30-01-2022, 09:52 AM
#সুপাত্রী
#বাসু_মুখোপাধ্যায়
পাত্রী দেখা চলছে প্রভাসের। জোরকদমে। একুশটার মতো দেখা হয়ে গেছে। কেউ বেঁটে কেউ মোটা আবার কেউ কালো। দু-একজন মেয়ে পছন্দ হয়েছে কিন্তু দেনা-পাওনায় আটকে গেছে। পণ-টণ নেওয়ার বিলকুল বিরোধী প্রভাস। দাবি বলতে সামান্য, একটা হোন্ডা সিটি হলেই চলবে। তার একটা গাড়ি আছে বটে। মারুতি অল্টো। কিন্তু সে আর লোকের কাছে বের করার মতো নয়।
আর যা যা দেওয়ার তা তো দিতেই হবে। ওই গয়না,ফার্নিচার-টার..
কিন্তু মেয়ের বাপগুলো এসব শুনলেই পিছিয়ে যাচ্ছে। আরে তা বললে কী হয়! তুমি এম এন সি'তে চাকরি করা জামাই করবে আর ওইটুকু ছোট্ট দাবি মানবে না?
.
এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় একটা সম্বন্ধ আনল। প্রবাসী। এলাহাবাদের মেয়ে। এখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে এনেই মেয়ে দেখানো হল। দেখেই পছন্দ হয়ে গেল প্রভাসের। মারকাটারি রূপসী।
প্রভাস পরের দিনই ফোন করে জানিয়ে দিল তাদের পছন্দের কথা।
দুদিন পরেই মেয়ের বাড়ির লোকেরা এল ফাইনাল কথাবার্তা বলতে।
ভয়ে ভয়ে দাবিদাওয়ার কথা বলল প্রভাস। তার বাবা-মা নেই। তাকে নিজেকেই সব বলতে হয়।
মেয়ের বাড়ির লোক সানন্দে রাজি হয়ে গেল। প্রভাস যা যা চায় সব তাঁরা দেবেন।
আর দেরি করল না প্রভাস। ঝটপট একটা দিন দেখে বিয়ে করে নিল। কনেপক্ষ চাইল কলকাতাতেই বিয়ে দিতে। আর প্রভাস তো সেটাই চেয়েছিল, বিয়ে করতে কে এলাহাবাদে যায়!
.
বিয়ের দিন সাতেক পরেই প্রভাস হাওয়া হয়ে গেল।
একটা মারাত্মক খবর পেয়ে প্রভাস চাকরি-বাকরি ছেড়েছুড়ে দিয়ে গৃহত্যাগী হল। খবরটা হল, তার নতুন বউ নাকি এখন জামিনে আছে। এলাহাবাদ কোর্টে তার বিরুদ্ধে একটা মামলা চলছে।
মামলাটা হল, তার পূর্বতন স্বামীকে খুনের।
.
বেশ কিছুদিন পেরিয়ে গেছে।
প্রভাসের এক বন্ধু চার ধাম গিয়েছিল। কেদারনাথে গিয়ে অবিকল প্রভাসেরই মতো দেখতে একজন সাধুর দর্শন পেল।
কাছে গিয়ে নাকের ওপর প্রভাসের ট্রেডমার্ক আঁচিলটা দেখতে পেয়ে নিশ্চিত হলো এই প্রভাস। বলল,"এই তুই প্রভাস তো। চল বাড়ি ফিরে চল।"
শুনেই,"হর হর মহাদেব" "হর হর মহাদেব" বলতে বলতে সেই সাধু যে দৌড়টা দিল তা দেখলে উসেন বোল্টও হিংসা করত..
(শেষ)
#বাসু_মুখোপাধ্যায়
পাত্রী দেখা চলছে প্রভাসের। জোরকদমে। একুশটার মতো দেখা হয়ে গেছে। কেউ বেঁটে কেউ মোটা আবার কেউ কালো। দু-একজন মেয়ে পছন্দ হয়েছে কিন্তু দেনা-পাওনায় আটকে গেছে। পণ-টণ নেওয়ার বিলকুল বিরোধী প্রভাস। দাবি বলতে সামান্য, একটা হোন্ডা সিটি হলেই চলবে। তার একটা গাড়ি আছে বটে। মারুতি অল্টো। কিন্তু সে আর লোকের কাছে বের করার মতো নয়।
আর যা যা দেওয়ার তা তো দিতেই হবে। ওই গয়না,ফার্নিচার-টার..
কিন্তু মেয়ের বাপগুলো এসব শুনলেই পিছিয়ে যাচ্ছে। আরে তা বললে কী হয়! তুমি এম এন সি'তে চাকরি করা জামাই করবে আর ওইটুকু ছোট্ট দাবি মানবে না?
.
এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় একটা সম্বন্ধ আনল। প্রবাসী। এলাহাবাদের মেয়ে। এখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে এনেই মেয়ে দেখানো হল। দেখেই পছন্দ হয়ে গেল প্রভাসের। মারকাটারি রূপসী।
প্রভাস পরের দিনই ফোন করে জানিয়ে দিল তাদের পছন্দের কথা।
দুদিন পরেই মেয়ের বাড়ির লোকেরা এল ফাইনাল কথাবার্তা বলতে।
ভয়ে ভয়ে দাবিদাওয়ার কথা বলল প্রভাস। তার বাবা-মা নেই। তাকে নিজেকেই সব বলতে হয়।
মেয়ের বাড়ির লোক সানন্দে রাজি হয়ে গেল। প্রভাস যা যা চায় সব তাঁরা দেবেন।
আর দেরি করল না প্রভাস। ঝটপট একটা দিন দেখে বিয়ে করে নিল। কনেপক্ষ চাইল কলকাতাতেই বিয়ে দিতে। আর প্রভাস তো সেটাই চেয়েছিল, বিয়ে করতে কে এলাহাবাদে যায়!
.
বিয়ের দিন সাতেক পরেই প্রভাস হাওয়া হয়ে গেল।
একটা মারাত্মক খবর পেয়ে প্রভাস চাকরি-বাকরি ছেড়েছুড়ে দিয়ে গৃহত্যাগী হল। খবরটা হল, তার নতুন বউ নাকি এখন জামিনে আছে। এলাহাবাদ কোর্টে তার বিরুদ্ধে একটা মামলা চলছে।
মামলাটা হল, তার পূর্বতন স্বামীকে খুনের।
.
বেশ কিছুদিন পেরিয়ে গেছে।
প্রভাসের এক বন্ধু চার ধাম গিয়েছিল। কেদারনাথে গিয়ে অবিকল প্রভাসেরই মতো দেখতে একজন সাধুর দর্শন পেল।
কাছে গিয়ে নাকের ওপর প্রভাসের ট্রেডমার্ক আঁচিলটা দেখতে পেয়ে নিশ্চিত হলো এই প্রভাস। বলল,"এই তুই প্রভাস তো। চল বাড়ি ফিরে চল।"
শুনেই,"হর হর মহাদেব" "হর হর মহাদেব" বলতে বলতে সেই সাধু যে দৌড়টা দিল তা দেখলে উসেন বোল্টও হিংসা করত..
(শেষ)