Thread Rating:
  • 99 Vote(s) - 2.82 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL "ধূসর পৃথিবী"
#19
[Image: Picsart-22-12-06-20-19-56-636.jpg]

     
                              

                    ১ম পর্ব

"দাদা, আমি তোর নিজের ভাই তুই আমার সাথে এরকম কেন করছিস?" একটা কান্না ও আকুতি ভরা যুবকের গলা ভেসে আসে, পাহাড়ি খাদের চারিদিকে রাত্রির অন্ধকার আলো বলতে আকাশে চাঁদের জোৎস্না, কিছুটা দূরে রুমটেকের বিখ্যাত মনাস্ট্রির অস্পষ্ট অবয়ব দেখা যাচ্ছে সেখানে যদিও আলো জ্বলছে কিন্তু চারিদিকের কুয়াশার জন্য যার আলোর প্রভা খাদের ধার পর্যন্ত আসেনি, কুয়াশার জন্য দশহাত দূরে কি আছে তা স্পষ্ট দেখা যায় না তার‌ই মধ্যে দুটো যুবকের সিল্যুয়েট মূর্তি পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে দাঁড়িয়ে আছে বলা ভুল তাদের মধ্যে একজনের বয়স ২১ এর মতো সে খাদের একদম ধারে খাদের দিকে পিছন ফিরে মাটিতে হাঁটু মুড়ে এক হাত মাটিতে ভর দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে আর অপরহাত মাথার পিছন দিকে ধরা, ঘাড়ের কাছে লাল রঙের যে তরলটা মাথার পিছন থেকে গড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে সেটা রক্ত ছাড়া আর কিছু হতেই পারে না অপরজন বয়সে একটু বড়ো ২২-২৩ বছর হবে সে প্রথম যুবকের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে তার হাতে একটা মিডিয়াম সাইজের পাথর সামনের যুবকটি মাটি থেকে কিছুটা উঠে দাঁড়াতেই আবার সজোড়ে পাথর দিয়ে কপালে আঘাত করে প্রথম যুবকটি একটা আর্তনাদ করে মাটিতে পড়ে যায় তার কপাল ফেটেও রক্ত বেরোতে থাকে, দুজনের গায়েই মোটা জ্যাকেট, একটু দূরেই মনাস্ট্রি থেকে একটা ভোঁ ভোঁ শিঙার আওয়াজ ভেসে আসছে তার সাথে ঝম ঝম করে ঝাঁঝের আওয়াজ এবং বেসুরো সানাইয়ের আওয়াজ ভেসে আসছে, খাদের আশেপাশে জনশূন্য।

"এরকম করিস না দাদা, আমি কি করেছি?" কুয়াশা ঘেরা অন্ধকারের মধ্যেই আবার আকুতি ভরা কণ্ঠস্বর ভেসে আসে। "কি করেছিস? তুই ওই মেয়েটাকে বিয়ে করতে চাইছিস যাকে আমি ভালোবাসি আর তুই বলছিস তুই কি করেছিস?" আগের যুবকের প্রশ্নের উত্তরে আরেকটা যুবকের হিংস্র গলা শোনা যায়।
"কিন্তু দাদা ও তো আমাকে ভালোবাসে" প্রথম যুবকটি আবার কাঁপা এবং করুণ স্বরে উত্তর দেয়। দ্বিতীয় যুবকটি এবার হো হো করে ক্রুরভাবে হেসে ওঠে একটু পর হাসি থামিয়ে বলে "তোর তাই মনে হয়? আচ্ছা ওকেই জিজ্ঞেস করে নে" কথাটা বলার সাথে সাথেই সেখানে এক তৃতীয় মূর্তির আবির্ভাব হয় তবে এটা একটা যুবতীর এর‌ও বয়স ওই ২০-২২ এর মধ্যেই গায়ে একটা জ্যাকেট, যুবতীটি এসে দুই যুবকের মাঝে দাঁড়ায়, কুয়াশার জন্য প্রথমটায় আসতে দেখতে পায়নি তাই প্রথম যুবকটি কিছুটা হকচকিয়ে যায়, তারপর যুবতীটির দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। "কি রে অনি এখন চুপ কেন? ওকেই জিজ্ঞেস কর যে ও তোকে ভালোবাসে না আমাকে?" দ্বিতীয় যুবকের বিদ্রুপাত্মক ধ্বনি শোনা যায়, এবার যুবতীটি মুখ খোলে তার উদ্দেশ্য দ্বিতীয় যুবক "এত কথার কি আছে বেবি? ও বেঁচে থাকলে আমরা কখনো একসাথে থাকতে পারবো না, তোমার পরিবার মানবে না"। "এরপরেও বলবি তুই কি করেছিস?" দ্বিতীয় যুবকটির কণ্ঠস্বর আবার হিংস্র হয়ে ওঠে।
"কিন্তু মৌ তুমি তো আমাকে ভালোবাসো"" অনি নামের যুবকটি কোনোমতে উঠে দাঁড়িয়ে কথাটা বলে, "আমি তোমাকে ভালোবাসি কে বলেছে? তোমার মতো ছেলেকে কোনো মেয়ে ভালোবাসতেই পারে না, তোমার মধ্যে সেরকম কোনো কোয়ালিটি নেই" যুবতীর গলার স্বর‌ও হিংস্র। অনি নামের যুবকটি প্রায় কেঁদে ফেলে, শেষ চেষ্টা করে বলে "দাদা আমি তোর ভাই, তুই আমার সাথে এরকম কিভাবে করতে পারিস? আচ্ছা তুই ওকে বিয়ে করতে চাস ঠিক আছে আমি তোদের মাঝে আসবো না, কিন্তু আমাকে মারিস না",  কিন্তু এতে বাকি দুজন মনে কোনো পরিবর্তন আসে না। "এভাবে হবে না" কথাটা বলেই যুবতীটি খাদের ধারে দাঁড়ানো যুবকটির দিকে দুপা এগিয়ে এসেই তাকে এক ধাক্কা মারে, টাল সামলাতে না পেরে প্রথম যুবকটি আঃ করে একটা আর্তনাদ করে উল্টে পড়ে যায়। চকিতে ঘটনাটা ঘটে যাওয়ায় দ্বিতীয় যুবকটি কিছুটা হতবিহ্বল হয়ে যায় সে বড়ো বড়ো চোখে যুবতীটির দিকে তাকিয়ে থাকে, যুবতীটি সেটা দেখে বলে "তুমি দেরী করছিলে তাই আমি করে দিলাম"। দ্বিতীয় যুবকটি একটু হেসে উত্তর দেয় "তা ঠিক করেছো কিন্তু এরপর কি করতে হবে মনে আছে তো মৌ?"।
"আছে" মৌ নামের যুবতীটি আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু একটা গোঙানির আওয়াজ পেয়ে দুজনেই চমকে ওঠে, নীচে খাদের দিকে তাকিয়ে দেখে খানিক আগেই ধাক্কা দিয়ে যাকে ফেলে দেয় সে আস্তে আস্তে উপরে উঠে আসার চেষ্টা করছে, খাদটা খাড়া নামেনি একটু ঢালু হয়ে নেমেছে মাঝে মাঝে কিছু ঝোপঝাড় আবার কখনো কখনো পাথর খামচে ধরে উঠে আসছে, আরও কিছুটা এগিয়ে আসতেই তার মুখটা দৃশ্যমান হয় উপরে থাকা দুজনের তারা অবাক হয়ে দেখে যে উঠে আসছে তার কপাল ফেটে রক্ত পড়ছে এছাড়াও গালে থুতনিতে কয়েক জায়গায় ছড়ে গেছে।
"দাদা, আমাকে বাঁচা দাদা আমি তোর ভাই অনি" বলতে বলতে যুবকটি প্রায় খাদের উপরে উঠে এসেছে কিন্তু একদম উপরের ধারে হাত রাখতেই উপরে থাকা দুজন নীচের যুবকটির দুটো হাত পা দিয়ে মাড়িয়ে ধরলো, নীচের যুবকটি ব্যাথায় একটা আর্তনাদ করে ওঠে। "তুই এখনো বেঁচে আছিস? তোকে মরতেই হবে" নিজের ডান পা দিয়ে নীচের যুবকটির বা হাতটা মাড়াতে মাড়াতে হিংস্র কণ্ঠে বলতে থাকে দ্বিতীয় যুবকটি। নীচের যুবকটি কেঁদে ওঠে "দাদা আমি সত্যি বলছি আমি তোদের মাঝখান থেকে চলে যাবো, কিন্তু আমাকে মারিস না"। যুবকটি আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু হটাৎ মুখে একটা লাথি খেয়ে আঃ করে থেমে যায়, লাথিটা মেরেছে যুবতীটি, তার একটা পা তখন‌ও যুবকটির ডান হাত মাড়িয়ে রাখা আছে, হিংস্র কণ্ঠে সে বলে "তুমি বুঝতে পারছো না তোমাকে মরতেই হবে, তুমি না মরলে আমরা একসাথে থাকবো কিভাবে?" অনি নামের যুবকটি ব্যাথায় কঁকিয়ে উঠে কোনোমতে বলে "কিন্তু মৌ আমি তো বলছি আমি তোমাদের মাঝখান থেকে সরে যাবো", কিন্তু উত্তরে মৌ নামের যুবতীটির কণ্ঠ আরও হিংস্র হয়ে ওঠে "আমরাই তোমাকে সরিয়ে দেবো"।  এবার উপরের যুবকটিও লাথি মারতে থাকে, অনি নামের যুবকটি তাও বাঁচার চেষ্টা করতে থাকে কিন্তু দুজনের ক্রমাগত লাথিতে আর পারে না, তাছাড়া তার দুটো হাত উপরের দুজনে মাড়িয়ে রেখেছে সে আর থাকতে পারে না ধরে থাকতে, "দাদাআআআআ" একটা চিৎকার করে সে নীচে পড়ে যায়, একজন হতভাগ্য যুবকের শেষ আর্তনাদ আশেপাশের কুয়াশা আবৃত অন্ধকারে মিলিয়ে যায়, সেই আর্তনাদ উপরের দুজন ছাড়া আর কারো কানে গেছে বলে মনে হয় না, উপর থেকে দুজন নীচে তাকিয়ে থাকে, "এবার তোমার কাজ শুরু হবে মৌ, তোমাকে অভিনয়টা পুরো আসলের মতো করতে হবে যাতে কেউ সন্দেহ না করে আর ভাবে তুমি অনির মৃত্যুতে দুঃখে ভেঙে পড়েছো" নীচের দিকে তাকিয়ে পাশের যুবতীটিকে কথাটা বলে যুবকটি, "চিন্তা কোরো না, এমন অভিনয় করবো কেউ ধরতেই পারবে না সবাই ভাববে তোমার ভাইয়ের মৃত্যুতে আমিও মরে যাচ্ছি" একটা হাসির সাথে উত্তর দেয় যুবতীটি। দুজনে নীচে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করে কিন্তু খাদের নীচে কুয়াশা আরও ঘন তাই প্রথম যুবকটির শরীরটা দেখা যায় না, অল্পক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে যখন তারা দেখে আর কেউ উঠে আসছে না কোনো আওয়াজ‌ও আসছে না, অত‌এব তাদের কাজ সম্পন্ন হয়েছে দেখে উপরের যুবক আর যুবতীটি পরস্পরের হাত ধরাধরি করে জায়গা ছেড়ে মনাস্ট্রির দিকে চলে যায়।
ডুয়ার্স হলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর উত্তরবঙ্গের একটা ট্যুরিস্ট স্থান, অবশ্য শুধু ট্যুরিস্ট বললে কম বলা হবে চা বাগান, জঙ্গল, জঙ্গলের মধ্যে জন্তু জানোয়ার খরস্রোতা নদী কি নেই সেখানে,।ডুয়ার্স সম্মন্ধে যে ধারণা সকলের হয়ে আছে তার চেয়েও ডুয়ার্স অনেক মর্মস্পর্শী, অনেক বেশি গভীর, ডুয়ার্সের আঁকে বাঁকে লুকিয়ে আছে রাজবংশী বৌ এর পান দিয়ে আপ্যায়নের আন্তরিকতা, আছে জোনাকির মাঠ, নানান পাহাড়ি ঝোড়া ও নদী!!  জঙ্গলে হাতি, গন্ডার, লেপার্ড, নানাপ্রকারের হরিণ, বাইসন, নানা প্রজাতির পাখি ছাড়াও আছে একটা বিশাল স্বপ্নের প্রকৃতি!! এখানে শাল গাছের নিচে মন বিনিময় হয় তরুণ -তরুণীর বা পাহাড়কে সাক্ষী রেখে গান্ধর্ব মতে বিবাহ ও হয় কখনও সখনও!! কালো ননীয়া চালের ভাত আর পাহাড়ি চা বাগানের শিশিরে ভেজা মাটির গন্ধ, প্রকৃতির বুকে যেন জড়িয়ে আছে আশ্রয়! এই প্রকৃতির আদ্রতা অনেকটা স্নেহ, মায়া, মমতার মতো,শুধুমাত্র অনুভব করা যায় প্রকৃতির এই রূপ!! ব্যাকুল শ্রাবনে আদিগন্ত ধানের খেতে, বিস্তৃত জঙ্গলে এই যে অঝোরে বৃষ্টি ঝরলো এতদিন তাতে জঙ্গল যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে, ধানের বুকে দুধ এসেছে, প্রকৃতির এই প্রাণের স্পন্দন নিয়েই সেখানে গড়ে উঠেছে অনেক গ্ৰাম আর জনবসতি।
এখানকার লোকেরা মূলত শান্তিপ্রিয়‌ই হয় তবে যেমন হাতের পাঁচটা আঙুল সমান হয়না তেমনই কোনো এলাকার সব লোক সমান হয় না সব জায়গাতেই কিছু লোক সবসময়েই থাকে যাদের কাছে অর্থ ও ক্ষমতা লোভী হয় এবং এই দুটোর জন্য এরা পারেনা এমন কোনো কাজ নেই এখানেও সেরকমই একজন আছেন প্রতাপ সরকার যার আতঙ্কে ডুয়ার্স, নিউ জলপাইগুড়ি এবং তার সংলগ্ন আরো অনেক গ্রামের লোকজন তটস্থ হয়ে থাকতো, প্রতাপ বাবুর চেহারাও দেখবার মতো ছ ফুটের মতো উচ্চতা, খাড়া নাক মাথায় পাকা চুল নাকের নীচে একটা লম্বা ও মোটা গোঁফ, দাঁড়ি পরিষ্কারভাবে কামানো মুখ সবসময় গম্ভীর সবথেকে যেটা দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেটা হলো তার অহংকারে পূর্ণ চোখ দুটি সেগুলো যেন সামনের জনের একেবারে অন্তস্থল পর্যন্ত কাঁপিয়ে দেয়। প্রতাপ সরকার কাঠের ব্যাবসা করেন যেটা তাদের পারিবারিক ব্যাবসা সাথে অনেকগুলো রিসর্টের মালিক এছাড়াও বেশ কয়েকটি চায়ের বাগান দখল করে রেখেছেন, এলাকার সবাই জানে ওনার যেটা পছন্দ সেটা উনি নিয়েই ছাড়বেন, এলাকার সবাই ওনাকে এতটাই ভয় করে যে কেউ ওনার বিরুদ্ধে কথা বলা তো দূর ওনার নাম পর্যন্ত নেয় না যদি কেউ ওনার বিরুদ্ধাচারণ করে বা ওনার বিরাগভাজন হয় তাহলে তাকে আর জীবিত দেখা যায় না, উত্তরবঙ্গের একচ্ছত্র অধিপতি বলা যায় তাকে, একটু ভুল হলো বলা হত কিন্তু বর্তমানে তার এই আধিপত্যে ভাগ বসিয়েছে আরেকজন আর সে আর কেউ নয় এলাকার পূর্বতন জমিদার সিংহ রায়দের বর্তমান বংশধর অতীন্দ্র সিংহ রায়, আরও পরিষ্কার ভাবে বললে অতীন্দ্র সিংহ রায়ের ছেলে আদিত্য সিংহ রায়।
সিংহ রায় পরিবার প্রায় একশো বছর আগে পর্যন্ত এই এলাকার জমিদার ছিলেন কিন্তু কালক্রমে তাদের প্রভাব কমতে থাকে, অপরদিকে সরকার রা এই এলাকার আদি বাসিন্দা নন,প্রতাপ সরকারের ঠাকুরদা স্বর্গীয় প্রণব সরকার এই এলাকায় এসে প্রথম বসবাস শুরু করেন এবং কাঠের ব্যাবসাটাও তাঁর‌ই শুরু করা, এই এলাকায় জঙ্গলের অভাব কোনোদিন‌ও ছিল না আগে তো আরও বেশি ছিল বর্তমানে অনেক জঙ্গল সাফ হয়ে চা-বাগানে পরিণত হয়েছে, সেইসময় কাঠের ব্যাবসা করে অনেক টাকা ইনকাম করেন প্রণব বাবু তার পরে তার ছেলে আর এখন তার নাতি প্রতাপ সরকার সেই ব্যাবসা সামলাচ্ছেন, সরকারদের দাপট যত বাড়তে থাকে সিংহ রায়দের তত কমতে থাকে, অনেকগুলো চায়ের বাগান, জঙ্গল অনেক রিসর্ট সহজেই দখল করে নেন প্রতাপ বাবু, এছাড়াও কান পাতলে শোনা যায় প্রতাপ সরকার বিভিন্ন বেআইনি জিনিসের চোরা চালানের কারবার করেন, নেপাল, ভুটান এমনকি বাংলাদেশ থেকেও অনেক জিনিস মূল্যবান দ্রব্য বেআইনি ভাবে দেশে আনেন আবার পাচার‌ও করেন এমনকি এছাড়া গণ্ডারের শিং, হাতির দাঁত, হরিণ সহ অন্য অনেক জানোয়ারের চোরাচালান করেন এ‌ও শোনা যায় তিনি কমবয়সী মেয়েদের‌ও পাচার করে থাকেন যদিও এখনো পর্যন্ত কেউ প্রমাণ পায়নি তার বিরুদ্ধে এবং বেশকিছু রাজনৈতিক ব্যাক্তির টিঁকি তার কাছে বাধা আছে তাই তিনি বহাল তবিয়তেই আছেন কিন্তু সম্প্রতি বিগত ছ বছর ধরে তার এই কারবার লাটে ওঠার জোগাড় আর তার কারণ হলো এই আদিত্য সিংহ রায়, বিগত ছ বছরে ধূমকেতুর মতো আগমন হয়েছে আদিত্যর কিন্তু নিভে যায়নি, বরং সময়ের সাথে সাথে আরো উজ্জ্বল হয়েছে, তার তেজ আরও বেড়েছে আগে বাবার ব্যাবসার প্রতি মন দিত না সে শিকারের খুব শখ ওই নিয়েই থাকতো, বয়স কম থাকলে কি হবে শিকারি হিসেবে ছিল তুখোড়, সিংহ রায় প্যালেসের কাছে একটা বড়ো জঙ্গল আছে, যেখানে একটা মানুষখেকো বাঘ খুব উৎপাত শুরু করেছিল শোনা যায় আদিত্য একাই সেটার শিকার করেছিল, শিকার বলতে হত্যা করেনি ঘুমপাড়ানী বুলেট চালিয়ে অজ্ঞান করে বনদপ্তরের লোকেদের হাতে তুলে দেয় এছাড়াও আরও অন্যান্য অনেক জংলী জানোয়ার শিকার করেছে। তারপর হটাৎ করেই বাড়ি ছেড়ে চলে যায় অনেকদিন নিঁখোজ ছিল সবাই ধরেই নিয়েছিল যে সে মারা গেছে কিন্তু তারপর একদিন অতীন্দ্র বাবু গিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন আর ফিরে এসে শিকারের বদলে বাবার ব্যাবসায় যোগ দেয় আর তখন থেকেই প্রতাপ বাবুর মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সে, অতীন্দ্র বাবু সহজ সরল মানুষ, ঝুট ঝামেলা এড়িয়েই চলেন, তাঁর‌ও চায়ের বাগান আছে অনেকগুলো রিসর্ট‌ও চালান তাকে একপ্রকার দাবিয়েই রাখতেন প্রতাপ বাবু, সিংহ রায়দের অনেক বাগান, জঙ্গল এলাকা দখল করেছিলেন তিনি এতদিন সরকারদের ক্ষমতা বাড়ছিল আর সিংহ রায়দের কমছিল কিন্তু বিগত যবে থেকে আদিত্য সিংহ রায় নিজেদের ব্যাবসা জয়েন করেছে তবে থেকে আবার সিংহ রায়দের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করেছে এক এক করে যেসব জঙ্গল এবং চায়ের বাগান প্রতাপ বাবু দখল করেছিলেন সেগুলো পুনরুদ্ধার করে নিজেদের অধিকারে নেয় এই আদিত্য সিংহ রায়।
 এলাকার লোকজন সিংহ রায়দের বরাবরই ভালোবাসে, সম্মান করে এবং সেই ভালোবাসা ও সম্মান এখনো আছে, বিশেষ করে এই আদিত্য সিংহ রায়কে পুরো উত্তরবঙ্গের লোক একাধারে যেমন ভয় করে তেমন সম্মান করে আবার ভালোওবাসে, প্রতাপ বাবু বেশ কয়েকবার তিনি লোক পাঠিয়েছিলেন এই আদিত্য সিংহ রায়কে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য কিন্তু প্রতিবারই তার লোকরাই নিঁখোজ হয়ে গেছে, এতে অবশ্য দমে যাওয়ার লোক নন প্রতাপ বাবু তিনি অপেক্ষা করেন সঠিক সুযোগ ও সময়ের যাতে সহজেই তিনি এই আদিত্য সিংহ রায়কে শেষ করতে পারেন তিনি ভালো করেই জানেন যে একবার আদিত্যকে সরাতে পারলেই আবার সিংহ রায়রা ভেঙে পড়বে তখন আবার তাকে আটকানোর বা চ্যালেঞ্জ করার কেউ থাকবে না, নিজের একটা কাঠগোলায় বসে এইসব‌ই চিন্তা করছিলেন এমন সময় তার ফোন বেজে ওঠে কানে দিয়ে অপরদিকের কথা শুনে তার গোঁফের ফাঁকে হাসি দেখা যায়, ফোনটা রেখে স্বগোতোক্তি করেন "আদিত্য সিংহ রায় আমার অনেক ক্ষতি করেছো তুমি এবার আমার পালা তোমার সবথেকে বড়ো দুর্বলতার খোঁজ পেয়েছি, আর বেশি দেরী নেই যখন তুমি আর তোমার বাবা আমার পায়ের নীচে পড়ে থাকবে, প্রতাপ সরকারের সাথে শত্রুতা করার এমন শাস্তি দেবো যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ আমার সাথে লাগতে আসার আগে দশবার ভাবে"।


নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টার দূরত্বে অবস্থিত কালিম্পং জেলার ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম বার্মিক। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ বেয়ে, তিস্তার খামখেয়ালিপনা আর অভিভাবকবেশী পাহাড়গুলোর শাসন দেখতে দেখতে পৌছে যাওয়া যায় ইচ্ছেগাওঁ এর খুব কাছে অবস্থিত এই গ্রাম এ। পাহাড়ি রোদ্দুর গায়ে মেখে, পাইনের দলের অতীন্দ্র প্রহরায়, রঙবেরঙের পাহাড়ি ফুলগুলোর  মিষ্টি রূপ দেখতে দেখতে যাত্রাপথ হয়ে উঠবে আরো মনোরম।।গ্রামটির চারিদিকে সবুজ বনানী পরিহিত পাহাড়ের সারি আর তাদের তলদেশ জড়িয়ে সর্পিল ভঙ্গিতে এগিয়ে চলা তিস্তার রূপ এনে দেয় মানসিক প্রশান্তি। বরফের চাদর মুড়ি দিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার উঁকি, নাম না জানা পাখিদের কলকাকলি আর মাথা তুলে সগর্বে দাড়িয়ে থাকা পাইনের দল মুছে দেবে মনে জমে থাকা সমস্ত গ্লানি। পাহাড়ি সরল সাদাসিধে মানুষগুলোর উষ্ণ অভ্যর্থনা, আপ্যায়ন আর নিজেদের ক্ষেতের সব্জি দিয়ে তৈরী ঘরোয়া রান্না ভাল করে দেয় শরীর ও মন। নিজের এলোমেলো,  অগোছালো মনটাকে একটু গুছিয়ে নিতে অনেক পর্যটক আসেন এই গ্ৰামটিতে তাই এই গ্ৰামে বেশ কয়েকটা রিসর্ট গড়ে উঠেছে যার বেশিরভাগের মালিকানা বর্তমানে সিংহ রায়দের অধীনে এছাড়া তরাই-ডুয়ার্সের অন্য অনেক পর্যটন স্থানে রিসর্ট আছে তাদের মাঝে সেইসব দখল করে নিয়েছিলেন প্রতাপ সরকার কিন্তু এখন আবার সেটা সিংহ রায়দের।
এই বার্মিক গ্ৰামটা বড়ো প্রিয় আদিত্য সিংহ রায়ের, এখানে একটা কটেজ আছে তার যেখানে প্রায়ই তিনি এসে নিঃসঙ্গ অবস্থায় কিছুদিন কাটিয়ে যান সাথে ব্যাবসার কাজ তো আছেই। এইরকমই নিঃসঙ্গ অবস্থায় কাটাতে এক সপ্তাহ আগে এখানে এসেছিল আদিত্য, প্রতিদিন‌ই সে সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘার মাথায় সূর্যোদয় দেখে, এই দৃশ্যটা দেখতে খুব ভালো লাগে তার, আজ‌ও একাকী কটেজের উপরতলার ব্যালকনিতে একটা বেতের চেয়ারে বসে একাকী সূর্যোদয় দেখছিল, সামনে পা দুটো আরেকটা বেতের চেয়ারে লম্বা করে রাখা এক হাতে একটা হুইস্কির ফ্লাস্ক যেটা থেকে মাঝে মাঝে চুমুক দিয়ে কিছুটা গলা ভিজিয়ে নিচ্ছে আর অপর হাতটা রাখা পাশে আরেকটা বেতের চেয়ারে বসা তাঁর প্রিয় পোষ্য বাদশার গলায়, বাদশা হলো আদতে প্রাগ পিটবুল এবং রটওয়েলার প্রজাতির হাইব্রিড কুকুর, গায়ের রঙ কুচকুচে কালো, বিকটাকৃতি ভয়াল মুখ ততোধিক ভয়াল ও হিংস্র জ্বলন্ত দুটো চোখ  আরও ভয়াবহ করে তুলেছে, চেহারায় একটা বাঘের থেকে অল্প‌ই ছোটো, একাধারে যেমন শক্তিশালী, হিংস্র ও আক্রমণাত্মক অপরদিকে তেমনি প্রভুভক্ত, আদিত্য সিংহ রায়ের নিঃসঙ্গতার একমাত্র সঙ্গী এবং একমাত্র বিশ্বস্ত বন্ধু বা বডিগার্ড শুধু যে বডিগার্ড তাই নয় মনিবের হুকুম পেলে যে কাউকে চিবিয়ে ছিঁড়ে খাবে, রাতের বেলা হোক বা দিনের বেলা বাদশাকে দেখা তো দূর ওর গর্জন শুনেই অনেকর হৃদকম্প শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এই মুহূর্তে সে শান্ত হয়ে বসে দূরে কাঞ্চনজঙ্ঘার দিকে তাকিয়ে সূর্যোদয় দেখছে আর মনিবের হাতের আদর উপভোগ করছে।  এমন সময় আদিত্যর মোবাইলটা বেজে ওঠে নাম্বারটা দেখে ফোনটা রিসিভ করে স্পিকার অন করে পাশে রেখে আবার পাহাড়ের দিকে তাকায়, মোবাইলের ওপার থেকে একটা মহিলার আওয়াজ আসে "কোথায় তুই?", "বার্মিকে" গম্ভীর কণ্ঠে উত্তর দেয় আদিত্য।
"ওখানে কি করছিস?"
"সানরাইজ দেখছি"।
"আজ কি তোর মনে আছে তো?"
"আছে, আমি ঠিক সময়ে পৌঁছিয়ে যাবো"।
"একটু আগে বেরো আর আস্তে আস্তে গাড়ি চালাবি, তুই খুব জোড়ে চালাস"।
"আমার অভ্যাস আছে"।
"হ্যাঁ সেটাই তো, তোমার তো ওই এক কাজ, কিভাবে মাকে দুশ্চিন্তায় ফেলা যায়"। মহিলার গলার স্বরে উষ্মা।
"চিন্তা কোরো না, আমি পৌঁছে যাবো"।
"আর শোন কারো সঙ্গে ঝুট ঝামেলা করবি না বলে দিলাম"।
"আমি ঝামেলা শুরু করি না, কেউ করলে শেষ করি"।
"আর তুই কিছু করিস না?"
"বললাম তো শেষ করি"
"আচ্ছা সাবধানে যাবি আর আসবি, রাখছি"।
"হুমম"।
ফোনটা কেটে আবার আরেকটা নম্বরে ফোন করে আদিত্য "সব ঠিক আছে?" 
"হ্যাঁ স্যার, কয়েকজন পিছু নিয়েছিল, জায়গামতো পৌঁছে দিয়েছি" ওপাশ থেকে এক পুরুষের আওয়াজ আসে। কথাটা শুনেই আদিত্যর চোখে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার  মুগ্ধতার বদলে যেন আগুন জ্বলে ওঠে, রাগে মুখ কঠিন হয়ে যায় জিজ্ঞেস করে "খুব ভালো করেছো, কেউ বুঝতে পারেনি তো?"।
"না স্যার, কেউ না'।
"গুড তোমার জিনিস তুমি পেয়ে যাবে আর এভাবেই কাজ করতে থাকো"।
"ঠিক আছে স্যার"।
"আমি আসছি সবসময় চোখে চোখে রাখবে আর ও যেন বুঝতে না পারে" কথাটা বলে আদিত্য ফোনটা কেটে দেয় তারপর ব্যালকনি থেকে ভিতরে এসে গায়ে জ্যাকেট পড়ে বিছানার উপর রাখা অটোমেটিক পিস্তলটা চেক করে কোমরের পিছনে জ্যাকেটের তলায় গুঁজে নীচে  কটেজের বাইরে রাখা জিপে উঠে একটা ডাক দেয় "বাদশা"।
"ভৌ" কুচকুচে কালো কুকুরটা দৌড়ে আসতেই জিপের একটা দরজা খুলে দেয় আদিত্যহ কুকুরটা এক লাফে উঠে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসতেই আদিত্য জিপ স্টার্ট করে।
নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের বাইরে বেশকিছু লোকের ভিড় কেউ ট্রেন ধরার জন্য ছুটছে, তো কেউ ট্যুরিস্ট ঘুরতে এসেছে এখান থেকে গাড়ি নিয়ে চলে যাবে, কয়েকটা ট্রেকার ড্রাইভার গন্তব্যের নাম জোরে জোরে বলে প্যাসেঞ্জার ডাকছে, স্টেশনের বাইরে অনেক কটা রেস্টুরেন্ট আছে এছাড়া আরো অনেক জিনিসের দোকান আছে, ছোটোখাটো চায়ের দোকান‌ও আছে বেশ কয়েকটা। এরকমই একটা চায়ের দোকানে প্রায় ৫-৬ জন চ্যাংড়া ছেলে বসে আছে, একহাতে চায়ের ভাড় অন্য হাতে জ্বলন্ত সিগারেট এখানের প্রতিটা দোকানদার এদের চেনে একেবারে বখে যাওয়া ছেলে, কাজকারবার বোধহয় কিছু করে না প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই চলে আসবে আর নতুন মেয়ে দেখলেই টোন টিটকারী কাটবে,শিস দেবে মহিলাদের‌ও ছাড়ে না, একা মেয়ে দেখলে তো কথাই নেই হাত ধরে টানাটানি শুরু করে দেয় মাঝে মাঝে। আজ‌ও সেটাই করছিল এমন সময় তখন সকাল ১১টা নাগাদ স্টেশন থেকে জনা পাঁচেক তরুণী যুবতী বেরিয়ে বাইরে এলো এদের প্রত্যেকের বয়স ২৫ এর মতো, পাহাড়ি আবহাওয়ার গুণেই হোক বা পারিবারিক জিনগত বৈশিষ্ট্যের জন্য এরা প্রত্যেকেই বেশ ফর্সা, প্রত্যেকের গলা থেকে একটি আইডি কার্ড ঝুলছে প্রত্যেকেই একহাতে একটা লাগেজ ব্যাগের হ্যাণ্ডেল ধরে আছে স্টেশনের বাইরে এসে  কারো খোঁজ করতে থাকে।
একজন যুবতী বলে "কি রে প্রীতি তুই বললি গাড়ি নিয়ে লোক থাকবে কোথায়?"। প্রীতি নামের যুবতীটি ফর্সা তো বটেই সাথে স্লিম ছিপছিপে চেহারা মুখে চটকদার মেকআপ না থাকলেও দেখতে বেশ সুন্দরী বলা চলে মাথার চুলের গোড়াটা একটা রাবার ব্যাণ্ড দিয়ে বাধা নীচের বাকি অংশটা পিঠের উপর খোলা অবস্থায় আছে, দুকানে দুটো সোনার দুল, নাকে একটা ছোট্ট নাকছাবি, পরনে একটা বিভিন্ন রঙের ডিজাইন করা কামিজ আর হাল্কা নীল রঙের জিন্সের প্যান্ট সে উত্তর দেয় "বাড়িতে কথা হয়েছে তো, বললো তো থাকবে, দাঁড়া ফোন করে দেখি"।
"মামোওওওওওনি", প্রীতি নামের যুবতীটি কাউকে ফোন করতে গিয়েও থেমে যায় কারণ ততক্ষণে চায়ের দোকানের চ্যাংড়া ছেলেগুলো তাদের কাছে চলে এসেছে এবং টোন টিটকারী শুরু করেছে।
"কোথায় যাবে মামনি?", "আরে হিরোইন বল বে", "বোধহয় হিরোর সাথে দেখা করতে এসেছে", "আমরা থাকতে আবার অন্য হিরোর কি দরকার?", "কোথায় যাবে বলো আমরাই পৌঁছে দেবো"। বলাইবাহুল্য যথারীতি এইরূপ টোন কাটা শুরু করেছে ছেলেগুলো। "যত্তোসব অসভ্য ছোটোলোক ছেলে কোথাকার" এক যুবতী রেগে কথাটা বলতেই ছেলেগুলোর তে লিডার সে তার কাছে এসে বললো "অসভ্যতার কি করেছি মামনি?" বলে যুবতীর একটা হাত ধরে, সঙ্গে সঙ্গে যুবতীটি এক ঝটকায় "হাত ছাড়ুন" বলে হাত ছাড়াতে চায় কিন্তু পারে না। এবার প্রীতি নামের যুবতীটি এসে জোর করে হাতটা ছাড়িয়ে দেয় কিন্তু ছেলেটা ওর হাত ধরে ফেলে বলে "এবার নিজেকে কিভাবে ছাড়াবে মামনি?"। মেয়েগুলো সাহায্যের জন্য আশেপাশের লোকেদের দিকে তাকালেও কেউ এগিয়ে আসে না, একজন ছেলে সেটা খেয়াল করে বলে "আমরা তো এখানে চারিদিকে কাকে খুঁজছো?", উত্তরে প্রীতি নামের যুবতীটি হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বলে "হাত ছাড়ুন নাহলে কিন্তু..", ছেলেগুলো হো হো করে হেসে ওঠে, একজন বলে "নাহলে কি মামনি?", আরেকজন ছেলে বলে "নাহলে কিচ্ছু হবে না এখানে কারো বুকের পাটায় এত সাহস নেই যে আমাদের বাধা দেবে", প্রীতি নামের যুবতীটি এবার হুংকার ছাড়ে "অন্য কারো দরকার নেই যার দরকার সেই আসবে", ছেলেগুলো আবার একচোট হাসে একজন বলে "তাই নাকি? তা কে আসবে ডাকো দেখি"। এবার প্রীতির মুখে হাসি, ফলে ছেলেগুলো তো বটেই প্রীতির সাথে থাকা অন্য মেয়েরাও অবাক হয়ে যায়, প্রীতি বিদ্রুপের স্বরে বলে "ডাকার দরকার নেই সে আপনাদের পিছনেই দাঁড়িয়ে আছে"।  কথাটা শোনার সাথে সাথেই ছেলেগুলো পিছনে ফেরে দেখে তাদের থেকে কিছুটা দূরে একটা ছেলে গম্ভীরমুখে দাঁড়িয়ে আছে, ছেলেটার বয়স ২৭-২৮ হবে, ফর্সা লম্বায় ছফুটের একটু কম, মাথায় ঘাড় পর্যন্ত লম্বা  চুলটা ব্যাকব্রাশ করা, গালে ট্রিম করা হাল্কা দাঁড়ি নাকের নীচে অনুরূপ হাল্কা ট্রিম করা গোঁফ গায়ে একটা কালো জ্যাকেট সাথে কালো জিন্স, জ্যাকেটের চেন খোলা থাকায় ভিতরে একটা কালো গেঞ্জি ও দৃশ্যমান পায়ে কালো পাওয়ার শ্যু, চোখে কালো গগলস্, পালোয়ানের মতো দশাস‌ই চেহারা না হলেও ছেলেটার যে জিম করা বডি সেটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, চশমার ভিতর দিয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মুখে প্রচণ্ড গাম্ভীর্য ভাব দুটো হাত জিন্সের দুপকেটে ঢোকানো।

                                                (ক্রমশ......)

গল্পটা কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন, এবং যদি ভালো লাগে তাহলে লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন।
I'm the King of Dark
                &
I rule over all Devils
               devil2 devil2
Like Reply


Messages In This Thread
"ধূসর পৃথিবী" - by Monen2000 - 11-12-2022, 01:47 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Monen2000 - 14-12-2022, 10:04 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Mehndi - 17-12-2022, 01:10 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by kublai - 10-05-2023, 02:46 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 29-05-2023, 05:43 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 31-05-2023, 08:58 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 02-06-2023, 10:56 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 04-06-2023, 09:56 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 06-06-2023, 11:49 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 10-06-2023, 09:33 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 11-06-2023, 10:57 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 14-06-2023, 02:02 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 15-06-2023, 08:50 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 17-06-2023, 08:52 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 18-06-2023, 10:26 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 20-06-2023, 12:46 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 23-06-2023, 09:41 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 25-06-2023, 02:35 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 26-06-2023, 01:00 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 26-06-2023, 01:12 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 26-06-2023, 09:57 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 27-06-2023, 06:42 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 28-06-2023, 09:40 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 30-06-2023, 10:41 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 02-07-2023, 11:34 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 02-07-2023, 12:29 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 02-07-2023, 04:41 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 03-07-2023, 10:33 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by guru1 - 03-07-2023, 03:31 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 04-07-2023, 12:06 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 08-07-2023, 04:22 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 08-07-2023, 11:39 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 09-07-2023, 12:50 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 11-07-2023, 11:32 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 12-07-2023, 09:57 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 12-07-2023, 10:18 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 15-07-2023, 09:49 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 15-07-2023, 10:37 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 18-07-2023, 12:07 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 18-07-2023, 08:42 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 22-07-2023, 10:14 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Ahid3 - 25-07-2023, 12:31 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 25-07-2023, 08:54 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 25-07-2023, 09:01 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 26-07-2023, 08:25 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 30-07-2023, 11:48 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by pratim - 05-08-2023, 10:31 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 07-08-2023, 07:51 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by kublai - 15-08-2023, 05:12 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Naim_Z - 19-08-2023, 02:07 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 22-08-2023, 05:38 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Rancon - 03-09-2023, 07:04 AM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by pratim - 03-09-2023, 04:00 PM
RE: "ধূসর পৃথিবী" - by Saj890 - 18-05-2024, 05:13 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)