Thread Rating:
  • 21 Vote(s) - 3.1 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অন্তর্বর্তী শূন্যতা
#81
দূর্নিবার – খাওয়া শেষ করে নিজের ঘরে এসে চুপচাপ চোখ বুজে শুয়ে পড়ল ও। কিন্তু চোখে ঘুম আসছে না কিছুতেই। অবশ্য ও ঘুমাতেও চাইছে না। একটু আগের কিছু কথা বারবার ভেসে ভেসে আসছে মনের মধ্যে। কিছুতেই যেন মনের মধ্যে শান্তি পাচ্ছে না খুঁজে। মনটা বারবার কেমন জানি একটা করছে। আর থাকতে না পেরে উঠে বসল বিছানার উপরে। বালিশের পাশে পড়ে থাকা ফোনটাকে তুলে নিয়ে এসে দাঁড়াল ব্যালকনিতে। সাথে সিগারেটের প্যাকেট আর দেশলাইটাকেও নিয়ে আসতে ভুলল না। ব্যালকনিতে এসে প্রথমেই পিছনের কাঁটের স্লাইডিং ডোরটাকে টেনে বন্ধ করে দিল। ওদের বেডরুম আর ব্যালকনির মাঝে এই একটাই আগল রয়েছে। ইতু যেকোনো সময় শুতে চলে আসবে। এখন ও কিচেনে হাতের কাজ সারছে। এরপর সোজা বিছানায় শুয়ে নিশ্চিন্তের ঘুম দেবে। ওর সবকিছুই একদম ঘড়ির কাঁটায় কাঁটায় মাপা। এক চুলও এদিক ওদিক হওয়ার নয়। যদিও ও এখন কোথায়, কি করছে, কার সঙ্গে কথা বলছে – এসব নিয়ে ও একদমই ভাবিত হবে না। তবুও সাবধানতাবশত ও কাঁচের স্লাইডিং ডোরটা টেনে দিল। এই অল্প পরিসরে ও এখন সম্পূর্ণ একা। হাতের প্যাকেটটা থেকে একটা সাদা কাঠি বের করে ধীরেসুস্থে সেটাকে জ্বালালো দেশলাই দিয়ে। তারপর গাল ভরা একটা ধোঁয়া ছাড়ল। একটু আগের কথাগুলো আবার ধীরে ধীরে ফিরে আসতে লাগল মনের গলি ধরে। মনটা আরো একটা আনচান করে উঠল। হাতের ফোনটাকে ধরে অ্যাপটাকে আরো একবার খুলল। সোজা চলে গেল এইসেথের প্রোফাইলে। প্রোফাইলটা আগের মতই ইনঅ্যাকটিভ দেখাচ্ছে এখনও। ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অ্যাপটা থেকে বেরিয়ে এল। তারপর সোজা চলে গেল Call অপশনে। তনিমার নামটা খুঁজে ডায়াল করল। সঙ্গে সঙ্গেই রিং হতে শুরু করল। কিন্তু না। ওদিক থেকে কেউ ফোনটা রিসিভ করল না। বেজে বেজে কেটে গেল লাইনটা। “যে ব্যক্তিকে আপনি কল্ করছেন, তিনি এখন উত্তর দিতে পারছেন না। অনুগ্রহ করে পরে চেষ্টা...” বিরক্ত হয়ে কলটা কেটে দিল ও। দরকারের সময় যদি কাউকে পাওয়া যায়! আঙুলের ফাঁকে ধরে থাকা আগুনটায় আরো একবার টান দিল। পিছনে একটু আওয়াজ হল। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল ইতু বিছানা ঝাড়ছে। একবার ওর দিকে তাকিয়ে আবার বিছানা ঝাড়তে লাগল। তারপর আলোটাকে নিভিয়ে দিয়ে শুয়ে পড়ল বিছানায়। একবারও জানতে চাইল না ও শোবে কিনা। বা কখন শোবে। নিজের অজান্তেই আরো একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল ওর নাক ও মুখ দিয়ে। তবে এবারেরটা একটু বেশীই লম্বা। ইতুর সঙ্গে ওর বিয়েটা দেখাশোনা করেই হয়েছিল। প্রেম করে নয়। অবশ্য প্রেম করার ধক যে ওর নেই, সেটা ও ভালো করে জানে। অথচ ওর নিজের মায়ের পেটের ভাই কি সুন্দর প্রেম করে বিয়ে করেছে। তবে ইতুর সঙ্গে বিয়েটা দেখাশোনা করে হলেও প্রেম কি ওদের মধ্যে একটুও ছিল না? সেটা অবশ্য ও বুক ঠুকে বলতে পারবে না। আর সবার মতোই বিয়ের প্রথম কয়েক বছর ছিল বৈকি। ইতু কিন্তু প্রথম থেকেই সিরিয়াস টাইপের একজন মেয়ে। খুবই বুদ্ধিমতি আর পড়িয়ে। পড়াশোনায় ওর চাঁড় দেখেই বাবা ওকে কলেজে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। গ্রাজুয়েশন শেষ হতে না হতেই জমজ ছেলের মা। তবুও ইতু দমেনি। দুই ছেলেমেয়েকে সামলে, ওকে সামলে, সংসারকে সামলে নিজের মাস্টার্স, পি.এইচ.ডি কমপ্লিট করেছিল। তারপরে কলেজের চাকরী। সবই করেছে একা হাতে। করেছে কেন? এখনও করে চলেছে। কিন্তু ধীরে ধীরে ওর প্রতি একটা দূরত্ব তৈরী হয়েছে – এটা মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। ছেলে, মেয়ে দুজনেই বড়ো হয়েছে। কলেজে পড়ছে। ওদের দুজনেরও বয়স বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। ওর নিজের মাথা জোড়া টাক দেখা দিয়েছে অনেকদিনই। ইতুরও চুলে এদিক ওদিক রূপোলী রেখা দেখা যাচ্ছে। শরীরটাও ভারী হয়েছে কিছুটা। তবুও প্রতিদিন যোগা, ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ সবই করে। তবুও ওর শরীরের মেদাধিক্য চোখে পড়ার মতই। এত কিছুর পরেও ওর চোখে ইতুকে পারফেক্টই বলা চলে। অন্তত এতদিন তো তা চলত। ইদানিং সেই ধারণা সামান্য হলেও টাল খেয়েছে। অ্যাপটা যেদিন থেকে ও ইনস্টল করেছে সেদিন থেকেই ইতুর সম্পর্কে ওর ধারণাটা পাল্টাতে শুরু করে দিয়েছে। অ্যাপটার কথা মনে আসতেই, একে একে মনে এল একটু আগের কথা। আর সেই সাথে মনে এল তনিমার কথাও। মেয়েটা ফোনটা ধরছে না কেন? ফুরিয়ে আসা আগুনটাতে শেষ কয়েকটা টান দিয়ে ফেলে দিয়ে আবার ওকে কল করল। এবার বার তিনেক রিং হতেই ফোনটা রিসিভ করল তনিমা। “হ্যা...হ্যালো স্যার...ব...বলুন?” কেমন যেন হাঁফাতে হাঁফাতে জিজ্ঞাসা করল তনিমা। গলাটাও কেমন যেন একটু ফ্যাঁসফ্যাঁসে টাইপের। হল কি মেয়েটার? শরীর খারাপ নাকি? উদ্বিগ্ন স্বরে ও জিজ্ঞাসা করল, “তোমার গলাটা এরকম লাগছে কেন? শরীর খারাপ নাকী?”

-  “না, ...না। আ...মি ঠিক আ...ছি।” আগের মতই হাঁফ ছাড়তে ছাঁড়তে তনিমা বলল।

-  “তাহলে তোমার গলাটা এরকম শোনাচ্ছে কেন?”

-  “ও কিছু নয়। আপনি বলুন।” এতক্ষণে ওর গলাটা একটু হলেও স্বাভাবিক শোনাল।

-  “তোমার সঙ্গে আমার কিছু কথা ছিল?” এবার ও ভণিতা না করে সরাসরি বলল।

-  “এক্ষুণি?!” তনিমা জিজ্ঞাসা করল।

-  “হ্যাঁ। কেন? কোনো অসুবিধা আছে?” পাল্টা প্রশ্ন করল ও।

-  “আসলে। আমরা এখন লাইভে আছি।” ফিস ফিস করে বলল তনিমা।

-  “লাইভে...!?” প্রশ্নটাকে অর্ধোচ্চারিত করে থেমে গেল ও। তনিমা কি বলতে চাইছে ও বুঝে গেল। সেই সাথে একটু আগে ওর হাঁফানোর কারণটাও পরিষ্কার হয়ে গেল।

-  “স্যার। আমরা কাল কথা বলি? অফিসে?” তনিমা একটু তাড়া লাগিয়ে বলল।

-  “হ্যাঁ। হ্যাঁ। কালকেই কথা বলব। You carry on.” ও তাড়াতাড়ি বলল।

-  “বেবি! এবার এসো। দেরী হয়ে যাচ্ছে। কাম অন!” তনিমার ফোন থেকে অন্য আরেকজনের গলা শুনতে পাওয়া গেল। সম্ভবত ওর বয়ফ্রেন্ড।

-  “থ্যাঙ্ক ইউ স্যার। গুড নাইট।” এর পরের গলাটাই তনিমার। ওকে দ্বিতীয়বার আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই কেটে দিল ফোনটা।

কলটা কেটে যাওয়ার পর অল্প কিছুক্ষণ একভাবে স্থানুর মতো দাঁড়িয়ে রইল। তারপর কিছু একটা চিন্তা করে একবার পিছন ফিরে তাকাল। ইতু ওর দিকে পিছন করে ঘুমাচ্ছে। ঘাড় ঘুরিয়ে হাতের ফোনটার দিকে তাকাল একবার। অ্যাপটায় ঢুকল নতুন করে। সোজা চলে গেল তনিমার প্রোফাইলটায়। সবুজ রঙের জ্বলেজ্বলে বৃত্তটার পাশেই আরো একটা অপশন এই মুহুর্তে অন হয়ে আছে। Watch Her Live Video অপশনটায় বার দুয়েক আঙুলটা বোলাল। তারপর ক্লিক করল। নীলচে বৃত্তটা একবার ঘুরেই থেমে গেল। লেখা উঠল। Send Her Stars. নীচে বেশ কয়েকটা অপশন। যেমন – পনেরো মিনিটের জন্য দশটা স্টার। আধঘন্টার জন্য কুড়িটা স্টার। একঘন্টার জন্য চল্লিশটা স্টার। আর ফুল টাইমের জন্য – পঞ্চাশটা স্টার। এছাড়াও আরো অনেক অপশন আছে। বিভিন্ন রিকোয়েস্ট আছে। তার জন্য আলাদা আলাদা করে স্টার দেওয়ার অপশনও আছে। আজকে দুপুরেই তনিমার কাছে জেনে নিয়ে গোটা তিরিশেক স্টার কিনে রেখেছিল ও। এখনই সবকটাকে খরচ করার ইচ্ছা ওর হল না। তাই পনেরো মিনিটের অপশনটাতেই ক্লিক করল করল। সাথে দশটা স্টার কমে গিয়ে লেখা উঠল, Your request has been sent. Please be patient. বেশীক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না। অ্যাপের পর্দায় Your request has been accepted. লেখাটা ফুটে উঠেই মিলিয়ে গেল। তারপর ওর ফোনের স্ক্রিণে ফুটে উঠল একটা ছবি। ছবি নয় ভিডিও। ও ভালো করে তাকিয়ে দেখল ক্যামেরা থেকে একটু দূরেই একটা বিছানা দেখা যাচ্ছে। বিছানার ওপাশে একটা দেওয়াল কেবল। আর কিছু দেখা যাচ্ছে না। হ্যাঁ। দেখা যাচ্ছে। দুটো শরীর। বিছানার উপরে দুটো শরীর। একটা ছেলের। আর অন্যটা একটা মেয়ের। দুজনেরই মুখ দেখা যাচ্ছে না। দুজনেরই মুখ ব্লার করা। তবে মেয়েটা যে তনিমাই সেটা বুঝতে ওর কোনো অসুবিধা হল না। ঢোঁক গিলে ফোনের স্ক্রিণটার দিকে আরো কিছুটা ঝুঁকে পড়ল ও। নগ্ন শরীরদুটো যে কোন খেলায় মত্ত তা বুঝতে একটুও অসুবিধা হওয়ার নয়।
 
রাত এখন ক’টা বাজে কে জানে। মিনিমাম দুটো তো বাজবেই। ঘুমটা একবার ভেঙ্গে গেলে আবার আসতে সময় লাগে। কখনও কখনও আবার আসেও না। তখন চোখ বুজে, চুপ করে শুয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো কাজ থাকে না। কিন্তু আজকে চুপচাপ শুয়ে থাকতেও ইচ্ছা করছে না। জানালার বাইরে থেকে কিছুটা চাঁদের আলো পিছলে ঘরে ঢুকছে। পাশে ইতু ঘুমিয়ে কাদা। অথচ ওর চোখে ঘুম নেই। আজ শুতে ওর অনেকটাই দেরী হয়ে গেছে। প্রায় সাড়ে বারোটা বেজে গেছিল। সাধারণত এত রাত্রি করে ও শোয় না। ইতু মোটামুটি এগারোটা বাজলেই শুয়ে পড়ে। ঘুমিয়েও পড়ে। ও তার পরে পরেই শুয়ে পড়ে। একটু অপেক্ষা করলে চোখের পাতায় ঘুমের পেপারওয়েটটাও চাপা পড়ে যায়। কিন্তু আজ যায় নি। তার কারণ, প্রথম শুতে যাওয়ার অনেকটাই দেরী হওয়া। আর দ্বিতীয়ত, একটা নীরব উত্তেজনা। অবশ্য ঘুম না আসার কারণ হিসাবে দ্বিতীয় কারণটাই যে মুখ্য সেটা ও মনে মনে ভালো করেই জানে। প্রথমত এইসেথের সাথে ঐরকম উত্তেজক বার্তালাপ। তারপর তনিমার লাইভ পারফরমেন্স। সব মিলিয়ে যে বদহজম হয়ে গেছে এখন সেটা ও ভালো করেই বুঝতে পারছে। একদিনেই এতটা উত্তেজনা ওর শরীর সহ্য করতে পারছে না। তাই এপাশ ওপাশ করেও ঘুমের দেখা পাচ্ছে না। নিদ্রাদেবী রাগ করে বোধহয় আজকের মত বিদায় নিয়েছেন। আবার চুপচাপ শুয়ে থাকাটাও কেমন জানি একটু অস্বস্তিকর। বারবার চোখের পর্দায় তনিমা আর তার বয়ফ্রেন্ডের লাইভ পারফর্মেন্সের কিছু কিছু ক্লিপ ভেসে উঠছে। আর শরীরটা ততবার আইঢাই করে উঠছে। আর ঠিক ততবারই ওকে পাশ ফিরে শুতে হচ্ছে। কিন্তু কিছুতেই শান্তি পাওয়া যাচ্ছে না। আজকে তনিমার লাইভ পারফরমেন্স দেখার পর ও একটা জিনিস উপলব্ধি করতে পেরেছে। ও এই অ্যাপটাকে আর পাঁচটা সস্তা আর বাজারচলতি ডেটিং ও সেক্স অ্যাপ ভেবে ভুল করেছিল। এই অ্যাপটি মোটেও সেরকম নয়। তাদের থেকে অনেক অনেকটাই বেশী ডার্ক। আর সেই সাথে বোল্ডও। তা নাহলে তনিমার পারফরমেন্সের সময় লাইভ চ্যাটে যেসব রিকোয়েস্ট আসছিল তা দেখেই ওর চক্ষু ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়। পনেরো মিনিটের শো-এর রিকোয়েস্ট পাঠিযে শেষপর্যন্ত প্রায় সওয়া এক ঘন্টা ও কাটিয়েছে তনিমার পারফরমেন্স দেখে। এবং সেই সাথে ও এটাও বুঝেছে মেয়েটি মোটেও সহজ সরল নয়তার থেকে এককাঠি উপরে। ইতুর সঙ্গে ও লাস্ট কবে সেক্স করেছিল, সেটা এখন ভাবতে বসলে অনেক দেরী হয়ে যাবে।হয়তো বা এক বছর। কিম্বা। দুই বছর। তিন বছর বা তার বেশী হওয়াও আশ্চর্যের নয়। কিন্তু আজকে যা ও দেখল সেটা যে কেবল সেক্স নয়, এটা ও পুরোপুরি নিশ্চিত। আর এটা যদি সেক্স হয়, তাহলে বিয়ের পর থেকে যেটা ও ইতুর সঙ্গে করে এসেছে, তা নিতান্তই ছেলেখেলা ছাড়া আর কিছুই নয়। এই অ্যাপে যারা উপস্থিত আছে, তারা যে এই বিষয়টা যে একপ্রকার গুলে খেয়েছে, সেটাতেও ও নিশ্চিত। সবার কাছে নিজেকে বাচ্চা ছেলে বলে মনে হচ্ছিল নিজেকে। তনিমার কাছে আরও ক্লাস নিতে হবে এই বিষয়ে। কিন্তু এখন ঘুমের কি করা যায়? একবার ঘাড় ঘুরিয়ে পাশে শুয়ে থাকা ইতুর দিকে তাকাল। ওর দিকে পিছন ফিরে মড়ার মতো ঘুমাচ্ছে। যাক, একদিকে নিশ্চিন্তি। বালিশের পাশ থেকে সিগারেটের প্যাকেট, দেশলাই আর ফোনের মত দরকারী জিনিসগুলোকে আলগোছে তুলে নিয়ে চুপিসাড়ে বিছানা থেকে উঠে পড়ল। তারপর সন্তর্পণে আরো একবার ব্যালকনিতে এসে দাঁড়াল ও। একটা সিগারেট ধরিয়ে অ্যাপটায় আরো একবার লগ ইন করল। তনিমা যে আজকে আর অ্যাকটিভ হবে না, সেটা ও জানতো। ঠিক তাই। তনিমার নিষ্প্রভ প্রোফাইলটা থেকে বেরিয়ে এইসেথের প্রোফাইলটায় ঢুকল। না। এখনও মেয়েটা ইনঅ্যাকটিভ হয়ে আছে। মনটা কেমন জানি একটু খারাপ হয়ে গেল। সেই সাথে একটু দুশ্চিন্তাও হল মেয়েটার জন্য। ও “Are you alright? If you want, I can hear you.” এক লাইনে লিখে পাঠিয়ে দিল এইসেথকে। অন্যপাশ থেকে চট করে উত্তর এলো না। আসার কথাও নয়। তার কারণ এখনও সে ইনঅ্যাকটিভ হয়ে আছে। এইসেথের প্রোফাইলটা থেকে বেরিয়ে অ্যাপেতেই এদিক ওদিক ঘুরতে লাগল ইতস্তত। বেশ খানিকটা সময় কেটে গেল এইভাবেই। হঠাৎই ওকে চমকে দিয়ে একটা মেসেজ ঢুকল ওর প্রোফাইলে। তাড়াতাড়ি চ্যাটবক্সটা খুলল ও। যা ভেবেছিল ঠিক তাইই। এইসেথই ওকে মেসেজ পাঠিয়েছে। তাকিয়ে দেখল লেখা আছে, “Thanks. Can we meet?” লেখাটা পড়ে মনটা আরো একবার কেমন জানি হয়ে গেল। এটা আবার কোনো ফাঁদ নয়তো? নাকি মেয়েটা সত্যি করেই কোনো বিপদে পড়ে ওর কাছে সাহায্য চাইছে? যদি তাইই হয়, তাহলে এরকম সাহায্য? সরাসরি সেক্সের কথা? নাকি বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া হয়েছে? কিম্বা ব্রেক আপ? এখন এসব জলভাত। আকছার হচ্ছে। হতেও পারে। ঝোঁকের মাথায় লিখে ফেলেছে। তবুও ও লিখে পাঠাল, “Of course. Tell me where?” লেখাটা পাঠিয়ে একটু অপেক্ষা করল ও। ভাবল মেয়েটা নিশ্চয়ই কোনো উত্তর পাঠাবে। কিন্তু না। মেসেজটা সেন্ড করার অল্পক্ষণ পরেই প্রোফাইলটা আবার আগের মত ইনঅ্যাকটিভ হয়ে গেল। না। আজকালকার মেয়েদের মন বোঝা সত্যিই দায়ের। কখন কি বলতে চায়, আর কখন কি করতে চায়, তা বোঝা ভগবানের পক্ষেও অসাধ্যকর। আর ও তো একজন সাধারণ মানুষ। যাক, পরে এই নিয়ে চিন্তা করা যাবে। ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ও সিগারেটটায় শেষ একটা টান মেরে এইসেথের প্রোপাইলটা থেকে বের হয়ে এল।
 
এরপর ইচ্ছা ছিল ঘরে এসে ঘুমের চেষ্টা করা। কিন্তু অদৃষ্টে মনে হয় আজ সেটা নেই। ঘরের দিকে পা বাড়িয়েও হঠাৎ করেই লিলিথের কথা ওর মনে ভেসে উঠল। একবার ট্রাই করে দেখা যাক। প্রোফাইলটায় ঢুকে দেখল সেটাও বর্তমানে ইনঅ্যাকটিভ। কিন্তু ওর পূর্বাভিজ্ঞতা বলছে, এটা যেকোনো সময় অ্যাকটিভ হতেই পারে। বুক ঠুকে লিখল, Hey, sweety. Do I wake you up?” ইচ্ছে করেই শুরুটা ফ্লার্ট করেই করল। দেখাই যাক না, উত্তর কি দেয়। খুব বেশীক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না ওকে। আরো একবার ওর ধারণা সত্যি হতে দেখে ও মনে মনে খুশীই হল। সত্যি করেই লিলিথের প্রোফাইলটা অ্যাকটিভ হয়ে গেল। আজকালকার ছেলেমেয়েরা সবাই নিশাচর। উত্তর এল, “আমি এতদিন জানতাম রাতটা ঘুমের জন্যই।” দুটো কারণে উত্তরটা ওর কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ মনে হল। প্রথমটা অবশ্যই তার বাংলায় উত্তর লেখা। আর দ্বিতীয়টা তার উত্তরের মধ্যেই লুকানো ব্যাঙ্গের খোঁচাটা। খোঁচাটাকে অক্লেশে হজম করে নিয়ে ও ফিরতি উত্তর লিখে পাঠাল, “কিন্তু আমি যে জানি, রাতে ঘুম ছাড়াও আরো একটা কাজ হয়।” ও ইচ্ছা করেই এটা লিখে পাঠাল। দেখা যাক, এই উত্তর কি আসে। উত্তর অবশ্য এল সাথে সাথেই। “আর সেটা কি?” কথাবার্তা কোন দিকে এগোতে পারে ও সেটা এখন থেকেই আন্দাজ করে নিতে পারল। এর সাথে নির্দ্বিধায় কথা চালানো যেতে পারে। ও সামান্য ধাঁধা সহকারে লিখল, “ঐ যে সেইটা।” উত্তর এল সঙ্গে সঙ্গেই। ওপাশের জন কি বিরক্ত। উত্তরে একটু হলেও বিরক্তির ছোঁয়া আছে বইকি। “হেঁয়ালি না করে, যেটা বলতে চাইছেন সেটা বলুন।” ও আরেকটু তাতাবার জন্যই লিখে পাঠাল, “সব কথা কি আর মুখে বলা যায়?” ফিরতি জবাবটাও ওর মতই রসালো। “কেন? বলা যায় না বুঝি?” এর সাথে কথা বলে আরাম পাওয়া যাবে। “উঁহু। বুঝে নিতে হয়।” ইচ্ছে করেই উহ্য রেখে কথাটা বলল। বেশ সাবলীল একটা জবাব এল ওপাশ থেকে। “তাই বুঝি?” ও-ও সাবলীলভাবেই লিখল, “অবশ্যই।” এবার একটা প্রশ্ন ছুটে এল ওপাশ থেকে। অবশ্য সেটাকে চ্যালেঞ্জও বলা যেতে পারে। “তাহলে বলুন তো আপনার সঙ্গে চ্যাট করা বাদে আমি এখন কি করছি?” ও চ্যালেঞ্জটাকে গায়ে না মেখে পাল্টা প্রশ্ন করল, “তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে?” ও ইচ্ছা করেই প্রশ্নটা করল। একবার বাজিয়ে দেখা দরকার। অবশ্য সত্যি কথাই যে বলবে তার কোনো গ্যারান্টি নেই। তবুও। যাক, উত্তর এল, “ধরুন আছে।” উত্তরের ধোঁয়াশাটা ওর নজর এড়ালো না। এ আবার কেমন উত্তর? বলছে না? নাকি বলতে চাইছে না? “ধরবো কেন? খোলসা করে বলো।” স্রেটকাট উত্তর এল, “আছে।” যদিও ওর বিশ্বাস হল না। “সে কি তোমার কাছেই আছে?” জবাব এল, “এত রাতে কি আমার কাছে থাকতে পারে?” সত্যি কথা। কিন্তু হেরে গেলে চলবে না। “থাকলে ক্ষতি কি?” কথাবার্তা এখন বেশ স্মুদলী চলছে। কটা বাজে সেটা এখন আর ওর খেয়াল নেই। উত্তর এল। “থাকলে আমি কি আর আপনার সঙ্গে চ্যাট করতে পারতাম?” ঠিকই তো। কথায় যুক্তি আছে। মেনে নিয়ে লিখল, “ঠিকই। তাহলে তুমি এখন কি করছো? ঘুমাচ্ছিলে?” জবাব এল, “না। ঘুম পাচ্ছে না।” মনের প্রশ্নটাই লিখে পাঠাল ও, “কেন?” জবাবে লেখা রয়েছে, “খুব গরম লাগছে। মনে হচ্ছে...” ও তাড়াতাড়ি লিখল, “কি মনে হচ্ছে?” জবাবে সে লিখে পাঠাল, “মনে হচ্ছে সব জামাকাপড় খুলে ফেলি। তারপর...” উফ্। মেয়েটার সত্যি করেই রসবোধ আছে। না হলে এই জায়গায় কেউ থামে? “তারপর?” এরপর লম্বা একটা মেসেজ এল, “তারপর ল্যাংটো হয়ে বাথরুমে গিয়ে শাওয়ার খুলে দাঁড়িয়ে থাকি।” ও উত্তরে লিখল, “তুমি কি বাড়িতে সব সময় ল্যাংটোই থাকো?” কি ভাবল কে জানে। উত্তরে লিখল, “একপ্রকার তাইই।”

-  “কেন? বাড়িতে জামাকাপড় পরতে ভালো লাগে না?”

-  “না। ব্যাপারটা সেরকম নয়। আসলে আমার বয়ফ্রেন্ড এলে আমাকে জামাকাপড় বিশেষ একটা পরতে দেয় না। তাই।” এটাও মিথ্যে কথাই মনে হচ্ছে।

-  “তুমি কি বাড়িতে একলা থাকো?”

-  “আপনি কিভাবে জানলেন?”

-  “তোমার কথা থেকেই।”

-  “হ্যাঁ। আমি একাই থাকি।”

-  “তোমার বয়ফ্রেন্ড তোমার সাথে থাকে না কেন?”

-  “সে সবসময় আমার সাথে থাকতে যাবে কেন? তার ফ্যামিলি নেই? অবশ্য আমি একবার ডাকলেই চলে আসে।”
-  “কখন আসে?”

-  “আমার যখনই ইচ্ছা হয়। সকালে। কিম্বা দুপুরে। কিম্বা রাতে।”

-  “তোমরা একলা ঘরে কি করো?”

-  “হা ডু ডু খেলি।” ব্যঙ্গটা পরিষ্কার বোঝা গেল।

-  “আঃ ইয়ার্কি না মেরে বলোই না, কি করো।”

-  “আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ডের সাথে যা করেন, সেও আমার সাথে তাই করে।”

-  “তুমি কি করে জানলে, আমার গার্লফ্রেন্ড আছে?”

-  “আপনার কথা থেকেই।”

-  “আচ্ছা। টিট ফর ট্যাট। তার মানে তোমরা সেক্স করো তাই তো?”

-  “সে আর বলতেসুযোগ পেলেই করি।”

-  “কিভাবে করো?”

-  “তার ফিরিস্তি আপনাকে দিতে যাবো কেন? আপনি আমায় বলেছেন আপনি কিভাবে সেক্স করেন?”

-  “তুমি জানতে চাইলেই, আমি বলবো।”

-  “আচ্ছা বেশ। তাহলে বলুন।”

সময়ের জ্ঞান ভুলে গিয়ে মোবাইলের কিপ্যাডে দ্রুত আঙ্গুল চালাতে লাগল দূর্নিবার।
[Image: 20240303-191414.png]
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
RE: অন্তর্বর্তী শূন্যতা - by রতিদেবী - 02-04-2024, 08:08 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)