়সে হয়েছিল। ঠিক কাল যা মামা দেখেছিলো এক্সাক্ট তাই হয়েছিল। একেবারে পাল্টে যায় নাকি ও। মেয়েটার বাপের বাড়ি, মামার বাড়ির সবাই এসে ডাক্তার দেখায় কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। আর এমনও নয় যে মায়ের চলে যাবার আঘাত পেয়ে হটাৎ করেই এমন হয়ে গেছে। এসব শুরু হয় মা চলে যাবার তিন চার বছর পর। ততদিন সে মেয়ে একেবারে নরমাল ছিল। পরে কাকে যেন ওরা ডেকেও এনেছিল সে বলে ওটা ওর মাই। মেয়ের সাথে নাকি দেখা করতে আসে। প্রথবার যখন হয় দুদিন পর নাকি নিজেই নরমাল হয়ে গেছিলো। দ্বিতীয় বারেরটায় বাড়াবাড়ি হতে এসব জানা যায়। একটা সুস্থ স্বাভাবিক মেয়ে পুরোপুরি পাল্টে গেছিলো। ঠিক মায়ের মতনই হয়ে গেছিলো। হ্যা ওর মায়ের মেন্টাল প্রব্লেম ছিল। সুইসাইড করার এক অদ্ভুত টেন্ডেন্সি ছিল নাকি ওনার মধ্যে। পারিবারিক কোনো সমস্যা ছিলোনা। সুখী পরিবার কিন্তু.....ওই একটা অদ্ভুত মানসিক প্রব্লেম ছিল ওনার মধ্যে। ডাক্তার ওনার বাড়ির লোক পরে স্বামীও দেখিয়েছিলেন, আর তাছাড়া বাচ্চাটা হবার পর নাকি বেশ কয়েক বছর আর ঐসব ওনার মধ্যে দেখা যায়নি তাই সবাই ভেবেছিলো একদম নরমাল হয়ে গেছেন উনি কিন্তু একদিন তুলিকার বাবা ফিরে দেখেন স্ত্রী দরজা খুলছেনা। অনেক ডাকাডাকিতেও কাজ হয়না। তখন সন্দেহ হওয়াতে অনেক জন মিলে দরজা ভেঙে দেখে মেয়ে পাশের ঘরে ঘুমিয়ে আর মা অন্য ঘরে....... ঝুলছে!
তারপরে সে যে কি ঝড় গেছে ওদের ওপর দিয়ে। আমি গেছিলাম তখন ওদের পাশে দাঁড়াতে, সাথে আরও প্রতিবেশীরাও কয়েকজন ছিল। সেই মা-ই নাকি দুবার এসেছিলো মেয়ের সাথে দেখা করতে। এতো কিছু রণজয় মামার যিনি মামী তিনি জানেন না তাই সকালে ওনাকে জিজ্ঞেস করাতে সে কিছুই বলতে পারেনি। তার কাছে তুলিকা সম্পূর্ণ সুস্থ স্বাভাবিক এক মেয়ে। আর সত্যিই তো..... তুলিকা সত্যিই সুস্থ স্বাভাবিক একজন মেয়ে। কিন্তু মামাবাবু জানতেন যে ওই প্রব্লেমটা পুরোপুরি ঠিক হয়ে গেছিলো। কিন্তু আমার ছোট মামার মুখে কালকে রাতের বর্ণনা শুনে বুঝেছিলেন যে মেয়ে পুরোপুরি বিপদ মুক্ত নয়। এখনো তার মা আসে। মেয়ের সাথে সময় কাটিয়ে যায়। কিংবা হয়তো আরও বেশি কিছু!
সব শুনে অসীম বললো - বাব্বা! এতো সাংঘাতিক ব্যাপার! মানে মা আসে মেয়ের সাথে সময় কাটাতে আর মেয়ের মধ্যে ঢুকে তারপরে......... বাবারে! উফফফফফ!
অতনু বিজ্ঞের মতো মুচকি হেসে অসীমকে থামিয়ে বললো - আরে দাঁড়া দাঁড়া...... গল্প শেষ কে বললো?
আমরা সবাই - এখনো বাকি আছে?
অতনু - অবশ্যই! তোরা একটা ব্যাপার ভুলে গেলি? রাতে তো আরও একটা ব্যাপার হয়েছিল। যেটা ছোট মামাও সকালে নিজেই মামীকে জানাতে ভুলে গেছিলো। সন্ধে বেলা মামাবাবুর মুখে পুরোটা শুনে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে করতে মামা হটাৎ করে বলেই ফেলে - সত্যিই! সে যে কি বীভৎস রূপ তোরা ভাবতে পারবিনা। ঘাড় বেঁকিয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে। একবারও ভাবলাম তোদের ডাকবো কিন্তু আমি যেন শালা নড়তেও পারছিনা। ভাগ্গিস এই পাশের বাড়ির থেকে কোনো একজন আমার মতোই ওকে অমন দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ফেলে। সেই তো চেঁচিয়ে বলে " এই কে ওখানে? তুই কি করছিস? যা ভেতরে যা " তখন দেখি সেই মেয়ে আস্তে আস্তে সরে যায়। উফফফফ ভাগ্গিস ওনার আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলাম....তাইতো আমার সাহসটাও ফিরে পাই। আমার মতোই আরেকজন তাহলে তাকে দেখেছে.......
মামা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলেন কিন্তু ওই মামাবাবু ওকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করেন যে সে কার কথা বলছে? তখন ছোটমামা বলে যে সে পাশের বাড়িটা থেকে একটা মানুষের কণ্ঠ শুনেছিলেন। যেন ছাদে দাঁড়িয়ে কেউ ওই বাড়ির মেয়েটাকে ধমক দিয়ে বলে চলে যেতে, তবেই তো মেয়েটা যায় নইলে তো কিছু একটা বিপদ ঘটিয়ে ফেলতে পারতো সে। একজন বয়স্ক লোক কেউ। গলার স্বর পাতলা। যদিও মামা কাউকে দেখতে পায়নি তবে সে যে বয়স্ক কেউ তাতে সন্দেহ ছিলোনা। পুরোটা শুনে মামাবাবু হা করে অবাক চোখে আমার ছোট মামার দিকে তাকিয়ে থাকেন। তারপরে নিজেই বলেন যে ঐবাড়িতে বয়স্ক লোক কেউ থাকেনা! দুই মহিলা মানে শাশুড়ি আর তার বৌমা থাকে। আর তার চার বছরের বাচ্চা আছে। স্বামী কর্ম সূত্রে কলকাতায় থাকে। আর কোনো বয়স্ক কেউ তো নেই।
- আচ্ছা তুমি ভুল শোনোনি তো? কোনো বয়স্ক মহিলার কণ্ঠ শোনোনি তো তুমি ?
মামাবাবুর প্রশ্নে ছোট মামা মাথা নেড়ে জানান যে তার কোনো ভুল হয়নি। গলার স্বর পাতলা হলেও ওটা যে পুরুষমানুষের কণ্ঠ ছিলো এই ব্যাপারে তিনি শিওর। আর হ্যা একটু কাঁপুনি ছিল গলায়। সে প্রায় ধমক দিয়ে ওই বাড়ির মেয়েটাকে বলছিলো ফিরে যেতে ঘরে। এতে কোনো ভুল হয়নি মামার। কিন্তু এই ভুল ঠিক এর প্রশ্ন উঠলো কেন? জানতে চেয়েছিলেন ছোট মামা ওনার থেকে। তাতে ওই মামাবাবু বলেন কোনো বয়স্ক পুরুষ নেই ওই বাড়িতে। শুধুই দুই মহিলা আর বাড়ির কাজের বৌ আছে। এছাড়া বাড়ির বাচ্চাটা। শুনে বেশ অবাক হয় ছোট মামা। মামাকে তিনি আরও জানান যে এক সময় অবশ্যই একজন বয়স্ক মানুষ ছিলেন। ওই বাড়ির কর্তা। হারাধন জ্যাঠা। কিন্তু তিনিও তো দু বছর হলো ইহলোক ত্যাগ করেছেন। আর হ্যা.... ওনার গলার। স্বর সত্যিই পাতলা ছিল। তুলিকাদের সাথে বেশ ভালোই সম্পর্ক ছিল জ্যাঠার। দেখা হলেই কথা বলতো। আর শেষের দিকে বয়সের কারণে কথা বলায় কম্পনও এসেছিলো। একদিন হটাৎ ঘুমের মধ্যেই তিনি.........।
সব শুনে ছোট মামা আর সবাই অবাক হয়ে গেছিলো। ওই মামাবাবুও। তাহলে রাত্রে কার গলা শুনলো মামা? কে ধমক দিচ্ছল ওই মেয়েটাকে? তাহলে কি......!!?
এর পর আরও দুই দিন মামারা ওবাড়িতে ছিল। রাতের দিকে মামা ও বন্ধুরা বারান্দায় গিয়ে চোখ রেখে বেশ অনেক্ষন অপেক্ষাও করেছিল পরের রাতে। কিন্তু আর কিস্সু দেখা যায়নি। ফাঁকা ছাদ আর নারকেল গাছের দুলুনি ছাড়া। এমনকি রণজয় মামারা শুয়ে পড়ার পর ছোট মামা সাহস করে একাই আরেকবার বারান্দায় গেছিলেন। কেন যে এমন ইচ্ছে হয়েছিল মামা নিজেও জানেনা। কিন্তু যেন কিছু একটা আবারো দেখার নেশা পেয়ে বসেছিল মামার ওপর। কিন্তু আর কিছু দেখতে পায়নি সে। যদিও এক আধবার মনে হচ্ছিলো কেউ হয়তো ও বাড়ির ট্যাংকের আড়াল থেকে লক্ষ করছে ওনার দিকে কিন্তু ভালো করে দেখতে বোঝা যায় সেটা গাছের দুলতে থাকা পাতার ছায়া মাত্র। ভয় পেলে যেন ছোটোখাটো এমন বিষয় গুলোই ভুতের রূপ নেয়। বেশ কিছুক্ষন দাঁড়িয়েও মামা আর কিচ্ছু দেখতে পাননি। ফিরে আসেন। তারপরের দিন বিকালে নিজের অন্য বন্ধুটির সাথে ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফিরে জান নিজের বাড়ি। রণজয় মামা খালি থেকে জান। উনি আরও দুদিন কাটিয়ে ফিরে ছিলেন। এই ছিল আমার ছোট মামার ভূত দেখার ঘটনা।
সবটা শুনে অসীম ভয় ভয় বলে উঠলো - আ.... আমার কিন্তু মনে হচ্ছে ওটা ওর মা নয়, অন্য কিছু পসেস করে মেয়েটাকে। নইলে কোন মা ঐভাবে মেয়েকে দিয়ে ওসব করাতে পারে বাবাগো! গেলো আজ রাতের ঘুম!
অতনু আবারো দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে শয়তানি হাসি হেসে অসীমকে বললো - সেসব তো আর জানা যায়নি। পরে আর মামা খোঁজও নেয়নি। কিন্তু ভাই! তুই কিন্তু সাবধানে বাড়ি ফিরিস।
অসীম - কে.... কেন?
অতনু - না মানে এমন একটা ঘটনা শুনলি আবার তোদের ওই গলির দিকের জায়গাটা তো অন্ধকারই থাকে। আর দুটো বাড়ি আগেই কি হয়েছিল মনে আছে তো? এখনো কিন্তু ও বাড়িতে কেউ থাকে টাকে না। তাই বললাম.... সাবধানে ফিরিস। এদিক ওদিক বেশি তাকাস না যেন। কি দেখতে কি দেখে ফেলবি।
শুনে আমরা সবাই আবারো হেসে উঠলেও অসীম দেখি আবারো ঢোক গিললো।
সমাপ্ত
কেমন লাগলো জানাবেন পাঠক বন্ধুরা।
Posts: 18,183
Threads: 471
Likes Received: 64,065 in 27,383 posts
Likes Given: 23,517
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,244
ভালো লাগলো , ভয় পাইনি কিন্তু।
Posts: 6,104
Threads: 41
Likes Received: 11,800 in 4,106 posts
Likes Given: 5,302
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,690
(23-10-2022, 08:45 PM)ddey333 Wrote: ভালো লাগলো , ভয় পাইনি কিন্তু।
ধণ্যবাদ। খুব একটা ভয়ের নয়ও এটা। যতটা সম্ভব বাস্তবিক রাখার চেষ্টা। পরে আবারো ভয় গপ্পের মতো ভৌতিক কিছু পেলে লিখবো। তখন দেখবো যাতে ভয় পাওয়াতে পারি।
Posts: 18,183
Threads: 471
Likes Received: 64,065 in 27,383 posts
Likes Given: 23,517
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,244
23-10-2022, 09:46 PM
(This post was last modified: 23-10-2022, 09:47 PM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ভুত চতুর্দশীর নির্ভীক শুভেচ্ছা
Posts: 4,424
Threads: 7
Likes Received: 8,907 in 2,802 posts
Likes Given: 4,330
Joined: Oct 2019
Reputation:
3,211
খুব একটা ভয়ের কিছু না থাকলেও খুব সুন্দর একটা সামাজিক গল্প এ বাড়ির হারাধন জ্যাঠা আর ও বাড়ির তুলিকার মা দুই ভুতে ভুতে টরেটক্কা।
Posts: 6,104
Threads: 41
Likes Received: 11,800 in 4,106 posts
Likes Given: 5,302
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,690
(23-10-2022, 09:53 PM)Bumba_1 Wrote: খুব একটা ভয়ের কিছু না থাকলেও খুব সুন্দর একটা সামাজিক গল্প এ বাড়ির হারাধন জ্যাঠা আর ও বাড়ির তুলিকার মা দুই ভুতে ভুতে টরেটক্কা।
হ্যা একদমই তাই। সেই ভাবেই লিখেছি। ভয়ের থেকে বেশি একটা ক্রিপি অনুভূতি জাগানো গল্প। কি যে হলো কেন হলো তার কোনো উত্তর নেই শুধুই আছে ঘটনা।
ভূত vs ভূত
Posts: 1,473
Threads: 7
Likes Received: 2,404 in 925 posts
Likes Given: 2,413
Joined: Mar 2022
Reputation:
509
সিক্যুয়েল টা ভালই ছিল দাদা..
তবে আগের বারের পিলে চমকানো ভয় টা এবার কেন জানি ফিল হলো না।
আরও ভয়ানক কিছুর আশায় থাকবো।
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।
Posts: 173
Threads: 0
Likes Received: 181 in 162 posts
Likes Given: 948
Joined: Feb 2022
Reputation:
12
Choto er moddhe valoi. Bisesh kore oi creepy body language ta. Omn vabe keu dariye stare korle voy labe. Etake apnar ager golpo bhoy er sathe compare kora jayna. Ota osm chilo. Eta small story hisebe good. Onekta realistic approach. Aro chai dada emn story.
Posts: 81
Threads: 0
Likes Received: 39 in 35 posts
Likes Given: 46
Joined: Oct 2021
Reputation:
1
Posts: 6,104
Threads: 41
Likes Received: 11,800 in 4,106 posts
Likes Given: 5,302
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,690
(23-10-2022, 09:46 PM)ddey333 Wrote: ভুত চতুর্দশীর নির্ভীক শুভেচ্ছা
তোমাকেও ♥️
(23-10-2022, 11:34 PM)nextpage Wrote: সিক্যুয়েল টা ভালই ছিল দাদা..
তবে আগের বারের পিলে চমকানো ভয় টা এবার কেন জানি ফিল হলো না।
আরও ভয়ানক কিছুর আশায় থাকবো।
আমি জানি ভাই। সেই ভেবে লেখা নয় এটা। এটা জাস্ট একটা সামান্য ভয়ের গল্প। ভয়টা সত্যিই ভয় পাবার মতোই করে লিখেছিলাম। আবারো ভালো কিছু মাথায় আসলে লিখবো ক্ষণ ।
(24-10-2022, 12:02 AM)Papai Wrote: Choto er moddhe valoi. Bisesh kore oi creepy body language ta. Omn vabe keu dariye stare korle voy labe. Etake apnar ager golpo bhoy er sathe compare kora jayna. Ota osm chilo. Eta small story hisebe good. Onekta realistic approach. Aro chai dada emn story.
হ্যা ভয় আরও ভয়ের
আমি সেই ভেবে এটা লিখিওনি যে ওটার থেকেও ভয়ের কিছু লিখতে হবে। এটা জাস্ট হালকা শিহরিত করার জন্য। আবারো ভালো কিছু মাথায় এলে লিখবো।
(24-10-2022, 03:44 AM)Rabbi Mahmud Wrote: Onek valo laglo.......
ধন্যবাদ ♥️
Posts: 6,104
Threads: 41
Likes Received: 11,800 in 4,106 posts
Likes Given: 5,302
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,690
Posts: 1,105
Threads: 0
Likes Received: 1,261 in 876 posts
Likes Given: 3,417
Joined: Apr 2022
Reputation:
142
24-10-2022, 04:42 PM
(This post was last modified: 24-10-2022, 07:07 PM by Boti babu. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
Happy Diwali dada
আমাকে আমার মত থাকতে দাও
Posts: 421
Threads: 0
Likes Received: 380 in 294 posts
Likes Given: 1,201
Joined: Aug 2019
Reputation:
28
24-10-2022, 07:10 PM
(This post was last modified: 24-10-2022, 07:12 PM by Avishek. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
বেশ ভালো লাগলো। তারমানে হারাধন বাবুই বাঁচিয়ে দিলো মেয়েটাকে। পোস্টারটাও খুব সুন্দর হয়েছে।
Happy Diwali baban da
Posts: 6,104
Threads: 41
Likes Received: 11,800 in 4,106 posts
Likes Given: 5,302
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,690
(24-10-2022, 07:10 PM)Avishek Wrote: বেশ ভালো লাগলো। তারমানে হারাধন বাবুই বাঁচিয়ে দিলো মেয়েটাকে। পোস্টারটাও খুব সুন্দর হয়েছে।
Happy Diwali baban da
অনেক ধন্যবাদ ♥️
শুভ দীপাবলির শুভেচ্ছা জানাই
•
Posts: 218
Threads: 10
Likes Received: 270 in 121 posts
Likes Given: 169
Joined: Oct 2021
Reputation:
40
ভালো লাগছে।
অসাধারণ লেখা
Posts: 1,194
Threads: 2
Likes Received: 2,121 in 979 posts
Likes Given: 1,587
Joined: Jul 2021
Reputation:
637
পুরো লেখাটা জুড়েই একটা টান টান উত্তেজনা ছিল, বেশ ভালো
Posts: 6,104
Threads: 41
Likes Received: 11,800 in 4,106 posts
Likes Given: 5,302
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,690
•
Posts: 2,661
Threads: 0
Likes Received: 1,046 in 949 posts
Likes Given: 43
Joined: May 2019
Reputation:
26
Posts: 6,104
Threads: 41
Likes Received: 11,800 in 4,106 posts
Likes Given: 5,302
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,690
(25-10-2022, 07:22 PM)chndnds Wrote: Valo laglo
ধন্যবাদ ♥️
•
|