15-11-2021, 11:44 AM
'বাবা কেন করোনা' - একটি বাংলা ছবির কাহিনী
***************************************
মধ্যবিত্ত পাল পরিবার । দেওয়ালে পলেস্তারা খসে পড়েছে , পায়খানায় হেবি পেছল , লোহার বালতির খ্যাট খ্যাট শব্দ , ভাতের হাঁড়ির পেচন হেবি কালো । বাবা (কালী ব্যানারজি) খুবই গরীব ও অসুস্থ । চোখে ন্যাবা , হার্টে ফুটো , কিডনিতে পাথর , মলদ্বারে ঘা , ফুসফুসে ফুস্কুড়ি , স্পাইনাল কর্ড টাল খেয়েছে , ব্রেনের ভেতর ব্রণ । কিন্তু , টনটনে চোপা , হেবি ডায়লগ ঝাড়েন । রাতে ঠিক টাইমে হরলিক্স না পেলে হেবি খিস্তি করেন । তিন ছেলে এক মেয়ে । বড় ছেলে (রঞ্জিত) প্রাইমারি স্কুলে ক্লার্ক । মেজো ছেলে (অভিষেক) বিটেক পাশ করে আইটি সেলে কাজ করে , ওয়ার্ক ফ্রম হোম । ছোটো ছেলে রাজু (পোসেনজিত) কলেজে পড়ে । সে কিছুদিন পরে খুবই বড় বিজ্ঞানী হবে , তাই জাস্টিস রায়ের (রিটায়ার্ড ফেলুদা সৌমিত্র) একমাত্র দস্যি মেয়ে ঝুমা (ঋতুপর্না) রাজুর প্রেমে পাগল । বুড়ো বাপটার আইবুড়ো মেয়ে রিমি (চুমকি) । বাবা বলে দিয়েছে , আমার একটাও পয়সা নেই তোকে বিয়ে দেবার মতন । মেয়ে তাই পাড়ার গুন্ডা ভোম্বল (লোকেশ) এর সঙ্গে প্রেম করে । ভোম্বল বলেছে বিয়ে আর বউভাত দুটোরই খরচ বহন করবে । রাজু আর রিমি বাবার দ্বিতীয় পক্ষের বউ (অনামিকা) এর প্রোডাক্ট ।
বড় বউ (সন্ধ্যা) বাবাকে খুবই যত্ন করেন । বাবা ছলছল চোখে বলেন - 'বউমা আর এক পেগ হরলিক্স রিপিট করো' । বউমা ঘোমটা টেনে বলেন - 'এখুনি দিচ্ছি বাবা । চাট হিসেবে কি নেবেন লেরো বিস্কুট নাকি মুড়ি ?’ এদিকে শাশুড়ি বুড়োকে উঠতে বসতে ঝাড় দেন । বুড়ো বউমার কাছে আবদার করলে বলেন - 'দুদিন পর ঘাটে যাবে , এখন অতো হরলিক্স খাবার কি দরকার ?’ এদিকে মেজো বউ , বড় বউকে দুচক্ষে দেখতে পারে না । সে প্ল্যান করে বড় বৌদির বানানো হরলিক্সে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে রাখবে । এতে ঝাঁট জালানো বুড়োটাও মরবে আর বড় বৌদির নামে দোষ দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া যাবে । এদিকে মেজো বউকে পাড়ার ওষুধের দোকান ঘুমের ওষুধের বদলে ভুল করে ভায়াগ্রা দিয়ে দেয় । বুড়ো সেই রাতে হরলিক্স খেতে খেতে বড় বউমাকে বলে - 'আজ হরলিক্স খুব strong বানিয়েছ তাই না । খুব ভালো লাগছে । বুড়োমানুষকে তো কেউ আর strong দেয় না ।' বুড়ো আর বড় বউমা কেউই জানতো না , ওই হরলিক্সে মেজো বউ চারখানা ভায়াগ্রার বড়ি মিশিয়েছে । সেই রাতে বুড়ো বিশাল তাণ্ডব স্টার্ট করে বুড়ির সঙ্গে । দাদুর মরা সাপ ফণা তুলে 'নাগিন নাগিন' ডান্স করতে থাকে । পর্দায় দেখা যায় বুড়ো লাল চশমা , মাথায় আলো জ্বলা লাল শিং লাগিয়ে গান গাইছে -
'আমি জেনো বুড়ো নই , তুমি নও বুড়ি ,
হরলিক্স খেয়ে আজ লাগে সুড়সুড়ি ,
উড়ি বাবা উড়ি , উড়ি বাবা উড়ি' ।
পরের দিন সকালে মেজো বউ অপেক্ষা করছেন কখন বুড়োর টেঁসে যাবার সুখবর আসবে । কিন্তু , দেখেন শাশুড়ি হঠাৎ এমন লজ্জা পাচ্ছেন যেভাবে ফুলসজ্জার পরের দিন নতুন বউ লজ্জা পান । শালা , বুড়োটা মরেনি তারমানে ! মেজো বউ হেবি খচে যান । তখনই বাড়িতে হাজির হন মেজো বউ এর ভাই (নিমু) , সঙ্গে বউ । ওদের বাড়ির ওখানে হেবি করোনা হচ্ছে তাই দিদির বাড়ি পালিয়ে এসেছে । তারপরই পুলিশ অফিসার (সব্যসাচী) বাড়িতে আসে । উনি বলেন সবসময় মাস্ক পরতে আর বাড়ির ভেতরেই থাকতে । পাড়ায় নাকি করোনা হচ্ছে !
লকডাউনের ফলে পাল পরিবারের সবাই মুখে সারাক্ষণ মাস্ক পরে আছে । আইটি সেলে কর্মরত মেজো ছেলের খুবই কাজের চাপ । যত ফেক ছড়াবে তত প্রমোশন ! ছোটো ছেলে রাজু প্রেমিকা ঝুমাকে প্রাইভেট টিউশন দিতো । সেই থেকেই প্রেম । সে এখন হোয়াটসঅ্যাপে পড়াচ্ছে ঝুমাকে । ঝুমা পড়া না বুঝে হোয়াটসঅ্যাপ কলে রাজুকে সিডিউস করে । তারপরই বৃষ্টি নেমে গান শুরু হয় -
'যতই মুখে পরো মাস্ক আমার ঝুমা ,
তোমাকে দিয়েই যাবো হাজার হাজার চুমা ,
ও আমার ঝুমা , ও আমার ঝুমা' ।
এদিকে মেজো বউয়ের ভাই যে করোনার ভয়ে সপরিবারে দিদির বাড়ি বডি ফেলে দিয়েছে , তার কুনজর ছিল ননদ রিমির দিকে । একদিন সুযোগ বুঝে ছাদে একা পেয়ে সে রিমি ভেবে নিজের বউকেই কুপ্রস্তাব দিয়ে ফেলে ! তখন বেশ অন্ধকার ছিল , মুখে মাস্ক পরে থাকায় সে নিজের বউকে রিমি ভেবে বসে । বউ উদমা ক্যালায় , তারপর বঁটি দিয়ে বরের যন্তরটি কেটে তার কিমা করে , সেই কিমা দিয়ে পরের দিন ঘুগনি বানায় । বাবা খেয়ে বলেন - 'এতো ভালো ঘুগনি কোনদিন খাইনি' । বাবা তারপর বড় বউমার কাছে আবদার করেন - 'আচ্ছা আজকাল বালগোলা কফি বলে কি একটা বেড়িয়েছে না । একদিন খাওয়াবে আমায় ।' বড় বউমা ঘোমটা টেনে বলেন - 'বাবা ওটা বালগোলা নয় , ডালগোলা' । বাবা বলেন , এতো বছর পাল বংশের ঘানি টানতে টানতে বাল আর ডাল এক হয়ে গেছে মা । গোটা হল হাততালিতে ফেটে পড়ে !
এদিকে মেজো বউ এর ভাইয়ের আসার দুসপ্তাহ পর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন । বাবা সবাইকে খিস্তি করতে থাকেন ভাইরাস বয়ে আনার জন্য । লকডাউন কেউই তেমন মানেনি । বড় ছেলে ভিড় বাজারে গেছে কাতলা কিনতে , মেজো চা খেতে গেছে , রাজু বাড়ি ফাঁকা পেয়ে ঝুমাকে অসব্য টিউশনি দিয়ে এসেছে । বাবা যদিও বলছেন , মেজো বউমার হারামি ভাইটাই ভাইরাস এনেছে । মেজো বউমা মানতে রাজী নন । তার আদরের ভাই কি ভাইরাস আনতে পারে ! তিনি বলেন , আরে বাবার পাইখানা পরিষ্কার হয়নি , গ্যাস থেকে হচ্ছে এসব । বড় বউমা কাঁদতে কাঁদতে বলেন , বাবার শ্বাসকষ্ট কিছুতেই গ্যাস থেকে হতে পারে না । এদিকে বাবার হাল আরও খারাপ হতে থাকে । খরচের ভয়ে বাবা কিছুতেই হসপিটালে যাবেন না । একদিন ঝুমা রাজুকে হেবি হ্যাটা দেয় - 'তুমি নাকি এতো ভালো পড়াশুনায় , সামনের দিনে বিরাট বিজ্ঞানী হবে , তাহলে করোনার একটা ওষুধ আবিষ্কার করতে পারছ না বাবার জন্য' । ঝুমার হ্যাটা রাজুর হেবি গায়ে লাগে । সে বাড়িতে করোনার ওষুধ বানাবে ঠিক করে । স্ক্রিনে দেখা যায় , সায়া প্রকাশনীর সহায়িকা খুলে কিসব ফরমুলা হিসেব করছে । তারপর একদিন সে কলেজের ল্যাব থেকে কিছু মাল ঝেড়ে বাড়িতে আনে , আর সেগুলি থেকে ওষুধ বানাবার চেষ্টা করে । কিন্তু , কিছুতেই সফল হয় না । একদিন বাবা মৃত্যুসজ্জায় বিশাল ভাঁট বকতে থাকে । উনি বলেন , আজ আমি বিপিএল বলে কেউ আমাকে একটুও সেবা করলো না , সবাই গ্যাস থেকে হচ্ছে বলে উড়িয়ে দিলো । ওদিকে বড় বউ , মেজো বউ , শাশুড়ি , রিমি সবাই ঠাকুর ঘরে গান ধরে -
'কেন করলে এরকম বলো' ।
জুম অ্যাপের মাধ্যমে গানে ঝুমা , আর বাকি রিলেটিভরাও যোগ দেয় । হাফ বিজ্ঞানী রাজু কাঁদতে কাঁদতে মন্দিরে গিয়ে মাথা ঠুকতে থাকে । ঠাকুর সব শুনে একটা জবা ফুল রাজুর হাতে ফেলে দেন । রাজু বাড়ি ফিরে সেই ফুল বড় বৌদিকে দেয় । বড় বৌদি রাজুর বানানো ওষুধ আর সেই জবা ফুল গুলে হরলিক্স বানিয়ে বাবাকে খাইয়ে দেন । বাবা মরে গিয়েও আবার বেঁচে ওঠেন । ডালগোলা কফি খেতে চান । কিছুদিন পর টেস্ট করে দেখা যায় বাবা নেগেটিভ । বাবার গ্যাস থেকেই সব প্রবলেম হচ্ছিলো । আসল পজিটিভ মাল ছিল মেজো বৌদির ভাইটা । ঢ্যামনাটা সিম্পটম শো করেনি । তাঁকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় । পুলিশ নিয়ে এসেছিলেন জাস্টিস রায় (রিটায়ার্ড ফেলুদা সৌমিত্র)। তিনি বুড়ো বাবাকে বলেন , লকডাউন উঠলেই ঝুমার সঙ্গে রাজুর বিয়ে দেবেন আর সব খরচ উনিই করবেন । বুড়োর চোখে জল চলে আসে । উনি বড় বউমাকে আর এক পেগ strong হরলিক্স দিতে বলেন । হঠাৎ শাশুড়ি বলে ওঠেন , উনি নেগেটিভ হলেও আমার টেস্ট আজ পজিটিভ এসেছে । সবাই অবাক হয়ে বলে , মানে ?? শাশুড়ি লজ্জা লজ্জা মুখ করে বলেন , আমি প্রেগন্যান্ট ! বড় বৌমা জ্ঞান হারান । বড় ছেলে বেল্ট খুলে নিজেকেই ক্যালাতে থাকে । মেজো ছেলে কম্পিউটার শাট ডাউন করে বোতল খুলে বসেন । রাজু কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায় । বুড়ো ভাবেন সংসারে আবার একটা পেট বাড়লো । তার মরে গেলেই ভালো হয় ! বাড়ির কেউই জানে না সেদিন হরলিক্স এ ভায়াগ্রা ছিল । সিনেমা শেষ হয় ।
***************************************
মধ্যবিত্ত পাল পরিবার । দেওয়ালে পলেস্তারা খসে পড়েছে , পায়খানায় হেবি পেছল , লোহার বালতির খ্যাট খ্যাট শব্দ , ভাতের হাঁড়ির পেচন হেবি কালো । বাবা (কালী ব্যানারজি) খুবই গরীব ও অসুস্থ । চোখে ন্যাবা , হার্টে ফুটো , কিডনিতে পাথর , মলদ্বারে ঘা , ফুসফুসে ফুস্কুড়ি , স্পাইনাল কর্ড টাল খেয়েছে , ব্রেনের ভেতর ব্রণ । কিন্তু , টনটনে চোপা , হেবি ডায়লগ ঝাড়েন । রাতে ঠিক টাইমে হরলিক্স না পেলে হেবি খিস্তি করেন । তিন ছেলে এক মেয়ে । বড় ছেলে (রঞ্জিত) প্রাইমারি স্কুলে ক্লার্ক । মেজো ছেলে (অভিষেক) বিটেক পাশ করে আইটি সেলে কাজ করে , ওয়ার্ক ফ্রম হোম । ছোটো ছেলে রাজু (পোসেনজিত) কলেজে পড়ে । সে কিছুদিন পরে খুবই বড় বিজ্ঞানী হবে , তাই জাস্টিস রায়ের (রিটায়ার্ড ফেলুদা সৌমিত্র) একমাত্র দস্যি মেয়ে ঝুমা (ঋতুপর্না) রাজুর প্রেমে পাগল । বুড়ো বাপটার আইবুড়ো মেয়ে রিমি (চুমকি) । বাবা বলে দিয়েছে , আমার একটাও পয়সা নেই তোকে বিয়ে দেবার মতন । মেয়ে তাই পাড়ার গুন্ডা ভোম্বল (লোকেশ) এর সঙ্গে প্রেম করে । ভোম্বল বলেছে বিয়ে আর বউভাত দুটোরই খরচ বহন করবে । রাজু আর রিমি বাবার দ্বিতীয় পক্ষের বউ (অনামিকা) এর প্রোডাক্ট ।
বড় বউ (সন্ধ্যা) বাবাকে খুবই যত্ন করেন । বাবা ছলছল চোখে বলেন - 'বউমা আর এক পেগ হরলিক্স রিপিট করো' । বউমা ঘোমটা টেনে বলেন - 'এখুনি দিচ্ছি বাবা । চাট হিসেবে কি নেবেন লেরো বিস্কুট নাকি মুড়ি ?’ এদিকে শাশুড়ি বুড়োকে উঠতে বসতে ঝাড় দেন । বুড়ো বউমার কাছে আবদার করলে বলেন - 'দুদিন পর ঘাটে যাবে , এখন অতো হরলিক্স খাবার কি দরকার ?’ এদিকে মেজো বউ , বড় বউকে দুচক্ষে দেখতে পারে না । সে প্ল্যান করে বড় বৌদির বানানো হরলিক্সে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে রাখবে । এতে ঝাঁট জালানো বুড়োটাও মরবে আর বড় বৌদির নামে দোষ দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া যাবে । এদিকে মেজো বউকে পাড়ার ওষুধের দোকান ঘুমের ওষুধের বদলে ভুল করে ভায়াগ্রা দিয়ে দেয় । বুড়ো সেই রাতে হরলিক্স খেতে খেতে বড় বউমাকে বলে - 'আজ হরলিক্স খুব strong বানিয়েছ তাই না । খুব ভালো লাগছে । বুড়োমানুষকে তো কেউ আর strong দেয় না ।' বুড়ো আর বড় বউমা কেউই জানতো না , ওই হরলিক্সে মেজো বউ চারখানা ভায়াগ্রার বড়ি মিশিয়েছে । সেই রাতে বুড়ো বিশাল তাণ্ডব স্টার্ট করে বুড়ির সঙ্গে । দাদুর মরা সাপ ফণা তুলে 'নাগিন নাগিন' ডান্স করতে থাকে । পর্দায় দেখা যায় বুড়ো লাল চশমা , মাথায় আলো জ্বলা লাল শিং লাগিয়ে গান গাইছে -
'আমি জেনো বুড়ো নই , তুমি নও বুড়ি ,
হরলিক্স খেয়ে আজ লাগে সুড়সুড়ি ,
উড়ি বাবা উড়ি , উড়ি বাবা উড়ি' ।
পরের দিন সকালে মেজো বউ অপেক্ষা করছেন কখন বুড়োর টেঁসে যাবার সুখবর আসবে । কিন্তু , দেখেন শাশুড়ি হঠাৎ এমন লজ্জা পাচ্ছেন যেভাবে ফুলসজ্জার পরের দিন নতুন বউ লজ্জা পান । শালা , বুড়োটা মরেনি তারমানে ! মেজো বউ হেবি খচে যান । তখনই বাড়িতে হাজির হন মেজো বউ এর ভাই (নিমু) , সঙ্গে বউ । ওদের বাড়ির ওখানে হেবি করোনা হচ্ছে তাই দিদির বাড়ি পালিয়ে এসেছে । তারপরই পুলিশ অফিসার (সব্যসাচী) বাড়িতে আসে । উনি বলেন সবসময় মাস্ক পরতে আর বাড়ির ভেতরেই থাকতে । পাড়ায় নাকি করোনা হচ্ছে !
লকডাউনের ফলে পাল পরিবারের সবাই মুখে সারাক্ষণ মাস্ক পরে আছে । আইটি সেলে কর্মরত মেজো ছেলের খুবই কাজের চাপ । যত ফেক ছড়াবে তত প্রমোশন ! ছোটো ছেলে রাজু প্রেমিকা ঝুমাকে প্রাইভেট টিউশন দিতো । সেই থেকেই প্রেম । সে এখন হোয়াটসঅ্যাপে পড়াচ্ছে ঝুমাকে । ঝুমা পড়া না বুঝে হোয়াটসঅ্যাপ কলে রাজুকে সিডিউস করে । তারপরই বৃষ্টি নেমে গান শুরু হয় -
'যতই মুখে পরো মাস্ক আমার ঝুমা ,
তোমাকে দিয়েই যাবো হাজার হাজার চুমা ,
ও আমার ঝুমা , ও আমার ঝুমা' ।
এদিকে মেজো বউয়ের ভাই যে করোনার ভয়ে সপরিবারে দিদির বাড়ি বডি ফেলে দিয়েছে , তার কুনজর ছিল ননদ রিমির দিকে । একদিন সুযোগ বুঝে ছাদে একা পেয়ে সে রিমি ভেবে নিজের বউকেই কুপ্রস্তাব দিয়ে ফেলে ! তখন বেশ অন্ধকার ছিল , মুখে মাস্ক পরে থাকায় সে নিজের বউকে রিমি ভেবে বসে । বউ উদমা ক্যালায় , তারপর বঁটি দিয়ে বরের যন্তরটি কেটে তার কিমা করে , সেই কিমা দিয়ে পরের দিন ঘুগনি বানায় । বাবা খেয়ে বলেন - 'এতো ভালো ঘুগনি কোনদিন খাইনি' । বাবা তারপর বড় বউমার কাছে আবদার করেন - 'আচ্ছা আজকাল বালগোলা কফি বলে কি একটা বেড়িয়েছে না । একদিন খাওয়াবে আমায় ।' বড় বউমা ঘোমটা টেনে বলেন - 'বাবা ওটা বালগোলা নয় , ডালগোলা' । বাবা বলেন , এতো বছর পাল বংশের ঘানি টানতে টানতে বাল আর ডাল এক হয়ে গেছে মা । গোটা হল হাততালিতে ফেটে পড়ে !
এদিকে মেজো বউ এর ভাইয়ের আসার দুসপ্তাহ পর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন । বাবা সবাইকে খিস্তি করতে থাকেন ভাইরাস বয়ে আনার জন্য । লকডাউন কেউই তেমন মানেনি । বড় ছেলে ভিড় বাজারে গেছে কাতলা কিনতে , মেজো চা খেতে গেছে , রাজু বাড়ি ফাঁকা পেয়ে ঝুমাকে অসব্য টিউশনি দিয়ে এসেছে । বাবা যদিও বলছেন , মেজো বউমার হারামি ভাইটাই ভাইরাস এনেছে । মেজো বউমা মানতে রাজী নন । তার আদরের ভাই কি ভাইরাস আনতে পারে ! তিনি বলেন , আরে বাবার পাইখানা পরিষ্কার হয়নি , গ্যাস থেকে হচ্ছে এসব । বড় বউমা কাঁদতে কাঁদতে বলেন , বাবার শ্বাসকষ্ট কিছুতেই গ্যাস থেকে হতে পারে না । এদিকে বাবার হাল আরও খারাপ হতে থাকে । খরচের ভয়ে বাবা কিছুতেই হসপিটালে যাবেন না । একদিন ঝুমা রাজুকে হেবি হ্যাটা দেয় - 'তুমি নাকি এতো ভালো পড়াশুনায় , সামনের দিনে বিরাট বিজ্ঞানী হবে , তাহলে করোনার একটা ওষুধ আবিষ্কার করতে পারছ না বাবার জন্য' । ঝুমার হ্যাটা রাজুর হেবি গায়ে লাগে । সে বাড়িতে করোনার ওষুধ বানাবে ঠিক করে । স্ক্রিনে দেখা যায় , সায়া প্রকাশনীর সহায়িকা খুলে কিসব ফরমুলা হিসেব করছে । তারপর একদিন সে কলেজের ল্যাব থেকে কিছু মাল ঝেড়ে বাড়িতে আনে , আর সেগুলি থেকে ওষুধ বানাবার চেষ্টা করে । কিন্তু , কিছুতেই সফল হয় না । একদিন বাবা মৃত্যুসজ্জায় বিশাল ভাঁট বকতে থাকে । উনি বলেন , আজ আমি বিপিএল বলে কেউ আমাকে একটুও সেবা করলো না , সবাই গ্যাস থেকে হচ্ছে বলে উড়িয়ে দিলো । ওদিকে বড় বউ , মেজো বউ , শাশুড়ি , রিমি সবাই ঠাকুর ঘরে গান ধরে -
'কেন করলে এরকম বলো' ।
জুম অ্যাপের মাধ্যমে গানে ঝুমা , আর বাকি রিলেটিভরাও যোগ দেয় । হাফ বিজ্ঞানী রাজু কাঁদতে কাঁদতে মন্দিরে গিয়ে মাথা ঠুকতে থাকে । ঠাকুর সব শুনে একটা জবা ফুল রাজুর হাতে ফেলে দেন । রাজু বাড়ি ফিরে সেই ফুল বড় বৌদিকে দেয় । বড় বৌদি রাজুর বানানো ওষুধ আর সেই জবা ফুল গুলে হরলিক্স বানিয়ে বাবাকে খাইয়ে দেন । বাবা মরে গিয়েও আবার বেঁচে ওঠেন । ডালগোলা কফি খেতে চান । কিছুদিন পর টেস্ট করে দেখা যায় বাবা নেগেটিভ । বাবার গ্যাস থেকেই সব প্রবলেম হচ্ছিলো । আসল পজিটিভ মাল ছিল মেজো বৌদির ভাইটা । ঢ্যামনাটা সিম্পটম শো করেনি । তাঁকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় । পুলিশ নিয়ে এসেছিলেন জাস্টিস রায় (রিটায়ার্ড ফেলুদা সৌমিত্র)। তিনি বুড়ো বাবাকে বলেন , লকডাউন উঠলেই ঝুমার সঙ্গে রাজুর বিয়ে দেবেন আর সব খরচ উনিই করবেন । বুড়োর চোখে জল চলে আসে । উনি বড় বউমাকে আর এক পেগ strong হরলিক্স দিতে বলেন । হঠাৎ শাশুড়ি বলে ওঠেন , উনি নেগেটিভ হলেও আমার টেস্ট আজ পজিটিভ এসেছে । সবাই অবাক হয়ে বলে , মানে ?? শাশুড়ি লজ্জা লজ্জা মুখ করে বলেন , আমি প্রেগন্যান্ট ! বড় বৌমা জ্ঞান হারান । বড় ছেলে বেল্ট খুলে নিজেকেই ক্যালাতে থাকে । মেজো ছেলে কম্পিউটার শাট ডাউন করে বোতল খুলে বসেন । রাজু কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায় । বুড়ো ভাবেন সংসারে আবার একটা পেট বাড়লো । তার মরে গেলেই ভালো হয় ! বাড়ির কেউই জানে না সেদিন হরলিক্স এ ভায়াগ্রা ছিল । সিনেমা শেষ হয় ।