Thread Rating:
  • 37 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
পাপের তোরণ
#1
Star 
পাপের তোরণ
- রিয়ান খান

[img][Image: image.png][/img]



সুপ্রিয় পাঠকগন ও বন্ধুরা, আমার লেখালেখির ছোট্ট একটা প্রয়াস এই পাপের তোরণ। এটিই আমার লেখা প্রথম কোন বড় এবং ধারাবাহিক চটি-গল্প হতে চলেছে।  আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আর ভালো লাগলে অবশ্যই আমায় কমেন্ট করে জানাবেন। 

[+] 2 users Like riank55's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
পর্ব ### ১



তুলিকে স্কুলে দিয়ে আসার পর বেশ অনেকখানি সময় নিজের মত করে পায় শান্তা। তখন আয়নার সামনে একটু গিয়ে বসে। বিয়ের পর আর ওমন করে রূপচর্চা করা হয়ে উঠে নি শান্তার। ত্বকের উজ্জ্বলতাও যেন খানিকটা নষ্ট হয়ে গেছে। সেটা ফিরে পেতেই মুখে মুলতানি মাটি মাখছে কদিন থেকে শান্তা। কয়েক মাস আগেও ব্যাপারটা সম্ভব ছিল না। শান্তার শাশুড়ি - ওসব রূপচর্চা একদম সইতে পারতো না। তার মৃত্যুর শোকটা শান্তাকেও নাড়া দিয়েছে বটে, তবে বেশ দ্রুতই নিজেকে সামলে নিয়েছে সে। মনের গভীরে হয়তো একটা সত্ত্বা স্বস্তির শ্বাসও ফেলেছে। শান্তা ভেবেছিলো এইবার সংসারটাকে একদম নিজের মত করে গোছাতে পাড়বে। কাধের উপর থেকে হুকুম চালাবে না কেউ আর। কিন্তু ভাবনাতেই সাড়া। 


দীর্ঘ নয় বছরের দাম্পত্য জীবনে আজ যেন শান্তা নিজেকেই ভুলতে বসেছিল। নিজের চাহিদা, নিজের ইচ্ছে - সব কিছু পরিবারের জন্যই বিসর্জন দিতে হয়েছে তাকে। তবে না, আর নয়। আর কতোই বা নিজের ইচ্ছে গুলো, চাহিদা গুলো ধামাচাপা দিয়ে রাখবে? তাই তো কদিন আগে রূপচর্চার দোকান থেকে এই মূলতানি মাটি কিনে এনেছে ও। শরীরের অবাঞ্চিত মেদ গুলো ঝেটিয়ে বিদেয় করতে আজকাল ডায়েটও করছে শান্তা। মাত্র কয়েক মাসেই দারুণ ফল পেয়েছে সে। মেয়েকে স্কুলে দিয়ে হেটেই বাসায় ফিরে আজকাল শান্তা। তারপর যে ঘণ্টা দুয়েক সময় হাতে পায় ও, এই সম্পূর্ণ সময়টাই নিজেকে নিয়ে বেস্ত থাকে। শাশুড়ি বেচে থাকতে নিজেকে সময় দেবার কথা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারতো না সে। 


কোন কোন দিন শান্তা আয়নার সামনে দাড়িয়ে কাপড় ছাড়ার সময় নিজের নগ্ন শরীরটা একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে। নাহ, দেখতে নায়িকাদের মত সুন্দরী না হলেও মন্দ নয় শান্তা। পঁয়ত্রিশ বছরের যৌবন ভরা শরীরে আজও চটক আছে তার। আছে রূপের মাধুর্য আর মায়াবী একটা আকর্ষণ। আজকাল যেন নিজেকে নিজের কাছেই আগের চাইতেও বেশী সুন্দরী মনে হচ্ছে তার। তুলিকে স্কুলে দিতে গেলে অনেক ছাত্র-ছাত্রীর বাবারাও কেমন করে যেন তাকায় ওর দিকে আজকাল। কেউ কেউ তো ইনিয়ে বিনিয়ে কথাও বলতে আসে। লজ্জাই করে শান্তার। কদিন থেকে অবশ্য এই পুরুষমানুষদের বাড়তি নজরে আসাটা ভালোই লাগছে তার। 


ওসব ভাবতে গেলে কখনো কখনো দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে আসে শান্তার বুক চিড়ে। ইশ, আর সবার মত ফয়সালও যদি একটু চোখ তুলে চাইতো ওর দিকে! কয়েক মাস ধরে যেন স্ত্রীর সঙ্গে ভালো ব্যাবহার করতেও ভুলে গেছে ফয়সাল। শেষ কবে যে ওদের শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিলো, সেটাও মনে করতে পারে না শান্তা। মাতৃ শোকে ছেলে কাতর হবে, এটাই স্বাভাবিক, তাই বলে মাস পাঁচেক হয়ে যাবে - একটা বার চুমুও খেতে পাড়বে না? দুটো ভালো কথাও বলতে আসবে না? এটা কি মেনে নেয়া যায়?


শান্তা আজ যখন এত কিছু ভাবছিল, তখনই কলিং বেলটা হঠাৎ করে বেজে উঠে। একটু চমকেই উঠলো শান্তা। এই অসময় কে এলো আবার? ঘড়িতে সকাল এগারোটা বাজে। ঘরের কাজকর্ম শান্তা নিজের হাতেই করে। এই বেলা তাই কাজের লোক আসার তো প্রশ্নই উঠে না। মাসের পনেরো তারিখ, খবরের কাগজ এর বিলও চাইতে আসবে না নিশ্চয়ই। পারা প্রতিবেশীদের সঙ্গে ওভাবে কখনো মেলামেশা করা হয় নি শান্তার। কিন্তু তাই বলে তো আর দরজা না খুলে থাকা যায় না। ভাগ্যিস আজকে এখনো মুলতানি মাটিটা মুখে লাগানো হয় নি। সবে মাত্র প্যাকেটটা বার করে রেখেছে শান্তা ড্রেসিং টেবিল এর উপর। পঢ়নে ওর ঘরের কামিজ। কোন মতে হাতটা বাড়িয়ে উর্ণাটা তুলে বুকে দিতে দিতে শান্তা দরজা খুলতে আসে। পিপহোলে চোখ রাখতেই ওর বুকটা ধড়াস করে উঠে। এ কি! উনি এই অসময়?


“রাজীব ভাই আপনি? এ-এই অসময়?” দরজা খুলে শান্তা একটু বোকার মতই বলে বসে। ওপাশে দাড়িয়ে আছে রাজীব ভাই। লম্বা দেহের গড়ন, চৌকশ মুখের অবয়ব, গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি আর চোখ দুটো যেন কোটরে ঢুকে গেছে অনেক আগেই। চুল গুলো কাচা-পাকা হলেও রাজীব ভাই এর বয়সটা তেমন একটা বুঝা যায় না। হয়তো নিয়মিত ব্যায়াম করে বলেই। ফয়সালের সঙ্গেই চাকরি করতো এক সময় রাজীব। মাঝখানে ডিভোর্স এর পর মানসিক ভাবে অনেক ভেঙ্গে গিয়েছিলো। তখন চাকরি ছেড়ে ব্যাবসায় নেমে পড়েছিল। ওই সুত্র ধরেই বাসায় আসা যাওয়া ছিল রাজীবের। তবে কখনো এমন হুট করে সকাল বেলা চলে আসে নি। 


স্বভাবসুলভ মুচকি হাসিটাই দিলো রাজীব। কোটরের ভেতর থেকে ওর চোখ দুটো চকিতে একবার যেন মেপে নিল শান্তাকে। এক দেখাতেই অপাদ্মস্তক জরিপ করা হয়ে গেলো তার। ভারী স্বরে জানালো, “এই তো এদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম, ভাবলাম তোমার সঙ্গে একটু দেখা করেই যাই...”


“ওহ… আসুন না, আসুন… ফয়-ফয়সাল তো অফিসেই, মানে… আসুন বসুন...” শান্তা ইতস্তত করে। নাহ, একদম ঠিক হচ্ছে না। রাজীব ভাইকে কখনো তেমন মন্দ লোক বলে মনে হয় নি শান্তার। আগে যখন আসা যাওয়া চলত, তখন একটু চোখাচোখিও হতো তার সঙ্গে। তাই বলে এভাবে হুট করে যদি একলা বাসায় চলে আসে কেউ, তখন একটু ভড়কে যাওয়াটাই যেন স্বাভাবিক। 


রিয়ান খান 
(riank55)
[+] 9 users Like riank55's post
Like Reply
#3
পর্ব ### ২




বসার ঘরে বসতে বসতে শান্তা চট করে রান্নাঘরে গিয়ে চায়ের পানিটা চড়িয়ে দিলো। নিজেকেও একটু গুছিয়ে নিল সেই সাথে। বড় করে দম নিয়ে বেড়িয়ে এলো আবার। “তারপর বলুন না - কেমন আছেন? কয়েক মাস থেকে তো আপনার খবরই নেই...”


“আসলে ফয়সালের এমন একটা সংবাদ, তারপর ওর সঙ্গে আর যোগাযোগ করেও তেমন সাড়া পাচ্ছি না। তাছাড়া ওকে আর এই সময় বিরক্ত করতেও চাইছি না।”


“হ্যাঁ, আজকাল একটু কেমন যেন আনমনা হয়ে থাকে ও...” শান্তা বসতে বসতে নিজেকেই যেন বুঝাল। 
“সত্যি বলতে শান্তা,” একটু ইতস্তত করে যেন রাজীব। “এইসব কারণেই তোমার কাছে আসা।”


“মানে?” শান্তা ভ্রূ কুচকে তাকায়। 


“ফয়সালকে আমি সপ্তাহ খানেক আগে - ব্লু বার্ড ক্লাব থেকে বেরোতে দেখেছি,” রাজীব মৃদু কণ্ঠে বলে। “দেখে মনে হচ্ছিল - ও মাতাল,”


“ওহ...” নিজের অজান্তেই হাতটা গলার কাছে উঠে আসে শান্তার। কেমন যেন শুকনো লাগছে গলাটা। মনে হচ্ছে কিছু একটা আটকে গেছে। হ্যাঁ, ফয়সাল একটু আধটু মদ্যপান সব সময়ই করেছে। শাশুড়ি মায়ের অগোচরে, ঘুরতে বেরোলে কিংবা অফিস পার্টীতে ওর মদ্যপানের অভ্যাস এর কথাটা জানা আছে শান্তার। কয়েক সপ্তাহ আগে অফিস থেকে আসার পথে দুই-একবার মদ খেয়েই বাড়িতে ফিরেছে ফয়সাল। ও নিয়ে বাকবিতণ্ডাও হয়েছে ওদের মাঝে। তবে তাই বলে ফয়সাল নিশ্চয়ই নিয়ম করে ব্লু বার্ড ক্লাবে যায় না! রোজ রোজ মাতাল হয়ে ফিরলে শান্তা টের পাবে না? 


“জানি ব্যাপারটা তোমার কাছে ধাক্কার মত লাগতে পারে,” একটু গলা খাকারি দেয় রাজীব। “কিন্তু কাকি মারা যাবার আগে - ফয়সাল আমার বারণ সত্ত্বেও বিরাট অংকের একটা ইনভেস্টমেন্ট করেছিলো। শুনেছি টাকাটা নাকি সম্পূর্ণই মার গেছে। এমন অবস্থায় মাসনিক ভাবে ভেঙ্গে পড়াটা বেশ স্বাভাবিক। তারপর ওকে ব্লু বার্ড থেকে বেরোতে দেখলাম - আসলে আমি তোমার জন্যই চিন্তা করছিলাম। তোমাদের মাঝে সব কিছু ঠিক থাক চলছে তো!”


রান্নাঘর থেকে চায়ের পানি ফুটার শব্দ হল। শান্তা প্রায় লাফিয়ে উঠলো যেন। নিজেকে সামলে নিয়ে উঠে দাঁড়ালো। “আছে তো - আমাদের মাঝে আবার কি হবে। আপনি বসুন, আমি চা করে আসছি,”


রান্নাঘরে চা বানাতে বানাতে শান্তা ব্যাপারটা নিয়ে ভাবল। ওর হাত কাপছে। বুকটাও কেমন টিব টিব করছে। কি বলছে রাজীব ভাই! শাশুড়ি মা মারা যাবার আগে ফয়সাল বিশাল অংকের টাকা ইনভেস্ট করেছিলো? কিন্তু ওকে তো এই ব্যাপারে কিছুই জানায় নি ফয়সাল! 


বিস্কিট, চানাচুর আর চায়ের কাপটা ট্রেতে সাজিয়ে ফিরে এলো শান্তা। আগের জায়গাতেই বসে আছে রাজীব ভাই। রান্নাঘর থেকে বসার ঘরে আসতে গিয়ে শান্তা টের পেলো রাজীব ভাই যেন ওর প্রতিটি পদক্ষেপ গুনছে। ভীষণ লজ্জা করছে ওর। কেমন একটা অপরাধ বোধও মাথা চারা দিচ্ছে। ট্রে-টাকে রাজীব ভাই এর সামনে নামিয়ে রাখল শান্তা। তারপর আবার গিয়ে বসলো উল্টো দিকে। “নিন, একটু চা নিন...”


“তোমার হাতের চা আমার সব সময়ই খুব পছন্দ,” রাজীব ভাই ওর দিকে তাকিয়েই কথাটা বলে একটা হাসি দিলো। ঢোঁক গিলল শান্তা। একটু পানি খেয়ে আসা দরকার ছিল। গলাটা সত্যিই শুকনো লাগছে ওর। শুধু মাত্র চায়ের কাপটা তুলে নিল রাজীব, বিস্কিট গুলো ছুঁয়েও দেখল না। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে প্রশংসা করলো; “তোমার হাতে জাদু আছে শান্তা। তোমার চা বল, আর রান্না বল - সব কিছুই দারুণ স্বাদ। তুমি যদি আমার বউ হতে না, আমি তো মোটা হয়ে ভাল্লুক হয়ে যেতাম এত দিনে হা হা ...”


প্রশংসা শুনে হাসল শান্তা। বিশেষ করে বউ হবার অংশটুকু বেশ উপভোগ করলো যেন। রাজীব ভাইকে ওর কখনো মন্দ মনে হয় নি। এখন এত ঘাবড়াচ্ছে কেন বুঝে পাচ্ছে না সে। “হয়েছে… আপনি তো আর আসেনই না চা খেতে,”


“আসবো,” রাজীব মাথা দোলায়। “এখন থেকে চলে আসব। তোমার সঙ্গে গল্প করবো আর চা খাবো কেমন?”


“আপনার যখন ইচ্ছে চলে আসবেন,” শান্তা সহজ কণ্ঠে বলে। “আচ্ছা রাজীব ভাই, কোথায় টাকা ইনভেস্ট করেছিলো ফয়সাল?”


“সে তো আমি ঠিক বলতে পারি না,” রাজীব মাথা নাড়ে। “আসলে আমি চাই না ও নিয়ে তুমি আবার ফয়সালকে বল। কে জানে - হয়তো ও ভুল বুঝতে পারে তাই না? তোমায় সতর্ক করতেই আমার বলা...”


“আপনাকে ধন্যবাদ, আপনি এমন একটা সময়ে আমাদের কথা ভেবেছেন...”


“এ তো বন্ধু হিসেবে আমার কর্তব্য ছিল শান্তা,” চায়ে আবারও চুমুক দেয় রাজীব। “তোমার মেয়ে কোথায়? স্কুলে?”


“হ্যাঁ স্কুলে,”


“ওহ, বাসায় একাই আছো তাহলে… কেমন লাগে তোমার একা আজকাল?” রাজীব ভ্রূ নাচিয়ে জানতে চায়।


“এই তো কেটে যাচ্ছে,” শান্তা ঘুড়িয়ে জবাব দেয়। “আসলে, মা চলে যাবার পর একটু ফাকাই হয়ে গেছে বাসাটা...”


“হম, তা বটে,” মাথা দোলায় রাজীব। “তোমার গল্প করার সঙ্গী চলে গেলো,”


শান্তা ঠিক এক মত হতে পারে না। নাহ, শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে তেমন গল্পের সম্পর্ক ওর ছিল না। একলা একলাই ওর দিন কাটতো। একটা সুবিধে ছিল, মা তেমন টিভি দেখতেন না। তাই শান্তা যা ইচ্ছে তাই দেখতে পারতো টিভিতে। ওতেই সময় কেটে যেতো শান্তার। তবে এ কথা রাজীবকে বলার দরকার নেই। সে বলল; “মা মারা যাবার পর আমার দায়িত্বটাও বেড়ে গেছে,”


“তা বুঝাই যাচ্ছে,” মাথা দোলায় রাজীব। “একদম শুকিয়ে গেছ তুমি… তবে একটা কথা কি জানো? আগের থেকে তোমায় অনেক… সেক্সি লাগছে।”


সুন্দরী নয়, রূপবতী নয়। এক কথায় সেক্সিতে চলে গেলো! শান্তার বুকটা ধড়ফড় করে উঠলো মুহূর্তের জন্য। সেক্সি! এ তো ঠিক ভদ্রলোক এর শব্দ মনে হচ্ছে না। ঢোঁক গিলে ও চাইলো রাজীব এর চোখে। ওর কোটরের ভেতরে সেধিয়ে যাওয়া চোখ দুটো মেলে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাজীব। শান্তার সঙ্গে চোখাচোখি হতেও চোখ নামালো না। বরং শান্তাই চোখ নামিয়ে দেখতে পেলো নিজের ঠোঁটটা চাটছে রাজীব। “আ-আপনি কি - মানে আপনি কি আগের বাসাতেই থাকছেন?”


“নাহ,” মাথা নাড়ে রাজীব। “এই ছয় নম্বরেই বাসা নিয়েছি। ছোট একটা বাসা আর কি…… বেশীদিন হয় নি, তবে এর মধ্যেই একদম যাচ্ছে তাই বানিয়ে ফেলেছি।”


“তাই নাকি!” মুখের সামনে এসে পড়া কটা চুল কানের পেছনে গুজে শান্তা।


“আসলে একলা পুরুষ মানুষ আমি - ঠিক গোছাতে জানি না কিছুই। তুমি একদিন গিয়ে গুছিয়ে দিয়ে এসো তো, তোমার কোমল হাতের স্পর্শ পড়লে ঝকঝকে তকতকে হয়ে যাবে!”


“হা হা,” কষ্ট করে হাসে শান্তা। “ঠিক আছে, একদিন ফয়সালকে নিয়ে হাজির হবো,”


“কেন আমার বাসায় একলা যেতে ভয় করে নাকি?” রাজীব জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়। তার চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে না রসিকতা করছে। আবারও ঢোঁক গিলে শান্তা।


“নাহ নাহ, ভয় করবে কেন! মানে বলছিলাম যে...”


“বলছিলে কি আমি বলি, তুমি বলছিলে যে রাজীব তো ভালো লোক নয় - ইতর গোছের লোক! খালি বাসায় নিয়ে গিয়ে কি না কি করে দেয় তাই না?”


“আপনি একদমই ভুল বুঝছেন!” হাতের মুঠিতে উর্ণার কনাটা প্যাঁচাতে প্যাঁচাতে বলল শান্তা। “এমন কিছু নয়,” বলতে বলতেই কাধ থেকে খসে পড়লো শান্তার উর্ণাটা। চট করে ও হাত তুলে আবার ওটাকে কাঁধে তুলে দিলো। কিন্তু ততক্ষনে রাজীব এর চোখ পড়ে গেছে উর্ণার তলায়। ডান বুকে সুডৌল স্তনের অবয়বটা দেখে আবারও ঠোঁট চাটল রাজীব। 


“দুষ্টুমি করছিলাম তোমার সঙ্গে,” রাজীব হাসে। “আমার মনে হয় এভাবে একলা আসাটা ঠিক হয় নি।”


“না না ঠিক হবে না কেন? আপনি এসেছেন আমি খুশী হয়েছি,” শান্তা মনে মনে নিজের গালে নিজেই চড় দেয়। ইশ, আর কিছু বলার পেলো না! খুশী হয়েছি!


“তাহলে তো আবারও আসতে হয়,”


“আসবেম, যখন ইচ্ছে চলে আসবেন।”


“আচ্ছা আজ উঠি কেমন?” রাজীব উঠে দাড়ায়। উঠে দাড়ায় শান্তাও। আবারও কাধ থেকে খসে পড়ে ওর উর্ণাটা। চট করে সেটা কাঁধে তুলতে গিয়ে চোখ তুলে তাকায় শান্তা। এইবার রাজীব এর চোখ দুটো ধরে ফেলে সে। ইশ, লোকটা ওর বুকের দিকেই তাকিয়ে আছে। “আরেকদিন আসবো নি। তুমি আবার ফয়সালকে বলতে যেয়ো না, ও ভাববে আমি অনধিকার চর্চা করছি। আসলে আমার বিপদে তোমরা আমায় সাহায্য করেছো, তাই ফয়সালের বিপদে আমিও পাশে থাকতে চাই। ওকে একটু চোখে চোখে রাখছি আমি, যেন কোন ভুল করে না বসে,”


“আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দেবো,” শান্তা জোরে শ্বাস ফেলে। “ফয়সাল আজকাল আমার সঙ্গে মন খুলে একদম কথা বলে না,”


“ঠিক হয়ে যাবে,” রাজীব সাহস দেয়। “কটা দিন সময় দাও ওকে। আমি চলি, কেমন?”


“আচ্ছা রাজীব ভাই,” শান্তা হাসি মুখে এগিয়ে দেয় রাজীবকে দরজা অব্দি। দরজার বাহিরে গিয়ে ফিরে তাকায় রাজীব। একটা হাসি দিয়ে তারপর সিড়ি বেয়ে নেমে যায়। দরজাটা দ্রুত বন্ধ করে দেয় শান্তা। পরক্ষনেই দরজায় পীঠ দিয়ে হেলান দেয়। চেপে রাখা শ্বাসটা বেড়িয়ে আসে ওর হা করা মুখের ভেতর থেকে। 



রিয়ান খান

(riank55)
[+] 8 users Like riank55's post
Like Reply
#4
দারুন ভাবে শুরু করেছেন, পরের আপডেট এর অপেক্ষায় থাকলাম
[+] 1 user Likes Black_Rainbow's post
Like Reply
#5
Wow ... Nyc start ....
[+] 1 user Likes dreampriya's post
Like Reply
#6
(13-09-2020, 02:55 AM)Black_Rainbow Wrote: দারুন ভাবে শুরু করেছেন, পরের আপডেট এর অপেক্ষায় থাকলাম

(13-09-2020, 11:07 AM)dreampriya Wrote: Wow ... Nyc start ....

ধন্যবাদ আপনাদের। সঙ্গে থাকবেন, চেষ্টা করবো নিজের সব থেকে ভালোটা দেবার।
Like Reply
#7
পর্ব #### ৩



রাতের বেলায় বিছানায় কাগজ পত্র নিয়ে বসা মোটেই পছন্দ নয় শান্তার। কিন্তু কিছু বলার সাহস হল না আজ ফয়সালকে। আঙ্গুলের ফাকে চেপে রাখা জলন্ত সিগারেট এর ঘ্রানটা অসহ্য লাগছে ওর। এস্ট্রেটাও বিছানার উপরে পড়ে আছে। কতবার বলেছে শান্তা ওকে - ঘরের মধ্যে সিগারেট খেয় না। আর তাছাড়া তুলি আছে, চট করে ঘরে ঢুকে বাবাকে সিগারেট খেতে দেখে কি মানসিকতাটাই বা তৈরি হবে ওর মধ্যে ভেবে পায় না শান্তা। তুলি অবশ্য ঘুমিয়ে পড়েছে বেশ আগেই। আগে তো পাশের ঘরে দিদার সঙ্গে ঘুমাত তুলি, দিদা মারা যাবার পর এ ঘরেই ঘুমাচ্ছিল। কদিন থেকে মেয়েকে একলা শুইয়েই অভ্যাস করছে শান্তা।


“কিছু বলবে?” বরের গম্ভীর গলা শুনে হঠাৎ একদম চমকে উঠলো শান্তা। আয়নার সামনে বসে চুল গুলো বেণি করছিলো সে। আমতা আমতা করে মাথা নাড়ল। ওর দিকে তাকিয়ে সিগারেট এ একটা টান দিয়ে ফয়সাল কাগজপত্র ছেড়ে সোজা হল। “এভাবে বার বার তাকাচ্ছ যে! তাই বললাম কিছু বলবে?”


“না মানে,” শান্তা একটু আমতা আমতা করে। “বলছি যে, অফিসে সব কিছু ঠিক থাক আছে তো? এখনো কাগজ পত্র দেখছ?”


“ঠিক থাক থাকবে না কেন?” ভ্রূ কুঁচকায় ফয়সাল। “কি বলতে চাইছ?”


“না না তেমন কিছু বলছি না, মানে এত রাত অব্দি তো তুমি কাজ কর না! তাই আর কি...”


“এখন তোমার জ্বালায় কাজও করতে পারবো না নাকি?” ফয়সাল বিরক্তি নিয়ে বলে উঠতেই শান্তার মনটা কালো হয়ে উঠে। বড় করে নিঃশ্বাস নেয় সে। 


“আচ্ছা কর কাজ,” শান্তা উঠে দাড়ায়। “একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো?”


“হুম,” ঘোঁত করে একটা শব্দ করে আবার কাজে মন দেয় ফয়সাল। 


“তুমি কি নতুন কোন ব্যাবসা করছ নাকি? ওটা তো তোমার কোম্পানির নাম না,” শান্তা আঙ্গুল তাক করে বিছানায় ফেলে রাখা একটা ফাইলের দিকে। তার উপরে নামটা পড়া না গেলেও লোগোটা ঠিক অচেনা লাগছে শান্তার কাছে। 


“হ্যাঁ করছি,”


“ওহ,” কিসের ব্যাবসা করছ, আর জানতে সাহস হয় না শান্তার। “তো- তোমার ওই কলিগ কি যেন নাম… রাজীব ভাই এর সাথে নাকি?” চোখ জোড়া সরু করে ফয়সালকে লক্ষ্য করছে শান্তা। রাজীব এর নাম শুনতেই যেন ক্ষেপে উঠলো ফয়সাল। চোখ দুটো আগুনের মতন জ্বলে উঠলো তার। 


“ওই মাদার চোদটার নাম নিও না তো আমার সামনে,” মুখ খারাপ করে গাল দিলো ফয়সাল। “শালা নিজে তো ফকফকা আবার আমায় জ্ঞান দিতে আসে।”


“জ্ঞান!” ভ্রূ কুচকে ফেলে শান্তা।


“হ্যাঁ, নাক গলানো স্বভাব।” হাত নাড়ে ফয়সাল। “আমি মদ খাচ্ছি, নাকি ব্যাবসা করছি নাকি কি করছি, সেটা আমার ব্যাপার। ওর বাপের কি!”


“ওহ… ও নিশ্চয়ই তোমার ভালোর জন্য...” শান্তা বলতে গিয়ে থেমে যায়। ফয়সাল চোখ পাকিয়ে তাকিয়েছে ওর দিকে।


“আমার ভালো মন্দ এখন তোমার কাছ থেকে শিখতে হবে আমায়?”


শান্তা আর দাড়ায় না। চট করে বেড়িয়ে আসে ঘর থেকে। ওর চোখ দুটো ছলছল করে উঠে। বসার ঘরে এসে টিভিটা ছেড়ে দেয় শান্তা। ঘরের আলো আগেই নিভিয়ে দেয়া হয়েছিলো - টিভির আলোতে খানিকটা নিলচে একটা ভাব ছড়িয়ে পড়ে বসার ঘরে। সোফাতে বসতে বসতে শান্তা কোল এর উপর কুশনটা তুলে নেয়। তারপর দুই হাতের আজলায় আড়াল করে মুখটা।


--------------------------------------------
রিয়ান খান
[+] 6 users Like riank55's post
Like Reply
#8
পর্ব ### ৩



বেশ অনেকক্ষন এটা ওটা ঘুরায় শান্তা। রাতের বেলা তেমন ভালো অনুষ্ঠান নেই টিভিতে। কিছু টক-শো, কিছু পুরতন সিনেমা। তারই মধ্যে হঠাৎ একটা রোম্যান্টিক সিরিজ পেয়ে যায় শান্তা। দিনের বেলার এপিসোড রিপিট করছে আবার। দেখতে দেখতে এতটাই মগ্ন হয়ে উঠে যে মনের ভেতরে জমে উঠা কালো মেঘটুক যেন মিলিয়ে যায় ওর। সিরিজ এর শেষ দিকে নায়ক-নায়িকার বেশ সুন্দর একটা দৃশ্য দেখায়। নায়ক কিছু একটা ভুল করেছে, নায়িকা পেছন থেকে তার গলা জড়িয়ে চুমু খাচ্ছে, নায়ককে শান্তনা দিচ্ছে। টিভিটা যখন বন্ধ করে শান্তা, তখন ওর মনেও প্রেম জেগে উঠেছে। রাত কতো হল কে জানে! ফয়সাল এর কি কাজ শেষ হয়েছে? 



শোবার ঘরের কাছে আসতেই মনটা দমে উঠে শান্তার। ঘুমিয়ে পড়েছে ফয়সাল। শোবার ঘরের আলো নেভানো। ভারী শ্বাস এর শব্দ শুনা যাচ্ছে। ওর পাশে শুতে আর ইচ্ছে করে না শান্তার। এগিয়ে গিয়ে পা টিপে টিপে নিজের বালিশটা টেনে নেয়। তারপর বেড়িয়ে আসে আবার। 


মেয়ের ঘরে দুটো বিছানা। একটায় ওর শাশুড়ি মা শুত। ওখানেই বালিশটা নামিয়ে রাখে শান্তা। তারপর একবার বাথরুম থেকে ঘুরে এসে শুয়ে পরে। 


শুয়ে পড়লেও সহজে ঘুম আসতে চায় না শান্তার। মনের ভেতরে কেমন অদ্ভুদ এক আকুতি জন্মে উঠে যেন তার। একবার এপাশ আর একবার ওপাশ করে। কল্পনার জগতে তলিয়ে যায় ধিরে ধিরে। আর কটা নারীর মতনই একটা সুখি দাম্পত্য চেয়েছিল শান্তা। তেমন চটপটে মেয়ে সে কোন কালেই ছিল না। একটু লাজুক গোছের, একটু ঘরকুনো স্বভাব এরই মেয়ে শান্তা। নিজের খেয়ালে পড়ে থাকতেই ভালোবাসে। হয়তো এই কারণেই ফয়সালের সঙ্গে ওর বিয়েটা হয়েছিলো। শাশুড়ি মা হয়তো আগে ভাগেই বুঝতে পেরেছিল, শান্তাকে নিজের হাতের ইচ্ছে মতন চালাতে পাড়বে। প্রতিবাদ করতে আসবে না শান্তা যখন তখন। 


আজ ভাবতে ভাবতে শান্তার মনে প্রশ্ন জাগে। ফয়সাল কি আদৌ ওকে ভালবেসেছে? নাকি মায়ের কথা শুনেই ওর সঙ্গে ঘর করে গেছে এত দিন? ভালো না বাসার কি কারনই বা হতে পারে? দেখতে মন্দ নয় শান্তা, আর দশটি মেয়ের মতন তো নিজের চরিত্রেও আঁচ পরতে দেয় নি কখনো সে। রক্ষণশীল পরিবারে বড় হয়েছে, পুরুষ মানুষ এর সামনে কমই আসা যাওয়া ছিল শান্তার। তারপরও তো জৈবিক একটা চাহিদা তৈরি হয়। একটা বয়স পার হলে মনে প্রেমের ইচ্ছে জাগে। শান্তার মনেও জেগেছিল, প্রেম এসেছিলো ওর জীবনে। তখন সে ডিগ্রি কলেজের ছাত্রী। হারুন ভাই এর সঙ্গে কেমন করে যেন প্রেম হয়ে গেলো তার। খুব মজার মানুষ ছিলেন হারুন ভাই। ফয়সালের মতন এত ক্যারিয়ার সচেতন নয়। হাসি তামাশা ভালবাসতেন, শান্তাকে নিয়ে ঘুরতে যেতেন, বিকেল বেলা চটপটি আর ফুচকা খেতেন আর মজার মজার রসিকতা করতেন। 


হারুন ভাই এর কথা ফয়সালকে কখনো বলে নি শান্তা। শুনলে ফয়সাল নির্ঘাত গালাগালি শুরু করে দিবে। তারপরও ইনিয়ে বিনিয়ে অনেক কিছুই জানতে চেয়েছে ফয়সাল। শান্তা বলেছে, একটা ছেলে আমার পেছনে লেগে থাকতো, কিন্তু আমি পাত্তা দিতুম না। ওতটুকই জানা থাকুক ফয়সালের। এর বেশী জানতে গেলেই বিপদ। ওমনিতেই খুতখুতে স্বভাব ওর। বিয়ের পর যখন প্রথম ওদের মিলন হল, তখনই টের পেয়েছিলো শান্তা। ওর প্রতিটি নড়াচড়া তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লক্ষ্য করছিলো ফয়সাল। পুরুষাঙ্গের প্রথম আঘাতে যখন রক্তপাত হল শান্তার, তখন সন্তুষ্টির ভঙ্গিতে হেসেছিল। 


শান্তা ভাবতে পারে না ওদিন হারুন ভাই এর কথায় রাজি হয়ে গেলে কি হতো! আকাশ মেঘলা ছিল সেদিন। ক্লাস শেষ করে বেরোতেই হারুন ভাই এর সঙ্গে দেখা। ওকে নিয়ে পার্কে গিয়ে বসেছিল হারুন ভাই। আর তখনই সে কি বৃষ্টি! ভাগ্যিস ছাতা ছিল শান্তার ব্যাগ এ। নইলে একদম কাক ভেজা হয়ে যেতো। ওদিন কোন বাসও নেই যেন। কোন মতে একটা রিক্সা যোগার করেছিলো হারুন ভাই। দুজনে চাপাচাপি করে বসেছিল। প্লাস্টিক এর আড়ালে হাত বাড়িয়ে নিজের বুকের সঙ্গে টেনে নিয়েছিল শান্তাকে। ওর বাহুডোরে প্রেমের উষ্ণতা শিরায় শিরায় অনুভব করেছে শান্তা। রোম্যান্টিক এক জগতে হাড়িয়ে গিয়েছিলো ও। কোথায় চলছে রিক্সা, কোথায় রয়েছে ওরা - সব কিছুতেই একটা দিশেহারা ভাব ছিল। যখন হারুন ভাই ওকে রিক্সা থেকে নামিয়ে, ভাড়া মিটিয়ে - ভাঙ্গা একটা সিড়ি বেয়ে উপরের ঘরে নিয়ে গেলো - তখন রীতিমতন পা দুটো কাপছিল শান্তার। শীত করছিলো ওর। কোথা থেকে একটা চাদর এনে ওর গায়ে জড়িয়ে দিয়েছিলো হারুন ভাই। তখন যেন প্রথম বারের মতন উপলব্ধি করেছে শান্তা, হারুন ভাই ওকে তার ঘরে নিয়ে গিয়েছে। 


তখন শান্তার মনে ভয় এর লেশ মাত্র ছিল না। হয়তো ওর শরীরটাও জেগে উঠেছিলো সেই বৃষ্টির দিনে। হারুন ভাই যখন তাকে জাপটে ধরে, তার কোমল ঠোঁট জোড়ার উপর নিজের পুরুষ্টু ঠোঁট দুটো নামিয়ে নিয়ে এলো - তখনো এতটুকও বাঁধা দেয় নি শান্তা। নীরবে সপে দিয়েছিলো নিজেকে হারুন ভাই এর বাহুডোরে। সেদিনই প্রথম বারের মতন ওর বুকে পুরুষ মানুষ এর হাত পড়েছিলো। স্তন দুটো হাতের মুঠিতে নিয়ে চটকে দিয়েছিলো হারুন ভাই। কামিজটা তুলে কোমল উষ্ণ পেটের উপর চুমু খেয়েছিল। সেলয়ারের ভেতরে হাতটা ঢুকিয়ে দিতে চাইছিল, কিন্তু কিছুতেই এগোতে দেয় নি তাকে শান্তা। দুই হাতে চেপে ধরেছিল হারুন ভাই এর পুরুষালী হাতটা। জোরজবরদস্তি করে নি হারুন ভাই। মেনে নিয়েছিল শান্তার লজ্জাটাকে। তাকে বাহুডোরে নিয়ে বিছানায় গড়িয়েছিল। ওর পুরুষালী বুকে নাক গুজে শান্তা প্রথম বারের মতন উপলব্ধি করেছিলো নারী-পুরুষ এর সম্পর্কটা কতো মধুর হতে পারে!


আচ্ছা, শান্তা যদি হারুন ভাই কে বিয়ে করতো তাহলে কি আজ এতটা কুঁকড়ে থাকতে হতো তাকে? হারুন ভাই সব সময়ই ওর মতটাকে প্রাধান্য দিতো। ও যাই বলতো, মেনে নিতো। দেখতে যাই হোক, মাইনে যত কমই হোক - সত্যিকারের ভালোবাসা পেত ও হারুন ভাই এর কাছে। আর ওদিন যদি, হারুন ভাই একটু জোর করতো, তাহলে হয়তো ওর শরীরে প্রবেশ করা প্রথম পুরুষটি হারুন ভাইই হতো। কিন্তু ভেবে আর কি হবে! হারুন এর খোজ নেই বছর দশেক হয়ে যাচ্ছে। শান্তা এখন ফয়সালের স্ত্রী। পূর্বপ্রেম নিয়ে ভেবে কি আর লাভ আছে? বরং ফয়সালের কথাই ভাবতে লাগলো শান্তা। রাজীব ভাই নিশ্চয়ই ফয়সালের ভালো চাইছে। নাহ, ফয়সালের আসলে দোষ নেই। মাকে হাড়িয়ে, ব্যাবসায় লস খেয়ে ভেঙ্গে গেছে ফয়সাল। ওকে আবার গড়ে নিতে হবে শান্তাকেই। রাজীব ভাই নিশ্চয়ই তাকে সাহায্য করবে। কেন করবে না? ফয়সালই তো বলল, ওকে মদ খেয়ে বারণ করছিলো রাজীব। ভালো চায় বলেই তো করছিলো। যে লোক স্বামীর ভালো চায়, তাকে বিশ্বাস করতে অসুবিধে কোথায়?


রিয়ান খান
[+] 6 users Like riank55's post
Like Reply
#9
Nice going.
[+] 1 user Likes Johnnn63's post
Like Reply
#10
cool strat
[+] 2 users Like zaq000's post
Like Reply
#11
OSADHARON LEKHONI
ONEKDIN POR EKTA BHALOR GOLPER SWAD PACHIII

PLEASE CARRY ON YOUR GREAT WORK.
[+] 1 user Likes nightylover's post
Like Reply
#12
(13-09-2020, 06:44 PM)Johnnn63 Wrote: Nice going.

(13-09-2020, 07:18 PM)zaq000 Wrote: cool strat

(13-09-2020, 09:38 PM)nightylover Wrote: OSADHARON LEKHONI
ONEKDIN POR EKTA BHALOR GOLPER SWAD PACHIII

PLEASE CARRY ON YOUR GREAT WORK.

ধন্যবাদ সবাইকে সঙ্গে থাকার জন্য...
Like Reply
#13
পর্ব  #### 




পরের দিনটা বেশ এলোমেলো ভাবেই শুরু হল শান্তার। সকালে কি যেন একটা স্বপ্ন দেখছিল, ঠিক মনে পড়ছে না। মেয়ের ঘরে শুয়েছে বলে অ্যালার্মটাও দেয়া হয় নি। ভাগ্যিস ঘুমটা ভেঙ্গেছিল। একটু দেরি করেই যদিও। চোখ মেলতেই বিছানা ছেড়ে লাফিয়ে উঠতে হয়েছে শান্তাকে। সকাল বেলার কাজ তো আর কম নয়! নাস্তা তৈরি করা, মেয়েকে তোলা, স্বামীর জন্য চা-নাস্তা যথাসময়ে টেবিলে হাজির করা, তারপর ঘরটা একটু গুছিয়ে মেয়েকে তৈরি করে, নিজে তৈরি হয়ে স্কুলের জন্য বেড়িয়ে পড়া। 


আজ রাস্তাতেও বিরক্ত লাগছিল শান্তার। এদিকে আকাশটা মেঘলা মেঘলা করছে, তার পরও আবার অসহ্য একটা গরম। হেটে না ফিরে শান্তা রিক্সা নিয়েই ফিরেছে আজ বাসায়। সিড়ি দিয়ে উঠতে গিয়ে তেতালার ভাবির সঙ্গে দেখা। এ-কথা সেই কথা বলতে বলতে দশ কথা। পাক্কা আধা ঘণ্টা চলে গেলো। এই কারণেই প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তার মিশতে ইচ্ছে করে না। একে তো বকবক করেই যায় ভাবিগুলো, আবার তার উপর নিজেদের দাম্পত্যের বাহাদুরি। 


“এই তো কদিন আগেই কক্স বাজার থেকে ঘুড়িয়ে নিয়ে এলো আমার বর, অফিস ট্যুর ছিল, তাও আমায় নিয়ে গেলো ভাবি… আরেকটা মধুচন্দ্রিমা মনে হচ্ছিল হা হা হা...।”


শান্তা মুখে হাসি ফুটিয়ে রাখলেও মনে মনে বিরক্তবোধ করছিলো। মধুচন্দ্রিমা করেছো নাকি কোথায় বেঢ়াতে গেছ এসব ডেকে ডেকে আমায় শুনাবার কি আছে? বাসায় ফিরে আবার মনটাও খারাপ হয় শান্তার। শেষ কবে ফয়সাল ওকে ঘুরাতে নিয়ে গেছে কোথাও? কক্স বাজার তো দূরে থাক, এই কাছেই একটু মার্কেটে নিয়ে যাবার সময় করে উঠতে পারে না ফয়সাল। নিজের কেনা কাটা নিজেকেই সারতে হয় শান্তার।


ওদিন আর রূপচর্চা করতে মন চাইলো না তার। বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে চিৎ হয়ে পড়ে রইলো বিছানায়। চোখ দুটো বন্ধ করে নিজের জীবনটা নিয়ে ভাবল। কিছুক্ষন পর উঠে বসলো শান্তা। নতুন ব্যাবসাটা কি শুরু করেছে ফয়সাল? কৌতূহল হল বেশ। বিছানা থেকে নেমে ওয়ারড্রব এর কাছে এলো। ওয়ারড্রব এর উপরেই একটা কালো অফিস ব্যাগ এ দরকারি ফাইলপত্র রাখে ফয়সাল। ব্যাগটা নিতে একটু দ্বিধা হচ্ছিল শান্তার। ওখানে হাত দিবে? পাছে ফয়সাল কিছু মনে করে? কিন্তু কৌতূহলের কাছে পরাজিত হতে হল তাকে। ব্যাগটা বিছানায় নামিয়ে চেইন খুলল। কয়েকটা ফাইল বের হল ভেতর থেকে। ওগুলো উল্টে পাল্টে  দেখল শান্তা। তেমন কিছু বুঝতে পারছে না। দেখে মনে হল পারচেস অর্ডার ফর্ম। একটা শিপিং কর্পোরেশন এর নাম আছে। আর অপর একটা ফাইলে একটা হোটেল এর কাগজ পত্র। কি নিয়ে ব্যাবসা করছে, কিছুই বুঝতে পারল না শান্তা। অপর ফাইল ঘেটে কিছু একাউন্টিং এর শীট পেলো সে। এগুলো নিশ্চয়ই বর্তমান কোম্পানির। ব্যাগ এর মধ্যে আবার হাত ঢুকালো শান্তা। আর কিছু নেই। ব্যাগটা তুলে নিয়ে, ফাইল ঢুকিয়ে ওয়ারড্রব এর উপর তুলে রাখল। তারপর ফিরে তাকাতেই থেমে যেতে হল তাকে। 


বিছানার উপর চকচক করছে একটা বস্তু। ঝুকে এলো শান্তা। হাত বাড়িয়ে তুলে নিল সেটা। বুকের ভেতরে কাপুনি শুরু হয়ে গেলো তার। ব্যাগ থেকে পড়েছে নিশ্চয়ই জিনিষটা। কিন্তু এটা কি করছে ফয়সালের অফিস ব্যাগ এ? এটা ওখানে কি করে এলো? নাকি আগেই বিছানায় পড়ে ছিল? তা কি করে সম্ভব। একটা কনডম এর প্যাকেট কেন বিছানায় পড়ে থাকতে যাবে?


শান্তার মাথা ঝিমঝিম করছে। ও কিছু বুঝতে পারছে না। দুটো কনডম রয়েছে প্যাকেট এর সঙ্গে। শান্তার জানা আছে, তিনটে কনডম থাকে একটা ছোট প্যাকেট এ। তাহলে কি একটা ব্যাবহার করা হয়েছে? কোথায় ব্যাবহার করেছে ফয়সাল? কার সাথে? গত ছয় মাস ধরে ওর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে না ফয়সাল। তাহলে? কনডম কি দরকার পড়ল তার?


তবে কি ফয়সাল ওর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে? এই কারণেই কি আজকাল ওর সঙ্গে ভালো গলায় কথা বলে না ফয়সাল? শান্তার পুরো দুনিয়াটা কাপছে। ও বিছানায় বসে পড়লো। কিছু ভাবতে পারছে না ও। কোন কিছু মানতে পাড়ছে না। 


খানিকটা কান্না পেলেও নিজেকে সামলে নিল শান্তা। কনডম এর প্যাকেটটা আবার ব্যাগ এর মধ্যেই ঢুকিয়ে রেখে দিলো। তারপর মেয়েকে স্কুল থেকে নিয়ে এসে বাসার কাজে মন দিলো। মনের একটা কণায় সারাক্ষণ ওকে খোঁচাল ব্যাপারটা। মনে মনে একটা প্ল্যানও করে ফেলল শান্তা। ঠিক করলো, ফয়সালকে এই ব্যাপারে কিছুই জানাবে না সে। বরং রাজীব ভাই এর সঙ্গে যোগাযোগ করবে। রাজীব ভাইই পাড়বে আসল খবরটা বার করে দিতে। পুরতন কাগজ পত্র ঘেটে রাজীব ভাই এর ফোন নম্বরটা নিজের মোবাইলে সেভ করে নিয়েছে শান্তা। আজ নয়, কাল সকালে ফোন দেবে ও রাজীব ভাইকে।


রিয়ান খান
[+] 4 users Like riank55's post
Like Reply
#14
পর্ব  #### [b][/b]

 



পরদিন সকালে মেয়েকে স্কুলে দিয়ে বাড়ি ফিরে ফোন লাগায় শান্তা রাজীব ভাইকে। কয়েকবার রিং হতেই ওপাশ থেকে ফোন তুলে রাজীব। “হ্যালো! রাজীব ভাই বলছেন?” 


“হ্যাঁ কে বলছেন?” ওপাশে রাজীব ভাই এর গলা শুনে একটু সাহস পেলো শান্তা। 


“আমি শান্তা, ফয়সালের...”


“আহ শান্তা কেমন আছো?”


“জি ভালো আছি, আপনি ভালো আছেন তো?” শান্তা মূল কথায় যাবার জন্য উগ্রিব হয়ে উঠেছে। 


“আছি ভালোই আছি,” ওপাশ থেকে বলে উঠলো রাজীব। “কি মনে করে আমায় ফোন দিলে?”


“আপনার সঙ্গে, ফয়সালের ব্যাপারে একটু আলাপ ছিল;” শান্তা বলে উঠে। “একটু যদি আপনি সময় দিতেন,”


“হ্যাঁ বল না!”


“না ফোনে বলাটা বেশ কষ্টের, আপনার সঙ্গে একটু দেখা ...”


“বেশ তো বিকেল বেলা চলে আসবো তাহলে,” ওপাশ থেকে বলে উঠে রাজীব। “এখন একটু বেস্ত আছি শান্তা, কেমন? আজ বিকেলে দেখা হচ্ছে...”


“না রাজীব মানে… বাহিরে যদি… হ্যালো হ্যালো...” ফোনটা কেটে গেছে। ওর দিকে অবাক চোখে তাকায় শান্তা। এ কি হল! রাজীব ভাই আবার বাসায় আসতে চাইছে। তাও আজই বিকেলে। শান্তা এর জন্য প্রস্তুত ছিল না। ও ভেবেছিলো বাহিরে কোন রেস্তারায় রাজীব ভাই এর সঙ্গে দেখা করবে। কে জানে, হয়তো এটাই ভালো হল। রেস্তারায় মানুষজনের সামনে ফয়সালের কথা গুলো মুখ ফুটে বলতে পাড়বে না শান্তা। আর বিকেল বেলা এলে ভালো হয়। তুলি বাসায় থাকবে ও সময়টায়। একলাও মনে হবে না শান্তার কাছে। 


রাজীব ভাইকে কথা গুলো কেমন করে খুলে বলবে - সারা দিনে গুছিয়ে নিল শান্তা। তুলিকে স্কুল থেকে এনে গোসল করিয়ে, রান্না বান্না করে - মা মেয়ে এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়া সেড়ে নিল। সময়টা যেন ফুড়ুৎ করে উড়ে গেলো। তখনো গোসল করা হয় নি শান্তার। তুলি কার্টুন দেখছে টিভিতে - এই ফাকে গোসলটা সেড়ে নিল শান্তা। একটু সময় লাগিয়েই গোসল করলো, চুলে শ্যাম্পু করতে করতে গোছাতে চাইলো কিভাবে শুরু করবে কথা গুলো। একলা একলাই নিজের সাথে কথোপকথন চালায় শান্তা। কিন্তু ঘড়িতে যখন তিনটে বাজে, তখনো কীভাবে শুরু করবে কথাটা ঠিক করতে পারে না শান্তা। 


গোসল সেরে আজ সুন্দর একটা সেলয়ার কামিজ পড়ে শান্তা। ভিজে চুল গুলো ছড়িয়ে দেয় কাঁধে। তারপর গিয়ে দেখে তুলি ঘুমিয়ে পড়েছে টিভি দেখতে দেখতে। টিভিটা বন্ধ করে মেয়েকে কোলে তুলে নেয় শান্তা। অনেক বড় হয়ে উঠেছে তুলি, আজকাল মেয়েকে কোলে নিতে কষ্টই হয় শান্তার। তবে মেয়েকে তার ঘরে শুইয়ে দিতেই শান্তা কলিং বেলটা শুনতে পায়। এসে পড়েছে নিশ্চয়ই রাজীব ভাই। বড় করে দম নিয়ে দরজাটা খুলে দিতে এগোয় সে। 


রিয়ান খান
[+] 4 users Like riank55's post
Like Reply
#15
পর্ব #### ৫




“তোমায় আজ খুব সুন্দর দেখাচ্ছে শান্তা,”


গাল দুটো রাঙ্গিয়ে উঠে শান্তার। আসার পর এই নিয়ে কয়েকবার ওকে সুন্দরী বলে সম্বোধন করেছে রাজীব ভাই। সোফায় তাকে বসিয়ে রান্নাঘরে গিয়ে চা করে নিয়ে এসেছে। চা খেতে খেতেই রূপের প্রশংসাটা আবার করলো রাজীব। শান্তা একটু লজ্জা পেয়ে হাসল। কীভাবে কথাগুলো শুরু করবে, এখনো ভেবে পাচ্ছে না সে। 


রাজীবই সামলে নিল। চায়ের কাপটা নামিয়ে একটু ঝুকে এলো, “এখন বল - ফয়সালের ব্যাপারে কি বলতে চাইছিলে?”


“আমি আসলে কিছু বুঝতে পাড়ছি না...” শান্তা বড় করে দম নেয়। “আমার কাছে ওর মতিগতি ঠিক সুবিধের লাগছে না রাজীব ভাই...”


“আবারও মদ খেয়ে এসেছে নাকি?”


“নাহ,” মাথা নাড়ে শান্তা।


“তোমার গায়ে হাত তুলে নি তো?” রাজীব একটা ভ্রূ উচু করে জানতে চায়।


“না নাহ, তেমন কিছু না, তবে...” বড় করে দম নেয় শান্তা। “ওর অফিস ব্যাগে একটা জিনিষ পেয়েছি আমি… আপনাকে কি করে যে বলি...”


“দেখো শান্তা, আমার কাছে লজ্জার কিছু নেই… তুমি খুলে বল। আমার বিপদে তোমরা আমায় সাহায্য করেছো, এখন ফয়সালের এমন একটা সময়তে তাকে যে কোন ধরনের সাহায্য করতে আমি রাজি,”


“আপনি তাহলে বসুন, আমি নিয়ে আসছি...”


শান্তা উঠে যায়। শোবার ঘরে এসে ওয়ারড্রব এর উপর থেকে ফয়সালের অফিসের ব্যাগটা নামায়। তারপর ভেতরে হাত ঢুকিয়ে বার করে আনে কনডম এর প্যাকেটটা। সেটা মুঠিতে নিয়ে ফিরে আসে আবার বসার ঘরে। রাজীব ভাই এর দিকে তাকাতে পারে না শান্তা। নিচু স্বরে বলে; “ওর অফিস এর ব্যাগ এ এই প্যাকেটটা পেয়েছি...” প্যাকেটটা শান্তা টেবিল এর উপর আলতো করে রেখে দেয়। 


এক মুহূর্ত প্যাকেটটার দিকে তাকিয়ে থাকে রাজীব। তারপর হাত বাড়িয়ে তুলে নেয় কনডম এর প্যাকেটটা। তারপর ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে দেখে বলে; “ও অফিস এর ব্যাগ নিয়ে যায় না?”


“রোজ যায় না,” মাথা নারে শান্তা। “গত সপ্তাহে নিয়ে গিয়েছিলো। কাজ ছাড়া ব্যাগ নেয় না ও...”


“ওহ...” আলতো করে মাথা দোলায় রাজীব। “দেখো শান্তা, তোমায় একটা কথা ওদিন বলি নি আমি… তুমি কষ্ট পাবে বলে।”


শান্তা চোখ তুলে তাকায়। আর শুনতে চায় না ও। এরই মধ্যে টের পেয়ে গেছে কি বলতে চাইছে রাজীব ভাই। ওর ঠোঁট জোড়া কেপে উঠে। উর্ণাটা তুলে মুখ চাপা দেয়। 


“তুমি হয়তো আন্দাজ করে ফেলেছ ইতিমধ্যেই,” রাজীব ভাই আরও সামনে ঝুকে আসে। “ওদিন ক্লাবে ফয়সালের সঙ্গে একটা মেয়েও ছিল। ওর গলা জড়িয়ে বসে ছিল… ওটা নিয়েই ওর সঙ্গে আমার বেঁধেছিল...”


শান্তা আর রুখতে পারে না নিজেকে। ও ডুকরে কেঁদে উঠে। সঙ্গে সঙ্গে উঠে বসে রাজীব। টেবিল ঘুরে এপাশে চলে আসে। শান্তার পাশে বসে হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে শান্তাকে। শান্তনা দেয় নিচু গলায়; “কেদ না শান্তা… আহা - কিছু হয় নি তো, সবার জীবনেই একটু আধটু এমন সময় আসে।”


শান্তা ততক্ষনে রাজীব ভাই এর কাঁধে মাথা রেখেছে। কাদছে ও, বুক ফেটে যাচ্ছে ওর। কেমন একটা শুন্য অনুভূতি গ্রাস করছে ওকে যেন। ফাঁপা লাগছে জগতটাকে। রাজীব ওকে জড়িয়ে ওর পীঠে হাত বুলাচ্ছে। শান্তনা দিচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই শান্ত হতে পারছে না শান্তা। অগত্যা রাজীব উঠে গিয়ে এক গ্লাস পানি নিয়ে আসে। শান্তাকে মুখে তুলে জোর করেই খাইয়ে দেয় পানিটা। টিস্যু এনে চোখ মুছিয়ে দেয়। ধিরে ধিরে কান্না থেমে আসে শান্তার। 


“ছি শান্তা, এভাবে কান্না কর না। তোমার মেয়ে ঘুমিয়ে আছে, উঠে এসে কি ভাববে বল তো?” রাজীব ভাই ওর হাতটা চেপে ধরে রেখেছে এতক্ষনে খেয়াল হয় শান্তার। উর্ণা দিয়ে চোখের পানি মুছে আলতো করে মাথা দোলায়। 


“ও আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে রাজীব ভাই...”


“নাহ শান্তা নাহ,” মাথা নাড়ে রাজীব। “ফয়সাল তোমায় ভালোবাসে। নিশ্চয়ই ইনভেস্ট এ লস করে বেকায়দায় পড়ে গেছে ফয়সাল। তুমি দুশ্চিন্তা করবে বলেই ও তোমায় বলছে না। আমি তো আছি, ব্যাটাকে ঠিক বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারব আমরা দুজনে মিলে। তুমি ভেব না শান্তা,”


“ঠিক আছে রাজীব ভাই, এখন আপনার উপরেই ভরসা করা ছাড়া আমার আর কিছু করার নেই...” শান্তা আবার চোখ মুছে। “আপনি তো জানেনই… আমার ভাইদের সঙ্গেও আমার সম্পর্ক ভালো নেই। যদি কিছু হয়ে যায়…… কার কাছে যাবো আমি! কি করবো!”


“আহা ওসব নিয়ে একদম ভাবতে হবে না তোমাকে,” মাথা নাড়ে রাজীব। “ফয়সাল তো তোমায় কিছু বলছে না তাই না? তুমি ভাব কর যে, তুমিও কিছু জানো না। আমি এর মধ্যে জানার চেষ্টা করছি, আসলে কি ঘটছে। ও কি আসলেই বিপদে পড়েছে? নাকি পরকীয়াতে জড়িয়ে পড়েছে...” পরকীয়া কথাটা শুনতেই আবার ডুকরে উঠে শান্তা। “আহা কেদো না তো শান্তা, চোখের পানি মুছো… যদি ব্যাপারটা পরকীয়া হয়, তাহলে আমাদের প্রমাণ যোগার করতে হবে। ফয়সালকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আচ্ছা, আমায় একটা কথা বল তো,”


“কি কথা?”


“ফয়সাল আর তোমার শেষ কবে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে আমায় একটু খুলে বল তো!” রাজীব সহজ কণ্ঠে জানতে চায়। থমকে যায় শান্তা। হঠাৎ করেই যেন লজ্জা গ্রাস করে ওকে। কি করছে শান্তা? রাজীব ভাই এর গা ঘেঁষে বসে আছে সোফাতে! রাজীব ভাই ওকে এক হাতে জাপটে ধরে রেখেছে! এত কাছে যে তার নিঃশ্বাস এর ভারী শব্দও শুনতে পারছে শান্তা। পাচ্ছে তার গায়ের পুরুষালী কটু ঘ্রান। হঠাৎ করেই একটু সড়ে বসে শান্তা। হাতটা ছাড়িয়ে নেয়। ওর পরিবর্তন লক্ষ্য করে গলা খাকারি দেয় রাজীব। “দেখো শান্তা ব্যাপারটা সিরিয়াস। তুমি যদি আমার সাহায্য চাও, তাহলে এসব ব্যাপারে আমার সঙ্গে তোমায় খোলামেলা হতেই হবে… আর তোমার তো মনেই আছে, আমার যখন ডিভোর্স হয়েছিলো, তখন ফয়সালের সঙ্গে এসব ব্যাপারে আমার খোলামেলা আলাপ হয়েছে।”


ঢোঁক গিলে শান্তা। আলতো করে মাথা দোলায়। “আসলে, রাজীব ভাই… ওমন করে তো ভেবে দেখি নি...”


“ভাবা না ভাবার কিছু নেই শান্তা,” রাজীব আরেকটু কাছ ঘেঁষে আসে। আবারও তুলে নেয় শান্তার কোমল হাতটা। শান্তা চমকে উঠে। রাজীব ভাই এর স্পর্শ যেন এইবার অনুভব করতে পারছে ও। কেমন পাপবোধ চেপে ধরে শান্তাকে। আবার একই সঙ্গে কেমন একটা উষ্ণ অনুভূতিও জন্মায় ওর শিরদাঁড়ায়। “শেষ কবে ফয়সাল লাগিয়েছে তোমায়?”


বড় করে দম নেয় শান্তা। ওর মাথা কাজ করছে না ঠিক ভাবে। কিছু ভাবতে পারছে না ও। রাজীব ভাই ওর হাতে চাপ দিতেই ফোঁস করে বলে বসে; “কয়েক মাস হয়ে গেছে...”


“মাস?” ভ্রূ কুঁচকায় রাজীব।


“আসলে মা মারা যাবার পর থেকে একটু ভেঙ্গে গেছে ফয়সাল, আমিও তেমন শান্তনা দিতে পারি নি ওকে… আমারই ভুল মনে হচ্ছে...”


“মোটেই না শান্তা, মোটেই না,” মাথা নাড়ে রাজীব। “কাকিমা মারা যাবার পর তোমরা একবারও চুদোচুদি কর নি?”


ভড়কে উঠে এইবার শান্তা। কি বলছে এসব রাজীব ভাই? চুদোচুদি! আজ অব্দি স্বামীর সঙ্গেও ওই নামটা উচ্চারণ করে নি শান্তা। আর রাজীব ভাই কিনা অবলীলায় বলে ফেলল?


শান্তা আমতা আমতা করছে দেখে আবারও বলে উঠে রাজীব; “দেখো শান্তা, ব্যাপারটা বড্ড সিরিয়াস। আমার হিসেব যদি ঠিক হয়ে থাকে, তাহলে গত ছয়মাস থেকে তুমি চোদা না খেয়ে আছো কি করে? আহা… লজ্জা পাচ্ছ কেন? তুমি তো আর কলেজ পড়ুয়া মেয়ে না। এক বাচ্চার মা তুমি। তোমার তো চাহিদা আরও বেশী থাকার কথা!”


“দেখুন - রাজীব ভাই, এসব নিয়ে আমি কথা বলতে চাচ্ছি না...” শান্তার শরীরটা কেমন উষ্ণ হয়ে উঠেছে। উত্তাপটা টের পাচ্ছে শান্তা নিজে। মনে হচ্ছে যেন ওর কান আর চোখ-মুখ দিয়ে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। কি হতে কি হয়ে যাচ্ছে! শান্তার এখন কি করা উচিৎ - কিছুই বুঝতে পারছে না ও। 


“না বলতে চাইলে আমি জোর করবো না শান্তা,” রাজীব হঠাৎ করেই শান্তার হাতটা ছেড়ে দেয়। তারপর উঠে দাড়ায়। “ফয়সাল ওদিকে মেয়েলী ব্যাপারে জড়িয়ে যাচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, তত বেশী জড়িয়ে যাবে। তখন কি করবে তুমি? একবার ভেবে দেখো, তোমার মেয়েটার কি হবে? বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে কার সঙ্গে থাকবে সে? তুমিই বা কোথায় গিয়ে আশ্রয় নিবে?”


চোখ তুলে তাকায় শান্তা। ওর চোখ দুটো টলমল করছে। “রাজীব ভাই...”


“তুমি ভেব না শান্তা, আমি তোমায় সাহায্য করবো।” রাজীব বলে উঠে। “তোমার প্রতি সব সময়ই আমার একটা দুর্বলতা ছিল। এখনো আছে। ফয়সাল যদি তোমার সঙ্গে বিচ্ছেদ চেয়ে বসে, তাহলে আমি আছি শান্তা। আমি তোমায় বিয়ে করবো। তোমাকে আর তোমার মেয়েকে দেখে রাখবো। ভালবাসবো। তুমি ভেব না,”


রাজীব ভাই কি বলছে এসব! শান্তা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে। হাত বাড়িয়ে ওর গালের উপর থেকে চোখের পানি মুছে দেয় রাজীব। “আমি আজ যাই শান্তা। কথা গুলোতে রাগ কর না। তুমি যেন নিজেকে একলা না ভাবো তাই বললাম কথা গুলো। আমি আছি তোমার পাশে। তবে ফয়সালকে আমরা ফিরিয়ে নিয়ে আসবো এক সঙ্গে। কেমন?”


আর দাড়ায় না রাজীব ভাই। বেড়িয়ে যায় বাসা থেকে। শান্তা বসেই থাকে সোফাটায়। তুলি যখন ঘুম থেকে উঠে চোখ ডলতে ডলতে বসার ঘরে ঢুকে, তখনো বসেই আছে শান্তা আগের জায়গায়। ওর তলপেটে কেমন একটা শিরশিরে অনুভূতি হচ্ছে যেন। 


রিয়ান খান
[+] 8 users Like riank55's post
Like Reply
#16
গল্পের গাঁথুনি চরম লেভেলের।এগিয়ে যান।
[+] 1 user Likes Gadboy's post
Like Reply
#17
Joldi update den dada.. control hocche na ??
Like Reply
#18
পর্ব #### ৫

৫(ক)



সন্ধার পর ফয়সাল আজ একটু হাসি মুখেই ফিরে আসে অফিস থেকে। গোসল করে, নাস্তা পানি খেয়ে মেয়ের সঙ্গেও হাসি ঠাট্টা করে। স্বামীর মনটা ভালো থাকলেও সন্দেহ দানা বাধে শান্তার মনে। চোখ সরু করে খুশীর কারনটা বুঝার চেষ্টা করে শান্তা। রাতে খাওয়ার টেবিলে ফয়সাল নিজেই খুলে বলে ব্যাপারটা। 


“কাল খুলনা যেতে হবে আমায়,” ফয়সাল বলে তাকে। খেতে খেতে হাত থেমে যায় শান্তার। 


“খুলনায় কেন?”


“তোমায় বলেছি না একটা নতুন ব্যাবসায় হাত দিয়েছি, ওটার একটা কনফারেন্স আছে।” ফয়সাল জানায়। “কাল অফিস থেকেই বিকেল বেলা বেড়িয়ে যাবো। পরদিন ছুটি নিয়েছি। তারপর দিন তো ওমনিতেই ছুটি আছে। রাতের মধ্যে ফিরে আসতে পারব,”


“ওহ...” কি বলবে ভেবে পায় না শান্তা। 


“বাজার সাজার লাগলে বল, কাল সকালে করে দিয়ে অফিসে যাবো নি,”


“হ্যাঁ দিও,” শান্তা ছোট্ট করে জবাব দেয়। ওর আর খাওয়া গুলো নামতে চায় না গলা বেয়ে। 




রাতের বেলা ফয়সালের সঙ্গে শুতে গেলে ফয়সাল আজ ওর দিকে ঘুরে শোয়। অন্ধকারে স্বামীর দিকে তাকিয়ে থাকে শান্তা। ফয়সালের হাতটা ওর বুকের উপর উঠে আসে। তারপর পাশ থেকে তাকে অনেকটা আলতো করে জড়িয়ে ধরে যেন ফয়সাল। শ্বাস দ্রুততর হয়ে উঠে শান্তার। কি হয়েছে আজ ফয়সালের? স্বামীর আদর কি পাবে আজ শান্তা?


“খুলনার কাজটা হয়ে গেলে - অনেক টাকা পেয়ে যাবো। চাকরিটা ছেড়ে দিবো তখন...  পুরোদমে ব্যাবসায় নেমে যাবো,”


“কিসের ব্যাবসা?”


“তুমি বুঝবে না,” ফয়সাল এড়িয়ে যায়। তারপর চিৎ হয়ে শুয়ে পরে। কিছুক্ষনের মধ্যেই ওর ভারী নিঃশ্বাস পড়ার শব্দ শুনতে পায় শান্তা। মনের গভীরে যে আশার প্রদীপটা জ্বলে উঠেছিলো, ওটা নিভে যায় মুহূর্তেই। 


শান্তার ঘুম আসে না। ওর মাথায় নানান চিন্তা ভাবনা আসছে। খুলনায় যাবে ফয়সাল! একলা যাবে? নাকি কোন মেয়েকে নিয়ে যাবে? আসলেই কি ব্যাবসার কাজ? নাকি মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করতে যাবে? মধুচন্দ্রিমা করতে যাবে? শান্তা ঘুমাতে পারল না। আশ্চর্য সব স্বপ্ন দেখতে লাগলো। এক সময় মনে হল যেন ট্রেনে করে কোথাও যাচ্ছে শান্তা। দরজায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক বাতাস। আর তখনই ফয়সাল এসে ওকে দরজা দিয়ে ঠেলে ফেলে দিলো। হুড়মুড় করে উঠে বসলো শান্তা। নাহ, স্বপ্ন ছিল ওটা। তখনো ভোর হয় নি। ঘেমে গেছে শান্তার পুরো শরীর। বিছানা থেকে নেমে বাথরুম ঘুরে এলো শান্তা। চোখে মুখে পানি দিয়ে আবার শুয়ে পড়লো। 





রিয়ান খান
[+] 4 users Like riank55's post
Like Reply
#19
পর্ব ৫


৫(খ)



পরদিন সকালে ফয়সাল বাজার সাজার করে অফিসের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে যেতেই রাজীব ভাইকে ফোন করলো শান্তা। খুলে জানালো খুলনা যাবার ব্যাপারটা। সব শুনে চুপ করে রইলো রাজীব। শান্তা যখন জানতে চাইলো, এখন কি করতে পারে ওরা - তখন বলল; “তুমি চিন্তা কর না শান্তা। অফিসের কাজেও যেতে পারে ফয়সাল। আমি বরং আজ ওর অফিসের সামনে গিয়ে পিছু নেবো তার। আমি রাতে তোমায় ফোন করে জানাবো!”


এই বলেই ফোন রেখে দিলো রাজীব। বাকিটা দিন বেশ কষ্ট করেই কাটল শান্তার। কোন কিছুতে মন দিতে পারল না। রান্না করতে গিয়ে আঙ্গুল পুরিয়ে ফেলল। নুনটাও একটু কম হল তরাকারিতে। বিকেল বেলা ফয়সাল ফোন করে জানালো, অফিস থেকে বেরোচ্ছে সে খুলনার উদ্দেশ্যে। তাকে সাবধানে যেতে বলল শান্তা। তারপরই রাজীব ভাইকে আরেকবার ফোন দিয়েছে শান্তা। ফোনটা ধরে নি রাজীব। 


বিকেলের পর আয়নার সামনে বসে শান্তা নিজেকে দেখে নিজেই চমকে গেলো। এক দিনেই চোখ এর নিচে কালশিটে পড়ে গেছে তার। চেহারা কেমন দেবে গেছে যেন। ভাবনা থেকে মুক্তির জন্য বিকেলেই খানিকটা রূপচর্চায় মন দিলো শান্তা। তারপর এক কাপ চা করে, তুলির জন্য কিছু নাস্তা বানিয়ে টিভির সামনে বসলো। 


রাজীব এর ফোন এলো যখন আবার, তখন ঘড়িতে রাত এগারোটা বাজে। তুলিকে খাইয়ে দাইয়ে ঘুম পারিয়ে দিয়েছে শান্তা। নিজে খুব একটা খেতে পারে নি। টেবিল গুছিয়ে, তুলির ঘরের আলো নিভিয়ে টিভির সামনে বসেছিল শান্তা। তখনই রাজীব ভাই এর ফোন এলো। বুকটা কেপে উঠলেও দ্রুত ফোনটা কানে লাগাল শান্তা। “হ্যালো! রাজীব ভাই!”


“হ্যাঁ শান্তা, কেমন আছো?” ওপাশে রাজীব এর ভারী গলা শুনতে পারল শান্তা।


“দুশ্চিন্তায় কিছু ভালো লাগছে না,” শান্তা বলে উঠে। “কিছু জানতে পেরেছেন? একলা গেছে নাকি ফয়সাল?”


“শান্তা দেখো, আমি চাই না তুমি ঘাবড়ে যাও...” রাজীব ওপাশে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। “তুমি অযথা দুশ্চিন্তা কর না। নিজেকে একলা ভাবার কিছু নেই। ফয়সাল যদি ডিভোর্স চায়...”


“ফয়সাল এর সঙ্গে কে ছিল রাজীব ভাই?” শান্তার গলা কেপে উঠে। তারপরও বড্ড দৃঢ় শুনায় তার গলা। সারা দিন ভাবার যথেষ্ট অবকাশ পেয়েছে শান্তা। নিজেকে শক্ত করতে হবে বুঝতে পেরেছে। 


“মেয়েটি তার অফিসে নতুন জয়েন করেছে,” রাজীব ভাই ফোনে জানায়। শরীরটা কেমন শুন্য অনুভূত হয় শান্তার কাছে। ঝিমঝিম করে মাথাটা। “তাকে নিয়েই গেছে। গাড়ি ভাড়া করে। আমার মনে হয় - সত্যিকার অর্থেই পরকীয়া করছে ফয়সাল।”


“আমি এখন কি করবো রাজীব ভাই?” শান্তা নিজের হাতের আঙ্গুল নিজেই কামড়ে ধরে। 


“যদি ফয়সাল তোমায় ডিভোর্স দিতে চায়, তাহলে কোর্টে যাবো আমরা,” রাজীব বলে। “যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ ছাড়া কেস জিততে পারব না। তাই ফয়সালকে এখনই কিছু জানাতে পাড়বে না তুমি। একদম গোপন করবে তুমি যে টের পেয়ে গেছ। ও যেন ঘুণাক্ষরেও টের না পায়। একবার হাতে তথ্য প্রমান চলে এলে কোর্টে যাবো আমরা। তোমার ভয় নেই, আমি আছি তোমার সঙ্গে… শান্তা! শুনতে পারছ?”


“জি রাজীব ভাই,”


“তুমি একদম চিন্তা কর না,” ওপাশ থেকে শান্তনা দেয় রাজীব। “ফয়সাল যে পাপ এর দরজা খুলেছে, তাতে ও নিজেই তলিয়ে যাবে...”


“আমা-আমার-আমার ভয় করছে রাজীব ভাই,” কেপে উঠে শান্তার কণ্ঠ।


“ভয় এর কিছু নেই শান্তা,” শান্তনা দেয় রাজীব। “আমি তোমাদের দেখবো। তোমাকে আর তুলিকে আগলে রাখবো...”


“আমি রাখলাম রাজীব ভাই, আমি আর কিছু ভাবতে পাড়ছি না...…”


“তুমি ঘুমিয়ে পড় শান্তা, লম্বা একটা ঘুম দাও সকালে শরীরটা ঝরঝরে লাগবে।” ফোন কেটে দেয় শান্তা উত্তর না করেই। 



ঘুমাতে সে রাতে অল্পই পারল শান্তা। বারে বারে জেগে উঠলো ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্ন দেখে। একবার চোখের সামনে ভেসে উঠলো বিরাট একটা কালো রঙের ফটক। ফটক এর ওপাশে কতো গুলো মানুষ দাড়িয়ে আছে। ডাকছে ওরা শান্তাকে, ডাকছে হাত ছানি দিয়ে। ওদের পঢ়নে আলখেল্লা, ওদের লম্বা লিকলিকে জিভ বেড়িয়ে আছে। ওদের ভিড়ে হেটে যাচ্ছে ফয়সাল। ফয়সালের কোলে তুলি, বাপের কাধের উপর দিয়ে হাতছানি দিয়ে বিদেয় জানাচ্ছে শান্তাকে। ভয়ে চিৎকার করে উঠলো শান্তা। তারপরই ধরমরিয়ে উঠে বসলো বিছানায়। একবার নয় - দুবার একই স্বপ্ন দেখল সে। আর ঘুমুতে ইচ্ছে করলো না। বালিশটা টেনে নিয়ে বসার ঘরের দিকে এগোল। 






রিয়ান খান
[+] 4 users Like riank55's post
Like Reply
#20
পর্ব ৬





“এই যে শান্তা ভাবি, কেমন আছেন? মেয়েকে স্কুলে দিয়ে ফিরলেন বুঝি?”


সিড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে হাপাচ্ছে শান্তা। দোতালার ল্যান্ডিঙেই দেখা হয়ে গেলো প্রতিবেশী ভাবির সঙ্গে। বরাবরের মতন মুখে চওড়া হাসি। তবে চকিতে একবার তাকিয়ে স্বস্তি ফেলল শান্তা। মহিলার হাতে ব্যাগ, নিশ্চয়ই বেরোচ্ছে। বেশীক্ষণ নিশ্চয়ই বকবক করবে না। ঠোঁটে আপনা আপনিই হাসি ফুটল শান্তারর। “জি, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?”
“এই তো একটু মার্কেটে যাবো,” হাসল মহিলা। “ওহ আপনার ভাই এসেছিলো তো, আপনাকে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছিলো তখনই আমার সঙ্গে দেখা সিড়িতে...”


“ভাই!” ভ্রূ কুচকে উঠে শান্তার। গত পাঁচ বছরেও ওর কোন ভাইয়েরা এখানে আসে নি। আজ হঠাৎ ভাই এলো কি করে? তবে কি ইতিমধ্যেই ফয়সাল ডিভোর্স এর ব্যাপারে ওর ভাই এর সঙ্গে কথা বলে ফেলেছে? কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে উঠে শান্তার। ওর চেহারার পরিবর্তনটা টের পায় যেন মহিলা। 


“হ্যাঁ, তাই তো বলল - খোঁচা খোঁচা দাড়ি মুখে, আগেও দেখেছি আপনাদের… মাথায় কাচা-পাকা চুল,”


চকিতে ধরতে পারল শান্তা। স্বস্তির শ্বাস ফেলবে নাকি আরও উদ্বিগ্ন হবে, ভেবে পেলো না। “ওহ হ্যাঁ হ্যাঁ, ভাই...। আমার বড় ভাই,”


“হ্যাঁ সে পরিচয়ই দিলো,” মহিলা একটু চোখ সরু করে তাকিয়েছে এইবার। “আমি বললাম যখন আপনি এখনই চলে আসবেন, তখন বলল একটু বাহির থেকে ঘুরে আসছে।”


“ওহ আপনাকে ধন্যবাদ,” শান্তা আর দাড়ায় না, দ্রুত মহিলার পাশ কাটিয়ে উপরে উঠে যায়। মহিলা অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে ওর দিকে। 



দরজা খুলতে গিয়ে হাত কাপে শান্তার। চাবি পড়ে যায় হাত থেকে। আবার তুলে নিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে। বড় করে দম নিচ্ছে ও। রাজীব ভাই আবার এসেছিলো? এই সকাল বেলা! কেন? ভীষণ গরম করছে শান্তার। হেটে ফিরেছে আজ ও। কাজেই ঘেমে গেছে অনেকটাই। বসার ঘরের ফ্যানটা ছেড়ে দিয়ে খাবার ঘরে চলে আসে শান্তা। ফ্রিজ খুলে ঠাণ্ডা পানির বোতলটা বার করে। মুখ খুলে গ্লাসে পানি ঢেলে ঢকঢক করে খেয়ে নেয় পুরোটা। ধিরে ধিরে আবার যখন স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নিতে পারছে শান্তা, তখনই দরজায় বেল বাজে। শান্তাকে বলে দিতে হয় না - কে এসেছে! আনমনে নিজের ঠোঁট জোড়ায় জিভ বুলায় শান্তা। বুকটা টিবটিব করছে মৃদু। দরজা খুলতে এগোয় শান্তা। 



#


রাজীব ভাই এর হাতে অনেক গুলো প্যাকেট। মুখে আন্তরিক হাসি। দরজা খুলে তাকে ভেতরে আমন্ত্রণ জানালো শান্তা স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই। তারপর দরজাটা লাগিয়ে দিতে দিতে জানতে চাইলো; “আপনি নাকি দোতালার ভাবিকে আমার বড় ভাই হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন?”


“কি করবো বল!” হেসে উঠে রাজীব। “বলতে তো পারি না যে হবু বউ এর কাছে যাচ্ছি, হা হা হা...”


“রসিকতা করবেন না রাজীব ভাই,” শান্তা গম্ভীর স্বরে বলতে চাইলেও ওর ঠোঁটে হাসি ফুটে। আশ্চর্য! ওর ঠোঁটে হাসি ফুটছে কেন? রাজীব এর রসিকতা এত মধুর লাগছে কেন? জোর করে মুখটাকে গম্ভীর করার চেষ্টা করে শান্তা। “এত গুলো কি এনেছেন?”


“তুলির জন্য একটা টেডি বেয়ার নিয়ে আসলাম,” বড় একটা প্যাকেট বাড়িয়ে দেয় রাজীব ভাই। “আর তোমার জন্য ছোট্ট একটা উপহার,”
“উপহার!”


রাজীব ভাই নিজেই অপর প্যাকেটটা খুলে ভেতর থেকে একটা শো-পিস বার করে। কাঠের কারুকাজ করা দারুণ একটি শ-পিস। দুটো বক, একে অপরের সঙ্গে মাথা ঠেকিয়ে অনেকটা হার্ট শেপ তৈরি করেছে ওদের মাঝে। সেটা শান্তার হাতে ধরিয়ে দেয় রাজীব। হাত বদল করার সময় রাজীব ভাই এর পুরুষালী স্পর্শে কেপে উঠে শান্তা। কেমন একটা বিদ্যুৎ এর স্ফুলিঙ্গ ছুটে যায় যেন আজ এই স্পর্শে! কেপে উঠে ও। খানিকটা বিব্রত বোধ করে। শ-পিসটা হাতের মাঝে নিয়ে ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে দেখতে লাগে। “বাহ, চমৎকার, খুব সুন্দর...”


“দাও,” রাজীব আবার ওটা শান্তার হাত থেকে নেয়। তারপর সেটাকে টেবিলের উপর রেখে মোড়ক গুলো দলা পাকিয়ে এক দিকে সরিয়ে রাখে। “আমি বোধহয় একটু জলদীই চলে এসেছি। তুমি ঘেমে আছো দেখছি,”


“মাত্র এলাম তো,” অপ্রস্তুত হয় শান্তা। “আপনি একটু বসুন না, আমি চট করে হাত মুখ ধুয়ে চা বসিয়ে আসছি...”



প্রথমেই রান্নাঘুরে ঢুকে চুলোয় চায়ের পানি বসিয়ে দেয় শান্তা। তারপর শোবার ঘরে চলে যায়। তোয়ালেটা নিয়ে বাথরুমে ঢুকে। দরজা লাগিয়ে প্রথমেই বেসিনের সামনে দাড়ায় শান্তা। কলটা ছেড়ে দিয়ে আয়নায় নিজের দিকে তাকায়। কি করছে ও! ওর মনে এমন আশ্চর্যরকমের অনুভূতি হচ্ছে কেন? ফয়সালের ব্যাপারে দুশ্চিন্তা করার কথা ওর। কিন্তু তা না করে রাজীব ভাই এর রসিকতায় হাসি পাচ্ছে শান্তার? এই যে সকাল সকাল রাজীব ভাই চলে এলো ওর বাসায়, একটি বারও ব্যাপারটাকে অস্বাভাবিক মনে হল না? রাজীব ভাই দোতালার ভাবিকে পরিচয় দিলো ওর ভাই হিসেবে - পুরো ব্যাপারটাতেই কেমন একটা গোপনীয়তার ঘ্রান পাচ্ছে শান্তা। মনে হচ্ছে পঁয়ত্রিশ নয়, ওর বয়স আঠারো হয়ে গেছে। কেমন একটা রোমাঞ্চ অনুভূত হচ্ছে ওর তল পেটে। নাহ, এই অনুভূতিগুলোকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। মোটেই যাবে না। রাজীব ভাই এসেছে, ভালো হয়েছে। ফয়সালের ব্যাপারটা নিয়ে খোলামেলা কথা বলা যাবে। কি করে ফয়সালকে বিপথ থেকে ফিরিয়ে আনা যায়, এই ব্যাপারে পরামর্শ চাইবে শান্তা। একবার নিজের মনটাকে স্থির করে নিয়ে শান্তা চোখে মুখে জলের ছিটে দেয়। হাত মুখ ধুয়ে তোয়ালে নিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বেড়িয়ে আসে বাথরুম থেকে। দরজাটা খুলে শোবার ঘরে পা রাখতেই চমকে যায় শান্তা। 


“রাজীব ভাই আপনি এখানে!”
 


রিয়ান খান
[+] 4 users Like riank55's post
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)