Thread Rating:
  • 135 Vote(s) - 3.69 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পদ্ম নাগের বিষ
হপ্তা খানেক পর পীযুষ এলো সরবেড়িয়ায়। শম্ভুর গ্রামটাকে সরবেড়িয়া না বলা ভালো। আসল সরবেড়িয়া গ্রামটি শেষ হয়েছে ষষ্ঠীর বাড়ি থেকেও আধ কিমি দূরে। ষষ্ঠীর বাড়ি থেকেই শম্ভুর বাড়ি কম করে দেড়শ মিটার। ভৌগলিক ভাবে তাই সরবেড়িয়া না হলেও শম্ভু কিংবা ষষ্ঠী ভোট দেয় সরবেড়িয়া গ্রামেই।
পীযুষ দেখল পিকলুর উন্নতি স্পষ্ট। বিস্ময়ের ঘোর কাটেনা তার। আজও তার শম্ভু বেদেটির সাথে দেখা হল না। শম্ভু আজ গেছে মাছ ধরতে। ফিরতে বিকেল হবে। রমা জলখাবার রেডি করে দিল পীযুষের জন্য। পীযুষকে এখানে আসবার জন্য সেই ভোরবেলা থেকে বেরোতে হয়। রমা না থাকায়, চাঁপা এখন বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে থাকে। পীযুষ যখন বেরোচ্ছিল, চাঁপা তখন ঘুমিয়েছিল ছেলেকে নিয়ে। চাঁপাকে আর বিরক্ত করেনি পীযুষ।

রমা টোস্ট আর অমলেট করে দিয়েছে পীযুষের জন্য। খেতে খেতে পীযুষ লক্ষ্য করল ষষ্ঠী কথা মত পানীয় জলের ড্রাম আনিয়ে রাখে। একটা ছোট ফিল্টারও কিনে দিয়ে গেছে পীযুষ। জলআহার শেষ করে পীযুষ রমার পাশে বসল। গল্প করতে লাগলো ছেলের সাথে। পীযুষ নজর করল রমার পিঠটার দিকে। ফর্সা মোলায়েম পিঠে লালচে ইতিউতি ঘামাচি।
পীযুষ বললে---বড্ড গরম হয় তাই না? ফ্যানের বাতাসেও বোধ হয় কিছু হয় না।

রমা হেসে স্বামীর দিকে তাকিয়ে বললে---আমার কোনো কষ্ট হয় না। বেশ সুন্দর লাগে এই প্রাকৃতিক অরণ্য।

পীযুষ হেসে বললে---সে তো বুঝতে পারছি। আমার সুন্দরী বউটার পিঠে ঘামাচির দাগগুলো দেখে।

রমার তক্ষুনি মনে পড়ল---ও হ্যা একটু পাউডার দিয়ে দাও না।

রমার সবসময়ের জন্য অভ্যাস পীযুষকে দিয়েই ওর পিঠে পাউডার লাগানোর। পীযুষ রমার পিঠে ছেলেকে আড়াল করে মৃদু চুমু খেল। তারপর চেপে চেপে পাউডার দিল ওখানে।

পীযুষ চলে গেল এগারোটা নাগাদ। রমা রান্না করে স্নান করে উঠতে উঠতে দেড়টা বাজলো। পিকলুকে খাইয়ে দিয়েছে রমা। ওর আজ বড্ড ইচ্ছে হয়েছিল আইসক্রিম খাবার। রমা ওকে নানাভাবে বুঝিয়ে শান্ত করেছে। যে ছেলে স্কুল, সুইমিং ক্লাব, রনিদের বাড়িতে ক্রিকেট খেলত, কম্পিউটার জুড়ে যার ছিল অজস্র ভিডিও গেমস, সেই ছেলেটা সারাদিন এক জায়গায় শুয়ে, ফলত মন খারাপ একটু আধটু হচ্ছে পিকলুর। পরের সপ্তাহে যদি সম্ভব হয় পীযুষ এলে ওকে একটু গাড়ি করে ঘুরিয়ে আনবে ঠিক করেছে রমা।

খাওয়ার পর পিকলুর পাশে দেহটা এলিয়ে দিয়েছিল রমা। ঘুমটা ধরে গেল ফ্যানের বাতাসে। যদিও বাইরে তীব্র রোদ। বৈশাখের উত্তাপটা এসে পড়ছে মাটির দেয়ালে।
ঘুম ভাঙল যখন; তখন চারটে বাজে। শম্ভু এখনো ফেরেনি। খানিক চিন্তা হতে লাগলো রমার। ষষ্ঠীকে দেখতে পেয়ে বললে---কি ব্যাপার বলতো ষষ্ঠী, শম্ভু এখনো ফিরল না!

ষষ্ঠী হেসে বললে---শম্ভুটা ইরকমই আছে দিদিমণি। চিন্তার কিছু লাই। দেখুন, সে হয়ত মাতলা, রায়মঙ্গল, বিদ্যধরী চলে গিছে মাছ ধরার ন্যাশাটায়।

সত্যিই তাই। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ যখন সন্ধে নামছে ঘনিয়ে, শম্ভু ফিরল। কাঁধে তার জাল। শম্ভুকে দেখতে পেলে বুলি দৌড়ে চলে আসে। ষষ্ঠী আর লতাও এলো সেই সাথে। বালতি থেকে গোটা সাতেক চকচকে রুপালি ইলিশ ছুঁড়ে ফেলল মাটিতে। রমা এই প্রথমবার জেলের হাতে ধরা পড়া সদ্য ইলিশ দেখছে। শম্ভু বললে---দিদিমণি, তিনটা বড় মাছ বাইছে লেন, আজ আপনি রাঁইধবেন। বাকীগুলা ষষ্ঠী বাইচে দেবে সরবেড়িয়া হাটে।

ষষ্ঠী তিনটে মাছ বেছে বেছে রমাকে তুলে রাখতে দিল। শম্ভু ঠোঁটের ফাঁকে বিড়ি গুঁজে বললে---বুলি আজ মোর ঘরটাতে খাবি।

রমা বললে---শুধু ও খাবে কেন? আজ ষষ্ঠী আর লতাও এখানে খাবে।

লতা আড়ষ্ঠ বোধ করে না বলতে গেলেও একবার শম্ভুর দিকে, একবার রমার দিকে তাকালো। রমা বুঝতে পারে ষষ্ঠীপদর বউ লতার একটা শম্ভুর প্রতি বাড়তি আকর্ষণ আছে। যেটাতে আবার শম্ভু যে বিশেষ পাত্তা দেয় না, সেটাও রমা বুঝতে পারে। আসলে ষষ্ঠী বড্ড নরম স্বভাবের পুরুষ মানুষ, শম্ভুর মত বলশালী যুবকের প্রতি সেই সুযোগটা নিতে চায় লতা। তবে রমার এও ভালো লাগে শম্ভুর এই পৌরুষ চরিত্র। শক্ত সমর্থ একাকী যুবক হয়েও বন্ধু স্ত্রীর সুযোগ নিতে সে অবজ্ঞা করে। পুরুষ মানুষের যদি চারিত্রিক দৃঢ়তা না থাকে সেই পুরুষ মানুষের প্রতি নারীরও যে আকর্ষণ কমে যায়, সেটা রমা জানে। তাই বোধ হয় লতার শম্ভুর প্রতি নিষিদ্ধ আকর্ষণটা আরো বেশি।

ষষ্ঠী বাজারে গেল মাছ বেচতে। রমা ঢুকল রান্না করতে। সঙ্গে লেগে থাকলো লতা। শম্ভু স্নান করে দুপুরের সেই ঠান্ডা ভাত খেয়ে পিকলুর পায়ে একটা বাটনের প্রলেপ দিতে ব্যস্ত। মাঝে একবার ওরা চা খেল সকলে। লতা ঠারেঠোরে বারবার দেখে যাচ্ছিল শম্ভুর পেশল দেহ। সে কারণে রমারও চোখ পড়ছিল বেদে পুরুষ মানুষটার দিকে। ঘোর কৃষ্ণবর্ণ শম্ভুর শরীর ভীষণ পেটানো মজবুত। গলায় একটা জড়ি বুটির মালা, যেটা ওর গলায় সর্বদা থাকে। হাতের কঠিন বাহুমূলেও তাবিজ বাঁধা একটা ঘুমসি। কব্জির কাছটা পর্যন্ত শক্ত শিরা-উপশিরা দেখা যায়।

রমা প্রথমদিন থেকেই দেখেছে শম্ভুর চোখটা বড্ড মায়াবী। রুক্ষ পাথর খোদাই করা চুল দাঁড়ির বন্য মুখে দুটি চোখ যেন প্রেমিক পুরুষের। যেন এই যুবকের ঐ চোখে সুন্দরনের নদী, অরণ্যের কত দর্শন লুকিয়ে আছে। চায়ে চুমুক দিতে দিতে রমা শুধু শম্ভুর প্রতি লতার কামার্ত চাহুনি লক্ষ্য করেনি, সেই সাথে লক্ষ্য করেছে শম্ভুর পুরুষদেহের বন্য আদিম সৌন্দর্য্যও।
Like Reply


Messages In This Thread
পদ্ম নাগের বিষ - by Henry - 21-10-2023, 11:21 PM
RE: পদ্ম নাগের বিষ - by Henry - 28-11-2023, 11:00 PM



Users browsing this thread: 9 Guest(s)