Thread Rating:
  • 99 Vote(s) - 2.82 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL "ধূসর পৃথিবী"
Video 
[Image: Picsart-22-12-06-20-20-08-119.jpg]

                                
                             ১০ম পর্ব

"কি..কি বল.." নীলাদ্রির গলায় এখনো বিস্ময়, সে কথা শেষ করতে পারে না, আদিত্য আবার বলতে থাকে "তুমি ইমিডিয়েটলি আমাকে ট্রেস করে ব্যাক‌আপ নিয়ে আসো, আমি জানিনা ওদের মেইন ডেস্টিনেশনে পৌঁছনোর পরে সেখানকার সিচুয়েশন কি থাকবে তবে পসিবল হলে আমি ওখানকার এক্সাক্ট লোকেশন তোমাকে পাঠিয়ে দেবো, তোমার ফোন অন রাখো,ওকে?"
"তুমি মানে আপনি প্রীতিকে খুঁজবেন কিভাবে?" এতক্ষণে হয়তো নীলাদ্রি কিছুটা বিশ্বাস করেছে, আদিত্য বলে "আমি প্রীতিকে একটা লকেট গিফ্ট দিয়েছিলাম ওতে ট্রেসার লাগানো আছে যাতে ও কোনো বিপদে পড়লে আমি পৌঁছাতে পারি তুমি টাইম নষ্ট কোরো না তাড়াতাড়ি এসো"।
"আমি আসছি তবে লোকেশনটা আঙ্কেলের ফোনে পাঠাও আমার ফোন ভেঙে গেছে"
"এই নাকি পুলিশ অফিসার"।
আদিত্যর ব্যাঙ্গাত্মক কথা শুনে উত্তর দেওয়ার আগেই ফোন কেটে যায়, নীলাদ্রি অতীন্দ্রবাবুর ফোন থেকে একজনকে ফোন করে আদিত্যর নম্বরটা ট্রেস করতে বলে এবং নিজে বেরিয়ে যায়, অতীন্দ্রবাবুকে অবশ্যই সাথে যেতে হয় কিন্তু ওদী অবাক করে অদ্রিজাও ওদের সঙ্গী হয় সে বলে "আমার বন্ধু বিপদে আছে নীলাদ্রি বাবু আমি তো যাবোই", কিন্তু নীলাদ্রি ইতস্তত করছে দেখে সে আবার বলে "ঘাবড়াবেন না আমি ডাক্তার প্রাণ বাঁচাই কিন্তু শখের জন্যই পিস্তল চালানো আর একটু হ্যাণ্ড টু হ্যাণ্ড কমব্যাট শিখেছি আর আমার পিস্তলের লাইসেন্স আছে, যাওয়ার আগে নীলাদ্রি আরেকটা কাজ করে উমাদেবীকে সান্ত্বনা দিয়ে সে বলে "আন্টি প্রীতি আমার হবু স্ত্রী, আমি ওকে কিছু হতে দেবো না কথা দিলাম" বলে তিনজনে বেরিয়ে যায়।
আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকায় প্রীতি মাথাটা বড্ডো ভারী মনে হচ্ছে, দুচোখের পাতাও বড্ড ভারী, আস্তে আস্তে চারিদিকে তাকায় একটা ঘরে মেঝেতে শুয়ে আছে কিন্তু এই ঘরটা কেমন যেন আলাদা লাগছে তার কাছে, সে কিন্তু বুঝতে পারে না যে অদ্রিজাদের বাড়িটা রাতারাতি হটাৎ বদলে গেল কিভাবে? একটু ধাতস্থ হতেই মনে পরে সে চারু আন্টি মানে অদ্রিজার মায়ের রুমে ছিল দুই বান্ধবী ছাড়াও প্রীতির বাবা-মাও ছিল, নিজের স্বামী মানে সুবিমলবাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে চারু আন্টি শারীরিক এবং মানসিক উভয়ভাবেই ভেঙে পড়েছিল, সবাই তাকেই বোঝাতে চেষ্টা করছিল।
তারপর সে চারু আন্টির রুম থেকে বেরিয়ে নীচে আসে নীলাদ্রির সাথে কথা বলবে বলে, কিন্তু বেশ কয়েকবার ফোন করার পরেও নীলাদ্রি ফোন কানেক্ট হয় না ভাবে টাওয়ারের প্রবলেম বোধহয় তখন সে আস্তে আস্তে বাড়ির বাইরে এসে একটু পায়চারী শুরু করেছে হটাৎ কেউ একজন পিছন থেকে তার মুখে কিছু একটা চেপে ধরে সে চিৎকার করতে চেষ্টা করলেও পারে না, সাথে তার নাকে একটা মিষ্টি অথচ কড়া গন্ধ আসে তারপর আর কিছু মনে নেই।
"হেল্প... কেউ আছেন" মাথায় ভারী ভাবটা কিছুটা কমে আসতেই সে চিৎকার করতে থাকে, আস্তে আস্তে উঠে দরজার কাছে গিয়ে দরজা টেনে খুলতে গিয়ে বোঝে সেটা বাইরে থেকে বন্ধ। প্রীতি দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে আর সাথে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকে কিন্তু কেউ দরজা খোলে না, সে আরো জোরে দরজায় ধাক্কা দিতে শুরু করে এবারে কাজ হয় বাইরে থেকে দরজা খোলার আওয়াজ পায় সে, কিন্তু দরজা খুলেই ভিতরে ঢোকে দুজন গাট্টাগোট্টা চেহারার লোক গালে খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি, মাথায় উসখোখুসখো চুল।
"আরে চিড়িয়া উঠে পড়েছে দেখছি" দুজনের একজন কথা বলে আর সঙ্গে সঙ্গেই প্রীতির নাকে মদের বিশ্রী দুর্গন্ধ যায় সে নাক চেপে বলে "তোমরা কারা আমাকে এখানে ধরে এনেছো কেন?"
কিন্তু লোকদুটো উত্তর না দিয়ে বিশ্রীভাবে হাসতে থাকে, হাসতে হাসতে একজন অপরজনকে বলে "বস এবার দারুন মাল এনেছে এই মালটাই বাকিগুলোর থেকে টপ, এর ভালো দাম পাওয়া যাবে"
অপরজন বলে "ঠিকই বলেছিস নেহাত বস বারণ করেছে তাই নাহলে এতক্ষণে মজা লুটে নিতাম"
ওদের কথা শুনে ভয়ে প্রীতির গলা শুকিয়ে যায় তার বুঝতে বাকি থাকে না যে এরা সেই মেয়ে পাচারকারী দলের সাথে জড়িত যাদের ব্যাপারে নীলাদ্রি বলছিল আর এখন এরা ওকে তুলে এনেছে পাচার করার জন্য, এবার দুজনের একজন এগিয়ে আসে তার কাছে আর সঙ্গে সঙ্গে তার নাকে আসতে থাকা মদের গন্ধটা বেড়ে যায়, লোকটা ওকে টাচ করতে গেলে সে সজোড়ে একটা ধাক্কা দেয় এতে লোকটা টাল সামলাতে পারে না পড়ে যায়,কিন্তু এর ফলে দ্বিতীয় লোকটা রেগে যায় সে সজোড়ে একটা থাপ্পড় মারে প্রীতিকে আর থাপ্পড় খেয়ে প্রীতি মেঝেতে পড়ে যায়।
"শালী খুব রস না তোর.. তোর রস কিভাবে কমাতে হয় সেটা জানা আছে" মেঝে থেকে উঠতে উঠতে লোকটা হিংস্র ভাবে বলতে বলতে আবার প্রীতির দিকে এগিয়ে আসতে যেতেই অপরজন বাধা দেয়, "বস কিন্তু বারণ করেছে"।
এতে প্রথম লোকটা অনিচ্ছাসত্ত্বেও থেমে যায় এরপর দ্বিতীয় লোকটা পকেট থেকে একটি ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জ বার করে এবং প্রথম লোকটা গিয়ে প্রীতির দুহাত চেপে ধরে, প্রীতি ছাড়ানোর জন্য ছটফট করতে থাকলেও তাতে ফল হয় না হটাৎ সে অনুভব করে যে তার বা হাতের বাহুতে একটা সুঁচ ফুটে গেল আর তারপরেই আবার তার দুচোখে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে।
প্রীতির সাথে থাকা ট্রেসার ট্রেস করতে করতে বেশ কয়েকটা গ্ৰাম পার হয়ে আসে আদিত্য রাস্তাঘাট এখনো খুব একটা উন্নত নয়, আলোর ব্যাবস্থাও তেমন নেই তবুও তার মাঝেই অন্ধকার চিরে এগোতে থাকে আদিত্যর গাড়ি, সাথে অবশ্য ড্রাইভার আছে ওর নিজের জিপটা ওর সঙ্গে নেই ফলে গাড়ির খোঁজ করতে হয় সৌভাগ্যবশত একে রাস্তায় পেয়ে যায় এবং মুখচেনা থাকায় সে আদিত্যকে নিয়ে আসতে রাজী হয়ে যায় নাহলে রাতের বেলা এই এলাকায় গাড়ি নিয়ে এদিকে কেউ আসতে চায় না কারণ এই খারাপ রাস্তা।
বেশকিছুক্ষণ পর একটা জায়গায় গিয়ে গাড়িটা থামাতে বললো আদিত্য প্রীতির সাথে থাকা ট্রেসার খুব কাছেই একটা দিকে ইণ্ডিকেট করছে, এবং সেদিকে যে একটা হোমস্টে আছে এটা আদিত্য জানে। নর্থবেঙ্গলে অনেককটা ট্যুরিস্ট স্পট থাকায় এখানে অগুণতি রিসর্ট এবং হোমস্টে তৈরী হয়েছে এটাও এরকমই একটা হোমস্টে যদিও এটা এখনো ট্যুরিস্টদের জন্য পুরোপুরি চালু হয়নি। আদিত্য গাড়ি থেকে নেমে পড়লো, প্রথমে মোবাইলটা পকেট থেকে বের করে দেখলো নেটওয়ার্ক আছে দেখে লোকেশনটা সেন্ড করে এগিয়ে যাচ্ছে এমন সময় পিছন থেকে গাড়ির ড্রাইভার বললো "আমিও আসবো সাব?" আদিত্য ফিরে তাকালো সে বুঝলো ড্রাইভার কিছু একটা অনুমান করেছে যদিও তাকে কিছুই বলেনি আদিত্য তাই সে বললো "আসতে পারো তবে সামনে কিন্তু বিপদ আছে আর সেটা কতটা ভয়ানক সেটা আমি এখনো জানিনা", ড্রাইভারটি গাড়ির দরজা লক করে মুচকি হেসে এগিয়ে এলো।
অল্প একটু হেঁটে এসেই হোমস্টেটা দেখতে পেলো দুজনে, একটা দোতলা কটেজ আর তার পাশাপাশি বেশ কয়েকটা ছোটো ছোটো কুটির টাইপের রুম দাঁড়িয়ে আছে এবং সেগুলোর সামনে দুটো গাড়িও দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু আর কাউকে চোখে পড়লো না, একটু খটকা লাগলো আদিত্যর ট্রেসার এখানেই দেখাচ্ছে তাহলে? দুজনে আরো কিছুটা এগিয়ে গেল কিন্তু তবুও কাউকে দেখতে পেলো না, আদিত্য আরও এগিয়ে যাচ্ছিল হটাৎ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ড্রাইভারটি তার হাত টেনে আটকালো, আদিত্য অবাক হয়ে তার দিকে তাকালো তারপর তার দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখলো একদিক থেকে একজন টলতে টলতে এগিয়ে আসছে বোঝাই যাচ্ছে সে নেশাগ্ৰস্ত কিছুটা এসে হোমস্টের গেটের কাছে একটা বড়ো গাছের গোড়ায় প্রস্রাব করার জন্য তৈরি হচ্ছে।
আদিত্য আর দেরী করলো না সঙ্গী ড্রাইভারকে ওখানে দাঁড়াতে বলে একাই পা টিপে টিপে এগিয়ে গেলো সামনের লোকটা টেরই পায়নি সে তার কাজ সবে শুরু করেছে এমন সময় পিছন থেকে আদিত্য তার একেবারে কাছে গিয়ে বা-হাতে তার মুখ চেপে ধরে ডানহাতের চেটো দিয়ে লোকটার মাথার পিছনে যেখানে মস্তিষ্ক থাকে সেখানে সজোড়ে আঘাত করলো সঙ্গে সঙ্গে সে জ্ঞান হারালো আদিত্য আসতে আসতে ওকে শুইয়ে দিয়ে ইশারায় ড্রাইভারকে ডেকে এগিয়ে গেলো, একটু এগোতেই একটা অস্পষ্ট আওয়াজ শুনতে পেলো কারা যেন হাসিঠাট্টা করছে।
শব্দ যেদিক থেকে আসছে সেদিকে এগিয়ে গিয়ে আড়াল থেকে দেখলো একটা জায়গায় একটা রুমের সামনে দুজন লোক আগুন জ্বালিয়ে তার সামনে বসে আছে ওদের সামনে কয়েকটা বোতল আর গ্লাস রাখা ওগুলো যে কিসের সেটা বুঝতে বাকি র‌ইলো না আদিত্যর। এবার একটু ফাঁপড়ে পড়লো আদিত্য কারণ একসাথে একসঙ্গে এদের দুজনকে মারতে পারবে না আর একজনকে মারলে অপরজন বেঁচে যাবে আর সঙ্গে সঙ্গেই সে এখানে তার বাকি সঙ্গীদের সতর্ক করার চেষ্টা করবে।
আদিত্য একটু দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলো কি করবে এমন সময় তআর সঙ্গী ড্রাইভারটি তার সমস্যা সমাধান করে দিল সে বললো "সাব আপনি একটাকে ধরুন আমি অপরটাকে ধরছি", আদিত্য প্রথমে তার কথা শুনে একটু অবাক হলো কিন্তু এটাও বুঝলো এইমুহূর্তে এছাড়া উপায় নেই। দুজনে আস্তে আস্তে ওদের কাছে গিয়ে একসাথে দুজনে ঝাঁপিয়ে পড়লো একটা করে মোক্ষম আঘাতেই দুজনে শুয়ে পরলো। দুজনে উঠে একটা হাঁফ ছেড়ে এগোতে যাবে এবার আবার একটা অস্ফুট আওয়াজ এলো তবে এটা কারো কথা বলার নয় কেই যেন ফুঁপিয়ে কাঁদছে একটা মেয়ের গলা চমকে উঠলো আদিত্য তবে কি প্রীতি?
আরেকটু ভালো করে শুনতেই বুঝতে পারলো আওয়াজটা আসছে সামনের রুমগুলোর একটা থেকে যার সামনে ওরা তিনজন বসে মদ খাচ্ছিল, তাড়াতাড়ি সেদিকে এগিয়ে গেল ওরা দুজন প্রতিটা রুমের দরজায় কান পেতে শুনতে থাকে এভাবে একটা দরজায় এসে থেমে যায় আদিত্য, ভালো করে শুনে বুঝতে পারে এটার ভিতর থেকেই আসছে আওয়াজটা, আদিত্য দেখলো দরজা বন্ধ থাকলেও তালা দেওয়া নেই শুধু বাইরে থেকে আটকানো আছে বোধহয় বাইরে পাহারা ছিল বলেই ওরা তালা লাগায়নি।
আদিত্য দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই কয়েকজন যুবতী মেয়েকে দেখতে পেলো, ঘরের মধ্যে একটা হাল্কা নীল রঙের নাইট বাল্ব জ্বলছে তাতে বুঝলো মেয়েগুলোর প্রত্যেকের বয়স প্রীতির মতোন‌ই এবং ওরাও কোনো কারনে আদিত্যকে দেখে ভয় পেয়ে গুটিসুটি হয়ে একজায়গায় জড়ো হয়ে বসে আছে, এদেরই কেউ কাঁদছিল এখন আদিত্যকে দেখে কান্না থামিয়েছে, খুব ভালো করে দেখেও আদিত্য ওদের মধ্যে প্রীতিকে দেখতে পেলো না।
"তোমরা কারা, আর এখানে কি করছো?" শান্ত আর আস্তে জিজ্ঞেস করে আদিত্য,মেয়েগুলো প্রথমে নিজেদের মধ্যে পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো কিন্তু মুখে কিছু বললো না। আদিত্যর বুঝতে বাকি র‌ইলো না যে ওদের ভয় এখনো কাটেনি তাই সে আবার বললো "দেখো তোমাদের ভয়ের কিছু নেই, তোমাদের কি কেউ এখানে ধরে এনেছে?"
এবার একজন মেয়ে এগিয়ে এলো সেও আস্তে আস্তে বললো "আপনি কে?"
"এখানে আমাকে সবাই আদিত্য সিংহ রায় নামে চেনে"
একথা শোনার পরে মেয়েগুলো আবার পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো তারপর আগের মেয়েটি বললো "আমাদের এখানে ধরে এনে বন্দী করে রেখেছে"
"কে ধরে এনেছে?"
"কয়েকজন লোক তবে ওরা অন্য কারো কথায় করেছে যাকে ওরা বস বলে ডাকে"
"আচ্ছা তোমরা এখানে অন্য কোনো মেয়েকে দেখেছো, তোমাদের‌ই মতো বয়স ফর্সা আমার বোন ওকে আজকেই ধরে আনা হয়েছে"
"না, আজ আমাদের সাথে কোনো নতুন মেয়ে আসেনি, আপনি আমাদের বাঁচান প্লিজ" বলতে বলতে মেয়েগুলো আবার কান্না শুরু করলো, সঙ্গে সঙ্গে আদিত্য ওদের আওয়াজ করতে বারণ করে, "আচ্ছা আচ্ছা রিল্যাক্স তোমাদের কারো কিচ্ছু হবে না"
এবারে মেয়েগুলো কান্না থামায়,আদিত্য আবার বলে "কিন্তু আমাকে আমার বোনকে খুঁজতে হবে, তোমরা ওর সাথে যাও" বলে পাশে ড্রাইভারকে দেখায়, তারপর তার উদ্দেশ্যে বলে "তুমি ওদের নিয়ে এখান থেকে চলে যাও আর ওদের সবাইকে ওদের ঘরে পৌঁছে দাও"
"কিন্তু সাব আপনি?"
"এখানে বাকিটা আমি সামলে নেবো, যাও"।
প্রত্যেকে আস্তে আস্তে বেরিয়ে এলো তারপর সাবধানে চারপাশে নজর রেখে হোমস্টের গেটের কাছে এসে আদিত্য ওদের চলে যেতে বলে নিজে আবার ভিতরে ঢুকে গেল। মেইন কটেজটার দরজা ঠেলতেই খুলে গেল সে আস্তে আস্তে ভিতরে ঢুকলো এখানেও এক‌ইরকম হালকা নীল রঙের আবছা আলোয় ভরে আছে, আবছা আলোতেই আদিত্য বুঝতে পারলো যে জায়গাটা বাইরে থেকে যতটা ভেবেছিল তার থেকে বেশ কিছুটা বড়ো একটা রিসেপশনের মতো ডেস্ক‌ও চোখে পরলো কিন্তু কাউকে দেখতে পেলো না সে পা টিপে টিপে আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছে, ডানদিকে তাকাতে দুটো দরজা দেখতে পেলো।
আদিত্য যথাক্রমে দুটো দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে ভালো করে দেখে নিল কেউ নেই এবার আবার মোবাইলে ট্রেসারটা দেখে, হ্যাঁ এখনও এখানেই দেখাচ্ছে কিন্তু কোথায়? দ্বিতীয় রুমটা থেকে বেরিয়ে এসে ভাবছে কোনদিকে যাবে ভাবছে তখনই রিসপশনের পাশে উপরে যাওয়ার সিঁড়ি দেখতে পায় ও সেদিকে এগিয়ে গেল।
দোতলায় উঠে একটা করিডর যেখানে একদিকে বাইরের দৃশ্য দেখার জায়গা আর অপরদিকে কয়েকটা ঘর যেগুলো এখন বন্ধ এরকমই একটা রুমের বাইরে একটা ছোটো টেবিল আর দুটো খালি চেয়ার আছে, টেবিলের উপরে কয়েকটা বোতল আর গেলাস আর একটা জলের জগ। আদিত্য আসতে আসতে রুমটার দিকে এগোতে থাকে হঠাৎ পিছনে একটা হাল্কা পদশব্দ শুনে চকিতে পিছনে ফেরে এবং সঙ্গে সঙ্গে অটোমেটিক রিফ্লেক্সে বাহাতটা উপরে তুলে মাথার সামনে আনে, যদি এটা না করতো বা করতে এক সেকেণ্ড দেরী হতো তাহলে একটা কাঁচের বোতল তার মাথায় লাগতো তার বদলে এখন সেটা আদিত্যর হাতে লেগে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পরে, পরক্ষণেই অপর একজনের লাথি খেয়ে কয়েকপা পিছিয়ে আসে আদিত্য, তার হাত থেকে রক্ত পড়ছে কিন্তু সে জানে এখন সেদিকে নজর দেওয়ার সময় নেই কারণ তার সামনে এখন দুজন প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড়িয়ে আছে।
প্রথমে একজন এগিয়ে এলে আদিত্য আঘাতটা এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয় এবার দ্বিতীয় জন এলে তার আক্রমণ‌ থেকেও নিজেকে বাঁচিয়ে নেয়, সম্ভবত নেশা করার জন্যই এদের আঘাতগুলো ঠিক হচ্ছে না, এবার আদিত্য ওদের পরের আক্রমণ করতে সুযোগ না দিয়ে নিজেই আক্রমণ চালায় এবং একজনের তলপেটে একটা লাথি আর অপরজনের চোয়ালে একটা পাঞ্চ এতেই দুজন লুটিয়ে পড়ে কিন্তু প্রায় পরক্ষণেই পিঠে একটা লাথি খেয়ে সামনের টেবিলের উপরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে আদিত্য,সঙ্গে সঙ্গে সে উঠে ঘুড়ে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই একসাথে অনবরত লাথি ঘুষি পড়তে থাকে প্রথমে হাত দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করলেও ব্যার্থ হয়, অবশেষে একটা ঘুষি খেয়ে মেঝেতে ছিটকে পড়ে সে।
"আরে আমি তো ভাবতেই পারছি না, দেখো সবাই কে এসেছে এখানে... মিস্টার আদিত্য সিংহ রায় উপস্ সরি নকল আদিত্য সিংহ রায়"
পরিচিত কণ্ঠস্বর শুনেও খুব একটা চমকায় না আদিত্য যেন সে এটাই প্রত্যাশা করেছিল, দুজন শক্ত হাত তাকে টেনে তুলে দাঁড় করায় এবং সে দেখে সামনে মলয় দাঁড়িয়ে আছে ওর মুখে ক্রুর হাসি।
"ওকে নীচে নিয়ে চলো"
কথাটা শুনে যে দুজন আদিত্যকে ধরে আছে তারা টানতে টানতে ওকে নীচে নিয়ে চলে যদিও আদিত্য বাধা দেওয়ার চেষ্টাও করে না। নীচে এসে ঘরের আবছা আলো-অন্ধকারে আদিত্য দেখে সেখানে মনোহরবাবু‌ও আছেন এবং ওকে ঘিরে অ্যাসল্ট রাইফেল হাতে দাঁড়িয়ে আছে আরও জনা চারেক গুণ্ডা প্রকৃতির লোক।
"বাবা দেখো এই আমাদের সব পাখিকে উড়িয়ে দিয়েছে" নীচে এসে মলয় তার বাবার উদ্দেশ্যে বলে,
"তাহলে দেখছিস কি মার ওকে, পেটানো শুরু কর" হিংস্র কণ্ঠে আদেশ করেন মনোহরবাবু। কথাটা বলতে যতক্ষণ লাগলো সঙ্গে সঙ্গেই আদিত্যকে ধরে থাকা দুজন আর মলয় তিনজনে একসাথে মারতে লাগলো একটা সময় আদিত্য নীচে উবুড় হয়ে র‌ইলো আর ওরা ক্রমাগত লাথি মারতে থাকে, একটা সময় থামে ওরা আর দুজন আদিত্যকে তুলে ওদের সামনে হাঁটু মুড়ে বসায়, আদিত্যর ঠোঁটের কোণ থেকে রক্ত পরছে সে কোনোমতে বলে "প্রীতি কোথায়?"
মনোহরবাবু যেন একটু অবাক হন তারপর একটা ক্রুর হাসি হেসে বলেন "তার খবর জেনে কি করবি? তোর কি মনে হয় তুই ওকে এখান থেকে বের করে নিয়ে যেতে পারবি?"
"আপনার লজ্জা করে না, ও তো আপনার দাদার মেয়ে আপনার‌ও মেয়ের মতো"
"বিজনেসে এসব দেখলে চলে না, ওর মতো মেয়েদের খুব ডিমান্ড মার্কেটে ভালো দাম পাওয়া যায়"
"কি ভেবেছেন আপনি এসব করে বেঁচে যাবেন?"
"কে ধরবে আমাকে তুই? তোকে তো আজ‌ই মেরে এখানে কোথাও পুঁতে রেখে দেবো আমার ব্যাবসায় কত বড়ো ক্ষতি করেছিস তুই জানিস, যাদের তুই ভাগিয়ে দিয়েছিস তাদের দাম কত ছিল?"
কথাটা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে একটা লাথি আসে মলয়ের পা থেকে আবার কোনোমতে উঠে বসে আদিত্য, "মনোহরবাবু হিংস্র কণ্ঠে বলেন "তোর জন্য আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে তোকে কুচি কুচি করে কাটবো শূয়োর"
"প্রীতি তো আপনার কোনো ক্ষতি করেনি"
"বললাম যে এটা ব্যাবসা আর এই ব্যাবসার জন্য আমি সবকিছু করতে পারি খুন‌ও, তোকেও মারবো ঠিক যেভাবে সুবিমল চক্রবর্তীকে মেরেছি ঠিক যেভাবে আদিত্যকে মেরেছিলাম"
এবার একটু চমকে ওঠে আদিত্য সে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মনোহরবাবুর দিকে, একটু পরে বলে "আদিত্য তো অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায়?"
হো হো করে হেসে ওঠেন মনোহরবাবু তারপর হাসি থামিয়ে বলেন "সেরকমই তো আমি চেয়েছিলাম"
 আদিত্যর মনে হয় এই মনোহরবাবু অন্য একজন লোক একজন মনুষ্যরূপী পিশাচ সে বলে "কিন্তু কেন? আদিত্যকে মারলেন কেন?"
"আদিত্য আমাদের সম্পর্কে না জানলেও আমার গ্যাংটকের যে গ্যাংটা ওখানকার কারবার দেখতো সেই গ্যাংএর কয়েকজন লোকের ব্যাপারে জেনে গিয়েছিল আর ওরা ধরা পরলে পুলিশ আমাদের ধরে ফেলতে পারতো তাই ওকে সরানোর দরকার ছিল, আদিত্য জানতো না যে আমি ওই গ্যাংএর হেড তাই ওর কাছে যেতে সুবিধাই হয়েছিল কারণ ও আমাকে চিনতো ও জানতো আমি তো ওর কাকা, তারপর আর কি ওকে মেরে গাড়িটা খাদ থেকে নীচে ফেলতে কতক্ষণ যাতে সবাই ভাবে যে অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে"
"শয়তান" এই আদিত্য প্রায় গর্জন করে ওঠে, কিন্তু আবার একটা লাথি এসে পরে। মনোহরবাবু বলে চলেন "তুই আমার অনেক লোকসান করে দিলি এবার তার ফল ভোগ করবে ওই প্রীতি ওকে আমি নীলামে তুলবো, যদিও তুই দেখতে পারবি না, মলয়" একটা হুংকার ছাড়েন মনোহরবাবু "ওকে শেষ করে দে"
"একটা কথা বলুন" আদিত্য জিজ্ঞেস করে,
"কি কথা?"
"সুবিমলবাবুকে মারলেন কেন?"
"ওই এক‌ই কারণ আমাদের ব্যাপারে জেনে গিয়েছিল তাই"
"আমাকে ফাঁসিয়েছিলেন কেন?"
"তোকে রাস্তা থেকে সরানোর জন্য ভেবেছিলাম তোকে নিজের হাতে মারবো না আমি জানতাম নীলাদ্রি তোকে সন্দেহ করছে তাই ওর কাছে তোর ব্যাপারে বলে এলাম কিন্তু তোর কপালে আমাদের হাতেই মরা লেখা আছে কি করা যাবে, মলয়"
কথাটা শুনে মলয় একটা পিস্তল বার করে আদিত্যর কপালে ঠেকায় আর যে দুজন এতক্ষণ আদিত্যর পিছনে দাঁড়িয়ে ছিল তারা ওকে ছেড়ে মলয়ের পিছনে গিয়ে দাঁড়ায়, মলয় পিস্তলের ট্রিগারে চাপ দিতে যাবে এমন সময় দরজার দিকে একটা অস্ফুট আওয়াজ আসে আর মলয় সহ সবাই সেদিকে তাকায় আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগায় আদিত্য চোখের পলকে মলয়ের হাত থেকে পিস্তলটা কেড়ে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে একহাতে পিছন থেকে মলয়ের গলাটা ধরে ওর মাথায় পিস্তল ঠেকায়।
"বাবা" মলয়ের মুখ থেকে একটা ভয়ার্ত আওয়াজ বেরিয়ে আসে আর ওদিকে সবাই দরজার দিক থেকে ফিরে মলয়ের দিকে তাকায় অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই মনোহরবাবুর সাথে থাকা চারজন রাইফেল উঁচিয়ে ধরে কিন্তু আদিত্য মলয়কে নিজের গার্ড হিসেবে সামনে ধরে থাকায় ওরা রাইফেল চালাতে পারে না। এইসময় হটাৎ‌ই দরজা দিয়ে আদিত্যর সঙ্গে আসা ড্রাইভারটি এবং যেসব মেয়েদের আদিত্য উদ্ধার করেছিল তারা ভিতরে ঢুকে আসে প্রত্যেকের হাতে একটা করে লম্বা চ্যালাকাঠ এবং ওরা ওই চারজন রাইফেলধারীর উপরে আক্রমণ করে এবং চ্যালাকাঠ দিয়ে বেদম পেটাতে শুরু করে এই অতর্কিত আক্রমণে ওই চারজন রাইফেল চালানোর সুযোগ পায় না।
ওদের দেখে আদিত্য‌ও মুহূর্তের জন্য হতবাক হয়ে যায় আর এই সুযোগে মলয় আদিত্যর পেটে কনুই দিয়ে আঘাত করে ফলে আদিত্য দুপা পিছিয়ে যায় আর মলয় আদিত্যর হাতের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে যায়। এবার মলয়ের পিছনে থাকা দুজনের একজন আদিত্যর হাতে একটা লাথি মারায় হাত থেকে পিস্তলটা ছিটকে পড়ে যায়, এবার দ্বিতীয়জন লাথি মারতে গেলে আদিত্য তার পা ধরে হাঁটুর উপরে নিজের কনুই দিয়ে সজোড়ে আঘাত করে লোকটা একটা আর্তনাদ করে বসে পড়ে, মলয় মারতে এগিয়ে আসলেও নিজের থুতনিতে একটা আপারকাট পাঞ্চ খেয়ে ছিটকে পড়ে আর সঙ্গে সঙ্গে সেই মেয়েগুলোর একজন এসে ওকেও পেটাতে শুরু করে অবশ্য তাদের একজন আগেই মনোহরবাবুকেও পেটানো শুরু করেছে। আর বাকি দুজন উঠে আবার আদিত্যর দিকে এগোয় কিন্তু এবার আদিত্য‌ প্রস্তুত থাকে তাই ওদের সাথে লড়তে খুব একটা বেগ পেতে হয় না, একজন হাঁটুতে আবার লাথি খেয়ে আর্তনাদ করে পরে যায় তবে এবার আঘাতটা আগের থেকে জোরে হয় তাই সে উঠতে পারে না , আর অপরজন লড়াই চালিয়ে গেলেও বেশিক্ষণ থাকতে পারে না হটাৎ আদিত্য লাফিয়ে তার ব্রহ্মতালুতে নিজের কনুই দিয়ে সজোরে আঘাত করে সেও লুটিয়ে পড়ে এবার আদিত্যর সঙ্গে আসা ড্রাইভারটি এগিয়ে আসে এবং সেও এই দুজনকে পেটানো শুরু করে।
বেশ কিছুক্ষণ পরে সবাই শান্ত হয় ততক্ষণে মনোহরবাবু মলয় আর ওদের সঙ্গীরা সবাই নিস্তেজ হয়ে পড়ে থাকে। আদিত্য ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করে "কি ব্যাপার তোমরা এখানে?"
"সাব আমরা চলেই যাচ্ছিলাম কিন্তু দেখলাম ওরা এখানে ঢুকলো তখন আপনাকে একা রেখে যেতে পারলাম না তাই ওদের বুঝিয়ে ভিতরে চলে এলাম বাইরে যে তিনজন ছিল ওদের বেঁধে রেখে এসেছি পালাতে পারবে না"
"থ্যাংকস, এক কাজ করো এদের‌ও বেঁধে ফেলো, আমি এখানে আসার আগে পুলিশকে জানিয়ে এসেছিলাম পুলিশ যেকোনো সময় চলে আসবে আর দুজন উপরে আছে ওদের কেও বাঁধতে হবে"
"জি সাব"
আদিত্য আবার উপরে চলে গেল সেখানে গিয়ে দেখে দুজন তখনও অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে, ড্রাইভারটি ওদের বাঁধতে থাকে আর আদিত্য‌ একটা রুমের ভিতরে ঢোকে এই রুমের সামনেই ওরা পাহারা দিচ্ছিল। ভিতরে ঢুকেই আদিত্যর ভয়ে বুকটা ধড়াস করে উঠলো সামনে মেঝেতে প্রীতি শুয়ে আছে সে তাড়াতাড়ি ওর কাছে যায়,
"প্রীতি, বোন চোখ খোল.... দেখ তোর দাদা এসেছে"
কিন্তু প্রীতি চোখ খোলে না, তবে আদিত্য দেখে আশ্বস্ত হয় যে প্রীতির নাড়ির স্পন্দন আছে তারমানে ও বেঁচে আছে, আদিত্য দুহাতে ওকে কোলে তুলে বেরিয়ে আসে, সবাই যখন একদম বাইরে বেরিয়ে আসে তখন ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে আর তখনই হোমস্টের গেটের সামনে এসে দাঁড়ায় একটা গাড়ি আর একটা পুলিশ ভ্যান, গাড়ি থেকে নেমে ওদের দিকে ছুটে আসে নীলাদ্রি, অতীন্দ্রবাবু আর অদ্রিজা আর ওদের পিছনে শশাঙ্ক বাবু আর ভ্যান থেকে বেশ কয়েকজন পুলিশ কনস্টেবল, ওরা এসেই প্রীতির কাছে আসে
"অ্যাজ ইজুয়াল" ওদের দেখে বলে ওঠে আদিত্য।
"মানে" নীলাদ্রি জিজ্ঞেস করে,
"এই যে সবশেষেই পুলিশের আসার রেকর্ড, এটার কথাই বলছি একটু আগে এলে কি ক্ষতি হতো?"
"আসলে, আমরা আগেই আসছিলাম কিন্তু মাঝরাস্তায় গাড়িটা খারাপ হয়ে যায় তাই লেট হয়ে যায়"
"কিন্তু প্রীতি, প্রীতি কেমন আছে?" অতীন্দ্রবাবুর গলায় আতঙ্ক
"প্রীতি ঠিক আছে তবে বোধহয় অজ্ঞান হয়ে আছে, এই তো মিস চক্রবর্তী দেখুন একবার"
আদিত্য গিয়ে গাড়ির সিটে প্রীতিকে শুইয়ে দেয়, তারপর নীলাদ্রির কাছে আসে ততক্ষণে বাকি মেয়েরা ভিতর থেকে সবাইকে বেঁধে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে আসে সেটা দেখে নীলাদ্রি জিজ্ঞেস করে "ওরা কারা?"
"যারা বেঁধে আনছে তাদের‌ও প্রীতির মতো কিডন্যাপ করে আনা হয়েছিল পাচার করার উদ্দেশ্যে আর যাদের আনছে তারাই মেইন কালপ্রিট শশাঙ্ক বাবু আপনি প্লিজ ওই মেয়েদের ওদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন"
"মনোহর, মলয় তোরা?" অতীন্দ্রবাবু যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না, তিনি বলে চলেন "তোমরা একাজ করেছো,বিশ্বাসঘাতক তোমরা আমার মেয়ের ক্ষতি করতে চেয়েছিলে আমি তোমাদের ছাড়বো না"।
"শুধু তাই নয় স্যার আদিত্যকে ওরাই মেরেছিল ওটা অ্যাক্সিডেন্ট ছিল না অ্যাক্সিডেন্টের রূপ দেওয়া হয়েছিল"
"কি?"একসাথে নীলাদ্রি এবং অতীন্দ্রবাবু বলে ওঠেন, "কি বলছেন আপনি" নীলাদ্রি বলে ওঠে।
"হ্যাঁ মিস্টার সান্যাল, এটাই সত্যি, ওরাই আপনার বেস্টফ্রেণ্ডকে মেরেছে আমি নয়"
"কিন্তু.." নীলাদ্রির গলায় তখনও অবিশ্বাস সেটা আন্দাজ করেই বোধহয় আদিত্য‌ বলে "প্রমাণ আছে মিস্টার সান্যাল"
"কি প্রমাণ?" এই কথাটা অবশ্য নীলাদ্রি নয় বলে মনোহরবাবু, ঠেঙানি খেয়ে তার অবস্থা ভালোই কাহিল হয়েছে কিন্তু তবুও তাদের তেজ কমে না, আদিত্য‌ ওদের দিকে ফিরে বলে "প্রমাণ আছে মনোহরবাবু প্রমাণ আছে"
"কি প্রমাণ?"
"কেন আপনার কনফেশন, ভিতরে আমাকে মারতে চাওয়ার আগে আপনি কনফেশ করেছিলেন ভুলে যাচ্ছেন?"
মনোহরবাবু ওই অবস্থাতেও হাসতে থাকেন, তারপর বলেন "কিন্তু সেটা প্রমাণ করবি কিভাবে? কোর্টে আমি বলবো তুই মিথ্যা কথা বলছিস"। নীলাদ্রির আর সহ্য হয় না সে দ্রুত পায়ে মনোহরবাবুর কাছে গিয়ে ওর কলার টেনে ধরে বলে "স্বীকার আমি করাবো, আপনাদের মুখ থেকে"
"চেষ্টা করে দেখুন নীলাদ্রি বাবু"
"রিল্যাক্স মিস্টার সান্যাল আপনার কাজ আমি সহজ করে দিচ্ছি"
আদিত্যর কথা শুনে নীলাদ্রি ঘুরে দাঁড়ায় আদিত্য তখন নিজের পকেট থেকে মোবাইল বার করে একটা ভিডিও চালিয়ে নীলাদ্রির হাতে দেয় সেটা যে মনোহরবাবুর কনফেশনের ভিডিও সেটা বুঝতে কারো বাকি থাকে না এমনকি মনোহরবাবু নিজেও হতবাক হয়ে আদিত্যর দিকে তাকায়, আদিত্য‌ সেটা বুঝতে পেরে নিজের জামার একটা বোতাম খুলে নীলাদ্রির হাতে দেয়,নীলাদ্রি অবাক চোখে দেখে সেটা বোতাম নয় একটা মিনিক্যামেরা, সেটা নীলাদ্রির হাতে দিয়ে আদিত্য বলে " আমি জানতাম প্রীতিকে কিডন্যাপ করার পিছনে এদের হাত আছে তাই আসার সময় ক্যামেরাটা জোগাড় করে নিয়ে এসেছিলাম ভেবেছিলাম এদের বিরুদ্ধে কিছু তো প্রমাণ পাবো কিন্তু যে এতটা পাবো সেটা আশা করিনি যাইহোক ফরেনসিক টেস্টে এটা প্রমাণিত হয়ে যাবে যে এই ভিডিও এডিটেড নয় ওরিজিনাল, মিস্টার সান্যাল এর পরের কাজ আপনার"।
এইসময় অদ্রিজা গাড়ি থেকে বেরিয়ে এলে সবাই তার দিকে তাকায় সে বলে "প্রীতি ঠিক আছে তবে মোস্ট প্রোবাবলি কোনো ড্রাগের এফেক্টে অজ্ঞান হয়ে আছে, ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটা বেটার হবে" তারপর আদিত্যর দিকে তাকিয়ে বলে "আপনার হাত থেকে তো ব্লিডিং হচ্ছে" বলে এগোতে যেতেই আদিত্য‌ হাত উঁচিয়ে বাধা দেয় বলে "ইটস্ ওকে আয়্যাম ফাইন", আদিত্য‌ পকেট থেকে রুমাল বের করে হাতে জড়িয়ে নেয়।
"আদিত্য‌" অতীন্দ্রবাবু এগিয়ে আসেন "আমি সত্যিই লজ্জিত কারণ"
"কেন স্যার? আপনার লজ্জা পাওয়ার কিছু হয়নি"
"হয়েছে, আমি মুহুর্তের জন্য হলেও..."
"ওসব কথা এখন থাক, শশাঙ্কবাবু আপনার সাথে যেসব কনস্টেবল এসেছে তারা বিশ্বস্ত?"
"হ্যাঁ, কেন বলতো?"
"তাহলে এক কাজ করুন ওদের বলুন প্রীতি কে হাসপাতালে নিয়ে যেতে সাথে এদের‌ও পাঠিয়ে দিন আর আপনি, নীলাদ্রি বাবু, স্যার আর মিস চক্রবর্তী একটু আমার সাথে চলুন"
"কোথায়?"
"একটা জায়গায়, আপনি চাইলে কয়েকজন কনস্টেবলকে সঙ্গে নিতে পারেন"
নীলাদ্রি তখন কনস্টেবলগুলোকে  অর্ডার করে "তোমরা ওদের নিয়ে যাও আর যদি কেউ কোনো গোলমাল করে বা পালানোর চেষ্টা করে তো এনকাউন্টার করে দেবে বাকিটা আমি বুঝে নেবো"।
হোমস্টে ছেড়ে কিছুদূর একসাথে চলে তারপর আদিত্যরা অন্য একটা রাস্তা নেয় আদিত্য যে গাড়িতে করে এখানে এসেছিল সেটায় আদিত্য, অতীন্দ্রবাবু আর অদ্রিজা আছে, আর তার পিছনে অপর গাড়িতে শশাঙ্ক বাবু এবং নীলাদ্রি। বেশ কিছুক্ষণ চলার পর জঙ্গলের ভিতরে একটা ছোটো কটেজ টাইপের বাড়ির সামনে এসে থামে তারা, গাড়ি থেকে নেমে নীলাদ্রি জিজ্ঞেস করে "এখানে কেন আনলেন আমাদের, কি আছে এখানে?"
কিন্তু আদিত্য কিছু বলার আগেই সবাই একটা কুকুরের ডাক শুনে চমকে ওঠে দেখে একটা বিরাট কালো কুকুর দৌড়ে আসছে ওদের দিকে, সে এসেই পিছনের দুপায়ে ভর দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে সামনের দুটো পা সোজা আদিত্যর উপরে তুলে দেয়। "বাদশা" নীলাদ্রির অবাকভাব বেড়ে যায়, যাকে সে এতদিন হন্যে হয়ে খুঁজছিল সেই বাদশা এখানে ছিল, এখন সে নিশ্চিত যে এই কটেজে কিছু আছে যাকে পাহারা দেবার জন্যই আদিত্য‌ বাদশাকে এখানে রেখেছিল।
"আমরা এখানে কেন এসেছি আদিত্য‌?" প্রশ্নটা করেন অতীন্দ্রবাবু,
"বলেছিলাম না স্যার যে নর্থবেঙ্গল ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে আমার একটা কাজ বাকী রয়েছে সেটা সারতেই এখানে এসেছি"
"কি কাজ?"
"একটা দায়িত্ব যেটা আমার কাঁধে ছিল এখন সেটা আপনাদের দিয়ে দিলেই আমার ছুটি, আসুন"
সবাই মিলে ভিতরে গেল একটা রুমের সামনে এক প্রৌঢ়কে দেখে অতীন্দ্রবাবু বলেন "হরি দা তুমি এখানে?"
"ওনাকে আমি এনেছিলাম স্যার"
"তুমি?"
"হ্যাঁ"
"কিন্তু কেন?"
"সেটা রুমের ভিতরে গেলেই বুঝতে পারবেন, মিস চক্রবর্তী আপনি আগে ভিতরে যান, তবে শক্ লাগতে পারে তাই নার্ভের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাবেন না"।
প্রথমে অদ্রিজা আর তারপর বাকিরা ভিতরে ঢুকলো আর ঢোকামাত্র‌ই সবার চক্ষু চড়কগাছ কারণ রুমের ভিতরে একটা বেডে পিছনে হেলান দিয়ে বসে আছেন ডক্টর সুবিমল চক্রবর্তী, তার পেটের কাছে একটা জায়গায় ব্যাণ্ডেজ বাঁধা।
"বাপি" অদ্রিজা প্রায় পরেই যাচ্ছিল কোনোমতে নিজেকে সামলিয়ে একছুটে নিজের বাপির কাছে যায়,কাঁদতে কাঁদতে বলে "বাপি তুমি বেঁচে আছো"
"হ্যা রে মা তবে আদিত্য না থাকলে বোধহয় বাঁচতাম না"
সবাই আদিত্যর দিকে তাকায় কিন্তু আদিত্যর বদলে সুবিমলবাবুই বলতে থাকেন,
"সেদিন আমার এক পরিচিত পেশেন্টের বাড়ি থেকে ফিরছিলাম হটাৎ রাস্তায় আমার গাড়ির উপরে একজন হুমড়ি খেয়ে পড়ে, ঠিক সময়ে ব্রেক মারায় অ্যাক্সিডেন্ট হয় না তবে লোকটাকে দেখে আমি চিনতে পারি উনি প্রতাপ সরকার দেখে আশ্চর্য হয়ে যাই যে উনি ভয়ার্ত এবং আহত উনিও আমাকে চিনতে পারেন আমার কাছে এসে আমাকে বলেন ওনাকে বাঁচাতে ওনাকে কেউ মারতে চাইছে, ওনার অবস্থা দেখে বুঝতে পারি যে উনি প্রচণ্ড ভয় পেয়েছেন তাই ওনাকে গাড়িতে তুলে নি‌ই, একটু পরেই বুঝতে পারি যে উনি সত্যি কথাই বলছিলেন কারণ আমাদের পিছনে তখন আরও একটা গাড়ি ধাওয়া করে আসছে, আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না অতীন্দ্র‌ও তখন শহরে ছিল না আর কথা মনে পরা মাত্রই আমি উপায় খুঁজে পাই তখনই আমি আদিত্যকে ফোন করি কিন্তু বেশি কিছু বলার আগেই পিছনের গাড়ি থেকে একটা গুলি এসে আমার গাড়ির টায়ার ফাটিয়ে দেয়,তখন আমি প্রতাপবাবুকে নিয়ে বজরঙবলি মন্দিরের পিছনে পালানোর চেষ্টা করি কিন্তু পারিনা কিছুটা যেতে না যেতেই ওরা ধরে ফেলে ওদের মধ্যে মনোহরবাবু আর মলয়‌ও ছিল। ওরা প্রথমে প্রতাপবাবুকে খুন করে আর তারপর আমাকে মারার চেষ্টা করে আমার ভাগ্য ভালো যে আদিত্য ওখানে চলে আসে ওখানে"।
"কিন্তু তুমি ওকে হাসপাতালে কেন নিয়ে গেলে না আদিত্য আর আমাদের কাউকে কিছু বললে না কেন?" অতীন্দ্রবাবু প্রশ্ন করেন। "কারণ স্যার হাসপাতালে ওনাদের লোক ছিল তাই আমার ভয় ছিল যে ওখানে গেলে কোনো না কোনো ভাবে ওরা সুবিমলবাবুকে শেষ করে ফেলবে তাই এখানে নিয়ে আসি হরিকাকাকেও নিয়ে আসি কারণ চিকিৎসা বিষয়ে ওনার যথেষ্ট জ্ঞান আছে আর কাউকে না বলার কারন‌ও এটাই ভেবেছিলাম আগে উনি সুস্থ হয়ে উঠুন তারপর সবাইকে বলা যাবে"।
বেশ কিছুক্ষণ পরে যখন অ্যাম্বুলেন্স ডেকে সুবিমলবাবুকে তাতে তুলে হাসপাতালের উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়া হলো তখন আদিত্যর মনে হলো এখন সে সত্যিই ভারমুক্ত হয়েছে, সে একটু দূরে একাকী দাঁড়িয়ে দেখছিল আর একহাতে বাদশার মাথায় বুলোচ্ছিল।
I'm the King of Dark
                &
I rule over all Devils
               devil2 devil2
[+] 8 users Like Monen2000's post
Like Reply


Messages In This Thread
"ধূসর পৃথিবী" - by Monen2000 - 11-12-2022, 01:47 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Mehndi - 17-12-2022, 01:10 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Monen2000 - 26-03-2023, 11:52 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by kublai - 10-05-2023, 02:46 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 29-05-2023, 05:43 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 31-05-2023, 08:58 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 02-06-2023, 10:56 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 04-06-2023, 09:56 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 06-06-2023, 11:49 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 10-06-2023, 09:33 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 11-06-2023, 10:57 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 14-06-2023, 02:02 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 15-06-2023, 08:50 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 17-06-2023, 08:52 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 18-06-2023, 10:26 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 20-06-2023, 12:46 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 23-06-2023, 09:41 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 25-06-2023, 02:35 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 26-06-2023, 01:00 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 26-06-2023, 01:12 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 26-06-2023, 09:57 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 27-06-2023, 06:42 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 28-06-2023, 09:40 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 30-06-2023, 10:41 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 02-07-2023, 11:34 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 02-07-2023, 12:29 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 02-07-2023, 04:41 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 03-07-2023, 10:33 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by guru1 - 03-07-2023, 03:31 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 04-07-2023, 12:06 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 08-07-2023, 04:22 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 08-07-2023, 11:39 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 09-07-2023, 12:50 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 11-07-2023, 11:32 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 12-07-2023, 09:57 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 12-07-2023, 10:18 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 15-07-2023, 09:49 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 15-07-2023, 10:37 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 18-07-2023, 12:07 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 18-07-2023, 08:42 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 22-07-2023, 10:14 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Ahid3 - 25-07-2023, 12:31 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 25-07-2023, 08:54 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 25-07-2023, 09:01 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 26-07-2023, 08:25 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 30-07-2023, 11:48 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by pratim - 05-08-2023, 10:31 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 07-08-2023, 07:51 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by kublai - 15-08-2023, 05:12 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 19-08-2023, 02:07 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 22-08-2023, 05:38 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 03-09-2023, 07:04 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by pratim - 03-09-2023, 04:00 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Saj890 - 18-05-2024, 05:13 PM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)