Thread Rating:
  • 27 Vote(s) - 3.26 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance জীবন যে রকম ( সম্পূর্ণ ধারাবাহিক উপন্যাস) By Lekhak
#16
শুভেন্দু হাসলোবললো, ‘রনি থাকবে বাড়ীতেআমি সাড়ে ছটার মধ্যে কাজ সেরে ঢুকবোআর যে সারপ্রাইজটার কথা তোকে বলেছি, তার জন্য আরো আধঘন্টা তোকে অপেক্ষা করতে হবে।’
মাথামুন্ডু কিছুই বুঝতে পারছি নাওকে বললাম, ‘হেঁয়ালিটা রাখ নাকি সারপ্রাইজ দিবি, সেটা আগে থেকে বল না?’
শুভেন্দু বললো, ‘সারপ্রাইজ ইজ অলওয়েজ সারপ্রাইজআগে থেকে বললে, ওটা আর সারপ্রাইজ থাকে নাতুমি এসোধীরে ধীরে সব রহস্য উন্মোচন হবেএকটু অপেক্ষা কর বৎস।’
শুক্লার সকালে আমার বাড়ীতে আসার ব্যাপারটা চেপে গিয়েই ওকে বললাম, ‘তুই কিন্তু যে সারপ্রাইজের কথা আমাকে বলছিসওটা আমি আগে থেকেই জানিআমার জানা হয়ে গেছে, আজ সকালে।’
শুভেন্দু বললো, কি জেনেছিস? আমাকে বল দেখি
আমি বললাম, না থাকবলবো না
শুভেন্দু বললো, ‘বলবি না যখন তুইও চেপে থাকদেখা যাক তোর জানার সাথে আমার সারপ্রাইজ মেলে কিনা’। ফোনটা রাখতে রাখতেই আবার বললো, ‘তোর মুখে আমি অনেকদিন হাসি দেখিনিআজ তোর মুখে আমি হাসি ফোটাবো।’
আমি বুঝে গেলাম, তারমানে বিদিশার কথাই শুভেন্দু আমাকে বলতে চাইছে
 
ট্যাক্সির কাঁচ দিয়ে কতগুলো ছেলে মেয়েকে হাত ধরাধরি করে ঘুরতে ফিরতে দেখছিআর ভাবছি বয়সটা আমার দশবছর কমে গেছেকি জানি হয়তো বিদিশারই জন্য
 
রনির কথা ভেবে, রনিকেও একটা ফোন লাগালামরনি বললো, ‘কিরে দেব? তুই আসছিস তো?’
একটু আগেই শুভেন্দুর সাথে ফোনে কথা হয়েছে রনিকে সেটা বললামরনি বললো, ‘তোর জন্য আমি আর শুভেন্দু একটা পাত্রী ঠিক করেছিতুই এলে, সেই মেয়েটিকে তোকে দেখাবোশুভেন্দু যে সারপ্রাইজটার কথা বলেছে, ওটা সেই সারপ্রাইজ।’
আমি বললাম, ‘পাত্রীটি কে?’
রনি বললো, ‘ধরে নাও খুব সুন্দরীতবে এখন একটু বয়স হয়েছেতবে সৌন্দর্য তার কমে নিতোমার সাথে ভালো মানিয়েও যাবে, কোনো চিন্তা নেই।  এবার একটু ধৈর্য নিয়ে তুমিও এসো।  আর হ্যাঁ আজকে কিন্তু খুব সহজে তোমায় ছাড়ছি নাঅনেক গান শোনাতে হবে, সেই রাত অবধিযিনি আসবেন, তিনিও তোমার গান শুনবেন।’
তারপর আবার হেসে রনি বললো, ওফ দেব, কতদিন তোর গান শুনি নাসেই কবে শুনেছিলাম লাস্টমনেই নেইতারপর মনে হয় একজুগ হয়ে গেছে
মোবাইলটা কানে ধরে নিজের ভেতরের আনন্দটা ওকে প্রকাশ করতে পারছি নাশুধু রনি বললো, আজ তুই মুকেশের ওই গানটা আবার গাইবিযেটা খুব গাইতিস আগেবলে নিজেই গাইতে লাগলো -সুহানি চাঁদনী রাতেহামে শো নেহী দেতেতুমহারী প্যায়ার কী বাতে, হামে শো নেহী দেতে
 রনি ফোনটা ছাড়ার পরেই ধরে নিলাম, এ মেয়ে বিদিশা না হয়ে কিছুতেই যায় না ও যা বলছে, তাতে আর রহস্যের কিছু নেই শুক্লার মত শুভেন্দুও হয়তো দেখে ফেলেছে বিদিশাকে রাস্তায় দেখতে পেয়ে ওকে ইনভাইট করেছে বাড়ীতে আজ সেখানে আমিও যাচ্ছি সামনা সামনি আজ আমরা আবার দুজনে মুখোমুখি
 
বিদিশাকে আমি ভালোবাসতামসেই ভালোবাসার মধ্যে কোনো খুঁত ছিল না।  জানি, ভালোবাসার মধ্যে যদি সততা থাকে, সে ভালোবাসা কখনো হারিয়ে যায় নাসেদিন বিদিশা আমাকে ভুল বুঝেছিল, তাই আমার জীবন থেকে ও হারিয়ে গিয়েছিলোবিদিশার যখন ভুলটা ভাঙলো, তখন অনেক দেরী হয়ে গেছেকিন্তু আমার এই স্বচ্ছ ভালোবাসাই ওকে আবার ফিরিয়ে আনলো আমার কাছেএই পৃথিবীতে দেবকে ছেড়ে বিদিশা আর যাবে কোথায়?
 
আমার মনে আছে, কলেজে বিদিশার সাথে যখন প্রেম শুরু করলাম, তখন রনি কত পেছনে লেগেছে আমাদেরবিদিশার সাথে ফাজলামী আর খুনসুটি তো করতোই এছাড়া আমাকেও কখনো কখনো ছাড়তো নাএকদিন খুব গুরু গম্ভীর ভাবে আমাকে বললো, ‘দেব, একটা কথা খুব সিরিয়াসলি ভাবে তোকে জিজ্ঞাসা করছি। ‘এখনো অবধি বিদিশাকে তুই কটা চুমু খেয়েছিস? গালে, কপাল আর ঠোঁট মিলিয়ে কটা?’
তারপর আবার নিজেই হেসে বললো, ‘গুনে দেখিস নি, তাই না বল?’
 
রনিকে কোনদিন কাব্যিক হতে দেখিনি, আমাকে বলেছিল,‘প্রেম যখন হৃদয়ে আসে, তখন পুরুষ বা রমনী কি চায় জানিস? সে নিজেকে উজাড় করে দিতে চায়বাঁচিয়ে রাখতে চায়, লালন করতে চায় তার প্রেমকেসবার উপরে থাকে সমর্পনের ইচ্ছে।’ একেবারে পি সি সরকারের ম্যাজিকের মতনএক ঝলক চাহনি, একটু ঠোঁটের কাঁপন, মাথাটা হেলিয়ে রাখা, হাতের আঙুলের নড়াচড়াএর প্রত্যেকটিই প্রেমকে জাগিয়ে তুলতে পারেঠিক ম্যাজিকের মতনকিন্তু খুব সাধারণ ম্যাজিক।’
 
রনির কথা ভাবছিলাম আর বিদিশার মুখটাকে চিন্তা করছিলাম, ট্যাক্সিতে যেতে যেতে হঠাৎই আমার মনে হল, বিদিশার মুখটা যেন আমার মুখের খুব কাছেসেই আগে যেরমকম গরম নিঃশ্বাস ফেলতো আমার ঠোঁটের ওপরেপ্রথমবার চুমু খেতে গিয়ে ওর ঠোঁটটা একটু কেঁপে গিয়েছিলকিন্তু আমি যখন ওর ঠোঁটে প্রেমের চিহ্ন এঁকে দিলাম, ও জড়িয়ে ধরলো আমাকেপ্রজাপতির মত বিদিশার আঙুলগুলো আমার পিঠে তখন খেলা করছে বিদিশার ঠোঁটের ওপর আমার ঠোঁট বিদিশার পায়ের ওপর আমার পায়ের উষ্ণ চাপ দ্রুত নিঃশ্বাস একসাথে মিশে যাচ্ছে আঙুল গুলো দিয়ে বিদিশা আমার পুরো শরীরটাকে এমন ভাবে খেলাচ্ছে, যেন শরীরের প্রতিটি কোনকে জানার জন্য ও কত অধীরজড়িয়ে ধরে বিদিশাকে আমি বলছি, ‘বিদিশা, ভালোবাসাটাকে আমি অমর করে রাখতে চাই তুমি আমাকে কোনদিন ভুলে যাবে না তো? বিদিশার মুখ দিয়ে শুধু গোঙানির মত শব্দ দুটো ঠোঁট তখন ভালোবাসার আলিঙ্গনে আবদ্ধ আমাকে জড়িয়ে ধরে বিদিশা বলছে, ‘না গো নাআমি কি তোমাকে ভুলে যেতে কখনো পারি?’
 ভালোবাসার বেশী সুখ নাকি কপালে কখনো সয় নামূহূর্তগুলো সব ঝাপসা হয়ে যায়এই বুঝি শুরু হলআর কদিন পরেই সব শেষমনে হল, বিদিশার মুখটাকে আমি দেখছিলাম এতক্ষণ তারপরেই ওর মুখটা কেমন ঝাপসা ঝাপসা হয়ে যেতে লাগল আসতে আসতেআমার মুখের কাছে বিদিশার মুখটা আর নেই, হঠাৎ দেখছি ওখানে মিনুর মুখটা চলে এসেছেবিদিশার ঠোঁটদুটোও নেইওখানে মিনুর ঠোঁট দুটো চলে এসেছে
মূহূর্তে মুখটা কেমন পাথরের মত হয়ে গেল আমারমনে পড়ল, মিনুর বাড়ীতে সেদিন কি ঘটেছিল
 
সেদিন ছিল শনিবারবাবা বলতেন, শনিবার দিনটা আমার কাছে নাকি শুভ নয়শনি যদি ঘাড়ে চেপে বসে, তাহলে তো আরো মুশকিলসেদিন মিনু হয়েছিল আমার শনিতখন ঠিক সন্ধে সাতটামিনু আমাকে বাড়ীতে ডাকলোআগের দিন সৌগতর দাদার বিয়েতে গিয়েছিলামসারারাত সৌগতর দাদার বিয়ের বাসরে জেগেছিঅনেক রাত অবধি হৈহুল্লোর আর গানবাজনা হয়েছেশরীরটা এমনি খারাপমিনুকে বললাম, ‘আজ ছেড়ে দে মিনু, আজ আমার বাড়ী থেকে বেরোনোর একদম ইচ্ছে নেই।’
মিনু শুনলো নাবললো, ‘তোকে কি এমনি এমনি আমি বাড়ীতে ডাকছি? কারন তো একটা আছেতুই আয়আমি দশমিনিটের মধ্যে তোকে ছেড়ে দেবো।’
জানতাম না সেদিন বিদিশাও আমার বাড়ীতে এসে হাজির হবেআমি ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছি, মিনুর বাড়ী যাবো বলেতার ঠিক একঘন্টা পরেই বিদিশাও আমার বাড়ীতে এসে হাজিরআমাকে দেখতে পাইনিমা’ বলে দিয়েছে আমি মিনুর বাড়ী গেছিবিদিশাও আর অপেক্ষা করেনি
বিদিশার ভীষন রাগ ছিল মিনুর ওপরকলেজে কোনদিন দাঁড়িয়ে কথা পর্যন্ত বলেনি মিনুর সঙ্গেমিনুর বাড়ীতে আমি যাই, সেটা ওর বোনকে গান শেখানোর জন্য হলেও বিদিশার একেবারেই পছন্দ হতো নাসৌগতর দাদার বিয়ের দিন এই নিয়ে একটু মুখ ভার করেছিল বিদিশাআমি ওর রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করছিবিদিশা বললো, ‘আমি তো বলেছি মেয়েটা ভালো নয়তুমি তাও শুধু শুধুকি পাও তুমি ওখানে গিয়ে?’
বিদিশাকে কথা দিয়েছিলাম, আর মিনুর বাড়ীতে যাবো নাকিন্তু সেদিন নিয়তি আমাকে ডেকে নিয়ে গেল মিনুর কাছে
যখন ওর বাসায় ঢুকলাম, তখন দেখলাম ওর ছোট বোনটা নেইমিনু একা রয়েছে ঘরেওর চোখ দুটো কেমন ঘোলা ঘোলাঘরের মধ্যে শাড়ী ছেড়ে নাইটি পড়ে রয়েছেমুখ চোখ দেখেই মনে হল, যেন শয়তান ভর করেছে ওকে
শুরুটা করলো ভালোভাবেআমাকে বললো, ‘সৌগতর দাদার বিয়েতে খুব আনন্দ হলতাই না রে?’
-তুই তো যাসনিগেলে আনন্দটা বুঝতে পারতিস
-আমাকে তো সৌগত বলেনিতোদের বলেছে আমি বাদ
-তোকে কেন বলেনি, সেটা তো বলতে পারবো নাতবে আনন্দ তো খুব হয়েছে
-এই দেব, তুই গান গেয়েছিস?
-গেয়েছি অনেকওরা ছাড়ছিল না তাই
[+] 3 users Like Lekhak is back's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:43 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:46 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:49 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:50 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:52 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:54 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:55 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 10:57 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 11:00 PM
RE: Jeeban Je Rakam By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 11:05 PM
RE: জীবন যে রকম ( সম্পূর্ণ ধারাবাহিক উপন্যাস) By Lekhak - by Lekhak is back - 01-07-2021, 11:55 PM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)