Thread Rating:
  • 135 Vote(s) - 3.69 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পদ্ম নাগের বিষ
#85
(04-11-2023, 11:20 AM)Henry Wrote: শম্ভুর তখন সতেরো-আঠারো বয়স। এখনই লম্বায় বাপকে ছাড়িয়েছে সে। বাপ তাকে অনেক কেরামতি দেখিয়েছে। সব কেরামতি সেও শিখে নিয়েছে পুঙ্খানুপুঙ্খ। আজ কি দেখাবে আবার বাপ!  

ভীমনাগ খাটের তলা থেকে ঝাঁপি বের করে এনে গোখরোটাকে বার করলো। গলা চেপে ধরে চুমু খাবার মত জিভের ডগায় ধরল সাপটাকে। গোখরোটা চেরা জিভ বার করে ঢেলে দিল বিষ। কাজ হয়ে গেল ভীমনাগের। সাপটাকে যথাস্থানে রেখে বললে---এ হল সাপের বিষের ন্যাশা। এর খদ্দের আছে, পঞ্চাশ টাকা তোরে দিবে। কালিনাথপুরের গগন ঘোষটার কাছে পৌঁছে দিস।

সেদিন শম্ভু প্রথমবার গগন ঘোষের বাড়ী গিয়েছিল। গগন ঘোষ চালকলের মালিক। বেশ বড় তার বাড়ি। আরাম সোফায় বসেছিল লোকটা। ভীমনাগ না আসায় শম্ভুকে দেখে প্রথমে বিরক্ত হয়েছিল। পরে যখন দক্ষতার সাথে শম্ভু কাজটা করতে পারলো খুশি হল গগন ঘোষ। প্রথম দিনই একশো টাকা বখশিশ দিয়েছিল শম্ভুকে। বলেছিল---বেশ বাপের ব্যাটা তুই, প্রত্যেক শনিবার চলে আসিস সাপটাকে নিয়ে।

শম্ভুর বয়স এখন বত্রিশ। বাপের মত তার পেটানো চেহারা। তেমনই তার দস্যু সুলভ তেজ। গায়ে গতরে পেশব জোর যেন তার বাপ ভীমনাগ বেদে কিংবা দাদু সনাতন জেলেকেও হার মানাবে। জেলে রক্তে সে ডিঙি নৌকা বেয়ে ইচ্ছে মত কালনাগিনীর বুকে ঘুরে বেড়ায়। আবার বেদে সন্তান হয়ে রক্তে তার সাপ ধরে বেড়ানোর নেশা। জঙ্গলে গাছের ডাল থেকে, ভাঙা বাড়ির ফাটল কিংবা জমে থাকা দীর্ঘদিনের ইটের স্তুপ; টপ টপ সাপ ধরে আনে। তার দো চালার ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে যত্র তত্ৰ ঝাঁপি। কোনোটাতে গোখরো, কেউটে, কোনোটাতে কালাচ, রক্তকানড়, শাঁখামুটি। সব মিলিয়ে বিশ-পঁচিশটা ভিন জাতের সাপ। আর এদের নিয়েই শম্ভুর সংসার। তাই ষষ্ঠীপদ নাম দিয়েছে 'সাপঘর'। গাঁয়ের অন্য লোকেদের সাথেও শম্ভুর যোগাযোগ কম। সে পড়ে থাকে নদীর ধারে, একপ্রান্তে, একা তার মা মনসার জীবগুলোর সংসারে বুঁদ হয়ে। একা ষষ্ঠীপদ ছাড়া, এ ঘরের ত্রিসীমানা কেউ মাড়ায় না। সকলে ভাবে ত্রিসীমানায় গেলে শম্ভু সাপ ছেড়ে দেবে পায়ে। শম্ভু এসব কথা শুনে হাসে। ষষ্ঠীকে বলে---বুঝলি ব্যাটা তারা আমাকে ডরে, আবার সাপে কাটলে আমাকে তালাশ পাঠায়।  

দোচালা মাটির ঘরের সামান্য দূরেই হোগলার বন। ওখানেই একদিন ষষ্ঠীপদ চোখ জ্বলজ্বল করতে দেখেছিল বনবিবির বাহনকে। শম্ভু অবশ্য সে কথা বিশ্বাস করে না। কতবার রাতে সে লন্ঠন হাতে ঝোপের ভিতর ঢুকেছে সাপ খুঁজতে। গরাণের জঙ্গলটা তার উঠোন অবধি পৌঁছেছে। দো চালা ঘরের টালিগুলো দিয়ে ঝড় জলের রাতে ফোঁটা পড়ে। এখানেই যুবক শম্ভুর একাকী জীবন। তার এই একাকী জীবনে চেতনা, অনুভূতি, জীবিকা সবকিছুকেই ঘিরে রয়েছে মা মনসার এই জীবগুলো।

সব সময়ের জন্য শম্ভুর জীবন একাকী ছিল না। বাপ ভীমরাজ ঠিক সময় বুঝেছিল তার ছেলের পৌরুষ ক্ষমতা তার চেয়েও বেশি। এখুনি না বাঁধলে এ ছেলে সর্বনাশে যাবে। তখন শম্ভুর বয়স সাতাশ। ভীমনাগ খোঁজ করতে লাগলো শম্ভুর জন্য পাত্রীর। বেদের ছেলের সাথে বিয়ের জন্য পাত্রী পাওয়া যে দুষ্কর। বেদেনী ছাড়া কে বা সাপুড়ের সাথে সংসার করতে চায়।

গোবিন্দপুরে তাঁতির ঘরের মেয়ে গোলাপিকে পছন্দ হল ভীমনাগের। গোলাপির বাপ অন্ধ। অন্ধের জষ্ঠী গোলাপিকে বউ করে আনলো শম্ভু। বিয়ের প্রথম রাতেই ভীমনাগ টের পেয়েছিল এ মেয়ে শম্ভুকে সামলাতে পারবে না। সারা রাত শুনতে পেল এক চালার ঘরে শম্ভুর সাথে অসম হয়ে ওঠা মেয়েটার পরাজিত কান্না। বিষ সহ্য করতে পারেনি গোলাপি। পরদিনই পালালো বাপের বাড়ি। আর ফেরেনি মেয়েটা। শম্ভুও বুঝে গেছিল তার বিষ গ্রহণ করার ক্ষমতা গোলাপির নেই।


ভীমনাগ দেখতে পাচ্ছিল বউটা চলে যাবার পর ছেলেটা কেমন মুষড়ে পড়েছে। একদিন ছেলেকে ডেকে এনে বললে---শম্ভু রে, এ মেয়েছেলে মরদ চিনল লাই, তাই তোরে ছেড়ে ভাগলো। তোর মত গায়ে গতরে শক্ত মরদই মেয়েছেলের সুখ। মরদেরটা যত আখাম্বা হউক, সব মেয়েছেলেই লিতে পারে, ধৈর্য্য ধইরলে ঠিক সময় সুখটা পায়, তোর গোলাপি ধৈর্য ধইরতে পারে লাই। এ মেয়ে মরদ চিনে লা।


কদিন পর হঠাৎ করে বুকে ব্যথা নিয়ে ভীমনাগ চলে গেল। অমন তাগড়াই বাপটার মৃতদেহের দিকে নিথর হয়ে তাকিয়ে ছিল শম্ভু। একা হয়ে পড়েছিল সে। ভেবেছিল আরেকটা গোলাপি নিয়ে আসবে তার জীবনে। যৌবনের জ্বালা তাকে অস্থির করে মারছে। ষষ্ঠী বুঝতে পারছিল শম্ভুর জ্বালা। ষষ্ঠী বেদে না হলেও শম্ভুর বাল্য বন্ধু। ও জাতিতে জেলে। জেলে পাড়ার এই একটাই ছেলে যে শম্ভুর বন্ধু। ষষ্ঠী ছোট থেকেই দেখেছে শম্ভুর তেজ, সাহস, পাশব শক্তি প্রচন্ড রকমের। একদিন কৈশোরে শম্ভুকে হোগলা ঝোপের আড়ালে দাঁড়িয়ে একটা ল্যাংটো মেয়েছেলের ছবি হাতে হস্তমৈথুন করতে দেখে ফেলে ষষ্ঠী। সেদিন ও টের পায় শম্ভুর দেহের দীর্ঘকাঠামোর মতই ওর নিম্নাঙ্গ প্রকান্ড। তখন ষষ্ঠীর চোখে বিস্ময় দেখে শম্ভু গর্ব করে বলেছিল---আমর বাপ ভীমনাগ বেদে, তার নাগটাও ভীমকায় রে ব্যাটা, এর বিষ উগরাইলে কি হয় জানিস?

হতভম্ব হয়ে কিশোর ষষ্ঠী সরলভাবে বলেছিল---কি হয়?

----আমার মত বাপ কা ব্যাটা হয়।

গোলাপি চলে যাবার পর থেকে শম্ভুর যেন ক্ষুধা বাড়তে লাগলো। ষষ্ঠী দেখল আজকাল শম্ভু গ্রামে, মফস্বলে সাপ খেলা দেখাতে যায় না। যদিও আজকাল সাপ খেলা দেখতে খুব একটা কারোর আগ্রহ নেই, তবু জড়ি বুটি বিক্রি করে আর গোখরোর বিষের নেশা বিক্রি করে শম্ভুর যা আয় হয় দু বেলা চলে যায়। ষষ্ঠীকে একাই যেতে হচ্ছে হরদিন। শম্ভুকে ডাকলেই বলে---আজ শরীলটা ভালো নেই রে, ষষ্ঠী।

জোয়ান মরদের প্রতিদিন শরীর খারাপ নিয়ে সন্দেহ জাগে ষষ্ঠীর। একদিন লোকমুখে জানতে পারলো; শম্ভু নাকি আজকাল ষষ্ঠীর ঘরে যাতায়াত করে। এমনিতেই ষষ্ঠীর বউটার ডাগর চেহারা, একটু বেশিই তার শরীর চায়। এমন পেশল দীর্ঘকান্ত তরতাজা যুবক দেখে বউটা যদি হেলে পড়ে শম্ভুর দিকে! ভয় পেয়েছিল ষষ্ঠী। প্রস্তাব দিয়েছিল শম্ভুকে, আবার বিয়ে করার।

মাত্র তিরিশ বছর বয়সেই শম্ভুর সে বিশ্বাস ভেঙে গেছে। ভয় পাচ্ছিল এবারও যদি তার কালনাগের বিষ সহ্য করতে না পেরে বউটা পালায়। বিশ্বাস করতে লাগলো কোনো মেয়েই তার বিষ ধারণ করতে পারবে না। একবার ভেবে ছিল ষষ্ঠীর বউটার গতরটা ভালো, শম্ভু গেলেই কেমন গায়ে পড়ে যায়। বুকের দিকে তাকালেই শম্ভুরও লুঙ্গির ভিতর টাটায়।

সুযোগ দিয়েছিল ষষ্ঠীর বউ। গায়ে ঢলে পড়ে বলেছিল---আজ তোমার বন্ধুটার দের হবে গো ফিরতে।
শম্ভুর তৎক্ষনাৎ বাপ ভীমনাগের কথাটা মনে পড়ে যায়; "মরদেরটা যত বড় হউক, সব মেয়েছেলেই লিতে পারে, ধৈর্য্য ধরলে ঠিক সময় সুখটা পায়, তোর গোলাপি ধৈর্য ধরতে পারে লাই।"

ষষ্ঠীর ডাগর বউটাকে দেখে বিশ্বাস জন্মালো তার। মাইয়ের ভাঁজ দেখিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ষষ্ঠীর বউ; লতা। হঠাৎ করে নজর পড়ল শম্ভুর, ষষ্ঠীর চার বছরের মেয়েটা তার দিকে তাকিয়ে আছে। ঠিক যেন মুখটা ষষ্ঠীর মত। ষষ্ঠী তার বন্ধু, কি করতে যাচ্ছিল সে! নিজেকে সামলে নিয়ে সেই যে চলে এসেছিল সাপঘরে, তারপর আর কখনো ষষ্ঠীপদর বাড়ি যায়নি ও।

ষষ্ঠীপদ বিশ্বাস করতে পারেনি শম্ভুকে। নদী পাড়ের ঘর থেকে সবচেয়ে কাছেই যে ঘরটা সেটা ষষ্ঠীর। লতা নদী পাড়ে যায় কাপড় কাচতে। কাচুলির আড়াল থেকে বুক দেখায়। ঘি আর আগুন থাকলে একদিন না একদিন স্ফুলিঙ্গ উঠবেই। শম্ভুকে পুনর্বার বিয়ে দিতে তৎপর হয়ে উঠেছিল সে। সবকিছু উলটপালট হয়ে যায় যেদিন রায়বাড়ির ফাটল থেকে পদ্মকে নিয়ে এলো শম্ভু।

এখন সেই পদ্মের আকর্ষণে সম্মোহিত হয়ে থাকে সে। যতক্ষন ঘরে থাকে ততক্ষণ পদ্মকে নিয়েই তার খেলা। কখনো পুরোটা দিন বিছানায় শুয়ে থাকে সে। আর পদ্মও যৌবনন্মত্ত শম্ভুর দিঘল শরীর জড়িয়ে, সোহাগ দিয়ে গায়ে লেপ্টে পড়ে থাকে। কখনো পদ্মের ঠোঁটে চুমু খায়, পদ্মও তার চেরা জিভ দিয়ে চেঁটে দেয় শম্ভুর প্রস্তর কঠিন ঘেমো গাল। যেন তার বে করা বউ। পদ্মের প্রেমময় কামড়ের বিষের নেশা ভুলে যেতে সাহায্য করে তাকে একাকিত্বের যন্ত্রনা।

ষষ্ঠীপদ মাঝে মাঝে বাধা দেয়---শম্ভু রে, বিষের ন্যাশাটা করতে তোর বাপ মানা করে ছিল। শরীলটা শেষ করে দিসনি শম্ভু।

শম্ভু বলেছিল---এ ন্যাশা না রে ষষ্ঠী, এ আমার পদ্মর পিরিত আছে তার নাঙের লিয়ে। পদ্মটা মরদ চিনে।

ক্রমে পদ্মের উপর ভাবভালোবাসা বাড়তে লাগলো শম্ভুর। যেখানেই যায় গলায় জড়িয়ে রাখে পদ্মকে। কদিন আগে গগন ঘোষের আড্ডায় বিষ ঢালতে গেছিল শম্ভু। ঝাঁপি খুলে গোখরোটাকে বার করে ধরল গগনের কালো জিভের সামনে। বুড়ো হয়েছে গগন ঘোষ। ঝিম ধরা নেশা হলে বলেছিল---পদ্মর চুমুকি তুই একাই খাবি শম্ভু? একবার আমাকেও দে। না হয় একটু বেশিই দাম দেব।

প্রচন্ড রাগ হয়েছিল শম্ভুর। সামলে নিয়ে বলেছিল---তোমার বে করা বউটাকে কি একদিন আমার সাথে শুতে দিবে গো গগন ঘোষ?

বত্রিশের যুবক শম্ভু তরতাজা শক্ত সবল যুবক। ষষ্ঠী একবার বলেছিল বেদে ঘরে না জন্মালে শম্ভু পড়ালেখা করে মিলিটারিতে যেত। দেড় বছর ধরে পদ্মের নেশা চাপলেও কাঁধ, বুক পেশীর সুঠাম কাঠামোয় ছাপ পড়েনি তার। আজও তাকে দেখলে তেজি ঘোড়া মনে হয়। পদ্মের নেশায় ঝিম না ধরলে তার সেই তেজ এখনো দেখা মেলে। ষষ্ঠী বাল্যকাল থেকে শম্ভুর বন্ধু। পদ্মটা যে শম্ভুর জীবন ছারখার করে দেবে সে জানে। যেকোনো ভাবেই হোক পদ্মের থেকে শম্ভুকে আলাদা করতে হবে। শহরের বাবুরা বিষ কিনে নিয়ে যায় শম্ভুর থেকে। ষষ্ঠী জানে তার থেকে ওষুধ তৈরি হয়। পড়া লেখা করা ডাক্তারবাবুরা সাপও কেনে। বড় বড় কাচের বাক্সে রাখে। বেদেদের মত দুঃসাহসীপনায় হাতে না হলেও চকচকে ধাতব লাঠি দিয়ে চেপে ধরে তার মুখ। সেই মুখ চেপে ধরে বোতলের মুখে ফিনফিনে পাতলা পর্দার ওপর। বোকা সাপেরা শত্রু ভেবে বিষ ঢালে। সেই বিষ নিয়ে বড় একটা যন্ত্রে চোখ রেখে কিসব পরীক্ষা নিরীক্ষা করে। ষষ্ঠী তা নিজের চোখে দেখেছে। কলকাতা শহরের এক বাবুকে সে বিক্রি করেছে কালাচ, গোখরো, কালকেউটে। সেই বাবুর গোখরোটা মরে যাওয়ায় আবার একটা গোখরো চেয়েছে। কাচের বাক্সে রেখে তাকে পরীক্ষা করবে। ষষ্ঠী তক্কে তক্কে আছে; একদিন পদ্মকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে বেচে দেবে।

আজ সকালে শম্ভুকে দেখছিল ষষ্ঠী। কিসব জড়ি বুটি বানাচ্ছিল ও। বলছিল বোষ্টমদের বাড়ির বউটাকে নাকি কেউটে কামড়েছে। সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় গেলে শম্ভু পদ্মকে নিয়ে যায় না। গেরস্ত ঘরের লোকে ভয় করে। ষষ্ঠী পরিকল্পনা করে আছে আজই শম্ভুর থেকে পদ্মকে আলাদা করবে।

চলবে

Classic plot..lovely
Like Reply


Messages In This Thread
পদ্ম নাগের বিষ - by Henry - 21-10-2023, 11:21 PM
RE: পদ্ম নাগের বিষ - by sumit_roy_9038 - 05-11-2023, 03:12 PM



Users browsing this thread: 13 Guest(s)