Thread Rating:
  • 24 Vote(s) - 2.83 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অন্তর্বর্তী শূন্যতা
#4
পরিচ্ছদ ১ - প্রস্তুতি

অনুরাধা – ঘড়ির কাঁটা যত আটটা পেরিয়ে সাড়ে আটটা এবং তারপরে ন’টার দিকে এগোতে থাকে, ততই অনুরাধার ব্যস্ততাও পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে। একদিকে সুনির্মলের অফিসের তাড়া। আর অন্য দিকে বাবানের স্কুলের বাস মিস হয়ে যাওয়ার ভয়। এই দুইদিকে পাল্লা দিতে দিতে এই সময়টায় একপ্রকার নাভিশ্বাস ছুটে যায় অনুরাধার। দম ফেলতেও বোধহয় মাঝে মাঝে ভুলে যায় সে। আর কাজের মেয়েটাও হয়েছে একনম্বরের ত্যাঁদড়! বারবার বলা সত্ত্বেও ন’টা পনেরো-কুড়ির আগে কিছুতেই তার দর্শন পাওয়া যাবে না। দরকারের সময়েই যদি তাকে পাওয়া না যায়, তাহলে তাকে রাখা কিসের জন্য তা বুঝে উঠতে পারে না অনুরাধা। কিন্তু শত অসুবিধের পরেও তাকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দিতে পারে নাকারণ ওর একার পক্ষে শয্যাশায়ী শাশুড়িমায়ের সেবা যত্ন করা এককথায় অসম্ভব। তাই অনেক ভেবেও তাকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দিতে পারেনি অনুরাধা। মেয়েটার সবই ভালো। কিন্তু বড়ই বাচাল। একবার বকতে শুরু করলে আর থামার নাম থাকে না। তখন অনেক কষ্টে থামাতে হয়। এই দুটি অবগুণ ছাড়া মেয়েটির আর সবই ভালো। যাইহোক কিচেনে বর আর ছেলের জন্য সেঁকা পাঁউরুটিগুলোতে মাখনের প্রলেপ লাগাতে লাগাতে ঘাড় উঁচিয়ে ডাইনিং রুমের দেওয়ালে টাঙ্গানো ঘড়িটার দিকে উঁকি মেরে দেখলো অনুরাধা। আটটা চল্লিশের ঘর পেরিয়ে পঁয়তাল্লিশের দিকে দৌড়াচ্ছে ঘড়ির কাঁটাটা। এক্ষুণি সুনির্মলের হাঁকডাক শুরু হয়ে যাবে। এতক্ষণে বোধহয় স্নান সেরে জামাকাপড়ও পরা হয়ে গেছে ওর। ছেলেরও বোধহয় ইউনিফর্ম পরা কমপ্লিট। হাতের গতি আরো বাড়িয়ে দিল অনুরাধা। কিন্তু তখনই হঠাৎ ছন্দপতন ঘটল। মাখনের ডিব্বার পাশে পড়ে থাকা ওর স্মার্টফোনটা একবার করুণ স্বরে কেঁপে উঠল। লকস্ক্রিণের উপরে হোয়াটসঅ্যাপের একটা নোটিফিকেশন চোখে পড়ল অনুরাধার। সেটাকে অগ্রাহ্য করে আবারও নিজের হাতের কাজে মনোযোগ দিতে যাচ্ছিল সে, কিন্তু আবারও আগের মত ছন্দপতন। সেই একই করুণ স্বরে কেঁপে উঠল ওর স্মার্টফোনটা। তবে এবার আর একবার নয়, বারবার তিনবার। এবং তিনবারই হোয়াটসঅ্যাপের নোটিফিকেশন ভেসে উঠল লকস্ক্রিণের উপরে। এত সকালে কেউ যে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে মনে করতে পারে, সেটা ওর ধারণার বাইরেকাজের সময় যত দেরী! বিরক্তিতে নিজের অজান্তেই মুখটা সামান্য হলেও বেঁকে গেল অনুরাধার। কে বা কি, সেটা দেখার জন্য ফোনটার দিকে হাত বাড়াতেই পিছন থেকে সুনির্মলের তাড়া লাগানো কণ্ঠস্বর ওর কর্ণকুহরে একপ্রকার মধুবর্ষণ করতে শুরু করল। “কি হলো, রাই? আজকে কি আর কপালে কিছু জুটবে না? নাকি খালি পেটেই অফিসে দৌড়াতে হবে? তোমাকে কতদিন বলেছি, একটু তাড়াতাড়ি করো। আমার কথা কানে কি ওঠে না?...” হয়তো আরো কিছুক্ষণ মধুবর্ষণ জারি থাকতো, কিন্তু অনুরাধা তাড়াতাড়ি “যাচ্ছি। হয়ে গেছে।” বলে তাতে দাঁড়ি টেনে দিল। তাতে অবশ্য গজগজানি থামার লক্ষণ দেখা গেলো না। অনুরাধা তাড়তাড়ি মাখন মাখানো সেঁকা পাঁউরুটিগুলোকে কিচেন থেকে ডাইনিং টেবিলের দিকে নিয়ে যেতে যেতে ছেলের উদ্দেশ্যে একবার হাঁক পাড়লো, “তোর হলো, বাবান? ব্রেকফাস্ট রেডী। এরপর বাস মিস হলে আমাকে বলতে আসিস না।” বেডরুম থেকে বাবান অর্থাৎ ইভানের কণ্ঠস্বর শোনা গেল, “যাচ্ছি মা। হয়ে গেছে।” অনুরাধা পাঁউরুটিগুলো ডাইনিং টেবিলে নামিয়ে রাখতে রাখতে আরো একপ্রস্থ গজগজানি করতে শুরু করল সুনির্মল। “একটু তাড়াতাড়ি করলে তোমার যে কি অসুবিধে হয়, তা বুঝি না। বসের টিটকিরি তো আর তোমাকে শুনতে হয় না, হলে বুঝতে পারতে।” গজগজানি হয়তো আরো কিছুটা বাড়তো। কিন্তু তাতে একেবারে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নিল অনুরাধা। কিচেনের দিকে যেতে যেতে দাঁড়িয়ে পড়ে ঘাড় ঘুরিয়ে বরের দিকে তাকিয়ে বলল, “রোজ রোজ আটটার সময় ঘুম থেকে উঠে ফুটুনি না মেরে, কাল থেকে ভোরবেলায় উঠে মায়ের পায়খানা আর পেচ্চাপটা ফেলো, তাহলেই সময়ে ব্রেকফাস্ট পাবে। আর বসের টিটিকিরিও শুনতে হবে না।” জোঁকের মুখে নুনের মতোই ততক্ষণে সুনির্মলের মুখে পাঁউরুটি ঢুকে গেছে। কিচেনের দিকে যেতে যেতে ছেলেকে আরো একবার হাঁক পেড়ে বলল, “থাক বাবান, আজ তোকে আর স্কুলে যেতে হবে না। ন’টা প্রায় বাজতে গেল।” বাবানও ততক্ষণে বিপদ আন্দাজ করে উপস্থিত হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি চেয়ার বসে পড়ে বলল, “এই তো মা, আমি এসে গেছি।” মুখ ঘুরিয়ে মুচকি হেসে কিচেনে ঢুকে গেল অনুরাধা। বাপ-বেটার একই স্বভাব। ও মুখ খুললেই সব ঠাণ্ডা।

ঘড়ির কাঁটা আরেকটু এগিয়ে ন’টার গায়ে ঘেঁষতেই আরো একদফা তাড়াহুড়ো শুরু হয়ে গেল অনুরাধার। সু-এর পার্স, বাবানের বাঁ পায়ের মোজা। বাবানের টিফিন কৌটোয় ডিম-পরোটা ভরা। সু-এর চেঁচামেচি আর বাবানের গুড-বাই কিসের পর যখন বাপ-বেটা ঘর থেকে বের হল তখন অনুরাধার মনে হল ছোটোখাটো একটা সুনামির স্রোত যেন বয়ে গেল গোটা ফ্ল্যাট থেকে। আজ যবে থেকে বাবান স্কুলে যেতে শুরু করেছে, তবে থেকে ওর সোমবার থেকে শনিবারের সকালগুলো এইভাবেই শুরু হয় প্রতিদিন যুদ্ধ করে। ডাইনিং টেবিলের উপর থেকে কাপ, প্লেট, ডিস সহ বর আর ছেলের উচ্ছিস্ট খাবারের টুকরোগুলোকে তুলে নিয়ে কিচেনের দিকে হাঁটা শুরু করতেই ওর কানে ভেসে এল কিচেন থেকে ওর ফোনটা সুরেলা স্বরে বাজতে শুরু করেছে। এত সকালে কে ফোন করতে পারে? মা তো সেই দুপুরের আগে ফুরসতই পায় না ফোন করার। বাবার দোকানে যাওয়ার আগে ভাত রাঁধতে হয় মাকে। তাও আবার একলা হাতে। বৌদি তো কুটি নেড়ে দুটি করার সময় পায় না। তাহলে কি দিদিভাই? হলেও হতে পারে। হয়তো বাবানের জন্য কোনো রান্না করেছে। কলেজ বের হওয়ার আগে ওকে দিয়ে যাবে। তাই আগেভাগে জানিয়ে রাখা। দিদিভাইয়ের এই এক স্বভাব। সব কাজ গুছিয়ে আর পরিপাটি করে করতে পছন্দ করতে পারে। কোত্থাও এতটুকুও ফাঁক পাওয়ার বা খোঁজার উপায়ই থাকে না। এতবছর ধরে সমান তালে ঘরে-বাইরে কাজ সামলে চলেছে দিদিভাই। সংসার সামলে কলেজ করা, ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার খাতা দেখা। সবকিছু। নিয়মমাফিক। ও জানে ও সারাজীবন চেষ্টা করলেও দিদিভাইকে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা ওর নেই। অজান্তেই বোধহয় দীর্ঘশ্বাস পড়ল ওর নাক ও মুখ থেকে। তারপর তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে কিচেনের দিকে চলল অনুরাধা। এটা যদি দিদিভাইয়ের ফোন হয়, আর তার ধরার আগেই যদি ফোনটা কেটে যায়, তাহলে ওর কপালে অশেষ দুঃখ লেখা আছে। সকালবেলাতেই এককাঁড়ি কথা শুনতে হবে ওকে। কথা শোনাবার এতবড় সুযোগ জীবনেও ছাড়বে না দিদিভাই। কিন্তু ওর কপালটাই খারাপ তাড়াতাড়ি পা চালিয়েও কোনো লাভ হল না। কিচেনে ঢুকে সিঙ্কে এঁটো থালাবাসনগুলোকে রেখে, হাতটা জলে ধুয়ে নিয়ে ফোনটা হাতে নেওয়ার আগেই সেটা চুপ করে গেল। হাইসকোটে হাতদুটো মুছে নিয়ে ফোনটাকে হাতে তুলে নিল অনুরাধা। ওর ধারণা ছিল ফোনস্ক্রিণে দিদিভাইয়ের নামটা ফুটে উঠবে। কিন্তু বাস্তবে তা ছিল না। ও দেখল ফোনস্ক্রিণে দিদিভাইয়ের পরিবর্তে তপতীর নামটা ভেসে আসছে। 1 Missed Call: Tapati. এত সকালে তপতী কেন ফোন করছে ওকে? এই তো কাল সন্ধ্যেবেলাতেই ওর সাথে কথা বলছিল অনুরাধা। আর তাই নিয়ে সু-এর কি রাগ! কত কথাই না ওকে শোনাল কালকে। কি না, কাল সন্ধ্যেবেলায় অফিস থেকে বেরিয়ে বাবুর ইচ্ছে হয়েছিল বউ আর ছেলেকে নিয়ে বাইরে কোথাও একটা খেতে যাবে। কিন্তু আধঘন্টা ছাড়িয়ে পঁয়তাল্লিশ মিনিট পরে পরে ফোন করেও বউয়ের ফোন লাগাতে পারেনি সে। বারবার এনগেজ টোন আসছিল। নিশ্চয়ই ওর মা। মায়ের ফোন এলে ওর বউ যে শুধু ও কেন, বিশ্বসংসার অবধি ভুলে যেতে পারে তা ও ভালো করেই জানে। তাই হাল ছেড়ে সু যখন বাড়ি ফিরল, দেখল বউ তখনও ডাইনিং রুমের সোফায় বসে দিব্বি হাসতে হাসতে ফোন করে চলেছে। অবশ্য অনুরাধারও যে খুব একটা দোষ এতে আছে, তাও অবশ্য জোর গলায় বলা যায় না। রাতে হোটেলে খেতে যাওয়ার ইচ্ছা তো আর ওর বরের রোজ রোজ হয় না। আজই হবে, সেটা ও জানবে কি করে? আর তপতীর সঙ্গেও ওর রোজ রোজ ফোনে কথা হয় না। সপ্তাহে একবার বা মাসে দু’ – তিনবার। তার বেশী নয়। কথাও খুব একটা ফোনে বলা হয়ে ওঠে না। তবে কালকের কথা আলাদা। কথা বলতে বলতে যে এত দেরী হয়ে গেছে, তা ওদের দুজনেরই খেয়াল থাকেনি। যতই হোক সেই স্কুলবেলার বন্ধু ওরা দুজনে। প্রথমে প্রাইমারী, পরে হাইস্কুল পেরিয়ে কলেজ। অনেক কিছুরই সঙ্গী ওরা দুজন। কিন্তু কালকের ফোনালাপের ব্যাপারটা একটু আলাদা। সে যাই হোক। কাল অতক্ষণ ফোনে কথা বলার পর আজই হঠাৎ এত সকালে ফোন করছে কেন তপতী? ওর শরীর খারাপ নয়তো? কিম্বা ওর বরের? ওর মেয়েরও হতে পারে। কিন্তু শরীর খারাপ হলে তপতী ওকে ফোন করবে কেন? আর যাই হোক ও তো আর ডাক্তার নয়। তাহলে? সাতপাঁচ ভেবে তপতীকে ফোন করবে বলে ঠিক করল অনুরাধা। কিন্তু করতে হল না। ওর ফোন করার আগেই তপতী আরো একবার ফোন করেছে ওকে। স্ক্রিণের উপরে ওর নামটা দেখেই ফোনটা তাড়াতাড়ি রিসিভ করল ও। ওপাশে তপতী কিছু বলার আগেই ও বলল, “কিরে, সব ঠিক আছে তো?” ফোন ধরেই অনুরাধার মুখে এই প্রশ্নবাণ শুনেই বোধহয় একমুহুর্তের জন্য থেমে গেল তপতী। তারপর ফোনের ওপাশ থেকে সে বলল, “কেন? হঠাৎ এরকম বলছিস কেন?” অনুরাধা বলল, “না, আসলে এত সকালে ফোন করছিস, তাই ভাবলাম কারোর কোনো বিপদ আপদ হয় নি তো? তাই জিজ্ঞাসা করলাম। যাই হোক ছাড়। এখন বল ফোন করেছিস কেন?”

-  “কেন আবার? খুলেছিস কিনা সেটা জানার জন্য ফোন করলাম।”

তপতীর কথার কোনো মাথামুণ্ডু বুঝতে না পেরে বোকার মত প্রশ্ন করল অনুরাধা, “খুলবো! কি খুলবো?!”

-  “মানে!? তুই কি আমার সাথে ইয়ার্কি করছিস, অনু?” কিছুটা বিস্ময় আর বাকীটা বিরক্তি নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল তপতী। কিন্তু অনুরাধা এখনও বুঝতে পারল না তপতী কি বলছে বা বলতে চাইছে।
তাই ও আবার বলল, “ইয়ার্কি করব কেন? তুই কি খোলার কথা বলছিস, সেটাই তো ছাই বুঝতে পারছি না। তাই জিজ্ঞাসা করছি, কি খুলবো?”

-  “একটু আগে যে তোকে হোয়াটস্অ্যাপে ম্যাসেজ পাঠালাম, সেটা কি খুলেও দেখিস নি, অনু?” আরোও একবার অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল তপতী।

অনুরাধা এতক্ষণে বুঝতে পারল একটু আগে হোয়াটস্অ্যাপে যে ম্যাসেজগুলো ঢুকছিল, সেগুলো তপতী পাঠাচ্ছিল। কিন্তু কি পাঠিয়েছে ও? সত্যিই তো ও এখনও সেগুলো খুলে দেখেনি। কিন্তু এতে ওর দোষটাই বা কোথায়? তারপর থেকে সময় পেয়েছে কোথায় ও? সে কথাটা তপতীকে বুঝিয়ে বলার আগেই সে ফোনের ওপাশ থেকে বলল, “বুঝেছি। এখনও ম্যাসেজটা তুই দেখিসইনি। শোন। তোকে হোয়াটস্অ্যাপে লিঙ্কটা পাঠিয়েছি। খোল। আর শোন সাইন আপ করার সময় কেবল ইমেল অ্যাড্রেসটাই দিবি। খবরদ্দার ফোন নম্বর দিবি না। আর হ্যাঁ, হাঁদির মত নিজের আসল নামটা আবার দিস না যেন। কিছু একটা বানিয়ে দিবি। কিন্তু মনে রাখিস নামটা ক্যাচি হয় যেন। তা নাহলে সবার নজরে পড়বে না। বুঝেছিস? আমি পরে ফোন করব। দুপুরের দিকে কিম্বা বিকালের দিকে। এখন রাখছি। মনে রাখবি ফোন নম্বর ভুলেও দিবি না। তাহলেই ফোন করে করে বিরক্ত করে ছাড়বে। বুঝলি? এখন রাখছি। বাই।” একটানা কথা বলে থামল তপতী। কিন্তু অনুরাধার কিছু বলার আগেই ও ফোনটা কেটে দিল। ফোনটা হাতে নিয়ে কয়েকমুহুর্ত ভাবল ও। কিসব বলল তপতী? অর্দ্ধেক কথা তো বুঝতেই পারল না। হোয়াস্অ্যাপে কিসের লিঙ্ক পাঠিয়েছে ও? হোয়াটস্অ্যাপটা খুলল ও। একদম উপরেই তপতীর নামটা জ্বলজ্বল করছে। তার পাশেই সবুজ রঙের ছোট্ট একটা বৃত্তের মধ্যে সাদা রঙে লেখা আছে, 4। তার মানে তপতী ওকে চারটে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে। ম্যাসেজটা খুলতেই সবার প্রথমে অনুরাধার চোখে পড়ল একটা লিঙ্ক। একটা অ্যাপের লিঙ্ক পাঠিয়েছে তপতী। তার নিচে তিনটে আরো ম্যাসেজ। তাতে লেখা আছে, যেগুলো ও একটু আগেই ওকে ফোনে বলল। অর্থাৎ সাইন আপ করার সময় ইমেল অ্যাড্রেস দিবি। ফোন নম্বর দিবি না। আর নিজের আসল নাম দিবি না। কিন্তু কোন অ্যাপের লিঙ্ক এটা? এটা কি সেই অ্যাপটার লিঙ্ক, যেটার কথা তপতী ওকে কাল সন্ধ্যেবেলায় ফোনে বলছিল? এবং এই আলোচনার কারণেই কাল অতক্ষণ ওদের ফোনালাপ চলেছিল। কালকের ওদের কথাবার্তাগুলো মনে পড়তেই বুকটা একবার হলেও ধুকপুক করে উঠল ওর। ও স্পষ্ট বুঝতে পারল ফোনস্ক্রিণের উপরে থাকা ওর বুড়ো আঙুলটা হঠাৎ করেই কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে বিশ্রীভাবে। সেটা ভয়ে নাকি উত্তেজনায় সেটা সেই মুহুর্তে বুঝে উঠতে পারলো না ও। গলাটা হঠাৎ করেই কেমন যেন শুকনো শুকনো লাগছেএকগ্লাস জল খেলে ভালো হত। শুকিয়ে আসা ঠোঁটদুটোতে একবার জিভটা বুলিয়ে নিয়ে, ঢোঁক গিলে তপতীর পাঠানো অ্যাপের লিঙ্কটার উপরে আঙুল রাখল ও। মুহুর্তের মধ্যে অ্যাপটা ইনস্টল হতে শুরু করে দিল। দুরু দুরু বুকে আর তার সাথে নিষ্পলক দৃষ্টিতে সেই দিকে তাকিয়ে থাকল অনুরাধা।
[Image: 20240303-191414.png]
Like Reply


Messages In This Thread
RE: অন্তর্বর্তী শূন্যতা - by রতিদেবী - 15-02-2024, 03:27 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)