Thread Rating:
  • 21 Vote(s) - 3.1 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অন্তর্বর্তী শূন্যতা
#77
আয়ুষ – পাক্কা এক ঘন্টা লাগাতার বকার পরে ফোনটা ছাড়ল তিতিরমাথাটা ধরে গেছে। কি করে যে এত বকতে পারে স্বয়ং ভগবানও বোধহয় জানে না। আজ সারাদিনে কলেজে কি হয়েছে তার খুঁটিনাটি সমস্ত তথ্য জানাল এক এক করে। অথচ একবারও জানতে চাইল না কেন ও আজ কলেজ যায়নি। এক্কেবারে এক নম্বরের পাগলী একটা! আর এই কারণেই ওকে এত ভালো লাগে ওর। তিতির নিজের মতো বক বক করে যায়। আর ও বাধ্য শ্রোতার মত শুনে যায় চুপচাপ। আজও ফোন ধরে একতরফাই বক বক করে গেল তিতিরও কেবল ‘হুঁ’, ‘হাঁ’, ‘আচ্ছা’, ‘ঠিক আছে’ ছাড়া বিশেষ কিছু বলল না। আসলে বলার সুযোগই পেল না। তিতির যদি একবার বকতে শুরু করে, তাহলে তাকে থামানো এককথায় দুঃসাধ্য ব্যাপার। শুধু যে বকতে পারে তা নয়, মেয়েটা যাকে বলে এককথায় আনপ্রেডিক্টেবল। কখন কি বলবে, আর কখন কি করবে তার কোনো ঠিক নাই। এই যেমন আগের সপ্তাহে দুপুরে ক্লাস শেষ করে কলেজ থেকে বেরিয়েছে দুজনে। হঠাৎ রণরণে দুপুরবেলায় তিতির বলল, “চ্ কোথাও একটা বসে চা খেয়ে আসি।” ও কপাল কুঁচকে বলেছিল, “চা!? এই দুপুরবেলায়?”

-  “কেন? কোন বইয়ে লেখা আছে যে দুপুর বেলায় চা খেতে নেই।” গলার স্বরেতেই বোঝা গেল কথা বাড়ালে সেটা ঝগড়ার পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে। সেই রিস্কটা একদমই না নিয়ে ও বোঝানোর সুরে বলল,
-  “তা নয়। আমি বলতে চাইছি এই দুপুর বেলায় চা না খেয়ে চল্ ঠাণ্ডা খাই।”

-  “কেন, এখন চা খেলে কি হবে? আর তাছাড়া আমার যখন চা খেতে ইচ্ছে হচ্ছে তখন চা-ই খাবো। শুধু শুধু ঠাণ্ডা খেতে যাবো কেন? আমার এখন চা খেতে ইচ্ছে করছে, চা-ই খাবো। তোর ঠাণ্ডা খাওয়ার ইচ্ছে হলে, তুই ঠাণ্ডা খা। আমাকে খেতে বলছিস কেন?” তিতিরের কথা শুনেই ও বুঝতে পারল ও মহা ভুল করে ফেলেছে। ও তাড়াতাড়ি হাত জোড় করে বলল, “আমার ভুল হয়ে গেছে, ক্ষমা করে দে। তুইও চা খা। আমিও চা-ই খাবো। চ্।”

ওদের ‘তুমি’ সম্বোধনটা সেই প্রথম দিনের জন্যই ছিল। ‘তুই’ টা ঠিক তার পরের দিন থেকেই শুরু হয়ে যায়। শুরুটা অবশ্য তিতিরই করেছিল। তারপর তার দেখাদেখি ও-ও ‘তুই’ বলতে শুরু করে। প্রায় ওরই বয়সী একটা মেয়েকে ‘তুই’ করে কথা বলতে কেমন যেন অস্বস্তি হত প্রথম প্রথম, কিন্তু ধীরে ধীরে তা ঠিক হয়ে যায়। যাইহোক সেদিন কিন্তু এই চায়েতেই সব ঘটনা শেষ হয়ে যায় না। বরং শুরু হয় বলা যেতে পারে। ওদের কলেজের ঠিক উল্টো দিকের চায়ের দোকানটায় গিয়ে বসল ওরা দুজনে। টিফিন টাইমে সামান্য হলেও ভীড় ছিল। ও গিয়ে দুটো চা আর টোস্টের ওর্ডার দিল। প্রথমে দিয়ে গেল টোস্ট। তারপর চা। ধোঁয়াওঠা, জিভ-জ্বলানো নির্দ্বিধায় দুটো মাঝারী আকারের চুমুক দিয়ে বলল, “বাঃ। বেশ করেছে তো চা-খানা। টোস্টটাও মন্দ করেনি। এবার থেকে দুপুরে এখানেই চা আর টোস্ট খাবো।”

-  “কেন? তুই তো রোজ টিফিন আনিস।” সাবধানে নিজের কাপে চুমুক দিয়ে বলল।

-  “কাল থেকে আর আনবো না। মাকে বারণ করে দেবো। আমি এখন স্কুলে পড়ি নাকি, যে প্রতিদিন ব্যাগে করে বয়ে টিফিন আনবো?” দিব্যি গরম চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলল তিতির

-  “প্রতিদিন এই বাটার টোস্ট খেলে কি হবে জানিস?” ও চায়ে আরেকটা চুমুক দিয়ে বলল।

-  “থাক। তোর ঐ বস্তাপচা ফিটনেস জ্ঞান দিতে আসিস না আমায়। আমি বেশ আছি আমার ফ্যাট নিয়ে।” ট্রাফিক সার্জেনের মতো ওকে হাত দেখিয়ে থামিয়ে দিয়ে বেশ সিরিয়াস গলায় বলল তিতিরওর রোগা শরীরটার দিকে তাকিয়ে ও হেসে ফেলল। ওকে হাসতে দেখেই তিতির বলল, “অ্যাই, তুই হাসলি কেন রে?”

-  “এমনি।” এই রে, হেসে ভুল করে ফেলেছে। এবার যাহোক কিছু একটা বলে ম্যানেজ করতে হবে। তা নাহলে কপালে দুঃখ আছে।

-  “এমনি এমনি কেউ হাসে নাকি? তুই কি পাগল?” তিতির জিজ্ঞাসা করল।

-  “আরে, সব কথার কি মানে থাকে নাকি? আমি এমনিই হাসলাম।” ও বলল ভয়ে ভয়ে। এরপর তিতির আর কিছু বলল না বটে, তবে ওর মুখের দিকে কিছুক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে রইল। তারপর চা আর টোস্ট গলাধঃকরণ করে বলল, “দুটো সিগারেট নে তো।” চা-টা সটান ওর শ্বাসনালীতে গিয়ে আটকাল। আর তাতেই বিষম। সামান্য কেশে নিজেকে সামলে নিয়ে জিজ্ঞাসা করল, “সিগারেট দিয়ে কি হবে?”

-  “সিগারেট দিয়ে কি হয়? খাবো।” নির্দ্বিধায় বলল তিতির

-  “তুই সিগারেট খাবি?” ও জিজ্ঞাসা করল।

-  “কেন? খেতে পারি না? মেয়ে বলে আমি সিগারেট খেতে পারি না?”

-  “আমি তা বলিনি।”

-  “তাহলে কি বলছিস?”

-  “আমি বলছি, তুই আগে কখনও সিগারেট খেয়েছিস?”

-  “না। তা খাইনি। তবে আজকে খাবো। তুই কেন।”

ও আর কথা বাড়াল না। ওর মাথায় যখন ভূত চেপেছে। তখন খেয়েই ছাড়বে। অগত্যা ও দুটো সিগারেটও কিনল। ও বুবলাকে দেখেছে লুকিয়ে লুকিয়ে সিগারেট খেতে। অবশ্য মাকে লুকিয়ে। মা জানতে পারলে কেলেংকারী কান্ড হয়ে যাবে। ও মাকে কিছু বলেনি এই বিষয়ে। তবে ও যা ভয় পেয়েছিল তাইই হল। সিগারেটটা ধরিয়ে প্রথমেই একটা জোরে টান দিল তিতিরআর অভ্যেস না থাকলে যা হয়, ধোঁয়া সোজা ফুসফুসে। বিষম। কাশি। চোখে জল। ঠাণ্ডা হওয়ার পরে ও বলল, “দেখলি, এই কারণেই তোকে মানা করেছিলাম। তুই শুনলি না। বেশি পাকামো করলে যা হয়।” ও ভেবেছিল তিতির হয়তো রেগে যাবে ওর কথা শুনে। কিন্তু তা হল না। চোখে জল নিয়েই ও মুচকি হাসল। তারপর হাতের আধপোড়া সিগারেটটা ফেলে দিয়ে বলল, “আমিও জানতাম খেতে পারবো না। কেবল টেস্ট করার জন্য খেলাম একবার। তবে এরকম অখাদ্য খেতে হবে জানলে খেতাম না।” তারপর একটু থেমে ওর দিকে তাকিয়ে আবার মুচকি হেসে বলল, “এর থেকে চুমু খাওয়া অনেক ভালো।” তারপর আবার একটু থেমে তিতির আবার বলল, “তুই কখনো চুমু খেয়েছিস?”

 
সারাদিন অপেক্ষা করার পরে যখন লিলিথের মেসেজটা এল তখন রাত ন’টা পেরিয়ে গেছে। ওর Are you Bengali” এর উত্তরে লিলিথ লিখে পাঠিয়েছিল, “Yes. But Why?” এই উত্তরটা দেখে ওর ভালোই লেগেছিল। ওর মনে হয়েছিল এই প্রোফাইলটা কোনো বাঙ্গালী মেয়েরই হবে। সেটা মিলে গেছে দেখে ওর ভালোই লাগল। ও নিশ্চিত ধীরে ধীরে ওর সব ধারণাগুলোই হয়তো মিলে যাবে। কিন্তু তার জন্য একদম তাড়াহুড়ো করা চলবে না। ও জবাবে লিখল, “তাহলে এখন থেকে বাংলায় কথা বলব। ইংরেজীতে কথা বলে ঠিক পোষাচ্ছে না।” ফিরতি উত্তরটা আসতে একটু দেরী হল। “আপনিও বাঙ্গালী?” ও এবার একটু ঘুরিয়ে উত্তর লিখল, “কলকাতায় থাকি। তাহলে তো বাঙ্গালী হবোই। তাই না?”

-  “তার কোনো মানে নেই। কলকাতায় অনেক অবাঙ্গালীরা থাকে। তারা জন্ম থেকেই এখানে থাকে। তাদের অনেকের বাঙলা আমাদের থেকে অনেক বেশী ভালো।” মেয়েটা বেশ গুছিয়ে কথা বলতে পারে তো। এর সঙ্গে কথা বলে শান্তি পাওয়া যাবে।

-  “তা আপনি কী? বাঙ্গালী? নাকী অবাঙ্গালী?” ও জিজ্ঞাসা করল।

-  “আপনার কী মনে হয়?” জবাব উড়ে এল ওপাশ থেকে। মেয়েরা সোজা কথার সোজা উত্তর দিতে পারে না কেন কে জানে।

-  “আমার অনেক কিছুই মনে হয় আপনার সম্পর্কে।” রহস্যের গন্ধ মাখিয়ে উত্তর দিল।

-  “কিরকম?”

-  “সবই কি একেবারে জেনে যাবেন? জানাবো। কিন্তু পরে। একটু একটু করে।” মুচকি হেসে জবাবটা টাইপ করল।

-  “আপনি নিশ্চিত যে, আমি আপনার সাথে এইভাবে কথা বলবো প্রতিদিন?” প্রশ্নটা পড়ে ও আরো একবার মুচকি হাসল।

-  “উত্তরটা আপনি নিজেই দিয়ে দিয়েছেন। আমার দেওয়ার আর প্রয়োজন নেই।”

-  “আপনি খুবই স্মার্ট। তাতে কোনো সন্দেহ নেই।” জবাব এল।

-  “ধন্যবাদ। তবে এই কথাটা এই প্রথম আপনিই বললেন।”

-  “কেন? কেউ বলেনি এর আগে?” জবাব এলো সঙ্গে সঙ্গেই।

-  “না। কেউ বলেনি। আপনিই প্রথম।”

-  “আপনার গার্লফ্রেন্ডও বলেনি?” প্রশ্নটা তীরের মত এসে বিঁধল।

-  “আপনি কি নিশ্চিত যে আমার গার্লফ্রেন্ড আছে?”

-  “কেন? নেই?” মনে হল যেন একটু হলেও ল্যাজে খেলানোর চেষ্টা করছে ওকে। এটা দেখেও ওর ভালো লাগল।
-  “আপনার কি মনে হয়?” এবার ও-ও ল্যাজে খেলানোর চেষ্টা করল।

-  “আমারও আপনার সম্পর্কে অনেক কিছুই মনে হয়। কিন্তু এখন বলব না। পরে বলব। একটু একটু করে।” লেখাটা পড়ে ওর হাসিটা একটু চওড়া হল।

-  “আচ্ছা বেশ। শোধবোধ।”

-  “বলছেন?”

-  “বলছি।”

-  “আচ্ছা, আপনি এই অ্যাপে এসেছেন কেন?” হঠাৎ এই প্রশ্নটা মেয়েটা কেন করল সেটা ও বুঝতে পারল না।

-  “মানে?”

-  “মানে, আপনি এই অ্যাপে কেন এসেছেন? আপনার তো গার্লফ্রেন্ড আছে? তাহলে?”

-  “আমি কখন বললাম আছে?”

-  “আপনি বলেননি। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছি। কিন্তু এইটা বুঝতে পারছি না, আপনি এখানে কেন এসেছেন?”

-  “আপনি কেন এসেছেন?” পাল্টা প্রশ্ন করল ও।

-  “প্রশ্নের পাল্টা প্রশ্ন করতে নেই। আগে আপনি বলুন, তারপর আমি বলছি।” জেদী, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

-  “আচ্ছা বেশ। বলছি। হ্যাঁ। আমার গার্লফ্রেণ্ড আছে। তবুও আমি এই অ্যাপে এসেছি। বন্ধুত্ব করতে।” ও কিছুটা হলেও সত্যি লিখল।

-  “বুঝলাম না। একবার বলছেন আপনার গার্লফ্রেণ্ড আছে। আবার বলছেন এখানে এসেছেন বন্ধুত্ব করতে?” ওর কথার প্যাঁচটা কিন্তু সে সহজেই ধরে ফেলেছে। বুদ্ধিমতি তাতে সন্দেহ নেই। আর আন্ডারএস্টিমেট করাটা ঠিক হবে না।

-  “হ্যাঁ। কেন? গার্লফ্রেন্ড থাকলে অন্যের সাথে বন্ধুত্ব করা যায় না?”

-  “কে বলল যায় না? যায়। তবে এরকম অ্যাপে নয়, নিশ্চয়।”

-  “কেন? এই অ্যাপে কি খারাপ আছে?”

-  “আপনি জানেন না, কি খারাপ আছে?”

-  “সবই কি আর খারাপ? আপনি তো ভালো।” সামান্য হলেও ফ্লার্ট করার চেষ্টা করল ও।

-  “আপনি নিশ্চিত আমি ভালো? বাকীদের মতো নই?”

-  “আপনার সাথে কথা বলে তো তাইই মনে হচ্ছে। যাক ছাড়ুন। আপনার সম্পর্কে কিছু বলুন।”

-  “কি বলবো?”

-  “আপনি কেমন? কি করেন? ইত্যাদি।”

-  “আমি একটি মেয়ে। আপাতত কিছুই করি না। আপনার মতো আমিও বন্ধুত্ব করতে এখানে এসেছি। দেখুন, প্রথমেই আপনার সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গেল।”

-  “আপনার বিয়ে হয়েছে?” প্রশ্নটা ও ইচ্ছা করেই করল।

-  “না। এখনও হয়নি।” উত্তরটা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এল ওপাশ থেকে।

-  “আচ্ছা। কেমন ছেলে পছন্দ আপনার?”

-  “যদি বলি আপনার মতো?” মজা করল কিনা বোঝা গেল না।

-  “আপনার কি বয়ফ্রেন্ড আছে?”

-  “যদি বলি নেই, তাহলে কি করবেন?”

-  “কিছুই করব না।”

-  “আপনি আসলে ভীতু।” মজা করে বলল কিনা বোঝা গেল না।

-  “ভীতু কেন?”

-  “আমার বয়ফ্রেন্ড নেই জেনেও আপনি কিছু করতে চাইছেন না। তার মানে আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ডকে ভয় পান।”

-  “হতে পারে। কিন্তু আমি আর কি করতে পারি বলুন। আপনি কে, সেটাই তো জানি না।”

-  “জানলে কি করবেন?”

-  “কি করবো মানে?”

-  “মানে, ধরুন যদি বলি, এখন আমি বাড়িতে একা আছি। সঙ্গে কেউ নেই। শুধু আমি। আপনাকে আমি আমার বাড়ির ঠিকানা দিলাম, আপনি আসবেন?” কি বলতে চাইছে, ও বুঝতে পারল না। কথাগুলো কি সে মজা করে বলছে, নাকি ইচ্ছে করে, সেটাও ও বুঝতে পারল না।

-  “সেটা নির্ভর করছে আপনার উপর। আপনি চাইলে আমি যেতেই পারি।” ও-ও কথা চালিয়ে যেতে লাগল।

-  “বেশ। ধরুন। আপনি কলিংবেল বাজালেন। আমি এসে দরজা খুললাম। দরজা খুলতে আপনি দেখলেন...” কথাটা অসম্পূর্ণ রেখে মেসেজটা পাঠিয়ে দিয়েছে ওপাশ থেকে।

-  “কি দেখলাম?” অধীর আগ্রহে ও জিজ্ঞাসা করল।

-  “এখন থাক। পরে বলব, কি দেখলেন।”
 
হঠাৎই প্রোফাইলটা ইনঅ্যাকটিভ হয়ে গেল। ফোনের স্ক্রিণের দিকে তাকিয়ে দেখল ইতিমধ্যে দশটা পেরিয়ে গেছে। এরইমধ্যে এতটা সময় যে কিভাবে পেরিয়ে গেল সেটা ও বুঝতেই পারেনি। যাই হোক। মেয়েটা বুদ্ধিমতি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এই কথাগুলো ওকে যে পরীক্ষা করার জন্যই করেছে। তাতেও সন্দেহ নেই। এর সাথে একটু হলেও মেপে কথা বলতে হবে।
 
ফোনের স্ক্রিণে সময় দেখাচ্ছে দুটো বেজে বারো মিনিট। এত রাত অবধি ও এর আগে জেগে থাকেনি। ইদানিং জাগছে। মা জানলে কুরুক্ষেত্র হয়ে যাবে। যাই হোক, ও গতকালও জেগেছিল। আর আজও জেগে আছে। গতকালের ব্যাপারটা অবশ্য আলাদা ছিল। আজকের ব্যাপারটাও আলাদা। যেমন আজকের জেগে থাকার কারণ হচ্ছে অবশ্যই ঐ অ্যাপ। আজই সন্ধ্যেবেলায় লিলিথের সাথে চ্যাট করেছে। আর এখন? এখন চ্যাট করছে অ্যাফ্রোডাইটের সাথে। এত রাতে ওকে অ্যাকটিভ দেখে ও অবাকই হয়ে গেছিল। ও সরাসরি তার চ্যাটবক্সে লিখে পাঠাল, “এত রাতে জেগে আছেন?” উত্তর এল, “তুমিও তো জেগে আছো?” ওর ‘আপনি’র বদলে যে ওপাশ থেকে ‘তুমি’তে উত্তর এল সেটা ওর নজর এড়াল না। ও-ও তার মতই ‘তুমি’তে প্রবেশ করল। “আমার কথা বাদ দাও। তুমি কেন জেগে আছো, সেটা বলো।”

-  “যদি বলি, তোমার সঙ্গেই কথা বলবো বলে, জেগে আছি, তাহলে কি করবে?” জবাবটা যে অতি ঝাঁঝালো, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

-  “বিশ্বাস করব না।”

-  “কেন বিশ্বাস করবে না?”

-  “তুমি আমার আগেই অ্যাকটিভ ছিলে। আমি পরে হয়েছি। তাই।”

-  “আমি তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।”

-  “তুমি জানতে, আমি এই সময় আসবো?”

-  “জানতাম বলব না। তবে মনে হয়েছিল। তোমাদের মত ছেলেরা রাত জেগেই থাকে।” কথাটা খট করে কানে লাগল।

-  “তুমি কি করছো?” কথা পাল্টে ও জিজ্ঞাসা করল।

-  “শুয়ে শুয়ে তোমার সাথে চ্যাট করছি। তুমি কি করছো?” চটজলদি উত্তর এল।

-  “তোমার সাথে আড্ডা মারবার চেষ্টা করছি।”

-  “তাহলে চলো। গল্প করা যাক। আগে তোমার বিষয়ে আমাকে কিছু বলো। তুমি কি করো। কোথায় থাকো। পড়াশোনা করো নাকি। ইত্যাদি।” উফ! এই মেয়ে তো দেখছি মহা পাকা! যেন ওর গার্জেন! এসব কথা এই অ্যাপে কেউ জিজ্ঞাসা করে নাকি? জুতসই একটা উত্তর ভেবে নিয়ে ফোনে টাইপ করতে শুরু করল আয়ুষ।
[Image: 20240303-191414.png]
[+] 3 users Like রতিদেবী's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অন্তর্বর্তী শূন্যতা - by রতিদেবী - 30-03-2024, 06:37 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)