Thread Rating:
  • 135 Vote(s) - 3.69 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পদ্ম নাগের বিষ
ঘরের কাছাকাছি আসতে রমার নজর পড়ল অন্ধকারে দাঁড়ানো ছায়ামূর্তির দিকে। ছায়ামূর্তিটি লতার। রমারা কাছে আসতেই ও বলল---দিদিমণি, পিঁয়াজ হবে, সেজন্য এয়েসেছিলি।

রমা নরম সুরে বলল---দিচ্ছি, লতা।
শেকলটা খুলে ও ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ল। অন্ধকার হাতড়ে সুইচ খুঁজে বাল্বটা জ্বেলে দিল। শম্ভু পিকলুকে বিছানায় শুইয়ে দিল তখন। রমা যখন লতাকে পেঁয়াজ দিতে গেল, স্পষ্টতই ও দেখল লতার চোখে একটা জ্বলন্ত ঈর্ষা। এই ঈর্ষা যে আসলে তার গোপন কামনা বাসনার পুরুষ শম্ভুর সাথে রমাকে নিয়ে ভ্রান্ত চিন্তা থেকে সেটা রমা বুঝতে পারে। কিছু বলার আগেই লতা বললে---দিদিমণি, তোমরা নদীরে ঘুরতে গিয়েছিলে গো?

রমা মিষ্টি করে হেসে বললে---হ্যা। তুমিও যেতে পারতে। ভারী সুন্দর নদী তোমার এখানে।

লতা কোনো উত্তর দিল না। রমার আড়াল থেকে উঁকি মেরে দেখতে লাগলো একবার শম্ভুকে। তারপর চলে গেল ও। রমা ঘরের মধ্যে এসে রান্নার জন্য সরঞ্জাম রেডি করতে লাগলো। শম্ভু ততক্ষণে পিকলুর দুটো পায়ে তার চিকিৎসার ভেষজ তেল দিয়ে মালিশ করতে ব্যস্ত। নদীর বুকে বাতাস হলেও ঘরটায় কেমন গুমোট হয়ে আছে। স্ট্যান্ড ফ্যানটা পিকলুর বিছানার কাছে। রমা যেখানে রান্না করে সেদিকটা বেশ গরম। তাছাড়া রান্নার উত্তাপে ও ঘেমে নেয়ে একসা হয়ে যায়।

শম্ভুর ভালো লাগে ঘামে ভেজা কর্মব্যস্ত রমাকে দেখতে। গোপনে গোপনে ও প্রায়শই দেখে রমার ফর্সা পিঠে চাপ চাপ ঘাম, গলার কাছে ফিনফিনে সোনার হারটা চিকচিক করছে ঘামে ভিজে। কালো ব্লাউজেও স্পষ্ট বগলের কাছে ভেজা ঘামের দাগ। কাঁধের কাছে উঁকি দিচ্ছে সাদা ব্রায়ের স্ট্র্যাপ। শম্ভুর চোখ ঘোলাটে হয়ে ওঠে। মনের গোপনে তখন সে পশু হয়ে ওঠে। ক্ষুধার্ত পশুর মত চাহুনিতে তীব্র লোভ আর হিংস্রতা নিয়ে তাকিয়ে থাকে। আড়াল থেকে একটু সুযোগ খোঁজে ব্লাউজে ঢাকা রমার পুষ্ট বুকের ওঠানামা দেখতে। ভাগ্যিস ও ভেতরে আন্ডারওয়ার পরে আছে। তা নাহলে নিমেষেই রমার সামনে ওর নির্লজ্জ্বতা প্রকাশ পাবে।

সরবেড়িয়া বাজার থেকে সেদিন একজোড়া সস্তার আন্ডারওয়ার কিনে এনেছিল শম্ভু। এমনিতে একা ঘরে থাকলে তার সেসবের বালাই নেই। কিন্তু যখন ও বাইরে যায়, সাপ খেলা দেখাতে, জড়ি বুটি বেচতে শহর মফঃস্বলে যায়, তখন ভেতরে জংলী ছাপছাপ বা চেক কাটা ঢিলে আন্ডারওয়ারটা পরে রাখে। ওর পকেটেই ও পয়সা রাখে। ভেতরে তখন উত্তেজনা দুর্দমনীয়। শম্ভুর ভয় হয়, শুধু চেহারায় ও তাগড়া দীর্ঘদেহী যুবক যে তা নয়, তার পাশাপাশি মনের মধ্যেও ও একটি পাশব নেকড়ে। যৌবন আর যৌনতাকে দমন করে সে তার নকল বিয়ের সঙ্গিনী এই বনেদী চল্লিশ কোঠা ছুঁই নারীর প্রতি সদয় হয়ে থেকেছে। গোপনে ভালোবেসেছে দিদিমণিটিকে, ব্যক্তিত্ব, লাবণ্য, সম্ভ্রান্ত বনেদিয়ানায় রমাকে দেবীর আসনে বসিয়েছে শম্ভু। কিন্তু এসবই আবার যেন শম্ভুর মনের মধ্যে একটা অদম্য বাসনার জন্ম প্রতিনিয়ত দেয়, যা তার নিঃসঙ্গ যুবক দেহমনের গোপন পাশবতাকে উস্কানি দেয়। তখন ইচ্ছে হয়; এখুনি ঝাঁপিয়ে পড়তে দিদিমণিটির ওপর, বাঘের মত ছিঁড়ে খুঁড়ে খেতে সারা রাত ব্যাপী জিরিয়ে জিরিয়ে।

পিকলুর পায়ে তেল মালিশের কাজ শেষ। লুঙ্গির মধ্যে ঠাটিয়ে আছে শম্ভুর পুরুষাঙ্গ। এখন উঠে পড়লেই নজর আসবে রমার। শম্ভুর ঐ অঙ্গটি এমনিতেই ওর দেহকাণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্ৰকান্ড। আন্ডারওয়ারও নির্লজ্জ্বতাকে আড়াল করতে পারবে না। বসেই রইল ও। রমা রান্না করতে করতেই ওর সাথে নানা কথা বলতে লাগলো। শম্ভু অবশ্য স্বল্প কথায় হুঁ হাঁ জবাব দিয়ে যাচ্ছে কেবল। ভর সন্ধেয় শরীরে এমন দাবানল জ্বললে তাকে নামানো শক্ত। ইচ্ছে করছে এখুনি গ্যাস স্টোভের সামনে বসা তার দিদিমণিটিকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে যাবে দোচালার ঘরে। ইচ্ছেমত রমন করবে, চেঁটে চেঁটে খাবে দিদিমণির সুগন্ধী সাবান মাখা পরিচ্ছন্ন শরীরে এই মুহূর্তে জমে যাওয়া চাপ চাপ ঘাম। কিন্তু এসবই তার মনের পাশব ইচ্ছা, তার বাইরেও শম্ভু বেদের একটা বিরাট সংযম আছে। যে সংযমতার কারণে ও ষষ্ঠীর ছোট্ট মেয়ে বুলির মুখের দিকে চেয়ে লতাকে পরিত্যাগ করেছে, যে সংযমের কারণে ওর শ্রদ্ধেয় দিদিমণিটিকে ও যে রানীর আসনে বসিয়েছে তার চেয়ে নীচে নামাতে পারে না।

কিন্তু শম্ভু যে বাঘের মত। সংযম যে কখন হিংস্র সত্বায় রূপান্তরিত হয় তা নিয়ে সে দ্বিধায় থাকে সর্বক্ষণ। এখন তাকে থামতেই হবে, এই মুহূর্তে তার পাশব চাহিদার ভাবনার কালো জগতে দিদিমণিকে কল্পনা করে, স্ফীতকায় দানবটিকে হাতে নিয়ে খান্ত করা দরকার। কিন্তু এখন রমা রান্না করছে, পিকলু জেগে আছে, দোচালার চালে গিয়ে এখুনি হস্তমৈথুন করা যাবে না। তাকে দমন করতেই হবে।

এর মাঝে রমা চা দিয়ে গেল শম্ভুকে। শম্ভু সুযোগ বুঝে চায়ের কাপ নিয়ে বেরিয়ে গেল ঘর থেকে উঠোনে। নিস্তার পেল সে। বাইরে বাতাসটা ছাড়ছে খানিক। বিদ্যুৎ চালিত ফ্যানের বাতাস ভালো লাগে না শম্ভুর। তার ভালো লাগে নদীবক্ষ হতে বয়ে আসা সুন্দরবনের বন্য বাতাস।

ভাতটা বসিয়ে চায়ের কাপ হাতে শম্ভুর পাশে এসে দাড়ালো রমা। উঠানের অন্ধকারে টের পাওয়ার সম্ভাবনা নেই লুঙ্গির আড়ালে শম্ভুর উরুসন্ধির কাছে উত্থিত লিঙ্গটিকে। বরং রমাকে নিকটে পেয়ে শম্ভুর ভালো লাগছে।
বড্ড রোমাঞ্চকর অনুভূতি, সবল পুরুষ মানুষটি চুমুক দিচ্ছে চায়ে। রমার চেয়ে অনেক দীর্ঘ, অনেক উঁচুতে তার শির। গায়ে তার তীব্র পৌরুষ গন্ধ। যেকোনো বিবাহিত নারীর মত রমা এই ঘ্রাণ চেনে। পীযুষের কর্মস্থল ফেরত শরীরে এই ঘ্রাণ থাকে। তবে এমন বুনো নয়। শম্ভুর গায়ে একটা তীব্রতা আছে। রমা গরম চায়ে চুমুক দিয়ে বললে---এবার মনে হয় নদীতে জোয়ার এলো, বেশ দখিনা বাতাস আসছে।

---আরেকটুক্ষণ থাইকে গেলে ভালো হত লা কি?

---তুমিই তো উজান আসবে বলে নৌকা ফিরালে ঘাটে।

শম্ভু তাকালো রমার দিকে, হেসে বললে---মিছা কথা কন কেন দিদিমণি? আপনিই তো তাড়া দিতে লাইগলেন তখুন থিকা কখুন ফিইরব।

রমা হেসে উঠল। শম্ভু রমার সাদা দাঁতের ঝকঝকে হাসির দিকে মোহিত হয়ে তাকালো। রমা বললে---কখনো কখনো বুঝে নিতে হয় শম্ভু। মেয়েরা সবসময় তাদের সব ইচ্ছে-অনিচ্ছে খুলে বলে না। বুঝে নিতে হয়। বিয়ে করো, বুঝবে।

রমা শম্ভুর হাত থেকে কাপটা নিয়ে চলে গেল। শম্ভু উঠানে বসে রইল একা। হৃদয়ে একটা আলগা আনন্দঘন অনুভূতি। রমা ফিরল পুনরায়, সঙ্গে আরও দু কাপ চা।

শম্ভু বললে---আবার চা?

---কেন? খাবে না? আসলে পিকলুর বাবার জন্য এমন অভ্যেস হয়ে গেছে। ওর এক কাপ চায়ে হয় না। আমারও তাই মাঝে মধ্যে ওর সাথে দু' কাপ হয়ে যায়।

শম্ভু তুলে নিল কাপটা। রমা ওর পাশেই বসেছে। খানিক দূরত্ব ওদের মাঝে। রমার গায়ের, চুলের মিষ্টি ঘ্রানটা শম্ভুর নাসারন্ধ্রে প্রবেশ করলেই, ভালো লাগে। এই ঘ্রাণ কোনো সুগন্ধী পারফিউমের নয়। নিছক সাবান, শ্যাম্পু আর তার সাথে যেন রমার নিজেরই একটা মেয়েলি ঘ্রাণ আছে। যে ঘ্রাণ শম্ভুর গা ঘেঁষে দাঁড়ালে লতার গায়ে মেলে না, গোলাপির যৌনশীতল শরীরে মেলেনি। গ্রামের মেয়ে বউরা শম্ভুর কখনো নিকট দিয়ে গেলে মেলে না। শম্ভুর মনে হয় এই ঘ্রাণ বোধ হয় এমন শিক্ষিতা নারীর গায়েই থাকে। হয়ত বা রমার নিজস্বতা আছে এতে।

শম্ভুর ধ্যান ভাঙলো রমার কথায়, ও বলল---পিকলুকে আজ একটু সবল লাগলো। জানি না ছেলেটা কখন হাঁটবে, দৌড়াবে। জানো আমার ছেলে ছিল খেলা পাগল। কোথাকার কোন দেশের কে কি খেলে, সব ওর নখদর্পনে। স্কুলটাও ওর পিছিয়ে গেল। বড্ড কষ্ট হয়, এমন ছেলেকে শুয়ে থাকতে দেখলে।

শম্ভু সান্ত্বনা দিয়ে বললে----দিদিমণি, তিন চার মাসের মধ্যে ছিলাটা হাঁটতে পাইরবে। গোখরার বিষ রক্তে মিশছে তার, সহজে কি বার হবে? ধীরে ধীরে কাজটা কইরতে হছে। আমার বাপ যখুন বাঁকুড়ার সে ছিলাটার চিকিচ্ছা করছিল, তখুন দিখেছি, ছ' মাস তারে ঘরে ফেলে রাইখছিস। আদিবাসী ঘরের ছিলাটা। সুস্থ হয়ে ঘর ফিইরছিল।

----শম্ভু, তুমি যে এমন সাপে কাটা লোকেদের বাঁচাও, এর জন্য কি কোনো মন্ত্র প্রয়োগ বা এমন কিছু করো?

শম্ভু হাসলো রমার কথা শুনে। বললে---মা মনসার আশীর্বাদ ছাড়া, আর কুনো মন্ত্র লাই। আমার বাপ জন্মাইছে বেদে জাতে। বেদেরা চমক দিতে মন্ত্র পড়ে, চিকিচ্ছা কি আর সব বেদে পাইরে! ক'জন হাতে গুনা আছে যে দুনিয়ায়। আমার বাপের মুখে শুইনছি তার বাপ ছিল লখিন্দর বেদে। সে ছিল বেদে সর্দার। বাপ যদি মারে বে লা কইরত সে হই যেত সর্দার। লখিন্দর বেদে লা কি পাহাড়, জঙ্গল, হিমালয় ঘুরছে জড়ি বুটির জইন্য। পিকলু বাবুরে যে শরবতটা হপ্তারে খাওয়াইলাম সিটায় একটা দানা আছে। আমার বাপ দিয়ে গিছিল সিটা, হিমালয় হতে আনছে লখিন্দর বেদে। যা দিখছেন সবই জড়ি বুটি চিকিচ্ছা। কুনো মন্ত্র লাই।

----তাহলে যে লোকে বলে তন্ত্র মন্ত্র! এসব কি মিথ্যে?

---লোকে বইলে বেদেরা বশীকরণ জানে। আমি যখুন শহুরে যাই, ভিন গাঁয়ে যাই কত লোকে আমারে তাবিজ কবচ চায়। পয়সার লগে দিই বটে, সেগুলাতে তামা আছে, ধাতু আছে, রুদ্রা ফল আছে। তার কাজ কম। কিছু লোকে আমারে বশীকরণ করবার লগে ওষুধ চায়। আমি লা বইলে দিই। অনেক বেদে মিথ্যা কুথা কয়ে বেচে।

রমা বলল---কাগজে এমন বিজ্ঞাপন দেখে কত লোকে ছোটে। কিসব অশিক্ষা আর অন্ধকার বলো।

শম্ভু ঠাট্টা করে বলল---বশীকরণ জাইনলে, আমি দিদিমণি তুমারে বশীকরণ কইরে লিতাম।

---আচ্ছা। এত লোক থাকতে আমাকেই বশীকরণ করতে কেন শুনি?

---তালে আপনি আমার সত্যিকারে বউটা হয়ে যিতেন কি লা।

দুজনে হেসে উঠল ওরা। রমা হাসি থামিয়ে ওকে বললে---এবার একটা বিয়ে করে নেবে নিজে পছন্দ করে। কতদিন একা থাকবে। যুবক ছেলে, এমন করে কাটাবে নাকি? সমস্ত জীবনটা পড়ে আছে।

শম্ভু হাসলো। বললে---বত্রিশ বছর হই গেল, দিদিমণি। আমার বাপ বে কইরছিল আটাশ বছর বয়সে। পঞ্চাশ হয় লাই, মরে গেল। আমিও চইলে যাবো তাড়াতাড়ি।

---ধ্যাৎ! যতসব বাজে কথা। বত্রিশ কি এমন বয়স নাকি? আমি তোমার চেয়ে সাত-আট বছরের বড়। বড়দের কথা শুনতে হয়। বিয়ে করে নিও। তা নাহলে মেয়ে পছন্দ করে আমাকে জানিও। আমি বিয়ে দেব তোমার।

শম্ভুর মুখটায় একটা অমোঘ ঔদাসীন্য দেখা দিল। দিদিমণিকে সে কোনোদিন বলতে পারবে না তার পছন্দের সত্যি কথাটা। সত্যিটা যে বড্ড সাংঘাতিক, অযৌক্তিক, অবাস্তবোচিত। সে কি তার চেয়ে বয়সে বড়, উচ্চ শিক্ষিতা, পরিণত বয়সের সৌন্দর্যসম্পন্না, পরস্ত্রী একজন নারীকে তার প্রেমিকা হিসেবে তুলে ধরতে পারবে? যে নারী উপরন্তু তার সাথে সামাজিক, অর্থনৈতিক শ্রেণীগতও ভীষণ অসম!
[+] 13 users Like Henry's post
Like Reply


Messages In This Thread
পদ্ম নাগের বিষ - by Henry - 21-10-2023, 11:21 PM
RE: পদ্ম নাগের বিষ - by Henry - 18-12-2023, 10:24 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)