Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 3.33 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Valobasa
#1
Heart 
ভূমিকা:
এই গল্পটা সেই অর্থে তথাকথিত যৌন উত্তেজক গল্প নয়। একটা দুষ্টু মিষ্টি প্রেম কাহিনী। যাতে গল্পের প্রয়োজনে কিছুটা যৌনতা আছে। কিন্তু সেটা নামমাত্র এবং মার্জিত। মাত্রাতিরিক্ত নয়। একটু ভিন্ন স্বাদের গল্প পরিবেশনার সদুদ্দেশ্যে এই কাহিনীর উপস্থাপন। যারা হার্ডকোর ইরোটিক গল্প পড়তে ভালোবাসেন তাদের হয়তো এই কাহিনী ভালো লাগবেনা। তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
হয়তো তোমারই জন্য – ১
গত কয়েকদিন ধরে অস্বস্তিকর গরমের পর আজ বিকেলে এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। এখন মেঘ কেটে গিয়ে আকাশটা অনেক পরিষ্কার। ফুরফুরে হাওয়া বইছে দক্ষিণ দিক থেকে। সন্ধ্যে এখনো নামেনি। সূয্যি মামা অস্ত গেছেন কিন্তু তাঁর সোনালী আভা এখনো ছড়িয়ে রয়েছে দিক থেকে দিগন্তে।
গোধূলি লগ্নের শেষ বিকেলে ছাদের আলসেতে বসে এম পি থ্রি প্লেয়ারে গান শুনছিল দিয়া। বাতাসের সোঁদা ঘ্রান তখনো মুছে যায়নি। বৃষ্টি স্নাত রাস্তাঘাট, গাছপালা সোনালী আলো মেখে এক মায়াবী রূপ ধারণ করেছে। হেডফোনের স্পিকারে গমগম করছে শ্রীকান্ত আচার্য্যর ভরাট গলা –
“আমার সারাটা দিন, মেঘলা আকাশ
বৃষ্টি তোমাকে দিলাম।
শুধু শ্রাবণ সন্ধ্যাটুকু তোমার কাছে চেয়ে নিলাম”।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
Dada onno site theke golpo copy kore nijer name post kora uchit noy. Mul lekhoker name diye post korle valo hoy.
Dhonnobad
Like Reply
#3
(29-07-2019, 09:07 AM)ronylol Wrote: Dada onno site theke golpo copy kore nijer name post kora uchit noy.  Mul lekhoker name diye post korle valo hoy.
Dhonnobad

Amar lekha kokhon bllam??  Golpo ta onno site er but golpo ta amar valo laglo tai post krlm dhonnobad
Like Reply
#4
সুরের মূর্ছনায় হারিয়ে গিয়েছিল দিয়া। বাস্তব জগৎ থেকে অনেক দূরে। তখনই চোখ গেল রাস্তার দিকে। সেই ছেলেটা। এদিকেই আসছে। আর চোরা চোখে দেখছে দিয়াকে।
ব্যাপারটা শুরু হয়েছে কিছুদিন আগে থেকে। ছেলেটাকে চেনেনা দিয়া। আগে দেখেওনি কখনো।
দিন পাঁচেক আগে স্কুল থেকে ফেরার সময় হঠাৎ লক্ষ্য করেছিল যে একটা ছেলে উল্টোদিকের ফুটপাথে হেঁটে যাচ্ছে তার সমান্তরালে। আর লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে তাকে।

এক ঝলক দেখে আর তাকায়নি দিয়া। হবে কোন বখাটে ছেলে। মেয়েদের পেছনে ঘোরা স্বভাব যাদের।
ওরকম অনেক ছেলেই দিয়াদের বাড়ির আশে পাশে ঘোরে দিয়ার দর্শন লাভের জন্য।
রাস্তায় বেরোলে রকের ছেলেগুলো হাঁ করে তাকিয়ে থাকে ওর দিকে।
অবশ্য তাদেরকে দোষ দেওয়া যায়না। দিয়া যথেষ্ট সুন্দরী। তার সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তোলে টানা টানা দুটি চোখ আর মুখের মিষ্টি হাসিটা।

এ ছেলেও হয়তো তার রূপ আর হাসি দেখে গলে গেছে। তাই পেছনে ঘুরছে।
সেদিন বাড়ির আগে পর্যন্ত এসেছিল ছেলেটা। তারপর আর দেখা যায়নি ওকে।
কিন্তু পরদিন আবার সেই ঘটনা। তারপরদিন আবার। রোজই চলছে এরকম।

প্রথম যৌবনের সন্ধিক্ষণে যে কোন মেয়েই পুরুষের মনে পূজিত হওয়াটা বেশ গর্বের সাথেই উপভোগ করে। দিয়াও তার ব্যতিক্রম নয়।
তাই এই অনুসৃত হওয়াটা দিয়ার মন্দ লাগেনা। আর সত্যি বলতে কি ছেলেটা কোন অভব্যতাও করেনি তার সাথে। এমনকি তার পেছনে পেছনেও আসেনা। সে যায় রাস্তার উল্টো ফুটপাথে। যেতেই পারে। রাস্তা তো দিয়ার একার নয়।

স্কুল থেকে ফেরার সময় আরো তিনজন বান্ধবীর সাথে বেরোয় দিয়া। কিছুটা রাস্তা একসাথে আসার পর একটা তেমাথা মোড়ে ওরা চলে যায় একদিকে আর দিয়া যায় আরেকদিকে। সেখান থেকে বাড়ি পর্যন্ত বাকি পথটুকু একাই আসে দিয়া। আর সেখান থেকেই ছেলেটা যেতে শুরু করে ওর সাথে।
আজকেও স্কুল থেকে ফেরার পথে এসেছিল ছেলেটা। বাড়ির আগে এসে ফিরে গেছে। যেন রোজ বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিতে আসে দিয়া কে। কিন্তু আগে কখনো এরকম সময়ে আসেনি। আজই প্রথম।
হেডফোন কানে গোঁজা আছে। গানও বাজছে কিন্তু সেই গান দিয়ার কানে পৌঁছচ্ছেনা। এই মুহূর্তে তার মনের মধ্যে গান বাজছে। দিয়া আড়চোখে রাস্তায় নজর রাখে। ছেলেটা কিছুদূর গিয়ে সাইকেল ঘুরিয়ে আবার আসছে এদিকে। নজর ছাদের দিকে।
দিয়া চোখ ঘুরিয়ে নেয়। ওকে জানতে দেওয়া যাবেনা যে দিয়া লক্ষ্য করছে ওকে।

হঠাৎ ঝন ঝনাৎ শব্দে চমকে রাস্তায় তাকায় দিয়া। আর তারপরেই পেট গুলিয়ে হাসি পেয়ে যায় ওর। ছেলেটা রাস্তার পাশে চিৎ পটাং আর সাইকেলটা ওর ওপরে। দিয়াকে দেখার নেশায় বাবুর কোন খেয়ালই থাকেনি রাস্তার দিকে। একটা ইট পড়েছিল। তার ওপরেই সাইকেল চালিয়ে দিয়েছে আর সাথে সাথেই পপাত চ।
কেমন ভ্যাবলার মত রাস্তায় থেবড়ে বসে আছে।

কিশোরী চপলতায় হাসি আটকাতে পারেনা দিয়া। মুখে হাত চাপা দিয়ে খিল খিল করে হেসে ওঠে। ওর হাসির শব্দে মুখ তুলে তাকায় ছেলেটা।
ওর মুখ দেখে হাসি বন্ধ হয়ে যায় দিয়ার। ছেলেটার চোখে মুখে যন্ত্রণার ছাপ স্পষ্ট।

এবার ভালো করে ছেলেটাকে লক্ষ্য করে দিয়া। আহারে বেচারির লেগেছে মনে হচ্ছে খুব। কনুইয়ের কাছটা কেটে গেছে। রক্ত পড়ছে।
দিয়া খুব নরম মনের মেয়ে। কারো দুঃখ কষ্ট দেখলে ওর ভালো লাগেনা একদম।
ছেলেটা মুখ নিচু করে নিজের পায়ে হাত বোলাচ্ছে। পায়েও লেগেছে মনে হয়।

ওরকম করে হাসার জন্য লজ্জিত হয় দিয়া। এটা তার স্বভাব নয়। কিন্তু করে ফেলেছে। এখন নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে।
ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায় ছেলেটা। সাইকেলটা তোলে। একটু ধাতস্থ হয়ে এগিয়ে যায়। সাইকেলে চাপেনা। খুঁড়িয়ে হাঁটতে হাঁটতে দিয়ার চোখের আড়ালে চলে যায়।

মনটা ভার হয়ে যায় দিয়ার। ওরকম ভাবে না হাসলেই ভালো হত। ছেলেটা নিশ্চয় খুব খারাপ ভাবছে ওকে। ভাবছে কি নিষ্ঠুর মেয়ে। কিন্তু দিয়া জানে যে ও জেনে বুঝে হাসেনি। হাসিটা হঠাৎ বেরিয়ে গেছে।
গান বন্ধ করে ছাদ থেকে নেমে আসে দিয়া। নিজের রুমে এসে পড়তে বসে। কিন্তু হাজার চেষ্টাতেও মন বসাতে পারেনা বইয়ের পাতায়। থেকে থেকে ছেলেটার যন্ত্রনাবিদ্ধ মুখটাই ভেসে ওঠে চোখের সামনে। খুব লেগেছে ওর নাহলে ওরকম খুঁড়িয়ে হাঁটতনা।
রাতে খেতে বসেও ঠিক ভাবে খেতে পারেনা দিয়া। মন ভালো না থাকলে কোন কিছুই ভালো লাগেনা। খানিক নাড়াচাড়া করে কিছুটা মুখে দিয়ে উঠে পড়ে। নিজের রুমে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে। কিন্তু ঘুম আসতে চায়না। বারবার ওর কথাই মনে পড়ছে।
আগে সেভাবে দেখেনি দিয়া কিন্তু আজ ছেলেটার সাথে চোখাচুখি হতে ভালো ভাবে ওর মুখটা দেখতে পেয়েছে। মুখখানা কিন্তু ভারী মিষ্টি। কেমন মায়া ভরা চোখের চাহনি। আর তখন ব্যাথায় কাতরাচ্ছিল বলে মুখটা আরো করুন হয়ে গেছিল। ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছিল দিয়া।
পরদিন ক্লাসেও মন বসেনা দিয়ার। বার বার খালি ওর কথাই মাথায় ঘুরছে। খুব বাড়াবাড়ি কিছু হয়নি তো? সাইকেল থেকে পড়ে খুব বেশি তো লাগার কথা নয়। ফেরার পথে নিশ্চয় দেখা হবে। আসবে ঠিক। নিজেকে আশ্বস্ত করে দিয়া।
স্কুল থেকে ফেরার পথে রাস্তায় সতর্ক দৃষ্টি রেখে হাঁটছিল দিয়া। বান্ধবীদের কলতান ওর কানে ঢুকছিলনা। মোড়ের মাথায় এসে বাকিরা অন্য পথে যায় আর দিয়া যায় আরেক পথে।
মোড়ের বাঁকটা নিয়েই বুকটা ছ্যাঁত করে ওঠে দিয়ার। ছেলেটা নেই। বাঁকের মুখেই দাঁড়িয়ে থাকে রোজ। ওখান থেকেই দিয়ার সাথে আসে। আজ নেই।
আসেনি কেন? খুব চোট লেগেছে? হাঁটতে পারছেনা? হতে পারে। কালই তো খুঁড়িয়ে হাঁটছিল। হয়তো ব্যাথা বেড়েছে। সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে বাড়ি চলে আসে দিয়া।
বিকেলে ছাদে গিয়ে বসে কালকের জায়গাতেই। মনটা আশা আশঙ্কার দোটানায় দুলতে থাকে। আসবে কি এখন?
যদি সুস্থ হয়ে গিয়ে থাকে। যদি আসে। সন্ধ্যে পর্যন্ত অপেক্ষা করে দিয়া। কিন্তু সে আসেনা। মন খারাপটা রয়েই যায়। কিছু ভালো লাগছেনা।
পরদিন স্কুল যাবার আগে স্নানে ঢোকে দিয়া। ওর কথা তখনো মাথায় ঘুরছে। সেই ভাবনা নিয়েই স্নান করতে থাকে দিয়া। হুঁশ ছিলনা যে সময় অনেক পেরিয়ে গেছে। দিয়ার দেরি দেখে ওর মা বাথরুমের দরজায় ধাক্কা দিতেই সম্বিৎ ফেরে দিয়ার।

নিজের নগ্ন শরীরের দিকে তাকিয়ে লজ্জা পায়। ইসস শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে এরকম নগ্ন অবস্থায় একটা ছেলের কথা ভেবে যাচ্ছে সে তখন থেকে।
স্কুল ছুটির পর দুরু দুরু বক্ষে বেরোয় দিয়া। আজ কি আসবে ও? যতটা সম্ভব দ্রুত পায়ে প্রথম পথটা পেরিয়ে আসে দিয়া।
মোড়ের কাছে আসতেই হার্ট বিট বাড়তে থাকে দিয়ার। আছে কি নেই ভাবতে ভাবতে মোড় ঘুরতেই দিয়ার বুকে দামামা বাজতে শুরু করে।
এসেছে। দাঁড়িয়ে আছে গাছে হেলান দিয়ে।
স্তব্ধ হয়ে যায় দিয়া। পা নড়েনা ওর। দুজন দুজনের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে থাকে।
গুটি গুটি পায়ে ছেলেটা এগিয়ে আসে। মুখে মিষ্টি হাসি একটা। দিয়া চোখ নামিয়ে নেয়। বুকের ভেতর অশান্ত সমুদ্র উথাল পাথাল করছে।
সামনে এসে দাঁড়াতে দিয়া চোখ তুলে তাকায় ওর দিকে। চুলগুলো উস্কো খুস্কো। চোখদুটো ঘোলাটে। কনুইয়ে ব্যাণ্ডেজ। সেদিকে তাকিয়ে নিজের অজান্তেই কথা বেরিয়ে যায় দিয়ার মুখ থেকে।

মৃদু স্বরে জিজ্ঞেস করে –
-সেদিন খুব লেগেছিল?
– হ্যাঁ। ভীষণ। জ্বর চলে এসেছিল রাত্রে।

চমকে যায় দিয়া। এত জোরে লেগেছিল? জ্বরের জন্যই তাহলে ওকে এরকম লাগছে।
কষ্ট হয় দিয়ার। মুখ নিচু করে বলে I am sorry।
অবাক গলায় ছেলেটা বলে তুমি কেন সরি বলছ?

ওরকম ভাবে হেসে ফেলার জন্য। অকপট স্বীকারোক্তি দেয় দিয়া।
হাসার মতই তো ঘটনা। রাস্তার অন্য লোকেরাও তো হাসছিল।
মৃদু স্বরে দিয়া বলে তবুও, কারো দুরবস্থাতে হাসতে নেই।
খুশি মাখা গলায় ছেলেটা বলে চলো, বাড়ি যাবেনা?

সম্বিৎ ফিরে পেয়ে হাঁটতে শুরু করে দিয়া। ছেলেটাও পাশে চলতে থাকে।
– আমি অনিন্দ্য। অনিন্দ্য বসু।
– দিয়া চট্টরাজ।
– কমলাদেবী গার্লসে পড় জানি। কোন ক্লাস?
– টেন। তোমার?
– বি.ই. সেকেন্ড ইয়ার।
– থাকো কোথায়?
– হস্টেলে। বাড়ি বালুরঘাট।
– ব্যাথা এখন কেমন? জ্বর তো ছাড়েনি মনে হচ্ছে।
– পায়ে আর ব্যাথা নেই। হাতে আছে একটু। জ্বর ছেড়ে গেছে। কিন্তু দুর্বল লাগছে খুব।
– তাহলে এলে কেন? রেস্ট নিতে হত।
– কাল তো আসতে পারিনি। তাই আজ আর না এসে থাকতে পারলাম না।

কথাটা শুনে দিয়ার বুকের ভেতর হাজারটা পায়রা ডানা ঝাপটায়। মনের ভাব গোপন রেখে কপট গাম্ভীর্যে বলে
– যাও হস্টেলে ফিরে যাও।
– এই তো যাব। তোমার বাড়ি তো চলেই এলো।
– আমি চলে যেতে পারব বাকিটা।
– জানি তো। রোজই তো যাও। আজ আমি একটু সাথে যাই।

খুশি হয় দিয়া। দিয়াও চাইছিল ও থাকুক। ভালো লাগছে অনিন্দ্যর সাথে কথা বলতে।
পাশাপাশি হাঁটতে থাকে দুজনে। দিয়া জানতে চায়
– ডাক্তার দেখিয়েছ?
– হ্যাঁ। সেদিনই।
– ব্যান্ডেজটা ডাক্তারবাবুর হাতে বাঁধা বলে তো মনে হচ্ছেনা। সন্দেহের সুরে বলে দিয়া।
– আজ স্নান করার সময় খুলেছিলাম তো। রুমমেট বেঁধে দিয়েছে।
– তোমার কোন স্ট্রিম?
– মেকানিক্যাল।
– তুমি হেঁটেই এসেছ?
– না ওই মোড়ের মাথায় সাইকেলটা একটা দোকানে রেখেছি।
– রোজ তাই কর?
– হ্যাঁ
– কেন কর? থমকে দাঁড়ায় দিয়া।
– মানে? থতমত খেয়ে যায় অনিন্দ্য।
– কেন আসো রোজ?

লজ্জা পেয়ে মুখ নামিয়ে নেয় অনিন্দ্য। চুপ থাকে কয়েক সেকেন্ড। তারপর মাথা তুলে দিয়ার চোখে চোখ রেখে দৃঢ় গলায় বলে
– তোমাকে আমার খুব ভালো লাগে দিয়া।

অনিন্দ্যর স্পষ্ট কথায় লাজে রাঙা হয়ে যায় দিয়ার মুখ। কিন্তু খুশি হয় ওর স্পষ্টবাদীতায়।
মুখ নিচু করে হাঁটতে শুরু করে দিয়া। দুজনেই চুপ।

দিয়ার বাড়ির কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়ে পড়ে দুজনে। অনিন্দ্য আসে এ পর্যন্তই। তারপর তার নো এন্ট্রি। অনিন্দ্য ভাবে বিদায় বেলায় দিয়া কিছু বলবে। কিন্তু না। দিয়া কিছু না বলেই আবার হাঁটা শুরু করে।
ব্যথিত হয় অনিন্দ্য। ফিরে যাবার জন্য পিছু ফিরতেই যাচ্ছিল আর তখনই দাঁড়াল দিয়া। ঘুরে তাকিয়ে হাসিমাখা মুখে বলল
– ওষুধগুলো ঠিক মত খেও। আর গিয়ে রেস্ট নাও। সাইকেল নিয়ে চক্কর কেটোনা। টা টা।

খুশিতে ঝলমলিয়ে ওঠে অনিন্দ্যর মুখখানি। তাতে আর ব্যাথা বেদনার কোন চিহ্নই নেই। যেন কোন জাদুকর তার জাদুছড়ি ঘুরিয়ে সব কষ্ট এক লহমায় দূর করে দিয়েছে।
গেট খুলে বাড়ি ঢুকে যায় দিয়া। আর আকাশে উড়তে উড়তে হস্টেলে ফেরে অনিন্দ্য।
Like Reply
#5
(29-07-2019, 09:19 AM)nibus123 Wrote: Amar lekha kokhon bllam??  Golpo ta onno site er but golpo ta amar valo laglo tai post krlm dhonnobad

tobe collected likhe din problem solve
Like Reply
#6
Good Starting
Like Reply
#7
বিকেলে ছাদে এসে বসল দিয়া। মনটা এখন বেশ হালকা লাগছে। গত দুদিন ধরে মনের মধ্যে যে ভারী পাথরটা চেপে বসেছিল সেটা নেমে গেছে। সবকিছু আবার খুব ভালো লাগছে।
গান চালিয়ে দিল দিয়া। গান শুনতে শুনতে ভাবতে থাকে অনিন্দ্যর কথা। অনিন্দ্য নিশ্চয় আসবেনা এখন। রেস্ট নিতে বলেছে দিয়া। কথা যদি না শোনে তাহলে কাল ভীষন বকবে ওকে।
ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে ওঠে দিয়ার। রোজ কেন আসে জিজ্ঞেস করাতে বেচারা কেমন থতমত খেয়ে গেছিল তখন। আর ওর স্পষ্ট কথায় দিয়ার গাল লাল হয়ে গেছিল।
সন্ধ্যে বেলা পড়তে পড়তেও অনিন্দ্যর কথা ভাবে দিয়া। ওষুধগুলো ঠিকঠাক খাচ্ছে তো? আর নিশ্চয় জ্বর আসেনি। ভাবতে ভাবতে পড়ার কথা ভুলেই গেছিল দিয়া। হঠাৎ হুঁশ হল এবারে তার মাধ্যমিক। পড়ায় অবহেলা করলে চলবেনা। মন শান্ত করে বইয়ের পাতায় মনযোগ দেয় দিয়া।
পরদিন মোড়ের মাথায় দেখা হয় আবার। আজ অনেক ফ্রেশ লাগছে অনিন্দ্যকে। একগাল হাসি নিয়ে দিয়ার কাছে আসে অনিন্দ্য। দিয়াও হাসে প্রত্যুত্তরে ..
অনিন্দ্য বলে জানো কাল বিকেল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত আমি একটানা রেস্ট নিয়েছি।
দিয়া হেসে বলে হ্যাঁ তোমার চোখ মুখ দেখেই সেটা বুঝতে পারছি। গুড বয়।
দুজনে পাশাপাশি হাঁটতে শুরু করে।
দিয়া বলে এখন শরীর ভালো তো?


অনিন্দ্য বলে একদম। তোমাকে দেখে আর ভালো হয়ে গেল।
দিয়ার গাল আবার আপেল হয়ে যায়। চোরা চাহনিতে অনিন্দ্যকে দেখে একবার।
অনিন্দ্য জিজ্ঞেস করে কাল বাড়ি গিয়ে কি করলে?


রোজ যা করি। দিয়া বলে। বিকেলে ছাদে উঠেছিলাম। সন্ধ্যেবেলা পড়াশোনা তারপর খেয়ে ঘুম ব্যাস।
গাঢ় স্বরে অনিন্দ্য জিজ্ঞেস করে আমার কথা ভাবনি?


বুক কেঁপে ওঠে দিয়ার। সেদিন থেকে যে সারাক্ষন ওর কথাই ভেবে চলেছে সেটা আর কি বুঝবে ও।
কিছু বললে না যে? ব্যাকুল স্বরে জানতে চায় অনিন্দ্য।
হুঁ ভেবেছি। ছোট্ট করে উত্তর দেয় দিয়া।


অনিন্দ্য বলে আমি সারাক্ষন তোমার কথাই ভাবি জানো?
মুখ তুলে অনিন্দ্যর চোখের দিকে তাকায় দিয়া। সে চোখে অনুরাগের ছায়া দেখতে পায়।
কি এত ভাবো? জানতে চায় দিয়া।


অনিন্দ্য বলে কত কিছু। ভাবনার কি শেষ আছে? তোমার কথা ভাবতে খুব ভালো লাগে আমার। মন ভালো হয়ে যায়।
দিয়া বলে কেন তোমার মন কি সারাক্ষন খারাপ থাকে?


অনিন্দ্য বলে না তা না। তবে পড়াশোনার চাপে মাথা হ্যাং হয়ে যায় তো। তখন তোমার কথা ভাবলে মাইন্ড একদম রিফ্রেশড হয়ে যায়।
এই তো বললে সারাক্ষন নাকি আমার কথা ভাবো। তাহলে পড়াশোনা কর কখন?
ওরই ফাঁকে ফাঁকে। দুষ্টু হাসি হেসে বলে অনিন্দ্য।


হাসলে অনিন্দ্যর বাঁ গালে টোল পড়ে। লক্ষ্য করে দিয়া।
অনিন্দ্য জিজ্ঞেস করে তুমি টিউশন পড় না?
দিয়া বলে হ্যাঁ পড়ি তো। শুধু সায়েন্স গ্রূপটা। বাকি সাবজেক্ট বাড়িতেই পড়ি।
কোথায় যাও পড়তে? ব্যগ্র স্বরে জানতে চায় অনিন্দ্য।


দিয়া বলে সুজিত স্যারের কাছে। বাবুপাড়ায়।
– কখন যাও?
– সোম বুধ শুক্র। সকাল ৭টা থেকে।


উত্তরটা দিয়ে অনিন্দ্যর দিকে তাকায় দিয়া। অনিন্দ্য কিছু না বলে শুধু হাসে।
দিয়া বলে তুমি কি প্ল্যান করছ আমি জানি। ওসব চিন্তা বাদ দিয়ে নিজের পড়াতে মন দাও।
অনিন্দ্য একটু মিইয়ে গিয়ে বলে দেব দিয়া। আমি রাতে ঠিক পড়ে নেব। তুমি দেখো আমার পড়ার কোন ক্ষতি হবেনা।
তাহলেই ভালো। গম্ভীর ভাবে জবাব দিয়ে হাঁটতে থাকে দিয়া।
অনিন্দ্য বলে ওরকম দিদিমনির মত মুখ করে আছ কেন?
অনিন্দ্যর কথায় হেসে ফেলে দিয়া।


খুশি হয়ে অনিন্দ্য বলে হ্যাঁ এইবার ঠিক আছে। এরকম হাসতে থাক সবসময়।
দিয়া বলে তাহলে আমাকে পাগল বলবে সবাই। আর সাথে তোমাকেও।
অনিন্দ্য বলে ভালো তো। আমি পাগল আর তুমি পাগলী।
অনিন্দ্যর কথায় রামধনুর মত রঙ ছড়িয়ে হাসতে থাকে দিয়া।


বাকি পথটুকু হাসি গল্পে শেষ হয়ে যায়। দিয়ার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফিরতি পথ ধরে অনিন্দ্য। আর দিয়া এতক্ষন একসাথে কাটানো সময়টা বুকে জমা রেখে বাড়ি ঢুকে যায়।

পরদিন সকালে টিউশন যাবার জন্য বেরিয়েই দেখে অনিন্দ্য দাঁড়িয়ে আছে সাইকেল নিয়ে। মনে মনে খুব খুশি হয় দিয়া কিন্তু কপট রাগ দেখিয়ে বলে চলে এসেছ সকাল সকাল?

অনিন্দ্য বলে আমি তো অপেক্ষায় ছিলাম কখন সকাল হবে আর কখন তোমার সাথে দেখা হবে।
খুব হয়েছে। থাক। মুখ ভ্যাংচায় দিয়া।


অনিন্দ্য বলে সালোয়ার কামিজে তোমাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
– এটা সালোয়ার কামিজ না। কুর্তি লেগিংস বলে।
– যাই বলে। তোমাকে দারুন লাগছে।
– আর কি দারুন লাগছে শুনি। বাঁকা চোখে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে দিয়া।
– সব কিছুই।
– সব কিছুই মানে? অনিন্দ্যর কথার আড়ালে দুষ্টুমির আভাস পায় দিয়া।
– সব কিছুই মানে ওভারঅল তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।
– হুম। ছোট্ট করে প্রত্যুত্তর দেয় দিয়া।


সাইকেল গড়িয়ে চলে গন্তব্যে। যতটা সম্ভব আস্তেই চালাচ্ছে দিয়া। এই পথটুকু জলদি শেষ হয়ে যাক সে চায়না।
– তোমার ক্লাস কটা থেকে? জানতে চায় দিয়া।
– দশটা
– আর শেষ হয় কটায়?
– পাঁচটা
– তাহলে তুমি চারটের সময় আসো কি করে?
– শেষের ক্লাসটা ইম্পরট্যান্ট নয়
– কেন?
– ইয়ে মানে আমি প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসগুলো খুব মন দিয়ে করি। একটাও মিস করিনা। থিওরি ক্লাস এক আধটা না করলেও চলে।
– হুম। তার মানে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আসো।
– না ঠিক ফাঁকি না। মানে ওই আর কি।
– বুঝলাম
– কেন তুমি চাও না আমি আসি?
– তাই বললাম কি? কিন্তু ক্লাস ফাঁকি দিলে তোমার পড়ার ক্ষতি হবেনা?
– না না। ওটুকু আমি পুষিয়ে নেব।


গল্পে কথায় এগিয়ে যেতে থাকে দুজনে। এগিয়ে চলে ওদের সম্পর্ক। বেড়ে চলে ওদের ঘনিষ্ঠতা। কত কত কথা জমে আছে দুজনের মনে। সারা দিনরাত ধরে বললেও হয়তো শেষ হবেনা।

স্যারের বাড়ির কাছাকাছি এসে দিয়া বলে চলে এসেছি। এবার তুমি ফিরে যাও। টা টা।

আচ্ছা। বিকেলে দেখা হবে বলে অনিন্দ্য দাঁড়িয়ে পড়ে। দিয়া চোখের আড়াল হলে সাইকেল ঘুরিয়ে প্যাডেলে চাপ দেয়।
বিকেলে দিয়ার স্কুল থেকে ফেরার সময় আসে অনিন্দ্য। হাঁটতে থাকে দুজনে পাশাপাশি আর কলকল করে কথা বলে যায়। পথটা এত জলদি ফুরিয়ে যায় যে দুজনের কারোরই মন ভরেনা।


কথাটা অনিন্দ্যই তোলে প্রথম। দিয়াকে বলে এইটুকু সময়ের জন্য তোমাকে কাছে পাই। তাতে মন ভরেনা।
দিয়া ভ্রু তুলে বলে কেন আর কত কাছে চাও?


– না মানে চোখের পলকে পথটা ফুরিয়ে যায় তো। কথা শুরু করার আগেই শেষ হয়ে যায়। যদি আরো কিছুক্ষন কথা বলা যেত।
– সকালেও তো কথা হল।
– সেটাও তো সামান্যই। আর সপ্তাহে তিনদিন মাত্র।


তাহলে? দিয়া জানতে চায় অনিন্দ্যর মাথায় কি ঘুরছে।
বলছিলাম কি। একটু ইতস্তত করে অনিন্দ্য।
– হুম বলো
– কোথাও বসে গল্প করলে হয়না?
– কোথায়?
– তুমি বলো। আমি তো সেরকম চিনিনা এখানে সবকিছু। তুমি তো এখানকারই মেয়ে।
– আমিও খুব একটা জানিনা
– আচ্ছা আমি খোঁজ নিচ্ছি। আর বলছি কি তোমার মোবাইল আছে?
– না। বাবা বলেছে মাধ্যমিকের পর কিনে দেবে।
– ওহ আচ্ছা।


পরদিন বিকেলে দেখা হতেই অনিন্দ্য বলল পেয়ে গেছি খোঁজ।
– কোথায় ?
– নদীর ধারে। ওখানে কেও ডিস্টার্ব করবেনা। ফাঁকা জায়গা।
– কে বলল ওখানকার কথা?
– ক্লাসের একটা ছেলেকে জিজ্ঞেস করলাম।
– হুম
– যাবে কাল?
– কখন? সকালে? আর আমার টিউশন?
– একদিন অফ করলে খুব ক্ষতি হয়ে যাবে?
– তা হয়তো হবেনা। কিন্তু একদিন হলে দুদিন হবে, দুদিন থেকে তিনদিন।
– না না রোজ বলব না।
– একদিন গল্প করেই শখ মিটে যাবে তোমার? না একদিনেই সব কথা শেষ হয়ে যাবে।
– না তা তো হবেনা। কিন্তু আমিও চাইনা তোমার পড়াশোনার ক্ষতি হোক। মাঝে মাঝে যাব আমরা।
– বেশ। দেখা যাবে।


পরদিন সকালে অনিন্দ্য বলল কি ঠিক করলে? টিউশন না নদী?
দিয়া বলল তোমার অন্য কোন মতলব নেই তো?
অনিন্দ্য আকাশ থেকে পড়ে বলল মানে?


দিয়া বলল মাত্র দুদিনের আলাপেই আমাকে নিয়ে ফাঁকা জায়গায় যেতে চাইছ। তাই বললাম। সেরকম চিন্তা যদি থাকে তাহলে কোন সুবিধে হবেনা সেটা আগেই বলে দিলাম।

ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে গেল অনিন্দ্য। আচমকা অনিন্দ্য দাঁড়াতে দিয়াও নেমে গেল সাইকেল থেকে।
পেছন ঘুরে জিজ্ঞেস করল কি হল?


অনিন্দ্য দৃঢ় কঠিন গলায় বলল আমি সেসব চিন্তা কিছু করিনি। শুধু একান্তে গল্প করার জন্যই ডেকেছিলাম। ওসব চিন্তা করার সময় এখনো আসেনি সেটা আমিও জানি। আমরা এতটাও কাছে আসিনি এখনো। কিন্তু তুমি আমাকে এতটা নীচ ভাববে সেটা আশা করিনি। ঠিক আছে তোমাকে কোথাও যেতে হবেনা। তুমি টিউশন যাও। আমি ফিরে যাচ্ছি।

দিয়াকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে সাইকেল ঘুরিয়ে স্পিডে বেরিয়ে গেল অনিন্দ্য। দিয়া দুবার অনিন্দ্য অনিন্দ্য শোনো বলে ডাকল। কিন্তু সেই ডাক অনিন্দ্যর কানে পৌঁছল বলে মনে হলনা। অথবা পৌঁছলেও অনিন্দ্য ফিরে তাকাতে ইচ্ছুক ছিলনা হয়তো।

হতভম্ব দিয়া রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে রইল। অনিন্দ্যকে আঘাত দিতে চায়নি ও। স্বাভাবিক মেয়ে সুলভ আশঙ্কায় বলেছিল ওই কথাগুলো। কিন্তু অনিন্দ্য বুঝলনা। রাগ হয়ে যায় দিয়ারও।

সেদিন বিকেলে এলো না অনিন্দ্য। রাতে শুয়ে শুয়ে দিয়া ভাবছিল তার কি কোন দোষ ছিল? আগা গোড়া পুরো ঘটনাটা মনে মনে রিপিট করল দিয়া। না তার দোষ ছিলনা কোন। সে যা বলেছে সেটা যে কোন মেয়েই বলত। অনিন্দ্য যদি দিয়ার জায়গায় থাকত তাহলে সেও তাই বলত।

মাত্র চারদিনের বন্ধুত্ব। এত কম সময়ের মধ্যে কোন ছেলে যদি কোন মেয়েকে ফাঁকা জায়গায় যাবার প্রস্তাব দেয় তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই মেয়েটির মনে একটা ভীতি, আশঙ্কা উঁকি দেয়।

সে কোন দোষ করেনি। এটা অনিন্দ্যকে বুঝতে হবে। বুঝলে ভালো। না বুঝলে দিয়ার কিছু করার নেই। অনিন্দ্যর চিন্তা মাথা থেকে বার করে ঘুমিয়ে পড়ে দিয়া।

পরদিন বিকেলে ফেরার পথে দিয়া দেখল অনিন্দ্য দাঁড়িয়ে আছে। দিয়া দাঁড়িয়ে গেল। কিন্তু কোন রকম প্রতিক্রিয়া দেখাল না।
রাস্তা পার করে পায়ে পায়ে অনিন্দ্য এসে দাঁড়াল দিয়ার কাছে। খুব কাছে। এতটাই কাছে যে দিয়া ওর শরীরের ঘ্রান পাচ্ছিল।
দিয়া ভেবেছিল ও আগে থেকে কোন কথা বলবেনা। অনিন্দ্যই বলুক আগে। ও যে অনিন্দ্যকে দেখে দাঁড়িয়েছে সেটাই অনেক।


কিন্তু অনিন্দ্যর শরীরের পুরুষালী গন্ধ দিয়ার মনটাকে ওলট পালট করে দিল। নিজেকে আর শাসনে বেঁধে রাখতে পারলনা দিয়া। মাটিতে চোখ রেখে মৃদু কম্পিত স্বরে জিজ্ঞেস করল কাল এলেনা কেন বিকেলে?

দিয়ার নরম কন্ঠ গলিয়ে দিল অনিন্দ্যকে। আবেগে গলা বুজে এল ওর। কোনক্রমে দলা পাকিয়ে উঠে আসা কান্নাটা সামলে নিয়ে বলল তুমি আমাকে খুব খারাপ ভাবো তাই না?

অনিন্দ্যর গলার স্বরে পরিবর্তন দিয়ার কান এড়ায় না।চোখ তুলে তাকাতে অনিন্দ্যর ছলছল চোখ আর ঠোঁট কামড়ে নিশ্চুপ থাকা থেকে ওর মনের আবেগটা সহজেই বুঝতে পারল দিয়া।

সেই আবেগ আক্রান্ত করল দিয়াকেও। নিজের দুহাত দিয়ে অনিন্দ্যর হাতটা জোরে আঁকড়ে ধরে দিয়া বলল খারাপ ভাবলে তোমার অপেক্ষা করতাম না কাল। আর কাল যা বলেছিলাম সেটা তুমি যদি মেয়ে হতে তাহলে বুঝতে।

গাঢ় স্বরে অনিন্দ্য বলল বুঝেছি দিয়া। কাল সারারাত এই কথাগুলোই ভেবেছি। তাই তো এলাম আজ। দিয়ার হাত মুঠো করে ধরল অনিন্দ্য।

কিছুক্ষন চুপ থাকল দুজনে একে অপরের চোখে চোখ রেখে। নীরবতা ভাঙলো অনিন্দ্যই। দিয়ার হাত ধরে পাশে এসে বলল চলো যাওয়া যাক।
দিয়া আর অনিন্দ্য হাত ধরাধরি করে হাঁটতে লাগল। বাঁধ ভেঙে আবার কথার স্রোত বেরিয়ে এল দুজনের। কালকের ঘটনাটা এক ঝটকায় দুজনকে একে অপরের আরো অনেক কাছে এনে ফেলেছে। একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা, সম্মান আর বিশ্বাসকে বাড়িয়ে তুলেছে। দুজনেই লহমায় ভুলে গেছে সব মান অভিমান। ভালোবাসা যেখানে ভীষন ভাবে বলবৎ সেখানে এসব তুচ্ছ মনোমালিন্য কোন আঁচড়ই কাটতে পারেনা।
Like Reply
#8
পরদিন সকালে দুই কপোত কপোতী কে আবার দেখা গেল একসাথে। পাশাপাশি সাইকেলে যেতে যেতে গল্পে মত্ত দুজনেই। আজ দিয়াই কথাটা তুলল। দেখা হবার পর একটু এগিয়েই দিয়া বলল আজ টিউশন যেতে একদম ইচ্ছে করছেনা।
অনিন্দ্য বলে তাহলে? বাড়ি ফিরে যাবে?
দিয়া লাজুক হেসে বলে না। চলো নদীর ধারে বসে গল্প করি।
দিয়ার কথা শুনে দুষ্টুমি করার ইচ্ছে জাগে অনিন্দ্যর মনে।

ভ্রু কুঁচকে বলে কেন বলোতো? ফাঁকা জায়গায় গিয়ে কিছু করবেনা তো আমাকে আবার? তাহলে কিন্তু আমি নেই।
চোখ গোল গোল করে মুখে কপট রাগ দেখিয়ে দিয়া বলে অসভ্য কোথাকার। প্যাঁক দেওয়া হচ্ছে আমাকে?
দিয়ার কথায় হেসে ফেলে অনিন্দ্য। বলে বেশ করেছি। দেবই তো।
খুব হয়েছে। থাক। ভেঙচি কেটে বলে দিয়া।
অনিন্দ্য বলে সত্যি যাবে?
মাথা নেড়ে দিয়া বলে হ্যাঁ যাব।
খুশি হয়ে অনিন্দ্য বলে চলো তাহলে।
দুজনের সাইকেলের অভিমুখ পরিবর্তিত হয়। বাবুপাড়ার পথ ছেড়ে নদীর পথে এগিয়ে যায় ওরা।

নদীর ঘাট থেকে অনেকটা তফাতে থামে ওরা। এত সকালে ঘাটেও লোকজন নেই। আর ওরা যেখানে থেমেছে সেখানে তো কেওই নেই। জায়গাটা শরবন আর হোগলার ঝোপে ঢাকা। সাইকেল পাশে রেখে তার মধ্যেই বসল দুজনে পাশাপাশি।
নদীর শান্ত রূপ এখন। স্থির জলের দিকে তাকিয়ে অনিন্দ্য বলল কি শান্ত না জায়গাটা? নিস্তব্ধ নিশ্চুপ। আমার এরকম জায়গাই ভালো লাগে। ভিড় ভাট্টা একদম পছন্দ না আমার।
দিয়া বলল তুমি কি কবিতা লেখো?

ধ্যাত। মোটেও না। লাজুক গলায় বলল অনিন্দ্য। আমি কবি নই। আমার এমনি শান্ত নির্জন জায়গা ভালো লাগে।
হুম বুঝলাম। আর কি কি ভালো লাগে তোমার? দিয়া জানতে চায়।
Like Reply
#9
 নদীর বুকে একটা নৌকা চলছে। সেদিকে তাকিয়ে স্মৃতি মেদুর গলায় অনিন্দ্য বলে গল্পের বই পড়তে, গান শুনতে আর ওই রকম নদীর বুকে অজানার পথে ভেসে বেড়াতে।
অনিন্দ্যর সহজ সরল কথা ছুঁয়ে যায় দিয়াকে। দিয়াও ভাবুক হয়ে যায়। আনমনে জলের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে আমারও গান শুনতে আর বই পড়তে ভালো লাগে। আর ভালো লাগে বেড়াতে।
জল থেকে চোখ সরিয়ে দিয়ার দিকে তাকিয়ে অনিন্দ্য বলে হুম জানি তো। তুমি বিকেলে ছাদে বসে গান শোনো।
লাজুক হেসে দিয়া বলে দেখেছ তাহলে।
দুঃখী গলায় অনিন্দ্য বলে দেখতে গিয়েই তো সাইকেল নিয়ে উল্টে পড়লাম।
মুখে হাত চাপা দিয়ে হাসি আটকে দিয়া বলে রাস্তায় চলবার সময় রাস্তার দিকে নজর রাখতে হয়।
বড় বড় চোখ করে অনিন্দ্য বলে কেও যদি নজর কেড়ে নেয় তো আমার কি দোষ?

লজ্জায় আবারো গাল লাল হয় দিয়ার। মুখ নিচু করে নরম মাটির ঘাস ছিঁড়তে থাকে।
তোমার বাড়িতে কে কে আছে? দিয়াকে সহজ করার জন্য কথা বদলায় অনিন্দ্য।
-বাবা মা আর আমি। ব্যাস।
– ভাই বোন?
– নাহ। তোমার বাড়িতে কে কে আছে?
– বাবা মা আমি আর ছোট ভাই। ফাইভে পড়ে।
– বাড়ি কতদিন অন্তর যাও?
– কলেজ ছুটি পড়লে তখনই যাই।
– বাড়িতে সবাইকে মিস করো না?
– হুম করি তো। কিন্তু সেই অভাবটা এখন তুমি পূরণ করে দিয়েছ।

আবার বুকের ভেতরটা শিরশিরিয়ে ওঠে দিয়ার। উফফ অনিন্দ্যটা পাগল না করে ছাড়বেনা তাকে।
অনিন্দ্য এগিয়ে আসে একটু। গভীর গলায় ডাকে দিয়া। – হুঁ
– আমার দিকে তাকাও
পদ্মকলির মত চোখ মেলে তাকায় দিয়া।

অনিন্দ্য দিয়ার নরম হাত নিজের মুঠোতে ধরে বলে তোমায় আমি ভীষণ ভালোবাসি দিয়া। ভীষন। এই কদিনে তুমি যে আমার কত আপন হয়ে গেছ সেটা বলে বোঝাতে পারব না তোমায়। তোমাকে ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছিনা আমি।
অনিন্দ্যর হাতের মুঠোয় দিয়ার হাত ঘেমে ওঠে। দিয়ার গলা শুকিয়ে যায়। কিছু বলতে চায় কিন্তু ঠোঁট দুখানি শুধু থরথর করে কেঁপে ওঠে। কোন আওয়াজ বেরোয় না মুখ থেকে।
ভাষায় প্রকাশ করতে না পেরে অন্যভাবে নিজের অভিব্যক্তি জানায় দিয়া। অনিন্দ্যর হাতটা আঁকড়ে ধরে ওর কাঁধে মাথা রাখে।
একহাত দিয়ার হাতে রেখে অন্যহাতটা দিয়ার মাথায় রাখে অনিন্দ্য। দুজনেই চুপ। কথার প্রয়োজনও নেই এখন। একে অপরের স্পর্শেই দুজন দুজনের মনের কথা পড়ে নেয়।

একে অন্যের শরীর ছুঁয়ে দুজনে দূর দিগন্তের দিকে তাকিয়ে থাকে। ঠিক যেখানে আকাশ এসে মিশেছে নদীর বুকে। চারিদিক নিস্তব্ধ। শুধু পাড়ের কাছে নদীর জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ আর দুজনের হৃৎপিণ্ডের লাবডুব আওয়াজ শোনা যায়।
কতক্ষন ওভাবে চুপ করে ছিল ওরা খেয়াল ছিলনা ওদের। সময় যেন স্থির হয়ে গেছে। নীরবতা ভেঙে দিয়া বলে
– আমায় ছেড়ে যাবেনা তো অনিন্দ্য?

হাতটা দিয়ার মাথা থেকে নামিয়ে ওর চিবুক ধরে মুখটা তুলে অনিন্দ্য বলল আজ এই নদীকে সাক্ষী রেখে কথা দিচ্ছি দিয়া। জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত শুধু তোমার হয়ে থাকব।
অনিন্দ্যর কথায় মন শান্ত হয়ে যায় দিয়ার।
আর তুমি? অনিন্দ্য জানতে চায় দিয়ার কাছে।

আমিও কথা দিলাম অনিন্দ্য। তুমি ছাড়া আর কেও কখনো আসবেনা আমার জীবনে।
দিয়ার মাথা আবার নিজের কাঁধে রেখে দিয়ে অনিন্দ্য বলে তুমি যদি কোনদিনও আমাকে ছেড়ে যাও তাহলে আমি শেষ হয়ে যাব দিয়া। আর বাঁচবনা।

ধড়মড় করে উঠে অনিন্দ্যর মুখে হাত চাপা দেয় দিয়া। রাগত স্বরে বলে আর কখনো এরকম অলুক্ষনে কথা বলবে না। তাহলে কিন্তু আমি কথা বলবনা।
দুহাতে দিয়ার মুখখানি ধরে অনিন্দ্য বলে বলবনা দিয়া। আর কোনদিনও বলবনা।
নিজের দুহাত অনিন্দ্যর হাতের ওপর রেখে দিয়া বলে ঠিক তো? কথা দিচ্ছ?
– একদম ঠিক। কথা দিচ্ছি।

দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে নিষ্পলক। অনিন্দ্যর হাতে ধরা দিয়ার মিষ্টি মুখখানি। অনিন্দ্য আর আটকাতে পারেনা নিজেকে। মুখ নামিয়ে আনে দিয়ার মুখের কাছে। দুজনের নিশ্বাস ঘন হয়ে আসে।
কি হতে চলেছে সেটা সহজেই অনুমান করে নেয় দিয়া। কিন্তু তাতে আর কোন আপত্তি নেই তার। ঠোঁটদুটো ঈষৎ ফাঁক হয়ে যায় দিয়ার। আবেশে দুচোখ বন্ধ হয়ে আসে। দুহাতে জড়িয়ে ধরে অনিন্দ্যকে।

অনিন্দ্যর তপ্ত তৃষিত ওষ্ঠ নেমে আসে দিয়ার নরম ভেজা ঠোঁটের ওপর আর তখনই যেন কালঘড়ি থেমে যায়।
দুহাতে দিয়াকে জড়িয়ে ধরে দিয়ার ঠোঁটের আস্বাদ নিতে থাকে অনিন্দ্য। আবেশে তারও দুচোখ বন্ধ হয়ে যায়। দিয়া আঁকড়ে ধরে অনিন্দ্যর পিঠ। আরো কাছে টেনে নেয় প্রিয়তমকে। নিস্তব্ধ নদীতীরে শুধু চুমুর শব্দ ভেসে বেড়ায়।

দিয়াকে আরো নিবিড় ভাবে জড়িয়ে ধরে অনিন্দ্য। দিয়ার নরম বুক মথিত হয় অনিন্দ্যর পুরুষালী বুকে। দুজনের ঠোঁট এক হয়ে যায়। কমলার কোয়ার মত দিয়ার রসালো ঠোঁট চুষে চলে অনিন্দ্য।
দুজনেই অনভিজ্ঞ। দুজনেরই জীবনের প্রথম চুম্বন। কিন্তু কিছু জিনিষ হাতে ধরে শেখাতে হয়না। আপনা আপনি শিখে যায় মানুষ। যেমন এখন ওদেরকে শেখাতে হচ্ছেনা। ওরা নিজেরাই শিখে নিচ্ছে কিভাবে প্রেমের পরশ ছড়িয়ে দিতে হয়।
চুমুর আতিশয্যে দুজনেই গলে যায়। ওদের আদর শেষ হতে চায়না। যেন পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে এভাবেই পরস্পরকে চুমু খেয়ে চলেছে ওরা। আদরের ঘনঘটায় দিয়ার শরীর পুলকে কেঁপে কেঁপে ওঠে বারবার।
গভীর আশ্লেষে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিতে চায় ওরা।
দুজনের দম শেষ হয়ে আসে। ঠোঁট দুটো ছাড়িয়ে নিয়ে দুজনেই হাঁপাতে থাকে একে অপরের চোখে চোখ রেখে। কিছুক্ষন দম নেয়। তারপর আবার ঝাঁপিয়ে পড়ে একে অন্যের ওপর।
এবার আরো জোরে জাপটে ধরে একে অপরকে। দুটো শরীর মিলেমিশে এক হয়ে যায়। দুজনের কারোরই কোন হুঁশ নেই। শুধু চুমু খেতে ব্যস্ত।
অনিন্দ্যর হাত ঘুরে বেড়ায় দিয়ার পিঠে। অনিন্দ্যর কামঘন স্পর্শে থেকে থেকে শিহরিত হয় দিয়া। অনিন্দ্যর চুল মুঠো করে ওর ঠোঁট কামড়ে ধরে। জন্ম জন্মান্তরের আদর শেষ করে থামে ওরা। হাঁপায়। দুজনের ঠোঁট একে অপরের লালায় ভিজে একাকার। দিয়ার কামড়ে অনিন্দ্যর ঠোঁটে গভীর দাগ। সেটা দেখে একই সাথে লজ্জিত আর শিহরিত হয় দিয়া।
অনিন্দ্যকে জড়িয়ে ধরে ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে আই লাভ ইউ। দিয়ার গালে চুমু খেয়ে প্রত্যুত্তর দেয় অনিন্দ্য।
আরো আধঘন্টা দুজনে বসে থাকে নদীর পাড়ে।

অনিন্দ্যর কোলে মাথা রেখে শোয় দিয়া। অনিন্দ্যর স্নেহশীল হাত দিয়ার চুলগুলো নিয়ে খেলা করে। পরম আবেশে দিয়ার চোখ বন্ধ হযে যায়।
অনিন্দ্য ডাকে দিয়া
উমম। চোখ বন্ধ রেখে আদুরে গলায় উত্তর দেয় দিয়া।

অনিন্দ্য বলে আজকের দিনটা সারা জীবন মনে থেকে যাবে। এত সুন্দর সকাল আমার জীবনে আর আসেনি।
চোখ খুলে অনিন্দ্যর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে দিয়া বলে আমারও।
নিচু হয়ে দিয়ার কপালে চুমু খায় অনিন্দ্য।দিয়া অনিন্দ্যর হাতে চুমু খায়।
তারপর আবোল তাবোল কত কি কথা বলে যায় দুজনে। সব কথার মাথামুন্ডুও নেই।

সময় শেষ হয়ে আসে। এবার ফিরতে হবে। উঠতে ইচ্ছে করছেনা কারোরই। কিন্তু উপায় নেই। দিয়ার টিউশনির সময় শেষ হয়ে এসেছে।
ওঠার আগে আরেকবার দুজন দুজনকে চুমু খায়। তারপর ফেরার পথ ধরে। দিয়ার বাড়ির কাছে এসে বিভক্ত হয়ে যায় দুজনে।

বাড়িতে এসে পোশাক ছাড়ার সময় দিয়া দেখল প্যান্টিটা ভিজে চুপচুপে হয়ে গেছে। লজ্জায় লাল হয়ে গেল দিয়া। অর্গাজম ব্যাপারটা বান্ধবীদের কাছে শুনেছে কিন্তু নিজের কোনদিনও সেই অভিজ্ঞতা হয়নি। আজ প্রথমবার হল। নদীর পাড়ে বারেবারে শরীর শিহরিত হবার কারণটা এবার বুঝতে পারে দিয়া। অনিন্দ্যর আদর অস্থির করে তুলেছিল তাকে।
স্নান করার সময় দিয়ার হঠাৎ খেয়াল হয় আচ্ছা অনিন্দ্যর ও কি তাহলে তখন…..

কথাটা মাথায় আসতেই আবারো লজ্জায় লাল হয়ে যায় দিয়া। ইসস ছি ছি। কি সব ভাবছে সে।
কিন্তু বারে বারে ওই কথাটাই মাথায় ঘুরতে থাকে। আর দিয়ার উরুসন্ধি গরম হয়ে যায়। বেখেয়ালে সেখানে হাত চলে যায় দিয়ার। নিজের স্পর্শেই শিহরিত হয় দিয়া। আগে কখনো এরকম করেনি।

আচ্ছা অনিন্দ্য যদি এখানে হাত দেয়!! ভাবতেই আবার ভিজে ওঠে দিয়া। না অনেক হয়েছে। এসব আজেবাজে চিন্তা মাথা থেকে তাড়াতে হবে। চটপট স্নান সেরে বেরিয়ে আসে দিয়া।
বিকেলে অনিন্দ্যর সাথে দেখা হতে লজ্জায় ওর দিকে তাকাতে পারছিলনা দিয়া। বারে বারে খালি ওই কথাটাই মাথায় আসছে।
অনিন্দ্য ওর পাশে এসে বলল এত চুপ কেন?

অস্বস্তি কাটাতে দিয়া বলে কই চুপ? এই তো কথা বলছি।
তোমার ক্লাস শেষ হল?
অনিন্দ্য বলল হ্যাঁ শেষেরটা করলামনা।
একটু থেমে অনিন্দ্য ডাকল দিয়া
– কি?
– আজ আমরা অনেক কাছে চলে এলাম তাই না?

কেঁপে উঠল দিয়া। যে ভাবনাটা মাথা থেকে সরাতে চাইছে অনিন্দ্য সেটাই বলছে। মাথা নেড়ে ছোট্ট করে বলল হুঁ।
উৎসাহিত হয়ে অনিন্দ্য জিজ্ঞেস করল তোমার ভালো লেগেছে?
– কি?

লাজুক গলায় অনিন্দ্য বলল আমার আদর?
আর কোন উত্তর দিতে পারেনা দিয়া। পা কাঁপছে তার।

কি হল? কিছু বলছনা যে? অধৈর্য হয় অনিন্দ্য।
– হ্যাঁ ভালো লেগেছে।
– আমারও। তোমার আদর ভুলতে পারছিনা জানো। তখন হস্টেলে ফিরে যাবার পরও মনে হচ্ছিল এখনো যেন তুমি আমাকে ছুঁয়ে আছ।
মন শক্ত করে দিয়া বলে আমি কিন্তু রোজ টিউশন অফ রাখতে পারবনা।

আমিও তা চাইনা দিয়া। জোর গলায় বলে অনিন্দ্য। তোমার পড়ার কোন ক্ষতি হোক তা বিন্দুমাত্র চাইনা আমি।
অলক্ষ্যে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে দিয়া। অনিন্দ্যর কোন দোষ নেই। আসলে দিয়া নিজের কাছে নিজে হেরে যাচ্ছিল। এর পরদিনও যদি যেত তাহলে হয়তো আর নিজেকে আটকে রাখতে পারতনা দিয়া। সব উজাড় করে দিত অনিন্দ্যকে। কিন্তু সেটা এখনই চায়না দিয়া।
পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে অনিন্দ্য বকবক করে যাচ্ছিল। সব কথা দিয়ার কানে ঢুকছিলনা। শুধু আনমনে হ্যাঁ হুঁ করে যাচ্ছিল দিয়া।
বাড়ির কাছে আসতে অনিন্দ্য বলে চলো তাহলে টা টা। আমি এবার আসি।
হাসি মুখে অনিন্দ্যকে বিদায় দেয় দিয়া। মুখে বলে সাবধানে যেও।

বাড়ি ঢুকে যায় দিয়া। মাথায় শুধু এখন একটাই কথা ঘুরছে তার – মাধ্যমিক, মাধ্যমিক, মাধ্যমিক।
[+] 1 user Likes nibus123's post
Like Reply
#10
Khub valo laglo
Like Reply
#11
চমৎকার প্রেম কাহিনী। যদিও সম্পূর্ণ নয়। অবশ্য এই ধরনের ছোট গল্পগুলো এভাবেই শেষ হয়। পড়তে বেশ ভালো লেগেছে। গল্পে রগরগে কোনো সিন না থাকলেও প্রেমের আবেগ ছিলো পুরোপুরিই। লেখকের লেখার হাত চমৎকার। চাইলে এটাকে টেনে একটা প্রেমের উপন্যাস করার জন্য যথেষ্ঠ মাল-মশল্লা বিদ্যমান আছে এই গল্পে। 
সুন্দর এই গল্পটি আমাদের উপহার দেয়ার জন্য লেখককে অনেক অনেক ধন্যবাদ। 
সেই সাথে পোস্টারকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের সাথে গল্পটা শেয়ার করার জন্য... 
[+] 1 user Likes arn43's post
Like Reply
#12
(19-11-2021, 08:21 PM)arn43 Wrote: চমৎকার প্রেম কাহিনী। যদিও সম্পূর্ণ নয়। অবশ্য এই ধরনের ছোট গল্পগুলো এভাবেই শেষ হয়। পড়তে বেশ ভালো লেগেছে। গল্পে রগরগে কোনো সিন না থাকলেও প্রেমের আবেগ ছিলো পুরোপুরিই। লেখকের লেখার হাত চমৎকার। চাইলে এটাকে টেনে একটা প্রেমের উপন্যাস করার জন্য যথেষ্ঠ মাল-মশল্লা বিদ্যমান আছে এই গল্পে। 
সুন্দর এই গল্পটি আমাদের উপহার দেয়ার জন্য লেখককে অনেক অনেক ধন্যবাদ। 
সেই সাথে পোস্টারকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের সাথে গল্পটা শেয়ার করার জন্য... 

এই গল্পটা সম্পূর্ণ করা হয়েছিল এবং এই ফোরামে আছে ..

কিন্তু কে করেছিল আর কি নাম দিয়ে সেটা ভুলে গেছি ..
Like Reply
#13
Mr. Fantastic posted

Link for complete story


https://xossipy.com/thread-31984.html
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)